অজ্ঞাতমূল শব্দ (ব্যাকরণ)

বাংলা ভাষার শব্দভাণ্ডার তৎসম,অর্ধতৎসম,তদ্ভব, দেশি ও বিদেশি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে। কিন্তু এমন অনেক শব্দ রয়েছে যার মূল নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি অর্থাৎ তা দেশি না বিদেশি শব্দ থেকে আগত নাকি আংশিক পরিবর্তিত হয়েছে; কোনো কিছুই সঠিকভাবে বলা যায় না। এদের বাংলা ভাষার পণ্ডিতগণ অজ্ঞাতমূল শব্দ রূপে চিহ্নিত করেছেন।

সারণি

কতিপয় চিহ্নিত অজ্ঞাতমূল শব্দ হলো[১]

অজ্ঞাতমূল শব্দশব্দার্থ
উশোবর্ধকীদের ব্যাবহার্য পলস্তারা সমান করার কাষ্ঠনির্মিত যন্ত্র[২]
কৈলুবৃক্ষবিশেষ[৩]
খনানাকি সুরে কথা বলা[৪]
খিচকদূরে, পার্থক্য
খুনসুটি/খুনসুড়িকৃত্রিম বিবাদ[৫]
গরদএক প্রকার রেশমি কাপড়[৬]
গরানবৃক্ষবিশেষ[৭]
গিরিম্বারিলম্ফ ঝম্প, আস্ফালন[৮]
গোরাপএক জাতীয় নৌকা[৯]
গ্রাবুতাসখেলা বিশেষ[১০]
ছিপিকর্ক, বোতলের মুখ
জাংড়াঅশ্বারোহী
জাঙ্গিকালো রঙের হরীতকীবিশেষ
জুমপাহাড় কেটে চাষের পদ্ধতিবিশেষ
জেবলিফুলবিশেষ
ঝাটলঘণ্টা পাটল গাছ
টুপাজলের পাত্র
ডুলিকাখঞ্জন পাখির মতো আকার বিশিষ্ট পাখি
ডেকুরাকুঁড়েঘর
ঢেউতরঙ্গ
তাঁইউপস্থিত
দাঁড়িকাছোটমাছ বিশেষ
দিসপ্রকার
দুর্পিটাউত্তপ্ত লাল লৌহে হাতুড়ির আঘাতে যে অগ্নিময় ময়লা ছিটকে পড়ে, লৌহজাল
দোমালাঅর্ধপক্ব নারিকেল
দোরমাপটলের ব্যঞ্জনবিশেষ
ধানাইপানাইঅসংঘবদ্ধ কথা
নটকনা,নটকানবাসন্তী রং,এক প্রকার গাছ বা তার বীজ[১১]
নর্কুচতুরঙ্গ জাতীয় খেলাবিশেষ
নিদেনলাঙলের মুড়ার উপরে ধরার কাঠ দণ্ড[১২]
নেড়ড়ি গেড়ড়িবোচকাবুচকি[১৩]
পারশে,পার্শেমৎস্য বিশেষ[১৪]
পেনেটগৌরীপট্ট,তার উপর শিবলিঙ্গ স্থাপন করা যায়[১৫]
বকৌলিবন্যা[১৬]
বসিধদূত, বার্তাবাহক[১৭]
ভাগাড়মৃত গরু-মহিষাদি ফেলার নির্দিষ্ট স্থান, পতিত ভূমি[১৮]
মসীনঅত্যাচার[১৯]
মাইপোশ:(মাইপোষ নয়),মাইকোশগুপ্ত বাক্স সহ তক্তাপোশ[২০]
মুকেরিমধ্যযুগে বাংলার মুসলিম সম্প্রদায়বিশেষ[২১]
মুরিনালা,জলনালি, নর্দমা[২২]
মেঠেধাতুনির্মিত বালা,কড়া[২৩]
লদপদলুটানো, শুয়ে পড়া[২৪]
লম্পটি-ঝম্পটি(“ঝম্পটি” অংশটুকু অনুকারজাত, তবে এই পুরো শব্দ অজ্ঞাতমূল হওয়ার চেয়ে ধ্বন্যাত্মক হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল)হাবুডুবু খাওয়া[২৫]
সতবর্গফুলবিশেষ[২৬]
সলুপা,সুলফাশাকবিশেষ[২৭]
সাওকুড়ি,সাওকুড়ীমাতব্বরি[২৮]
সুন্দাএক ধরনের মশলা[২৯]
সুন্দি,সুন্ধিশ্বেতপদ্ম, কুমুদ ফুল[২৯]
সেগো,সেঙো (অশ্লীল)শিশ্ন,স্ত্রীচিহ্ন[৩০]
হটকাদীর্ঘ, লম্বা[৩১]
হড়পানদীতে হঠাৎ যে বানের আবির্ভাব হয়[৩২]
হাকিকএক প্রকার মূল্যবান প্রস্তর[৩৩]
হাবিজাবিআজেবাজে[৩৪]
হিবাচীচুল্লি,হাঁপর[৩৫]
হেঁজিপেজিতুচ্ছ, নগণ্য, সামান্য,অখ্যাত[৩৬]
হ্যাজাকঅধিকতর উজ্জ্বল আলোড়নকারী বাতিবিশেষ[৩৩]

পাদটীকা

•অধিকাংশ অজ্ঞাতমূল শব্দ বহুল ব্যবহৃত নয়।

•আভিধানিক চিহ্ন-অমূ।

•সারণিতে বিদ্যমান কিছু শব্দ শুধুমাত্র মধ্যযুগীয় বাংলায় পাওয়া যায়।যেমন:সলুপা, মুকেরি

•কোনো কোনো অজ্ঞাতমূল শব্দ কথ্য বা লেখ্য ভাষায় ব্যবহৃত না হওয়া সত্ত্বেও সাহিত্যে ব্যবহারে উৎকর্ষ লাভ করেছে। যেমন:সুন্দা,সুন্দি[৩৭]