Nitrogen dioxide at −196 °C, 0 °C, 23 °C, 35 °C, and 50 °C. (NO 2) converts to the colorless dinitrogen tetroxide (N 2O 4) at low temperatures, and reverts to NO 2 at higher temperatures.
নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড একটি রাসায়নিক যৌগ যার রাসায়নিক সংকেত NO 2। নাইট্রোজেন এর অক্সাইডসমূহের মধ্যে এটাই অন্যতম। নাইট্রিক এসিড‘র শিল্প সংশ্লেষনে NO 2 অন্তঃমর্ধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ কারণে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ টন NO 2 উৎপাদন করা হয়। উচ্চ তাপমাত্রায় এটা লালচে বাদামী গ্যাস, এরা কটু গন্ধযুক্ত এবং বায়ু দূষক[৭]।
বৈশিষ্ট্য
তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধ । বাদামি রং এর বোতলে রাখা হয় ।
প্রস্তুতি ও বিক্রিয়া
বাতাসে অক্সিজেনের সাহায্যে নাইট্রিক অক্সাইডের জারণে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয়:[৮] 2 NO + O 2 → 2 NO 2
উচ্চ তাপমাত্রায় অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেনের বিক্রিয়ায় নাইট্রিক অক্সাইড পাওয়া যায়। : O 2 + N 2 → 2 NO
ল্যাবরেটরিতে দুই ধাপ বিক্রিয়া নাইট্রিক এসিড থেকে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড উৎপাদন করা হয়। : 2 HNO 3 → N 2O 5 + H 2O 2 N 2O 5 → 4 NO 2 + O 2
ধাতব নাইট্রেটসের তাপীয় বিয়োজনে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড পাওয়া যায়ঃ 2 Pb(NO 3) 2 → 2 PbO + 4 NO 2 + O 2
গাঢ় নাইট্রিক এসিডকে ধাতুর সাথে বিজারণে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড তৈরী হয়ঃ 4 HNO 3 + Cu → Cu(NO 3) 2 + 2 NO 2 + 2 H 2O
গাঢ় নাইট্রিক অক্সাইডের সাথে টিনের বিক্রিয়ায় নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডের সাথে উপজাত হিসেবে হাইড্রেটেড টিন অক্সাইড উৎপন্ন হয়ঃ 4 HNO3 + Sn → H2O + H2SnO3 + 4 NO2
“nitrogen dioxide (CHEBI:33101)”। Chemical Entities of Biological Interest (ChEBI)। UK: European Bioinformatics Institute। ১৩ জানুয়ারি ২০০৮। Main। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ অক্টোবর ২০১১। Haynes, William M., সম্পাদক (২০১১)। CRC Handbook of Chemistry and Physics (92nd সংস্করণ)। CRC Press। পৃষ্ঠা 4.79। আইএসবিএন1439855110। Mendiara, S. N.; Sagedahl, A.; Perissinotti, L. J. (২০০১)। “An electron paramagnetic resonance study of nitrogen dioxide dissolved in water, carbon tetrachloride and some organic compounds”। Applied Magnetic Resonance। 20: 275। ডিওআই:10.1007/BF03162326। Zumdahl, Steven S. (২০০৯)। Chemical Principles 6th Ed.। Houghton Mifflin Company। পৃষ্ঠা A22। আইএসবিএন0-618-94690-X। “NIOSH Pocket Guide to Chemical Hazards #0454” (ইংরেজি ভাষায়)। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথ (NIOSH)। “Nitrogen dioxide”। স্বাস্থ্য এবং জীবনের জন্য সহসা ঝুঁকিপূর্ণ। National Institute for Occupational Safety and Health (NIOSH)। এই নিবন্ধটিতে United States Environmental Protection Agency থেকে পাবলিক ডোমেইন কাজসমূহ অন্তর্ভুক্ত যা পাওয়া যাবে এখানে । Holleman, A. F.; Wiberg, E. (2001) Inorganic Chemistry. Academic Press: San Diego. আইএসবিএন০-১২-৩৫২৬৫১-৫.
.বিজ্ঞান বিজ্ঞানের ইতিহাসদর্শনের বিজ্ঞানগণিতজীববিজ্ঞানরসায়নপদার্থবিজ্ঞানভূ বিজ্ঞানপ্রযুক্তিসম্পাদনারসায়ন প্রবেশদ্বারসংক্ষিপ্তP:CHEMরসায়ন প্রবেশদ্বারে স্বাগতম। বাংলা রসায়ন শব্দের উদ্ভব সম্পর্কে বস্তুনিষ্ঠ তথ্য জানা না গেলেও ইংরেজী কেমিস্ট্রি শব্দ সম্পর্কে জানা যায়। ইংরেজী কেমিস্ট্রি শব্দটি এসেছে আরবী আলকেমি থেকে। আর এই আলকেমি শব্দ এসেছে গ্রিক শব্দ χημεία (যার অর্থ “একত্রে ঢালা”) থেকে। রসায়ন বিজ্ঞানের একটি শাখা। আধুনিক রসায়ন মৌলিক পদার্থ এবং মৌলসমূহের মধ্যে বিরাজিত বন্ধন সম্পর্কে আলোচনা করে। এছাড়া মৌল ও যৌগের গঠন, ধর্ম, রূপান্তর ইত্যাদি সম্পর্কেও রসায়ন আলোচনা করে। পদার্থসমূহের নিজেদের মধ্যে পারস্পারিক ক্রিয়া এবং শক্তির সাথে ক্রিয়াও রসায়নে আলোচিত হয়। পদার্থসমূহের মধ্যে ব্যাপক বৈচিত্র বিদ্যমান এবং এরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে যৌগ হিসেবে থাকে। রসায়নবিদগণ বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের পরমাণু কীভাবে অণু গঠন করে এবং অণুসমূহ এক অপরের সাথে কীভাবে ক্রিয়া করে তা গবেষণা করেন। রসায়ন সম্বন্ধে আরও জানুন…সম্পাদনানির্বাচিত নিবন্ধগ্লুকোজ (ইংরেজী: Glucose) বা দ্রাক্ষা-শর্করা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কার্বোহাইড্রেট যা শর্করার রাসায়নিক শ্রেণিবিভাগে এক প্রকার একশর্করা বা মনোস্যাকারাইড। জীবন্ত কোষ গ্লুকোজকে শক্তি ও বিপাকীয় প্রক্রিয়ার একটি উৎস হিসেবে ব্যবহার করে। সালোকসংশ্লেষণ বা ফটোসিনথেসিস প্রক্রিয়ার অন্যতম প্রধান উৎপাদ। গ্লুকোজ প্রাণী ও উদ্ভিদের কোষের শ্বাসক্রিয়ায় অন্যতম অপরিহার্য উপাদান। পাকা, মধু ও আধিকাংশ মিষ্ট ফলে গ্লুকোজ থাকে। রক্তে এবং বহুমূত্র রোগীর মূত্রে সামান্য পরিমাণে গ্লুকোজ আছে। “গ্লুকোজ” গ্রিক শব্দ glukus (γλυκύς) থেকে উদ্ভূত হয়েছে, যার অর্থ “মিষ্টি” এবং “-ose” প্রত্যয়টি চিনি নির্দেশ করে। অ্যালডোহেক্সোজ চিনির দুইটি স্টেরিও সমাণু গ্লুকোজ নামে পরিচিত, যার মাত্র একটি (ডি-গ্লুকোজ ) জৈবিকভাবে সক্রিয়। এই গঠনটিকে অনেক সময় ডেক্সট্রোজ (“ডেক্সট্রোরোটেটরি” হতে উদ্ভূত) মনোহাইড্রেট অথবা বিশেষত খাদ্য শিল্পে সাধারণভাবে ডেক্সট্রোজ বলা হয়। এই নিবন্ধটিতে ডি-গঠনবিশিষ্ট গ্লুকোজ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, এল-গ্লুকোজ কোষে জৈবিকভাবে বিপাকীয় ক্রিয়ায় অংশগ্রহন করে না, যা গ্লাইকোলাইসিস নামে পরিচিত। আরও দেখুন…সম্পাদনানির্বাচিত চিত্রসম্পাদনানির্বাচিত বিষয়দশে মিলে করবো কাজ, বাংলা উইকিকে দেবো নয়া সাজ। বাংলা উইকিপিডিয়ায় রসায়ন বিভাগকে পরিপূর্ণ করতে নেয়া হয়েছে এই উদ্যোগ। প্রতি সপ্তাহে একটি বিশেষ নিবন্ধ নির্বাচিত করা হবে। এবং সবাই মিলে সেই নিবন্ধটিকে পরিপূর্ণ করা হবে। এই সপ্তাহের বিষয় সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড । পরবর্তী সপ্তাহের বিষয় ইথানল । সম্পাদনাবিষয়শ্রেণীসমূহ
হারম্যান এমিল ফিসার (অক্টোবর ৯, ১৮৫২ – জুলাই ১৫, ১৯১৯) একজন জার্মান রসায়নবিদ। তিনি কার্বহাইড্রেট সংক্রান্ত গবেষণার জন্য ১৯০২ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ফিসার এস্টারিফিকেশন আবিষ্কারের কারণে তিনি সমধিক পরিচিত। ১৮৭৫ সালে তিনি ফিনাইল হাইড্রাজিন প্রস্তুত করেন যা অ্যালডিহাইড ও কিটোনের সাথে বিক্রিয়া করে নির্দিষ্ট গলনাঙ্ক বিশিষ্ট হাইড্রাজোন উৎপন্ন করে। তিনি এ বিকারক ব্যবহার করে সুগার রসায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। সুগারের গাঠনিক সংকেত নির্ণয়ে ও সংশ্লেষণে তাঁর ব্যপক অবদানের জন্য তাকে “সুগার রসায়নের জনক” হিসেবে অভিহিত করা হয়। তিনি প্রোটিন ও রঞ্জক পদার্থের রসায়নেও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। আরও দেখুন…
উপরন্তু পরমাণুতে যে ইলেক্ট্রনীয় উত্তেজিত অবস্থা বিরাজ করে সেই ক্ষেত্রে অণুসমূহ ঘূর্ণন ও কম্পন মোড প্রদর্শন করে এবং অণুসমূহের শক্তি স্তরগুলো কোয়ান্টায়িত অবস্থায় থাকে। দুটি ভিন্ন ঘূর্ণন অবস্থার মধ্যে ক্ষুদ্রতম শক্তি পার্থক্য বিদ্যামান যেখানে বিশুদ্ধ ঘূর্ণন বর্ণালীর পাল্লা তড়িৎচৌম্বক বর্ণালীরঅবলোহিত অঞ্চলকে ছাড়িয়ে যায় (তরঙ্গদৈর্ঘ্য প্রায় 30 – 150 µm)। কম্পন বর্ণালীসমূহের পাল্লা অবলোহিত রশ্মির কাছাকাছি হয় (প্রায় ১ – ৫ µm), অপরদিকে ইলেকট্রনের পরিবৃত্তি ঘটিত বর্ণালীসমূহ মূলত দৃশ্যমান ও অতিবেগুনী অঞ্চলে হয়ে থাকে। কম্পন ও ঘূর্ণন বর্ণালীর পরিমাপ করে দুইটি নিউক্লিয়াসের মধ্যবর্তী দূরত্বের ন্যায় অণুর ধর্মাবলী নিখুঁতভাবে পরিমাপ করা যায়।
পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে যে অপরিহার্য পারমাণবিক অরবিটাল তত্ত্ব রয়েছে তাকে আণবিক অরবিটাল তত্ত্বে সম্প্রসারিত করা যায় – যা আণবিক পদার্থবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
যে তরঙ্গ মাধ্যমের কণাগুলোর কম্পনের দিকের সাথে সমকোণে অগ্রসর হয় সেটাই আড় তরঙ্গ/অণুপ্রস্থ তরঙ্গ (Transverse wave)। পানি, আলো, তাপ, বেতার ইত্যাদির তরঙ্গ অণুপ্রস্থ তরঙ্গ।
এটি কোন মাধ্যমে তরঙ্গচূড়া ও তরঙ্গখাঁজ উৎপন্ন করে সঞ্চালিত হয়। একটি তরঙ্গচূড়া থেকে পরবর্তি তরঙ্গচূড়া পর্যন্ত দুরত্বকে এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বলে। আবার একটি তরঙ্গখাঁজ থেকে পরবর্তী তরঙ্গখাঁজ পর্যন্ত দুরত্বকে এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বলে।এ ধরনের তরঙ্গে সমাবর্তন ঘটে।
আইসোট্রপি মানে সর্বদিকে সমতা। শব্দটি তৈরি হয়েছে গৃক আইসোস (ἴσος, “সমান”) এবং ট্রপস (τρόπος, “পথ”) থেকে। সঠিক সংজ্ঞা নির্ভর করে বিষয়ের এলাকার উপরে। ব্যতিক্রম ও অসমতাকে প্রায়ই নির্দেশ করা হয় “অ্যান” উপসর্গ দিয়ে, ফলে শব্দটি হয় অ্যানাইসোট্রপি। এটি দিয়ে বুঝায় এমন অবস্থা যেখানে বৈশিষ্ট্যসমূহ ভিন্ন হয় ব্যবস্থাগতভাবে, দিকের উপরে নির্ভর করে। আইসোট্রপিক বিকিরন এ আছে একই তীব্রতা, পরিমাপ এর দিক অগ্রাহ্য করে এবং আইসোট্রপিক ক্ষেত্র একই কর্ম প্রদর্শন করে পরীক্ষনীয় কনা এর দিক অগ্রাহ্য করে।
আইসট্রপিক কাচবৎ ভলকানিক প্রস্তর। একধরনের বৈজ্ঞানিক উপকরণ।
ঘনপদার্থবিজ্ঞান হল পদার্থবিজ্ঞানেরএকটি শাখা যাতে বিভিন্ন ঘন পদার্থের নানা ধর্ম, যেমন অতিপরিবাহিতা, অর্ধপরিবাহিতা, অয়শ্চৌম্বকত্ব ইত্যাদি আলোচিত হয়। পদার্থের ভৌত ধর্ম যেমন দশান্তর ইত্যাদি নিয়ে পদার্থবিজ্ঞানের এই শাখাটিতেই সবচেয়ে গভীর গবেষণা হয়।
শক্তি স্তর
যেকোন ঘন পদার্থের মধ্যে ইলেক্ট্রনগুলি নানা শক্তিস্তরে বিস্তৃত থাকে। ইলেক্ট্রন একটি ফার্মিয়ন হবার ফলে পাউলির বহিষ্করণ সূত্র অনুসারে একেবারে একই শক্তিস্তরে একটির বেশি ইলেক্ট্রন একসাথে অবস্থান করতে পারে না। অতএব দুটি সমান শক্তির ইলেক্ট্রন সহাবস্থান করলে তাদের শক্তিস্তর একটির বদলে দুটি শক্তি স্তরে বিশ্লিষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু ঘন পদার্থের মধ্যে এত বেশি ইলেক্ট্রন সহাবস্থান করে যে তাদের বিশ্লিষ্ট শক্তিস্তরগুলি কাছাকাছি থেকে একটিই প্রশস্ত শক্তিস্তর তৈরি করে যাতে “ব্যান্ড” বলে।
