Tag: অনলাইন মডেল টেস্ট

  • জীবভূগোল

    জীবভূগোল

    জীবভূগোল (ইংরেজি: Biogeography) বা জৈব-ভূগোল উদ্ভিদ ও প্রাণীদের ভৌগোলিক বণ্টন বিষয়ক বিজ্ঞানের নাম। এটি পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে এবং ভৌগোলিক ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রজাতি ও বাস্তুতন্ত্রের বণ্টন নিয়ে আলোচনা করে। জীবভূগোলকে সাধারণত জীববিজ্ঞানের একটি শাখা হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তবে এর উন্নয়নে ভৌত ভূগোলবিদদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে, বিশেষ করে উদ্ভিদের বণ্টন বিষয়ে। এছাড়া জীবভূগোলের সাথে বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানবাস্তুবিজ্ঞানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে।[১]

    জীবভূগোল

    জীবভূগোল পৃথিবীকে উদ্ভিদ ও প্রাণীদের প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে কয়েকটি অঞ্চলে ভাগ করে, যে অঞ্চলগুলোর একেকটিতে জীবজগৎ একেক রকম। তবে এই বিভাজন সময়ের সাথে সাথে ধীরে ধীরে হলেও পরিবর্তিত হয়। বর্তমান এবং অতীতের অনেক কিছু জীবকূলের বণ্টনকে প্রভাবিত করে। যেমন, বর্তমান জলবায়ু ও ভৌগোলিক অবস্থা, পৃথিবীর বিভিন্ন ভূভাগের ভূতাত্ত্বিক ইতিহাস ও জলবায়ু, জীবকূলের বিবর্তন ইত্যাদি। বর্তমানে মানুষের অভূতপূর্ব প্রযুক্তিগত উন্নতির কারণে পৃথিবী খুব দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে।[২] আধুনিক জীবভূগোল এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে পৃথিবীর জীববৈচিত্র্য ও তাদের বণ্টনের উপর মানুষের কর্মকাণ্ডের প্রভাব বিশ্লেষণ করে, এবং জীবকূলের ভবিষ্যৎ অনুমান করার চেষ্টা করে।[১]

    জীবভূগোলের ইতিহাস

    ব্রিটিশ প্রকৃতিবিদ আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেসকে অনেক সময় জীবভূগোলের জনক বলা হয়।[৩] ওয়ালেস মালয় দ্বীপপুঞ্জে ভ্রমণের সময় জীবকূলের, বিশেষ করে প্রাণীদের ভৌগোলিক বণ্টন সম্পর্কে কিছু অনুকল্প তৈরি করেন। মালয় থেকে ফিরে আসার পর ১৮৭২ সালে বেশ কয়েকজন বন্ধুর (যাদের মধ্যে ছিলেন ডারউইন, ফিলিপ স্ক্লেটারআলফ্রেড নিউটন) আবেদনে সাড়া দিয়ে ওয়ালেস পৃথিবীতে প্রাণীদের ভৌগোলিক বণ্টনের উপর একটি সাধারণ রিভিউ প্রণয়নের জন্য গবেষণা শুরু করেন। শুরুতে খুব একটা অগ্রসর হতে পারেননি কারণ তখন প্রাণীদের বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ ছিল। ১৮৭৪ সালে শ্রেণীবিন্যাসের উপর বেশ কিছু নতুন গবেষণা প্রকাশিত হওয়ার পর আবার শুরু করেন।

    স্ক্লেটার পাখি প্রজাতিসমূহের ভৌগোলিক বণ্টন ব্যাখ্যার জন্য পৃথিবীকে ছয়টি অঞ্চলে ভাগ করেছিলেন। ওয়ালেস এই বিভাজন প্রক্রিয়াকে আরও বর্ধিত করেন যাতে করে স্তন্যপায়ী, সরীসৃপ ও পোকামাকড়দের বণ্টনও ব্যাখ্যা করা যায়। প্রাণীদের যে ভৌগোলিক বণ্টন ব্যবস্থা আজ বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত ওয়ালেসই তার ভিত্তি তৈরি করেছিলেন। প্রতিটি অঞ্চলে বর্তমান এবং অতীতের সকল প্রাণীর বণ্টন ব্যাখ্যার জন্য যে বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ তার সবগুলো নিয়েই তিনি আলোচনা করেন। এর মধ্যে রয়েছে, স্থলসেতুর (land bridge, যেমন বর্তমান উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার সংযোগকারী স্থলপথ) উদয় ও বিলুপ্তি এবং প্রবল হিমবাহের প্রভাব। তার তৈরি করা মানচিত্রগুলো প্রাণীদের বণ্টনের উপর বিভিন্ন বিষয় যেমন, পর্বতমালার উচ্চতা, সমুদ্রের গভীরতা, আঞ্চলিক উদ্ভিদজগৎ ইত্যাদির প্রভাব তুলে ধরে। এছাড়া তিনি সে সময় জানা সকল উচ্চতর প্রাণীদের পরিবার ও গোত্রের নাম এবং ভৌগোলিক ব্যাপ্তি লিপিবদ্ধ করেন। লেখাগুলো এমনভাবে সাজিয়েছিলেন যাতে একজন পরিব্রাজক পড়েই বুঝতে পারে কোন এলাকায় কেমন প্রাণী পাওয়া যায়। এ বিষয়ক সকল গবেষণা ১৮৭৬ সালে দ্য জিওগ্রাফিক্যাল ডিস্ট্রিবিউশন অফ অ্যানিমেল্‌স (The Geographical Distribution of Animals) নামে দুই খণ্ডে প্রকাশিত হয়। পরবর্তী ৮০ বছর ধরে এটিই ছিল প্রাণীভূগোলের উপর সর্বাধিক পঠিত ও গুরুত্বপূর্ণ বই।[৪]

  • জীববিজ্ঞানী

    জীববিজ্ঞানী

    একজন জীববিজ্ঞানী হলেন একজন বিজ্ঞানী যিনি জীববিজ্ঞানে গবেষণা করেন। [১] [২] জীববিজ্ঞানীরা পৃথিবীতে জীবন নিয়ে গবেষণা করতে আগ্রহী, তা সে একটি পৃথক কোষ, একটি বহুকোষী জীব, বা ইন্টারঅ্যাক্টিং জনসংখ্যার একটি সম্প্রদায় ই হোক না কেন।[১] তারা সাধারণত জীববিজ্ঞানের একটি নির্দিষ্ট শাখায় (যেমন, আআণবিক জীববিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা এবং বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞান)[৩] বিশেষজ্ঞ এবং একটি নির্দিষ্ট গবেষণা ফোকাস (যেমন, ম্যালেরিয়া বা ক্যান্সার অধ্যয়ন) রয়েছে।[৪]

     ম্যালেরিয়া বা ক্যান্সার অধ্যয়ন

    জীববিজ্ঞানীরা যারা মৌলিক গবেষণার সাথে জড়িত তাদের লক্ষ্য প্রাকৃতিক বিশ্ব সম্পর্কে জ্ঞানের অগ্রগতি। [১] তারা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করে তাদের গবেষণা পরিচালনা করে, যা অনুমান পরীক্ষা করার জন্য একটি অভিজ্ঞতামূলক পদ্ধতি। [১] [৫] তাদের আবিষ্কারের কিছু নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে প্রয়োগ থাকতে পারে যেমন বায়োটেকনোলজি, যার লক্ষ্য মানুষের জন্য চিকিৎসাগতভাবে উপযোগী পণ্য তৈরি করা। [১] [৬]

    আধুনিক সময়ে, বেশিরভাগ জীববিজ্ঞানীদের এক বা একাধিক একাডেমিক ডিগ্রি থাকে, যেমন স্নাতক ডিগ্রি এবং মাস্টার্স ডিগ্রি বা ডক্টরেটের মতো একটি উন্নত ডিগ্রী। [৩] [৭] [৮] অন্যান্য বিজ্ঞানীদের মতো, জীববিজ্ঞানীদের অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন একাডেমিয়া, অলাভজনক, বেসরকারি শিল্প বা সরকারী ক্ষেত্রে কাজ করতে দেখা যায়। [৯]

    ইতিহাস

    ফ্রান্সেস্কো রেডি, জীববিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা।

    জীববিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা ফ্রান্সেস্কো রেডি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ জীববিজ্ঞানীদের একজন হিসেবে স্বীকৃত।[১০] রবার্ট হুক, একজন ইংরেজ প্রাকৃতিক দার্শনিক, যিনি কোষ শব্দটি তৈরি করেছিলেন, যা মৌচাক কোষের সাথে উদ্ভিদের গঠনের সাদৃশ্যের ক্থা বলেছিলেন।[১১]

    চার্লস ডারউইন এবং আলফ্রেড ওয়ালেস স্বাধীনভাবে প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিবর্তনের তত্ত্ব প্রণয়ন করেন, যা ডারউইনের বই অন দ্য অরিজিন অফ স্পিসিসে বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে, যা ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। এতে, ডারউইন প্রস্তাব করেছিলেন যে মানুষ সহ সমস্ত জীবের বৈশিষ্ট্যগুলি বংশের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াগুলির দ্বারা আকৃতির হয়েছিল, সঞ্চিত পরিবর্তনের সাথে যার ফলে দীর্ঘ সময় ধরে বিচ্যুতি ঘটে। বিবর্তনের তত্ত্ব তার বর্তমান আকারে জীববিজ্ঞানের প্রায় সব ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করে।[১২] পৃথকভাবে, গ্রেগর মেন্ডেল ১৮৬৬ সালে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রণয়ন করেছিলেন, যা আধুনিক জেনেটিক্সের ভিত্তি হয়ে ওঠে।

    ১৯৫৩ সালে, জেমস ডি. ওয়াটসন এবং ফ্রান্সিস ক্রিক ডিএনএর মৌলিক কাঠামো বর্ণনা করেছিলেন, তার সমস্ত রূপে জীবন প্রকাশ করার জন্য জেনেটিক উপাদান,[১৩] মরিস উইলকিন্স এবং রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিনের কাজের উপর ভিত্তি করে, পরামর্শ দিয়েছিলেন যে ডিএনএর গঠনটি একটি ডাবল হেলিক্স গঠন।

    ইয়ান উইলমট একটি গবেষণা দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যা ১৯৯৬ সালে প্রথম একটি প্রাপ্তবয়স্ক সোম্যাটিক কোষ থেকে একটি স্তন্যপায়ী প্রাণীর ক্লোন করেছিল, ডলি নামে একটি ফিনিশ ডরসেট মেষশাবক।[১৪] [১৫] [১৬] [১৭]

    শিক্ষা

    জীববিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রী সাধারণত আণবিক এবং কোষবিদ্যা, উন্নয়ন, বাস্তুবিজ্ঞান, জেনেটিক্স, মাইক্রোবায়োলজি, অ্যানাটমি, শরীরতত্ত্ব, উদ্ভিদবিদ্যা এবং প্রাণিবিদ্যায় কোর্সের প্রয়োজন হয়। [৮] [১৮] অতিরিক্ত প্রয়োজনীয়তার মধ্যে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন (সাধারণ, জৈব, এবং জৈব রসায়ন ), ক্যালকুলাস এবং পরিসংখ্যান অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।


    যে সমস্ত শিক্ষার্থীরা একটি গবেষণা-ভিত্তিক কর্মজীবনের আকাঙ্ক্ষা করে তারা সাধারণত মাস্টার্স বা ডক্টরেট (যেমন, পিএইচডি) এর মতো স্নাতক ডিগ্রী অনুসরণ করে, যার ফলে তারা একটি শিক্ষানবিশ মডেলের উপর ভিত্তি করে একটি গবেষণা প্রধানের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবে যা ১৮০০ এর দশক থেকে বিদ্যমান রয়েছে।[৭] এই স্নাতক প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীরা প্রায়ই জীববিজ্ঞানের একটি নির্দিষ্ট সাবডিসিপ্লিনে বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।[৩]

    গবেষণা

    মার্টিনাস উইলেম বেইজেরিঙ্ক, একজন উদ্ভিদবিদ এবং মাইক্রোবায়োলজিস্ট

    জীববিজ্ঞানীরা যারা মৌলিক গবেষণায় কাজ করেন তারা তত্ত্ব তৈরি করেন এবং বিবর্তন, জৈব রসায়ন, আণবিক জীববিজ্ঞান, স্নায়ুবিজ্ঞান এবং কোষ জীববিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলি সহ জীবনের উপর মানুষের জ্ঞানকে অগ্রসর করার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন।

    জীববিজ্ঞানীরা সাধারণত প্রাণী, উদ্ভিদ, অণুজীব বা জৈব অণু জড়িত পরীক্ষাগার পরীক্ষা পরিচালনা করে। যাইহোক, জৈবিক গবেষণার একটি ছোট অংশ পরীক্ষাগারের বাইরেও ঘটে এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরিবর্তে প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ জড়িত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একজন উদ্ভিদবিজ্ঞানী একটি নির্দিষ্ট পরিবেশে উপস্থিত উদ্ভিদ প্রজাতির তদন্ত করতে পারেন, যখন একজন বাস্তুবিজ্ঞানী অগ্নিকাণ্ডের পরে কীভাবে বনাঞ্চল পুনরুদ্ধার হয় তা অধ্যয়ন করতে পারেন।

    জীববিজ্ঞানীরা যারা ফলিত গবেষণায় কাজ করেন তারা নির্দিষ্ট ক্ষেত্র বা অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে আরও জ্ঞান অর্জনের জন্য মৌলিক গবেষণা দ্বারা অর্জিত অর্জনগুলি ব্যবহার করেন। উদাহরণস্বরূপ, এই ফলিত গবেষণাটি নতুন ফার্মাসিউটিক্যাল ওষুধ, চিকিত্সা এবং মেডিকেল ডায়গনিস্টিক পরীক্ষাগুলি বিকাশের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। বেসরকারী শিল্পে ফলিত গবেষণা এবং পণ্য উন্নয়ন পরিচালনাকারী জৈবিক বিজ্ঞানীদের তাদের গবেষণা পরিকল্পনা বা ফলাফলগুলি অ-বিজ্ঞানীদের কাছে বর্ণনা করার প্রয়োজন হতে পারে যারা ভেটো বা তাদের ধারণাগুলি অনুমোদন করার অবস্থানে রয়েছে। এই বিজ্ঞানীদের অবশ্যই তাদের কাজের ব্যবসায়িক প্রভাবগুলি বিবেচনা করতে হবে।

    জেনেটিক্স এবং জৈব অণুগুলির জ্ঞানের দ্রুত অগ্রগতি জৈবপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে বৃদ্ধিকে উত্সাহিত করে, জৈবিক বিজ্ঞানীরা যে শিল্পগুলিতে কাজ করে সেগুলিকে রূপান্তরিত করে। জৈবিক বিজ্ঞানীরা এখন প্রাণী এবং উদ্ভিদের জেনেটিক উপাদানগুলি ম্যানিপুলেট করতে পারেন, জীবকে (মানুষ সহ) আরও উত্পাদনশীল বা রোগ প্রতিরোধী করার চেষ্টা করছেন। জৈবপ্রযুক্তিগত প্রক্রিয়াগুলির উপর মৌলিক এবং প্রয়োগ করা গবেষণা, যেমন ডিএনএ পুনরায় সমন্বয় করা, মানুষের ইনসুলিন এবং বৃদ্ধি সংক্রান্ত হরমোনের সহ গুরুত্বপূর্ণ পদার্থের উত্পাদনের দিকে পরিচালিত করেছে। অন্যান্য অনেক পদার্থ যা আগে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় না তা এখন জৈবপ্রযুক্তিগত উপায়ে উত্পাদিত হয়। এর মধ্যে কিছু পদার্থ রোগের চিকিৎসায় উপকারী।

    যারা বিভিন্ন জিনোম (তাদের সংশ্লিষ্ট জিনগুলির সাথে ক্রোমোজোম) প্রকল্পগুলি নিয়ে কাজ করে তারা জিনগুলিকে বিচ্ছিন্ন করে এবং তাদের কার্যকারিতা নির্ধারণ করে। এই কাজটি নির্দিষ্ট রোগ এবং উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত স্বাস্থ্য ঝুঁকি, যেমন সিকেল সেল অ্যানিমিয়ার সাথে সম্পর্কিত জিনগুলির আবিষ্কারের দিকে পরিচালিত করে চলেছে। জৈবপ্রযুক্তির অগ্রগতি জীববিজ্ঞানের প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রে গবেষণার সুযোগ তৈরি করেছে, যেমন ঔষধ, কৃষি এবং পরিবেশগত সংস্কারের মতো ক্ষেত্রগুলিতে বাণিজ্যিক প্রয়গ রয়েছে।

    বিশেষীকরণ

    বেশিরভাগ জৈবিক বিজ্ঞানীরা একটি নির্দিষ্ট ধরণের জীবের গবেষণায় বা একটি নির্দিষ্ট ক্রিয়াকলাপে বিশেষজ্ঞ, যদিও সাম্প্রতিক অগ্রগতিগুলি কিছু ঐতিহ্যগত শ্রেণিবিন্যাসকে ঝাপসা করে দিয়েছে।

    কর্মসংস্থান

    জীববিজ্ঞানীরা সাধারণত নিয়মিত ঘন্টা কাজ করেন তবে দীর্ঘ সময় অস্বাভাবিক নয়। গবেষকদের তাদের গবেষণার প্রকৃতির উপর নির্ভর করে ল্যাবরেটরিজ বা অন্যান্য স্থানে (বিশেষ করে ক্ষেত্রের সময়) বিজোড় ঘন্টা কাজ করার প্রয়োজন হতে পারে।

    অনেক জীববিজ্ঞানী তাদের গবেষণার জন্য অনুদানের অর্থের উপর নির্ভর করে। নতুন বা বর্ধিত তহবিল চাওয়ার প্রস্তাবগুলি প্রস্তুত করার সময় তারা সময়সীমা পূরণ করতে এবং কঠোর অনুদান-লেখার নির্দিষ্টকরণের সাথে সামঞ্জস্য করার জন্য চাপের মধ্যে থাকতে পারে।

    সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানীরা বিভিন্ন কাজের অবস্থার সম্মুখীন হন। কিছু ল্যাবরেটরিতে কাজ করে; অন্যরা গবেষণা জাহাজে কাজ করে এবং যারা পানির নিচে কাজ করে তাদের অবশ্যই তীক্ষ্ণ প্রবাল প্রাচীর এবং বিপজ্জনক সামুদ্রিক জীবনের চারপাশে কাজ করার সময় নিরাপদ ডাইভিং অনুশীলন করতে হবে। যদিও কিছু সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী সমুদ্র থেকে তাদের নমুনাগুলি পান, তবুও অনেকে পরীক্ষাগারে এবং অফিসে, পরীক্ষা পরিচালনা, পরীক্ষা চালানো, ফলাফল রেকর্ড করা এবং ডেটা সংকলনে তাদের একটি ভাল সময় ব্যয় করে।

    জীববিজ্ঞানীরা সাধারণত অনিরাপদ বা অস্বাস্থ্যকর অবস্থার সংস্পর্শে আসেন না। যারা পরীক্ষাগারে বিপজ্জনক জীব বা বিষাক্ত পদার্থ নিয়ে কাজ করেন তাদের অবশ্যই দূষণ এড়াতে কঠোর নিরাপত্তা পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। অনেক জীববিজ্ঞানী, যেমন উদ্ভিদবিদ, বাস্তুবিজ্ঞানী এবং প্রাণিবিজ্ঞানী, ক্ষেত্র অধ্যয়ন পরিচালনা করেন যা কঠোর শারীরিক কার্যকলাপ এবং আদিম জীবনযাত্রার সাথে জড়িত। ক্ষেত্রের জীববিজ্ঞানীরা উষ্ণ বা ঠান্ডা জলবায়ু, সব ধরনের আবহাওয়ায় কাজ করতে পারে।

    সম্মান এবং পদবী

    জীববিজ্ঞানীদের দেওয়া সর্বোচ্চ সম্মান হল ফিজিওলজি বা মেডিসিনে নোবেল পুরস্কার, যা রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্সেস দ্বারা ১৯০১ সাল থেকে দেওয়া হয়। আরেকটি উল্লেখযোগ্য পুরস্কার হল জীববিজ্ঞানে ক্রাফুর্ড পুরস্কার ; ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত। [১৯]

    আরো দেখুন

  • উইকিপিডিয়া:জীববিজ্ঞান পরিভাষা

    উইকিপিডিয়া:জীববিজ্ঞান পরিভাষা

    A

    উইকিপিডিয়া:জীববিজ্ঞান পরিভাষা
    • Acid–base physiology‎ – অম্ল-ক্ষারক শারীরবিজ্ঞান
    • Actinobiology – বিকিরণ জীববিজ্ঞান
    • Aerobiology – বায়ুবাহিত জীববিজ্ঞান
    • Aeromicrobiology – বায়ুবাহিত অণুজীববিজ্ঞান
    • Agricultural microbiology – কৃষি অণুজীববিজ্ঞান
    • Agrobiology – কৃষি-জীববিজ্ঞান
    • Agroecology – কৃষি-বাস্তুবিজ্ঞান
    • Agroforestry – কৃষি-অরণ্যবিজ্ঞান
    • Agronomy – শস্যবিজ্ঞান
    • Agrostology – তৃণবিজ্ঞান
    • Algal taxonomy‎ – শৈবাল শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Algology – সমুদ্রশৈবালবিজ্ঞান
    • Anatomical pathology – শারীরস্থানীয় রোগবিজ্ঞান
    • Anatomy – শারীরস্থানবিজ্ঞান
    • Angiology – রক্তবাহবিজ্ঞান
    • Animal anatomy‎ – প্রাণী শারীরস্থান
    • Animal communication – প্রাণী যোগাযোগ
    • Animal developmental biology‎ – প্রাণী বিকাশমূলক জীববিজ্ঞান
    • Animal ecology‎ – প্রাণী বাস্তুবিজ্ঞান
    • Animal Genetics – প্রাণী বংশাণুবিজ্ঞান
    • Animal Genomics – প্রাণী বংশাণুসমগ্র বিজ্ঞান
    • Animal pathology – প্রাণী রোগবিজ্ঞান
    • Animal pharmacology – প্রাণী ঔষধবিজ্ঞান
    • Animal physiology – প্রাণী শারীরবিজ্ঞান
    • Animal taxonomy‎ – প্রাণী শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Anthology – পুষ্পবিজ্ঞান
    • Anthropometry‎ – নৃ-মিতি
    • Anthrozoology – নৃ-প্রাণীবিজ্ঞান
    • Apiculture – মৌমাছি চাষ বিজ্ঞান
    • Apiology – মৌমাছিবিজ্ঞান
    • applied biology – ফলিত জীববিজ্ঞান
    • applied botany – ফলিত উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • Applied genetics‎ – ফলিত বংশাণুবিজ্ঞান
    • applied microbiology – ফলিত অণুজীববিজ্ঞান
    • applied zoology – ফলিত প্রাণীবিজ্ঞান
    • Aquatic Biology – জলজ জীববিজ্ঞান
    • Aquatic ecology‎ – জলজ বাস্তুবিজ্ঞান
    • Arachnology – মাকড়সা-বর্গীয় কীটবিজ্ঞান
    • Araneology – মাকড়সাবিজ্ঞান
    • Arboriculture – বৃক্ষচাষবিজ্ঞান
    • Arthrology – অস্থিসন্ধিবিজ্ঞান
    • Arthropodology – সন্ধিপদী বিজ্ঞান
    • Aschelitinthology – গোলকৃমিবিজ্ঞান
    • Astro microbiology – নভো অণুজীববিজ্ঞান
    • Astrobiology – নভোজীববিজ্ঞান
    • Astrobotany – নভোউদ্ভিদবিজ্ঞান

    B

    • Bacterial genetics‎ – ব্যাকটেরিয়ার বংশাণুবিজ্ঞান
    • Bacteriology – ব্যাকটেরিয়া বিজ্ঞান
    • Batology – কাঁটাগুল্মবিজ্ঞান
    • Batrachology – উভচরবিজ্ঞান
    • Behavioral ecology – আচরণীয় বাস্তুবিজ্ঞান
    • Behavioral neuroscience – আচরণীয় স্নায়ুবিজ্ঞান
    • behavioural biology – আচরণীয় জীববিজ্ঞান
    • Behavioural genetics – আচরণীয় বংশাণুবিজ্ঞান
    • Biochemistry – প্রাণরসায়ন
    • biodiversity conservation – জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ
    • Bioelectrochemistry‎ – জৈব-বৈদ্যুতিক রসায়ন
    • Bioelectromagnetics‎ – জৈব-বৈদ্যুতিক চৌম্বকবিজ্ঞান
    • Bioengineering – জৈব প্রকৌশল
    • Biogeography – জীব-ভূগোল
    • Biogerontology‎ – জৈব-বার্ধক্যবিজ্ঞান
    • Bioinformatics – জৈব তথ্যবিজ্ঞান
    • Bioinorganic chemistry‎ – জৈব অজৈব রসায়ন
    • Biological anthropology – জীববৈজ্ঞানিক নৃবিজ্ঞান
    • Biological Oceanography – জীববৈজ্ঞানিক সমুদ্রবিজ্ঞান
    • Biological Systematics – জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবদ্ধবিজ্ঞান
    • Biology – জীববিজ্ঞান
    • Biomathematics – জৈব গণিত
    • Biomechanics – জৈব বলবিজ্ঞান
    • Biomechatronics – জীবসদৃশ ইলেকট্রনীয় যন্ত্রকৌশল
    • Biomedical science – জৈব চিকিৎসা বিজ্ঞান
    • Biomedicine‎ – জৈব চিকিৎসাবিজ্ঞান
    • Biometrics – জীবমিতি
    • Biometry – জীবমিতি
    • biomolecular science – জৈব অণু বিজ্ঞান
    • Biomusicology – জীবসঙ্গীতবিজ্ঞান
    • Bionics‎ – জীব-সদৃশ যন্ত্রকৌশল
    • Biophysics – জৈব পদার্থবিজ্ঞান
    • Biopsychology – জৈব মনোবিজ্ঞান
    • Biostatistics – জৈব পরিসংখ্যান
    • Biotechnology – জৈব প্রযুক্তি
    • Botany – উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • Brain anatomy‎ – মস্তিষ্ক শারীরস্থান
    • Bryology – মসবর্গীয় উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • Bryozoology‎ – মসবর্গীয় প্রাণীবিজ্ঞান

