Author: admin

  • ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র

    ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র

    ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি), বাংলাদেশের ইউনিয়নভিত্তিক ডিজিটাল সেন্টার, যার উদ্দেশ্য হলো তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় তথ্যসেবা নিশ্চিত করা।[১][২] ‘ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র ২০০৭ সালে ‘কমিউনিটি ইনফরমেশন সেন্টার’ (সিইসি) নামে শুরু হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রাম (এটুআই) এর আওতায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদে এবং দিনাজপুর জেলার সেতাবগঞ্জ উপজেলার মুশিদহাট ইউনিয়ন পরিষদে পাইলট আকারে সিইসি এর কার্যক্রম পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করা হয়।

    ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র

    ইতিহাস

    এ পাইলট প্রকল্পে অভিজ্ঞতার আলোকে ২০০৮ সালে বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার বিভাগ এটুআই প্রোগ্রামের সহায়তায় ৩০টি ইউনিয়ন পরিষদে সিইসি থেকে বেরিয়ে এসে ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র স্থাপন করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সালে আবারো স্থানীয় সরকার বিভাগ এটুআই-এর সহায়তায় ১০০টি ইউনিয়ন পরিষদে ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র স্থাপন করে। বর্তমানে (২০১২) স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় জাতীয় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান এসব ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র সমন্বয় করছে। পরবতীর্তে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার নাম করন করা হয়।২০১৪ ২০১০ সালে স্থানীয় সরকার বিভাগ সিদ্ধান্ত নেয় ঐ বছরের জুন মাসের মধ্যে আরো ১০০০টি কেন্দ্র স্থাপন করবে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইতোমধ্যে (২০১২) ১০০০টি ইউনিয়ন পরিষদ এবং এর জন্য এসব ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ২০০০ জন উদ্যোক্তা বাছাই করা হয়। নারী পুরুষের সমতার কথা মাথায় রেখে উদ্যোক্তাদের মধ্যে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে স্থানীয় একজন যুবক, একজন যুবতিকে বেছে নেয়া হয়। এই উদ্যোক্তারা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে ইউনিয়ন পরিষদের সাথে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হয়ে একাজে যুক্ত হোন। এই উদ্যোক্তা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরাসরি যুক্ত এবং স্থানীয় জেলা প্রশাসক অবহিত।

    মে ২০১০-এ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রাম ১০০ জনের একটি অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক দল গঠনের লক্ষ্যে প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণের আয়োজন করে। এই প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ও বাংলাদেশ টেলিসেন্টার নেটওয়ার্কের আওতায় বিভিন্ন টেলিসেন্টারের উদ্যোক্তারা অংশ নেন। যাদের নেতৃত্বে জেলা পর্যায়ে উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

    বর্তমানে সারা দেশে ৪ হাজার ৫০১টি ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র রয়েছে। [৩]

    ইউনিয়ন ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মুল সেবা সমুহ

    ১। কম্পিউটার কম্পোজ ২। ই-মেইল ৩। ইন্টারনেট ৪। ছবি তোলা ৫। কম্পিউটার প্রশিক্ষন ৬। বিভিন্ন সরকারি ফরম ৭। জমির খতিয়ানের জন্য আবেদন ও সরবরাহ ৮। মোবাইল ব্যংকিং ৯। ফটোকপি ১০। জীবন বীমা ১১। প্লাস্টিক আইডি কার্ড ১২। ছাপার কাজ ১৩। বিদ্যুত বিল গ্রহণ

  • আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভা

    আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভা

    আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভা

    রাষ্ট্রপতি

    ক্রমিকনামদফতরমেয়াদকাল
    ০১আবদুস সাত্তাররাষ্ট্রপতি২৪ নভেম্বর ১৯৮১ – ২৪ মার্চ ১৯৮২
    ০২মির্জা নূরুল হুদাউপ-রাষ্ট্রপতি। শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়২৪ নভেম্বর ১৯৮১ – ২৪ মার্চ ১৯৮২
    ০৩মোহাম্মদউল্লাহউপ-রাষ্ট্রপতি১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২– ২৪ মার্চ ১৯৮২

    প্রধানমন্ত্রী

    ক্রমিকনামদফতরমেয়াদকাল
    ০১শাহ আজিজুর রহমানপ্রধানমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়২৭ নভেম্বর ১৯৮১-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ০২জামাল উদ্দিন আহমেদউপ প্রধানমন্ত্রী১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২

    মন্ত্রী

    ক্রমিকনামদফতরমেয়াদকাল
    ০১জামাল উদ্দিন আহমেদশিল্পমন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১-১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
    মুহাম্মদ শামস উল হকপররাষ্ট্রমন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১-২৪ মার্চ ১৯৮২
    কাজী আনোয়ারুল হকজ্বালানীমন্ত্রী
    আবদুল মোমেন খানখাদ্যমন্ত্রী
    মজিদ-উল-হকবন্দর, শিপিং ও অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন মন্ত্রী
    এ এস এম আবদুল হালিম চৌধুরীস্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১-১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
    খাদ্য ও ত্রাণ মন্ত্রী১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    এ এস এম মোস্তাফিজুর রহমানবাণিজ্য মন্ত্রী
    এম সাইফুর রহমানঅর্থমন্ত্রী
    শামসুল হুদা চৌধুরীতথ্য ও বেতার মন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১-১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
    বেতার, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি মন্ত্রী১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ১০ফসিহউদ্দীন মাহতাবকৃষি ও বন মন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১-১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
    অর্থ মন্ত্রী১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ১১এম এ মতিনবেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১-১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
    স্বরাষ্ট্র ও এলজিইডি মন্ত্রী১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ১২এমরান আলী সরকারত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী
    ১৩আব্দুল আলীমরেলওয়ে, সড়ক, মহাসড়ক ও সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রী
    ১৪আবদুর রহমানস্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১-১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
    ১৫খন্দকার আবদুল হামিদস্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রী
    ১৬এ কে এম মাঈদুল ইসলাম মুকুলবিমান চলাচল, ডাক, তার ও টেলিফোন মন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১-১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
    জ্বালানী, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ১৭রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ ভোলা মিয়াশ্রম ও শিল্প কল্যাণমন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১-১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
    কৃষি, শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ১৮মোহাম্মদ ইউসুফ আলীপাট ও বস্ত্র মন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১-১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
    শিল্প মন্ত্রী১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ১৯আবদুর রহমান বিশ্বাসধর্ম মন্ত্রী
    ২০এল কে সিদ্দিকীবিদ্যুৎ, পানি, সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রী
    ২১টি এইচ খানআইন ও সংসদ মন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১-১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
    শিক্ষা, ভূমি প্রশাসন ও সংস্কার মন্ত্রী১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ২২আবুল হাসানতগণপূর্ত ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী
    ২৩আবুল কাশেমযুব উন্নয়ন মন্ত্রী
    ২৪সুলতান আহমেদ চৌধুরীডাক, তার ও টেলিফেন মন্ত্রী১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ২৫আবু আহমদ ফজলুল করিমবেতার, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১-১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২

    প্রতিমন্ত্রী

    ক্রমিকনামদফতরমেয়াদকাল
    ০১আব্দুস সালাম তালুকদারআইন ও বিচার প্রতিমন্ত্রী২৭ নভেম্বর ১৯৮১-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ০২সৈয়দ মহিবুল হাসানজনশক্তি উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১ – ২৪ মার্চ ১৯৮২
    ০৩আফতাবুজ্জামানস্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ প্রতিমন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১ – ২৪ মার্চ ১৯৮২
    ০৪আমিরুল ইসলাম কামালমৎস্য ও পশুপালন প্রতিমন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১-১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
    ত্রাণ ও পনর্বাসন প্রতিমন্ত্রী১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ০৫তসলিমা আবেদমহিলা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১ – ২৪ মার্চ ১৯৮২
    ০৬জাফর ইমামত্রাণ ও পুনর্বাসন রযদকমন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১ – ২৪ মার্চ ১৯৮২
    ০৭মুহাম্মদ আবদুল মান্নানশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১–অজানা
    আবদুল বাতেনঅজানা – ২৪ মার্চ ১৯৮২
    ০৮চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফএলজিইডি প্রতিমন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১ – ২৪ মার্চ ১৯৮২
    ০৯ইকবাল হোসাইন চৌধুরীখাদ্য প্রতিমন্ত্রী
    ১০সুনীল কুমার গুপ্তপেট্রোলিয়াম ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
    ১১নূর মুহম্মদ খানতথ্য ও বেতার প্রতিমন্ত্রী
    ১২জমির উদ্দিন সরকারপররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
    ১৩অং শৈ প্রু চৌধুরীডাক, তার, টেলিফোন, বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১-১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
    স্বাস্থ্য, শ্রম ও সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ১৪আবদুল মান্নান সিকদারভূমি প্রশাসন ও সংস্কার প্রতিমন্ত্রী
    ১৫এ কে ফায়জুল হকশ্রম ও শ্রমিককল্যাণ প্রতিমন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১-১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
    গণপূর্ত ও নগর উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ১৬তরিকুল ইসলামপ্রতিমন্ত্রী (অজানা দফতর)
    ১৭অলি আহমেদযুব উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ১৮কামরুন নাহার জাফরমহিলা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ১৯সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মাছিশিল্প ও বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ২০সৈয়দা রাজিয়া ফয়েজনারী ও সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ২১শফিকুল গনি স্বপনঅজানা১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ২২মাহবুবুর রহমানঅজানা১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ২৩সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারঅজানা১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ২৪মো: আলি তারিকঅজানা১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২-২৪ মার্চ ১৯৮২

    উপমন্ত্রী

    ক্রমিকনামদফতরমেয়াদকাল
    ০১আব্দুস সালামস্বরাষ্ট্র উপমন্ত্রী২৭ নভেম্বর ১৯৮১-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ০২এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারপাট ও বস্ত্র উপমন্ত্রী২৭ নভেম্বর ১৯৮১-২৪ মার্চ ১৯৮২
    ০৩কামরুন নাহার জাফরশ্রম ও জনশক্তি উপমন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১-১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
    ০৪সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মাছিসেচ, বন্যা ও পানি উন্নয়ন উপমন্ত্রী২৪ নভেম্বর ১৯৮১-১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
  • অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ

    অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ

    অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বাংলাদেশের জেলায় অবস্থিত জজ কোর্টের বিচারক যিনি দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় এখতিয়ার প্রয়োগ করেন। তিনি জেলা ও দায়রা জজের সমপর্যায়ের বিচারিক ক্ষমতার অধিকারী। বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের গ্রেড-২ এর কর্মকর্তাগণের মধ্য হতে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি জেলা ও দায়রা জজের ডেপুটি হিসেবে তার অবর্তমানে তার কার্যভার পালন করে থাকেন।

    অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ

    নিয়োগ

    বাংলাদেশের সংবিধান এর ১১৫ ও ১৩৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নিয়োগ দিয়ে থাকেন। আইন মন্ত্রণালয় সুপ্রীম কোর্টের সাথে পরামর্শক্রমে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজদের পদায়ন ও বদলি করে থাকে।[১]

    এখতিয়ার ও ক্ষমতা

    অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ যখন ফৌজদারি এখতিয়ার প্রয়োগ করেন তখন তিনি অতিরিক্ত দায়রা জজ এবং যখন দেওয়ানি এখতিয়ার প্রয়োগ করেন তখন তিনি অতিরিক্ত জেলা জজ হিসেবে অভিহিত হন।

    ফৌজদারি এখতিয়ার: অতিরিক্ত দায়রা জজ মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সহ আইনে উল্লেখিত সকল প্রকারের দন্ড প্রদান করতে পারেন।

    দেওয়ানি এখতিয়ার: অতিরিক্ত জেলা জজের রিভিশন এখতিয়ার হচ্ছে দেওয়ানী বিষয়বস্তুর আপীল যার মূল্যমান সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকা।[২][৩][৪]

    পদমর্যাদা

    বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম অনুযায়ী অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজের পদমর্যাদার ক্রম ১৭।[৫][৬]

    আরও দেখুন

  • অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট

    অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা অতিরিক্ত প্রধান মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেট্রোপলিটনের দ্বিতীয় প্রধান ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের পরেই তার অবস্থান। তিনি মহানগর এলাকায় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের সমপর্যায়ের বিচারিক এখতিয়ার প্রয়োগ করেন। ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অনুসারে অতিরিক্তি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের পদমর্যাদা যুগ্মসচিব এর সমান।[১] তিনি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের ডেপুটি হিসেবে তার অবর্তমানে তার দায়িত্বভার পালন করে থাকেন।

    অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রশাসনিক ক্ষেত্রে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনস্থ। তিনি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশক্রমে মেট্রোপলিটন এলাকার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মেট্রোপলিটন পুলিশকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি আমলী আদালতের দায়িত্ব পালনকালে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০(১) ধারার বিধান মোতাবেক তার এখতিয়ারাধীন অঞ্চলে সংঘটিত যেকোনও অপরাধ আমলে নিতে পারেন। তিনি তার অধিক্ষেত্রের মধ্যে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং অপরাধ দমন করার জন্য যেকোনও আদেশ দিতে পারেন। পুলিশ তদন্ত সহ আইনের প্রয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যকলাপের বিবরণ আমলী আদালতের অধিক্ষেত্রের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট দাখিল করে। বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম অনুযায়ী অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের পদক্রম ২১ নম্বরে অবস্থিত।

    ইতিহাস ও উৎপত্তি

    ২০০৭ সালের ১লা নভেম্বর বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের[২] ফলে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পদের উৎপত্তি হয়।

    নিয়োগ

    অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের তৃতীয় গ্রেডের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়। বাংলাদেশের সংবিধানের[৩] ১১৫ ও ১৩৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ নিয়োগ দিয়ে থাকেন। আইন মন্ত্রণালয় সুপ্রীম কোর্টের সাথে পরামর্শক্রমে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজদের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পদায়ন ও বদলি করে থাকে।

    ক্ষমতা ও এখতিয়ার

    অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০(১)সি ধারা অনুযায়ী কোনো অভিযোগ ছাড়াই স্বত:প্রণোদিতভাবে যেকোনো অপরাধ আমলে নিতে পারেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা-৬ এর উপধারা-৩ এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বলতে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে অন্তর্ভুক্ত করবে। অর্থাৎ অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের সমান বিচারিক ক্ষমতা ও এখতিয়ার প্রয়োগ করেন। তিনি সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করতে পারেন।[৪][৫]

    অপরাধ আমলে গ্রহণ

    থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমল যোগ্য অপরাধের সংবাদ পেলে তাকে এজাহার হিসেবে রেকর্ড করেন। আমল অযোগ্য অপরাধ হলে সেটার জন্য সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয় এবং প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট অনুমতি দিলে পুলিশ তদন্ত করতে পারে। অন্যদিকে, আদালতে কেউ গুরুতর অভিযোগ নিয়ে হাজির হলে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৬(৩) ধারা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট এজাহার হিসেবে লিপিবদ্ধ করার জন্য থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিতে পারেন। ম্যাজিস্ট্রেট ফৌজদারি কার্যবিধির ২০০ ধারা অনুসারে অভিযোগকারীকে পরীক্ষা করে অপরাধ আমলে নিতে পারেন বা ২০২ ধারা মোতাবেক পুলিশ বা অন্য যে কাউকে তদন্তের নির্দেশ দিতে পারেন। রিপোর্ট প্রাপ্তির পর সংশ্লিষ্ট ধারায় অপরাধ আমলে নিতে পারেন।

    রিমান্ড

    বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৩(২) অনুচ্ছেদ এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ৬১ ধারা অনুযায়ী পুলিশ কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের সময় হতে ২৪ ঘন্টার মধ্যে জেলার প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে উপস্থাপন করবে।[৬] সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট গুরুতর বা সূত্রবিহীন (Clueless) অপরাধের ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কোনো আসামীকে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৭(১) ধারা মোতাবেক ১৫ দিন পর্যন্ত পুলিশ রিমান্ডের আদেশ দিতে পারেন।[৭]

    পদমর্যাদা

    পূর্বেই বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম অনুযায়ী অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের পদমর্যাদার অবস্থান ২১ নম্বরে। উল্লেখ্য, মেট্রোপলিটন এলাকার উল্লেখযোগ্য শীর্ষ কর্মকর্তাগণের মধ্যে মহানগর দায়রা জজের পদক্রম ১৬, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট/অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজের পদক্রম ১৭, বিভাগীয় কমিশনার/যুগ্ম মহানগর দায়রা জজের পদক্রম ২১, পুলিশ কমিশনারের পদক্রম ২২ এবং জেলা প্রশাসকের পদক্রম ২৪ নম্বর।[৮]

    আরও দেখুন

    তথ্যসূত্র

    “জেলা জজের পদমর্যাদা সচিব ও চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পদমর্যাদা সচিব মর্যাদাসম্পন্ন কর্মকর্তাদের সমান”“বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ”“বাংলাদেশের সংবিধানে বিচার বিভাগ”“বিচার বিভাগীয় বাতায়ন”“দন্ডবিধি, ১৮৬০”“গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান”“ফৌজদারি কার্যবিধি”

    1. “চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পদমর্যাদা ১৭ তে উন্নীত”
    দেবাংলাদেশেরবিষয়সমূহ
    ইতিহাসসময়ক্রমপ্রাচীনবৈদিক যুগ অঙ্গ বঙ্গ পুণ্ড্র সুহ্ম মগধ মগধের কিংবদন্তি রাজাগণ শিশুনাগ রাজবংশ নন্দ গঙ্গাঋদ্ধি মৌর্য সাম্রাজ্য শুঙ্গ সাম্রাজ্য কাণ্ব রাজবংশ গুপ্ত সাম্রাজ্যমধ্যযুগকম্বোজ পাল সেন ভারতবর্ষে ইসলামি সাম্রাজ্য দিল্লী সালতানাত খিলজি রাজবংশ বাংলা সালতানাতমুঘল আমলমুঘল বাংলা বাংলার সুবাহ বাংলার নওয়াব পর্তো গ্রান্দে দে বেঙ্গালা পলাশীর যুদ্ধঔপনিবেশিক আমলঅন্ধকূপ হত্যা ছিয়াত্তরের মন্বন্তর সিপাহী বিদ্রোহ বাংলার নবজাগরণ বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন পূর্ব বাংলা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন নিখিল ভারত মুসলিম লীগ পাকিস্তান আন্দোলন বাংলার প্রধানমন্ত্রী লাহোর প্রস্তাব পঞ্চাশের মন্বন্তর কলকাতা দাঙ্গা বঙ্গভঙ্গ (১৯৪৭)পাকিস্তান আমলপূর্ব পাকিস্তান ভাষা আন্দোলন ছয় দফা আন্দোলন পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন, ১৯৭০ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ গণহত্যা ধর্ষণ কালপঞ্জিবাংলাদেশ১৯৭৪-এর বাংলাদেশ দুর্ভিক্ষ সামরিক অভ্যুত্থান ১৯৭৫ ১৯৮১ ১৯৮২ ২০০৬-০৮ বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কট বিডিআর বিদ্রোহবিষয় অনুযায়ীবাংলার ইতিহাস সামরিক ডাক শাসকগণ ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় বছর
    ভূগোলপ্রশাসনিক অঞ্চলবিভাগ জেলা উপজেলাধরন অনুযায়ীশহর দ্বীপ হ্রদ পাহাড় উদ্যান নদীস্থানবঙ্গোপসাগর পার্বত্য চট্টগ্রাম কক্সবাজার গঙ্গা অববাহিকা গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ জাট এলাকা সুন্দরবন
    রাজনীতিসরকারমন্ত্রিসভা নির্বাচন বৈদেশিক সম্পর্ক জাতীয় সংসদ স্পিকার স্থানীয় সরকার সিটি কর্পোরেশন বাংলাদেশের পৌরসভা উপজেলা পরিষদ ইউনিয়ন পরিষদ রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীআইনপ্রধান বিচারপতি সংবিধান হাইকোর্ট মানবাধিকার ধর্মীয় স্বাধীনতা সমকামী অধিকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সুপ্রীম কোর্টআইন প্রয়োগকারী সংস্থাআনসার গোয়েন্দা এনএসআই বিশেষ শাখা পুলিশ সিআইডি র‌্যাব এসপিবিএন বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীসামরিকবিমান বাহিনী সেনাবাহিনী নৌবাহিনীর ডিএফজিআই আধা-সামারিক বর্ডার গার্ড কোস্ট গার্ড প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট
    অর্থনীতিকৃষি মোটরগাড়ি শিল্প ব্যাংকিং বাংলাদেশ ব্যাংক (কেন্দ্রীয় ব্যাংক) বাংলাদেশী টাকা (মুদ্রা) বেপজা সিরামিক চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ একনেক বিদ্যুৎ খাত ইলেকট্রনিক্স মাছ ধরা খাদ্য শিল্প বনাঞ্চল পারমাণবিক শক্তি ঔষধ শিল্প চট্টগ্রাম বন্দর ডাক দারিদ্র্য আবাসন শিল্প নবায়নযোগ্য শক্তি তৈরি পোশাক শিল্প জাহাজ নির্মাণ শিল্প ইস্পাত শিল্প টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বস্ত্রশিল্প পর্যটন যোগাযোগ ব্যবস্থা বিমানবন্দর রেলওয়ে পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন রাজস্ব নীতি
    সমাজবাংলাদেশী নাম অপরাধ জনপরিসংখ্যান শিক্ষা বিদ্যালয় কলেজ বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় জাতিগোষ্ঠী স্বাস্থ্য ধর্ম সমাজসংস্কৃতিবাঙালিয়ানা স্থাপত্য বাউল পঞ্জিকা চলচ্চিত্র রান্না ভাষা সাহিত্য সঙ্গীত সরকারি ছুটি ক্রীড়া থিয়েটার বেতার কেন্দ্র যৌনতা বিবাহপ্রথাজাতীয় প্রতীকবঙ্গমাতা আমার সোনার বাংলা বায়তুল মোকাররম চল চল চল ঢাকেশ্বরী মন্দির পতাকা সরকারের সিল ইলিশ কাঁঠাল বঙ্গবন্ধু সেতু জাতীয় সংসদ ভবন জাতীয় স্মৃতিসৌধ কাবাডি আম গাছ জাতীয় প্রতীক দোয়েল রয়েল বেঙ্গল টাইগার সাদা শাপলা
    রূপরেখাবিষয়শ্রেণী প্রবেশদ্বার উইকিপ্রকল্প

    বিষয়শ্রেণীসমূহ:

  • অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট

    অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা অতিরিক্ত প্রধান জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাংলাদেশের জেলার দ্বিতীয় প্রধান ম্যাজিস্ট্রেট।[১] তিনি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিচার বিভাগীয়[২][৩] কর্মকর্তা এবং জেলার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পরেই তার অবস্থান। তিনি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সমপর্যায়ের বিচারিক ক্ষমতা ও এখতিয়ার প্রয়োগ করেন।[৪] ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অনুসারে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পদমর্যাদা যুগ্মসচিব এর সমান।[৫][৬]

    Chief শব্দের অর্থ প্রধান। Magistrate শব্দটি ল্যাটিন Magistratus শব্দ থেকে এসেছে যার মানে Administrator বা শাসক। অতিরিক্ত ‌চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রশাসনিক ক্ষেত্রে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনস্থ।[৭] তিনি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশক্রমে জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ বিভাগ সহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। ফৌজদারি কার্যবিধির বিধান মোতাবেক প্রাপ্ত ক্ষমতাবলে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জেলার পুলিশ[৮], প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও বিভাগগুলো ক্ষমতার অপব্যবহার করছে কিনা বা তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে কিনা তা দেখভাল করেন।[৯] মোটকথা, একজন অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ডেপুটি হিসেবে জেলার সমস্ত বিভাগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার গুরুদায়িত্ব বহন করেন।[১০] জেলার সর্বত্র শান্তি রক্ষা করা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তার অন্যতম প্রধান দায়িত্ব।

    বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায়[১১] অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ। তিনি আমলী আদালতের দায়িত্ব পালনকালে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০(১) ধারা অনুযায়ী তার এখতিয়ারাধীন অঞ্চলে সংঘটিত যেকোনও অপরাধ আমলে নিতে পারেন। একজন অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তার অধিক্ষেত্রের মধ্যে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং অপরাধ দমন করার জন্য যেকোনও আদেশ দিতে পারেন।[১২] পুলিশ, র‍্যাব ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত সহ আইনের প্রয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যকলাপের বিবরণ আমলী আদালতের অধিক্ষেত্রের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট দাখিল করে। থানার অফিসার ইনচার্জ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধের তদন্ত ও আইনের প্রয়োগ সহ যাবতীয় কার্যকলাপের জন্য আমলী আদালতের অধিক্ষেত্রের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট জবাবদিহি করেন। তিনি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অবর্তমানে তার দায়িত্বভার পালন করে থাকেন। বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম অনুযায়ী অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পদক্রম ২১ নম্বরে অবস্থিত।[১৩][১৪][১৫]

    ইতিহাস ও উৎপত্তি

    ২০০৭ সালের ১লা নভেম্বর বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের[১৬][১৭] ফলে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদের উৎপত্তি হয় এবং জেলা প্রশাসকের সকল প্রকার বিচারিক ক্ষমতা সুবৃহৎ পরিসরে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর অর্পণ করা হয়।

