Author: admin

  • সুগন্ধী পখিলা

    সুগন্ধি পখিলা অসমর প্রসিদ্ধ কবি হীরেন ভট্টাচার্যর স্ব-নির্বাচিত একগুচ্ছ কবিতার সংকলন। বনলতা প্রকাশনের ব্যানারে কবিতা বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮১ সালের ২০ মার্চে। ২০০৭ সালের বইটির ত্রয়োদশ প্রকাশ পর্যন্ত কবি ১৯৫৭ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে লেখা মোট ১৩৮ টা কবিতা এতে সন্নিবিষ্ট হয়েছে। ‘রৌদ্রকামনা’, ‘মোর দেশ’, ‘আহিনর লেণ্ডস্কেপ’, ‘কতনা ব’হাগ’, ‘ভোগালি’ ইত্যাদি কবিতা সংকলনটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রচ্ছদসজ্জা শিল্পী ননী বরপূজারীর[১]

    পুরস্কার

    সুগন্ধি পখিলার মাধ্যমে ভট্টাচার্য ১৯৮৫ সালে অসম সাহিত্য সভারবিষ্ণু রাভা পুরস্কার‘ এবং ভারতীয় বিদ্যা ভবনের ‘রাজাজী সাহিত্য পুরস্কার‘ লাভ করেন। ১৯৮৭ সালে ‘সোভিয়েট দেশ নেহরু পুরস্কার‘-এ সম্মানিত হয়েছিল।

  • লা দিভিনা কোম্মেদিয়া

    দিভিনা কোম্মেদিয়া (ইতালীয়: Divina Commedia দান্তে কর্তৃক রচিত একটি সুদীর্ঘ মহাকাব্য। বিশ্ব সাহিত্যের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ কাজগুলোর অন্যতম এই মহাকাব্যটি এর ইংরেজি অনুবাদ ডিভাইন কমেডি (ইংরেজি: The Divine Comedy) নামেই বিশ্বে সুপরিচিত। বাংলা ভাষা সহ পৃথিবীর অসংখ্য ভাষায় এ মহাকাব্য অনূদিত হয়েছে। এটি অদ্যাবধি ইতালিয় সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হিসেবে পরিগণিত।[১][২]

    দান্তের জন্ম ১২৬৫’র ১৪ মে থেকে ১৩ জুনের মধ্যে; তার অকস্মাৎ প্রয়াণ ১৩২১ খ্রিষ্টাব্দে। ১৩০৮ থেকে শুরু করে, তার মৃত্যুর (১৩২১) এক বছর আগে ১৩২০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এ মহাকাব্য লেখা হয়। এ কাব্যে পরকাল তথা মৃত্যুপরবর্তী জীবনের কাল্পনিক উপস্থাপন মধ্যযুগের মনস্তত্ত্বের প্রতীক। মধ্যযুগে পাশ্চাত্য গির্জাগুলো কীভাবে জীবনযাত্রা বিকশিত হয়েছিল তা দান্তের কবিতার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কবিতাটি ইতালির পশ্চিমের তুস্কান অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষায় লেখা হয়েছে। তুস্কান ভাষাকে প্রমিত ইতালীয় ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার পেছনেও এর উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।[৩]

    কাঠামো

    লা দিভিনা কোম্মেদিয়া মহাকাব্যটি তিন পর্বে বিভক্ত যথা:— ইনফেরনো, পুরগাতোরিও এবং পারাদিসো। প্রতিটি পর্বে রয়েছে ৩৩টি সর্গ বা কান্তি (ইতালিয় ভাষায় কান্তির একক কান্তো)। তবে ইনফারনো পর্বে আছে ৩৪টি সর্গ। অবশ্য এটি মুখবন্ধ স্বরূপ। অর্থাৎ সব মিলিয়ে সর্বমোট ১০০টি কান্তি রয়েছে এ মহাকাব্যে।[৪] মহাকাব্যে পংক্তির সংখ্যা ১৪,২৩৩।

    এ সাহিত্যকর্মে “তিন”—এর ব্যবহার অভিক্ষিপ্ত। সাথে সাথে, ছন্দ হিসেবেও তেরজা রিমা ব্যবহার করা হয়েছে, যেখানে প্রতিটি লাইনেই রয়েছে ১১টি মাত্রা।

    কাহিনী ও বিষয়বস্তু

    খ্রিস্টান ধর্মের দৃষ্টিকোণ থেকে দান্তের নরক ভ্রমণ ও স্বর্গ গমনের কাহিনী এ মহাকাব্যের মূল উপজীব্য।[৫] প্রকৃতপক্ষে এ কবিতায় স্রষ্টার দিকে আত্মার ভ্রমণের কথাই বলা হয়েছে।[৬] দান্তে মধ্যযুগের খ্রিস্টান ধর্মচিন্তা ও দর্শন ফুটিয়ে তুলেছেন, বিশেষত থামিস্টিক দর্শন ও থমাস একিনাসের সুম্মা থিওলোজিকা।[৭] যার কারণে, “দিভিনা কোম্মেদিয়া”-কে “ছন্দে ছন্দে সুম্মা”(The Summa in verse)ডাকা হয়। [৮] দান্তের এ সাহিত্যকর্মে ভের্গিলকে মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে, কারণ বিয়েত্রিচকে দেখানো হয়েছে ঐশ্বরিক জ্ঞান হিসেবে।[৯]