    C

    • Cancer biology – কর্কটরোগ জীববিজ্ঞান
    • Cancer pathology‎ – কর্কটরোগবিজ্ঞান
    • Carcinology – কবচীবিজ্ঞান
    • Cardiology – হৃদবিজ্ঞান
    • Cardiovascular physiology‎ – হৃৎ-রক্তসংবহন শারীরবিজ্ঞান
    • Cardiovascular Science – হৃৎ-রক্তসংবহন বিজ্ঞান
    • Cell anatomy – কোষ শারীরস্থান বিজ্ঞান
    • Cell biology – কোষবিজ্ঞান
    • Cell Physiology – কোষ শারীরবিজ্ঞান
    • cell zoology – কোষীয় প্রাণীবিজ্ঞান
    • Cellular biology – কোষবিজ্ঞান
    • Cellular microbiology – কোষীয় অণুজীববিজ্ঞান
    • Cellular neuroscience – কোষীয় স্নায়ুবিজ্ঞান
    • Cetology – তিমিবর্গীয় প্রাণীবিজ্ঞান
    • Cheloniology – কচ্ছপবিজ্ঞান
    • Chemical biology – রাসায়নিক জীববিজ্ঞান
    • Chemical ecology‎ – রাসায়নিক বাস্তুবিজ্ঞান
    • Chemical pathology‎ – রাসায়নিক রোগবিজ্ঞান
    • Chemotaxonomy / biochemical systematics – জৈবরাসায়নিক শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Chondriology – তরুণাস্থিবিজ্ঞান
    • Chromatology – বর্ণবিজ্ঞান
    • Chronobiology – কাল-জীববিজ্ঞান
    • Cladistics – পূর্বজাতীয় সম্পর্কমূলক শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Clinical genetics – রোগীসংশ্লিষ্ট বংশাণুবিজ্ঞান
    • Clinical pathology – রোগীসংশ্লিষ্ট রোগবিজ্ঞান
    • Cnidarian biology‎ – নিডারিয়া জীববিজ্ঞান
    • Cnidology – নিডারিয়াবিজ্ঞান
    • Cognitive biology – জ্ঞানীয় জীববিজ্ঞান
    • Cognitive neuroscience – জ্ঞানীয় স্নায়ুবিজ্ঞান
    • Coleopterology – গুবরেপোকা বিজ্ঞান
    • community ecology – সম্প্রদায় বাস্তুবিজ্ঞান
    • Comparative anatomy – তুলনামূলক শারীরস্থান বিজ্ঞান
    • comparative pathology – তুলনামূলক রোগবিজ্ঞান
    • Computational anatomy‎ – গণনামূলক শারীরস্থান
    • Computational biology – গণনামূলক জীববিজ্ঞান
    • Computational neuroscience – গণনামূলক স্নায়ুবিজ্ঞান
    • Computational phylogenetics‎ – গণনামূলক জাতিজনিবিজ্ঞান
    • Conchology – শঙ্খাবিজ্ঞান
    • Conservation biology – সংরক্ষণমূলক জীববিজ্ঞান
    • Craniology – খুলিবিজ্ঞান
    • Crustaceology – কবচীবিজ্ঞান
    • Cryobiology – হিম-জীববিজ্ঞান
    • Cryptozoology‎ – গুপ্তপ্রাণীবিজ্ঞান
    • Crystallography‎ – কেলাসবিজ্ঞান
    • Ctetology – অর্জিত জীববৈশিষ্ট্য বিজ্ঞান
    • Cytogenetics – কোষীয় বংশাণুবিজ্ঞান
    • Cytology – কোষবিজ্ঞান
    • Cytopathology‎ – কোষীয় রোগবিজ্ঞান
    • Cytotaxonomy – কোষীয় শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান

    D

    • Dendrochronology – বৃক্ষকালানুক্রম বিজ্ঞান
    • Dendrology – বৃক্ষ ও গুল্মবিজ্ঞান
    • Dermatology – চর্মবিজ্ঞান
    • Dermatopathology – চর্মরোগবিজ্ঞান
    • Deuterostome zoology‎ – দ্বিতীয়মুখ প্রাণীবিজ্ঞান
    • Developmental biology – বিকাশমূলক জীববিজ্ঞান
    • Developmental neuroscience – বিকাশমূলক স্নায়ুবিজ্ঞান
    • Dietetics – পথ্যবিজ্ঞান

    E

    • Ecobiology – বাস্তু জীববিজ্ঞান
    • Ecological economics‎ – বাস্তুবৈজ্ঞানিক অর্থশাস্ত্র
    • Ecological genetics‎ – বাস্তুবৈজ্ঞানিক বংশাণুবিজ্ঞান
    • Ecology – বাস্তুবিজ্ঞান
    • Economic botany – অর্থনৈতিক উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • ecotoxicology – বাস্তুবিষক্রিয়াবিজ্ঞান
    • Electrophysiology‎ – বৈদ্যুতিক শারীরবিজ্ঞান
    • Embryology – ভ্রূণবিজ্ঞান
    • Endocrinology – অন্তঃক্ষরা বিজ্ঞান
    • Entomology – কীটপতঙ্গ বিজ্ঞান
    • Environmental Biology – পরিবেশ জীববিজ্ঞান
    • Environmental microbiology – পরিবেশ অণুজীববিজ্ঞান
    • Environmental Toxicology – পরিবেশ বিষক্রিয়াবিজ্ঞান
    • Enzymology – উৎসেচকবিজ্ঞান
    • Epidemiology – রোগবিস্তার বিজ্ঞান
    • Epigenetics – অনুজনন বিজ্ঞান
    • Ethnobiology – জাতি-জীববিজ্ঞান
    • Ethnobotany – জাতি-উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • Ethnoecology – জাতি-বাস্তুবিজ্ঞান
    • Ethnology – জাতিবিজ্ঞান
    • Ethnozoology – জাতি-প্রাণীবিজ্ঞান
    • Ethology – প্রাণী আচরণ বিজ্ঞান
    • Etiology – নিদানবিজ্ঞান
    • Eugenics – সুপ্রজননবিজ্ঞান
    • Eukaryote genetics‎ – সুকেন্দ্রিক জীবের বংশাণুবিজ্ঞান
    • Eukaryote morphology‎ – সুকেন্দ্রিক জীবের অঙ্গসংস্থান
    • Eukaryote taxonomy‎ – সুকেন্দ্রিক জীবের শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Eukaryotic microbiology‎ – সুকেন্দ্রিক জীবের অণুজীববিজ্ঞান
    • Euphenics – সুবহির্বিজ্ঞান
    • Euthenics – সুজীবনবিজ্ঞান
    • Evolution – বিবর্তন
    • Evolutionary biology – বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞান
    • Evolutionary developmental biology – বিবর্তনীয় বিকাশমূলক জীববিজ্ঞান
    • Evolutionary dynamics‎ – বিবর্তনীয় গতিবিজ্ঞান
    • Evolutionary ecology‎ – বিবর্তনীয় বাস্তুবিজ্ঞান
    • Evolutionary game theory‎ – বির্বতনীয় ক্রীড়া তত্ত্ব
    • Evolutionary microbiology – বিবর্তনীয় অণুজীববিজ্ঞান
    • Evolutionary neuroscience‎ – বিবর্তনীয় স্নায়ুবিজ্ঞান
    • Evolutionary psychology – বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান
    • Evolutionary taxonomy – বিবর্তনীয় শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Exercise physiology – শরীরচর্চা শারীরবিজ্ঞান
    • Exobiology – মহাকাশ জীববিজ্ঞান
    • Experimental pathology – পরীক্ষামূলক রোগবিজ্ঞান
    • Eye anatomy‎ – চক্ষু শারীরস্থান

    F

    • Fisheries science‎ – মৎস্যপালন বিজ্ঞান
    • Floriculture – পুষ্প উদ্ভিদ চাষ
    • Floristics – উদ্ভিদ বিতরণ বিজ্ঞান
    • Food chemistry‎ – খাদ্য রসায়ন
    • Food microbiology – খাদ্য অণুজীববিজ্ঞান
    • Food science – খাদ্য বিজ্ঞান
    • Foodservice Systems Administration/Management – খাদ্যসেবা ব্যবস্থা প্রশাসন
    • Forensic anthropology‎ – আদালতি নৃবিজ্ঞান
    • Forensic entomology – আদালতি কীটপতঙ্গবিজ্ঞান
    • Forensic genetics‎ – আদালতি বংশাণুবিজ্ঞান
    • Forensic pathology – আদালতি রোগবিজ্ঞান
    • Forest ecology‎ – অরণ্য বাস্তুবিজ্ঞান
    • Forestry – অরণ্যবিজ্ঞান
    • freshwater biology – মিঠাপানির জীববিজ্ঞান
    • Freshwater ecology‎ – মিঠাপানির বাস্তুবিজ্ঞান
    • Fungal morphology and anatomy‎ – ছত্রাক অঙ্গসংস্থান ও শারীরস্থান

    G

    • genetic engineering – বংশাণু প্রকৌশল
    • Genetic epidemiology‎ – বংশাণুভিত্তিক রোগবিস্তারবিজ্ঞান
    • Genetic genealogy‎ – বংশাণুভিত্তিক কুলজিবিজ্ঞান
    • Genetics – বংশাণুবিজ্ঞান
    • Genomics – বংশাণুসমগ্রবিজ্ঞান
    • Geobiology‎ – ভূ-জীববিজ্ঞান
    • Geobotany – ভূ-উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • Geomicrobiology – ভূ-অণুজীববিজ্ঞান
    • Geriatrics – জরাবিজ্ঞান
    • Gerontology – বার্ধক্যবিজ্ঞান
    • Glycobiology‎ – শর্করা জীববিজ্ঞান
    • Gynaecology – স্ত্রীরোগবিজ্ঞান

    H

    • Helminthology – কৃমিবিজ্ঞান
    • Hematology – রক্তবিজ্ঞান
    • Hematopathology – রক্তরোগবিজ্ঞান
    • Hepatology – যকৃৎবিজ্ঞান
    • Herpetology – সরীসৃপবিজ্ঞান
    • Histochemistry – কলারসায়নশাস্ত্র
    • Histology – কলাবিজ্ঞান
    • Histopathology – কলারোগবিজ্ঞান
    • Horticulture – উদ্যানপালন বিজ্ঞান
    • Human anatomy – মানব শারীরস্থান বিজ্ঞান
    • Human behavioral ecology – মানব আচরণীয় বাস্তুবিজ্ঞান
    • Human biology – মানব জীববিজ্ঞান
    • Human ecology – মানব বাস্তুবিজ্ঞান
    • human genetics – মানব বংশাণুবিজ্ঞান
    • Human Genomics – মানব বংশাণুসমগ্র বিজ্ঞান
    • Human mitochondrial genetics‎ – মানব মাইটোকন্ড্রিয়াজাত বংশাণুবিজ্ঞান
    • Human pathology – মানব রোগবিজ্ঞান
    • Human pharmacology – মানব ঔষধবিজ্ঞান
    • Human physiology – মানব শারীরবিজ্ঞান
    • Human population genetics‎ – মানব জনসমষ্টিমূলক বংশাণুবিজ্ঞান
    • Hypnology – নিদ্রাবিজ্ঞান

    I

    • Ichnology – জীবাশ্ম পদচিহ্নবিজ্ঞান
    • Ichthyology – মৎস্যবিজ্ঞান
    • Immunology – অনাক্রম্যবিজ্ঞান
    • Industrial microbiology – শিল্প অণুজীববিজ্ঞান
    • Insular ecology‎ – দ্বৈপ বাস্তুবিজ্ঞান
    • Invertebrate zoology – অমেরুদণ্ডী প্রাণীবিজ্ঞান

    K

    • Kalology – মানব সৌন্দর্য বিজ্ঞান
    • Karyology – কোষকেন্দ্রবিজ্ঞান
    • Kinesiology – পেশীচালনা বিজ্ঞান

    L

    • Landscape ecology – ভূদৃশ্য বাস্তুবিজ্ঞান
    • Lepidopterology – শল্কপক্ষ পতঙ্গবিজ্ঞান
    • Lichenology – লাইকেনবিজ্ঞান
    • Limnology – মিঠাপানির জীববিজ্ঞান
    • Linnaean taxonomy – লিনীয় শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Lipidology – স্নেহপদার্থবিজ্ঞান
    • Lymphatic pathology‎ – লসিকা রোগবিজ্ঞান

    M

    • Malacology – কম্বোজবিজ্ঞান
    • Mammalogy – স্তন্যপায়ী বিজ্ঞান
    • Marine biology – সামুদ্রিক জীববিজ্ঞান
    • Marine botany – সামুদ্রিক উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • marine zoology – সামুদ্রিক প্রাণীবিজ্ঞান
    • Mastology – স্তনবিজ্ঞান
    • Mathematical biology – গাণিতিক জীববিজ্ঞান
    • medical biochemistry – চিকিৎসা প্রাণরসায়ন
    • Medical Genetics – চিকিৎসা বংশাণুবিজ্ঞান
    • Medical microbiology – চিকিৎসা অণুজীববিজ্ঞান
    • Medicinal chemistry‎ – ঔষধীয় রসায়ন
    • Medicinal radiochemistry‎ – ঔষধীয় তেজস্ক্রিয় রসায়ন
    • Medicine‎ – চিকিৎসাবিজ্ঞান
    • Melanology – রঞ্জকবিজ্ঞান
    • Melittology – মৌমাছিবিজ্ঞান
    • Membrane biology‎ – ঝিল্লি জীববিজ্ঞান
    • metabolic biochemistry – বিপাকীয় প্রাণরসায়ন
    • Metabolomics – বিপাকীয় পদার্থসমগ্র বিজ্ঞান
    • Microbial and Eukaryotic Genetics – জীবাণু ও সুকেন্দ্রিক বংশাণুবিজ্ঞান
    • Microbial biotechnology – জীবাণুভিত্তিক জৈবপ্রযুক্তি
    • Microbial cytology – জীবাণু কোষবিজ্ঞান
    • Microbial ecology – জীবাণু বাস্তুবিজ্ঞান
    • Microbial genetics – জীবাণু বংশাণুবিজ্ঞান
    • Microbial physiology – জীবাণু শারীরবিজ্ঞান
    • Microbial population biology‎ – জীবাণু জনসমষ্টি জীববিজ্ঞান
    • Microbial systematics – জীবাণু শ্রেণীবন্ধনবিজ্ঞান
    • Microbial taxonomy – জীবাণু শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Microbiology – অণুজীববিজ্ঞান
    • Mitochondrial genetics‎ – মাইটোকন্ড্রিয়া বংশাণুবিজ্ঞান
    • Molecular Biochemistry – আণবিক প্রাণরসায়ন
    • Molecular biology – অণুপ্রাণবিজ্ঞান
    • Molecular Biophysics – আণবিক জৈব পদার্থবিজ্ঞান
    • Molecular genetics – আণবিক বংশাণুবিজ্ঞান
    • Molecular microbiology – আণবিক অণুজীববিজ্ঞান
    • Molecular neuroscience  – আণবিক স্নায়ুবিজ্ঞান
    • Molecular pathology – আণবিক রোগবিজ্ঞান
    • Molecular Pharmacology – আণবিক ঔষধবিজ্ঞান
    • Molecular Physiology – আণবিক শারীরবিজ্ঞান
    • Molecular Toxicology – আণবিক বিষক্রিয়াবিজ্ঞান
    • Molecular virology – আণবিক ভাইরাসবিজ্ঞান
    • Montane ecology‎ – পার্বত্য বাস্তুবিজ্ঞান
    • Morphology – অঙ্গসংস্থানবিজ্ঞান
    • Mycology – ছত্রাকবিজ্ঞান
    • Myriapodology – বহুপদীবিজ্ঞান
    • Myrmecology – পিপীলিকাবিজ্ঞান

    N

    • Nano microbiology – ন্যানো অণুজীববিজ্ঞান
    • Nanobiotechnology – ন্যানো জৈবপ্রযুক্তি
    • Nematology – গোলকৃমিবিজ্ঞান
    • Neonatology – নবজাতকবিজ্ঞান
    • Nephrology – বৃক্কবিজ্ঞান
    • Neural engineering‎ – স্নায়বিক প্রকৌশল
    • Neuroanatomy – স্নায়বিক শারীরস্থান
    • Neurobiology – স্নায়বিক জীববিজ্ঞান
    • Neurochemistry‎ – স্নায়ু রসায়ন
    • Neuroeconomics‎ – স্নায়ু অর্থশাস্ত্র
    • Neuroendocrinology – স্নায়বিক অন্তঃক্ষরাবিজ্ঞান
    • Neuroethology – স্নায়বিক প্রাণী আচরণ বিজ্ঞান
    • Neurohistology‎ – স্নায়বিক কলাবিজ্ঞান
    • Neuroimmunology – স্নায়বিক অনাক্রম্যবিজ্ঞান
    • Neuroinformatics‎ – স্নায়বিক তথ্যবিজ্ঞান
    • Neurolinguistics‎ – স্নায়ু-ভাষাবিজ্ঞান
    • Neurology – স্নায়ুরোগবিজ্ঞান
    • Neuropathology‎ – স্নায়ুরোগবিজ্ঞান
    • Neuropharmacology – স্নায়বিক ঔষধবিজ্ঞান
    • Neurophysics – স্নায়বিক পদার্থবিজ্ঞান
    • Neurophysiology – স্নায়বিক শারীরবিজ্ঞান
    • Neuropsychology – স্নায়বিক মনোবিজ্ঞান
    • Neuroscience – স্নায়ুবিজ্ঞান
    • Nidology – নীড়বিজ্ঞান
    • Nosology – রোগ শ্রেণীবিন্যাস বিজ্ঞান
    • Nutrition – পুষ্টিবিজ্ঞান

    O

    • Odontology – দন্ত ও মাড়িবিজ্ঞান
    • Olericulture – ভোজ্য উদ্ভিদপালন বিজ্ঞান
    • Oncology – কর্কটরোগবিজ্ঞান
    • Oneirology – স্বপ্নবিজ্ঞান
    • Ontogeny – ভ্রূণজনিবিজ্ঞান
    • Oology – পক্ষীডিম্ববিজ্ঞান
    • Ophiology – সর্পবিজ্ঞান
    • Ophthalmology – চক্ষুবিজ্ঞান
    • oral pathology – মৌখিক রোগবিজ্ঞান
    • Orchidology – রাস্নাগোত্রীয় উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • Organic chemistry – জৈব রসায়ন
    • Organocology – ভ্রূণীয় অঙ্গবিকাশ বিজ্ঞান
    • Organology – অঙ্গবিজ্ঞান
    • Ornithology – পক্ষীবিজ্ঞান
    • Orthopterology – ঘাসফড়িংবিজ্ঞান
    • Osteology – অস্থিবিজ্ঞান
    • Osteomyoarthrology – অস্থি-পেশী-সন্ধিবিজ্ঞান
    • Otorhinolaryngology – নাসিকা-কর্ণ-স্বরযন্ত্র বিজ্ঞান

    P

    • Paedology – শূককীটবিজ্ঞান
    • Palaeobotany – উদ্ভিদ জীবাশ্মবিজ্ঞান
    • Palaeozoology – প্রাণী জীবাশ্মবিজ্ঞান
    • Paleoanthropology – পুরা-নৃবিজ্ঞান
    • Paleobiology – পুরাজীববিজ্ঞান
    • Paleontology – জীবাশ্মবিজ্ঞান
    • Paleopathology – জীবাশ্ম রোগবিজ্ঞান
    • Palynology – পরাগ ও রেণুবিজ্ঞান
    • Parasitology – পরজীবীবিজ্ঞান
    • Parazoology – স্পঞ্জবিজ্ঞান
    • Pathology – রোগবিজ্ঞান
    • Pathophysiology‎ – রোগ-শারীরবিজ্ঞান
    • Pedology – মৃত্তিকাবিজ্ঞান
    • Pharmaceutical microbiology – ঔষধনির্মাণ অণুজীববিজ্ঞান
    • Pharmacogenetics – ঔষধ বংশাণুবিজ্ঞান
    • Pharmacognosy – ভেষজ ঔষধবিজ্ঞান
    • Pharmacology – ঔষধবিজ্ঞান
    • Pharming – জৈব ঔষধ প্রকৌশল
    • Phenology – আবির্ভাবকাল বিজ্ঞান
    • Phenomics‎ – বাহ্যসত্তা বিজ্ঞান
    • Photobiology – আলোক জীববিজ্ঞান
    • Phycology – সমুদ্রশৈবালবিজ্ঞান
    • Phylogenetics – জাতিজনিবিজ্ঞান
    • Phylogeography – জাতিভূগোল বিজ্ঞান
    • Physiological ecology – শারীরবৈজ্ঞানিক বাস্তুবিজ্ঞান
    • Physiological Optics – শারীরবৈজ্ঞানিক আলোকবিজ্ঞান
    • Physiology – শারীরবিজ্ঞান
    • Phytochemistry – উদ্ভিদ রসায়ন
    • Phytogeography – উদ্ভিদ ভূগোলবিজ্ঞান
    • phytopathology – উদ্ভিদ রোগবিজ্ঞান
    • Phytosociology – উদ্ভিদ সম্প্রদায় বিজ্ঞান
    • Pisciculture – মৎস্যপালন বিজ্ঞান
    • Plains ecology‎ – সমভূমি বাস্তুবিজ্ঞান
    • Planktology – জলবাহিত জীবকণাবিজ্ঞান
    • Plant anatomy – উদ্ভিদ শারীরস্থান বিজ্ঞান
    • Plant biochemistry – উদ্ভিদ প্রাণরসায়ন
    • Plant biology – উদ্ভিদ বিজ্ঞান
    • Plant breeding – উদ্ভিদ সুপ্রজননবিজ্ঞান
    • plant cell science – উদ্ভিদকোষবিজ্ঞান
    • Plant ecology – উদ্ভিদ বাস্তুবিজ্ঞান
    • Plant evolution – উদ্ভিদ বিবর্তন
    • Plant evolutionary developmental biology – বিবর্তনীয় বিকাশমূলক উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • Plant genetics – উদ্ভিদ বংশাণুবিজ্ঞান
    • Plant Molecular Biology – আণবিক উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • Plant morphology – উদ্ভিদ অঙ্গসংস্থানবিজ্ঞান
    • Plant pathology – উদ্ভিদ রোগবিজ্ঞান
    • Plant physiology – উদ্ভিদ শারীরবিজ্ঞান
    • Plant systematics – উদ্ভিদ শ্রেণীবন্ধনবিজ্ঞান
    • Plant taxonomy  – উদ্ভিদ শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Platyhelminthology – চ্যাপ্টা কৃমি বিজ্ঞান
    • Pomology – ফলবিজ্ঞান
    • Population biology – সম্প্রদায় জীববিজ্ঞান
    • population ecology – সম্প্রদায় বাস্তুবিজ্ঞান
    • Population genetics – সম্প্রদায় বংশাণুবিজ্ঞান
    • Poultry – হাঁস-মুরগী পালন বিজ্ঞান
    • Predictive microbiology – পূর্বাভাসমূলক অণুজীববিজ্ঞান
    • Primatology – প্রাইমেট বিজ্ঞান
    • Proctology – পায়ুমলাশয়বিজ্ঞান
    • Prokaryotes taxonomy‎ – প্রাককেন্দ্রিক জীবের শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Proteomics – প্রোটিনসমগ্র বিজ্ঞান
    • Protistology – প্রোটিস্টবিজ্ঞান
    • Protostome biology‎ – প্রথম-মুখ জীববিজ্ঞান
    • Protozoology – আদ্যপ্রাণীবিজ্ঞান
    • Psychobiology – মনোজীববিজ্ঞান
    • Pteridology – ফার্নবর্গীয় উদ্ভিদবিজ্ঞান

    Q

    • Quantum biology – কোয়ান্টাম জীববিজ্ঞান

    R

    • Radiation Biology – বিকিরণ জীববিজ্ঞান
    • Radiobiology – বিকিরণ জীববিজ্ঞান
    • Rainology – নাসাবিজ্ঞান
    • Reconciliation ecology – সামঞ্জস্য বিধায়ক বাস্তুবিজ্ঞান
    • Regenerative biomedicine‎ – পুনরুৎপাদনী জৈবচিকিৎসাবিজ্ঞান
    • Renal physiology‎ – বৃক্কীয় শারীরবিজ্ঞান
    • Reproductive biology – জনন জীববিজ্ঞান
    • Reproductive ecology‎ – জনন বাস্তুবিজ্ঞান
    • Respiratory physiology‎ – শ্বাসযন্ত্রীয় শারীরস্থান
    • Rhodology – গোলাপবিজ্ঞান

    S

    • Sarcology – পেশীবিজ্ঞান
    • Saurology – টিকটিকি বিজ্ঞান
    • Sepentology – সর্পবিজ্ঞান
    • Sericulture – রেশমচাষ
    • Serology – রক্তরসবিজ্ঞান
    • Sexual anatomy‎ – যৌন শারীরস্থান
    • Silviculture – অরণ্যচাষবিজ্ঞান
    • Sitology – পথ্যবিজ্ঞান
    • Skin physiology‎ – চর্ম শারীরবিজ্ঞান
    • Sleep physiology‎ – নিদ্রা শারীরবিজ্ঞান
    • Sociobiology – সমাজ-জীববিজ্ঞান
    • Soil biology‎ – মৃত্তিকা জীববিজ্ঞান
    • Soil microbiology – মৃত্তিকা অণুজীববিজ্ঞান
    • Soil zoology – মৃত্তিকা প্রাণীবিজ্ঞান
    • Speciology – প্রজাতিবিজ্ঞান
    • speech pathology – বাক রোগবিজ্ঞান
    • Spermology – বীজবিজ্ঞান
    • Splanchnology – আন্তরযন্ত্র বিজ্ঞান
    • Sponge biology‎ – স্পঞ্জ জীববিজ্ঞান
    • Statistical genetics‎ – পরিসংখ্যানিক বংশাণুবিজ্ঞান
    • Stomatology – মুখবিজ্ঞান
    • Structural bioinformatics‎ – সাংগঠনিক জীবতথ্যবিজ্ঞান
    • Structural Biology – সাংগঠনিক জীববিজ্ঞান
    • surgical pathology – শল্য রোগবিজ্ঞান
    • Synantherology – তারকাগোত্রীয় উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • Syndesmology – বন্ধনীবিজ্ঞান
    • Synecology – জীবসম্প্রদায় বাস্তুবিজ্ঞান
    • Synthetic biology – কৃত্রিম জীববিজ্ঞান
    • Systematic Biology – সাংস্থানিক জীববিজ্ঞান
    • Systematics – শ্রেণীবদ্ধবিজ্ঞান
    • Systems biology – সংস্থান জীববিজ্ঞান
    • Systems ecology‎ – সংস্থান বাস্তুবিজ্ঞান
    • Systems microbiology – সংস্থান অণুজীববিজ্ঞান
    • Systems neuroscience – সংস্থান স্নায়ুবিজ্ঞান

    T

    • Taxi dermatology – চর্মসংরক্ষণ বিজ্ঞান
    • Taximetrics / numerical taxonomy – শ্রেণীবিন্যাসমিতি
    • Taxonomy – শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Tectology – সাংগঠনিক অঙ্গসংস্থানবিজ্ঞান
    • Teratology – ভ্রূণ গঠন-বিকৃতি বিজ্ঞান
    • Teuthology – মস্তকপদী বিজ্ঞান
    • Theoretical Biology – তাত্ত্বিক জীববিজ্ঞান
    • Theoretical ecology‎ – তাত্ত্বিক বাস্তুবিজ্ঞান
    • Tissue engineering – কলা প্রকৌশল
    • Torpedology – চ্যাপ্টাদেহী মৎস্যবিজ্ঞান
    • Toxicology – বিষক্রিয়া বিজ্ঞান
    • transcriptomics – প্রতিলিপিসমগ্র বিজ্ঞান
    • Transgenics – বংশাণু স্থানান্তর বিজ্ঞান
    • Traumatology – আঘাতবিজ্ঞান
    • Trichology – কেশবিজ্ঞান
    • Trophic ecology‎ – ভক্ষণভিত্তিক বাস্তুবিজ্ঞান
    • Trophology – পুষ্টিবিজ্ঞান

