Tag: আল কালাম (বই)

  • আল কালাম (বই)

    আল কালাম (বই)

    আল কালাম (উর্দু: الکلام‎‎) শিবলী নোমানীর রচিত একটি কালামশাস্ত্র বিষয়ক গ্রন্থ।[১] এটি ১৯০৪ সালে প্রকাশিত হয়। এটি শিবলীর পূর্ববর্তী গ্রন্থ ইলমুল কালামের সম্পূরক গ্রন্থ। তাই গ্রন্থটিকে ইলমুল কালামের দ্বিতীয় খণ্ডও বলা হয়। এ গ্রন্থটিতে তিনি কালামশাস্ত্রের আধুনিক রুপ দর্শন সহ ধর্মীয় বিশ্বাস সংক্রান্ত মৌলিক বিষয়গুলো এবং ইসলামি বিধিবিধানের স্বপক্ষে ও বিপক্ষে বিবৃত যাবতীয় বিষয়ের খুঁটিনাটি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরে দর্শনের আয়নায় ইসলামের যাবতীয় বিধিবিধানকে যথার্থ ও সুচিন্তিত প্রমাণ করার প্রয়াস চালিয়েছেন।[২]

    আল কালাম (বই)

    মূল্যায়ন

    গ্রন্থটির বঙ্গানুবাদক অধ্যাপক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন,

    মিশনারীদের খ্রিস্ট ধর্মপ্রচার এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সাম্প্রদায়িক অন্তর্দ্বন্দ্ব ভারতীয় মুসলমানদের মন-মেজাজকে অতিষ্ঠ ও পরাভূত করে রেখেছিল। তারা যুগের একজন গাযালী বা রাযী বা ইবনে রুশদের আবির্ভাবের প্রতীক্ষায় ছিল। তারা নাস্তিকদের অভিযোগ রদ করে আপন ধর্মীয় বিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যুক্তির খোঁজে উন্মুখ হয়ে রয়েছিল। শিবলী মুসলমানদের বিপদগামী হতে দেননি। তিনি সুষ্ঠু বুদ্ধিভিত্তিক প্রমাণ দিয়ে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসসমূহ প্রতিষ্ঠিত করেন। যাঁরা দর্শন ও যুক্তিবিদ্যার চর্চা করেন, তাঁরা ভাল করে জানেন যে, ভারতে আজ পর্যন্ত শিবলীর সমকক্ষ কোন কালামবিদ জন্মগ্রহণ করেনি। তাঁর এ রচনাদ্বয়ের জ্ঞান ও যুক্তিবাদের আলোকে ইসলামের মৌলিক আকীদাসমূহ উপলব্ধি করা যায়। যারা এতদিন নিজেদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে কেবল হাওয়ার উপর দাঁড় করিয়ে রেখেছিল এবং মনের টানেই আপন ধর্মীয় বিশ্বাসে অটল ছিল, তাদের জন্য এই গ্রন্থদ্বয় ছিল মহার্ঘ্য। এর ফলে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস খুবই দৃঢ়তা লাভ করে। শিবলী রচিত গ্রন্থদ্বয়ের উপকারিতা এখানেই শেষ নয়। পাশ্চাত্য দর্শনের দিক থেকে ইসলামী আকায়েদের বিরুদ্ধে যে সব প্রশ্নের অবতারণা করা হয়, সেগুলোর দাঁতভাঙ্গা জওয়াব দেবার জন্যও মুসলিম চিন্তাবিদগণ এ রচনাদ্বয়ের সাহায্য গ্রহণ করতে আরম্ভ করেন। শিবলী যখন “ইলমুল কালাম”“আল – কালাম” রচনায় রত ছিলেন, তখন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে মুসলমানরা ছিল পর্যুদস্ত। এছাড়া পাশ্চাত্য সমাজ ব্যবস্থাও তখন ইসলামি আকায়েদকে বিনষ্ট করার জন্য ছিল যথেষ্ট। আজ বাংলাদেশে খ্রিস্টান মিশনারিগণ নব নব কৌশলে ইসলামের মৌলিক আকায়েদ বিনষ্ট করতে বদ্ধপরিকর। এমতাবস্থায় শিবলীর “আল কালাম”“ইলমুল কালাম”–এর উপকারিতা আরও বেড়ে যেতে বাধ্য৷
    — [৩]

    সমালোচনা

    ইলমুল কালামআল কালাম প্রকাশের পর গ্রন্থদ্বয়ের বিভিন্ন ব্যাখ্যা নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়, এমনকি তাকে কাফির ফতোয়াও দেওয়া হয়। পরবর্তী শিবলী নোমানী তার ব্যাখ্যাও দেন। স্রষ্টা ও নবুয়ত সম্পর্কে তিনি বলেন,

    যার এই বিশ্বাস হবে যে, বস্তু চিরঞ্জীব এবং স্রষ্টার তৈরী নয় তাহলে সে নাস্তিক ও নিরশ্বরবাদী হবে। আমি বস্তুকে না চিরস্থায়ী মনে করি না চিরঞ্জীব মনে করি। আমি মনে করি স্রষ্টার সকল গুণাবলী চিরঞ্জীব এবং চিরস্থায়ী। নবুয়ত সম্পর্কে আমি কখনও এই বিশ্বাস করিনা যে, এটি অর্জিত সম্পদ এবং যে কেউ নবী হতে পারে। আমি মনে করি নবুয়ত আল্লাহর অনুগ্রহ।