Author: admin

  • দ্বন্দ্ব সমাস

    যে সমাসে প্রতিটি সমস্যমান পদের অর্থের সমান প্রাধান্য থাকে এবং ব্যাসবাক্যে একটি সংযোজক অব্যয় (কখনো বিয়োজক) দ্বারা যুক্ত থাকে, তাকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে। যেমন: তাল ও তমাল= তাল-তমাল, দোয়াত ও কলম= দোয়াত-কলম। এখানে তাল ও তমাল এবং দোয়াত ও কলম- প্রতিটি পদেরই অর্থের প্রাধান্য সমস্ত পদে রক্ষিত হয়েছে।

    দ্বন্দ্ব সমাসে পূর্বপদ ও পরপদের সম্বন্ধ বোঝানোর জন্য ব্যাসবাক্যে এবং, ও, আর – এই অব্যয় পদগুলো ব্যবহৃত হয়।[১] যেমন: মাতা ও পিতা= মাতা-পিতা, বই ও খাতা= বই-খাতা, ন্যায় ও অন্যায়= ন্যায়-অন্যায়, সহজ ও সরল= সহজ-সরল, সত্য ও মিথ্যা= সত্য-মিথ্যা।

    প্রকারভেদ

    দ্বন্দ্ব সমাস আট প্রকার:[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
    ১। সমার্থক দ্বন্দ্ব: কাজ ও কর্ম= কাজ-কর্ম
    ২। বিপরীতার্থক দ্বন্দ্ব: দিন ও রাত= দিন-রাত
    ৩। বিকল্পর্থক দ্বন্দ্ব: হার অথবা জিৎ = হার-জিৎ
    ৪। সমাহার দ্বন্দ্ব: দুধ ও কলা= দুধ-কলা
    ৫। মিলনার্থক দ্বন্দ্ব: চাল ও ডাল= চাল-ডাল
    ৬। অলুক দ্বন্দ্ব: কাগজে ও কলমে= কাগজে-কলমে
    ৭। বহুপদী দ্বন্দ্ব: রূপ, রস, গন্ধ ও স্পর্শ= রূপ-রস-গন্ধ-স্পর্শ
    ৮। একশেষ দ্বন্দ্ব: তুমি, আমি ও সে= আমরা

    দ্বন্দ্ব সমাসের গঠন

    বিভিন্নভাবে দ্বন্দ্ব সমাস গঠিত হয়। যেমন:[১]

    ১. মিলনার্থক শব্দযোগে:মা-বাপ, মাসি-পিসি, জ্বিন-পরি, চা-বিস্কুট
    ২. বিরোধার্থক শব্দযোগে:দা-কুমড়া, অহি-নকুল, স্বর্গ-নরক ইত্যাদি
    ৩. বিপরীতার্থক শব্দযোগে:আয়-ব্যয়, জমা-খরচ, ছোট-বড়, ছেলে-বুড়ো, লাভ-লোকসান
    ৪. অঙ্গবাচক শব্দযোগে:হাত-পা, নাক-কান, বুক-পিঠ, মাথা-মুণ্ডু, নাক-মুখ
    ৫. সংখ্যাবাচক শব্দযোগে:সাত-পাঁচ, নয়-ছয়, সাত-সতের, উনিশ-বিশ
    ৬. সমার্থক শব্দযোগে:হাট-বাজার, ঘর-দুয়ার, কল-কারখানা, মোল্লা-মৌলভি, খাতা-পত্র
    ৭. প্রায় সমার্থক ও সহচর শব্দযোগে:কাপড়-চোপড়, পোকা-মাকড়, দয়া-মায়া, ধূতি-চাদর
    ৮. দুটি সর্বনামযোগে:যা-তা, যে-সে, যথা-তথা, তুমি-আমি, এখানে-সেখানে
    ৯. দুটি ক্রিয়াযোগে:দেখা-শোনা, যাওয়া-আসা, চলা-ফেরা, দেওয়া-নেওয়া
    ১০. দুটি ক্রিয়াবিশেষণযোগে:ধীরে-সুস্থে, আগে-পিছে, আকারে-ইঙ্গিতে
    ১১. দুটি বিশেষণযোগে:ভালো-মন্দ, কম-বেশি, আসল-নকল, বাকি-বকেয়া

    বিশেষ দ্বন্দ্ব সমাস

    অলুক দ্বন্দ্ব

    মূল নিবন্ধ: সমাস § অলুক সমাস

    যে দ্বন্দ্ব সমাসে কোনো সমস্যমান পদের বিভক্তি লোপ পায় না, তাকে অলুক দ্বন্দ্ব বলে। যেমন: দুধে-ভাতে, জলে-স্থলে, দেশে-বিদেশে, হাতে-কলমে।

    বহুপদী দ্বন্দ্ব

    তিন বা বহু পদে দ্বন্দ্ব সমাস হলে তাকে বহুপদী দ্বন্দ্ব সমাস বলে। যেমন: সাহেব-বিবি-গোলাম, হাত-পা-নাক-মুখ-চোখ।

    আরো দেখুন

  • তৎপুরুষ সমাস

    পূর্বপদের বিভক্তির লোপে যে সমাস হয় এবং যে সমাসে পরপদের অর্থ প্রধানভাবে বোঝায় তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে।[১] তৎপুরুষ সমাসের পূর্বপদে দ্বিতীয়া থেকে সপ্তমী পর্যন্ত যে কোনো বিভক্তি থাকতে পারে এবং পূর্বপদের বিভক্তি অনুসারে এদের নামকরণ করা হয়। যেমন: বিপদকে আপন্ন= বিপদাপন্ন। এখানে দ্বিতীয়া বিভক্তি ‘কে’ লোপ পেয়েছে বলে এর নাম দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাস। এছাড়া তৎপুরুষ সমাসের অন্যান্য উদাহরণ হলো: লুচিকে ভাজা= লুচি-ভাজা, ছেলেকে ভোলানো= ছেলে-ভোলানো, লোককে দেখানো= লোক দেখানো, ট্রেনের দ্বারা ভ্রমণ= ট্রেনভ্রমণ, বজ্রের দ্বারা হত= বজ্রাহত ইত্যাদি।

    প্রকারভেদ

    তৎপুরুষ সমাস নয় প্রকার। যথা:

    দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাস

    পূর্বপদের দ্বিতীয়া বিভক্তি (কে, রে, এরে) ইত্যাদি লোপ হয়ে যে সমাস হয়, তাকে দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাস বা কর্ম তৎপুরুষ বলে। যথা: দুঃখকে প্রাপ্ত= দুঃখপ্রাপ্ত, বিপদকে আপন্ন= বিপদাপন্ন, পরলোকে গত= পরলোকগত,পুঁথিতে গত= পুঁথিগত। ব্যাপ্তি অর্থেও দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাস হয়। যেমন: চিরকাল ব্যাপিয়া সুখী= চিরসুখী।

    এরূপ- গাকে ঢাকা=গা-ঢাকা, রথকে দেখা=রথদেখা, বীজকে বোনা= বীজবোনা, ভাতরাঁধা, ছেলে-ভুলানো (ছড়া), নভেল-পড়া ইত্যাদি।

    তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস

    পূর্বপদে তৃতীয়া বিভক্তির (দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক ইত্যাদি) লোপে যে সমাস হয়, তাকে তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন: মন দিয়ে গড়া= মন গড়া, শ্রম দ্বারা লব্ধ= শ্রমলব্ধ, মধু দিয়ে মাখা= মধুমাখা।

    ঊন, হীন, শূন্য প্রভৃতি শব্দ উত্তরপদ হলেও তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস হয়। যেমন: এক দ্বারা ঊন= একোন, বিদ্যা দ্বারা হীন= বিদ্যাহীন, জ্ঞান দ্বারা শূন্য= জ্ঞানশূন্য, পাঁচ দ্বারা কম= পাঁচ কম।

    উপকরণব্যাক বিশেষ্য পদ পূর্বপদে বসলেও তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস হয়। যেমন: স্বর্ণ দ্বারা মণ্ডিত= স্বর্ণমণ্ডিত। এরূপ- হীরকখচিত, চন্দনচর্চিত, রত্নশোভিত ইত্যাদি।

    চতুর্থী তৎপুরুষ সমাস

    পূর্বপদে চতুর্থী বিভক্তি (কে, জন্য, নিমিত্ত ইত্যাদি) লোপে যে সমাস হয়, তাকে চতুর্থী তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন: গুরুকে ভক্তি= গুরুভক্তি, আরামের জন্য কেদারা= আরামকেদারা, বসতের নিমিত্ত বাড়ি= বসতবাড়ি, বিয়ের জন্য পাগলা= বিয়েপাগলা ইত্যাদি। এরূপ- ছাত্রাবাস, ডাকমাশুল, চোষকাগজ, শিশুমঙ্গল, মুসাফিরখানা, হজযাত্রা, মালগুদাম, রান্নাঘর, মাপকাঠি, বালিকা-বিদ্যালয়, পাগলাগারদ ইত্যাদি।

    পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস

    পূর্বপদে পঞ্চমী বিভক্তি (হতে, থেকে ইত্যাদি) লোপে যে তৎপুরুষ সমাস হয়, তাকে পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন: খাঁচা থেকে ছাড়া= খাঁচাছাড়া, বিলাত থেকে ফেরত= বিলাতফেরত ইত্যাদি

    সাধারণত চ্যুত, আগত, ভীত, গৃহীত, বিরত, মুক্ত, উত্তীর্ণ, পালানো, ভ্রষ্ট ইত্যাদি পরপদের সঙ্গে যুক্ত হলে পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস হয়। যেমন: স্কুল থেকে পালানো= স্কুলপালানো, জেল থেকে মুক্ত= জেলমুক্ত ইত্যাদি। এরকম- জেলখালাস, বোঁটাখসা, আগাগোড়া, শাপমুক্ত, ঋণমুক্ত ইত্যাদি।

    কোনো কোনো সময় পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাসের ব্যাসবাক্যে ‘এর’, ‘চেয়ে’ ইত্যাদি অনুসর্গের ব্যবহার হয়। যেমন: পরাণের চেয়ে প্রিয়= পরাণপ্রিয়।

    ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস

    পূর্বপদে ষষ্ঠী বিভক্তির (র, এর) লোপ হয়ে যে সমাস হয়, তাকে ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন: চায়ের বাগান= চাবাগান, রাজার পুত্র= রাজপুত্র, খেয়ার ঘাট= খেয়াঘাট। এরূপ- ছাত্রসমাজ, দেশসেবা, দিল্লীশ্বর, বাঁদরনাচ, পাটক্ষেত, ছবিঘর, ঘোড়দৌড়, শ্বশুড়বাড়ি, বিড়ালছানা ইত্যাদি।

    ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাসে ‘রাজা’ স্থলে ‘রাজ’ এবং ‘পিতা’, ‘মাতা’, ‘ভ্রাতা’ স্থলে ‘পিতৃ’, ‘মাতৃ’, ‘ভ্রাতৃ’ হয়। যেমন: গজনীর রাজা= গজনীরাজ, রাজার পুত্র= রাজপুত্র, পিতার ধন= পিতৃধন, মাতার সেবা= মাতৃসেবা, ভ্রাতার স্নেহ= ভ্রাতৃস্নেহ, পুত্রের বধূ= পুত্রবধূ ইত্যাদি।

    পরপদে সহ, তুল্য, নিভ, প্রায়, প্রতিম- এসব শব্দ থাকলেও ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস হয়। যেমন: পত্নীর সহ= পত্নীসহ, কন্যার সহ= কন্যাসহ, সহোদরের প্রতিম= সহোদরপ্রতিম/ সোদরপ্রতিম ইত্যাদি।

    কালের কোনো অংশবাচক শব্দ পরে থাকলে তা পূর্বে বসে। যেমন: অহ্নের (দিনের) পূর্বভাগ= পূর্বাহ্ন।

    পরপদে রাজি, গ্রাম, বৃন্দ, গণ, যূথ প্রভৃতি সমষ্টিবাচক শব্দ থাকলে ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস হয়। যেমন: ছাত্রের বৃন্দ= ছাত্রবৃন্দ, গুণের গ্রাম= গুণগ্রাম, হস্তীর যূথ= হস্তীযূথ ইত্যাদি।

    ‘অর্ধ’ শব্দ পরপদ হলে সমস্তপদে তা পূর্বপদ হয়। যেমন: পথের অর্ধ= অর্ধপথ, দিনের অর্ধ= অর্ধদিন।

    শিশু, দুগ্ধ ইত্যাদি শব্দ পরে থাকলে স্ত্রীবাচক পূর্বপদ পুরুষবাচক হয়। যেমন: মৃগীর শিশু= মৃগশিশু, ছাগীর দুগ্ধ= ছাগদুগ্ধ ইত্যাদি।

    ব্যাসবাক্যে ‘রাজা’ শব্দ পরে থাকলে সমস্তপদে তা আগে বসে। যেমন: পথের রাজা= রাজপথ, হাঁসের রাজা= রাজহাঁস।

    • অলুক ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস

    ঘোড়ার ডিম, মাটির মানুষ, হাতের পাঁচ, মামার বাড়ি, সাপের পা, মনের মানুষ, কলের গান ইত্যাদি। কিন্তু ভ্রাতার পুত্র= ভ্রাতুষ্পুত্র (নিপাতনে সিদ্ধ)।

    সপ্তমী তৎপুরুষ সমাস

    পূর্বপদে সপ্তমী বিভক্তি (এ, য়, তে) লোপ হয়ে যে সমাস হয়, তাকে সপ্তমী তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন: গাছে পাকা= গাছপাকা, দিবায় নিদ্রা= দিবানিদ্রা। এরূপ- বাকপটু, গোলাভরা, তালকানা, অকালমৃত্যু, বিশ্ববিখ্যাত, ভোজনপটু, দানবীর, বাক্সবন্দী, বস্তাপচা, রাতকানা, মনমরা ইত্যাদি।