    উত্তমপুরুষে লেখা এ কাব্যে দেখা যায় তিনটি ভিন্ন জগতে দান্তের ভ্রমণ। রোমান কবি ভের্গিলকে দেখা যায় তার নরক ও পুরিগাতোরিও ভ্রমণে নির্দেশক হিসেবে থাকতে; বিয়েত্রিচ, দান্তের প্রেমিকা, তাকে স্বর্গে নিয়ে যায়। বিয়েত্রিচ ছিলো ফ্লোরেন্স শহরের এক রমণী, যার সাথে দান্তোর শৈশবে দেখা হয়। সারাজীবনই দান্তে তার প্রেমে মগ্ন ছিলেন, যার কথা আসে তার লা ভিতা নুওভাতে আসে। [১০]

    But already my desire and my will
    were being turned like a wheel, all at one speed,
    by the Love which moves the sun and the other stars.[১১]

  • যেতে নাহি দিব

    “যেতে নাহি দিব” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত একটি কবিতা। এই কবিতাটি সোনার তরী কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। মূল বাংলা কবিতাটিতে ১৭৬টি পঙ্‌ক্তি রয়েছে। এর ইংরেজি অনুবাদটি সংক্ষিপ্ত, এবং তাতে ১৬টি পঙ্‌ক্তি রয়েছে।[১][২]

    সারসংক্ষেপ

    পূজার ছুটির পরে কবি (বা কথক) তার কর্মস্থলে ফিরে যেতে প্রস্তুত। তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য দুয়ারে গাড়ি প্রস্তুত। ভৃত্যগণ ব্যস্ত হয়ে জিনিসপত্র গোছাচ্ছে। গৃহিণীর চোখ অশ্রুসজল। কবি তার গৃহিণীকে বললেন “তবে আসি”, গৃহিণী কিছু না বলে মাথা নত করে চোখের জল গোপন করলেন। কবি তার চার বছরের কন্যার কাছে গিয়ে বিদায় জানালেন, কিন্তু এই শিশু তাকে চমকে দিয়ে বললো “যেতে আমি দিব না তোমায়”। কবি বুঝতে পারলেন না এত ছোট মেয়ে এই ভাবে কথা বলার শক্তি কোথায় পেল।

  • ভূমেন্দ্র গুহ

    ভূমেন্দ্র গুহ একজন বাঙালি কবি যিনি কবি জীবনানন্দ দাশের পাণ্ডুলিপি পাঠোদ্ধার ও প্রকাশের জন্য বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে আছেন। কর্মজীবনে তিনি ছিলেন ভারতের একজন নামকরা শৈল্যচিকিৎসাবিদ। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের হৃদশল্য চিকিৎসা বিভাগের এককালের প্রধান কবি ভূমেন্দ্র গুহ পরিচিত ছিলেন অধ্যাপক ড. বি.এন. গুহরায় নামে। তাঁর পিতৃপ্রদত্ত পূর্ণনাম ভূমেন্দ্রনাথ গুহরায়। তবে পশ্চিমপূর্ব বাংলার সাহিত্যের জগতে তিনি কবি ভূমেন্দ্র গুহ নামে পরিচিত হয়েছিলেন। তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা এগারো । কিন্তু কালক্রমে তাঁর কবি-পরিচয় ছাপিয়ে ‘জীবনানন্দ গবেষক’ এই পরিচয়টিই ক্রমান্বয়ে বড় হয়ে গিয়েছিল।[১]

    জন্ম শিক্ষা ও জীবন

    ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে আগস্ট মাসের ২ তারিখ ভারতের মধ্য প্রদেশে বিলাসপুর-এ তাঁর জন্ম হয়েছিল। জীবনানন্দেরই মতো পৈত্রিক সূত্রে তিনি বরিশালেরই মানুষ। পিতামহ সতীশচন্দ্র গুহরায়ের আদিনিবাস ছিল অবিভক্ত ভারতের বরিশাল জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার মৈষাণী গ্রামে। তিনি ছিলেন মুনিনাগ গ্রামের জমিদারপুত্র, কিন্তু ভাগ্যের ফেরে স্বপরিবারচ্যুত হয়ে জেলেসমাজের একজন হয়ে গিয়েছিলেন।

