Category: ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা

Geography Environment and Disaster Management

  • আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে

    আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে

    আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে বা আসাম বাংলা রেলপথ ছিল ব্রিটিশ ভারতের অন্যতম প্রধান রেল সংস্থা। অধুনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্তর্গত চট্টগ্রাম শহরে এই রেল সংস্থার প্রধান কার্যালয় অবস্থিত ছিল। ১৮৯২ থেকে ১৯৪২ সাল পর্যন্ত এই সংস্থা কার্যকরী ছিল।[১].১৯৪২ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত চালু বেঙ্গল অ্যান্ড আসাম রেলওয়ে এই রেল সংস্থা থেকেই উদ্ভূত হয়।[২][৩][৪]

    আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে

    ইতিহাস

    আসামের ব্রিটিশ মালিকানাধীন চা-বাগানগুলির সুবিধার্থে ১৮৯২ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে চালু হয়।[৫] ১৯৪২ সালে এই সংস্থার মালিকানা ভারত সরকারের হাতে ন্যস্ত করা হয়। তারপর এটিকে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত করে আসাম অ্যান্ড বেঙ্গল রেলওয়ে গঠন করা হয়।[৫]

    ১৯৪২ সালের ১ জানুয়ারি আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল।[২][৬][৭] ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর বেঙ্গল অ্যান্ড আসাম রেলওয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়। এই সংস্থার প্রায় ২,৬০৩.৯২ কিলোমিটার রেলপথ নবগঠিত পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। এই অংশের নাম হয় ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে এবং এর মালিকানা যায় পাকিস্তান সরকারের হাতে। ১৯৬১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের নাম পালটে পাকিস্তান রেলওয়ে রাখা হয়।[৬]

    উত্তরসূরি

    ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের পর বেঙ্গল অ্যান্ড আসাম রেলওয়ের যে অংশটি ভারতের অসম রাজ্য ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে পড়ত, সেই অংশটি নিয়ে আসাম রেলওয়ে গঠিত হয়। ১৯৫২ সালে আসাম রেলওয়ের সঙ্গে বোম্বাই, বরোদা অ্যান্ড সেন্ট্রাল ইন্ডিয়া রেলওয়ের ফতেহগড় জেলা ও অবধ তিরহুত রেলওয়ে যুক্ত করে ভারতীয় রেলের উত্তর পূর্ব রেল বিভাগটি গঠিত হয়। ১৯৫৮ সালে এই বিভাগ থেকে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল অঞ্চলটি পৃথক করে একটি আলাদা বিভাগ গঠিত হয়।[৫][৮]

    বেঙ্গল অ্যান্ড আসাম রেলওয়ের যে অংশটি স্বাধীনতার পর পূর্বতন পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল সেটির নামকরণ করা হয় ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে। ১৯৬১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের নাম পালটে রাখা হয় পাকিস্তান রেলওয়ে। ১৯৬২ সালে আবার নাম পালটে তা হয় পাকিস্তান ইস্টার্ন রেলওয়ে[৯] বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর এটি বাংলাদেশ রেলওয়েতে পরিণত হয়।[১০]

    ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট ভারতের স্বাধীনতার পর ভারতে স্থিত আসাম অ্যান্ড বেঙ্গল রেলওয়ের ব্রডগেজ অংশটি ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয় এবং মিটারগেজ অংশটি নিয়ে আসাম রেলওয়ে গঠিত হয়।[১১] এই রেলের প্রধান কার্যালয় হয় পান্ডুতে। ১৯৫২ সালের ১৪ এপ্রিল, ২৮৫৭ কিলোমিটার দীর্ঘ আসাম রেলওয়ে ও অবধ অ্যান্ড তিরহুত রেলওয়ে যুক্ত হয়ে ভারতীয় রেলের ছয়টি নবগঠিত বিভাগের অন্যতম উত্তরপূর্ব রেল বিভাগ গঠিত হয়।[১২][১৩] এই দিনই পূর্বতন বেঙ্গল অ্যান্ড আসাম রেলওয়েও শিয়ালদহ বিভাগটি (যেটি আগে ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল) পূর্ব রেলের সঙ্গে যুক্ত হয়।[১৪]

    লাইনসমূহ

    আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে তথ্যফলক, তিনচুকীয়া ঐতিহ্য যাদুঘর

    আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে ১৮৯১ সালে পূর্ববঙ্গে রেলপথ নির্মাণ শুরু করে। ১৮৯৫ সালে চট্টগ্রামকুমিল্লার মধ্যে রেলপথ চালু হয়। ১৮৯৬-১৮৯৮ নাগাদ কুমিল্লা-আখাউড়া-কালাউড়া-বদরপুর বিভাগটি চালু হয় এবং শেষে ১৯০৩ সালে লামডিং পর্যন্ত লাইন সম্প্রসারিত হয়।[১০][১৫][১৬] ১৯০০ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে পূর্বদিকে গুয়াহাটি পর্যন্ত একটি শাখা রেলপথ চালু করে। ১৯০২ সালে তা তিনশুকিয়া পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয় এবং ১৯০৩ সালে তা ডিবরু-সাদিয়া রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়।[৫]

  • আঞ্জুমান-ই-উলামা-ই-বাঙ্গালা

    আঞ্জুমান-ই-উলামা-ই-বাঙ্গালা

    আঞ্জুমান-ই-উলামা-ই-বাঙ্গালা ছিল আলেমদের একটি সংগঠন। ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে এটি কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয়।[১]

    আঞ্জুমান-ই-উলামা-ই-বাঙ্গালা

    প্রতিষ্ঠা

    আঞ্জুমান-ই-উলামা-ই-বাঙ্গালা ইসলাম প্রচার, মুসলিমদের বিরুদ্ধে অন্য ধর্ম প্রচারকদের বৈরিতামূলক প্রচারণা মোকাবেলা, কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে মুসলিম সমাজের সংস্কারের উদ্দেশ্যে গঠিত হয়। মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী, মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ, মাওলানা মুহম্মদ আবদুল্লাহিল বাকী ও ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ছিলেন এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।[১]

    পত্রিকা

    বাংলাদেশে ইসলাম
    ইতিহাস
    সংস্কৃতি
    ব্যক্তিত্ব
    সম্প্রদায়সমূহ
    ধর্মীয় আইনশাস্ত্র
    মতাদর্শসমূহ
    মসজিদসমূহ
    রাজনৈতিক দল
    শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
    প্রভাবক প্রতিষ্ঠানসমূহ
    অনন্য বিষয়
    দে

    আঞ্জুমান নিজস্ব প্রচার মাধ্যম হিসেবে আল-এসলাম (১৯১৫-১৯২১) নামক পত্রিকা প্রকাশ করে।[১]

    কার্যক্রম

    এই সংগঠন ১৯২১ সাল পর্যন্ত স্বনামে কার্যকর ছিল। এরপর তা জামিয়াত-উল-উলামা-ই-বাঙ্গালার সাথে একীভূত হয়। আঞ্জুমান বাংলা ও আসামে তাদের কার্যক্রম চালায়। ভিন্ন সংস্কৃতিতে প্রভাবিত হয়ে পড়া মুসলিমদেরকে শিরক ও বিদাত থেকে মুক্ত থাকার শিক্ষা প্রদান করা হয়। সংগঠনের সদস্যরা মক্তব, মাদ্রাসা নির্মাণ করেন ও তহবিল গঠন করেন। চট্টগ্রামে আরবি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন তাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল কিন্তু তহবিলের কারণে তা সম্ভব হয়নি।[১]

    রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড

    খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনে আঞ্জুমান অংশ নেয়। আঞ্জুমান হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের পক্ষপাতী ছিল। স্বদেশী পণ্যের বিক্রির জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে কলকাতায় স্বদেশী খিলাফত স্টোর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।[১]

    সমাপ্তি

    দীর্ঘদিন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার পর ১৯২১ সালে আঞ্জুমানের কার্যক্রম বন্ধ হয় এবং তা জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের বাংলার শাখা জামিয়াত-উল-উলামা-ই-বাঙ্গালার সাথে একীভূত হয়।[১]

  • অবিভক্ত স্বাধীন বাংলা

    অবিভক্ত স্বাধীন বাংলা

    অবিভক্ত স্বাধীন বাংলা একটি বাঙালি জাতীয়তাবাদ কেন্দ্রিক ঐতিহাসিক রাজনৈতিক মতবাদ যা দক্ষিণ এশিয়ার সকল বাংলা ভাষাভাষী মানুষের একটি কেন্দ্রীভূত স্বাধীন বাঙালি রাষ্ট্র ব্যবাস্থার দাবি করে । বাঙালি জাতীয়তাবাদী মাওলানা ভাসানি, হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী, শরৎচন্দ্র বসু প্রমুখ প্রখ্যাত বাঙালি একটি অবিভক্ত স্বাধীন বাংলা প্রজাতন্ত্রের একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন।[১][২] বাঙালি জাতীয়তাবাদ হলো একটি রাজনৈতিক অভিব্যক্তি যার মাধ্যমে প্রাচীন কাল থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় বসবাসরত বাঙালি জাতি, তথা বাংলা ভাষাগত অঞ্চলের অধিবাসীদের বুঝানো হয়ে থাকে। বাঙালি জাতি উপমহাদেশের একটি অন্যতম জাতীয়তাবাদী চেতনায় প্রভাবিত এক প্রভাবশালী জাতি। বাঙালি জাতীকে উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের রূপকার বলা হয়ে থাকে। অবিভক্ত বাংলা পরবর্তীতে ব্রিটিশ চক্রান্তে বিভক্ত করা হয়। প্রাচীন বঙ্গদেশ অর্থাৎ বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামআন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বসবাসকারী মানব সম্প্রদায়ের একতাবদ্ধ জাতি রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ধারনাকে অবিভক্ত স্বাধীন বাংলা বা বৃহত্তর বাংলাদেশ বলা হয়ে থাকে, যাদের ইতিহাস অন্ততঃ চার হাজার বছর পুরোনো।