    নিয়োগ

    অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের[১৮] তৃতীয় গ্রেডের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়। বাংলাদেশের সংবিধানের[১৯] ১১৫ ও ১৩৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি[২০] যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ নিয়োগ দিয়ে থাকেন।[২১] আইন মন্ত্রণালয় সুপ্রীম কোর্টের[২২] সাথে পরামর্শক্রমে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজদের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পদায়ন ও বদলি করে থাকে।

    ক্ষমতা ও এখতিয়ার

    ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা-৬ এর উপধারা-৩ এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বলতে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে অন্তর্ভুক্ত করবে। অর্থাৎ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সমান বিচারিক ক্ষমতা ও এখতিয়ার প্রয়োগ করেন। অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করতে পারেন।[২৩][২৪] তিনি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০(১)সি ধারা অনুযায়ী কোনো অভিযোগ ছাড়াই স্বত:প্রণোদিতভাবে (suo moto) যেকোনো অপরাধ আমলে নিতে পারেন।

    অপরাধ আমলে গ্রহণ

    থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমল যোগ্য অপরাধের সংবাদ পেলে এজাহার হয়। আমল অযোগ্য অপরাধ হলে সেটার জন্য সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয় এবং আমলী আদালতের অধিক্ষেত্রের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি না দিলে পুলিশ তদন্ত করতে পারে না। অন্যদিকে, আদালতে কেউ সরাসরি অভিযোগ নিয়ে আসলে এবং সেটা গুরুতর প্রকৃতির হলে তিনি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৬(৩) ধারা অনুযায়ী এজাহার হিসেবে রুজু করার জন্য থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিতে পারেন। অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফৌজদারি কার্যবিধির ২০০ ধারা অনুসারে অভিযোগকারীকে পরীক্ষা করে অপরাধ আমলে নিতে পারেন বা ২০২ ধারা মোতাবেক পুলিশ বা অন্য যে কাউকে তদন্তের নির্দেশ দিতে পারেন। রিপোর্ট প্রাপ্তির পর সংশ্লিষ্ট ধারায় অপরাধ আমলে নিতে পারেন। সাজা প্রদানের ক্ষেত্রে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা সমান।

    রিমান্ড

    বাংলাদেশের সংবিধান এর ৩৩(২) অনুচ্ছেদ এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ৬১ ধারা অনুযায়ী পুলিশ কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের সময় হতে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আমলী আদালতের অধিক্ষেত্রের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে উপস্থাপন করবে।[২৫] তিনি গুরুতর বা সূত্রবিহীন (Clueless) অপরাধের ক্ষেত্রে আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৭(১) ধারা মোতাবেক ১৫ দিন পর্যন্ত রিমান্ডে প্রদান করতে পারেন।

    স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অপরাধ আমলে গ্রহণ

    ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০(১)সি ধারা অনুসারে আমলী আদালতের অধিক্ষেত্রের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোনো অভিযোগ ছাড়াই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে (suo moto) যেকোনো অপরাধ আমলে নিতে পারেন‌।

    পদমর্যাদা

    পূর্বেই বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম অনুযায়ী অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পদমর্যাদার অবস্থান ২১ নম্বরে।[২৬][২৭]

    আরও দেখুন

  • বাংলাদেশ সরকার

    বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক পরিচালিত হয়, যিনি অন্যান্য সকল মন্ত্রীগণকে বাছাই করেন। প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য প্রধান উচ্চপদস্থ মন্ত্রীগণ সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণ কমিটির সদস্যপদ লাভ করেন, যা মন্ত্রিসভা নামে পরিচিত।

    বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হলেন শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, যিনি ২৯শে ডিসেম্বর ২০০৮ এর সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ের ফলাফলস্বরূপ ২০০৯-এর ৬ জানুয়ারি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তার দ্বারা পরিচালিত হয় এবং এর ১৪ দলীয় মহাজোট দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্য পদলাভের মাধ্যমে বিজয় লাভ করে এবং সাংখ্যিকভাবে ২৯৯ টি আসনের মাঝে ২৩০ টি আসন এই দলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।[১]

    ১৯৭১ এ অস্থায়ী সরকার গঠন এবং অস্থায়ী সংবিধান প্রণয়নের পর থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থা কমপক্ষে পাঁচবার পরিবর্তিত হয়েছ। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ব্যবস্থা সংসদীয় পদ্ধতির। এই পদ্ধতিতে প্রধানমন্ত্রীর হাতে সরকারের প্রধান ক্ষমতা ন্যস্ত থাকে। বহুদলীয় গণতন্ত্র পদ্ধতিতে এখানে জনগণের সরাসরি ভোটে জাতীয় সংসদের সদস্যরা নির্বাচিত হন। নির্বাহী (executive) ক্ষমতা সরকারের হাতে ন্যস্ত। আইন প্রণয়ন করা হয় জাতীয় সংসদেবাংলাদেশের সংবিধান ১৯৭২ সালে প্রণীত হয়, এবং এখন পর্যন্ত এতে ১৭টি সংশোধনী যোগ করা হয়েছে।[২] [৩]

    দপ্তরনামদলদায়িত্বগ্রহণের সময়
    বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিআব্দুল হামিদআওয়ামী লীগ২৪ মার্চ ২০১৩
    প্রধানমন্ত্রীশেখ হাসিনাআওয়ামী লীগ৬ জানুয়ারি ২০০৯
    সংসদ স্পিকারশিরীন শারমিন চৌধুরীআওয়ামী লীগ৩০ এপ্রিল ২০১৩
    প্রধান বিচারপতিহাসান ফয়েজ সিদ্দিকদল নিরপেক্ষ৩০ ডিসেম্বর ২০২১

    নির্বাহী বিভাগ

    বাংলাদেশের সরকার নির্বাহী বিভাগ পরিচালনা করে। প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী সভার সদস্যরা বিভিন্ন নির্বাহী সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।

    রাষ্ট্রপতি

    সাংবিধানিক ভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সংসদীয় পদ্ধতিতে সর্বোচ্চ পদমর্যাদার অধিকারী হলেন রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতি হওয়ার ন‍্যূনতম বয়স ৩৫ বছর। জাতীয় সংসদ সদস্যদের ভোটে তিনি নির্বাচিত হন। স্পিকার (সংসদের পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্বে ছিল প্রধান বিচারপতি) রাষ্ট্রপতিকে শপথ বাক্য পাঠ করান। নির্বাচিত হওয়ার পর শপথ গ্রহণের পর থেকে তার মেয়াদকাল ৫ বছর। আবার রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করতে পারেন স্পিকারের নিকট পদত্যাগ পত্র দাখিলের মাধ্যমে। রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৫০(২) ধারা মতে ধারাবাহিক ২ বারের অধিক মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। তিনি জাতীয় সংসদের অধিবেশন আহ্বান করেন। ৫৬(৩) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ ও ৯৫(১) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে তাকে প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ নিতে হয় না। একই সঙ্গে তার ওপর আদালত এর কোনো এখতিয়ার বারিত। রাষ্ট্রপতির অনুপস্থিতিতে তার দায়িত্ব পালন করবেন স্পিকার স্বয়ং। রাষ্ট্রপতি প্রধামন্ত্রীর পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করবেন। তার নিকট কোনো বিল পেশ করার ১৫ দিনের মধ্যে তা অনুমোদন করতে হয় নচেৎ তা স্বয়ংক্রিয় ভাবে অনুমোদিত হয়ে যায়। তবে অর্থ বিল এ সম্মতি দানে তিনি বিলম্ব করতে পারবেন না। দুই-তৃতীয়াংশ সংসদ সদস্যের ভোটের মাধ্যমে শারীরিক বা মানসিক কোনো কারণে রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করা যায়। তার সরকারি বাসভবন বঙ্গভবন মতিঝিল এর দিলকুশায় অবস্থিত। তার নিরাপত্তায় বিশেষ বাহিনী হলো প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট (PGR) ও স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (SSF)।

    প্রধানমন্ত্রী

    বাংলাদেশের সরকারপ্রধান অথবা মন্ত্রিপর্ষদের প্রধান হলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা প্রযুক্ত হবে। এই পদ ছাড়াও অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রীদিগকেও নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। যে সংসদ-সদস্য সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন হিসেবে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হবেন, রাষ্ট্রপতি তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করবেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে হলে বয়স ন‍্যূনতম ২৫ বছর হতে হবে। জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা বা নেত্রী যিনি প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। বাংলাদেশ সংবিধানের প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা সংবলিত ৫৫ ও ৫৬ নং ধারা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদের শীর্ষে থাকবেন এবং মন্ত্রিপরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করবেন।[৪] তিনি একইসাথে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভাপতি/চেয়ারপার্সন। তার জন্য বরাদ্দ সরকারি বাসভবনের নাম গণভবন, যা ঢাকার শেরে বাংলা নগরে অবস্থিত। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঢাকার তেজগাঁওয়ে অবস্থিত। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যিনি একই সাথে সর্বোচ্চ সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী।

    মন্ত্রিসভা

    মূল নিবন্ধ: বাংলাদেশের মন্ত্রিসভা

    স্থানীয় সরকার

    মূল নিবন্ধ: বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার

    আইন বিভাগ

    এই অনুচ্ছেদটি সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন।

    বাংলাদেশের আইনসভার নাম জাতীয় সংসদ। এটি এক কক্ষীয়, এবং ৩০০ জন সংসদ সদস্য জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন। এছাড়া নারীদের জন্য ৫০ টি সংরক্ষিত আসনের বিধান রয়েছে, যেসব আসন সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে বণ্টিত হয়।

    বিচার বিভাগ

    মূল নিবন্ধ: বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

    বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দেশের সর্বোচ্চ আদালত।বেশিরভাগ মামলা প্রথমত নিম্ন আদালতে রায় দেয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে স্হানান্তরিত হয়।সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর রায় কার্যকর করতে আর কোন বাধা থাকে না, তবে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত অপরাধী কে রাষ্ট্রপতি চাইলে জীবনভীক্ষা দিতে পারে।

    বিচার কক্ষের বিবরণ

    আরও দেখুন

  • রাজনৈতিক বাস্তবতাবাদ

    রাজনৈতিক বাস্তবতাবাদ বা বস্তুতন্ত্রবাদ বা রাজনৈতিক বস্তুতন্ত্রবাদ বা রাজনৈতিক বাস্তববাদ রাষ্ট্রবিজ্ঞানআন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিদ্যার একটি বিশেষ শাখা। এটি কোন রাষ্ট্রের এমন বিশেষ রাজনৈতিক আচরণের ব্যাখ্যা দেয় যে আচরণের ফলে রাষ্ট্র নৈতিকতা, আদর্শ, সামাজিক পূণর্গঠন ইত্যাদি বিষয়াবলীকে গুরুত্ব না দিয়ে শুধুমাত্র ও যেকোন উপায়ে জাতীয় স্বার্থ কায়েম ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নীতি নির্ধারণ করে থাকে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ব্যাখ্যায় বস্তুতন্ত্রবাদ ও ক্ষমতার রাজনীতিকে ক্ষেত্র বিশেষে পরস্পরের প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বস্তুতন্ত্রবাদের মতে- আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা কার্যত নৈরাজ্যবাদমূলক; প্রতিটি রাষ্ট্র টিকে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলোকে প্রাধান্য দেয় এবং পদক্ষেপগুলো রাষ্ট্রের স্বতঃস্ফুর্ততা ও গতিময়তার মধ্য দিয়ে সম্পাদিত হয়; রাষ্ট্রের এরূপ নীতিমালার জন্য মানবকূল পরস্পরের প্রতি সাংঘর্ষিক মনোবৃত্তি ধারণ করে; ব্যক্তি পর্যায়ের নৈতিক আদর্শগুলোর দ্বারা রাষ্ট্রসমূহের কূটনীতিকে মূল্যায়ন করা যায় না কেননা রাষ্ট্রসমূহ যখন পরস্পরের মুখোমুখি হয় তখন তা তারা ব্যক্তি হিসেবে নয় বরং একেকটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে হয়; রাজনৈতিক নীতিমালার ভিত্তি যতটা না আদর্শ, তার চেয়ে বেশি স্বার্থ ও ক্ষমতা; টিকে থাকার লড়াই ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্র এককভাবে দায়ী।

