Category: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য

Bengali language and literature

  • কর্মধারয় সমাস

    যে সমাসে বিশেষণ বা বিশেষণভাবাপন্ন পদের সাথে বিশেষ্য বা বিশেষ্যভাবাপন্ন পদের সমাস হয় এবং পরপদের অর্থই প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয়, তাকে কর্মধারয় সমাস বলে।[১] যেমন: নীল যে পদ্ম= নীলপদ্ম, শান্ত অথচ শিষ্ট= শান্তশিষ্ট, কাঁচা অথচ মিঠা= কাঁচামিঠা, খাস যে মহল= খাসমহল, হেড যে মাস্টার= হেডমাস্টার, রক্ত যে চন্দন= রক্তচন্দন, যিনি গিন্নি তিনি মা= গিন্নিমা।

    অনেক ব্যাকরণবিদ কর্মধারয় সমাসকে তৎপুরুষ সমাসের অন্তর্ভুক্ত বলে মনে করেন।

    প্রকারভেদ

    কর্মধারয় সমাস কয়েক প্রকার হতে পারে।[১] যেমন:

    মধ্যপদলোপী কর্মধারয়

    যে কর্মধারয় সমাসে ব্যাসবাক্যের মধ্যপদের লোপ হয়, তাকে মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস বলে। যেমন: সিংহ চিহ্নিত আসন= সিংহাসন, সাহিত্য বিষয়ক সভা= সাহিত্যসভা, স্মৃতি রক্ষার্থে সৌধ= স্মৃতিসৌধ, ব্রাহ্মণ ধর্মীয় প্রধান পুরোহিত= ব্রাহ্মণ পুরোহিত, জগতের রক্ষাকারী ঈশ্বর= জগদীশ্বর, সূর্য উদয়কালীন মন্ত্র= সূর্যমন্ত্র, মৌ ভর্তি চাক= মৌচাক, গাছকদম= গাছে ফুটিত কদম, সন্ধিগীত= সন্ধি যোগঘটানো গীত, কাঁচকলা= কাঁচা অবস্থায় কলা, চিকিৎসাশাস্ত্র‌‌= চিকিৎসা বিষয়ক শাস্ত্র, ঘরজামাই= ঘর আশ্ৰিত জামাই, পল মিশ্রিত অন্ন= পলান্ন, হাসি মাখা মুখ= হাসিমুখ, বৌ পরিবেশন করা ভাত= বউভাত, মৌ সংগ্রহকারী মাছি= মৌমাছি, গাড়ি রাখার জন্য বারান্দা= গাড়িবারান্দা, মোম নির্মিত বাতি= মোমবাতি।

    উপমান কর্মধারয়

    সাধারণ ধর্মবাচক পদের সাথে উপমান পদের যে সমাস হয় তাকে উপমান কর্মধারয় সমাস বলে।[১] যেমন: ভ্রমরের ন্যায় কৃষ্ণ কেশ= ভ্রমরকৃষ্ণকেশ। এখানে ‘ভ্রমর’ উপমান ও ‘কেশ’ উপমেয় এবং ‘কৃষ্ণত্ব’ সাধারণ ধর্ম। (উপমান অর্থ তুলনীয় বস্তু। প্রত্যক্ষ কোনো বস্তুর সাথে পরোক্ষ কোনো বস্তুর তুলনা করলে প্রত্যক্ষ বস্তুটিকে বলা হয় উপমেয়, এবং যার সাথে তুলনা করা হয়েছে তাকে বলা হয় উপমান।[১])

    এরূপ- তুষারের ন্যায় শুভ্র= তুষারশুভ্র, অরুণের ন্যায় রাঙা= অরুণরাঙা, রক্তের ন্যায় লাল= রক্তলাল, চন্দনের মতো স্নিগ্ধ= চন্দনস্নিগ্ধ।

    উপমান কর্মধারয় সমাসে বিশেষ্য পদের সাথে বিশেষণের সমাস হয়। যেমন: “তুষার” হচ্ছে বিশেষ্য এবং “শুভ্র” হচ্ছে বিশেষণ। যদি দুটোই বিশেষ্য হয়ে যায়, তবে সেটি উপমিত কর্মধারয় সমাস হয়।

    উপমিত কর্মধারয়

    সাধারণ গুণের উল্লেখ না করে উপমেয় পদের সাথে উপমান পদের যে সমাস হয়, তাকে উপমিত কর্মধারয় সমাস বলে। এক্ষেত্রে সাধারণ গুণটি ব্যাসবাক্য বা সমস্তপদে থাকে না, বরং অনুমান করে নেওয়া হয়। এ সমাসে উপমেয় পদটি পূর্বে বসে। যেমন: মুখ চন্দ্রের ন্যায়= চন্দ্রমুখ, পুরুষ সিংহের ন্যায়= সিংহপুরুষ।

    রূপক কর্মধারয়

    উপমান ও উপমেয়ের মধ্যে অভিন্নতা কল্পনা করা হলে রূপক কর্মধারয় সমাস হয়।[১] এ সমাসে উপমেয় পদ পূর্বে বসে ও উপমান পদ পরে বসে এবং সমস্যমান পদে ‘রূপ’ অথবা ‘ই’ যোগ করে ব্যাসবাক্য গঠন করা হয়। যেমন: ক্রোধ রূপ অনল= ক্রোধানল, বিষাদ রূপ সিন্ধু= বিষাদসিন্ধু, মন রূপ মাঝি= মনমাঝি।

    অন্যান্য কর্মধারয় সমাস

    কখনো কখনো সর্বনাম, সংখ্যাবাচক শব্দ এবং উপসর্গ আগে বসে পরপদের সাথে কর্মধারয় সমাস গঠন করতে পারে। যেমন: কুকর্ম, যথাযোগ্য (অব্যয়), সেকাল, একাল (সর্বনাম), একজন, দোতলা (সংখ্যাবাচক শব্দ), বিকাল, সকাল, বিদেশ, বেসুর (উপসর্গ)।

    কর্মধারয় সমাসের নিয়ম

    • দুটি বিশেষণ পদে একটি বিশেষ্যকে বোঝালে কর্মধারয় সমাস হয়। যেমন: যে চালাক সেই চতুর= চালাক-চতুর।
    • দুটি বিশেষ্য পদে একই ব্যক্তি বা বস্তুকে বোঝালে কর্মধারয় সমাস হয়। যেমন: যিনি জজ তিনিই সাহেব= জজসাহেব।
    • কার্যে পরম্পরা বোঝাতে দুইটি কৃদন্ত বিশেষণ পদেও কর্মধারয় সমাস হয়। যেমন: আগে ধোয়া পরে মোছা= ধোয়ামোছা।
    • পূর্বপদে স্ত্রীবাচক বিশেষণ থাকলে কর্মধারয় সমাসে সেটি পুরুষবাচক হয়। যেমন: সুন্দরী যে লতা= সুন্দরলতা, মহতী যে কীর্তি= মহাকীর্তি।
    • বিশেষণবাচক মহান বা মহৎ শব্দ পূর্বপদ হলে, ‘মহৎ’ ও ‘মহান’ স্থলে ‘মহা’ হয়। যেমন: মহৎ যে জ্ঞান= মহাজ্ঞান, মহান যে নবি= মহানবি।
    • পূর্বপদে ‘কু’ বিশেষণ থাকলে এবং পরপদে প্রথমে স্বরধ্বনি থাকলে ‘কু’ স্থানে ‘কৎ’ হয়। যেমন: কু যে অর্থ= কদর্থ, কু যে আচার= কদাচার।
    • পরপদে ‘রাজা’ শব্দ থাকলে কর্মধারয় সমাসে ‘রাজ’ হয়। যেমন: মহান যে রাজা= মহারাজ।
    • বিশেষণ ও বিশেষ্য পদে কর্মধারয় সমাস হলে কখনো কখনো বিশেষণ পরে আসে, বিশেষ্য আগে যায়। যেমন: সিদ্ধ যে আলু= আলুসিদ্ধ, অধম যে নর= নরাধম।

    আরো দেখুন

  • অব্যয়ীভাব সমাস

    পূর্বপদে অব্যয়যোগে নিষ্পন্ন সমাসে যদি অব্যয়েরই অর্থের প্রাধান্য থাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলে।[১] অব্যয়ীভাব সমাসে কেবল অব্যয়ের অর্থযোগে ব্যাসবাক্যটি রচিত হয়। যেমন: জানু পর্যন্ত লম্বিত (‘পর্যন্ত’ শব্দের অব্যয় ‘আ’)= আজানুলম্বিত (বাহু), মরণ পর্যন্ত= আমরণ।