    অবিভক্ত স্বাধীন বাংলা

    ঐতিহাসিক পটভূমি

    ব্রিটিশ রাজ ভারতে ক্যাবিনেট মিশন ১৯৪৬ প্রেরন করলে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির এ সময়ে বাংলার প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী আনুষ্ঠানিকভাবে অবিভক্ত বাংলাকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র করার এক পরিকল্পনা পেশ করেন।[৩][৪][৫] নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর দাদা শরৎচন্দ্র বসুও তার সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক বাংলা প্রজাতন্ত্রের এক প্রস্তাব উত্থাপন করেন। ১৯৪৭ সালের ২৬শে এপ্রিল ইংরেজ বড়লাট লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেনের সাথে এক সভায় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী উত্থাপন করেন অবিভক্ত স্বাধীন বাংলা প্রস্তাব। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দি তার এই পরিকল্পনার পক্ষে সমর্থন সৃষ্টির জন্য মাউন্টব্যাটেনের কাছ থেকে দুমাস সময় চেয়ে নেন। মাউন্টব্যাটেন তাকে জানান যে তিনি দেশ বিভাগের বিরুদ্ধে, তবে ঐক্যবদ্ধ ভারত না হলে ক্যাবিনেট মিশনের প্রস্তাবকেই তিনি অগ্রাধিকার দেবেন। ঐদিনই কায়েদে আজম জিন্নাহর সাথে সাথে মাউন্টব্যাটেনের এক বৈঠক হয়। সে বৈঠকে তিনি জিন্নাহকে জানান সোহরাওয়ার্দি তাকে বলেছেন যে ভারত বা পাকিস্তান কারো সাথে যোগ দেবে না এই শর্তে অবিভক্ত বাংলা থাকা সম্ভব। জিন্নাহ ঐক্যবদ্ধ স্বাধীন বাংলার প্রস্তাব সমর্থন করেন।

    মহাত্মা গান্ধী নোয়াখালী যাবার পথে ‘৪৭ সালের ৯ই মে কলকাতায় আসলে তার সাথে অবিভক্ত বাংলার অন্যতম মূল প্রস্তাবক শরৎচন্দ্র বসু আলোচনা করেন। তার পরের দিন মুসলিম লীগ নেতা আবুল হাশিম, মহাত্মা গান্ধীর সাথে অবিভক্ত বাংলার প্রস্তাব নিয়ে আলাপ করেন।

    স্বাধীন সার্বভৌম বাংলা সৃষ্টির জন্য ১৯৪৭ সালের ২০শে মে সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান পার্টির নেতা শরৎচন্দ্র বসুর বাড়িতে নেতা পর্যায়ে একটি ত্রিদলীয় আলোচনা সভা হয়। এ সভায় উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সোহরাওয়ার্দি, মুহম্মদ আলী, ফজলুর রহমান, প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সম্পাদক আবুল হাশিম, আব্দুল মালেক, অবিভক্ত বাংলার কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতা কিরণশঙ্কর রায়, সত্যরঞ্জন বকসি এবং শরৎচন্দ্র বসু। এ সভায় আবুল হাশিম ও শরৎ বসু সবার সাথে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। কিরণশঙ্কর রায় কংগ্রেস পার্টির দলের ঘোষিত নীতির বিরোধিতা করে এই প্রস্তাবের সাথে যুক্ত হন। সোহরাওয়ার্দি ও আবুল হাশিম একইভাবে মুসলিম লীগের ঘোষিত নীতির বিরুদ্ধে কাজ করেন। সোহরাওয়ার্দী ও শরৎ বসুর মধ্যে বাংলার সার্বভৌম মর্যাদা কি হবে তা নিয়ে মতপার্থক্য ছিল। কিন্তু তাদের উভয়েরই প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল বাংলা প্রদেশের বিভক্তি রোধ করা।

    কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতাদের বিরোধিতা সত্ত্বেও সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশিম তাদের পরিকল্পনার ভিত্তিতে প্রদেশের হিন্দু নেতাদের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর প্রয়াস অব্যাহত রাখেন। সোহরাওয়ার্দী নানা সময়ে বিষয়টি নিয়ে ফ্রেডারিক বারোজ, জিন্নাহ ও মাউন্টব্যাটেনের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন এবং তাদের সঙ্গে তার সন্তোষজনক আলোচনাও হয়। শরৎ বসু মার্চে নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটি (AICC) কর্তৃক গৃহীত প্রস্তাবের তীব্র প্রতিবাদ করেন। কিরণশঙ্করের বিশ্বাস ছিল যে, যদি মুসলিম লীগ নেতৃবৃন্দ হিন্দুদের জন্য এমন কিছু প্রস্তাব নিয়ে এগিয়ে আসেন, তাহলে প্রদেশটির অখণ্ডতা রক্ষা পেতে পারে। ১৯৪৭-এর মে মাসের গোড়ার দিক থেকে অবিভক্ত বাংলার পক্ষপাতীরা একে অন্যের কাছাকাছি আসেন। কলকাতায় গান্ধীর সফরকালে তারা তাদের প্রস্তাব নিয়ে গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন এবং তার পরামর্শ কামনা করেন। তারা তাদের অভিমত সম্পর্কে কংগ্রেস ও লীগ শীর্ষ নেতাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন।

    প্রস্তাব

    ১৯৪৭-এর ২০শে মে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে স্বাধীন অবিভক্ত বাংলার পক্ষপাতী নেতাদের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়। চুক্তির শর্তগুলি ছিল নিম্নরূপ:

    1. বাংলা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হবে। স্বাধীন বাংলা রাষ্ট্র অবশিষ্ট ভারতের সঙ্গে তার সম্পর্ক নির্ধারণ করবে।[৬]
    2. স্বাধীন বাংলা রাষ্ট্রের সংবিধানে যুক্ত নির্বাচন ও বয়স্ক ভোটাধিকারের ভিত্তিতে বাংলার ব্যবস্থাপক পরিষদের নির্বাচনের ব্যবস্থা থাকবে আর সে সঙ্গে হিন্দু ও মুসলমান জনসমষ্টির সংখ্যানুপাতে আসন সংরক্ষিত থাকারও ব্যবস্থা থাকবে। হিন্দু ও তফশিলি হিন্দুদের আসনগুলি তাদের নিজ নিজ সম্প্রদায়ের জনসমষ্টির অনুপাতে তাদের জন্য বণ্টনের ব্যবস্থা থাকবে কিংবা এমন ভাবে সে ব্যবস্থা করা হবে যাতে উভয় সম্প্রদায়ের সম্মতি থাকবে। নির্বাচনী এলাকাগুলি হবে কার্যত বহু নির্বাচনী এলাকা এবং ভোট হবে বণ্টন অনুসারে, সামগ্রিক নয়। নির্বাচন চলাকালে কোনো প্রার্থী তার নিজ সম্প্রদায়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেলে এবং একইভাবে প্রদত্ত অন্য সম্প্রদায়গুলির ২৫ শতাংশ ভোট পেলে তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। যদি কোনো প্রার্থী এ শর্তাবলি পূরণ না করতে পারেন তাহলে যিনি তার সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট পাবেন তিনিই নির্বাচিত হবেন।[৬]
    3. স্বাধীন বাংলা রাষ্ট্রের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে ও বাংলা বিভক্ত করা হবে না এ মর্মে ব্রিটিশ রাজকীয় সরকারের ঘোষণার পর বাংলার বর্তমান মন্ত্রিসভা ভেঙ্গে দেওয়া হবে। তদস্থলে একটি নতুন অন্তবর্তীকালীন মন্ত্রিসভা গঠিত হবে। এ মন্ত্রিসভায় মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের (তফশিলি হিন্দু ও হিন্দুসহ) সমান সংখ্যক সদস্য থাকবেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী এ হিসেবের বাইরে থাকবেন। এ মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী হবেন একজন মুসলিম ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী হবেন একজন হিন্দু।
    4. নতুন সংবিধানের আওতায় একটি আইন পরিষদ ও একটি মন্ত্রিসভা চূড়ান্ত পর্যায়ে গঠিত হওয়া সাপেক্ষে ইত্যবসরে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন (তফশিলি হিন্দুসহ) ও মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যরা সামরিক বাহিনী ও পুলিশ বাহিনীসহ বিভিন্ন চাকরিতে সমান অংশের অধিকারী হবেন। আর এসব চাকরি-বাকরি করবেন বাঙালিরা।[৬]
    5. গণপরিষদ ৩০ জন বাক্তিকে নিয়ে গঠিত হবে। এদের মধ্যে ১৬ জন হবেন মুসলিম ও ১৪ জন অমুসলিম। ইউরোপীয়রা ছাড়া ব্যবস্থাপক পরিষদের মুসলিম ও অমুসলিম সদস্যরা তাদেরকে নির্বাচিত করবেন।[৬][৭]

    নিজেদের মধ্যে এক সমঝোতায় উপনীত হওয়ার পর সোহরাওয়ার্দী, কিরণশঙ্কর রায় ও শরৎচন্দ্র বসু তাদের এ পরিকল্পনার পরীক্ষামূলক চুক্তির শর্তগুলির ব্যাপারে কংগ্রেস ও লীগ হাই কমান্ডের অনুমোদন আদায়ের চেষ্টা করেন। তবে কংগ্রেস ও লীগ নেতাদের মধ্যে তৎকালে বিরাজমান ভুল বোঝাবুঝি ও পরিবর্তনশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির আলোকে এ সমঝোতার প্রণেতারা দারুণ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। কংগ্রেস ও লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতারা চুক্তির শর্তগুলির সরাসরি নিন্দা করেন। কলকাতার প্রভাবশালী দৈনিক সংবাদপত্র এবং বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের খাজা গ্রুপের সংবাদপত্রগুলি চুক্তির শর্তগুলির বিরুদ্ধে প্রচারাভিযান শুরু করে। খাজা গ্রুপের এ ধারণা হয় যে, এ চুক্তির অর্থ হবে হিন্দুদের কাছে পুরোপুরি আত্মসমর্পণ, আর কংগ্রেস ও হিন্দু মহাসভা নেতাদের মতে, এ চুক্তিটি পাকিস্তানের সীমানা সম্প্রসারণের একান্ত লক্ষ্যেই করা হয়েছে।

    জাতি হিসেবে বাংলার নিজস্ব সত্তার অব্যাহত বিকাশের পথে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন প্রবল বাধা হয়ে ওঠে। বিগত কয়েক শতকে এ অঞ্চলে কারুশিল্প, নির্মাণ ও শিল্প কারখানা, শিক্ষা ও প্রশাসন ক্ষেত্রে যাবতীয় অর্জন ঔপনিবেশিক শাসনের প্রভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। শিক্ষা, প্রশাসন ও অর্থনৈতিক নানা নীতির মাধ্যমে ঔপনিবেশিক শাসন দেশে সুদূরপ্রসারী পরিবর্তনের প্রক্রিয়া চালু করে। ঔপনিবেশিক পরিবর্তনগুলো বিগত কয়েক শতকে গড়া-ওঠা সামাজিক কাঠামোকে দুর্বল করছিল, এমন কি কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাকে ধ্বংসও করে দিয়েছিল। উনিশ শতকের ঘটনাবলি এক ধরনের বাঙালি জাতীয়তাবাদ গড়ে তোলে।

