পরিসংখ্যান ও প্রত্নতত্ত্বেমানব বসতি (ইংরেজিঃ Human Settlement) হল এমন একটি সম্প্রদায় যেখানে মানুষ বসবাস করে। ডিকশনারি অফ জিওগ্রাফি অনুসারে “স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য কোন স্থানে এক বা একাধিক মানুষ যখন বসবাস করতে শুরু করে, তখন তাকে বসতি বলে।”[১] বিখ্যাত ভূগোলবিদ টেরি, জি, জনসন বলেন, “বসতি হল সাংস্কৃতিক ভূদৃশ্যের ধরন সম্পর্কিত অধ্যয়ন।” সুতরাং বলা যায় যে, কোন একটি স্থানে মানুষ একত্রিত হয়ে স্থায়ীভাবে বা অস্থায়ী ভাবে বসবাসের জন্য যে অবয়ব তৈরি করে তাকেই মানব বসতি বলে।
বিভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে মানব বসতির শ্রেণীবিভাগ করা হয়।[৩]
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অনুসারে
বসতিতে বসবাসকারী জনগোষ্টির অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপরভিত্তি করে মানব বসতিকে ২টি ভাগে ভাগ করা যায়।
গ্রামীণ বসতি
human settlement
যে বসতির সংখ্যাগরিষ্ঠ অধিবাসী জীবিকা অর্জনের জন্য প্রথম পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিশেষত কৃষির উপর নির্ভরশীল সেই বসতিকেই গ্রামীণ বসতি বলা হয়। গ্রামীণ বসতি বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত ও গোষ্ঠীবদ্ধ যেকোনো একটি হতে পারে।
নগর বসতি
স্থিতিকাল অনুসারে
স্থিতিকাল অনুসারে বসতি ৩ প্রকার। যথা:
ক্ষণস্থায়ী বসতি:যে বসতি বছরের খুব অল্প সময়ে ব্যবহৃত হয়ে থাকে, এবং বাকি সময় অব্যবহৃত থাকে তাকে ক্ষণস্থায়ী বসতি বলে।
অস্থায়ী বসতি:যে বসতি অস্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য নির্মিত হয় তাকে অস্থায়ী বসতি বলে।
স্থায়ী বসতি:স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য যে বসতি নির্মিত হয় তাকে স্থায়ী বসতি বলে।
সারিবন্ধ বসত:কোনো নদী বা সড়কের দুই ধারে সারিবন্ধভাবে গড়ে ওঠা বসতিকে সারিবন্ধ বসতি বলে।
অনুকেন্দ্রিক বসতি:কোনো একটি বিশেষ স্থানকে কেন্দ্র করে চক্রাকারে গড়ে উটা বসতিকে অনুকেন্দ্রিক বসতি বলে।
সংঘবদ্ধ বসতি:যখন অনেকগুলো বসতি খুব কাছাকাছি বসবাস করে তখন তাকে সংঘবদ্ধ বসতি বলে।
বিছিন্ন বসতি:যখন কোনো অঞ্চলের পরিবারগুলো এলোমেলো ভাবে বসবাস করে তখন তাকে বিছিন্ন বসতি বলে।
বিক্ষিপ্ত বসতি:যখন কোনো বসতির মধ্যো কৃষিভূমি, জলাভূমি, বনভূমি থাকার কারণে পরিবারগুলো দূরে অবস্থান করে তখন তাকে বিক্ষিপ্ত বসতি বলে।
জনসংখ্যার আকার অনুসারে
জনসংখ্যার আকার অনুযায়ী বসতি চার প্রকার। যথা:
খামার বাড়ি:একটি কৃষিজমিকে কেন্দ্র করে এক বা একাধিক পরিবার মিলে যে বসতি গড়ে ওঠে তাকে খামার বাড়ি বলে।
পাড়া:সাধারণত অল্প কয়েকটি পরিবার মিলে একটি পাড়া তৈরি হয়।
ক্ষুদ্রগ্রাম:কয়েকটি পাড়ার সমন্বয়ে একটি ক্ষুদ্রগ্রাম গঠিত হয়।
বড়গ্রাম:অনেকগুলো পাড়া নিয়ে একটি বড়গ্রাম গঠিত হয়। এশিয়া মহাদেশএর বৃহত্তম গ্রাম বানিয়াচংবাংলাদেশএর হবিগণ্জ্ঞ জেলায় অবস্থিত।
মানব বসতির নিয়ামকসমূহ
মানব বসতি গড়ে উঠার পেছনে যে সকল উপাদান কাজ করে তাদের কে মানব বসতির নিয়ামক বলে। মানব বসতির নিয়ামক সমূহ প্রধানত ২ প্রকার।
প্রাকৃতিক নিয়ামক সমূহ
human settlement
ভূ-প্রকৃতি, জলবায়ু, পরিবেশ, মাটির উর্বরতা, পানির প্রাপ্যতা, অরণ্য ইত্যাদি
সামাজিক নিয়ামকসমূহ
অর্থনীতি: যে অঞ্চলে খলিজ সম্পদ, প্রাকৃতিক সম্পদ অধিক পরিমাণে পাওয়া যায় যেখানে বসতি গড়ে ওঠে।
সংস্কৃতি: যে অঞ্চলে একই ধরনের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট বিদ্যমান যেখানে মানব বসতি গড়ে ওঠে।
সমাজ: একই সামাজিক বৈশিষ্টসম্পন্ন মানুষ একত্রে বসবাসের জন্য মানব বসতি গড়ে তোলে।
রাজনীতি: রাজনৈতিক কারণেও অনেক সময় বসতির স্থান পরিবতর্তিত হয়।
গুরুত্ব
যে বসতির সংখ্যাগরিষ্ঠ অধিবাসী জীবিকা অর্জনের জন্য প্রথম পর্যায়ের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিশেষত কৃষির উপর নির্ভরশীল সেই বসতিকেই গ্রামীণ বসতি বলা হয়। গ্রামীণ বসতি বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত ও গোষ্ঠীবদ্ধ যেকোনো একটি হতে পারে।
মানচিত্র (Map)ভূমির সাংকেতিক প্রতিচ্ছবি। দেশের সার্ভে বিভাগ কর্তৃক অনুমোদিত নির্ধারিত রং এর ব্যবহারে কোন এলাকার ভূমির উল্লেখ যোগ্য প্রাকৃতিক ও কৃত্তিম বস্তু সমূহকে নির্দিষ্ট সাংকেতিক চিহ্নের মাধ্যমে কাগজ বা কাপড়ের উপর ক্ষুদ্রাকারে মাপনী অনুযায়ী অঙ্কন করাকে ম্যাপ বা মানচিত্র বলে।
কোন স্থানে অবস্থিত বস্তু সমূহের অবস্থান এবং সম্পর্কের দৃষ্টিগ্রাহ্য সাধারণ প্রকাশ হচ্ছে মানচিত্র।
অনেক মানচিত্র স্থির, ত্রি-মাত্রিক স্থানের দ্বি-মাত্রিক প্রতিরূপ; আবার কিছু মানচিত্র পরিবর্তনশীল, এমনকি ত্রিমাত্রিকও হতে পারে। মানচিত্র বলতে সাধারণত ভৌগোলিক মানচিত্রকেই বোঝানো হয়, তবে মানচিত্র হতে পারে কোন স্থানের – বাস্তব বা কাল্পনিক, এতে স্কেল বা অন্যান্য অনুষঙ্গের প্রয়োজনীয়তা নাও থাকতে পারে; যেমন, ব্রেন মানচিoত্রকরণ, ডিএনএ মানচিত্রকরণ এবং মহাকাশের মানচিত্রকরণ।
মানচিত্র ভূমির সাংকেতিক প্রতিচ্ছবি। দেশের সার্ভে বিভাগ কর্তৃক অনুমোদিত নির্ধারিত রং এর ব্যবহারে কোন এলাকার ভূমির উল্লেখ যোগ্য প্রাকৃতিক ও কৃত্তিম বস্তু সমূহকে নির্দিষ্ট সাংকেতিক চিহ্নের মাধ্যমে কাগজ বা কাপড়ের উপর ক্ষুদ্রাকারে মাপনী অনুযায়ী অঙ্কন করাকে ম্যাপ বা মানচিত্র বলে।
কোন স্থানে অবস্থিত বস্তু সমূহের অবস্থান এবং সম্পর্কের দৃষ্টিগ্রাহ্য সাধারণ প্রকাশ হচ্ছে মানচিত্র।
অনেক মানচিত্র স্থির, ত্রি-মাত্রিক স্থানের দ্বি-মাত্রিক প্রতিরূপ; আবার কিছু মানচিত্র পরিবর্তনশীল, এমনকি ত্রিমাত্রিকও হতে পারে। মানচিত্র বলতে সাধারণত ভৌগোলিক মানচিত্রকেই বোঝানো হয়, তবে মানচিত্র হতে পারে কোন স্থানের – বাস্তব বা কাল্পনিক, এতে স্কেল বা অন্যান্য অনুষঙ্গের প্রয়োজনীয়তা নাও থাকতে পারে; যেমন, ব্রেন মানচিoত্রকরণ, ডিএনএ মানচিত্রকরণ এবং মহাকাশের মানচিত্রকরণ।
মানচিত্র ভূমির সাংকেতিক প্রতিচ্ছবি। দেশের সার্ভে বিভাগ কর্তৃক অনুমোদিত নির্ধারিত রং এর ব্যবহারে কোন এলাকার ভূমির উল্লেখ যোগ্য প্রাকৃতিক ও কৃত্তিম বস্তু সমূহকে নির্দিষ্ট সাংকেতিক চিহ্নের মাধ্যমে কাগজ বা কাপড়ের উপর ক্ষুদ্রাকারে মাপনী অনুযায়ী অঙ্কন করাকে ম্যাপ বা মানচিত্র বলে।
কোন স্থানে অবস্থিত বস্তু সমূহের অবস্থান এবং সম্পর্কের দৃষ্টিগ্রাহ্য সাধারণ প্রকাশ হচ্ছে মানচিত্র।
অনেক মানচিত্র স্থির, ত্রি-মাত্রিক স্থানের দ্বি-মাত্রিক প্রতিরূপ; আবার কিছু মানচিত্র পরিবর্তনশীল, এমনকি ত্রিমাত্রিকও হতে পারে। মানচিত্র বলতে সাধারণত ভৌগোলিক মানচিত্রকেই বোঝানো হয়, তবে মানচিত্র হতে পারে কোন স্থানের – বাস্তব বা কাল্পনিক, এতে স্কেল বা অন্যান্য অনুষঙ্গের প্রয়োজনীয়তা নাও থাকতে পারে; যেমন, ব্রেন মানচিoত্রকরণ, ডিএনএ মানচিত্রকরণ এবং মহাকাশের মানচিত্রকরণ।
মানচিত্র ভূমির সাংকেতিক প্রতিচ্ছবি। দেশের সার্ভে বিভাগ কর্তৃক অনুমোদিত নির্ধারিত রং এর ব্যবহারে কোন এলাকার ভূমির উল্লেখ যোগ্য প্রাকৃতিক ও কৃত্তিম বস্তু সমূহকে নির্দিষ্ট সাংকেতিক চিহ্নের মাধ্যমে কাগজ বা কাপড়ের উপর ক্ষুদ্রাকারে মাপনী অনুযায়ী অঙ্কন করাকে ম্যাপ বা মানচিত্র বলে।
কোন স্থানে অবস্থিত বস্তু সমূহের অবস্থান এবং সম্পর্কের দৃষ্টিগ্রাহ্য সাধারণ প্রকাশ হচ্ছে মানচিত্র।
অনেক মানচিত্র স্থির, ত্রি-মাত্রিক স্থানের দ্বি-মাত্রিক প্রতিরূপ; আবার কিছু মানচিত্র পরিবর্তনশীল, এমনকি ত্রিমাত্রিকও হতে পারে। মানচিত্র বলতে সাধারণত ভৌগোলিক মানচিত্রকেই বোঝানো হয়, তবে মানচিত্র হতে পারে কোন স্থানের – বাস্তব বা কাল্পনিক, এতে স্কেল বা অন্যান্য অনুষঙ্গের প্রয়োজনীয়তা নাও থাকতে পারে; যেমন, ব্রেন মানচিoত্রকরণ, ডিএনএ মানচিত্রকরণ এবং মহাকাশের মানচিত্রকরণ।