    বিভিন্ন অর্থে অব্যয়ীভাব সমাস

    সামীপ্য (নৈকট্য), বিপ্সা (পৌনঃপুনিকতা), পর্যন্ত, অভাব, অনতিক্রম্য, সাদৃশ্য, সম্পর্ক, সংস্পর্শ,ঊর্ধ্ব, সম্মান প্রভৃতি নানা অর্থে উপসর্গ তৎপুরুষ বা অব্যয়ীভাব সমাস হয়। যেমন:

    ১.সামীপ্য (উপ)কণ্ঠের সমীপে= উপকণ্ঠ, কূলের সমীপে= উপকূল
    ২.বিপ্সা (অনু, প্রতি)দিন দিন= প্রতিদিন, ক্ষণে ক্ষণে= অনুক্ষণে, ক্ষণ ক্ষণ= অনুক্ষণ
    ৩.অভাব (নিঃ= নির)আমিষের অভাব= নিরামিষ, ভাবনার অভাব= নির্ভাবনা, জলের অভাব= নির্জল, উৎসাহের অভাব= নিরুৎসাহ
    ৪.পর্যন্ত (আ)সমুদ্র থেকে হিমাচল পর্যন্ত= আসমুদ্রহিমাচল, পা থেকে মাথা পর্যন্ত= আপাদমস্তক
    ৫.সাদৃশ্য (উপ)শহরের সদৃশ= উপশহর, গ্রহের তুল্য= উপগ্রহ, বনের সদৃশ= উপবন
    ৬.অনতিক্রম্যতা (যথা)রীতিকে অতিক্রম না করে= যথারীতি, সাধ্যকে অতিক্রম না করে= যথাসাধ্য। এরূপ- যথাবিধি, যথাযোগ্য
    ৭.অতিক্রান্ত (উৎ)বেলাকে অতিক্রান্ত= উদ্বেল, শৃঙখলাকে অতিক্রান্ত= উচ্ছৃঙখল
    ৮.বিরোধ (প্রতি)বিরুদ্ধ বাদ= প্রতিবাদ, বিরুদ্ধ কূল= প্রতিকূল
    ৯.পশ্চাৎ (অনু)পশ্চাৎ গমন= অনুগমন, পশ্চাৎ ধাবন= অনুধাবন
    ১০.ঈষৎ (আ)ঈষৎ নত= আনত, ঈষৎ রক্তিম= আরক্তিম
    ১১.ক্ষুদ্র অর্থে (উপ)উপগ্রহ, উপনদী
    ১২.পূর্ণ বা সমগ্র অর্থে (পরি বা সম)পরিপূর্ণ, সম্পূর্ণ
    ১৩.দূরবর্তী অর্থে (প্র, পর)অক্ষির অগোচরে= পরোক্ষ। এরূপ- প্রপিতামহ
    ১৪.প্রতিনিধি অর্থে (প্রতি)প্রতিচ্ছায়া, প্রতিচ্ছবি, প্রতিবিম্ব
    ১৫.প্রতিদ্বন্দ্বী অর্থে (প্রতি)প্রতিপক্ষ, প্রত্যুত্তর
    ১৬.সম্পর্ক অর্থে (সম, বিষয়)সম্বল = বলের সম্পর্কে, সম্মান= মানের সম্পর্কে, সমক্ষে= অক্ষের সম্পর্কে
    ১৭.যোগ্যতা অর্থে (অনু)অনুসন্তান= যোগ্য সন্তান, অনুকূল= কুলের যোগ্য, অনুদান= দানের যোগ্য

    আরো দেখুন

  • যুক্তাক্ষর

    যুক্তাক্ষর বা যুক্তবর্ণ হলো দুটি ব্যঞ্জনবর্ণকে একসাথে যুক্ত করা ।[১]তবে উচ্চারণের সময় প্রথম ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে স্বরধ্বনি উচ্চারিত হয় না। অর্থাৎ‍ দুটি বর্ণের প্রথমটিতে যদি হসন্ত থাকে তবে বানানের সময় উভয়কে একত্রে লেখা হলে প্রাপ্ত বর্ণটিই যুক্তবর্ণ বা যুক্তাক্ষর।[২]বাংলা শব্দে দ্বিত্ব প্রয়োগের জন্যও অনেক সময় যুক্তাক্ষর ব্যবহার করা হয়। ব্রাহ্মীলিপির মতো দেবনাগরীলিপি ব্যবহারে লিখিত ভাষাগুলোতেও একটি বর্ণ অন্য একটি বর্ণের সঙ্গে যুক্ত করে লেখা হয়।

    ধারণা

    দুটি ব্যঞ্জনবর্ণ একসাথে বাংলা ছাড়াও অনেক ভাষাতেই উচ্চারিত হয়।যেমন: ইংরেজি “list”(ল্+ই+স্+ট্), জার্মান “Gras”(গ্+র্+আ+স্) বা গ্রিক “εκλογές”(এ+ক্+ল্+ও+গ্+এ+স্)। কিন্তু বাংলা ও অন্যান্য ভারতীয় ভাষাগুলোর সাথে এর মৌলিক পার্থক্য হলো বাংলা ও অন্যান্য ভারতীয় ভাষাগুলোতে তা একসাথে যেমন উচ্চারণ করা হয় তেমন লেখাও হয় একসাথে। কিন্তু উপর্যুক্ত ভাষাগুলোতে উচ্চারণ একসাথে করলেও এক বর্ণকে অন্য বর্ণের সঙ্গে “ক্ল” এর মতো মিলিয়ে লেখা হয় না। পাণিনি প্রমুখ ধ্বনিবিদ ব্যঞ্জনধ্বনির এমন স্বরবিহীন অসম্পূর্ণ উচ্চারণকে “অভিনিধান” নামে আখ্যায়িত করেছেন।[৩][৪]

    বাংলা ভাষায় কোনো শব্দের কোনো বর্ণে অবস্থিত স্বরবর্ণকে অনুচ্চারিত দেখাতে ্ (হসন্ত) ব্যবহৃত হয়।আর দুটি ব্যঞ্জনধ্বনির প্রথমটির সঙ্গে কোনোরূপ স্বরধ্বনি উচ্চারণ না করে দুটি ব্যঞ্জনকে একসাথে উচ্চারণের প্রয়াস থেকেই যুক্তাক্ষর বা যুক্তবর্ণ লেখা হয়। যেমন:গল্প (গ্+অ+ল্+প্+ও) এখানে “ল্প” হলো যুক্তবর্ণ যেখানে “ল” এর পরে কোনোরূপ স্বরধ্বনি উচ্চারণ না করে “প” এর সঙ্গে মিলিয়ে উচ্চারণ করা হয়। “গ” এর সঙ্গে “অ” স্বর ও “প” এর সঙ্গে “ও” স্বর উচ্চারিত হলেও “ল” ও “প” এর মাঝে কোনো স্বরধ্বনি ছিল না।

    প্রকারভেদ

    ধারণা করা হয় ফলাও এক প্রকার যুক্তাক্ষর।সুতরাং যুক্তাক্ষর দুই প্রকারঃসাধারণ ও ফলা

    ফলা

    বাংলা ভাষায় ৬টিঃ

    নামউদাহরণ
    ব-ফলাশ্ব
    ম-ফলাশ্ম
    র-ফলাশ্র
    ন-ফলাশ্ন
    য-ফলাশ্য
    ল-ফলাশ্ল

    যুক্তাক্ষরের রূপভেদ

    বাংলা যুক্তাক্ষরের স্বচ্ছ-অর্ধস্বচ্ছ-অনচ্ছ রূপ

    বাংলা যুক্তাক্ষরে ব্যঞ্জনের রূপ অনেক সময় পাল্টে যায় বা স্বাভাবিক বর্ণের চেয়ে আকৃতি ভিন্ন হয়। কতটা ভেদ বা ভিন্নতা ঘটবে সেই অনুসারে স্বচ্ছ, অর্ধস্বচ্ছঅনচ্ছ এই তিনটি পরিভাষা ব্যবহৃত হয়। [৫]

