Category: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য

Bengali language and literature

  • ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়

    ব্রততী বন্দোপাধ্যায় ‍বা ব্রততী ব্যানার্জী বাংলা ভাষার একজন বিশিষ্ট আবৃত্তিকার[১][২][৩]

    তিনি সারথি নামে একটি বাঙ্গালী গ্র্রুপের সদস্য।[৪] তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, সুকুমার রায় এবং শঙ্খ ঘোষের কবিতা আবৃত্তির জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।[৫]

    প্রাথমিক জীবন

    ব্রততী বন্দোপাধ্যায় কলকাতার একটি শহরতলী হৃদয়পুরে মঞ্জুল কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মায়া বন্দোপাধ্যায়ের পরিরারে জন্মগ্রহণ করেন। ব্রততী কলকাতার বেথুন কলেজিয়েট বিদ্যালয়ে তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে তিনি অর্থনীতির উপর ১ম শ্রেণীতে স্নাতোকত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন।[৬]

    কাজ

    অ্যালবাম

    * ”চিরসখা”

    * হিপ হিপ হুররে

    * ”ফাগুন হাওয়া”

    * ”প্রেমের বাদল নামিলো”

    * ”ব্রততী বন্দোপাধ্যায় কবিতা সংগ্রহ ”’ (খন্ড:০১-০৬)

    * ”আমি সেই মেয়ে”

    চলচ্চিত্রের তালিকা

    রঙ্গীন গৌধূলী (২০০৯, অভিনেত্

  • বিশ্ব কবিতা দিবস

    ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ মার্চ তারিখটিকে বিশ্ব কবিতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এই দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল বিশ্বব্যাপী কবিতা পাঠ, রচনা, প্রকাশনা ও শিক্ষাকে উৎসাহিত করা। ইউনেস্কোর অধিবেশনে এই দিবস ঘোষণা করার সময় বলা হয়েছিল, “এই দিবস বিভিন্ন জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কবিতা আন্দোলনগুলিকে নতুন করে স্বীকৃতি ও গতি দান করবে।”

    পূর্বে অক্টোবর মাসে বিশ্ব কবিতা দিবস পালন করা হত। প্রথম দিকে কখনও কখনও ৫ অক্টোবর এই উৎসব পালিত হলেও বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে রোমান মহাকাব্য রচয়িতা ও সম্রাট অগস্টাসের রাজকবি ভার্জিলের জন্মদিন স্মরণে ১৫ অক্টোবর এই দিবস পালনের প্রথা শুরু হয়। অনেক দেশে আজও অক্টোবর মাসের কোনো দিন জাতীয় বা আন্তর্জাতিক কবিতা দিবস পালন করা হয়।[১][২] এই দিবসের বিকল্প হিসেবে অক্টোবর অথবা নভেম্বর মাসের কোনো দিন কবিতা দিবস পালনেরও প্রথা বিদ্যমান।

  • বঙ্গমাতা (কবিতা)

    বঙ্গমাতা[১] হলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত একটি বিখ্যাত বাংলা কবিতা।[২][৩] এটি তার চৈতালি (১৮৯৬) কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।[৪] কবিতায় মোট ১৪টি লাইন আছে।[২][৩]

    প্রেক্ষাপট

    ভারতে ব্রিটিশ রাজের সময়ে রবীন্দ্রনাথ বঙ্গমাতা কবিতাটি রচনা করেন। তিনি অসন্তুষ্ট হয়ে এই কামনা করেন যেন বাঙালিরা বঙ্গদেশের প্রতি কর্তব্য ঠিকভাবে পালন করে।[৫][৬]

