Author: admin

  • মন্দার মুখে বৈশ্বিক অর্থনীতি

    করােনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় গতি হারায় পুরাে বিশ্বের অর্থনীতি। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ বিশ্বব্যাংকের ‘বিশ্বে কি মন্দা আসন্ন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব অর্থনীতির তিন মূল চালিকাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইউরােপের অর্থনীতি দ্রুত গতি হারাচ্ছে। ফলে আগামী বছরে সামান্য আঘাতেও মন্দা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ১৯৮০-এর দশক থেকে এখন পর্যন্ত ৯ বার মন্দার পূর্বাভাস দেওয়া হয়। এর মধ্যে মাত্র পাঁচবার মন্দা দেখা গেছে।

    মন্দা কী?

    মন্দার কোনাে স্বীকৃত সংজ্ঞা নেই। অর্থনীতির ভাষায় সাধারণত একটি অর্থবছরের পরপর দুইটি প্রান্তিকে কোনাে দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে যদি নিম্নমুখী বা ঋণাত্মক ধারা অব্যাহত থাকে তবে তাকে মন্দা বলা হয়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে অর্থনীতির বিকাশ যখন ৩ শতাংশের কম হয় তখন সেই পরিস্থিতিকে বিশ্বব্যাপী মন্দা বলা যায়। তাদের হিসাবে আনুমানিক ৮-১০ বছর। পরপর চত্রকারে বিশ্বব্যাপী মন্দা দেখা দেয়।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    প্রকারভেদ

    অর্থনীতিবিদরা মন্দাকে V-Shape, U-Shape, L-Shape কিংবা W-Shape হিসেবে অর্থনীতির সূচকের গ্রাফে ব্যাখ্যা করে থাকেন। অর্থনীতির গ্রাফে সূচকগুলাে ওঠানামার আকৃতি V-Shape হলে বােঝতে হবে মন্দা ক্ষণস্থায়ী, আর U-Shape হলে মন্দা দীর্ঘস্থায়ী। মন্দা উপর্যুপরি হলে এর সূচকের ওঠানামা গ্রাফে দেখাবে W এর মতাে। আবার ১৯৯৭ ১৯৯৯ সালে জাপানের পরপর নয়টি প্রান্তিকের মধ্যে আটটি প্রান্তিকের গ্রাফ চিত্রে মন্দা দৃশ্যমান হয় L-Shape হিসেবে।

    কারণ

    যুদ্ধ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সৃষ্ট আকস্মিক অর্থনৈতিক ধাক্কা থেকে শুরু নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতির মাধ্যমে মন্দার উদ্ভব হতে পারে। আকস্মিক অর্থনৈতিক ধাক্কার কারণেও অতীতে মন্দা হতে দেখা গেছে। ৭০ এর দশকে ওপেক যুক্তরাষ্ট্রকে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিলে কোনাে ধরনের সতর্কবার্তা ছাড়াই। যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়। সাম্প্রতিক করােনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্বেই অর্থনীতি কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। এটাকেও আকস্মিক অর্থনৈতিক আঘাত হিসেবে দেখা হয়।

    আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী থেকে আরো পড়ুন

    ব্যালেন্স শিট রিসিশন বা খাতা-কলমের মন্দা :

    সাধারণত কোনাে রাষ্ট্রের অত্যধিক ঋণগ্রস্ততা অথবা আর্থিক খাতের পতনের ফলে একসঙ্গে বিপুল সংখ্যক মানুষকে একইসঙ্গে ঋণ পরিশােধ করতে হলে এ ধরনের মন্দা ঘটে। আবার কোনাে দেশ যদি সাধ্যের অতিরিক্ত ঋণ নিয়ে থাকে যা এক পর্যায়ে তাদের শােধ করা সাধ্যের বাইরে চলে যায় তখনও মন্দা দেখা দিতে পারে।

    অতিরিক্ত মূল্যস্ফীতি :

    মূল্যস্ফীতি যখন অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় চলে যায় তখন বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এ পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়ে দেয় এদিকে আবার উচ্চ সুদের হার তখন দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে। ৭০-এর। দশকে যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের ঘটনা ঘটে।

    ইতিহাস

    আধুনিক অর্থব্যবস্থায় অষ্টাদশ শতাব্দীতে ইউরােপে প্রথম মন্দা দেখা দেয়। আবার বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী মন্দা হয় যুক্তরাষ্ট্রে। এর ব্যাপ্তি ছিল ১৯২৯-১৯৩৯ সাল পর্যন্ত। ১৯২৯ সালে অক্টোবরে মাত্র দুই দিনে ধ্বংস হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার। কয়েক দিনের মধ্যে শিল্প কলকারখানায় উৎপাদনে ধস নামে।

    মাত্র এক বছরের মাথায় বেকার হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রের এক কোটি মানুষ । ১৯৭৩ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়। ১৯৯৭ সালে বিদেশি মুদ্রার অভাবে এশিয়ার বাজারে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। এ সময় থাইল্যান্ড থেকে কোটি কোটি ডলারের বিনিয়ােগ সরিয়ে নিতে থাকেন বিদেশি বিনিয়ােগকারীরা।

    থাইল্যান্ড থেকে শুরু হওয়া এ অর্থ সংকট দ্রুত পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ পূর্ব-এশিয়ার দেশগুলােয় ছড়িয়ে পড়লে দেশগুলােতে অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়। ২০০৮ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রধান কারণ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের গৃহায়ণ খাতের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। দেশটির বন্ধকি বাজারের ঝুঁকিপূর্ণ ঋণব্যবস্থা ও আর্থিক খাতের শিথিল নিয়ন্ত্রণই মন্দার রুটা করেছিল।

    দ্য গ্রেট ইনফ্লেশন

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সমৃদ্ধি এনে দেয়। সে সময় উৎপাদন বাড়ে, কমে যায় বেকারত্ব, মূল্যস্ফীতিও ছিল প্রায় ১%। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টে যায় ১৯৬৫ সাল থেকে। বাড়তে থাকে বেকারত্ব ও মূল্যস্ফীতি। এ পরিস্থিতি ছিল ১৯৮২ সাল পর্যন্ত। ১৯৮০ সালে দেশটির মূল্যস্ফীতির হার ছিল প্রায় ১৫%।

    এ সময়কেই বলা হয় দ্য গ্রেট ইনফ্লেশন। এর মধ্যেই অভিজ্ঞতা হয় স্ট্যাগফ্রেশনেরও। ১৯৮১ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হন রােনাল্ড রিগ্যান। সে সময়ের মূল্যস্ফীতি দেখে তিনি একটি বিখ্যাত উক্তি করেন। উক্তিটি হলাে— ‘মূল্যস্ফীতি হচ্ছে ছিনতাইকারীর মতাে হিংস্র, সশস্ত্র ডাকাতের মতাে ভয়ংকর এবং খুনির মতােই প্রাণঘাতী।’

    বাংলাদেশের করণীয় ও চ্যালেঞ্জ

    আসন্ন মন্দার ঝুঁকি এড়াতে ভােগ কমানাের চেয়ে বরং উৎপাদন বাড়ানাের দিকে নজর দেওয়া উচিত। একই সঙ্গে বিনিয়ােগ বাড়ানাের চেষ্টা করতে হবে। মন্দায় বিশ্ববাজারে জালানি তেলের দাম কমলে তার সাথে দেশের বাজারের সমন্বয় সাধন করতে হবে। বাংলাদেশের সামনে কয়েকটি বিষয় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আসবে। এগুলাে হলাে— রপ্তানি আয় কমে যেতে পারে, আমদানি করা খাদ্য পণ্যের দাম বাড়বে ও রেমিট্যান্স কমতে পারে।’

    করােনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় গতি হারায় পুরাে বিশ্বের অর্থনীতি। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ বিশ্বব্যাংকের ‘বিশ্বে কি মন্দা আসন্ন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব অর্থনীতির তিন মূল চালিকাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইউরােপের অর্থনীতি দ্রুত গতি হারাচ্ছে। ফলে আগামী বছরে সামান্য আঘাতেও মন্দা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ১৯৮০-এর দশক থেকে এখন পর্যন্ত ৯ বার মন্দার পূর্বাভাস দেওয়া হয়। এর মধ্যে মাত্র পাঁচবার মন্দা দেখা গেছে।

    মন্দা কী?

    মন্দার কোনাে স্বীকৃত সংজ্ঞা নেই। অর্থনীতির ভাষায় সাধারণত একটি অর্থবছরের পরপর দুইটি প্রান্তিকে কোনাে দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে যদি নিম্নমুখী বা ঋণাত্মক ধারা অব্যাহত থাকে তবে তাকে মন্দা বলা হয়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে অর্থনীতির বিকাশ যখন ৩ শতাংশের কম হয় তখন সেই পরিস্থিতিকে বিশ্বব্যাপী মন্দা বলা যায়। তাদের হিসাবে আনুমানিক ৮-১০ বছর। পরপর চত্রকারে বিশ্বব্যাপী মন্দা দেখা দেয়।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    প্রকারভেদ

    অর্থনীতিবিদরা মন্দাকে V-Shape, U-Shape, L-Shape কিংবা W-Shape হিসেবে অর্থনীতির সূচকের গ্রাফে ব্যাখ্যা করে থাকেন। অর্থনীতির গ্রাফে সূচকগুলাে ওঠানামার আকৃতি V-Shape হলে বােঝতে হবে মন্দা ক্ষণস্থায়ী, আর U-Shape হলে মন্দা দীর্ঘস্থায়ী। মন্দা উপর্যুপরি হলে এর সূচকের ওঠানামা গ্রাফে দেখাবে W এর মতাে। আবার ১৯৯৭ ১৯৯৯ সালে জাপানের পরপর নয়টি প্রান্তিকের মধ্যে আটটি প্রান্তিকের গ্রাফ চিত্রে মন্দা দৃশ্যমান হয় L-Shape হিসেবে।

    কারণ

    যুদ্ধ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সৃষ্ট আকস্মিক অর্থনৈতিক ধাক্কা থেকে শুরু নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতির মাধ্যমে মন্দার উদ্ভব হতে পারে। আকস্মিক অর্থনৈতিক ধাক্কার কারণেও অতীতে মন্দা হতে দেখা গেছে। ৭০ এর দশকে ওপেক যুক্তরাষ্ট্রকে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিলে কোনাে ধরনের সতর্কবার্তা ছাড়াই। যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়। সাম্প্রতিক করােনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্বেই অর্থনীতি কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। এটাকেও আকস্মিক অর্থনৈতিক আঘাত হিসেবে দেখা হয়।

    আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী থেকে আরো পড়ুন

    ব্যালেন্স শিট রিসিশন বা খাতা-কলমের মন্দা :

    সাধারণত কোনাে রাষ্ট্রের অত্যধিক ঋণগ্রস্ততা অথবা আর্থিক খাতের পতনের ফলে একসঙ্গে বিপুল সংখ্যক মানুষকে একইসঙ্গে ঋণ পরিশােধ করতে হলে এ ধরনের মন্দা ঘটে। আবার কোনাে দেশ যদি সাধ্যের অতিরিক্ত ঋণ নিয়ে থাকে যা এক পর্যায়ে তাদের শােধ করা সাধ্যের বাইরে চলে যায় তখনও মন্দা দেখা দিতে পারে।

    অতিরিক্ত মূল্যস্ফীতি :

    মূল্যস্ফীতি যখন অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় চলে যায় তখন বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এ পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়ে দেয় এদিকে আবার উচ্চ সুদের হার তখন দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে। ৭০-এর। দশকে যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের ঘটনা ঘটে।

    ইতিহাস

    আধুনিক অর্থব্যবস্থায় অষ্টাদশ শতাব্দীতে ইউরােপে প্রথম মন্দা দেখা দেয়। আবার বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী মন্দা হয় যুক্তরাষ্ট্রে। এর ব্যাপ্তি ছিল ১৯২৯-১৯৩৯ সাল পর্যন্ত। ১৯২৯ সালে অক্টোবরে মাত্র দুই দিনে ধ্বংস হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার। কয়েক দিনের মধ্যে শিল্প কলকারখানায় উৎপাদনে ধস নামে।

    মাত্র এক বছরের মাথায় বেকার হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রের এক কোটি মানুষ । ১৯৭৩ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়। ১৯৯৭ সালে বিদেশি মুদ্রার অভাবে এশিয়ার বাজারে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। এ সময় থাইল্যান্ড থেকে কোটি কোটি ডলারের বিনিয়ােগ সরিয়ে নিতে থাকেন বিদেশি বিনিয়ােগকারীরা।

    থাইল্যান্ড থেকে শুরু হওয়া এ অর্থ সংকট দ্রুত পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ পূর্ব-এশিয়ার দেশগুলােয় ছড়িয়ে পড়লে দেশগুলােতে অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়। ২০০৮ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রধান কারণ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের গৃহায়ণ খাতের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। দেশটির বন্ধকি বাজারের ঝুঁকিপূর্ণ ঋণব্যবস্থা ও আর্থিক খাতের শিথিল নিয়ন্ত্রণই মন্দার রুটা করেছিল।

    দ্য গ্রেট ইনফ্লেশন

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সমৃদ্ধি এনে দেয়। সে সময় উৎপাদন বাড়ে, কমে যায় বেকারত্ব, মূল্যস্ফীতিও ছিল প্রায় ১%। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টে যায় ১৯৬৫ সাল থেকে। বাড়তে থাকে বেকারত্ব ও মূল্যস্ফীতি। এ পরিস্থিতি ছিল ১৯৮২ সাল পর্যন্ত। ১৯৮০ সালে দেশটির মূল্যস্ফীতির হার ছিল প্রায় ১৫%।

    এ সময়কেই বলা হয় দ্য গ্রেট ইনফ্লেশন। এর মধ্যেই অভিজ্ঞতা হয় স্ট্যাগফ্রেশনেরও। ১৯৮১ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হন রােনাল্ড রিগ্যান। সে সময়ের মূল্যস্ফীতি দেখে তিনি একটি বিখ্যাত উক্তি করেন। উক্তিটি হলাে— ‘মূল্যস্ফীতি হচ্ছে ছিনতাইকারীর মতাে হিংস্র, সশস্ত্র ডাকাতের মতাে ভয়ংকর এবং খুনির মতােই প্রাণঘাতী।’

    বাংলাদেশের করণীয় ও চ্যালেঞ্জ

    আসন্ন মন্দার ঝুঁকি এড়াতে ভােগ কমানাের চেয়ে বরং উৎপাদন বাড়ানাের দিকে নজর দেওয়া উচিত। একই সঙ্গে বিনিয়ােগ বাড়ানাের চেষ্টা করতে হবে। মন্দায় বিশ্ববাজারে জালানি তেলের দাম কমলে তার সাথে দেশের বাজারের সমন্বয় সাধন করতে হবে। বাংলাদেশের সামনে কয়েকটি বিষয় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আসবে। এগুলাে হলাে— রপ্তানি আয় কমে যেতে পারে, আমদানি করা খাদ্য পণ্যের দাম বাড়বে ও রেমিট্যান্স কমতে পারে।’

  • পদক, পুরস্কার, সম্মাননা ২০২২

    ১৪২৫ ও ১৪২৬ বঙ্গাব্দের বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার পেলেন ৪৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। কৃষিক্ষেত্রে উল্লেখযােগ্য ও অনুকরণীয় অবদান রাখার কারণে ১৪২৫ বঙ্গাব্দের জন্য ১৫ এবং ১৪২৬ বঙ্গাব্দের জন্য ২৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ১২ অক্টোবর ২০২২ বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুরস্কার পাওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৩টি স্বর্ণ, ১৬টি রৌপ্য ও ২৫টি ব্রোঞ্জপদক দেওয়া হয়। স্বর্ণপদকপ্রাপ্তরা ১ লাখ টাকা, রৌপ্যপ্রাপ্তরা ৫০ হাজার টাকা ও ব্রোঞ্জপ্রাপ্তরা ২৫ হাজার টাকার সঙ্গে সনদ ও পদক পেয়েছেন। প্রসঙ্গত, কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু পুরস্কার তহবিল গঠন করেন। পরে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার তহবিল আইন, ২০০৯’ এবং এটিকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ট্রাস্ট আইন, ২০১৬’ প্রণয়ন করা হয়।

    জার্মানির মর্যাদাপূর্ণ কার্ল কুবল পুরস্কার পেয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস

    জার্মানির কার্ল কুবল ফাউন্ডেশন ফর চিলড্রেন অ্যান্ড ফ্যামিলি ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কার্ল কুবল পুরস্কারে ভূষিত করেছে। অসংখ্য নারী গ্রাহকদের সন্তান ও তাদের পরিবারের জন্য একটি অধিকতর সমৃদ্ধ জীবন নিশ্চিত করার কারণে ফাউন্ডেশনটি তাকে এ পুরস্কারে ভূষিত করেছে। কার্ল কুবল ফাউন্ডেশন ফর চিলড্রেন অ্যান্ড ফ্যামিলি ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। জার্মানির দক্ষিণ হেসের বেনশাইমে ফাউন্ডেশনের সদর দপ্তর অবস্থিত।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    বাংলা একাডেমি সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কার ২০২২

    বাংলা একাডেমি পরিচালিত সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কার ২০২২-এর জন্য ১০ অক্টোবর ২০২২ মনােনীত হয়েছেন মার্কিন লেখক ও বাংলা সাহিত্যের অনুবাদক ক্যারােলিন রাইট এবং কানাডাপ্রবাসী সাহিত্যিক জসিম মল্লিক। সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁদের এ পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। দ্বিবার্ষিক এ পুরস্কারের অর্থমূল্য ১ লাখ টাকা। বাংলা একাডেমি আয়ােজিত অমর একুশে বইমেলা ২০২৩-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।

    আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী থেকে আরো পড়ুন

    অস্ট্রেলিয়ায় বর্ষসেরা সংগীত আয়ােজক বাংলাদেশি সিয়া

    অস্ট্রেলিয়ায় গানের জন্য প্রতিবছর দেওয়া হয় ‘দ্য আর্ট মিউজিক অ্যাওয়ার্ড’। পুরস্কারের ‘ইলেকট্রোঅ্যাকুস্টিক’বিভাগে ২০১২ সালে বর্ষসেরার স্বীকৃতি পেয়েছেন বাংলাদেশি বংশােদ্ভূত সংগীত আয়ােজক সিয়া আহমেদ।

    বুকার পুরস্কার পেলেন শ্রীলঙ্কার লেখক শেহান করুনাতিলকা

    বুকার পুরস্কার পেলেন শ্রীলঙ্কার লেখক শেহান করুনাতিলকা। অতি প্রাকৃতিক কাহিনি নিয়ে লেখা বিদ্রুপাত্মক উপন্যাস ‘দ্য সেভেন। মুনস অব মালি আলমেডা’র জন্য তিনি এ পুরস্কার পেয়েছেন। শেহান করুনাতিলকার উপন্যাসটি শ্রীলঙ্কায় ১৯৯০ সালের গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে লেখা। উপন্যাসটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন মৃত এক আলােকচিত্রী। ব্রিটেনের কুইন অব কনসর্ট ক্যামিলা লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে শেহানের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশিত ইংরেজি ভাষার উপন্যাসের জন্য দেওয়া হয় বুকার পুরস্কার। এ পুরস্কারের মূল্যমান ৫০ হাজার পাউন্ড। সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা মনােনীত অন্য পাঁচ লেখককেও দেওয়া হয় আড়াই হাজার পাউন্ড করে।

    জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলরের জাতিসংঘ শরণার্থী পুরস্কার লাভ

    জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ৪ অক্টোবর ২০২২ জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) মর্যাদাপুর্ণ ননসেন পবস্কার লাভ করেছেন। তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকাকালে আশ্রয়প্রার্থীদের সুরক্ষার জন্য এ পুরস্কার পেয়েছেন। প্রসঙ্গত, ১৯৫৪ সালে নানসেন পুরস্কার চালু করে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর।

