হেলিকপ্টার

হেলিকপ্টার বাতাসের চেয়ে ভারী অথচ উড্ডয়নক্ষম এমন একটি আকাশযান যার উর্দ্ধগতি সৃষ্টি হয় এক বা একাধিক আনুভূমিক পাখার ঘুর্ণনের সাহায্যে, উড়োজাহাজের মত ডানার সম্মুখগতির সাহায্যে জন্য নয় । এই পাখাগুলো দুই বা ততোধিক ব্লেডের সমন্বয়ে গঠিত যারা একটি মাস্তুল বা শক্ত দন্ডকে কেন্দ্র করে ঘোরে। ঘুর্ণনক্ষম পাখার জন্য হেলিকপ্টারকে ঘূর্ণিপাখা আকাশযান বলা যায়।

‘হেলিকপ্টার’ শব্দটি এসেছে ফরাসি hélicoptère এলিকপ্ত্যার্‌ শব্দটি থেকে যা গুস্তাভ দ্য পন্তন দ্যআমেকোর্ত ১৮৬১ সালে ব্যবহার করেন। এই ফরাসি শব্দটির উৎস আবার গ্রীক ἕλικ- হেলিক্‌ অর্থাৎ “স্পাইরাল” বা “ঘুর্ণন” এবং πτερόν প্তেরোন্‌ অর্থাৎ “পাখা” [১][২] শব্দ দুটি।

হেলিকপ্টারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো হেলিকপ্টার একেবারে খাড়া ভাবে উড়তে(take off) এবং নামতে(landing) পারে, এ জন্য এর কোন রানওয়ে প্রয়োজন হয় না; হেলিকপ্টারের পাখাই একে ওড়ার জন্য প্রয়োজনীয় উর্দ্ধচাপ সরবরাহ করে। এই কারণে সঙ্কীর্ণ বা বিচ্ছিন্ন স্থানে যেখানে বিমান ওঠা নামা করতে পারে না, সেখানে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়। পাখার দ্বারা সৃষ্ট উর্দ্ধচাপ হেলিকপ্টারকে একই স্থানে ভেসে থাকতেও সাহায্য করে, ফলে হেলিকপ্টারকে দিয়ে এমন সব কাজ করানো যায় যা বিমানকে দিয়ে করানো যায়না, যেমন ক্রেন বা ঝুলন্ত ভারবাহক হিসেবে ব্যবহার।

হেলিকপ্টারের জন্ম অনেক আগে, মানুষের ওড়াউড়ির প্রথম অর্ধশতাব্দীর মধ্যে, হলেও ১৯৪২ সালে ইগর সিকোরস্কির তৈরি করা নকশার হেলিকপ্টারই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হয়[৩] এবং প্রথম ১৩১টি হেলিকপ্টার তৈরি করা হয়[৪]। আবার প্রথমদিকের বেশীরভাগ হেলিকপ্টারের প্রধান পাখা দুটো করে থাকলেও একটি মূল পাখা এবং একটি অ্যান্টিটর্ক (antitorque) পেছনের পাখা সমৃদ্ধ নকশাগুলোই বিশ্বজুড়ে “হেলিকপ্টার” নামে স্বীকৃতি পেয়েছে।

গ্যালারি

  • লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির এরিয়াল স্ক্রু (aerial screw)
  • পল কর্নুর হেলিকপ্টার, ১৯০৭ সাল
  • সিকোরস্কি এস-৬৪, ভারবাহী হেলিকপ্টার
  • ক্যালিফোর্নিয়ার দমকল বিভাগের একটি বেল ২০৫ হেলিকপ্টার আগুনের উপরে পানি ছিটাচ্ছে
  • পুলিশের পিযেডএল এসডব্লিউ-৪
  • সামরিক হেলিকপ্টারঃ ব্রিটিশ আর্মি এয়ার কর্পসের ডব্লিউএএইচ-৬৪ অ্যাপাচি
  • মিল মি-২৬ – বৃহত্তম এবং সবচেয়ে ভারী হেলিকপ্টার, সোভিয়েত ইউনিয়ন, ১৯৮৩
  • চিনূক সিএইচ-৪৭

বিশ্বরেকর্ড

রেকর্ডের ধরনরেকর্ডহেলিকপ্টারের নামপাইলট(গণ)তারিখঅবস্থানসংক্ষিপ্ত বিবরণতথ্যসূত্র
গতি৪০০.৮৭ কি.মি/ঘণ্টা (২৪৯.০৯ মাইল/ঘণ্টা)ওয়েস্টল্যান্ড লিঙ্কস যুক্তরাজ্য জন ট্রেভর এগিংটন১১ আগস্ট, ১৯৮৬ইংল্যান্ড, যুক্তরাজ্য[৫]
অবতরণবিহীন অবস্থায় দূরত্ব৩,৫৬১.৫৫ কি.মি. (২,২১৩.০৪ মাইল)হিউজেস ওয়াইওএইচ-৬এ যুক্তরাষ্ট্র রবার্ট জি. ফেরী৬ এপ্রিল, ১৯৬৬যুক্তরাষ্ট্র[৫]
বৈশ্বিক পরিভ্রমণে গতি১৩৬.৭ কি.মি/ঘণ্টা (৮৪.৯ মাইল/ঘণ্টা)অগাস্টা এ১০৯এস গ্র্যান্ড যুক্তরাষ্ট্র স্কট ক্যাসপ্রোইকআগস্ট, ২০০৮নিউইয়র্ক থেকে ইউরোপ, রাশিয়া, আলাস্কা, কানাডাজ্বালানী গ্রহণ ছাড়া[৬]
সর্বোচ্চ উচ্চতায় উড্ডয়ন১১,০১০ মিটার (৩৬,১২০ ফুট)সিকোরস্কি সিএইচ-৫৪ তারহে যুক্তরাষ্ট্র জেমস কে. চার্চ৪ নভেম্বর, ১৯৭১যুক্তরাষ্ট্র[৭]
৪০ টন মালামাল নিয়ে উড্ডয়ন২,২৫৫ মিটার (৭,৩৯৮ ফুট)মিল ভি-১২ সোভিয়েত ইউনিয়ন ভ্যাসিলি কোলোচেঙ্কো ও সহযোগী৬ আগস্ট, ১৯৬৯সোভিয়েত ইউনিয়ন[৮]

তথ্যসূত্র

1:26

হেলিকপ্টার