মকরক্রান্তি(Makarkranti) বা মকরক্রান্তি রেখা বা দক্ষিণ বিষুব হল দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত একটি অক্ষাংশীয় বৃত্ত, যার উপরে সূর্য দক্ষিণায়নের সময় (২১ ডিসেম্বর তারিখে) লম্বভাবে কিরণ দেয়। দক্ষিণ গোলার্ধের যত দূরত্ব পর্যন্ত সূর্য লম্বভাবে কিরণ দেয় তার মধ্যে মকরক্রান্তি রেখা সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত। মকরক্রান্তি রেখার সমমান বিশিষ্ট উত্তর গোলার্ধের অক্ষাংশটি হলো কর্কটক্রান্তি রেখা। মকরক্রান্তি রেখা পৃথিবীর মানচিত্রে অঙ্কিত প্রধান পাঁচটি অক্ষাংশের একটি। ১০ জুন ২০১৮ পর্যন্ত রেখাটি ২৩°২৬′১২.৮″ (বা ২৩.৪৩৬৮৯°)[১] অক্ষাংশে বিদ্যমান রয়েছে।
পৃথিবীর আণতির সাথে (ε) ক্রান্তীয় এবং মেরু বৃত্তের সম্পর্ক
মকরক্রান্তি রেখার সম্পূর্ণ দক্ষিণে অবস্থিত দেশগুলোর তালিকা
পৃথিবীর স্থলভাগের অধিকাংশই উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত, তাই মাত্র চারটি দেশ সম্পূর্ণরূপে মকরক্রান্তি রেখার দক্ষিণে অবস্থিত (পৃথিবীর মোট ৭৪ টি দেশ সম্পূর্ণরূপে কর্কটক্রান্তি রেখার উত্তরে অবস্থিত):
মকরক্রান্তি রেখায় অবস্থিত সূর্যঘড়ি, জুজুই প্রদেশ, আর্জেন্টিনা
মকরক্রান্তি বা মকরক্রান্তি রেখা বা দক্ষিণ বিষুব হল দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত একটি অক্ষাংশীয় বৃত্ত, যার উপরে সূর্য দক্ষিণায়নের সময় (২১ ডিসেম্বর তারিখে) লম্বভাবে কিরণ দেয়। দক্ষিণ গোলার্ধের যত দূরত্ব পর্যন্ত সূর্য লম্বভাবে কিরণ দেয় তার মধ্যে মকরক্রান্তি রেখা সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত। মকরক্রান্তি রেখার সমমান বিশিষ্ট উত্তর গোলার্ধের অক্ষাংশটি হলো কর্কটক্রান্তি রেখা। মকরক্রান্তি রেখা পৃথিবীর মানচিত্রে অঙ্কিত প্রধান পাঁচটি অক্ষাংশের একটি। ১০ জুন ২০১৮ পর্যন্ত রেখাটি ২৩°২৬′১২.৮″ (বা ২৩.৪৩৬৮৯°)[১] অক্ষাংশে বিদ্যমান রয়েছে।
ভূগোল এবং পরিবেশ
Makarkranti
পৃথিবী জুড়ে অবস্থান
মূল মধ্যরেখা থেকে শুরু করে পূর্বদিকে মকরক্রান্তি রেখা যেসকল এলাকার উপর দিয়ে গিয়েছেঃ
ভ্লাদিমির পিটার কোপেন (Vladimir Kopen) ভ্লাদিমির পেত্রোভিচ কিওপেন; ৭ অক্টোবর ১৮৪৬ – ২২ জুন ১৯৪০) ছিলেন একজন রুশ-জার্মান ভূগোলবিদ, আবহাওয়াবিদ, জলবায়ুবিদ এবং উদ্ভিদ বিজ্ঞানী। সেন্ট পিটার্সবার্গে পড়াশোনা শেষ করে তিনি তার কর্মজীবনের অধিকাংশ সময় জার্মানি এবং অষ্ট্রিয়ায় অতিবাহিত করেন। বিজ্ঞানে তার উল্ল্যেখযোগ্য অবদান হলো জলবায়ুর শ্রেণীবিভাগ পদ্ধতি প্রণয়ন। তার জলবায়ুর শ্রেণিবিভাগটি কিছুটা পরিমার্জিত রূপে এখনো সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয়।[১] বিজ্ঞানের একাধিক শাখায় কোপেনের উল্ল্যেখযোগ্য অবদান রয়েছে।
ভ্লাদিমির কোপেন রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০ বছর বয়স পর্যন্ত সেখানেই বসবাস করেন। তিনি অষ্ট্রিয়ার গ্রাজ শহরে মৃত্যুবরণ করেন। কোপেনের পিতামহ পেশায় ছিলেন একজন ডাক্তার। রাশিয়ার স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য জার দ্বিতীয় ক্যাথেরিন যেকজন ডাক্তারকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, তিনি ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। পরবর্তীতে কোপেনের দাদা জারের ব্যক্তিগত চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার পিতা, পিয়ত্তর কোপেন ছিলেন একাধারে বিখ্যাত ভূগোলবিদ এবং প্রাচীন রুশ সংস্কৃতির ইতিহাসবিদ ও নৃতত্ত্ববিদ। এছাড়াও তিনি পশ্চিম ইউরোপের স্লাভিস এবং রুশ বিজ্ঞানীদের মাঝে জ্ঞান বিনিময়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।[১]
কোপেন ক্রিমিয়ার সিমফেরোপোলে তার মাধ্যমিক শিক্ষা জীবন শুরু করেন এবং ১৮৬৪ সালে সেন্ট পিটার্সবার্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন। ১৮৬৭ সালে তিনি হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত হন এবং ১৮৭০ সালে লিপজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে তাপমাত্রার প্রভাব এই বিষয়ের ওপরে ডক্টরেট গবেষণা ডিফেন্স দেন। [১]
কোপেন পৃথিবীর জলবায়ুর শ্রেণীবিভাগকে প্রথম প্রকাশ করেন ১৯০১ সালে। কয়েকবার সংশোধনের পর এর চূড়ান্ত সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৯৩৬ সালে। তিনি পাঁচটি প্রধান উদ্ভিজ্জ শ্রেনীর সাথে সম্পর্কিত পাঁচটি প্রধান জলবায়ু অঞ্চল চিহ্নিত করেন:
ক্রান্তীয় বৃষ্টিবহুল জলবায়ু
শুষ্ক জলবায়ু
উষ্ণ তাপমাত্রার বৃষ্টিবহুল জলবায়ু
তীব্র শীত সম্পন্ন বৃষ্টিবহুল জলবায়ু
মেরু জলবায়ু
কর্মজীবন এবং অবদান
Vladimir Kopen
কোপেন আধুনিক আবহাওয়াবিদ্যা এবং জলবায়ু বিজ্ঞানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
Allaby, Michael (2000). Encyclopedia of Weather and Climate. New York: Facts On File, Inc. আইএসবিএন০-৮১৬০-৪০৭১-০.
Köppen, Wladimir and Wegener, Alfred (1924): The Climates of the Geological Past ‘ Facsimile of the German original and English translation of ‘Die Klimate der Geologischen Vorzeit’ Berlin, Stuttgart: Gebr. Borntraeger আইএসবিএন৯৭৮-৩-৪৪৩-০১০৮৮-১
ভ্লাদিমির পিটার কোপেন (রুশ: Влади́мир Петро́вич Кёппен, ভ্লাদিমির পেত্রোভিচ কিওপেন; ৭ অক্টোবর ১৮৪৬ – ২২ জুন ১৯৪০) ছিলেন একজন রুশ-জার্মান ভূগোলবিদ, আবহাওয়াবিদ, জলবায়ুবিদ এবং উদ্ভিদ বিজ্ঞানী। সেন্ট পিটার্সবার্গে পড়াশোনা শেষ করে তিনি তার কর্মজীবনের অধিকাংশ সময় জার্মানি এবং অষ্ট্রিয়ায় অতিবাহিত করেন। বিজ্ঞানে তার উল্ল্যেখযোগ্য অবদান হলো জলবায়ুর শ্রেণীবিভাগ পদ্ধতি প্রণয়ন। তার জলবায়ুর শ্রেণিবিভাগটি কিছুটা পরিমার্জিত রূপে এখনো সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয়।[১] বিজ্ঞানের একাধিক শাখায় কোপেনের উল্ল্যেখযোগ্য অবদান রয়েছে।
পটভূমি এবং শিক্ষাজীবন
Vladimir Kopen
ভ্লাদিমির কোপেন রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০ বছর বয়স পর্যন্ত সেখানেই বসবাস করেন। তিনি অষ্ট্রিয়ার গ্রাজ শহরে মৃত্যুবরণ করেন। কোপেনের পিতামহ পেশায় ছিলেন একজন ডাক্তার। রাশিয়ার স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য জার দ্বিতীয় ক্যাথেরিন যেকজন ডাক্তারকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, তিনি ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। পরবর্তীতে কোপেনের দাদা জারের ব্যক্তিগত চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার পিতা, পিয়ত্তর কোপেন ছিলেন একাধারে বিখ্যাত ভূগোলবিদ এবং প্রাচীন রুশ সংস্কৃতির ইতিহাসবিদ ও নৃতত্ত্ববিদ। এছাড়াও তিনি পশ্চিম ইউরোপের স্লাভিস এবং রুশ বিজ্ঞানীদের মাঝে জ্ঞান বিনিময়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।[১]
কোপেন ক্রিমিয়ার সিমফেরোপোলে তার মাধ্যমিক শিক্ষা জীবন শুরু করেন এবং ১৮৬৪ সালে সেন্ট পিটার্সবার্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন। ১৮৬৭ সালে তিনি হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত হন এবং ১৮৭০ সালে লিপজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে তাপমাত্রার প্রভাব এই বিষয়ের ওপরে ডক্টরেট গবেষণা ডিফেন্স দেন। [১]
কোপেন পৃথিবীর জলবায়ুর শ্রেণীবিভাগকে প্রথম প্রকাশ করেন ১৯০১ সালে। কয়েকবার সংশোধনের পর এর চূড়ান্ত সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৯৩৬ সালে। তিনি পাঁচটি প্রধান উদ্ভিজ্জ শ্রেনীর সাথে সম্পর্কিত পাঁচটি প্রধান জলবায়ু অঞ্চল চিহ্নিত করেন:
ক্রান্তীয় বৃষ্টিবহুল জলবায়ু
শুষ্ক জলবায়ু
উষ্ণ তাপমাত্রার বৃষ্টিবহুল জলবায়ু
তীব্র শীত সম্পন্ন বৃষ্টিবহুল জলবায়ু
মেরু জলবায়ু
কর্মজীবন এবং অবদান
কোপেন আধুনিক আবহাওয়াবিদ্যা এবং জলবায়ু বিজ্ঞানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
Allaby, Michael (2000). Encyclopedia of Weather and Climate. New York: Facts On File, Inc. আইএসবিএন০-৮১৬০-৪০৭১-০.