    ভূমেন্দ্র গুহ’র বাবা নগেন্দ্রনাথ গুহরায় রেল কোম্পানিতে চাকুরি করতেন। বদলির চাকুরি, ফলে নানা স্কুলে পড়তে হয়েছে ভূমেন্দ্র গুহকে, তবে ম্যাট্রিক পাশ করেছেন কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউশনের ছাত্র হিসেবে। বঙ্গবাসী কলেজ থেকে আইএসসি করার পর ডাক্তারি পড়েছিলেন ক্যালকাটা মেডিকেল কলেজে। ১৯৫৭’য় ডাক্তারি পাশের পর তিনি শল্যচিকিৎসায় মাস্টার্স করেছেন; পরে বিশেষভাবে বক্ষদেশের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, হৃৎপিণ্ড ও ভাসকুলার সার্জারিতে এম.সি-এইচ।

    শৈল্যচিকিৎসা বিদ্যায় অবদান

    ষাটের দশকে ভারতের প্রথম ওপেনহার্ট সার্জারি হয়েছিল ১৯৬২ তে; সেদিন অপারেশন থিয়েটারে শিক্ষক প্রফেসর ডা. অজিত কুমার বসুর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তরুণ শল্যবিদ বি. এন. গুহরায়।[২] এরপর এ বিষয়ে তিনি অনেক গবেষণা করেছেন; তাঁর দেড়শরও বেশি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক জার্নালে। যুক্তভাবে একটি ডাক্তারির বই-ও প্রকাশ করেছিলেন, বেশ কিছু বহুলেখক গ্রন্থের জন্য লিখেছেন। শেষ জীবনে কলকাতা মেডিকেল কলেজ-এর থোরাসিক সার্জারি বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন চৌদ্দ বছর। লিভার সিরোসিস রোগটি অপরেশন ক’রে সারানোর পদ্ধতিটিও তাঁরই আবিষ্কার: এটি বিশ্বব্যাপী চিকিৎসাশাস্ত্রে গুহরায়-বাসু শান্ট অপারেশন নামে খ্যাত। চাকরিজীবনে যথেষ্ট ব্যস্ত ছিলেন ড. বি. এন. গুহরায়।

    জীবনানন্দ দাশের পাণ্ডুলিপি সংশ্রব

    ১৯৫৪য়, অক্টোবরের এক শীতার্ত মধ্যরাত-উত্তীর্ণ সময়ে ট্রামের ধাক্কায় মারাত্মকভাবে আহত জীবনানন্দ দাশের মৃত্যু হয়েছিল। মৃত্যুকালে তাঁর প্রকাশনা বলতে ৫টি কাব্যগ্রন্থ এবং শ্রেষ্ঠ কবিতায় অন্তর্ভুক্ত ১৬২টি কবিতা এবং বিভিন্ন সাময়িক পত্রে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আরো শত খানেক কবিতাও কয়েকটি প্রবন্ধ-নিবন্ধ। জীবদ্দশায় কোন প্রবন্ধ গ্রন্থ প্রকাশ করে যান নি জীবনানন্দ দাশ। ২১টি উপন্যাস একং শতাধিক ছোট গল্প রচনা করলেও একটিও ছাপতে দেননি কোথাও। ট্রাংকে তালা-চাবি এঁটে সযত্নে লুকিয়ে রেখেছিলেন হাজার হাজার কবিতা, গল্প-উপন্যাসের খাতা ও ডায়েরি। প্রায় তিরিশ হাজার পাতার অপ্রকাশিত লেখা রেখে গিয়েছিলেন জীবনানন্দ শত-শত রুলটানা এক্সারসাইজ খাতায় । এই সব শত-শত রুলটানা এক্সারসাইজ খাতা খুঁজে খুঁজে পড়ে পড়ে, ভারি পাওয়ারের চশমায় না কুলোলে আতশি কাচের সাহায্য নিয়ে, জীবনানন্দের জড়ানো অনতিস্পষ্ট হস্তাক্ষরের প্রতিরোধ উপেক্ষা ক’রে অগণিত অপ্রকাশিত কবিতা, গল্প, উপন্যাস পাঠোদ্ধার ক’রে যিনি প্রকাশ করবার ব্যবস্থা করে যাচ্ছিলেন কবি ভূমেন্দ্র গুহ । [৩]

