বিসিএস প্রিলিমিনারী প্রস্তুতিসাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্নোত্তর নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো। আপনারা যারা বিসিএস প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাদের জন্য লেখাটি সহায়ক হবে। তো চলুন লেখাটি পড়ে নেয়া যাক-
বিসিএস প্রিলিমিনারী প্রস্তুতি সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
প্রশ্ন : প্রাচীন জনপদ পুণ্ড্রবর্ধন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় বিভাগে পরিণত হয়— উত্তর : গুপ্ত যুগে।
এই বিভাগের আরো পোস্ট :
প্রশ্ন : বাঙালি জাতির প্রধান অংশ গড়ে উঠেছে— উত্তর : অস্ট্রিক জাতিগােষ্ঠী থেকে।
প্রশ্ন : বাংলার প্রথম স্বাধীন ও সার্বভৌম রাজা ছিলেন— উত্তর : শশাঙ্ক।
প্রশ্ন : ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করে— উত্তর : ১৭৬৫ সালে।
প্রশ্ন : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রতিষ্ঠিত হয়— উত্তর : ৭ এপ্রিল ১৯৪৮।
প্রশ্ন : পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশ গঠনকালে ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয় ছিলেন— উত্তর : লর্ড কার্জন।
প্রশ্ন : ভূপ্রকৃতি অনুযায়ী বাংলাদেশকে ভাগ করা হয়েছে— উত্তর : তিনটি অঞ্চলে।
প্রশ্ন : পাকিস্তান গণপরিষদ বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দিয়ে একটি বিল পাস করে— উত্তর : ৯ মে ১৯৫৪।
প্রশ্ন : যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রিসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দায়িত্বে ছিলেন— উত্তর : কৃষি, সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের।
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণটিকে ইউনেসকোর মেমােরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড আন্তর্জাতিক তালিকায় স্থান দেয়— উত্তর : ৩০ অক্টোবর ২০১৭।
প্রশ্ন : বাংলাদেশে 5G সেবা চালু হয়— উত্তর : ১২ ডিসেম্বর ২০১১।
প্রশ্ন : মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হলে সংবিধানের যে ধারায় মামলার ক্ষমতা দেওয়া আছে— উত্তর : ১০২।
প্রশ্ন : বাংলাদেশের সমুদ্র অঞ্চলের পরিমাণ মােট— উত্তর : ১,১৮,৮১৩ বর্গকিলােমিটার।
প্রশ্ন : উত্তর-পশ্চিমাংশের বরেন্দ্রভূমি, মধ্যভাগের মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় গঠিত হয়েছে— উত্তর : প্লাইস্টোসিনকালে।
প্রশ্ন : ২০২২-২৩ অর্থবছরের মােট বাজেট— উত্তর : ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।
প্রশ্ন : ভারত-বাংলাদেশ গঙ্গা নদীর পানি চুক্তি কার্যকর হয়— উত্তর : ১২ ডিসেম্বর ১৯৯৬
প্রশ্ন : বাংলাদেশ সংবিধানের প্রথম সংশােধনীর উদ্দেশ্য ছিল— উত্তর : ৯৩ হাজার যুদ্ধবন্দীর বিচার অনুষ্ঠান।
প্রশ্ন : আমার সােনার বাংলা গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে— উত্তর : ৩ মার্চ ১৯৭১।
প্রশ্ন : বাংলাদেশে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে পৃথকীকরণ করা হয়— উত্তর : ১ নভেম্বর ২০০৭।
প্রশ্ন : সাংগ্রাই বর্ষবরণ অনুষ্ঠান পালন করে— উত্তর : মারমা উপজাতি।
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী থেকে আরো কিছু প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন : সােয়াচ অব নাে গ্রাউন্ড অবস্থিত- উত্তর : বঙ্গোপসাগরে।
প্রশ্ন : ভুটান, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত আন্তসীমান্ত নদী— উত্তর : দুধকুমার।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ কমনওয়েলথের সদস্যপদ লাভ করে— উত্তর : ১৮ এপ্রিল ১৯৭২।
প্রশ্ন : বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল আদমশুমারি পরিচালিত হয়— উত্তর : ১৫ থেকে ২১ জুন ২০১২।
প্রশ্ন : ২০২২ সালে জাতিসংঘের ‘দ্যাগ হ্যামারশােল্ড’ পদক (মরণােত্তর) পেয়েছেন— উত্তর : ২ জন বাংলাদেশি।
প্রশ্ন : বর্তমানে বাংলাদেশে নিবন্ধিত ভৌগােলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য— উত্তর : ১০টি।।
প্রশ্ন : পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধন করা হয়— উত্তর : ২৫ জুন ২০১২।
প্রশ্ন : বাংলার প্রথম স্বাধীন সুলতান— উত্তর : ফখরুদ্দিন মােবারক শাহ।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার নামকরণ ‘মুজিবনগর’ করেন— উত্তর : তাজউদ্দীন আহমদ।
প্রশ্ন : বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হতে থাকে— উত্তর : ২০০০ সাল থেকে।
প্রশ্ন : বাংলাদেশের সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত অঞ্চল- উত্তর : রাজশাহী।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্বাদশ গভর্নর উত্তর : আব্দুর রউফ তালুকদার।
প্রশ্ন : ব্রুনাই কিং যে ফলের নাম— উত্তর : আম।
প্রশ্ন : অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মেয়াদ— উত্তর : ২০২১-২০২৫।
প্রশ্ন : ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের (১১৭৬) সময় বাংলার গভর্নর ছিলেন— উত্তর : লর্ড কার্টিয়ার।
বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে চলতি ঘটনার ধারাবাহিক আলােচনায় এবার থাকছে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম, পরিবার, বেড়ে ওঠা, শিক্ষাজীবন ও রাজনীতিতে হাতেখড়ি সম্পর্কে।
বঙ্গবন্ধুর জন্ম
বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ (বুধবার) তৎকালীন গােপালগঞ্জ মহকুমার পাটগাতী ইউনিয়নের টুঙ্গিপাড়া গ্রামের ঐতিহ্যবাহী শেখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন জন্মের পর নানা শেখ আবদুল মজিদ তাঁর নাম রাখেন মুজিব মুজিব’ শব্দের অর্থ সঠিক উত্তরদাতা
এই বিভাগের আরো পোস্ট :
পরিবার
বঙ্গবন্ধুর পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান এবং মাতা সায়েরা খাতুন তাঁর পিতা পেশায় ছিলেন মাদারীপুর মহকুমায় দেওয়ানি কোর্টের সেরেস্তাদার মা ছিলেন গৃহিণী ছয় ভাইবােনের (চার বােন ও দুই ভাই) মধ্যে বঙ্গবন্ধু ছিলেন সবার মধ্যে তৃতীয়, ভাইদের মধ্যে বড় বঙ্গবন্ধুর ডাকনাম ছিল ‘খােকা বঙ্গবন্ধুর স্ত্রীর নাম বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বঙ্গবন্ধু তাঁকে ‘রেণু’ নামে ডাকতেন বঙ্গবন্ধু পাঁচ সন্তানের (শেখ হাসিনা, শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রেহানা ও শেখ রাসেল) পিতা ছিলেন
শিক্ষাজীবন
স্কুলজীবন: বঙ্গবন্ধু ১৯২৭ সালে সাত বছর বয়সে স্থানীয় গিমাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন ওই স্কুলে তিনি তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন এরপর তিনি গােপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় (১৯৩৪ সালে) বঙ্গবন্ধুর চোখের রােগ দেখা দেয় হঠাৎ বেরিবেরি রােগে আক্রান্ত হয়ে তার হার্ট দুর্বল হয়ে পড়ে কলকাতার বড় ডাক্তার শিবপদ ভট্টাচার্য, এ কে রায় চৌধুরী, আরও অনেকে বঙ্গবন্ধুর চিকিৎসা করেন
প্রায় দুই বছর পর ১৯৩৬ সালে আবার চোখের সমস্যা দেখা দেয় এ সময় বঙ্গবন্ধু মাদারীপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলেন এ সময় গ্লকোমা নামের একটি রােগ দেখা দেয় এবং ডাক্তার অপারেশনের পরামর্শ দেন ডাক্তারটি আহমেদ কলকাতা মেডিকেল কলেজে বঙ্গবন্ধুর চোখের অপারেশন করেন চোখের অসুখের কারণে বঙ্গবন্ধুর চার বছর পড়াশােনায় বিঘ্ন ঘটে ১৯৩৭ সালে বঙ্গবন্ধু আবার পড়াশােনা শুরু করেন
তবে এবার আর পুরােনাে স্কুলে নয়, কারণ তার সহপাঠীরা তাকে পেছনে ফেলে গেছেন বঙ্গবন্ধুর পিতা শেখ লুঙ্কর রহমান ছেলেকে গােপালগঞ্জ মিশন স্কুলে ভর্তি করে দেন এ স্কুল থেকেই ১৯৪২ সালে বঙ্গবন্ধু এন্ট্রান্স (এসএসসি) পাস করেন এরপর তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য কলকাতায় চলে যান ভর্তি হন ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমান মওলানা আজাদ কলেজ) ওই কলেজ থেকে তিনি ১৯৪৪ সালে আইএ পাস করে একই কলেজ থেকে ১৯৪৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ পাস করেন
সে বছর ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হলে তিনি কলকাতা থেকে জন্মভূমি পূর্ববঙ্গে চলে আসেন ১৯৪৭ সালের ১ ডিসেম্বর উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ১৯৪৭-৪৮ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৬০৫৷ ক্লাস রােল ছিল ১৬৬
বঙ্গবন্ধুর পিতার ইচ্ছা ছিল ছেলে আইনজীবী হবেন প্রয়ােজনে রাজনীতিও করবেন বঙ্গবন্ধুর পিতা শেখ লুত্যর রহমান বঙ্গবন্ধুকে লন্ডনে গিয়ে ব্যারিস্টারি পড়ে আসার জন্য বলেছিলেন এ জন্য তিনি সব সম্পত্তি বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু বঙ্গবন্ধু পিতার সম্পত্তি বিক্রির অর্থে ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য লন্ডনে যেতে রাজি হননি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ছাত্রজীবন ছিল খুবই সংক্ষিপ্ত
তাঁর ছাত্রজীবনের উল্লেখযােগ্য সময় কাটে কলকাতায় তিনি সেখানে একাধারে ছয় বছর (১৯৪২-৪৭) ছাত্রজীবন অতিবাহিত করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ছাত্রজীবনের স্থায়িত্ব ছিল মাত্র ১৫ মাস ১৯৪৯ সালের ৩ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা বিভিন্ন দাবিতে ধর্মঘট করেন বঙ্গবন্ধু তাঁদের এ দাবির প্রতি সমর্থন করতে গিয়ে ছাত্রত্ব হারান বঙ্গবন্ধুর বহিষ্কার আদেশের তারিখ ২৬ মার্চ ১৯৪৯ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১০
বঙ্গবন্ধুর শিক্ষকগণ : বঙ্গবন্ধুকে বাসায় পড়াতেন কাজী আবদুল হামিদ এমএসসি বঙ্গবন্ধু রাজনীতির প্রথম দীক্ষা গ্রহণ করেন হােসেন শহীদ সােহরাওয়ার্দীর কাছ থেকে সােহরাওয়ার্দী তাই শেখ মুজিবের রাজনৈতিক জীবনের দীক্ষাগুরু তিনি রাজনীতির মাঠে যাত্রা শুরু করেছিলেন ১৯৩৯ সালে, মিশনারি স্কুলে পড়ার সময় থেকেই এ বছর স্কুল পরিদর্শনে এসেছিলেন তদানীন্তন অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক এবং পরে বাংলার প্রধানমন্ত্রী এমনকি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী হােসেন শহীদ সােহরাওয়ার্দী বঙ্গবন্ধু স্কুলের ছাদ সংস্কারের দাবির ওপর ভিত্তি করে একটি দল নিয়ে তাঁদের কাছে যান যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি বঙ্গবন্ধু ১৯৪০ সালে নিখিল ভারত মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যােগ দেন পরে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে তিনি সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে যােগ দেন
প্রশ্নোত্তরে বঙ্গবন্ধু
১. বঙ্গবন্ধু কোথায় কখন জন্মগ্রহণ করেন? উত্তর : ১৭ মার্চ ২০২০ সালে, তকালীন গােপালগঞ্জ মহকুমার পাটগাতী ইউনিয়নের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে
২. বঙ্গবন্ধুর পিতার নাম কী? উত্তর : শেখ লুৎফর রহমান
৩. বঙ্গবন্ধুর মাতার নাম কী? উত্তর : সায়েরা বেগম
৪. জাতির জনক বঙ্গবন্ধু পিতা-মাতার কততম সন্তান | ছিলেন? উত্তর : তৃতীয়, ভাইদের মধ্যে বড়
৫. জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কয় ভাইবােন ছিলেন? উত্তর : চার বােন ও দুই ভাই (ছয় ভাইবােন ছিলেন)
৬. জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ডাকনাম কী ছিল? উত্তর : খােকা
৭. গ্রামবাসী বঙ্গবন্ধুকে কী নামে ডাকতেন? উত্তর : মিয়াভাই
৮. মুজিব শব্দের অর্থ কী? উত্তর : উত্তরদাতা বা সঠিক উত্তরদাতা
৯. বঙ্গবন্ধুর স্ত্রীর নাম কী ছিল? উত্তর : বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব
১০. বঙ্গবন্ধুর মােট কয়জন সন্তান? উত্তর : পাঁচজন (তিন ছেলে দুই মেয়ে)
১১. বঙ্গবন্ধুর স্কুলজীবন কোথায় শুরু হয়? উত্তর : ১৯২৭ সালে সাত বছর বয়সে স্থানীয় গিমাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে
১২. গিমাডাঙ্গা স্কুলে বঙ্গবন্ধু কোন ক্লাস পর্যন্ত পড়ালেখা করেন? উত্তর : তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত
১৩. বঙ্গবন্ধু চতুর্থ শ্রেণিতে কোথায় ভর্তি হন? উত্তর : গােপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে
১৪.কোন শ্রেণিতে পড়ার সময় বঙ্গবন্ধুর চোখের রােগ দেখা দেয়? উত্তর : সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময়, ১৯৩৪ সালে
১৫. কোথায় বঙ্গবন্ধুর চোখের চিকিৎসা হয়? উত্তর : কলকাতায়
১৬. বঙ্গবন্ধু গােপালগঞ্জ মিশন স্কুলে কোন শ্রেণিতে ভর্তি হন? উত্তর : সপ্তম শ্রেণিতে, ১৯৩৭ সালে
১৭. চোখের রােগের কারণে বঙ্গবন্ধুর মােট কত বছর পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটে? উত্তর : চার বছর
১৮. বঙ্গবন্ধু কত সালে, কোন স্কুল থেকে এন্ট্রাস (এসএসসি) পাস করেন? উত্তর : ১৯৪২ সালে গােপালগঞ্জ মিশন স্কুল থেকে
১৯. কোথায় বঙ্গবন্ধু উচ্চমাধ্যমিক পড়াশােনা করেন? উত্তর : কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমান মওলানা আজাদ কলেজ)
২০. কোন কলেজ থেকে বঙ্গবন্ধু আইএ বা উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন? উত্তর : কলকাতার ইসলামিয়া কলেজ থেকে, ১৯৪৪ সালে
২১. কোন কলেজ থেকে বঙ্গবন্ধু বিএ পাস করেন? উত্তর : কলকাতার ইসলামিয়া কলেজ থেকেই ১৯৪৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইতিহাস ও | রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ পাস করেন
২২. বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন বিষয়ে কত সালে ভর্তি হয়েছিলেন? উত্তর : আইন বিভাগে, ১৯৪৭ সালের ১ ডিসেম্বর
২৩. কার অনুপ্রেরণায় বঙ্গবন্ধু আইন বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন? উত্তর : তাঁর পিতা শেখ লুৎফর রহমান
২৪. বঙ্গবন্ধুর প্রিয় কবি ছিলেন কারা? উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, সুকান্ত ভট্টচার্য ও জীবনানন্দ অন্যতম
২৫. বিদেশি লেখকদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর প্রিয় লেখক কারা ছিলেন? উত্তর : কার্ল মার্ক্স, বার্ট্রান্ড রাসেল, বার্নাড শ প্রমুখ
২৭. বঙ্গবন্ধু কত সাল থেকে নিয়মিত চশমা পরা শুরু করেন? উত্তর : ১৯৩৬ সাল থেকে
২৮. অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে শুরুতেই বঙ্গবন্ধু কোন ও রাজনৈতিক নেতার কথা স্মরণ করেন? উত্তর : হােসেন শহীদ সােহরাওয়ার্দীর কথা
২৯. শেখ বংশের গােড়াপত্তন করেন কে? উত্তর : শেখ বােরহানউদ্দিন
৩০. স্কুলজীবনে বঙ্গবন্ধু কোন কোন খেলা খেলতেন? উত্তর : ফুটবল, ভলিবল ও হকি :
৩১. স্কুলজীবনে বঙ্গবন্ধু পিতা ছাড়া আরেকজনকে ভয় পেতেন, তিনি কে? উত্তর : আবদুল হাকিম মিয়া তিনি তাঁর পিতার অন্তরঙ্গ বন্ধু ছিলেন
৩২. বঙ্গবন্ধু ইসলামিয়া কলেজের বেকার হােস্টেলের কত নম্বর কক্ষে থাকতেন? উত্তর : ২৪ নম্বর
ফ্রান্সের দৈনিক পত্রিকা লা ফিগারাের ১ সেপ্টেম্বর সংখ্যায় প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান বলেন, শেখ মুজিব কারাগারে আছেন এবং জীবিত আছেন। তবে তিনি কোন কারাগারে আছেন, তা তিনি জানেন না।
২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ২ সেপ্টেম্বর মুজিবনগরে সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভারতে আশ্রয় নেওয়া সব শরণার্থীকে সসম্মানে নিজ নিজ বাস্তুভিটায় পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
এই বিভাগের আরো পোস্ট :
৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গতিবিধি লক্ষ করার জন্য যশােরের শার্শা-গােয়ালহাটিতে ৫ সেপ্টেম্বর নিয়ােজিত ছিল। মুক্তিযােদ্ধাদের একটি প্যাট্রল দল। দলের অধিনায়ক ছিলেন ইপিআরের সাবেক সদস্য নূর মােহাম্মদ শেখ। পাকিস্তান সেনাবাহিনী এই দলের অবস্থান টের পেয়ে যায়। তারা দ্রুত তিন দিক থেকে তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। নূর মােহাম্মদ সহযােদ্ধাদের কাভার করার দায়িত্ব তুলে নেন নিজের হাতে। একাই লড়াই করতে করতে নূর মােহাম্মদ শেখ শহীদ হন। স্বাধীনতার পর নূর মােহাম্মদ শেখকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি দেওয়া হয়।
৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
যুক্তরাজ্য ও বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের দূত বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী এই দিন নরওয়ে থেকে সুইডেনের রাজধানী স্টকহােমে যান। স্টকহােমে আবু সাঈদ চৌধুরী নােবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ গুনার মিরডালের সঙ্গে দেখা করেন। আবু সাঈদ চৌধুরী তাঁকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে স্থানীয় বাংলাদেশ অ্যাকশন কমিটির চেয়ারম্যান পদ গ্রহণের অনুরােধ করলে মিরডাল রাজি হন।
৮ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
ভারত সফররত যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ এবং ভারতে দেশটির সাবেক রাষ্ট্রদূত অধ্যাপক জন কেনেথ গলব্রেথ ৮ সেপ্টেম্বর কলকাতায় সাংবাদিকদের বলেন, পূর্ব বাংলায় পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী যে ব্যাপক গণহত্যা চালিয়েছে, এ ব্যাপারে তাঁর কোনাে সন্দেহ নেই।
১১ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
অস্ট্রেলিয়ার প্রায় ৫০০ শিক্ষাবিদ, সংসদ সদস্য, সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও ধর্মীয় নেতা ১১ সেপ্টেম্বর এক আবেদনে দেশটির সরকারকে অবিলম্বে পাকিস্তানে সাহায্য বন্ধ করার অনুরােধ জানান। একই সঙ্গে ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের শরণার্থীদের অর্থ সাহায্য বাড়িয়ে ৫০ লাখ ডলার করার অনুরােধ করেন তারা।
১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
চাকরিসূত্রে বিদেশে কর্মরত পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাঙালি কূটনীতিকদের প্রতি বাংলাদেশ সরকার ১৫ সেপ্টেম্বর একটি নির্দেশ জারি করে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে নির্দেশে বলা হয়, এই সময়ের মধ্যে আনুগত্য প্রকাশ না করলে তাদের বিশ্বাসঘাতক বলে চিহ্নিত করা হবে।
১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
এই দিনে বিশ্বখ্যাত ফরাসি লেখক ও ভাবুক অঁদ্রে মালরাে প্যারিসে এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশে গিয়ে তিনি বাঙালি মুক্তিযােদ্ধাদের সঙ্গে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সংগ্রামে যােগ দেওয়ার জন্য তৈরি রয়েছেন। তার এই বিবৃতি বিভিন্ন দেশের সংবাদপত্র গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে।
১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সম্পর্কে তিন ৪ দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য একটি আন্তর্জাতিক ব্রিগেড গড়ে তােলার প্রস্তাব করা হয়। নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বি পি কৈরালা এবং ভারতীয় লােকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ এ প্রস্তাব করেন।
২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
জাদুকর পি সি সরকার (জুনিয়র) পূর্বপ্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, ২২ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হাতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহযােগিতা স্বরূপ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন। উত্তর ভারতের জাদু প্রদর্শনী থেকে এ অর্থ তিনি আয় করেন।
২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ২৫ সেপ্টেম্বর স্বাধীন বাংলা বেতারে দেওয়া এক ভাষণে বলেন, বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনীকে নৌ ও বিমান দিয়ে সাজানাে হচ্ছে। বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের ছয় মাস পূর্তি উপলক্ষে এ ভাষণে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ও চালনা বন্দরে মুক্তিবাহিনীর নৌ শাখা ইতিমধ্যে বেশ কটি জাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছে।
২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের দলনেতা বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদস্যদেশগুলাের প্রতি আবেদন জানিয়ে বলেন, তারা যেন নিয়মকানুনের খুঁটিনাটিতে আটকে না থেকে সত্য, ন্যায় ও মানবতার স্বার্থে বাংলাদেশ নামে বাস্তবতার দিকে দৃষ্টিপাত করে তাকে স্বীকৃতি দেয়। নিউইয়র্কে বার্তা সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ওপর পাকিস্তানের জঙ্গি শাসকগােষ্ঠীর বর্বরতার প্রতিবাদে ঢাকার বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক টাইগারম্যান এদিন পদত্যাগ করেন। তিনি কলকাতায় এ কথা ঘােষণা করেন।
৩০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
সােভিয়েত ইউনিয়নের শান্তি কমিটি ৩০ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অপরাপর নেতার প্রতি উৎপীড়ন বন্ধ করার জন্য আহ্বান জানায়। বিবৃতিতে বঙ্গবন্ধুর জীবন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। কমিটি সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানে পূর্ব বাংলার জনগণের ইচ্ছা, অধিকার ও স্বার্থের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানায়।
বাংলাদেশের দারিদ্র্য দূরীকরণ ও অর্থনীতিতে অভাবনীয় সাফল্য : নিউজউইক, যুক্তরাষ্ট্র
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী নিউজউইকের সর্বশেষ সংস্করণে বাংলাদেশের অভাবনীয় অর্থনৈতিক ও দারিদ্র্য দূরীকরণের সাফল্য নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ২০২১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করেছে। অত্যন্ত শক্তিশালী অবস্থান নিয়ে দেশটি দ্বিতীয় অর্ধশতকে প্রবেশ করেছে।
বাংলাদেশ বর্তমানে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলাের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির মধ্যে অন্যতম একটি দেশ। অর্থনীতির প্রধান খাতগুলােতে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দারিদ্র্য বিমােচনে উল্লেখযােগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। এক দশকের বেশি সময় ধরে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রাজ্ঞ ও শক্তিশালী নেতৃত্ব দিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন।
এই বিভাগের আরো পোস্ট :
বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে সমৃদ্ধ দেশ গড়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশীয় উদ্যোক্তাদের হাত ধরে শিল্প খাতের উন্নয়ন বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে একটি শিল্পপ্রধান রাষ্ট্রে পরিণত করার দিকে নিয়ে গেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শিল্প খাতের অবদান ২০১০ সালে ২০ শতাংশের কম ছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ হয়েছে। বাংলাদেশের মােট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) উৎপাদন খাতের অবদান ১৯৮০ সালের পর থেকে দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। নব্বইয়ের দশকের তুলনায় রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে ২০ গুণ।
টেক অ্যাওয়ে ফ্রম বাংলাদেশস লিডারশিপ : দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, পাকিস্তান
বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্যারিশমেটিক নেতৃত্বের প্রশংসা করে পাকিস্তানকে তার থেকে শেখার পরামর্শ এসেছে দেশটির শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক নিবন্ধে। টেক অ্যাওয়ে ফ্রম বাংলাদেশস লিডারশিপ’ শিরােনামে ২ আগস্ট ২০২২ প্রকাশিত নিবন্ধটির লেখক সাহেবজাদা রিয়াজ নুর। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সাহেবজাদা রিয়াজ নুর পাকিস্তানের খাইবারপাখতুনখােয়া প্রদেশের মুখ্য সচিব ছিলেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের নেতৃত্ব বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে।
তবে প্রধান পদক্ষেপটি হওয়া উচিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির । প্রতি শেখ হাসিনার অগ্রাধিকারের বিষয়টি অনুসরণ করা, যা প্রতিরক্ষা ও গণতন্ত্র উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশ উল্লেখযােগ্য অর্থনৈতিক পরিবর্তনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, এ উন্নয়নের কৃতিত্ব দেশটির নেতৃত্বকে দেওয়া যেতে পারে । সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেছেন, এই সেতুকে দেশের গর্ব ও সামর্থ্যের প্রতীক আখ্যা দিয়েছেন তিনি। শেখ হাসিনা ১৯৯০-এর দশক থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমস্যা ও পরিকল্পনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
তিনি রাজনৈতিক প্রভাবের সঙ্গে অর্থনৈতিক নীতির ভারসাম্যের দিকে মনােযােগ দিয়েছেন। তিনি অন্য এশিয়ান দেশগুলাে থেকে শিখেছেন, যাদের অর্থনৈতিক সাফল্যের ভিত্তি চারটি। ভিত্তিগুলাে হলাে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সামাজিক উন্নয়ন, রপ্তানিকেন্দ্রিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বাণিজ্যনীতি উদারীকরণ ও আর্থিক সংযম। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক দূরদর্শী ও দৃঢ়প্রত্যয় ধারণ করেছেন। অর্থনৈতিক অগ্রগতিই দেশের দারিদ্র্য বিমােচনের একমাত্র উপায়। ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে টেকসই প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। পাকিস্তানের তুলনায় ১৯৭০ সালে দেশটি ৭৫ শতাংশ দরিদ্র ছিল, কিন্তু এখন পাকিস্তানের চেয়ে ৪৫ শতাংশ ধনী।
পাকিস্তানের তুলনায় ১৯৭০ সালে বাংলাদেশ অংশে জনসংখ্যা ১ কোটি বেশি ছিল। আর এখন পাকিস্তানের ২৩ কোটি জনসংখ্যার বিপরীতে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ। ২০২১ সালে বাংলাদেশের রপ্তানি ৪৭ বিলিয়ন ডলার, পাকিস্তানের ২৮ বিলিয়ন ডলার। পাকিস্তানের ১ হাজার ৫৪৩ ডলারের তুলনায় বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ ডলার। বাংলাদেশে ২০২২ সালে মােট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৪১১ বিলিয়ন, পাকিস্তানে তা ৩৪৭ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশে বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশ, পাকিস্তানে আগে যা ছিল ১২-১৫ শতাংশ।
পাকিস্তানে বর্তমানে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ২১ শতাংশ হয়েছে। ভবিষ্যতে এই হার আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া পাকিস্তানি রুপির তুলনায় বাংলাদেশি টাকা অনেক শক্তিশালী। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নারীর অধিক হারে অংশগ্রহণের পাশাপাশি সাক্ষরতার হার অনেক বেশি। বাংলাদেশের উদাহরণ অনুসরণ করে পাকিস্তানি নেতৃত্বকে অবশ্যই জাতীয় লক্ষ্য হিসেবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথ অনুসরণ করতে হবে এবং আঞ্চলিক শান্তির পাশাপাশি সাংবিধানিক শাসন এগিয়ে নিতে হবে। ভূ-অর্থনৈতিক সংকট সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল রয়েছে : দ্য ইকোনমিক টাইমস (ইটি), ভারত পােশাকশিল্প ও বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের পাঠানাে বৈদেশিক মুদ্রা দেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি হওয়ায় অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।
ভারতীয় সংবাদপত্র দ্য ইকোনমিক টাইমসের (ইটি) কূটনৈতিক সম্পাদক দীপাঞ্জন রায় চৌধুরী ১ আগস্ট ২০২২ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে লিখেছেন, অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব ছাড়াও রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের বিষয়টি অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে বদ্ধপরিকর। মহামারির প্রাথমিক পর্যায়ে বলা হয়েছিল, অনেকে এটি ধরে নিয়েছিল, অনেক প্রবাসী চাকরি হারানােয় রেমিট্যান্স কমে যাবে।
তবে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার সফলতার কারণে অনেক বাংলাদেশি বিদেশে তাদের নিজ কর্মস্থলে ফিরে গেছেন। এবং তারা মহামারির আগের হারে টাকা পাঠাচ্ছেন। বিশ্বব্যাংক (ডব্লিউবি)-আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ২০২২ সালের বসন্তকালীন বৈঠকে কোভিড-১৯ মহামারি মােকাবিলা ও এর প্রভাব থেকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সফলভাবে নীতি বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে। ভিশন ২০৪১ নামে বাংলাদেশ নিজেই একটি রােডম্যাপ দিয়েছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে, চরম দারিদ্র্যের অবসান ঘটানাে ও ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত জাতিতে পরিণত হওয়া।
দেশ বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি করছে উল্লেখ করে নিবন্ধে বলা হয়, কৃষি থেকে ফার্মাসিউটিক্যালস ও জাহাজ নির্মাণ থেকে গার্মেন্টস, দেশের শিল্পের ভিত্তি বহুমুখী হচ্ছে এবং এর রপ্তানি বাড়ছে। বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ রয়েছে, কিন্তু অর্থনীতিকে একই সমান গতিতে সচল রাখতে কর্তৃপক্ষ তৎপর রয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন, বিদেশ থেকে প্রেরিত রেমিট্যান্সের ওপর নগদ অর্থ পুরস্কার এবং বিলাস দ্রব্যের ওপর কর আরােপ—সবই দেশটির রিজার্ভ তৈরি করতে সাহায্য করছে, যাতে আমদানির চাহিদা সহজে পূরণ করতে পারে। এরই মধ্যে সরকারের রপ্তানি বাড়ানাে ও আমদানি কমানাের নীতি অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সাহায্য করছে। নিবন্ধে আরও বলা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলেছিলেন, অথচ সেই বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে।
সম্প্রতি পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলাে পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল, তারা এখন। নির্মাণকাজ সমাপ্তিতে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৫ জুন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত করা এই সড়ক-রেলসেতু (পদ্মা সেতু) উদ্বোধন করেন, যা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন। ডলার।
সামাজিক গণমাধ্যমে চালানাে বাংলাদেশবিরােধী একটি মিথ্যা অপপ্রচার ধরা পড়েছে বিশ্বখ্যাত সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের ফ্যাক্ট চেক বা সত্যতা নিরূপণপ্রক্রিয়ায়। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৭ আগস্ট ২০২২ ‘ওয়াল স্ট্রিট সিলভার’ নামের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে পােস্ট দেওয়া হয় যে বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিভিন্ন শহরে তীব্র গােলযােগ হচ্ছে। এর সঙ্গে আপলােড করা হয় রাস্তায় টায়ার পােড়ানাে ও মুহুর্মুহু। সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দের একটি অডিও-ভিডিও ক্লিপ।
হাজার ছাড়িয়ে যাওয়া ভিউয়ের পােস্টটির সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে বিশ্বখ্যাত সংবাদ সংস্থা রয়টার্স দেখে, ভিডিও ক্লিপটি ৯ বছর আগের ২০১৩ সালের ৬ মে ঢাকায় হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময়ের। ১১ আগস্ট ২০২২ রয়টার্স প্রকাশিত ‘ফ্যাক্ট চেক : বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদের ভিডিওটি ২০২২ সালের নয়, ২০১৩ সালের’ (Fact Check: Video does not show 2022 fuel protests in Bangladesh, it dates to 2013) শিরােনামের সংবাদে বলা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি-সংকটের মধ্যে বিশ্বের দ্রুততম বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশে সম্প্রতি জ্বালানি তেল প্রতি লিটার পেট্রলের দাম ৫১.২ শতাংশ বাড়িয়ে ১৩০ টাকা, অকটেনের দাম ৫১.৭ শতাংশ বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা, ডিজেল ও কেরােসিনের দাম ৪২.৫ শতাংশ বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়েছে।
রয়টার্স-থম্পসনের এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে বাংলাদেশে যে প্রতিবাদ হয়েছে, তা স্থানীয় গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। কিন্তু বর্ণিত টুইটার ও চিহ্নিত আরেকটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে যে ভিডিও সংযােজন করা হয়েছে, তা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট তাে নয়ই, এ বছরেরও নয়, ২০১৩ সালের।
স্বাধীনতার পরের বছর ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে ৩৪ কোটি ৮৪ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল বাংলাদেশ। তার মধ্যে ৯০ শতাংশ বা ৩১ কোটি ৩১ লাখ ডলার ছিল পাট ও পাটজাত পণ্য। পাটের পর প্রধান রপ্তানি পণ্যের মধ্যে ছিল চামড়া ও চা। মােট রপ্তানিতে পণ্য দুটির অবদান ছিল ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। তার বাইরে কৃষিপণ্য, হিমায়িত চিংড়ি, মাছ, রাসায়নিক, কাগজ, হস্তশিল্পসহ কিছু পণ্য রপ্তানি হতাে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরাের (ইপিবি) পুরােনাে দলিলে এ তথ্য মিলেছে। অবশ্য পাঁচ দশকের ব্যবধানে দেশের পণ্য রপ্তানির চেহারাই বদলে গেছে। বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছর পণ্য রপ্তানি ৫ হাজার ২০৮ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। তার মধ্যে প্রায় ৮২ শতাংশ তৈরি পােশাক। অথচ স্বাধীনতার পর পণ্য রপ্তানির তালিকায় তৈরি পােশাকের কোনাে নাম-নিশানা ছিল না। ১৯৭৬-৭৭ অর্থবছর থেকে পণ্য রপ্তানির তালিকায় পােশাক যুক্ত হয়। তারপর থেকে ধীরে ধীরে পাট ও পাটজাত পণ্যের আধিপত্য কমতে থাকে। এ প্রসঙ্গে পরে আসছি।
এই বিভাগের আরো পোস্ট :
স্বাধীনতার পর মূলত প্রাথমিক পণ্য ও উৎপাদন খাতের হিস্যা ছিল প্রায় কাছাকাছি। আর বর্তমানে পণ্য রপ্তানির সিংহভাগই উৎপাদন খাতের, প্রায় ৯৬ শতাংশ। তবে প্রথম তিন দশকে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় কিছুটা স্লথ গতিতেই এগােয়। ১৯৯৯-২০০০ সালে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি দাঁড়ায় ৫৭৫ কোটি ডলারে। তার মানে, স্বাধীনতার পর তত দিনে রপ্তানি বেড়েছে ১৬ গুণ।
তখন পােশাক ছাড়া পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হিমায়িত চিংড়ি, কৃষিপ্রক্রিয়াজাত পণ্য, রাসায়নিক, প্রকৌশল পণ্য, বাইসাইকেল ইত্যাদি পণ্য রপ্তানি হয়। চলতি শতাব্দীর দুই দশকে, পরিষ্কার করে বললে গত ২২ বছরে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি ৪ হাজার ৬৩৩ কোটি ডলার বেড়ে ৫২ বিলিয়ন (৫ হাজার ২০০ কোটি) ডলারের মাইলফলকে পৌঁছেছে। তার মানে, স্বাধীনতার পর গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশের রপ্তানি ১৪৯ শতাংশ বেড়েছে।
তৈরি পােশাক ছাড়া অন্যান্য খাতের রপ্তানি ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। সেগুলাে হলাে পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, হােম টেক্সটাইল, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। আগেই বলেছি, স্বাধীনতার পর পণ্য রপ্তানির তালিকায়। তৈরি পােশাক ছিল না। তবে গেঞ্জি রপ্তানি হতাে, তা-ও সামান্য। সেই পােশাক খাতের রপ্তানি গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ৪ হাজার ২৬১ কোটি ডলার।
পাটকে হটিয়ে নব্বইয়ের দশকে রপ্তানিতে শীর্ষ স্থান দখল করেছে তৈরি পােশাক। প্রায় ৪০ লাখ গ্রামীণ নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান, নারীর ক্ষমতায়ন, সহযােগী শিল্পের বিকাশসহ নানাভাবে দেশের অর্থনীতিতে অনেক অবদান রাখছে তৈরি পােশাকশিল্প। চীনের পর একক দেশ হিসেবে পােশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় শীর্ষ স্থানে।
পৌঁছায় বাংলাদেশ। যদিও করােনাকালে ভিয়েতনামের কাছে দ্বিতীয় স্থান হারায় বাংলাদেশ। পরিবেশবান্ধব পােশাক কারখানার সংখ্যার দিকেও সবার ওপরে বাংলাদেশ। বর্তমানে পরিবেশবান্ধব কারখানার সংখ্যা ১৬৫ (গত ১৬ জুলাই পর্যন্ত)। বেসরকারি খাতে ১৯৭৮ সালে রিয়াজ গার্মেন্টসের মাধ্যমে পােশাক রপ্তানির যাত্রা শুরু। প্রতিষ্ঠানটি ১০ হাজার পিস শার্ট রপ্তানি করেছিল ফ্রান্সে। সেই চালানে ১ লাখ ৩০ হাজার ফ্র বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে রিয়াজ উদ্দিনের হাতে গড়া রিয়াজ গার্মেন্টস। সেই থেকে শুরু। তারপর আসে দেশ গার্মেন্টস।
সরকারি চাকরি ছেড়ে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে নুরুল কাদের খান প্রতিষ্ঠা করেন দেশ গার্মেন্টস। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৭৯ সালে পােশাক রপ্তানি শুরু করে। কাজ শেখানাের জন্য দেশ গার্মেন্টসের ১৩০ জনকে সে সময় কোরিয়ায় পাঠিয়েছিলেন নূরুল কাদের। তাঁদের অনেকেই পরে পােশাক কারখানার মালিক হন। আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে ওপেক্স নামে পােশাক কারখানা প্রতিষ্ঠান করেন আনিসুর রহমান সিনহা। দ্রুতই প্রতিষ্ঠানটির কলেবর বাড়তে থাকে। বছর দশকের মধ্যেই ৪৫ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান করতে সক্ষম হয়। ওপেক্সের কাছাকাছি সময়ে আনিসুল হক, এ কে আজাদ, মােস্তফা গােলাম কুদুস, কুতুবউদ্দিন। আহমেদসহ আরও অনেকে পােশাকের ব্যবসায় আসেন।
সে সময়কার অনেক প্রতিষ্ঠানই এখন পােশাক খাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তৈরি পােশাকের পাশাপাশি দেশে অন্যান্য খাতেও ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ করেছে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই। সস্তা শ্রম, সরকারের নীতিসহায়তা আর উদ্যোক্তাদের নিরলস পরিশ্রমের কারণে পােশাকশিল্পের কলেবর দ্রুতই বাড়ে। তাই ২০০৫ সালে কোটাব্যবস্থা উঠে গেলেও খাতটির অগ্রযাত্রা থেমে থাকেনি বাংলাদেশ।
তখন ইউরােপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) বিশেষ অগ্রাধিকারমূলক বাজারসুবিধা বা জিএসপি কাজে লাগিয়ে এগােতে থাকে খাতটি। কানাডাসহ কয়েকটি দেশে শুল্কমুক্ত সুবিধা পােশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে ভালােভাবে সহায়তা করে। কোটাব্যবস্থা উঠে যাওয়ার পােশাকের খাতে বড় ধাক্কাটি খায় ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর।
সেদিন তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক শ্রমিক মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। এটি সামলে ওঠার আগেই মালিকদের অবহেলায় ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে ভবনধসের ঘটনা ঘটে, যা দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিল্প দুর্ঘটনা। রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৩৮ শ্রমিক মারা যান।
পাঁচ মাসের ব্যবধানে বড় দুটি ঘটনায় অস্তিত্ব রক্ষার চ্যালেঞ্জে পড়ে তৈরি পােশাক খাত। দেশে দেশে বাংলাদেশি পােশাক বর্জনের ডাক দেয় শ্রম অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলাে। তীব্র সমালােচনার মুখে বিদেশি ক্রেতা ও শ্রম সংস্থার উদ্যোগে কর্মপরিবেশ উন্নয়নে ঝাঁপিয়ে পড়েন দেশের উদ্যোক্তারা।
বিপুল অর্থ বিনিয়ােগ করে কারখানার কাঠামােগত, বৈদ্যুতিক ও অগ্নিসংক্রান্ত ত্রুটি সংস্কার করে বিশ্বে ইতিবাচক বার্তা দিতে সক্ষম হােন তারা। তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকাণ্ড ও রানা প্লাজা ধসের পর। ভালােভাবে ঘুরে দাঁড়ায় পােশাক খাত। বিষয়টি বােঝার জন্য একটি পরিসংখ্যানই যথেষ্ট। ২০১০-১১ অর্থবছরে পােশাক রপ্তানি ছিল ১ হাজার ৭৯১ কোটি ডলারের। পরের ৯ বছরে সেই রপ্তানি দ্বিগুণ বেড়েছে। তবে করােনাকালে নতুন করে সংকটে পড়েছে খাতটি।
যদিও দ্রুতই আবার পােশাক রপ্তানি ঘুরে দাঁড়ায়। চলতি বছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নতুন করে সংকটের আশঙ্কা করছেন উদ্যোক্তারা। ইউরােপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলাে সারা বছর যে পরিমাণ টি-শার্ট বা গেঞ্জি কেনে, তার প্রায় ৪০ শতাংশই বাংলাদেশি পােশাক কারখানা সরবরাহ করে। কেবল টি-শার্ট নয়, ট্রাউজার, শর্টস প্যান্ট ও পুরুষ বা বাচ্চাদের শার্টস রপ্তানিতে ইইউতে সবার ওপরে বাংলাদেশ। এ ছাড়া ডেনিম রপ্তানি ইইউর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রেও শীর্ষ স্থানে রয়েছেন বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা।