    রাজনৈতিক বাস্তববাদ হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক তত্ত্বসমূহের মধ্যে একটি চিন্তাধারা, যা প্রারম্ভিক আধুনিক ইউরোপের বাস্তব-রাজনৈতিক ধারণার মধ্য দিয়ে উদ্ভূত হয়েছিল। এই চিন্তাধারা মূলত এই বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে যে, বিশ্ব রাজনীতি চূড়ান্তভাবে সবসময় এবং অপরিহার্যভাবে ক্ষমতান্বেষণকারীদের দ্বন্দ্ব-ক্ষেত্র। এই প্রত্যাখ্যান-অযোগ্য দ্বন্দ্বের উৎস্য কী – সেই বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করে রাজনৈতিক বাস্তববাদীদেরকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। ধ্রুপদী বাস্তববাদীগণ মনে করেন এর উৎস্য মানব প্রকৃতি বা প্রবৃত্তিতেই নিহিত। নব্যবাস্তববাদীগণ নৈরাজ্যময় রাষ্ট্রব্যবস্থার কাঠামোকে এই দ্বন্দ্বের উৎস্য বলে মনে করেন। এদিকে নব্য-ধ্রুপদী বাস্তববাদীগণ এর উৎস্য হল মানব প্রকৃতি ও নৈরাজ্যময় রাষ্ট্রব্যবস্থার কাঠামো দুটোই, ও সেই সাথে কিছু নির্দিষ্ট রাষ্ট্রীয় আভ্যন্তরীন চলক। এছাড়াও বিশ্ব রাজনীতির পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রগুলোকে কিরকম কাজ করা উচিত তা নিয়েও নব্যবাস্তববাদীরা দুইভাগে বিভক্ত: প্রতিরক্ষামূলক বাস্তববাদআক্রমণাত্মক বাস্তববাদ। বাস্তববাদীরা দাবি করেন, প্রাচীন যুগের থুসিডাইডিসের সময়কাল থেকে আজ পর্যন্ত রাজনীতির ইতিহাসের সকল সময়ে রাজনৈতিক বাস্তববাদের ঐতিহ্য বজায় রয়েছে।

    জোনাথন হাসলাম রাজনৈতিক বাস্তববাদকে “বিভিন্ন ধারণার একটি মতপরিসর” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।[১] যে সংজ্ঞাই ব্যবহার করা হোক না কেন, রাজনৈতিক বাস্তববাদের তত্ত্ব সমূহ চারটি কেন্দ্রীয় প্রস্তাবকে ঘিরেই আবর্তিত হবে:[২]

    রাজনৈতিক বাস্তববাদকে প্রায়ই প্রয়োগবাদী রাজনীতি-র (রেয়ালপোলিটিক) সাথে সম্পর্কিত করা হয়, কেননা উভয়ই অভীষ্ট, অর্জন এবং ক্ষমতার প্রয়োগের ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভরশীল। যাই হোক, প্রয়োগবাদী রাজনীতি একটি পুরনো দৃষ্টিভঙ্গি যা নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ (যেমন বৈদেশিক নীতি)। অন্যদিকে রাজনৈতিক বাস্তববাদ হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট তাত্ত্বিক পরিকাঠামো, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধীনের বিভিন্ন বিষয়কে বর্ণনা করতে, ব্যাখ্যা করতে এবং ভবিষ্যদ্বাণী করতে ব্যবহৃত হয়। এই তত্ত্বগুলোকে রাজনৈতিক উদারতাবাদের আদর্শগুলোর সাথে প্রতিতুলনা করা হয়।

    রাজনৈতিক বাস্তববাদ হচ্ছে আধুনিক বিদেশ নীতিগত চিন্তাধারার একটি প্রভাবশালী শাখা। একটি শিক্ষায়তনিক অভিষ্ট হিসেবে রাজনৈতিক বাস্তববাদ কোন মতাদর্শের বন্ধনে আবদ্ধ নয়। এটি না কোন নৈতিক দর্শনের পক্ষে থাকে, না কোন মতাদর্শকে রাষ্ট্রের আচরণের প্রধান বিষয় হওয়া উচিত বলে মনে করে। রাজনৈতিক বাস্তববাদীদের অগ্রাধিকারকে “মাকিয়াভেল্লীয়” হিসেবে বর্ণনা করা হয়, যেখানে তাদের কেন্দ্রীয় মনোযোগের বিষয় হয় অন্য রাষ্ট্রগুলোর তুলনায় নিজের রাষ্ট্রের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।[৩]

  • জৈবক্ষমতা

    জৈবক্ষমতা (ইংরেজি: Biopower, ফরাসী: Biopouvoir) হচ্ছে ফরাসী শিক্ষায়তনিক, ঐতিহাসিক এবং সামাজতাত্ত্বিক মিশেল ফুকো এর দেয়া একটি শব্দ। এটি আধুনিক জাতিরাষ্ট্রের চর্চা এবং সেগুলোর নাগরিকের “শরীরের উপর আধিপত্য অর্জন এবং জনগণকে নিয়ন্ত্রণ অর্জন করতে অনেক ও বৈচিত্র্যময় উপায় এর বিষ্ফোরণ” সাথে এটি সম্পর্কিত।[১] কলেজ ডি ফ্রান্স-এ ফুকো এই শব্দটি প্রথম তার লেকচার কোর্সে উল্লেখ করেন।কলেজ ডি ফ্রান্স[২][৩] কিন্তু এই শব্দটি প্রথম ছাপানো অবস্থায় পাওয়া যায় দ্য উইল টু নলেজ গ্রন্থে, যা ফুকোর দ্য হিস্টোরি অফ সেক্সুয়ালিটি এর প্রথম খণ্ডে এসেছিল।[৪] ফুকোর কাজে এটাকে গণস্বাস্থ্য, উত্তরাধিকারসূত্র নিয়ন্ত্রণ, ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ, এবং আরও অনেক নিয়ন্ত্রণমূলক কৌশলের ক্ষেত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, যেগুলো সরাসরি শারীরিক স্বাস্থ্যের সাথে সম্পর্কিত। এটি আরেকটি শব্দের সাথে সম্পর্কিত যা তিনি কম পরিমাণে ব্যবহার করেছেন, কিন্তু পরবর্তী চিন্তাবিদরা স্বাধীনভাবে সেই শব্দটাকে নিয়ে নিয়েছেন, সেটা হল জৈবরাজনীতি (Biopolitics)। যে কৌশলের দ্বারা রাষ্ট্র দ্বারা জ্ঞান, ক্ষমতার উপর আধিপত্য এবং অধীনস্থ বানাবার প্রক্রিয়ার দ্বারা মানব জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে তার ক্ষেত্রে জৈবরাজনীতির ধারণাটি আরও বেশি সম্পর্কিত।

    ফুকোর ধারণা

    ফুকো অনুসারে, জৈবক্ষমতা হচ্ছে মানুষের বিশাল গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ক্ষমতার একটি প্রযুক্তি। এই রাজনৈতিক প্রযুক্তির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি রাষ্ট্রের সমগ্র জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতা তৈরি করে। এটি মানব দেহের শারীরস্থান-রাজনীতি এর মাধ্যমে মানব দেহকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং সামাজিক নিয়মানুবর্তিতামূলক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জৈবরাজনীতি এর দ্বারা জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করে। প্রাথমিকভাবে এটি বাহির থেকে আরোপ করা হয় যার উৎস্য সামাজিক বিজ্ঞান এবং মানবিক বিভাগের দ্বারা গবেষণার দ্বারা সঠিকভাবে বোঝা যায় না, কেননা সেই উৎস্যগুলো ছলনাময় ও প্রতারণাপূর্ণ হয়ে থাকে। যতক্ষণ পর্যন্ত এই বিভাগগুলো তাদের বর্তমান গবেষণা পদ্ধতি ব্যবহার করে ততক্ষণ পর্যন্ত এগুলো প্রতারণাপূর্ণ হয়ে থাকে। ফুকোর বিশ্লেষণ অনুযায়ী, মানুষেরা সামাজিক অনুযায়িতার প্রত্যাশা অনুযায়ী ধীরে ধীরে সম্মত হতে থাকার ফলে, আধুনিক ক্ষমতা সামাজিক আচরণ এবং মানুষের আচরণে প্রোথিত হয়ে যায়। আধুনিক জাতিরাষ্ট্র ও পুঁজিবাদ ইত্যাদির উদ্ভবের ক্ষেত্রে এটি একটি প্রয়োজনীয় ও সার বৈশিষ্ট্য, যার ফলে এটি সম্ভব হয়েছে।[৫] জৈবক্ষমতা দ্বারা আক্ষরিক অর্থেই শরীরের উপর ক্ষমতা অর্জন বোঝানো হয়। এটি হচ্ছে “শরীরের উপর আধিপত্য অর্জন এবং জনগণকে নিয়ন্ত্রণ অর্জন করতে অনেক ও বৈচিত্র্যময় উপায় এর বিষ্ফোরণ”।[৬] ফুকো তার কলেজ ডি ফ্রান্সে জানুয়ারি ও এপ্রিল। ১৯৭৮ এ দেয়া সিকিউরিটি, টেরিটোরি, পপুলেশন শিরোনামের লেকচার কোর্সে এই ধারণাটিকে আরও বিস্তৃত করেন:

    এর দ্বারা আমি অনেকগুলো প্রপঞ্চের কথা বোঝাচ্ছি যেগুলো আমার কাছে খুবই উল্লেখযোগ্য বলে মনে হয়। এগুলো হচ্ছে একাধিক কৌশলের সমাহার যার মাধ্যমে মানুষের মৌলিক জীববিজ্ঞানগত বৈশিষ্ট্যগুলোকে রাজনৈতিক কৌশল ও ক্ষমতার একটি সাধারণ কৌশলের অধীনস্থ বানানো হয়। অন্য কথায়, অষ্টাদশ শতকের শুরু থেকে আধুনিক পাশ্চাত্য সমাজগুলো কিভাবে মানুষের একটি প্রজাতি হবার মৌলিক জীববিজ্ঞানগত সত্যকে বিবেচনা করেছে সেটা দেখলেই এটা বোঝা যায়। একেই আমি জৈবক্ষমতা বলছি।[৭]

    এটি জনগণের জীবনের রক্ষণাবেক্ষণ বা প্রতিপালনের জন্য সরকারের উদ্বিগ্নতার সাথে সম্পর্কিত, “মানুষের শরীরের উপর শ্রারীরস্থান-রাজনীতি হচ্ছে জীবনের সকল বৈশিষ্ট্য যেমন জন্ম, মৃত্যু, প্রজনন, রোগ ইত্যাদির উপর নিয়ন্ত্রণ।[৮] এটি একটি সাধারণীকৃত নিয়মানুবর্তি সমাজ তৈরি করে[৯] এবং জনগণের উপর আরোপিত জৈবরাজনীতির দ্বারা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে।”[১০][১১][১২] তার লেকচার সোসাইটি মাস্ট বি ডিফেন্ডেড এ ফুকো জৈবরাজনৈতিক রাষ্ট্রীয় বর্ণবাদ এর কথা বলেন। এবং বলেন যে এটি নিজেদের মত পুরাণ ও ব্যাখ্যা তৈরি করে। এখানে তিনি জৈবরাজনীতি[১৩] ও শৃঙ্খলার মধ্যে এভাবে পার্থক্য দেখান:

    শৃঙ্খলা হচ্ছে একটি প্রযুক্তি যা ব্যক্তিদেরকে আচরণ সেখায়, কার্যকরী ও ফলপ্রসূ শ্রমিক তৈরি করে। অন্যদিকে জৈবরাজনীতি জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রয়োগ করা হয়, যেমন একটি স্বাস্থ্যবান কর্মশক্তি নিশ্চিত করার জন্য।[১৪]

    ফুকো বলেন, পূর্ববর্তী গ্রীক, রোমান ও মধ্যযুগীয় শাসনে রোমান সম্রাট, নাইটদের স্বর্গীয় অধিকার, স্বৈরাচারী রাজতন্ত্র এবং পোপদের[১৫] শরীরের উপর ক্ষমতা ও সামাজিক নিয়ন্ত্রণ মডেল ছিল ব্যক্তিকেন্দ্রিক যা কোন একক ব্যক্তি যেমন রাজা, পবিত্র রোমান সম্রাট, পোপ বা রোমান সম্রাটকে কেন্দ্র করেই ছিল। যাই হোক, মধ্যযুগে রূপক বডি পলিটিক এর উদ্ভব হয়, যার দ্বারা বোঝানো হয় গোটা সমাজই শাসকের সাথে আছে। এক্ষেত্রে রাজা হচ্ছেন সমাজের প্রধান, সেই সাথে তথাকথিত রাজ্যের এস্টেট এবং মধ্যযুগীয় রোমান ক্যাথলিক চার্চ রয়েছেন রাজতন্ত্রের পরেই। তাদের সাথে আবার রয়েছে বেশিরভাগ সামন্ততান্ত্রিক সার্ফ এর কৃষক সম্প্রদায়, এবং সব মিলে একটা স্তরক্রমীয় পিরামিড। উচ্চ বিশ্বাসঘাতকতা এর জন্য এই রূপক এর অর্থ মধ্যযুগীয় আইনে নথিবদ্ধ হয়, এবং যদি এর জন্য কেউ দোষী সাব্যস্ত হতেন তাহলে তাকে ফাঁসি ও অন্যান্য শাস্তি দেয়া হত।[১৬][১৭] যাই হোক, প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় রাজনৈতিক ক্ষমতার বিরুদ্ধে আধুনিক রাজনৈতিক ক্ষমতার আবির্ভাবের পর এই অবস্থাটি অষ্টাদশ শতকের ইউরোপে নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়। জনগণের কাছে আসে উদারপন্থী পাশ্চাত্য জগতের উদার সংসদীয় গণতন্ত্র এবং রাজনৈতিক দল। বিশ্বে আসে প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকার, যদিও তখন পুরুষের অধিকারেই কেবল এটা ছিল। ইউরোপে পরে ১৯২৯ সাল থেকে নারীরাও ভোট দিতে শুরু করে (সুইজারল্যান্ডে পায় সবার পর ১৯৭১ সালে), আর যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৬৪ সালে কুখ্যাত বর্ণবাদী জিম ক্রো আইন রদের পর কৃষ্ণাঙ্গরাও ভোট দিতে সক্ষম হন।