    U

    • Urology – মূত্রবিজ্ঞান

    V

    • Vertebrate zoology – মেরুদণ্ডী প্রাণীবিজ্ঞান
    • Veterinary microbiology – পশুচিকিৎসা অণুজীববিজ্ঞান
    • Virology – ভাইরাস বিজ্ঞান
    • Virophysics – ভাইরাস পদার্থবিজ্ঞান
    • Virus taxonomy‎ – ভাইরাস শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Vision Science – দৃষ্টি বিজ্ঞান

    W

    • Water microbiology – জলীয় অণুজীববিজ্ঞান
    • Wildlife Biology – বণ্যপ্রাণী জীববিজ্ঞান

    X

    • Xenobiology – বিষম জীববিজ্ঞান

    Z

    • Zooarchaeology – প্রাণীপ্রত্নবিজ্ঞান
    • Zoogeography – প্রাণীভূগোল
    • Zoology – প্রাণীবিজ্ঞান
    • Zoophytology – উদ্ভিদ-সদৃশ প্রাণীবিজ্ঞান
    • Zoosemiotics – প্রাণী যোগাযোগ বিজ্ঞান
    • Zootomy – প্রাণী ব্যবচ্ছেদ বিজ্ঞান
    • Zymology – গাঁজনবিজ্ঞান
  • জীববিজ্ঞান

    জীববিজ্ঞান

    জীববিজ্ঞান (ইংরেজি: Biology) বিজ্ঞানের একটি শাখা যেখানে জীবজীবন সংক্রান্ত গবেষণা করা হয়। তাদের গঠন, বৃদ্ধি, বিবর্তন, শ্রেণীবিন্যাসবিদ্যার আলোচনাও এর অন্তর্ভুক্ত। আধুনিক জীববিজ্ঞান খুব বিস্তৃত একটি ক্ষেত্র, যেটির অনেক শাখা-উপশাখা আছে। আধুনিক জীববিজ্ঞান বলে, কোষ হচ্ছে জীবনের মূল একক, আর জিন হলো বংশগতিবিদ্যার মূল একক। আর বিবর্তন হলো একমাত্র প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে নতুন প্রজাতির জীব সৃষ্টি হয়।

    জীববিজ্ঞান

    কীসের উপর গবেষণা করা হচ্ছে, সে অনুযায়ী জীববিজ্ঞানের শাখাগুলোকে ভাগ করা হয়েছে; যেমন: জীবনের রসায়ন নিয়ে যে বিজ্ঞানে আলোচনা করা হয়, তাই হলো প্রাণরসায়ন বা জীবরসায়নউদ্ভিদবিজ্ঞান বা উদ্ভিদ-জীববিদ্যা হচ্ছে জীববিজ্ঞানের একটি শাখা যা জীবন্ত উদ্ভিদের বিষয়ে বৈজ্ঞানিক নিরীক্ষণ সংক্রান্ত কাজ করে থাকে[১]। আণবিক জীববিজ্ঞান শাখায় সমস্ত জীবিত বস্তুর প্রধানতম অণুসমূহ যথা নিউক্লিক অ্যাসিডপ্রোটিনের গঠন ও কাজ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। যে বিজ্ঞানে কোষ, কোষের আকার, প্রকৃতি, বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ গঠন, কোষবিভাজন ও শারীরবৃত্তীয় কাজ ইত্যাদি আলোচনা করা হ,য় তাকে কোষবিদ্যা বলে।[২]শারীরবিদ্যা শাখায় প্রাণিদেহের পুষ্টি, শ্বসন, ক্ষরণ, রেচন, জনন প্রভৃতি শারীরবৃত্তীয় কার্যাবলি আলোচনা করা হয়। বিবর্তনমূলক জীববিজ্ঞান একটি উপশাখা যেখানে প্রজাতির উৎপত্তি ও ক্রমবিবর্তন নিয়ে গবেষণা করা হয়। আর যেখানে জীবিত অর্গানিজমের বিস্তৃতি, বিন্যাস ও প্রাচুর্য এবং এসব অর্গানিজমের মধ্যে আন্তঃক্রিয়া ও পরিবেশের অন্যান্য উপাদানের সাথে এদের অন্তঃক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে পরিবেশ বিজ্ঞান বলে।

    জীববিজ্ঞানের উপ-শাখাগুলি নিযুক্ত গবেষণা পদ্ধতি এবং যে ধরনের পদ্ধতিতে অধ্যয়ন করা হয় তার উপর নির্ভর করে সংজ্ঞায়িত করা হয়। তাত্ত্বিক জীববিজ্ঞান গাণিতিক পদ্ধতি ব্যবহার করে পরিমাণগত মডেলগুলি গঠনের জন্য। অন্যদিকে পরীক্ষামূলক জীববিজ্ঞান প্রস্তাবিত তত্ত্বগুলির বৈধতা পরীক্ষা করার জন্য, জীবনের অন্তর্নিহিত প্রক্রিয়াগুলি বুঝার জন্য এবং কীভাবে অন্তর্নিহিত প্রক্রিয়াগুলি কাজ করে তা বোঝার জন্য অনুশীলনামূলক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। সেই সাথে কিভাবে জীবন তৈরি হল এবং ৪ বিলিয়ন বছর আগে থেকে শুরু হওয়া বিবর্তনের মাধ্যমে কিভাবে অজৈবনিক বস্তু থেকে জটিল ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমান জীবকুলের আবির্ভাব ঘটল তা পরীক্ষামূলক জীববিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়। [৩] [৪] [৫]

    ইতিহাস

    জীববিজ্ঞান এর পাশ্চাত্য প্রতিশব্দ Biology, যেটি দুটি গ্রিক শব্দ βίος(bios) যার অর্থ জীবন , এবং λογία(logia) যার অর্থ জ্ঞান থেকে এসেছে, প্রথম ১৮০০ সালে জার্মানিতে ব্যবহৃত হয় এবং পরবর্তীতে ফরাসি প্রকৃতিবিদ জঁ-বাতিস্ত দ্য লামার্ক জীবিত বস্তু সংক্রান্ত অনেকগুলি শাস্ত্রের ধারক নাম হিসেবে এটির প্রচলন করেন। পরবর্তীতে ইংরেজ প্রাণীবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ টমাস হেনরি হাক্সলি জীববিজ্ঞানকে একটি একত্রীকারক শাস্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। হাক্সলি জোর দিয়ে বলেন যে, উদ্ভিদপ্রাণী বিষয়ক শাস্ত্রের প্রথাগত বিভাজন অর্থহীন এবং সমস্ত জীবিত বস্তু একত্রে আলোচনা করা উচিত। হাক্সলির এই ধারণা আজ আরও বেশি করে প্রযোজ্য, কেননা বিজ্ঞানীরা বুঝতে পেরেছেন যে, অনেক নিম্ন স্তরের জীব প্রাণী বা উদ্ভিদ কোনোটাই নয়। বর্তমানে জীববিজ্ঞান আণবিক, কোষীয়, জীবদেহ ও জীবসংগ্রহ – এই চারটি মূল স্তরক্রমে বিভক্ত। জীববিজ্ঞান প্রাকৃতিক বিজ্ঞান এবং চিকিৎসা থেকে তার নিজস্ব একটি শৃঙ্খলার মাধ্যমে ১৯ শতকের মধ্যভাগে বিকশিত হয়েছিল। রসায়ন এবং পদার্থবিজ্ঞানের পাশাপাশি এটি এখন বিদ্যালয়ে সাধারণত বিজ্ঞানের উপর পাঠদান করা হয় তার মধ্যে একটি।[৬]

    অ্যান্টন ভ্যান লিয়ুভেনহয়েকের মাইক্রোস্কোপ আবিষ্কারের পর নাটকীয় উন্নতিতে জীববিজ্ঞানটি দ্রুত বিকাশ শুরু করে। এরপরেই পণ্ডিতগণ শুক্রাণু, ব্যাকটেরিয়া, ইনফুসোরিয়া এবং অণুবীক্ষণিক জীবনের বৈচিত্র্য আবিষ্কার করেছিলেন। জেন শাওয়ামারডাম কীটতত্ত্বে ব্যবচ্ছেদস্টেইনিং (অণুবীক্ষনিক জীব বোঝার জন্য স্যাম্পলকে ডাই এবং স্টেইনিং করার কৌশল) প্রথার মাধ্যমে নতুন আণুবীক্ষণিক মৌলিক কৌশল বিকশিত করতে সাহায্য করেছিলেন। [৭]

    মাইক্রোস্কোপির অগ্রগতিতে জীববিজ্ঞানে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে, বেশ কয়েকজন জীববিজ্ঞানী কোষের কেন্দ্রীয় গুরুত্বের দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন। এর পরে, ১৮৩৮ সালে, স্কীলডেন এবং সোয়ান এখন সার্বজনীন স্বীকৃত এমন ধারনার দুটি সেই সময় প্রচার করেছিলেন (১) প্রাণীর মৌলিক একক কোষ এবং (২) পৃথক কোষেই জীবন সব বৈশিষ্ট্য থাকে। কিন্তু একটি ধারণা তারা বিরোধিতা করেছিলেন (৩) সব কোষগুলি অন্যান্য কোষগুলির বিভাজন থেকে আসে। রবার্ট রেমাক এবং রুডল্ফ ভার্চোর কাজের জন্য ধন্যবাদ, তাদের কাজের জন্যই তৃতীয় ধারণাটি সফল হয়। ১৮৬০ এর দশকের মধ্যে বেশিরভাগ জীববিজ্ঞানীরাই তিনটি তত্ত্বকেই গ্রহণ করেছিলেন পরে যা কোষ তত্ত্ব হিসাবে পরিচিত লাভ করে। [৮] [৯]

    আধুনিক জীববিজ্ঞানের ভিত্তি

    আণবিক জীববিজ্ঞান

    আণবিক জীববিজ্ঞান, যাতে জীবপদার্থবিজ্ঞান ও জীবরসায়ন অন্তর্গত শাখা থেকে আধুনিক জীববিজ্ঞানের সবচেয়ে মৌলিক অবদানগুলি এসেছে। সমস্ত জীবিত বস্তুর প্রধানতম অণুসমূহ যথা নিউক্লিক অ্যাসিডপ্রোটিন-এর গঠন ও কাজ সম্পর্কে এখন আমরা অনেক কিছু জানি। বংশগতির কৌশল নির্ধারণ ছিল আধুনিক বিজ্ঞানের অন্যতম প্রধান আবিষ্কার। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হল কীভাবে জীবদেহের অণুগুলি বিপাক ক্রিয়া সম্পাদন করে জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি প্রক্রিয়া করে।

    কোষ জীববিজ্ঞান

    কোষ জীববিজ্ঞান বা কোষবিদ্যা আণবিক জীববিজ্ঞানের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। জীবিত বস্তুর কাঠামোগত একক কোষের কার্যপদ্ধতি বোঝার জন্য কোষ জীববিজ্ঞানীরা আণবিক পর্যায়ে কোষের বিভিন্ন অংশের গবেষণা করেন। জীবদেহ-সংক্রান্ত জীববিজ্ঞান, একইভাবে, কোষ জীববিজ্ঞানের সাথে জড়িত, কারণ একটি বহুকোষীয় জীব কীভাবে আচরণ করবে তা নির্ভর করে তার কোষগুলির কার্যাবলী ও এদের মধ্যকার মিথষ্ক্রিয়ার উপর। বহুকোষীয় জীবদেহের গবেষণার মধ্যে রয়েছে এগুলির বৃদ্ধি ও বিকাশ (বিকাশ জীববিজ্ঞান), এবং এগুলি কীভাবে কাজ করে (শারীরবিদ্যা)। এছাড়াও মস্তিষ্কস্নায়ুতন্ত্র সংক্রান্ত গবেষণা (স্নায়ুশারীরবিদ্যা) এবং প্রাণী আচরণ (ethology) গুরুত্বপূর্ণ।

    বিবর্তন

    diagram showing Natural selection favoring predominance of surviving mutation

    গাঢ় বর্ণের একটি জনসংখ্যার প্রাকৃতিক নির্বাচন

    জীববিজ্ঞানের একটি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক ধারণা হল বিবর্তনের মাধ্যমে জীবন পরিবর্তন হয় এবং বিকাশ লাভ করে এবং পরিচিত সমস্ত জীবন-রূপের একটি সাধারণ উত্স রয়েছে। বিবর্তন তত্ত্ব নির্দেশ করে যে, পৃথিবীতে সমস্ত জীব, জীবিত এবং বিলুপ্তপ্রায় উভয়ই একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ বা পৈত্রিক জিন পুল থেকে বিবর্তিত হয়েছে। সমস্ত জীবের এই সর্বজনীন সাধারণ পূর্বপুরুষ প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন বছর আগে আবির্ভূত হয়েছিল বলে বিশ্বাস করা হয়। [১০] জীববিজ্ঞানীরা জিনগত কোডকে সর্বব্যাপী সমস্ত ব্যাকটিরিয়া, আর্কিয়া এবং ইউক্যারিওটসের (দেখুন: জীবনের উৎস ) সর্বজনীন সাধারণ বংশোদ্ভূত তত্ত্বের পক্ষে যথাযথ প্রমাণ হিসাবে গণ্য করেন। [১১]

    “বিবর্তন” শব্দটি ১৯০৯ সালে জিন-ব্যাপটিস্ট ডি ল্যামার্ক দ্বারা বৈজ্ঞানিক অভিধানে প্রবর্তিত হয়েছিল, [১২] এবং পঞ্চাশ বছর পরে চার্লস ডারউইন বিবর্তনের চালিকা শক্তি হিসাবে প্রাকৃতিক নির্বাচনের বৈজ্ঞানিক মডেল পেশ করেছিলেন। [১৩] [১৪] [১৫] (আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেস বিবর্তনের ধারণাটি নিয়ে গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সহায়তা করার কারণে এই ধারণার সহ-আবিষ্কারক হিসাবে স্বীকৃত হন।) [১৬] বিবর্তনটি এখন পৃথিবীতে প্রাপ্ত জীবনের বিস্তর পরিবর্তনগুলি ব্যাখ্যা করতে ব্যবহৃত হয়।

    ডারউইন তার তত্ত্বে বলেছেন যে, প্রাকৃতিক নির্বাচন বা নির্বাচনী প্রজনন প্রক্রিয়াগুলোর মাধ্যমে কোনো একটি প্রজাতি বৃদ্ধি পায় বা মারা যায়। [১৭] তত্ত্বের আধুনিক সংশ্লেষণে জেনেটিক ড্রিফটকে বিবর্তনীয় বিকাশের অতিরিক্ত প্রক্রিয়া হিসাবে গ্রহণ করা হয়েছে। [১৮]

    শক্তি

    জীবিত জীবের বেঁচে থাকা নির্ভর করে শক্তির অবিচ্ছিন্ন সরবরাহের উপর। জীবের শরীরস্থ রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া যা এর গঠন এবং কার্যকারিতার জন্য দায়ী সেই রাসায়নিকগুলো তার খাদ্য হিসাবে যে পদার্থগুলি গ্রহণ করা হয় তা থেকে শক্তি আহরণ করে। ঐ শক্তিকে রূপান্তর করে নতুন কোষ গঠনে সহায়তা করে এবং তাদের স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। এই প্রক্রিয়াতে, রাসায়নিক পদার্থের অণুগুলি যা খাদ্য গঠন করে তা দুটি ভূমিকা পালন করে; প্রথমত, এগুলিতে এমন একটি শক্তি রয়েছে যা জীবের জৈবিক কাজে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় রূপান্তর করা যায় ও পুনর্ব্যবহার করতে পারে; দ্বিতীয়ত, খাদ্যটি নতুন অণু কাঠামোতে (বায়োমোলিকুলস) রূপান্তরিত হতে পারে যা সেই জীবের জন্য ব্যবহারযোগ্য ও উপকারী।

    একটি বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে শক্তি প্রদানকারী জীবগুলি নির্মাতা বা অটোট্রোফ হিসাবে পরিচিত। এ জাতীয় প্রায় সমস্ত জীবই মূলত সূর্য থেকে তাদের শক্তি আহরণ করে। [১৯] গাছপালা এবং অন্যান্য ফোটোট্রফগুলি সৌর শক্তি ব্যবহার করে সালোকসংশ্লেষণ নামে পরিচিত একটি প্রক্রিয়ায় সংগৃহিত কাঁচামালকে জৈব রেণুগুলিতে রূপান্তরিত করে যেমন এটিপি, যার বন্ডগুলি শক্তি যোগানোর জন্য সহজেই ভাঙ্গা যেতে পারে। [২০] কেমোট্রফ নামক অন্য কিছু জীব রয়েছে যারা ইকোসিস্টেমগুলিতে বেচে থাকার জন্য পুরোপুরি মিথেন, সালফাইডস বা অন্যান্য অ- লুমিনাল শক্তি উৎস থেকে আহরিত শক্তির উপর নির্ভর করে। [২১]

    জীবসমষ্টি জীববিজ্ঞান

    জীবসমষ্টি জীববিজ্ঞান ১৯৭০-এর দশকে এসে জীববিজ্ঞানের একটি অন্যতম প্রধান শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই শাখার কেন্দ্রীয় শাস্ত্র হল বিবর্তনমূলক জীববিজ্ঞান, যাতে বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের অবদান বহুদিন পরে যথাযথ মর্যাদা পায়।

    জীবসমষ্টি বংশগতিবিদ্যা (Population genetics), যেখানে জীবসমষ্টিগুলির ভেতরে জীনের পরিবর্তন গবেষণা করা হয়, এবং বাস্তুবিজ্ঞান, যেখানে প্রাকৃতিক আবাসস্থলে জীবসমষ্টির আচরণ গবেষণা করা হয়, ১৯৩০-এর দশক থেকে শাস্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। এই দুইটি শাস্ত্র ১৯৬০-এর দশকে জীবসমষ্টি জীববিজ্ঞান নামের এক দ্রুত বর্ধনশীল নতুন শাস্ত্র গঠন করে। এদের সাথে সম্পর্কিত একটি নতুন প্রাণী-আচরণ বিষয়ক শাস্ত্র হচ্ছে সমাজজীববিজ্ঞান, যেখানে প্রাণীদের মধ্যকার সামাজিক মেলামেশা এদের জীনের উপর কতটা প্রভাব ফেলে তার উপর গবেষণা করা হয়।

    জীবপ্রযুক্তি জীববিজ্ঞানের একটি আধুনিক ও প্রয়োগমুখী শাখা।
    জীববিজ্ঞানে মানুষের উপরও আণবিক, কোষীয় ও দৈহিক পর্যায়ে গবেষণা করা হয়। এই জ্ঞান মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নতি ও সুরক্ষার কাজে চিকিৎসাশাস্ত্রে কাজে লাগানো হয়। রীতি অনুযায়ী মানুষদেরকে সাধারণত জীববিজ্ঞানের আওতায় ধরা হয় না। নৃবিজ্ঞান ও অন্যান্য সামাজিক বিজ্ঞানে মানুষের বিভিন্ন দিক আলোচনা করা হয়।

    জীববিজ্ঞানের প্রাথমিক অমীমাংসিত সমস্যা

    জীবনের মৌলিক প্রক্রিয়াগুলি সম্পর্কে আমাদের বোঝার ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক দশকগুলিতে গভীর অগ্রগতি সত্ত্বেও, কিছু প্রাথমিক সমস্যা অমীমাংসিত রয়ে গেছে। কিছু উদাহরণঃ

    জীবনের উৎসঅ্যামিনো অ্যাসিড, নিউক্লিওটাইডস এবং লিপিডের মতো জৈবিক যৌগগুলির অভিজাত উৎস সম্পর্কে খুব ভালো প্রমাণ পাওয়া গেলেও এই অণুগুলি প্রথম কোষগুলি কীভাবে তৈরি করেছিল তা মূলত অস্পষ্ট। এরই সাথে সম্পর্কিত আরেকটি প্রশ্ন হল মহাশূন্যে প্রাণের অস্তিত্ব। যদি আমরা বুঝতে পারি যে, পৃথিবীতে জীবন কীভাবে উদ্ভূত হয়েছিল, তবে আমরা আরও নির্ভরযোগ্যভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারি যে, অন্যান্য গ্রহে জীবন উৎপন্ন করার জন্য কোন কোন শর্তগুলি পূরণ হওয়া প্রয়োজন।

    বয়স বৃদ্ধি – বর্তমানে বয়স বাড়ার অন্তর্নিহিত কারণ সম্পর্কে সঠিক তথ্য নেই। বয়স বৃদ্ধি নিয়ে থিওরিতে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক তত্ত্ব দেখা যায়।

    নির্দিষ্ট ধরন গঠনআমাদের প্রাথমিক পর্যায়ে পোকামাকড় ভ্রূণের মতো কিছু সিস্টেমে ধরন গঠনের একটি ভাল ধারণা রয়েছে তবে প্রকৃতির অনেকগুলি প্রজন্মের জীববৈচিত্র্যের কারণ সহজেই ব্যাখ্যা করা যায় না, যেমন: জেব্রার শরীরে ডোরাকাটাগুলো বা অনেক সাপ যেমন- প্রবাল সাপ । যদিও আমরা জানি যে নিদর্শনগুলি নির্বাচনী অ্যাক্টিভেশন বা জিনের দমন দ্বারা উৎপাদিত হয়েছে, এর মধ্যে অনেকগুলি জিন এবং তাদের নিয়ন্ত্রক প্রক্রিয়া অজানা রয়ে গেছে।

    জীববিজ্ঞান ও দর্শন

    দার্শনিক তত্ত্ব যেমন- বহুকাল দর্শনের পরিধির মধ্যে রেখে জীববিজ্ঞানকে প্রভাবিত করেছে, অপরদিকে জীববিজ্ঞানের আধুনিক বিকাশ দর্শনকেও প্রভূত পরিমাণে প্রভাবান্বিত করেছে। বর্তমান জীবন সম্পর্কে দার্শনিক আলোচনা জীববিজ্ঞানের সিদ্ধান্তের স্বীকৃতির ভিত্তিতেই করা হয়। এছাড়া জীববিজ্ঞানের বিকাশ দর্শনের জন্য আলোচনার নতুনতর সমস্যাও সৃষ্টি করেছে। এ সমস্ত সমস্যার মধ্যে জীবদেহের সামগ্রিকতার সংগে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ব্যবহারগত সম্পর্কের সমস্যাটি অন্যতম। জীববিজ্ঞানের সিদ্ধান্ত হচ্ছে যে, একটি জীবনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে যে একটি পূর্ণ সত্তা তৈরি করে, সেই সত্তার বাইরে এই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের অনুরূপ ব্যবহার সৃষ্টি করা সম্ভব নয়। ইংরেজিতে এই সমস্যাকে Wholism-এর সমস্যা বলে আখ্যায়িত করা হয়।[২২]

    চিত্রশালা

    • এনিমেলিয়া
    • প্লান্টি
    • ফানজাই
    • Stramenopila/Chromista – Fucus serratus
    • ব্যাকটেরিয়া – Gemmatimonas aurantiaca (- = 1 Micrometer)
    • Archaea – Halobacteria
    • ভাইরাস – Gamma phage
  • বাস্তুবিজ্ঞান

    বাস্তুবিজ্ঞান

    বাস্তুবিদ্যা (ইংরেজি: Ecology) : জীববিজ্ঞানের যে বিশিষ্ট শাখায় পরিবেশে বিন্যস্ত বিভিন্ন জীব ও তার পারিপার্শ্বিক জড় উপাদান এবং তাদের পারস্পরিক আন্তঃক্রিয়া, নির্ভরশীলতা ও মিথস্ক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা করা হয় তাকে বাস্তুবিদ্যা বা ইকোলজি বলে।[১]

    বাস্তুবিজ্ঞান

    পরিবেশবিজ্ঞানের ইংরেজি পরিভাষা Ecology ইকোলজিগ্রিক οίκος, ওইকোস অর্থাৎ “বাসস্থান” এবং λόγος লোগোস অর্থাৎ “বিদ্যা” ইংরেজি Ecology পরিভাষাটি এসেছে। ইকোলজি শব্দটি জার্মান বিজ্ঞানী “আর্নস্ট হেকেল” ১৮৬৬ সালে সর্বপ্রথম প্রণয়ন করেন।

    The scientific discipline of ecology addresses the full scale of life, from tiny bacteria to processes that span the entire planet. Ecologists study many diverse and complex relations among species, such as predation and pollination. The diversity of life is organized into different habitats, from terrestrial (middle) to aquatic ecosystems.
  • বায়োজেনেসিস

    বায়োজেনেসিস

    একটি জীব থেকেই কেবল আরেকটি জীবের সৃষ্টি সম্ভব। এই তত্ত্বকেই বায়োজেনেসিস বলা হয়। এ ব্যাপারে ল্যাটিন ভাষায় একটি প্রবাদ আছে “জীবন থেকেই জীবনের উদ্ভব” লুইস পাস্তুরের পরীক্ষণ ও পর্যবেক্ষণ থেকে বায়োজেনেসিস মতবাদটি প্রতিষ্ঠিত হয়। অপরদিকে অ্যাবায়োজেনেসিস বায়োজেনেসিসের সম্পূর্ণ বিপরীত। অর্থাৎ অ্যাবায়োজেনেসিস অনুসারে জড় থেকে জীবের সৃষ্টি সম্ভব।

    বায়োজেনেসিস

    বায়োজেনেসিস শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন হেনরি চার্লটন বাস্তিয়ান। কিন্তু তিনি বায়োজেনেসিস বলতে জড় থেকে জীব সৃষ্টির পদ্ধতিকে বুঝিয়েছিলেন। পরে থমাস হাক্সলি জড় থেকে জীব সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে অ্যাবায়োজেনেসিস বলে অবিহিত করেন। তিনি বায়োজেনেসিসের সংজ্ঞা পুনর্গঠন করেন। তিনি একটি জীব থেকে নতুন জীব সৃষ্টির পদ্ধতিকে বায়োজেনেসিস বলেন।[১] মহাবিশ্বের ইতিহাসে,[২] এক বার অ্যাবায়োজেনেসিস হয়েছে এবং সেটি ছিল প্রথম প্রাণ সৃষ্টির সময়।[৩][৪][৫]

    প্রাচীন গ্রীকরা বিশ্বাস করত জড় বস্তু থেকে জীবের সৃষ্টি সম্ভব। তারা বিশ্বাস করত গায়া দেবী পাথর থেকে জীবন সৃষ্টি করতে পারেন, এই পদ্ধতিটি ‘জেনেরিও স্পন্টানায়ি’ নামে পরিচিত ছিল। এরিস্টটল এটি না মানলেও তিনি বিশ্বাস করতেন অন্য ধরনের জীব কিংবা মাটি থেকে নতুন জীবের সৃষ্টি সম্ভব। এই স্বতঃস্ফূর্ত সৃষ্টি বা অ্যাবায়োজেনেসিস তত্ত্ব সপ্তদশ শতাব্দীর শেষ ভাগ পর্যন্ত টিকে ছিল। কিন্তু ১৭দশ শতাব্দীর শেষ দিকে এ মতবাদের বিরুদ্ধে নানা পর্যবেক্ষণ ও বিতর্কের শুরু হয়। বৈজ্ঞানিক উন্নতির সাথে সাথে নানা মত, ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও সংস্কারের কারণে ব্যাপারটি আরও ঘোলাটে হয়ে উঠে।