পরমানুতে অবস্থিত মুক্ত যোজন ইলেক্ট্রন বিদ্যুৎ পরিবহনে অংশগ্রহণ করে ফলে এদেরকে পরিবহন ইলেক্ট্রন বলে। এই ইলেক্ট্রনগুলোর শক্তির পাল্লা বা ব্যান্ডকে পরিবহন ব্যান্ড বলে।এই ব্যান্ডটির মধ্যে যে ইলেকট্রন গুলি ডিলোকালাইজড (Delocalized) বা অনাবদ্ধ অর্থাৎ তারা কোনো একটি বিশেষ কেন্দ্রীণের চারিদিকে আবদ্ধ না থেকে পুরো ঘন পদার্থটির উপর মিলিত ভাবে ছড়িয়ে থাকে)।
অ্যাম্পিয়ার (ইংরেজি:Ampere) (এসআই এককের প্রতীক: A; এসআই মাত্রার প্রতীক: I), প্রায়ই সংক্ষিপ্ত Amp;[১] হলো তড়িৎ প্রবাহেরআন্তর্জাতিক একক পদ্ধতি[২][৩] এবং সাতটি এসআই[৪] ভিত্তি এককের একটি। বিখ্যাত ফরাসি বিজ্ঞানী আঁদ্রে মারি অম্পেয়্যার (১৭৭৫-১৮৩৬) এর নামানুসারে এই এককের নামকরণ করা হয়েছে। তিনি ছিলেন ফরাসি গণিতবিদ এবং পদার্থবিজ্ঞানী, এবং তিনি তড়িৎগতিবিজ্ঞানের জনক হিসেবে বিবেচিত। সব ইলেকট্রিকাল যন্ত্রতেই এর গ্রহণীয় অ্যাম্পিয়ারের সর্বোচ্চ মান উল্লেখ থাকে। ব্যাটারির মান বুঝানোর জন্য এর গায়ে ভোল্ট (V) ও অ্যাম্পিয়ার (Amp) উল্লেখ করা থাকে।এস আই পদ্ধতিতের মতে অ্যাম্পিয়ার হল একটা ইউনিট। এটি তড়িৎ চুম্বকীয় বল যা তড়িৎ পরিবাহীর মধ্যে তড়িৎ প্রবাহের সৃষ্টি করে। প্রথমে সি জি এস পদ্ধতির তড়িৎ এর দুটি ধারণা ছিল। এটি এস আই পদ্ধতির মতই এবং অন্যটি তড়িৎ চার্জ এর ভিত্তির একক হিসাবে ধরা হয় এবং একক চার্জের পরিমাপ করা হয় দুটি চার্জিত তামার প্লেটের মধ্যে। এরপর অ্যাম্পিয়ার নির্ধারণ করা হয় প্রতি সেকেন্ডে ১ কুলম্ব চার্জকে। এস আই পদ্ধতিতে চার্জের একক কুলম্ব এবং এটি পরিমাপ করা হয় ১ অ্যাম্পিয়ার বিদ্যুৎ ১ সেকেন্ডে যে পরিমাণ প্রবাহিত হয়। ভবিষ্যতে এস আই পদ্ধতির পরিবর্তন হতে পারে এবং তা ভিত্তি একক হতে পারে। কুলম্বের মতে তড়িৎ চার্জ নির্ধারিত হয় ইলেকট্রন এবং প্রোটন দ্বারা।
বিষয়বস্তু
১) বর্ণনা ২) ইতিহাস ৩) অনুধাবন ৪) ভবিষ্যৎ বর্ণনা ৫) প্রতিদিনের উদাহরণ
৫,১) সি পি উ == ডি সি 1 V
৫,২) পোর্টেবল ডিভাইস 12 V
৫,৩) অভ্যন্তরীণ জ্বালানি ইঞ্জিন যানবাহন
৫,৪) উত্তর আমেরিকার অভ্যন্তরীণ সরবরাহ 120 V AC
৫,৫) ইউরোপিয়ান এবং কমনওয়েলথ অভ্যন্তরীণ সরবরাহ ২৩০-২৪০V AC
বর্ণনা
২০১৯ সালের মে মাস থেকে প্রযোজ্য সংঙ্গা হলো: প্রতি সেকেন্ডে 1/1.602176634×10‐¹⁹ সংখ্যক ইলেকট্রনের সমপরিমাণ চার্জ প্রবাহিত হলে সেটি হচ্ছে এক অ্যাম্পিয়ার। এস আই পদ্ধতিতে আমপিয়ারের বর্ণনা দেয় – অ্যাম্পিয়ার হলো একটি তড়িৎ ধ্রুবক, যদি অসীম দৈর্ঘ্যের ও উপেক্ষণীয় প্রস্থচ্ছেদের দুটি সোজা সমান্তরাল পরিবাহক, নমনীয় বৃত্তাকার এবং শূন্য মাধ্যমে পরস্পর থেকে ১ মিটার দূরে থাকলে পরিবাহক দুইটির মধ্যে ক্রিয়াশীল বলের মান হবে 2 × 10 −7 নিউটন।
অ্যাম্পিয়ার বলের সূত্র ব্যাখ্যা করে যে- দুটি সমান্তরাল তারের মধ্যে তড়িৎ প্রবাহের ফলে আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বলের সৃষ্টি হয়। এই বল আম্পিয়ারের সংজ্ঞা প্রদান করে। এস আই পধতিতে চার্জের একক কুলম্ব। এর পরিমাণ হলো ১ আম্পিয়ার তড়িৎ প্রবাহের ১ কুলম্ব চার্জ যা প্রতি সেকেন্ডে প্রদত্ত বিন্দু দিয়ে যায়। 1 A = 1 C s .
সাধারণত Q বের করা হয় তড়িৎ প্রবাহের I এবং সময় t দ্বারা, Q=।t, ধ্রুবক তাৎক্ষণিক এবং গড় তড়িৎ প্রবাহ আম্পিয়ারে প্রকাশ করা হয়। যেহেতু চার্জ তড়িৎ ১,২ আম্পিয়ার এবং চার্জ সংগৃহীত সময় একটি বর্তনীর মাধ্যমে কুলম্বে প্রকাশ করা হয়। যেমন ব্যাটারির চার্জ ৩০০০০ কুলম্ব। আমাপিয়ারের এবং কুলম্বের সম্পর্ক ওয়াট (জুল/সেকেন্ড) ও জুলের মতই।
ইতিহাস
আম্পিয়ার ছিল তড়িৎ প্রবাহের সেন্টিমিটার গ্রাম সেকেন্ড পদ্ধতির দশম ইউনিট। যা তখন আবাম্ফেয়ার নামে পরিচিত। যা দুইটি তারের মধ্যে এক সেন্টিমিটার পার্থকে প্রতি সেন্টিমিটার এ দুইটি বলের দৈর্ঘ্যর মধ্যবর্তী তড়িৎ প্রবাহ। ইউনিটির মাপ নির্ধারণ করা হয়েছে যাতে এমকে এসএ বেবস্থায় এটি থেকে প্রাপ্ত ইউনিট সহজলভ্য আকারে করা হয়। আন্তর্জাতিক আমাপিয়ার হল আম্পিয়ারের প্রাথমিক পরিচয়। এটি ব্যাখ্যা করে এটি সিলভার নাইট্রেট থেকে প্রতি সেকেন্ডে ০.০০১১৮ গ্রাম সিলভার জমা করে।
অনুধাবন
ওয়াট ব্যালেন্স ব্যবহার করে অ্যাম্পিয়ার এর আদর্শ মান উপলব্ধি করা যায় কিন্তু ব্যবহারিক ক্ষেত্রে এটিকে ব্যবহার করা হয় ওহমের সূত্র দ্বারা যা ইলেক্ট্রোমটিভ বল এবং রোধের একক হতে পাওয়া যায়(ভোল্ট এবং ওহম, এই দুটি সহজেই উৎপাদন করা যায়। এটি জসেফসন জাংশন এবং কোয়ান্টাম হোলের প্রভাব। বর্তমানে অ্যাম্পিয়ার বের করার জন্য অনিশ্চিত আপেক্ষিকতা যাতে প্রায় 107 টি অংশ আছে, এতে আরও ওয়াট ওহম ভোল্ট যুক্ত করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত ভবিষ্যৎ
দুটি তারের মধ্যে বলের সম্পর্কের বর্ণনা না দিয়ে এটি প্রস্তাব করে যে অ্যাম্পিয়ারকে প্রাথমিক চার্জের প্রভাব হতে বিবেচনা করা উচিত। যেহেতু এক কুলম্ব এর মান প্রায় ৬.২৪১৫০৯৩×১০১৮ প্রাথমিক চার্জের সমান। যা ইলেকট্রন প্রোটন বহন করে। এক অ্যাম্পিয়ার প্রায় ৬.২৪১৫০৯৩×১০১৮ প্রাথমিক চার্জ প্রতি সেকেন্ডে। এটি প্রাথমিক চার্জ এর মান ১ কুলম্ব। এখানে প্রস্তাব করা হয় যে ১ অ্যাম্পিয়ার হল তড়িৎ প্রবাহের দিকে প্রতি সেকেন্ডে চার্জ এর মান। ২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক ওজন ও পরিমাপ কমিটি এই প্রস্তাবে রাজি হয় । নতুন ধারণা পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক ওজন ও পরিমাপ কমিটিতে আলোচনা করা হয় কিন্তু তা পরে সময়ের জন্য বাস্তবায়িত হয় নি।