    অনচ্ছ

    অনচ্ছ হলো যে যুক্তাক্ষর থেকে মূল ব্যঞ্জনবর্ণকে আদৌ চেনা যায় না। যেমন: রেফ, র-ফলা ( ‌্র ), য-ফলা ( ‍্য )। এগুলি যে র আর য এর অপর রূপ তা সহজে বোঝা যায় না । বাংলা যুক্তব্যঞ্জনে ঙ্গ এবং ক্ষ-ও অনচ্ছ যুক্তব্যঞ্জনের দৃষ্টান্ত— যার দুটি সদস্য কোন কোন বর্ণ তা বোঝা কঠিন।

    অর্ধস্বচ্ছ

    অর্ধস্বচ্ছ হলো সেই সব যুক্তব্যঞ্জন যার একটিতে অন্তত বোধগম্য অবয়ব থাকে, বা তার অংশ বা খণ্ড উপস্থিত থাকে। যেমন: প্র, র্ক, ক্ত, ন্ধ, গ্ধ ইত্যাদি।

    স্বচ্ছ

    স্বচ্ছ হলো যেগুলির দুটোকেই স্পষ্ট চেনা যায়। যেমন: ক্ক, ল্ল, হ্ব, দ্ভ।

    বর্তমানে বাংলা একাডেমির প্রস্তাবনা অনুযায়ী যুক্তব্যঞ্জনগুলিকে যথাসম্ভব স্বচ্ছ করার কথা বলা হয়েছে। [৫] তবে এক্ষেত্রে অসুবিধার কারণ হলো পুরাতন সাহিত্যকর্ম বা গ্রন্থগুলো নতুনভাবে বর্ণ চেনা বাঙালিগণ পড়তে পারবেন না এবং অনেক যুক্তবর্ণই চিনতে পারবেন না।[৬] সব পুরাতন গ্রন্থ নতুন বর্ণে ছেপে ফেলা দুরূহ। তবে স্বচ্ছ ধরণের নতুন যুক্তবর্ণ ও প্রচলিত পুরাতন যুক্তবর্ণ কিছুদিন পাশাপাশি শেখানোর কথাও প্রস্তাব করা হয়ে থাকে। [৭]

    টীকা

    • ^১ বাংলা শব্দে অনেক সময় কোনো বর্ণের নিচে চিহ্ন থাকে।একেই বলা হয় হসন্ত।যেমনঃ”প্” প-হসন্ত

    অর্থাৎ‍ এর নিচে হসন্ত

  • ক্ষ

    ক্ষ
    ব্যবহার
    লিখনপদ্ধতিবাংলা লিপি
    ধরনযুক্তবর্ণ
    উৎপত্তির ভাষাবাংলা, অসমীয়া
    ইতিহাস
    ক্রমবিকাশক্ষ
    অন্যান্য

    ক্ষ (উচ্চারণ: খিয়ো) একটি বাংলা যুক্তবর্ণ। বাংলা অক্ষর ‘ক’ ও ‘ষ’ পরপর যুক্ত করলে ‘ক্ষ’ তৈরি হয়। যুক্তবর্ণটিকে একসময় মূল বাংলা বর্ণমালার তালিকায় রাখা হলেও বর্তমানে রাখা হয় না। ভারতীয় উপমহাদেশের অধিকাংশ ভাষায় এর সমতুল্য যুক্তবর্ণের অস্তিত্ব আছে। বর্ণটির শব্দে প্রয়োগের স্থানভেদে ভিন্ন ভিন্ন উচ্চারণ হয়। ক্ষ ব্যতীত বাংলা ভাষার আর কোনো যুক্তবর্ণকে কোনো বিশেষ নামে ডাকা হয় না। এটি একটি অনচ্ছ যুক্তব্যঞ্জন, অর্থাৎ একে দেখে এর গঠনকারী বর্ণসমূহকে (‘ক’ এবং ‘ষ’) শনাক্ত করা যায় না।

    ‘ক্ষ’ এর উচ্চারণ

    ‘ক্ষ’-এর উচ্চারণ দু-রকম হয়ে থাকে।
    ১. শব্দের শুরুতে থাকলে এর উচ্চারণ হবে ‘খ’-এর মতো।
    যেমন: ক্ষমা। এখানে ‘ক্ষ’ শব্দের শুরুতে বসেছে। তাই এখানে এর উচ্চারণ হবে ‘খ’-এর মতো। সুতরাং এর উচ্চারণ হবে ‘খমা’।

    ২. শব্দের মধ্যে বা শেষে থাকলে উচ্চারণ হবে ‘ক্ + খ’-এর মতো।
    যেমন: রক্ষা। এখানে ‘ক্ষ’ আছে শব্দের শেষে। তাই এখানে এর উচ্চারণ হবে ‘ক্ + খ’-এর মতো।
    এখন, এ শব্দটিতে ‘ক্ষ’ স্থানে ‘ক্ + খ’ বসালে দাঁড়ায় ‘র ক্+খা (ক্ষা)’। সুতরাং এ শব্দটির উচ্চারণ হবে ‘রোক্ খা’।

    আরও উদাহরণ:
    ক্ষয় (খয়্), ক্ষতি (খোতি), ক্ষেত্র (খেত্ ত্রো), পক্ষ (পোক্ খো), যক্ষ্মা (জক্ খাঁ), লক্ষ্মণ (লক্ খোঁন্), লক্ষ্মী (লোক্ খিঁ)।
    ব্যতিক্রম: তীক্ষ্ণ। এর উচ্চারণ ‘তিখ্ নো’ (‘তিক্ খোঁ’ নয়)।[১]

    ক্ষ-এর প্রয়োগ

    স্বরবর্ণের সাথে যুক্ত হলে

    স্বরবৰ্ণ‘ক্ষ’র সাথে যুক্ত হলে
    ক্ষ
    ক্ষা
    ক্ষি
    ক্ষী
    ক্ষু
    ক্ষূ
    ক্ষৃ
    ক্ষে
    ক্ষৈ
    ক্ষো
    ক্ষৌ

    যুক্তবৰ্ণ (ক্ষ যুক্ত)

    • ক + ষ + ম = ক্ষ্ম
    • ক + ষ + য = ক্ষ্য, ক্ষুধার্ত
    • ক্ষত্রিয়, অক্ষত

    ‘ক্ষ’ দিয়ে আরম্ভ শব্দ

    • ক্ষমা
    • ক্ষতি
    • ক্ষত্রিয়
    • ক্ষুধা
    • ক্ষণ ইত্যাদি
  • সম্প্রদান কারক

    সংস্কৃত ব্যাকরণ অনুযায়ী, যাকে স্বত্ব ত্যাগ করে দান, অর্চনা, সাহায্য ইত্যাদি করা হয়, তাকে সম্প্রদান কারক বলে। একে নিমিত্ত কারক-ও বলা হয়। এখানে লক্ষণীয় যে, বস্তু নয়, ব্যক্তিই সম্প্রদান কারক।[১] পূর্বে আলাদা হলেও বর্তমানে বাংলা ব্যাকরণে সম্প্রদান কারককে কর্ম কারকের অংশ হিসাবে ধরা হয়।[২] সম্প্রদান কারকের ব্যবহার কর্ম কারকের অনুরূপ

    অনেক ব্যাকরণবিদ বাংলা ব্যাকরণে সম্প্রদান কারক স্বীকার করেন না। কারণ, কর্ম কারক দ্বারাই সম্প্রদান কারকের কাজ সুন্দরভাবে সম্পাদন করা যায়। সম্প্রদান কারক ও কর্ম কারকের বিভক্তি চিহ্ন এক। কেবল স্বত্বত্যাগ করে দানের ক্ষেত্রে সম্প্রদান কারক হয়।[১] তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হয় না। এই বিভ্রান্তি এড়াতে বর্তমানে সম্প্রদান কারককে কর্ম কারকের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।[৩][২]

    সম্প্রদান কারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার

    আরও দেখুন: বিভক্তি

    প্রথমা বা ০ বিভক্তি

    গুরু দক্ষিণা দাও। দিব তোমা শ্রদ্ধা ভক্তি। ভিক্ষা দাও দেখিলে ভিক্ষুক

    চতুর্থী বা কে বিভক্তি

    দরিদ্রকে দান করো। ভিখারিকে ভিক্ষা দাও। দরিদ্রকে ধন দাও। (স্বত্বত্যাগ করে না দিলে কর্ম কারক হবে। যেমন- ধোপাকে কাপড় দাও)।