    পঞ্চাশের দশকের শুরুতে নিজেদের সাহিত্যের ছোটকাগজ “ময়ূখ”-এর জন্য কবিতা সংগ্রহ করতে গিয়ে জীবনানন্দ দাশের সঙ্গে যে পরিচয় হয়েছিল, তারই সূত্র ধ’রে কবির মৃত্যু পরবর্তী সময়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল ভূমেন্দ্রর । কার্যত জীবনানন্দের প্রকাশিত-অপ্রকাশিত রচনা সংবলিত ট্রাংকভর্তি অসংখ্য লেখার খাতা তাঁরই অধিকারে সংরক্ষিত ছিল দীর্ঘ কাল। সেগুলোর অধিকাংশ পাঠোদ্ধার করে তিনি প্রকাশযোগ্য পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত করে দিয়েছিলেন। বাংলা ভাষার সবচেয়ে জনপ্রিয় কাব্য রূপসী বাংলা এবং জীবনানন্দের সপ্তম কাব্য সংকলন বেলা অবেলা কালবেলা, তাঁর প্রথম প্রবন্ধসংকলন কবিতার কথা এবং সর্বপ্রথম প্রকাশিত উপন্যাস মাল্যবান-এর মুদ্রণযোগ্য পাণ্ডুলিপি- সবই ভূমেন্দ্র গুহ’র হাতে তৈরী। কলকাতার প্রতিক্ষণ পাবলিকেশনস ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে ১২ খণ্ডের জীবনানান্দ সমগ্র প্রকাশ শুরু করেছিল ভূমেন্দ্র গুহেরই কপি করা বিবিধ পাণ্ডুলিপির ভিত্তিতে। অপ্রকাশিত কবিতার সংকলন হে প্রেম তোমাকে ভেবে ভেবে, ছায়া-আবছায়া, উপন্যাস সফলতা-নিষ্ফলতা এবং ২০১২ তে প্রকাশিত অপ্রকাশিত শেষ ১৪টি গল্প ও ২টি উপন্যাস এবং ১৪ খণ্ডে প্রকাশিত পাণ্ডুলিপির কবিতা (সহায়তা করেছিলেন বর্তমানের বিশেষ জীবনানন্দ গবেষক গৌতম মিত্র) ইত্যাদিরও পশ্চাৎ কারিগর তিনি।

    ভূমেন্দ্র গুহ কেবল লেখার খাতা থেকে মুদ্রণযোগ্য পাণ্ডুলিপিই প্রস্তুত করেন নি, তিনি জীবনানন্দের অনেক লেখার খাতাকে চির অবলুপ্তির হাত থেকে বাঁচিয়েছেন; ১৯৫৪ থেকে ১৯৬৮ পর্যন্ত লেখার খাতাগুলো সযত্নে আগলে রেখেছিলেন নিজের টানে, যত দিন না চাকরিসূত্রে কলকাতার বাইরে চলে যাওয়ার ডাক এসেছিল।[১]

    কাব্যকৃতি

    তাঁর পদ্য লেখার শুরু উত্তর কৈশোরে যদিও সঞ্জয় ভট্টাচার্যের “পূর্বাশা” পত্রিকায় ১৯৫২’র মাঝামাঝি একটি কবিতা মুদ্রণের মধ্য দিয়ে তাঁর কবিজীবনের অভিষেক হয়েছিল মনে করতেন কবি ভূমেন্দ্র গুহ। পঞ্চাশ দশকের শুরুতে তাঁর কবিতা লেখার গোড়াপত্তন হলেও প্রথম কবিতা সংকলন “যম” প্রকাশিত হয়েছিল অনেক পরে, ১৯৯৪-এ। এবংবিধ দীর্ঘ ব্যবধান যে কারো পক্ষে কৌতূহলোদ্দীপক। শ্রেষ্ঠ কবিতা’র কবিতাগুলোর রচনাকাল উল্লেখ করা হয়েছে এই ভাবে: ১৯৫৫-৫৮ খ্রিস্টাব্দ এবং ১৯৯০-২০০৪ খ্রিস্টাব্দ। ২০০৫ পর্যন্ত এই কালপরিধিতেই তিনি কবিতা লেখায় সক্রিয় থেকেছেন এরকম অনুমান করা চলে। অর্থাৎ ১৯৫৯ থেকে ১৯৮৯ এই টানা তিরিশ বছর হয়তো ব্যতিক্রম কিছু ছিল, কেননা দেখা যাচ্ছে শ্রেষ্ঠ কবিতা’য় ষাট দশকের কবিতাও একআধটি আছে। ভূমেন্দ্র গুহ কবিতার টেবিল থেকে নিজেকে দূরে রেখেছিলেন। তাঁর জীবিকাজীবনের সঙ্গে এ সময়টি মিলিয়ে নেয়া যায়। এই দীর্ঘবিরতি তাঁর আদি কবিসত্তাকে অক্ষুণ্ন রেখেছিল কতটুকু সে প্রশ্ন অসঙ্গত হবে না। তবে ইত্যবসরে তিনি একটি কাব্যভাষা খুঁজে পেয়েছিলেন যাকে উত্তর-জীবনানন্দীয় কাব্যভাষা বলে চিহ্নিত করা যায়। অন্যদিকে বিষয়বস্তুর নির্বাচনে তিনি উত্তর-জীবনানন্দীয় কবিদের মতই নিবিড় আত্মজৈবনিকতার মধ্যে খুঁজে পেয়েছিলেন স্বস্তিময় আরাধনা: “ভেবে দেখেছি কী হতে চেয়েছিলুম, কী হতে পারতুম, কী হতে পারতুম না, অর্থাৎ আকাঙ্ক্ষা, আকাঙ্ক্ষাতেই বানিয়ে নিচ্ছিলুম নিজেকে, নৌকার দাঁড়ে অভিভাবিকা ছিল–তার শীতল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নামে-নামে যে-সব ডাকনাম– পুড়ে-যাওয়া মরুভূমিটি বুদ্বুদে-বুদ্বুদে ষোলো-আনা গর্ভবতী হবে; তখনও সে থাকবে সেখানে সেই জলের মতন যে অপরাধী পাপী কিন্তু অচ্ছোদ।” যারা জীবনান্দের খোঁজখবর রাখেন তাঁরা জানেন, ’৯০এর দশক থেকে শুরু ক’রে জীবনানন্দ আর ভূমেন্দ্র গুহ নাম দুটি অবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। অনতিতরুণ ভূমেন্দ্র গুহ সেই পঞ্চাশের শুরুতেই জীবনানন্দকে খুব বড় কবি বলে মান্য করেছিলেন। হয়তো জীবনানন্দের কাব্যভাষা তাঁকে কিছুটা আকর্ষণও করে থাকবে। তাঁর নিজের কোন কোন কবিতায় সে প্রমাণ তো আছে; কোনটির কাঠামোতে প্রত্যক্ষ ছিল জীবনানন্দ’র প্রগাঢ় ছায়াপাত:

    চোখে যে গড়াবে জল, সে-রকম সাহসিক নই, সেই চোখ যা এখন বিস্তীর্ণ আকাশ খুঁজে দেখে: নক্ষত্রেরা আছে কি না মৃতপ্রায় দিকের সন্ধানে; আরেকটু হেঁটে গেলে ভোর হবে, প্রথম প্রত্যুষা; জনৈক মৃতের ছবি দেয়ালে আয়নায় রাখা হবে। মধ্য রাত পার হলে দুইটি বছর, মানে কাল দুই দিকে চ’লে যাচ্ছে, যাচ্ছে আমাদের প্রেম যেন; পিঁপড়ের মতন পায়ে দুঃখ বাসা বাঁধছে হৃদয়ে। হেঁটে যাচ্ছি অন্ধকার, অন্ধকার পথের দু’পাশে যে সব শ্মশান আছে শুভ্রতায় ভুলে যাচ্ছি তা-ও; এখন বিকেল, আর সামান্য প্রভেদ মেনে নিলে অন্ধকার মাঝামাঝি দীর্ঘশ্বাসটুকু: যা গিয়েছে তার থেকে রাত্রিটিকে খুলে নিয়ে এসে দেখেছি যে, এই মাত্র কব্জির নিকটে রক্ত নাচে; অবশেষে এইটুকু বিশ্বাস জমাই ইহকালে;

    সে-সময় জানো তুমি যদি না অসত্য ব’লে থাকো।

    পরিণত বয়সে কেমন কবিতা লিখতেন ভূমেন্ত্র গুহ, তা নিচের উদ্ধৃতি থেকে বোঝা যাবে:

    “তুমি আমাকে প্রেমের কথা বলবে, আমি কামনা করতে থাকি, এবং গোপন অপরাধে নিঃশেষিত হয়ে যাই। পরিবর্তে তোমার দেবীর মতো দু’টি হাত আমার উদ্বুদ্ধ শরীরটিকে খুঁজে নেয়, আমি দেখি। তুমি তোমার অনাগত একমাত্র সন্তানটির কথা গভীর উদ্বেগের ভিতর উচ্চারণ করো। তার জন্য পূজাবেদিটির সর্বাঙ্গে ধান রাখো, ফুল রাখো, বিল্বপত্র রাখো, কদলীখ- রাখো, ততোধিক রাখো প্রচুর নবীন দূর্বাঘাসের আচ্ছাদন, যাতে তোমার তৃণাস্তীর্ণ মৌল বেদিটিকে পদ্মপাতার ভঙ্গিমায় ঠিক চিনে নিতে পারি। তুমি আমার জন্য সমুদ্রমন্থনের আনুষঙ্গিক বিষপানের স্মৃতি পুনর্জীবিত করে তোলে।”

    [১]

    প্রকাশনা

    কাব্য

    ভূমেন্দ্র গুহ’র তাঁর কবিতাগ্রন্থগুলোর নাম এরকম রেখেছিলেন: “যম”, “ঋতুচক্র”, “পিতামহ”, “উত্তরপুরুষ”, “এই সব দিনাতিপাত”, “এই মাত্র”, “ভালো থাকুন”,“ঢের দিন বেঁচে থাকা হল”, “এককালের বসতবাড়িটি”, “বেলা-শেষের অতি-কথন”, ও “অন্ত-কবিতা”।