    ১৬৬৮ সালে ফ্রান্সেস্কো রেডি নামের একজন ইতালীয় চিকিৎসক প্রমাণ করেন উঁচু স্তরের জীব জড় বস্তু থেকে সৃষ্টি হয় নি। কিন্তু অ্যাবায়োজেনেসিস মতবাদের অনুসারীরা দাবি করে এই মতবাদটি অণুজীবের ক্ষেত্রে খাটে না। তাই তারা বলে অণুজীব জড় বস্তু থেকে সৃষ্টি হতে পারে। ১৭৬৫ সালে জন নিধাম ফ্লাস্কে মুরগির মাংসের জুস নেন এবং তা সিদ্ধ করেন। তারপর তিনি তা ঠাণ্ডা করে অপেক্ষা করেন। এতে অণুজীব জন্ম নেয় এবং তিনি দাবী করেন এই পরীক্ষা স্বতঃস্ফূর্ত সৃষ্টি তথা অ্যাবায়োজেনেসিসের স্বপক্ষে। অর্থাৎ মাংসের জুস থেকে অণুজীব সৃষ্টি হয়েছে। ১৭৬৮ সালে লাজ্জারো স্পালানজানি পুনরায় নিধামের পরীক্ষাটি করেন কিন্তু ফ্লাস্ক থেকে বাতাস সরিয়ে নেন। ফলস্বরূপ কোন অণুজীব জন্ম নেয় নি। যা অ্যাবায়োজেনেসিসের বিপক্ষে। কিন্তু নিধাম দাবী করেন স্বতঃস্ফূর্ত সৃষ্টির জন্য বায়ু আবশ্যক ফলে স্পালানজানির ফ্লাস্ক থেকে বায়ু অপসারণ করায় অণুজীব জন্ম নেয় নি। নিধামের প্রথম পরীক্ষার প্রায় ১০০ বছর পর দুজন বিজ্ঞানী বায়ু নিয়ে বিতর্কের সমাধানের চেষ্টা করেন। ১৮৩৬ সালে ফ্রেঞ্জ স্কালজ বায়ু নিরুদ্ধ ফ্লাস্কে সেদ্ধ মাংসের জুস নেন এবং তাতে অ্যাসিড দ্রবনের মধ্য দিয়ে বায়ু প্রবেশ করান। একি ভাবে থিওডোর স্চোয়ান উত্তপ্ত নলের মধ্য দিয়ে বায়ু প্রবেশ করান। দেখা যায় দুই ক্ষেত্রেই কোন অণুজীব জন্ম নেয় নি। এই পরীক্ষাদ্বয় অ্যাবায়োজেনেসিসের বিপক্ষে। কিন্তু অ্যাবায়োজেনেসিস মতবাদের অনুসারীরা দাবী করে অ্যাসিড ও তাপ বায়ুর গুণ পরিবর্তন করে যার ফলে অণুজীব জন্ম নেয় না। এই বিতর্কের অবসান হয় যখন বিজ্ঞানীরা বায়ুকে তুলা পূর্ণ নলের প্রবেশ করান। তুলায় বাতাসের মধ্যকার অণুজীব আটকা পড়ে ফলে মাংসে অণুজীব জন্ম নেয় না।অবশেষে লুইস পাস্তুর একটি লম্বা ও বাঁকা হাসের ঘাড়ের মত ফ্লাস্ক ব্যবহার করেন। বাতাস তাতে সহজেই প্রবেশ করতে পারে কিন্তু তাতে কোন অণুজীব জন্ম নেয় না কারণ অণুজীবরা ‘U’ আকারের বাঁকা নলে আটকা পড়ে এবং মাংস পর্যন্ত পৌছাতে পারে না। তিনি প্রমাণ করেন যে পূর্বে কোন জীব দ্বারা সংক্রমিত হওয়া ছাড়া নতুন জীবের সৃষ্টি সম্ভব নয়। পাস্তুর তার পরীক্ষার ফলাফল পাওয়ার পর বলেন “ স্বতঃস্ফূর্ত সৃষ্টি একটি স্বপ্ন মাত্র”

  • বাইভালভিয়া

    বাইভালভিয়া

    বাইভালভিয়া পূর্ববর্তী শতকে Lamellibranchiata এবং Pelecypoda ইত্যাদি নামে পরিচিত ছিল। এরা মূলত মলাস্কা পর্বের এক ক্ষুদ্র গোষ্ঠী। বাইভালভিয়ারা মস্তকবিহীন,এদের RADULA (কাইটিন নির্মিত বিশেষ রেতি জিহ্বা), অডন্টোফোর (RADULA-কে ধরে রাখার অঙ্গাণু) নেই।গুগলি, শামুক,ঝিনুক প্রভৃতি এ শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।

    বাইভালভিয়া

    ইতিহাস

    সম্প্রতি প্রাপ্ত EARLY CAMBRIAN বাইভালভ প্রায় ৫০০ মিলিয়ন বছর পূর্বের ফসিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে এর জীবন্ত প্রজাতির স্ংখ্যা প্রায় ৯২০০,যার মধ্যে রয়েছে ১২৬০ টি প্রজাতি এবং ১০৬টি গোত্র। বাইভালভিয়ার ৮০০০ এরও বেশি প্রজাতি জলজ। এদের সর্বশেষ আবিষ্কৃত গোত্রটি হলো- Veneridae যার ৬৮০ টিরও বেশি প্রজাতি রয়েছে।

    গঠন

    বাইভালভরা সাধারণত হেমোলিম্ফ (হিমোসিল নামক রক্তপূর্ণ প্রকোষ্ঠ থাকে), দুইটি সদৃশ খোলকের জন্য এদের ‘বাইভালভিয়া’ বলা হয়। খোলসগুলো ক্যালসিয়াম কার্বনেট দিয়ে গঠিত এবং নমনীয় লিগামেন্ট দ্বারা স্ংযুক্ত থাকে। খোলকের দুইটি অংশকে ভালভ বলা হয়, এগুলোর উভয়টিতে দাঁতের মতো অঙ্গ থাকে। বাইভালভিয়াদের দেহ দ্বি-পার্শ্বীয় প্রতিসম, ভালভগুলো মধ্যরেখীয় তলে স্ংযুক্ত। একটি পরিণত বাইভালভিয়ার খোলসের আকার ১ মিলিমিটারের ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ হ্তে শুরু করে ১ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে বেশিরভাগেরই খোলসের আকার ১০সেমি (৪ ইঞ্চি) অপেক্ষা বেশি হয়না।

    খাদ্যাভাস

    বাইভালভিয়ারা টেনিডিয়া নামক বিশেষ ফুলকা দ্বারা খাদ্য গ্রহণ ও শ্বসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করে থাকে।এরা ছাঁকন পদ্ধতিতে খাদ্য গ্রহণ করে।

    স্বভাব ও বাসস্থান

    বাইভালভিয়া শ্রেণির সদস্যরা সাধারণত স্বাদু জল কিংবা নোনা জলে বসবাস করে। এরা শিকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে কাদামাটিতে লুকিয়ে থাকে। পরিণত বাইভালভিয়ারা সমুদ্র তলদেশে পাথর কিংবা কোনো দৃঢ় কোনো অবলম্বনের সাথে আটকে থাকে। এদের == স্ক্যালপ এবং == ফাইল শেল প্রজাতি মুক্ত সাঁতারু।

    বিবিধ

    বাইভালভিয়া শ্রেণির শামুক ও ঝিনুক মানুষের প্রিয় খাদ্যে পরিণত হয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে মেরিকালচার এবং হ্যাচারির মাধ্যমে এদের চাষ করা হচ্ছে। রোমানরা বহু পূর্ব হ্তেই শামুক ও ঝিনুক খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করত। ঝিনুক মুক্তোর অন্যতম উৎস, এ কারণেও মানুষের নিকট এর চাহিদা রয়েছে। এছাড়া বাইভালভরা প্রাকৃতিকভাবে পরিবেশ দূষণ রোধে সক্ষম। শিল্পীরা শিল্পকর্মের অন্যতম উপাদান হিসেবেও শামুক, ঝিনুক এবং অন্যান্য বাইভালভদের ব্যবহার করে থাকে।

    বাইভালভিয়া
    সময়গত পরিসীমা: Early Cambrian – recent[১][২] প্রাকЄЄসিডেকাপাট্রাজুক্রিপ্যা
    “Acephala”, from Ernst Haeckel‘s Kunstformen der Natur (1904)
    বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
    জগৎ/রাজ্য:অ্যানিম্যালিয়া (Animalia)
    পর্ব:Mollusca
    শ্রেণী:Bivalvia
    Linnaeus, 1758
    Subclasses
    Heterodonta Palaeoheterodonta Protobranchia Pteriomorphia And see text
    Shell of the giant clam (Tridacna gigas)

    জায়ান্ট কামের খালি খোলস
    (Tridacna gigas)

    Sword razor

    সোর্ড রেজরের খালি খোলস
    (Ensis ensis)

  • বর্গ (জীববিদ্যা)

    বর্গ (জীববিদ্যা)

    বর্গ হচ্ছে জীববিদ্যার একটি বিশেষ শ্রেণীবিন্যাসবৈদ্যিক ধাপ যা শ্রেণীর নিচে ও গোত্রের উপরে অবস্থান করে।

    জার্মান উদ্ভিদবিজ্ঞানী আউগুস্টুস কুইরিনুস রিভিনুস ১৬৯০-এর দশকে উদ্ভিদের শ্রেণীকরণ করেন ও এ নিয়ে ধারাবাহিক কিছু রচনা প্রকাশিত করেন। সেখানেই প্রথমবারের মত শ্রেণীবিন্যাসের আলাদা ধাপ হিসেবে “বর্গ” ধারণাটি প্রথম ব্যবহার করা হয়। পরবর্তীতে সুয়েডীয় জীববিজ্ঞানী কার্ল লিনিয়াস ১৭৩৫ সালে তার সিস্তেমা নাতুরায়ে গ্রন্থে উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতের শ্রেণীকরণ করতে গিয়ে “বর্গ” ধারণাটিকে সমন্বিতভাবে সর্বত্র প্রয়োগ করেন।

    বর্গ (জীববিদ্যা)

    জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাসের প্রধান আটটি শ্রেণীবিন্যাস ক্রমের নিন্মতম থেকে উচ্চতম পর্যায় পর্যন্ত ক্রমবিভক্তি। অন্তর্বর্তী অপ্রধান ক্রমগুলো দেখানো হয়নি।

    বর্গ হলো জৈবিক শ্রেণিবিন্যাসের একটি ক্রমধারা

  • জীবন

    জীবন

    জীবন বা প্রাণ এমন একটি অবস্থা, যা একটি জীবকে জড় পদার্থ (প্রাণহীন) ও মৃত অবস্থা থেকে পৃথক করে। খাদ্য গ্রহণ, বিপাক, বংশবৃদ্ধি, পরিচলন ইত্যাদি কর্মকাণ্ড জীবনের উপস্থিতি নির্দেশ করে। জীবন বা প্রাণ বিষয়ক শিক্ষা জীববিজ্ঞানে আলোচিত হয়। প্রোটোপ্লাজমের ক্রিয়াকলাপকে জীবন বলা হয়।

    জীবন হল সেই সকল চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য যা জৈবিক প্রক্রিয়াসম্পন্ন ভৌত সত্তাগুলোকে আলাদা করে চিহ্নিত করে, যেমন, কোষীয় সংকেত এবং স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে বেঁচে থাকার প্রক্রিয়া, যেসব বস্তুগুলোর এই গুণাবলিগুলো নেই, হয় এইসব গুণগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে, নয় তো বা তাদের এই গুণগুলো কোনদিন ছিলই না, সাধারণত এগুলোকে জড় বস্তু হিসাবে শ্রেণীবিভক্ত করা হয়। জীবন বিভিন্ন রূপে বিদ্যমান, যেমন উদ্ভিদ, প্রাণী, ছত্রাক, প্রোটিস্ট, আর্কিয়া এবং ব্যাকটেরিয়া। কখন কখনও রূপের এই মানদণ্ড দ্ব্যর্থহীন ভাবেও প্রকাশ পেতে পারে এবং সেইসাথে ভাইরাস, ভিরোয়েড, বা সম্ভাবনাময় কৃত্রিম জীবনকে “জীবন্ত” জীব হিসাবে ব্যাখ্যা করতেও পারে আবার নাও করতে পারে। জীববিদ্যা জীবন সম্পর্কিত অধ্যয়নের জন্য বিজ্ঞানের মূল অংশ, যদিওবা বিজ্ঞানে অন্যান্য অনেক শাখাও এর সাথে জড়িত।

    জীবনের সংজ্ঞা প্রদান কিছুটা বিতর্কিত। তবে বর্তমানে প্রচলিত সংজ্ঞায় বলা হয় জীব হোমিওস্ট্যাটিস মেনে চলে, যা কোষ দিয়ে গঠিত, রূপান্তরিত হয়, বৃদ্ধি পায়, পরিবেশের সাথে অভিযোজিত হয়, উদ্দীপকের প্রতি ক্রিয়াশীল হয়, এবং প্রজননে সক্ষম। এছাড়া জীববিজ্ঞান বিষয়ক আরও অনেক সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে, এবং জীবনের কিছু কিছু ব্যতিক্রমধর্মী উদাহরণও বিদ্যমান রয়েছে, যেমন ভাইরাস। দীর্ঘদিন ধরে জীবনের বলতে কি বুঝায় তা জানার চেষ্টা চলছে এবং জীবন্ত বস্তুর বৈশিষ্ট্য ও বিকাশ নিয়ে অনেক তত্ত্ব প্রদান করা হয়েছে। কয়েকটি প্রধান তত্ত্বের একটি হল – বস্তুবাদ, এটি এমন এক বিশ্বাস যাতে বলা হয় সবকিছু উৎপত্তি হয়েছে কোন বস্তু থেকে এবং জীবন হল এর একটি জটিল রূপ; আরেকটি তত্ত্ব হাইলোমর্ফিজম হল এমন একটি বিশ্বাস যাতে বলা হয় সবকিছু বস্তু ও আকারের সমন্বয়, এবং জীবন্ত বস্তুর রূপ হল এর আত্মা; আরেকটি তত্ত্ব- স্বতঃজনন হল এমন একটি বিশ্বাস যাতে বলা হয় জীবন জড় পদার্থ থেকে পৌনপনিকভাবে বিকশিত হয়; এবং প্রাণবাদ হল এমন একটি বিশ্বাস যাতে বলা হয়ে থাকে জীবদের “জীবন প্রণালি” বা “প্রাণের কণিকা” থাকে। আধুনিক সংজ্ঞায় বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক শাখা থেকে উপাত্ত গ্রহণ করায় তা জটিলতর হয়েছে। জৈবপদার্থবিদগণ রাসায়নিক প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে অনেক সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। কয়েকটি জীব প্রক্রিয়া তত্ত্ব হল – গাইয়া অনুসিদ্ধান্ত হল এমন একটি ধারণা যেখানে পৃথিবী প্রকৃতপক্ষে নিজেই জাগ্রত। অন্য একটি তত্ত্বে বলা হয় জীবন হল বাস্তুতন্ত্রের একটি বৈশিষ্ট্য; এবং অন্য একটি তত্ত্ব সম্পর্কে বলা যায় জীবন হল জীববিজ্ঞানের জটিল প্রক্রিয়া ব্যবস্থা, যা গাণিতিক জীববিজ্ঞানের একটি শাখা। জীবনের উৎপত্তিতে জড় পদার্থ, যেমন সাধারণ জৈব যৌগ থেকে প্রাকৃতিক উপায়ে জীবনের উত্থান সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়। প্রায় সকল জীবের ক্ষেত্রে যেসকল বৈশিষ্ট্য একই হয়ে থেকে তার মধ্যে অন্যতম হল কিছু সুনির্দিষ্ট মূল রাসায়নিক উপাদান যা প্রাণরসায়নের সাধারণ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে প্রয়োজন।

    ৪.৫৪ বিলিয়ন বছর পূর্বে পৃথিবীর গঠনের কিছু সময় পর, ৪.৪১ বিলিয়ন বছর পূর্বে মহাসাগরসমূহের গঠনের পর প্রায় ৪.২৮ বিলিয়ন বছর পূর্বে পৃথিবীতে প্রথম জীবনের অস্তিত্বের সন্ধান পাওয়া যায়।[১][২][৩][৪] পৃথিবীর বর্তমান জীবন সম্ভবত আরএনএ জগৎ হতে উদ্ভূত, যদিও আরএনএ-ভিত্তিক জীবনই প্রথম নয়। যে প্রক্রিয়ায় জীবনের উৎপত্তি হয়েছে তা আজও অজানা রয়ে গেছে, যদিও অনেক অনুসিদ্ধান্ত গঠন করা হয়েছে এবং সেগুলো বেশিরভাগ সময়ই মিলার-উরি নিরীক্ষার উপর ভিত্তি করে। প্রাপ্ত প্রথম জীবনের অস্তিত্ব হল ব্যাকটেরিয়ার মাইক্রোফসিল, ৩.৪৫ বিলিয়ন বছর পুরাতন অস্ট্রেলিয়ান শিলায় অণুজীব পাওয়া গেছে বলে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।[৫][৬] ২০১৬ সালের জুলাই মাসে বিজ্ঞানীরা ৩৫৫টি জিনের সেট প্রাপ্তির প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যাদের সকল জীবের সর্বশেষ সার্বজনীন একই পূর্বপুরুষ বলে উপস্থাপন করা হয়।[৭]

    পৃথিবীতে জীবনের পরম্পরার শুরু থেকে ভূতাত্ত্বিক সময়ের ভিত্তিতে তা পরিবেশকে পরিবর্তিত করেছে। বেশিরভাগ বাস্তুতন্ত্রে বেঁচে থাকার জন্য জীবনকে বিভিন্ন ধরনের অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হয়েছে। কিছু অণুজীব, যেমন এক্সট্রিমোফিল শরীরগত ও জৈবরাসায়নিকভাবে বিরূপ পরিবেশে বেড়ে ওঠতে পারে, যা পৃথিবীতে অন্য প্রাণের জন্য ক্ষতির কারণ। এরিস্টটল প্রথম ব্যক্তি যিনি জীবদের শ্রেণীবিন্যাস করেন। পরবর্তীতে কার্ল লিনিয়াস প্রজাতিদের শ্রেণীবিন্যাসের জন্য দ্বিপদ নামকরণের নিজস্ব পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। এছাড়া জীবনের নতুন গণ ও বিভাগে আবিষ্কৃত হয়, যেমন কোষ ও অণুজীব, যা জীবদের সম্পর্কের কাঠামোতে নাটকীয় পরিবর্তন নিয়ে আসে। কোষ জীবনের ক্ষুদ্রতম একক ও গঠনতন্ত্র হিসেবে বিবেচিত। দুই ধরনের কোষ রয়েছে, সেগুলো হল প্রাক-কেন্দ্রিকসুকেন্দ্রিক। উভয়ই মেমব্রেনের সাথে সাইটোপ্লাজম দিয়ে গঠিত এবং অনেক বায়োমলিকিউল, যেমন প্রোটিন ও নিউক্লেইক এসিড থাকে। কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া নতুনভাবে কোষ উৎপন্ন হয়। এই প্রক্রিয়ায় একটি মাতৃ কোষ দুই বা ততোধিক অপত্য কোষে বিভাজিত হয়।

    যদিও এখন পর্যন্ত শুধু পৃথিবীতেই প্রাণের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, তবে তা শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ তা নয়। অনেক বিজ্ঞানীরা বহির্জাগতিক প্রাণের অস্তিত্বের ব্যাপারে ভাবছেন। কৃত্রিম জীবন হল জীবনের কোন রূপের কম্পিউটারাইজড নকল বা মানুষের তৈরি পুনর্গঠন, যা প্রাকৃতিক জীবন সম্পর্কিত পদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ব্যবহৃত হয়। মৃত্যু হল কোন জীবনে মধ্যে থাকা সকল জৈবিক প্রক্রিয়ার চিরস্থায়ী সমাপ্তি। বিলুপ্তি হল এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে কোন নির্দিষ্ট গণ, প্রজাতি একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। জীবাশ্ম হল কোন জীবের সংরক্ষিত বাকি অংশ।

    সংজ্ঞা

    জীবনকে সংজ্ঞায়িত করা বিজ্ঞানী ও দার্শনিকদের কাছে একটি দুরুহ ব্যাপার।[৮][৯][১০][১১][১২] এর একটি কারণ হল জীবন একটি প্রক্রিয়া, কোন বস্তু নয়।[১৩][১৪][১৫] যেকোন সংজ্ঞাই পৃথিবীতে বিদ্যমান সকল জানা ও অজানা প্রাণের জন্য এক হতে হবে।[১৬][১৭][১৮]

    জীবতত্ত্ব

    আরও দেখুন: জীব

    জীবনের বৈশিষ্ট

    যেহেতু জীবনের কোন দ্ব্যর্থতাহীন সংজ্ঞা নেই, বর্তমান বেশিরভাগ সংজ্ঞাই বিবৃতিমূলক। জীবন বলতে নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট ধারণকারী যেকোন বিষয়কে বুঝায়:[১৭][১৯][২০][২১][২২][২৩][২৪]

    1. হোমিওস্ট্যাটিস: অভ্যন্তরীণ অবস্থা অপরিবর্তিত রাখার ব্যবস্থা; উদাহরণস্বরূপ, তাপমাত্রা কমানোর জন্য ঘামা।
    2. গঠন: এক বা একাধিক কোষ গঠন। কোষ জীবনের মূল একক।
    3. বিপাক: রাসায়নিক ও শক্তি উৎপাদনের মাধ্যমে শক্তির রূপান্তর করে কোষীয় উপাদানগুলোর সংশ্লেষণ এবং অভ্যন্তরীণ উপাদানগুলোর বিশ্লেষণ। অভ্যন্তরীণ অবস্থা ঠিক রাখা এবং জীবনের সাথে সম্পর্কিত অন্য কিছু উৎপাদনের জন্য জীবন্ত বস্তুর জৈবশক্তির প্রয়োজন।
    4. বৃদ্ধি: বিশ্লেষণের চেয়ে সংশ্লেষণের পরিমাণ বেশি রাখা। একটি বর্ধনশীল জীবের আকারের সাথে এর অন্যান্য অংশ বৃদ্ধি পায়।
    5. অভিযোজন: সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা। এই ক্ষমতা বিবর্তন প্রক্রিয়ার একটি মৌলিক বিষয় এবং এর মাধ্যমে জীবের উত্তরাধিকার, খাদ্য শৃঙ্খল ও বাহ্যিক বিষয়সমূহ নির্ধারিত হয়।
    6. উদ্দীপনায় প্রতিক্রিয়া দেখানো: প্রতিক্রিয়া বিভিন্ন রকমের হতে পারে,
    7. প্রজনন: নতুন পৃথক জীবন জন্মদানের ক্ষমতা। এটা একক জীব কোষ থেকে অযৌন প্রজনন বা দুটি জীব কোষ থেকে যৌন প্রজননের মাধ্যমে হতে পারে।

    এই জটিল প্রক্রিয়াকে শারীরিক কার্যাবলি বলা হয়, যার কিছু ভৌত ও রাসায়নিক ভিত্তি এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে, যা জীবন ধারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

    বিকল্প সংজ্ঞা

    আরও দেখুন: এনট্রপি ও জীবন

    পদার্থবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে জীবন্ত বস্তুগুলোর তাপগতিবিদ্যার পদ্ধতিতে সুসংবদ্ধ আণবিক গঠন রয়েছে, যা নিজেই প্রজননে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং দীর্ঘ দিন ঠিকে থাকে অন্যদের উপর প্রভাব বিস্তার করে।[২৫][২৬] তাপগতিবিদ্যার দৃষ্টিকোণ থেকে জীবনকে একটি উন্মুক্ত পদ্ধতি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যা এর পারিপার্শ্বিকতা থেকে তার নিজের পূর্ণ অনুলিপি তৈরি করে থাকে।[২৭] ফলে, জীবন হল আত্মনির্ভরশীল রাসায়নিক পদ্ধতি যা ডারউইনীয় বিবর্তন মেনে চলতে সক্ষম।[২৮][২৯] এই সংজ্ঞার একটি বিশেষ দিক হল এটি জীবনের রাসায়নিক যোগসূত্রের দিকের চেয়েও বিবর্তনীয় প্রক্রিয়া থেকে জীবনকে আলাদা করতে মনোনিবেশ করে।[৩০]

    বাকিরা পদ্ধতিগত দৃষ্টিকোণ থেকে জীবনের সংজ্ঞা প্রদান করে যা আণবিক রসায়নের উপর নির্ভরশীল নয়। জীবনের একটি পদ্ধতিগত সংজ্ঞা হল জীবন্ত বস্তু স্ব-সংগঠিতস্ব-গঠনে (স্ব-প্রজনন) সক্ষম। এই সংজ্ঞার একটি ভিন্নরূপ হল স্টুয়ার্ট কফম্যান কর্তৃক প্রদত্ত সংজ্ঞা, যেখানে বলা হয়েছে জীবন একক অথবা একাধিক পদ্ধতি যা নিজের বা তাদের প্রজননে এবং কমপক্ষে একটি তাপগতিবিজ্ঞান কর্ম প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সক্ষম।[৩১] এই সংজ্ঞা বিভিন্ন সময়ে কর্ম পদ্ধতির ভূতপূর্ব উন্নয়নের ফলে বর্ধিত করা হয়েছে।[৩২]

    ভাইরাস

    মূল নিবন্ধ: ভাইরাস

    ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপের মাধ্যমে দেখা একটি এডিনো ভাইরাস

    ভাইরাসকে জীবিত জীব হিসাবে বিবেচনা করা উচিত হবে কিনা তা এখনও বিতর্কিত। এগুলোকে প্রায়শই জীবনের ধরন হিসাবে গণ্য না করে বরং শুধু অনুলিপি তৈরিকারক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[৩৩] এগুলোকে “জীবনের সংজ্ঞার শেষপ্রান্তের প্রাণীর” হিসাবে বর্ণনা করা হয়,[৩৪] কারণ এগুলো জিন ধারণ করে, প্রাকৃতিক নির্বাচন দ্বারা বিকশিত হয়[৩৫][৩৬] এবং স্ব-সন্নিবেশের মাধ্যমে নিজেদের একাধিক অনুলিপি তৈরি করে। তবে যাইহোক, ভাইরাসের বিপাক প্রক্রিয়া নেই এবং নিজের নতুন অনুলিপি তৈরি করার জন্য এদের একটি হোস্ট কোষের প্রয়োজন হয়। জীবনের উৎসের গবেষণার জন্য হোস্ট কোষগুলির মধ্যে ভাইরাস স্ব-সন্নিবেশের ক্রিয়া জানার প্রয়োজন রয়েছে, কারণ এটির মাধ্যমে জৈব অণুগুলোর স্ব-সন্নিবেশের মাধ্যমে জীবনের প্রারাম্ভ শুরু হওয়ার অনুসিন্ধান্তটি প্রমাণ করা যেতে পারে।[৩৭][৩৮][৩৯]

    জীবপদার্থবিজ্ঞান

    জীবন বলতে আসলে কি বুঝায় তা নুন্যতম প্রয়োজনীয় ঘটনাগুলোকে প্রকাশ করার জন্য, জীবনের আরও অন্যান্য জৈবিক সংজ্ঞা প্রস্তাব করা হয়েছে,[৪০] যার অনেকগুলো রাসায়নিক ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা। জীবপদার্থবিজ্ঞানীরা মন্তব্য করেছেন যে জীবিত বস্তু নেতিবাচক এনট্রপিতে উপর ভিত্তি করে কাজ করে।[৪১][৪২] অন্যভাবে বলতে গেলে, জৈবিক প্রক্রিয়াগুলোকে দেখা যেতে পারে জৈব অণুর অভ্যন্তরীণ শক্তির বিলম্বিত স্বতঃস্ফূর্ত ছড়িয়ে পড়া কিংবা বিচ্ছুরণ হিসাবে, যার মাধ্যমে এটি আরও সম্ভাব্য স্থায়ী একটি মাইক্রোস্টেটে পৌছায়। [৮] আরও বিস্তারিতভাবে, যেমন জন বার্নাল, এরভিন শ্রোডিঙার, ইউজিন উইগনার এবং জন এভরির মতো পদার্থবিজ্ঞানীদের মতে, জীবন হল এমন শ্রেণীভুক্ত ঘটনাগুলির সদস্য যা উন্মুক্ত কিংবা চলমান সিস্টেমগুলি তাদের অভ্যন্তরীণ এনট্রপি হ্রাস করতে সক্ষম, তবে সেটির বিনিময়ে সিস্টেমগুলি পরিবেশ থেকে বিনামূল্যে শক্তি কিংবা পদার্থ গ্রহণ করে যা পরবর্তীতে একটি অবনমিত রূপে এটি পরিবেশে প্রত্যাখ্যান করে।.[৪৩][৪৪]

    লিভিং সিস্টেম থিওরি

    লিভিং সিস্টেমগুলো হল উন্মুক্ত স্ব-সাংগঠনিক জীবিত অংশ যা পরিবেশের সাথে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া করে থাকে। এই সিস্টেম গুলো তথ্য, শক্তি, এবং পদার্থের প্রবাহ দ্বারা বজায় থাকে।

    গত কয়েক দশক ধরে কিছু বিজ্ঞানী প্রস্তাব করেছেন যে, জীবনের প্রকৃতি ব্যাখ্যা করার জন্য একটি সাধারণ জীবন্ত সিস্টেম তত্ত্ব দরকার।[৪৫] এই ধরনের সাধারণ তত্ত্বটি পরিবেশবিজ্ঞানজৈবিক বিজ্ঞান থেকে উদ্ভূত হবে এবং সমস্ত জীবিত সিস্টেম কিভাবে সাধারণ নীতিমালা মেনে চলার চেষ্টা করে কাজ করে তার রূপরেখা তৈরি করবে। কোন ঘটনাকে ব্যাখা করার জন্য তার সকল উপাদানকে ভেঙে আলাদা করে দেখার পরিবর্তে, একটি সাধারণ জীবিত ব্যবস্থা তত্ত্ব তার পরিবেশের সাথে জীবের সম্পর্কের গতিশীল নিদর্শনের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাটিকে ব্যাখ্যা করে।[৪৬]

    গাইয়া অনুসিদ্ধান্ত

    মূল নিবন্ধ: গাইয়া অনুসিদ্ধান্ত

    পৃথিবী প্রকৃতপক্ষে যে একটি জীবিত উপাদান তার ধারণা পাওয়া যায় দর্শন ও ধর্মে, কিন্তু এই বিষয়টির প্রথম বৈজ্ঞানিক আলোচনা করেন স্কটিশ বিজ্ঞানী জেমস হিউটন। ১৭৮৫ সালে, তিনি বলেন যে পৃথিবী একটি সুপারঅর্গানিজম ছিল যার সঠিক ব্যাখা করা সম্ভব শারীরবিদ্যার মাধ্যমে। হিউটনকে ভূতত্ত্ববিদ্যার জনক বলা হয়ে থাকে, কিন্তু হিউটনের এই জীবিত পৃথিবীর ধারণা ১৯শতকে এসে প্রখর খণ্ডতাবাদ তত্ত্বের কারণে হারিয়ে যেতে থাকে[৪৭]:১০ গাইয়া অনুসিদ্ধান্ত, ১৯৬০ সালে প্রস্তাব করেন বিজ্ঞানী জেমস লাভলক,[৪৮][৪৯] তিনি প্রস্তাব করেন যে পৃথিবীর সকল জীবিত প্রাণ একসাথে একটি একক জীব হিসাবে কাজ করে যা তার বেঁচে থাকার জন্য পরিবেশগত শর্তাবলীকে নির্ধারণ করে এবং রক্ষণাবেক্ষণ করে।[৪৭] এই অনুসিন্ধান্তটি আধুনিক পৃথিবী ব্যবস্থা বিজ্ঞানের অন্যতম ভিত্তি হিসাবে কাজ করে।

    অভঙ্গুরতত্ত্ব

    জীবনের গতি-প্রকৃতিকে ব্যাখ্যা করার জন্য একটি সাধারণ লিভিং সিস্টেম থিওরির প্রথম প্রস্তাবনা করা হয় ১৯৭৮ সালে, আমেরিকান জীববিজ্ঞানী জেমস গ্রিয়ার মিলার দ্বারা।[৫০] রবার্ট রোসেন (১৯৯১ সালে) এটা তৈরি করেন, তিনি একটি সিস্টেমের সকল উপাদানকে এভাবে সংজ্ঞা প্রদান করে যে, “এটি একটি সংগঠনের একক; যা একটি ফাংশনের অংশ যার উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে এর বিভিন্ন অংশ এবং সমগ্রটির মধ্যে একটি সুনির্দিষ্ট সম্পর্ক।” এই ধারণা এবং বিভিন্ন প্রথমদিকের ধারণা থেকে, তিনি “সিস্টেম রিলেশনাল তত্ত্বকে” দাড় করান, যা চেষ্টা করে জীবনের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্যকে ব্যাখ্যা করতে। বিশেষ করে, তিনি “জীবের মধ্যে অভঙ্গুরতত্ত্বের বিভিন্ন উপাদানকে” চিহ্নিত করেন যা লিভিং সিস্টেম ও “বায়োলজিক্যাল মেশিনের” মধ্যে ভিত্তিগত পার্থক্য করতে সাহায্য করে।[৫১]

    বাস্তুতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যরূপে জীবন

    একটি ব্যবস্থাপনা হিসাবে কল্পনা করা জীবন ব্যবস্থায়, পরিবেশগত ফ্লাক্স ও জৈবিক ফ্লাক্সকে একত্রে “পারস্পরিক প্রতিক্রিয়া” হিসাবে দেখা হয়,[৫২] এবং পরিবেশের সাথে তাদের এই প্রতিক্রিয়াশীল সম্পর্ক কোন বিতর্ক ছাড়াই বলা যেতে পারে জীবনকে বোঝার জন্য তথা বাস্ততন্ত্রকে বোঝার জন্য অতীব জরুরি। হ্যারল্ড জে. মোরোভিটজ (১৯৯২ সালে) এটি ব্যাখ্যা করেন এভাবে, জীবন কোন একক অণূজীব কিংবা কোন প্রজাতি নয় বরং এটি হল বাস্তুতন্ত্রের একটি বৈশিষ্ট্য।[৫৩] তিনি আরও যুক্তি দেন যে, বাস্তুতন্ত্র সম্পর্কিত জীবনের সংজ্ঞাটি প্রাণরসায়ন কিংবা পদার্থবিজ্ঞানের সাথে বেশি বাঞ্ছনীয়। রবার্ট উলানওউইকজ (২০০৯ সালে) পারস্পরিক মঙ্গলজনক সহাবস্থানকে উল্লেখ করেন জীবনের ও বাস্ততন্ত্রের নিয়মতান্ত্রিক ক্রমবর্ধমান আচরণ বোঝার জন্য মূল চাবিকাঠি হিসাবে।[৫৪]

    জীববিদ্যার জটিল ব্যবস্থা

    মূল নিবন্ধ: জীববিদ্যার জটিল ব্যবস্থা

    আরও দেখুন: গাণিতিক জীববিদ্যা

    কমপ্লেক্স সিস্টেম বায়োলজি (সিএসবি) বিজ্ঞানের সেই ক্ষেত্র যা ডায়নামিক সিস্টেম তত্ত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে কার্যকরী জীবের জটিলতার উদ্ভব নিয়ে আলোচনা করে।[৫৫] এই অংশকে প্রায়শই সিস্টেম বায়োলজি বলা হয় এবং যার মূল লক্ষ্য হল জীবনের সবচেয়ে মৌলিক দিকগুলো বুঝতে সাহায্য করা। সিএসবি এবং সিস্টেম বায়োলজির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত অংশটিকে বলা হয় রিলেশনাল বায়োলজি, যার মূল আলোচ্য বিষয় হল গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তিতে জীবন প্রক্রিয়াকে বোঝার চেষ্টা করা, এবং এইসকল সম্পর্কে জীবের অপরিহার্য কার্যকরী উপাদান অনুসারে শ্রেণীবিভাগ করা; বহুকোষীয় জীবের ক্ষেত্রে এই শ্রেণীবিভাগকে সংজ্ঞায়িত করা হয় “ক্যাটাগরিয়াল বায়োলজি” হিসাবে, কিংবা বায়োলজিক্যাল রিলেশনের ক্যাটাগরি তত্ত্ব হিসাবে জীবের একটি মডেল উপস্থাপন, একই সাথে জীবিত জীবের ডায়নামিক, পরিপাকতন্ত্রের জটিল নেটওয়ার্ক, জেনেটিক এবং এপিজেনেটিক প্রসেস ও সংকেত ব্যবস্থাপনা -এর ভিত্তিতে ফাংশনাল অর্গানাইজেশনের বীজগাণিতিক টপোলজি[৫৬][৫৭] বিকল্প কিন্তু ঘনিষ্ঠভাবে সংশ্লিষ্ট পন্থাগুলির নজর রাখে পারস্পরিক নির্ভরশীলতার সীমাবদ্ধতার উপর, যেখানে সীমাবদ্ধতা হতে পারে কোষীয়, যেমন এনজাইম কিংবা ম্যাক্রোস্কোপিক -যেমন হাড় বা ভাস্কুলার সিস্টেমের পুরো নকশার সীমাবদ্ধতা।[৫৮]

    ডারউইনীয় পরিবর্তনশীলতা

    এটা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে যে লিভিং সিস্টেমের পর্বের ও কিছু সুনির্দিষ্ট বাহ্যিক ব্যবস্থার বিবর্তন একই ধরনের কিছু মূলনীতি মেনে চলে যা ডারউইনীয় ডায়নামিক নামে পরিচিত।[৫৯][৬০] এই ডারউইনীয় পরিবর্তনশীলতা গঠন করা হয়েছিল প্রথমে একটি সাধারণ অ-জৈবিক ব্যবস্থায় যা তাপগতিবিদ্যার সাম্যাবস্থায় পৌছানোর ক্ষেত্রে যথেষ্ট দূরে সেখানে কিভাবে অণুবীক্ষণিক পর্বের উদ্ভব হয়েছিল তার উপর ভিত্তি করে, এবং এরপর এর মধ্যে আরও যুক্ত হয়েছে সংক্ষিপ্ত, প্রতিলিপি তৈরি করতে সক্ষম আরএনএ অণু। বিষয়টির অন্তর্নিহিত সারমর্ম হল পর্ব-উৎপাদক প্রক্রিয়াটি প্রকৃতপক্ষে একই হয়ে থাকে উভয় ধরনের ব্যবস্থার জন্য।[৫৯]

    অপারেটর তত্ত্ব

    আরও একটি সিস্টেমেটিক সংজ্ঞা হল অপারেটর তত্ত্ব যেখানে প্রস্তাব করা হয়েছে “জীবন হল একটি গতানুগতিক শব্দ যা জীবের মধ্যে উপস্থিত থাকা কিছু সাধারণ বন্ধনীর জন্য ব্যবহার করা হয়; এই সাধারণ বন্ধনীগুলো জীবের কোষে পাওয়া যাওয়া যেমন ঝিল্লি ও অটোক্যাটিক্যাল সেট”[৬১] এবং যা অর্গানাইজেশনে থাকা যে কোন ব্যবস্থার জীবের ক্ষেত্রে যেটি যেকোন অপারেটর টাইপ মেনে চলে তাতে কমপক্ষে একটি কোষ থাকবে।[৬২][৬৩][৬৪][৬৫] জীবনকে আরও চিন্তা করা যেতে পারে নিম্নতর নেগেটিভ ফিডব্যাকের নেটওয়ার্কের মডেল হিসাবে, যা হল একটি সবৃহৎ পজেটিভ ফিডব্যাকের একটি অধিনীস্ত নিয়ন্ত্রক প্রক্রিয়া, যা সম্প্রসারণ ও প্রজননের সম্ভাব্যতা দ্বারা গঠিত হয়।[৬৬]

    অধ্যয়নের ইতিহাস

    বস্তুবাদ

    মূল নিবন্ধ: বস্তুবাদ

    হোহ রেইনফরেস্টেউদ্ভিদের বৃদ্ধি।

    মাসাই মারা সমভূমিতে জড় হওয়া জেব্রা ও ইমপালার পাল

    ইয়োলোস্টোন ন্যাশনাল পার্ক-এ অবস্থিত গ্র্যান্ড প্রিজম্যাটিক স্প্রিং এর কাছাকাছি মাইক্রোবিয়াল ম্যাটের একটি আকাশ থেকে তোলা ছবি

    জীবনের সবচেয়ে প্রাচীনতম তত্ত্বগুলো বস্তুবাদী ছিল, যেখানে ধারণ করা হয় যে, বিদ্যমান সব কিছুই বস্তু, এবং সেক্ষেত্রে জীবন কেবল একটি জটিল আকারের বা বিন্যাসের বস্তুর সমাবেশ। এম্পেদোক্লেস (খ্রিস্টপূর্ব ৪৩০ সালে) যুক্তি যে, মহাবিশ্বের সবকিছু চারটি শাশ্বত “উপাদান” বা “সবকিছুর শিকড়” দ্বারা গঠিত হয়: এগুলো হল মাটি, জল, বায়ু এবং আগুন। এই চারটি উপাদানগুলির বিন্যাস এবং পুনর্বিন্যাস দ্বারা সমস্ত পরিবর্তন ব্যাখ্যা করা যায়। জীবনের বিভিন্ন প্রকারভেদ এই উপাদানগুলির উপযুক্ত মিশ্রণ দ্বারা সৃষ্ট হয়।[৬৭]

    ডেমোক্রিতোস (খ্রিস্টপূর্ব ৪৬০ সালে) মনে করতেন যে জীবনের অপরিহার্য বৈশিষ্ট্যটি হল এতে একটি আত্মা (মনস্তত্ত্ব) আছে। অন্যান্য প্রাচীন লেখকের মত, তিনি চেষ্টা করেছেন ব্যাখ্যা করতে বস্তুর মাঝে কি থাকলে তাকে জীবন্ত বলা যায়। তার ব্যাখ্যাটি ছিল এই রকম যে জ্বলন্ত পরমাণুগুলো ঠিক সেইভাবে একটি আত্না তৈরি করে যেভাবে একটি পরমাণু তৈরি ও বিনষ্ট হয় অন্যান্য বিভিন্ন জিনিসের। তিনি তার ব্যাখ্যাটি করেন আগুনের আলোকে কারণ জীবন ও তাপের মধ্যে আপাত সংযোগ রয়েছে, যেমনটি আগুন জ্বলতে জ্বলতে সামনে আগায় তেমনি জীবন সামনে আগায়।[৬৮]

    প্লেটোর চিন্তা করা বিশ্বটি হল শাশ্বত এবং অপরিবর্তনীয় ধরণের, একটি ঐশ্বরিক শিল্পী দ্বারা বস্তুর মধ্যে ত্রুটিপূর্ণভাবে প্রকাশিত হচ্ছে, বিভিন্ন যান্ত্রিক বিশ্ব দৃশ্যের সঙ্গে তা তীব্রভাবে বৈপরীত্য প্রকাশ করছে, যার মাঝে পরমাণুবাদ- অন্ততপক্ষে চতুর্থ শতাব্দী পর্যন্ত, সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য … এই বিতর্কটি প্রাচীন বিশ্বের সর্বত্র জুড়ে চলতে থাকে। যাক্রিক পরমাণুবাদ এপিকুরোসের মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার পথ পেয়েছিল … যখন বৈরাগ্য একটি ঐশ্বরিক উদ্দেশ্যবাদ গ্রহণ করেছিল … তখন সিন্ধান্ত নেয়া সহজ হয়ে ওঠে: হয় পথ দেখাতে হবে পথভ্রেষ্ট প্রক্রিয়ায় এগিয়ে চলে বিশ্বটি থেকে কিভাবে একটি সুবিন্যস্ত, পরিমার্জিত বিশ্ব হিসাবে গড়ে তোলা যায়, কিংবা এই প্রক্রিয়ায় কিভাবে নিজের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে সাহায্য করা যায়।[৬৯]

    — আর. জে. হানকিনসন, ক্‌জ এন্ড এক্সপ্লেনেশন ইন এনসিয়ান্ট গ্রীক থটস

    প্রাচীন গ্রিসে উদ্ভব হওয়া যন্ত্রবাদীয় বস্তুবাদকে পুনর্জীবিত ও পরিমার্জিত করেন ফরাসি দার্শনিক রনে দেকার্ত, তিনি বলেন যে প্রাণী এবং মানুষের বিভিন্ন অঙ্গগুলো একসঙ্গে সন্নিবেশ করা হয়েছে একটি মেশিন হিসাবে কাজ করার জন্য। ১৯শতকে জৈবিক বিজ্ঞানের কোষ তত্ত্বের অগ্রগতি এই দৃষ্টিভঙ্গিকে উৎসাহ প্রদান করে। চার্লস ডারউইন (১৮৫৯) বিবর্তনীয় তত্ত্ব প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রজাতির উদ্ভবের একটি যান্ত্রিক ব্যাখ্যা।[৭০]

    হাইলোমরফিজম

    মূল নিবন্ধ: হাইলোমরফিজম

    এরিস্টটলের মতে উদ্ভিদ, প্রাণী ও মানুষের আত্মার কাঠামো

    হাইলোমরফিজম তত্ত্বটি প্রথম প্রকাশ করেন গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টট্ল (খৃষ্টপূর্ব ৩২২ সালে)। অ্যারিস্টট্লের জন্য জীববিজ্ঞানে হাইলোমোফিজার প্রয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ছিল, এবং জীববিজ্ঞানের বিভিন্ন অংশ নিয়ে ব্যাপকভাবে তার লেখাগুলো বিদ্যমান রয়েছে। এই দৃষ্টি মতে, গাঠনিক মহাবিশ্বের সবকিছুতে বস্তু ও অবয় উভয় রয়েছে, এবং কোন জীবন্ত জিনিসের অবয় হল তার আত্মা (গ্রীক সাইকে, ল্যাটিন অ্যানিমা)। তিন ধরনের আত্না রয়েছে: গাছপালার উদ্ভিদ আত্মা, যা তাদের বাড়তে ও অবঃক্ষয়ে এবং নিজেদের পুষ্ট করার প্রকৃত কারণ, কিন্তু এটি এদের গতি এবং সংবেদনশীলতা ঘটায় না; প্রাণী আত্মা, যা প্রাণীদের চলাচল এবং অনুভব করার ক্ষমতা প্রদান করে; এবং এরপর হল বিচক্ষণতার আত্মা, যা চেতনা এবং যুক্তি উৎস হিসাবে কাজ করে, এটি (এরিস্টটল বিশ্বাস করতেন) যে শুধুমাত্র মানুষের মাঝেই দেখা যায়।[৭১] প্রতিটি উচ্চতর আত্মার ক্ষেত্রে নিম্ন আত্মার সকল গুণাবলীর থাকে। এরিস্টটল বিশ্বাস করতেন বস্তু কোন অবয় ছাড়াও থাকতে পারে, কিন্তু অবয় কোন বস্তু ছাড়া থাকতে পারে না, এবং এই কারণে আত্মা কোন শরীর ছাড়া থাকতে পারে না।[৭২]

    এটা জীবন সম্পর্কিত পরমকারণবাদ ব্যাখ্যার সাথে সামঞ্জ্যসপূর্ণ, যা উদ্দ্যেশ কিংবা লক্ষ্য-দ্বারা পরিচালিত ঘটনার প্রকৃত কারণও বটে। ফলশ্রূতিতে, মেরু ভাল্লুকের সাদা রঙের চামড়া থাকাটা এটির ছদ্ম-আবরণের উদ্দেশ্যে রয়েছে বলে ব্যাখ্যা করা যায়। তাই, কার্যকারণের দিকের ক্ষেত্রে (বর্তমান থেকে অতীত পর্যন্ত) বিজ্ঞানলব্ধ উপাত্তের সঙ্গে প্রাকৃতিক নির্বাচনের অসঙ্গতি থাকে, যা পূর্বে ঘটা বিভিন্ন কারণের ফলাফলের প্রভাব ব্যাখ্যা করে। জৈবিক বৈশিষ্ট্যাবলীগুলি ভবিষ্যতের সর্বোত্তম ফলাফলের দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায় না, তবে এটি প্রজাতির অতীত বিবর্তনীয় ইতিহাসের দিকে দৃষ্টিপাত করে, যা বৈশিষ্ট্যগুলির প্রাকৃতিক নির্বাচনের দিকে নিয়ে যায়। জৈবিক বৈশিষ্ট্যাবলীগুলি ভবিষ্যতের সর্বোচ্চ ফলাফল দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায় না, এটি করা যায় একটি প্রজাতির অতীতের বিবর্তনীয় ইতিহাসের দিকে দৃষ্টিপাত করে, যা প্রশ্ন তোলে বৈশিষ্ট্যগুলির প্রাকৃতিক নির্বাচনকে নিয়ে।[৭৩]

    স্বতঃজনন

    মূল নিবন্ধ: স্বতঃজনন

    স্বতঃস্ফূর্ত প্রজনন ছিল সেই বিশ্বাস যেখানে অনুরূপ জীব থেকে বংশদ্ভুত হওয়া ছাড়াই ভিন্ন একটি জীবন্ত জীবের সাধারণ গঠন হওয়া সম্ভব। সাধারণত, ধারণা ছিল যে কিছু কিছু জীব যেমন মশা-মাছি জন্ম নিতে পারে নিষ্প্রাণ বস্তু যেমন ধুলাবালি থেকে অথবা সাধারণ ধারণা ছিল ইদুর বা পোকা-মাকরের মৌসুমি প্রজনন হত কাদা কিংবা আবর্জনা থেকে।[৭৪]

    স্বতঃজননের তত্ত্বটি প্রথম প্রদান করেন এরিস্টটল,[৭৫] তিনি জীবের উদ্ভব নিয়ে পূর্বে কাজ করা প্রাকৃতিক দার্শনিকদের বিভিন্ন প্রাচীন ব্যাখ্যার সংকলন এবং সম্প্রসারিত করেন; তার এই ব্যাখ্যা প্রতিষ্ঠিত থাকে প্রায় দুই সহস্রাব্দ পর্যন্ত। এই ব্যাখ্যা পরীক্ষণের মাধ্যমে অপসারিত করেন লুই পাস্তুর ১৮৫৯ সালে, যিনি পূর্বসুরীদের যেমন ফ্রান্সিসকো রেডির করে যাওয়া পরীক্ষণকে সম্প্রসারিত করেন।[৭৬][৭৭] প্রমাণিত না হওয়া স্বতঃজননের ঐতিহ্যগত ধারণা আজ জীববিজ্ঞানের মধ্যে আর কোন বিতর্কের বিষয় নয়।[৭৮][৭৯][৮০]

    প্রাণশক্তিবাদ

    মূল নিবন্ধ: প্রাণশক্তিবাদ

    প্রাণশক্তিবাদ হল সেই বিশ্বাস যে জীবনের-মূলচালিকা শক্তিটি হল অ-উপাদানীয়। এই মতবাদের সূচনা করেন জর্জ আর্নেস্ট স্থ্যাল (১৭ শতকে), এবং এই মতবাদটি জনপ্রিয় ছিল ১৯ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত। এই মতবাদটি বিভিন্ন দার্শনিক যেমন অঁরি বের্গসন, ফ্রিডরিখ নিৎশে, ও উইলহেম ডিলদে,[৮১] শারীরস্থানবিদ যেমন মারি ফ্রাঙ্কোজ জেভিয়ার বিচ্যাট, এবং রসায়নবিদ যেমন যাস্টাস ভন লাইবিগ প্রমুখের কাছে বেশ জনপ্রিয় ছিল।[৮২] প্রাণশক্তিবাদ ধারণাটির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল জৈব এবং অজৈব পদার্থগুলো মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে, এবং আরও ধারণা ছিল যে জৈব পদার্থগুলো শুধুমাত্র জীবন্ত বস্তু থেকেই অপলব্ধি করা সম্ভব। এই ধারণা অসত্য বলে প্রমাণিত হয় ১৮২৮ সালে, যখন ফ্রেডরিখ ভোলার ইউরিয়া উৎপাদন করেন অজৈব পদার্থ থেকে।[৮৩] ধরে নেয়া হয় হয় যে, ভোলার সংশ্লেষণটি হল আধুনিক জৈব রসায়নের প্রারাম্ভ। এটা ছিল একটি ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সূচনা কারণ প্রথমবারের মত কোন অজৈব রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে একটি জৈব যৌগ তৈরি করা সম্ভব হয়েছিল।[৮২]

    ১৮৫০ সালের দিকে, হারমান ভন হেলমোল্ট্জ, জুলিয়াস রবার্ট ভন মেয়ার দ্বারা উৎসাহিত হয়ে, এটা প্রদর্শন করান যে পেশীর আন্দোলনের ফলে কোন শক্তির ক্ষয় হয় না, ইঙ্গিত প্রদান করে যে, পেশী নড়াতে কোন “মাত্রাতিরিক্ত শক্তির” প্রয়োজন হয় না।[৮৪] এই ফলাফলগুলো প্রাণশক্তিবাদমূলক তত্ত্ব নিয়ে আর কোন বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানে আগ্রহ বিনষ্ট করে দেয়, যদিওবা এই বিশ্বাস ছদ্মবৈজ্ঞানিক তত্ত্ব যেমন হোমিওপ্যাথিকে আরও দীর্ঘস্থায়ী করে, যা রোগ এবং অসুস্থতার কারণকে চিহ্নিত করে জীবনী শক্তি বা কল্পিত মূল চালিকা শক্তির ব্যাঘাত হিসাবে।[৮৫]

    ব্যুৎপত্তি

    জীবন সময়রেখা

    এই বাক্সটি:

    -৪৫০ —

    -৪০০ —

    -৩৫০ —

    -৩০০ —

    -২৫০ —

    -২০০ —

    -১৫০ —

    -১০০ —

    -৫০ —

    ০ —

        জল

    এককোষী
    জীব

    সালোকসংশ্লেষ

    সুকেন্দ্রিক

    বহুকোষী
    জীব

       স্থলজ জীবন

    ডাইনোসর

    স্তন্যপায়ী

    উদ্ভিদ

    ফুল

    পাখি

    প্রাইমেট

    আদিম পৃথিবী (-৪৫৪)

    প্রথম জল

    প্রথম প্রাণ
    (-৪১০)

    প্রবল উল্কাবর্ষণ

    প্রথম অক্সিজেন

    বায়ুমণ্ডলীয় অক্সিজেন

    অক্সিজেন সংকট

    প্রথম যৌন জনন

    ক্যাম্ব্রিয়ান বিস্ফোরণ

    আদিম মানুষ

    ফ্যা
    না
    রো
    জো
    য়ি

    প্রো
    টে
    রো
    জো
    য়ি


    র্কি
    য়া

    হে
    ডি
    য়া

    পোঙ্গোলা

    হিউরোনিয়ান

    ক্রায়োজিনিয়ান

    আন্দিয়ান

    কারু

    কোয়াটার্নারি

    অক্ষের স্কেল: কোটি বছরছবিতে শব্দসমূহ ক্লিকযোগ্য
    বামপ্রান্তে কমলা রঙে জানা তুষার যুগ চিহ্নিত।
    আরও দেখুন: মানব সময়রেখাপ্রকৃতি সময়রেখা

    মূল নিবন্ধ: জীবনের উৎপত্তি

    পৃথিবীর বয়স প্রায় ৪.৫৪ বিলিয়ন বছর[৮৬][৮৭][৮৮] প্রমাণ পাওয়া যায় যে অন্তত ৩.৫ বিলিয়ন বছর ধরে পৃথিবীতে জীবন বিদ্যমান[৮৯][৯০][৯১][৯২][৯৩][৯৪][৯৫][৯৬][৯৭] যার মধ্যে সবচেয়ে পুরাতন জীবে জীবাশ্ম চিহ্নের বয়স প্রায় ৩.৭ বিলিয়ন বছর;[৯৮][৯৯][১০০] কিছু অন্যান্য তত্ত্বমতে, যেমন- সর্বশেষ গ্রহাণুপঞ্জের ভারীবর্ষণ তত্ত্ব অনুসারে, পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশ ঘটে আরো আগে থেকে, যার প্রারাম্ভ হয় প্রায় ৪.১–৪.৪ বিলিয়ন বছর আগে,[৮৯][৯০][৯১][৯২][৯৩] এবং প্রাণের বিকাশের রাসায়নিক প্রক্রিয়া হয়তবা শুরু হয় বিগ ব্যাগ শেষ হবার খানিকটা পর থেকেই, প্রায় ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে, একটি অধিযুগের সময় যখন মহাবিশ্বের বয়স ছিল মাত্র ১০-১৭ মিলিয়ন বছর।[১০১][১০২][১০৩]

    ৯৯% এরও বেশি প্রজাতির বিভিন্ন ধরনের জীব, সংখ্যায় যার পরিমাণ পাঁচ বিলিয়ন প্রজাতিরও বেশি,[১০৪] এখন পর্যন্ত যা পৃথিবীতে বসবাস করেছে বর্তমানে তা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।[১০৫][১০৬]

    যদিওবা পৃথিবীতে শ্রেণীভূক্ত প্রজাতি জীবের সংখ্যা প্রায় ১.২ মিলিয়ন থেকে ২ মিলিয়নের মধ্যে,[১০৭][১০৮] তথাপি পৃথিবীর মোট জীবের প্রজাতির সংখ্যা এখনও নিশ্চিত নয়। এর অনুমানিক পরিধি ৮ মিলিয়ন থেকে ১০০ মিলিয়ন পর্যন্ত,[১০৭][১০৮] যদি স্বল্প করে ধরা হয় তাহলে এর পরিধি ১০ থেকে ১৪ মিলিয়ন,[১০৭] কিন্তু যদি অতি বৃহৎ আকারে ধরা হয় তাহলে এর পরিধি ১ ট্রিলিয়নেরও অধিক (যার এক হাজার ভাগের এক শতাংশের প্রজাতির বিবরণ আমাদের কাছে রয়েছে), মে ২০১৬ সালে উপলব্ধ এক গবেষণা অনুসারে।[১০৯][১১০] পৃথিবীতে পরস্পর সম্পর্কিত ডিএনএ বেস পেয়ারের সংখ্যা অনুমান করা হয় ৫.০ x ১০৩৭ টি এবং যার ওজন প্রায় ৫০ বিলিয়ন টন।[১১১] ২০১৬ সালের জুলাই মাসে বিজ্ঞানীরা ৩৫৫টি জিনের সেট প্রাপ্তির প্রতিবেদন প্রকাশ করে, এগুলোকে সকল জীবের সর্বশেষ সার্বজনীন একই পূর্বপুরুষ (ইংরেজি বর্ণ অনুসারে- এলইউসিএন) জিন বলে উপস্থাপন করেন যা বর্তমানে পৃথিবীতে সকল জীবিত জীবের অংশ। [৭]

    জ্ঞাত সকল জীবের মৌলিক আণবিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে কিছু মিল খুজে পাওয়া যায়, যা একই আদিপুরুষ থেকে জীবনের সৃষ্টিরই বহিঃপ্রকাশ; এই পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে, জীবনের ব্যুৎপত্তির উপর একটি অনুসিন্ধান্ত দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হয়, যা ব্যাখা করা চেষ্টা করে বিশ্বজনীন সাধারণ পূর্বপুরুষ গঠনের, যা গঠিত হয়েছিল সাধারণ জৈব যৌগ থেকে, যার মাধ্যম ছিল প্রটোসেলের প্রাক-কোষীয় জীবন ও বিপাক প্রক্রিয়া। বিভিন্ন মডেলকে শ্রেণীবিভিক্ত করা হয় “প্রথমে-জিন” এবং “প্রথমে-বিপাক” শ্রেণীতে, কিন্তু একটি সাম্প্রতিক প্রবণতা হচ্ছে হাইব্রীড মডেলের উত্থান, যা উভয় শ্রেণীবিভাগকে একত্রিত করে তৈরি করা।[১১২]

    জীবন শুরু কিভাবে হয়েছে তা নিয়ে বর্তমানে কোন বৈজ্ঞানিক ঐক্যমত্য নেই। বর্তমানে, সর্বাধিক স্বীকৃত বৈজ্ঞানিক মডেলটি মিলার-উরি পরীক্ষণ এবং সিডনি ফক্সের কাজ উপর ভিত্তি করে তৈরি করা, যেখানে দেখান হয়েছে যে, আদি-পৃথিবী রাসায়নিক ক্রিয়া-বিক্রিয়া ঘটার জন্য অণুকূলে ছিল, যা অ্যামিনো অ্যাসিড এবং পূর্বের অজৈব যৌগ থেকে সৃষ্ট বিভিন্ন জৈব যৌগের সমন্বয় করে,[১১৩] এবং ফসফোলিপিডগুলি স্বতঃস্ফূর্তভাবে লিপিড বাইলেয়ার গঠন করে,- একটি কোষীয় ঝিল্লির মৌলিক কাঠামো গঠন করে।

    ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ)তে অন্তর্ভুক্ত নির্দেশাবলী ব্যবহার করে জীবন্ত জীব প্রোটিন সংশ্লেষণ করে, যা হল অ্যামিনো অ্যাসিডের একটি পলিমারপ্রোটিন সংশ্লেষণের মধ্যবর্তী প্রক্রিয়ায় মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রিবোনিউক্লিয়িক এসিড(আরএনএ) পলিমারগুলি। আসলে কিভাবে জীবন প্রারাম্ভ হল, তার একটি সম্ভাবনা উত্তর হল, প্রথমে উৎপত্তি হয় জিনের, এরপর প্রোটিনের;[১১৪] বিকল্প সম্ভাবনাটি হচ্ছে প্রোটিন প্রথম এসেছিল এবং তারপর আসে জিন।[১১৫]

    যাইহোক না কেন, প্রকৃতপক্ষে জিন এবং প্রোটিন উভয়ই একে অপরটিকে তৈরি করার প্রয়োজন হয়, কোনটি প্রথমে আসেছিল সেটি বিবেচনা করার ক্ষেত্রে মূল সমস্যা হলো মুরগী আগে না ডিম আগে আসছে তার মতো। এই কারণে অধিকাংশ বিজ্ঞানী এই অনুমান গ্রহণ করেছেন যে, এটা অসম্ভাব্য ছিল যে জিন এবং প্রোটিন স্বাধীনভাবে বিকশিত হয়েছে।[১১৬]

    এই সকল কারণে ফ্রান্সিস ক্রিক কর্তৃক প্রথম প্রস্তাব করা হয়,[১১৭] সম্ভবনা রয়েছে যে প্রথম জীবনের প্রারাম্ভ হয়েছিল আরএনএ থেকে[১১৬] যার তথ্য ধারণের জন্য ডিএনএ এর মত গুনাগুণ রয়েছে এবং কিছু প্রোটিনের ন্যায় ক্যাটালাইটিকও গুনাগুণ রয়েছে। এটাকে বলা হয় আরএনএ জগৎ অনুসিন্ধান্ত, এবং এই অনুমানের সমর্থন করা হয়ে থাকে কারণ দেখা গেছে যে, বেশিরভাগ জটিল কোষীয় উপাদানগুলির (যেগুলো ধীরে ধীরে বিকাশিত হয়) বেশিরভাগ অংশই কিংবা সম্পূর্ণ অংশ আরএনএ দ্বারা গঠিত। এছাড়াও, অনেক ক্রিটিকাল কোফ্যাক্টর (এটিপি, অ্যাসিটাল-কোএ, এনএডিএইচ, প্রভৃতি) হয় নিউক্লিওটাইড সম্পুর্ণভাবে কিংবা এর সাথে সম্পর্কিত উপাদান দ্বারা গঠিত। যখন অনুসিন্ধান্তটি গ্রহণ করা হয়েছিল তখন আরএনএ এর ক্যাটালাইটিক গুনাবলী সম্পর্কে কোন ধারণা ছিল না,[১১৮] কিন্তু পরবর্তিতে থমাস ক্যাচ ১৯৮৬ সালে এটি নিশ্চিত করেন।[১১৯]

    আরএনএ জগত অনুসিন্ধান্তের একটি বড় সমস্যা হল আরএনএর সংশ্লেষণ অন্য জৈব অণুর প্রেক্ষাপটে সরল অজৈব পদার্থের অনেক কঠিন। এটির একটি কারণ হল সাধারণ বায়ুমণ্ডলীয় পরিবেশে আরএনএ সাধারণত অগ্রসর হয় খুব স্থিতিশীল ভাবে এবং একটি অপরটির সাথে ক্রিয়াশীল হয় খুব ধীরে, এবং অনুসিন্ধান্তে আরও প্রস্তাব করা হয়েছিল যে জীবন্ত জীবের অন্যান্য অণুর সমন্বয় ঘটেছিল আরএনএর সৃষ্টির আগে।[১২০] তবে, পৃথিবীর বর্তমান জীবনযাত্রার শুরুর আগের পরিবেশ সৃষ্টি করে, সফলভাবে কিছু সুনির্দিষ্ট আরএনএ অণুর সংশ্লেষণ অর্জন করা সম্ভব হয়েছে – বিক্রিয়ার পুরোটা সময় জুড়ে অগ্রদূত ফসফেটের উপস্থিতিতে একটি নির্দিষ্ট অনুক্রমে বিকল্প অগ্রদূত বিক্রিয়ক যুক্ত করে।[১২১] এই গবেষণা আরএনএ জগত অনুসিন্ধান্তকে আরও সুস্পষ্ট করে।[১২২]

    ২০১৩ সালে প্রাপ্ত ভূতাত্ত্বিক ফলাফল থেকে দেখা যায় যে, ৩.৫ গিগা বছরের আগে প্রতিক্রিয়াশীল ফসফরাস প্রজাতি (যেমন ফসফাইট) এর প্রাচুর্য্য ছিল পৃথিবীর সাগরগুলোতে, এবং ফলশ্রুতিতে এসক্রাইবারসাইট সহজেই জলীয় গ্লিসারলের সাথে বিক্রিয়া করে ফসফাইট এবং গ্লিসারল ৩-ফসফেট উৎপন্ন করতে পারত।[১২৩] এটা অনুমান করা হয় যে, সর্বশেষ ভারী গ্রহাণুবর্ষণ থেকে আগত উল্কাপিণ্ড এর অংশ হল এসক্রাইবারসাইট– থেকে প্রথম ফসফরাস পৃথিবীতে এসে থাকতে পারে, যা প্রাইবায়োটিক জৈব অণুগুলির সাথে বিক্রিয়া করে ফফোরাইলেটেড বায়োমোলিকুলস যেমন আরএনএ গঠন করতে পারে।[১২৩]

    ২০০৯ সালে, পরীক্ষণে মাধ্যমে ডারউইনের বিবর্তবাদ প্রদর্শন করা হয়, যেখানে ভিট্রোতে একটি দুই-কম্পোনেন্ট ব্যবস্থার আরএনএ এনজাইম (রাইবোজাইমস) ছিল।[১২৪] কাজটি জেরাল্ড জয়েসের ল্যাবরেটরিতে করা হয়েছিল, যিনি বলেছিলেন “সাধারণ জীববিজ্ঞানের বাইরে এটি প্রথম উদাহরণ, যেখানে একটি আণবিক জেনেটিক ব্যবস্থায় বিবর্তনীয় অভিযোজন ঘটেছে।”[১২৫]

    প্রিবায়োটিক যৌগ সমূহ মহাজাগতিকভাবে উৎপন্ন হয়ে থাকতে পারে। ২০১১ সালে নাসা করা, পৃথিবীতে পাওয়া উল্কাপিণ্ডের উপর ভিত্তি করে করা এক গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায়, ডিএনএ এবং আরএনএ উপাদানগুলি (অ্যাডেনিন, গুয়েনিন এবং এর সাথে সম্পর্কিত জৈব অণুগুলো) হয়তো মহাকাশে গঠিত হয়ে থাকতে পারে।[১২৬][১২৭][১২৮][১২৯]

    মার্চ ২০১৫ সালে, নাসার বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো রিপোর্ট প্রকাশ করেন যে, জীবের জটিল ডিএনএ এবং আরএনএ এর জৈব উপাদানগুলি যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ইউরাসিল, সাইটোসিন এবং থায়মিন, – কে পরীক্ষাগারে তৈরি করা হম্ভব হয়েছে মহাকাশের মত পরিবেশ সৃষ্টি করে ও উল্কাপিণ্ডে পাওয়া যায় এরূপ প্রারাম্ভিক রাসায়নিক উপাদান যেমন পাইরিমিডিন ব্যবহার করে। পাইরিমিডিন, যেমন পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন (পিএএইচএস), মহাবিশ্বের সবচেয়ে বেশি কার্বন-সমৃদ্ধ রাসায়নিক পদার্থ, বিজ্ঞানীদের মতে এটি সম্ভবত রেড জায়েন্ট কিংবা নক্ষত্রীয় ধুলো এবং গ্যাসের মেঘ থেকে সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে।[১৩০]

    প্যানস্পার্মিয়া অনুসিন্ধান্ত অনুসারে, অণুজীব ধরনের জীবসমূহ, সাধারণত ছড়িয়ে থাকে উল্কাপিণ্ড, গ্রহাণু এবং অন্যান্য ছোট সৌরজগতীয় বস্তু দ্বারা – যা সমগ্র মহাবিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে থাকতে পারে।[১৩১]

    পরিবেশগত অবস্থা

    সায়ানোব্যাকটেরিয়ারনাটকীয় পরিবর্তন পৃথিবীতে প্রাণ ধারণের উপাদানগুলোর পরিবর্তন ঘটায় ফলশ্রুতিতে অক্সিজেন সহ্য করতে না পারা অণুজীবগুলোর প্রায় বিলুপ্তি ঘটে।

    পৃথিবীতে জীব বৈচিত্র্য ঘটার পিছনে কাজ করেছে জেনেটিক পরিবর্তনের সুযোগ, বিপাকীয় ক্ষমতা, পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ[১৩২] এবং মিথোজীবিতা প্রভৃতির মধ্যে গতিশীল মিথস্ক্রিয়তা।[১৩৩][১৩৪][১৩৫] পৃথিবীর অস্তিত্বের অধিকাংশ সময় জুড়েই, এর বসবাসযোগ্য পরিবেশে প্রাধান্য বিস্তার করে রেখেছে অণূজীব এবং তাদের বিপাক ও বিবর্তন। এর ফলাফলস্বরূপ এই অণুজীবীও কার্যক্রমের কারণে পৃথিবীর বাহ্য-রাসায়নিক পরিবেশের পরিবর্তন ঘটছে একটি ভূতাত্ত্বিক সময় রেখা ধরে, যা পরবর্তিতে প্রভাব রাখছে বিভিন্ন সময়ে ঘটা বিবর্তিত প্রাণের বিকাশের উপর।[১৩২] উদাহারণস্বরূপ, সায়ানোব্যাকটেরিয়া দ্বারা সালোকসংশ্লেষনের সময় বাই-প্রোডাক হিসাবে নিষ্কাসিত অক্সিজেন পুরো পৃথিবীর পরিবেশে একটি ব্যাপক আকারের পরিবর্তন নিয়ে আসে। এর কারণ হল ওই সময় পৃথিবীর অধিকাংশ জীবের জন্য অক্সিজেন ছিল বিষস্বরূপ, এর কারণে অক্সিজেনের আবির্ভাব একটি নাটকীয় বিবর্তনীয় চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করে, এবং পরিশেষে এই ঘটনাই পৃথিবীর অধিকাংশ প্রাণী ও উদ্ভিদ শ্রেণীর বিকাশে কাজ করে। জীব এবং তাদের পরিবেশের মধ্যে এই পারস্পরিক সম্পর্ক একটি প্রাণবন্ত জীব-ব্যবস্থার অন্তর্নিহিত বৈশিষ্ট্য।[১৩২]

    জীবমণ্ডল

    মূল নিবন্ধ: জীবমণ্ডল

    জীবমণ্ডল হচ্ছে পৃথিবীর সমগ্র ইকোসিস্টেমগুলির সামগ্রিক যোগফল। এটিকে বলা যেতে পারে পৃথিবীর প্রাণের এলাকা, এটি একটি বদ্ধ ব্যবস্থা (সৌর এবং মহাবৈশ্বিক রেডিয়েশন এবং পৃথিবীর অভ্যন্তরের তাপ থেকে মুক্ত) এবং এটি ব্যাপকভাবে স্বনিয়ন্ত্রিত।[১৩৬] সর্বশেষ বায়োফিজিওলজিক্যাল সংজ্ঞা অনুসারে, জীবমণ্ডল হল একটি বিশ্বব্যাপী বাস্তুসংস্থান ব্যবস্থা যার সাথে সংযুক্ত সকল জীবিত জীব ও তাদের নিজের মধ্যে সম্পর্ক, তাছাড়াও উল্ল্যেখযোগ্য বিভিন্ন উপাদান যেমন অশ্মমণ্ডল, জীওস্ফিয়ার, জলমণ্ডল, বায়ুমণ্ডল প্রভৃতির সাথে এটি সম্পর্কিত।

    পৃথিবীর জীবমণ্ডলের সকল স্থানেই জীব জীবন ধারণ করে থাকে, যার অন্তর্ভুক্ত হল মাটি, হট স্প্রিং, শিলার অভ্যন্তরে যা প্রায় ভূ-অভ্যন্তরের ১৯ কিমি (১২ মা) গভীরেও হতে পারে, একইসাথে সমুদ্রের গভীরতম স্থানে, বায়ুমণ্ডলের অনেক উচ্চতাতে প্রায় ৬৪ কিমি (৪০ মা) উপরে।[১৩৭][১৩৮][১৩৯] কিছু বিশেষ পরীক্ষাগারের পরিবেশে, এটা দেখা যায় যে মহাশূন্যের প্রায়-ওজনশূন্যতা পরিবেশেও জীব বেঁচে থাকতে পারে[১৪০][১৪১] এবং বেঁচে থাকতে পারে বাইরের মহাশূন্যের অসীম শুন্যতায়[১৪২][১৪৩] এমনকি পৃথিবীতে সমদ্রের গভীরতম অংশ মারিয়ানা ট্রেঞ্চেও জীবকে বেঁচে থাকতে দেখা যায়।[১৪৪][১৪৫] এই সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণার রিপোর্ট থেকে জানা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণপশ্চিমাংশের সমুদের সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ২,৫৯০ মি (৮,৫০০ ফু; ১.৬১ মা) নিচের শিলার অভ্যন্তরে প্রায় ৫৮০ মি (১,৯০০ ফু; ০.৩৬ মা) নিচেও জীব বেঁচে থাকতে দেখা যায়,[১৪৪][১৪৬] শুধু তাই নয়, জাপানের কাছের সমদ্রতলের ২,৪০০ মি (৭,৯০০ ফু; ১.৫ মা) নিচেও জীবের সন্ধান পাওয়া যায়।[১৪৭] আগস্ট ২০১৪ সালে, বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেন যে অ্যান্টার্টিকার বরফের প্রায় ৮০০ মি (২,৬০০ ফু; ০.৫০ মা) নিচেও জীবের সন্ধান পাওয়া গেছে।[১৪৮][১৪৯] একজন গবেষকের মতে, “আপনি অণুজীব যেকোন স্থানে খুজে পেতে পারেন— এগুলো পরিবেশের সাথে মাত্রাতিরিক্তভাবে খাপ খাওয়াতে পারে এবং এইস্থানে বেঁচে থাকতে পারে।”[১৪৪]

    এটা স্বীকার্য যে, জীবমণ্ডলের বিকাশ হয়েছে বিবর্তনের দ্বারা, যার শুরুটা হয়েছিল জীবনের উৎপত্তির মাধ্যমে (প্রাকৃতিকভাবে প্রাণহীন বস্তু দ্বারা জীবনের প্রারাম্ভ হয়েছিল, যেমন সাধারণ অর্গানিক কম্পাউন্ড) কিংবা জৈবজনন থেকে (জীবনের উদ্ভব হয়েছে প্রাণযুক্ত বস্তু থেকে), প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন বছর আগে।[১৫০][১৫১] পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিতের সবচেয়ে প্রাচীন নিদর্শন গুলর মধ্যে রয়েছে বায়জেনেটিক গ্রাফাইট যা প্রায় ৩.৭ বিলিয়ন বছর পুরাতন পশ্চিম গ্রীনল্যান্ডের মেটাসেডিমেন্টারি শিলায়,[৯৮] এবং ৩.৪৮ বিলিয়ন বছর পুরাতন অণুজীবীয় স্তরের ফসিল পাওয়া গিয়েছে স্যান্ডস্টোনের ভিতরে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায়[৯৯][১০০] অতিসম্প্রতিক ২০১৫ সালে, “বিয়োটিক জীবের ধংশাবশেষ” পাওয়া যায় পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার যা প্রায় ৪.১ বিলিয়ন বছর পুরাতন শীলায়।[৯০][৯১] ২০১৭ সালে, কানাডার কিউনিক এর নুভভুগিটাক বেল্টে সুপরিচিত জীবাশ্ম অণূজীব (কিংবা ক্ষুদ্রজীবাশ্ম) আবিষ্কৃত হয়েছে প্রচণ্ডবেগে নির্গম হওয়া হাইড্রোথার্মাল ভেন্টে, যার বয়স প্রায় ৪.২৮ বিলিয়ন বছর, এটা এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচাইতে পুরাতন, যা প্রস্তাব করে “প্রায় তাৎক্ষণিক জীবনের উদ্ভব হওয়া বিষয়ে”, ৪.৪ বিলিয়ন বছর আগে মাত্র সাগর সৃষ্টি হওয়ার পরপরই, এবং এটা ৪.৫৪ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবী সৃষ্টি হবার খুব বেশি দিন পরেও নয়।[১][২][৩][৪] জীববিজ্ঞানী স্টিফেন ব্লেয়ার হার্জ -এর মতে, “যদি পৃথিবীতে জীবনের প্রারাম্ভ এত স্বল্প সময়ে ঘটে থাকে … তাহলে মহাবিশ্বের জন্যও এটি একটি সাধারণ ঘটনা হওয়ার কথা।”[৯০]

    সাধারণ দৃষ্টিকোন থেকে, জীবমণ্ডল হল যেকোন আবদ্ধ, স্বনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা যা বাস্তুসংস্থানকে ধারণ করতে পারে। কৃত্রিমভাবে বানানো জীবমণ্ডলও এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে যেমন বায়োস্ফিয়ার ২বিআইওএস-৩ এবং চাঁদ কিংবা অন্যান্য গ্রহে থাকা সম্ভব্য যেকোন জীবমণ্ডল।[১৫২]

    সহনশীলতার পরিসীমা

    ডিনোকক্কাস রেডিয়দুরান্‌স একটি এক্সট্রিমোফিল যা চরম ঠান্ডা, বিশুষ্কীকরণ, ভ্যাকুয়াম, এসিড এবং রেডিয়েশন এক্সপোজারেও টিকে  থাকতে পারে।

    একটি বাস্তুতন্ত্রের সবচেয়ে নিষ্ক্রিয় উপাদান হল জীবন ধারণের জন্য বাহ্যিক ও রাসায়নিক উপাদান যেমন—শক্তি (সূর্যালোক বা রাসায়নিক শক্তি), পানি, তাপমাত্রা, বায়ুমণ্ডল, মাধ্যাকর্ষণ, পুষ্টি, এবং অতিবেগুনী সূর্য বিকিরণ হতে সুরক্ষা[১৫৩] অধিকাংশ বাস্তুতন্ত্রে, এই পরিবেশ দিনের বিভিন্ন সময় পরিবর্তীত হয় এবং এক মৌসুমে থেকে পরবর্তী মৌসুমে পরিবর্তীত হয়।[১৫৪] তাই বেশিরভাগ বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে বেঁচে থাকার জন্য, জীবের একটি পরিবর্তনশীল পরিবেশে টিকে থাকার সক্ষমতা অর্জন করতে হয়, যা “সহনশীলতার পরিসীমা” বলে। এই সীমার বাইরে অংশ হল “শারীরবৃত্তীয় চাপের অঞ্চল,” যেখানে বেঁচে থাকা এবং প্রজনন করা সম্ভাব্য কিন্তু জীবের অনুকূলে নয় এটি। এই  সীমার বাইরে অংশ হল “অসহিষ্ণু অঞ্চল”, যেখানে এই জীবের বেঁচে থাকা ও প্রজনন অস্বাভাবিক কিংবা অসম্ভব। যে সকল জীবের সহনশীলতার পরিসীমার অংশটি অনেক বেশি সেগুলো ব্যাপক পরিসরে ছড়াতে পারে কম সহনশীলতার পরিসীমার জীবদের তুলনায়।[১৫৪]

    এক্সট্রিমোফিল

    আরও দেখুন: এক্সট্রিমোফিল

    বেঁচে থাকার জন্য, কিছু নির্দিষ্ট অণুজীব এমন একটি অবস্থা ধারণ করতে পারে যাতে করে এরা চরম ঠান্ডা, সম্পূর্ণ বিশুষ্কীকরণ, অনাহার, উচ্চ মাত্রার বিকিরণের প্রকাশে, এবং অন্যান্য বাহ্যিক বা রাসায়নিক চ্যালেঞ্জ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হতে পারে। এই অণুজীবগুলো সপ্তাহ, মাস, বছর বা এমনকি শতাব্দীর ধরে এই বৈরী পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারে।[১৩২] এক্সট্রিমোফিল হল সেই সকল মাইক্রোবিয়াল জীবের ধরণ যা সাধারণত জীবের জন্য যে সহনশীল পরিসীমা আছে তার বাইরে অবস্থান করে বেঁচে থাকে।[১৫৫] এরা বিকাশিত হয় শক্তির কিছু বিরল উৎস ব্যবহার করে। যদিওবা সকল জীবই প্রায় অভিন্ন ধরনের অণু সমন্বয়ে গঠিত, কিন্তু বিবর্তনটি এই ধরনের অণুজীবকে এই বিস্তৃত সীমার বাহ্যিক ও রাসায়নিক অবস্থার সাথে মোকাবেলা করতে সক্ষম করেছে। এই চরম পরিবেশে বেঁচে থাকা এই সকল অণুজীবীয় সম্প্রদায়ের বিপাকীয় বৈচিত্র্যের ও গঠনিক বৈশিষ্ট্য সমূহের উপর এখনও গবেষণা চলছে।[১৫৬]