    কবিতা

    পুণ্যে পাপে দুঃখে সুখে পতনে উত্থানে
    মানুষ হইতে দাও তোমার সন্তানে
    হে স্নেহার্ত বঙ্গভূমি, তব গৃহক্রোড়ে
    চিরশিশু করে আর রাখিয়ো না ধরে।
    দেশদেশান্তর-মাঝে যার যেথা স্থান
    খুঁজিয়া লইতে দাও করিয়া সন্ধান।
    পদে পদে ছোটো ছোটো নিষেধের ডোরে
    বেঁধে বেঁধে রাখিয়ো না ভালোছেলে করে।
    প্রাণ দিয়ে, দুঃখ স’য়ে, আপনার হাতে
    সংগ্রাম করিতে দাও ভালোমন্দ-সাথে।
    শীর্ণ শান্ত সাধু তব পুত্রদের ধরে
    দাও সবে গৃহছাড়া লক্ষ্মীছাড়া ক’রে।
    সাত কোটি সন্তানেরে, হে মুগ্ধ জননী,
    রেখেছ বাঙালী করে, মানুষ কর নি।[২][৩]

    বর্তমানকালের প্রাসঙ্গিকতা

    বাঙালিরা তাদের মাতৃভাষা বাংলা ও বাঙালির সংস্কৃতিকে অবজ্ঞা করায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বঙ্গমাতা কবিতাটিকে বর্তমানে আবারও প্রাসঙ্গিক হিসেবে ধরা হয়।[৭][৮][৯]

  • নীতি কবিতা

    নীতি কবিতা গল্প, কাহিনী বা নিছক কলাশিল্প যার সাহায্যে কবি জ্ঞানগর্ভ নীতিকথা বা তত্ত্ব প্রচার করে থাকেন। ভালো

    উপযোগিতা

    নীতিকথার তীব্রতা কল্পনার স্পর্শে যাতে কোমল ও কান্তরূপ পরিগ্রহ করে, তা-ই কবির উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। অর্থাৎ, জ্ঞানের কথা, নীতির কথা বা তত্ত্বকথাকে কবিত্ব-সুষমায় মণ্ডিত করতে না পারলে এই জাতীয় কবিতা ব্যর্থ হতে বাধ্য।[১]

    ব্যবহার ক্ষেত্র

    পোপের এসে অন ক্রিটিসিজম; কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের রসাল ও স্বর্ণলতিকা; কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের সদ্ভাবশতক; রঙ্গলালের নীতিকুসুমাঞ্জলি; রবীন্দ্রনাথের কণিকা, জুতা আবিষ্কার; কুমুদরঞ্জনের শতদল, যদি; রজনী সেনের অমৃত নীতি কবিতা শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত।

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জুতা আবিষ্কার’ কবিতাটিতে কবি গল্পের সাহায্যে নীতি প্রচার করেছেন। এছাড়াও, সুরেন মজুমদারের মাদকমঙ্গলও একখানা নীতিকাব্য

  • ননসেন্স ছড়া

    ননসেন্স ছড়া বা কিম্ভূত ছড়া একধরনের ছড়া, যা সাধারণত কৌতুক পরিবেশনের জন্য লেখা হয়। এতে বলিষ্ঠ পদ্যের উপাদান তথা ছন্দ ও অন্ত্যমিল থাকে।

    বাংলা ভাষায় সর্বপ্রথম ননসেন্স ছড়ার প্রবর্তন করেন সুকুমার রায়[১] পরবর্তীকালে তার পুত্র সত্যজিৎ রায়ও এধরনের কয়েকটি ছড়া লিখেছেন, যেগুলো পরবর্তীকালে তোড়ায় বাঁধা ঘোড়ার ডিম নামে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।

    ইংরেজি ভাষায় ননসেন্স ছড়া রচনার জন্য উল্লেখযোগ্য কয়েকজন লেখক হলেন এডওয়ার্ড লিয়ার,[২] লুইস ক্যারল, মারভিন পিক, এডওয়ার্ড গোরি, কলিন ওয়েস্ট, ডক্টর সেউস, ও স্পাইক মিলিগান।

    এডওয়ার্ড লিয়ারের ছড়াগুলো বিষয়বস্তুর নিরিখে ননসেন্স ছড়া হলেও একটি বিশেষ গঠনছাঁদের কারণে সেগুলোকে লিমারিক বলা হয়। লিমারিকগুলোর প্রতিটি পাঁচ পংক্তির ব্যাপ্তিতে গড়া। ১ম, ২য় ও ৫ম লাইনে সদৃশ অন্ত্যমিল থাকে, এবং পঙক্তিগুলো ৩য় ও ৪র্থ লাইনের চেয়ে দীর্ঘ। ৩য় ও ৪র্থ লাইনে সদৃশ অন্ত্যমিল থাকে। বস্তুত লিমারিক এক বিশেষ ধরনের ননসেন্স ছড়া।

    ব্যবহার

    সুকুমার রায়ের একটি ননসেন্স ছড়া নিম্নরূপ:

    মাসী গো মাসী পাচ্ছে হাসি
    নিম গাছেতে হচ্ছে সিম,
    হাতির মাথায় ব্যাঙের বাসা
    কাগের বাসায় বগের ডিম।

  • দ্য হান্টিং অফ দ্য স্নার্ক

    দ্য হান্টিং অফ দ্য স্নার্ক হল ইংরেজ লেখক লুইস ক্যারলের একটি বাজে কবিতা, যেখানে দশটি চরিত্রের গল্প বলা হয়েছে যারা স্নার্ক নামে পরিচিত একটি রহস্যময় প্রাণীকে শিকার করতে সমুদ্র পাড়ি দেয়। কবিতাটি ১৯৭৬ সালে হেনরি হলিডে দ্বারা চিত্র সহ প্রকাশিত হয়েছিল। এটি হলিডে’স ইলাস্ট্রেশনের অষ্টম প্লেট, যার সাথে আছে “ফিট দ্য সিক্সথ: দ্য ব্যারিস্টার’স ড্রিম”। ব্যারিস্টার, ক্রু সদস্যদের মধ্যে একজন, ঘুমাচ্ছেন এবং একটি শূকরের বিচার প্রত্যক্ষ করার স্বপ্ন দেখেন যা তার শূকরকে পরিত্যাগ করার জন্য অভিযুক্ত। স্নার্ককে ফোরগ্রাউন্ডে চিত্রিত করা হয়েছে, প্রতিরক্ষা ব্যারিস্টার হিসাবে কাজ করে এবং পোশাক এবং পরচুলা পরিহিত – সেটে প্রাণীর একটি চিত্রের নিকটতম। ব্যারিস্টার শেষ পর্যন্ত তার কানে বেলম্যানের বেল বাজানোর মাধ্যমে জেগে ওঠে, যেমনটি নীচে বাম দিকে দেখা যায়।

    বিষয়শ্রেণী:

  • দ্য লেক আইল্ অব ইনিস্ফ্রি

    দ্য লেক আইল অব ইনিস্ফ্রি” উইলিয়াম বাটলার কর্তৃক ১৮৮৮ সালে রচিত তিনটি চতূষ্পদী অংশের বারো লাইনের একটি কবিতা, যা ১৮৯০ সালে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল অবসার্ভারে প্রথমবার প্রকাশিত হয়।[১]