নিত্যদিনের উদাহরণ
সাধারণত ভোল্টেজে এর ধ্রুবক শক্তি বিতরণ পদ্ধতি দ্বারা যুক্ত। এটি সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত শক্তি (ওয়াট ) এবং অপারেটিং ভোল্টেজ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তাই নিচের উদাহরণগুলো ভোল্টেজ লেভেলের সাথে মিলিয়ে করা হয়েছে। সি পি ইউ ১ ভোল্ট ডি সি
—– তড়িৎ নোটবুক সি পি ইউ (১৫-৪৫ ওয়াট , ১ ভোল্ট ); ১৫ -৪৫ অ্যাম্পিয়ার
— হেডলাইট (প্রত্যেক সাধারণত ৬০ ওয়াট ); ৫ অ্যাম্পিয়ার
উত্তর আমেরিকার অভ্যন্তরীণ সরবরাহ ১২০ ভোল্ট এ সি – বেশীরভাগ কানাডা, মেক্সিকো , আমেরিকার পাওয়ার সাপ্লাই ১২০ ভোল্ট ঘরের আসবাবপত্র সর্বচ্চো ১৫ আম্পিয়ার থেকে ২০ অ্যাম্পিয়ার তড়িৎ প্রবাহ থাকে।
আব্বে প্রিজম বা আব্বে ত্রিশিরা (ইংরেজি: Abbe prism) আলোকবিজ্ঞানে প্রতিবিম্ব তৈরির কাজে ব্যবহৃত এক ধরনের প্রিজম ব্যবস্থা, যা দুইটি দ্বি-সমকোণী প্রিজম দিয়ে তৈরি করা হয় এবং যাতে চারবার প্রতিফলন ঘটে। জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী এর্ন্স্ট আব্বে এই প্রিজমটি তৈরি করেন, তারই নাম অনুসারে এটির নাম আব্বে প্রিজম রাখা হয়েছে। অ্যবে প্রিজম এর কাজ অনেকটা বিচ্ছুরণ প্রিজম এর মত।
গঠন এবং কার্যপ্রণালী
আব্বে প্রিজম
এই প্রিজমটি সমকোণী প্রিজম আকারের একটি কাচের ফলক, যার পৃষ্ঠতলগুলি ৩০°-৬০°-৯০° কোণবিশিষ্ট একটি ত্রিভুজ গঠন করে। যখন পাশের চিত্রানুযায়ী একটি আলোকরশ্মি AB তল দিয়ে প্রবেশ করে, তখন এর প্রতিসরণ ঘটে এবং BC তল থেকে রশ্মিটির অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন ঘটে এবং AC তল দিয়ে বের হবার সময় আবার এর প্রতিসরণ ঘটে।
পরাবৈদ্যুতিক অথবা অস্তরক (বা অস্তরক পদার্থ) (ইংরেজি: Dielectric) হলো এক প্রকার তড়িৎ অন্তরক(ইন্সুলেটর) যাকে তড়িৎ ক্ষেত্র প্রয়োগে পোলারাইজ (বা মেরুকরণ) করা যায়। যখন কোন অস্তরক পদার্থকে কোন তড়িৎক্ষেত্রে স্থাপন করা হয়, তখন তড়িৎ আধানগুলো যেভাবে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে যায় অস্তরক পদার্থের মেরুকরণের কারণে সেভাবে যেতে পারে না। অস্তরক পদার্থের এই মেরুকরণের কারণে ধনাত্মক তড়িৎ আধানগুলো তড়িৎক্ষেত্রের দিকে এবং ঋণাত্মক তড়িৎ আধানগুলো তড়িৎক্ষেত্রের বিপরীত দিকে সরে আসে। ফলে পদার্থের ভেতরে একপ্রকার অভ্যন্তরীণ তড়িৎক্ষেত্র তৈরি হয় যা অস্তরক পদার্থের মধ্য দিয়ে পুরো তড়িৎক্ষেত্রকেই কমিয়ে ফেলে।[১] যদি কোন দূর্বল বন্ধন সম্পন্ন অণু দ্বারা কোন অস্তরক পদার্থ গঠিত হয়, তবে তা শুধু মেরুকরণই হয় না বরং তার ইলেক্ট্রনের অক্ষও ঐ তড়িৎক্ষেত্রের অক্ষের সাথে একই দিকে পূনঃবিন্যাস্ত হয়।
অস্তরক পদার্থের ধর্ম বিশ্লেষন করার ফলে কোন পদার্থের তড়িৎ এবং চৌম্বকীয় শক্তি ধারণ করার ক্ষমতা বোঝা যায়।[২][৩][৪]
প্রকৃতপক্ষে অন্তরক শব্দটি প্রযোজ্য হয় কম তড়িত পরিবাহিতার ক্ষেত্রে, যেখানে অস্তরক শব্দটি বোঝায় এমন পদার্থ যার উচ্চ মেরুকরণ ক্ষমতা রয়েছে। একে একটি সংখ্যায় প্রকাশ করা যায় যাকে আপেক্ষিক তড়িৎভেদ্যতা বলে। সাধারণত অন্তরক শব্দটি তড়িৎ অবরোধ বোঝায়, যেখানে অস্তরক শব্দটি বোঝায় (মেরুকরণের মাধ্যমে)কোন পদার্থের শক্তি সঞ্চয় করে রাখার ক্ষমতা। অস্তরক পদার্থের একটি পরিচিত উদাহরণ হলো, কোন ধারকের দুই ধাতব প্লেটের মাঝে থাকা অন্তরক পদার্থ। তড়িৎক্ষেত্র দ্বারা সৃষ্ট অস্তরক পদার্থের মেরুকরণ তড়িৎক্ষেত্রের তীব্রতা অনুসারে কোন ধারকের পৃষ্ঠ-আধান বৃদ্ধি করে।[১]
অস্তরক এবং অন্তরকের মাঝে মৌলিক পার্থক্য হলো, সকল অস্তরকই অন্তরক, তবে সকল অন্তরক অস্তরক নয়। অর্থাৎ, অস্তরক হলো অন্তরকের একটি প্রকার।
অস্তরক বা ডাইইলেক্ট্রিক শব্দটি (ডাই- +ইলেকট্রিক) মাইকেল ফেরাডের অনুরোধে উইলিয়াম হেওয়েল উদ্ভাবন করেন।[৫][৬] যেহেতু একটি প্রকৃত অস্তরক পদার্থের তড়িৎ পরিবাহীতা শূন্য (তুলনাঃ প্রকৃত তড়িৎপরিবাহকের পরিবাহীতা হলো অসীম)।[৭] কাজেই এটি একটি বিচ্যুতি কারেন্ট তৈরি করে যার মাধ্যমে এটি একটি আদর্শ ধারকের মতো তড়িৎ শক্তি সঞ্চয় করে এবং ফিরিয়েও দেয়।
কোন পদার্থের তড়িৎ সংবেদনশীলতা χe হলো কত সহজে তা তড়িৎক্ষেত্রের ফলে মেরুকরণ হতে পারে তার পরিমাপ। যার মাধ্যমে কোন পদার্থের তড়িৎ ভেদ্যতা নির্ধারিত হয় এবং এটি ঐ মাধ্যমের ক্ষেত্রে ধারক বা ধারকের ধারকত্ব থেকে আলোর গতি পর্যন্ত আরো অনেক বিষয়কেই নিয়ন্ত্রণ করে।
এটি তড়িৎক্ষেত্র E থেকে প্রণোদিত মেরুকরণ ঘণত্ব P এর সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি আনুপাতিক ধ্রুবক, P = ε 0 χ e E
কোন মাধ্যমে তড়িৎ সংবেদনশীলতা ও ঐ মাধ্যমের তড়িৎ আপেক্ষিক ভেদ্যতা εr এর সম্পর্ক হলো, χ e = ε r − 1
সুতরাং বায়বীয় মাধ্যমের ক্ষেত্রে, χ e = 0
তড়িৎ বিচ্যুতিD এবং মেরুকরণ ঘনত্ব P এর সম্পর্ক হলো, D = ε 0 E + P = ε 0 ( 1 + χ e ) E = ε 0 ε r E
বিকিরণ এবং কার্যকারণ
সাধারনভাবে, কোন পদার্থই তড়িৎক্ষেত্রের ফলে তাৎক্ষণিকভাবে মেরুকরণ হতে পারে না। অতএব সময়ের সাপেক্ষে এর ফাংশনের সাধারণ রুপ হলো, P ( t ) = ε 0 ∫ − ∞ t χ e ( t − t ′ ) E ( t ′ ) d t ′ .