Köppen, Wladimir and Wegener, Alfred (1924): The Climates of the Geological Past ‘ Facsimile of the German original and English translation of ‘Die Klimate der Geologischen Vorzeit’ Berlin, Stuttgart: Gebr. Borntraeger আইএসবিএন৯৭৮-৩-৪৪৩-০১০৮৮-১
ভৌগোলিক স্থানাঙ্ক ব্যবস্থা অথবা Geographic Co-ordinate System সংক্ষেপে GCS হল তিনটি স্থানাঙ্ক মানের সাহায্যে পৃথিবীর যেকোন স্থানের অবস্থান সুনির্দিষ্ট করার একটি ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার ফলে পৃথিবীর যেকোন স্থানের একটি অনন্য স্থানাঙ্ক থাকে। স্থানাঙ্ক ব্যবস্থার তিনটি মাত্রা হচ্ছে অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা বা গভীরতা।
প্রাচীন ব্যাবিলিয়ন তত্ত্ব, যা পরে গ্রিক দার্শনিক ভুগোলবিদ টলেমি পরিবর্ধিত করেছেন, অনুসারে পূর্ণ বৃত্ত ৩৬০ ডিগ্রীতে (৩৬০°) বিভক্ত।
অক্ষাংশ (latitude) হচ্ছে স্থানাঙ্ক ব্যবস্থায়, কোন স্থান বিষুবীয় তলের কেন্দ্রের সাথে যে কোণ উৎপন্ন করে তার পরিমাপ। একই অক্ষাংশ বিশিষ্ট সকল বিন্দুকে যোগ করে যে রেখা পাওয়া যায় সেটি ভূপৃষ্ঠের উপরে অবস্থিত একটি বৃত্ত এবং বিষুবীয় অঞ্চলের পরিধির সাথে সমান্তরাল। পৃথিবীর দু মেরুতে এই রেখাগুলো বিন্দুবৃত্ত গঠন করে। প্রতিটি মেরুর অক্ষাংশের পরিমাপ হচ্ছে ৯০ ডিগ্রী: উত্তর মেরু ৯০° উ; দক্ষিণ মেরু ৯০° দ। ০° সমান্তরাল অক্ষাংশকে বিষুব রেখা বলা হয়। এই রেখাটিই পৃথিবীকে উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধে বিভক্ত করেছে
দ্রাঘিমাংশ (longitude) স্থানাঙ্ক ব্যবস্থার কেন্দ্রে পূর্বে বা পশ্চিমে, ভূপৃষ্ঠের কোন বিন্দু বিষুব রেখার সাথে উল্লম্ব কোন পরিধির (যা উত্তর ও দক্ষিণ মেরুকে ছেদ করেছে) সাথে যে কোণ উৎপন্ন করে তার পরিমাপ। একই দ্রাঘিমাংশের সমস্ত বিন্দুকে নিয়ে যে রেখা পাওয়া যায় তাদের বলে মেরিডিয়ান বা ভূ-মধ্য রেখা। প্রতিটি ভূ-মধ্য রেখা একটি অর্ধবৃত্ত কিন্তু কেউ কারো সমান্তরাল নয়। সংজ্ঞানুসারে প্রতিটি রেখা উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে মিলিত হয়। ঐতিহাসিকভাবে যে ভূ-মধ্য রেখাটি রয়াল অবজারভেটরি, গ্রীনউইচ (যুক্তরাজ্যেরলন্ডনের কাছে) এর মধ্যে দিয়ে গেছে সেটিকে শূন্য-দ্রাঘিমাংশ বা প্রামাণ্য ভূ-মধ্য রেখা ধরা হয়।
এই দুটি কোণের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের যেকোন স্থানের আনুভূমিক অবস্থান নির্ণয় করা সম্ভব।
উদাহরণস্বরুপ ঢাকার অক্ষাংশ ২৩°৪২′০″ উত্তর এবং দ্রাঘিমাংশ ৯০°২২′৩০″ পূর্ব (২৩°৪২′০″ উত্তর ৯০°২২′৩০″ পূর্ব)। সুতরাং পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে বিষুবরেখার ২৩°৪২′০″ উত্তরে ও গ্রীনউইচ থেকে ৯০°২২′৩০″ পূর্বে অঙ্কিত কোন ভেক্টর রেখা ঢাকার মাঝ দিয়ে যাবে।
সাধারণত ডিগ্রীকে মিনিটে (এক ডিগ্রীর ৬০ ভাগের একভাগ, সংকেত ′ অথবা “m”) এবং সেকেন্ডে (এক মিনিটের ৬০ ভাগের একভাগ, সংকেত ″ অথবা “s”) ভাগ করেও প্রকাশ করা হয়। ডিগ্রী প্রকাশের কয়েকটি রীতি রয়েছে:
DMS ডিগ্রী:মিনিট:সেকেন্ড (49°30’00”-123d30m00s)
DM ডিগ্রী:মিনিট (49°30.0′-123d30.0m)
DD দশমিক ডিগ্রী (49.5000°-123.5000d), সাধারণত দশমিকের পর ৪ ঘর পর্যন্ত।
DM অথবা DMS থেকে DD তে পরিনত করতে ব্যবহার করতে হয়, দশমিক ডিগ্রী = ডিগ্রীর পূর্ণসংখ্যা + মিনিটকে ৬০ দিয়ে ভাগ করে প্রাপ্ত ভাগফল + সেকেন্ডকে ৩৬০০ দিয়ে ভাগ করে প্রাপ্ত ভাগফল। DMS সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় এবং মানচিত্র, গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বা জিপিএস প্রভৃতিতে এটি দেখা যায়।
অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ বিভিন্ন স্থানাঙ্ক ব্যবস্থার জন্য বিভিন্ন হতে পারে। এরকম ভিন্ন স্থানাঙ্ক ব্যবস্থার উদাহরণ হচ্ছে WGS 84 যা সকল জিপিএস যন্ত্রপাতিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। সহজ ভাষায়, বিভিন্ন স্থানাঙ্ক ব্যবস্থার জন্য একই স্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশের মান আলাদা হতে পারে।
ভৌগোলিক স্থানাঙ্ক ব্যবস্থা অথবা Geographic Co-ordinate System সংক্ষেপে GCS হল তিনটি স্থানাঙ্ক মানের সাহায্যে পৃথিবীর যেকোন স্থানের অবস্থান সুনির্দিষ্ট করার একটি ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার ফলে পৃথিবীর যেকোন স্থানের একটি অনন্য স্থানাঙ্ক থাকে। স্থানাঙ্ক ব্যবস্থার তিনটি মাত্রা হচ্ছে অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা বা গভীরতা।
প্রথম ও দ্বিতীয় মাত্রা: অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশ
অক্ষাংশ ফাই (φ) এবং দ্রাঘিমাংশ ল্যাম্বডা (λ)
Geographic coordinate system
প্রাচীন ব্যাবিলিয়ন তত্ত্ব, যা পরে গ্রিক দার্শনিক ভুগোলবিদ টলেমি পরিবর্ধিত করেছেন, অনুসারে পূর্ণ বৃত্ত ৩৬০ ডিগ্রীতে (৩৬০°) বিভক্ত।
ভৌগোলিক স্থানাঙ্ক ব্যবস্থা অথবা Geographic Co-ordinate System সংক্ষেপে GCS হল তিনটি স্থানাঙ্ক মানের সাহায্যে পৃথিবীর যেকোন স্থানের অবস্থান সুনির্দিষ্ট করার একটি ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার ফলে পৃথিবীর যেকোন স্থানের একটি অনন্য স্থানাঙ্ক থাকে। স্থানাঙ্ক ব্যবস্থার তিনটি মাত্রা হচ্ছে অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা বা গভীরতা।
প্রথম ও দ্বিতীয় মাত্রা: অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশ
Geographic coordinate system
অক্ষাংশ ফাই (φ) এবং দ্রাঘিমাংশ ল্যাম্বডা (λ)
প্রাচীন ব্যাবিলিয়ন তত্ত্ব, যা পরে গ্রিক দার্শনিক ভুগোলবিদ টলেমি পরিবর্ধিত করেছেন, অনুসারে পূর্ণ বৃত্ত ৩৬০ ডিগ্রীতে (৩৬০°) বিভক্ত।
Geographic coordinate system
ভৌগোলিক স্থানাঙ্ক ব্যবস্থা অথবা Geographic Co-ordinate System সংক্ষেপে GCS হল তিনটি স্থানাঙ্ক মানের সাহায্যে পৃথিবীর যেকোন স্থানের অবস্থান সুনির্দিষ্ট করার একটি ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার ফলে পৃথিবীর যেকোন স্থানের একটি অনন্য স্থানাঙ্ক থাকে। স্থানাঙ্ক ব্যবস্থার তিনটি মাত্রা হচ্ছে অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা বা গভীরতা।
প্রথম ও দ্বিতীয় মাত্রা: অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশ
অক্ষাংশ ফাই (φ) এবং দ্রাঘিমাংশ ল্যাম্বডা (λ)
প্রাচীন ব্যাবিলিয়ন তত্ত্ব, যা পরে গ্রিক দার্শনিক ভুগোলবিদ টলেমি পরিবর্ধিত করেছেন, অনুসারে পূর্ণ বৃত্ত ৩৬০ ডিগ্রীতে (৩৬০°) বিভক্ত।
ভৌগোলিক গঠন(Geographical structure) হলো পৃথিবীর প্রাকৃতিকভাবে গঠিত গঠনাকৃতি। প্রাকৃতিক ভৌগোলিক গঠনগুলো ভূমিরূপ এবং বাস্তুতন্ত্র নিয়ে গঠিত। উদাহরণস্বরূপ, ভূখণ্ডের ধরন (পরিবেশের প্রাকৃতিক উপাদান) হলো প্রাকৃতিক ভৌগোলিক গঠন। বিপরীতে, মানব বসতি বা অন্যান্য প্রকৌশলগত রূপগুলি কৃত্রিম ভৌগোলিক গঠনের ধরন হিসাবে বিবেচিত হয়।
আবাসকে বর্ণনা করার জন্য দুটি পৃথক শব্দ রয়েছে: বাস্তুসংস্থান এবং বায়োম। একটি বাস্তুতন্ত্র হল জীবের একটি সম্প্রদায়।[১] বিপরীতে, বায়োমগুলি বিশ্বের বৃহত্ অঞ্চল দখল করে থাকে এবং প্রায়শঃই পর্বতশ্রেণীসহ বিভিন্ন ধরনের ভৌগোলিক গঠনকে ধারণ করে।[২]
