Tag: বনু আউস

  • বনু আউস

    বনু আউস

    বানু আউস (আরবী: بنو أوس অর্থ আউস বংশধর)৷এ গোত্রের বিখ্যাত একজন ব্যক্তির নাম ছিল আউস৷ তার নামে এ গোত্রটি বনু আউস নামে প্রসিদ্ধি পায়৷ বনু আউস মদিনার আরব গোত্রসমূহের মধ্যে প্রধান একটি গোত্র। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সহচরগণ হিজরত[১][২][৩] করে মদীনা যাওয়ার পর বানু আউস এবং বানু খাযরাজ (মদীনার আরেকটি গোত্রের নাম) তাদেরকে সর্বপ্রকার সাহায্য সহযোগীতা করেন৷ ফলে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুশি হয়ে এ উভয় গোত্রকে আন্সার উপাধিতে ভূষিত করেন৷ আনসার অর্থ সাহায্যকারীবৃন্দ। আউস ও খাযরাজ দুভাই ছিলেন৷ তাদের বাবার নাম হারিসা বিন ছা’লাবা(তিনি জাফনা উপগোত্রের একটি শাখাগোত্র বানু সালাবা এর প্রধান গোত্রপতি ও বানু ক্বায়লাহ শাখাগোত্রের সর্দার ছিলেন)৷ আর মায়ের নাম ক্বায়লাহ বিনতে কাহিল৷ মায়ের নামে এ দুগোত্র কে একত্রে বানু ক্বায়লাহ ( بنو قيلة) নামেও ডাকা হতো।[১]

    বনু আউস

    নামকরণ

    এ গোত্রের নামকরণ গোত্রের প্রথম ব্যক্তি আউস বিন হারেছা এর নামে। আউসের আঠারোতম ঊর্ধ্বতন পুরুষের নাম ক্বাহতান৷ মূল গোত্র থেকে যখন এ শাখা গোত্রটি পৃথক হচ্ছিলো তখন এর প্রবীন ব্যক্তি ছিলেন আউস৷ এজন্য তার নামেই গোত্রটি পরিচিতি পায়৷ [১]

    ইতিহাস

    প্রাক ইতিহাস

    ৩০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে[৪] মা’রিব বাঁধের বড় বন্যার কারণে ইয়েমেন থেকে কাহলানে অভিবাসিত হওয়ার সময়ে তালাবা বিন আমর, সকল আইসের পূর্ব পুরুষ, নিজের গোত্র থেকে আলাদা হয়ে যান এবং ইয়াসরিবে (মদিনা) বসবাস শুরু করে।[৫] এই এলাকা তখন ইহুদিতে শাসনাধীন ছিলো। বনু কয়লা গোত্র কিছুদিন ইহুদিদের প্রজা হিসেবে ছিলো। খাজরাজ গোত্রের মালিক বিন আজলান ইহুদিদের কাছ থেকে স্বাধীনতা আদায় করে নেন। ফলে আউজ এবং খাজরাজ গোত্র খেঁজুর বাগানের মালিকানা(শেয়ার) লাভ করে।[১] ৫ম শতকে বানু ক্বায়লাহ্ গোত্র ইয়াসরিবকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয় এবং ইহুদি গোত্রগুলো এক শতাব্দীর জন্য ইতিহাসের আড়ালে চাপা পড়ে।[৩]

    ইসলামের আগমন

    হিজরত (৬২২ খ্রিস্টাব্দ)

    মুহাম্মদ মক্কা কাফেরদের (মক্কার মূর্তিপুজারীগণকে ইসলামে কাফের নামে অভিহিত করা হয়) অত্যাচারে হিজরত করে মদিনা চলে আসেন। মদিনার বানু আউস এবং বানু খাজরাজ গোত্রের মধ্যকার বিরোধ নিরসনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। মদিনা সনদ এর ৩০-৩১ ধারায় বনু আউস গোত্রকে মুসলমানদের মিত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়।[৬] এর পর থেকে বনু আউস সহ মদিনার অন্যান্য গোত্রগুলো আনসার নামে পরিচিত পায়। ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দে কাব ইবনে আল আশরাফ বনু আউসের লোকের হাতে নিহত হয়।

    বানু কুরাইজাহ – ৬২৭

    বানু কুরাইজা ছিলো মদিনায় বসবাসরত একটি ইহুদি গোত্র। এই গোত্রের কিছু লোক ধর্মান্তরিত হয়। বানু কুরাইজা গোত্র মদিনার অন্যান্য গোত্রের সাথে মদীনা সনদে স্বাক্ষর করে। কিন্তু তারা গোপনে মক্কার কুরাইশদের সঙ্গে আঁতাত করে। মক্কার কুরাইশগন মদিনার মুসলমানদের আক্রমণ করে। যা খন্দকের যুদ্ধ নামে পরিচিত। ৬২৭ সালের এই যুদ্ধে কুরাইশগণ পরাজিত হয়ে মক্কায় পালিয়ে যায়। অন্যদিকে মদিনার অধিবাসী এবং মক্কা থেকে আগত মুসলিম অভিবাসীদের হাতে বনু কুরাইজা গোত্রের ইহুদিদের বড় অংশ নিহত হয়।

    বানু কুরাইজা গোত্র আগের একটি যুদ্ধে বনু আউসের মিত্র বাহিনী ছিলো। মদিনাবাসীগণ যখন বানু কুরাইজাকে বিশ্বাসঘাতকতার জন্য বন্দি করলো তখন তারা বিচারের জন্য আউস গোত্রের প্রধান সাদ ইবনে মুয়াজ কে বিচারক নির্বাচন করলো।[৭] সাদ অভিযুক্ত গোত্রের পুরুষকে হত্যা এবং নারী ও শিশুকে দাস হিসেবে বন্দী করার রায় দেন।[৩] সাদ খন্দকের যুদ্ধে মারাত্বক আহত হয়েছিলেন। এর অল্প কিছুদিন পরে তিনি মারা যান।

    বনু আউস গোত্রের কয়েকজন ব্যক্তি