সুতরাং, মেরুকরণ বা মেরুকরণ হলো সময়ের উপর নির্ভরশীল তড়িৎ সংবেদনশীলতা χe(Δt) এর সাথে পূর্বসময়ের তড়িৎক্ষেত্রের কনভলিউশন(বা কুণ্ডলী) ফাংশন। এই ইন্টিগ্রালের সর্বোচ্চ সীমা অসীম পর্যন্ত বর্ধিত করা যায় যদি χe(Δt) = 0 হয় যখন Δt < 0 হবে। ডিরাক ডেল্টা ফাংশনের জন্য তাৎক্ষনিক তড়িৎ সংবেদনশীলতা হবে, χe(Δt) = χeδ(Δt).
একটি লিনিয়ার সিস্টেম বা রৈখিক ব্যাবস্থার ক্ষেত্রে একে ফুরিয়ার রুপে কম্পাঙ্কর ফাংশন হিসেবে প্রকাশ করাটা কিছুটা সহজসাধ্য। কনভলিউশন(বা কুণ্ডলী থিওরি) অনুসারে এই ইন্টিগ্রালটির সহজ রুপ, P ( ω ) = ε 0 χ e ( ω ) E ( ω )
তড়িৎ সংবেদনশীলতা (সমতুল্য তড়িৎভেদ্যতা) কম্পাঙ্কর উপর নির্ভরশীল। কাজেই কম্পাঙ্কর সাপেক্ষে তড়িৎ সংবেদনশীলতার পরিবর্তন পদার্থের বিকিরণ ধর্ম নির্ধারণ করে।
অধিকন্তু, পদার্থের মেরুকরণ কেবলমাত্র পূর্বসময়ের তড়িৎক্ষেত্র (যেমন, Δt < 0 এর জন্য χe(Δt) = 0) এর উপরই নির্ভর করে এবং এর কার্যকারণের ফল তড়িৎ সংবেদনশীলতা χe(ω) এর প্রকৃত এবং আনুমানিক(রিয়েল এবং ইমাজিনারি) অংশের উপর ক্রেমার-ক্রনিং সীমাবদ্ধতা আরোপ করে।
অস্তরক মেরুকরণ
মৌলিক আণবিক মডেল
মৌলিক আণবিক মডেল অনুসারে তড়িৎক্ষেত্রের সাথে একটি অণুর ক্রিয়া।
চিরায়ত অস্তরক মডেলে একটি অণুর সাথে তড়িৎক্ষেত্রের মিথষ্ক্রিয়া।
অস্তরক পদার্থের চিরায়ত মডেল অনুসারে, কোন পদার্থ অণু দ্বারা তৈরি। প্রতিটি অণুই তার কেন্দ্রে অবস্থিত একটি ধণাত্মক আধান কণা এবং তাকে ঘিরে থাকা ঋণাত্মক আধান (ইলেক্ট্রণ) মেঘ দ্বারা গঠিত। তড়িৎক্ষেত্রের উপস্থিতিতে এই আধানের মেঘ বেঁকে যায় যেমনটা উপরে বামপাশের ছবিতে দেখানো হয়েছে।
উপরিপাত তত্ত্ব অনুসারে একে সংকুচিত করে সরল ডাইপোল বা দ্বিমেরুতে রুপান্তর করা যায়। কোন দ্বিমেরুকে তার ডাইপোল মোমেন্ট বা দ্বিমেরু ভরবেগ দ্বারা বর্ণনা করা যায়, চিত্রে M দ্বারা নির্দেশীত নীল তীরচিহ্নটি হলো এর ভেক্টর পরিমাপ। এটি হলো, তড়িৎক্ষেত্র এবং দ্বিমেরু ভরবেগ এর মাঝে সম্পর্ক, যা অস্তরকের ক্রিয়া বৃদ্ধি করে। (লক্ষণীয়, চিত্রে দ্বিমেরু ভরবেগ এবং তড়িৎক্ষেত্রের দিক একই দিকে। এমনটা কিন্তু সবসময় হয় না, তবে বেশিরভাগ পদার্থের ক্ষেত্রেই এটা সঠিক)।
যখন তড়িৎক্ষেত্র সরিয়ে ফেলা হয়, পদার্থের অণু তার আগের অবস্থায় ফিরে যায়। এর জন্য যে সময় প্রয়োজন হয়, তাকে শিথিলকরণ সময় বলা হয়, যা এক্সপনেনশিয়াল সূচকে হ্রাস পায়।
এই তো হলো কেবল পদার্থবিজ্ঞান অনুসারে অস্তরকের মডেলের ব্যাখ্যা, এখন অস্তরকের আচরণ নির্ভর করে পরিস্থিতির উপর। পরিস্থিতি যত জটিল হবে, মডেলও অস্তরকের আচরণ ততটাই সঠিক ব্যাখ্যা করতে পারবে। জরুরী প্রশ্ন হলোঃ
তড়িৎক্ষেত্র কি সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়, নাকি স্থির থাকে? পরিবর্তন হলে কি হারে?
উদ্ভূত ক্রিয়া এর দিক কি প্রয়োগকৃত তড়িৎক্ষেত্রের সাথে একই দিকে (পদার্থের জন্য সর্বসম)?
উদ্ভূত ক্রিয়া কি সর্বত্র সমান (পদার্থের ক্ষেত্রে সমসত্ত্ব)?
এর সীমারেখা এবং ইন্টারফেস কি ধর্তব্য?
তা কি তড়িৎক্ষেত্রের সাপেক্ষে রৈখিক? নাকি অরৈখিক? (লিনিয়ার নাকি নন লিনিয়ার)
তড়িৎক্ষেত্র E এবং দ্বিমেরু ভরবেগ M এর সম্পর্ক অস্তরকের বৈশিষ্ট বৃদ্ধি করে। প্রদত্ত যেকোন পদার্থের ক্ষেত্রে একে F ফাংশন দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় এভাবে, M = F ( E )
যখন তড়িৎক্ষেত্র এবং পদার্থের প্রকৃতি উভয়টি নির্ধারিত হয়ে যায়, তখন সহজেই F ফাংশন তার আচরনের প্রবৃদ্ধি নির্দেশ করে।
বিরিফ্রেঞ্জেন্স (প্রতিসারক সূচক মেরুকরণ এবং আলোর প্রসারণের দিকের উপর নির্ভরশীল)
রশ্মী আত্ম-কেন্দ্রীভূত করা
ঐকতান তৈরি
দ্বিমেরু মেরুকরণ
দ্বিমেরু মেরুকরণ হলো এমন মেরুকরণ, যা হয় মেরুকরণযোগ্য অণুগুলো (দিকনির্ভর মেরুকরণ) এর মধ্যে নিহিত, অথবা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এমন অণুকে মেরুকরণের(বাঁকানো মেরুকরণ) মাধ্যমে বাঁকিয়ে তৈরি করা। দিকনির্ভর মেরুকরণ এর ফলাফল স্থায়ী দ্বিমেরু যেমন, পানির অণুতে অক্সিজেন এবং হাইড্রোজেনের মাঝে ১০৪.৪৫° কোণ, যা তড়িৎক্ষেত্র ছাড়াই বজায় থাকে। এর ফলে তৈরি হয় ম্যাক্রোস্কোপিক মেরুকরণ।
যখন বাইরে থেকে কোন তড়িৎক্ষেত্র প্রয়োগ করা হয়, তখন দিকনির্ভর মেরুকরণের অনুগুলোর দুইমেরুর মাঝে দূরত্ব সমান থাকে, যদিও মেরুকরণের দিক নিজ থেকেই ঘুরে। এই ঘূর্ণন হয় নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে যা তার ঘাত এবং পারিপার্শ্বীক অণুর সান্দ্রতার উপর নির্ভর করে, কারণ এই ঘূর্ণন হলো তাৎক্ষণিক ক্রিয়া। দ্বিমেরু মেরুকরণ উচ্চ কম্পাঙ্কে কাজ করে না। কোন তরলে অণু প্রতি পিকো সেকেন্ডে এক রেডিয়ান করে ঘুরে যা লস করে 1011 Hz (মাইক্রোওয়েভ রিজিয়নে)। তড়িৎক্ষেত্রে এই সময়ক্ষেপন তাপ এবং ঘর্ষণ উৎপন্ন করে।
যখন তড়িৎক্ষেত্রঅবলোহিত বা আরো কম কম্পাঙ্কে প্রয়োগ করা হয়, তড়িৎক্ষেত্রের ফলে অণুগুলোতে টান লেগে বেঁকে যায় এবং মেরুকরণ ভরবেগ পরিবর্তিত হয়। অণুগুলো কাঁপার কম্পাঙ্ক হলো প্রায় সময়ের বিপরীত মান যা অণুগুলোকে বাঁকিয়ে দেয়, এটি হলো অবলোহিত কম্পাঙ্কে বাঁকানো মেরুকরণ।
