বিধেয়” শব্দটি ভাষাবিজ্ঞান ও এর উপক্ষেত্রগুলোতে দুইভাবে উপস্থাপন করা হয়। প্রথম সংজ্ঞা মতে, বাক্যে উদ্দেশ্য ব্যতীত বাকি সবকিছুকে বিধেয় বলে। দ্বিতীয় সংজ্ঞা মতে, বিধেয় হলো বাক্যের শুধুমাত্র মূল ক্রিয়াপদ অথবা বাক্যাংশের বিধেয়সূচক অভিব্যক্তি। “সুমন বল খেলে” উদাহরণটিতে প্রথম সংজ্ঞামতে “বল খেলে” অংশটি বিধেয় আর দ্বিতীয় সংজ্ঞামতে একই বাক্যের ক্রিয়াপদ “খেলে” শব্দটি বিধেয়, যেখানে “সুমন” ও “বল” হলো বাক্যের সূচি। এই দুটি সংজ্ঞার মধ্যে পার্থক্য বিভ্রান্তির কারণ হতে পারে।
বিধেয় বাক্যের কর্তৃপদ তথা উদ্দেশ্যের উপর নির্ভরশীল। বিধেয় সাধারণত বাক্যের শেষের দিকে বসে। তবে উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের অবস্থান বদলে যেতে পারে। চিনি বা শর্করা এইসব মিলিয়ে তৈরি হয়।
এই বাক্যকে এভাবেও লেখা যেতে পারে- এইসব মিলিয়ে তৈরি হয় চিনি বা শর্করা।
উপরের মোটা কালির অংশটি উদ্দেশ্য, যার অবস্থান পরিবর্তিত হয়েছে দ্বিতীয় উদাহরণে, ফলে বিধেয়ের অবস্থানও পরিবর্তিত হয়েছে।
বিভিন্ন অংশ
পূরক
বিধেয় অংশে সাধারণত ক্রিয়াপদ থাকে। বিধেয় ক্রিয়াপদের বিশেষ্য অংশকে বলা হয় পূরক।
বাক্য দীর্ঘতর হলে বিধেয়ের সঙ্গে নানা ধরনের শব্দ ও বর্গ যুক্ত হতে পারে। বিধেয়কে এইসব শব্দ ও বর্গ প্রসারিত করে বলে এগুলোর নাম বিধেয়ের প্রসারক। সাধারণত উদ্দেশ্যের পূর্বে উদ্দেশ্যের প্রসারক এবং বিধেয়ের পূর্বে বিধেয়ের প্রসারক বসে। তবে বিধেয়ের স্থান ও কাল সংক্রান্ত প্রসারক উদ্দেশ্যের পূর্বেও বসতে পারে। যেমন- “১৯৫২ সালে ঢাকার রাজপথে বাঙালি জাতির অহংকার রফিক-সালাম-বরকত-জব্বার মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।”
এই বাক্যে উদ্দেশ্য হলো ‘রফিক-সালাম-বরকত-জব্বার’, উদ্দেশ্যের প্রসারক হলো ‘বাঙালি জাতির অহংকার’। মূল ক্রিয়াপদ হলো ‘উৎসর্গ করেছিলেন’, বিধেয়ের পূরক হলো ‘জীবন’। অন্যদিকে ‘১৯৫২ সালে’, ‘ঢাকার রাজপথে’, এবং ‘মাতৃভাষার জন্য’ – এই তিনটি অংশ হলো বিধেয়ের প্রসারক।
এক বা একাধিক বিভক্তিযুক্তপদের দ্বারা যখন বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায়, তখন তাকে বাক্য বলে[১]।[২] অথবা যে সুবিন্যস্ত পদসমষ্টি দ্বারা কোনো বিষয়ে বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণরুপে প্রকাশিত হয়, তাকে বাক্য বলে। যেমন: মারিয়া আরমানকে ভালোবাসে। তারা একে অপরকে বিভিন্ন কাজে সহায়তা করে।
কতগুলো পদের সমষ্টিতে বাক্য গঠিত হলেও যে কোনো পদসমষ্টিই বাক্য নয়। বাক্যের বিভিন্ন পদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বা অন্বয় থাকা আবশ্যক। এ ছাড়াও বাক্যের অন্তর্গত বিভিন্ন পদ দ্বারা মিলিতভাবে একটি অখণ্ডভাব পূর্ণ রুপে প্রকাশিত হওয়া প্রয়োজন, তবেই তা বাক্য হবে। বাক্য হল যোগ্যতা, আকাঙ্ক্ষা, আসত্তি সম্পন্ন পদসমষ্টি, যা বক্তার মনের ভাব সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করে।
বাক্যের গুণ
ভাষার বিচারে বাক্যের এ গুণ তিনটি গুণ থাকা চাই। যথা:
আকাঙ্ক্ষা: বাক্যের অর্থ পরিষ্কারভাবে বোঝার জন্য এক পদের পর অন্যপদ শোনার যে ইচ্ছা তাই আকাঙ্ক্ষা। যেমন: চন্দ্র পৃথিবীর চারদিকে– এইটুকু মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করে না, আরও কিছু জানার ইচ্ছা থাকে। কিন্তু যদি বলা যায় চন্দ্র পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে, তবে বাক্যটি সম্পূর্ণ হবে। অর্থাৎ কোনো বাক্য শ্রবণ করে যদি বাক্যের উদ্দেশ্য বোঝা যায়,তাহলে বুঝতে হবে যে বাক্যটির আকাঙ্ক্ষা গুণটি সম্পূর্ণ।
আসত্তি: বাক্যের অর্থসঙ্গতি রক্ষার জন্য সুশৃঙ্খল পদবিন্যাসই আসত্তি। যেমন: কাল বিতরণী হবে উৎসব আমাদের পুরস্কার স্কুলে অনুষ্ঠিত। বাক্যটি ত্রুটিপূর্ণ। কিন্তু, কাল আমাদের স্কুলে পুরস্কার বিতরণী উৎসব অনুষ্ঠিত হবে, বাক্যটি আসত্তিসম্পন্ন।অর্থাৎ বাক্যের পদগুলো যদি এরুপ সজ্জিত থাকে যে বাক্যের সম্পূর্ণ অর্থ স্পষ্টভাবে বোঝা যায় ,তবে তার আসত্তি গুণটি সম্পূর্ণ।
যোগ্যতা: বাক্যস্থিত পদসমূহের অর্থগত ও ভাবগত মেলবন্ধনের নাম যোগ্যতা। যেমন: বর্ষার বৃষ্টিতে প্লাবনের সৃষ্টি হয় বাক্যটি যোগ্যতা সম্পন্ন, কিন্তু বর্ষার রোদে প্লাবনের সৃষ্টি হয় বললে বাক্যটি তার যোগ্যতা হারাবে।[৩] কারণ, রোদের কারণে কখনো প্লাবণ সঙ্গঠিত হয় না।অর্থাৎ, বাক্যের অর্থ যেন সত্য ও যুক্তিযুক্ত হয়।তাহলেই বাক্যের যোগ্যতা থাকবে।
শব্দের যোগ্যতার সঙ্গে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো জড়িত থাকে:
রীতিসিদ্ধ অর্থবাচকতা:প্রকৃতি-প্রত্যয়জাত অর্থে শব্দ সর্বদা ব্যবহৃত হয়।যোগ্যতার দিক থেকে রীতিসিদ্ধ অর্থের প্রতি লক্ষ রেখে কতগুলো শব্দ ব্যবহর করতে হয়।যেমন-
শব্দ
রীতিসিদ্ধ
প্রকৃতি +প্রত্যয়
প্রকৃতি + প্রত্যয়জাত অর্থ
১. বাধিত
অনুগৃহিত বা কৃতজ্ঞ
বাধ + ইত
বাধাপ্রাপ্ত
২.তৈল
তিল জাতীয় বিশেষ কোনো শস্যের রস
তিল +ষ্ঞ
তিলজাত স্নেহ পদার্থ
দুর্বোধ্যতা : অপ্রচলিত, দুর্বোধ্য শব্দ ব্যবহার করলে বাক্যের যোগ্যতা বিনষ্ট হয়।যেমন- তুমি আমার সঙ্গে প্রপঞ্চ করেছ।(চাতুরি বা মায়া অর্থে ,কিন্তু বাংলা প্রপঞ্চ শব্দটি অপ্রচলিত)
উপমার ভুল প্রয়োগ: ঠিকভাবে উপমা ব্যবহার না করলে যোগ্যতা হানি ঘটে।যেমন-
আমার হৃদয়-মন্দিরে আশার বীজ উপ্ত হলো। বীজ ক্ষেতে উপ্ত করা হয়, মন্দিরে নয়।কাজেই বাক্যটি হওয়া উচিত:আমার হৃদয়-ক্ষেত্রে আশার বীজ উপ্ত হইল। অথবা, আমার হৃদয়-মন্দিরে আশার প্রদীপ জ্বলে উঠল।
বাহুল্য দোষ: প্রয়োজনের অতিরিক্ত শব্দ ব্যবহার করলে বাহুল্য দোষ ঘটে এবং এর ফলে বাক্য তার যোগ্যতা গুণ হারিয়ে থাকে।যেমন- দেশের সব আলেমগণ রাই এ ব্যাপারে আমাদের সমর্থন দান করেন।’আলেমগণ’ বহুবচনবাচক শব্দ।এর সঙ্গে ‘সব’ শব্দটি বাহুল্য দোষ করেছে।