    পটভূমি

    ১৮৯০ সালে নেওয়া উইলিয়াম বাটলার ইয়েটসের আলোকচিত্র

    ইনিস্ফ্রি আয়ারল্যান্ডের কাউন্টি স্লিগোর লাফ গিলে অবস্থিত একটি জনবসতিহীন দ্বীপ, যেখানে বাটলার তার শৈশবে একবার গ্রীষ্ম অতিবাহিত করেন। ১৮৮৮ সালে লন্ডনের ফ্লিট স্ট্রিট দিয়ে হাঁটার সময় “হঠাত্‍” শৈশব থেকে ফিরে আসা স্মৃতিকে বাটলার এই কবিতাটি লেখার অনুপ্রেরণা হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি লেখেন, “কৈশরে স্লিগোর ইনিস্ফ্রিতে থোরিয়ুর অনুকরণে আমার বসবাসের অকাঙ্ক্ষা ছিল, যা লাফ গিলের একটি ছোট দ্বীপ , এবং ঘরকাতুরে চিন্তা নিয়ে ফ্লিট স্ট্রিটে হাঁটার সময় আমি জলের সামান্য ঝিরঝির শব্দ শুনতে পাই এবং একটি দোকানের জানালায় এক ঝর্ণা দেখতে পাই এবং এর ফিনকি মুখে একটি বল রাখা ছিল, আর এতেই আমার হ্রদের পানির কথা মনে পড়তে শুরু করে। এই হঠাত্‍ ফিরে আসা স্মৃতি আমার কবিতা “ইনিস্ফ্রিতে,” প্রতিফলিত হয় যা আমার প্রথম গীতধর্মী কবিতা এবং আমি নিজেই সূর সংযোজন করেছি।”[২] আইরিশ নাগরিকদের পাসপোর্টে কবিতাটি সংযুক্ত রয়েছে।

    সারমর্ম

    বারো লাইনের কবিতাটি তিনটি চতুষ্পদি অংশে বিভক্ত এবং এটি ইয়েটসের পূর্ববর্তী গীতি কবিতাগুলোর উদাহরণ। সম্পূর্ণ কবিতাজুড়ে শহুরে জীবনযাপন করা কবির ইনস্ফ্রিতে শান্তি খোঁজার আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়। ইনস্ফ্রির শান্ত ও নীরব পরিবেশের টানে কবি সেখানে ফিরে যেতে চান। তিনি মনে করেন এর মাধ্যমে তিনি শহুরে জীবনের কোলাহল ও অশান্তি থেকে নিষ্কৃতি পেতে পারেন। এই ছোট্ট দ্বীপে সন্ধ্যার বেগুনী আভা, পাখিদের গুঞ্জন, তাদের ডানা ঝাপটানোর শব্দ উপভোগ করার মাধ্যমে তিনি প্রকৃতির সাথে মিশে যেতে চান। তিনি সেখানে একটি কুটির তৈরী করতে পারেন যেখানে তিনি অনেকদিন থাকবেন। কবিতাটি ইয়টসের অন্যতম একটি জনপ্রিয় কবিতা, যা তার জীবদ্দশাতেই তূমুল জনপ্রিয়তা পায় এবং এক অনুষ্ঠানে কবিতাটি তার সম্মানে দুই হাজার (মতান্তরে দশ হাজার) বয় স্কাউট কর্তৃক আবৃতি অথবা গাওয়া হয়েছিল।[৩] প্রথম চতুষ্পদী অংশে মানুষের জৈবিক চাহিদার (খাবার এবং আশ্রয়) কথা বলা হয়েছে; দ্বিতীয় অংশে আত্মিক চাহিদার (শান্তি) কথা; এবং সর্বশেষ অংশে মানুষের আত্মার সাথে বাস্তব পৃথিবীর মিলনের কথা বলা হয়েছে (ধূসর পটভূমি)।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

    দ্য লেক আইল্ অব ইনিস্ফ্রি

    I will arise and go now, and go to Innisfree,
    And a small cabin build there, of clay and wattles made;
    Nine bean rows will I have there, a hive for the honey bee,
    And live alone in the bee-loud glade.

    And I shall have some peace there, for peace comes dropping slow,
    Dropping from the veils of the morning to where the cricket sings;
    There midnight’s all a glimmer, and noon a purple glow,
    And evening full of the linnet’s wings.

    I will arise and go now, for always night and day
    I hear lake water lapping with low sounds by the shore;
    While I stand on the roadway, or on the pavements grey,
    I hear it in the deep heart’s core.