    ব্রিটিশদের ভারত ত্যাগ

    আন্দোলনরত ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের প্রাক্কালে সাম্প্রদায়িক প্রশ্নজনিত সমস্যার সমাধানে একটি রাজনৈতিক প্রস্তাব। ১৯৪৭ সালের এপ্রিল-মে দেশবিভাগের প্রশ্নটি পরিষ্কার হয়ে ওঠে।

    হোসেন সোহরাওয়ার্দীর স্বাধীন বাংলা

    সোহরাওয়ার্দী ভারত ইউনিয়নের বাইরে সম্পূর্ণভাবে এক স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে যুক্ত বাংলাকে দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শরৎ বসু অবিভক্ত বাংলাকে কল্পনা করেছিলেন ভারত ইউনিয়নের মধ্যেই এক সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে। তারা উভয়েই বাংলা বিভাগের তীব্র প্রতিবাদ জানান। এ বিভক্তির উদ্যোগ নিয়েছিলেন কংগ্রেসের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতৃবৃন্দ এবং এ প্রদেশের হিন্দু মহাসভার নেতারা। বাংলার কতিপয় হিন্দু ও মুসলিম নেতা সোহরাওয়ার্দী ও শরৎ বসুর প্রয়াসের সমর্থন জানিয়েছিলেন। এঁদের মধ্যে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ হলেন: কিরণশঙ্কর রায় (বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার কংগ্রেস সংসদীয় দলনেতা), সত্যরঞ্জন বক্সী (শরৎ বসুর সচিব), আবুল হাশিম (বাংলা প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সম্পাদক), ফজলুর রহমান (বাংলা প্রদেশের রাজস্ব মন্ত্রী), মুহম্মদ আলী (সোহরাওয়ার্দী মন্ত্রিসভার অর্থমন্ত্রী) ও আরও অনেকে। প্রস্তাবটি কিছুকাল ধরে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থায় আলোচিত হয় এবং বাংলার তৎকালীন নেতাদের মধ্যে এ নিয়ে ঐকমত্যে আসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা চলে।

    ১৯৪৭-এর ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এটলি-র ঘোষণার পর ভারতের স্বাধীনতার বিষয়টি দৃশ্যত নিকটতর হয়ে ওঠায় এবং ওই ঘোষণার পর পাঞ্জাব ও বাংলা প্রদেশকে বিভক্ত করার পক্ষে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসে যুক্তিতর্কের আলোকে সোহরাওয়ার্দীসহ বাংলার অল্পসংখ্যক রাজনীতিক এক সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলা প্রদেশের সংহতি রক্ষার চিন্তা করেন। তারা বাংলাকে তার নিজস্ব সংবিধানসহ একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ রাষ্ট্র গঠন করার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন। বাংলার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী প্রদেশে একটি কোয়ালিশন সরকার গঠনের বিষয়েও বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি আরও জোর দিয়ে উল্লেখ করেন যে, বাংলা বাঙালিদের ও এ বাংলা অবিভাজ্য। এ প্রদেশের একটি অংশ অন্যটির ওপর নির্ভরশীল, আর তাই এখানকার সকলেই এর প্রশাসনে অংশীদার হওয়ার অধিকারী। তিনি এ আশা পোষণ করেন যে, বাংলাকে এক গৌরবময় দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সেখানকার সকল শ্রেণীর মানুষ সম্প্রীতিতে বাস ও কাজ করতে দৃঢ়সংকল্প। সোহরাওয়ার্দী মনে করেন যে, যখন এ স্বাধীনতা অর্জিত হবে তখন বাংলায় শান্তি ও সমৃদ্ধির এক নবযুগের সূচনা হবে। আবুল হাশিম বাংলার কংগ্রেস ও মুসলিম নেতাদের প্রতি তাদের নিজেদের সমস্যা ব্রিটিশ প্রশাসনের আওতার বাইরে শান্তিপূর্ণ ও সুখকরভাবে নিষ্পত্তিতে সম্মিলিতভাবে প্রয়াসী হওয়ার আবেদন জানান। বাংলা প্রাদেশিক কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে শরৎ বসু অবিভক্ত বাংলার প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করেন।

    ১৯৪৭ সালের এপ্রিল-মে’র দিনগুলিতে হিন্দু মালিকানাধীন সংবাদপত্র ও রাজনীতিকেরা বাংলা বিভাগের পক্ষে অপ্রতিরোধ্য আন্দোলন শুরু করে দেয়। ১৯৪৭-এর ফেব্রুয়ারি মাসে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের ঘোষণায় ভারত বিভাগের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। দেশ বিভাগ অনিবার্য- এ বিষয়টি কংগ্রেস ও হিন্দু মহাসভা নেতাদের কাছে পরিষ্কার হওয়ার পর তারা বাংলার হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল এবং পাঞ্জাবের শিখ সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল ভারত ইউনিয়নের মধ্যে রেখে দেওয়ার ব্যাপারে সঙ্কল্প প্রকাশ করেন। বাংলা প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলা প্রাদেশিক বিভাগ এবং ভারত ইউনিয়নের মধ্যে কলকাতাকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি স্বতন্ত্র হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশ (পশ্চিম বঙ্গ) গঠনের পক্ষে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা প্রদান করে।

    প্রায় একই সময়ে বাংলার প্রাদেশিক হিন্দু মহাসভা এ মর্মে দৃঢ় সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে যে, বাংলার হিন্দুরা, অন্ততপক্ষে বাংলার হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলসমূহ, অবশ্যই ভারত ইউনিয়নের মধ্যে থাকবে এবং উক্ত অঞ্চলসমূহকে ভারতের অবশিষ্ট অঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। এ ব্যাপারে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বাংলা কংগ্রেস এবং দেশের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক আইন সভাগুলির বাঙালি হিন্দু সদস্যদের সমর্থন তার পক্ষে আনতে সমর্থ হন। ঠিক এ পর্যায়ে যখন কংগ্রেস-হিন্দু মহাসভা অাঁতাত সাফল্যের সঙ্গে বাংলা বিভক্তির জন্য তাদের অভিযান সফলভাবে চালিয়ে যাচ্ছিল, তখন সোহরাওয়ার্দীও বাংলা সম্পর্কিত তার পরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে, ঘোষণা দেন। ১৯৪৭ সালের ২৭ এপ্রিল দিল্লিতে এক সম্মেলনে সোহরাওয়ার্দী তার স্বাধীন অবিভক্ত বাংলার পরিকল্পনা প্রকাশ করেন। এরপর আবুল হাশিম ১৯৪৭-এর ২৯ এপ্রিল কলকাতায় প্রদত্ত এক বিবৃতিতে একই ইস্যুতে তার অভিমত ঘোষণা করেন। এর কয়েকদিন পর শরৎ বসু তার সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক বাংলা প্রজাতন্ত্রের প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

    এসব পরিকল্পনা সাধারণভাবে ভারতের এবং বিশেষ করে, বাংলার দুটি প্রধান ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাসের পরিবেশে উত্থাপিত হয়। লাহোর প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পরবর্তীকালে জিন্নাহর নেতৃত্বে পরিচালিত পাকিস্তান আন্দোলন বাংলার মুসলমানদের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করে। বাংলা প্রাদেশিক মুসলিম লীগ পাকিস্তান দাবির সমর্থনে মুসলিম জনসাধারণের অভিমত সংগঠিত করতে শুরু করে। বাংলার কংগ্রেস ও হিন্দু মহাসভার নেতৃবৃন্দ সারা বাংলার পাকিস্তানিকরণের সম্ভাবনায় দারুণ উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে এ প্রদেশে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মধ্যে সমঝোতা স্থাপন কঠিন হয়ে ওঠে। পাকিস্তান অর্জনের জন্য নিখিল ভারত মুসলিম লীগের প্রত্যক্ষ সংগ্রাম কর্মসূচিতে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে। অন্যান্য প্রদেশে এ প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হলেও কলকাতায় এ দিবস সহিংসতায় রূপ নেয়। এখানে সরকার ছিল মুসলিম লীগের নিয়ন্ত্রণাধীনে। ফলে বাংলা প্রাদেশিক বিভাগের দাবির অনুকূলে হিন্দু জনমত গঠনে এর প্রচন্ড প্রভাব পড়ে।

    বাংলা প্রাদেশিক হিন্দু মহাসভা ও এ প্রদেশের কংগ্রেস নেতারা সার্বভৌম বাংলা পরিকল্পনা উপেক্ষা করেন। তারা সোহরাওয়ার্দীর উদ্যোগের বিরুদ্ধে বাঙালি হিন্দুদের একটি বিরাট অংশকে সংগঠিত করেন। তাদের মতে, সোহরাওয়ার্দীর এ উদ্যোগ সারা বাংলায় পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার একটি রাজনৈতিক কৌশল মাত্র। হিন্দু সংবাদপত্রগুলি ঐক্যবদ্ধভাবে অবিভক্ত বাংলা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে হিন্দু জনমত গড়ে তোলার কোনো চেষ্টাই বাদ রাখে নি। হিন্দু মহাসভা বাংলার কংগ্রেস সদস্যদের ওপর বিপুল প্রভাব বিস্তার করে।

    বাংলার কংগ্রেস সদস্যদের অধিকাংশ যখন স্বাধীন বাংলার জন্য সোহরাওয়ার্দীর পরিকল্পনার বিরোধিতা করে, তখন প্রদেশের মুসলিম লীগ মহলগুলির মনোভাবও বিভক্তির পক্ষে চলে আসে। বাংলা মুসলিম লীগের বৃহত্তর অংশ তথা জিন্নাহর অনুসারীরা খাজা নাজিমউদ্দীন ও মওলানা আকরাম খানের নেতৃত্বে দাবি করতে থাকে যে, বাংলা একক পাকিস্তান রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ হবে, কোনো স্বাধীন রাষ্ট্র নয়। জিন্নাহ যেমন পাকিস্তান সম্পর্কে অনমনীয় ছিলেন, নাজিমউদ্দীন, আকরাম খান ও তাদের অনুসারীরাও ঠিক তেমন অনড় ছিলেন। তারা জিন্নাহর দ্বিজাতি তত্ত্বে দৃঢ় বিশ্বাসী ছিলেন।

    বাংলা প্রাদেশিক মুসলিম লীগের ওয়ার্কিং কমিটি ১৯৪৭-এর ২৮ মে আকরাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ নিরীক্ষামূলক চুক্তির শর্তগুলির নিন্দা করে এবং লীগের পাকিস্তান দাবির প্রতি অবিচল ও জিন্নাহর নেতৃত্বে পূর্ণ আস্থা রাখার কথা পুনর্ব্যক্ত করে। এরপর ১৯৪৭ সালের ২৮ মে তারিখে প্রদত্ত ভারতীয় কংগ্রেসের নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদকের এক বিবৃতি অবিভক্ত বাংলার ফর্মুলাকে আরও একদফা বিপর্যস্ত করে। ভারতীয় কংগ্রেসের পথ ধরে বাংলা প্রাদেশিক কংগ্রেসের সম্পাদক কালীপদ মুখার্জি এ পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করে ১৯৪৭ সালের ১ জুন এক বিবৃতি প্রদান করেন।