বাগধারার শব্দ পরিবর্তন:বাগধারা ভাষাবিশেষের ঐতিহ্য। এর যথেচ্ছ পরিবর্তন করলে শব্দ তার যোগ্যতা হারায়।যেমন- ‘অরণ্যে রোদন’(অর্থ: নিষ্ফল আবেদন)-এর পরিবর্তে যদি বলা হয়,’বনে ক্রন্দন’ তবে বাগধারাটি তার যোগ্যতা হারাবে।
গুরুচণ্ডালি দোষ:তৎসম শব্দের সঙ্গে দেশীয় শব্দের প্রয়োগ কখনো কখনো গুরুচণ্ডালি দোষ সৃষ্টি করে।এ দোষে দুষ্ট শব্দ তার যোগ্যতা হারায়।’গরুর গাড়ি’, ‘শবদাহ’, ‘মড়াপোড়া’ প্রভৃতি স্খলে যথাক্রমে ‘গরুর শকট’, ‘শবপোড়া’, ’মড়াদাহ’ প্রভৃতির ব্যবহার গুরুচণ্ডালি দোষ সৃষ্টি করে।
যদি কোনো বাক্যে এ তিনটি গুণের একটি অনুপস্থিত থাকে,তবে তাকে বাক্য বলে গণ্য করা হবে না।
অথগত বাক্যের অংশ
প্রতিটি বাক্যে ২টি অংশ থাকে: উদ্দেশ্য ও বিধেয়।
উদ্দেশ্য: বাক্যের যে অংশে কাউকে উদ্দেশ করে কিছু বলা হয় তাকে উদ্দেশ্য বলে।যেমন: আব্দুরহিম স্কুলে যায়। এখানে আব্দুর রহিম উদ্দেশ্য।
বিধেয়: উদ্দেশ্য সম্পর্কে যা বলা হয় তাই বিধেয়।আর স্কুলে যায় বিধেয়।
বাক্যের প্রকারভেদ
অর্থ অনুসারে
অর্থ অনুযায়ী বাক্য দুই প্রকার। যথা: ১. ইতিবাচক ২. নেতিবাচক
ইতিবাচক: যে বাক্য দ্বারা হ্যাঁ বোধক অর্থ প্রকাশ করা হয়,তাকে হ্যাঁ বাচক বা ইতিবাচক বাক্য বলে। যেমন: আমি লেখালেখি করি। সে স্কুলে যায়। আমি সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠি।
নেতিবাচক: যে বাক্য দ্বারা না বোধক অর্থ প্রকাশ পায় তাকে নেতিবাচক বাক্য বলে। যেমন: আমি লেখালেখি করি না। সে স্কুলে যায় না। আমি সকালে ঘুম থেকে দেরিতে উঠি না।
ক। সরল বাক্যঃ যে বাক্যে একটিমাত্র কর্তা (উদ্দেশ্য) এবং একটিমাত্র সমাপিকা ক্রিয়া (বিধেয়) থাকে, তাকে সরল বাক্য বলে। যেমন- ছেলেরা ফুটবল খেলছে।
খ। জটিল বাক্যঃ যে বাক্যে একটি প্রধান বাক্যাংশ এবং এক বা একাধিক অপ্রধান বাক্যাংশ থাকে, তাকে মিশ্র বা জটিল বাক্য বলে। যেমন- যে মানুষের সেবা করে, সেই শ্রেষ্ঠ মানুষ।
গ। যৌগিক বাক্যঃ পরস্পর নিরপেক্ষ দুই বা দুয়ের অধিক বাক্য যখন কোনো সংযোজক অব্যয় দ্বারা যুক্ত হয়ে একটি সম্পূর্ণ বাক্য তৈরি করে, তখন তাকে যৌগিক বাক্য বলে। যেমন- সে দরিদ্র, কিন্তু সুখী।
একটি সার্থক বাক্যের কয়টি গুণ থাকে ব্যাখ্যা করুন।
সরল, জটিল ও যৌগিক – বাক্যের এই তিন গঠনগত বিভাগের পারস্পরিক পরিবর্তনকে বলে বাক্য পরিবর্তন।
একটি সার্থক বাক্য হতে হলে কতগুলো গুণ থাকা আবশ্যক। এই দৃষ্টিকোণ থেকে সার্থক বাক্যের তিনটি গুণ লক্ষ্য করা যায় –
বর্ণনা অনুসারে
বর্ণনা অনুসারে বাক্য পাঁচ প্রকার।
নির্দেশক বাক্য
প্রশ্নবোধক বাক্য
অনুজ্ঞাসূচক বাক্য
বিস্ময়সূচক বাক্য
ইচ্ছাসূচক বাক্য
১) যে বাক্য বিষয় সম্পর্কে বিবৃতি বা বর্ণনা দেওয়া হয় তাকে নির্দেশক বাক্য বলে। যেমন : রাম ভালো ছেলে। বসন্তে কোকিল ডাকে।
পরিবর্তনশীল নিয়ম বিশ্লেষণ (ইংরেজি: Variable rules analysis) বলতে সমাজভাষাবিজ্ঞান ও ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান শাখায় ব্যবহৃত কতগুলি পরিসংখ্যানিক বিশ্লেষণ পদ্ধতির একটি সেট বোঝায়, যেগুলির সাহায্যে ব্যবহৃত ভাষার বিভিন্ন রূপের মধ্যে পার্থক্যের বিন্যাস (patterns of variation) বর্ণনা করা হয়। এই বিশ্লেষণকে অনেকসময় ভার্বরুল বিশ্লেষণ (Varbrul analysis)-ও বলা হয়, কেননা প্রধানত ভার্বরুল নামের একটি সফটওয়্যার দিয়েই এই পরিসংখ্যানিক গণনার কাজটি সম্পন্ন করা হয়। Varbrul কথাটি “variable rule” থেকে এসেছে।
সমাজবিজ্ঞানী উইলিয়াম লাবভ ১৯৬০-এর দশকে শেষে ও ১৯৭০-এর দশকের শুরুতে এই পদ্ধতির তাত্ত্বিক দিকটি নিয়ে লেখেন। ১৯৭৪ সালে হেনরিয়েটা সিডারগ্রেন এবং ডেভিড সানকফ ধারণাটি গাণিতিকভাবে বাস্তবায়ন করেন। [১]
যে ধরনের পরিস্থিতিতে বক্তারা একই অর্থবিশিষ্ট শব্দ বা বাক্যাংশ ভিন্ন ভিন্ন ভাবে উচ্চারণ করে থাকেন (তথা মুক্ত বৈচিত্র্য প্রদর্শন করেন), যেখানে তাদের বাচনিক ভিন্নতা (variation) বিভিন্ন প্রাতিবেশিক ফ্যাক্টর বা সামাজিক বৈশিষ্ট্যাবলীর উপর নির্ভর করে, সেই সমস্ত পরিস্থিতির একটি পরিমাণবাচক মডেল প্রদানের লক্ষ্যে “পরিবর্তনশীল নিয়ম বিশ্লেষণ” পদ্ধতিটি পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে ভিন্নতা (variation) পুরোপুরি দৈব নয়, বরং নিয়ম-শাসিত, এবং একে “কাঠামোগত ভিন্নতা” (structured variation) বলা হয়। পরিবর্তনশীল নিয়ম বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে পর্যবেক্ষণলব্ধ টোকেন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে এমনভাবে একটি বহুচলকীয় পরিসংখ্যানিক মডেল গণনা করা হয়, যাতে প্রতিটি নিয়ন্ত্রক ফ্যাক্টরের সাথে একটি সাংখ্যিক ভার (numerical factor weight) সংযুক্ত করা সম্ভব এবং এভাবে প্রতিটি ভাষিক রূপের সম্ভাবনা কীভাবে একেকটি ফ্যাক্টর দ্বারা প্রভাবিত হয়, তার বর্ণনা করা সম্ভব হয়। একটি সর্বোচ্চ সম্ভাবনা অ্যালগোরিদমের (maximum likelihood algorithm) সাহায্যে ধাপভিত্তিকলজিস্টিক নির্ভরণের (stepwise logistic regression) সাহায্যে এই ভার সংযুক্তকরণের কাজটি সম্পাদন করা হয়।
যদিও পরিবর্তনশীল নিয়ম বিশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয় গণনার কাজগুলি সাধারণ পরিসংখ্যানিক কাজে ব্যবহৃত যেকোন প্রচলিত সফটওয়্যার যেমন এসপিএসএস দিয়েই করে নেয়া যায়, তা সত্ত্বেও এটি ভাষাবিজ্ঞানীদের চাহিদার জন্য বিশেষভাবে নির্মিত একটি সফটওয়্যার দিয়েই সম্পন্ন করা হয়। এই সফটওয়্যারটির নাম ভার্বরুল (Varbrul)। ডেভিড সানকফ এর আদি সংস্করণটি রচনা করেছিলেন। বর্তমানে এটি ম্যাক ওএস ও মাইক্রোসফট উইন্ডোজ সিস্টেমের জন্য বিনামূল্যের সফটওয়্যার হিসেবে গোল্ডভার্ব (Goldvarb) নামে ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। [২]