    ষষ্ঠী বা র বিভক্তি

    ভিক্ষুকদের ভিক্ষা দাও। দেশের জন্য প্রাণ দাও। ক্ষুধার্তদের খাদ্য দাও।

    সপ্তমী বা এ বিভক্তি

    সৎপাত্রে কন্যা দাও। সমিতিতে চাঁদা দাও। ‘অন্ধজনে দেহ আলো।’ দীনে দয়া করো। অন্নহীনে অন্ন দাও। সর্বভূতে দান করো। গৃহহীনে গৃহ দাও। জীবে দয়া করে সাধুজন। বস্ত্রহীনে বস্ত্র দাও।

    জ্ঞাতব্য

    নিমিত্তার্থে ‘কে’ বিভক্তি যুক্ত হলে সেখানে চতুর্থী বিভক্তি হয়। যেমন- ‘বেলা যে পড়ে এল, জলকে চল।’ (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)।
    তিনি হজে গেছেন। (নিমিত্তার্থে সপ্তমী বিভক্তি)

    আরো দেখুন

    কারক

  • কর্ম কারক

    ব্যাকরণ শাস্ত্রে, কর্ম কারক বলতে বোঝায় যাকে আশ্রয় করে কর্তা ক্রিয়া সম্পন্ন করে। “কী”, “কাকে” দ্বারা প্রশ্ন করলে উত্তরে কর্ম কারক পাওয়া যায়[১]যাকে আশ্রয় করে কর্তা ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে কর্ম কারক বলে।

    কর্ম

    মূল নিবন্ধ: কর্ম (ব্যাকরণ)

    কর্ম দুই প্রকার: মুখ্য কর্ম ও গৌণ কর্ম। উদাহরণ: বাবা আমাকে (গৌণ কর্ম) একটি কলম (মুখ্য কর্ম) কিনে দিয়েছেন।

    সাধারণত মুখ্য কর্ম বস্তুবাচক ও গৌণ কর্ম প্রাণিবাচক হয়ে থাকে। এছাড়াও সাধারণত কর্মকারকের গৌণ কর্মে বিভক্তি যুক্ত হয়, মুখ্য কর্মে হয় না।

    প্রকারভেদ

    কর্ম কারক ৪ প্রকার:

    1. সকর্মক ক্রিয়ার কর্ম: নাসিমা ফুল তুলছে।
    2. প্রযোজক ক্রিয়ার কর্ম: ছেলেটিকে বিছানায় শোয়াও।
    3. সমধাতুজ কর্ম: ক্রিয়াটি যে ধাতু নিষ্পন্ন, কর্মটিও সেই ধাতুনিষ্পন্ন হলে, তাকে সমধাতুজ কর্ম বলে। যেমন:- খুব এক ঘুম ঘুমিয়েছি।
    4. উদ্দেশ্য ও বিধেয় কর্ম: দ্বিকর্মক ক্রিয়ার দুটি দুটি পরস্পর অপেক্ষিত কর্মপদ থাকলে প্রধান কর্মপদটিকে বলা হয় উদ্দেশ্য কর্ম এবং অপেক্ষিত কর্মটিকে বলা হয় বিধেয় কর্ম। যেমন:

    দুধকে (উদ্দেশ্য কর্ম) মোরা দুগ্ধ (বিধেয় কর্ম) বলি, হলুদকে (উদ্দেশ্য কর্ম) বলি হরিদ্রা (বিধেয় কর্ম)।

    কর্ম কারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার

    আরও দেখুন: বিভক্তি

    (ক)প্রথমা বা শূণ্য বা অ বিভক্তিডাক্তার ডাক।
    পুলিশ ডাক।
    ঘোড়া গাড়ি টানে।
    আমাকে একখানা বই দাও। (দ্বিকর্মক ক্রিয়ার মুখ্য কর্ম)
    রবীন্দ্রনাথ পড়লাম, নজরুল পড়লাম, এর সুরাহা পেলাম না। (গ্রন্থ অর্থে বিশিষ্ট গ্রন্থকার প্রয়োগে)
    অর্থ অনর্থ ঘটায়।
    আমার ভাত খাওয়া হলো না।
    সূর্য উঠলে অন্ধকার দূর হয়।
    (খ)দ্বিতীয়া বা কে বিভক্তিতাকে বল।
    তাকে আমি চিনি।
    ধোপাকে কাপড় দাও।
    আমাকে একখানা বই দাও। (দ্বিকর্মক ক্রিয়ার গৌণকর্ম)
    ধনী দরিদ্রকে ঘৃণা করে।
    শিক্ষককে শ্রদ্ধা করিও।
    রে বিভক্তিআমারে তুমি করিবে ত্রাণ, এ নহে মোর প্রার্থনা।’
    (গ)তৃতীয়া বিভক্তি
    (ঘ)পঞ্চমী বিভক্তি
    (ঙ)ষষ্ঠী বা র বিভক্তিতোমার দেখা পেলাম না।
    দেশের সেবা কর।
    (চ)সপ্তমী বা এ বিভক্তিকাজে মন দাও।
    গুরুজনে করো ভক্তি/ নতি।
    সর্বশিষ্যে জ্ঞান দেন গুরু মহাশয়।
    ‘জিজ্ঞাসিবে জনে জনে।’ (বীপ্সায়)

    আরও দেখুন

    কারক

  • কর্তৃকারক

    ব্যাকরণে, বাক্যস্থিত যে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ ক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে ক্রিয়ার কর্তা বা কর্তৃকারক বলা হয়।[১] ক্রিয়ার সঙ্গে ‘কে’ বা ‘কারা’ যোগ করে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায়, তা কর্তৃকারককে নির্দেশ করে। একে “কর্তাকারক”ও বলা হয়[২]

    উদাহরণ: খোকা বই পড়ে। (কে বই পড়ে? খোকা – কর্তৃকারক)। মেয়েরা ফুল তোলে। (কে ফুল তোলে? মেয়েরা – কর্তৃকারক)।

    প্রকারভেদ

    কর্তৃকারকের বহুবিধ প্রকারভেদ বিদ্যমান।

    • কর্তৃকারক বাক্যের ক্রিয়া সম্পাদনের বৈচিত্র্য বা বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী চার প্রকারের হয়ে থাকে:
    1. মুখ্য কর্তা: যে নিজে নিজেই ক্রিয়া সম্পাদন করে, সে মুখ্য কর্তা। যেমন- ছেলেরা ফুটবল খেলছে। মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে।
    2. প্রযোজক কর্তা: মূল কর্তা যখন অন্যকে কোনো কাজে নিয়োজিত করে তা সম্পন্ন করায়, তখন তাকে প্রযোজক কর্তা বলে। যেমন- শিক্ষক ছাত্রদের ব্যাকরণ পড়াচ্ছেন।
    3. প্রযোজ্য কর্তা: মূল কর্তার করণীয় কাজ যাকে দিয়ে সম্পাদিত হয়, তাকে প্রযোজ্য কর্তা বলা হয়। যেমন- শিক্ষক ছাত্রদের ব্যাকরণ পড়াচ্ছেন।
    4. ব্যতিহার কর্তা: কোনো বাক্যে যে দুটো কর্তা একত্রে একজাতীয় কাজ সম্পাদন করে, তাদের ব্যতিহার কর্তা বলে। যেমন- বাঘে-মহিষে এক ঘাটে জল খায়। রাজায়-রাজায় লড়াই, উলুখাগড়ার প্রাণান্ত।
    • বাক্যের বাচ্য বা প্রকাশভঙ্গি অনুসারে কর্তা তিন রকমের হতে পারে:
    1. কর্মবাচ্যের কর্তা: কর্মপদের প্রাধান্যসূচক বাক্যে বসে। যেমন- পুলিশ দ্বারা চোর ধৃত হয়েছে।
    2. ভাববাচ্যের কর্তা: ক্রিয়ার প্রাধান্যসূচক বাক্যে বসে। যেমন- আমার যাওয়া হবে না।
    3. কর্ম-কর্তৃবাচ্যের কর্তা: বাক্যে কর্মপদই যখন কর্তৃস্থানীয় হয়। যেমন- বাঁশি বাজে। কলমটা লেখে ভালো।

    কর্তৃকারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার

    আরও দেখুন: বিভক্তি

    (ক)প্রথমা বা শূন্য বা অ-বিভক্তিহামিদ বই পড়ে।
    গগনে গরজে মেঘ
    ঘরেতে ভ্রমর এলো গুনগুনিয়ে।
    জল পড়ে, পাতা নড়ে।
    জেলে মাছ ধরে।
    শ্রদ্ধাবান লভে জ্ঞান অন্যে কভু নয়।
    সাপুড়ে সাপ খেলায়।
    ছেলেরা ফুটবল খেলছে।
    মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে।
    শিক্ষক ছাত্রদের ব্যাকরণ পড়াচ্ছেন।
    রাখাল গরুকে ঘাস খাওয়ায়।
    (খ)দ্বিতীয়া বা কে বিভক্তিবশিরকে যেতে হবে।
    শিক্ষক ছাত্রদের ব্যাকরণ পড়াচ্ছেন।
    রাখাল গরুকে ঘাস খাওয়ায়।
    (গ)তৃতীয়া বা দ্বারা বিভক্তিফেরদৌসী কর্তৃক শাহনামা রচিত হয়েছে।
    নজরুল কর্তৃক অগ্নিবীণা রচিত হয়।
    পুলিশ দ্বারা চোর ধৃত হয়েছে।
    (ঘ)পঞ্চমী বিভক্তি
    (ঙ)ষষ্ঠী বা র বিভক্তিআমার যাওয়া হয় নি।
    (চ)সপ্তমী বা এ বিভক্তিগাঁয়ে মানে না, আপনি মোড়ল।
    দশে মিলে করি কাজ।
    বাপে না জিজ্ঞাসে, মায়ে না সম্ভাষে।
    পাগলে কিনা বলে, ছাগলে কিনা খায়।
    বাঘে-মহিষে খানা একঘাটে খাবে না।
    দশে মিলে করি কাজ।
    য় বিভক্তিঘোড়ায় গাড়ি টানে।
    রাজায়-রাজায় লড়াই।
    তে বিভক্তিগরুতে দুধ দেয়।
    বুলবুলিতে ধান খেয়েছে খাজনা দেব কীসে?
    গরুতে গাড়ি টানে।

    আরো দেখুন

    কারক

  • করণ কারক

    ক্রিয়া সম্পাদনের যন্ত্র, উপকরণ বা সহায়ককেই করণ কারক বলা হয়।[১] বাক্যস্থিত ক্রিয়াপদের সঙ্গে ‘কিসের দ্বারা’ বা ‘কী উপায়ে’ প্রশ্ন করলে উত্তরে করণ কারক পাওয়া যায়।

    উদাহরণ:
    নীরা কলম দিয়ে লেখে। (উপকরণ – কলম)
    ‘জগতে কীর্তিমান হয় সাধনায়।’ (উপায় – সাধনা)

    প্রকারভেদ

    1. সমধাতুজ করণ:- ক্রিয়াটি যে ধাতু নিষ্পন্ন, করণটিও সেই ধাতুনিষ্পন্ন হলে, তাকে সমধাতুজ করণ বলে। যেমন:- সে কাটারিতে গাছ কাটছে।

    করণ কারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার

    আরও দেখুন: বিভক্তি

    (ক)প্রথমা বা শূণ্য বা অ বিভক্তিছাত্ররা বল খেলে। (অকর্মক ক্রিয়া)
    ডাকাতেরা গৃহস্বামীর মাথায় লাঠি মেরেছে।
    কৃষক লাঙ্গল চষছে।
    (খ)তৃতীয়া বা দ্বারা বিভক্তিলাঙল দ্বারা জমি চাষ করা হয়।
    আমরা কান দ্বারা শুনি।
    দিয়া বিভক্তিমন দিয়া কর সবে বিদ্যা উপার্জন।
    (গ)পঞ্চমী বা থেকে বিভক্তিএ সন্তান হতে দেশের মুখ উজ্জ্বল হবে।
    (ঘ)ষষ্ঠী বা র বিভক্তিতার মাথায় লাঠির আঘাত করো না।
    ইট-পাথরের বাড়ি বেশ শক্ত।
    ইটের বাড়ি সহজে ভাঙে না।
    কাচের জিনিস সহজে ভাঙে।
    জলের লিখন থাকে না।
    (ঙ)সপ্তমী বা এ বিভক্তিফুলে ফুলে ঘর ভরেছে।
    আকাশ মেঘে ঢাকা।
    শিকারী বিড়াল গোঁফে চেনা যায়।
    জ্ঞানে বিমল আনন্দ লাভ হয়।
    কলমে ভালো লেখা হয়/ বেশ লেখা যায়।
    নতুন ধান্যে হবে নবান্ন।
    হাতে কাজ কর।
    তে বিভক্তি‘এত শঠতা, এত যে ব্যথা,
    তবু যেন তা মধুতে মাখা।’ – নজরুল
    লোকটা জাতিতে বৈষ্ণব।
    য় বিভক্তিচেষ্টায় সব হয়।
    সুতায় কাপড় হয় না।
    নিজের চেষ্টায় বড় হও।
    জগতে কীর্তিমান হয় সাধনায়
    বন্যায় দেশ প্লাবিত হলো।
    কলমটি সোনায় মোড়া।[২]
    টাকায় কি না হয়।

    আরো দেখুন

    কারক

  • “লাল নীল দীপাবলি” থেকে ১৪২ টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

    “লাল নীল দীপাবলি” থেকে ১৪২ টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

    ১। বাংলাসাহিত্য কত বছর ধরে রচিত হচ্ছে?
    -হাজার বছরের ও বেশি সময়।
    ২।বাংলাসাহিত্যের প্রথম বইটির নাম কী?
    -চর্যাপদ।
    ৩।কোন শতকে বাংলাসাহিত্যের জন্ম?
    -দশম শতকের মাঝামাঝি।
    ৪।বাংলা সাহিত্যের জন্মলগ্নে কোন ভাষা টি সমাজের উঁচু শ্রেণীর ভাষা ছিল?
    -সংস্কৃত।
    ৫।বাংলাসাহিত্যের প্রথম কাব্যগ্রন্থ/ গ্রন্থ কোনটি?
    – চর্যাপদ।
    ৬।চর্যাপদের রচনাকাল- ৯৫০-১২০০

    ৭।বাংলা গদ্যের আবির্ভাব কোন শতকে/সালে ঘটে?
    -১৮০০ সালের পর থেকে
    ৮।দশম শতক থেকে অষ্টাদশ শতকের শেষ পর্যন্ত বাংলা সাহিত্য কোনরূপে ছিল?
    -পদ্যরূপে
    ৯। নৃ্তাত্ত্বিকদের মতে বাঙালি পূর্বপুরুষ কারা?
    -সিংহলের ভেড্ডারা
    ১০।‘ভারততীর্থ’ কার লেখা কবিতা?
    -রবিঠাকুর
    ১১।বাঙালি রক্তধারায় কোন কোন জাতির রক্ত মিশে আছে?
    -ভেড্ডা, মঙ্গোলীয়, ইন্দো-আর্য, শক
    ১২।মধ্যযুগের একজন দেশপ্রেমিক কবি কে?
    -দৌলত কাজী

    ১৩। কোন ভাষাটি মানুষের মুখে মুখে বদলে পরিণত হয়েছে বাংলা ভাষায়?
    – প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা
    ১৪। সংস্কৃত ভাষার অপর নাম কী?
    – প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা
    ১৫। শব্দগুলোর পরিবর্তিত রূপ লিখুনঃ
    ক) হাতচ) চাঁদ
    ১৬। ভাষা কী মেনে চলে?
    -নিয়ম কানুন
    ১৭। প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা পরিবর্তিত হয়ে কোন রূপটি নেয়?
    -পালি
    ১৮। প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা হাজার বছর ধরে পরিবর্তিত হয়ে বাংলা ভাষায় রূপ নেয়। এই ক্রমবিকাশের ধারায় পর্যায়ক্রমে আর কোন দুটি ভাষা ছিল?
    -পালি, প্রাকৃত
    ১৯। কোন ভাষায় বৌদ্ধরা তাদের ধর্মগ্রন্থ আর অন্যান্য বই লিখতেন?
    -পালি ভাষায়
    ২০। সন্ধ্যার কুহেলিকা কার পঙতিতে পঙতিতে ছড়ানো?
    -চর্যাপদ
    ২১।চর্যাপদের ভাষা কে কি নাম দেওয়া হয়েছে?
    -সান্ধ্য/আলো আঁধারির ভাষা
    ২২।প্রাচীন বাংলা ভাষার কয়টি স্তর ও কী কী?
    -তিনটি, প্রাচীন যুগের বাংলা ভাষা, মধ্য যুগের বাংলা ভাষা, আধুনিক যুগের বাংলা ভাষা
    ২৩।বাংলা ভাষা/সাহিত্যের প্রাচীন, মধ্য, আধুনিক যুগের ব্যাপ্তিকাল লিখুন।
    -৯৫০-১২০০; ১৩৫০-১৮০০;১৮০০-বর্তমান