    সর্বভারতীয় রাজনীতিতে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে প্রধান বিরোধিতা আসে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। কংগ্রেস হাইকমান্ড অবিভক্ত বাংলায় মুসলমানদের স্থায়ী আধিপত্যের সম্ভাবনায় শঙ্কিত হন। জওহরলাল নেহরু ও সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল সার্বভৌম বাংলার ধারণার ব্যাপারে ঘোর বিরোধী ছিলেন। নেহরুর ধারণা ছিল যে, এ পরিকল্পনার মাধ্যমে বাংলার মুসলিম লীগ কার্যত গোটা বাংলাকে পাকিস্তানে যোগ দিতে বাধ্য করবে। তিনি আরও মনে করতেন যে, যদি বাংলা অবিভক্ত থাকে তবে তা ভারতীয় ইউনিয়নের একটি অংশ হওয়া উচিত। তিনি পরিষ্কারভাবে বলেন যে, কংগ্রেস স্বতন্ত্র বাংলা রাষ্ট্রকে পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ সংযোজনা হিসেবে গণ্য করবে।

    সর্দার প্যাটেল অবিভক্ত বাংলার উদ্যোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগঠিত করার প্রস্তাব দেন। ১৯৪৭-এর এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে বাংলার প্রভাবশালী হিন্দু নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ থেকে বোঝা যায়, হিন্দুদের বাংলা বিভক্তির দাবির নেপথ্যে তার নির্দেশক ভূমিকা ছিল এবং সেসঙ্গে সার্বভৌম বাংলা ধারণার বিপক্ষে তার উগ্র মনোভাবের কথাও জানা যায়। বাংলার যেসব হিন্দু নেতা ওই প্রদেশের মুসলিম লীগ নেতাদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনায় সংশ্লিষ্ট ছিলেন প্যাটেল তাদের নিন্দা করেন। উল্লিখিত নিরীক্ষামূলক চুক্তির শর্তগুলির ব্যাপারে মুসলিম লীগ হাই কমান্ডের দৃষ্টিভঙ্গিও খুব একটা অনুকূল ছিল না। এ বিষয়ে প্রথম দিকে জিন্নাহ কংগ্রেস হাইকমান্ডের মতো ঘোর বিরোধী ছিলেন না। এর থেকে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় যে, তিনি এ পরিকল্পনাকে উৎসাহিত করেছিলেন।

    মাউন্টব্যাটেনের মতে, ভারতকে বিভক্ত করতে হলে পাঞ্জাব ও বাংলাকে ভাগ করতে হবে। তিনি এর পক্ষে যুক্তিও দেখিয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে, জিন্নাহ গোড়ার দিকে স্বাধীন অবিভক্ত বাংলার প্রস্তাবে সম্মতি দিতেও আগ্রহী ছিলেন। তার প্রধান বিবেচ্য বিষয় ছিল বাংলার বিভক্তি এড়ানো। তাতে করে স্বাধীন বাংলা ও পাকিস্তানের মধ্যে ভবিষ্যতে একটা মৈত্রী গড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিধায় তার এ সম্মতি ছিল গৌণ বিকল্প। তবুও শেষাবধি তিনি এ ইস্যুর অনুকূলে মনস্থির করতে পারেন নি। সম্ভবত তিনি এ ধারণার আলোকেই উল্লিখিত উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন যে, এটি পাকিস্তান সম্পর্কিত বিশ্বাস থেকে বিচ্যুতি। তিনি উল্লিখিত পরীক্ষামূলক চুক্তিতে যে যুক্ত নির্বাচনের বিষয় সন্নিবেশিত রয়েছে সে বিষয়ে কোনো রেয়াত দিতে তৈরি ছিলেন না। বাংলার প্রধানমন্ত্রী আন্তরিকভাবে মনে করেছিলেন, বাংলা প্রদেশে একটি কোয়ালিশন মন্ত্রিসভা গঠিত হলে তা হবে বাংলার হিন্দু ও মুসলমানদেরকে আরও ঘনিষ্ঠতর করার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আর তাতে একই সঙ্গে এ প্রদেশের বিভক্তিও রোধ করা যাবে। কিন্তু জিন্নাহ কখনও বিষয়টিকে ততখানি জরুরি বলে বিবেচনা করেন নি। বাংলায় কোয়ালিশন মন্ত্রিসভা প্রশ্নে তার ভেটো সোহরাওয়ার্দী-বসু ফর্মুলার জন্য অতীব গুরুতর বলেই প্রমাণিত হয়।

    ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ সার্বভৌম স্বাধীন অবিভক্ত বাংলা ধারণার প্রতি সর্বাত্মকভাবে বৈরী ছিলেন এমন নয়। বাংলার তৎকালীন গভর্নর ফ্রেডারিক বারোজ প্রদেশটির আদৌ বিভক্তির পক্ষপাতী ছিলেন না। তিনি বরং সোহরাওয়ার্দী-বসু ফর্মুলার পক্ষপাতী ছিলেন এবং তা যাতে বাস্তবায়িত হয় সে জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টাও করেন। ভাইসরয়ও ভারত ও পাকিস্তানের ডোমিনিয়ন মর্যাদার সঙ্গে অবিভক্ত বাংলাকেও ওই একই মর্যাদা দিতে অনিচ্ছুক ছিলেন না। তিনি সোহরাওয়ার্দীকে এ মর্মে আশ্বাস দেন যে, লীগ ও কংগ্রেস হাইকমান্ড অনুমোদন করলে বাংলা নিয়ে যেকোনো নিস্পত্তি ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ মেনে নেবে। তবে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষকে সর্বভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এ প্রশ্ন বিবেচনা করতে হবে। তারা মাত্র একটি প্রদেশের স্বার্থের জন্য গোটা ভারতের নিরাপত্তার প্রশ্নে রফা করতে আগ্রহী ছিলেন না। তাই এ পরিকল্পনা যে ব্যর্থ হবে তা ছিল প্রায় পূর্বনির্ধারিত। এরপর কংগ্রেস ও লীগ হাইকমান্ড ভারত বিভক্তি এবং ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি ডোমিনিয়নের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা (১৯৪৭ সালের ৩ জুন) গ্রহণ করায় অবিভক্ত বাংলা ধারণার ওপর চূড়ান্ত আঘাত আসে।[৬]

  • নৃপেন্দ্র নারায়ণ

    নৃপেন্দ্র নারায়ণ

    নৃপেন্দ্র নারায়ণ (৪ই অক্টোবর ১৮৬২ – ১৮ই সেপ্টেম্বর, ১৯১১) ভারতের কোচবিহারের রাজতান্ত্রিক রাজ্যের ১৮৬৩ থেকে ১৯১১ সাল পর্যন্ত মহারাজা ছিলেন। [১][২]

    প্রারম্ভিক জীবন

    নৃপেন্দ্র নারায়ণ যখন দশ মাস বয়স ছিল তখন তার পিতা নরেন্দ্র নারায়ণ ১৮৬৩ সালে মারা যান। তিনি একই বছরেই রাজা হিসেবে রাজতন্ত্র পালন করেছিলেন। যেহেতু তিনি শিশু ছিলেন সেহেতু প্রশাসন ব্রিটিশ গভর্নর জেনারেল নিযুক্ত করে কমিশনারের কাছে হস্তান্তর করেন।[৩] তার বড় ভাই চিত্ররঞ্জন এবং রূপনারায়ণপুরের রাজা, তাদের পূর্বপুরুষদের জমি ছিলো।[৩] তিনি বেনারসে ওয়ার্ডস ইন্সটিটিউট এ অধ্যয়ন করেন, তারপরে বাঁকিপুর কলেজ, পাটনা এবং শেষপর্যন্ত কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে, আইন নিয়ে অধ্যয়ন করেন। ১৮৭৮ সালে তিনি কলকাতার কেশবচন্দ্র সেনের কন্যা সুনীতি দেবীকে বিয়ে করেন। বিয়ের অবিলম্ব পর তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে চলে যান।[৩]

    কোচবিহার শহরে নৃপেন্দ্র নারায়ণ এর মূর্তি।

    নৃপেন্দ্র নারায়ণ

    পরিবার

    তিনি চার পুত্র ও তিন কন্যার পিতা ছিলেন নামগুলি হল- রাজেন্দ্র নারায়ণ, জিতেন্দ্র নারায়ণ, ভিক্টর নৃত্যেন্দ্র নারায়ণ, হিতেন্দ্র নারায়ণ এবং কন্যা প্রতিভা দেবী, সুধীরা দেবী এবং সুকৃতি দেবী।[৪][৫] পরে তার পুত্র রাজেন্দ্র নারায়ণজিতেন্দ্র নারায়ণ পরে কুচবিহারের মহারাজা হন। গায়ত্রী দেবী ও ইলা দেবী তার পুত্র জিতেন্দ্র নারায়ণের মেয়ে।

    মৃত্যু

    নৃপেন্দ্র নারায়ণ ১৯১১ সালের সেপ্টেম্বরে ইংরেজ উপকূলীয়বর্তী অঞ্চল বেক্সহিল্ল সাগরে মৃত্যু হয়। তার শেষ কৃত্যকার্য ২১শে সেপ্টেম্বর, ১৯১১ বেক্সহিল্ল এ সম্পন্ন হয়। মহারাজা বেক্সহিল্ল এসেছিলেন আরোগ্য লাভ করার জন্য পরে মুর হল, নিনফিল্ড ছেড়ে চলে যায়। তার এক মেয়ে সম্প্রতি নিমজ্জিত হয়ে ছিল। ১৮ই সেপ্টেম্বর ১৯১৩ সালে তার দ্বিতীয় পুত্র মহারাজা কুমার জিতেন্দ্র দ্বারা নৃপেন্দ্রর নামে উত্সর্গীকৃত একটি স্মারক পানীয় শাখা খোলা হয় (জিতেন্দ্র এর বড় ভাই রাজেন্দ্রের মৃত্যুর পর কোচ বিহারের সিংহাসনে বসেন)। ডে লা ওয়ার প্যাভিলিয়নের বর্তমান অবস্থানে ফোয়ারাটি মূলত কোস্টগার্ডদের কুঠিরের পাশে ছিল। ১৯৩৪ সালে যখন প্যাভিলিয়নের পথ তৈরির জন্য কুঠিরটি ধ্বংস করা হয়, তখন ইগার্টন পার্কের দুর্গটি পুনরায় তৈরি হয়। এটি বেক্সহিল্ল জাদুঘর থেকে পাশের পার্কের প্রবেশের কাছে দাঁড়িয়ে ছিল ১৯৬৩ সালে এটি পুনঃস্থাপন জন্য অপসারিত করা হয়। এটি এক সময়ের জন্য বেক্সহিল্ল সমাধিটিকে সংরক্ষণ করা হয়েছিল কিন্তু তারপর পরে অদৃশ্য হয়ে যায়। তার বর্তমান অবস্থান অজানা।[৬]

    বেক্সহিল্ল সাগরের ঐতিহাসিক সমাজ বেক্সহিল্লের সাথে নৃপেন্দ্রর সংযোগ সংক্ষিপ্ত বিবরণ “বেক্সহিল্ল মহারাজা” একটি বই প্রকাশ করে ছিল।

    কর্মজীবন

    কোচবিহার রাজপ্রাসাদ

    আরও দেখুন: Cooch Behar PalaceSuniti Academy

    তিনি ১৮৮৪ সালে একটি আইন প্রবর্তন করেন তার রাজ্যে ক্রীতদাস প্রথা নিষিদ্ধ করেছিলেন। ১৮৮৮ সালে তিনি তার নিজের রাজ্যে উচ্চতর শিক্ষার উন্নয়নের জন্য ভিক্টোরিয়া কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন যা বর্তমানে এ.বি.এন.শীল কলেজ নামে পরিচিত। এছাড়াও, তার রানী, সুনীতি দেবীর নামে, একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন যা সুনীতি কলেজ নামে নামকরণ করা হয় পরে ১৮৮১ সালে সুনীতি একাডেমী নামে পরিচিত।১৮৮৩ সালে তিনি জলপাইগুড়ি শহরে নৃপেন্দ্র নারায়ণ হল নির্মাণ করেন এবং ১৮৮৭ সালে দার্জিলিংয়ে লেইস জুবিলি স্যানিটিয়ারিয়াম নির্মাণের জন্য জমি প্রদান করেন।[৪] তিনি ১৮৮২ সালে কলকাতায় ইন্ডিয়া ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন।[৭] তিনি ১৮৮৯ সালে কোচবিহারে দরিদ্রদের জন্য বিনামূল্যে খাবার বিতরণের জন্য আনন্দময়ী ধর্মসালা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ১৮৯২ সালে কোচবিহারে নৃপেন্দ্র নারায়ণ পার্ক বোটানিক্যাল গার্ডেন প্রতিষ্ঠিত করেন।[৮] তিনি ১৯০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত কলকাতা ক্লাবের প্রথম সভাপতি ছিলেন।

    মহারাজা ছিলেন ক্রিকেটে একজন উদ্যমশীল ব্যক্তি এবং কোচবিহার দলকে উন্নতি করেন এবং সারা পৃথিবীর শীর্ষ মানের খেলোয়াড়দের আমন্ত্রণ জানায়। কোচবিহারের প্রাসাদে তিনি একটি ক্রিকেট মাঠ স্থাপন করেন এবং কলকাতার আলিপুরে একটি মাঠ উন্নতি করেন। তার দল এবং নাটোর মহারাজার দল বাংলায় ক্রিকেটে প্রতিপক্ষ ছিল।[৯]

    শিরোনাম এবং শৈলী

    শিরোনাম

    ১৮৮৭ – কুইন ভিক্টোরিয়া জয়ন্তী উদ্‌যাপন উপলক্ষে তিনি ভারতের সাম্রাজ্যের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আদেশ গ্র্যান্ড কমান্ডার

    শৈলী

    লেফটেন্যান্ট-কর্নেল তাঁর রাজরাজাদের মর্যাদাসূচক আখ্যাবিশেষ মহারাজা স্যার নৃপেন্দ্র নারায়ণ ভূপ বাহাদুর, জিসিআইই, সিবি

    সম্মাননা

    স্মৃতি

    নৃপেন্দ্র নারায়ণ মেমোরিয়াল হাই স্কুল তার নামকরণ করা হয়,যা তার পুত্র মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ণ ১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত করেন।

    রাজনৈতিক দপ্তর
    পূর্বসূরী
    মহারাজা নরেন্দ্র নারায়ণ ভূপ বাহাদুর
    মহারাজা কোচবিহার
    ১৮৬৩ – ১৯১১
    উত্তরসূরী
    মহারাজা রাজেন্দ্র নারায়ণ ২
  • টোটেমবাদ

    টোটেমবাদ

    টোটেমবাদ হল মানুষ এবং প্রকৃতির মধ্যে সম্পর্কগত একধরনের বিশ্বাস। ‘টোটেম’ শব্দটির অর্থ “আমার এক আত্মীয়”। আমেরিকা, আফ্রিকাঅস্ট্রেলিয়ার আদিম অধিবাসীদের মধ্যে এর বিবরণ পাওয়া গেছে। জাতিগত গোষ্ঠীগুলির মধ্যে গবেষণার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাধারণত, কোন একটি স্বজাতির গোষ্ঠীর টোটেম একটি প্রাণী বা গাছ হয়ে থাকে। এগুলোকে তাদের কোন পবিত্র বস্তু হতে হয় এবং কেবলমাত্র তাদেরই অধিকারভুক্ত হতে হয়।[১][২][৩][৪][৫]

    টোটেমবাদ

    উত্তর আমেরিকা

    উত্তর আমেরিকার টোটেম পোলসমূহ

    ধর্মের নৃবিজ্ঞান
    বিষয়ে ধারাবাহিকের একটি অংশ
    A totem pole in Ottawa, Ontario, Canada
    মৌলিক ধারণাসমূহপরকাল Animism Bora Communitas Comparative religion Divination Divine language Evolutionary origin of religions Fetishism Great Spirit Henotheism Initiation Liminality Magic Mana একেশ্বরবাদ Polytheism Transtheism Revitalization movement Rite of passage Ritual Sacred language Sacred–profane dichotomy Shamanism Theories about religions Totem Veneration of the dead
    ঘটনা অধ্যয়ন
    সংশ্লিষ্ট নিবন্ধসমূহ
    মূখ্য তাত্ত্বিকবৃন্দ
    গবেষণা জার্নালসমূহ
    ধর্মসমূহ
    সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান
  • উইকিপিডিয়া:উইকিপ্রকল্প সমাজবিজ্ঞানী

    উইকিপিডিয়া:উইকিপ্রকল্প সমাজবিজ্ঞানী

    তালিকা

    উইকিপিডিয়া:উইকিপ্রকল্প সমাজবিজ্ঞানী

    • Jane Addams
    • Theodor Wiesengrund Adorno
    • Louis Althusser
    • Annales school
    • Robert Ardrey
    • Raymond Aron
    • Gaston Bachelard
    • Emily Greene Balch
    • Chester I. Barnard
    • Ruth Fulton Benedict
    • Walter Benjamin
    • Jeremy Bentham
    • Eduard Bernstein
    • Wilfred Bion
    • Marc Bloch
    • Herbert Blumer
    • Franz Boas
    • John E. Bowlby
    • Fernand Braudel
    • Ernest W. Burgess
  • গণবিধ্বংসী অস্ত্র

    গণবিধ্বংসী অস্ত্র

    গণবিধ্বংসী অস্ত্র বা গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্র (ইংরেজি ভাষায়: Weapon of mass destruction – WMD) বলতে এমন যেকোনও অস্ত্রকে বোঝায় যা অনেক মানুষকে একসাথে মেরে ফেলার ক্ষমতা রাখে, যা মনুষ্য নির্মিত (দালান) বা প্রাকৃতিক (পাহাড়) কাঠামোর বিপুল ক্ষতি সাধন করে বা সাধারণভাবে জীবমণ্ডলের বিশাল ক্ষতির কারণ হয়। বিভিন্ন ধরনের অনেক অস্ত্র এই শ্রেণীর মধ্যে পড়ে।

    গণবিধ্বংসী অস্ত্র

    চিহ্ন

    চিহ্নইউনিকোডছবি
    বিষাক্ত প্রতীকU+2620
    তেজস্ক্রিয় প্রতীকU+2622
    জৈববিপদ প্রতীকU+2623
    রাসায়নিক যুদ্ধাবস্থা প্রতীকN/AN/A
  • অভিযান

    অভিযান

    অভিযান বলতে বোঝায় কোন তথ্য বা সংস্থান আবিষ্কারের উদ্দেশ্যে অনুসন্ধান করাকে। মানুষ সহ সকল প্রকার প্রাণীরা অভিযান করে থাকে। মানব ইতিহাসে, এর নাটকীয় উত্থান আবিষ্কারের যুগে ঘটেছিল যখন ইউরোপীয় অভিযাত্রীরা বিভিন্ন কারণে বিশ্বের বাকি অংশ যাত্রা করেছিলেন। সেই থেকে আবিষ্কারের যুগ পরবর্তী বড় অনুসন্ধানগুলি মূলত তথ্য অনুসন্ধানের উদ্দেশ্যেই ঘটেছিল।

    অভিযানকারী কাজিমিয়ের্য নোয়াক

    অভিযান

    মানব অনুসন্ধানের উল্লেখযোগ্য সময়কাল

    ফিনিশিয়ান গ্যালির নৌযান

    ফিনিশিয়ানরা (খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ – খ্রিস্টপূর্ব ৩০০) ভূমধ্যসাগর এবং আনাতুলিয়া জুড়ে ব্যবসা করত যদিও তাদের বেশিরভাগ ভ্রমণপথ আজও অজানা। কিছু ফিনিশিয়ান নিদর্শনগুলিতে টিনের উপস্থিতি বোঝায় যে তারা সম্ভবত ব্রিটেন ভ্রমণ করেছিলেন। ভার্জিলের আনিড এবং অন্যান্য প্রাচীন উৎস অনুসারে, কিংবদন্তি কুইন দিদো ছিলেন সোরের ফিনিশিয়ান যিনি উত্তর আফ্রিকায় যাত্রা করেছিলেন এবং কার্থেজ শহরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

    পশ্চিম আফ্রিকার কার্টেজিনান অভিযান

    হ্যানো নেভিগেটর (খ্রিস্টপূর্ব ৫০০), একজন কার্থাজেইন অভিযাত্রী যিনি আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে অভিযান করেছিলেন।

    উত্তর ইউরোপ এবং থুলিতে গ্রীক ও রোমানদের অভিযান

    মার্সেই, পাইথিয়াসের গ্রীক অভিযাত্রী (৩৮০ – খ্রিস্টপূর্ব ৩১০ খ্রিস্টাব্দ) সর্বপ্রথম গ্রেট ব্রিটেন, জার্মানিতে অভিযান চালিয়েছিলেন এবং থুলিতে পৌঁছেছিলেন (সাধারণভাবে যাকে শিটল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ বা আইসল্যান্ড বলে মনে করা হতো)।