পরিবর্তনশীল নিয়ম দৃষ্টিভঙ্গি প্রায়ই সমাজবৈজ্ঞানিক গবেষণায় ভাষাংশ বা কর্পাস উপাত্তের বিশ্লেষণে ব্যবহার করা হয়। সময়ের সাথে সাথে ভাষার পরিবর্তন একটি বাক-সম্প্রদায়ের কাঠামোগত ভিন্নতার বিন্যাসে কীভাবে রূপায়িত হয়, এ সংক্রান্ত গবেষণাতে এই পদ্ধতি বিশেষভাবে প্রয়োগ করা হয়। [৩]
ভাষাবিজ্ঞানের পরিভাষায় পরম গাঠনিক উপাদান (ইংরেজি: Absolute Construction) বলতে বাক্যের তেমন একটি গাঠনিক উপাদানকে বোঝায়, যা বাক্যের বাকী অংশ থেকে পৃথক বা বিচ্ছিন্ন।
ইংরেজি ভাষাতে বিশেষণ ও ক্রিয়াবিশেষণগুলিকে এভাবে ব্যবহার করা যায়। যেমন – Nevertheless, the inevitable happened. বাক্যটিতে nevertheless ক্রিয়াবিশেষণটিকে একটি পরম গাঠনিক উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। একইভাবে Hungry, she let out a scream. বাক্যটিতে Hungry বিশেষণটি একটি পরম গাঠনিক উপাদান।
পদাশ্রিত নির্দেশক,[১] সংক্ষেপে নির্দেশক,[২] বলতে বাক্যে ব্যবহৃত সেসব শব্দাংশকে বোঝায় যেগুলো বিশেষ্য বা বিশেষণ পদের পরে বা “আশ্রয়ে” সংযুক্ত হয়ে উক্ত পদের নির্দিষ্টতা বা অনির্দিষ্টতা বোঝায়।[৩] এগুলো মূলত অব্যয় পদ, তাই এদের পদাশ্রিত অব্যয়ও বলে।[১][৪]বাংলা ও অসমীয়া ভাষায় নির্দেশকগুলো প্রত্যয় হিসেবে পদের পরে বসে, তাই উক্ত ভাষাগুলোর ক্ষেত্রে পদাশ্রিত নির্দেশককে নির্দেশক প্রত্যয়ও[৫] বলা যায়। পদাশ্রিত নির্দেশক ব্যাকরণিক বর্গ গঠনে ভূমিকা রাখে।
বাংলা ভাষায় সাধারণত ব্যবহৃত নির্দেশকগুলো হলো – -টা, -টি, -টে-টু, -টুক, -টুকু, -টুকুন, -গুলা, -গুলি, -গুলো, -খান, -খানা, -খানি, -গাছ, -গাছা, -গাছি, -জন, -এক।[১][৫][৪]বাংলা ব্যাকরণে নির্দেশকসমূহ লগ্নক শ্রেণিভুক্ত।[২] “পদাশ্রিত নির্দেশক হচ্ছে খাঁটি বাংলা ভাষার নিজস্ব সম্পদ।”[৫]
ব্যুৎপত্তি ও সংজ্ঞা
পদাশ্রিত শব্দটির অর্থ “পদে আশ্রিত” আর নির্দেশক অর্থ “নির্দেশনাকারী”। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেছেন,
“কোনো বিশেষ্য দ্বারা দ্যোতিত পদার্থের রূপ, প্রকৃতি অথবা তৎসম্বন্ধে বক্তার মনের ভাব প্রকাশ করার একটা বিশেষ উপায় বাঙ্গালা ভাষায় আছে। টা, টি, টুকু, টুক, খানা, খানী (খানি) জল প্রভৃতি কতগুলো শব্দ বা শব্দাংশ আছে যেগুলি বিশেষ্যের সহিত (অথবা বিশেষ্যের পূর্বে ব্যবহৃত সংখ্যাবাচক বিশেষণের সহিত) সংযুক্ত হইয়া যায়। পদার্থ বা বস্তুর গুণ বা প্রকৃতি নির্দেশ করে। এই রূপ শব্দ বা শব্দাংশকে পদাশ্রিত বলা যাইতে পারে।”[৬]
নির্দিষ্টতাবাচক নির্দেশক বিশেষ্য, সর্বনাম বা বিশেষণ পদ বা বর্গের পরে বসে পদ বা বর্গটিকে নির্দিষ্টতা প্রদান করে। বাংলা এ ধরনের নির্দেশকের মধ্যে রয়েছে – -টা, -টি, -টো, -টে, -টু, -টুক, -টুকু, -টুকুন, -গুলা, -গুলি, -গুলো, -খান, -খানা, -খানি, -গাছ, -গাছা, -গাছি, -জন।
একটি বিশেষ্য, সর্বনাম ও বিশেষণ পদ বা বর্গকে নির্দিষ্ট করে বোঝাতে -টা, -টি, -খানা ও -খানি নির্দেশক বসে, রূপান্তর: -টো ও -টে এবং -খান। উদাহরণ: বইটা, বইখানি, দিনটি, একটি, একখানা, একখান, দুটো, তিনটে। স্বল্পতা বোঝাতে অগণনযোগ্য নামপদের পর -টুক বসে, রূপান্তর: -টু, -টুকু। উদাহরণ: একটু, এইটুক, ভাতটুকু।
একের বেশি বিশেষ্য, সর্বনাম ও বিশেষণ পদ বা বর্গকে নির্দিষ্ট করে বোঝাতে -গুলা, -গুলি নির্দেশক বসে। এর রূপান্তর: -গুলো। যেমন: বইগুলা, এগুলো, সেগুলি। আধিক্য বোঝাতে বিশেষত “লম্বা বা সরু” নির্দেশ করে এমন অগণনযোগ্য নামপদের পর -গাছ বসে, রূপান্তর: -গাছা, -গাছি। উদাহরণ: একগাছ, চুলগাছা।
এক বা একের বেশি মানুষ বোঝাতে বিশেষ্য, সর্বনাম বা বিশেষণ পদ বা বর্গের পর -জন নির্দেশক ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ: লোকজন, সেইজন, অনেকজন, কয়জন৷
অনির্দিষ্টতাবাচক
অনির্দেশক প্রত্যয় এমনই একটি নির্দেশক প্রত্যয় যেটি অনির্দিষ্টতাবাচক বিশেষ্য, সর্বনাম বা বিশেষণ পদ বা বর্গের পরে বসে। এই প্রত্যয় দিয়ে সাধারণত সংখ্যা বা পরিমাণের অনির্দিষ্টতা বোঝায়। বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত একমাত্র অনির্দেশক প্রত্যয় হলো -এক।[ক] নিচের উদাহরণে ব্যবহৃত দশেক (দশ্ + -এক্) বলতে কমবেশি দশ বোঝায় বলে এখানে -এক একটি অনির্দেশক প্রত্যয়।[৫]জন দশেক ছাত্র।
-এক প্রত্যয়টিকে -টা বা -খান নির্দেশকের পরে যুক্ত হয়ে -টাক (-টা + -এক্) ও -খানেক (-খান্ + -এক্) – দুটি সাধিত নির্দেশক তৈরি করে। নিচের দুটি উদাহরণে উক্ত নির্দেশক দুটির প্রচলিত ব্যবহার দেখানো হলো।[৫]মাইলটাক গিয়ে পেয়ে গেলামঘণ্টাখানেক হলো বসে আছি।
শূন্য
শূন্য নির্দেশক হলো বাক্যে পদাশ্রিত নির্দেশকের অনুপস্থিতি। যেসব নির্দিষ্টতাবাচক নির্দেশক আছে সেখানে কোনো বাক্যে বা পদ/বর্গের সঙ্গে নির্দেশকের অঅনুপস্থিতি বিশেষভাবে নির্দেশ করে যে পদটি “অনির্দিষ্টতাবাচক”। যেসব ভাষায় অনির্দিষ্টতাবাচক নির্দেশক বিরল বা নগণ্য (যেমন: বাংলা), সেখানে শূন্য নির্দেশক বিশেষভাবে অনির্দিষ্টতাবাচক নির্দেশকের কাজ করে। নিচের উদাহরণে দর্শনার্থীরা ও কাদা পদ দুটির পরিমাণ অনির্দিষ্ট, কিন্তু এখানে কোনো নির্দেশক যুক্ত হয় নি। দর্শনার্থীরা কাদায় হাঁটা শেষ করলেন।