    মানব বিজ্ঞানের উদ্ভব ও ষোড়শ থেকে অষ্টাদশ শতকে তার বিকাশের লক্ষ্যবস্তু ছিল প্রাথমিকভাবে আধুনিক পাশ্চাত্য মানব এবং যে সমাজে তারা বাস করে সেই সমাজ। এটি নিয়মানুবর্তী প্রতিষ্ঠান এর বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে।[১৮][১৯][২০] এবং, ফুকো এই মানব বিজ্ঞান বলতে বিশেষ করে মধ্যযুগীয় বিজ্ঞানকে বুঝিয়েছেন, যার ফলে মানব শরীরের শারীরস্থান-রাজনীতি এর উদ্ভব ঘটে, যা মানুষের জৈব ইতিহাসের একটি জৈবরাজনীতি।[২১] সমাজের একটি রূপান্তর ঘটে যার ফলে জোড় করে ইউরোপীয় রাজতন্ত্রকে সরিয়ে দিয়ে “বৈজ্ঞানিক” রাষ্ট্রযন্ত্র তৈরি করা হয়, এবং আইনগত চর্চার পূর্ণাঙ্গ মৌলবাদী পরিবর্তন ঘটানো হয়, যেখানে শাস্তিযোগ্যদের পুনরাবিষ্কার করা হয় এবং এদেরকে পৃথক করা হয়।[২২]

    ক্ষমতা দখলের একটি দ্বিতীয় সংস্করণের বিকাশ ঘটে একটি নতুন প্রকরণের ক্ষমতার দ্বারা যেটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক না হয়ে সম্ভাবনার সূত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত (স্টোক্যাস্টিক) ও জনগণকেন্দ্রিক ছিল। জনগণকেন্দ্রিক বলতে ফুকো বুঝিয়েছেন এই রাষ্ট্র ব্যক্তি থেকে জনগণে পরিণত হয়েছে (“জনগণ রাষ্ট্র”),[২৩] সেই সাথে এখানে বৈজ্ঞানিক যন্ত্র এবং সরঞ্জামের আকারে সরকারী কৌশলের নতুন অতিরিক্ত প্রেরণা তৈরি হয়েছে। এই বৈজ্ঞানিক কৌশল, যাকে আমরা রাষ্ট্র নামে চিনি তা জনগণ নিয়ে কম শাসন করে এবং বহিঃস্থ যন্ত্রসমূহ পরিচালনাতেই বেশি মনোনিবেশ করে। এরপর ফুকো আমাদেরকে মনে করিয়ে দেন যে, শরীর (এবং জীবনের) এবং জনগণের এই শারীরস্থান জৈবরাজনীতি একটি নতুন আবিষ্কৃত বৈজ্ঞানিক জ্ঞান এবং আধুনিক সমাজের “নতুন” রাজনীতি এর সাথে সম্পর্কিত হয়। আর এই আধুনিক সমাজের “নতুন” রাজনীতি উদার গণতন্ত্র এর ছদ্মবেশে আমাদের সামনে হাজির হয়, যেখানে জীবন (জীববিজ্ঞানগত) নিজেই কেবল ইচ্ছাকৃত রাজনৈতিক কৌশল এর অংশ হয় না, সেই সাথে এটি গাণিতিক বিজ্ঞান এবং জীববিজ্ঞান এবং জাতিরাষ্ট্রের জন্য অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও বৈজ্ঞানিক সমস্যা হয়ে ওঠে।[২৪]

  • জাতি

    জাতি হচ্ছে একটি সম্প্রদায় যা একটি সাধারণ ভাষা, অঞ্চল, ইতিহাস, জাতিগততা ও সংস্কৃতির ভিত্তিতে গড়ে ওঠে। স্পষ্টতই, জাতি উপজাতি হতে অধিক রাজনৈতিক।[১][২] সাধারণভাবে একে বলা যায়, “জাতি হচ্ছে একত্রিত ও প্রতিষ্ঠিত উপজাতি সম্প্রদায়।”[৩] কিছু জাতি উপজাতি গোষ্ঠীর সমান বলে বিবেচ্য আবার কিছু জাতি গড়ে ওঠে সামাজিক ও রাজনৈতিক কিছু নির্দিষ্ট সংবিধান অনুসরণ করে।[৩] জাতির অন্য একটি সংজ্ঞা হচ্ছে, এটি একটি সম্প্রদায়, যে সম্প্রদায়ের জনগণ নিজেদের স্বায়ত্তশাসন, ঐক্য ও অন্যান্য অধিকারের ব্যাপারে সচেতন।[৪] আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে, একটি জাতি হলো একটি ভূ-খন্ডের স্বাধীন ও সার্বভৌম অঞ্চল।

    আমেরিকান রাজনৈতিক বিজ্ঞানী বেনেডিক্ট এন্ডারসন জাতিকে একটি কাল্পনিক সম্প্রদায় হিসেবে আখ্যায়িত করেন।[৫] আর অস্ট্রেলিয়ান পণ্ডিত পল জেমস জাতিকে কোনো একটি সম্প্রদায়ের খন্ড হিসেবে দেখেন।[৬] যে হিসেবে জাতিকে কাল্পনিক সম্প্রদায় হিসেবে ধরা হয় তার পেছনের কারণ হলো এই যে, একটি জাতির সকল ব্যক্তি একে অপরকে চিনে না এবং ব্যাপার‍টি এমন যে হয়ত তাদের কখনো দেখাও হবে না।[৭] অর্থাৎ তারা সকলেই একে অপরের কাছে আগন্তুক৷ এজন্য “আগন্তকদের জাতি” বাক্যাংশটি উদ্ভূত হয় যা বিভিন্ন লেখক তাঁদের লেখায় লিখে গেছেন। এর মধ্যে একজন হলেন আমেরিকান সাংবাদিক ভ্যান্স প্যাকার্ড। সেই হিসেবে “জাতি” একটি ইন্টারসাব্জেক্টিভ বাস্তবতা এবং শব্দটির অর্থ ও অস্তিত্ব কেবলমাত্র নাগরিকদের চিন্তা-ভাবনায় বিদ্যমান। এমনকি কোনো ব্যক্তি যদি চিন্তা করেন যে জাতি বলতে কিছু নেই তবুও সেই জাতির তাতে বিন্দুমাত্র ক্ষতি হবেনা কেননা “জাতি” কোনো সাব্জেক্টিভ বাস্তবতা নয় যে এটি শুধুমাত্র একটি মানুষের চিন্তাধারায় বিরাজমান। তবে যদি একটি বিশালসংখ্যক মানুষ বিশ্বাস করা শুরু করে যে জাতির অস্তিত্ব থাকা উচিত নয় এবং জাতি বিষয়টিকে প্রত্যাখ্যান করে তবে জাতির অস্তিত্ব বিরাজ করা সম্পূর্ণরূপে থেমে যাবে।[৮][৯][১০]

    ব্যুৎপত্তি ও পরিভাষা

    জাতি (ইংরেজি: Nation, উচ্চারণঃ ন্যাশন) শব্দটি এসেছে প্রাচীন ফ্রেঞ্চ ভাষার শব্দ nacion বা naissance থেকে যার অর্থ হলো জন্ম, উৎপত্তির অবস্থান। এর উৎপত্তি ফ্রেঞ্চ ভাষার natio শব্দ হতে আক্ষরিক অর্থে যার অর্থ হচ্ছে “জন্ম”।[১১]

    ব্ল্যাক’স ল ডিকশনারি অনুসারে “জাতি” কে নিম্নোক্তভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়ঃ

    nation, n (14c) . (জাতি হলো) মানুষদের একটি বিশাল গোষ্ঠী যাদের একটি সাধারণ মূল, ভাষা, ঐতিহ্য এবং সাধারণত একটি সংবিধান রয়েছে। • যখন একটি জাতি একটি রাষ্ট্রের সাথে মিলিত হয় তখন সেটাকে প্রায়শই জাতিরাষ্ট্র হিসেবে অভিহিত করা হয়।…

    . কতিপয় মানুষদের বিচরণ যা একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলব্যাপী এবং তা কোনো স্বাধীন সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত; অর্থাৎ, একটি সার্বভৌম রাজনৈতিক রাষ্ট্র।[১]

    তবে “জাতি” শব্দটির কিছু প্রতিশব্দ রয়েছে যা সচরাচর ব্যবহার করা হয়। যেমনঃ

    • রাষ্ট্র কিংবা সার্বভৌম রাষ্ট্র: একটি রাষ্ট্র যা একটি নির্দিষ্ট ভূ-খন্ড শাসন করে, যা কোনো উপজাতিদের সাথে সংযুক্ত থাকতেও পারে বা নাও থাকতে পারে।
    • দেশ: একটি ভৌগোলিক অঞ্চল যা কোনো সরকার দ্বারা চালিত হতে পারে বা নাও হতে পারে এবং সেখানে উপজাতি থাকতেও পারে বা নাও থাকতে পারে৷

    তাই, “বিশ্বের জাতিসমূহ” বলতে বোঝায় উঁচু স্তরের সরকার ব্যবস্থা, বিভিন্ন বিশাল ভৌগোলিক অঞ্চল ও পৃথিবীর বৃহৎ ও বিচিত্র উপজাতি গোষ্ঠী।

    “জাতি” শব্দটির ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে, জাতিরাষ্ট্র শব্দটি ব্যবহার করা হয় ছোট শহর রাষ্ট্রকে বৃহৎ রাষ্ট্র থেকে পৃথক করার জন্য কিংবা বহুজাতিক রাষ্ট্রকে ছোট ছোট একক উপজাতি গোষ্ঠী হতে পৃথক করার জন্য।

    মধ্যযুগীয় জাতি

    ব্রিটিশ ইতিহাসবেত্তা সুসান রেয়নল্ড তার বই কিংডম এন্ড কমিউনিটিজ ইন ওয়েস্টার্ন ইউরোপ ৯০০-১৩০০ তে বর্ণনা করেছেন যে, কিছু ইউরোপীয়ান সাম্রাজ্য আধুনিক যুক্তি অনুসারে তখনকার সময়ে জাতি হিসেবে ছিল। তবে জাতীয়তাবাদে রাজনৈতিক অধিকার শুধুমাত্র কিছু শিক্ষিত ও উন্নত শ্রেণির মানুষদের নাগালে ছিল।[১২] রোমান ধর্মযাজক আদ্রিয়ান হ্যাস্টিংস দ্য কন্সট্রাকশন অফ ন্যাশনহুডঃ এথনিসিটি, রিলিজিওন এন্ড ন্যাশনালিজম বইতে উল্লেখ করেছেন যে, ইংল্যান্ডের এংলো স্যাক্সন রাজা বিপুল মানুষকে একত্র করে জাতীয়তাবাদের উত্থান করেছিলেন নোর্সদের আক্রমণ বিতাড়িত করার জন্য। তিনি যুক্তি দেন যে, ওয়েস্ট স্যাক্সনের রাজা আলফ্রেড দ্য গ্রেট বাইবেলীয় জাতীয়তাবাদের উপর ভিত্তি করে তার আইনি কোডে বাইবেলীয় ভাষা যুক্ত করে দেন এবং তার শাসনামলে বাইবেলের কিছু অংশ ইংরেজিতে অনুবাদিত হয় যেন ইংরেজরা অনুপ্রাণিত হয়ে নোর্স আক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। ওয়াইক্লিফ সার্কেলের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বাইবেল ইংরেজিতে অনুবাদ করে হ্যাস্টিংস ইংরেজ জাতীয়তাবাদের একটি শক্ত নতুন যুক্তি তুলে ধরে। তাঁর মতামত, এগারো শতকে ইংল্যান্ডের সেনাদের নর্ম্যান বিজয় এর মধ্য দিয়ে ইংরেজ জাতি গঠিত হয় এবং সেই থেকে এই জাতি টিকে আছে।[১৩]