    এছাড়া তিনি ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশ করে গেছেন “শ্রেষ্ঠ কবিতা”। ২০১৫’য় তাঁর প্রয়াণের কিছু আগে রাহুল পুরকায়স্থের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁর কবিতাসমগ্র যার প্ররচ্ছদনাম ভূমেন্দ্র গুহ’র কবিতা”। “শ্রেষ্ঠ কবিতা” তাঁকে এনে দিয়েছিল রবীন্দ্র পুরস্কার, ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে ।

    গদ্য

    যৌবনে, ১৯৫৮য়, তিনি স্যাফোর কাব্য অনুবাদ করেছিলেন। বাংলা ভাষায় তিনিই প্রথম স্যাফোর কবিতা অনুবাদ করেছেন। হেনরী মিলারের “ঘাতকদের সময়” অনুবাদ করেছেন (তবে বলে রাখা দরকার অনুবাদের জন্য লেগেছে ১৩৮ পাতা, আর ভূমিকা-টীকার জন্য বাকী ২৭৪ পৃষ্ঠা)। ২০০৮এ প্রকাশ করেছেন জীবনানন্দের অপ্রাকশিত উপন্যাস “সফলতা-নিষ্ফলতা”। এখানেও বলে রাখা দরকার যে ১১৭ পাতার এ উপন্যাসের শুরুতে আছে ১৬ পৃষ্ঠার একটি ভূমিকা আর শেষে আছে ১২৫ পৃষ্ঠাব্যাপী টীকা-টিপ্পনীর বিশাল বহর। ২০১২ তে প্রকাশ করেছেন জীবনানন্দ’র “সমরেশ ও অন্যান্য গল্প” এবং “অপ্রকাশিত শেষ ১৮টি গল্প ও ২টি উপন্যাস”। কেবল জীবনানন্দ নিয়ে তাঁর বই একটিই; আর সেটি হলো “আলেখ্য : জীবনাননদ দাশ”। তাঁর জীবনানন্দ চর্চার অনুপুঙ্খ দলিল ২০০৮-এ প্রকাশিত “জীবনানন্দ ও সঞ্চয় ভট্টাচার্য”। উপন্তু জীবনানন্দের লিটের‌্যারি নোটস “দিনলিপি” শিরোনামে প্রকাশ করেছিলেন ৪টি প্রশস্ত খণ্ডে। দিনলিপি লেখার খাতার ফ্যাকসিমিলি প্রকাশ করেছেন “শেষ ছ’বছর” শিরোনোমে। বাংলাদেশের কালি ও কলম পত্রিকার-এর সম্পাদক আবুল হাসানাতের উদ্যোগে ভূমেন্দ্র গুহ জীবনানন্দ দাশের কবিতার মূলানুগ পাঠের একটি সংকলনগ্রন্থের পাণ্ডুলিপি করতে সম্মত হয়েছিলেন ২০০৯-এ। কাজ চলছিল সেই ২০১১ থেকে। তাতে “শ্রেষ্ঠ কবিতা” সহ জীবনানন্দের সাতটি কাব্যগ্রন্থ থেকে বাছাই করা কবিতা, জীবনানন্দের মৃত্যুকালে অপ্রকাশিত ৭৯টি কবিতা এবং সরাসরি ৩২টি লেখার খাতা থেকে ১৪৩২টি কবিতা (পূর্বোল্লিখিতগুলোবাদ দিয়ে) পত্রস্থ করা হয়েছে। কবিতা-সংবলিত ৬৮৭ পৃষ্ঠার প্রথম খণ্ডের পর ৪৯৬ পৃষ্ঠার দ্বিতীয় খণ্ডে ভূমেন্দ্র গুহের লেখা ভূমিকা ও টীকা-টিপ্পনী।[৪][৫]

    মৃত্যু

    ক্যান্সারে ভুগছিলেন ভূমেন্দ্র গুহ, কিন্তু কাউকে বলেন নি। নিঃশব্দে মৃত্যুবরণ করলেন ২০ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে, ঘুমের ভেতর। [৬

  • ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়

    ব্রততী বন্দোপাধ্যায় ‍বা ব্রততী ব্যানার্জী বাংলা ভাষার একজন বিশিষ্ট আবৃত্তিকার[১][২][৩]

    তিনি সারথি নামে একটি বাঙ্গালী গ্র্রুপের সদস্য।[৪] তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, সুকুমার রায় এবং শঙ্খ ঘোষের কবিতা আবৃত্তির জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।[৫]

    প্রাথমিক জীবন

    ব্রততী বন্দোপাধ্যায় কলকাতার একটি শহরতলী হৃদয়পুরে মঞ্জুল কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মায়া বন্দোপাধ্যায়ের পরিরারে জন্মগ্রহণ করেন। ব্রততী কলকাতার বেথুন কলেজিয়েট বিদ্যালয়ে তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে তিনি অর্থনীতির উপর ১ম শ্রেণীতে স্নাতোকত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন।[৬]