ভাষাবিদরা বিশ্বাস করেন যে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষার পূর্বপুরুষ আদি ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাতে নির্দেশকের কোনো ব্যবহার ছিল না। এই পরিবারের বেশিরভাগ ভাষায় নির্দিষ্টতাবাচক বা অনির্দিষ্টতাবাচক নির্দেশক নেই: লাতিন বা সংস্কৃত ভাষায় কোনো নির্দেশকের ব্যবহার নেই, এমন কি কিছু আধুনিক ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাতেও, যেমন স্লাভীয় ভাষাসমূহ (বুলগেরীয়, মেসেডোনীয় ও কিছু উত্তর রুশ উপভাষা বাদে), বাল্টীয় ভাষাসমূহ এবং অনেক ইন্দো-আর্য ভাষাতেও নির্দেশক নেই। যদিও ধ্রুপদী গ্রিক ভাষায় নির্দিষ্টতাবাচক নির্দেশকের ব্যবহার ছিল[খ], পূর্ববর্তী হোমরীয় গ্রিকে নির্দেশককে মূলত সর্বনাম বা প্রদর্শনমূলক পদ হিসাবে ব্যবহার করা হত, যেখানে প্রথম দিকে মাইসেনীয় গ্রিক নামে পরিচিত গ্রিক ভাষায় পরিচিত রূপে কোনো নির্দেশক ছিল না। বিভিন্ন ভাষা পরিবারে অঞ্চলভেদে নির্দেশকের ব্যবহার স্বাধীনভাবে বিকশিত হয়েছে।
একে সংখ্যাবাচক “এক” (১) এর সঙ্গে গুলিয়ে ফেলবেন না, কারণ শব্দের সাথে একীভূত না হলে প্রত্যয় হয় না। তাই বাক্যে স্বতন্ত্র পদরূপে ব্যবহৃত “এক” প্রত্যয়বাচক নয়, এমন কি এক এর পর নির্দেশক যুক্ত হলেও (যেমন: একটি) এটি পদ হিসাবেই বাক্যে আচরণ করবে। নির্দেশকের ব্যবহার আধুনিক গ্রিকেও টিকে আছে এবং এটি জার্মান ভাষার নির্দিষ্টতাবাচক নির্দেশকের সাথে একটি শক্তিশালী কার্যকরী সাদৃশ্য বহন করে, যার সাথে এটি সম্পর্কিত।
চট্টোপাধ্যায় ১৯২৪ সালে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়েসংস্কৃত বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৫০ সালে তিনি পাঠক হিসাবে উন্নীত হন এবং ১৯৫৬ সাল থেকে প্রায় কয়েক বছর তিনি সংস্কৃতের অধ্যাপক হিসাবে কাজ করেন। পরে তিনি বেনারসের সম্পূর্ণানন্দ সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হন। পরিচালক হিসাবে, তিনি একচেটিয়াভাবে গবেষণা পরিচালনা করার অবস্থানে ছিলেন।
চট্টোপাধ্যায় বই সিরিজ সরস্বতী ভাবনা গ্রন্থমালা এবং বিখ্যাত সংস্কৃত জার্নাল, সরস্বতী সুসামা – এর সম্পাদক ছিলেন। ভারতের কেন্দ্রীয় সংস্কৃত বিদ্যাপীঠ, তিরুপতিতে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সরকার কর্তৃক বেদ ও আবেস্তার তুলনামূলক অধ্যয়নের জন্য বিশেষ পণ্ডিত হিসেবেও নিযুক্ত হন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ১৯৬০ সালে স্টিফানের নির্মলেন্দু ঘোষ তুলনামূলক ধর্মের প্রভাষক নিযুক্ত করে (সেই সময়কালে তিনি সমগ্রানন্দ সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছুটিতে ছিলেন)। [২]
শিষ্যবৃন্দ
তিনি অনেক পণ্ডিত তৈরি করেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম
বিপিটি বাগীশ শাস্ত্রী
বিদ্যা নিবাস মিশ্র
গোবিন্দ চন্দ্র পান্ডে
গোবর্ধন রায়
কমলেশ দত্ত ত্রিপাঠী
কাজ
১৯২৪ সালের ডিসেম্বরে মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত তৃতীয় অধিবেশনের পর থেকে চট্টোপাধ্যায় অল ইন্ডিয়া ওরিয়েন্টাল কনফারেন্সের সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি ১৯৩৭ সালে তিরুবনন্তপুরমে অনুষ্ঠিত নবম অধিবেশনে এর বেদ এবং ইন্দো-আর্য বিভাগের সভাপতিত্ব করেন এবং ১৯৫৫ সালে আন্নামালাইনগরে অনুষ্ঠিত অষ্টাদশ অধিবেশনে এর বেদ বিভাগের সভাপতিত্ব করেন। তিনি ১৯৪৬ ডিসেম্বরে করাচিতে অনুষ্ঠিত অখিল ভারতীয় হিন্দি সাহিত্য সম্মেলনের সাংকেতিক ভাষাতত্ত্ব বিভাগে সভাপতিত্ব করেন।[৩]
যতিচিহ্ন, বিরামচিহ্ন বা ছেদচিহ্ন হল সেইসব সাংকেতিক চিহ্ন যেগুলো লেখ্যমাধ্যমে ব্যবহার করে বাক্যের বিভিন্ন ভাব, যেমন: জিজ্ঞাসা, বিস্ময়, সমাপ্তি ইত্যাদি সার্থকভাবে প্রকাশের মাধ্যমে বাক্যের অর্থ সুস্পষ্ট করা হয়।[১] বাংলা ভাষায় ২০টির মতো যতিচিহ্ন রয়েছে। এদের মধ্যে বাক্যশেষে ব্যবহার্য যতিচিহ্ন ৪টি; বাক্যের ভিতরে ব্যবহার্য ১০টি এবং বাক্যের আগে পরে ব্যবহার্য ৬টি।[১]
বাংলায় ব্যবহৃত যতিচিহ্নসমূহ
বাংলা ভাষায় নিম্নলিখিত যতিচিহ্নসমূহ ব্যবহৃত হয়:
যতিচিহ্নের নাম
আকৃতি
বিরতি কাল
কমা বা পাদচ্ছেদ
,
১ (এক) বলতে যে সময় প্রয়োজন।
সেমিকোলন
;
১ বলার দ্বিগুণ সময়।
দাঁড়ি বা পূর্ণচ্ছেদ
।
এক সেকেন্ড।
প্রশ্নবোধক চিহ্ন
?
ঐ
বিস্ময় ও সম্বোধন চিহ্ন
!
ঐ
কোলন
:
ঐ
ড্যাস
—
ঐ
কোলন ড্যাস
:-
ঐ
হাইফেন
–
থামার প্রয়োজন নেই।
ইলেক বা লোপ চিহ্ন
’
ঐ
একক উদ্ধৃতি চিহ্ন
‘ ‘
‘এক’ উচ্চরণে যে সময় লাগে।
যুগল উদ্ধৃতি চিহ্ন
“ ”
ঐ
ব্র্যাকেট (বন্ধনি চিহ্ন)
( ) { } [ ]
থামার প্রয়োজন নেই।
ধাতু দ্যোতক চিহ্ন
√
ঐ
পরবর্তী রূপবোধক চিহ্ন
<
ঐ
পূর্ববর্তী রূপবোধক চিহ্ন
>
ঐ
সমান চিহ্ন
=
ঐ
বর্জন চিহ্ন
…
ঐ
সংক্ষেপণ চিহ্ন
.
ঐ
বিকল্প চিহ্ন
/
ঐ
যতি বা ছেদ চিহ্নের ব্যবহার
কমা বা পাদচ্ছেদ (,)
বাক্য পাঠকালে সুস্পষ্টতা বা অর্থ-বিভাগ দেখানোর জন্য যেখানে স্বল্প বিরতির প্রয়োজন, সেখানে কমা ব্যবহৃত হয়। যেমন— সুখ চাও, সুখ পাবে পরিশ্রমে।
পরস্পর সম্পর্কযুক্ত একাধিক বিশেষ্য বা বিশেষণ পদ একসঙ্গে বসলে শেষ পদটি ছাড়া সবগুলোর পরই কমা বসবে। যেমন— সুখ, দুঃখ, আশা, নৈরাশ্য একই মালিকার পুষ্প।
সম্বোধনের পর কমা বসবে। যেমন— রশিদ, এদিকে এসো।
বাক্যের অর্থ স্পষ্ট করার জন্য কমা বসে। যেমন: তুমি যাবে, না যাবে না? সুখ চাও, সুখ পাবে পরিশ্রমে।
জটিল বাক্যের অন্তর্গত প্রত্যেক খন্ডবাক্যের পর কমা বসে। যেমন: কাল যে লোকটি এসেছিল,সে আমার পূর্বপরিচিত।
মাসের তারিখ লিখতে বার ও মাসের পর কমা বসবে। যেমন— ১৬ই পৌষ, বুধবার, ১৩৯৯ বঙ্গাব্দ।
বাড়ি বা রাস্তার নম্বরের পর কমা বসে। যেমন: ৬৮, নবাবপুর রোড, ঢাকা-১০০০।
নামের পরে ডিগ্রিসূচক পরিচয় সংযোজিত হলে সেগুলোর প্রত্যেকটির পরে কমা বসে। যেমন: ডক্টর মুহাম্মদ এনামুল হক, এম. এ., পিএইচ. ডি।
সেমিকোলন বা অর্ধচ্ছেদ (;)
কমা অপেক্ষা বেশি বিরতির প্রয়োজন হলে, সেমিকোলন বসে। যেমন: আরাফি এসেছিল; কিন্তু খাবার খায়নি।
দাঁড়ি বা পূর্ণচ্ছেদ (।)
বাক্যের পরিসমাপ্তি বোঝাতে দাঁড়ি বা পূর্ণচ্ছেদ ব্যবহার করতে হয়।
প্রশ্নবোধক চিহ্ন (?)
বাক্যে কোনোকিছু জিজ্ঞাসা করা হলে বাক্যের শেষে প্রশ্নবোধক চিহ্ন বসে।
বিস্ময় ও সম্বোধন চিহ্ন (!)