    ২৪।‘বাঙলা’/’বঙ্গ’/’বাঙ্গালা’ নামগুলো উৎপত্তির কাহিনী বয়ান করেছেন কে?
    -সম্রাট আকবরের সভারত্ন আবুল ফজল
    ২৫। বঙ্গ+আল= বাঙ্গাল, এই ‘আল’ অংশটুকু কোন প্রসঙ্গে এসেছে?
    -জমির আল, সীমানা, বাঁধ
    ২৬। কোন শতকে বাংলাদেশ বিভিন্ন জনপদে বিভক্ত ছিল?
    -ষষ্ঠ- সপ্তদশ
    ২৭। শশাঙ্ক কোন জনপদের রাজা ছিলেন?
    -গৌড়
    ২৮। শশাঙ্কের আমলে পশ্চিম বাংলা প্রথমবারের মত ঐক্যবদ্ধ হয়। তখন কোন তিনটি জনপদ এক হয়ে একটি বিশাল জনপদে পরিণত হয়?
    -পুন্ড্র, গৌড়, রাঢ়
    ২৯। শশাঙ্ক ও পাল রাজারা নিজেদের কি বলে পরিচয় দিতেন?
    -গৌড়াধিপতি
    ৩০। গৌড়ের প্রতিদ্বন্দী ছিল কোন জনপদ?
    -বঙ্গ
    ৩১।পাঠান শাসনামলে কোন নামে বাংলার সব জনপদ এক হয়?
    -বঙ্গ
    ৩২।কত সালে ভারতবর্ষ তিন খন্ড হয়?
    -১৯৪৭
    ৩৩।বাংলা সাহিত্যের ফসলশূন্য সময় কোনটি?
    -১২০০-১৩৫০, অন্ধকারযুগ
    ৩৪। মধ্যযুগের প্রধান কাব্যধারার নাম- মঙ্গলকাব্য
    ৩৫। মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ ফসল- বৈষ্ণব পদাবলি

    ৩৬। আধুনিক যুগের সবচেয়ে বড় অবদান কোনটি?
    -গদ্য
    ৩৭।ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান কে ছিলেন?
    -উইলিয়াম কেরি
    ৩৮। রামরাম বসু কে ছিলেন?
    – উইলিয়াম কেরির সহযোগী
    ৩৯। বাংলা সাহিত্যের প্রথম উপন্যাসের নাম কি?
    -প্যারীচাঁদ মিত্র’র আলালের ঘরের দুলাল
    ৪০। বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহাকাব্যের নাম কি?
    -মেঘনাদবধ কাব্য
    ৪১। বাংলা সাহিত্যের প্রথম ট্রাজেডির নাম কি?
    -কৃষ্ণকুমারী
    ৪২। মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রহসন দুটি কি?
    -একেই কি বলে সভ্যতা, বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ
    ৪৩। আধুনিক যুগের কোন প্রতিভাধর কবির হাত ধরে সনেট, মহাকাব্য, ট্রাজেডি এসেছে?
    – মাইকেল মধুসূদন দত্ত
    ৪৪। চর্যাপদ আবিষ্কৃত হয় কত সালে, কে করেন, কোথা থেকে?
    -১৯০৭, পন্ডিত মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী
    ৪৫। চর্যাপদের সাথে আবিষ্কৃত অন্য বইদুটির নাম কি?
    -দোহাকোষ ও ডাকার্ণব

    ৪৬। হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষার বৌদ্ধগান ও দোহা বাংলা ও ইংরেজী কত সালে প্রকাশিত হয়?
    -১৯১৬,১৩২৩
    ৪৭। চর্যাপদ যে বাঙ্গালির একথা প্রমাণ করে ছাড়েন কে?
    -ডঃ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
    ৪৮।কোন গ্রন্থে প্রমাণিত হয় যে চর্যাপদ বাঙ্গালির?
    -বাঙলা ভাষার উৎপত্তি ও বিকাশ(১৯২৬)
    ৪৯। চর্যাপদ কিসের সংকলন?
    -কবিতা বা গানের সংকলন
    ৫০। চর্যাপদের মোট কতটি পদ উদ্ধার করা হয়েছিলো?
    -সাড়ে ছেচল্লিশটি
    ৫১। চর্যাপদের মোট কবি কতজন?
    -২৪ জন
    ৫২। চর্যাপদের সর্বাধিক পদ রচয়িরা কাহ্নপার অন্যনাম কি?
    -কৃষ্ণাচার্য
    ৫৩। চর্যাপদের ঢং এ আধুনিক কোন কবি কবিতা রচনা করেছেন?
    -রবি ঠাকুর
    ৫৪।১৮০০ শতকের আগে কবিতা গাওয়া হতো। কবিতা পড়ার বস্তু হয়ে দাঁড়ালো কোন কবির হাত ধরে?
    – মাইকেল মধুসূদন দত্ত
    ৫৫। চর্যাপদের সবচেয়ে সুন্দর কবিতাটি কে লিখেছেন?
    -শবরীপা

    ১।কোন শতকে মুসলমানরা বাংলায় আসে?
    -তের শতক(১২০০-১২০৭)
    ২।মুসলমানরা কাকে পরাজিত করে বাংলায় আসে?
    -লক্ষ্মণ সেন
    ৩।শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য কার রচনা?
    -বড়ু চন্ডীদাস
    ৪।কত সালে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য উদ্ধার করা হয়?
    -১৯০৯
    ৫। শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য কোন জায়গা থেকে উদ্ধার করা হয়?
    -বাঁকুড়ার এক গোয়ালঘর থেকে
    ৬। শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য কে উদ্ধার করেন?
    -শ্রীবসন্ত্রঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ
    ৭।বাংলাভাষার প্রথম মহাকবি কে?
    -বড়ু চন্ডীদাস
    ৮। দেবতাদের কাছে মঙ্গল কামনা করা হয় কোন কাব্যে?
    -মঙ্গলকাব্য
    ৯। কত সময় ধরে মঙ্গলকাব্য রচিত হয়?
    -প্রায় পাঁচশো বছর
    ১০।মনসামঙ্গলকাব্যের কবিগণের নাম লিখুন।
    -হরি দত্ত, নারায়ণ দেব, বিজয় গুপ্ত, বিপ্রদাস

    ১১। চন্ডীমঙ্গলকাব্যের কবিগণের নাম লিখুন।
    -মাণিক দত্ত, দ্বিজ মাধব, মকুন্দরাম চক্রবর্তী, দ্বিজ রামদেব, ভারতচন্দ্র রায় গুণাকর
    ১২।ধর্ম মঙ্গলকাব্যের কবিগণের নাম লিখুন।
    -ময়ুরভট্ট, মানিকরাম, রূপরাম, সীতারাম, ঘনরাম,
    ১৩।মঙ্গলকাব্যকে অপাঠ্য বলেছেন আধুনিক কোন কবি?
    -সুধীন্দ্রনাথ দত্ত
    ১৪। চন্ডীমঙ্গলকাব্যের দু’জন সেরা কবি কে কে?
    – ভারতচন্দ্র রায় গুণাকর, মকুন্দরাম চক্রব্রর্তী
    ১৫। মনসা মঙ্গলকাব্যের দু’জন সেরা কবি কে কে?
    -বিজয়গুপ্ত, বংশীদাস
    ১৬।কালকেতু-ফুল্লরা কিসের কাহিনী?
    -চন্ডীমঙ্গল
    ১৭।ধনপতি লহনা কিসের কাহিনী?
    – চন্ডীমঙ্গল
    ১৮। কালকেতু-ফুল্লরার স্বর্গীয় নাম কি ছিল?
    -নীলাম্বর, ছায়া
    ১৯। স্বর্ণগোধিকা কি?
    -গুইসাপ
    ২০। স্বর্ণগোধিকার বেশে কে মর্ত্যে আসে?
    -দেবীচন্ডী
    ২১। মধ্যযুগের বলিষ্ঠ আত্মবিশ্বাসী প্রতিবাদী পুরুষ কে?
    -চাঁদসওদাগর
    ২২। সনকা কার স্ত্রী?
    -চাঁদসওদাগর
    ২৩।সনকা কার পূজা করত?
    -দেবীচন্ডী
    ২৪।চাঁদসওদাগর কতদিন ঘরহারা ছিলেন?
    -১২ বছর
    ২৫।লখিন্দর কার পুত্র , কার স্বামী ছিলেন?
    –চাঁদসওদাগর – সনকা, বেহুলা
    ২৬।বেহুলার বাড়ি কই ছিল?
    -উজানিনগর
    ২৭।স্বর্গের ধোপানীর নাম কি?
    -নেতা
    ২৮।কবিকঙ্কন কার উপাধি ছিল? তিনি কোথাকার কবি ছিলেন?
    – মকুন্দরাম চক্রবর্তী, সিলিম্বাজ শহরের গোপীনাথ তালকের দামুন্যা গ্রামে
    ২৯।মধ্যযুগের নির্বিকার, নিরাবেগ কবি কে ছিলেন?
    – মকুন্দরাম চক্রবর্তী
    ৩০।মুরারি শীল, ভাড়ুদত্ত, কলিঙ্গের রাজা কিসের চরিত্র?
    -চন্ডীমঙ্গল