    কাজ

    অ্যালবাম

    * ”চিরসখা”

    * হিপ হিপ হুররে

    * ”ফাগুন হাওয়া”

    * ”প্রেমের বাদল নামিলো”

    * ”ব্রততী বন্দোপাধ্যায় কবিতা সংগ্রহ ”’ (খন্ড:০১-০৬)

    * ”আমি সেই মেয়ে”

    চলচ্চিত্রের তালিকা

    রঙ্গীন গৌধূলী (২০০৯, অভিনেত্

  • বিশ্ব কবিতা দিবস

    ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ মার্চ তারিখটিকে বিশ্ব কবিতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এই দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল বিশ্বব্যাপী কবিতা পাঠ, রচনা, প্রকাশনা ও শিক্ষাকে উৎসাহিত করা। ইউনেস্কোর অধিবেশনে এই দিবস ঘোষণা করার সময় বলা হয়েছিল, “এই দিবস বিভিন্ন জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কবিতা আন্দোলনগুলিকে নতুন করে স্বীকৃতি ও গতি দান করবে।”

    পূর্বে অক্টোবর মাসে বিশ্ব কবিতা দিবস পালন করা হত। প্রথম দিকে কখনও কখনও ৫ অক্টোবর এই উৎসব পালিত হলেও বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে রোমান মহাকাব্য রচয়িতা ও সম্রাট অগস্টাসের রাজকবি ভার্জিলের জন্মদিন স্মরণে ১৫ অক্টোবর এই দিবস পালনের প্রথা শুরু হয়। অনেক দেশে আজও অক্টোবর মাসের কোনো দিন জাতীয় বা আন্তর্জাতিক কবিতা দিবস পালন করা হয়।[১][২] এই দিবসের বিকল্প হিসেবে অক্টোবর অথবা নভেম্বর মাসের কোনো দিন কবিতা দিবস পালনেরও প্রথা বিদ্যমান।

  • বঙ্গমাতা (কবিতা)

    বঙ্গমাতা[১] হলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত একটি বিখ্যাত বাংলা কবিতা।[২][৩] এটি তার চৈতালি (১৮৯৬) কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।[৪] কবিতায় মোট ১৪টি লাইন আছে।[২][৩]

    প্রেক্ষাপট

    ভারতে ব্রিটিশ রাজের সময়ে রবীন্দ্রনাথ বঙ্গমাতা কবিতাটি রচনা করেন। তিনি অসন্তুষ্ট হয়ে এই কামনা করেন যেন বাঙালিরা বঙ্গদেশের প্রতি কর্তব্য ঠিকভাবে পালন করে।[৫][৬]

    কবিতা

    পুণ্যে পাপে দুঃখে সুখে পতনে উত্থানে
    মানুষ হইতে দাও তোমার সন্তানে
    হে স্নেহার্ত বঙ্গভূমি, তব গৃহক্রোড়ে
    চিরশিশু করে আর রাখিয়ো না ধরে।
    দেশদেশান্তর-মাঝে যার যেথা স্থান
    খুঁজিয়া লইতে দাও করিয়া সন্ধান।
    পদে পদে ছোটো ছোটো নিষেধের ডোরে
    বেঁধে বেঁধে রাখিয়ো না ভালোছেলে করে।
    প্রাণ দিয়ে, দুঃখ স’য়ে, আপনার হাতে
    সংগ্রাম করিতে দাও ভালোমন্দ-সাথে।
    শীর্ণ শান্ত সাধু তব পুত্রদের ধরে
    দাও সবে গৃহছাড়া লক্ষ্মীছাড়া ক’রে।
    সাত কোটি সন্তানেরে, হে মুগ্ধ জননী,
    রেখেছ বাঙালী করে, মানুষ কর নি।[২][৩]

    বর্তমানকালের প্রাসঙ্গিকতা

    বাঙালিরা তাদের মাতৃভাষা বাংলা ও বাঙালির সংস্কৃতিকে অবজ্ঞা করায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বঙ্গমাতা কবিতাটিকে বর্তমানে আবারও প্রাসঙ্গিক হিসেবে ধরা হয়।[৭][৮][৯]

  • নীতি কবিতা

    নীতি কবিতা গল্প, কাহিনী বা নিছক কলাশিল্প যার সাহায্যে কবি জ্ঞানগর্ভ নীতিকথা বা তত্ত্ব প্রচার করে থাকেন। ভালো

    উপযোগিতা

    নীতিকথার তীব্রতা কল্পনার স্পর্শে যাতে কোমল ও কান্তরূপ পরিগ্রহ করে, তা-ই কবির উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। অর্থাৎ, জ্ঞানের কথা, নীতির কথা বা তত্ত্বকথাকে কবিত্ব-সুষমায় মণ্ডিত করতে না পারলে এই জাতীয় কবিতা ব্যর্থ হতে বাধ্য।[১]