হৃদয়াবেগ প্রকাশ করতে এ চিহ্নটি বসে।
সম্বোধন পদের পর বিস্ময়সূচক চিহ্ন ব্যবহৃত হতো; কিন্তু আধুনিক নিয়মে সম্বোধন স্থলে কমা বসে।
কোলন (:)
একটি অপূর্ণ বাক্যের পর অন্য একটি বাক্যের অবতারণা করতে কোলন ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে উদাহরণ বোঝাতেও কোলন বহুল ব্যবহৃত।[১]
ড্যাস (—)
যৌগিক ও মিশ্র বাক্যে পৃথক ভাবাপন্ন দুই বা তার বেশি বাক্যের সমন্বয় বা সংযোগ বোঝাতে ড্যাস বসে। এছাড়াও এক বাক্যের সঙ্গে অন্য বাক্যের সংমিশ্রণে ড্যাস চিহ্ন ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
কোলন ড্যাস (:-)
উদাহরণ বোঝাতে আগে কোলন ড্যাস ব্যবহৃত হত। বর্তমানে উদাহরণ বোঝাতে শুধু কোলন বহুল ব্যবহৃত।
হাইফেন বা সংযোগ চিহ্ন (-)
সমাসবদ্ধ পদগুলোকে আলাদা করে দেখানোর জন্য এটি ব্যবহৃত হয়।
ইলেক বা লোপচিহ্ন (‘)
কোনো বিলুপ্ত বর্ণের পরিবর্তে লোপ চিহ্ন বসে।
একক উদ্ধরণ বা উদ্ধৃতি চিহ্ন (‘ ‘)
বক্তার প্রত্যক্ষ উক্তিকে এই চিহ্নের অর্ন্তভুক্ত করতে হয়।[১]
যুগল উদ্ধরণ বা উদ্ধৃতি চিহ্ন (” “)
যদি উদ্ধৃতির ভেতরে আরেকটি উদ্ধৃতি থাকে তখন প্রথমটির ক্ষেত্রে দুই উদ্ধৃতি চিহ্ন এবং ভেতরের উদ্ধৃতির জন্য এক উদ্ধৃতি চিহ্ন হবে।[১] এছাড়াও প্রবন্ধ, গল্প ও কবিতার নামের ক্ষেত্রেও যুগল উদ্ধৃতি চিহ্ন ব্যবহার করা হয়।
বন্ধনী চিহ্ন
বন্ধনি চিহ্ন তিন প্রকার। যেমন:
প্রথম বা বক্র বন্ধনী ( )
দ্বিতীয় বা গুম্ফ বন্ধনী { }
তৃতীয় বা সরল বন্ধনী [ ]
মূলত গণিত শাস্ত্রে এগুলো ব্যবহৃত হলেও বিশেষ ব্যাখ্যামূলক অর্থে সাহিত্যে প্রথম বন্ধনী ব্যবহৃত হয়।
বিকল্প চিহ্ন (/)
কোন শব্দ যখন অন্য একটি শব্দের পরিপূরক হিসেবে ব্যবহার করার সময় যে চিহ্ন ব্যবহার করা হয় তখন ঐ চিহ্নকে বিকল্প চিহ্ন বলা হয়। এছাড়াও “অথবা” শব্দের পরিবর্তে বিকল্প (/) চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। যেমন: “সময়মত সালাত/নামাজ আদায় করুন।” এখানে সালাতের পরিবর্তে নামাজ শব্দটিও ব্যবহার করা যাবে।
প্রয়োজনীয়তা
আমরা যখন কথা বলি তখন সবগুলো বাক্য একযোগে না বলে থেমে থেমে বলি। অনেক সময় আবেগ প্রকাশ করি। কিন্তু বাক্য লিখে প্রকাশ করার সময় বিরতি ও আবেগ নির্দেশ করতে যতিচিহ্নের প্রয়োজন হয়। বাক্যে যতিচিহ্নের অশুদ্ধ ব্যবহার ক্ষেত্রবিশেষে অর্থবিকৃতি ঘটাতে পারে।
আরবি সংখ্যাগুলি দশটি সংখ্যা : ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ এবং ৯। এই শব্দটি প্রায়শই এই অঙ্কগুলি ব্যবহার করে (দশমিকের সাথে রোমান সংখ্যার সাথে বিপরীত হলে) দশমিকসংখ্যা বোঝায়। তবে এই শব্দটি অঙ্কগুলি নিজেরাই বোঝাতে পারে যেমন বিবৃতিতে ” অষ্টাল সংখ্যাগুলি আরবি সংখ্যা ব্যবহার করে লেখা হয়।”
যদিও হিন্দু – আরবি সংখ্যা পদ্ধতি (অর্থাৎ দশমিক) ভারতীয় গণিতবিদদের দ্বারা 500 খ্রিস্টাব্দের দিকে অঙ্কগুলির জন্য বেশ কয়েকটি বিভিন্ন রূপ প্রাথমিকভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। উত্তর আফ্রিকাতে এগুলি আরবি সংখ্যায় পরিবর্তিত হয়েছিল। এটি আলজেরীয় শহর বেজাইয়ায় ইটালিয়ান পণ্ডিত ফিবোনাচি প্রথম সংখ্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন; ইউরোপ জুড়ে তাদের পরিচিত করার ক্ষেত্রে তাঁর কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ইউরোপীয় বাণিজ্য, বই এবং colon পনিবেশবাদ বিশ্বজুড়ে আরবি সংখ্যাগুলি গ্রহণকে জনপ্রিয় করতে সহায়তা করেছিল। সংখ্যাগুলি লাতিন বর্ণমালার সমসাময়িক প্রসার ছাড়াই বিশ্বব্যাপী ব্যবহারের সন্ধান পেয়েছে, এমন অঞ্চলে যেখানে হিন্দু-আরবি সংখ্যাগুলির অন্যান্য রূপগুলি ব্যবহার করা হত, যেমন চীনা এবং জাপানি লেখার ক্ষেত্রে রচনার পদ্ধতিতে প্রবেশ করেছিল।
আরবি সংখ্যাটি শব্দটি পূর্ব আরবী সংখ্যাগুলির মতো আরবি রচনায় ব্যবহৃত সংখ্যার অর্থ বোঝাতে পারে। অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারি পশ্চিমা অঙ্কগুলি উল্লেখ করার জন্য ছোট হাতের আরবি সংখ্যা ব্যবহার করে এবং পূর্বের অঙ্কগুলি উল্লেখ করার জন্য আরবি সংখ্যাগুলি বড় করে তোলে।[১]
অন্যান্য বিকল্প নাম হ’ল পশ্চিমা আরবি সংখ্যা, পশ্চিমী সংখ্যা এবং হিন্দু – আরবি সংখ্যাগুলি । ইউনিকোড কেবল অলংকৃত শব্দ সংখ্যা ব্যবহার করে। [২]
দশমিক হিন্দু – আরবি সংখ্যা ব্যবস্থার ভারতে প্রায় 700 খৃষ্টাব্দে বিকাশ ঘটেছিল। [৫] বিকাশটি ধীরে ধীরে ছিল এবং কয়েক শতাব্দী জুড়ে বিস্তৃত ছিল, তবে সম্ভবত নির্ধারিত পদক্ষেপটি ব্রহ্মগুপ্তের zero২৮ সালে একটি সংখ্যা হিসাবে শূন্যের সূচনা দ্বারা সরবরাহ করা হয়েছিল।
বখশালি পান্ডুলিপিতে ব্যবহৃত সংখ্যাগুলি খ্রিস্টীয় তৃতীয় ও 7th ম শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে স্থিত।
সংখ্যা সিস্টেম থেকে পরিচিতি লাভ করেন বাগদাদ আদালতে, যেখানে যেমন mathematicians ফার্সিআল-খোয়ারিজমি, যার বই হিন্দু সংখ্যা (সঙ্গে ক্যালকুলেশন উপরআরবি: الجمع والتفريق بالحساب الهندي আল-জামা ওয়াল-তাফরাক বিল-ইসিব আল-হিন্দী) আরবী ভাষায় প্রায় ৮২২ টি রচিত হয়েছিল এবং তারপরে আরব গণিতবিদ আল-কিন্দি লিখেছিলেন, যিনি চারটি খন্ড লিখেছিলেন, ভারতীয় সংখ্যাগুলির ব্যবহার সম্পর্কে ( আরবি: كتاب في استعمال الأعداد الهندية 830 সালের দিকে কিতাব ফ ইসতিমাল আল-‘আদাদ আল-হিন্দিয়া’য়। তাদের কাজটি মূলত মধ্য প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যে ভারতীয় সংখ্যা ব্যবস্থার বিস্তারের জন্য দায়ী ছিল। [৬]
আল-বিরুনির মতে, ভারতে বহু ধরণের সংখ্যা ব্যবহৃত হয়েছিল এবং “আরবরা তাদের মধ্যে এমনটি বেছে নিয়েছিল যা তাদের কাছে সবচেয়ে কার্যকর বলে মনে হয়েছিল”।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] আল-নাসাভি একাদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে লিখেছিলেন যে গণিতবিদগণ অঙ্কের আকারে একমত নন, তবে তাদের বেশিরভাগই নিজেকে পূর্বের আরবি সংখ্যা হিসাবে পরিচিত ফর্মগুলির সাথে প্রশিক্ষণ দিতে রাজি হয়েছিল। [৭] মিশর থেকে 873–874 সালে প্রাপ্ত লিখিত সংখ্যাগুলির প্রাচীনতম নমুনাগুলিতে “2” সংখ্যাটির তিনটি রূপ এবং “3” সংখ্যার দুটি ফর্ম দেখা যায়, এবং এই প্রকরণগুলি পূর্বের হিসাবে পরিচিত হয়ে ওঠার মধ্যকার বিভেদকে নির্দেশ করে আরবি সংখ্যা এবং (পশ্চিমা) আরবি সংখ্যাগুলি। [৮]
প্রতীকগুলির পশ্চিম আরবি রূপগুলি মাগরেব এবং আল-আন্দালাসে ব্যবহৃত হতে শুরু করে, যা আধুনিক আরবি সংখ্যাগুলির সরাসরি পূর্বপুরুষ। [৯]
গণনাগুলি মূলত একটি ডাস্ট বোর্ড ( টখত, লাতিন: তাবুলা ) ব্যবহার করে সম্পাদিত হয় যা স্টাইলাস সহ চিহ্নগুলি লিখতে এবং গণনার অংশ হিসাবে মুছে ফেলার সাথে জড়িত। আল-উকালিদিসি তখন কালি ও কাগজ দিয়ে “বোর্ড এবং ভাঙা ছাড়াই” (দ্বি-গায়র তাকত ওয়া-ল-মাউ বাল বাল দ্বি-ওয়া ক্বিরিস ) দিয়ে গণনার একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন। [৮] সঙ্গে হিসাব যেহেতু হিন্দু হিসাব ḥisāb আল-হিন্দি পূর্বাঞ্চলে বলা হত, এটা পশ্চিমে (আক্ষরিক মধ্যে ḥisāb আল-ghubār বলা হত, “: ধুলো বোর্ড ব্যবহারের পাশাপাশি পরিভাষা একটি বিকিরণ চালু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে ধূলা “)। [৮] অঙ্কগুলিকে নিজেদের পশ্চিমে আশ্কাল আল-ঘোবার (ইবনে আল-ইয়াসমিনের ধূলিকণা) বা ক্বালাম আল-ঘোবার (ধূলিকণা) বলা হত। [৮]পরিভাষাটির বিবর্তনের ফলে কিছু পণ্ডিতকে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল যে তথাকথিত “ঘুবরের সংখ্যা “গুলিতে পাশ্চাত্য আরবি সংখ্যাগুলির একটি পৃথক উত্স রয়েছে তবে উপলভ্য প্রমাণগুলি কোনও পৃথক উত্সের ইঙ্গিত দেয় না। [১০]
ওউপেকও প্রস্তাব দিয়েছেন যে আলেকজান্দ্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রাপ্ত মুরসের আগমনের পূর্বে স্পেনে পশ্চিমা আরবি সংখ্যাগুলি ইতিমধ্যে ব্যবহৃত হয়েছিল, তবে এই তত্ত্বটি পণ্ডিতদের দ্বারা গৃহীত হয়নি। [১১]
কিছু জনপ্রিয় পৌরাণিক কল্পকাহিনী যুক্তি দেয় যে এই চিহ্নগুলির মূল ফর্মগুলি তাদের সংখ্যা অনুসারে যে সংখ্যাগুলিকে ধারণ করেছিল, তার মধ্য দিয়ে তাদের সংখ্যাগত মান নির্দেশ করে, তবে এরূপ কোনও উত্সের প্রমাণ নেই। [১২]
ইউরোপে দত্তক
পশ্চিমের প্রথম আরবি সংখ্যা স্পেনের কোডেক্স অ্যালবেলডেনসিসে উপস্থিত হয়েছিল।
আরবি সংখ্যায় ভারতীয় সংখ্যাগুলির বিবর্তন এবং ইউরোপে তাদের গ্রহণ
একটি জার্মান পাণ্ডুলিপি পৃষ্ঠার আরবি সংখ্যাগুলির শিক্ষার ব্যবহার ( তালহফার থট, 1459)। এই সময়ে, সংখ্যাগুলির জ্ঞান এখনও বহুলোক হিসাবে দেখা হত, এবং তালহফার তাদের হিব্রু বর্ণমালা এবং জ্যোতিষের সাথে উপস্থাপন করেছেন।
18 শতকের শেষের ফরাসী বিপ্লবী “দশমিক” ক্লকফেস।
ইউরোপ এবং আমেরিকাতে ডিজিটগুলি বেশি বেশি “আরবি সংখ্যা” হিসাবে পরিচিত হওয়ার কারণ হ’ল দশম শতাব্দীতে উত্তর আফ্রিকার আরবি-স্পিকাররা ইউরোপের সাথে পরিচয় করিয়েছিল, যারা তখন লিবিয়া থেকে মরক্কোতে অঙ্কগুলি ব্যবহার করছিল। আরবরা অন্যান্য অঞ্চলে পূর্ব আরবি সংখ্যাগুলি (٠١٢٣٤٥٦٧٨٩) ব্যবহার করছিল।
৮২২ খ্রিস্টাব্দে আল-খুয়ারিজমি আরবিতে একটি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন, হিন্দু সংখ্যার সাথে গণনার উপর, [১৩] যা কেবল দ্বাদশ শতাব্দীর লাতিন অনুবাদ, আলগোরিটমি দে নুমেরো ইন্দোরাম হিসাবে টিকে আছে । [১৪][১৫]Algoritmi, লেখক নাম অনুবাদক এর প্রতিদান, শব্দ বৃদ্ধি দিয়েছেন অ্যালগরিদম । [১৬]
পাশ্চাত্যে অঙ্কগুলির প্রথম উল্লেখগুলি 976 এর কোডেক্স ভিজিলানাসে[১৭]
980s থেকে, এর Gerbert আরিলেক (পরবর্তীকালে, পোপ সিলভেস্টার দ্বিতীয় ) তার অবস্থানে ইউরোপে সংখ্যাসমূহ বিস্তারের জ্ঞান করতেন। গারবার্ট যৌবনে বার্সেলোনায় পড়াশোনা করেছিলেন। তিনি বিষয়ে গাণিতিক গ্রন্থ অনুরোধ করেছেন তাদের পরিচিত ছিল জ্যোতির্বিজ্ঞানের থেকে বার্সেলোনার Lupitus পর ফ্রান্সে ফিরে এসেছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
লিওনার্দো ফিবানচি ( পিসা লিওনার্দো ), জন্ম একজন গণিতবিদ পিসা প্রজাতন্ত্র যারা পড়াশোনা করেছে মধ্যে Bejaia (মোমবাতি), আলজেরিয়া, তার 1202 বই সাথে ইউরোপে ভারতীয় সংখ্যা সিস্টেম উন্নীত লাইবার Abaci :
আমার বাবা, যিনি তার দেশ পিসান ব্যবসায়ীদের সেখানে অভিনয় করার জন্য বুগিয়ার প্রথা অনুসারে পাবলিক নোটারি হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন, যখন দায়িত্বে ছিলেন, তখন আমি যখন ছোট ছিলাম তখনই তিনি আমাকে তাঁর কাছে ডেকেছিলেন এবং উপযোগিতার দিকে নজর রেখেছিলেন এবং ভবিষ্যতের সুবিধার্থে, আমাকে সেখানে থাকতে এবং অ্যাকাউন্টিং স্কুলে নির্দেশনা গ্রহণ করার ইচ্ছা করেছিল। সেখানে যখন আমি উল্লেখযোগ্য শিক্ষার মাধ্যমে ভারতীয়দের নয়টি প্রতীকের শিল্পের সাথে পরিচয় করিয়েছিলাম, তখন শিল্পের জ্ঞান খুব শীঘ্রই আমাকে অন্য সকলের থেকে সন্তুষ্ট করেছিল এবং আমি এটি বুঝতে পারি।
অঙ্কগুলির ইউরোপীয় গ্রহণযোগ্যতা মুদ্রণযন্ত্রের আবিষ্কার দ্বারা ত্বরান্বিত হয়েছিল এবং 15 তম শতাব্দীতে এগুলি ব্যাপকভাবে পরিচিত হয়ে ওঠে। ব্রিটেনে তাদের ব্যবহারের প্রারম্ভিক প্রমাণগুলির মধ্যে রয়েছে: ১৩ 139 hour সাল থেকে সমতুল্য এক ঘণ্টার চতুর্থাংশ [১৮] ইংল্যান্ডে, সাসেক্সের হিথফিল্ড চার্চের টাওয়ারে একটি 1445 শিলালিপি; বার্কশায়ার ব্রা চার্চের কাঠের লীচ-গেটে একটি 1448 শিলালিপি; এবং পিডলেট্রেন্থাইড গির্জার, ডরসেটের বেলফ্রি দরজার উপর একটি 1487 শিলালিপি; এবং স্কটল্যান্ডে এলগিন ক্যাথেড্রালের হান্টির প্রথম আর্লের সমাধিতে একটি 1470 শিলালিপি রয়েছে। (আরও উদাহরণের জন্য জিএফ হিল, ইউরোপের আরবি সংখ্যার বিকাশ দেখুন। ) মধ্য ইউরোপে, হাঙ্গেরির বাদশাহ লাডিসালাস মরণোত্তর, আরবি সংখ্যার ব্যবহার শুরু করেছিলেন, যা প্রথমবারের মতো ১৪৫6 এর রাজকীয় নথিতে প্রকাশিত হয়েছে। [১৯] ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগে, তারা ইউরোপের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রচলিত ছিল। [২০]রোমান সংখ্যাগুলি বেশিরভাগ এলো ডোমিনি বছরের স্বরলিপি এবং ক্লকফেসে সংখ্যার জন্য ব্যবহৃত হয়।