    ১. দেবী অন্নদা কার খেয়ানৌকায় নদী পার হয়?
    -ঈশ্বরী পাটনি
    ২।“আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে” দেবী অন্নদার কাছে এটি কার প্রার্থনা?
    – ঈশ্বরী পাটনি
    ৩।“আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে” এটি কার রচনা?
    -ভারত চন্দ্র রায়গুণাকর
    ৪।ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
    -বর্ধমানের(বর্তমানের হাওড়া) পেঁড়োবসন্তপুর বা পান্ডুয়া গ্রামে, ( আনু্মানিক ১৭১২ )
    ৫। ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর কোন রাজসভার কবি ছিলেন?
    -নবদ্বীপ
    ৬।ভারতচন্দ্রকে ‘রায়গুনাকর’ উপাধি দেন কে?
    – নবদ্বীপের রাজা কৃষ্ণচন্দ্র
    ৭। ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের বিখ্যাত কাব্য কোনটি যা দুশো বছর ধরে আলোড়ন জাগিয়ে যাচ্ছে?
    -বিদ্যাসউন্দর
    ৮। ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর রচিত অন্নদামঙ্গল কাব্যের কয়টি ভাগ ও কি কি?
    -৩টি, অন্নদামঙ্গল, বিদ্যাসুন্দর, ভবানন্দ-মান্সিং কাহিনী
    ৯।“মন্ত্রের সাধন কিংবা শ্রীর পাতন” / “নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায়” কার রচিত?
    – ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর
    ১০।শ্রীচৈতন্যদেবের জীবনকাল লিখুন।
    -১৪৮৬-১৫৩৩
    ১১। শ্রীচৈতন্যদেব কোন ধর্ম প্রচার করেন?
    -বৈষ্ণব ধর্ম
    ১২।বৈষ্ণব কবিতার চার মহাকবির নাম লিখুন।
    -বিদ্যাপতি, চন্ডীদাস, জ্ঞানদাস, গোবিন্দ দাস
    ১৩।মধ্যযুগের কবিতায় কি প্রকাশ পেত?
    -ধর্ম
    ১৪।রাধা ও কৃষ্ণ কিসের প্রতীক?
    -মানবাত্মা, পরমাত্মা
    ১৫।বৈষ্ণবদের মতে রস কত প্রকার, কি কি?
    -পাঁচ। শান্ত, দাস্য, বাৎসল্য, সখ্য, মধুর
    ১৬।রবীন্দ্রনাথ যদি মধ্যযুগে জন্মাতেন তাহলে তিনি কি হয়ে জন্মগ্রহন করতেন?
    -বৈষ্ণব কবি
    ১৭।মধ্যযুগের কোন ভাষায় রবীন্দ্রনাথ কবিতা রচনা করেছেন?
    -ব্রজবুলি
    ১৮। ব্রজবুলি ভাষায় রচিত রবীন্দ্রনাথের রচনা কোনটি?
    -ভা্নুসিংহের পদাবলী
    ১৯।বিদ্যাপতি কোন রাজ্যের সভাকবি ছিলেন?
    -রাজা শিবসিংহের রাজধানী মিথিলা
    ২০।বিদ্যাপতির কি কি উপাধি ছিল?
    -কবিকণ্ঠহার, মৈথিলি কোকিল, অভিনব জয়দেব, নব কবি শেখর

    ২১।বাংলাসাহিত্যের মধ্যযুগে কোন সমস্যাটি বিদ্যমান?
    -চন্ডীদাস
    ২৩।বাংলাভাষায় একটি কবিতাও না লিখে বাংলা ভাষার কবি হয়ে আছেন কে?
    -বিদ্যাপতি
    ২৪।এক অক্ষর কবিতাও না লিখে বাংলাসাহিত্যের ইতিহাস দখল করে আছেন কে?
    -শ্রী চৈতন্যদেব
    ২৫।চৈতন্যদেবের জীবনকাল লিখুন।
    -১৪৮৬-১৫৩৩(repeated)
    ২৬।চৈতন্যদেবের জন্মস্থান, মৃত্যুস্থান লিখুন।
    -নবদ্বীপ, পুরী
    ২৭।চৈতন্যদেবের আসল নাম ও ডাক নাম কি ছিল?
    -বিশ্বম্ভর, নিমাই
    ২৮।চৈতন্যদেবের জীবনী হিসেবে সবচেয়ে বিখ্যাত রচনা কোনটি, কে রচনা করেন?
    -চৈতন্যচরিতামৃত
    ২৯।সীতাচরিত কার লেখা?
    -লোকনাথ দাস
    ৩০।জার্মান ভাষায় বাইবেল অনুবাদ রচনা করেছিলেন কে?
    -মার্টিন লুথার
    ৩১।মহাভারত ও রামায়ণ কে লিখেন?
    -বাল্মীকি, বেদব্যাস
    ৩২। মহাভারত ও রামায়ণ বাংলায় কারা অনুবাদ করেন?
    -কাশীরাম দাস, কৃত্তিবাস
    ৩৩। পরাগল খান কাকে দিয়ে আংশিকভাবে মহাভারত রচনা করান?
    -কবীন্দ্র পরমেশ্বর
    ৩৪।পরাগল খানের ছেলের নাম কি?
    -ছুটি খান
    ৩৫। মালাধরবসুর রচনা কোনটি?
    -শ্রীকৃষ্ণবিজয়
    ৩৬।শ্রীকৃষ্ণবিজয়ের অপর নাম কি?
    -ভগবত
    ৩৭।‘পুরষ্কার’ কার কবিতা?
    -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    ৩৮।কৃত্তিবাসের জন্মস্থান কোথায়?
    -নদীয়ার ফুলিয়া গ্রামে
    ৩৯।কাশীরাম কোন সময়ের মধ্যে মহাভারত রচনা করেন?
    -১৬০২-১৬১০ এর মধ্যে
    ৪০।লক্ষ্মণ সেন কোন অঞ্চের রাজা ছিলেন?
    -নবদ্বীপ