স্বাধীনতার আগে থেকেই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হতাে। ১৯৭২ সালে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি ছিল; ৩১ কোটি ৩১ লাখ ডলার, যা মােট রপ্তানির ৮৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ। ১৯৮৫-৮৬ অর্থবছরে এই খাতের রপ্তানি; ছিল ৪১ কোটি ডলার, যা মােট রপ্তানির ৫০ দশিমক ৯১ শতাংশ। বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত খাতের রপ্তানি বেড়ে হয়েছে ১১৩ কোটি ডলার। তার মানে, গত পাঁচ দশকে রপ্তানি বেড়েছে মাত্র ৩ দশমিক ৬০ গুণ। মােট রপ্তানির মাত্র ২দশমিক ১৭ শতাংশ হিসাব নিয়ে বর্তমানে পঞ্চম শীর্ষ রপ্তানি খাত হিসেবে বর্তমানে টিকে আছে পাট ও পাটজাত পণ্য।
পণ্য রপ্তানির দৌড়ে পাট ও পাটজাত পণ্য পিছিয়ে ; পড়েছে। তৈরি পােশাকের পর বর্তমানে সর্বোচ্চ পণ্য রপ্তানি হােম টেক্সটাইলে, ১৬২ কোটি ডলার। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১২৫ কোটি ডলারের রপ্তানি চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে এসেছে। চতুর্থ ও পঞ্চম সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়ের খাত হচ্ছে যথাক্রমে কৃষিপ্রক্রিয়াজাত পণ্য এবং পাট ও পাটজাত পণ্য। কৃষিপ্রক্রিয়াজাত পণ্যে ১১৬ কোটি এবং পাট ও পাটজাত পণ্যে ১১৩ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় হয়েছে।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, মােট পণ্য রপ্তানিতে তৈরি পােশাক, হােম টেক্সটাইল, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও ; পাটজাত পণ্য এবং কৃষিপ্রক্রিয়াজাত পণ্য—এই পাঁচ খাতের অবদান ৯১ দশমিক ৭২ শতাংশ। তার মানে, পণ্য রপ্তানি বাড়লেও গুটিকয় পণ্যের ওপর অতিনির্ভরতার ‘ ব্যাপারটি এখনাে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য বিশ্বব্যাপী তীব্র জ্বালানিসংকট দেখা দিয়েছে। চাহিদার তুলনায় আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে তেল-গ্যাসের প্রবাহ। জ্বালানি পণ্যের দামও বাড়ছে ক্রমাগত। ফলে পরিবর্তিত বিশ্বে অনেক দেশ কয়লাভিত্তিক জ্বালানি উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছে। ইতিমধ্যে জার্মানিতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলাে পুনরায় চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চীন ও ভারতেও বাড়ছে কয়লার উৎপাদন।
চলতি বছরের ২১ মার্চ দেশের সর্বোচ্চ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার রামনাবাদ নদের পাশে নির্মিত এই কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ১৩২০ মেগাওয়াট। কেন্দ্রটি তৈরি করেছে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (বিসিপিসিএল), চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপাের্ট অ্যান্ড এক্সপাের্ট করপােরেশন (সিএমসি) এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রমালিকানাধীন নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল)। কয়লাভিত্তিক এই প্ল্যান্টে ব্যবহার করা হয়েছে পরিবেশবান্ধব আলট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি।
এই বিভাগের আরো পোস্ট :
প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন : পায়রা থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের অবস্থান কোথায়? উত্তর : পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার রামনাবাদ নদের পাশে।
প্রশ্ন : কোন দেশের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পায়রা থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মিত হয়েছে? উত্তর : চীন।
চলতি বছর কয়লাভিত্তিক এই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধনের কথা রয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ বিনিয়ােগে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের জন্য ২০১০ সালে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। এখান থেকে দুই ইউনিটে ৬৬০ মেগাওয়াট করে মােট ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। এতেও আলট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন : রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক নাম কী? উত্তর : মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল)।
প্রশ্ন : প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা উত্তর : বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল)
প্রশ্ন : বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মূল অবকাঠামাে তৈরির দায়িত্ব পালন করছে কোন প্রতিষ্ঠান? উত্তর : ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যাল লিমিটেড (বিএইচইএল)।
প্রশ্ন : রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে? উত্তর : আলট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি।
প্রশ্ন : সুন্দরবন থেকে রামপাল পাওয়ার প্ল্যান্টের দূরত্ব কত? উত্তর : ১৪ কিমি।
আলট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল
আলট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল হচ্ছে একটি বিশেষ ধরনের পরিবেশবান্ধব অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে নির্গত পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর সালফার অক্সাইড ও নাইট্রোজেন অক্সাইডের পার্টিকেলগুলাে ট্র্যাপ করে ফেলা যায়। ফলে সেগুলাে বাতাসে বেরােতে পারে না।
সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর ওপর নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর জন্য প্রথম চালানের স্টিলের কাঠামাের মালামাল নিয়ে একটি জাহাজ বাগেরহাটের মােংলা সমুদ্রবন্দরে এসেছে।
৬ আগস্ট ২০২২ দক্ষিণ কোরিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি উহইওন হােপ’ বন্দরের ৭ নম্বর জেটিতে এসে পৌঁছায়। ২৫ জুলাই ২০২২ ভিয়েতনামের। হাইফং বন্দর থেকে এমভি উহইওন হােপ জাহাজটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্পের মালামাল নিয়ে মােংলা বন্দরের উদ্দেশে রওনা করে।
সারা দেশে ১৫ থেকে ২৮ জুন ২০২২ অনুষ্ঠিত হয় জনশুমারি ও গৃহগণনা কার্যক্রম। এটি দেশের ষষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনা এবং প্রথম ডিজিটাল জনশুমারি। এর আগে যে আদমশুমারি বা জনশুমারিগুলাে করা হয়েছে, সেগুলােতে কাগজে-কলমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। তার সঙ্গে প্রযুক্তির ব্যবহার খুব বেশি ছিল না।
কিন্তু এবার পুরাে তথ্য সংগ্রহের কাজটি ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে করা হয়। মাঠ থেকে তথ্য সংগ্রহকারীরা আইটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার ব্যবহার করে কাজটি করেন। শুধু তথ্য সংগ্রহের কাজটিতে মানুষের সংশ্লিষ্টতা ছিল। কিন্তু সেই তথ্য প্রক্রিয়া করা, যাচাই-বাছাই, পর্যালােচনার সব কাজ ডিজিটাল অবকাঠামাে, সফটওয়্যার ব্যবহার করে করা হয়।
এই বিভাগের আরো পোস্ট :
মাঠপর্যায়ে সাড়ে তিন লাখের বেশি তথ্য সংগ্রহকারী ডিজিটাল ট্যাবের মাধ্যমে তথ্য লিপিবদ্ধ করেছেন। এরপর ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেটি মূল সার্ভারে জমা হয়েছে। এভাবে করার মাধ্যমে একই ব্যক্তি বা বাড়ি দুবার গণনা হয়নি।
এসব তথ্য বিশ্লেষণের জন্য সফটওয়্যারে তিন শতাধিক নির্দেশনা দিয়ে রাখে বিবিএস। ওয়েবভিত্তিক ইন্টিগ্রেটেড সেনসাস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইসিএমএস) ও জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেমে (জিআইএস) কাজটি করা হয়েছে।
মাঠপর্যায়ের এসব তথ্য সংরক্ষণের জন্য গাজীপুরে বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানির সার্ভার ব্যবহার করা হয়। সেখান থেকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরাের সার্ভারে এসব তথ্য হালনাগাদ হয়। তথ্য সম্পূর্ণ এনক্রিপ্ট অবস্থায় থাকায় প্রত্যেকের ব্যক্তিগত তথ্য শতভাগ নিরাপদ থাকছে।