    মধ্যযুগীয় জাতীয়তাবাদের আরেকটি ভালো উদাহরণ হচ্ছে আরব্রোথের ঘোষণা, একটি দলিল যা স্কটিশ পণ্ডিত ও পাদ্রিদের দ্বারা লিখিত হয়েছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়। দলিলটির উদ্দেশ্য ছিল পাদ্রিকে দেখানো যে, স্কটল্যান্ড নিজের মৌলিক সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ভাষার কারণে নিজেই একটি জাতি এবং অবশ্যই জাতিটি ইংল্যান্ডের থেকে পুরোনো। দলিলটি ন্যায়সঙ্গত কিনা তা যাচাইয়ের জন্য স্কটল্যান্ডের রাজা রবার্ট ব্রুসের কাছে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে রবার্ট ব্রুসের অধীনে স্কটল্যান্ডের সেনাদেরকে ইংরেজ সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাঠানো হয় ইংরেজদের বিতাড়িত করার উদ্দেশ্যে কারণ ইংরেজরা অন্যায়ভাবে স্কটল্যান্ডের সার্বভৌমত্ব কেড়ে নিতে চেয়েছিল। এর ফলে ব্রুসের অধীনে মিলিটারি ক্যাম্প গড়ে ওঠে এবং সেই সময়ে ইংরেজ-স্কটল্যান্ডের যে যুদ্ধ হয় তা ব্যানকবার্নের যুদ্ধ নামে পরিচিতি লাভ করে। এ যুদ্ধের ফলে স্কটল্যান্ড ইংল্যান্ডের দখলমুক্ত হয় এবং স্কটল্যান্ড স্বাধীন হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এই ঘটনাটি স্কটিশ জাতীয়তাবাদ ও বিখ্যাত সার্বভৌমত্বের ঘটনার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

    গ্রিক ইতিহাসবিদ অ্যানথোনি কালদেলিস হেলেনিজম ইন বায়জান্তিয়াম বইতে নিশ্চিত করেন যে, বর্তমান বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য যা একসময় রোমান সাম্রাজ্য ছিল তা মধ্যযুগীয় সময়ে জাতিরাষ্ট্রে রূপান্তরিত হয়।

    পণ্ডিত আজার গাত যুক্তি দেন যে, চীন, কোরিয়াজাপান ইউরোপীয় মধ্যযুগ থেকেই জাতি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে আসছে।[১৪]

    মধ্যযুগীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য মধ্যযুগীয় প্রতিষ্ঠানে ন্যাশন্স শব্দের ব্যবহার

    কিছু মধ্যযুগীয় বিশ্ববিদ্যালয় তথা প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীকে- যারা একই ভাষা ও একই নিয়ম-নীতির আওতায় পড়ে তাদেরকে ন্যাশিও নামে ডাকা হয়। বর্তমান সময়ে যা কোনো কোনো দেশে শাখা নামে পরিচিত। ১৯৮৩ ও ১৯৮৪ সালে জিন গ্যারিসন প্যারিসে ধর্মতত্ত্ব বিষয়ে অধ্যয়ন করার সময় দুইবার ফ্রেঞ্চ ন্যাশিও এর ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হন। চার্লস বিশ্ববিদ্যালয় যা প্রাগ বিশ্ববিদ্যালয় নামেও পরিচিত, শিক্ষার্থীদের দলগুলোকে ন্যাশন বা জাতিতে বিভক্ত করেছিল- স্টেডিয়াম জেনারেলে (ইউরোপের মধ্যযুগীয় বিশ্ববিদ্যালয়) বহেমিয়ান, বেভারিয়ান, স্যাক্সন ও সিলেশিয়ান এই চারটি জাতি বা ন্যাশন্স ছিল।

    একইভাবে মধ্যযুগীয় ক্যাথলিক মিলিটারি বর্গ নাইটস হসপিটালার জাতিতে বিভক্ত ছিল যারা গ্রিসের সর্ববৃহৎ ডোডেকানিজ দ্বীপ রোডস এর হোস্টেল রক্ষণাবেক্ষণ করতো৷ এই হোস্টেলসমূহ থেকেই তারা তাদের নাম গ্রহণ করেছে। হোস্টেলগুলোর ব্যাপারে স্প্যানিশ পর্যটক পেড্রো টাফুর বলেন যে, হোস্টেলসমূহ ছিল এমন জায়গা যেখানে বিদেশীরা খেতে আসে ও একে অপরের সাথে সাক্ষাৎ করতে আসে, এক জাতি অপর জাতি হতে বিভক্ত থেকে এবং একজন নাইট এদের সবার উপরে কর্তৃত্ব স্থাপন করেন ও নিবাসীদের ধর্মানুযায়ী তাদেরকে সকল প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহ করেন।[১৫]

    প্রাচীন আধুনিক জাতি

    আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী ফিলিপ এস. গোরস্কি তার নিবন্ধ দ্য মোজাইক মোমেন্টঃ এন আর্লি মডার্নিস্ট ক্রিটিক অফ দ্য মডার্নিস্ট থিওরি অফ ন্যাশনালিজম এ বলেন যে ডাচ প্রজাতন্ত্র হচ্ছে সর্বপ্রথম আধুনিক জাতি যা বাইবেলীয় জাতীয়তাবাদের উপর ভিত্তি করে সম্পূর্ণ আধুনিক রাজনৈতিক জাতীয়তাবাদের ফলে সৃষ্টি হয়। [১৬] ডায়ানা মুর এপেলবাউম ২০১৩ সালের একটি নিবন্ধ বাইবলিকাল ন্যাশনালিজম এন্ড দ্য সিক্সটিন্থ সেঞ্চুরি স্টেটস তে গোরস্কির বর্ণনা বিস্তৃতি করে নতুন, প্রতিবাদী ও ষোড়শ শতকের জাতিরাষ্ট্রের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন। [১৭] একইভাবে, যদিও একটু বিস্তৃত করে, ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী অ্যানথোনি ডি. স্মিথ ও একই যুক্তিগুলোই তুলে ধরেন তাঁর বই চুসেন পিপলঃ স্যাক্রেড সোর্সেস অফ ন্যাশনাল আইডেন্টিটি এন্ড মিথ্স এন্ড মেমরিজ অফ দ্য ন্যাশন এ। [১৮]

    জাতীয়তাবাদের একজন মহৎ ইতিহাসবেত্তা লিয়াহ গ্রিনফিল্ড তাঁর বই ন্যাশনালিজমঃ ফাইভ রোডস টু মডার্নিটি তে উল্লেখ করেন যে, জাতীয়তাবাদ সর্বপ্রথম শুরু হয় ১৬০০ সালে, ইংল্যান্ডে। গ্রিনফিল্ডের মতানুযায়ী, ইংল্যান্ড এই বিশ্বের সর্বপ্রথম জাতি। [১৯][২০]

    সামাজিক বিজ্ঞান

    ২০ শতকের শেষের দিকে সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করেন যে দুই ধরনের জাতি বিদ্যমান। একটি হলো নাগরিক জাতি যার প্রধান উদাহরণ হলো ফ্রান্স ও অপরটি হলো উপজাতীয় জাতি যার উদাহরণ হলো জার্মান জাতিগোষ্ঠী। উনিশ শতকে জোহান গতিলেব ফিশট এর মতো জার্মান দার্শনিকদের উদ্ভবের ফলে জার্মান ঐতিহ্যটি পরিচিতি লাভ করে যা নির্দেশ করে জার্মানদের একই সাধারণ ভাষা, ধর্ম, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও উপজাতীয় উৎপত্তি, যা জার্মানদেরকে অন্যান্য জাতি হতে পৃথক করে৷[২১] অন্যদিকে নাগরিক জাতি বিষয়টি সামনে আসে ফরাসি বিপ্লব এর পর থেকে এবং এর ধারণা দেন ১৮ শতকের ফরাসি দার্শনিকগণ। সব জনগণের একসাথে কেন্দ্রীভূত হয়ে থাকার ব্যাপারটি বোঝা গিয়েছিল এবং এর থেকেই জাতি গঠিত হয়। [২২] এটি ফরাসি প্রাচ্যবিদ আর্নেস্ট রেনান এর মতামত। [২১]

    জাতীয় পরিচয় বা জাতীয়তা এর উদ্ভব কিভাবে হয় তা জানার জন্য বর্তমান সময়ের গবেষণাকে সামাজিক ও ইতিহাসবিদ্যার দিকে ঝুঁকে থাকার প্রবণতা দেখা যায়। এর উদ্দেশ্য হলো স্বতন্ত্র কিংবা মিলিত গঠন পদ্ধতি শনাক্ত করা যা হতে পারে সতর্ক কিংবা অসতর্ক, ইচ্ছাকৃত কিংবা অনিচ্ছাকৃতভাবে। গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রাষ্ট্র একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা যা কিনা আংশিকভাবে অর্থনৈতিক বিষয়বস্তুর আওতায় পড়ে, এটিও যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে। [২১]

    জাতিসমূহের সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ নিয়ে বিতর্ক

    জাতিসমূহের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি বিতর্ক চলমান এবং তা হলো জাতিসমূহ সামনেও বর্তমানের মতই টিকে থাকবে নাকি জাতিসমূহের বদলে কোনো টেকসই বিকল্প আসবে। [৮]

    জাতি ভাঙ্গন তত্ত্বটি সরাসরি কসমোপলিটান বিষয়ের উপরে আলোকপাত করে তৈরি। কসমোপলিটন বা বিশ্বনাগরিকত্ব ধারণামতে, এই পৃথিবীতে মানুষের মেলবন্ধন আরো বাড়ানোর উদ্দেশ্যে জাতি ও রাষ্ট্রের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। রাজনৈতিক বিজ্ঞানী স্যামুয়েল পি. হান্টিংটন এর মতে, মানুষের সংস্কৃতি ও ধর্মগত পরিচয় আগামী দিনে স্নায়ুযুদ্ধ এর প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

    তত্ত্বটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে ১৯৯২ সালে আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইন্সটিটিউট এর একটি বক্তৃতায় যা পরবর্তীতে বিকশিত হয় ১৯৯৩ সালে আমেরিকান ম্যাগাজিন ফরেইন অ্যাফেয়ার্স এর একটি নিবন্ধে যার শিরোনাম ছিল “দ্য ক্ল্যাশ অফ সিভিলাইজেশ্যন্স?”[২৩][২৪] আমেরিকান রাজনৈতিক বিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ফুকুয়ামা এর বই দি এন্ড অফ হিস্টরি এন্ড দ্য লাস্ট ম্যান (১৯৯২) এর জবাবে হান্টিংটন তাঁর দ্য ক্ল্যাশ অফ সিভিলাইজেশ্যন্স এন্ড দা রিমেকিং অফ ওয়ার্ল্ড অর্ডার বইতে ১৯৯৬ সালে তাঁর গবেষণামূলক প্রবন্ধের (থিসিস) সম্প্রসারণ ঘটান।

    হান্টিংটন বিগত স্নায়ুযুদ্ধের সময়ের বৈশ্বিক রাজনীতির বিচিত্র তত্ত্ব নিরীক্ষা করে তাঁর চিন্তা শুরু করেন। কিছু তাত্ত্বিক ও লেখক যুক্তি দিয়েছেন যে মানবাধিকার, অসাম্প্রদায়িক গণতন্ত্র, পুঁজিবাদী মুক্ত বাজার অর্থনীতি স্নায়ুযুদ্ধের সময়কার জাতিদের একমাত্র ভাবাদর্শগত বিকল্প হিসেবে ছিল। বিশেষভাবে, ফ্রান্সিস ফুকুয়ামা দ্য এন্ড অফ হিস্টোরি এন্ড দ্য লাস্ট ম্যান বইতে লিখেছেন যে এই বিশ্ব ইতিহাসের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।

    হান্টিংটন বিশ্বাস করেছিলেন যে সেই ভাবাদর্শ শেষ হওয়ার পরেও সাংস্কৃতিক দ্বন্দের ফলে পৃথিবী শুধুমাত্র একটি সাধারণ অবস্থায় এসেছে। তাঁর থিসিসে তিনি উল্লেখ করেছেন যে আগামী ভবিষ্যতে দ্বন্দের মেরুদণ্ড হবে সাংস্কৃতিক ও ধার্মিক বিষয়বস্তুসমূহ।