    সপ্তমী তৎপুরুষ সমাসে কোনো কোনো সময় ব্যাসবাক্যে পরপদ সমস্তপদের পূর্বে আসে। যেমন: পূর্বে ভূত= ভূতপূর্ব, পূর্বে অশ্রুত= অশ্রুতপূর্ব, পূর্বে অদৃষ্ট= অদৃষ্টপূর্ব।

    নঞ্ তৎপুরুষ সমাস

    না বাচক নঞ্ অব্যয় (না, নেই, নাই, নয়) পূর্বে বসে যে তৎপুরুষ সমাস হয়, তাকে নঞ্ তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন: না আচার= অনাচার, না কাতর= অকাতর। এরূপ- অনাদর, নাতিদীর্ঘ, নাতিখর্ব, অভাব, বেতাল ইত্যাদি।

    খাঁটি বাংলায় অ, আ, না কিংবা অনা হয়। যেমন: না কাল= অকাল বা আকাল। এরূপ- আধোয়া, নামঞ্জুর, অকেজো, অজানা, অচেনা, আলুনি, নাছোড়, অনাবাদী, নাবালক ইত্যাদি।

    না- বাচক অর্থ ছাড়াও বিশেষ বিশেষ অর্থে নঞ্ তৎপুরুষ সমাস হতে পারে। যেমন: না/নয় বিশ্বাস= অবিশ্বাস (বিশ্বাসের অভাব), না/নয় লৌকিক= অলৌকিক (ভিন্নতা), না/নয় কেশা= অকেশা (অল্পতা), না/নয় সুর= অসুর (বিরোধ), না/নয় কাল= অকাল (অপ্রশস্ত), না/নয় ঘাট= অঘাট (মন্দ)। এরূপ- অমানুষ, অসঙ্গত, অভদ্র, অনন্য, অগম্য ইত্যাদি।

    উপপদ তৎপুরুষ সমাস

    যে পদের পরবর্তী ক্রিয়ামূলের সঙ্গে কৃৎ প্রত্যয় যুক্ত হয়, সে পদকে উপপদ বলে।[১] কৃদন্ত পদের সাথে উপপদের যে সমাস হয়, তাকে উপপদ তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন: জলে চরে যা= জলচর, জল দেয় যা= জলদ, পঙ্কে জন্মে যা= পঙ্কজ ইত্যাদি। এরূপ- গৃহস্থ, সত্যবাদী, ইন্দ্রজিৎ, ছেলেধরা, ধামাধরা, পকেটমার, পাতাচাটা, হাড়ভাঙ্গা, মাছিমারা, ছারপোকা, ঘরপোড়া, বর্ণচোরা, গলাকাটা, পা-চাটা, পাড়াবেড়ানি, ছা-পোষা , কলাধর, ঘুসখোর ইত্যাদি।

    অলুক তৎপুরুষ সমাস

    যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদের দ্বিতীয়াদি বিভক্তি লোপ পায় না, তাকে অলুক তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন: গায়ে পড়া, ঘিয়ে ভাজা, কলে ছাঁটা, কলের গান, গরুর গাড়ি ইত্যাদি।

    তবে গায়ে-হলুদ, হাতেখড়ি ইত্যাদি সমস্তপদে পরপদের অর্থ প্রধান রূপে প্রতীয়মান হয় না অর্থাৎ হলুদ বা খড়িকে বোঝায় না, অনুষ্ঠান বিশেষকে বোঝায়। সুতরাং এগুলো অলুক তৎপুরুষ নয়, অলুক বহুব্রীহি সমাস

    আরো দেখুন

  • কর্মধারয় সমাস

    যে সমাসে বিশেষণ বা বিশেষণভাবাপন্ন পদের সাথে বিশেষ্য বা বিশেষ্যভাবাপন্ন পদের সমাস হয় এবং পরপদের অর্থই প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয়, তাকে কর্মধারয় সমাস বলে।[১] যেমন: নীল যে পদ্ম= নীলপদ্ম, শান্ত অথচ শিষ্ট= শান্তশিষ্ট, কাঁচা অথচ মিঠা= কাঁচামিঠা, খাস যে মহল= খাসমহল, হেড যে মাস্টার= হেডমাস্টার, রক্ত যে চন্দন= রক্তচন্দন, যিনি গিন্নি তিনি মা= গিন্নিমা।

    অনেক ব্যাকরণবিদ কর্মধারয় সমাসকে তৎপুরুষ সমাসের অন্তর্ভুক্ত বলে মনে করেন।

    প্রকারভেদ

    কর্মধারয় সমাস কয়েক প্রকার হতে পারে।[১] যেমন:

    মধ্যপদলোপী কর্মধারয়

    যে কর্মধারয় সমাসে ব্যাসবাক্যের মধ্যপদের লোপ হয়, তাকে মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস বলে। যেমন: সিংহ চিহ্নিত আসন= সিংহাসন, সাহিত্য বিষয়ক সভা= সাহিত্যসভা, স্মৃতি রক্ষার্থে সৌধ= স্মৃতিসৌধ, ব্রাহ্মণ ধর্মীয় প্রধান পুরোহিত= ব্রাহ্মণ পুরোহিত, জগতের রক্ষাকারী ঈশ্বর= জগদীশ্বর, সূর্য উদয়কালীন মন্ত্র= সূর্যমন্ত্র, মৌ ভর্তি চাক= মৌচাক, গাছকদম= গাছে ফুটিত কদম, সন্ধিগীত= সন্ধি যোগঘটানো গীত, কাঁচকলা= কাঁচা অবস্থায় কলা, চিকিৎসাশাস্ত্র‌‌= চিকিৎসা বিষয়ক শাস্ত্র, ঘরজামাই= ঘর আশ্ৰিত জামাই, পল মিশ্রিত অন্ন= পলান্ন, হাসি মাখা মুখ= হাসিমুখ, বৌ পরিবেশন করা ভাত= বউভাত, মৌ সংগ্রহকারী মাছি= মৌমাছি, গাড়ি রাখার জন্য বারান্দা= গাড়িবারান্দা, মোম নির্মিত বাতি= মোমবাতি।

    উপমান কর্মধারয়

    সাধারণ ধর্মবাচক পদের সাথে উপমান পদের যে সমাস হয় তাকে উপমান কর্মধারয় সমাস বলে।[১] যেমন: ভ্রমরের ন্যায় কৃষ্ণ কেশ= ভ্রমরকৃষ্ণকেশ। এখানে ‘ভ্রমর’ উপমান ও ‘কেশ’ উপমেয় এবং ‘কৃষ্ণত্ব’ সাধারণ ধর্ম। (উপমান অর্থ তুলনীয় বস্তু। প্রত্যক্ষ কোনো বস্তুর সাথে পরোক্ষ কোনো বস্তুর তুলনা করলে প্রত্যক্ষ বস্তুটিকে বলা হয় উপমেয়, এবং যার সাথে তুলনা করা হয়েছে তাকে বলা হয় উপমান।[১])