আয়নিক মেরুকরণ
আয়নিক মেরুকরণ হচ্ছে এমন মেরুকরণ যা আয়নিক স্ফটিকগুলিতে (উদাহরণস্বরূপ, NaCl) ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক আয়নগুলিতে আপেক্ষিক স্থানচ্যুতির কারণে হয়।
যদি কোনও স্ফটিক বা অণুতে একাধিক ধরনের পরমাণু থাকে তবে পুরো স্ফটিক বা অণুতে পরমাণুর আধান ধনাত্মক বা ঋণাত্মক একদিকে দিকে ঝুঁকে থাকে। ফলে, যখন স্ফটিক জালি কম্পন বা আণবিক কম্পন হয়, তখন তা অণুগুলোকে আপেক্ষিকভাবে স্থানচ্যুত করে, তখন ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক আধানের কেন্দ্রগুলিও স্থানচ্যুত হয়। এই কেন্দ্রগুলির অবস্থানের স্থানচ্যুতি তার ভারসাম্যকেও প্রভাবিত করে। যখন কেন্দ্রগুলি পরস্পর অনুরুপ হয় না, তখন পুরো অণু বা স্ফটিকেই মেরুকরণ দেখা দেয়, এই মেরুকরণকেই আয়নিক মেরুকরণ বলে।
আয়নিক মেরুকরণের ফলে ফেরোইলেকট্রিক প্রভাবের পাশাপাশি দ্বিমেরু মেরুকরণও হয়ে থাকে। একটি নির্দিষ্ট দিক বরাবর স্থায়ী দ্বিমেরুকে সারিবদ্ধ করার ফলে সৃষ্ট ফেরোইলেকট্রিক স্থানচ্যুতিকে অর্ডার-ডিসঅর্ডার স্থানচ্যুতি দশা বলে। স্ফটিকগুলিতে আয়নিক মেরুকরণের ফলে যে স্থানচ্যুতি ঘটে, তাকে ডিসপ্লেসিভ স্থানচ্যুতি দশা বলে।
জীবকোষে
আয়নিক মেরুকরণ কোষগুলিতে শক্তি-সমৃদ্ধ যৌগগুলির (মাইটোকন্ড্রিয়ায় প্রোটন পাম্প) উৎপাদন সক্রিয় করে এবং প্লাজমা ঝিল্লিতে রেস্টিং-পটেনশিয়াল প্রতিষ্ঠা করে, আয়নের প্রতিকূল পরিবহনকে শক্তিশালী করে এবং কোষ থেকে কোষে যোগাযোগ (যেমন Na+/K+-ATPase এনজাইম) সক্রিয় করে।
প্রাণীর দেহের টিস্যুগুলিতে কোষগুলো বৈদ্যুতিকভাবে মেরুকৃত থাকে -অন্যভাবে বললে, তারা কোষের প্লাজমা ঝিল্লি জুড়ে একটি বিভব পার্থক্য বজায় রাখে, একে ঝিল্লি বিভব পার্থক্য বলে। এই বৈদ্যুতিক মেরুকরণ আয়ন পরিবহনকারী এবং আয়ন পরিবহন চ্যানেলের মধ্যে পরস্পরে জটিল প্রকৃয়ায় ক্রিয়া করে।
কোষের নিউরনের ঝিল্লিতে আয়ন পরিবহন চ্যানেল ভিন্ন হওয়ার ফলে স্নায়ু, তন্তু সহ বিভিন্ন অংশগুলোতে আয়ন পৌঁছানো সহ বিভিন্ন তড়িৎ ক্রিয়াগুলো ভিন্ন হয়। ফলে কখনো নিউরনের ঝিল্লির কিছু অংশ উত্তেহিত হতে পারে (কাজ করতে সক্ষম) যখন হয়তো অন্য অংশ তা হবে না।
অস্তরক বিকিরণ
পদার্থবিজ্ঞানে, অস্তরক বিকিরণ হলো প্রদত্ত তড়িৎক্ষেত্রের কম্পাঙ্কের সাপেক্ষে কোন অস্তরক পদার্থের তড়িৎ ভেদ্য়তার উপর নির্ভরশীলতা। যেহেতু এখানে মেরুকরণের পরিবর্তন এবং তড়িৎক্ষেত্র পরিবর্তনের মধ্যে একটা বিরতি আছে, তাই অস্তরকের তড়িৎভেদ্যতা তড়িৎক্ষেত্রের কম্পাঙ্কের একটি জটিল ফাংশন। অস্তরক পদার্থের প্রয়োগগুলো এবং মেরুকরণ ব্যবস্থা বিশ্লেষণে অস্তরক বিকিরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পদার্থের বিকিরণের একটা উদাহরণ হলোঃ তরঙ্গ বিস্তারের জন্য কোন মাধ্যমের কম্পাঙ্ক-নির্ভর প্রতিক্রিয়া।
যখন কম্পাঙ্ক বেশি হয়ঃ
দ্বিমেরু মেরুকরণ মাইক্রোওয়েভ রিজিয়নে (প্রায় 1010 Hz) তড়িৎক্ষেত্রের তরঙ্গ অনুসরণ করতে পারে না।
আয়নিক মেরুকরণ এবং অণুর বাঁকানো মেরুকরণ তড়িৎক্ষেত্রের অবলোহিত এবং অতি-অবলোহিত রিজিয়নে (প্রায় 1013 Hz) তরঙ্গের পথ অনুসরণ করতে পারে না।
কম্পাঙ্ক অতিবেগুনী রশ্মী রিজিয়নের উপরে হলে তড়িৎভেদ্যতা ধ্রুবক ε0 হয়, এটি হলো শূন্যস্থানের তড়িৎভেদ্যতা। কারণ তড়িৎ ভেদ্যতা তড়িৎক্ষেত্র এবং মেরুকরণের শক্তিমত্তা নির্দেশ করে, যদি কোনও মেরুকরণ প্রক্রিয়া প্রতিক্রিয়া হারায় তবে তড়িৎভেদ্যতা হ্রাস পায়।
অস্তরকীয় শিথিলতা
অস্তরকীয় শিথিলতা হলো, কোনও পদার্থের অস্তরক ধ্রুবকের ক্ষণিকের বিলম্ব (বা বিরতি)। এটি সাধারণত কোন অস্তরক মাধ্যমে (উদাঃ ধারকের অভ্যন্তরে বা দুটি বৃহত পরিবাহীপৃষ্ঠের মাঝে) তড়িৎক্ষেত্রের পরিবর্তনের সাপেক্ষে আণবিক মেরুকরণে বিলম্বের কারণে হয়ে থাকে। তড়িৎক্ষেত্রের পরিবর্তনে অস্তরকীয় শিথিলতা পরিবর্তনশীল চৌম্বকক্ষেত্রের (উদাঃ, আবেশক বা ইন্ডাক্টর অথবা ট্রান্সফর্মার কোরে) হিস্টেরেসিসের সমতুল্য হতে পারে। সাধারণভাবে অস্তরকীয় শিথিলতা একটা বিরতি যা একটি লিনিয়ার বা রৈখিক প্রকৃয়া। তড়িৎক্ষেত্র ও মেরুকরণের মাঝের এই বিরতি গিবস মুক্ত শক্তির অপরিবর্তনীয় অবক্ষয়কে বোঝায়।
পদার্থবিদ্যায়, অস্তরকীয় শিথিলতা বলতে বোঝায় কোন অস্তরক মাধ্যমে দুলন্ত বা অসিলেট করতে থাকা বাইরের তড়িৎক্ষেত্রের বিরাম। একে অনেক সময় কম্পাঙ্কের ফাংশনে তড়িৎভেদ্যতা হিসেবে বর্ণনা করা হয়।,যা আদর্শ মাধ্যমে ডিবে সমীকরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়।
ডিবে শিথিলতা
ডিবে শিথিলতা হলো, বাইরের বিকল্প তড়িৎক্ষেত্রের প্রতি আদর্শ ও নিরবচ্ছিন্ন সংখ্যক দ্বিমেরুর অস্তরক শিথিলতা। একে সাধারণত কোন মাধ্যমের তড়িৎক্ষেত্রের কম্পাঙ্ক ω এর ফাংশন জটিল তড়িৎভেদ্যতা ε হিসেবে প্রকাশ করা হয়ঃ ε ^ ( ω ) = ε ∞ + Δ ε 1 + i ω τ , এখানে, ε∞ হলো উচ্চ কম্পাঙ্কে তড়িৎভেদ্যতা যখন কম্পাঙ্ক সীমা, Δε = εs − ε∞ যেখানে εs হলো স্ট্যাটিক স্বল্প কম্পাঙ্কে তড়িৎভেদ্যতা
এবং τ হলো, কোন মাধ্যমের শিথিলতা বিরতিকাল।