    অণুজীব এমনকি পৃথিবীতে গভীরতম অংশ মারিয়ানা ট্রেঞ্চেও বেঁচে থাকতে পারে।[১৪৪][১৪৫] এছাড়াও অণুজীব সমুদ্রতলদেশের শিলার ভিতরে প্রায় ১,৯০০ ফুট (৫৮০ মি) নিচে ও সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচের প্রায় ৮,৫০০ ফুট (২,৬০০ মি) নিচে বেঁচে থাকতে পারে।[১৪৪][১৪৬]

    পৃথিবীতে জীবের জীবনের সুদৃঢ়তা এবং বহুমুখিতার এই অনুসন্ধান,[১৫৫] সেইসাথে কিছু জীবের আণবিক গঠনের উপর গবেষণা যার কারণে এগুলো চরম পরিবেশেও বেঁচে থাকতে পারে – পৃথিবীর বাইরে জীবনের সন্ধানের ক্ষেত্রে অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ।[১৩২] উদাহরণস্বরূপ, লাইকেন অণুজীব এক মাসের মত বেঁচে থাকতে পারে একটি কৃত্রিমভাবে বানানো মঙ্গলগ্রহের মত পরিবেশে[১৫৭][১৫৮]

    রাসায়নিক উপাদান

    সকল জীবিত বস্তুর জৈবরাসায়নিক কার্যকলাপ চলানোর জন্য কিছু মূল রাসায়নিক উপাদান প্রয়োজন। কার্বন, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, ফসফরাস, এবং সালফার– এগুলো হল সব প্রাণীর জন্য মৌলিক ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট – এগুলোকে প্রায়ই ইংরেজি আদ্যক্ষর সিএইচএনওপিএস দ্বারা প্রকাশ করা হয়। একসঙ্গে এগুলো বেঁচে থাকার মৌলিক বস্তু নিউক্লিক অ্যাসিড, প্রোটিন এবং লিপিড তৈরি করে। এই ছয়টি উপাদানগুলির মধ্যে পাঁচটি দ্বারা ডিএনএর রাসায়নিক উপাদানগুলি গঠিত হয়, একমাত্র ব্যতিক্রম উপাদান হচ্ছে সালফার। সালফার, অ্যামিনো অ্যাসিডের সিসটেইন এবং ম্যাথিয়োনাইন গঠনের একটি উপাদান। এই সকল উপাদানের মধ্যে জৈবিকভাবে সবচেয়ে বেশি প্রচুর্য্য দেখাা যায় কার্বনের, যার মধ্যে একাধিক, স্থিতিশীল সমযোজী বন্ধনী গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে। কার্বন, কার্বন-ভিত্তিক(জৈব) অণুর বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক গঠন তৈরি করতে সহায়তা করে।[১৫৯] কিছু বিকল্প কাল্পনিক ধরণের জৈবরাসায়নিক ব্যবস্থার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা এই তালিকার এক বা একাধিক উপাদানকে বাদ দিয়ে কিংবা তালিকার কোনও একটি উপাদানকে অদলবদল করে বাইরের কোন উপাদান যুক্ত করে কিংবা কাইরালিটির প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করে বা অন্যান্য রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যগুলি পরিবর্তন করে তৈরি হয়।[১৬০][১৬১]

    ডিএনএ

    মূল নিবন্ধ: ডিএনএ

    ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড হল সেই অণু যা জ্ঞাত সকল জীবিত জীব ও অনেক ভাইরাসের বৃদ্ধি, ক্রমবিকাশ, কার্যকলাপ ও প্রজননের জন্য প্রয়োজনীয় বেশিরভাগ জেনেটিক তথ্য ধারণ করে। প্রোটিনকমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেডের পাশাপাশি, ডিএনএ এবং আরএনএ হল নিউক্লিক এসিড, এগুলো হল তিনটি প্রধান ধরনের মধ্যে অন্যতম ম্যাক্রোমলিকিউল যা জীবিত সকল জীবের বেঁচে থাকার জন্য অত্যাবশ্যকীয়। অধিকাংশ ডিএনএ অণুতে দুইটি বাইপলিমারের সূত্র আঙ্গুরের মত প্যাচানো থেকে দ্বৈত হেলিক্সের মত হয়। দুইটি ডিএনএ সুত্র একত্রে পলিনিউক্লিউটাইড নামে পরিচিত, কারণ এগুলো গঠিত হয় অনেকগুলো একক অংশ নিউক্লিওটাইড দ্বারা।[১৬২] প্রতিটি নিউক্লিউটাইড গঠিত হয়ে থাকে নাইটোজেন-যুক্ত নিউক্লিউওবেস দ্বারা — হয় সাইটোসিন (সি), গুয়ানিন (জি), এডেনিন (এ) কিংবা থাইমিন (টি) দ্বারা — একই সাথে থাকে চিনি, যাকে বলা হয় ডিঅক্সিবেস এবং একটি ফসফেট গ্রুপ। নিউক্লিউওটাইডগুলো একে অপরের সাথে সংযুক্ত হয় একটি সমযোজী বন্ধনের চেইনের মাধ্যমে যার মাঝে থাকে একটি নিউক্লিউটাইডের চিনির অণুর সাথে পরের ফসফেটের সংযুক্তি, ফলশ্রূতিতে পর্যায়ক্রমিকভাবে একটি চিনি-ফসফেটের মেরুদণ্ড তৈরি হয়। বেস পেয়ার নিয়ম অনুসারে (এ সাথে টি, এবং সি সাথে জি সংযুক্ত হয়ে থাকে), হাইড্রোজেন বন্ধন দুটি পৃথক পলিনিউক্লিওটাইডের সুত্রের নাইট্রোজেনীয়াস বেসের মাঝে বন্ধন সৃষ্টি করে দ্বি-সুত্রীয় ডিএনএ তৈরি করে। পৃথিবীতে পরস্পর সংযুক্ত ডিএনএ বেস-জোড়ার মোট পরিমাণ অনুমান করা হয় প্রায় ৫.০ x ১০৩৭টি, এবং যার ওজন হল ৫০ বিলিয়ন টন[১১১] যদি তুলনা করা হয়, বায়ুমণ্ডলের মধ্যে থাকা মোট ভর অনুমান করা হয় প্রায় ৪ টিটন (ট্রিলিয়ন টন কার্বন)।[১৬৩]

    ডিএনএর জীবের জৈবিক তথ্য সংরক্ষণ করে রাখে। ডিএনএ মেরুদণ্ড ফাটল প্রতিরোধী, এবং দ্বি-আনিবিক কাঠামোর উভয় অনুই একই জৈবিক তথ্য ধারণ করে। জৈবিক তথ্যের প্রতিলিপি তৈরি হয় যখন অণু দুটি পৃথক হয়ে যায়। ডিএনএ’র একটি উল্লেখযোগ্য অংশ (মানুষের ক্ষেত্রে ৯৮% এরও বেশি) নন-কোডিং, যার অর্থ হল এই অংশগুলি প্রোটিন অনুক্রমের প্যাটার্ন হিসেবে কাজ করে না।

    ডিএনএর দুটি অণু একে অপরের বিপরীত দিক দিয়ে গমন করে এবং তাই এটা পরস্পর অসমান্তরাল হয়ে থাকে। প্রতিটি চিনির অণুর সাথে সংযুক্ত অংশটি হল যে কোন চার ধরনের মধ্যে এক ধরনের নিউক্লিওবেস (আনুষ্ঠানিকভাবে, ক্ষার) দ্বারা গঠিত। ডিএনএ-এর মেরুদন্ডের সাথে সংযুক্ত নিউক্লিওবেস গুলোর বিভিন্নভাবে সাজানোর ব্যবস্থা হল সেই ক্রম যা জীবের জৈবিক তথ্য সংরক্ষণ করে রাখে। জেনেটিক কোডের মধ্যে, আরএনএ অণুগুলো অনুধাবনের মাধ্যমে প্রোটিনগুলির মধ্যে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিডের অনুক্রমটি সুনির্দিষ্ট করা যায়। এই আরএনএ অণুগুলো প্রাথমিকভাবে ডিএনএ অণুকে একটি টেমপ্লেট হিসাবে ব্যবহার করে ট্রান্সক্রিপশন নামক একটি প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়।

    কোষগুলির মধ্যে, ডিএনএ ক্রোমোজোমের দীর্ঘ কাঠামোর মধ্যে সাজানো থাকে। কোষ বিভাজনের সময় এই ক্রোমোসোমগুলি ডিএনএ পুনরাবৃত্তির প্রক্রিয়ার মধ্যে প্রতিলিপি তৈরি করে, যার ফলে প্রতিটি কোষের ক্রোমোজোমের সম্পূর্ণ সেট বজায় থাকে। সুকেন্দ্রিক জীবের (প্রাণী, উদ্ভিদ, ছত্রাক এবং প্রোটিস্টা) ক্ষেত্রে বেশিরভাগের ডিএনএ কোষের নিউক্লিয়াসের ভিতরে থাকে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে অঙ্গাণু যেমন, মাইটোকন্ড্রিয়া বা ক্লোরোপ্লাস্ট মধ্যে থাকে।[১৬৪] এর বিপরীতে, প্রাক-কেন্দ্রিক জীব (ব্যাকটেরিয়া এবং আর্কিয়া) তাদের ডিএনএ সাইটোপ্লাজমে সংরক্ষিত থাকে। ক্রোমোসোমের মধ্যে, ক্রোমাটিন প্রোটিন যেমন হিস্টোন ডিএনএ-কে সঙ্কুচিত ও সংগঠিত করে রাখে। এই সঙ্কুচিত গঠনগুলি ডিএনএ এবং অন্যান্য প্রোটিনের মধ্যে মিথস্ক্রিয়ায় সহায়তা করে, ডিএনএর বিভিন্ন অংশগুলির মধ্যে তথ্য আদান প্রদান করে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

    ডিএনএ – কে প্রথম পৃথক করেন ফ্রেডরিশ মিয়েশার ১৮৬৯ সালে।[১৬৫] ১৯৫৩ সালে জেমস ওয়াটসন এবং ফ্রান্সিস ক্রিক দ্বারা এটির আণবিক কাঠামোটি চিহ্নিত করা হয়েছিল, যার মডেল-বিল্ডিং ব্যবস্থা রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিন কর্তৃক এক্স-রে ডিফেকশন উপাত্ত দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল।[১৬৬]

    শ্রেণীবিন্যাস

    মূল নিবন্ধ: জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস

    জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাসের প্রধান আটটি শ্রেণীবিন্যাস ক্রমের নিন্মতম থেকে উচ্চতম পর্যায় পর্যন্ত ক্রমবিভক্তি। অন্তর্বর্তী অপ্রধান ক্রমগুলো দেখানো হয়নি।

    জীবনকে সাধারণত আটটি ভাগে শ্রেণীবিভাগ করা হয়ে থাকে- ডোমেইন, কিংডম, ফাইলাম, ক্লাস, অর্ডার, ফ্যামেলি, জেনাস এবং স্পিসিস. মে ২০১৬ সালে, বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেন যে, পৃথিবীতে বর্তমানে প্রায় ১ ট্রিলিয়ান প্রজাতির জীব রয়েছে যার মাঝে মাত্র একহাজার ভাগের এক শতাংশের বিবরন তাদের কাছে রয়েছে।[১০৯]

    প্রাপ্ত তথ্যমতে গ্রীক দার্শনিক এরিস্টেটল (৩৮৪-৩২২ বিসি) সর্বপ্রথম ব্যক্তি যিনি জীবের শ্রেণি বিভাগের উপর কাজ করেন, ওই সময়ের পরিচিত সকল জীবন্ত জীবকে তিনি ভাগ করেন হয় উদ্ভিদ কিংবা প্রাণি হিসাবে, এই বিভাগের মূল ভিত্তি ছিল এগুলো চলাচল করতে পারে কিনা। তিনি প্রাণিকে আরও বিভক্ত করেন এগুলোতে রক্ত রয়েছে কিনা বা রক্তবিহীন কিনা (অন্তত লাল রক্তবিহীন কিনা), যেটাকে পারস্পরিকভাবে মেরুদণ্ডী প্রাণীঅমেরুদণ্ডী প্রাণীতে বিভক্ত করার সাথে তুলনা করা যায়, এবং রক্তযুক্ত প্রাণীকে বিভক্ত করা যায় পাঁচটি গ্রুপে: ভিভিপেরাস কোয়াড্রুপেডস্‌ (মেমেল্‌স), অভিপেরাস কোয়াড্রুপেডস্‌ (রেপটাইল ও এমফিবিয়ান), পাখি, মাছ ও তিমি। রক্তবিহীন প্রাণীকেও বিভক্ত করা যায় পাঁচটি গ্রুপে: সিফালোপেড, ক্রাসটাসিন, পোকামাকড় (যার মধ্যে রয়েছে মাকড়শা, স্কর্পিয়ানসেণ্ট্রিপেডস, এগুলো ছাড়াও আজকাল যা পোকামাকর হিসাবে গণ্য কর হয় তাও এর অন্তর্ভুক্ত), খোলস যুক্ত প্রাণী (যেমন বেশিরভাগ মলাস্কাএকাইনোডার্মাটা), এবং জুফাইটা (প্রাণি যেগুলো দেখতে উদ্ভিদের মত)। যদিও প্রাণিবিদ্যা নিয়ে এরিস্টেটলের কাজ নির্ভুল ছিল না, কিন্তু এটা ছিল সেই সময়ের সবচেয়ে বড় জীববিজ্ঞানের বিশ্লেষণ এবং তার মৃত্যুর পর বহু শতাব্দী ধরে এই বিশ্লেষণ চূড়ান্ত কর্তৃত্ব বজায় রেখেছিল।[১৬৭]

    আমেরিকার অন্বেষণার ফলে বিপুল সংখ্যক নতুন উদ্ভিদ ও প্রাণির সন্ধান পাওয়া যায় যাদের বিবরণ ও শ্রেণিবিন্যাস করা প্র্যোজন হয়ে উঠে। ১৬শ শতাব্দীর শেষভাগে ও ১৭ তম শতাব্দীর শুরুর দিকে, প্রাণি জগতের উপর নিরুপম গবেষণা করা হয় এবং এই গবেষণা চালিয়ে যাওয়া হয় যতক্ষণ না এর ফলাফল সম্মখ জ্ঞানের একটি আধার তৈরি করা যা শ্রেণিবিন্যাসের একটি গাঠনিক কাঠামো তৈরিতে সহায়তা করা। ১৭৪০-দশকের শেষের দিকে, কার্ল লিনিয়াস প্রজাতির শ্রেণীবিন্যাসের জন্য দ্বিদলীয় নামকরণের একটি পদ্ধতি চালু করেন। লিনিয়াস নামকরণের এই গঠনটি উন্নত করার চেষ্টা করেন এবং পূর্বে ব্যবহৃত বহু-শব্দযুক্ত নামগুলোকে সংক্ষিপ্ত করার চেষ্টা করেন এগুলো থেকে অপ্রয়োজনীয় অলঙ্করণ বিলুপ্ত করে, নতুন বর্ণনামূলক শর্তাবলী প্রবর্তন করেন এবং সঠিকভাবে তাদের অর্থ সংজ্ঞায়িত করেন।[১৬৮]

    প্রাথমিকভাবে ছত্রাকে উদ্ভিদ হিহাবে গণ্য করা হত। খুব অল্প সময়ের জন্য লিনিয়াস এগুলোকে শ্রেণিবিন্যাসের প্রাণিজগতের ভার্মিস বলে শ্রেণিবিভাগ করেন, কিন্তু পরবর্তিতে এটিকে তিনি আবার উদ্ভিদজগতে স্থাপিত করেন। কোপল্যান্ড ছত্রাকে প্রোস্টিস্টা হিসাবে শ্রেণিবিভাগ করেন, ফলশ্রুতিতে তিনি সমস্যাটা খানিকটা পাশ কাটিয়ে যান কিন্তু স্বীকার করেন এগুলোর আলাদা অবস্থা।[১৬৯] এই সমস্যাটা পুরোপুরিভাবে সমাধান করেন হুইট্রেকার, যখন তিনি এগুলকে নিজস্ব কিংডমের অধীনস্থ করেন, তার পাঁচ-কিংডম ব্যবস্থায়। বিবর্তনের ইতিহাস থেকে জানা যায় যে প্রকৃতপক্ষে ছত্রাক উদ্ভিদজগতের থেকে প্রাণিজগতের সাথে বেশি সম্পর্কিত।[১৭০]

    নতুন আবিষ্কার কোষ ও মাইক্রো-অরগানিজম সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান আহরণের সুয়োগ করে দিয়েছে, জীবনের নতুন গ্রুপ উন্নমোচিত হয়েছে এবং ফলশ্রুতিতে কোষবিদ্যা এবং মাইক্রোবায়োলজির ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। এই নতুন জীবগুলি মূলত হয়, প্রোটোজোয়া রূপে প্রাণিজগতে কিংবা প্রোটোফাইটা/থেলোফাইটা রূপে উদ্ভিদজগতে শ্রেণিবিভক্ত করা হয়, কিন্তু পরিশেষে এগুলোকে একত্রিত করে একটি জগতে নিয়ে আসেন হেকেল যা হল প্রোটিস্টা, পরবর্তিতে প্রাক-কেন্দ্রিক অংশটিকে ভেংগে মনেরা জগতে নিয়ে যাওয়া হয়, যা শেষ পর্যন্ত দুটি পৃথক গ্রুপে বিভক্ত করা হয়, ব্যাকটেরিয়া ও আর্কিয়া রূপে। এই ঘটনাগুলো ছয়-কিংডম ব্যবস্থা তৈরিতে সহায়তা করে এবং পরিশেষে বর্তমানের তিন-অধিজগৎ ব্যবস্থা তৈরিতে সহায়তা করে, যার মূল ভিত্তি হল বিবর্তনীয় সম্পর্ক।[১৭১] যদিওবা, সুকেন্দ্রিক অংশের শ্রেণিবিভাগ, বিশেষ করে প্রোটিস্টার শ্রেণিবিভাগ, এখনও বিতর্কিত।[১৭২]

    মাইক্রোবায়োলজি, আণবিক জীববিজ্ঞানভাইরাসবিদ্যার উন্নতির সাথে সাথে, অ-কোষীয় পুনঃপ্রজনন এজেন্টগুলো আবিষ্কৃত হয়, যেমন ভাইরাস এবং ভিরোড। যদিওবা এগুলো জীবিত বলে বিবেচিত হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে; ভাইরাসের মধ্যে জীবনের প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমন কোষীয় ঝিল্লি, বিপাক এবং পরিবেশের সাথে বৃদ্ধি বা প্রতিক্রিয়া করার গুণের অভাব রয়েছে। ভাইরাসকে এখনও এর জীববিদ্যা এবং জেনেটিক্স উপর ভিত্তি করে “প্রজাতি”তে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়ে থাকে, কিন্তু এই ধরনের শ্রেণীবিভাগ অনেক দিক দিয়ে বিতর্কিত।[১৭৩]

    ১৯৬০-এর দশকে ক্লাডিস্টিক নামে একটি ট্র্যাডিশন প্রচলিত হয়, যা টেক্সানমিক শ্রেণিবিভাগ ক্লাড্‌সের উপর নির্ভর করে একটি বিবর্তনীয় বা ফিজোজেনটিক বৃক্ষের মত তৈরি করে।[১৭৪]

    লিনিয়াস
    ১৭৩৫[১৭৫]
    হেকেল
    ১৮৬৬[১৭৬]
    স্যাটোন
    ১৯২৫[১৭৭]
    কোপল্যান্ড
    ১৯৩৮[১৭৮]
    হুইট্রেকার
    ১৯৬৯[১৭৯]
    ওয়াইজা ইটি এল.
    ১৯৯০[১৭১]
    ক্যাভালির-স্মিস্থ
    ১৯৯৮[১৮০]
    ২ জগৎ৩ জগৎ২ সাম্রাজ্য৪ জগৎ৫ জগৎ৩ অধিজগৎ৬ জগৎ
    (আলোচনা করা হয়নি)প্রোটিস্টপ্রাক-কেন্দ্রিকমনেরামনেরাব্যাক্টেরিয়াব্যাক্টেরিয়া
    আর্কিয়া
    সুকেন্দ্রিকপ্রোটিস্টপ্রোটিস্টসুকেন্দ্রিকপ্রোটোজোয়া
    ক্রোমিস্টা
    সবজিউদ্ভিদউদ্ভিদউদ্ভিদউদ্ভিদ
    ছত্রাকছত্রাক
    প্রাণীপ্রাণীপ্রাণীপ্রাণীপ্রাণী

    মূল নিবন্ধ: জগৎ (জীববিদ্যা) § সারমর্ম

    প্রাণীজগৎ (শ্রেণীবিন্যাস)

    এই অনুচ্ছেদটি সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন। (March 2017)

    জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস অনুসারে প্রাণীজগৎ[১৮১] হল সেই মহাঅধিজগৎ যা সকল জীবকে কে বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভাগ করে।[১৮২]

    কোষ

    মূল নিবন্ধ: কোষ (জীববিজ্ঞান)

    কোষ হল প্রতিটি জীবন্ত বস্তুর কাঠামো মৌলিক একক, এবং সমস্ত কোষ উৎপন্ন হয় পূর্ব থেকে উপস্থিত কোষের বিভাজনের মাধ্যমে। ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে হেনরি ডিট্রোচেট, থিওডোর শচওয়ান, রুডলফ ভিরচোও এবং অন্যান্যরা কোষ তত্ত্ব প্রণয়ন করা করেছিলেন এবং পরবর্তীতে তা ব্যাপকভাবে গ্রহীত হয়েছিল।[১৮৩] একটি প্রাণীর কার্যকলাপ তার কোষের মোট কার্যকলাপের উপর নির্ভর করে, কারণ দেহে শক্তি প্রবাহ এগুলোর মধ্যে ও মাঝে ঘটে।[১৮৪] কোষগুলো বংশগতির তথ্য ধারণ করে থাকে যা কোষ বিভাজনের সময় একটি জেনেটিক কোড হিসাবে পরবর্তি কোষে স্থানন্তরিত হয়।[১৮৫]

    কোষ প্রধানত দুই ধরনের হয়ে থাকে। প্রাক-কেন্দ্রিক কোষে নিউক্লিয়াস এবং অন্যান্য ঝিল্লি-আবদ্ধ অঙ্গাণু থাকে না, যদিও এই কোষগুলোতে গোলাকার ডিএনএ এবং রাইবোজোম থাকে। ব্যাকটেরিয়াআর্কিয়া হল প্রাক-কেন্দ্রিক কোষের দুইটি ডোমেন। আরেকটি প্রধান শ্রেনীর কোষ হল সুকেন্দ্রিক কোষ, যাতে স্বতন্ত্র নিউক্লি ঝিল্লি থাকে একটি নিউক্লিয়ার মেমব্রেণ ও মেমব্রেণ ঝিল্লি-আবদ্ধ অঙ্গাণুর মাঝে, এতে আরো অঙ্গাণু যেমন মাইটোকন্ড্রিয়া, ক্লোরোপ্লাস্ট, লাইসোসোম, রুক্ষ ও মসৃণ এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম এবং অন্তকোষীয় গহ্বর থাকে। উপরন্তু, তারা সংগঠিত ক্রোমোসোম ধারণ করে যা জেনেটিক উপাদান বহন করে। বৃহৎ জটিল জীবগুলোর সকল প্রজাতিই সুকেন্দ্রিক কোষ দ্বারা গঠিত, যার মধ্যে রয়েছে প্রাণী, উদ্ভিদ ও ছত্রাক, যদিও সুকেন্দ্রিক প্রজাতির বেশিরভাগই প্রোটিস্ট অণুজীব[১৮৬] প্রচলিত মডেল অনুসারে সুকেন্দ্রিক কোষ বিকাশিত হয়েছে প্রাক-কেন্দ্রিক কোষ থেকে, আর সুকেন্দ্রিক কোষের প্রধান অঙ্গাণুগুলো এন্ডোসিম্বায়োসিস মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া এবং প্রাক-সুকেন্দ্রিক কোষের সাথে ক্রিয়ার মধ্যে গঠিত হয়েছে।[১৮৭]

    কোষবিদ্যার মূল আণবিক ক্রিয়াগুলো সংগঠিত হয়ে থাকে প্রোটিনের উপর ভিত্তি করে। প্রোটিন বায়োসিনেথিসিস নামক একটি এনজাইম-অনুঘটক প্রক্রিয়া দ্বারা রবিওসোমের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়াগুলির অধিকাংশ সমন্বিত হয়ে থাকে। কোষের নিউক্লিক অ্যাসিডের জিন এক্সপ্রেশনের উপর ভিত্তি করে একটি ধারাক্রম অনুসারে আমিনো অ্যাসিডগুলো একত্রিত হয় এবং সংযুক্ত হয়।[১৮৮] সুকেন্দ্রিক কোষে, কোষের নিদির্ষ্ট স্থানে পাঠানোর প্রস্তুতি নেয়া হয় গল্গি এপারেটাসের মাধ্যমে যাতে করে এই প্রোটিনগুলিকে বিভিন্ন স্থানে পৌছাতে পারে ও প্রক্রিয়াজাত হতে পারে।[১৮৯]

    কোষগুলো, কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুনরুৎপাদিত হয়ে থাকে যার মধ্যমে একটি মাতৃকোষ থেকে দুই বা ততোধিক নতুন কোষের সৃষ্টি হয়। প্রাক-কেন্দ্রিক কোষের জন্য, কোষ বিভাজন হয়ে থাকে ফিশন প্রক্রিয়ায় যেখানে ডিএনএ টির প্রতিলিপি তৈরি হয়, তারপর দুটি অংশই কোষীয় ঝিল্লির বিভিন্ন অংশে সংযুক্ত হয়। সুকেন্দ্রিক কোষে, মাইটোসিসের আরও জটিল একটি প্রক্রিয়া অনুসরিত হয়। যাইহোক, শেষ ফলাফল একই; ফলে কোষ বিভাজনের ফলে সৃষ্ট কোষগুলো তার আদি কোষের সাথে পরিপূর্ণ সমাঞ্জস্য থাকে (মিউটেশনের কোষগুলো ছাড়া) এবং উভয়ই পরবর্তিতে আবার কোষ বিভাজনে সক্ষম থাকে একটি ইন্টারফেজ সময়ের পর থেকে।[১৯০]

    বহুকোষীয় জীবগুলি প্রথম বিকাশিত হয়েছিল কোষের কলোনি তৈরি করে। এই কোষগুলি গ্রুপ জীবের সৃষ্টি করতে পারে কোষীয় সংযুক্তির মাধ্যমে। কলোনির প্রত্যেক সদস্য পৃথকভাবে নিজেরমত বেঁচে থাকতে সক্ষম, অপরদিকে সত্যিকারের বহু-কোষীয় জীবের সদস্যরা আলাদা বিশেষত্ব বিকাশ করেছে, তাদের বেঁচে থাকার জন্য অবশিষ্ট জীবের উপর নির্ভর করে। এই ধরনের জীবগুলি কলোনি তৈরি করেছে বা একক জীবাণু কোষ তৈরি করেছে যা বিভিন্ন ধরনের বিশেষ কোষ গঠন করতে সক্ষম হয় যা পূর্ণাং জীব গঠন করে। এই বিশেষত্ব বহুকোষীয় জীবগুলিকে এক কোষীয় জীবের তুলনায় আরো দক্ষতার সাথে রসদ ব্যবহারে সাহায্য করে।[১৯১] জানুয়ারিতে ২০১৬ সালে, বিজ্ঞানীরা মন্তব্য করেন যে, প্রায় ৮০০ মিলিয়ন বছর আগে, একটি অণুতে একটি সামাণ্য জিনগত পরিবর্তন, যাকে জিকে-পিআইডি বলা হয়, হয়তো জীবের এক কোষীয় জীব থেকে বহুকোষীয় জীবে পরিণত করার পিছনে কাজ করেছে।[১৯২]