    এরূপ- তুষারের ন্যায় শুভ্র= তুষারশুভ্র, অরুণের ন্যায় রাঙা= অরুণরাঙা, রক্তের ন্যায় লাল= রক্তলাল, চন্দনের মতো স্নিগ্ধ= চন্দনস্নিগ্ধ।

    উপমান কর্মধারয় সমাসে বিশেষ্য পদের সাথে বিশেষণের সমাস হয়। যেমন: “তুষার” হচ্ছে বিশেষ্য এবং “শুভ্র” হচ্ছে বিশেষণ। যদি দুটোই বিশেষ্য হয়ে যায়, তবে সেটি উপমিত কর্মধারয় সমাস হয়।

    উপমিত কর্মধারয়

    সাধারণ গুণের উল্লেখ না করে উপমেয় পদের সাথে উপমান পদের যে সমাস হয়, তাকে উপমিত কর্মধারয় সমাস বলে। এক্ষেত্রে সাধারণ গুণটি ব্যাসবাক্য বা সমস্তপদে থাকে না, বরং অনুমান করে নেওয়া হয়। এ সমাসে উপমেয় পদটি পূর্বে বসে। যেমন: মুখ চন্দ্রের ন্যায়= চন্দ্রমুখ, পুরুষ সিংহের ন্যায়= সিংহপুরুষ।

    রূপক কর্মধারয়

    উপমান ও উপমেয়ের মধ্যে অভিন্নতা কল্পনা করা হলে রূপক কর্মধারয় সমাস হয়।[১] এ সমাসে উপমেয় পদ পূর্বে বসে ও উপমান পদ পরে বসে এবং সমস্যমান পদে ‘রূপ’ অথবা ‘ই’ যোগ করে ব্যাসবাক্য গঠন করা হয়। যেমন: ক্রোধ রূপ অনল= ক্রোধানল, বিষাদ রূপ সিন্ধু= বিষাদসিন্ধু, মন রূপ মাঝি= মনমাঝি।

    অন্যান্য কর্মধারয় সমাস

    কখনো কখনো সর্বনাম, সংখ্যাবাচক শব্দ এবং উপসর্গ আগে বসে পরপদের সাথে কর্মধারয় সমাস গঠন করতে পারে। যেমন: কুকর্ম, যথাযোগ্য (অব্যয়), সেকাল, একাল (সর্বনাম), একজন, দোতলা (সংখ্যাবাচক শব্দ), বিকাল, সকাল, বিদেশ, বেসুর (উপসর্গ)।

    কর্মধারয় সমাসের নিয়ম

    • দুটি বিশেষণ পদে একটি বিশেষ্যকে বোঝালে কর্মধারয় সমাস হয়। যেমন: যে চালাক সেই চতুর= চালাক-চতুর।
    • দুটি বিশেষ্য পদে একই ব্যক্তি বা বস্তুকে বোঝালে কর্মধারয় সমাস হয়। যেমন: যিনি জজ তিনিই সাহেব= জজসাহেব।
    • কার্যে পরম্পরা বোঝাতে দুইটি কৃদন্ত বিশেষণ পদেও কর্মধারয় সমাস হয়। যেমন: আগে ধোয়া পরে মোছা= ধোয়ামোছা।
    • পূর্বপদে স্ত্রীবাচক বিশেষণ থাকলে কর্মধারয় সমাসে সেটি পুরুষবাচক হয়। যেমন: সুন্দরী যে লতা= সুন্দরলতা, মহতী যে কীর্তি= মহাকীর্তি।
    • বিশেষণবাচক মহান বা মহৎ শব্দ পূর্বপদ হলে, ‘মহৎ’ ও ‘মহান’ স্থলে ‘মহা’ হয়। যেমন: মহৎ যে জ্ঞান= মহাজ্ঞান, মহান যে নবি= মহানবি।
    • পূর্বপদে ‘কু’ বিশেষণ থাকলে এবং পরপদে প্রথমে স্বরধ্বনি থাকলে ‘কু’ স্থানে ‘কৎ’ হয়। যেমন: কু যে অর্থ= কদর্থ, কু যে আচার= কদাচার।
    • পরপদে ‘রাজা’ শব্দ থাকলে কর্মধারয় সমাসে ‘রাজ’ হয়। যেমন: মহান যে রাজা= মহারাজ।
    • বিশেষণ ও বিশেষ্য পদে কর্মধারয় সমাস হলে কখনো কখনো বিশেষণ পরে আসে, বিশেষ্য আগে যায়। যেমন: সিদ্ধ যে আলু= আলুসিদ্ধ, অধম যে নর= নরাধম।

    আরো দেখুন

  • অব্যয়ীভাব সমাস

    পূর্বপদে অব্যয়যোগে নিষ্পন্ন সমাসে যদি অব্যয়েরই অর্থের প্রাধান্য থাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলে।[১] অব্যয়ীভাব সমাসে কেবল অব্যয়ের অর্থযোগে ব্যাসবাক্যটি রচিত হয়। যেমন: জানু পর্যন্ত লম্বিত (‘পর্যন্ত’ শব্দের অব্যয় ‘আ’)= আজানুলম্বিত (বাহু), মরণ পর্যন্ত= আমরণ।

    বিভিন্ন অর্থে অব্যয়ীভাব সমাস

    সামীপ্য (নৈকট্য), বিপ্সা (পৌনঃপুনিকতা), পর্যন্ত, অভাব, অনতিক্রম্য, সাদৃশ্য, সম্পর্ক, সংস্পর্শ,ঊর্ধ্ব, সম্মান প্রভৃতি নানা অর্থে উপসর্গ তৎপুরুষ বা অব্যয়ীভাব সমাস হয়। যেমন:

    ১.সামীপ্য (উপ)কণ্ঠের সমীপে= উপকণ্ঠ, কূলের সমীপে= উপকূল
    ২.বিপ্সা (অনু, প্রতি)দিন দিন= প্রতিদিন, ক্ষণে ক্ষণে= অনুক্ষণে, ক্ষণ ক্ষণ= অনুক্ষণ
    ৩.অভাব (নিঃ= নির)আমিষের অভাব= নিরামিষ, ভাবনার অভাব= নির্ভাবনা, জলের অভাব= নির্জল, উৎসাহের অভাব= নিরুৎসাহ
    ৪.পর্যন্ত (আ)সমুদ্র থেকে হিমাচল পর্যন্ত= আসমুদ্রহিমাচল, পা থেকে মাথা পর্যন্ত= আপাদমস্তক
    ৫.সাদৃশ্য (উপ)শহরের সদৃশ= উপশহর, গ্রহের তুল্য= উপগ্রহ, বনের সদৃশ= উপবন
    ৬.অনতিক্রম্যতা (যথা)রীতিকে অতিক্রম না করে= যথারীতি, সাধ্যকে অতিক্রম না করে= যথাসাধ্য। এরূপ- যথাবিধি, যথাযোগ্য
    ৭.অতিক্রান্ত (উৎ)বেলাকে অতিক্রান্ত= উদ্বেল, শৃঙখলাকে অতিক্রান্ত= উচ্ছৃঙখল
    ৮.বিরোধ (প্রতি)বিরুদ্ধ বাদ= প্রতিবাদ, বিরুদ্ধ কূল= প্রতিকূল
    ৯.পশ্চাৎ (অনু)পশ্চাৎ গমন= অনুগমন, পশ্চাৎ ধাবন= অনুধাবন
    ১০.ঈষৎ (আ)ঈষৎ নত= আনত, ঈষৎ রক্তিম= আরক্তিম
    ১১.ক্ষুদ্র অর্থে (উপ)উপগ্রহ, উপনদী
    ১২.পূর্ণ বা সমগ্র অর্থে (পরি বা সম)পরিপূর্ণ, সম্পূর্ণ
    ১৩.দূরবর্তী অর্থে (প্র, পর)অক্ষির অগোচরে= পরোক্ষ। এরূপ- প্রপিতামহ
    ১৪.প্রতিনিধি অর্থে (প্রতি)প্রতিচ্ছায়া, প্রতিচ্ছবি, প্রতিবিম্ব
    ১৫.প্রতিদ্বন্দ্বী অর্থে (প্রতি)প্রতিপক্ষ, প্রত্যুত্তর
    ১৬.সম্পর্ক অর্থে (সম, বিষয়)সম্বল = বলের সম্পর্কে, সম্মান= মানের সম্পর্কে, সমক্ষে= অক্ষের সম্পর্কে
    ১৭.যোগ্যতা অর্থে (অনু)অনুসন্তান= যোগ্য সন্তান, অনুকূল= কুলের যোগ্য, অনুদান= দানের যোগ্য

    আরো দেখুন

  • যুক্তাক্ষর

    যুক্তাক্ষর বা যুক্তবর্ণ হলো দুটি ব্যঞ্জনবর্ণকে একসাথে যুক্ত করা ।[১]তবে উচ্চারণের সময় প্রথম ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে স্বরধ্বনি উচ্চারিত হয় না। অর্থাৎ‍ দুটি বর্ণের প্রথমটিতে যদি হসন্ত থাকে তবে বানানের সময় উভয়কে একত্রে লেখা হলে প্রাপ্ত বর্ণটিই যুক্তবর্ণ বা যুক্তাক্ষর।[২]বাংলা শব্দে দ্বিত্ব প্রয়োগের জন্যও অনেক সময় যুক্তাক্ষর ব্যবহার করা হয়। ব্রাহ্মীলিপির মতো দেবনাগরীলিপি ব্যবহারে লিখিত ভাষাগুলোতেও একটি বর্ণ অন্য একটি বর্ণের সঙ্গে যুক্ত করে লেখা হয়।

    ধারণা

    দুটি ব্যঞ্জনবর্ণ একসাথে বাংলা ছাড়াও অনেক ভাষাতেই উচ্চারিত হয়।যেমন: ইংরেজি “list”(ল্+ই+স্+ট্), জার্মান “Gras”(গ্+র্+আ+স্) বা গ্রিক “εκλογές”(এ+ক্+ল্+ও+গ্+এ+স্)। কিন্তু বাংলা ও অন্যান্য ভারতীয় ভাষাগুলোর সাথে এর মৌলিক পার্থক্য হলো বাংলা ও অন্যান্য ভারতীয় ভাষাগুলোতে তা একসাথে যেমন উচ্চারণ করা হয় তেমন লেখাও হয় একসাথে। কিন্তু উপর্যুক্ত ভাষাগুলোতে উচ্চারণ একসাথে করলেও এক বর্ণকে অন্য বর্ণের সঙ্গে “ক্ল” এর মতো মিলিয়ে লেখা হয় না। পাণিনি প্রমুখ ধ্বনিবিদ ব্যঞ্জনধ্বনির এমন স্বরবিহীন অসম্পূর্ণ উচ্চারণকে “অভিনিধান” নামে আখ্যায়িত করেছেন।[৩][৪]

    বাংলা ভাষায় কোনো শব্দের কোনো বর্ণে অবস্থিত স্বরবর্ণকে অনুচ্চারিত দেখাতে ্ (হসন্ত) ব্যবহৃত হয়।আর দুটি ব্যঞ্জনধ্বনির প্রথমটির সঙ্গে কোনোরূপ স্বরধ্বনি উচ্চারণ না করে দুটি ব্যঞ্জনকে একসাথে উচ্চারণের প্রয়াস থেকেই যুক্তাক্ষর বা যুক্তবর্ণ লেখা হয়। যেমন:গল্প (গ্+অ+ল্+প্+ও) এখানে “ল্প” হলো যুক্তবর্ণ যেখানে “ল” এর পরে কোনোরূপ স্বরধ্বনি উচ্চারণ না করে “প” এর সঙ্গে মিলিয়ে উচ্চারণ করা হয়। “গ” এর সঙ্গে “অ” স্বর ও “প” এর সঙ্গে “ও” স্বর উচ্চারিত হলেও “ল” ও “প” এর মাঝে কোনো স্বরধ্বনি ছিল না।

    প্রকারভেদ

    ধারণা করা হয় ফলাও এক প্রকার যুক্তাক্ষর।সুতরাং যুক্তাক্ষর দুই প্রকারঃসাধারণ ও ফলা

    ফলা

    বাংলা ভাষায় ৬টিঃ

    নামউদাহরণ
    ব-ফলাশ্ব
    ম-ফলাশ্ম
    র-ফলাশ্র
    ন-ফলাশ্ন
    য-ফলাশ্য
    ল-ফলাশ্ল

    যুক্তাক্ষরের রূপভেদ

    বাংলা যুক্তাক্ষরের স্বচ্ছ-অর্ধস্বচ্ছ-অনচ্ছ রূপ

    বাংলা যুক্তাক্ষরে ব্যঞ্জনের রূপ অনেক সময় পাল্টে যায় বা স্বাভাবিক বর্ণের চেয়ে আকৃতি ভিন্ন হয়। কতটা ভেদ বা ভিন্নতা ঘটবে সেই অনুসারে স্বচ্ছ, অর্ধস্বচ্ছঅনচ্ছ এই তিনটি পরিভাষা ব্যবহৃত হয়। [৫]

    অনচ্ছ

    অনচ্ছ হলো যে যুক্তাক্ষর থেকে মূল ব্যঞ্জনবর্ণকে আদৌ চেনা যায় না। যেমন: রেফ, র-ফলা ( ‌্র ), য-ফলা ( ‍্য )। এগুলি যে র আর য এর অপর রূপ তা সহজে বোঝা যায় না । বাংলা যুক্তব্যঞ্জনে ঙ্গ এবং ক্ষ-ও অনচ্ছ যুক্তব্যঞ্জনের দৃষ্টান্ত— যার দুটি সদস্য কোন কোন বর্ণ তা বোঝা কঠিন।

    অর্ধস্বচ্ছ

    অর্ধস্বচ্ছ হলো সেই সব যুক্তব্যঞ্জন যার একটিতে অন্তত বোধগম্য অবয়ব থাকে, বা তার অংশ বা খণ্ড উপস্থিত থাকে। যেমন: প্র, র্ক, ক্ত, ন্ধ, গ্ধ ইত্যাদি।

    স্বচ্ছ

    স্বচ্ছ হলো যেগুলির দুটোকেই স্পষ্ট চেনা যায়। যেমন: ক্ক, ল্ল, হ্ব, দ্ভ।

    বর্তমানে বাংলা একাডেমির প্রস্তাবনা অনুযায়ী যুক্তব্যঞ্জনগুলিকে যথাসম্ভব স্বচ্ছ করার কথা বলা হয়েছে। [৫] তবে এক্ষেত্রে অসুবিধার কারণ হলো পুরাতন সাহিত্যকর্ম বা গ্রন্থগুলো নতুনভাবে বর্ণ চেনা বাঙালিগণ পড়তে পারবেন না এবং অনেক যুক্তবর্ণই চিনতে পারবেন না।[৬] সব পুরাতন গ্রন্থ নতুন বর্ণে ছেপে ফেলা দুরূহ। তবে স্বচ্ছ ধরণের নতুন যুক্তবর্ণ ও প্রচলিত পুরাতন যুক্তবর্ণ কিছুদিন পাশাপাশি শেখানোর কথাও প্রস্তাব করা হয়ে থাকে। [৭]

    টীকা

    • ^১ বাংলা শব্দে অনেক সময় কোনো বর্ণের নিচে চিহ্ন থাকে।একেই বলা হয় হসন্ত।যেমনঃ”প্” প-হসন্ত

    অর্থাৎ‍ এর নিচে হসন্ত

  • ক্ষ

    ক্ষ
    ব্যবহার
    লিখনপদ্ধতিবাংলা লিপি
    ধরনযুক্তবর্ণ
    উৎপত্তির ভাষাবাংলা, অসমীয়া
    ইতিহাস
    ক্রমবিকাশক্ষ
    অন্যান্য

    ক্ষ (উচ্চারণ: খিয়ো) একটি বাংলা যুক্তবর্ণ। বাংলা অক্ষর ‘ক’ ও ‘ষ’ পরপর যুক্ত করলে ‘ক্ষ’ তৈরি হয়। যুক্তবর্ণটিকে একসময় মূল বাংলা বর্ণমালার তালিকায় রাখা হলেও বর্তমানে রাখা হয় না। ভারতীয় উপমহাদেশের অধিকাংশ ভাষায় এর সমতুল্য যুক্তবর্ণের অস্তিত্ব আছে। বর্ণটির শব্দে প্রয়োগের স্থানভেদে ভিন্ন ভিন্ন উচ্চারণ হয়। ক্ষ ব্যতীত বাংলা ভাষার আর কোনো যুক্তবর্ণকে কোনো বিশেষ নামে ডাকা হয় না। এটি একটি অনচ্ছ যুক্তব্যঞ্জন, অর্থাৎ একে দেখে এর গঠনকারী বর্ণসমূহকে (‘ক’ এবং ‘ষ’) শনাক্ত করা যায় না।

    ‘ক্ষ’ এর উচ্চারণ

    ‘ক্ষ’-এর উচ্চারণ দু-রকম হয়ে থাকে।
    ১. শব্দের শুরুতে থাকলে এর উচ্চারণ হবে ‘খ’-এর মতো।
    যেমন: ক্ষমা। এখানে ‘ক্ষ’ শব্দের শুরুতে বসেছে। তাই এখানে এর উচ্চারণ হবে ‘খ’-এর মতো। সুতরাং এর উচ্চারণ হবে ‘খমা’।

    ২. শব্দের মধ্যে বা শেষে থাকলে উচ্চারণ হবে ‘ক্ + খ’-এর মতো।
    যেমন: রক্ষা। এখানে ‘ক্ষ’ আছে শব্দের শেষে। তাই এখানে এর উচ্চারণ হবে ‘ক্ + খ’-এর মতো।
    এখন, এ শব্দটিতে ‘ক্ষ’ স্থানে ‘ক্ + খ’ বসালে দাঁড়ায় ‘র ক্+খা (ক্ষা)’। সুতরাং এ শব্দটির উচ্চারণ হবে ‘রোক্ খা’।

    আরও উদাহরণ:
    ক্ষয় (খয়্), ক্ষতি (খোতি), ক্ষেত্র (খেত্ ত্রো), পক্ষ (পোক্ খো), যক্ষ্মা (জক্ খাঁ), লক্ষ্মণ (লক্ খোঁন্), লক্ষ্মী (লোক্ খিঁ)।
    ব্যতিক্রম: তীক্ষ্ণ। এর উচ্চারণ ‘তিখ্ নো’ (‘তিক্ খোঁ’ নয়)।[১]

    ক্ষ-এর প্রয়োগ

    স্বরবর্ণের সাথে যুক্ত হলে

    স্বরবৰ্ণ‘ক্ষ’র সাথে যুক্ত হলে
    ক্ষ
    ক্ষা
    ক্ষি
    ক্ষী
    ক্ষু
    ক্ষূ
    ক্ষৃ
    ক্ষে
    ক্ষৈ
    ক্ষো
    ক্ষৌ

    যুক্তবৰ্ণ (ক্ষ যুক্ত)

    • ক + ষ + ম = ক্ষ্ম
    • ক + ষ + য = ক্ষ্য, ক্ষুধার্ত
    • ক্ষত্রিয়, অক্ষত

    ‘ক্ষ’ দিয়ে আরম্ভ শব্দ

    • ক্ষমা
    • ক্ষতি
    • ক্ষত্রিয়
    • ক্ষুধা
    • ক্ষণ ইত্যাদি
  • সম্প্রদান কারক

    সংস্কৃত ব্যাকরণ অনুযায়ী, যাকে স্বত্ব ত্যাগ করে দান, অর্চনা, সাহায্য ইত্যাদি করা হয়, তাকে সম্প্রদান কারক বলে। একে নিমিত্ত কারক-ও বলা হয়। এখানে লক্ষণীয় যে, বস্তু নয়, ব্যক্তিই সম্প্রদান কারক।[১] পূর্বে আলাদা হলেও বর্তমানে বাংলা ব্যাকরণে সম্প্রদান কারককে কর্ম কারকের অংশ হিসাবে ধরা হয়।[২] সম্প্রদান কারকের ব্যবহার কর্ম কারকের অনুরূপ

    অনেক ব্যাকরণবিদ বাংলা ব্যাকরণে সম্প্রদান কারক স্বীকার করেন না। কারণ, কর্ম কারক দ্বারাই সম্প্রদান কারকের কাজ সুন্দরভাবে সম্পাদন করা যায়। সম্প্রদান কারক ও কর্ম কারকের বিভক্তি চিহ্ন এক। কেবল স্বত্বত্যাগ করে দানের ক্ষেত্রে সম্প্রদান কারক হয়।[১] তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হয় না। এই বিভ্রান্তি এড়াতে বর্তমানে সম্প্রদান কারককে কর্ম কারকের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।[৩][২]