এখন সমীকরণের প্রকৃত এবং কাল্পনীক অংশ তুলনা করে পাই,[৮] ε ′ = ε ∞ + ε s − ε ∞ 1 + ω 2 τ 2 ε ″ = ( ε s − ε ∞ ) ω τ 1 + ω 2 τ 2
অস্তরকীয় লসকে প্রকাশ করা হয় এভাবেঃ tan ( δ ) = ε ″ ε ′ = ( ε s − ε ∞ ) ω τ ε s + ε ∞ ω 2 τ 2
অস্তরকীয় শিথিলতার মডেলটি তৈরি করেন পদার্থবিজ্ঞানী পিটার ডিবে (১৯১৩)[৯] তার নামানুসারেই এর নামকরন করা হয়। এটি একটি গতিশীল মেরুকরনের বিরতিকালের জন্য প্রযোজ্য।
ডিবে সমীকরনের বিভিন্নরুপ
কোল-কোল সমীকরণ এই সমীকরণটি ব্যবহৃত হয় যখন অস্তরক লসের শীর্ষ সমমিতিক সম্প্রসারণ দেখায়। কোল – ডেভিডসন সমীকরণ এই সমীকরণটি ব্যবহৃত হয় যখন অস্তরক লস পিক অসমমিতিক সম্প্রসারণ দেখায়। হাভরিলিয়াক–নেগামি শিথিলতা এই সমীকরণটি সমমিতিক ও অসমমিতিক উভয় সম্প্রসারণ বিবেচনা করে। কোহলরাউশ – উইলিয়ামস – ওয়াটস ফাংশন প্রসারিত এক্সপনেনশীয়াল সূচক ফাংশনের ফুরিয়ার রূপান্তর। কুরি-ভন শ্যুইডলার সূত্র এটি শক্তি সূত্র অনুসারে প্রদত্ত ডিসি তড়িৎক্ষেত্রে অস্তরকের প্রতিক্রিয়া দেখায়, যা ভারী এক্সপনেনশীয়াল ফাংশনের ইন্টিগ্রাল আকারে প্রকাশ করা যেতে পারে।
প্যারাইলেক্ট্রিসিটি হলো, প্রদত্ত তড়িৎক্ষেত্রের ফলে পদার্থগুলোর (বিশেষত সিরামিক) মেরুকৃত হওয়ার ক্ষমতা। ফেরোইলেক্ট্রিসিটির বিপরীত, যা এমনকি পদার্থে কোন স্থায়ী তড়িৎ দ্বিমেরুর না থাকলেও হতে পারে এবং তড়িৎক্ষেত্রে অপসারণে পদার্থের মেরুকরণ শূন্য হয়ে যায়।[১০] পদার্থের প্যারাইলেক্ট্রিক আচরণের কারণ হতে পারে- আলাদাভাবে প্রত্যেক আয়নের বিকৃতি (নিউক্লিয়াস থেকে বৈদ্যুতিক মেঘের বিচ্যুতি) অথবা অণুগুলির মেরুকরণ অথবা আয়নসমুহের বিন্যাস বা ত্রুটির মিশ্রণ।
স্ফটিক দশায় প্যারাইলেক্ট্রিসিটি দেখা যেতে পারে যদি তাদের দ্বিমেরুগুলো বিন্যাস্ত না থাকে। ফলে এটি বিন্যাস্ত হতে প্রয়োজনীয় বিভব পার্থক্য বাইরের তড়িৎক্ষেত্রকে দুর্বল করে দিতে পারে।
উচ্চ ডাইইলেক্ট্রিক বা অস্তরক ধ্রুবক সম্পন্ন একটি প্যারাইলেকট্রিক পদার্থের উদাহরণ হলো, স্ট্রনসিয়াম টাইটানেট।
LiNbO3 স্ফটিকটি 1430 কেলভিন তাপমাত্রার নিচে ফেরোইলেক্ট্রিক এবং এর উপরে এটি একটি বিচ্যুত প্যারাইলেক্ট্রিক। একইভাবে, অন্যান্য পেরভস্কাইটগুলিও উচ্চ তাপমাত্রায় প্যারাইলেক্ট্রিসিটি প্রদর্শন করে।
রেফ্রিজারেশনের কাজে প্যারাইলেকট্রিসিটির সমূহ সম্ভবনা রয়েছে। রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় তড়িৎক্ষেত্র প্রয়োগ করে প্যারাইলেকট্রিক পদার্থকে মেরুকরণ করলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং তড়িৎক্ষেত্রের অপসারণে তাপমাত্রা হ্রাস পায়।[১১] একটি তাপ পাম্প যা প্যারাইলেক্ট্রিককে মেরুকরণ করলে এটি পরিবেষ্টিত তাপমাত্রায় (অতিরিক্ত তাপকে ছেড়ে দিয়ে) ফিরে যায়, একে তখন কোন জিনিসের (যাকে ঠান্ডা করতে হবে) তার সংস্পর্শে আনলে এবং পদার্থের মেরুকরণ অপসারণ করলেই তার হিমায়ন ঘটে।
পরিবর্তনশীলতা
টিউনাবল বা পরিবর্তনশীল অস্তরক হলো এমন অন্তরক বিভব পরিবর্তনের সাথে সাথে যার তড়িৎ আধান সংরক্ষণের ক্ষমতা পরিবর্তিত হয়।[১২][১৩]
সাধারণত স্ট্রনসিয়াম টাইটানেট (SrTiO3) স্বল্প তাপমাত্রার ডিভাইসগুলিতে ব্যবহৃত হয় আর বেরিয়াম স্ট্রনসিয়াম টাইটানেট (Ba1−xSrxTiO3) স্বাভাবিক বাসার তাপমাত্রার ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়, মাইক্রোওয়েভ অস্তরক এবং কার্বন ন্যানোটিউব (সিএনটি) যৌগগুলো।[১২][১৪][১৫]
২০১৩ সালে বহুস্তর বিশিষ্ট স্ট্রনসিয়াম টাইটানেট দ্বারা প্রস্তুতকৃত যার প্রতি স্তরে স্ট্রনসিয়াম অক্সাইডের একটি করে শীট ক্রমানুসারে সন্নিবেশিত করে একপ্রকার অস্তরক তৈরি করা হয় যা প্রায় 125 গিগাহার্টজ পর্যন্ত অপারেটিংয়ে সক্ষম। উপাদানটি আণবিক বিম এপিট্যাক্সির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছিল। এতে দুটো ভিন্ন পদার্থের স্তরের মাঝে ক্রিস্টাল স্পেসিংয়ের ফলে স্ট্রনসিয়াম টাইটানেট লেয়ারের মধ্যে একপ্রকার ফাঁক তৈরি হয় যা এটিকে অপেক্ষাকৃত কম স্থিতিশীল এবং টিউনাবল বা পরিবর্তনশীল করে তোলে।[১২]
Ba1−xSrxTiO3 এর মতো সিস্টেমগুলোতে পরিবেষ্টিত( বা এমবিয়েন্ট) তাপমাত্রার সামান্য নিচে একটি প্যারাইলেকট্রিক–ফেরোইলেকট্রিক ট্রানজিশন রয়েছে। এজাতীয় ফিল্ম থেকে সিস্টেম ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
সমান্তরাল পাত ধারকের আধান বিভেদ, d এতে একপ্রকার অভ্যান্তরীন তড়িৎক্ষেত্র তৈরি করে। অস্তরক(চিত্রে কমলা রঙ) এই ক্ষেত্রকে কমায় এবং ধারকত্ব বাড়ায়।
বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত ধারকগুলি সাধারণত সঞ্চিত ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক আধানের মধ্যে মধ্যবর্তী মাধ্যম হিসাবে উচ্চ তড়িৎভেদ্যতা সম্পন্ন অস্তরক পদার্থ ব্যবহার করে। এদের ধারক অস্তরক বলা হয়।[১৬]
এই ধরনের অস্তরক ব্যবহার করার সুবিধা হলো এটি পরিবাহী পাতগুলোকে সরাসরি তড়িৎ স্পর্শ থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও উচ্চ তড়িৎভেদ্যতা প্রদত্ত বিভবে আধানকে আরো ভালো সঞ্চয় করতে পারে।