    কোষগুলো তার মাইক্রোপরিবেশ বোঝার ও এর সাথে খাপ খাওয়ার পদ্ধতি বের করেছে, যার ফলে তাদের অভিযোজন উন্নত হয়েছে। কোষীয় সংকেত ব্যবস্থা কোষীয় কার্যক্রম সমন্বয় করে থাকে, এবং একইসাথে বহুকোষীয় প্রাণীর মৌলিক কাজগুলো নিয়ন্ত্রণ করে। কোষীয় সংকেতগুলি সরাসরি সংস্পর্শের মাধ্যমে জেসট্যাক্রিন সিগন্যালিং ব্যবহার করে হতে পারে, অথবা পরোক্ষভাবে এন্ড্রাক্রিন সিস্টেমে এজেন্টদের বিনিময়ের মাধ্যমে হতে পারে। আরো জটিল জীবের ক্ষেত্রে, কার্যক্রমের সমন্বয় একটি সুনির্দিষ্ট স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে ঘটতে পারে।[১৯৩]

    বহির্জাগতিক

    মূল নিবন্ধসমূহ: বহির্জাগতিক প্রাণ, জ্যোতির্জীববিজ্ঞানজ্যোতির্বাস্তুসংস্থান

    যদিওবা নিশ্চিতভাবে একমাত্র পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশ ঘটেছে, অনেকেই মনে করেন যে বহির্জাগতিক প্রাণের বিকাশ যে শুরু কেবলমাত্র যুক্তিসঙ্গত তাই নয়, এটা খুবই সম্ভাব্য কিংবা অনিবার্য।[১৯৪][১৯৫] সৌরমণ্ডলের অন্যান্য গ্রহ ও তার চাঁদে এবং একইসাথে অন্যান্য গ্রহমণ্ডলে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে কোন একসময়ে এগুলোতে থেকে থাকা কোষীয় প্রাণীর অস্তিত্বের সন্ধানে এবং এসইটিইআই এরূপ একটি প্রজেক্ট, যারা বহির্জাগতিক প্রাণীর সভ্যতা কর্তৃক প্রেরিত রেডিও ট্রান্সমিশন শনাক্ত করার চেষ্টা করছে। সৌর জগতের অন্যান্য স্থান যেখানে অণুজীব প্রাণের অস্থিত্ব থাকতে পারে যার মধ্যে রয়েছে মঙ্গল গ্রহের অধিপৃষ্ট, শুক্র গ্রহের উপরের বায়ুমণ্ডল[১৯৬] এবং বৃহত্তাকার গ্রহগুলোর অধীনস্থ কিছু চাঁদের সাগরের উপরের পৃষ্ঠ।[১৯৭][১৯৮] সৌরজগতের বাইরে, কোন আরেকটি প্রধান-সিকোয়েন্স তারকাটি ঘিরে, যে অঞ্চলটি যা পৃথিবীর মত প্রাণ ধারণ করতে পারবে, পৃথিবীরই মত কোন গ্রহতে এমন অঞ্চলকে বাসযোগ্য অঞ্চল বলে হয়। এই অঞ্চলের ভেতর ও বাহ্যিক ব্যাসার্ধ পরিবর্তিত হতে পারে তারকাটির উজ্জ্বলতার সাথে, এটা অঞ্চলটির কত সময় ধরে টিকে থাকবে তার সাথেও উজ্জ্বলতা সম্পর্কিত। সূর্যের তুলনায় আরো বড় আকারের তারকায় বৃহতাকার বাসযোগ্য অঞ্চল থাকতে পারে, কিন্তু এটি অতি অল্প সময়ের ব্যবধান জন্য প্রধান-সিকোয়েন্স তারকা রূপে থাকে। ছোট লাল খর্বাকার তারকার ক্ষেত্রে আবার বিপরীত সমস্যা রয়েছে, এতে ছোট বাসযোগ্য অঞ্চল থাকতে পারে যা উচ্চ মাত্রার চুম্বকীয় সক্রিয়তায় মাঝে পরে যায় এবং এতে করে বদ্ধ কক্ষপথের টাইডাল লকিং এর প্রভাব দেখা দেয়। অতএব, মধ্যবর্তী ভর পরিসরের তারকা যেমন সূর্যের ক্ষেত্রে অধিক সম্ভাবনা কাজ করে পৃথিবীর মত প্রাণের বিকাশ ঘটার ক্ষেত্রে।[১৯৯] একটি ছায়াপথের মধ্যে তারকার সঠিক অবস্থানও প্রাণ বিকাশের সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারে। তারকার সাথে একটি অঞ্চলে থাকা ভারী উপাদানগুলো যা গ্রহ সৃষ্টি করতে পারে, এর সাথে সম্ভাব্য আবাসস্থলের জন্য-ক্ষতিকারক সুপারনোভা ইভেন্টগুলির কম হারের সংমিশ্রণ,  একত্রে জটিল প্রাণ ধারণে ও বিকাশে সক্ষম গ্রহ তৈরির সম্ভবনা অনেক বাড়িয়ে দেয়।[২০০] ড্রেকের সূত্রের ভেরিয়েবলগুলি ব্যবহার করে, গ্রহমণ্ডলের স্বম্ভাব্য অবস্থা আলোচনা করা হয় যেখানে সভ্যতা বিকাশের সম্ভবতা অধিক রয়েছে।[২০১] তার এই সূত্র ব্যবহার করে বহির্জাগতিক জীবনের সংখ্যা নিরূপন করা মোটামুটি কঠিন; তার কারণ ভেরিয়েবলগুলো বেশিরভাগই অজানা, ব্যবহারকারীর মতামত সমীকরণের ফাংশনগুলোর ক্ষেত্রে একটি আয়না হিসেবে কাজ করে। ফলস্বরূপ, ছায়াপথের সভ্যতার সংখ্যা সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ১০^-১১ থেকে সর্বোচ্চ ১৫৬ মিলিয়নের বেশি হতে পারে; বিস্তারিত জানার জন্য ড্রেকের সূত্র পড়ুন।

    কৃত্রিম

    মূল নিবন্ধসমূহ: কৃত্রিম জীবনসিনথেটিক জীববিজ্ঞান

    আর্টিফিশিয়াল লাইফ বা কৃত্রিম জীবন হল জীবনের কোন একটি বিশেষ অংশের অনুকরণ, যা করা হয়ে থাকে কম্পিউটার, রোবটিক্স বা জৈব-রসায়নের মাধ্যমে।[২০২] কৃত্রিম জীবনের অধ্যয়ন ঐতিহ্যগত জীববিদ্যাকে অনুকরণ করে কিছু জৈবিক ঘটনাকে পুনবৃত্তি করার প্রচেষ্টা করে। বৈজ্ঞানিকরা কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করে জীবিত সিস্টেমের যুক্তিগত দিকটি নিয়ে অধ্যয়ন করে-বোঝার চেষ্টা করে, সকল ধরনের জটিল তথ্য প্রসেসিংগুলো যা ওই সিস্টেমগুলির প্রকৃত সংজ্ঞা প্রদান করে।[১৮৪] যেখানে সংজ্ঞা অনুসারে, জীবন হল, জীবিত অবস্থায় থাকা, অপর দিকে কৃত্রিম জীবন বলতে সাধারণত একটি ডিজিটাল পরিবেশে এবং অস্তিত্বে সীমাবদ্ধ তথ্যকে বুঝানো হয়।

    সিনথেটিক জীববিজ্ঞান হল বায়োটেকনোলজির একটি নতুন ক্ষেত্র, যা বিজ্ঞানজৈব প্রকৌশলকে একত্রিত করে গঠিত। এর সাধারণ লক্ষ্য হচ্ছে নতুন জৈবিক ফাংশন ও সিস্টেমের নকশা করা এবং নির্মাণ করা যা প্রকৃতিতে পাওয়া যায় না। সিনথেটিক জীববিজ্ঞান ধারণ করে বায়োটেকনোলজির বিস্তারিত পুনসংজ্ঞা এবং তার সম্প্রসারণ। যার প্রকৃত উদ্দেশ্য হল যাতে করে ইঞ্জিনিয়ারিং করে জৈবিক সিস্টেমের নকশা ও কাঠামো তৈরি করতে পারা, যা তথ্য প্রক্রিয়া, রসায়নিক পরিবর্তন, উপকরণ ও কাঠামো তৈরি, শক্তি উৎপাদন, খাদ্য সরবরাহ এবং পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যকে স্বমন্নত এবং উত্তর উত্তর উন্নত করেতে পারবে।[২০৩]

    মৃত্যু

    মূল নিবন্ধ: মৃত্যু

    প্রাণীর মৃতদেহগুলি, যেমন এই আফ্রিকান মহিষের মত, বাস্তুতন্ত্রের মাধ্যমে পুনর্ব্যবহৃত হয়ে, জীবিত জীবজন্তুর জন্য শক্তি ও পুষ্টি সরবরাহ করে।

    মৃত্যু একটি জীব বা কোষের সব গুরুত্বপূর্ণ ফাংশন বা জৈবিক প্রক্রিয়ার স্থায়ী অবসান।[২০৪][২০৫] এটি ঘটতে পারে দুর্ঘটনা, রোগবালির, জৈবিক মিথস্ক্রিয়া, অপুষ্টি, বিষাক্ততা, বার্ধক্য বা আত্মহত্যার ফলে। মৃত্যুর পরে, একটি জীবের অবশিষ্টাংশ জৈবরাসায়নিক চক্রে পুনরায় প্রবেশ করে। জীবাংশ হয়তোবা শিকারী বা স্ক্যাভেঞ্জার কর্তৃক ভক্ষণ করা হতে পারে এবং বাদবাকি জৈবিক পদার্থগুলো ডিট্রিটিভোরাস দ্বারা আরো বিভাজিত হতে পারে, জীবাংশ যেগুলো ডেট্রিয়াস দ্বারা পুনঃব্যবহার যোগ্য হয়, সেগুলি পরিবেশে ফেরত আসে খাদ্য শৃঙ্খলে আবার ব্যবহারের জন্য।

    মৃত্যুকে সংজ্ঞায়িত করার চ্যালেঞ্জগুলির একটি হলো জীবন থেকে একে আলাদা করা। মৃত্যুর বলতে হয়, যে মুহূর্তে জীবনের শেষ হয়ে যায় তা বুঝায়, অথবা যে মুহূর্তে জীবনের সূচনা ঘটে তা বুঝায়।[২০৫] যাইহোক, যখন মৃত্যু ঘটেছে তা নির্ণয় করার জন্য জীবন ও মৃত্যুর মধ্যে সঠিক ধারণাগত সীমানা অঙ্কন করা প্রয়োজন। এটাই বেশি সমস্যাদায়ক, কারণ কিভাবে জীবনের সংজ্ঞা দেয়া হবে তার উপর সামান্যই ঐক্যমত্য রয়েছে। সহস্রাব্দ ধরে “মৃত্যুর প্রকৃতি” বিশ্বের ধর্মীয় ঐতিহ্যের প্রধান চিন্তাধারার এবং দার্শনিক অনুসন্ধানের অংশ হিসাবে বিবেচিত হয়েছে। বেশিরভাগ ধর্মীয় বিশ্বাস গড়ে উঠেছে হয়, পরকাল বা আত্মার পুনর্জন্ম অথবা পরবর্তীকালে দেহের পুনরুত্থানের উপর বিশ্বাস রেখে।

    বিলুপ্তি

    মূল নিবন্ধ: বিলুপ্তি

    বিলুপ্তকরণ হল প্রক্রিয়া যার ফলাফল হল, একটা টেক্সোন বা প্রজাতি গ্রুপের সকল প্রাণীর বিনাশ হওয়া, ফলশ্রুতিতে জীববৈচিত্র্য হ্রাস পায়।[২০৬] বিলুপ্তির মুহূর্তটি সাধারণত ধরা হয়, যখন ওই প্রজাতির শেষ জীবটি মারা যায়। কারণ একটি প্রজাতি সম্ভাব্য পরিসীমা বেশ বড় হতে পারে, তাই এই মুহূর্তটি নির্ধারণ করা কঠিন, ফলশ্রুতিতে এটা সাধারণত করা হয়ে থাকে অনুক্রমঅনুসারে পৃথকভাবে নির্দিষ্ট সময়ের পর আপাত অনুপস্থিতি থাকলে। প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে থাকে যখন তারা পরিবর্তনশীল আবাসস্থলের সাথে আর খাপ খাওয়াতে পারে না কিংবা শক্তিশালী প্রতিযোগী উপস্থিত থাকলে। পৃথিবীর ইতিহাসের, ৯৯% এরও বেশি প্রজাতির জীব যারা কোন না কোন সময় জীবন্ত ছিল আজ বিলুপ্ত হয়েছে;[১০৪][১০৫][১০৬][২০৭] যাইহোক, গণবিলুপ্তি হয়তোবা নতুন প্রজাতির জীবের বিবর্তন ত্বরানিত করেছে তাদের জন্য বৈচিত্রতার সুযোগ প্রদান করে।[২০৮]

    জীবাশ্ম

    মূল নিবন্ধ: জীবাশ্ম

    জীবাশ্ম হল সদূর অতীতের প্রাণী, উদ্ভিদ এবং অন্যান্য জীবের সংরক্ষিত অংশ বা অংশবিশেষ। সামগ্রিকভাবে সকল জীবাশ্মসমূহ, যা আবিষ্কৃত হয়েছে এবং আবিষ্কৃত হয়নি উভয়ই, এবং শিলা গঠনের ভিতরে ও পাললিক শিলা স্তরগুলির (স্ট্র্যাটা) মধ্যে থাকা জীবাশ্মগুলোকে একত্রে জীবাশ্ম রেকর্ড হিসাবে প্রকাশ করা হয়। একটি সংরক্ষিত নমুনাকে জীবাশ্ম বলা হবে যদি এটি ১০,০০০ বছরের চেয়ে পুরোনো হয়।[২০৯] যদিওবা, জীবাশ্মের বয়সের রেঞ্জ শুরু হয় সবচাইতে নবীনটি হলোসিন যুগের এবং প্রাচীনতমটি আর্কিয়ান যুগ পর্যন্ত, যা প্রায় ৩.৪ বিলিয়ন বছর পুরোনো।[২১০][২১১]

    আরও দেখুন

    পাদটীকা

    ভাইরাস ও অন্যান্য একই ধরনের জীবের বিবর্তন এখনো অজানা। ফলে এই শ্রেণীবিন্যাস প্যারাফাইলিক হতে পারে, কারণ কোষীয় জীবন অকোষীয় জীবন থেকে উদ্ভূত হতে পারে, বা পলিফাইলিক হতে পারে, কারণ সবচেয়ে সাম্প্রতিক প্রাপ্ত পূর্বপুরুষ প্যারাফাইলির অন্তর্ভুক্ত নয়। সংক্রামন প্রোটিন অণু প্রায়ন জীবন্ত বলে বিবেচিত হয় না, কিন্তু একে “জীব-সমতুল্য জৈবিক গঠন” বলে বর্ণনা করা হয়। কিছু বিশেষ ভাইরাস-আশ্রিত জৈবিক গঠনকে সাবভাইরাল এজেন্ট বলে বিবেচনা করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে স্যাটেলাইট ও ডিফেক্টিভ ইন্টারফারিং পার্টিকল, যাদের প্রতিরূপ ধারণ করতে সাহায্যকারী ভাইরাসের প্রয়োজন হয়

  • জীব দ্যুতি

    জীব দ্যুতি

    জীব দেহ হতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আলো নিঃসৃত হওয়ার ঘটনাকে বায়োলুমিনিসেন্স (Bioluminescence) বা জীব দ্যুতি বলে। অথবা, যে পদ্ধতিতে কিছু জীব রাসায়নিক শক্তিকে আলোক শক্তিতে রুপান্তরিত করে। স্থলজ ও জলজ উভয় প্রকার প্রাণীতে এই রকমের দ্যুতি বা আলো দেখা যায়। যেমনঃ জোনাকি পোকা, নকটিলুকা। বিজ্ঞানীদের মতে এই সকল প্রাণীদের দেহে দু’ধরনের রাসায়নিক পদার্থ লুসিফেরিনলুসিফারেজ থাকে যা অক্সিজেনের উপস্থিতিতে বিক্রিয়া করে আলো উৎপন্ন করে।

    জীব দ্যুতি

    সাধারণ অর্থে, জীবদ্যুতিতল মূল রাসায়নিক বিক্রিয়ায় একটি হালকা-নির্গত অণু এবং একটি এনজাইম জড়িত, সাধারণত যা লুসিফেরিন এবং লুসিফেরেজ নামে পরিচিত।  যেহেতু এগুলি জেনেরিক নাম, লুসিফারিন এবং লুসিফেরেসগুলি প্রায়শই প্রজাতি বা গোষ্ঠী অন্তর্ভুক্ত করে আলাদা হতে পারে , অর্থাৎ ফায়ারফ্লাই লুসিফেরিন।  সমস্ত বৈশিষ্ট্যযুক্ত ক্ষেত্রে, এনজাইম লুসিফেরিনের জারণকে অনুঘটক বা catalyst করে।

    কিছু প্রজাতিতে লুসিফ্রেসের জন্য অন্যান্য কফ্যাক্টর(কোএনজাইম) যেমন ক্যালসিয়াম বা ম্যাগনেসিয়াম আয়নগুলির প্রয়োজন হয় এবং কখনও কখনও এনার্জি বহনকারী অণু অ্যাডেনোসিন ট্রাইফোসফেট (ATP) থাকে।  বিবর্তনে, লুসিফেরিনগুলি সামান্য পরিবর্তিত হয়: বিশেষত একটি, কোয়েলেনটেরাজিন(এক ধরনের লুসিফেরিন /আলো উৎপাদক অনু) ১১ টি বিভিন্ন প্রাণী ফাইলাতে(পর্ব) পাওয়া যায়, যদিও এর মধ্যে কিছুতে, প্রাণীগুলি তাদের খাদ্যতালিকার মাধ্যমে এটি গ্রহণ করে।  বিপরীতে, লুসিফেরেসগুলি বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়, যা প্রমাণ হয় যে বিবর্তনীয় ইতিহাসে বায়োলুমিনেসেন্স ৪০ বারেরও বেশি উত্থিত হয়েছিল।

    অ্যারিস্টটল এবং প্লিনি দ্য এল্ডার উভয়ই উল্লেখ করেছিলেন যে স্যাঁতসেঁতে কাঠ কখনও কখনও এক আলোকসজ্জা দেয়।  বহু শতাব্দী পরে রবার্ট বয়েল দেখিয়েছিলেন যে কাঠ এবং গ্লোভোর্ম উভয় ক্ষেত্রেই অক্সিজেন জড়িত ছিল। উনিশ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত বায়োলুমিনেসেন্স সঠিকভাবে তদন্ত করা হয়নি।  ঘটনাটি প্রাণী গোষ্ঠীর মধ্যে বিশেষত সামুদ্রিক পরিবেশে বিস্তৃত হয়।  জমিতে এটি ছত্রাক, ব্যাকটিরিয়া এবং পোকামাকড় সহ অমেরুদণ্ডী এর কিছু গ্রুপে দেখা যায়।

    প্রাণীর দ্বারা জৈব পদার্থের ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে পাল্টা আলোকসজ্জা ছদ্মবেশ, অন্যান্য প্রাণীর নকল, উদাহরণস্বরূপ শিকারকে লোভনীয় করা এবং একই প্রজাতির অন্যান্য ব্যক্তির সাথে সংকেত দেওয়া, যেমন সঙ্গিনীকে আকর্ষণ করার জন্য।  পরীক্ষাগারে লুসিফ্রেজ-ভিত্তিক সিস্টেমগুলি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বায়োমেডিকেল গবেষণায় ব্যবহৃত হয়।  গবেষকরা রাস্তায় এবং আলংকারিক আলোতে বায়োলুমিনসেন্ট সিস্টেম ব্যবহারের সম্ভাবনাও তদন্ত করছেন এবং একটি বায়োলুমিনসেন্ট উদ্ভিদ তৈরি করা হয়েছে।

    এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন।

    বায়োলুমিনেসেন্সঃ বায়োলুমিনেসেন্স হলো একপ্রকার শীতল আলো যা কোনো জীবন্ত জীবের দেহ থেকে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপাদিত হয়। শীতল আলো বলতে,যে আলোতে ২০% এরও কম তাপ উৎপন্ন হয়। এরা ২০০- ১০০০ মিটার গভীরে পাওয়া যায়।

    বায়োলুমিনেসেন্টঃ যে সমস্ত জীব বায়োলুমিনেসেন্স তৈরিতে সক্ষম তাদেরকে বায়োলুমিনেসেন্ট জীব বলা হয়।বেশির ভাগ বায়োলুমিনেসেন্স সমুদ্রে দেখা যায়,কেননা সমুদ্রের গভীরের যেসব স্থানে আলো পৌছাতে পারে না সেসব স্থানে ৯০% এর বেশি বায়োলুমিনেসেন্ট জীব দেখা যায়। বায়োলুমিনেসেন্স তৈরী করে এমন কিছু সামুদ্রিক জীব হলো-ব্যাকটেরিয়া,ছত্রাক,স্কুইড,জেলিফিশ,ফায়ারফ্লাই,গ্যাস্ট্রোপোড,ছোটবড় বিভিন্ন মাছ সহ খুব অল্প সংখ্যক হাঙ্গর। এছাড়াও স্থল বা ভূমিতেও বায়োলুমিনেন্ট জীব দেখা যায়,যেমনঃজোনাকি পোকা,মিলিপিড,সেন্টিপিড,নেমাটোড,রেলপথের কীট,কিছু মাশরুম এবং কেঁচো। কিন্তু মিঠাপানিতে অর্থাৎ পুকুর কিংবা নদীর পানিতে এখনো বায়োলুমিনেসেন্স লক্ষ্য করা যায় নি।

    বায়োলুমিনেসেন্ট সকল জীবগুলো প্রকৃতি প্রদত্ত বায়োলুমিনেসেন্স ক্ষমতার অধিকারী নাও হতে পারে,,এক্ষেত্রে কিছু কিছু প্রাণী বায়োলুমিনেসেন্ট জীব গুলোর সাথে মিথোজীবীতা অথবা তাদেরকে ভক্ষণের ফলে বায়োলুমিনেসেন্স প্রদর্শন করতে পারে।

    বায়োলুমিনেসেন্স তৈরি প্রক্রিয়াঃ লুমিনেসেন্ট প্রতিক্রিয়াতে লুসিফেরিন এবং লুসিফেরেজ নামে দুই ধরণের রাসায়নিক পদার্থ একত্রিত হয়। প্রোটিন লুসিফেরেজ অনুঘটক হিসাবে কাজ করে, লুসিফেরিনকে বেঁধে রাখে এবং এর জারণকে সহজতর করে, যার ফলে শক্তি বা আলো উৎপন্ন হয়।


    বায়োলুমিনেসেন্স এর কাজ- বায়োলুমিনেসেন্স ব্যবহার করে বায়োলুমিনেন্ট জীবেরা শিকার ধরা,আত্মরক্ষা,যোগাযোগ করে থাকে।

    শিকার ধরতেঃ অন্ধকার মহাসাগরে বায়োলুমিনেন্ট জীব গুলো হালকা আলোর ঝলকানি ব্যবহার করে শিকারকে আকৃষ্ট করে,কিছু মাছ বায়োলুমিনেসেন্স কে একটি টর্চলাইট হিসেবে ব্যবহার করে।অ্যাংলারফিশের মতো মাছগুলি লুমিনাস ব্যাকটেরিয়াকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে শিকারকে বোকা বানিয়ে দেয়।

    আত্মরক্ষাঃ

    বায়োলুমিনেসেন্ট জীব গুলো যখন কোনো শিকারির ফাঁদে পড়ে তখন তারা বিভিন্ন আলো প্রদর্শন করে শিকারির চোখকে ফাঁকি দিয়ে পলায়ন করে অথবা তারা আত্মরক্ষার জন্য বর্ণ পরিবর্তন করে নিজেদের আড়াল করে রাখে।
    

    যোগাযোগঃ “ফায়ারফ্লাই” বায়োলুমিনেসেন্স ব্যবহার করে পুরুষ ও স্ত্রী’রা ঝলকানি বিনিময় করে। স্ত্রী’রা উড়ন্ত পুরুষদের ঝলকানিতে সাড়া দেয়,সাড়া পেয়ে পুরুষ সদস্যরা স্ত্রী সদস্যদের কাছে আসে এবং তাদের সঙ্গম হয়। এছাড়াও বিভিন্ন ধরণের ফায়ারফ্লাই এর সদস্যদের মধ্যে বিভ্রান্তি এড়াতে, প্রতিটি প্রজাতির সংকেতগুলি ক্রম অনুসারে কোড করা হয়।

    বায়োলুমিনেসেন্স এর বর্ণঃ নীল রঙ ছাড়াও বায়োলুমিনেসেন্স বেশ কিছু বর্ণের হতে পারে।তবে,নীল থেকে লাল রঙের মাধ্যমে বিভিন্ন রঙে বায়োলুমিনেসেন্স হয়।ফায়ারফ্লাই এবং কিছু বিটলের মতো স্থলজ প্রাণীগুলোতে বায়োলুমিনেসেন্স সবুজ বা হলুদ আবার কখনো কখনো লালও হতে পারে।তবে সমুদ্রের বায়োলুমিনেসেন্স বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নীল-সবুজ বা সবুজ হয়ে থাকে।

    বায়োলুমিনেসেন্স এর উপকারিতাঃ

    • উপজাতিরা ঘন জঙ্গলের মধ্যে যাতায়াতের সময় আলো জ্বালানোর জন্য বায়োলুমিনেসেন্স ব্যবহার করে থাকে।খননকারীরা সুরক্ষা প্রদীপ হিসেবে “ফায়ারফ্লাই” ব্যবহার করতেন।
    • গোবেষকরা সবুজ শক্তির সম্ভাব্য উৎস হিসেবে বায়োলুমিনেসেন্স এর দিকে ঝুকছেন।
    • ভবিষ্যতে রাস্তার ল্যাম্পপোস্ট গুলোতে বায়োলুমিনেসেন্স এর ব্যবহার হতে পারে।
    • পানির বিষাক্ততা পরীক্ষণের জন্য বায়োলুমিনেসেন্স ব্যবহৃত হয়।

    বায়োলুমিনেসেন্স একটি বিরল ঘটনা,নিম্নলিখিত স্থান সমূহতে ভ্রমণ করে আপনিও এই অসাধারণ দৃশ্য গুলো উপভোগ করতে পারবেন-

    • San Diego, California, USA
    • Luminous Lagoon, Jamaica
    • Little Corn Island, Nicaragua
    • Bocas del Toro, Panama