    সম্প্রদান কারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার

    আরও দেখুন: বিভক্তি

    প্রথমা বা ০ বিভক্তি

    গুরু দক্ষিণা দাও। দিব তোমা শ্রদ্ধা ভক্তি। ভিক্ষা দাও দেখিলে ভিক্ষুক

    চতুর্থী বা কে বিভক্তি

    দরিদ্রকে দান করো। ভিখারিকে ভিক্ষা দাও। দরিদ্রকে ধন দাও। (স্বত্বত্যাগ করে না দিলে কর্ম কারক হবে। যেমন- ধোপাকে কাপড় দাও)।

    ষষ্ঠী বা র বিভক্তি

    ভিক্ষুকদের ভিক্ষা দাও। দেশের জন্য প্রাণ দাও। ক্ষুধার্তদের খাদ্য দাও।

    সপ্তমী বা এ বিভক্তি

    সৎপাত্রে কন্যা দাও। সমিতিতে চাঁদা দাও। ‘অন্ধজনে দেহ আলো।’ দীনে দয়া করো। অন্নহীনে অন্ন দাও। সর্বভূতে দান করো। গৃহহীনে গৃহ দাও। জীবে দয়া করে সাধুজন। বস্ত্রহীনে বস্ত্র দাও।

    জ্ঞাতব্য

    নিমিত্তার্থে ‘কে’ বিভক্তি যুক্ত হলে সেখানে চতুর্থী বিভক্তি হয়। যেমন- ‘বেলা যে পড়ে এল, জলকে চল।’ (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)।
    তিনি হজে গেছেন। (নিমিত্তার্থে সপ্তমী বিভক্তি)

    আরো দেখুন

    কারক

  • কর্ম কারক

    ব্যাকরণ শাস্ত্রে, কর্ম কারক বলতে বোঝায় যাকে আশ্রয় করে কর্তা ক্রিয়া সম্পন্ন করে। “কী”, “কাকে” দ্বারা প্রশ্ন করলে উত্তরে কর্ম কারক পাওয়া যায়[১]যাকে আশ্রয় করে কর্তা ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে কর্ম কারক বলে।

    কর্ম

    মূল নিবন্ধ: কর্ম (ব্যাকরণ)

    কর্ম দুই প্রকার: মুখ্য কর্ম ও গৌণ কর্ম। উদাহরণ: বাবা আমাকে (গৌণ কর্ম) একটি কলম (মুখ্য কর্ম) কিনে দিয়েছেন।

    সাধারণত মুখ্য কর্ম বস্তুবাচক ও গৌণ কর্ম প্রাণিবাচক হয়ে থাকে। এছাড়াও সাধারণত কর্মকারকের গৌণ কর্মে বিভক্তি যুক্ত হয়, মুখ্য কর্মে হয় না।

    প্রকারভেদ

    কর্ম কারক ৪ প্রকার:

    1. সকর্মক ক্রিয়ার কর্ম: নাসিমা ফুল তুলছে।
    2. প্রযোজক ক্রিয়ার কর্ম: ছেলেটিকে বিছানায় শোয়াও।
    3. সমধাতুজ কর্ম: ক্রিয়াটি যে ধাতু নিষ্পন্ন, কর্মটিও সেই ধাতুনিষ্পন্ন হলে, তাকে সমধাতুজ কর্ম বলে। যেমন:- খুব এক ঘুম ঘুমিয়েছি।
    4. উদ্দেশ্য ও বিধেয় কর্ম: দ্বিকর্মক ক্রিয়ার দুটি দুটি পরস্পর অপেক্ষিত কর্মপদ থাকলে প্রধান কর্মপদটিকে বলা হয় উদ্দেশ্য কর্ম এবং অপেক্ষিত কর্মটিকে বলা হয় বিধেয় কর্ম। যেমন:

    দুধকে (উদ্দেশ্য কর্ম) মোরা দুগ্ধ (বিধেয় কর্ম) বলি, হলুদকে (উদ্দেশ্য কর্ম) বলি হরিদ্রা (বিধেয় কর্ম)।

    কর্ম কারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার

    আরও দেখুন: বিভক্তি

    (ক)প্রথমা বা শূণ্য বা অ বিভক্তিডাক্তার ডাক।
    পুলিশ ডাক।
    ঘোড়া গাড়ি টানে।
    আমাকে একখানা বই দাও। (দ্বিকর্মক ক্রিয়ার মুখ্য কর্ম)
    রবীন্দ্রনাথ পড়লাম, নজরুল পড়লাম, এর সুরাহা পেলাম না। (গ্রন্থ অর্থে বিশিষ্ট গ্রন্থকার প্রয়োগে)
    অর্থ অনর্থ ঘটায়।
    আমার ভাত খাওয়া হলো না।
    সূর্য উঠলে অন্ধকার দূর হয়।
    (খ)দ্বিতীয়া বা কে বিভক্তিতাকে বল।
    তাকে আমি চিনি।
    ধোপাকে কাপড় দাও।
    আমাকে একখানা বই দাও। (দ্বিকর্মক ক্রিয়ার গৌণকর্ম)
    ধনী দরিদ্রকে ঘৃণা করে।
    শিক্ষককে শ্রদ্ধা করিও।
    রে বিভক্তিআমারে তুমি করিবে ত্রাণ, এ নহে মোর প্রার্থনা।’
    (গ)তৃতীয়া বিভক্তি
    (ঘ)পঞ্চমী বিভক্তি
    (ঙ)ষষ্ঠী বা র বিভক্তিতোমার দেখা পেলাম না।
    দেশের সেবা কর।
    (চ)সপ্তমী বা এ বিভক্তিকাজে মন দাও।
    গুরুজনে করো ভক্তি/ নতি।
    সর্বশিষ্যে জ্ঞান দেন গুরু মহাশয়।
    ‘জিজ্ঞাসিবে জনে জনে।’ (বীপ্সায়)

    আরও দেখুন

    কারক

  • কর্তৃকারক

    ব্যাকরণে, বাক্যস্থিত যে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ ক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে ক্রিয়ার কর্তা বা কর্তৃকারক বলা হয়।[১] ক্রিয়ার সঙ্গে ‘কে’ বা ‘কারা’ যোগ করে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায়, তা কর্তৃকারককে নির্দেশ করে। একে “কর্তাকারক”ও বলা হয়[২]

    উদাহরণ: খোকা বই পড়ে। (কে বই পড়ে? খোকা – কর্তৃকারক)। মেয়েরা ফুল তোলে। (কে ফুল তোলে? মেয়েরা – কর্তৃকারক)।

    প্রকারভেদ

    কর্তৃকারকের বহুবিধ প্রকারভেদ বিদ্যমান।

    • কর্তৃকারক বাক্যের ক্রিয়া সম্পাদনের বৈচিত্র্য বা বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী চার প্রকারের হয়ে থাকে:
    1. মুখ্য কর্তা: যে নিজে নিজেই ক্রিয়া সম্পাদন করে, সে মুখ্য কর্তা। যেমন- ছেলেরা ফুটবল খেলছে। মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে।
    2. প্রযোজক কর্তা: মূল কর্তা যখন অন্যকে কোনো কাজে নিয়োজিত করে তা সম্পন্ন করায়, তখন তাকে প্রযোজক কর্তা বলে। যেমন- শিক্ষক ছাত্রদের ব্যাকরণ পড়াচ্ছেন।
    3. প্রযোজ্য কর্তা: মূল কর্তার করণীয় কাজ যাকে দিয়ে সম্পাদিত হয়, তাকে প্রযোজ্য কর্তা বলা হয়। যেমন- শিক্ষক ছাত্রদের ব্যাকরণ পড়াচ্ছেন।
    4. ব্যতিহার কর্তা: কোনো বাক্যে যে দুটো কর্তা একত্রে একজাতীয় কাজ সম্পাদন করে, তাদের ব্যতিহার কর্তা বলে। যেমন- বাঘে-মহিষে এক ঘাটে জল খায়। রাজায়-রাজায় লড়াই, উলুখাগড়ার প্রাণান্ত।
    • বাক্যের বাচ্য বা প্রকাশভঙ্গি অনুসারে কর্তা তিন রকমের হতে পারে:
    1. কর্মবাচ্যের কর্তা: কর্মপদের প্রাধান্যসূচক বাক্যে বসে। যেমন- পুলিশ দ্বারা চোর ধৃত হয়েছে।
    2. ভাববাচ্যের কর্তা: ক্রিয়ার প্রাধান্যসূচক বাক্যে বসে। যেমন- আমার যাওয়া হবে না।
    3. কর্ম-কর্তৃবাচ্যের কর্তা: বাক্যে কর্মপদই যখন কর্তৃস্থানীয় হয়। যেমন- বাঁশি বাজে। কলমটা লেখে ভালো।

    কর্তৃকারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার

    আরও দেখুন: বিভক্তি

    (ক)প্রথমা বা শূন্য বা অ-বিভক্তিহামিদ বই পড়ে।
    গগনে গরজে মেঘ
    ঘরেতে ভ্রমর এলো গুনগুনিয়ে।
    জল পড়ে, পাতা নড়ে।
    জেলে মাছ ধরে।
    শ্রদ্ধাবান লভে জ্ঞান অন্যে কভু নয়।
    সাপুড়ে সাপ খেলায়।
    ছেলেরা ফুটবল খেলছে।
    মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে।
    শিক্ষক ছাত্রদের ব্যাকরণ পড়াচ্ছেন।
    রাখাল গরুকে ঘাস খাওয়ায়।
    (খ)দ্বিতীয়া বা কে বিভক্তিবশিরকে যেতে হবে।
    শিক্ষক ছাত্রদের ব্যাকরণ পড়াচ্ছেন।
    রাখাল গরুকে ঘাস খাওয়ায়।
    (গ)তৃতীয়া বা দ্বারা বিভক্তিফেরদৌসী কর্তৃক শাহনামা রচিত হয়েছে।
    নজরুল কর্তৃক অগ্নিবীণা রচিত হয়।
    পুলিশ দ্বারা চোর ধৃত হয়েছে।
    (ঘ)পঞ্চমী বিভক্তি
    (ঙ)ষষ্ঠী বা র বিভক্তিআমার যাওয়া হয় নি।
    (চ)সপ্তমী বা এ বিভক্তিগাঁয়ে মানে না, আপনি মোড়ল।
    দশে মিলে করি কাজ।
    বাপে না জিজ্ঞাসে, মায়ে না সম্ভাষে।
    পাগলে কিনা বলে, ছাগলে কিনা খায়।
    বাঘে-মহিষে খানা একঘাটে খাবে না।
    দশে মিলে করি কাজ।
    য় বিভক্তিঘোড়ায় গাড়ি টানে।
    রাজায়-রাজায় লড়াই।
    তে বিভক্তিগরুতে দুধ দেয়।
    বুলবুলিতে ধান খেয়েছে খাজনা দেব কীসে?
    গরুতে গাড়ি টানে।

    আরো দেখুন

    কারক

  • করণ কারক

    ক্রিয়া সম্পাদনের যন্ত্র, উপকরণ বা সহায়ককেই করণ কারক বলা হয়।[১] বাক্যস্থিত ক্রিয়াপদের সঙ্গে ‘কিসের দ্বারা’ বা ‘কী উপায়ে’ প্রশ্ন করলে উত্তরে করণ কারক পাওয়া যায়।

    উদাহরণ:
    নীরা কলম দিয়ে লেখে। (উপকরণ – কলম)
    ‘জগতে কীর্তিমান হয় সাধনায়।’ (উপায় – সাধনা)

    প্রকারভেদ

    1. সমধাতুজ করণ:- ক্রিয়াটি যে ধাতু নিষ্পন্ন, করণটিও সেই ধাতুনিষ্পন্ন হলে, তাকে সমধাতুজ করণ বলে। যেমন:- সে কাটারিতে গাছ কাটছে।

    করণ কারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার

    আরও দেখুন: বিভক্তি

    (ক)প্রথমা বা শূণ্য বা অ বিভক্তিছাত্ররা বল খেলে। (অকর্মক ক্রিয়া)
    ডাকাতেরা গৃহস্বামীর মাথায় লাঠি মেরেছে।
    কৃষক লাঙ্গল চষছে।
    (খ)তৃতীয়া বা দ্বারা বিভক্তিলাঙল দ্বারা জমি চাষ করা হয়।
    আমরা কান দ্বারা শুনি।
    দিয়া বিভক্তিমন দিয়া কর সবে বিদ্যা উপার্জন।
    (গ)পঞ্চমী বা থেকে বিভক্তিএ সন্তান হতে দেশের মুখ উজ্জ্বল হবে।
    (ঘ)ষষ্ঠী বা র বিভক্তিতার মাথায় লাঠির আঘাত করো না।
    ইট-পাথরের বাড়ি বেশ শক্ত।
    ইটের বাড়ি সহজে ভাঙে না।
    কাচের জিনিস সহজে ভাঙে।
    জলের লিখন থাকে না।
    (ঙ)সপ্তমী বা এ বিভক্তিফুলে ফুলে ঘর ভরেছে।
    আকাশ মেঘে ঢাকা।
    শিকারী বিড়াল গোঁফে চেনা যায়।
    জ্ঞানে বিমল আনন্দ লাভ হয়।
    কলমে ভালো লেখা হয়/ বেশ লেখা যায়।
    নতুন ধান্যে হবে নবান্ন।
    হাতে কাজ কর।
    তে বিভক্তি‘এত শঠতা, এত যে ব্যথা,
    তবু যেন তা মধুতে মাখা।’ – নজরুল
    লোকটা জাতিতে বৈষ্ণব।
    য় বিভক্তিচেষ্টায় সব হয়।
    সুতায় কাপড় হয় না।
    নিজের চেষ্টায় বড় হও।
    জগতে কীর্তিমান হয় সাধনায়
    বন্যায় দেশ প্লাবিত হলো।
    কলমটি সোনায় মোড়া।[২]
    টাকায় কি না হয়।

    আরো দেখুন

    কারক