    শাখারভ পুরস্কার পেলেন ইউক্রেনের জনগণ

    গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ থেকে চলছে রাশিয়াইউক্রেন যুদ্ধ। প্রায় ৮ মাস হতে চলা এ যুদ্ধে ইউক্রেনের জনগণকে নানাভাবে করতে হচ্ছে লড়াই। জনগণের সেই লড়াইয়ের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দেশটির জনগণকে শাখারভ পুরস্কারে ভূষিত করেছে ইউরােপীয় পার্লামেন্ট। পুরস্কারের ৫০ হাজার ইউরাে ইউক্রেনের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতা রক্ষার জন্য ব্যক্তি ও সংস্থাকে শাখারভ পুরস্কার দেওয়া হয়। সােভিয়েত ইউনিয়নের ভিন্ন মতাবলম্বী আন্দ্রেই শাখারভের নামে চিন্তার স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেওয়ার পুরস্কারটি দেওয়া হচ্ছে ১৯৮৮ সাল থেকে।

    গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ডস-২০২২পেলেন বুয়েটের জারীন তাসনীম শরীফ

    ‘ওয়েস্ট ইন দ্য সিটি : অ্যাগ্লোমেরেটিং লােকাল ইকোনমি অব মাতুয়াইল ল্যান্ডফিল’ শিরােনামে স্নাতক থিসিসের জন্য আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনভিত্তিক জুনিয়র নােবেল প্রাইসখ্যাত ‘গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ডস ২০২২’ জিতেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জারীন। ৭৩ দেশের ২ হাজার ৮১২টি থিসিসের মধ্যে আর্কিটেকচার ও ডিজাইন বিভাগে সেরা হয়েছেন জারীন তাসনীম শরীফ।

  • দুবাইয়ের আকাশে উড়ন্ত গাড়ি

    ফ্লাইং কার বা উড়ন্ত গাড়ি৷ এতদিন তার কথা আলোচনা হয়েছে শুধু কল্পবিজ্ঞানে। গল্পের বইয়ের পাতা আর সিনেমার পর্দা ছেড়ে এবার বাস্তবে হাজির। শুধু হাজিরই নয়, জনসমক্ষে রীতিমতো উড়ে দেখাল সেই উড়ন্ত গাড়ি।

    অনেকটা বড় ড্রোনের মতো দেখতে চীনা বৈদ্যুতিন গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি এক্সপেং আইএনসির তৈরি সেই গাড়ি গত সোমবার (১০ অক্টোবর) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে প্রথমবারের মতো আকাশে ওড়ে৷

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    পেট্রোল, ডিজেল, সিএনজি ও ইলেকট্রিক গাড়ির ধারাবাহিকতায় বেশ কিছুদিন ধরেই ফ্লাইং কার বা উড়ন্ত গাড়ি তৈরির চেষ্টা করছে গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিগুলো। এ ক্ষেত্রে সফলতা দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন, চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশ। এমনকি বাজারেও আসতে শুরু করেছে উড়ন্ত গাড়ি।

    চীনের তৈরি উড়ন্ত গাড়িটির নাম ‘এক্স টু’। দুই আসনের এ বৈদ্যুতিক গাড়িটি উল্লম্বভাবে মাটি থেকে ওপরে ওঠে৷ অবতরণের সময়ও উল্লম্বভাবেই নামে। এর চার কোনায় দুটি করে মোট আটটি প্রপেলার তথা পাখা রয়েছে৷

    আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী থেকে আরো পড়ুন

    গত সোমবার দুবাইয়ের আকাশে প্রথমবারের পরীক্ষামূলক উড্ডয়নে মোট ৯০ সেকেন্ড ওড়ে এটি। এটাকে বড় সফলতা হিসেবে দেখছেন সংস্থার কর্তারা। তাদের আশা, পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এই উড়ন্ত গাড়ি খুবই জনপ্রিয় হবে।

    গাড়িটি খুব শিগগিরই আন্তর্জাতিক বাজারে আনার জন্য কাজ করছে এক্সপেং। তবে এ ক্ষেত্রে কোম্পানিটি খুব একটা তাড়াহুড়ো করতে চায় না। কর্তৃপক্ষ বলছে, ধাপে ধাপে আন্তর্জাতিক বাজারে আত্মপ্রকাশ করতে চায় তারা।

    এক্সপেং অ্যারোএইচটির মহাব্যবস্থাপক মিঙ্গুয়ান কিউ বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক বাজারে আস্তে আস্তে প্রবেশ করতে চাচ্ছি। প্রথমে দুবাইকে বেছে নেয়া হয়েছে। কারণ, দুবাই বিশ্বের সবচেয়ে উদ্ভাবনক্ষম শহর।’

    এর আগে ২০২১ সালের অক্টোবরে ফ্লাইং কার উদ্বোধন করেছে সুইডেন। দেশটির গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি জেটসন অ্যারোর এ উড়ুক্কু গাড়ির নাম ‘জেটসন ওয়ান’। একটি মাত্র আসন রয়েছে এ গাড়িতে।

    তবে খুব বেশি সময় নয়, একবারে মাত্র ২০ মিনিট উড়তে পারে এই ফ্লাইং কার। এর সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৬৩ মাইল। গাড়িটি এরই মধ্যে বিক্রি শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১২টি গাড়ি বিক্রি করেছে জেটসন অ্যারো।

    ফ্লাইং কার তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রও। স্যামসন স্কাইর তৈরি গাড়ির নাম ‘সুইচব্লেড’। এ গাড়িটিও বিক্রি শুরু হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় দুই হাজার মানুষ গাড়ির জন্য বুকিং করেছে। স্যামসন স্কাই গাড়িটি তৈরি করতে ১৪ বছর সময় ব্যয় করেছে। সম্প্রতি গাড়িটি পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন সম্পন্ন করেছে। এর গতি ঘণ্টায় ৮৭ কিলোমিটার।

  • ইউনেসকোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

    প্রতিষ্ঠা : ১৯৪৫ সালের নভেম্বর মাস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে তত দিনে। কিন্তু যুদ্ধের ভয়াবহতা রয়ে গেছে বিশ্বজুড়ে। এক দেশের প্রতি আরেক দেশের ঘৃণা, অবিশ্বাস, জাতিগত বিদ্বেষ, বর্ণবিদ্বেষ ও অসহিষ্ণুতা চরম আকার ধারণ করেছে। এমন সময়ে, ১-১৬ নভেম্বর জাতিসংঘের উদ্যোগে লন্ডনে। অনুষ্ঠিত হলাে একটি সম্মেলন। উদ্দেশ্য, দীর্ঘস্থায়ী বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংগঠন প্রতিষ্ঠা। পরবর্তী সময়ে ১৯৪৬ সালে যা শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা (ইউনেসকো) হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।

    সদর দপ্তর : ইউনেসকোর সদর দপ্তর ফ্রান্সের প্যারিসে।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    মহাপরিচালক : ফ্রান্সের আন্দ্রে আজুলে (ফ্রান্স)।

    সদস্যরাষ্ট্র : বর্তমানে ইউনেসকোর সদস্যরাষ্ট্র ১৯৩টি।

    সহযােগী সদস্য : ইউনেসকোর সহযােগী সদস্যদেশ ১২টি।

    কাজের ক্ষেত্র : সংস্থাটির মূল কাজের ক্ষেত্র ৪টি। যথা শিক্ষা, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি ও যােগাযােগ।

    আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী থেকে আরো পড়ুন

    ইউনেসকো ও বাংলাদেশ : বাংলাদেশে শিক্ষার উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ, যােগাযােগব্যবস্থার উন্নয়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে ইউনেসকো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশ ইউনেসকোতে যােগদান করে ১৯৭২ সালের ২৭ অক্টোবর। ১৯৭৩ সালে গঠিত হয় বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশন। কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এবং সাধারণ সম্পাদক মােহাম্মদ মাহবুব হােসেন।

    ইউনেসকো কর্তৃক স্বীকৃত বাংলাদেশের যত কিছু

    • খুলনার বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদকে ৫২২তম ও নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারকে। ৩২২তম বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘােষণা করে ১৯৮৫ সালে।
    • ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনকে ৭৯৮তম বিশ্ব ঐতিহ্য ঘােষণা করে ইউনেসকো।
    • ১৯৭১ সালে ইউনেসকোর উদ্যোগে ইরানের রামসারে অনুষ্ঠিত রামসার কনভেনশন অনুযায়ী বাংলাদেশের নিম্নোক্ত তিনটি রামসার সাইট রয়েছে : ১. সুন্দরবন ২. টাঙ্গুয়ার হাওর ৩. হাকালুকি হাওর
    • পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির জন্য বাংলাদেশের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনেসকো কর্তৃক প্রদত্ত হুপে-বােয়ানি শান্তি পুরস্কার লাভ করেন ১৯৯৮ সালে।
    • ইউনেসকো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘােষণা করে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর।
    • ২০০৫ সালে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী বাউলগান’কে মানবতার ধারক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
    • ২০১৬ সালে মঙ্গল শােভাযাত্রা’ ইউনেসকোর অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পায়।
    • বঙ্গবন্ধুর সাত মার্চের ভাষণ ইউনেসকোর মেমরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড হিসেবে স্বীকৃতি পায় ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর।
    • ২০১৭ সালে অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পায় ‘শীতলপাটি।
    • ‘ইউনেসকো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ইন দ্য ফিল্ড অব ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’ শীর্ষক পুরস্কার প্রবর্তিত হয় ২০২১ সালে (প্রথম বছর পুরস্কার পায় উগান্ডার মােটিভ ক্রিয়েশনস লিমিটেড)।
  • যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় বংশােদ্ভূত ঋষি সুনাক

    যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় বংশােদ্ভূত ঋষি সুনাক। প্রথম ব্রিটিশ এশিয়ান এবং এক শতকের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন সুনাক।

    ২০ অক্টোবর ২০২২ লিজ ট্রাস প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করার পর কনজারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও হাউস অব কমন্সের স্পিকার পেনি মরডান্ট এই নির্বাচনে ঋষি সুনাকের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    তাঁরা দুজনই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ান। ফলে ২৪ অক্টোবর ২০২২ ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির (টোরি) নেতা হিসেবে ঋষি সুনাকের নাম ঘােষণা করা হয়। যুক্তরাজ্যে ক্ষমতাসীন দলের নেতাই রীতি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী হয়ে থাকেন।