একটি বাস্তুসংস্থানের মধ্যে জৈব বৈচিত্র্য হলো আন্তঃআলিয়া, স্থলজগত, সামুদ্রিক এবং অন্যান্য জলজ বাস্তুতন্ত্রসহ সমস্ত উত্স থেকে জীবিত প্রাণীর মধ্যকার পরিবর্তনশীলতা।[৩] জীবিত জৈব পদার্থগুলো তারা যে পরিবেশে থাকে সেখানকার প্রতিটি উপাদানের সাথে ঘনিষ্টভাবে সম্পর্কিত থাকে এবং বাস্তুতন্ত্র এমন পরিস্থিতিকে বিবৃত করে যেখানে জীব এবং তাদের পরিবেশের মধ্যকার আন্তঃসম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে।
বায়োম দ্বারা বাস্তুতন্ত্রের একই প্রজাতির গাছপালা, প্রাণী এবং মাটিতে বিস্তৃত জৈব উপাদানসমূহের বৃহত্ অঞ্চলগুলিকে নির্দেশ কা হয়ে থাকে।[৪] বায়োমকে গাছের কাঠামো (যেমনঃ বৃক্ষ, ঝোপঝাড় এবং ঘাস), পাতার ধরন (যেমনঃ ব্রডলিফ এবং সুইডাফ), গাছের ব্যবধান (বন, কাঠের ভূমি, সাভানা) এবং জলবায়ু প্রভৃতির উপর ভিত্তি করে সংজ্ঞায়িত করা হয়। বাস্তুঅঞ্চলের মতো করে জিনগত, করশাস্ত্রীয় বা ঐতিহাসিক মিল দ্বারা বায়োমগুলি সংজ্ঞায়িত হয় না। বায়োমগুলি প্রায়শঃই পরিবেশগত উত্তরসূরি এবং বিবিধ উদ্ভিদের পারস্পরিক সম্মিলনে দিক থেকে চিহ্নিত হয়।
একটি ভূমিরূপ একটি ভূতাত্ত্বিক একক নিয়ে গঠিত এবং ভূভাগের অংশ হিসাবে ভূ-পৃষ্ঠের পৃষ্ঠতল এবং অবস্থান দ্বারা মূলতঃ সংজ্ঞায়িত হয় এবং এরা সাধারণত ভূবিদ্যার একটি উপাদান। ভূমিরূপকে উচ্চতা, ঢাল, স্থিতি, স্তরায়ণ, শিলার প্রকরণ এবং মাটির ধরনের মতো বৈশিষ্ট্যগুলি দ্বারা শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে বার্ম, স্তুপ, পাহাড়, খাড়া ভূমি, উপত্যকা, নদী এবং আরও অনেক উপাদান। মহাসাগর এবং মহাদেশগুলি সর্বোচ্চ ধাপের ভূমিরূপ। জলভাগ হলো জলের কোনও উল্লেখযোগ্য পরিমাণের জমে থাকা, যা সাধারণত পৃথিবীকে আবৃত করে রাখে। “জলভাগ” শব্দটি দ্বারা প্রায়শঃই মহাসাগর, সমুদ্র এবং হ্রদকে বুঝানো হয়; তবে এর মধ্যে জলের ছোট ছোট অংশগুলো, যেমনঃ পুকুর, ছড়া বা জলাভূমিও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। নদী, স্রোতস্বীনি, খাল এবং অন্যান্য ভৌগোলিক গঠন যেখানে জল এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রবাহিত হয় তাদেরকে সর্বদা জলভাগ হিসাবে বিবেচনা করা হয় না, তবে এদেরকে জল দ্বারা গঠিত ভৌগোলিক গড়ন হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
একটি বসতি হল একটি স্থায়ী বা অস্থায়ী সম্প্রদায় যেখানে লোকজন বাস করে। বসতির ক্ষেত্রের মধ্যে স্বল্প সংখ্যক দল একত্রিত হয়ে বসবাস করা থেকে শুরু করে চতুর্পার্শ্বে নগর-অঞ্চলগুলোর সাথে সংযুক্ত বৃহত্ মহানগরও অন্তর্ভুক্ত। অন্যান্য ভূদৃশ্য গঠন, যেমনঃ রাস্তাঘাট, বেষ্টনী, মাঠ, সীমানা তীর এবং গর্ত, পুকুর, উদ্যান এবং কাঠ, কল, প্রাসাদ, পরিখা এবং উপাসনালয়কে বসতির অংশ হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।[৫]
প্রকৌশলগত ভৌগোলিক গঠনের মধ্যে মহাসড়ক, সেতু, বিমানবন্দর, রেলপথ, ভবনসমূহ, বাঁধসমূহ এবং জলাধারসমূহ অন্তর্ভুক্ত এবং নৃমন্ডলের অংশ কারণ এগুলি মানব-নির্মিত ভৌগোলিক গড়ন।
মানচিত্রাঙ্কনিক গঠন এমন একটি বিমূর্ত ভৌগোলিক গঠন, যা মানচিত্রে প্রদর্শিত হয়, কিন্তু গ্রহে এরা অবস্থিত হলেও তা বাস্তবে দৃষ্ট হয় না। উদাহরণস্বরূপ, অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ, নিরক্ষীয় অঞ্চল এবং প্রধান অক্ষ পৃথিবীর মানচিত্রে প্রদর্শিত হয় কিন্তু এটি বাস্তবে বিদ্যমান নয়। এটি একটি তাত্ত্বিক রেখা যা তথ্যসূত্র, দিক নির্নয় এবং পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত হয়।
ভৌগোলিক গঠন হলো পৃথিবীর প্রাকৃতিকভাবে গঠিত গঠনাকৃতি। প্রাকৃতিক ভৌগোলিক গঠনগুলো ভূমিরূপ এবং বাস্তুতন্ত্র নিয়ে গঠিত। উদাহরণস্বরূপ, ভূখণ্ডের ধরন (পরিবেশের প্রাকৃতিক উপাদান) হলো প্রাকৃতিক ভৌগোলিক গঠন। বিপরীতে, মানব বসতি বা অন্যান্য প্রকৌশলগত রূপগুলি কৃত্রিম ভৌগোলিক গঠনের ধরন হিসাবে বিবেচিত হয়।
ভৌগোলিক গঠন হলো পৃথিবীর প্রাকৃতিকভাবে গঠিত গঠনাকৃতি। প্রাকৃতিক ভৌগোলিক গঠনগুলো ভূমিরূপ এবং বাস্তুতন্ত্র নিয়ে গঠিত। উদাহরণস্বরূপ, ভূখণ্ডের ধরন (পরিবেশের প্রাকৃতিক উপাদান) হলো প্রাকৃতিক ভৌগোলিক গঠন। বিপরীতে, মানব বসতি বা অন্যান্য প্রকৌশলগত রূপগুলি কৃত্রিম ভৌগোলিক গঠনের ধরন হিসাবে বিবেচিত হয়।
ভৌগোলিক গঠন হলো পৃথিবীর প্রাকৃতিকভাবে গঠিত গঠনাকৃতি। প্রাকৃতিক ভৌগোলিক গঠনগুলো ভূমিরূপ এবং বাস্তুতন্ত্র নিয়ে গঠিত। উদাহরণস্বরূপ, ভূখণ্ডের ধরন (পরিবেশের প্রাকৃতিক উপাদান) হলো প্রাকৃতিক ভৌগোলিক গঠন। বিপরীতে, মানব বসতি বা অন্যান্য প্রকৌশলগত রূপগুলি কৃত্রিম ভৌগোলিক গঠনের ধরন হিসাবে বিবেচিত হয়।
ভূ-অভ্যন্তরে শিলায় পীড়নের জন্য যে শক্তির সঞ্চয় ঘটে, সেই শক্তির হঠাৎ মুক্তি ঘটলে ভূ-পৃষ্ঠ ক্ষণিকের জন্য কেঁপে ওঠে এবং ভূ-ত্বকের কিছু অংশ আন্দোলিত হয়। এই রূপ আকস্মিক ও ক্ষণস্থায়ী কম্পনকে ভূমিকম্প বলে। কম্পন-তরঙ্গ থেকে যে শক্তির সৃষ্টি হয়, তা ভূমিকম্পের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এই তরঙ্গ ভূ-গর্ভের কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চলে উৎপন্ন হয় এবং উৎসস্থল থেকে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ভূমিকম্প সাধারণত কয়েক সেকেণ্ড থেকে ১/২ মিনিট স্থায়ী হয়।তবে কিছু কিছু ভূমিকম্প ৮-১০ মিনিটও স্থায়ী হয়।মাঝে মাঝে কম্পন এত দুর্বল হয় যে, তা অনুভব করা যায় না। কিন্তু শক্তিশালী ও বিধ্বংসী ভূমিকম্পে ঘর-বাড়ি ও ধন-সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং অসংখ্য প্রাণহানি ঘটে।
সাধারণ জ্ঞানে ভূমিকম্প শব্দটি দ্বারা যে কোন প্রকার ভূকম্পন জনিত ঘটনাকে বোঝায় – সেটা প্রাকৃতিক অথবা মনুষ্য সৃষ্ট যাই হোক না কেন। বেশিরভাগ ভূমিকম্পের কারণ হল ভূগর্ভে ফাটল ও স্তরচ্যুতি হওয়া কিন্তু সেটা অন্যান্য কারণ যেমন অগ্ন্যুৎপাত, ভূমিধস, খনিতে বিষ্ফোরণ বা ভূগর্ভস্থ নিউক্লিয়ার গবেষণায় ঘটানো আণবিক পরীক্ষা থেকেও হতে পারে। ভূমিকম্পের প্রাথমিক ফাটলকে বলে ফোকাস বা হাইপোসেন্টার। এপিসেন্টার হল হাইপোসেন্টার বরাবর মাটির উপরিস্থ জায়গা।
ভূমিকম্পের ফলাফলঃ
ভূমিকম্পের ফলাফল ভূমিকম্পের ফলে পৃথিবীতে বহু পরিবর্তন ও ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। ভূমিকম্পের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ফল সম্বন্ধে নিচে আলোচনা করা হলো।
ভূমিকম্পের ফলে ভূত্বকে অসংখ্য ফাটল এবং চ্যুতির সৃষ্টি হয়। কখনো সমুদ্রতলের অনেক স্থান উপরে ভেসে ওঠে। আবার কখনো স্থলভাগের অনেক স্থান সমুদ্রতলে ডুবে যায়। অনেক সময় নদীর গতি পরিবর্তিত বা বন্ধ হয়ে যায়। ভূমিকম্পের ঝাকুনিতে পর্বতগাত্র থেকে বৃহৎ বরফখণ্ড হঠাৎ নিচে পতিত হয় এবং পর্বতের পাদদেশে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। ভূমিকম্পের ধাক্কায় সমুদ্রের পানি তীর থেকে নিচে নেমে যায় এবং পরক্ষণেই ভীষণ গর্জন সহকারে ১৫-২০ মিটার উঁচু হয়ে ঢেউয়ের আকারে উপকূলে এসে আছড়ে পড়ে। এ ধরনের জলোচ্ছ্বাসকে সুনামি বলে। ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ভূকম্পনের ফলে সৃষ্ট সুনামির আঘাতে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা, থাইল্যাণ্ড, ভারত প্রভৃতি দেশে ব্যাপক জান-মালের ক্ষতি হয়। ভূমিকম্পের ফলে কখনো উচ্চভূমি সমুদ্রের পানিতে নিমজ্জিত হয়। আবার কখনো সমুদ্রের তলদেশের কোনো স্থান উঁচু হয়ে সমুদ্রে দ্বীপের সৃষ্টি করে। ভূমিকম্পের ঝাকুনিতে ভূপৃষ্ঠে অনুভূমিক পার্শ্বচাপের প্রভাবে কুঁচকে ভাঁজের সৃষ্টি হয়। ভূমিকম্পের ফলে পার্বত্য অঞ্চল থেকে ধস নেমে নদীর গতি রোধ করে হ্রদের সৃষ্টি হয়। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দুর্ভিক্ষ ও মহামারিতে বহু প্রাণহানি ঘটে। ভূমিকম্পে রেলপথ, সড়কপথ, পাইপ লাইন প্রভৃতি ভেঙে যায় এবং যাতায়াত ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে। টেলিফোন লাইন, ভূমিকম্প সংঘটিত হলে ভূপৃষ্ঠের বড় বাধ, কালভার্ট, সেতু প্রভৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও অনেক সময় সুনামির সৃষ্টি হয়।
ভূমিকম্পের কেন্দ্র
পৃথিবীর অভ্যন্তরে যেখান থেকে ভূকম্প-তরঙ্গ উৎপন্ন হয়, তাকে ভূমিকম্পের কেন্দ্র বলে। এই কেন্দ্র থেকে কম্পন ভিন্ন ভিন্ন তরঙ্গের মাধ্যমে সব দিকে ছড়িয়ে পড়ে। শিলার পীড়ন-ক্ষমতা সহ্যসীমার বাহিরে চলে গেলে শিলায় ফাটল ধরে ও শক্তির মুক্তি ঘটে। তাই প্রায়শই ভূমিকম্পের কেন্দ্র চ্যুতিরেখা অংশে অবস্থান করে। সাধারণত ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১৬ কিমি.-র মধ্যে এই কেন্দ্র অবস্থান করে। তবে ৭০০ কিমি. গভীরে গুরুমণ্ডল (Mantle) থেকেও ভূ-কম্পন উত্থিত হতে পারে।
ভূমিকম্পের কারণ
সাধারণত তিনটি প্রধান কারণে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়ে থাকে।
ভূপৃষ্ঠজনিত
আমাদের ভূ -পৃষ্ঠ অনেকগুলো প্লেট-এর সমন্বয়ে গঠিত। এই প্লেটগুলো একটি আরেকটির থেকে আলাদা থাকে ফল্ট বা ফাটল দ্বারা। এই প্লেটগুলোর নিচেই থাকে ভূ-অভ্যন্তরের সকল গলিত পদার্থ। কোনও প্রাকৃতিক কারণে এই গলিত পদার্থগুলোর স্থানচ্যুতি ঘটলে প্লেটগুলোরও কিছুটা স্থানচ্যুতি ঘটে। এ কারণে একটি প্লেটের কোনও অংশ অপর প্লেটের তলায় ঢুকে যায়, যার ফলে ভূমিতে কম্পন সৃষ্টি হয়। আর এই কম্পনই ভূমিকম্প রূপে আমাদের নিকট আবির্ভূত হয়।
আগ্নেয়গিরিজনিত
কখনো কখনো আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ ও গলিত লাভা উৎক্ষিপ্ত হওয়ার কারণে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হতে পারে।
শিলাচ্যুতিজনিত
কখনো কখনো পাহাড় কিংবা উচু স্থান থেকে বৃহৎ পরিসরে শিলাচ্যুতিজনিত কারণে ভূমিকম্প হতে পারে।
ভূপাত
কোনো কারণে পাহাড়-পর্বত হতে বৃহৎ শিলাখণ্ড ভূত্বকের ওপর ধসে পড়ে ভূমিকম্প হয়। সাধারণত ভাঁজ পর্বতের নিকট অধিক ভূমিকম্প হয়।
তাপ বিকিরণ
ভূত্বক তাপ বিকিরণ করে সংকুচিত হয়ে পড়লে ফাটল ও ভাঁজের সৃষ্টি হয়ে ভূমিকম্প হয়।
ভূগর্ভস্থ বাষ্প
নানা কারণে ভূগর্ভে বাষ্পের সৃষ্টি হয়। এই বাষ্প ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলে তা ভূত্বকের নিম্নভাগে ধাক্কা দেয়; ফলে প্রচণ্ড ভূকম্পন অনুভূত হয় এবং ভূমিকম্প হয়।
হিমবাহের প্রভাবে
কখনো কখনো প্রকাণ্ড হিমবাহ পর্বতগাত্র হতে হঠাৎ নিচে পতিত হয়। এতে ভূত্বক কেঁপে ওঠে এবং ভূমিকম্পনের সৃষ্টি হয়।
বিভিন্ন দেশে ভূমিকম্প
এশিয়া
বাংলাদেশ
বাংলাদেশের ভূমিকম্প বলতে আসলে বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন এলাকার ভূমিকম্পকে বোঝায়। কারণ বাংলাদেশ আসলে ভারত ও মায়ানমারের ভূঅভ্যন্তরের দুটি ভূচ্যুতির (faultline) প্রভাবে আন্দোলিত হয়। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ, ভারতীয়, ইউরেশীয় এবং বার্মার (মায়ানমারের) টেকটনিক প্লেটের মধ্যে অবস্থান করছে। ভারতীয় এবং ইউরেশীয় প্লেট দুটি (১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে) দীর্ঘদিন যাবৎ হিমালয়ের পাদদেশে আটকা পড়ে আছে, অপেক্ষা করছে বড় ধরনের নড়াচড়ার,[১] অর্থাৎ বড় ধরনের ভূ-কম্পনের। বাংলাদেশে ৮টি ভূতাত্ত্বিক চ্যুতি এলাকা বা ফল্ট জোন সচল অবস্থায় রয়েছে, যথা: বগুড়া চ্যুতি এলাকা, রাজশাহীর তানোর চ্যুতি এলাকা, ত্রিপুরা চ্যুতি এলাকা, সীতাকুণ্ড টেকনাফ চ্যুতি এলাকা, হালুয়াঘাট চ্যুতির ডাওকী চ্যুতি এলাকা, ডুবরি চ্যুতি এলাকা, চট্টগ্রাম চ্যুতি এলাকা, সিলেটের শাহজীবাজার চ্যুতি এলাকা (আংশিক-ডাওকি চ্যুতি) এবং রাঙামাটির বরকলে রাঙামাটি চ্যুতি এলাকা।[২]
বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন এলাকার ৮৫ বছরের ভূমিকম্পের সংক্ষিপ্ত রেকর্ড।
প্রাকৃতিকভাবেই কার্বন চক্রের প্রভাবে ভূমিকম্প হয়ে থাকে, বাংলাদেশেও তার ব্যতিক্রম হয় না। এদেশের ভিতরে ও পার্শ্ববর্তী এলাকার বিগত প্রায় ২৫০ বছরের ভূমিকম্পের নথিভুক্ত তালিকা পাওয়া যায়। এ তালিকা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে ২০০৪ পর্যন্ত বাংলাদেশে সংঘটিত হয়েছে ১০০’রও বেশি ভূমিকম্প; তন্মধ্যে ৬৫টিরও বেশি ঘটেছে ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দের পরে। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, বিগত ৩০ বছরে (পরিপ্রেক্ষিত ২০০৪) ভূমিকম্প সংঘটনের মাত্রা বেড়েছে।[৪]
বাংলাদেশে ৮টি ভূতাত্ত্বিক চ্যুতি এলাকা বা ফল্ট জোন সচল অবস্থায় রয়েছে, যথা: বগুড়া চ্যুতি এলাকা, রাজশাহীর তানোর চ্যুতি এলাকা, ত্রিপুরা চ্যুতি এলাকা, সীতাকুণ্ড টেকনাফ চ্যুতি এলাকা, হালুয়াঘাট চ্যুতির ডাওকী চ্যুতি এলাকা, ডুবরি চ্যুতি এলাকা, চট্টগ্রাম চ্যুতি এলাকা, সিলেটের শাহজীবাজার চ্যুতি এলাকা (আংশিক-ডাওকি চ্যুতি) এবং রাঙামাটির বরকলে রাঙামাটি চ্যুতি এলাকা।[২] বাংলাদেশ, ভারতীয়, ইউরেশীয় এবং বার্মার (মায়ানমারের) টেকটনিক প্লেটের মধ্যে অবস্থান করছে। ভারতীয় এবং ইউরেশীয় প্লেট দুটি (১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে) দীর্ঘদিন যাবৎ হিমালয়ের পাদদেশে আটকা পড়ে আছে, অপেক্ষা করছে বড় ধরনের নড়াচড়ার,[১] অর্থাৎ বড় ধরনের ভূ-কম্পনের। এই সূত্রে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লেমন্ট-ডোহের্টি আর্থ অবজারভেটরির ভূতাত্ত্বিকরা জানাচ্ছেন (জুলাই ২০১৬) এতদিন প্রয়োজনীয় তথ্য ও সংশ্লিষ্ট মডেলের অভাবে সম্ভাব্য ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ণয় করা যাচ্ছিল না। এবার তারা সেটি করতে পেরেছেন। তারা জানাচ্ছেন, বাংলাদেশের নিচে জমে ওঠা টেকটনিক প্লেটে চাপ জমে উঠছে কম করে বিগত ৪০০ বছর ধরে। এই চাপ যখন মুক্ত হবে তখন সৃষ্ট ভূমিকম্পের মাত্রা দাঁড়াবে প্রায় ৮.২ রিখটার, এমনকী তা ৯ রিখটারেও পৌঁছতে পারে। প্রায় ১৪ কোটি মানুষ এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।[৫]
১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশেরশ্রীমঙ্গলে ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়[৩][৪] এবং ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে হয় ৬.০ মাত্রার ভূমিকম্প[৬]। এমনকি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (BUET) মানমন্দিরে জানুয়ারি ২০০৬ থেকে মে ২০০৯ পর্যন্ত ৪ বছরে, রিখটার স্কেলে ৪ মাত্রার ৮৬টি ভূ-কম্পন নথিভুক্ত করা হয়। এই সময়ের মধ্যে ৫ মাত্রার চারটি ভূ-কম্পনও ধরা পড়ে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের মানমন্দিরে মে ২০০৭ থেকে জুলাই ২০০৮ পর্যন্ত কমপক্ষে ৯০টি ভূ-কম্পন নথিভুক্ত করা হয়, তন্মধ্যে ৯টিরই রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিলো ৫-এর উপরে, এবং সেগুলোর ৯৫%-এরই উৎপত্তিস্থল ছিলো ঢাকা শহরের ৬০০ কিলোমিটারের মধ্যে।[১] অতীতের এসব রেকর্ড থেকে দেখা যায় ভূমিকম্পের মাত্রা না বাড়লেও ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে ভূমিকম্প সংঘটনের হার বেড়েছে[৪], অর্থাৎ ঘন ঘন স্বল্প মাত্রার ভূমিকম্প হচ্ছে। মতবিরোধ থাকলেও[৭] অনেক ভূতাত্ত্বিক ছোট ছোট ভূমিকম্প সংঘটন বড় ধরনের ভূমিকম্পের পূর্বাভাস বলে উল্লেখ করেন।[৮] অতীতের এসব রেকর্ডকে প্রাধান্য দিয়ে গবেষকরা জানিয়েছেন যে কোনও সময় বাংলাদেশে রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে।[১][৬]
বাংলাদেশকে ভূমিকম্পের তীব্রতার ভিত্তিতে তিনটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। (তথ্যসূত্র:GSB)
জোন-১-এ অবস্থিত বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চল ভূমিকম্পজনিত কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে। কারণ সিলেট–সুনামগঞ্জ ও ভারতেরশিলংকে বিভক্ত করেছে ডাওকি নদী, আর এই ডাওকি নদী ডাওকি চ্যুতি (Dauki fault) বরাবর অবস্থান করছে, আর ভূতাত্ত্বিক চ্যুতিগুলোই বড় ধরনের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল।[৬] সিলেটের সীমান্ত এলাকাবর্তী এধরনের চ্যুতিগুলোর কোনো কোনোটিতে সাব-ডাউন ফল্ট রয়েছে, যেগুলো ভূমিকম্প ঘটালে বড়লেখার পাথারিয়া পাহাড় সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে।[৯] কারণ এতে করে পাথারিয়া অন্তর্চ্যুতি (Patharia anticline)[১০] নিচের দিকে মোচড় দিতে পারে।
জোন-২
জোন-২-এ অবস্থিত রাজশাহী জেলা, ভূতাত্ত্বিকভাবে সক্রীয় ভূমিকম্প এলাকায় অবস্থিত এবং তাই ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ভূমিকম্পে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[১১] সক্রীয় ভূমিকম্প এলাকায় থাকার কারণে এই অঞ্চলও যেকোনো সময় মারাত্মক ভূমিকম্পের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হতে পারে।
জোন-২-তে থাকা রাজধানী শহর ঢাকায় সে হিসেবে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হবার মতো ভূতাত্ত্বিক ফাটল রেখা বা ফল্টলাইন নেই। তবে ঢাকা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে মধুপুর অঞ্চলে ৭ থেকে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হবার মতো ভূতাত্ত্বিক ফাটল রেখা রয়েছে। সরকারি তথ্যসূত্রমতে, ঢাকায় রাতের বেলায় ৭ থেকে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ৯০,০০০ লোক হতাহত হবে। দিনের বেলায় হলে হতাহতের সংখ্যা হবে ৭০,০০০। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন অঞ্চলের ৩,২৬,০০০ ভবনের উপর পরিচালিত সমীক্ষা থেকে দেখা গেছে, এমন তীব্রতার ভূমিকম্পে প্রায় ৭২,০০০ ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে, আরও ৮৫,০০০ ভবন মাঝারি ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শুধু দালান ভাঙার কারণে ক্ষয়ক্ষতি হবে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমতুল্য সম্পদ।[১২] এমনকি ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে জাতিসংঘ পরিচালিত রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট টুলস ফর ডায়াগনসিস অফ আরবান এরিয়াস এগেইন্সট সাইসমিক ডিযাসটার (রেডিয়াস) জরিপে ভূতাত্ত্বিক ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্বের ২০টি শহরের মধ্যে ঢাকাও অন্যতম।[১৩]
এছাড়াও জাপানেরটোকিও ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (টিআইটি)-র সহায়তায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত এক সাম্প্রতিক (২০১০) গবেষণায় দেখা গেছে ঢাকার ভূমিতে বিভিন্ন প্রকারের মাটি (লাল মাটি, নরম মাটি ইত্যাদি) রয়েছে। ঢাকার সম্প্রসারিত অংশে জলাশয় ভরাট করে গড়ে তোলা আবাসন এলাকা রয়েছে। ভূমিকম্পের সময় নরম মাটি ও ভরাট করা এলাকার মাটি ভূমিকম্পের কম্পন তরঙ্গকে বাড়িয়ে দেয়, ফলে ভূমিকম্পের তীব্রতা বাড়ে। মাটির বৈশিষ্ট্যের সাথে যোগ হয় ভবনের বা স্থাপনার কাঠামো। এই দুইয়ের সম্মিলনে ভূমিকম্পের তীব্রতা ও ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাব্যতা বাড়ে-কমে। গবেষকরা তাই ঢাকার বর্ধিতাংশের আলগা মাটিসমৃদ্ধ জনবসতিকে যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন।[১৩]
পৌরাণিক কাহিনীতে ভূমিকম্প
ভূমিকম্প নিয়ে নানা ধরনের লোককাহিনী প্রচলিত রয়েছে। এদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে…
গ্রিক জাতির ধারণা অনুযায়ী তাবৎ ভূমিকম্পের জন্য দায়ী ভূমিকম্পের দেবতা পোসাইডন। পোসাইডন যখন খারাপ মেজাজে থাকেন, তখন ভূমিতে ত্রিশূল দিয়ে প্রচণ্ড শক্তিতে আঘাত করেন। ফলে ভূমিকম্প হয়। মানুষের পাপকাজে রাগন্বিত হয়েও তিনি এরকম করেন বলে প্রচলিত আছে।
পশ্চিম আফ্রিকান সংস্কৃতির কিছু মানুষ মনে করত, জীবন টিকে আছে এক দৈত্যের মাথার মধ্যে। গাছপালা সেই দৈত্যের চুল। মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী হচ্ছে পরজীবীর মতো, যারা দৈত্যের ত্বকজুড়ে ঘুরে বেড়ায়। মাঝে মধ্যে দৈত্যটি মাথা এদিক-ওদিক ঘোরায়। তখনই ভূমিকম্প হয়।
নর্স পুরাণে আছে সৌন্দর্যের দেবতা বলডারকে হত্যা করার কারণে দেবতা লকিকে একটি বিষধর সাপ মাথার ওপর দিয়ে শিকল দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। সেই সাপ তার মাথায় ক্রমাগত বিষ ঢেলে চলেছে। তার স্ত্রী সেজিন তাকে বাচানোর জন্য একটি পাত্রে বিষ ভরে রাখছে। পাত্রটি পুর্ণ হয়ে গেলে সে যখন তা খালি করতে যায় তখন ক্রমাগত পড়তে থাকা বিষ থেকে নিজেকে বাচানোর জন্য লকি নাড়াচাড়া করে ফলে ভূমিকম্প হয়।
ভূমিকম্পের ফলাফল
ভূমিকম্পের ফলে ভূত্বকে অসংখ্য ফাটল ও চ্যুতির সৃষ্টি হয়। ভূমিকম্পের ঝাকুনিতে পর্বতগাত্র থেকে বৃহৎ বরফখণ্ড হঠাৎ নিচে পতিত হয় এবং পর্বতের পাদদেশে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।
ভূমি জরিপ হচ্ছে এমন এক কৌশল, পেশা, বিজ্ঞান যা নির্দিষ্টভাবে স্থানসমূহের ভূগোলক বা ত্রিমাত্রিক অবস্থানের পারস্পারিক দূরত্ব এবং কোণ নির্ণয় করতে পারে। এই বিন্দুসমূহে সাধারণত পৃথিবীপৃষ্ঠের ওপর অবস্থিত এবং তারা অধিকাংশ সময় ভূমি সীমানা নির্ধারণ করে ব্যক্তিগত অথবা সরকারী পর্যায়ে। লক্ষ্য অর্জনের জন্য জরিপাকারীরাগণিত (জ্যামিতি এবং ত্রিকোণমিতি), পদার্থবিজ্ঞান, প্রকৌশল এবং আইন বিদ্যার সহায়তা নিয়ে থাকে।
ইতিহাস
জরিপের ইতিহাস অনেক দীর্ঘ। এমনকি প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতায় নীল নদের অতি প্লাবনের কারণে জমির সীমানা মুছে যাবার পর দড়ি দিয়ে সীমানা নির্ধারণের নথি পাওয়া গেছে।