১ Europe৫7 সালে প্রকাশিত হিস্টোয়ার দে লা ম্যাথাম্যাটিক -এ ফরাসী পণ্ডিত জাঁ-এতিয়েন মন্টুচলার তৈরি একটি টেবিলের প্রথম দিকে ইউরোপের অঙ্কগুলির বিবর্তন এখানে দেখানো হয়েছে:
আজও রোমান সংখ্যাগুলি তালিকা অনুসারে (বর্ণানুক্রমিক গণনার বিকল্প হিসাবে), অনুক্রমিক খণ্ডের জন্য, একই প্রথম নামগুলির সাথে রাজা বা পরিবারের সদস্যদের পৃথক করতে এবং বইগুলিতে প্রিফেটরি উপাদানগুলিতে পৃষ্ঠাগুলির সংখ্যা পৃষ্ঠাতে পৃথক করার জন্য ব্যবহৃত হয় পাশাপাশি ক্লকফেসে।
রাশিয়ায় আরবি সংখ্যা গ্রহণ
সিরিলিক সংখ্যাগুলি দক্ষিণ ও পূর্ব স্লাভিক লোকেরা ব্যবহৃত সিরিলিক বর্ণমালা থেকে প্রাপ্ত একটি সংখ্যক পদ্ধতি ছিল। 18 শতকের গোড়ার দিকে রাশিয়ায় এই সিস্টেমটি ব্যবহৃত হয়েছিল যখন পিটার গ্রেট এটিকে আরবি সংখ্যার সাথে প্রতিস্থাপন করেছিলেন।
চীনে আরবি সংখ্যা গ্রহণ
ইউয়ান রাজবংশ (1271–1368) এর সাথে চীন থেকে ফার্সী / আরবি সংখ্যায় 6 ম্যাজিক স্কোয়ারের অর্ডার সহ লোহা প্লেট।
দশটি আরবি সংখ্যাগুলি মোর্স কোডের মতো বৈদ্যুতিন, রেডিও এবং ডিজিটাল যোগাযোগের জন্য ডিজাইন করা কার্যত প্রতিটি অক্ষর সেটগুলিতে এনকোড থাকে।
তারা 0x30 থেকে 0x39 পজিশনে ASCII এ এনকোডেড রয়েছে। নিম্ন 4 টি বাইনারি বিটগুলিতে মাস্কিং (বা শেষ হেক্সাডেসিমাল অঙ্কটি গ্রহণ করা) ডিজিটের মান দেয়, প্রাথমিক কম্পিউটারগুলিতে পাঠ্যকে সংখ্যায় রূপান্তরিত করতে একটি দুর্দান্ত সহায়তা। এই অবস্থানগুলি ইউনিকোডে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত হয়েছিল। [২৪]EBCDIC বিভিন্ন মান ব্যবহার করেছে তবে এর চেয়ে কম 4 টি বিট ডিজিট মানের সাথেও রয়েছে।
আরবি ব্যাকরণ বা আরবি ভাষাবিজ্ঞান (আরবি: النحو العربي আন-নাহু আল-আরাবি বা আরবি: عُلُوم اللغَة العَرَبِيَّة উলুম আল-লুগাহ আল-আরাবিয়াহ), সংক্ষেপে নাহু, হল আরবি ভাষারব্যাকরণ। আরবি ব্যাকরণ হল এমন একটি বিজ্ঞান যা অধ্যায়নের দ্বারা আরবি শব্দের শেষ অক্ষরের অবস্থা-বিধান (যের-যবর-পেশ ইত্যাদি প্রয়োগ) জানা যায় এবং বাক্য গঠনের পদ্ধতি সম্পর্কিত যাবতীয় জ্ঞান অর্জিত হয়। আরবি হল একটি সেমেটিক ভাষা। অন্যান্য সেমিটিক ভাষার ব্যাকরণের সাথে এ ভাষার ব্যাকরণের অনেক মিল রয়েছে।
ইতিহাস
প্রাচীনতম আরবি ব্যাকরণবিদ কে তা একটি বিতর্কিত বিষয়; কিছু সূত্র বলে যে তিনি হলেন আবু আল আসওয়াদ আদ-দুওয়ালি, আলী ইবনে আবি তালিবের কবি বন্ধু, যিনি খৃস্টাব্দ ৬০০-এর দশকের মাঝামাঝি আরবি জন্য একই বর্ণের ভিন্ন উচ্চারণের জন্য বৈশিষ্ট্যসূচক চিহ্ন এবং স্বরবর্ণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন,[১] অন্যরা বলেন যে, প্রাচীনতম ব্যাকরণবিদ হলেন ইবনে আবি ইসহাক (মৃত্যু ৭৩৫/৬ খ্রিস্টাব্দ, হিজরি ১১৭)।[২]
ইসলামের দ্রুত উত্থানের সাথে সাথে বসরা ও কুফার বিদ্যালয়গুলি অষ্টম শতাব্দীর শেষের দিকে আরবি ব্যাকরণের নিয়মগুলি আরও বিকশিত করেছিল।[৩][৪] বসরা স্কুল থেকে সাধারণত আবু আমর ইবনে আল-আলা প্রতিষ্ঠিত হিসাবে বিবেচিত,[৫] দুই প্রতিনিধি এই ক্ষেত্রটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। এদের মধ্যে একজন হলেন আল-খলিল ইবনে আহমদ আল-ফারাহাদি। তিনি প্রথম আরবি অভিধান এবং আরবি ছন্দঃশাস্ত্র গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। আর দ্বিতীয় জন হলেন তাঁর ছাত্র সিবাওয়াহ, যিনি আরবি ব্যাকরণের তত্ত্ব সম্পর্কিত প্রথম বইটি রচনা করেছিলেন।[৬] কুফা স্কুল থেকে, আল-রুআসিকে সর্বজনীনভাবে প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, যদিও তার নিজস্ব লেখাগুলি অবর্তমান হিসাবে বিবেচিত হয়।[৭][৮]
বিভাগ
শাস্ত্রীয় আরবী ব্যাকরণের জন্য ব্যাকরণ-বিজ্ঞান পাঁচটি শাখায় বিভক্ত:
আল-লুগাত ( اَللُّغَة ) : (ভাষা / অভিধান) শব্দভাণ্ডার সংগ্রহ এবং ব্যাখ্যা করার সাথে সম্পর্কিত।
আত-তাসরিফ বা আস-সরফ ( اَلتَّصْرِيف ) : (রূপতত্ত্ব বা শব্দতত্ত্ব) একই শব্দের বিভিন্ন রূপ নির্ধারণ।
আন-নাহু (اَلنَّحْو ) : (বাক্য গঠন) বাক্যে ব্যবহৃত শব্দ সমুহের শেষে ‘ইরাব’ প্রদান সম্পর্কিত ।
আল-ইশতিকাক (اَلاشْتِقَاق ) : (উদ্ভূত) শব্দের উৎস বা ধাতু নির্ধারণ ।
আল-বালাগাত ( اَلْبَلَاغَة ) : (অলঙ্কারশাস্ত্র) যা শৈলীগত গুণ বা স্পষ্টতাকে বিশদ করে।
তবে আরব অঞ্চল ও ভারতীয় উপমহাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন আরবি পাঠকেন্দ্রগুলোতে (যেমন মাদ্রাসা) মূলত আরবি ব্যাকরণের দুটি শাখাকে প্রধান ধরা হয়, এগুলো হলো, প্রথমত, ইলমুস সরফ বা শব্দতত্ত্ব, এবং দ্বিতীয়ত, ইলমুন নাহু বা বাক্যতত্ত্ব। আরবির সমসাময়িক প্রকরণগুলোর ব্যাকরণ বা ব্যাকরণসমূহ আরেকটি অন্যতম আলোচনার বিষয়। সাঈদ ম. বাদাভি, আরবি ব্যাকরণের একজন বিশেষজ্ঞ, আরবি ব্যাকরণকে বক্তার স্বাক্ষরতার পর্যায় ও প্রাচীন আরবি হতে বক্তার বিচ্যুতির হার অনুযায়ী ৫টি ভিন্ন প্রকরণে ভাগ করেছেন। সবচেয়ে কথ্য আরবি থেকে শুরু করে সবচেয়ে আড়ম্বর পর্যন্ত বাদাভির ৫টি ব্যাকরণিক প্রকার হলো নিরক্ষর কথ্য আরবি (عامِّيّة الأُمِّيِّينِ ‘আম্মিয়াত আল-উম্মিয়ীন), অর্ধ্ব-শিক্ষিত কথ্য আরবি (عامِّيّة المُتَنَوِّرِينَ ‘আম্মিয়াত আল-মুতানাউয়িরিন), শিক্ষিত কথ্য আরবি (عامِّيّة اَلمُثَقَّفِينَ ‘আম্মিয়াত আল-মুসাক্কাফিরীন), আধুনিক আদর্শ আরবি (فُصْحَى العَصْر ফুসহা ল-‘আসর), ও প্রাচীন আরবি (فُصْحَى التُراث ফুসহা ত-তুরাছ)।[৯] এছাড়াও বিশ্বজুড়ে মোট ২৫টিরও বেশি কথ্য আরবির ভিন্ন ভিন্ন বাচনশৈলী (dialects) প্রচলিত রয়েছে, যেগুলোকে প্রধানত ২টি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়, যথাঃ মাশরেকি আরবি বা প্রাচ্য আরবদেশগুলোর আরবি ও মাগরেবি আরবি বা পাশ্চাত্য আরব দেশগুলোর আরবি।
ইলমুল লফয বা অর্থবোধক ধ্বনিতত্ত্ব