    রাজনৈতিক জীবনে ২০১৫ সালে ইয়র্কশায়ারের রিচমন্ড কেন্দ্র থেকে প্রথমবারের মতাে সাংসদ হন ঋষি সুনাক। ২০১৯ সালে বরিস প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ২০২০ সালে দেশের অর্থমন্ত্রী হন তিনি। প্রসঙ্গত, সুনাকের বাবা যশবীর ও মা উষা দুজনেরই জন্ম ভারতের পাঞ্জাবে।

  • ওপেকের (OPEC) তেলের উৎপাদন কমিয়ে দেওয়ার পরিণতি

    পুরাে নাম অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপাের্টিং কান্ট্রিজ, সংক্ষেপে ওপেক। বাংলায় লেখা হয় জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক দেশগুলাের সংগঠন। আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, কঙ্গো, নিরক্ষীয় গায়ানা, গ্যাবন, ইরান, ইরাক, কুয়েত, লিবিয়া, নাইজেরিয়া, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ভেনেজুয়েলা— ১৩টি দেশ নিয়ে ওপেক গঠিত।

    প্রতিষ্ঠা : ওপেক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৬০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    প্রতিষ্ঠাতা সদস্য

    ওপেকের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদেশ পাঁচটি— ইরান, ইরাক, কুয়েত, সৌদি আরব ও ভেনেজুয়েলা। এরপর বিভিন্ন সময় ইন্দোনেশিয়া, কাতার, ইকুয়েডর, গ্যাবন ওপেকে যােগদান করলেও থাকেনি। হয় তারা সদস্যপদ প্রত্যাহার করে নিয়েছে কিংবা বহিষ্কৃত হয়েছে।

    সদর দপ্তর

    ওপেকের সদর দপ্তর অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায়।

    ওপেক প্লাস

    একটি শব্দ প্রায়ই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আসে, তা হলাে ‘ওপেক প্লাস’। ওপেকভুক্ত ১৩টি দেশ এবং জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী আরও বড় ১০টি দেশ মিলে হলাে ওপেক প্লাস জোট। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু দেশটি ওপেক বা ওপেক প্লাসের সদস্য নয়। কানাডা ও চীন বিপুল পরিমাণে তেল উৎপাদনকারী রাষ্ট্র; কিন্তু ওই জোটে নেই। রাশিয়া আবার ওপেক প্লাসের সদস্য।

    জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণে ভূমিকা

    বিশ্বের জ্বালানি তেলের উৎপাদন ও আন্তর্জাতিক বাজারে দাম নির্ধারণে ওপেকভুক্ত দেশগুলাে বড় ভূমিকা রাখে। বিশ্বের দ্বিতীয় জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে সৌদি আরব ওপেকের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। অপর দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতাে যারা ওপেকের সদস্য নয়, তারা তাদের উৎপাদন ও রপ্তানির ক্ষেত্রে এককভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার রাখে। কাউকে কৈফিয়ত দিতে হয় না।

    আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী থেকে আরো পড়ুন

    বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জ্বালানি তেল মজুত আছে। ভেনেজুয়েলায়, যা ৩০০ বিলিয়ন ব্যারেলের বেশি। এরপর সৌদি আরব ২৯৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ব্যারেল। বেশি তেল মজুত থাকা সত্ত্বেও ভেনেজুয়েলা ধনী দেশ নয়। পশ্চিমাদের অবরােধের কারণে দেশটির তেল উত্তোলনব্যবস্থা আধুনিক নয়। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন প্রশাসন অবরােধ শিথিল করার কথা ভাবছে।

    কম তেল উৎপাদনের সিদ্ধান্ত

    রাশিয়াকে সঙ্গে রেখে ওপেকভুক্ত দেশগুলাে ৫ অক্টোবর ২০২২ ভিয়েনায় জরুরি বৈঠক করে। ২০২০ সালের শুরুতে করােনা অতিমারির পর এটা ছিল সদস্যদেশগুলাের প্রথম সরাসরি বৈঠক। বৈঠকে নেতারা ৩০ মিনিটেই সিদ্ধান্তে উপনীত হন— এখন যে হারে তারা তেল উত্তোলন করছেন, তা থেকে প্রতিদিন দুই মিলিয়ন ব্যারেল কম উত্তোলন করবেন, যা কার্যকর হবে নভেম্বরের শুরু থেকে।

    বৈশ্বিক অর্থনীতি ও তেলের বাজারে একধরনের অনিশ্চয়তা চলছে। সেই জায়গায় বাজারে স্থিতিশীলতা আনতেই এমন সিদ্ধান্ত— উৎপাদনে কাটছাঁটের পর এমন কথা বলেছেন সৌদি আরবের জ্বালানিমন্ত্রী আবদুল আজিজ বিন সালমান। বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করলে এভাবে বলতে হবে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর জ্বালানি সরবরাহের বিরাট ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এতে বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়েছে, অর্থাৎ উৎপাদন কমে গেছে। বিশ্বজুড়ে মন্দার পূর্বাভাস। ওপেকভুক্ত দেশগুলাে ভাবছে, এই মন্দার বাজারে এত তেল উত্তোলন করে কী হবে? তার চেয়ে উৎপাদন একটু কমিয়ে বাজারে চাহিদা ধরে রাখা যাক। দামও ঠিকঠাক থাকুক। এ কারণেই এমন সিদ্ধান্ত।

    কম তেল উৎপাদনের সিদ্ধান্তের প্রভাব

    কম তেল উৎপাদনের ওপেকভুক্ত দেশগুলাের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরদিনই জ্বালানি তেলের দাম ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে যায়। প্রতি ব্যারেল তেলের দাম হয় ৯৩ দশমিক ২৯ ডলার। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসের শুরুতে যা ছিল প্রায় ৮৯ ডলার। উল্লেখ্য, ১ ব্যারেল সমান ১৫৯ লিটার।। বছরের শুরুতে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৭৯ ডলারের কাছাকাছি ছিল। ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের দুই সপ্তাহের মধ্যে গত মার্চে তা ১২৭ ডলারে পৌঁছায়, যা ছিল গত ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। পরে মন্দার সম্ভাব্য ঝুঁকিতে জ্বালানি তেলের দাম কমতে থাকে। এখন ওপেকের এই সিদ্ধান্তে দাম আবার ১০০ ডলারে পৌছে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

    ওপেকভুক্ত দেশগুলাে কত তেল উৎপাদন করে

    ওপেকভুক্ত দেশগুলাে প্রতিদিন কত পরিমাণ জ্বালানি তেল উৎপাদন করে, তা দেখা যাক। এ বছরের আগস্টে প্রতিদিন তারা ২৯ দশমিক ৭ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উৎপাদন করেছে। এর মধ্যে সৌদি আরব একাই করেছে ১০ দশমিক ৯ মিলিয়ন ব্যারেল। এরপর ইরাক ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন ব্যারেল। সংযুক্ত আরব আমিরাত ৩ দশমিক ২, কুয়েত ২ দশমিক ৮ ও ইরান ২ দশমিক ৬ মিলিয়ন ব্যারেল। বিশ্বের দৈনিক চাহিদার ৪০ শতাংশ জ্বালানি তেল উৎপাদন করে ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলাে।

    রাশিয়ার স্বার্থ

    বলা হচ্ছে, ওপেকের এই সিদ্ধান্ত রাশিয়ার জন্য ইতিবাচক হয়েছে। রাশিয়া বর্তমানে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মূল্যছাড়ে চীন ও ভারতের কাছে তেল বিক্রি করছে। সে ক্ষেত্রে ব্যারেলপ্রতি মূল্য ১০০ ডলারের আশপাশে থাকলে মস্কোর জন্য সুবিধা। উৎপাদনগত পদ্ধতির জটিলতা, দুর্নীতি ইত্যাদি মিলিয়ে প্রতি ব্যারেল অপরিশােধিত তেল উৎপাদনে রাশিয়ার খরচ হয় ৪৫ ডলারের মতাে। অর্থাৎ তেলের দাম যদি ৬০-৭০ ডলারে চলে আসে, তাহলে এক-তৃতীয়াংশ ছাড় দিয়ে রাশিয়ার পক্ষে লাভ করা সম্ভব নয়। অর্থাৎ তেলের সরবরাহ বাড়িয়ে এর মূল্য উল্লেখযােগ্যভাবে কমানাে গেলে সেটা রাশিয়ার ওপর প্রচণ্ড অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করত। ওপেকের মাধ্যমে সেটাই চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরােপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। কিন্তু সৌদি আরবের নেতৃত্বে ওপেকভুক্ত দেশগুলাে সে কথা শােনেনি।

    ক্ষুব্ধ যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ

    ওপেকের এ সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরােপ উভয়কে বেজায় ক্ষুব্ধ করেছে। এ রকম কিছু একটা অনুমান করতে পেরেছিল তারা। তাই আগেই জুলাইয়ের শেষে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মােহাম্মদ বিন সালমানকে, যিনি ‘এমবিএস’ নামে পরিচিত, প্যারিসে এলিসি প্রাসাদে সাড়ম্বরে সংবর্ধনা দিয়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখো। একই অনুরােধ নিয়ে ২৪ সেপ্টেম্বর রিয়াদে গিয়েছিলেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলঞ্জ। কিন্তু সব চেষ্টাই জলে গেছে। ইউরােপে শীতকাল আসছে। এ সময়ে এমনিতেই গ্যাসের চাহিদা বেশি থাকে।

    মূলত রাশিয়ার গ্যাসের ওপর অনেকটা নির্ভরশীল ছিল পশ্চিম ইউরােপের দেশগুলাে। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়া থেকে ইউরােপে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। কারণ, রাশিয়ার ওপরই অবরােধ দিয়ে রেখেছে। ইউরােপের দেশগুলাে। এমনিতেই ইউরােপে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। এখন জ্বালানি তেলের দাম আরেক দফা বাড়লে জিনিসপত্রের দামও বাড়বে। সব মিলিয়ে কঠিন সংকটে পড়বে ইউরােপ।

    জ্বালানি তেলের উৎপাদন কমানােয় বেশি খেপেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। প্রথমত, দেশটির মধ্যবর্তী নির্বাচন সামনে। নির্বাচনের আগে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছে তারা। তেলের দাম বাড়লে সেই চেষ্টা হুমকিতে পড়তে পারে। বাইডেন মনে করছেন, তাঁকে বিপদে ফেলার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সৌদি আরবকে চড়া মূল্য দিতে হবে বলেও বাইডেন হুমকি দিয়ে রেখেছেন। এ হুমকির মধ্যে রাজনীতি আছে।

    সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মােহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বাইডেনের আগে থেকে শীতল সম্পর্ক। তুরস্কে সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাসােগি নিহত হলে তখনকার ডেমােক্র্যাট নেতা বাইডেন এর তীব্র সমালােচনা করেছিলেন। আর তখনকার প্রেসিডেন্ট ডােনাল্ড ট্রাম্প তেমন কোনাে সমালােচনাই করেননি। কারণ, ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে সালমানের দহরমমহরম সম্পর্ক ছিল।

    তারপরও প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে এ বছর জুলাই মাসে বাইডেন সৌদি আরব সফর করেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল, সালমানের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা ও সৌদির তেল উৎপাদন বাড়ানাের অনুরােধ করা। পশ্চিমা অনেক বিশ্লেষক ওপেক প্লাস জোটের সিদ্ধান্তকে পশ্চিমাদের প্রতি, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চপেটাঘাত হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। কংগ্রেসের বেশ কজন প্রভাবশালী ডেমােক্র্যাট সদস্য সৌদি আরবকে লক্ষ্য করে খােলাখুলি হুমকির সুরে কথা বলছেন।

    প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য টম মালিনােস্কি ও শন ক্যাসটেন বলেছেন, সৌদি আরব ‘শত্রুর মতাে আচরণ করেছে। তারা এমন একটি বিল উত্থাপনেরও হুমকি দিয়েছেন, যাতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে সৌদি আরব থেকে তিন হাজার মার্কিন সৈন্য এবং ক্ষেপণাস্ত্র-প্রতিরােধব্যবস্থা প্রত্যাহার করতে হবে। বাস্তবিক অর্থেই বাইডেন প্রশাসন যদি সৌদির বিরুদ্ধে কঠিন কোনাে ব্যবস্থা নেয়, তা ওয়াশিংটনের জন্য ‘বুমেরাং হতে পারে। ওয়াশিংটন যদি রিয়াদের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করে দেয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে বড় অস্ত্র বিক্রেতা দেশ। দেশটির অস্ত্রের বড় ক্রেতা সৌদি আরব।।

    সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

    তেল উৎপাদন কমিয়ে দেওয়ার ওপেকের এ সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরােপের যা-ই হােক, বাংলাদেশের মতাে দেশগুলাের সংকট আরও বাড়বে। একদিকে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, অন্যদিকে ডলারের তুলনায় স্থানীয় মুদ্রার পতনে এ দেশগুলাে এমনিতেই সংকটে রয়েছে। বেশি দামের ডলার দিয়ে জ্বালানি তেল কিনে রিজার্ভের অবস্থা ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে বেশির ভাগ দেশ। এ প্রবণতা বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে। সামনে অপেক্ষা করছে অনিশ্চিত এক ভবিষ্যৎ।

  • ইউক্রেনের চার অঞ্চল রাশিয়ার দখলে

    ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। ৩০ সেপ্টেম্বর ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল রুশ ফেডারশনের অন্তর্ভুক্ত করে। ১৯ অক্টোবর দখলকৃত অঞ্চলে সামরিক আইন জারি করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

    বিতর্কিত গণভোট

    ২৩-২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন এবং জাপারিঝঝিয়ায় গণভােট অনুষ্ঠিত হয়। গণভােটে রাশিয়ায় যুক্ত হওয়ার পক্ষে খেরসনে ৮৭.০৫%, দোনেৎস্কে ৯৯.২৩%, লুহানস্কে ৯৮.৪২% এবং জাপােরিঝঝিয়ায় ৯৩.১১% ভােটার ভােট দেয়। এরপর অঞ্চল চারটি রুশ ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ক্রেমলিনে এক জমকালাে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঐ চার অঞ্চলগুলােতে নিয়ােগকৃত নেতাদের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    ২ অক্টোবর ২০২২ দেশটির সাংবিধানিক আদালত ভ্লাদিমির পুতিনের স্বাক্ষর করা চুক্তিকে বৈধ বলে স্বীকৃতি দেয়। অঞ্চলগুলােকে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে ৩ অক্টোবর রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ডুমা এবং ৪ অক্টোবর উচ্চকক্ষ ‘ফেডারেশন কাউন্সিল অঞ্চলগুলাের অন্তর্ভুক্তির আইন সর্বসম্মতভাবে অনুমােদন করে। ৫ অক্টোবর ২০২২ ভ্লাদিমির পুতিন অন্তর্ভুক্ত করার আইনে স্বাক্ষর করেন।

    আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী থেকে আরো পড়ুন

    এছাড়া পুতিন আনুষ্ঠানিকভাবে ঐ চার অঞ্চলের বর্তমান মস্কো-সমর্থিত প্রধানদের ভারপ্রাপ্ত নেতা হিসেবে নিয়ােগের ডিক্রিতেও স্বাক্ষর করেন। এর মাধ্যমে রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করে নেয়। রাশিয়ার সঙ্গে নতুন যুক্ত হওয়া চারটি অঞ্চলের মােট আয়তন প্রায় ১,০৯,০০০ বর্গকিলােমিটার। এই আয়তন ইউক্রেনের মােট আয়তনের ১৫ শতাংশের বেশি। এই অঞ্চলগুলােতে ৪০ লাখের বেশি মানুষের বসবাস। আর আবাদযােগ্য ভূমি আছে ৫৬ লাখ হেক্টরের বেশি। ক্রিমিয়া উপদ্বীপসহ বর্তমানে একত্রে এ পাঁচ অঞ্চলের আয়তন ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশের সমান।

    দখলকৃত অঞ্চলগুলাে কেন গুরুত্বপূর্ণ?

    গণভােটের মাধ্যমে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় চারটি অঞ্চলকে নিজেদের ভূখন্ডের অংশ করে নিয়েছে রাশিয়া। নতুন যুক্ত হওয়া চারটি অঞ্চল কেবল রাশিয়ার ভূখণ্ডের আকারই বাড়াবে না, একই সঙ্গে অর্থনীতির জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। কারণ, সাবেক ইউক্রেনীয় এ অঞ্চলগুলাে শিল্প ও কৃষির দিক থেকে সম্ভাবনাময়।

    অর্থনীতির কেন্দ্র দনবাস

    ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দনবাসের লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক এলাকা ইউক্রেনের শিল্পাঞ্চল হিসেবে খ্যাত। ইউক্রেনের কয়লাভিত্তিক অর্থনীতির কেন্দ্র এ দনবাস এলাকা। খনিজসমৃদ্ধ এ অঞ্চলে রয়েছে ইউরােপের চতুর্থ বৃহত্তম কয়লাক্ষেত্র। এখানে উত্তোলনযােগ্য কয়লার মজুত রয়েছে এক হাজার কোটি টনের বেশি। এ ছাড়া দনবাসে থাকা ১১৫টি কয়লাখনি থেকে বছরে প্রায় ৭ কোটি টন কয়লা উৎপাদিত হয়। দোনেৎস্ক অঞ্চলে রয়েছে আটটি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র। অন্যদিকে লুহানস্ক হচ্ছে এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ পরিবহনকেন্দ্র। পাশাপাশি এলাকাটি ধাতুবিদ্যা, যন্ত্রপাতি ও কৃষিশিল্পের জন্যও সুপরিচিত। এখানে রাসায়নিক, ওষুধ কারখানা ও বেশ কয়েকটি কয়লাখনি রয়েছে। সব মিলিয়ে ইউক্রেনের শিল্প উৎপাদনের প্রায় ২০ শতাংশের কেন্দ্রবিন্দু এই দনবাস এলাকা।

    শক্তিকেন্দ্র জাপােরিঝঝিয়া

    আরেক অঞ্চল জাপােরিঝঝিয়ায় রয়েছে ইউরােপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র। ২০১৯-২০ বছরে এ অঞ্চল থেকে প্রায় ৪,০০০ কোটি কিলােওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে, যা ইউক্রেনের মােট বিদ্যুতের ২৫-২৭%। তাই এই এলাকাকে ইউক্রেনের শক্তিকেন্দ্র বলা হয়। এছাড়া এই অঞ্চলে অনেক বৃহৎ শিল্প ও যান্ত্রিক প্রকৌশল সুবিধাও রয়েছে। এগুলাের অন্যতম জাপােরিঝঝিয়া অটোমােবাইল কারখানা থেকে বছরে দেড় লাখ গাড়ি তৈরি হয়। আজভ সাগর ও ডিনিপার নদীর অববাহিকা থাকায় এ অঞ্চল অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক সম্ভাবনাময়।

    কৃষিক্ষেত্রে এগিয়ে খেরসন

    জাহাজ নির্মাণের জন্য বিখ্যাত খেরসন অঞ্চল। পাশাপাশি কৃষিক্ষেত্রেও রয়েছে এই অঞ্চলের বড় অবদান। এই অঞ্চলে খাদ্যশস্য, সূর্যমুখী ও বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি উৎপাদিত হয়। উর্বর জমি হওয়ায় এক মৌসুমে কখনাে দুই বা তারও বেশি ফসল দিতে পারে। এ ছাড়া গবাদিপশু প্রজননেও এগিয়ে এই এলাকা।

    চার অঞ্চলের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
    অঞ্চললুহানস্কদোনেৎস্কখেরসনজাপােরিঝঝিয়া
    অফিসিয়াল নামLuhansk People’s RepublicDonetsk People’s RepublicKhersonZaporizhzhia
    আয়তন২৬,৬৮৪ বর্গ কিমি৪,৯০২ বর্গ কিমি১৩৫.৭ বর্গ কিমি৩৩৪ বর্গ কিমি
    জনসংখ্যা১৪,৮৫,৩০০২২,২০,৫০০২,৮৩,৬৪৯৭,২২,৭১৩
    ভাষারুশরুশরুশ ও ইউক্রেনীয়রুশ ও ইউক্রেনীয়
    গঠন৫ মার্চ ২০১৪৭ এপ্রিল ২০১৪১৮ জুন ১৭৭৮১৭৭০

    জাতিসংঘের নিন্দা

    ইউক্রেনের চার অঞ্চলে গণভােট এবং এগুলােকে রুশ ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্তিকে অবৈধ উল্লেখ করে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র ও আলবেনিয়া খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করে। কিন্তু রাশিয়ার ভেটোতে প্রস্তাবটি আটকে যায়। এরপর আলবেনিয়ার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে নিন্দা প্রস্তাব আনে। কিন্তু রাশিয়া এটির ওপর গােপন ভােটাভুটির প্রস্তাব করে।

    ১০ অক্টোবর ২০২২ ভােটাভুটি হয় এই প্রশ্নে যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আনা একটি নিন্দা প্রস্তাবের ওপর গােপন ভােটাভুটি হবে কি না। এতে রাশিয়ার পক্ষে ভােট দেয় ১৩টি দেশ। আর বিপক্ষে ভােট দেয় ভারতসহ ১০৭টি দেশ। ভােটদানে বিরত ছিল রাশিয়া, চীন ও বাংলাদেশসহ ৩৯টি দেশ। ভােটাভুটির ফলাফলের ভিত্তিতে সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট রেকর্ড করা ভােটের প্রস্তাব অনুমােদন করেন। তবে সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার আবেদন করে রাশিয়া।

    সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করা হবে কি না, তা নিয়ে ভােটাভুটি করা হলে ভারতসহ ১০৪টি দেশ বিপক্ষে ভােট দেয়। ১৬টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভােট দেয় এবং ৩৪টি দেশ ভােটদানে বিরত থাকে। ১২ অক্টোবর ২০২২ ইউক্রেনের চার অঞ্চলকে সীমানাভুক্ত করায় রাশিয়ার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব পাস হয়। প্রস্তাবের পক্ষে ভােট দেয় বাংলাদেশসহ ১৪৩টি দেশ, বিপক্ষে ৫টি দেশ (বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, নিকারাগুয়া, রাশিয়া ও সিরিয়া) এবং ভােটদানে বিরত ছিল ভারত, চীনসহ ৫টি দেশ।

    ইউক্রেনকে সহায়তা

    ১১ অক্টোবর ২০২২ ধনী দেশগুলাের জোট জি-৭-এর সদস্যরা জরুরি বৈঠকে বসে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা প্রদান করে। এরপর ১১ অক্টোবর ২০২২ জার্মানির কাছ থেকে চারটি InfraRed Imaging System Tail (IRRS-T) আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পায় ইউক্রেন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র National Advanced Surface-to-Air Missile System (NASMAS) নামের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দেওয়ার ঘােষণা দেয়। তাছাড়া ১১ অক্টোবর ২০২২ ইউক্রেনকে অস্ত্র দিতে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ন্যাটোর সদর দপ্তরে ‘ইউক্রেন ডিফেন্স কন্ট্যাক্ট গ্রুপের ৫০টি দেশের প্রতিনিধিরা বৈঠক করে আরও অস্ত্র দেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়।

    ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন

    ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ নতুন চার অঞ্চলের নতুন নেতাদের সাথে রুশ প্রেসিডেন্টের চুক্তির ফলে উত্তর আটলান্টিক সামরিক জোট (NATO)-তে যােগ দিতে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করে ইউক্রেন। ২ অক্টোবর ২০২২ ন্যাটো সদস্যভুক্ত নয়টি দেশের প্রেসিডেন্ট একটি যৌথ বিবৃতিতে ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার আবেদনকে সমর্থন করেন। তাছাড়া ইউক্রেনকে আরও অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার আহবান জানান তারা। দেশগুলাে হলাে— চেক প্রজাতন্ত্র, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, উত্তর মেসিডােনিয়া, মন্টিনিগ্রো, পােল্যান্ড, স্লোভাকিয়া এবং রােমানিয়া। উল্লেখ্য, ইউক্রেনে রুশ হামলার পরপরই সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে যােগদানের আবেদন করে।

    ক্রিমিয়া দখল

    ২০১৪ সালে ইউক্রেনের রুশপন্থী প্রেসিডেন্টকে উত্থাত এবং রাশিয়া ক্রিমিয়া দখলে নেওয়ার পর মস্কোপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা শিল্পসমৃদ্ধ দনবাসকে কিয়েভের শাসন থেকে মুক্ত করতে লড়াইয়ে নামলে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে সংঘাত শুরু হয়। ক্রিমিয়ায় জাতিগতভাবে রুশদেরই আধিক্য, সােভিয়েত আমলে রাশিয়ার এ অঞ্চলটিকে ইউক্রেনের সাথে জুড়ে দেওয়া হয়। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাশিয়া সেটির দখল নেওয়ার পর ১৬ মার্চ সেখানে গণভােট হয়, তাতে ৯৭ শতাংশ ভােটার ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পক্ষে ভােট দেয় বলে জানান ক্রিমিয়ার নেতারা। রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে ২১ মার্চ ২০১৪ ক্রিমিয়াকে নিজেদের সাথে যুক্ত করে নেয়।

    নতুন জেনারেল সুরােভিকিন
    ৮ অক্টোবর ২০২২ ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য দেশটির বিমানবাহিনীর জেনারেল সের্গেই সুরােভিকিনকে দায়িত্ব দেন। ১১ অক্টোবর ১৯৬৬ সাইবেরিয়ার শহর নভােসিবিরিস্কেতে তার জন্ম। সুরােভিকিন তাজিকিস্তান, চেচনিয়া ও সিরিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে বীরত্বের সঙ্গে লড়েছেন। ২০১৭ সালে সিরিয়ার যুদ্ধে তিনি রুশ বিমানবাহিনীর নেতৃত্ব দেন। সিরিয়ার যুদ্ধে সাফল্য অর্জন করে তাকে ‘রাশিয়ার বীর’ খেতাব দেওয়া হয়। সামরিক জীবনে ২ বার জেল খেটেছেন তিনি। সামরিক অভিযানে জেনারেল সুরােভিকিন অত্যন্ত কঠোর দৃষ্টিভঙ্গি পােষণ করেন এবং অর্থডক্স খ্রিষ্টান হিসেবে ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ধর্ম পালন করেন। এ কারণে তাকে তার সহকর্মীরা ‘জেনারেল আরমাগেডন’ নামে অভিহিত করে থাকেন। আরমাগেডনকে বলা হয় বাইবেলে বর্ণিত মহাকালের শেষ প্রান্তে শুভ এবং অশুভ শক্তির শেষ যুদ্ধ।
    কার্চ ব্রিজ
    ৮ অক্টোবর ২০২২ ইউক্রেনের স্থানীয় সময় সকাল ছয়টায় রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ‘কার্চ ব্রিজ’ বিস্ফোরণে আংশিক ধসে যায়। রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলাের একটি কার্চ সেতু। এটির মাধ্যমে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে ক্রিমিয়াকে যুক্ত করা হয়েছে। সেতুটি মূলত সড়ক ও রেল যােগাযােগের। ১৯ কিলােমিটার দীর্ঘ এ সেতু কার্চ প্রণালির ওপর অবস্থিত। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের পর ২০১৮ সালে এটি উদ্বোধন করেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউরােপের সবচেয়ে বড় সেতুও এটি; যা নির্মাণে খরচ হয় ৩৭০ কোটি মার্কিন ডলার। এ সেতু ব্যবহার করে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম পাঠিয়ে থাকে রুশ সরকার। ফলে সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ক্রিমিয়ার সঙ্গে সড়ক যােগাযােগে যেমন বিঘ্ন ঘটছে, তেমনি রুশ সরকারের জন্য সামরিক সরঞ্জাম পাঠানাে কঠিন হয়ে পড়েছে।
  • দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর

    বর্তমান বহুমেরুকেন্দ্রিক বিশ্বে প্রতিনিয়তই দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সম্পর্কে ঘটে চলেছে নানা চড়াই-উতরাই। বদলে যাচ্ছে সম্পর্কের সমীকরণ এবং গড়ে উঠছে নানা জোট ও পাল্টা জোট। এ নিয়েই চলতি ঘটনায় থাকছে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর গুরুত্বপূর্ণ নানা প্রশ্ন।

    https://youtube.com/watch?v=7UClKWG1bbU%3Ffeature%3Doembed

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    চীন ও তাইওয়ান দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত

    প্রশ্ন : তাইওয়ানের অবস্থান কোথায়?
    উত্তর : চীনের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল থেকে প্রায় ১০০ মাইল দূরে।

    প্রশ্ন : বিশ্বের কয়টি রাষ্ট্র তাইওয়ানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে?
    উত্তর : মাত্র ১৩টি।

    প্রশ্ন :তাইওয়ানের স্বাধীনতা | সমর্থনকারী সংস্থার নাম কী?
    উত্তর : তাইওয়ান ফাউন্ডেশন ফর ডেমােক্রেসি এবং ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফান্ড।

    প্রশ্ন : কত সালের আইন অনুযায়ী তাইওয়ান দ্বীপের রক্ষা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে?
    উত্তর : ১৯৭৯ সালের আইন।

    প্রশ্ন : তাইওয়ানের নতুন ‘দক্ষিণ বন্ধননীতি’র উদ্দেশ্য কী?
    উত্তর : তাইপের সঙ্গে আসিয়ান, দক্ষিণ এশিয়া এবং ওশেনিয়া অঞ্চলের সম্পর্ক দৃঢ় করা।

    প্রশ্ন : ২ আগস্ট ২০২২ ন্যান্সি পেলােসি তাইওয়ান সফর করায় চীন কোথায় সামরিক মহড়া পরিচালনা করে?
    উত্তর : তাইওয়ান প্রণালিতে।

    প্রশ্ন : ২৮ আগষ্ট ২০২২ তাইওয়ান প্রণালিতে মহড়া পরিচালনা করা যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজ দুটির নাম কী?
    উত্তর : মিসাইল ক্রুজার ইউএসএস অ্যান্টিটাম এবং ইউএসএস চ্যান্সেলর সভিল।

    প্রশ্ন :চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ‘নয়া লং মার্চ’-এর উদ্দেশ্য কী?
    উত্তর : চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে সৃষ্ট সব বাধা মােকাবিলা করা।

    দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র

    প্রশ্ন : নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া এবং জার্মানি ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক
    চুক্তি করেছিল কত সালে?
    উত্তর : ২০১৫ সালে।

    প্রশ্ন : নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্য ও জার্মানিকে নিয়ে ছয় জাতির সঙ্গে ইরান যে চুক্তি করে, তার নাম কী?
    উত্তর : জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন।

    প্রশ্ন : কত সালে জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন চুক্তি কার্যকর হয়?
    উত্তর : ২০১৫ সালে।

    প্রশ্ন : যুক্তরাষ্ট্র জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন চুক্তি থেকে বের হয়ে যায় কবে?
    উত্তর : ২০১৮ সালে।

    প্রশ্ন : আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) ইরানকে জ্বালানি খাতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধি আহরণের মাত্রা বেঁধে দেয় কত শতাংশ?
    উত্তর : ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

    প্রশ্ন : জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) চুক্তির বিষয়বস্তু কী?
    উত্তর : ইরান পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করার বিনিময়ে ইরানের ওপর বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া।

    প্রশ্ন : ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র প্রথম নিষেধাজ্ঞা আরােপ করে কত সালে?
    উত্তর : ১৯৭৯ সালে।

    প্রশ্ন : ১৯৮৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র কোন দেশের বিদ্রোহীদের সহযােগিতার জন্য ইরানের কাছে অস্ত্র বিক্রি করে?
    উত্তর : নিকারাগুয়ার কন্ট্রা বিদ্রোহীদের।

    প্রশ্ন :ইরানের কোন প্রেসিডেন্ট ডলারের বিনিময়ে ইরানের তেলসম্পদের মােট মজুতের ৮০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের
    হাতে তুলে দেয়?
    উত্তর : মুহাম্মদ রেজা শাহ পাহলভি।

    প্রশ্ন :পশ্চিমা স্বার্থসহায়ক মুহাম্মদ রেজা শাহ পাহলভি ক্ষমতায় আসেন কত সালে?
    উত্তর : ১৯৫৩ সালে।

    প্রশ্ন : কত সালে মুহাম্মদ রেজা শাহ পাহলভির পতন হয়?
    উত্তর : ১৯৭৯ সালে।

    https://youtube.com/watch?v=WypimDt-lVM%3Ffeature%3Doembed

    বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীন সম্পর্ক

    প্রশ্ন : সম্প্রতি যুদ্ধক্ষেত্রে কোন দেশ পােড়ামাটি নীতি গ্রহণ করেছে?
    উত্তর : মিয়ানমার।

    প্রশ্ন : কত সালে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা রােহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করে?
    উত্তর : ১৯৮২ সালে।

    প্রশ্ন : জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে রােহিঙ্গারা প্রথম কত সালে বাংলাদেশে আসে?
    উত্তর : ১৯৭৮ সালে।

    প্রশ্ন : আট লক্ষাধিক রােহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে কত সালে?
    উত্তর : ২০১৭ সালে।

    প্রশ্ন : কখন রাখাইনে ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চালানাে হয়?
    উত্তর : ২০১৭ সালে।

    প্রশ্ন : কত তারিখে বাংলাদেশ মিয়ানমার রােহিঙ্গা প্রত্যাবাসন-সংক্রান্ত দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করে?
    উত্তর : ২৩ নভেম্বরের ২০১৭।

    প্রশ্ন : রােহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত পাঠানাের বিষয়ে ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ নামের চুক্তি চূড়ান্ত হয় কত তারিখে?
    উত্তর : ১৬ জানুয়ারি ২০১৮।

    প্রশ্ন : সম্প্রতি মিয়ানমার বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী কোথায় গােলা ছােড়ে?
    উত্তর : বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার এলাকায়।

    প্রশ্ন : কোন দুটি দেশের মধ্যে মংডু সীমান্ত অবস্থিত?
    উত্তর : বাংলাদেশ ও মিয়ানমার।

    প্রশ্ন : চীন রাখাইনের কোন স্থানে গভীর সমুদ্রবন্দর গড়ে তুলছে?
    উত্তর : কিয়াকফুতে।

    প্রশ্ন : কোন প্রজেক্ট ভারতের কলকাতা বন্দরকে রাখাইন রাজ্যের সিটওয়ে (আকিয়াব) বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করবে?
    উত্তর : কালাদান মাল্টিমােডাল ট্রানজিট ট্রান্সপাের্ট প্রজেক্ট।

    দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে বাংলাদেশ-ভারত

    প্রশ্ন : বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় কত তারিখে?
    উত্তর : ১৯ মার্চ ১৯৭২।

    প্রশ্ন : বাংলাদেশ-ভারত গঙ্গার পানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় কত তারিখে?
    উত্তর : ১২ ডিসেম্বর ১৯৯৬।

    প্রশ্ন : বাংলাদেশ-ভারত গঙ্গার পানি চুক্তির মেয়াদ কত বছর?
    উত্তর : ৩০ বছর।

    প্রশ্ন : বাংলাদেশ-ভারত গঙ্গার পানি চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে কত সালে?
    উত্তর : ২০২৬ সালে।

    প্রশ্ন : কত তারিখে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বিনিময়ের মাধ্যমে ছিটমহলের মানবিক সমস্যার সমাধান হয়?
    উত্তর : ১ আগস্ট ২০১৫।

    প্রশ্ন :ভারত কত তারিখে ও কোন বন্দর দিয়ে ট্রানজিট চুক্তির আওতায় মেঘালয়ে পণ্য পরিবহন শুরু করে?
    উত্তর :১০ আগষ্ট ২০২২ তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে।

    প্রশ্ন : বাংলাদেশ-ভারত আন্তঃসীমান্ত নদী কয়টি?
    উত্তর : ৫৪টি।

    প্রশ্ন : বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশন (JRC) গঠিত হয় কত সালে?
    উত্তর : ১৯৭২ সালে।

    প্রশ্ন : কোন নদীর ওপর বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু নির্মিত হয়েছে?
    উত্তর : ফেনী নদী।

    প্রশ্ন : বাংলাদেশের টেরিটোরিয়াল সমুদ্রের দৈর্ঘ্য কত?
    উত্তর : ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলােমিটার।

    প্রশ্ন : বাংলাদেশ ভারতের কাছ সমুদ্রসীমা জয়লাভ করে কত তারিখে?
    উত্তর : ৭ জুলাই ২০১৪।

    প্রশ্ন : বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে কত বর্গকিলােমিটার সমুদ্র এলাকা লাভ করে?
    উত্তর : ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলােমিটার।

    প্রশ্ন : কোন আদালতের রায়ে বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলােমিটার সমুদ্র এলাকা জয়লাভ করে?
    উত্তর : নেদারল্যান্ডসের স্থায়ী সালিসি আদালত।

    প্রশ্ন : রামপালে সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাচালিত তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১ উদ্বোধন করেন কে?
    উত্তর : ভার্চুয়ালি বাংলাদেশ ও ভারতের সরকারপ্রধান।

    প্রশ্ন : কত তারিখে রামপালে সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাচালিত তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১ উদ্বোধন করা হয়?
    উত্তর : ৬ সেপ্টেম্বর ২০১২।

    প্রশ্ন : বাংলাদেশ ও ভারত রামপালে সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাচালিত তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎতের কী পরিমাণ পাবে?
    উত্তর : ৫০:৫০।

    প্রশ্ন : রামপালের সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাচালিত তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের মােট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা কত?
    উত্তর : ১হাজার ৩২০ মেগাওয়াট।

    প্রশ্ন : বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে তৃতীয় ট্রেন ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ বাণিজ্যিকভাবে চালু হয়েছে কখন?
    উত্তর : ২০২২ সালে।

    চীন-ভারত সম্পর্ক

    প্রশ্ন : চীনের অর্থনীতির আয়তন ভারতের কত গুণ?
    উত্তর : পাঁচ গুণ।

    প্রশ্ন : নাথুলা গিরিপথ কোন দুটি দেশকে যুক্ত করেছে?
    উত্তর : ভারত ও চীন।

    প্রশ্ন : ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ময়দান কোথায় ছিল?
    উত্তর : পূর্ব লাদাখ।

    প্রশ্ন : ২০২১ সালে কোন দুটি দেশ ভুটানের ডােকলাম মালভূমিতে মুখােমুখি অবস্থান নেয়?
    উত্তর : চীন ও ভারত।

    প্রশ্ন : ভুটানের ডােকলাম মালভূমিতে ভারত ও চীনা সেনার সংঘর্ষ হয় কত সালে?
    উত্তর : ২০১৭ সালে।

    প্রশ্ন : গালওয়ান উপত্যকার মালিকানা নিয়ে চীন ও ভারত কবে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়ায়?
    উত্তর : ১৫ জুন ২০২০।

    প্রশ্ন : দক্ষিণ চীন সাগরে ভারত যুদ্ধজাহাজ মােতায়েন করে কত সালে?
    উত্তর : ২০২০ সালে।

    প্রশ্ন : প্যাংগং হ্রদের উত্তর পাড়ের পূর্ব লাদাখ অঞ্চলকে কী বলে?
    উত্তর : ফিঙ্গার-ফাইভ।

    চীন-পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলাের সম্পর্ক

    প্রশ্ন : দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের ‘গ্রে জোন’ কৌশলটি মূলত কী?
    উত্তর : যুদ্ধ নয় কিন্তু যুদ্ধের মতাে কর্মকাণ্ড।

    প্রশ্ন : দক্ষিণ চীন সাগরের প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জ চীনের দখলে থাকলেও মালিকানা দাবি করে কোন দুটি দেশ?
    উত্তর : ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইন।

    প্রশ্ন : কোন দুটি দেশ প্যারাসেল দ্বীপটিকে এখনাে নিজেদের বলে দাবি করে?
    উত্তর : ভিয়েতনাম ও চীন।

    সিরিয়া ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া

    প্রশ্ন : বাশার আল-আসাদ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হন কত সালে?
    উত্তর : ২০০০ সালে।

    প্রশ্ন : ২০১০ সালে তিউনিসিয়ায় আরব বসন্তের সূচনার মধ্য দিয়ে সিরিয়াজুড়ে গণ-আন্দোলন শুরু কত তারিখে?
    উত্তর : ১৫ মার্চ ২০১১।

    প্রশ্ন : বাথ পার্টি সিরিয়া শাসন করছে কত বছর ধরে?
    উত্তর : ৪০ বছর ধরে।

    প্রশ্ন : বাশার আল-আসাদ সরকারের সমর্থনে রাশিয়া কবে সিরিয়া যুদ্ধে প্রকাশ্যে জড়িয়ে পড়ে?
    উত্তর : ২০১৫ সালে।