সুতরাং তড়িৎভেদ্যতা ε, দুই পাতের মাঝে দূরত্ব d, বিভব পার্থক্য v এবং আধান ঘণত্ব σε হলে, σ ε = ε V d
এ থেকে সহজেই বোঝা যায় যে বড় তড়িৎভেদ্যতা ε অধিকতর চার্জ সঞ্চিত করে যার ফলাফল বৃহৎ ধারকত্ব। ধারকগুলির জন্য ব্যবহৃত অস্তরক পদার্থগুলিও এমনভাবে বেছে নেওয়া হয় যেগুলি আয়নীকরণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী।
অস্তরক অনুনাদী দোলক(DRO) হলো একপ্রকার কম্পোনেন্ট যা সরু কম্পাঙ্ক(প্রধানত মাইক্রোওয়েভ) রেঞ্জে মেরুকরণে অনুনাদ দেয়। এটি কুঁচকানো সিরামিক দিয়ে তৈরি যার উচ্চ অস্তরক ধ্রুবক রয়েছে। এটি অস্তরকের অতি সাম্প্রতিক একটি আবিষ্কার, যা এখনো পুরোপুরি উদ্ঘাটন করা যায়নি।
বিএসটি পাতলা ফিল্ম
২০০২ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত আমেরিকান সেনা গবেষণা ল্যাবরেটরি (ARL) এই প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা চালিয়েছিল। বেরিয়াম স্ট্রনসিয়াম টাইটানেট (বিএসটি), একটি ফেরোইলেক্ট্রিক পাতলা ফিল্ম, যা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি এবং মাইক্রোওয়েভ সিগনালের উপাদানগুলি যেমন বিভব-নিয়ন্ত্রিত দোলক, সিগনালের টিউন বা পরিবর্তন ছাঁকনী এবং দশা পরিবর্তনের উন্নতির জন্য এটির উপর গবেষণা হয়েছিল।[১৭]
গবেষণাটি ছিল সেনাবাহিনীকে উচ্চ-টিউনেবল, মাইক্রোওয়েভ রেঞ্জে কাজ করার উপযোগী উপকরণ সরবরাহ করার প্রয়াসের অংশ ছিল, যা তীব্র তাপমাত্রায় ধারাবাহিকভাবে কাজ করতে পারবে।[১৮] এই গবেষণার ফলে বাক বেরিয়াম স্ট্রনসিয়াম টাইটানেটের টিউনাবিলিটি বা পরিবর্তনশীলতায় উন্নতি হয়েছে, যা তড়িৎউপাদানগুলির জন্য পাতলা ফিল্ম সক্রিয়কারী।[১৯]
2004 এর একটি গবেষণাপত্রে ARL গবেষকরা অনুসন্ধান করেছেন যে সামান্য পরিমাণ সক্রিয়কারী ডোপান্ট কিভাবে বিএসটি-র মতো ফেরোইলেকট্রিক পদার্থগুলির বৈশিষ্ট্য নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন করে দেয়।[২০]
গবেষকরা বিএসটি পাতলা ফিল্মকে ম্যাগনেসিয়াম দিয়ে ডোপ করেন এবং প্রাপ্ত ফলাফলের “কাঠামো, পরিকাঠামো, পৃষ্ঠের গঠন এবং ফিল্ম / সাবস্ট্রেটের গাঠনিক মানের” বিশ্লেষণ করেন। এই ডোপগুলো মাইক্রোওয়েভ রেঞ্জের ডিভাইসগুলিতে “উন্নত অস্তরক বৈশিষ্ট্য, কম তড়িৎপ্রবাহ লস এবং ভাল টিউনবিলিটি বা পরিবর্তনশীলতা” দেখিয়েছিল।[১৭]
কিছু ব্যবহারিক অস্তরক
অস্তরক পদার্থ কঠিন, তরল বা গ্যাসীয় হতে পারে। এমনকি শূন্যস্থানও অস্তরক হতে পারে, প্রায় ক্ষতিহীন অস্তরক যদিও এর আপেক্ষিক অস্তরক ধ্রুবক একক হয়।[২১]
কঠিন অস্তরকগুলি তড়িৎ প্রকৌশলে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয় এবং অনেক কঠিন অস্তরকই খুব ভাল অন্তরক। যেমন, চীনামাটি, কাঁচ এবং বেশিরভাগ প্লাস্টিক। বায়ু, নাইট্রোজেন এবং সালফার হেক্সাফ্লোরাইড তিনটি সর্বাধিক ব্যবহৃত বায়বীয় অস্তরক।
পদার্থের বহিরাবরণীতে পেরিলিনের মতো অস্তরকগুলির ব্যবহার পরিবেশের সাথে একটি অস্তরকবাধা তৈরি করে।
খনিজ তেল তরল অস্তরক হিসাবে এবং শীতলকরণে সহায়তার জন্য ট্রান্সফর্মারের অভ্যন্তরে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। বৈদ্যুতিক গ্রেডের ক্যাস্টর অয়েল এর মতো উচ্চ অস্তরক ধ্রুবক সম্পন্ন তরল অস্তরকগুলি প্রায়ই উচ্চ বিভবের ধারকগুলিতে করোনার ডিসচার্জ রোধ করতে এবং ধারকত্ব বৃদ্ধি করতে ব্যবহার করা হয়।
যেহেতু অস্তরকগুলি বিদ্যুতের প্রবাহকে প্রতিহত করে, তাই এটি অস্তরকপৃষ্ঠতে আটকে থাকা অতিরিক্ত অভ্যন্তরীন তড়িৎ চার্জ ধরে রাখতে পারে। এক্ষেত্রে দুর্ঘটনাক্রমে (ট্রাইডোইলেকট্রিক এফেক্ট) অস্তরকটি ক্ষয়ে যেতে পারে। ভ্যান ডি গ্রাফ জেনারেটর বা ইলেক্ট্রোফোরাস অথবা ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক ডিসচার্জের ক্ষেত্রে এটি এমনকি ধ্বংসাত্মক হতে পারে।
বিশেষভাবে প্রক্রিয়াজাত অস্তরকগুলি, যাদের ইলেক্ট্রেট বলা হয় (যা ফেরোইলেক্ট্রিক নয়), এরা অতিরিক্ত অভ্যন্তরীণ চার্জ ধরে রাখতে পারে বা “হিমায়িত” রাখতে পারে। ইলেক্ট্রেটগুলির একটি আধা(সেমি) তড়িৎক্ষেত্র রয়েছে, এবং এটি চৌম্বকক্ষেত্রের সমতুল্য। দৈনন্দিন জীবনে এবং শিল্পে এদের অনেক ব্যবহার রয়েছে।
এদের মধ্য দিয়ে বাইরে থেকে কোন বিভব প্রয়োগ করা হলে বা কোন প্রকার যান্ত্রিক চাপ বা (সমতুল্য) শারীরিক আকার পরিবর্তনের শিকার হওয়ার সাথে সাথে কিছু কিছু অস্তরক একটি সম্ভাব্য বিভব পার্থক্য তৈরি করতে পারে। একে পাইজোইলেক্ট্রিসিটি বলে। পাইজোইলেক্ট্রিক উপকরণগুলি অত্যন্ত দরকারী অস্তরকের আরেকটি শ্রেণি।
কিছু আয়নিক স্ফটিক এবং পলিমার অস্তরক একটি স্বতঃস্ফূর্ত দ্বিমেরু ভরবেগ প্রদর্শন করে, যা প্রয়োগকৃত তড়িৎক্ষেত্রের বিপরীত হতে পারে। এই আচরণকে ফেরোইলেকট্রিক এফেক্ট বলা হয়। এই উপকরণগুলি বহির্মুখী প্রয়োগ করা চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের মধ্যে ফেরোম্যাগনেটিক পদার্থগুলি যেভাবে আচরণ করে তার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। ফেরো ইলেকট্রিক উপকরণগুলিতে প্রায়ই খুব উচ্চ অস্তরক ধ্রুবক থাকে, যা একে ধারকের জন্য বেশ দরকারী করে তোলে।