    ব্যবহার ক্ষেত্র

    পোপের এসে অন ক্রিটিসিজম; কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের রসাল ও স্বর্ণলতিকা; কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের সদ্ভাবশতক; রঙ্গলালের নীতিকুসুমাঞ্জলি; রবীন্দ্রনাথের কণিকা, জুতা আবিষ্কার; কুমুদরঞ্জনের শতদল, যদি; রজনী সেনের অমৃত নীতি কবিতা শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত।

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জুতা আবিষ্কার’ কবিতাটিতে কবি গল্পের সাহায্যে নীতি প্রচার করেছেন। এছাড়াও, সুরেন মজুমদারের মাদকমঙ্গলও একখানা নীতিকাব্য

  • ননসেন্স ছড়া

    ননসেন্স ছড়া বা কিম্ভূত ছড়া একধরনের ছড়া, যা সাধারণত কৌতুক পরিবেশনের জন্য লেখা হয়। এতে বলিষ্ঠ পদ্যের উপাদান তথা ছন্দ ও অন্ত্যমিল থাকে।

    বাংলা ভাষায় সর্বপ্রথম ননসেন্স ছড়ার প্রবর্তন করেন সুকুমার রায়[১] পরবর্তীকালে তার পুত্র সত্যজিৎ রায়ও এধরনের কয়েকটি ছড়া লিখেছেন, যেগুলো পরবর্তীকালে তোড়ায় বাঁধা ঘোড়ার ডিম নামে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।

    ইংরেজি ভাষায় ননসেন্স ছড়া রচনার জন্য উল্লেখযোগ্য কয়েকজন লেখক হলেন এডওয়ার্ড লিয়ার,[২] লুইস ক্যারল, মারভিন পিক, এডওয়ার্ড গোরি, কলিন ওয়েস্ট, ডক্টর সেউস, ও স্পাইক মিলিগান।

    এডওয়ার্ড লিয়ারের ছড়াগুলো বিষয়বস্তুর নিরিখে ননসেন্স ছড়া হলেও একটি বিশেষ গঠনছাঁদের কারণে সেগুলোকে লিমারিক বলা হয়। লিমারিকগুলোর প্রতিটি পাঁচ পংক্তির ব্যাপ্তিতে গড়া। ১ম, ২য় ও ৫ম লাইনে সদৃশ অন্ত্যমিল থাকে, এবং পঙক্তিগুলো ৩য় ও ৪র্থ লাইনের চেয়ে দীর্ঘ। ৩য় ও ৪র্থ লাইনে সদৃশ অন্ত্যমিল থাকে। বস্তুত লিমারিক এক বিশেষ ধরনের ননসেন্স ছড়া।

    ব্যবহার

    সুকুমার রায়ের একটি ননসেন্স ছড়া নিম্নরূপ:

    মাসী গো মাসী পাচ্ছে হাসি
    নিম গাছেতে হচ্ছে সিম,
    হাতির মাথায় ব্যাঙের বাসা
    কাগের বাসায় বগের ডিম।

  • দ্য হান্টিং অফ দ্য স্নার্ক

    দ্য হান্টিং অফ দ্য স্নার্ক হল ইংরেজ লেখক লুইস ক্যারলের একটি বাজে কবিতা, যেখানে দশটি চরিত্রের গল্প বলা হয়েছে যারা স্নার্ক নামে পরিচিত একটি রহস্যময় প্রাণীকে শিকার করতে সমুদ্র পাড়ি দেয়। কবিতাটি ১৯৭৬ সালে হেনরি হলিডে দ্বারা চিত্র সহ প্রকাশিত হয়েছিল। এটি হলিডে’স ইলাস্ট্রেশনের অষ্টম প্লেট, যার সাথে আছে “ফিট দ্য সিক্সথ: দ্য ব্যারিস্টার’স ড্রিম”। ব্যারিস্টার, ক্রু সদস্যদের মধ্যে একজন, ঘুমাচ্ছেন এবং একটি শূকরের বিচার প্রত্যক্ষ করার স্বপ্ন দেখেন যা তার শূকরকে পরিত্যাগ করার জন্য অভিযুক্ত। স্নার্ককে ফোরগ্রাউন্ডে চিত্রিত করা হয়েছে, প্রতিরক্ষা ব্যারিস্টার হিসাবে কাজ করে এবং পোশাক এবং পরচুলা পরিহিত – সেটে প্রাণীর একটি চিত্রের নিকটতম। ব্যারিস্টার শেষ পর্যন্ত তার কানে বেলম্যানের বেল বাজানোর মাধ্যমে জেগে ওঠে, যেমনটি নীচে বাম দিকে দেখা যায়।

    বিষয়শ্রেণী: