ক্ষ (উচ্চারণ: খিয়ো) একটি বাংলা যুক্তবর্ণ। বাংলা অক্ষর ‘ক’ ও ‘ষ’ পরপর যুক্ত করলে ‘ক্ষ’ তৈরি হয়। যুক্তবর্ণটিকে একসময় মূল বাংলা বর্ণমালার তালিকায় রাখা হলেও বর্তমানে রাখা হয় না। ভারতীয় উপমহাদেশের অধিকাংশ ভাষায় এর সমতুল্য যুক্তবর্ণের অস্তিত্ব আছে। বর্ণটির শব্দে প্রয়োগের স্থানভেদে ভিন্ন ভিন্ন উচ্চারণ হয়। ক্ষ ব্যতীত বাংলা ভাষার আর কোনো যুক্তবর্ণকে কোনো বিশেষ নামে ডাকা হয় না। এটি একটি অনচ্ছ যুক্তব্যঞ্জন, অর্থাৎ একে দেখে এর গঠনকারী বর্ণসমূহকে (‘ক’ এবং ‘ষ’) শনাক্ত করা যায় না।
‘ক্ষ’ এর উচ্চারণ
‘ক্ষ’-এর উচ্চারণ দু-রকম হয়ে থাকে। ১. শব্দের শুরুতে থাকলে এর উচ্চারণ হবে ‘খ’-এর মতো। যেমন: ক্ষমা। এখানে ‘ক্ষ’ শব্দের শুরুতে বসেছে। তাই এখানে এর উচ্চারণ হবে ‘খ’-এর মতো। সুতরাং এর উচ্চারণ হবে ‘খমা’।
২. শব্দের মধ্যে বা শেষে থাকলে উচ্চারণ হবে ‘ক্ + খ’-এর মতো। যেমন: রক্ষা। এখানে ‘ক্ষ’ আছে শব্দের শেষে। তাই এখানে এর উচ্চারণ হবে ‘ক্ + খ’-এর মতো। এখন, এ শব্দটিতে ‘ক্ষ’ স্থানে ‘ক্ + খ’ বসালে দাঁড়ায় ‘র ক্+খা (ক্ষা)’। সুতরাং এ শব্দটির উচ্চারণ হবে ‘রোক্ খা’।
সংস্কৃতব্যাকরণ অনুযায়ী, যাকে স্বত্ব ত্যাগ করে দান, অর্চনা, সাহায্য ইত্যাদি করা হয়, তাকে সম্প্রদান কারক বলে। একে নিমিত্ত কারক-ও বলা হয়। এখানে লক্ষণীয় যে, বস্তু নয়, ব্যক্তিই সম্প্রদান কারক।[১] পূর্বে আলাদা হলেও বর্তমানে বাংলা ব্যাকরণে সম্প্রদান কারককে কর্ম কারকের অংশ হিসাবে ধরা হয়।[২] সম্প্রদান কারকের ব্যবহার কর্ম কারকের অনুরূপ
অনেক ব্যাকরণবিদ বাংলা ব্যাকরণে সম্প্রদান কারক স্বীকার করেন না। কারণ, কর্ম কারক দ্বারাই সম্প্রদান কারকের কাজ সুন্দরভাবে সম্পাদন করা যায়। সম্প্রদান কারক ও কর্ম কারকেরবিভক্তি চিহ্ন এক। কেবল স্বত্বত্যাগ করে দানের ক্ষেত্রে সম্প্রদান কারক হয়।[১] তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হয় না। এই বিভ্রান্তি এড়াতে বর্তমানে সম্প্রদান কারককে কর্ম কারকের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।[৩][২]
নিমিত্তার্থে ‘কে’ বিভক্তি যুক্ত হলে সেখানে চতুর্থী বিভক্তি হয়। যেমন- ‘বেলা যে পড়ে এল, জলকে চল।’ (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)। তিনি হজে গেছেন। (নিমিত্তার্থে সপ্তমী বিভক্তি)
ব্যাকরণ শাস্ত্রে, কর্ম কারক বলতে বোঝায় যাকে আশ্রয় করে কর্তাক্রিয়া সম্পন্ন করে। “কী”, “কাকে” দ্বারা প্রশ্ন করলে উত্তরে কর্ম কারক পাওয়া যায়[১]যাকে আশ্রয় করে কর্তা ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে কর্ম কারক বলে।
কর্ম দুই প্রকার: মুখ্য কর্ম ও গৌণ কর্ম। উদাহরণ: বাবা আমাকে (গৌণ কর্ম) একটি কলম (মুখ্য কর্ম) কিনে দিয়েছেন।
সাধারণত মুখ্য কর্ম বস্তুবাচক ও গৌণ কর্ম প্রাণিবাচক হয়ে থাকে। এছাড়াও সাধারণত কর্মকারকের গৌণ কর্মে বিভক্তি যুক্ত হয়, মুখ্য কর্মে হয় না।
প্রকারভেদ
কর্ম কারক ৪ প্রকার:
সকর্মক ক্রিয়ার কর্ম: নাসিমা ফুল তুলছে।
প্রযোজক ক্রিয়ার কর্ম: ছেলেটিকে বিছানায় শোয়াও।
সমধাতুজ কর্ম: ক্রিয়াটি যে ধাতু নিষ্পন্ন, কর্মটিও সেই ধাতুনিষ্পন্ন হলে, তাকে সমধাতুজ কর্ম বলে। যেমন:- খুব এক ঘুম ঘুমিয়েছি।
উদ্দেশ্য ও বিধেয় কর্ম: দ্বিকর্মক ক্রিয়ার দুটি দুটি পরস্পর অপেক্ষিত কর্মপদ থাকলে প্রধান কর্মপদটিকে বলা হয় উদ্দেশ্য কর্ম এবং অপেক্ষিত কর্মটিকে বলা হয় বিধেয় কর্ম। যেমন:
ব্যাকরণে,বাক্যস্থিত যে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ ক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে ক্রিয়ার কর্তা বা কর্তৃকারক বলা হয়।[১] ক্রিয়ার সঙ্গে ‘কে’ বা ‘কারা’ যোগ করে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায়, তা কর্তৃকারককে নির্দেশ করে। একে “কর্তাকারক”ও বলা হয়[২]
উদাহরণ: খোকা বই পড়ে। (কে বই পড়ে? খোকা – কর্তৃকারক)। মেয়েরা ফুল তোলে। (কে ফুল তোলে? মেয়েরা – কর্তৃকারক)।
প্রকারভেদ
কর্তৃকারকের বহুবিধ প্রকারভেদ বিদ্যমান।
কর্তৃকারক বাক্যের ক্রিয়া সম্পাদনের বৈচিত্র্য বা বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী চার প্রকারের হয়ে থাকে:
মুখ্য কর্তা: যে নিজে নিজেই ক্রিয়া সম্পাদন করে, সে মুখ্য কর্তা। যেমন- ছেলেরা ফুটবল খেলছে। মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে।
প্রযোজক কর্তা: মূল কর্তা যখন অন্যকে কোনো কাজে নিয়োজিত করে তা সম্পন্ন করায়, তখন তাকে প্রযোজক কর্তা বলে। যেমন- শিক্ষক ছাত্রদের ব্যাকরণ পড়াচ্ছেন।
প্রযোজ্য কর্তা: মূল কর্তার করণীয় কাজ যাকে দিয়ে সম্পাদিত হয়, তাকে প্রযোজ্য কর্তা বলা হয়। যেমন- শিক্ষক ছাত্রদের ব্যাকরণ পড়াচ্ছেন।
ব্যতিহার কর্তা: কোনো বাক্যে যে দুটো কর্তা একত্রে একজাতীয় কাজ সম্পাদন করে, তাদের ব্যতিহার কর্তা বলে। যেমন- বাঘে-মহিষে এক ঘাটে জল খায়। রাজায়-রাজায় লড়াই, উলুখাগড়ার প্রাণান্ত।
বাক্যের বাচ্য বা প্রকাশভঙ্গি অনুসারে কর্তা তিন রকমের হতে পারে:
কর্মবাচ্যের কর্তা: কর্মপদের প্রাধান্যসূচক বাক্যে বসে। যেমন- পুলিশ দ্বারা চোর ধৃত হয়েছে।
ভাববাচ্যের কর্তা: ক্রিয়ার প্রাধান্যসূচক বাক্যে বসে। যেমন- আমার যাওয়া হবে না।
কর্ম-কর্তৃবাচ্যের কর্তা: বাক্যে কর্মপদই যখন কর্তৃস্থানীয় হয়। যেমন- বাঁশি বাজে। কলমটা লেখে ভালো।
ক্রিয়া সম্পাদনের যন্ত্র, উপকরণ বা সহায়ককেই করণ কারক বলা হয়।[১]বাক্যস্থিত ক্রিয়াপদের সঙ্গে ‘কিসের দ্বারা’ বা ‘কী উপায়ে’ প্রশ্ন করলে উত্তরে করণ কারক পাওয়া যায়।
উদাহরণ: নীরা কলম দিয়ে লেখে। (উপকরণ – কলম) ‘জগতে কীর্তিমান হয় সাধনায়।’ (উপায় – সাধনা)
প্রকারভেদ
সমধাতুজ করণ:- ক্রিয়াটি যে ধাতু নিষ্পন্ন, করণটিও সেই ধাতুনিষ্পন্ন হলে, তাকে সমধাতুজ করণ বলে। যেমন:- সে কাটারিতে গাছ কাটছে।
আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাধারণ জ্ঞান। বিসিএসসহ বিভিন্ন পরীক্ষাতে কমন আসা ৫০টি এমসিকিউ প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে নিচে আলোচনা করা হয়েছে। আপনারা যারা বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন তারা দেখে থাকবেন সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী অংশে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন এসে থাকে। তাই আপনাদের সুবিধার্থে বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক যে প্রশ্ন গুলো বারবার এসেছে সেই প্রশ্নগুলো একত্র করে দেওয়া হলো। তো চলুন পড়ে নেওয়া যাক-
বিভিন্ন পরীক্ষাতে কমন আসা ৫০টি এমসিকিউ প্রশ্ন ও উত্তর
০১। কার নেতৃত্বে তমদুন মজলিশ’ গঠিত হয়? (ক) আবু মনসুর আহমদ (খ) অধ্যাপক আবুল কাশেম (গ) ড. কাজী মােতাহার হােসেন (ঘ) আব্দুল মতিন
উত্তর : অধ্যাপক আবুল কাশেম
০২। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে প্রথম ধর্মঘট কখন হয়? (ক) ১৭ মার্চ, ১৯৪৯ (খ) ৭ মার্চ, ১৯৪৭ (গ) ১১ মার্চ, ১৯৪৮ (ঘ) ১১ মার্চ, ১৯৪৭
উত্তর : ১১ মার্চ, ১৯৪৮
০৩। কয়টি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়? (ক) ৪টি দল (খ) ৫টি দল (গ) ৩টি দল (ঘ) ৬টি দল
উত্তর: ৪টি দল
০৪। ১৯৫৪ সালে পূর্ব বাংলায় প্রাদেশিক মন্ত্রিসভা গঠন করেন কে? (ক) আতাউর রহমান খান (খ) এ কে ফজলুল হক (গ) শেখ মুজিবুর রহমান (ঘ) মওলানা ভাসানী
উত্তর: এ কে ফজলুল হক
০৫। যুক্তফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় ছিল কত দিন? (ক) ৫৩ দিন (খ) ৫৪ দিন (গ) ৫৬ দিন (ঘ) ৬০ দিন
উত্তর : ৫৬ দিন
০৬। ৬ দফা দাবির প্রথম দাবি কি ছিল? (ক) বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করতে হবে (খ) পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হবার দাবি (গ) পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন। (ঘ) রাজস্ব, কর বিষয়ক দাবি
উত্তর : পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন
০৭। যুক্তফ্রন্ট সরকার পতনের পর বাংলায় কার শাসনামল শুরু হয়? (ক) গভর্নরের (খ) প্রেসিডেন্টের (গ) প্রধানমন্ত্রীর (ঘ) তত্ত্বাবধায়ক সরকারের
উত্তর : গভর্নরের
০৮। ‘মারী চুক্তি’ কবে সম্পাদিত হয়? (ক) ৩০ মে, ১৯৫৪ (খ) ৭ জুলাই, ১৯৫৫ (গ) ২৩ মার্চ, ১৯৫৬ (ঘ) ৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৭
উত্তর : ৭ জুলাই, ১৯৫৫
০৯। ছয়দফা দিবস কবে পালিত হয়? (ক) ৫জুন (খ) ৬ জুন (গ) ৭ জুন। (ঘ) ৮ জুন
উত্তর : ৭ জুন
১০। মৌলিক গণতন্ত্র অধ্যাদেশ কবে জারি করা হয়? (ক) ২৩ মার্চ, ১৯৬০ (খ) ২৭ অক্টোবর, ১৯৫৯ (গ) ৭ অক্টোবর, ১৯৫৮ (ঘ) ৭ অক্টোবর, ১৯৫৯
উত্তর: ২৭ অক্টোবর, ১৯৫৯
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কিছু সাধারণ জ্ঞান
১১। গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পরিষদ’ কিসের ভিত্তিতে গঠন করা হয়? (ক) ৬ দফা। (খ) ৮ দফা (গ) ১১ দফা (ঘ) ২১ দফা
উত্তর : ৮ দফা
১২। ‘আগরতলা মামলা কবে প্রত্যাহার করা হয়? (ক) ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯ (খ) ১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯ (গ) ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯ (ঘ) ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯
উত্তর: ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯
১৩। শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেয়া হয় কবে? (ক) ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯ (খ) ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯ (গ) ৪ জানুয়ারি, ১৯৬৯ (ঘ) ৮ জানুয়ারি, ১৯৬৯
উত্তর: ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯
১৪। পাকিস্তানের প্রথম জাতীয় পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়? (ক) ২২ অক্টোবর, ১৯৭০ (খ) ২০ ডিসেম্বর, ১৯৭০ (গ) ৫ অক্টোবর, ১৯৭০ (ঘ) ৭ ডিসেম্বর, ১৯৭০
উত্তর: ৭ ডিসেম্বর, ১৯৭০
১৫। ১৯৭০ সালের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ লাভ করেছিল? (ক) ১৬৯টি। (খ) ১৬০টি। (গ) ১৬২টি (ঘ) ১৬৭টি
উত্তর : ১৬৭টি
১৬। স্বৈরাচারী আইয়ুব খানের শাসনের অবসান ঘটে কবে? (ক) ২৫ মার্চ, ১৯৬৯ (খ) ১ মার্চ, ১৯৭০ (গ) ২৫ মার্চ, ১৯৭০ (ঘ) ৭ ডিসেম্বর, ১৯৭০
উত্তর: ২৫ মার্চ, ১৯৬৯
১৭। কবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক ঘােষণা করা হয়? (ক) ২৬ মার্চ, ১৯৭১ (খ) ৩ মার্চ, ১৯৭১ (গ) ১ মার্চ, ১৯৭১ (ঘ) ৭ মার্চ, ১৯৭১
উত্তর : ৩ মার্চ, ১৯৭১
১৮। বাংলাদেশের পতাকা প্রথম উত্তোলন করা হয় (ক) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা ভবনে এক ছাত্রসভায় (খ) কলকাতায়। (গ) কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্টে। (ঘ) চট্টগ্রামের পতেঙ্গায়
উত্তর : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা ভবনে এক ছাত্রসভায়
১৯। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে বিশ্ব ঐতিহ্য দলিল হিসেবে কবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়? (ক) ৩০ অক্টোবর, ২০১৭ (খ) ৩০ অক্টোবর, ২০১৮ (গ) ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ (ঘ) ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
উত্তর: ৩০ অক্টোবর, ২০১৭
২০। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু কয়টি দাবি উপস্থাপন করেন? (ক) ৩টি (খ) ৪টি। (গ) ৫টি (ঘ) ৬টি
উত্তর: ৪টি
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক আরো কিছু সাধারণ জ্ঞান
২১। মুজিবনগর সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী কে ছিলেন? (ক) ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী (খ) তাজউদ্দীন আহমদ (গ) এ.এইচ. এম কামারুজ্জামান (ঘ) খন্দকার মােশতাক আহমদ
উত্তর : ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী
২২। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘােষণাপত্র কত তারিখে গৃহীত হয়? (ক) ২৬ মার্চ, ১৯৭১ সালে (খ) ১০ এপ্রিল, ১৯৭১ সালে (গ) ২৩ এপ্রিল, ১৯৭১সালে। (ঘ) ১৭ এপ্রিল, ১৯৭১ সালে
উত্তর : ১৭ এপ্রিল, ১৯৭১ সালে
২৩। মুজিবনগর সরকারের সদস্য ছিল— (ক) ৭ জন। (খ) ৯ জন (গ) ৬ জন (ঘ) ১০ জন
উত্তর: ৬ জন
২৪। মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের সর্বদলীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান কে ছিলেন? (ক) এম. মনসুর আলী (খ) তাজউদ্দীন আহমেদ (গ) মওলানা ভাসানী (ঘ) সৈয়দ নজরুল ইসলাম
উত্তর: মওলানা ভাসানী
২৫। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন প্রবাসী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী সচিবালয় কোথায় ছিল? (ক) ৮নং থিয়েটার রােড, কলকাতা (খ) মুজিবনগর (গ) কালুরঘাট (ঘ) বেনাপােল
উত্তর : ৮নং থিয়েটার রােড, কলকাতা
২৬। অনিয়মিত বাহিনীর সরকারি নাম কি ছিল? (ক) মুক্তিফৌজ (খ) মুক্তিবাহিনী। (গ) গণবাহিনী (ঘ) গেরিলা
উত্তর : গণবাহিনী
২৭। কোথায় কাদেরিয়া বাহিনী গঠিত হয়? (ক) ভালুকা (খ) মানিকগঞ্জ (গ) সিরাজগঞ্জ (ঘ) টাঙ্গাইল।
২৯। যৌথবাহিনী কবে গঠিত হয়? (ক) ২১ নভেম্বর, ১৯৭১ (খ) ২১ অক্টোবর, ১৯৭১ (গ) ২০ নভেম্বর, ১৯৭১ (ঘ) ২০ অক্টোবর, ১৯৭১
উত্তর: ২১ নভেম্বর, ১৯৭১
৩০। ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বরে পাকিস্তান সরকার পূর্ব পাকিস্তানে কোন মন্ত্রিসভা গঠন করে? (ক) ডা. মালিক মন্ত্রিসভা (খ) আজিজ পাশা মন্ত্রিসভা (গ) শ্যামা মন্ত্রিসভা (ঘ) আজম মন্ত্রিসভা
উত্তর : ডা. মালিক মন্ত্রিসভা
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ থেকে কমন আসার মত সাধারণ জ্ঞান
৩১। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণ দলিলটির শিরােনাম কী? (ক) Instrument of Surrender (খ) Armistice (গ) Truce (T) Ceasefire
উত্তর: Instrument of Surrender
৩২। Concert for Bangladesh’ আয়ােজনকারী জর্জ হ্যারিসন কোন দেশের নাগরিক? (ক) রাশিয়া (খ) যুক্তরাজ্য (গ) যুক্তরাষ্ট্র (ঘ) অষ্ট্রেলিয়া
উত্তর: যুক্তরাজ্য
৩৩। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রথম পর্যায়ের সম্প্রচার বন্ধ হয় কবে? (ক) ২৯ মার্চ, ১৯৭১ (খ) ৩০ মার্চ, ১৯৭১ (গ) ৩১ মার্চ, ১৯৭১ (ঘ) কোনােটিই নয়
৩৫। বীরশ্রেষ্ঠদের মধ্যে প্রথম শহিদ হন – (ক) মােস্তফা কামাল (খ) রুহুল আমীন (গ) মুন্সী আব্দুর রউফ (ঘ) মতিউর রহমান
উত্তর : মুন্সী আব্দুর রউফ
৩৬। বীরশ্রেষ্ঠ মােস্তফা কামাল কত নং সেক্টরে যুদ্ধ করেন? (ক) ২ নং (খ) ৪নং (গ) ৮নং (ঘ) ৮নং
উত্তর : ২ নং
৩৭। সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের মধ্যে সেনাবাহিনীর কত জন? (ক) ২ জন (খ) ৩ জন (গ) ৪ জন (ঘ) ৫ জন
উত্তর : ৩ জন
৩৮। সর্বকনিষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযােদ্ধা (ক) হামিদুর রহমান। (খ) নূর মােহাম্মদ শেখ (গ) মােস্তফা কামাল (ঘ) শহীদুল ইসলাম
উত্তর: শহীদুল ইসলাম
৩৯। বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানকারী প্রথম উত্তর আমেরিকান দেশ কোনটি? (ক) সেনেগাল (খ) ফিজি। (গ) বার্বাডােস (ঘ) ভেনিজুয়েলা
উত্তর: বার্বাডােস
৪০। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগর’ কোন সেক্টরে অন্তর্ভুক্ত ছিল? (ক) ২ নং (খ) ৮ নং (গ) ১০ নং (ঘ) ১১ নং
উত্তর: ৮ নং
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাধারণ জ্ঞান
৪১। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ কবে গঠিত হয়? (ক) ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৮ (খ) ১৩ অক্টোবর, ১৯৪৮ (গ) ১১ মার্চ, ১৯৫০ (ঘ) ৬ ডিসেম্বর, ১৯৪৭
উত্তর : ১১ মার্চ, ১৯৫০
৪২। মুজিবনগর সরকারের চীফ অব স্টাফ কে ছিলেন? (ক) খন্দকার মােশতাক আহমেদ (খ) লে.কর্নেল (অব.) আব্দুর রব (গ) ক্যাপ্টেন এ.কে. খন্দকার (ঘ) ক্যাপ্টেন এম.এ.জি ওসমানী
উত্তর : লে.কর্নেল (অব.) আব্দুর রব
৪৩। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভায় বঙ্গবন্ধু কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন? (ক) শিল্প ও বাণিজ্য (খ) আইন ও বিচার (গ) কৃষি, ঋণ ও সমবায় (ঘ) অর্থ ও স্বরাষ্ট্র
উত্তর : কৃষি, ঋণ ও সমবায়
৪৪। গণঅভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে পালিত হয় (ক) ২৪ জানুয়ারি (খ) ২৩ ফেব্রুয়ারি (গ) ১০ মার্চ (ঘ) ৫ ডিসেম্বর
উত্তর: ২৪ জানুয়ারি
৪৫। আগরতলা মামলা’র কত নং আসামিকে ক্যান্টনমেন্টে হত্যা করা হয়? (ক) ১৫ নং (খ) ১৬ নং (গ) ১৭ নং (ঘ) ১৮ নং
উত্তর: ১৭ নং
৪৬। মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্রিগেড আকারে মােট কয়টি ফোর্স গঠিত হয়েছিল? (ক) ২টি (খ) ৪টি (গ) ৩টি (ঘ) ৫টি
বাংলাদেশ বিষয়াবলি থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো। আপনারা যারা বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাদের জন্য আজকের লেখাটি খুবই উপকারি হবে। তো চলুন বাংলাদেশ বিষয়াবলি থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলো পড়ি।
বাংলাদেশ বিষয়াবলি থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন : উপমহাদেশে প্রথম পুলিশ ব্যবস্থা চালু করেন উত্তর : লর্ড ক্যানিং।
এই বিভাগের আরো পোস্ট :
প্রশ্ন : ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত ‘ডি-৮ সম্মেলন’র আয়ােজক দেশ ছিল উত্তর : বাংলাদেশ।
প্রশ্ন : বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উপজাতি উত্তর : মারমা।
প্রশ্ন : জিজিয়া কর ছিল উত্তর : মুসলমানদের ওপর ধার্য সামরিক কর।
প্রশ্ন : বাংলাদেশের সাথে সীমান্ত রয়েছে উত্তর : ২টি দেশের।
প্রশ্ন : জগদ্দল বিহার অবস্থিত উত্তর : নওগাঁ জেলায়।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট অবস্থিত উত্তর : ঢাকার সাভারে।
প্রশ্ন : জাপানের বৈদেশিক বাণিজ্য সংস্থার নাম উত্তর : জাইকা।
৭ বীরশ্রেষ্ঠের পরিচয় : বাংলা ভূমির হাজার বছরের ইতিহাসে ১৯৭১ এক অনন্য মাইলফলক। এর আগেই ভাষা আন্দোলনের সূত্রে বাঙালি জাতি বিভেদ ভুলে এক হতে শুরু করেছিল। পরবর্তীতে নেতৃত্বের জাদুকরী শক্তিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুদ্ধ করে বাঙালি জাতি পেয়েছে স্বাধীনতার স্বাদ। একাত্তরে এক নেতা এক দেশ, শেখ মুজিবের বাংলাদেশ’ এই ছিল তার পরিচয়। সেদিন ‘জয় বাংলা’র মন্ত্রে এই ছিল উজ্জীবিত। ত্রিশ লক্ষ শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে আলোচিত আত্মত্যাগ করেন ৭ বীর সন্তান। বিজয়ের এই মাসে বীরশ্রেষ্ঠদের নিয়ে আমাদের এই বিশেষ আয়ােজন….
বীরশ্রেষ্ঠ মােহাম্মদ মােস্তফা কামাল
বীরত্বের ঘটনা
মােহাম্মদ মােস্তফা কামাল ১৬ ডিসেম্বর ১৯৬৭ বাড়ি থেকে পালিয়ে ইস্ট গেল রেজিমেন্টে যােগ দেন। তিনি প্রশিক্ষণ শেষে কুমিল্লার ৪ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে নিয়ােগ পান। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর কয়েকদিন পূর্বে তিনি অবৈতনিক ল্যান্স নায়েক হিসেবে পদোন্নতি পান। ১৯৭১ সালের উত্তাল জনৈতিক পরিবেশে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে অভ্যন্তরীণ গােলযােগ নিয়ন্ত্রণের অজুহাতে সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মােতায়েন করে।
পাকিস্তানি চক্রান্ত বুঝতে পেরে কয়েকজন বাঙালি সৈনিককে সঙ্গে নিয়ে মেজর শাফায়াত জামিল রেজিমেন্টের অধিনায়ক লে. কর্নেল খিজির হায়াত খানসহ সকল পাকিস্তানি অফিসার ও সেনাদের গ্রেপ্তার করেন। এরপর তারা মেজর খালেদ মােশারফের নেতৃত্বে আশুগঞ্জ, উজানিস্বর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এন্ডারসন খালের পাশ দিয়ে শিক্ষা অবস্থান নেন। ১৪ এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনী হেলিকপ্টার গানশিপ, নেভাল গানবােট ও এফ-৮৬ বিমানযােগে মুক্তিবাহিনীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিরক্ষা অবস্থানের ওপর ত্রিমুখী আক্রমণ চালায়।
গঙ্গাসাগর প্রতিরক্ষা অবস্থানের দরুইন গ্রামে নিয়ােজিত আলফা কোম্পানির ২নং প্লাটুনের একজন সেকশন কমান্ডার ছিলেন মােস্তফা কামাল। ১৭ এপ্রিল সকাল থেকে পাকবাহিনী তীব্র গােলাবর্ষণ শুরু করে প্লাটুন পজিশনের ওপর। আক্রমণের খবর পেয়ে মেজর শাফায়াত অবস্থানকে আরাে শক্তিশালী করতে হাবিলদার মুনিরের নেতৃত্বে ডি কোম্পানির ১১ নম্বর প্লাটুন পাঠান। সারাদিন যুদ্ধ চলে।
১৮ এপ্রিল সকালে শত্রুবাহিনী দরুইন গ্রামের কাছে পৌঁছে যায়। দুপুর ১২টায় অবস্থানের পশ্চিমদিক থেকে মূল আক্রমণ শুরু হয়। শত্রু বাহিনীর একটি দল প্রতিরক্ষার পিছন দিক দিয়ে মুক্তিবাহিনীকে ঘিরে ফেলে। মুক্তিবাহিনী দরুইন গ্রাম থেকে আখাউড়া রেল স্টেশনের দিকে পশ্চাদপসরণের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু নিরাপদে সেখান থেকে সরে আসতে হলে তাদের প্রয়ােজন ছিল নিরবচ্ছিন্ন কাভারিং ফায়ার। মােস্তফা কামাল সহযােদ্ধাদের জানান যে, তিনি নিজে এই কাভারিং ফায়ার করবেন এবং সবাইকে পিছনে হটতে নির্দেশ দেন। সহযােদ্ধারা মােস্তফাকেও পশ্চাদপসরণের অনুরােধ করেন কিন্তু তিনি ছিলেন অবিচল।
মােস্তফার গুলিবর্ষণে পাকিস্তানি সৈন্যদের প্রায় ২০-২৫ জন হতাহত হয় এবং তাদের অগ্রগতি মন্থর হয়ে পড়ে। পাকিস্তানিরা মরিয়া হয়ে তাঁর অবস্থানের ওপর মেশিনগান এবং মর্টারের গােলাবর্ষণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে মোস্তফা কামালের এলএমজির গুলি নিঃশেষ হয়ে যায় এবং তিনি মারাত্মক জখম হন।
তখন পাকসৈন্যরা ট্রেঞ্চে এসে তাঁকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্তদের মধ্যে তিনি প্রথম শহিদ হন। রুইন গ্রামের জনগণ মােস্তফা কামালকে তাঁর শাহাদত বরণের স্থানের পাশেই সমাহিত করেন। মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাঁকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করে।
বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ
বীরত্বের ঘটনা
ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামানের নেতৃত্বে ৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং ইপিআর-এর ১৫০ জন সৈনিককে দায়িত্ব দেওয়া হয় রাঙামাটি-মহালছড়ি নৌপথে নিরাপত্তাব্যুহ তৈরির এই দলের এক নম্বর এলএমজি চালক মুন্সী আবদুর রউফ ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামের নানিয়ারচর উপজেলাধীন বাকছডির একটি বাঙ্কারে।
৮ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২ নং কমান্ডাে ব্যাটালিয়নের দুই কোম্পানি সৈনিক ৭টি স্পিডবােট ও ২টি লঞ্চ সহযােগে রাঙামাটি-মহালছড়ি নৌপথের আশেপাশে অবস্থানরত মুক্তিবাহিনীর ওপর আক্রমণ চালায়। পাকিস্তানি সৈন্যরা মুক্তিবাহিনীর অবস্থান আঁচ করে লঞ্চ থেকে তাদের অবস্থানের ওপর মর্টারে গােলাবর্ষণ শুরু। করে। এই অতর্কিত আক্রমণে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। এই সুযােগে কিছু পাকিস্তানি সৈন্য তীরে নেমে মুক্তিবাহিনীর অবস্থান ঘিরে ফেলে।
জন্ম
৮ মে ১৯৪৩
মৃত্যু
২০ এপ্রিল ১৯৭১
জন্মস্থান
সালামতপুর, বােয়ালমারী , ফরিদপুর।
যােদ্ধা
১নং সেক্টর
যুদ্ধ
রাঙামাটি-মহালছড়ি নৌপথে
পদবি
ল্যান্সনায়েক
কর্মস্থল
ইপিআর
সমাধি
রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর
ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান পিছনে হটার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু নিরাপদে অবস্থান ত্যাগের জন্য প্রয়ােজন নিরবচ্ছিন্ন কাভারিং ফায়ার। আবদুর রউফের এলএমজির কাভারিং ফায়ারে দায়িত্ব দিয়ে ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান তাঁর সৈন্যদের নিয়ে পিছনে হটতে থাকেন। তাঁর অব্যর্থ গুলিতে স্পিডবােটগুলাে ডুবে যায় এবং সেগুলােতে অবস্থানরত পাকিস্তানি সৈন্যরা হতাহত হয়। বাকি সৈন্যরা লঞ্চ দুটিতে করে পালাতে থাকে।
পাক সৈন্যরা এলএমজির রেঞ্জের বাইরে গিয়ে লঞ্চ থেকে মর্টারে গােলাবর্ষণ করতে থাকে। অসমসাহসী আবদুর রউফ তখনাে গুলি চালানাে অব্যাহত রেখেছিলেন। অকস্মাৎ শত্রুর একটি গােলার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তাঁর দেহ। সহযােদ্ধারা পরে তাঁর লাশ উদ্ধার করে নানিয়ারচরের চিংড়ি খাল সংলগ্ন একটি টিলার ওপর সমাহিত করেন।
মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বীরত্ব ও আত্মদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করে। বাংলাদেশ রাইফেলস ১৯৭৩ সালে মুন্সী আবদুর রউফকে অনারারি ল্যান্স নায়েক পদে মরণােত্তর পদোন্নতি দান করে।
বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান
বীরত্বের ঘটনা
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ছুটিতে এসে মতিউর রহমান স্থানীয়ভাবে মুক্তিযােদ্ধাদের সংগঠিত করেন। ভৈরবে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে তিনি অংশ নিয়েছিলেন। পরে পারিবারিক চাপে মে মাসে তিনি পাকিস্তান চলে যান।
সেখানে তিনি বিমান ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল বিমান ছিনতাই করে সেটি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেবেন। ২০ আগস্ট সকালে করাচির মাশরুর বিমানঘাঁটি থেকে পাইলট অফিসার মিনহাজ রশিদের টি-৩৩ বিমান নিয়ে উড়বার সিডিউল ছিল।
জন্ম
২৯ অক্টোবর ১৯৪১
মৃত্যু
২০ আগস্ট ১৯৭১
জন্মস্থান
পৈতৃক নিবাস রায়পুরা, নরসিংদী।
পদবি
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট
কর্মস্থল
পাকিস্তান বিমানবাহিনী।
সমাধি
পাকিস্তানের করাচির মৌরিপুর মাশরুর ঘাঁটি। পরবর্তীতে ২৫ মার্চ ২০০৬ তাঁর দেহাবশেষ দেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পূর্ণ মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।
মতিউর ছিলেন তার প্রশিক্ষক। এ বিমানের সাংকেতিক নাম ছিল ‘ব্লু বার্ড’। প্রশিক্ষণকালে মতিউর বিমানটির নিয়ন্ত্রণ নিজ হাতে নিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পারেননি। বিমানটি বিধ্বস্ত হয় ভারতীয় সীমান্তের কাছে থাট্টায়। মতিউরের মৃতদেহ ঘটনাস্থলের কাছাকাছি পাওয়া গেলেও মিনহাজের লাশ পাওয়া যায়নি।
বিশেষ তথ্য :
মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। পাকিস্তান বিমানবাহিনীর একটি টি-৩৩ বিমান (ছদ্মনাম ‘ব্লু-বার্ড) ছিনতাই করে দেশে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় শহিদ হন।
তাঁর জীবনের ওপর নির্মিত চলচ্চিত্রের নাম ‘অস্তিত্বে আমার দেশ।
যুদ্ধ :
পাকিস্তানের মাশরুর বিমানঘাঁটিতে টি-৩৩ প্রশিক্ষণ বিমান ছিনিয়ে নিয়ে ভারতীয় সীমান্তের উদ্দেশে যাত্রা। এ টিভির পর্দায় মতিউর রহমান। মতিউর রহমানকে নিয়ে ২০০২ সালে ‘অগ্নিবলাকা’ নামে একটি ডকুড্রামা নির্মাণ করা হয়, যেখানে রিয়াজ মতিউর রহমানের চরিত্রে এবং তারিন তার স্ত্রী মিলির চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এছাড়া তার জীবনী নিয়ে ২০০৭ সালে ‘অস্তিত্বে আমার দেশ চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়।
সম্মাননা
মতিউর রহমানের দেশপ্রেম ও আত্মদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭৩ তাঁকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যশাের বিমানঘাটি তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মােহাম্মদ শেখ
বীরত্বের ঘটনা
১৯৭১ সালের মার্চ মাসে গ্রামের বাড়িতে ছুটি কাটাতে এসে নূর মােহাম্মদ শেখ মুক্তিবাহিনীতে যােগ দেন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি যশোর ৮নং সেক্টরে যুদ্ধরত ছিলেন। ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ যুতিপুরে নিজস্ব প্রতিরক্ষাব্যুহের সামনে যশাের জেলার গোয়ালহাটি গ্রামে তাঁকে অধিনায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি ট্যান্ডিং পেট্রোল পাঠানাে হয়।
জন্ম
২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬
মৃত্যু
৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
জন্মস্থান
মহিষখােলা, নড়াইল
যােদ্ধা
৮নং সেক্টর
যুদ্ধ
যশােরের শার্শার বয়রায়
পদবি
ল্যান্সনায়েক
কর্মস্থল
ইপিআর
সমাধি
যশােরের কাশিপুর গ্রামে।
সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ঠাৎ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পেট্রোলটি তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে গুলিবর্ষণ শুরু করে। মুক্তিযােদ্ধারা পাল্টা গুলিবর্ষণ করে। সিপাহি নানু মিয়া গুলিবিদ্ধ হলে নূর মােহাম্মদ তাঁকে কাঁধে তুলে নেন এবং হাতের এলএমজি দিয়ে এলােপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করলে শত্রুপক্ষ পশ্চাদপসরণ করতে বাধ্য হয়। হঠাৎ করেই শত্রুর মর্টারের একটি গােলা এসে তার ডান কাঁধে লাগে।
তিনি শত্রুদের ঠেকিয়ে রাখার দায়িত্ব নেন এবং অন্য সঙ্গীদের চলে যেতে অনুরােধ করেন। তিনি সমানে গুলি ছুড়তে লাগলেন। শত্রুপক্ষ এই বীর যােদ্ধাকে বেয়নেট চার্জ করে চোখ দুটো উপড়ে ফেলে এবং মস্তক বিদীর্ণ করে ঘিলু ছড়িয়ে ফেলে। পরবর্তীতে পাশের একটি ঝাড় থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে। যশোরের কাশিপুর গ্রামে সমাহিত করা হয়।
সম্মাননা
নূর মােহাম্মদের দেশপ্রেম ও আত্মদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭৩ তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করা হয়।
বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান
বীরত্বের ঘটনা
হামিদুর রহমান মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ থানার দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে ধলই নামক স্থানে মুক্তিবাহিনীতে যােগ দেন। পাকসেনাদের ধলই সীমান্ত ঘাঁটির সামরিক গুরুত্বের কারনে মুক্তিযােদ্ধারা ঘাঁটিটি দখলের পরিকল্পনা করে। প্রথম বেঙ্গল রেজিমেন্টের ‘সি’ কোম্পানিকে এ দায়িত্ব দেওয়া।
জন্ম
২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩
মৃত্যু
২৮ অক্টোবর ১৯৭১
জন্মস্থান
মহেশপুর, ঝিনাইদহ
যােদ্ধা
৪নং সেক্টর
পদবি
সিপাহি
কর্মস্থল
পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
সমাধি
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের হাতিমেরছড়া গ্রামে। পরবর্তীতে ১১ ডিসেম্বর ২০০৭ তাঁর দেহাবশেষ দেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পূর্ণ মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।
বিশেষ তথ্য
বীরশ্রেষ্ঠ খেতাপ্রাপ্তদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ
হামিদুর ছিলেন এই কোম্পানির সদস্য। ২৮ অক্টোবরের পূর্ণতে মুক্তিযােদ্ধাদের তিনটি প্লাটুন পাকসেনাদের ঘাঁটি অভিমুখে অগ্রসর হয়। ঘাঁটির কাছাকাছি এলে অকস্মাৎ একটি মাইন বিস্ফোরণের শব্দে শত্রুপক্ষ সচকিত হয়ে এলােপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। এ সংকটময় পরিস্থিতিতে হামিদুর শত্রুর এএমজি পােস্ট ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি তাঁর দলকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গ্রেনেড হাতে রাতের অন্ধকারে হামাগুড়ি দিয়ে শত্রুর এলএমজি পােস্টের দিকে অগ্রসর হন এবং রাতের শেষ প্রহরে গ্রেনেড ছুড়ে দুই এলএমজি চালককে হত্যা করেন। কিন্তু নিজে তিনি শত্রুপক্ষের গুলিতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। মুক্তিযােদ্ধারা তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে ত্রিপুরা রাজ্যের আমবাসায় সমাহিত করেন।
সমাধি স্থানান্তর
হামিদুর রহমানের মৃতদেহ সীমান্তের অল্পদূরে ভারতীয় ভূখণ্ডে ত্রিপুরা রাজ্যের হাতিমেরছড়া গ্রামের স্থানীয় এক পরিবারের পারিবারিক গােরস্থানে দাফন করা হয়। নিচু স্থানে অবস্থিত কবরটি একসময় পানিতে তলিয়ে যায়। ২৭ অক্টোবর ২০০৭ বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার হামিদুর রহমানের দেহ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১০ ডিসেম্বর ২০০৭ বাংলাদেশ রাইফেলসের একটি দল ত্রিপুরা সিমান্তে হামিদুর রহমানের দেহাবশেষ গ্রহণ করে এবং যথাযােগ্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদার সাথে কুমিল্লার বিবিরহাট সীমান্ত দিয়ে তাঁর দেহাবশেষ বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। ১১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানকে কার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
বীরশ্রেষ্ঠ মাে. রুহুল আমিন
বীরত্বের ঘটনা
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে রুহুল আমিন এপ্রিল মাসে ত্রিপুরা সীমান্ত। অতিক্রম করে ২নং সেক্টরে যােগদান করেন। সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত তিনি | বেশ কয়েকটি সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন। সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ নৌবাহিনী গঠনের উদ্দেশ্যে সকল সেক্টর থেকে প্রাক্তন নৌ-সেনাদের আগরতলায় সংগঠিত করে নৌবাহিনীর প্রাথমিক কাঠামাে গঠন করা হয়। পরে তাদের কলকাতায় আনা হয়।
সেখানে সবার সাথে রুহুল আমিনও ছিলেন। ভারত সরকার বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে দুটি টাগবােট উপহার দেয়। এগুলােকে কলকাতার গার্ডেন রিচ নৌ-ওয়ার্কশপে দুটি বাফার গান ও মাইন-পড জুড়ে গানবােটে রূপান্তর করা হয়। গানবােট দুটির নামকরণ করা হয় ‘পদ্ম’ ও ‘পলাশ’ ।
জন্ম
১ জুলাই ১৯৩৫
মৃত্যু
১০ ডিসেম্বর ১৯৭১
জন্মস্থান
বাঘপাঁচড়া, নােয়াখালী
যােদ্ধা
১০নং সেক্টর
যুদ্ধ
রূপসা নদী (গানবােট পলাশ)
পদবি
ইঞ্জিনরুম আর্টিফিশার
কর্মস্থল
নৌবাহিনী
সমাধি
মােংলার রূপসা নদীর পাড়ে
রুহুল আমিন নিয়ােগ পান লাশের ইঞ্জিনরুম আর্টিফিশার হিসেবে। ৬ ডিসেম্বর মােংলা বন্দরে পাকিস্তানি নৌঘাটি পিএনএস তিতুমীর দখলের উদ্দেশ্যে ‘পদ্মা’, ‘পলাশ ও মিত্রবাহিনীর গানবােট পানভেল’ ভারতের হলদিয়া নৌঘাঁটি থেকে রওনা হয়।
৮ ডিসেম্বর সুন্দরবনের আড়াই বানকিতে বিএসএফের পেট্রোল ক্রাফট ‘চিত্রাঙ্গদা’ তাদের বহরে যােগ দেয়। ৯ ডিসেম্বর কোনাে বাধা ছাড়াই তারা হিরণ পয়েন্টে প্রবেশ করেন। পরদিন ১০ ডিসেম্বর ভাের ৪টায় তারা মােংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। সকাল ৭টায় কোনাে বাধা ছাড়াই তারা মােংলায় পৌঁছান। পেট্রোল ক্রাফট চিত্রাঙ্গদা মােংলাতেই অবস্থান নেয় এবং পানভেল, পদ্মা ও পলাশ সামনে অগ্রসর হতে থাকে। দুপুর ১২টায় তারা খুলনা শিপইয়ার্ডের কাছাকাছি পৌঁছান।
এ সময় আকাশে তিনটি জঙ্গিবিমান দেখা যায়। পদ্ম ও পলাশ থেকে বিমানের ওপর গুলিবর্ষণ করার অনুমতি চাইলে বহরের কমান্ডার বিমানগুলাে ভারতীয় বলে জানান। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে বিমানগুলাে পদ্মা ও পলাশের ওপর গুলি ও বােমাবর্ষণ শুরু করে। পলাশের কমান্ডার সবাইকে গানবােট ত্যাগ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু রুহুল আমিন পলাশেই অবস্থান নেন এবং আপ্রাণ চেষ্টা চালান গানবােটকে সচল রাখতে।
হঠাৎ শক্রর একটি গােলা পলাশের ইঞ্জিনরুমে আঘাত করে এবং তা ধ্বংস হয়ে যায়। শেষ মুহূর্তে রুহুল আমিন নদীতে লাফিয়ে পড়েন এবং আহত অবস্থায় কোনােক্রমে তীরে উঠতে সক্ষম হন। দুর্ভাগ্যক্রমে তীরে অবস্থানরত পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকাররা তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরবর্তীতে তার লাশ ১৭ ডিসেম্বর রূপসার পাড়ে সমাহিত করা হয়।
সম্মাননা
মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বীরত্ব ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করা হয়।
বিশেষ তথ্য
বীরশ্রেষ্ঠদের মধ্যে একমাত্র নৌবাহিনীর সদস্য বীরশ্রেষ্ঠ মাে. রুহুল আমিন।
বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর
বীরত্বের ঘটনা
মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ছিলেন ৭নং সেক্টরের মেহেদিপুরের (মালদহ জেলায়) সাব-সেক্টরের কমান্ডার। এ সময় লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী নুরুজ্জামান ৭নং সেক্টরের সেক্টর-কমান্ডার ছিলেন। মহিউদ্দিন পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে কানসার্ট, আরগরার হাট ও শাহপুরসহ কয়েকটি সফল অভিযানে অসাধারণ নৈপুণ্য ও সাহসিকতার পরিচয় দেন। ফলে ডিসেম্বর মাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জ দখলের জন্য তাঁকে একটি মুক্তিযােদ্ধা দলের নেতৃত্ব দেওয়া। হয়।
জন্ম
৭ মার্চ ১৯৪৯
মৃত্যু
১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১
জন্মস্থান
রহিমগঞ্জ, বরিশাল
যােদ্ধা
৭নং সেক্টর
যুদ্ধ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
পদবি
ক্যাপ্টেন
কর্মস্থল
সেনাবাহিনী
সমাধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
বিশেষ তথ্য
বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্তদের মধ্যে সর্বশেষ শহিদ।
১৩ ডিসেম্বর প্রত্যুষে তিনি এক প্লাটুন মুক্তিযােদ্ধাসহ রেহাইচরের মধ্য দিয়ে নৌকাযােগে মহানন্দা নদী পার হন এবং অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে শত্রুর বেশ কয়েকটি বাঙ্কার দখল করে নেন। পাকিস্তানি বাহিনী তখন পশ্চাদপসরণ করে নওয়াবগঞ্জ শহরে অবস্থান নেয় এবং একটি দালানের ছাদ থেকে মেশিনগানে অনবরত গুলি চালিয়ে মুক্তিযােদ্ধাদের শহরাভিমুখে অগ্রযাত্রা ঠেকিয়ে রাখে।
এই সংকটময় সময়ে মহিউদ্দিন শত্রুর মেশিনগান ধ্বংস করার পরিকল্পনা নেন। তিনি বা হাতে এসএমজি ও ডান হাতে একটি গ্রেনেড নিয়ে গােপনে ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে আসেন। হামাগুড়ি দিয়ে রাস্তা পার হয়ে তিনি দ্রুত মেশিনগানবাহী বাড়িটির দিকে ধাবিত হন। ত্বরিতগতিতে তিনি মেশিনগান বরাবর গ্রেনেড নিক্ষেপ করেন। বিস্ফোরিত গ্রেনেডের আঘাতে মেশিনগানের স্থলটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়।
অকস্মাৎ রাস্তার পাশের একটি দোতলা বাড়ি থেকে শক্রর একটি গুলি তাঁর কপালে বিদ্ধ হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এতে হতােদ্যম না হয়ে মুক্তিযােদ্ধারা সন্ধ্যার দিকে শত্রুর অবস্থানের ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়। গভীর রাত পর্যন্ত এ আক্রমণ অব্যাহত ছিল। পাকসেনারা শেষ পর্যন্ত রাতের অন্ধকারে নওয়াবগঞ্জ শহর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ভাের রাতে মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের মৃতদেহ উদ্ধার করে তাঁকে ছােটো সােনা মসজিদ প্রাঙ্গণে সমাহিত করা হয়।
সম্মাননা
মুক্তিযুদ্ধে বীরােচিত ভূমিকা ও আত্মদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মানসূচক বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করা হয়।
ডিসেম্বর মাসের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস ও প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো। এছাড়াও ডিসেম্বর মাসের সচেতনতা মাস ও গুরুত্বপূর্ণ সপ্তাহ নিয়ে নিচে আলোচনা করা হয়েছে।
ডিসেম্বর মাসের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসসমূহ
০১ ডিসেম্বর
বিশ্ব এইডস দিবস। প্রতিপাদ্য- সমতার বাংলাদেশ, এইডস ও অতিমারি হবে শেষ।
০১ ডিসেম্বর
মুক্তিযােদ্ধা দিবস
০২ ডিসেম্বর
আন্তর্জাতিক দাসতৃবিলােপ দিবস। প্রতিপাদ্য- দাসত্ব বর্ণবাদের উত্তরাধিকার বিলােপ বৈশ্বিক ন্যায়বিচারের জন্য বাধ্যতামূলক
০৩ ডিসেম্বর
৩০তম আন্তর্জাতিক ও ২৩তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস। প্রতিপাদ্য— কোভিড়ােত্তর বিশ্বের টেকসই উন্নয়ন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণ।
০৪ ডিসেম্বর
জাতীয় বস্ত্র দিবস। প্রতিপাদ্য- বস্ত্রখাতের বিশ্বায়ন: বাংলাদেশের উন্নয়ন।
০৪ ডিসেম্বর
আন্তর্জাতিক ব্যাংক দিবস
০৫ ডিসেম্বর
বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস। প্রতিপাদ্য- লবণাক্ততা রােধ করি, মাটির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করি।
০৫ ডিসেম্বর
আন্তর্জাতিক নিনজা দিবস।
০৫ ডিসেম্বর
আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস। প্রতিপাদ্য- Volunteer now for our common future
০৭ ডিসেম্বর
আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল দিবস। প্রতিপাদ্য- Advancing Innovation for Global Aviation Development
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস। প্রতিপাদ্য— শতবর্ষে জাতির পিতা, সুবর্ণে স্বাধীনতা, অভিবাসনে আনবাে মর্যাদা ও নৈতিকতা।
১৮ ডিসেম্বর
আরবি ভাষা দিবস।
১৯ ডিসেম্বর
বাংলা ব্লগ দিবস।
২০ ডিসেম্বর
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (BGB) দিবস।
২০ ডিসেম্বর
আন্তর্জাতিক মানবিক সংহতি দিবস। প্রতিপাদ্য—Cultural equality, Social justice (প্রতিপাদ্য প্রতি বছর একই থাকে)।
২৭ ডিসেম্বর
আন্তর্জাতিক মহামারি প্রস্তুতি দিবস (২০২০ সালে প্রথমবারের মতাে পালিত হয়)।
সপ্তাহ
১০-১৫ ডিসেম্বর : ভ্যাট সপ্তাহ ২০২১।
১১-১৪ ডিসেম্বর : ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানাে হয়।
১৯-২০ ডিসেম্বর : বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (BGB) দিবস।
সম্মেলন-বৈঠক
ইন্টারপােল সম্মেলন
আয়ােজন : ৮৯তম।
সময়কাল : ২৩-২৫ নভেম্বর ২০২১
স্থান : তুরস্ক।
ফোবানা সম্মেলন
আয়ােজন : ৩৫তম।
আয়ােজক : ফেডারেশন অব বাংলাদেশি অ্যাসােসিয়েশন্স ইন নর্থ আমেরিকা (FOBANA)
সময়কাল : ২৬-২৮ নভেম্বর ২০১১।
স্থান : গ্যালর্ড ন্যাশনাল রিসাের্ট অ্যান্ড কনভেনশন সেন্টার, মেরিল্যান্ড; যুক্তরাষ্ট্র।
৩৬তম ROBANA সম্মেলন ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত হবে ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শিকাগােতে। আর ২০২৩ সালে ৩৭তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে টেক্সাস রাজ্যের ডালাসে।
বিশ্ব শান্তি সম্মেলন
সময়কাল : ৪-৫ ডিসেম্বর ২০২১
স্থান : ঢাকা, বাংলাদেশ।
অংশগ্রহণকারী দেশ : ৫০টি
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষে বিশেষ আয়ােজন।
ASEM শীর্ষ সম্মেলন
ASEM-Asia-Europe Meeting
আয়ােজন : ১৩তম
সময়কাল : ২৫-২৬ নভেম্বর ২০২১
স্থান : নমপেন, কম্বােডিয়া
মেলা-উৎসব
ওয়ার্ল্ডওয়াইড মিউজিক এক্সপাে
সময়কাল’: ২৭-৩১ অক্টোবর ২০২১
স্থান : পাের্তো, পর্তুগাল।
অংশগ্রহণকারী দেশ : ১০২টি।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এ সংগীত সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতাে অংশ নেয় চিরকুট ব্যান্ডের শারমিন সুলতানা সুমি।
সাহিত্য-সংস্কৃতি
উপাখ্যান : বাংলাদেশের ইতিহাস। এবং রাজনৈতিক ধারাবাহিকতায় নতুন প্রজন্মের চিন্তা-ভাবনা, ধ্যান-ধারণা, জীবনবােধ ও রাজনীতির সমন্বয়ে রচিত গ্রন্থ। লেখক রাশেক রহমান। মােড়ক উন্মোচন ২ ডিসেম্বর ২০২১।
বঙ্গবন্ধুর বিজ্ঞান ভাবনা ও বাংলাদেশ : বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (BCSIR) প্রকাশিত স্মারক গ্রন্থ। মােড়ক উন্মোচন ১৩ ডিসেম্বর ২০২১। গ্রন্থে প্রধানমন্ত্রীসহ দেশের খ্যাতিমান ৫৯. বিজ্ঞানী, গবেষক, শিল্পী, কবি ও শিক্ষাবিদের প্রবন্ধ সন্নিবেশ করা হয়।
নেতা মােদের শেখ মুজিব : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সম্পাদিত গবেষণাধর্মী গ্রন্থ। মােড়ক উন্মোচন ৭ ডিসেম্বর ২০১১। ৫১৬ পৃষ্ঠার এ গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি পরিমার্জন ও সংশােধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।