ভূগোলবিদ বলতে আমরা সেই পণ্ডিত ব্যক্তিকে বুঝি যার অধ্যয়ন ও গবেষণার ক্ষেত্র হচ্ছে ভূগোল, পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং মানব সমাজ।
যদিও ঐতিহাসিকভাবে যিনি মানচিত্র তৈরি করতেন তাকেই ভূগোলবিদ বলা হতো; কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মানচিত্র তৈরি করা শিক্ষার একটি ক্ষেত্র যা মানচিত্রাঙ্কনবিদ্যা নামে পরিচিত এবং এটি ভূগোলের অন্তর্ভুক্ত একটি অধিক্ষেত্র। ভূগোলবিদগণ কেবলমাত্র পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ বা মানব সমাজ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনাই করেন না, অধিকন্তু তারা এই দু’য়ের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়েও গবেষণা করেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ‘প্রাকৃতিক পরিবেশ মানব সমাজে কিভাবে অবদান রাখছে’ – তা নিয়ে গবেষণা করার সাথে সাথে তারা ‘মানব সমাজ কিভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশকে প্রভাবিত করছে’ – সেটিরও অনুসন্ধান করেন ।
বিশেষত: প্রাকৃতিক ভূগোলের গবেষকগণ প্রাকৃতিক পরিবেশ নিয়ে অধ্যয়ন করেন; বিপরীতে মানবীয় ভূগোল বিশারদগণ মানব সমাজ সম্পর্কে অধ্যয়ন করেন। আধুনিক ভূগোলবিদগণই জিআইএস (ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থা) -এর প্রাথমিক পরিচর্চাকারী, যারা প্রায়শ:ই স্থানীয়, রাজ্য ও জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারি খাতের পরিবেশ এবং প্রকৌশল সংস্থায় নিযুক্ত হন।
ভূগোলবিদ শিরোনামে জোহানস্ ভারমিরের অঙ্কিত একটি বিখ্যাত তৈলচিত্র রয়েছে, যা কখনো কখনো জোহানস্ ভারমিরেরজ্যোতির্বিদ শিরোনামের চিত্রটির সাথে একত্রে যুক্ত (সিরিজ) বলে ধারণা করা হয়। এই চিত্র দুটিকে ১৬৬৮-৬৯ সালে তাদের অঙ্কনকালীন সময়ে ইউরোপে ভূগোলবিদদের বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানভিত্তিক অভিক্ষিপ্তাবস্থা গড়ে ওঠা ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রতিনিধিত্বকারী বলে মনে করা হয়।
ভূগোলক (ইংরেজি: Geoid/ˈdʒiːɔɪd/) হল এমন এমন ধরনের আকৃতি যা বাতাস ও স্রোতের মত প্রভাবকের অনুপস্থিতিতে অভিকর্ষ বল এবং পৃথিবীর ঘূর্ণনের দরুন মহাসাগরের পৃষ্ঠতলের আকৃতি। এই আকৃতি মহাদেশ থেকে মহাদেশে বিস্তৃতি (যেমন খুবই সরু প্রকল্পিত খালের মত) লাভ করে। এটি সম্পর্কে প্রথম ধারণা দেন কার্ল ফ্রিডরিশ গাউস এবং তিনি এটাকে “পৃথিবীর গাণিতিক আকৃতি” বলে অভিহিত করেন। তিনি আরো বলেন যে, এটি ভরের অসম বণ্টনের দরুন সৃষ্টি হয় এবং এটি মসৃণ কিন্তু অসমতল। এটি শুধুমাত্র বৃহৎ অভিকর্ষীয় পরিমাপ এবং গণনা থেকে জানা সম্ভব হয়। ভূগণিত এবং ভূপ্রকৃতিবিদ্যায় প্রায় ২০০ বছর ধরে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে আলোচিত হলেও বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে এটি স্যাটেলাইটভিত্তিক ভূগণিতের উন্নতির দরুন এটি তখন থেকে নির্ভুলভাবে মাপা সম্ভব হচ্ছে।
ভূগোলকীয় পৃষ্ঠের অভিকর্ষ, বিভব শক্তি এবং কেন্দ্রবিমুখী বিভব শক্তির যোগফল সমান। অভিকর্ষ বল ভূগোলকের সবখানে লম্বভাবে ক্রিয়া করে। এর মানে হল, উল্লম্ব রেখাগুলো কোন বিন্দুর উপরে লম্ব হিসেবে থাকে এবং পানির স্তর ভূগোলকের সমান্তরাল যদি ও কেবল যদি অভিকর্ষ বল এবং কৌণিক ত্বরণের উপস্থিতি বিদ্যমান থাকে। ভূগোলকীয় পৃষ্ঠ উপবৃত্তীয় পৃষ্ঠের উপরে অবস্থান করবে যদি অভিকর্ষের ধনাত্মক পরিবর্তন (ব্যাপক আধিক্য) দেখা যায় এবং ভূগোলকীয় পৃষ্ঠ উপবৃত্তীয় পৃষ্ঠের নিচে অবস্থান করবে যদি অভিকর্ষের ঋণাত্মক পরিবর্তন (ব্যাপক কমতি) দেখা যায়।[১]
বর্ণনা
মিটারস্কেলে ভূগোলকের উঁচু নিচু অবস্থার মানচিত্র (ইজিএম৯৬ অভিকর্ষ মডেল এবং ডব্লিউজিএস৮৪ এর উপবৃত্তের নমুনাকে ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।)[২]
ভূগোলকের পৃষ্ঠ উঁচুনিচু, নমুনা উপবৃত্তের মত নয় (নমুনা উপবৃত্তে পৃথিবীর বাহ্যিক রূপকে গাণিতিক রূপে চিত্রিত করা হয়েছে)। ভূগোলকের পৃষ্ঠ বাহ্যিক পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে তুলনামূলকভাবে মসৃণ। বাহ্যিক পৃথিবীর কোন বিন্দুর সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতার সীমা +৮,৮৪৮ মিটার (মাউন্ট এভারেস্ট) থেকে −১১,০৩৪ মিটার (মারিয়ানা খাত) এই সীমার মাঝে অবস্থান করলেও ভূগোলকের কোন বিন্দুর সীমা +৮৫ মিটার (আইসল্যান্ড) থেকে –১০৬ মিটার (ভারতের দক্ষিণাংশ) এই সীমায় বিস্তৃত, যার সীমা ২০০ মিটারেরও কম।[৩]
মহাসাগরগুলো যদি আইসোফিকনিক (ধ্রুব গভীরতাবিশিষ্ট) এবং জোয়ারভাটা, স্রোত কিংবা আবহাওয়া সংক্রান্ত কোন বিষয় যদি মহাসাগরগুলোতে প্রভাব বিস্তার না করত, তবে এর পৃষ্ঠের আকৃতি ভূগোলকের ন্যায় হত। ভূগোলক এবং সমুদ্র পৃষ্ঠের গড় উচ্চতার মধ্যকার পার্থক্য “মহাসাগরীয় পৃষ্ঠের ভূসংস্থান” নামে পরিচিত। মহাদেশীয় ভূমিতে যদি বহু সুরঙ্গ বা খাল জালের ন্যায় বিস্তৃত থাকে, তবে ঐ খালগুলোর পানির উচ্চতা এবং ভূগোলকের খুব বেশি পার্থক্য থাকবে না। বাস্তবে, মহাদেশের অধীনে ভূগোলকীয় ধারণা প্রদান করা কষ্টকর হলেও ভূতত্ত্ববিদরা অনুমানের ভিত্তিতে মহাদেশীয় বিন্দুর উচ্চতা বের করেছেন, স্পিরিট লেভেলিংয়ের মাধ্যমে বাহ্যিক বর্ণনা প্রদান করা এখনো সম্ভব হয় নি।
সমকক্ষীয় পৃষ্ঠ হবার দরুন ভূগোলকের সবখানে অভিকর্ষ বল লম্বভাবে কাজ করে। এর মানে হল, যখন জাহাজে সাগর দিয়ে যাবার সময় ভূগোলকের উঁচুনিচু খেয়াল করবেন না; স্থানীয় উল্লম্ব রেখা (লম্বসূত্র) সবসময় একে স্পর্শ করা স্থানীয় স্পর্শকের উপরে লম্ব। একইভাবে, স্পিরিট লেভেলকে অবশ্যই ভূগোলকের সমান্তরাল হতে হবে।
দীর্ঘ সমুদ্রযাত্রার ক্ষেত্রে স্পিরিট লেভেলিংয়ের মাধ্যমে উচ্চতার তারতম্য দেখা যায়, যদিও জাহাজ সর্বদা সমুদ্রপৃষ্ঠে অবস্থান করে (স্রোতের প্রভাব বিবেচনা না করে)। এটা হবার কারণ হল জিপিএস ভূ-উপগ্রহগুলো পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকে আর এটি কেবল আপেক্ষিক মান সরবরাহ করতে পারে। কোনো কিছুর ভূগোলকীয় উচ্চতা বের করতে হলে খসড়া জিপিএস মানকে অবশ্যই সঠিক হতে হবে। বিপরীতভাবে, স্পিরিট লেভেলিংয়ের মাধ্যমে স্রোত পরিমাপ স্টেশন থেকে মাপা উচ্চতাকে ভূমি জরিপের ক্ষেত্রে সচরাচর ভূগোলকীয় উচ্চতা বলে গণ্য করা হয়। আধুনিক জিপিএস গ্রাহকে ইজিএম-৯৬ এর মত ভূগোলক এবং ওয়ার্ল্ড জিওডেটিক সিস্টেমের উপবৃত্তকে কাজে লাগিয়ে কাজ সম্পাদন করা হয়ে থাকে। তখন ওয়ার্ল্ড জিওডেটিক সিস্টেমের উপবৃত্তকে ও ডব্লিউজিএস৮৪ এর ভূগোলককে কাজে লাগিয়ে উচ্চতার মান সঠিকভাবে বের করা সম্ভব হয়। যখন জাহাজে থাকাকালীন সময়ে উচ্চতার মান শূন্য হয় না, তখন সমুদ্রস্রোত, বায়ুচাপ (আবহাওয়ার প্রভাব) এবং স্থানীয় সমুদ্রপৃষ্ঠীয় ভূসংস্থান এর পিছনে কাজ করে থাকে।
সাধারণ উদাহরণ
পৃথিবীর অভিকর্ষীয় ক্ষেত্র নিখুঁত নয় আবার একরূপও নয়। চ্যাপ্টা উপবৃত্তকে সচরাচর পৃথিবীর আদর্শ আকার হিসেবে গণ্য করা হয়। কিন্তু, পৃথিবী যদি পুরোপুরিভাবে গোলাকার হত, তবে সবখানে অভিকর্ষীয় ক্ষেত্রের প্রভাব সমান হত না কেননা পৃথিবীর ঘনত্ব (এবং ভর) এই গ্রহের সবখানে সমান নয়। এটি হবার কারণ হল ম্যাগমার উপস্থিতি, শৃঙ্গের উপস্থিতি, গভীর সামুদ্রিক খাদের উপস্থিতি এবং অন্যান্য কারণ।
