যে কোন বৃত্তচাপের কেন্দ্র থেকে এর ভিত্তির দূরত্বকে[১] সাজিটা (sagitta বা sag[২]) বলা হয়। এই শব্দটি স্থাপত্যবিদ্যায় নির্দিষ্ট উচ্চতা বা দূরত্বে স্প্যানিংয়ের [৩] প্রয়োজনে বৃত্তচাপের হিসাব কার্যে ব্যাপকহারে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া আলোক বিজ্ঞানে গোলীয় দর্পণ ও লেন্সের গভীরতা নির্দেশ করতেও এর প্রয়োগ করা। শব্দটি সরাসরি ল্যাটিন থেকে এসেছে যার অর্থ শর বা তীর।
সূত্র
ধরাযাক, কোন বৃত্তচাপের গভীরতা বা উচ্চতা s , বৃত্তচাপের বা সংশ্লিষ্ট বৃত্তের ব্যাসার্ধ r
এবং বৃত্তচাপের প্রান্তবিন্দু দুটিকে সংযোগকারী[৪] রেখা তথা জ্যা এর অর্ধাংশের দৈর্ঘ্য ℓ
।
এখন, ℓ ও r − s
একটি সমকোণী ত্রিভুজের সমকোণ সংলগ্ন দুই বাহু এবং r
ঐ ত্রিভুজের অতিভূজ হওয়ায় পিথাগোরাসের উপপাদ্য হতে পাই— r 2 = ℓ 2 + ( r − s ) 2 .
এই সমীকরণকে পুনর্বিন্যাস করে নিম্নোক্ত সমীকরণ তিনটি পাওয়া যাবে— s = r − r 2 − ℓ 2 , ℓ = 2 r s − s 2 ,
or r = s 2 + ℓ 2 2 s = s 2 + ℓ 2 2 s .
এছাড়াও ভারসাইন ফাংশন থেকেও সাজিটার পরিমাপ করা যায়। যেমন—একক বৃত্তের ক্ষেত্রে বৃত্তচাপের স্প্যান কোণ Δ = 2θ হলে এবং বৃত্তচাপটি ভারসাইনের অনুরূপ হলে সাজিটার পরিমাপ হবে— s = r versin θ = r ( 1 − cos θ ) = 2 r sin 2 θ 2 .
আসন্ন মান
সাজিটার দৈর্ঘ্য ব্যাসার্ধের তুলনায় ক্ষুদ্র হলে নিচের সূত্র থেকে এর আসন্ন মান পাওয়া যায়: s ≈ ℓ 2 2 r .[৫]
বিপরীতক্রমে, সাজিটা ছোট হলে এবং সাজিটা, ব্যাসার্ধ ও অর্ধ-জ্যা এর দৈর্ঘ্য জানা থাকলে বৃত্তচাপ-দৈর্ঘ্য a এর আসন্ন মান নির্ণয়ে নিম্নোক্ত সূত্র প্রয়োগ করা যেতে পারে— a ≈ ℓ + s 2 r
এই সূত্রটি চিনা গণিতবিদ শেন কুওর জানা ছিল। দুই শতাব্দী পরে গুও শৌজিং চাপ-দৈর্ঘ্য নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সাজিটার সাথে সম্পর্কযুক্ত আরো নিখুঁত একটি সূত্রের[স্পষ্টকরণ প্রয়োজন] উন্নয়ন ঘটান।[৬]
প্রয়োগ
বাঁকা-চ্যাপ্টা কাঠামো যেমন— বাঁকা দেয়াল, বৃত্তচাপ আকৃতির ছাদ ও সেতু নির্মাণসহ অন্যান্য অসংখ্য কাজে স্থপতি, প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারেরা এই সমীকরণসমূহ প্রয়োগ করেন।
এছাড়া পদার্থবিজ্ঞানে ত্বরিত কণার বক্রতার ব্যাসার্ধ নির্ণয়ে জ্যা-দৈর্ঘ্যসহ সাজিটাও ব্যবহার করা হয়। বিশেষকরে, বুদবুদ চেম্বার পরীক্ষণে ক্ষয় কণাসমূহের ভরবেগ নির্ণয়ে এটা ব্যবহৃত হয়।