    অ-জাতীয়তাবাদ একটি প্রক্রিয়া কিংবা রীতি যার ফলে জাতিরাষ্ট্র ও জাতীয় পরিচয় তাঁদের প্রয়োজনীয়তা হারিয়ে ফেলে অধিজাতীয় ও বৈশ্বিক সত্তার প্রভাবে। কিছু বিশেষ কারণ এটিকে সমৃদ্ধশালী করে তোলে যেমন অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন, বহুজাতিক সংস্থার প্রয়োজনীয়তা, অর্থনৈতিক বাজারের আন্তর্জাতিকীকরণ, শাসকগোষ্ঠীর সমাজ-রাজনৈতিক ক্ষমতা অধিজাতীয় সত্তার নিকট স্থানান্তর (যেমনঃ ইউনাইটেড ন্যাশন্স, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন) এবং ইন্টারনেটের মতো নতুন নতুন তথ্য ও সাংস্কৃতিক প্রযুক্তির আগমন। যা হোক, নাগরিকত্ব ও জাতীয় পরিচয় ব্যাপারটি প্রায়ই দরকার পড়ে৷ [২৫][২৬][২৭]

    অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যান জিয়েলংকা বিবৃতি দেন যে “ভবিষ্যতের রাজনৈতিক শক্তির নীতি ও প্রয়োগ ওয়েস্টফালিয়ার (ঐতিহাসিক এলাকা, ডিউকের জমিদারি এলাকা) মতো না হয়ে বেশি হবে মধ্যযুগীয় নীতির মতো।” রাজনৈতিক শক্তির সম্পৃক্ততা থাকবে “ক্ষমতায় একাগ্রতা, সার্বভৌমত্ব, সুস্পষ্ট পরিচয় এবং নব্য মধ্যযুগীয়তা যার বৈশিষ্ট্য হলো একাধির কর্তৃপক্ষ, বিভাজিত সার্বভৌমত্ব, একাধিক পরিচয় ও সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং অস্পষ্ট সীমান্ত” এসব বিষয়ের সাথে। [৮]

  • জননীতি

    সাধারণত জননীতি বলতে জনকল্যাণ ও জনগণের সেবা নিশ্চিত করে এমন কতিপয় নিয়ম নীতি বুঝায় যা সরকার কর্তৃক গৃহীত হয়। অর্থাৎ জননীতি হচ্ছে সরকার কর্তৃক প্রণীত এমন কিছু সিদ্ধান্ত যা জনগণের বৃহৎ কল্যাণের জন্য প্রণয়ন করা হয় এবং সামাজিক সমস্যা সমাধানে ভূমিকা পালন করে থাকে।[১] জননীতি হচ্ছে সেটাই যা সরকার করতে চায় বা চায় না।[২] সমস্ত সমাজের মাঝে মূল্যের কর্তৃত্বপূর্ণ বরাদ্দই হলো জননীতি।[৩]

    বিস্তারিত তথ্য

    বর্তমান বিশ্বের আধুনিক প্রাপ্তসমূহ জন-কল্যাণমূলক রাষ্ট্র। আর তাই রাষ্টীয় গঠন ও ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য এবং জনকল্যাণের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন নীতি গ্রহণ করা হয়। এ নীতি হচ্ছে সুপরিকল্পিত ও ন্যায়সঙ্গত কিছু পরিকল্পনা। আর এই নীতিগুলোকেই বলা হয় জননীতি। সরকার কোন কোন নীতিগ্রহণ বা অনুসরণ করে থাকে শুধু মাত্র তাই জননীতির আলোচ্য বিষয় নিয় বরং সরকার কেন এসব নীতি গ্রহণ করে থাকে। তাও জননীতি আলোচনা করে। জননীতি যুক্তিসম্পন্ন পরিকল্পনা বিভিন্ন দল বা গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব, এলিটের পছন্দ, নিয়মতান্ত্রিক শক্তি, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া এবং প্রশাসনিক প্রভাবেরই সমষ্টি। সরকার একটি সমাজকে সংগঠিত করে অন্যান্য সমাজের সমস্যা সমূহকে বিবেচনায় রাখে। এছাড়া সমাজের সকল স্থরের জনগনের মধ্যে সকল প্রকারের সেবা ও সুবিধা বণ্টন করে। এজন্য সরকার জনগনের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই অর্থ কর আরোপের মাধ্যমে করা হয়। আর সরকার এসব কিছুইল জননীতি আচরণকে নিয়ন্ত্রণ, আমলাতন্ত্রকে সুসংগঠিত করে এবং সমাজের সকল স্তরের জনগনের মধ্যে সকল প্রকারের সেবা ও সুবিধা বণ্টন করে। এজন্য সরকার জনগনের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে।

    তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই অর্থ কর আরোপের মাধ্যমে করা হয়। আর সরিকার এসব কিছু জননীতি নির্ধারণ এবং বাস্তবায়নের মাধ্যমে করে থাকে। এভাবেই জননীতি আচরণকে নিয়ন্ত্রণ, আমলাতন্ত্রকে সুসংগঠিত করে এবং সমাজের সকল স্তরে সুযোগ-সুবিধা বণ্টন করে। সরকারের এ নীতি প্রনয়ণ ও বাস্তবানের উপর ভিত্তি করেই রাষ্ট্র তথা জনগনের সার্বিক কল্যাণ বিনীত হয়। জননীতি যেহেতু সমাজের বিরাজমান সমস্যার উপর ভিত্তি করে রচিত হয় এবং রাজনীতি বিজ্ঞান সমাজের বিদ্যমান ঘটনাবলী নিয়ে বিশ্লেষণ করে। সেহেতু রাজনীতি বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে জননীতি বা সরকারী নীতি অধ্যয়নের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই সরকারী নীতি বা জননীতির পরিধি ওগুরুত্ব সম্পর্কে জানার আগে আমাদেএ জানতে হবে জননীতি বা সরকারী নীতি বিস্তার এবং জননীতির আলোচ্য বিষয়গগুলো কি? এগুলো নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-

    জননীতির বৈশিষ্ট্য

    সরকারী নীতির পরিধিঃ জননীতির পরিধি অত্যন্ত ব্যাপক ও বিস্তৃত। সরকারী নীতিতে কি কি অন্তর্ভুক্ত হয় সেটা নয় বরং কি কি অন্তর্ভুক্ত নয় সেটাই মূল বিষয়। নিম্নে সরকারী নীতির পরিধি পর্যায় ক্রমিকভাবে আলোচিত হলঃ

    ১) লক্ষ্য নির্ধারণে লক্ষ্য স্থির করা দিক নির্দেশনাঃ

    বর্তমান জনকল্যাণমূখী রাষ্ট্রের সরকারকে আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করতে হয়। এ সকল কর্মকান্ড কিভাবে করবে, কখন করলে সুবিধা হয়, কি করা উচিত বা অনুচিত ইত্যাদি বিষয়ে একটি লক্ষ্য নির্ণয় করা হয়। সরকারী নীতি এই সকল বিষয়ের উপর দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকে।

    ২) সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ

    যে কোন বিষয়ে লক্ষ্য স্থির করতে হলে তার একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়। সরকারী নীতির ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ একান্ত প্রয়োজন। কারণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ হলো অনেকগুলো বিকল্পের মধ্য থেকে একটি সঠিক ও বাস্তব সম্মত বিষয় নির্ধারণ। জননীতি সব সময় এ ধরনের বিষয়ের উপর জোর দিয়ে থাকে।

    ৩) নীতি বাস্তবায়নঃ

    সরকার বাস্তবে যা করছেন তাই সরকারী নীতির বাস্তবায়ন। সরকার দেশে বিরাজমান ব্যবস্থার প্রেক্ষিতে বিভিন্ন নীতি গ্রহণ করেন। কিন্তু বাস্তবে তার ত্রুটি দেয়া দিলে ঐ নীতি বাস্তবতা বিবর্জিত বলে ধরা পূর্বে তাকে সরকারী নীতি বলা যাবে না। সরকারি নীতিই সরকারের বাস্তবায়ন অভিব্যক্তি।

    ৪) ইতিবাচক ও নেতিবাচকঃ সরকারের নীতি ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয়ই হতে পারে। কারণ সরকারের সকল নীতিই রাষ্টের কল্যাণে কাজ করতে সক্ষম হয় না। তবে তা সরকারি নীতির এখতিয়ার বহির্ভূত নয়।

    যেমনঃ খাদ্য নীতি, সরকার নির্দিষ্ট পরিমাণ ধান সংগ্রহ করার লক্ষ্য স্থির করলেন কিন্তু প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হতে পারে। ইহা সরকারী নীতির নেতিবাচক দিক।

    ৫) তথ্যঃ

    একটি প্রকৃত ঘটনাকেই কেন্দ্র করে নীতি প্রণীত হয়। কারণ নীতি নির্ধারণে কতগুলো তথ্যের প্রয়োজন। সে জন্য প্রকৃত ঘটনা নয় বরং প্রকৃত তথ্যের উপর ভিত্তি করেই নীতি প্রনয়ণ করা হয়। যা সংগঠনের কার্যকারিতাকে নির্ভর যোগ্যতা প্রদান করে ।

    ৬) নমনীয়তাঃ সরকারী নমনীয় হওয়া উচিত যাতে প্রয়োজনের অনুযায়ী পরিবর্তন করা যায়। নীতি প্রণেতাদেরকে স্থায়ীত্বের কথা বিবেচনা করে নীতি নির্ধারণ করতে হবে। নীতির স্থায়িত্বের খুবই প্রয়োজন। দ্রুত পরিবর্তনশীল নীতি সংগঠনের স্থায়িত্বের পক্ষে অন্তরায়। তাই নমনীয়তা জননীতির বিষয়বস্তু।

    ৭) সফলতাঃ লক্ষ্যহীন নীতি কখনো সাফল্যের দিকে অগ্রসর হতে পারে না। যে নীতি সফলতা অর্জন করতে পারে না মূলত সে ধরনের নীতির কোন প্রয়োজন নেই। যে কোন দেশে সরকারী নীতি সাফল্য লাভ করতে পারে যদি সরকার সে ধরনের লক্ষ্য নিয়ে অগ্রসর হয় যে তাকে সাফল্য লাভ করতে হবে এবং সেভাবে যদি নীতি বাস্তবায়ন করা হয়।

    সরকারী নীতি বিশ্লেষণে আমরা বিষয় বস্তুর মাধ্যমে কতেকগুলো উপাদান দেখতে পাই যে জননীতির অন্তর্ভুক্ত। সেগুলো হলঃ

    ক) policy Demand:

    কোন সমস্যার উপর সরকারের পদক্ষেপ নেয়ার দাবি। যেমন সরকারী কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির দাবি বিবেচনা কল্পে বেতন ও মঞ্জুরি কমিশন গঠন।

    খ) Policy Decision:

    সরকার কোন ব্যাপারে সিদ্ধান্ত বা কার্যক্রম কিভাবে নেবেন তার আইন ভিত্তিক বর্ণনা বা সিদ্ধান্ত।

    গ) Policy Statement:

    নীতি বিষয়ক সিদ্ধান্ত অনেক সময় statement আকার প্রকাশিত হয়। যেমনঃ কমিটি বা মন্ত্রীপরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়াই এ ধরনের বিশ্বের অনুদান দেয়া হয়।

    ঘ) Policy out put:

    যে কথা বলা হয়েছে তা সঠিকভাবে পালন করা হয়েছে কিনা, তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক ক্ষেত্রে মিল আছে কিনা তা যাচাই করা। যেমনঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে বই বিতরণ হয়েছে কিনা তা যাচাই করা।

    ঙ) Policy Out come: ইহা Policy out put এর একটি consequence যেমনঃ বিনামূল্যে বই সরবরাহের সাথে শিক্ষার হার বাড়ছে কি না দেখা।

    চ) Policy analysis and policy advocacy ইহা হল কি করা উচিৎ এবং নীতি গ্রহণের ফলাফল কি তা যাচাই করা।

    পরিশেষে বলা যায় যে, জননীতির পরিধিত্ব বা বিষয়বস্তু ব্যাপক ও বিস্তৃত। কারণ, কল্যাণ মূলক নীতিমালা উদ্ভবের ফলে সরকারের কর্মকান্ডের ক্রমশ বৃদ্ধির হয়েছে। ফলে সরকারকে নতুন নতুন নীতিগ্রহণ করতে হয়। তাই সরকারী নীতির সীমা বা পরিধি নির্ণয় করা কঠিন ব্যাপার। তাই বলা যায় যে, যেহেতু এর পরিধি বা বিষয়বস্তু ব্যাপক এবং সরকারের গৃহীত সকল সিদ্ধান্তের সাথেই তা জড়িত তাই এটা একটা বহুবিষয়ক ব্যাপার।

    জননীতির গুরুত্ব

    যে কোন দেশের সকল কার্যকারিতা নির্ভর করে, সমন্বিত প্রচেষ্টার উপর। সুষ্ঠু নীতি ব্যবহারের ফলে সমন্বয়ের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। একটি দেশ তার লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার কাজে নীতিসমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নীতি সাধারণত সকলের সিদ্ধান্তের দ্বারা তৈরী করা হয়। নীতিকে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত করার নিমিত্তে নির্বাহী গন এর নিয়ন্ত্রণে নিজের হাতে রাখে যাতে পুনঃপুন সংগঠিত ঘটনাকে সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করা যায়। প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত কারণ গুলোর জন্য সরকারী নীতি গুরুত্বপূর্ণ।

    সামাজিক ক্রিয়াকর্ম সম্বন্ধে ধারণা লাভ

    Dror এর মতে, জননীতি মানুষকে পশু থেকে স্বতন্ত্র দান করেছে। আধুনিক উন্নয়নশীল সমাজগুলো লক্ষভিমুখী ক্রিয়া কল্পে লিপ্ত থাকে। জননীতি এসব সামাজিক ক্রিয়াকর্ম সম্পর্কে মানুষকে ধারণা লাভে সাহায্য করে। Dror বলেন-

    Public policy marking necessary became a local social activities.

