ধর্ম ও যৌনতা বা যৌনতা সম্পর্কিত ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি (Religion and sexuality)আদিকাল থেকে মানুষের যৌনাদর্শ তথা যৌন নৈতিকতা গঠন এবং যৌনাচার নিরূপণে প্রধান ভূমিকা রেখে এসেছে।
প্রতিটি প্রধান ধর্ম যৌনতা, নৈতিকতা ও নীতিশাস্ত্র ইত্যাদি বিষয়ে নৈতিক সূত্রাবলী তৈরি করেছে। এই নৈতিক সূত্রাবলী এমন পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণ করতে চায় যেগুলি যৌন আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারে এবং জনগণের যৌন ক্রিয়াকলাপ এবং অভ্যাসগুলি প্রভাবিত করতে পারে।

সময়ের সাথে এবং সংস্কৃতির মধ্যে যৌন নৈতিকতা ব্যাপকভাবে পার্থক্য রয়েছে। একটি সমাজের যৌন মান- যৌন আচরণের মান-ধর্মীয় বিশ্বাস, বা সামাজিক ও পরিবেশগত অবস্থার সাথে যুক্ত হতে পারে, বা এই সমস্তগুলি। যৌনতা এবং প্রজনন বিশ্বব্যাপী মানুষের মিথস্ক্রিয়া এবং সমাজের মৌলিক উপাদান। উপরন্তু, “যৌন সীমাবদ্ধতা” সমস্ত মানব সমাজের জন্য অদ্ভুত সংস্কৃতির সর্বজনীন এক।[১][২] তদনুসারে, বেশিরভাগ ধর্ম মানুষের আচার-আচরণে যৌনতার জন্য একটি “যথাযথ” ভূমিকার প্রশ্নটি সমাধান করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে যৌন নিরপেক্ষতার বিভিন্ন কোড রয়েছে, যা যৌন কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে বা নির্দিষ্ট যৌন সংক্রামিত কর্ম বা চিন্তাধারার জন্য আদর্শ মান নির্ধারণ করে।
Religion and sexuality
ধর্ম এবং ধর্মবিশ্বাসীদের দৃষ্টিভঙ্গি বিস্তৃতভাবে লিঙ্গ ও যৌনতা থেকে একটি বিশ্বাসী বিশ্বাসের জন্য নেতিবাচক ধারণা প্রদান করে, যা ঐশ্বরিকের সর্বোচ্চ অভিব্যক্তি। কিছু ধর্ম জৈবিক প্রজনন (কখনও কখনও শুধুমাত্র যখন আনুষ্ঠানিক বৈবাহিক অবস্থা এবং একটি নির্দিষ্ট বয়সে) অনুমোদিত, এবং যৌন পরিতোষ জন্য চর্চা অন্যান্য কার্যকলাপ হিসাবে অভ্যাস হিসাবে অভ্যাসের জন্য অনুশীলন করা হয় যৌন কার্যকলাপ মধ্যে পার্থক্য।
ইসলামে যৌনতা

মূল নিবন্ধ: ইসলামী যৌন আইনশাস্ত্র
সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষের বিপরীত লিঙ্গের প্রতি প্রবল আকর্ষণ দেখা যায় যেটা আজও বিদ্যমান। প্রত্যেকেই বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করে। ইসলাম ধর্মে তা নিষেধ করা হয়নি। তবে এখানে বেশ কিছু নীতিমালা প্রদান করা হয়েছে। পশুদের মত যৌনকামনা পূরণ করার অধিকার দেওয়া হয়নি। এখানে বিবাহের ব্যবস্থা রয়েছে। বিবাহের মাধ্যমে একজন পুরুষ কোনো মহিলাকে অধিকার করতে পারবে। তবে এর জন্য উপহার স্বরূপ পুরুষের পক্ষ থেকে মহিলাকে মহর প্রদান করতে হবে। এর সর্বোচ্চ কোনো ধরা বাধা পরিমাণ নেই তবে সর্বনিন্ম দশ দিরহাম হতে হবে।
Religion and sexuality
সূরা নিসার তিন নং আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা আমাদের জানান:
তোমরা দুই দুই বা তিন তিন বা চার চারটি বিয়ে করো। যদি মনে করো সমতা রক্ষা করতে পারবে না তাহলে একটি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকো
এখন আমরা বলতে পারি যে, একজন মহিলা একসময়ে একজন স্বামী গ্রহণ করতে পারবে। কিন্তু পুরুষ একসাথে চারটি বিয়ে করতে পারবে। তবে পুরুষ যদি দুই, তিন অথবা চারটি বিয়ে করে, তবে তার সকল স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে হবে এবং সমান অধিকার দিতে হবে ।
অন্যায়ভাবে যৌনক্রিয়া করাকে যিনা বলে। ইসলামে এটাকে কঠোরভাবে নিষেধের সাথে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করেছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
ব্যভিচারের দায়ে অভিযুক্ত পুরুষ ও নারী যারা, তাদের প্রত্যেককে একশত বেত্রাঘাত প্রদান কর, তাদের বিষয়ে করুণা যেন তোমাদেরকে দুর্বল না করে— —সূরা আন-নুর, আয়াত ২

রাসুল (স.) হাদীসে বলেন,
একজন অবিবাহিত পুরুষ একজন অবিবাহিত নারীর সাথে ব্যভিচার করে, তাদেরকে একশত বেত্রাঘাত এবং এক বছরের জন্য নির্বাসন পেতে হবে। আর বিবাহিত পুরুষের সাথে বিবাহিত নারীর ব্যভিচারের ক্ষেত্রে, তাদেরকে একশত বেত্রাঘাত এবং পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করতে হবে।— — সহীহ মুসলিম, ১৭:৪১৯১ (ইংরেজি)
Religion and sexuality
এই অবৈধ যৌনাচারের ধারা বর্ণনা করতে গিয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেনঃ
আদম সন্তানের উপর যিনার যে অংশ লিপিবদ্ধ আছে তা অবশ্যই সে প্রাপ্ত হবে। দু-চোখের যিনা হল (নিষিদ্ধ যৌনতার প্রতি) দৃষ্টিপাত করা, দু’কানের যিনা হল শ্রবণ করা, রসনার যিনা হল কথোপকথন করা, হাতের যিনা হল স্পর্শ করা, পায়ের যিনা হল হেঁটে যাওযা, অন্তরের যিনা হচ্ছে আকাঙ্ক্ষা ও কামনা করা। আর যৌনাঙ্গ অবশেষে তা বাস্তবায়িত করে অথবা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে।— — সহীহ বুখারী, ৮:৭৭:৬০৯ (ইংরেজি),সহীহ মুসলিম, ৩৩:৬৪২১ (ইংরেজি)

সুতরাং, আমরা বলতে পারি ইসলামে অবৈধ যৌনাচারের কোনো সুযোগ নেই। বরং এর জন্য রয়েছে মহা শাস্তি।
প্রতিটি প্রধান ধর্ম যৌনতা, নৈতিকতা ও নীতিশাস্ত্র ইত্যাদি বিষয়ে নৈতিক সূত্রাবলী তৈরি করেছে। এই নৈতিক সূত্রাবলী এমন পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণ করতে চায় যেগুলি যৌন আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারে এবং জনগণের যৌন ক্রিয়াকলাপ এবং অভ্যাসগুলি প্রভাবিত করতে পারে।