    ৪১। বাংলাভাষায় প্রথম মুসলমান কবি কে ছিলেন?
    -শাহ মুহম্মদ সগীর
    ৪২।তিনি কার রাজত্বকালে কাব্যরচনা করেন, কোন কাব্য?
    -সুলতান গিয়াসউদ্দিন আযম শাহ, ইউসুফ-জোলেখা
    ৪৩।হানিফা ও কয়রা পরী কার রচনা?
    -সাবিরিদ খান
    ৪৪।কারা ফারসি ভাষায় ইউসুফ-জোলেখা রচনা করেন?
    -ফেরদৌসি ও জামী
    ৪৫।লাইলি মজনু বাংলা অনুবাদ করেন কে?
    -বাহরাম খান
    ৪৬।রসুলবিজয় ও বিদ্যাসুন্দর কার রচনা?
    – সাবিরিদ খান
    ৪৭।ষোড়শ শতকে্র মধুমালতী কার লেখা?
    -মহম্মদ কবির
    ৪৮।নসিহতনামা কার রচনা?
    -আফজল আলী
    ৪৯।সৈয়দ সুলতানের রচনাগুলি লিখুন।
    -নবীবংশ, শবেমিরাজ, রসুল বিজয়, ওফাতে রসুল, জয়কুম রাজার লড়াই, ইবলিশনামা, জ্ঞানচৌতিশা, জ্ঞানপ্রদীপ
    ৫০।আব্দুল হাকিমের আটটি কাব্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলোর নাম লিখুন।
    – ইউসুফ-জোলেখা, নূরনামা, কারবালা, শহরনামা
    ৫১।“যে সব বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী… ন জানি” কোন কাব্যের অন্তর্গত?
    -নূরনামা
    ৫২।আরাকান রাজ্যের সভাকবি কারা?
    -আলাওল, মাগন ঠাকুর, কাজি দৌলত
    ৫৩। আরাকান রাজ্যের শ্রেষ্ঠ কবি কে?
    – আলাওল
    ৫৪। কোরেশী মাগন ঠাকুর কাকে আশ্রয় দিয়েছিলেন?
    – আলাওল
    ৫৫। কোরেশী মাগন ঠাকুরের রচনা কোনটি?
    -চন্দ্রাবতী
    ৫৬।আলাওল কোন দশকের কবি?
    -সপ্তদশ
    ৫৭।আলাওলের শ্রেষ্ঠ কাব্য কোনটি?
    -পদ্মাবতী
    ৫৮।মাগন ঠাকুরের অনুরোধে আলাওল কোনটি অনুবাদ করেন?
    – পদ্মাবতী
    ৫৯।সেকান্দর নামা ও হপ্তপয়করের মূল লেখক কে?
    -কবি নিজামী
    ৬০।প্রাচীন হিন্দি ভাষার মহাকবি কে? তার কাব্যের নাম কি?
    -মালিক মুহম্মদ জায়সি
    ৬১। মিথিলার রাজা বিদ্যাপতিকে কোন উপাধি দেন?
    -কবিকণ্ঠহার
    ৬২।সংস্কৃত ভাষায় রচিত ‘পুরুষপরীক্ষা’ কার রচনা?
    -বিদ্যাপতি
    ৬৩।চৈতন্যচরিতামৃত কার লেখা?
    -কৃষ্ণদাস কবিরাজ

  • ৯ম-১০ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বসভ্যতা বই থেকে ‘মুক্তিযুদ্ধ’

    ৯ম-১০ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বসভ্যতা বই থেকে ‘মুক্তিযুদ্ধ’

    মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা তারিখঃ
    ★১ মার্চ – ইয়াহিয়া খান গণপরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেন।
    ★ ২ মার্চ- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে তৎকালীন ছাত্রনেতা “আ স ম আব্দুর রব” প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ও বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়।
    ★ ৩ মার্চ- পল্টনে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ও উপস্থিতিতে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ। যেখানে সার্বভৌম বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়। উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকা এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি; গানটিকে জাতীয় সংগীত হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে “জাতির জনক ” ঘোষণা করা হয়।

    ★ ৭ মার্চ- ঢাকার রমনায় অবস্থিত রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) অনুষ্ঠিত জনসভায় শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত এক ঐতিহাসিক ভাষণ। ১৮ মিনিট স্থায়ী এই ভাষণে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের(বর্তমানে বাংলাদেশ) বাঙালিদেরকেস্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। (১৩টি ভাষায় ভাষণটি অনুবাদ করা হয়৷ নিউজউইক ম্যাগাজিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনীতির কবি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ২০১৭ সালের ৩০ শে অক্টোবর ইউনেস্কো এই ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।)
    ★ ১৯ মার্চ- গাজীপুরে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগঠিত হয়।(এটি মুক্তিযুদ্ধের ১ম প্রতিরোধ)
    ★ ২৩ মার্চ- পাকিস্তানের প্রজাতন্ত্র দিবসের পরিবর্তে বাংলাদেশ দিবস পালন এবং বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলণ।
    ★ ২৫ মার্চ- ইয়াহিয়া খানের ঢাকা ত্যাগ। বাঙালি জাতি নিধনে পাকিস্তান “অপারেশন সার্চ লাইট” চালায়। ঐ রাতের শেষ প্রহরে (২৬মার্চ) বঙ্গবন্ধু ওয়ারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
    ★ ২৬ মার্চ- ১ম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা। আওয়ামীলীগ চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি ও আওয়ামীলীগ নেতা এম এ হান্নান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ।
    ★ ২৭ মার্চ- মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে কালুরঘাট বেতার থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি পাঠ করেন।
    ★ ৩০ মার্চ- পাকবাহিনীরা বোমা মেরে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রটি উড়িয়ে দেয়।

    ★ ৩ এপ্রিল- ত্রিপুরার আগারতলা থেকে স্বাধীনবাংলা বেতারের যাত্রা শুরু।
    ★ ৬ এপ্রিল- প্রথম কূটনৈতিক হিসেবে আমজাদুল হক ও শাহাবুদ্দিনের আনুগত্য।
    ★ ১০ এপ্রিল- বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি করে ৬ সদস্য নিয়ে মুজিবনগর সরকার গঠন।
    ★ ১১ এপ্রিল- দেশকে ১১টি সেক্টর, ৬৪টি সাব-সেক্টর, ৩টি ব্রিগেড ফোর্স গঠন।
    ★ ১৭ এপ্রিল- মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে প্রবাসী সরকার শপথ নেন। পাকিস্তানের ডেপুটি হাই কমমিশনার এম হোসেন আলীর আনুগত্য। আতাউল গণি ওসমাণী মুক্তিবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত।
    ★ ৮ মে- কলকাতার ৮নং থিয়েটার রোডে প্রবাসী সরকারের কার্যক্রম শুরু।
    ★ ১১ জুলাই- মুক্তিবাহিনী গঠন। সেক্টর কমান্ডারদের বৈঠক ও মুজিববাহিনী গঠন।

    ★ ১ আগস্ট- যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে “কনসার্ট ফর বাংলাদেশ” অনুষ্ঠিত। বিশ্বখ্যাত ব্যান্ড ‘দ্য বিটলস’ এর শিল্পী জর্জ হ্যারিসন তিনি পন্ডিত রবি শংকরের অনুরোধে ১৯৭১ সালে ম্যাডিসন স্কয়ারে এই আয়োজন করেন। অনুষ্ঠান হতে প্রাপ্ত ২ লক্ষ ৫০ হাজার ডলার সহায়তা করা হয়।
    ★ ২০ আগস্ট- পাকিস্তান থেকে টি-৩৩ বিমান ছিনতাই করে নিয়ে আসার সময় ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান নিহত হন।
    ★ ৫ সেপ্টেম্বর- ৮নং সেক্টরে যুদ্ধরত অবস্থায় “ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেষ শহিদ হন।
    ★ ২৮ সেপ্টেম্বর- নাগাল্যাণ্ডে বাংলাদেশের বিমানবাহিনী গঠন করা হয়।
    ★ ৯ নভেম্বর- প্রথম নৌবহর হিসেবে বঙ্গবন্ধু নৌবহরের যাত্রা শুরু।
    ★ ২১ নভেম্বর- মিত্র ও মুক্তিবাহিনীর নিয়ে “যৌথবাহিনী” গঠন ও সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু।
    ★ ৩ ডিসেম্বর- পাক বিমান হামলার ফলে ভারত বাংলাদেশের পক্ষে যুদ্ধ শুরু করে।
    ★ ৬ ডিসেম্বর- ১ম দেশ হিসেবে ভূটান ও ২য় দেশ হিসেবে ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। প্রথম জেলা হিসেবে যশোর শত্রুমুক্ত হয়।
    ★ ৪-১৫ ডিসেম্বর- বাংলাদেশ বিষয়ে জাতিসংঘে বিতর্ক অনুষ্ঠিত।

    ★ ১০- ১৪ ডিসেম্বর – এদেশের পাকিস্তানি দোসরদের সাথে নিয়ে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়।
    ★ ১৪ ডিসেম্বর- ড. মালিক মন্ত্রীসভার পদত্যাগ। ৭ নং সেক্টরে যুদ্ধরত অবস্থায় বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর শহিদ হন।
    ★ ১৬ ডিসেম্বর – বিকাল ৪:৩০ মি: নিয়াজীর নেতৃত্বে ৯৩ হাজার পাকবাহিনী জগজিৎ সিং অরোরার নিকট রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমার্পন। ২৬৬ দিনের যুদ্ধের অবসান।
    ★ ২২ ডিসেম্বর- প্রবাসী সররকার কলকাতা থেকে ঢাকায় আসে।