    রোমান অভিযান

    আফ্রিকা অভিযান

    রোমানরা সাহারা মরুভূমি পার হওয়ার জন্য পাঁচটি বিভিন্ন পথ দিয়ে অভিযানের পরিকল্পনা করেছিল:

    এই সমস্ত অভিযানগুলি লিজিওনারিদের দ্বারা সমর্থিত এবং মূলত একটি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে সংঘটিত হয়েছিল। ৬২ খ্রিস্টাব্দে দুটি সেনাদল নীল নদের উৎস অনুসন্ধান করেছিলেন; সম্রাট নেরো কর্তৃক চালানো একমাত্র এই অভিযানটিকেই ইথিওপিয়া বা নুবিয়া বিজয়ের প্রস্তুতি বলে মনে হয়েছিল।

    অনুসন্ধানের মূল কারণগুলির মধ্যে একটি ছিল স্বর্ণ লাভ করে উটের মাধ্যমে তা পরিবহন করা।

    আফ্রিকার পশ্চিম এবং পূর্ব উপকূলের কাছাকাছি অভিযান রোমান জাহাজ দ্বারা সমর্থিত ছিল এবং নৌ বাণিজ্যগুলির সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত ছিল (মূলত ভারত মহাসাগরের দিকে)। রোমানরা উত্তর ইউরোপেও বিভিন্ন অভিযান চালিয়েছিল এবং এশিয়াতে চীন পর্যন্ত অভিযান করেছিল। খ্রিষ্টপূর্ব ৩০ অব্দ-৬৪০ খ্রিস্টাব্দ

    টলেমেক মিশর অধিগ্রহণের সময় রোমানরা ভারতের সাথে বাণিজ্য শুরু করে। সাম্রাজ্যটির এখন মশলা বাণিজ্যের সাথে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে যা মিশর খ্রিস্টপূর্ব ১১৮ অব্দের প্রথম দিকে শুরু করেছিল। ১০০ খ্রিস্টাব্দ-১৬৬ খ্রিস্টাব্দ

    এ সময়ে রোমান-চীনা সম্পর্ক শুরু হয়। টলেমি গোল্ডেন চেরোনাসি (অর্থাৎ মালয় উপদ্বীপ) এবং কাটিগারা বাণিজ্য বন্দরের কথা লিখেছেন, যা এখন উত্তর ভিয়েতনামের এসি ইও নামে পরিচিত। এটি চীনা হান সাম্রাজ্য এর একটি প্রদেশ জিয়াওঝোর অংশ।

    পলিনেশিয়ান যুগ

    অস্ট্রোনেশিয়ান

    পলিনেশিয়ানরা উপকূলবর্তী মানুষ ছিলেন, তারা নিউজিল্যান্ড আবিষ্কার করার সময় প্রায় ৫০০ বছর ধরে অভিযান চালানোর পর মধ্য ও দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরকে আবিষ্কার করেছিলেন। তাদের অভিযানের মূল আবিষ্কারটি ছিল আউটরিগার ক্যানো, যা মানুষ ও পণ্য পরিবহনের জন্য একটি দ্রুত এবং স্থিতিশীল মঞ্চে পরিণত হয়। ধারণা করা হয় যে, নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশ্যে করা ভ্রমণটি সুচিন্তিত ছিল।

    আচরণগত বৈশিষ্ট্য

    ২০১৫ সালের একটি গবেষণা , যা মোবাইল ফোনের ডেটা এবং ইতালির ব্যক্তিগত যানবাহনের জিপিএস ট্র্যাকার এর উপর ভিত্তি করে তৈরি করাহয়েছিল, তা প্রমাণিত করে যে, ব্যক্তিরা স্বাভাবিকভাবে তাদের গতিশীলতার অভ্যাস অনুসারে দুটি সু-সংজ্ঞায়িত বিভাগে বিভক্ত হয়ে যায়, যার মধ্যে একটি হলো “অভিযাত্রী” এবং অপরটি হলো “প্রত্যাবর্তনকারী”।

  • প্রবেশদ্বার:ইতিহাস

    প্রবেশদ্বার:ইতিহাস

    সম্পাদনা

    ইতিহাস প্রবেশদ্বার

    ইতিহাস হল সমাজ, সভ্যতা ও মানুষের রেখে যাওয়া নিদর্শনের উপর গবেষণা ও সেখান থেকে অতীত সম্পর্কের সিদ্ধান্ত ও শিক্ষা নেবার শাস্ত্র। ইতিহাস সন্ধিবিচ্ছেদ করলে হয় ইতি হ আস, এই রকম ছিল। বাংলা ইতিহাস শব্দটির ইংরেজি পরিভাষা হচ্ছে হিস্টোরি। গ্রীক শব্দ হিস্টোরিয়া থেকেই এই হিস্টোরি শব্দটির উৎপত্তি। যার অর্থ কোন কিছু কারন সন্ধান। ইংরেজি শব্দ স্টোরি থেকে এই শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত কারন সন্ধান পাওয়া যায়। ১৯১১ সালের এনস্লাইকোপেডিয়া ব্রিটানিকাতে প্রকাশিত সংজ্ঞা মতে, ইতিহাস হল ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী, যাতে মানবজীবনে ঘটে যাওয়া সব বিষয়ই শুধু নয় প্রকৃতির ঘটনাবলীও অন্তর্ভুক্ত। সব কিছুই পরিবর্তিত হয় এং আধুনিক বিজ্ঞান দেখায় যে, কিছুই পরম নয়। ফলে, সমগ্র মহাবিশ্ব ও এর সকল অংশেরই ইতিহাস বিদ্যমান। বিস্তারিত…

    সম্পাদনা

    নির্বাচিত নিবন্ধ

    প্রবেশদ্বার:ইতিহাস

    মহামতি আলেকজান্ডার

    মহামতি আলেকজান্ডার (Alexander the great) (জন্ম – জুলাই খ্রিস্টপূর্ব ৩৫৬, মৃত্যু জুন ১১, খ্রিস্টপূর্ব ৩২৩)পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম সফল সামরিক প্রধান। তিনি তৃতীয় আলেকজান্ডার বা মেসিডনের রাজা হিসেবেও পরিচিত। তিনি ছিলেন মেসিডোনিয়ার শাসনকর্তা। মেসিডোনিয়া বর্তমান গ্রীসের অন্তর্গত একটি অঞ্চল। তার পিতা ফিলিপ ছিলেন মেসিডোনিয়ার রাজা। তার মৃত্যুর পূর্বে তিনি পরিচিত পৃথিবীর বেশির ভাগ জয় (টলেমির মানচিত্র অনুযায়ী) করেছিলেন। আলেকজান্ডার তার সামরিক কৌশল ও পদ্ধতির জন্য বিশ্ব বিখ্যাত। তিনি পারস্যে অভিশপ্ত আলেকজান্ডার নামেও পরিচিত, কারন তিনি পারস্য সাম্রাজ্য জয় করেন এবং এর রাজধানী পারসেপলিস ধ্বংস করেন। তিনি ফার্সি ভাষায় “ইস্কান্দর, মধ্য পশ্চিমা স্থানে যুল-কারনাইন, আরবে আল-ইস্কান্দার আল কাবের”, উর্দুতে সিকান্দার-এ-আজম, পস্তুতে স্কান্দর, হিব্রুতে “আলেকজান্ডার মোকদন, আরমেনিয়ানয়ে ট্রে-কারনাইয়া”। তার এজাতীয় কিছু নামের অর্থ “দুই শিং বিশিষ্ট” (যুল-কারনাইন, ট্রে-কারনাইয়া), আবার উর্দু ও হিন্দিতে সিকান্দার যার অর্থ পারদর্শি” বা অত্যন্ত পারদর্শি।

    আলেকজান্ডারের পিতা দ্বিতীয় ফিলিপ তার শাসনামলে গ্রিসের নগর রাষ্ট্রগুলোকে নিজের শাসনাধীনে আনেন। আলজান্ডার নিজেও এই নগররাষ্ট্র গুলিকে একত্রিত করতে অভিযান চালান কারন ফিলিপের মৃত্যুর পর এগুলো বিদ্রোহ করেছিল। এরপর আলেকজান্ডার একে একে পারস্য, আনাতোলিয়া, সিরিয়া, ফোনিসিয়া, জুডিয়া, গাজা, মিশর, ব্যাক্ট্রিয়া এবং মেসোপটেমিয়া জয় করেন। তার সাম্রাজ্য মেসিডোনিয়া থেকে পাঞ্জাব পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। পিতার মৃত্যুর পর আলেকজান্ডার পশ্চিমে অভিযান চালান ইউরোপ জয় করার জন্য। এরপর তিনি পূর্বে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করেন, কারন শৈশবে তার শিক্ষক বিশ্ববিখ্যাত দার্শনিক, বিজ্ঞানী এরিস্টোটল তাকে বলেছিলেন কোথায় ভূমি শেষ হয় এবং মহাসাগর শুরু হয়। আলেকজান্ডার তার সেনাবাহিনী ও প্রশাসনে বিদেশী (বিশেষ করে যারা গ্রিক বা মেসিডোনিয়ান নয়) ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করেন। এর মধ্যে কিছু জ্ঞানী ব্যক্তি তাকে “একত্রিকরণ”-এর ব্যাপারে ধারণা দেয়। তিনি তার সেনাবাহিনীতে বিদেশীদের সাথে বিবাহ উৎসাহিত করেন এবং নিজেও বিদেশী মেয়েদের বিয়ে করেন। প্রায় ১২ বছরের সামরিক অভিযানের পর আলেকজান্ডার মৃত্যু বরণ করেন। ধারণা করা হয় হয়ত তিনি ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড অথবা ভাইরাল এনকেফালাইটিস্‌ এর আক্রান্ত হয়ে মারা যান। হেলেনেস্টিক যুগে তার অভিযানের কাহিনী লোকের মুখে মুখে প্রচলিত ছিল। আলেকজান্ডারের অভিযানের ফলে বিভিন্ন সভ্যতার মিলন ঘটে (মিশর, গ্রিক, পারস্য, ভারতীয়) এক নতুন সভ্যতার শুরু হয়। এই সভ্যতাই হেলেনেস্টিক সভ্যতা। গ্রিক ও গ্রিসের বাইরের বিভিন্ন সভ্যতায় আলেকজান্ডার ইতিহাসে, সাহিত্যে, পুরাণে জীবিত হয়ে আছেন। … … … আরও জানুন