    প্রশ্ন : কোন দেশের গৃহযুদ্ধ স্মরণকালের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকটের জন্ম দিয়েছে?
    উত্তর : সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ।

    প্রশ্ন : সিরিয়ায় সামরিক বাহিনীর বিদ্রোহীরা ফ্রি সিরিয়ান আর্মি গঠনের ঘােষণা দেয় কত সালে?
    উত্তর : ২০১১ সালে।

    প্রশ্ন : ইসলামিক স্টেটে (আইএস) ইরাক ও সিরিয়ার একটা বড় অংশ দখল করে খেলাফত ঘােষণা করে কখন?
    উত্তর : ২০১৪ সালে।

    প্রশ্ন : তুরস্ক ফ্রি সিরিয়ান বিদ্রোহী আর্মিকে সরাসরি মদদ দেয় কখন?
    উত্তর : ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ।

    প্রশ্ন : ইসলামিক স্টেট (আইএস) সিরিয়ার পাকাপােক্তভাবে ঘাঁটি গেড়ে বসে কখন?
    উত্তর :২০১৬ সালে।

    প্রশ্ন : যুক্তরাষ্ট্র আইএসের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরােধী যুদ্ধ শুরু করে কত সালে?
    উত্তর : ২০১৪ সালে।

    প্রশ্ন : রাশিয়া কত সালে সরকারবিরােধী বিদ্রোহী ফ্রি সিরিয়ান আর্মি ও আইএসকে সন্ত্রাসী গােষ্ঠী হিসেবে অভিহিত করে?
    উত্তর : ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে।

    প্রশ্ন : আসাদবিরােধী সিরিয়ান ডেমােক্রেটিক ফোর্সের (এসডিএফ) সাহায্যের জন্য পশ্চিমারা সিরিয়ায় হামলা অব্যাহত রেখেছে কত সাল থেকে?
    উত্তর : ২০১৪ সাল থেকে।

    লেবানন, ইসরাইল ও মিসর সম্পর্ক

    প্রশ্ন : কত সালে মিসর ও ইসরায়েলের মধ্যে ঐতিহাসিক ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়?
    উত্তর : ১৯৭৮ সালে।

    প্রশ্ন :কার মধ্যস্থতায় ঐতিহাসিক ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়?
    উত্তর : প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের।

    প্রশ্ন : ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি অনুযায়ী প্রতিবছর মিসর মার্কিনদের কাছ থেকে কী পরিমাণ সাহায্য পায়?
    উত্তর : প্রায় এক বিলিয়ন ডলার।

    প্রশ্ন :ইসরায়েল কখন মিসরের সিনাই উপদ্বীপ, সিরিয়ার গােলান মালভূমি দখল করে নেয়?
    উত্তর : ১৯৬৭ সালে।

    প্রশ্ন : আব্রাহাম অ্যাকর্ডস কত তারিখে সম্পাদিত?
    উত্তর : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

    প্রশ্ন : আব্রাহাম অ্যাকর্ডস কোন দেশগুলাের মধ্য সম্পাদিত হয়?
    উত্তর : ইসরাইলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন।

    প্রশ্ন : কোন দেশটির মধ্যস্থতায় আব্রাহাম অ্যাকর্ডস সম্পাদিত হয়?
    উত্তর : যুক্তরাষ্ট্র।

    প্রশ্ন : সৌদি আরবসহ আরব | লিগের কয়টি দেশ ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়?
    উত্তর : ১৫টি দেশ।

    বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক

    প্রশ্ন : বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে থাকা করিডরটির নাম কী?
    উত্তর : শিলিগুড়ি করিডর।

    প্রশ্ন : শিলিগুড়ি করিডরটি কত কিলােমিটার লম্বা?
    উত্তর : ৬০ কিলােমিটার।

    প্রশ্ন : কোনটি ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সেভেন সিস্টার্সে যােগাযােগের একমাত্র পথ?
    উত্তর : শিলিগুড়ি করিডর।

    প্রশ্ন : ২০২০-২১ অর্থবছরে কোন দেশটি মিয়ানমারে সবচেয়ে বেশি বিনিয়ােগ করেছে?
    উত্তর : সিঙ্গাপুর।

    প্রশ্ন : ২০২২ সালে আসিয়ানের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় কোথায়?
    উত্তর : কম্বােডিয়ায়।

    প্রশ্ন : ২০২২ সালে আসিয়ান বৈঠকে কোন দেশের সরকারপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানানাে হয়নি?
    উত্তর : মিয়ানমারের জেনারেল মিন অং হ্লাইংকে।

    প্রশ্ন : কোন আঞ্চলিক জোট চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের ঠান্ডা যুদ্ধে বাফার জোনের মতাে কাজ করে?
    উত্তর : আসিয়ান জোট।

    প্রশ্ন : আসিয়ান জোট মিয়ানমারকে বাধাহীন মানবিক প্রবেশাধিকার দিতে কত দফা ঐকমত্যের অঙ্গীকার মেনে চলার জন্য জোর দেয়?
    উত্তর : পাঁচ দফা।

    প্রশ্ন : কোন আন্তর্জাতিক গ্রুপ মিয়ানমারকে অবনতিশীল দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে?
    উত্তর : ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)।

    প্রশ্ন : ভারতের সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্ত কত কিলােমিটার?
    উত্তর : ১ হাজার ৬০০ কিলােমিটার

  • স্লোভেনিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নাতাশা পিয়ার্স মুসার

    প্রথমবারের মতো নারী প্রেসিডেন্ট পেল স্লোভেনিয়া। নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট নাতাশা পিয়ার্স মুসার একজন সাংবাদিক ও আইনজীবী। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি থাকাকালে মেলানিয়া ট্রাম্পের আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন। খবর বিবিসির

    স্লোভেনিয়ার বামপন্থী সরকারের সমর্থনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন নাতাশা। রক্ষণশীল ধারার প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনজে লোগারকে তিনি নির্বাচনে পরাজিত করেন।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    নির্বাচন কমিশন বলেছে, নাতাশা পিয়ার্স মুসার ৫৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। আর লোগার পেয়েছেন মাত্র ৪৬ শতাংশ। প্রায় ২০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ভোটার ছিল ৪৯ দশমিক ৯ শতাংশ।

    নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরে নাতাশা বলেন, স্লোভেনিয়া এমন একজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছেন, যিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর আস্থা রাখেন। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে ইইউ প্রতিষ্ঠিত।

    নাতাশা আরও বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্ব কঠিন সময় পার করছে। তরুণেরা এখন দায়িত্ব নিচ্ছেন, যাতে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম, শিশুরা সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশে জীবনযাপন করতে পারে।’

    আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী থেকে আরো পড়ুন

    স্লোভেনিয়ায় প্রেসিডেন্টের ভূমিকা বেশির ভাগ সময়ই আনুষ্ঠানিক। নাতাশা সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হবেন এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষমতা পাবেন।

    মেলানিয়া ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্ট লেডি থাকাকালে তাঁর ভাবমূর্তি ও স্বার্থ রক্ষায় আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন মুসার। মেলানিয়ার জন্মও স্লোভেনিয়াতে।

    ২০১৬ সালে নাতাশা পিয়ার্স মুসার ও মেলানিয়া স্লোভেনিয়ার সুজি নামে একটি ম্যাগাজিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই ম্যাগাজিনে মডেল হওয়ার আগে মেলানিয়া কী করতেন, সে বিষয়ে ছবি ও খবর প্রকাশিত হয়। পরে আদালতের বাইরে বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়।

  • অ্যারিজোনার গভর্নর ডেমোক্রেটিক পার্টির কেটি হবস

    যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের গভর্নর পদে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কেটি হবস জয়ী হয়েছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস বলছে, রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ক্যারি লেককে পরাজিত করেছেন তিনি। খবর বিবিসির

    বিজয়ী হওয়ার পর দেওয়া এক বিবৃতিতে কেটি হবস বলেন, বিভক্তির এ সময়ে অঙ্গরাজ্যটির সব মানুষের জন্য তিনি কাজ করবেন। হবস অ্যারিজোনাবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, অ্যারিজোনার যে ভোটারেরা তাঁকে ভোট দেননি, তাঁদের জন্যও কাজ করবেন তিনি।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    ক্যারি লেক সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন পেয়েছিলেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছিলেন ২০২০ সালের নির্বাচনে ট্রাম্প জয়ী হয়েছেন। তবে তিনি এটাও বলেছিলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের আবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার দরকার নেই; কারণ, তিনি গত নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। যদিও ২০২০ সালের নির্বাচনে কারচুপি হওয়ার কোনো প্রমাণ নেই।

    আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী থেকে আরো পড়ুন

    সম্প্রতি মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫ আসন ও সিনেটের ১০০ আসনের মধ্যে ৩৫টিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোট হয় ৩৬ গভর্নর পদেও।

    মধ্যবর্তী নির্বাচনের ভোট গ্রহণের প্রায় এক সপ্তাহের মাথায় কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে। প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে রিপাবলিকানদের কমপক্ষে ২১৮টি আসনে জয়ী হতে হবে। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী দলটি বর্তমানে ২১৫টি আসনে জয়ী হয়েছে। ডেমোক্রেটরা জয়ী হয়েছে ২১১টি আসনে।

    তবে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে বাইডেন প্রশাসনের জয় নিশ্চিত হয়েছে। শুধু জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের ফল ঘোষণা বাকি আছে। এখন পর্যন্ত সিনেটে ডেমোক্রেটদের পাওয়া আসনসংখ্যা ৫০-এ দাঁড়িয়েছে। আর রিপাবলিকানরা জয় পেয়েছে ৪৯টি আসনে। জর্জিয়ায় যদি রিপাবলিকানরা জিতেও, তবে দুই দলের প্রাপ্ত আসনসংখ্যা হবে ৫০ করে। কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ৫১টি আসন। এমন অবস্থায় মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট টাইব্রেকিং (দুই দল সমসংখ্যক আসন পেলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ভোট দিয়ে একটিকে জয়যুক্ত করেন) ভোট দিতে পারবেন।