অর্থপূর্ণ ধ্বনিকে লফয বলে। লফজ দুই প্রকার বা দুই বাবঃ মুফরাদ বা কালিমা বা সীগাহ’ বা শব্দ ও মুরাক্কাব বা বাক্যাংশ। আরবি লিখনরীতিতে লেখা ডানদিক থেকে শুরু হয়ে বামদিকে অগ্রসর হয়, যা প্রচলিত বাংলা ও ইংরেজি লিখনরীতির বিপরীত, কারণ সেগুলো বামদিক থেকে শুরু হয়ে ডানদিকে অগ্রসর হয়।
আধুনিক অভিধানসমূহ ও তথ্যসূত্রের গ্রন্থসমূহ বর্ণানুক্রমিকভাবে শব্দের ক্রমধারা রক্ষার ক্ষেত্রে আবজাদি ক্রমধারা ব্যবহার করে না, এক্ষেত্রে এর পরিবর্তে তুলনামুলক নতুন হিজাজি ক্রমধারা ব্যবহার ব্যবহার করা হয়, যেখানে বর্ণগুলো বর্ণগুলোকে আকৃতির সাদৃশ্যের ভিত্তিতে আংশািকভাবে একত্রে দলবদ্ধ করা হয়েছে। হিজাজি ক্রমধারাকে কখনোই সংখ্যা হিসেবে ব্যবহার করা হয় না।
ي
و
ه
ن
م
ل
ك
ق
ف
غ
ع
ظ
ط
ض
ص
ش
س
ز
ر
ذ
د
خ
ح
ج
ث
ت
ب
ا
ইয়া (য়ি)
ওয়াও (ওয়)
হা (হ)
নুন (ন)
মীম (ম)
লাম (ল)
কাফ (ক)
ক্বফ (ক্ব)
ফা (ফ)
গ্বঈন (ঘ)
আঈন (আয়্ব’)
য্বোয়া (য্ব)
ত্বোয়া (ত্ব)
দ্বোয়াদ (দ্ব)
সোয়াদ (অতি লঘু স ও ছ এর আংশিক সদৃশ)
শীন (শ)
সীন (লঘু স)
য্ঝা (য্ঝ)
র (র)
য্বাল (ধ, দ,ও য এর মিশ্রণ)
দ্বাল (দ্ব)
খ্ব (খ্ব)
হা (হ)
জীম (জ)
সা/থা (স ও থ এর মধ্যবর্তী)
তা (ত)
বা (ব)
আলিফ (অ)
স্বরচিহ্ন বা হরকত
আরবীতে স্বরচিহ্নকে হরকত (ইংরেজিঃ Arabic diacritics) বলে। যবর, যের ও পেশকে যথাক্রমে দম্মাহ, ফাতহা ও কাছরাহ বলে। এগুলো া, ি ও ু কার হিসেবে কাজ করে। যবর, যের বা পেশ দ্বিত হলে তাকে তানবীন বলে। হরকতবিহীন হরফ বা বর্ণকে মিলিয়ে পড়াকে যজম বলে, যা হসন্ত ্ এর কাজ করে। আর একই অক্ষর দ্বৈতভাবে যুক্তবর্ণ হিসেবে মিলিয়ে পড়া হলে তাকে তাশদীদ বলে।
স্বরবর্ণ বা ইল্লত
আলিফ, ওয়াও ও ইয়াকে একত্রে ইল্লত বা স্বরবর্ন বলে।
ইলমুস সরফ বা শব্দতত্ত্ব
সরফের প্রধান অংশ হলো কালিমা বা শব্দ বা পদ। কালিমা তিন প্রকার বা তিন বাবঃ ইসম বা নাম (বিশেষ্য, বিশেষণ ও সর্বনাম), ফিল বা ক্রিয়া, হরফ বা অব্যয়।[১০]
ইসম বা নাম
ইসমকে ক্রিয়ার সাথে সম্পর্কের ভিত্তিতে অর্থাৎ কারক হিসেবে এবং তুলনীয় আধিক্যবাচকতার ভিত্তিতে পাচ প্রকারে বিভক্ত করা হয়ে থাকে। ইসমুল ফায়েল বা কর্তৃকারক, ইসমুল মাউফল বা কর্মকারক, ইসমুল তাফদীল তাফদীল বা তুলনীয় আধিক্যবাচক বিশেষ্য (একই রকম ইসমুল মুবালাফাহ বা তুলনাবিহীন আধিক্যবাচক বিশেষ্য), ইসমুদ দরফ/ইসমুয যরফ বা অধিকরণ কারক ও ইসমুল আ’লা বা করণকারক।
কিছু খুব সাধারণ পদান্বয়ী অব্যয়ের (যেমন লি- “প্রতি”, পরোক্ষ বস্তুর জন্যও ব্যবহৃত হয়) সাথে অনুসর্গ সর্বনাম যোগ করা হলে সেগুলো অনিয়মিত বা অপ্রত্যাশিত একত্রিত রূপ প্রকাশ করে:
অন্যান্য সেমিটিক ভাষার ক্রিয়াগুলির মতো আরবি ক্রিয়াপদ (فعل ফি’ল) অত্যন্ত জটিল। আদেশসূচক ক্রিয়াকে আমর আর নিষেধসূচক ক্রিয়াকে নাহী বলে। ফিলে আমরকে ইফআল (করো) দ্বারা উদাহরণ দেওয়া হয়। কতৃবাচক ক্রিয়াকে ফিল মা’রুফ আর কর্মবাচক ক্রিয়াকে ফিল মাজহুল বলে। এদেরকে যথাক্রমে ফাঈল ও মাফউল দ্বারা উদাহরণ দেওয়া হয় (আরও উদাহরণ, জালিম-মজলুম, হাবিব-মাহবুব আলিম-মাআলুম ইত্যাদি)। হ্যাবাচক ক্রিয়াকে ইসবাত ও নাবাচক ক্রিয়াকে নাফী বলে।
জামানা বা ক্রিয়ার কাল
আরবি ব্যকরণে ক্রিয়ার কালকে জমানা বলে। আরবিতে ক্রিয়ার কাল তিন প্রকার এবং এদের ক্রিয়াপদও তিন প্রকারঃ মাদী বা অতীত, হাল বা বর্তমান এবং মুসতাকবিল বা ভবিষ্যত। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ক্রিয়াকে একত্রে ফিল মুদারী বলে। ফিল মাদিকে ফাআলা (করেছিল বা করলো) ও মুদারীকে ইয়াফআলু (করে, করছে বা করবে) দ্বারা প্রাথমিকভাবে উদাহরণ দেওয়া হয়। অনেক সময়, ভবিষ্যৎ কাল সুস্পষ্টভাবে বোঝানোর জন্য ফিল মুদারীর আগে আলাদা শব্দ আকারে সাওফা (سوف) বা ফিল মুদারীর সাথে সংযুক্ত আকারে শুধু সা (س) বর্ণটি যোগ করা হয়।
আরবি ব্যাকরণে বাক্যকে জুমলা বলে। জুমলা দুই প্রকারঃ বিশেষ্যবাচক বাক্য বা জুমলাতুল ইসমিয়াত, এবং ক্রিয়াবাচক বাক্য বা জুমলাতুল ফিলিয়াত। ক্রিয়াবাচক বাক্যের প্রথম ক্রিয়াবাচক শব্দকে ফিল ও পরের ক্রিয়াবাচক বিশেষ্যকে ফায়েল বলে। আর নামবাচক বাক্যের প্রথম নামবাচক শব্দের অংশকে মুবতাদা ও দ্বিতীয় অংশকে খবর বলে।
বাক্য গঠন কাঠামোপদ্ধতি
আরবিতে বাক্য গঠনের সাধারণ প্রধান কাঠামো হলঃ
ক্রিয়া + কর্তা (সাধারণত কর্তা একেবারেই ব্যবহার হয় না, যদি না অতীব সুস্পষ্টকরণের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়) + কর্ম। (ক্রিয়াবাচক বাক্য বা জুমলাতুল ফি’লিয়াত)
এবং দ্বিতীয় অপ্রধান কাঠামো হলোঃ
কর্তা + ক্রিয়া + কর্ম। (বিশেষ্যবাচক বা নামবাচক বাক্য বা জুমলাতুল ইসমিয়াত)
আরবিতে বাক্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ক্রিয়াপদ, যা উল্লেখ না করলে বাক্যকে সম্পূর্ণ মনে করা হয় না, আর সবচেয়ে অগুরুত্বপূর্ণ অংশ হল কর্তা, যা সাধারণ ক্ষেত্রে প্রায় সকল বাক্যেই অনুল্লেখিত থাকে, যদি না এর অনুপস্থিতিতে বাক্যের কর্তা কে তা বোঝা কঠিন হয়ে যায়, সে সকল ক্ষেত্র ছাড়া। যেমনঃ আমি ভাত খাই এর শাব্দিক আরবিঃ
আব্জাদ লিপি এমন একটি লিখন-পদ্ধতি যেখানে প্রতিটি চিহ্নই একেকটি ব্যঞ্জনবর্ণ। পাঠক নিজেই নির্দিষ্ট স্বরবর্ণের যোগান দেন। এটিকে পশ্চিম সেমেটিক লিপি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ধরা হয়।
শব্দতত্ত্ব
আব্জাদ শব্দটি (আ ব জ দ أبجد) এসেছে আরবি লিপির প্রথম অক্ষর থেকে। বাকিটা পুরাতন হিব্রু লিপি, ফিনিশীয় ও সেমেটিক লিপির ক্রম অনুযায়ী; ʾ ব গ দ.
পরিভাষা
উৎস ও উৎপত্তি
প্রাক-সিনেটিক রিপির একটি নমুনা যেটি দিয়ে ‘to Baalat’ বোঝানো হয়েছে। উপরে বাঁ থেকে নিচের ডানে যাওয়া রেখাটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে, mt l bclt.
ভেজাল আবজাদ
আরবী ভাষায় লিখিত “Al-‘Arabiyya(আল আরাবিয়া)” যেটি পরিবর্তিত আবজাদের উদাহরণ।
স্বরবর্ণের সংযুক্তি
আবজাদ ও সেমেটিক ভাষার গঠন
মুহাম্মদ শব্দের’মিম’,’হা’,’মিম’,’দাল’হরফের আবজাদ মান