    পরামর্শসংগ্রহশালা

    সম্পাদনা

    নির্বাচিত চিত্র

    সম্রাট আকবর

    মুঘল সম্রাট আকবর এই সাম্রাজ্যের তৃতীয় এবং সর্বশ্রেষ্ট্র সম্রাট। পিতা সম্রাট হুমায়ুনের মৃত্যুর পর ১৫৫৬ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে আকবর ভারতের শাসনভার গ্রহণ করেণ। … … … আরো জানুন

    পরামর্শসংগ্রহশালা

    সম্পাদনা

    আপনি জানেন কি…

    এরিস্টোটল

    • … ভারতের শেষ স্বাধীন মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর … … …
    • … … …ঘসেটি বেগমকে অর্ধেক পুতে হত্যা করা হয়েছিলো…

    সম্পাদনা

    ইতিহাস উপপ্রবেশদ্বার

    প্রত্নতত্ত্বপ্রাচীন সভ্যতা
    মিশরীয় ইতিহাসপ্রাচীন জার্মানিক সংস্কৃতি
    বিজ্ঞানের ইতিহাসযুদ্ধ
    প্রাচীন রোমপ্রাচীন রোমের সামরিক বাহিনী
    প্রাচীন গ্রিসবাইজান্টাইন সাম্রাজ্য
    ত্রুটি:চিত্রটি সঠিক নয় অথবা চিত্রটি নাই
    মধ্যযুগক্রুসেডস
    ইসলামের ইতিহাসবাংলাদেশের ইতিহাস
    বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধআমেরিকার গৃহযুদ্ধ
    মুসলিম সাম্রাজ্যউসমানীয় সাম্রাজ্য

    সম্পাদনা

    উইকিপ্রকল্প

    সম্পাদনা

    আপনি কি করতে পারেন

    • বিভিন্ন প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস নিয়ে কাজ করতে পারেন।
    • বাংলাদেশ ও বাঙালির ইতিহাস নিয়ে কাজ করতে পারেন।
    • ঐতিহাসিক ঘটনা নিয়ে লিখতে পারেন।
    • বিভিন্ন দেশের ইতিহাস নিয়ে লিখতে পারেন।
    • বিভিন্ন আবিস্কারের ইতিহাস নিয়ে লিখতে পারেন।

    সম্পাদনা

    বিষয়শ্রেণী

    ইতিহাসবাংলাদেশের ইতিহাসপ্রাচীন ইতিহাসসভ্যতযুদ্ধপ্রাচীন সভ্যতাএশিয়ার ইতিহাসইসলামের ইতিহাসহিন্দুধর্মের ইতিহাসঐতিহাসিকবিজ্ঞানের ইতিহাসভারতের ইতিহাসইউরোপের ইতিহাস

    সম্পাদনা

    সম্পর্কিত উইকিমিডিয়া

    উইকিউক্তিতে ইতিহাস
    উক্তি
    কমন্‌সে ইতিহাস
    চিত্র
    উইকিউৎসে ইতিহাস
    লেখা
    উইকিবইয়ে ইতিহাস
    সারগ্রন্থ এবং লেখা

    সার্ভার ক্যাশ খালি করুন

    বিষয়শ্রেণীসমূহ:

  • ইতিহাস

    ইতিহাস

    ইতিহাস[ক] হলো অতীত বৃত্তান্ত বা কালানুক্রমিক অতীত কাহিনি ও কার্যাবলির লিখন, বিশ্লেষণ ও অধ্যয়ন।[২][৩][৪][৫] তবে কোনো কোনো দার্শনিক (যেমন- বেনেদেত্তো ক্রোচে) মনে করেন, যে ইতিহাস হলো বর্তমান, কারণ অতীত ঘটনাগুলোই বর্তমানে “ইতিহাস” হিসাবে অধ্যয়ন করা হয়।[৬] বৃহৎ একটি বিষয় হওয়া সত্ত্বেও এটি কখনো মানবিক বিজ্ঞান এবং কখনো বা সামাজিক বিজ্ঞানের একটি শাখা হিসেবে আলোচিত হয়েছে। অনেকেই ইতিহাসকে মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞানের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন হিসেবে দেখেন। কারণ ইতিহাসে এই উভয়বিধ শাস্ত্র থেকেই পদ্ধতিগত সাহায্য ও বিভিন্ন উপাদান নেওয়া হয়। ইতিহাসের উদ্দেশ্য হলো বর্তমানের সাথে অতীতকে প্রাসঙ্গিক করে তোলা।[৬]

    ইতিহাস

    একটি শাস্ত্র হিসেবে ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করতে গেলে অনেকগুলো উপবিভাগের নাম চলে আসে, তার মধ্যে রয়েছে দিনপঞ্জি, ইতিহাস লিখন, কুলজি শাস্ত্র, প্যালিওগ্রাফি, ক্লায়োমেট্রিক্স ইত্যাদি। স্বাভাবিক প্রথা অনুসারে, ইতিহাসবেত্তাগণ ইতিহাসের লিখিত উপাদানের মাধ্যমে বিভিন্ন ঐতিহাসিক প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেন, যদিও কেবল লিখিত উপাদান হতে ইতিহাসে সকল তত্ত্ব উদ্ধার করা সম্ভব নয়। ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে যে উৎসগুলো বিবেচনা করা হয়, সেগুলোকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়– লিখিত, মৌখিক ও শারীরিক বা প্রত্যক্ষকরণ। ইতিহাসবেত্তারা সাধারণত তিনটি উৎসই বিশ্লেষণ করে দেখেন। তবে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে লিখিত উপাদান সর্বজনস্বীকৃত। এই উৎসটির সাথে লিখন পদ্ধতির ইতিহাস অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত। হেরোডোটাসকে ইতিহাসের জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

    শব্দের উৎপত্তি

    ইংরেজি “হিস্টরি” (History) শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ হিসেবে “ইতিহাস” শব্দটি এসেছে। ইংরেজি History শব্দটি এসেছে গ্রিকলাতিন শব্দ ἱστορία – Historia থেকে, যার অর্থ সত্যানুসন্ধান বা গবেষণা। ইতিহাসের জনক হিসেবে খ্যাত গ্রিসের হেরোডোটাস তাঁর গ্রিক ও পারসিকদের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষের ঘটনাসম্বলিত গ্রন্থের নামকরণ করেন Historia (যার ইংরেজি অনুবাদ করা হয়েছে “Histories”)। মূলত ঘটনার অনুসন্ধান অর্থে হেরোডোটাস Historia শব্দটি ব্যবহার করেন।

    বাংলা ভাষায় “ইতিহাস” শব্দটি এসেছে ‘ইতিহ’ শব্দমূল থেকে, যার অর্থ ঐতিহ্য। এটি হলো একটি তৎসম শব্দ, অর্থাৎ সংস্কৃত ভাষা থেকে আগত। ইতিহাস শব্দটির রূপতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায়- ইতহ + √অস্ + অ – যার অর্থ হলো “এমনটিই ছিল বা এমনটিই ঘটেছিল।”

    লিখনধারা

    রাজমালা, ১৫-১৬ শতকে বাংলা পদ্যে লিখিত ত্রিপুরার ইতিহাস-বিষয়ক একটি গ্রন্থ, যা বাংলা ভাষায় ইতিহাস লিখনের প্রারম্ভিক নমুনাগুলোর একটি।

    মূল নিবন্ধ: ইতিহাস লিখনধারা

    ইতিহাস লিখনধারার সম্পর্কিত বেশ কিছু অর্থ রয়েছে। প্রথমত, এটি দিয়ে বুঝানো হয় কীভাবে ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে, যেমন- পদ্ধতি ও অনুশীলনের বিকাশের গল্প। দ্বিতীয়ত, এটি বুঝায় কী সৃষ্টি করেছে, যেমন- ইতিহাস লিখনরীতির নির্দিষ্ট বিষয়। তৃতীয়ত, এটি দিয়ে বুঝানো হয় কীভাবে ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে, যেমন- ইতিহাসের দর্শন। অতীতের বর্ণনার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তৃতীয় ধারণাটি প্রথম দুটি ধারণার সাথে সম্পর্কযুক্ত করা যায়, যা মূলত বর্ণনা, ব্যাখ্যা, বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ, সাক্ষ্য বা প্রমাণের ব্যবহার, বা অন্যান্য ইতিহাসবেত্তাদের উপস্থাপন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করে। ইতিহাস কি একক বর্ণনা নাকি ধারাবাহিক বর্ণনা হিসেবে শিখানো হবে তা নিয়ে পেশাদারী ইতিহাসবেত্তাদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে।[৭][৮]

    দর্শন

    আলেকজেন্দ্রিয়ার প্রাচীন গ্রন্থাগারের একটি চিত্র

    মূল নিবন্ধ: ইতিহাসের দর্শন

    ইতিহাসের দর্শন হলো দর্শনের একটি শাখা যেখানে ঘটনাবলির গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়, বিশেষ করে মানবীয় ইতিহাস।[৯] এছাড়া এই শাখায় এর বিকাশের সম্ভাব্য পরমকারণমূলক সমাপ্তির কথা বিবেচনা করা হয়, যেমন- মানবীয় ইতিহাসের পদ্ধতিতে কোনো নকশা, কারণ, নীতি, বা সমাপ্তি রয়েছে কিনা। ইতিহাসের দর্শনকে ইতিহাস লিখনধারার সাথে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়। ইতিহাস লিখনধারায় ইতিহাসের পদ্ধতি ও অনুশীলন এবং ইতিহাসকে একটি নির্দিষ্ট প্রাতিষ্ঠানিক বিষয় হিসেবে এর বিকাশের উপর জোড় দেওয়া হয়।[১০] আবার ইতিহাসের দর্শনকে দর্শনের ইতিহাসের সাথে গুলিয়ে ফেলা যাবে না, কারণ দর্শনের ইতিহাস হলো একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে দর্শনের ধারণাসমূহের বিকাশ নিয়ে অধ্যয়ন।

    অধ্যয়নের ক্ষেত্র

    যুগ নির্ধারণ

    ইতিহাস এক নির্দিষ্ট সময়ে ঘটা ঘটনাবলি ও উন্নয়নকে কেন্দ্র করে লিখিত হয়। ইতিহাসবেত্তাগণ সেই সময় বা যুগকে একটি নির্দিষ্ট নাম দিয়ে চিহ্নিত করেন।[১১] ভৌগোলিক অবস্থানের উপর নির্ভর করে এই নামসমূহ ভিন্ন হতে পারে, যেমন- সেই যুগের শুরুর সময় ও সমাপ্তির সময়। শতাব্দীদশক হলো বহুল ব্যবহৃত যুগ নির্দেশক এবং কালপঞ্জি অনুসারে এই যুগ নির্ধারিত হয়। বেশিরভাগ যুগ পূর্ববর্তী ঘটনার উপর নির্ভর করে নির্ধারিত হয় এবং এর ফলে এতে পূর্ববর্তী সময়ে ব্যবহৃত মৌলিক ধারণা ও বিচারবুদ্ধির প্রতিফলন দেখা যায়। যে পদ্ধতিতে যুগসমূহের নাম দেওয়া হয় তা এই যুগসমূহকে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হচ্ছে এবং কীভাবে অধ্যয়ন করা হচ্ছে তাকে প্রভাবিত করে।[১২]

    সময়কালভিত্তিক

    ভৌগোলিক অবস্থান

    নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অবস্থান, যেমন- মহাদেশ, দেশশহরও ইতিহাস অধ্যয়নের ক্ষেত্র। ঐতিহাসিক ঘটনাবলি কেন ঘটেছিল তা জানা গুরুত্বপূর্ণ। এই কারণ জানার জন্য ইতিহাসবেত্তাগণ ভূগোল অধ্যয়ন করে থাকেন।

    অঞ্চলভিত্তিক

    অর্থনৈতিক ইতিহাস

    মূল নিবন্ধসমূহ: অর্থনীতির ইতিহাসব্যবসার ইতিহাস

    যদিও অর্থনৈতিক ইতিহাস উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিক থেকে প্রতিষ্ঠা লাভ করে, বর্তমান সময়ে অর্থনীতি বিভাগে এই বিষয়ক প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রদান করা হয় এবং তা প্রথাগত ইতিহাস বিভাগ থেকে ভিন্ন।[১৩] ব্যবসায় তত্ত্বে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়িক কৌশল, সরকারি নিয়মকানুন, শ্রম বিভাগের সম্পর্কের ইতিহাস ও সমাজে এর প্রভাব বর্ণিত হয়। এছাড়া এতে নির্দিষ্ট কোম্পানি, নির্বাহী, ও উদ্যোক্তাদের জীবনী নিয়ে আলোচনা করা হয়। ব্যবসায় তত্ত্ব অর্থনৈতিক ইতিহাসের সাথে সম্পর্কিত এবং তা ব্যবসায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠ দান করা হয়।[১৪]

    ধর্মের ইতিহাস

    মূল নিবন্ধ: ধর্মের ইতিহাস

    ধর্মের ইতিহাস শতাব্দীকাল ধরে ধর্মবহির্ভূত ও ধার্মিক দুই শ্রেণির ইতিহাসবেত্তাদের কাছে প্রধান বিষয় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, এবং ধর্মীয় শিক্ষালয় ও সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে তা শিখানো হচ্ছে। এই ধরনের ইতিহাস বিষয়ক প্রধান সাময়িকীসমূহ হলো চার্চ হিস্টরি, দ্য ক্যাথলিক হিস্টরিক্যাল রিভিউ, এবং হিস্টরি অফ রিলিজিয়ন্স[১৫] সাধারণত এর বিষয়বস্তু হয়ে থাকে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও শৈল্পিক দিক, এমনকি ধর্মতত্ত্ব ও প্রার্থনার বিধিও। এই বিষয়ের অধীনে পৃথিবীর যে সকল অঞ্চল ও এলাকায় মানুষ বসবাস করেছে, সে সকল অঞ্চল ও এলাকার ধর্ম নিয়ে অধ্যয়ন করা হয়।[১৬]

    পরিবেশগত ইতিহাস

    মূল নিবন্ধ: পরিবেশগত ইতিহাস

    পরিবেশগত ইতিহাস হলো ইতিহাসের একটি নবীন ক্ষেত্র, যা ১৯৮০-এর দশকে বিকাশ লাভ করে। এতে পরিবেশের ইতিহাস এবং পরিবেশের উপর মানুষের কর্মকাণ্ডের প্রভাব নিয়ে আলোকপাত করা হয়।[১৭]

    বিশ্বের ইতিহাস

    মূল নিবন্ধ: বিশ্বের ইতিহাস

    বিশ্বের ইতিহাস হলো গত ৩০০০ বছর ধরে প্রধান প্রধান সভ্যতার বিকাশের অধ্যয়ন। বিশ্বের ইতিহাস মূলত শিক্ষার একটি ক্ষেত্র। বিষয়টি ১৯৮০-এর দশকের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র,[১৮] জাপান[১৯] ও অন্যান্য দেশে বিশ্বায়নের ফলশ্রুতিতে জনপ্রিয়তা লাভ করে।

    সংস্কৃতির ইতিহাস

    মূল নিবন্ধ: সাংস্কৃতিক ইতিহাস

    সংস্কৃতির ইতিহাস হলো সমাজে শিল্পকলা ও মানুষের চিত্র ও দৃশ্য ধারণার অধ্যয়ন। ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকে এটি সামাজিক ইতিহাসের স্থলাভিষিক্ত হয়। এটি মূলত নৃবিজ্ঞান ও ইতিহাসের সমন্বিত রূপ যেখানে ভাষা, জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক প্রথা ও ঐতিহাসিক ঘটনাবলির সাংস্কৃতিক ব্যাখ্যা প্রদান করে থাকে। এতে অতীতে মানুষের জ্ঞানচর্চা, প্রথা ও শিল্পের নথি ও বর্ণনা পরীক্ষা করা হয়। অতীতে মানুষ কীভাবে তাদের স্মৃতি ধরে রেখেছিল তা সাংস্কৃতিক ইতিহাসের আলোচনার প্রধান বিষয়।[২০]

    সেনাবাহিনীর ইতিহাস

    মূল নিবন্ধ: সেনাবাহিনীর ইতিহাস

    সেনাবাহিনীর ইতিহাস হলো যুদ্ধবিগ্রহ, যুদ্ধ কৌশল, যুদ্ধ, অস্ত্র ও যুদ্ধের মনস্তত্ত্ব বিষয়ক ধারণা। ১৯৭০-এর দশকের পর থেকে আবির্ভূত হওয়া নব্য সেনাবাহিনীর ইতিহাস সেনাপ্রধানদের চেয়ে সৈন্যদের প্রতি বেশি আলোকপাত করে, বিশেষ করে রণকৌশলের চেয়ে তাঁদের মনস্তত্ত্ব এবং সমাজ ও সংস্কৃতিতে যুদ্ধ বিগ্রহের বিরূপ প্রভাব নিয়ে আলোচনা করে।[২১]

    ইতিহাসবেত্তা

    বেনেদেত্তো ক্রোচে

    Ban Zhao, courtesy name Huiban, was the first known female Chinese historian.

    পান চাও, সৌজন্যমূলক নাম হুইপান, এখন পর্যন্ত জানতে পারা প্রথম চীনা ইতিহাসবেত্তা ছিলেন।

    মূল নিবন্ধ: ইতিহাসবিদ

    আরও দেখুন: ইতিহাসবেত্তাদের তালিকা

    পেশাদার ও অপেশাদার ইতিহাসবেত্তগণ পূর্ববর্তী ঘটনাবলি আবিষ্কার, সংগ্রহ, সংগঠিত ও উপস্থাপন করেন। তাঁরা প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ, পূর্বের লিখিত মৌলিক উৎস ও অন্যান্য উপায়ে, যেমন- স্থানের নামের তথ্য আবিষ্কার করেন। ইতিহাসবেত্তাদের তালিকায় ঐতিহাসিক যুগের কালক্রম অনুযায়ী তাদের বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়, বিশেষ করে তাদের ইতিহাস লেখার সময় অনুসারে কারণ তিনি যে সময়ে বর্তমান ছিলেন সেই সময়ের ইতিহাস না লিখে অন্য কোনো সময়ের ইতিহাস রচনায় বিশেষজ্ঞ হতে পারেন। কালনিরূপক ও আখ্যানকারগণ যদিও ইতিহাসবেত্তা নন, তবে কিছু ক্ষেত্রে তাঁদেরকেও ইতিহাসবেত্তাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে থাকে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

    ছদ্মইতিহাস

    মূল নিবন্ধ: ছদ্মইতিহাস

    ছদ্মইতিহাস হলো এমন লিখিত রূপ যার সারমর্ম ঐতিহাসিক প্রকৃতির, কিন্তু ইতিহাস লিখনধারার চিরাচরিত রূপ থেকে ভিন্ন এবং এতে পরিণতি ভিন্ন হয়ে থাকে। এটি ঐতিহাসিক নেতিবাচকতার সাথে সম্পৃক্ত এবং জাতীয়, রাজনৈতিক, সেনাবাহিনী ও ধর্ম বিষয়ে নতুন, কল্পনাপ্রসূত ও বিরোধপূর্ণ ঐতিহাসিক প্রমাণের মাধ্যমে উপসংহার টেনে থাকে।[২২]

    প্রাগৈতিহাস

    মূল নিবন্ধ: প্রাগৈতিহাস

    মানব সভ্যতার ইতিহাস প্রকৃতপক্ষে মানুষের বিকাশের ইতিহাস, কিন্তু প্রশ্নটি সবসময় বিতর্কিত ছিল যে আদিমানুষ ও তাঁদের সভ্যতা কখন ও কোথায় বিকশিত হয়েছিল। ইতিহাসের এই অধ্যয়নকে বলা হয় প্রাগৈতিহাস। অর্থাৎ ইতিহাসের আগের ইতিহাস। প্রাগৈতিহাসিক সময়ের মানবসভ্যতা চারটি ভাগে বিভক্ত-[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

    • আদিপ্রস্তর যুগ
    • প্রাথমিক প্রস্তর যুগ
    • প্রয়াত প্যালিওলিথিক যুগ
    • ধাতু সময়কাল

    প্রাচীনতম মানবসভ্যতা বিষয়ক অধ্যয়ন

    হাজার বছর বর্বরতা থেকে অর্ধসভ্যতা এবং অর্ধসভ্যতা থেকে সভ্যতার প্রথম স্তর পর্যন্ত আবৃত থাকে। কিন্তু পৃথিবীর কোন সময়ে, কীভাবে এই সভ্যতাগুলো বিকশিত হয়েছিল, সে সম্পর্কে আজও কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই। তবে এটা নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, প্রাচীন বিশ্বের সকল সভ্যতা নদীর উপত্যকায় উদ্ভূত এবং সমৃদ্ধ হয়েছিল। সুমেরীয় সভ্যতা, ব্যাবিলনীয় সভ্যতাঅ্যাসিরীয় সভ্যতা দজলাফুরাত নদী উপত্যকায়, নীলনদ উপত্যকায় প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা এবং সিন্ধু নদী উপত্যকায় সিন্ধু সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

    আরও দেখুন

    উদ্ধৃতি

    টীকা

    উচ্চারণ: ইতিহাশ[ɪt̪ɪˌɦaʃ]