খাদ্য বিজ্ঞান

খাদ্য বিজ্ঞান হচ্ছে একটি ফলিত বিজ্ঞান যা খাদ্য সম্পর্কিত বিষয়ে আলোচনা করে। Institute of Food Technologists এর সংজ্ঞানুসারে যে শৃঙ্খলে প্রকৌশল,জীববিজ্ঞানপদার্থবিজ্ঞান একত্রে খাদ্যের প্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা হয়, খাদ্যের গুনগত মানের অবনতির কারণ, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের মূলনীতি, এবং ভোক্তার স্বার্থে খাদ্যের উন্নতি সম্পর্কে আলোচনা হয় তাকে খাদ্য বিজ্ঞান বলে।[১]

প্রয়োগ

এই বিজ্ঞানে নতুন খাদ্যের মানোন্নয়ন করা হয়, এসব খাদ্য প্রক্রিয়াজাতের নকশা প্রণয়ন করা হয়, খাদ্যের মোড়ক নির্বাচন করা হয়, খাদ্যের আয়ুষ্কাল নির্ধারণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা করা হয়,[২][৩][৪][৫] অণুজীববিজ্ঞান বিষয়ক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন রাসায়নিক পরীক্ষা করা হয়।
খাদ্য বিজ্ঞান বিষয়ক কিছু সংস্থা হচ্ছেঃ

ক্ষেত্র

মলিকুলার গ্যাস্ট্রোনমিতে ডিমের উপর ভিন্ন ভিন্ন তাপমাত্রার প্রভাব নিয়ে আলোচনা করে।[৬][৭] এবং এর সান্দ্রতা, পৃষ্ঠটান, এবং এর ভেতর বাতাস প্রবাহের বিভিন্ন কৌশল সম্পর্কে আলোচনা করে।[৮]

পাউরুটিরকারখানা, জার্মানি

খাদ্য বিজ্ঞানের অনেকগুলো শাখা রয়েছে।

খাদ্য রসায়ন

এই শাখায় খাদ্যের জৈব উপাদান এবং অজৈব উপাদান এর পারস্পরিক ক্রিয়া এবং রাসায়নিক বিক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।[৯][১০] খাদ্য রসায়নের যাত্রা শুরু হয় ১৮ শতাব্দীর শেষভাগ থেকে যখন অনেক বিখ্যাত বিজ্ঞানী খাদ্যের রাসায়নিক গুরুত্ব বোঝার চেষ্টা করেন। Carl Wilhelm Scheele ১৭৮৫ সালে আপেল থেকে ম্যালিক এসিড পৃথক করেন। পানি, কার্বোহাইড্রেট, উৎসেচক, খাদ্যের রং, খনিজ, ভিটামিন, লিপিড, প্রোটিন এই শাখার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

খাদ্য অণুজীববিজ্ঞান

এই শাখায় খাদ্যে বসবাসকারী অণুজীব এবং এর দ্বারা খাদ্যের দূষণ এবং পচন সম্পর্কে আলোচনা হয়।[১১] উপকারি ব্যাকটেরিয়া, উদাহরণস্বরূপ প্রোবায়োটিক ক্রমশ খাদ্য বিজ্ঞানের আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।[১২][১৩][১৪] ইস্ট নামক ছত্রাক খাদ্যের গাঁজনে ব্যবহার করা হয়।কিছু ব্যাকটেরিয়া যেমন ল্যাকটিক এসিড ব্যাকটেরিয়া দই, পনির সহ বিভিন্ন জিনিস তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

খাদ্য নিরাপত্তা

এই শাখায় খাদ্যের লভ্যতা এবং মানুষের খাদ্য ব্যবহারের অধিকার সংরক্ষণ বিষয়ক আলোচনা হয়। খাদ্য সংরক্ষণের এমন প্রযুক্তি সম্পর্কে আলোচনা করা হয় যার সাহায্যে খাদ্যঘটিত অসুখ প্রতিরোধ অর্থাৎ দুষিত খাদ্যে যেসব ক্ষতিকারক অণুজীব থাকে তাদের প্রতিরোধ করা যায়।

মলিকুলার গ্যাস্ট্রোনমি

এই শাখায় রান্না করার সময় খাদ্যের ভৌত পরিবর্তণ এবং রাসায়নিক পরিবর্তণ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। ১৯৮৮ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এর পদার্থবিদ Nicholas Kurti এবং French INRA এর রসায়নবিদ Hervé This প্রথম মলিকুলার গ্যাস্ট্রোনমি শব্দটি ব্যবহার করেন।[১৫] খাদ্য বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা খাদ্যের নিরাপত্তা, অণুজীব, সংরক্ষণ, রাসায়নিক , প্রকৌশল ও ভৌত দিক নিয়ে আলোচনা করলেও একমাত্র এই শাখাটিই বাড়ি এবং রেস্টুরেন্টের নিয়মিত রন্ধন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করে।

খাদ্য প্রকৌশল

এই শাখা মূলত ফলিত পদার্থবিজ্ঞানের একটি বহুমুখী শাখা। কৃষি প্রকৌশল, যন্ত্র প্রকৌশল এবং রাসায়নিক প্রকৌশল এর খাদ্য বিষয়ক মূলনীতি আলোচনার পাশাপাশি এই শাখা বাণিজ্যিকভাবে খাদ্য উৎপাদনের কৌশল সম্পর্কেও আলোচনা করে।

বিভিন্ন দেশে খাদ্য বিজ্ঞান

অস্ট্রেলিয়া

সংস্থার রূপরেখা
গঠিত১৯২৬
অধিক্ষেত্র Commonwealth of Australia
সদর দপ্তরCanberra, Australian Capital Territory, অস্ট্রেলিয়া
কর্মী৬,৬০০+
ওয়েবসাইটCSIRO

অস্ট্রেলিয়ায় Commonwealth Scientific and Industrial Research Organisation (CSIRO) খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ক গবেষণা পরিচালনা করে।

যুক্তরাষ্ট্র

ধরনঅলাভজনক
প্রতিষ্ঠাকাল১৯৩৯
সদরদপ্তরশিকাগো, ইলিনয়, আমেরিকা
ওয়েবসাইটঅফিসিয়াল ওয়েবসাইট

Institute of Food Technologists (IFT) খাদ্য বিজ্ঞান এবং খাদ্য প্রকৌশল বিষয়ক বৃহত্তম সংস্থা। ২০১২ সালে এর সদস্য সংখ্যা ছিল ১৮,০০০। এটি একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা।

যুক্তরাজ্য

খাদ্য বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির উন্নয়ন, এই বিষয়ে শিক্ষা প্রসার, এবং জনগনের উপকার, নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য সংরক্ষণের জন্য ১৯৬৪ সালে যুক্তরাজ্যে Institute of Food Science & Technology(IFST) প্রতিষ্ঠিত