    ২) নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবায়নঃ

    সরকারী কিংবা বেসরকারি নীতি সকলের আলোচনার পর গৃহীত হয়। তাই প্রত্যেক ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব অপরিসীম। কারণে এখানে শুধু নীতি নির্ধারণ করলে চলবে না সাথে তা বাস্তবায়ন করতে হবে.

    ৩) নীতির কাঠামোঃ

    নীতি হল সকল নির্বাহীদের সিদ্ধান্তের ফল। নীতির কাঠামো নতুন নীতি প্রনয়ণে সাহায্য করে এবং ব্যবস্থাপনা সকল সদস্যদের নিকট নির্দেশনা হিসেবে কাজ করে। পুনঃ পুনঃ সংগঠিত সমস্যাসমূহ সমাধান করার কাজে পূর্বের নীতি সমূহ বিশেষভাবে সাহায্য করে। ইহা ব্যবস্থাপনা সময়ের অপচয় রোধ করে।

    সরকারের নীতিমালা সম্পর্কে জানা

    একটি সমাজের জন্য সরকার কি কি নীতিমালা গ্রহণ করেছে। এসব নীতিমালার উদ্দেশ্য কি। এসব নীতিমালা থেকে জনগন কতটুকু উপকৃত হবে তা জননীতির মাধ্যমে জানা যায়। আবার এসব নীতিমালার গুরুত্ব অনুধাবন করে কল্যাণমূলক নীতিগুলোকে গ্রহণ করা সকলেরই দায়িত্ব। কারণ, জনগনের সহায়তায় বা শহযোগীতায় জননীতি বাস্তবায়ন হতে পারে। তাই জননীতি সম্পর্কে যদি জ্ঞান না থাকে তবে কল্যাণমূলক নীতিগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া সম্ভব হবে না। আবার অনেক নীতির মূল-আন্তির সমালোচনাও করা যাবে না। এ প্রসঙ্গে আনিসুজ্জামান বলেন যে, “সরকারী নীতির গুরুত্ব এত বেশি যে এক কথায় জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সরকারী নীতিমালা নিয়মকানুন কর্মকান্ড আমাদেরকে ঘিরে রেখেছে।

    বিভিন্ন সেক্টরগত নীতি সম্পর্কে ধারণা

    রাজনীতি বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে জননীতি অধ্যয়নের মাধ্যমে বিভিন্ন সেক্টরগত এর নীতি সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক এবং জানা যায় বিস্তারিত। যেমনঃ

    ক) শিক্ষানীতিঃ জননীতির মাধ্যমে সরকারের শিক্ষারত প্রত্যাশা এবং ব্যয় ও প্রচেষ্টা সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করা যায়।

    খ) স্বাস্থ্যনীতিঃ স্বাস্থ্যই সম্পদ। সবার জন্য স্বাস্থ্য। প্রত্যেক কল্যাণমূলক রাষ্ট্রেই কামনা করে এবং এজন্য সরকার তার স্বাস্থ্য নীতি ঘোষণা করে থাকে।

    গ) কৃষিনীতিঃ

    এর মাধ্যমে কৃষি সামগ্রির দাম ও কৃষি ক্ষেত্রে স্বনির্ভর হতে সরকারের মনোভাব সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়।

    ঘ) শিল্পনীতিঃ বিরাষ্ট্রীয়করণ নীতি শিল্পক্ষেত্রে গতিশীলতার সাক্ষ্য বহন করে। একটি দেশের উন্নয়ন সে দেশের শিল্প উন্নয়নের উপর নির্ভরশীল। তাই নীতি সম্পর্কে ধারণা থাকা আবশ্যক।

    ৬) অংশগ্রহণঃ একটি দেশে সরকার বহুবিধ সমস্যার সমাধান থাকে। এই কর্মকান্ডে জনগন তাদের মতামত এর জন্য শহযোগীতার মাধ্যমে অংশগ্রহণ করতে পারে। যদি জনগণের নীতিমালা সম্পর্কে জ্ঞান থাকে। রাজনীতি বিজ্ঞাননে অংশ গ্রহণ এর বিভিন্ন আলোচ্য বিষয় এর মধ্যে জননীতির সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়। এবং বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নীতি সম্পর্কে মতামত ব্যক্ত করা যায়। এতে সরকারেরও শহযোগীতা হয়।

    ৭) জনমত গঠনঃ জননীতি সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে সমাজের বিভিন্ন শ্রেনীর লোকদের এর গুরুত্ব সম্পর্কে জ্ঞান দিয়ে জনমত গঠন করা সম্ভব হয়। আর এর জনমত যে দিকে থাকে। সাধারণত তার অনুকূলেই জননীতি নির্ধারণ করা হয়। তাই জনমতমূখী কর্মসূচি প্রনয়ণের মাধ্যমে সরকারকে বাধ্য করার জন্য জননীতি অধ্যায়নের গুরুত্ব অপরিসীম।

    ৮) কোন নীতিকে গ্রহণ করা হবেঃ একটি সমস্যা সমাধানে অনেকগুলো পথ থাকতে পারে। তার মধ্যে কোন পথটি অনুসরণ করা হবে বা কোন নীতিটা অধিক কার্যকর ইত্যাদির জন্য পর্যাপ্ত পরিমান তথ্যের প্রয়োজন হয়। আর এসব তথ্যাদি বিচার বিশ্লেষণের মাধ্যমে জননীতি নির্ধারণ করতে হয়। তাই জননীতি সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে নীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছা যায়।

    ৯) নীতি বিশ্লেষণ সম্পর্কে জ্ঞান লাভঃ নীতি বিশ্লেষণ নীতি প্রণয়নের কারণ ও তার প্রভাব সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে। অর্থাৎ নীতি বিশ্লেষণের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি সরকার কেন, কখন, কিভাবে নীতি প্রনয়ণ করলে তার প্রকৃত রহস্য ও তথ্য আর তা জননীতির মাধ্যমেই জানা সম্ভব।

    ১০) বৈজ্ঞানিক কারণঃ

    বাস্তবিকই সরকারী নীতি অধ্যয়ন করা হয় বৈজ্ঞানিক কারণে। একটা সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে হলে সরকারের নীতিটা হওয়া চাই বাস্তব সম্মত বা বিজ্ঞান সম্মত। তাই আধুনিক সমাজের অবস্থা সম্পর্কে জানতে হলে সরকারী নীতি সম্পর্কে জানতে হবে।

    ১১) রাজনৈতিক কারণঃ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা নেই এমন রাষ্ট্র পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া মশকিল। সরকারী নীতিতে দেখা যায়, যদি কোন নীতি ব্যর্থ হয় তবে তার মূল কারণ হিসেবে ধারণা করতে পারি রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। তাই একটি দেশের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যটি কি ধরণের ও তা কিভাবে অর্জন করা যায় এবং সরকারী নীতির সাথে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কতটুকু সম্পর্কযুক্ত তা জানার জন্য সরকারী নীতির গুরুত্ব অপরিসীম।

    ১২) জনসংখ্যার সুষ্ঠু ব্যবহারঃ জনসংখ্যা সুষ্ঠু ব্যবহারের জন্য প্রতিটি সরকার বিভিন্ন নীতিমালার প্রনয়ণ করে। তাই বর্তমানে কি উন্নত উন্নয়নশীল প্রতিটি দেশেই মানব সম্পদের উন্নয়নের উপর অধিক গুরুত্বারুপ করা হয়েছে।

    ১৩) সময়ের প্রতি দায়িত্বশীলঃ জননীতি প্রশাসকদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কার্য সম্পন্ন করতে অনুপ্রাণিত করে সময় সচেতন করে তোলে। যে ক্ষেত্রে একই সমস্যা পুনঃ পুনঃ দেখা দেয়া, সেক্ষেত্রে প্রত্যেকে সময় নতুন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয় না। ফলে, কর্মচারীদের একই প্রশ্ন উত্তরদানের জন্য ব্যবস্থাপককে বিরক্ত না করে সময়ক্ষেপণ করতে হয় না।

    ১৪) সামঞ্জস্য বিধানঃ সরকারী নীতিসমূহ বিভিন্ন কাজের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধানে যথেষ্ট সহায়তা করে থাকে। প্রতিটি কর্মচারী যদি প্রতিষ্ঠানের নীতিসমূহ সম্বন্ধে অকাত থাকে তাহলে উক্ত প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কাজের মধ্যে সামঞ্জস্য সাধনে সুবিধাজনক হয়।

    ১৫) স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কঃ সরকার স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন নীতিমালার গ্রহণ করে জননীতি অধ্যয়নের মাধ্যমে এসব কর্মকান্ড সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়।

    ১৬) নির্ভরশীল চলকঃ জননীতি অধ্যয়নের ফলে কতিপয় নির্ভরশীল চলক সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়। যা অর্থ-সামাজিক অবসর অবস্থান জানতে সাহায্য করে। সমাজের মধ্যে রাজতান্ত্রিক অবস্থার ধরন এবং তার সাথে অন্যান্য অবস্থার সম্পর্কে জানার জন্য জননীতি অধ্যয়ন করা হয়।

    ১৭) অ-নির্ভরশীল চলকঃ একটি সমাজে কেবল নির্ভরশীল চলকই থাকে না পাশাপাশি অ-নির্ভরশীল চলকও থাকে। এ অ-নির্ভরশীল চলক সম্পর্কে ধারণা জন্য জননীতি অধ্যয়ন প্রয়োজন।

    ১৮) দেশে বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে ধারণাঃ জননীতি অধ্যয়ন আমাদেরকে দেশের সাম্প্রতিক কালের এবং সুদূর অতীতের বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে জ্ঞান দান করে। ফলে এই সমস্যার সমাধানের জন্য নতুন জননীতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। জননীতি অধ্যয়ন করলেই এই সমস্যার জন্য কোন ধরণের জননীতি বাস্তবায়ন করতে হবে তা জানা যায়।

    ১৯) মানব সম্পদ উন্নয়নঃ জনসংখ্যা সমস্যাকে মানব সম্পদে রূপান্তরিত করার জন্য জননীতি সম্পর্কে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। কারণ, সঠিক জননীতির ফলেই মানব সম্পদের উন্নয়ন করা যায়।

    ২০) অধিকার সম্পর্কে সচেতনঃ নাগরিকগণ তাদের অধিকার সম্পর্কে হতে পারে জননীতি অধ্যয়নের মাধ্যমে। যেমনঃ বসবাসের অধিকার, নিরাপত্তার অধিকার, মত প্রকাশের অধিকার ইত্যাদি।

    ২১) অন্যান্য কারণঃ উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো ছাড়াও জননীতি অধ্যয়নের আরও অনেক ধারণা রয়েছে। তা নিম্নে দেয়া হলো-

    ১) আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কোন নীতি গ্রহণ করা হয় কোনটি গ্রহণ করা হয় না তা রাজনীতির মাধ্যমে জানা সম্ভব।

    ২) সরকারের আর্থিক নীতি (মুদ্রা নীতি, রাজস্ব নীতি) সম্পর্কে জ্ঞান লাভের জন্য জননীতি অধ্যয়ন করা প্রয়োজন।

    ৩) জনম্যান ও সামাজিক নিরাপত্তার জন্য জননীতি অধ্যয়ন আবশ্যক।

    ৪) সরকারের আয়-ব্যয় সংক্রান্ত নীতিমালার জননীতির আলোচনার বিষয় বস্তু। একজন রাজনীতি বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে এসব জানা প্রয়োজন।

    ৫) জাতীয় প্রতিরক্ষা নিয়েও জননীতি আলোচনা করে।

    ৬) প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার ও পরিবেশ নীতি সম্পর্কে জননীতি থেকে জ্ঞান লাভ করা যায়।

    এতক্ষণের আলোচনা থেকে এ কথায় আসতে পারি যে, কোন দেশের বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে জানতে হলে কিংবা কিভাবে সরকারী নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন করা হয়। এই জন্যই জননীতি অধ্যয়নে গুরুত্ব অপরিসীম।