বাংলাদেশের ব্যান্ডসংগীতের ইতিহাস ও ১৮০টি ব্যান্ডের বৃত্তান্ত নিয়ে প্রথমবারের মতাে ৫ আগস্ট ২০২২ পূর্ণাঙ্গ বই প্রকাশিত হয়েছে। বাংলার রক মেটাল’ নামে বইটিতে জায়গা পেয়েছে গত শতকের ষাটের দশক থেকে এখন পর্যন্ত দেশের ব্যান্ডগুলাের পথচলার ইতিহাস। বইটি লিখেছেন মিলু আমান ও হক ফারুক।
তিন ভাগে সাজানাে হয়েছে বইটি। প্রথমাংশে ষাটের দশক থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের ব্যান্ডসংগীতের পটভূমি, ইতিহাস, পথচলা ও নানা পরিবর্তন তুলে ধরা হয়েছে। দ্বিতীয় অংশে রয়েছে ১৮০টি ব্যান্ডের পরিচয় ও পূর্ণাঙ্গ ইতিবৃত্ত। দেশের সব প্রখ্যাত ব্যান্ডের পাশাপাশি কিছু সম্ভাবনাময় নতুন ব্যান্ডের পরিচিতিও এই বইয়ে রাখা হয়েছে।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবজনক অধ্যায়। ত্যাগ, তিতিক্ষা, বেদনা আর গৌরব দিয়ে গড়া বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাস। এ নিয়ে নির্মিত হয়েছে বেশ কটি পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এ পর্বে থাকছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র নিয়ে আলােচনা।
ওরা ১১ জন (১৯৭২)
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’। এর পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম। এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। রাজ্জাক, শাবানা, নূতন, হাসান ইমাম, এ টি এম শামসুজ্জামান, খলিল উল্লাহ প্রমুখ। সিনেমায় অভিনয় করা ১১ জন মুক্তিযােদ্ধার ১০ জনই সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে আছেন খসরু, মুরাদ, হেলাল, নান্টু। ছবির নামটি প্রতীকী। মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয় এবং ১৯৬৮-৬৯ সালে ছাত্ররা ১১ দফার ভিত্তিতে আন্দোলন করে। এখান থেকে ছবির নামকরণ হয়েছে ‘ওরা ১১ জন’।
এই বিভাগের আরো পোস্ট :
অরুণােদয়ের অগ্নিসাক্ষী (১৯৭২)
সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের চলচ্চিত্র ‘অরুণােদয়ের অগ্নিসাক্ষী’। কাহিনিতে পাকিস্তানি নৃশংসতার বিরুদ্ধে বাঙালিদের প্রতিরােধযুদ্ধের কথা আছে। এখানে একজন ধর্ষিতা নারীকে একজন অভিনেতা স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেন।
সংগ্রাম (১৯৭৩)
এটি নির্মাণ করেন চাষীনজরুল ইসলাম। এর গল্প নেওয়া হয়েছে সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মােশাররফের ডায়েরি থেকে। এতে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও অন্যান্য বাহিনীর বীরত্বগাথা চিত্রিত হয়েছে। এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন সুচন্দা, খসরু।
ধীরে বহে মেঘনা (১৯৭৩)
এটির নির্মাতা আলমগীর করি। ভারতীয় মেয়ে অনিতার প্রেমিক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়। সে ঢাকায় এসে যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখে আরও গভীরভাবে মর্মাহত হয়। অভিনয়ে বুলবুল আহমেদ, ববিতা, গােলাম মােস্তফা, আনােয়ার হােসেন, খলিল উল্লাহ প্রমুখ। হেমন্ত মুখােপাধ্যায় ও সন্ধ্যা মুখােপাধ্যায়ের গান আছে এ ছবিতে।
আবার তােরা মানুষ হ (১৯৭৩)
চলচ্চিত্রটির পরিচালক খান আতাউর রহমান। এ চলচ্চিত্রে যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ের সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও অবক্ষয়ের চিত্র উঠে এসেছে। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফারুক, রাইসুল ইসলাম আসাদ, ববিতা, রােজী আফসারী, রওশন জামিলসহ অনেকে। এখানে আছে উদ্ধৃঙ্খল ছাত্র ও তরুণদের কার্যকলাপ এবং একজন আদর্শবাদী অধ্যক্ষের দৃঢ়তা।
আলাের মিছিল (১৯৭৩)
এই সিনেমার নির্মাতা নারায়ণ ঘােষ মিতা। অসৎ ব্যবসায়ীর কার্যকলাপ, তরুণ ছাত্র ও আদর্শবাদী ভাইয়ের সততা এবং একটি আত্মহত্যা এ চলচ্চিত্রের। প্রধান উপজীব্য।
মেঘের অনেক রং (১৯৭৬)
হারুনর রশীদ চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন। যুদ্ধের সময় রুমা নামের একজন চিকিৎসকের স্ত্রী ধর্ষণের শিকার হয়। এরপর সন্তানসহকীভাবে বিরূপ পরিস্থিতির মুখােমুখি হয়, এর মর্মস্পর্শী চিত্র রয়েছে। এতে অভিনয় করেছেন মাথিন, ওমর এলাহী, রওশন আরা, আদনান প্রমুখ। এটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম রঙিন চলচ্চিত্র।
আমরা তােমাদের ভুলবাে না (১৯৯০)
হারুনর রশীদ এ চলচ্চিত্রের পরিচালক। মতলব নামের একজন কিশাের মুক্তিযােদ্ধার আত্মত্যাগের কাহিনি নিয়ে এটি নির্মিত।
একাত্তরের যীশু (১৯৯৩)
চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন নাসির উদ্দীন ইউসুফ। শাহরিয়ার কবিরের উপন্যাস থেকে এর কাহিনি নেওয়া হয়েছে। অভিনয় করেছেন পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুমায়ুন ফরীদি, জহির উদ্দিন পীয়াল, আবুল খায়ের, আনােয়ার ফারুক, কামাল বায়েজীদ, শহীদুজ্জামান সেলিম।
আগুনের পরশমণি (১৯৯৪)
হুমায়ুন আহমেদের প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমণি’। নিজের লেখা উপন্যাস থেকে তিনি এটি নির্মাণ করেন। এতে অভিনয় করেন আসাদুজ্জামান নূর, বিপাশা হায়াত, আবুল হায়াত, ডলি জহুর প্রমুখ। যুদ্ধকালে অবরুদ্ধ ঢাকার পরিবেশ, একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের কাহিনি এবং বদি নামের একজন গেরিলাযােদ্ধার অপারেশন ও শহীদ হওয়ার ঘটনা নিয়ে চলচ্চিত্রটি নির্মিত।
সেলিনা হােসেনের গল্প অবলম্বনে এটি নির্মিত হয়। এর পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম। এর কাহিনিতে দেখা যায়, মুক্তিযােদ্ধাদের বাঁচাতে একজন মা তার বাক্প্রতিবন্ধী ছেলেকে তুলে দেয় পাকিস্তানি মিলিটারির হাতে।
জয়যাত্রা (২০০৪)
তৌকীর আহমেদ পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র এটি। চলচ্চিত্রের কাহিনি নেওয়া হয়েছে আমজাদ হােসেনের গল্প থেকে। এতে অভিনয় করেছেন বিপাশা হায়াত, আজিজুল হাকিম, মাহফুজ আহমেদ, হুমায়ুন ফরীদি, তারিক আনাম খান, আবুল হায়াত, চাঁদনী প্রমুখ।
গেরিলা (২০১১)
নাসির উদ্দীন ইউসুফ চলচ্চিত্রটির পরিচালক। সৈয়দ শামসুল হকের ‘নিষিদ্ধ লােবান’ উপন্যাস অবলম্বনে এটি নির্মিত হয়। অভিনয় করেছেন জয়া আহসান, ফেরদৌস, এ টি এম শামসুজ্জামান, রাইসুল ইসলাম আসাদ, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, শতাব্দী ওয়াদুদ, শম্পা রেজা, গাজী রাকায়েত প্রমুখ। মুক্তিযুদ্ধের সময় গেরিলা হামলার চিত্র এতে উঠে এসেছে।
মেহেরজান (২০১১)
এটি নির্মাণ করেন রুবাইয়াত হােসেন। এই চলচ্চিত্রে বাঙালি তরুণীর সঙ্গে পাকিস্তানি সৈনিকের প্রেম দেখানাে হয়েছে।
আমার বন্ধু রাশেদ (২০১১)
মুহম্মদ জাফর ইকবালের কিশাের উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্রের কাহিনি নেওয়া হয়েছে। এটি পরিচালনা করেন মােরশেদুল ইসলাম। কিশাের চরিত্রে অভিনয় করেছেন চৌধুরী জাওয়াতা আফনানসহ কয়েকজন। এ ছাড়া অন্যান্য চরিত্রে ছিলেন রাইসুল ইসলাম আসাদ, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, ইনামুল হক, হুমায়রা হিমু ও ওয়াহিদা মল্লিক জলি।
অনিল বাগচীর একদিন (২০১৫)
হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাস থেকে কাহিনি নিয়ে। মােরশেদুল ইসলাম নির্মাণ করেন ‘অনিল বাগচীর একদিন’।
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন মােরশেদুল ইসলাম। এর নাম ‘আগামী’ (১৯৮৪)। তানভীর মােকাম্মেল নির্মাণ করেন হুলিয়া’ (১৯৯৫)। এ ছাড়া পরবর্তী সময়ে আরও বেশ কটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে।
প্রামাণ্যচিত্র
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ১৯৭১ সালে চারটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মিত হয়। এগুলাে হলাে জহির রায়হানের ‘স্টপ জেনােসাইড’, ‘আ স্টেট ইজ বর্ন’; আলমগীর কবিরের ‘লিবারেশন ফাইটার্স’ ও বাবুল চৌধুরীর ‘ইনােসেন্ট মিলিয়নস’। এসব প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানি মিলিটারির গণহত্যা ও নৃশংসতা সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে জানানাে। এ ছাড়া শরণার্থীদের দেশত্যাগ ও আশ্রয়শিবিরের দুঃখ-যন্ত্রণার কথা উঠে এসেছে এসব প্রামাণ্যচিত্রে। জহির রায়হান চারটি প্রামাণ্যচিত্রের নাম দেন ‘জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র।
তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদ মুক্তির গান’ (১৯৯৫) নামে একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন। এখানে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার একটি ভ্রাম্যমাণ গানের দলের কার্যক্রম তুলে ধরা হয়েছে। ১৯৭১ সালে মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতা লিয়ার লেভিনের ধারণ করা ফুটেজ থেকে এটি তৈরি করা হয়।
নিচের তালিকায় আরও কিছু মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্যচিত্রের নাম দেওয়া হলাে :
পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র
সাল
চলচ্চিত্রে নাম
পরিচালক
১৯৭২
জয় বাংলা
ফখরুল আলম
১৯৭২
বাঘা বাঙ্গালী
আনন্দ
১৯৭২
রক্তাক্ত বাংলা
মমতাজ আলী
১৯৭৩
আমার জন্মভূমি
আলমগীর কুমকুম
১৯৭৩
শ্লোগান
কবীর আনােয়ার
১৯৭৪
কার হাসি কে হাসে
আনন্দ
১৯৭৪
বাংলার ২৪ বছর
মােহাম্মদ আলী
১৯৭৯
রূপালি সৈকত
আলমগীর কবির
১৯৮১
কলমীলতা
শহীদুল হক খান
১৯৮১
বাঁধন হারা
এ জে মিন্টু
১৯৮২
চিৎকার
মতিন রহমান
১৯৯৩
আমরা তােমাদের ভুলব না
হারুনর রশীদ
১৯৯৪
সিপাহী
কাজী হায়াৎ
১৯৯৫
নদীর নাম মধুমতী
তানভীর মােকাম্মেল
১৯৯৭
এখনাে অনেক রাত
খান আতাউর রহমান
১৯৯৮
৭১-এর লাশ
নাজির উদ্দীন রিজভী
২০০০
ইতিহাস কন্যা
শামীম আখতার
২০০১
একজন মুক্তিযােদ্ধা
বি এম সালাউদ্দিন
২০০২
শিলালিপি
শামীম আখতার
২০০২
মাটির ময়না
তারেক মাসুদ
২০০৪
শ্যামল ছায়া
হুমায়ুন আহমেদ
২০০৪
মেঘের পরে মেঘ
চাষী নজরুল ইসলাম
২০০৬
ধ্রুবতারা
চাষী নজরুল ইসলাম
২০০৬
খেলাঘর
মােরশেদুল ইসলাম
২০০৭
অস্তিত্বে আমার দেশ
খিজির হায়াত
২০০৭
স্পার্টাকাস ৭১
মােস্তফা সরয়ার ফারুকী
২০০৮
রাবেয়া
তানভীর মােকাম্মেল
২০১০
নিঝুম অরণ্যে
মুশফিকুর রহমান গুলজার
২০১২
আত্মদান
শাহজাহান চৌধুরী
২০১২
কারিগর
আনােয়ার শাহাদাত
২০১২
খণ্ড গল্প ৭১
বদরুল আনাম সৌদ
২০১২
পিতা
মাসুদ আখন্দ
২০১৩
জীবনঢুলী
তানভীর মােকাম্মেল
২০১৩
৭১-এর গেরিলা
মিজানুর রহমান শামীম
২০১৪
৭১-এর সংগ্রাম
মনসুর আলী
২০১৪
মেঘমল্লার
জাহিদুর রহিম অঞ্জন
২০১৪
অনুক্রোশ
গােলাম মােস্তফা শিমুল
২০১৪
হৃদয়ে একাত্তর
সাদেক সিদ্দিকী
২০১৪
৭১-এর মা জননী
শাহ আলম কিরণ
২০১৪
যুদ্ধশিশু
মৃত্যুঞ্জয় দেবব্রত
২০১৫
এই তাে প্রেম
সােহেল আরমান
২০১৫
শােভনের স্বাধীনতা
মানিক মানবিক
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র
সাল
চলচ্চিত্রে নাম
পরিচালক
১৯৮৫
চাকি
এনায়েত করিম বাবুল
১৯৮৬
প্রত্যাবর্তন
মােস্তফা কামাল
১৯৮৮
সূচনা
মােরশেদুল ইসলাম
১৯৮৮
ছাড়পত্র
জামিউল রহমান লেমন
১৯৮৯
বখাটে
হাবিবুল ইসলাম হাবিব
১৯৮৯
দুরন্ত
খান আখতার হােসেন
১৯৮৯
পতাকা
এনায়েত করিম বাবুল
১৯৮৯
ধূসর যাত্রা
আবু সাইয়ীদ
১৯৯০
একজন মুক্তিযােদ্ধা
দিলদার হােসেন
১৯৯০
কালােচিল ৭১
সাদুল্লা আল মাসুদ
১৯৯২
ধূসর যাত্রা
আবু সাইয়ীদ
১৯৯৭
বাংলা মায়ের দামাল ছেলে
রফিকুল বারী
১৯৯৮
গৌরব
হারুনর রশীদ
২০০০
শােভনের একাত্তর
দেবাশীষ সরকার
২০০০
শরৎ ‘৭১
মােরশেদুল ইসলাম
২০০০
মুক্তিযুদ্ধ ও জীবন
ছটকু আহমদ
২০০১
একাত্তরের মিছিল
কবরী সারওয়ার
২০০১
একাত্তরের রংপেন্সিল
মান্নান হীরা
২০০২
হৃদয় গাঁথা
রহমান মুস্তাফিজ
২০০৪
যন্ত্রণার জঠরে সূর্যোদয়
সৈয়দ রেজাউর রহমান
২০১০
নরসুন্দর
তারেক মাসুদ
২০১০
দুর্জয়
জাঁ নেসার ওসমান
২০১০
নীল দংশন
সুমন আহমেদ
২০১৪
দ্য অ্যাডভেঞ্চার
রফিকুল আনােয়ার রাসেল
প্রামাণ্যচিত্র
সাল
প্রামাণ্যচিত্র
পরিচালক/নির্মাতা
১৯৭১
ডেডলাইন বাংলাদেশ
গীতা মেহতা
১৯৭২
ডায়েরিজ অব বাংলাদেশ
আলমগীর কবির
১৯৭২
নাইন মান্থস টু ফ্রিডম
এস সুখদেব
১৯৭২
দেশে আগমন
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর
১৯৭৩
পােগ্রাম ইন বাংলাদেশ
আলমগীর কবির
১৯৭৪
লং মার্চ টুওয়ার্ডস গােল্ডেন বাংলা
আলমগীর কবির
১৯৭৬
মুক্তিযােদ্ধা
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর
১৯৮৩
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মােহাম্মদ
সৈয়দ শামসুল হক
১৯৮৩
বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর
সৈয়দ শামসুল হক
১৯৮৪
বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান
সৈয়দ শামসুল হক
১৯৮৪
জেনারেল এম এ জি ওসমানী
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর
১৯৮৪
বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান
সৈয়দ শামসুল হক
১৯৮৪
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন
সৈয়দ শামসুল হক
১৯৮৫
বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ
সৈয়দ শামসুল হক
১৯৮৫
বীরশ্রেষ্ঠ মােস্তফা কামাল
সৈয়দ শামসুল হক
১৯৮৫
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে
আলমগীর কবির
১৯৯১
স্মৃতি একাত্তর
তানভীর মােকাম্মেল
১৯৯৭
চারুকলায় মুক্তিযুদ্ধ
মানজার হাসীন
১৯৯৮
মুক্তির কথা
তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদ
২০০১
কামালপুরের যুদ্ধ
চাষী নজরুল ইসলাম
২০০১
মৃত্যুঞ্জয়ী
সাজ্জাদ জহির
২০০১
প্রতিকূলের যাত্রী
কাওসার চৌধুরী
২০০২
সেই রাতের কথা বলতে এসেছি
কাওসার চৌধুরী
২০০২
স্বাধীনতা
ইয়াসমিন কবির
২০০৩
ফিনিক্স
নিশাত জাহান রানা
২০০৩
প্রিয়ভাষিণী
মাহবুব আলম
২০০৩
মুক্তিযােদ্ধা আমরাও
সৈয়দ তারেক
২০০৪
তখন
এনামুল করিম নির্ঝর
২০০৭
তাজউদ্দীন : নিঃসঙ্গ সারথি
তানভীর মােকাম্মেল
২০০৭
আমি স্বাধীনতা এনেছি
সাগর লােহানী
২০০৭
অনেক কথার একটি কথা
আনন্দ
২০০৭
অন্য মুক্তিযােদ্ধা
লুচ্ছুন্নাহার মৌসুমী
২০০৭
কালরাত্রি
অশােক কর্মকার ও মানজারে হাসীন
২০১১
১৯৭১
তানভীর মােকাম্মেল
অনুশীলন
১. ‘ওরা ১১ জন’ চলচ্চিত্রের পরিচালক (ক) চাষী নজরুল ইসলাম (খ) আলমগীর কবির। (গ) সুভাষ দত্ত (ঘ) তানভীর মােকাম্মেল।
২. ‘অরুণােদয়ের অগ্নিসাক্ষী’ মুক্তি পায় কত সালে? (ক) ১৯৭১ (খ) ১৯৭২ (গ) ১৯৭৩ (ঘ) ১৯৭৪
৩. আলমগীর কবির নির্মিত চলচ্চিত্র (ক) আবার তােরা মানুষ হ’ (খ) সংগ্রাম (গ) অরুণােদয়ের অগ্নিসাক্ষী (ঘ) ধীরে বহে মেঘনা’।
৪. আবার তােরা মানুষ হ’ চলচ্চিত্রটির পরিচালক কে? (ক) আলমগীর কবির (খ) খান আতাউর রহমান (গ) আনন্দ (ঘ) চাষী নজরুল ইসলাম
৫. হুমায়ুন আহমেদ নির্মিত ‘আগুনের পরশমণি’ চলচ্চিত্রের চরিত্র বদি একজন (ক) গেরিলাযােদ্ধা (খ) পান বিক্রেতা (গ) রাজাকার (ঘ) মাঝি
৬. হাঙর নদী গ্রেনেড’ চলচ্চিত্রের পরিচালক কে? (ক) সেলিনা হােসেন (খ) চাষী নজরুল ইসলাম। (গ) তানভীর মােকাম্মেল (ঘ) তারেক মাসুদ।
৭. ‘জয়যাত্রা’ চলচ্চিত্রের কাহিনি নেওয়া হয়েছে— (ক) সৈয়দ শামসুল হকের উপন্যাস থেকে (খ) আমজাদ হােসেনের গল্প থেকে (গ) সেলিনা হােসেনের গল্প থেকে (ঘ) হুমায়ুন আহমেদের গল্প থেকে।
৮. মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র কোনটি? (ক) ‘বখাটে’ : হাবিবুল ইসলাম হাবিব (খ) প্রত্যাবর্তন’ : মােস্তফা কামাল। (গ) ‘পতাকা’ : এনায়েত করিম বাবুল। (ঘ) ‘আগামী’ : মােরশেদুল ইসলাম
৯. প্রামাণ্যচিত্র ‘আ স্টেট ইজ বর্ন’ কে নির্মাণ করেন? (ক) জহির রায়হান (খ) খান আতাউর রহমান (গ) চাষী নজরুল ইসলাম (ঘ) গীতা মেহতা।
১০. ‘গেরিলা’ চলচ্চিত্রের কাহিনির ভিত্তি (ক) নিষিদ্ধ লােবান’ (খ) ‘হাঙর নদী গ্রেনেড (গ) যাত্রা। (ঘ) নেকড়ে অরণ্য
১১. ‘মুক্তির গান’ প্রামাণ্যচিত্রের ভিডিও ফুটেজ ১৯৭১ সালে কে ধারণ করেন? (ক) জহির রায়হান (খ) লিয়ার লেভিন (গ) আলমগীর কবির (ঘ) বাবুল চৌধুরী।
১২. সেক্টর কমান্ডার খালেদ মােশাররফের ডায়েরি থেকে কোন চলচ্চিত্রের কাহিনি নির্মিত হয়েছে? (ক) হুলিয়া’ (খ) ‘ওরা ১১ জন’ (গ) সংগ্রাম’ (ঘ) ‘কার হাসি কে হাসে’
১৪. সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রের নাম কী? (ক) আবার তােরা মানুষ হ’ (খ) ধীরে বহে মেঘনা’ (গ) মেঘের অনেক রং’ (ঘ) ‘অরুণােদয়ের অগ্নিসাক্ষী
১৫. মুক্তিযুদ্ধের প্রথম রঙিন চলচ্চিত্র (ক) মেঘের অনেক রং (খ) একাত্তরের যীশু (গ) আমরা তােমাদের ভুলব না’ (ঘ) ‘হাঙর নদী গ্রেনেড