যদি পানিতে এই আদর্শ গোলকটি ডুবে থাকে, তবে পানির উচ্চতাও সবখানে সমান হবে না। এটা হবার কারণ হল, পৃথিবীতে স্থানভেদে অভিকর্ষীয় শক্তির প্রভাব উচ্চ কিংবা নিম্ন হব। সেজন্য, স্থানভেদে পানির উচ্চতার হ্রাসবৃদ্ধি দেখা যাবে।
গোলীয় সুরবিজ্ঞানের সাহায্যে উপস্থাপন
গোলীয় সুরবিজ্ঞান প্রায়শই ভূগোলকের আনুমানিক আকৃতি নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বর্তমানে ইজিএম৯৬ (আর্থ গ্রাভিটি মডেল ১৯৯৬) কে কাজে লাগিয়ে ভূগোলকের আকৃতি নির্ণয় করার কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে।[৪] এটি ন্যাশনাল ইমেজারি অ্যান্ড ম্যাপিং এজেন্সি (বর্তমান ন্যাশনাল জিওস্পাশাল এজেন্সি বা এনজিএ) কর্তৃক নির্ধারিত। এই মডেলের অঘূর্ণায়মান অংশ বের করার সূত্রটি হল:[৫] V = G M r ( 1 + ∑ n = 2 n max ( a r ) n ∑ m = 0 n P ¯ n m ( sin ϕ ) [ C ¯ n m cos m λ + S ¯ n m sin m λ ] ) ,
ভূগোলকের উঁচুনিচু অবস্থাকে (উল্লম্ব রঙের সাহায্যে) ত্রিমাত্রিক চিত্রে দেখানো হয়েছে। এখানে গ্যাল এককের ব্যবহার করা হয়েছে।
এখানে ϕ এবং λ হল যত্রাক্রমে “ভূকেন্দ্রিক” (গোলাকার) অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশ, P ¯ n m হল সহযোগী ল্যাগ্রাঞ্জীয় বহুপদী, যার মাত্রা n ও ক্রম m , এবং C ¯ n m ও S ¯ n m হল গাণিতিক সহগ, যেগুলো নির্ধারণ হয়েছে নির্ণয় করা গাণিতিক তথ্যের সাহায্যে। উপরিবর্ণিত সমীকরণে পৃথিবীর অভিকর্ষীয় প্রাবাল্য হিসেবে V ব্যবহৃত হয়েছে, ভূগোলককে ব্যবহার না করে। ঐ স্থান থেকে ϕ , λ , r , ছাড়াও r বের করা হয় যা “ভূকেন্দ্রিক ব্যাসার্ধ” নামে পরিচিত। এটি হল পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে দূরত্বের মান। ভূগোলক হল বিশেষ সমকক্ষীয় পৃষ্ঠ[৫] এবং এটি এর আকার নির্ণয়ে সহায়তা করে থাকে। এর নতির সাথে অভিকর্ষীয় ত্বরণের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ইজিএম৯৬ এর মাঝে বহু সহগ ও মাত্রা খুঁজে পাওয়া যায়, এবং এর ৩৬০ ক্রম (উদাহরণস্বরূপ n max = 360 ) বর্ণনা করে থাকে বৈশ্বিক ভূগোলক সম্পর্কে যা ৫৫ কিলোমিটার (বা ১১০ কিলোমিটার, এটি নির্ভর করে কারো এর ধারণা বিশ্লেষণের পার্থক্যের উপর)। গাণিতিক সহগ, C ¯ n m এবং S ¯ n m এর মান নির্ণয় সম্ভব V এর সমীকরণ দেখে। এই দুইটি গাণিতিক সহগের মান m = ০ ব্যতীত সব মানের জন্য বের করা সম্ভব। m=০ হলে কেবলমাত্র একটি মান পাওয়া যায়। কারণ, sin ( 0 λ ) = 0 । এখানে (2n+1), এই গাণিতিক সহগটি কাজ করে। এতে n এর মানের কোন প্রভাব পড়ে না। এই বিষয় এবং সূত্রকে কাজে লাগিয়ে, ∑ I = 1 L I = L ( L + 1 ) / 2 , এরপর সর্বমোট সহগ সংখ্যা হল ∑ n = 2 n max ( 2 n + 1 ) = n max ( n max + 1 ) + n max − 3 = 130317 এখানে ইজিএম৯৬ এর মান n max = 360
বহু ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ধারাকে অপ্রয়োজনীয় জটিল জিনিস বলে গণ্য করা হয় এবং অল্প (সম্ভবত কয়েক ডজন বার) ধাপ করার পর এই প্রক্রিয়ার ইতি টানা হয়।
উচ্চ মানের মডেলকে বর্তমানে উন্নয়ন করা হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ইজিএম৯৬ প্রণেতারা উন্নত মডেল নিয়ে কাজ করছেন যার সাথে কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে পাওয়া অভিকর্ষীয় তথ্যের (যেমন গ্রাভিটি রিকভারি অ্যান্ড ক্লাইমেট এক্সপেরিমেন্ট) গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান এবং এটি ২১৬০ ক্রম ও মাত্রা উপর পর্যন্ত কাজ করতে সক্ষম (এখানে এক ডিগ্রির এক ষষ্ঠমাংশ এবং ৪০ লক্ষাধিক সহগ ব্যবহৃত হবে)।[৬]
এনজিএ ইজিএম২০০৮ নামের নতুন মডেল এনেছে, যেখানে গোলকীয় সুরবিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে ২১৫৯ মাত্রা ও ক্রমের ব্যবহার করা হয় এবং অতিরিক্ত মাত্রা ও ক্রমের মান যথাক্রমে ২১৯০ ও ২১৫৯ এ পৌঁছায়।[৭] এই ধরনের মডেলের ডাটাকে কাজে লাগিয়ে সফটওয়ারও বের করা হয়েছে।[৭]
আদর্শ ভূগোলক
পিটার ভানিসেকের ও তার সহকর্মীরা স্টোকসীয় পদ্ধতির সাগায্যে আদর্শ ভূগোলকীয় সমাধান বের করতে সক্ষম হয়েছেন।[৮] তাদের এই সমাধান ভূগোলকীয় সমাধানের ক্ষেত্রে প্রায় সম্পূর্ণ নিখুঁত এবং পূর্বের সর্বশ্রেষ্ঠ সমাধানের মাত্রার মানের ক্ষেত্রেও উন্নতি সাধিত হয়েছে।[৯][১০][১১][১২]
ব্যতিক্রম
অভিকর্ষীয় ও ভূগোলকীয় ব্যতিক্রম সংঘটিত হতে পারে প্রসঙ্গ বস্তু থেকে ভূত্বক এবং অশ্মমণ্ডলীয় পুরুত্বের পরিবর্তনের দরুন। প্রতিটি বিন্যাসই স্থানীয় সমস্থিতিক পূর্ণতার অধীন।
ভূগোলকীয় পৃষ্ঠের উচ্চতা পৃথিবী পৃষ্ঠের ঘনত্বের তারতম্যের উপর নির্ভরশীল। ভূগোলকীয় পরিমাপ আমাদের এই গ্রহের অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে। পুরু ভূত্বকের ভূগোলকীয় নিদর্শন ধনাত্মক হলে এর পুরুত্ব সমগ্র অশ্মমণ্ডলে প্রভাব বিস্তার করবে (উদাহরণস্বরূপ, অরোজেনিক বেল্টে মহাদেশীয় সংঘর্ষ)।
সময়-পরিবর্তনীয়তা
সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট মিশন যেমন, গ্রাভিটি ফিল্ড অ্যান্ড স্টেডি-স্টেট ওশান সার্কুলেশন এক্সপ্লোরার এবং গ্রাভিটি রিকভারি অ্যান্ড ক্লাইমেট এক্সপেরিমেন্ট ভূগোলকের সময় পরিবর্তনীয় বিষয় নিয়ে কাজ করেছে। ২০১০ সালের জুন মাসে গ্রাভিটি ফিল্ড অ্যান্ড স্টেডি-স্টেট ওশান সার্কুলেশন এক্সপ্লোরারের স্যাটেলাইট তথ্যকে ভিত্তি করে পাওয়া তথ্য ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার ভূপর্যবেক্ষণ ব্যবহারকারী সেবা সরঞ্জামের মাধ্যমে অনলাইনে আসে।[১৩][১৪]ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা ২০০৯ সালের মার্চ মাসে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করেছিলন। এর উদ্দেশ্য ছিল স্থানিক বিশ্লেষণের সাথে নজিরবিহীন নিখুঁত মানের সাহায্যে অভিকর্ষীয় ত্বরণ চিত্রায়ন। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ মিউনিখ কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ আন্তর্জাতিক গ্রাভিটি ফিল্ড অ্যান্ড স্টেডি-স্টেট ওশান সার্কুলেশন এক্সপ্লোরার ব্যবহারকারী সম্মেলনে নতুন ভূগোলকীয় মডেল প্রকাশ করা হয়।[১৫] সময়-পরিবর্তনীয় ভূগোলকে গ্রাভিটি ফিল্ড অ্যান্ড স্টেডি-স্টেট ওশান সার্কুলেশন এক্সপ্লোরার থেলে পাওয়া পানিচক্রের তথ্য,[১৬] হিমবাহের ভারসাম্য সংক্রান্ত তথ্য,[১৭] এবং হিমবাহ পরবর্তী ভূমির উত্থান সংক্রান্ত তথ্য[১৮] অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। হিমবাহ পরবর্তী ভূমির উত্থান সংক্রান্ত তথ্যে সময়-পরিবর্তনীয় গ্রাভিটি ফিল্ড অ্যান্ড স্টেডি-স্টেট ওশান সার্কুলেশন এক্সপ্লোরার থেকে পাওয়া তথ্য ব্যবহার করে ম্যান্টলের সান্দ্রতা বের করা হয়েছে।[১৯]
মঙ্গলের ভূগোলক মেরিনার ৯ এবং ভাইকিংয়ের মত স্যাটেলাইট প্রোগ্রামের সাহায্যে বের করা সম্ভব হয়েছে। উপবৃত্ত থেকে নির্গত প্রধান বস্তুকে থারসিস আগ্নেয় মালভূমি (থারসিস হল একটি মহাদেশ আকৃতির ভূখণ্ড যা একটি আগ্নেয় মালভূমি) ও এর বিপরীত পৃষ্ঠ থেকে নির্গত আদর্শ প্রবাহী বস্তু বলে ধারণা করা হচ্ছে।[২১]