    অর্থ: আমি উঠব জেগে, এক্ষুণি যাব ইনিস্ফ্রিতে,
    আর বানাব ছোট্ট ঘর, মাটি আর বেড়ায়;
    নয়টি শিমের সারি থাকবে, আর একটি মৌচাক,
    আর থাকব মৌ-গুঞ্জরিত বনানীর ফাঁকে।

    আর সেখানে পাব শান্তি, কারণ শান্তি নামে স্তব্ধ নিরবতায় সকালের অবগুন্ঠন থেকে ঝিঁঝির গানে ক্লিষ্ট সন্ধ্যায়;
    যেখানে মাঝরাত দ্যুতি, দুপুর এক নিরক্ত আলো,
    আর সন্ধ্যা পূর্ণ পিঙ্গল শ্যামার পাখায়।

    জেগে উঠব আর যাব, কারণ সারাক্ষণ রাতে আর দিনে আমি শুনি কিনারের নিচু স্বরে সে হ্রদের ঢেউভাঙ্গা ধ্বনি,
    যখন দাঁড়িয়ে থাকি রাজপথে, আর ধূলিধূসরিত পথে,
    আমি শুনি সে শব্দ হৃদয়ের গভীর জগতে।

  • তালগাছ (কবিতা)

    এই নিবন্ধটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত কবিতা সম্পর্কে। সম্পর্কিত বৃক্ষ ও ফলের জন্য তাল দেখুন।

    তালগাছ হলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত একটি বিখ্যাত বাংলা কবিতা।[১][২] এটি শিশু ভোলানাথ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।[১] রবীন্দ্রনাথ বিশেষত ছোটদের জন্য এটি লিখেন।[৩] এতে ২৪টি ছন্দময় পঙক্তি রয়েছে।[১][২] কবিতাটি মূলত তালগাছের ওপর উপজীব্য করে রচিত।[১][২][৩]

  • চিত্ত যেথা ভয়শূন্য

    চিত্ত যেথা ভয়শূন্য (ইংরেজি: Where the mind is without fear, প্রতিবর্ণী. Chitto Jetha Bhoyshunno) হল ভারতের স্বাধীনতার আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি কবিতা। এটি রবীন্দ্রনাথের একটি নতুন এবং জাগ্রত ভারত সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিনিধিত্ব করে। মূল কবিতাটি ১৯১০ সালে প্রকাশিত হয় এবং ১৯১০ সালের গীতাঞ্জলিতে সংগ্রহ করা হয় এবং ১৯২১ সাল রবীন্দ্রনাথের নিজের অনুবাদ ইংরেজি সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থর জনপ্রিয় কবিতার গুলির মধ্যে একটি অন্য তম।

    বাংলা পাঠ্য

       চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির,
        জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর
        আপন প্রাঙ্গণতলে দিবসশর্বরী
        বসুধারে রাখে নাই খণ্ড ক্ষুদ্র করি,
        যেথা বাক্য হৃদয়ের উৎসমুখ হতে
        উচ্ছ্বসিয়া উঠে, যেথা নির্বারিত স্রোতে
        দেশে দেশে দিশে দিশে কর্মধারা ধায়
        অজস্র সহস্রবিধ চরিতার্থতায়,
        যেথা তুচ্ছ আচারের মরুবালুরাশি
        বিচারের স্রোতঃপথ ফেলে নাই গ্রাসি,
        পৌরুষেরে করে নি শতধা, নিত্য যেথা
        তুমি সর্ব কর্ম চিন্তা আনন্দের নেতা,
        নিজ হস্তে নির্দয় আঘাত করি, পিতঃ;
        ভারতেরে সেই স্বর্গে করো জাগরিত॥

    ইতিহাস ও অনুবাদ

    এই কবিতা সম্ভবত ১৯০০ সালে রচনা করা হয়েছিল। কবিতাটি “প্রার্থনা” (জুলাই ১৯০১, বাংলায় ১৩০৮ বঙ্গাব্দে) শিরোনামে নৈবেদ্য শীর্ষকে প্রদর্শিত হয়েছিল। ইংরেজি অনুবাদটি ১৯১১ সালের মধ্যে রচনা করা হয়েছিল, উইলিয়াম রত্তেনস্টাইনের অনুরোধের পর রবীন্দ্রনাথ নিজের কাজের কিছু কবিতা ইংরেজিতে অনুবাদ করেছিলেন। ১৯১২ সালে লন্ডনের ইন্ডিয়ান সোসাইটি দ্বারা প্রকাশিত ইংরেজি গীতাঞ্জলিতে এটি ৩৫ তম কবিতা হিসেবে আবির্ভূত হয়।[১] ১৯১৭ সালে রবীন্দ্রনাথ কলকাতায় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে ইংরেজি আনুবাদটি (পরে খেতাবধারী ‘ভারতীয় প্রার্থনা’) পাঠ করেন।[২]

    ইংরেজি গীতাঞ্জলি জন্য ঠাকুরের অনুবাদের বেশিরভাগ ইংরেজি উপস্থাপনার প্রায় প্রতিটি লাইন যথেষ্ট সরলীকৃত হয়েছে। ইংরেজি সংস্করণে ৬ তম লাইন  মানুষের কল্যাণের একটি তথ্য বাদ দেয় (জনসাধারণ, পুরাতন শাষ), এবং মূলের কঠোর পরিসমাপ্তি ঘটে, যেখানে পিতা দ্বারা “নিদ্রা ছাড়াই ঘুমিয়ে থাকা জাতিকে আঘাত করা” হয়েছে।

    এই কবিতা প্রায়ই ভারতের পাঠ্যপুস্তকগুলিতে প্রদর্শিত হয় এবং বাংলাদেশেও জনপ্রিয়। এই গানের একটি সিংহলী অনুবাদ “গে ডিসায়া অয়াধি কারানু মেনা পিয়াননি” নামে, যা মহাগমা সেকারা দ্বারা সিংহলী অনুবাদ করা হয়েছিল।

    জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে

    এই কবিতাটি বাঙালি তথা ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতিকে যথেষ্ট প্রভাবিত করেছে। এ.আর. রহমান ২০১৩ সালে ‘জগাও মেরে দেশ কো’ নামে একটি ভারতীয় স্বাধীনতা দিবসের গান রচনা করেন এই কবিতাটির উপর ভিত্তি করে যা কাইম মিউজিক কনজার্ভরিটি একটি কাহিনীসহ কবিতা প্রদর্শন করে। এমটিভি কোক স্টুডিও থেকে ২০১৩ সালে গানটি দেখানো হয়েছিল।[৩]

    আমির খান টেলিভিশন অনুষ্ঠান সত্যমেব জয়তের শেষ পর্বে কবিতাটির হিন্দি সংস্করণটি অনুবাদ করেছেন।[৪]

    জন আব্রাহামের সিনেমা মাদ্রাজ ক্যাফে’তে মধ্যে কবিতাটির  ইংরেজি সংস্করণ ঊপস্থিত।

    কবিতাটি ২০১৩ সালে শ্রীজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত বাংলা চলচ্চিত্র মিশরে রহশ্যেও ব্যবহার করা হয়; কাকাবাবু নামক কল্পবিজ্ঞানের চরিত্রটি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন।

    এই কবিতা উপর ভিত্তি করে প্রগতিশীল রক ব্যান্ড সিনিস্টার সিম্ফনি তাদের গান ‘ইন টু হে হেভেন’ লিখেছে। ইমোজেন হিপ এবং বৈশাল-শেখার চিত্ত যেথা ভয়শূন্য উপর ভিত্তি করে “মাইন্ডস ইউথাউট ফেয়ার” রচনা করেন। এটি দ্য ডুয়ার্সস্টের প্রথম মৌসুমের প্রথম পর্বে তুলে ধরা হয়েছে।

    ২০১০ সালে ভারতীয় সংসদের ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এই কবিতার লাইন উদ্ধৃত করেছেন।[৫]

    আরও দেখুন

  • চতুর্দশপদী

    চতুর্দশপদী(Sonnet) হল এক ধরনের কবিতা যার প্রথম উদ্ভব হয় মধ্যযুগে ইতালিতে। এর বৈশিষ্ট্য হল যে এই কবিতাগুলো ১৪টি চরণে সংগঠিত এবং প্রতিটি চরণে সাধারণভাবে মোট ১৪টি করে অক্ষর থাকবে। এর প্রথম আট চরণের স্তবককে অষ্টক এবং পরবর্তী ছয় চরণের স্তবককে ষষ্টক বলে। অষ্টকে মূলত ভাবের প্রবর্তনা এবং ষষ্টকে ভাবের পরিণতি থাকে, যাকে বলা হয় ভোল্টা

    ইংরেজি চতুর্দশপদী

    ইংরেজিতে চতুর্দশপদী কবিতাকে সনেট (sonnet) বলা হয়। ইংরেজি চতুর্দশপদী প্রথম পরিচিতি পেয়েছিল খ্রীষ্টীয় ১৬শ (ষোড়শ) শতাব্দীতে ‘টমাস ওয়াট’ এর প্রয়োগের মাধ্যমে। কিন্তু এর প্রচলন প্রবল হয়ে ওঠে স্যার ফিলিপ সিডনি এর Astrophel and Stella (১৫৯১) প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে। তার পরের দুই শতক উইলিয়াম শেকসপিয়র, এডমন্ড স্পেন্সার, মাইকেল ড্রায়টন ইত্যাদি ব্যক্তিত্ত্বরা চতুর্দশপদী কবিতাকে নতুন নতুন ধাপে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। এরুপ কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল নারীর প্রতি ভালবাসা।

    বাংলা চতুর্দশপদী

    বাংলা ভাষায় প্রথম সনেট রচনার কৃতিত্ব মাইকেল মধুসূদন দত্তের, সনেটকে বাংলায় চতুর্দশপদী নাম মহাকবি মাইকেল মধুসূদনই দিয়েছিলেন। বাংলা সনেট (চতুর্দশপদী) এর সার্থক স্রষ্টা কবি মধুসূদন দত্ত ১৮৬৫ খ্রীষ্টাব্দে ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে অবস্থানকালেই ইতালির কবি পেত্রার্কের সনেট থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রথম বাংলা সনেটের দিগন্ত উন্মোচন করেন। ১৮৬৬ খ্রীষ্টাব্দে কবির চতুর্দশপদী কবিতাগুলি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। এই কবিতাগুলিতে কবি চিত্তের ব্যকুলতা, স্বদেশ প্রেম ও আবেগ ধ্বনিত হয়েছে।[১]

    মাইকেল মধুসূধন দত্তের একটি চতুর্দশপদী।

    “বউ কথা কও”[২]
    কি দুখে, হে পাখি, তুমি শাখার উপরে
    বসি, বউ কথা কও, কও এ কাননে ?—
    মানিনী ভামিনী কি হে, ভামের গুমরে,
    পাখা-রূপ ঘোমটায় ঢেকেছে বদনে ?
    তেঁই সাধ তারে তুমি মিনতি-বচনে ?
    তেঁই হে এ কথাগুলি কহিছ কাতরে ?
    বড়ই কৌতুক, পাখি, জনমে এ মনে—
    নর-নারী-রঙ্গ কি হে বিহঙ্গিনী করে ?
    সত্য যদি, তবে শুন, দিতেছি যুকতি;
    (শিখাইব শিখেছি যা ঠেকি এ কু-দায়ে)
    পবন বেগে যাও যথায় যুবতী;
    “ক্ষম, প্রিয়ে” এই বলি পড় গি