Tag: ৪৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারি টেস্ট

  • কর্কটক্রান্তি

    কর্কটক্রান্তি

    কর্কটক্রান্তি বা কর্কটক্রান্তি রেখা (কর্কট মানে কাঁকড়া) বা উত্তর বিষুব পৃথিবীর মানচিত্রে অঙ্কিত প্রধান পাঁচটি অক্ষাংশের একটি। এটি বিষুবরেখা হতে উত্তরে অবস্থিত এবং ২৩ ডিগ্রী ২৬ মিনিট ২২ সেকেন্ড অক্ষাংশ বরাবর কল্পিত একটি রেখা।

    হেলে থাকা বিষুব রেখা

    পৃথিবী কক্ষতলের উপর লম্বভাবে থাকার বদলে একটু হেলে থাকে। (সারা বছর একই দিকে হেলে থাকে, সবসময় সূর্যের দিকে নয়- এ জন্য ঋতু পরিবর্তন হয় – বছরের অর্ধেক সময় উত্তর মেরু সূর্যের দিকে ফিরে থাকে)। কক্ষতলের উপর লম্বের থেকে আহ্নিক অক্ষের এই হেলে থাকা অর্থাৎ অবনতি কোণের পরিমাণ মোটামুটি ২৩ ডিগ্রী ২৬ মিনিট ২২ সেকেন্ড (~২৩.৪৪ ডিগ্রী)। তাই কর্কট সংক্রান্তির (June Solstice) দিন অর্থাৎ সূর্যের উত্তরায়ণের সর্বোচ্চ দিন (যেদিন উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে সবচেয়ে বেশি হেলে থাকে[১] এবং এ গোলার্ধে দিবালোক সবচেয়ে বেশীক্ষণ থাকে) সূর্য যে অক্ষাংশ রেখায় লম্বভাবে আলোকপাত করে সেই ২৩ ডিগ্রী ২৬ মিনিট ২২ সেকেন্ড অক্ষাংশ রেখাই হল কর্কটক্রান্তি রেখা।

    ২৩ ডিগ্রী ২৬ মিনিট ২২ সেকেন্ড অক্ষাংশ রেখাটিকে কর্কটক্রান্তি রেখা বলা হলেও লম্ব আলোকপাতে আসল অবস্থান নির্ভর করে পৃথিবীর হেলে থাকার কৌণিক পরিমাণের উপর। আর সেই কোণটি প্রতি ৪১,০০০ বছরের একটি চক্রাকার পর্যায়ক্রমে ২১.৫ থেকে ২৪.৫ ডিগ্রীর মধ্যে বদলাতে থাকে। সেই হিসাবে বর্তমান পর্যায়ে কর্কটক্রান্তি রেখার অবস্থান প্রতি বছর আধ সেকেন্ড করে কমে আসছে। এছাড়া ধীর পরিবর্তন ছাড়াও আহ্নিক অক্ষটি ঘুর্ণণরত লাট্টুর মতই স্থায়ী না থেকে প্রিসেশন নামে একটি বলয়াকার গতি এবং ন্যুটেশন নামে একটি দোদুল্যমান গতি পরিদর্শন করে। ন্যুটেশনের পর্যায়কাল পৃথিবীর ক্ষেত্রে ১৮.৬ বছর এবং কৌণিক পরিমাণ প্রায় সাড়ে নয় সেকেন্ড। রেখাটি নির্দিষ্ট নয় এবং এটি প্রত্যেক বছর ১৫ মিটার(০.৪৮৬″) করে দক্ষিণদিকে সরে যাচ্ছে। রেখাটি ১৯১৭ সালে ছিল ২৩° ২৭′ এবং ২০৪৫ সালে ২৩° ২৬’অক্ষাংশে পৌঁছাবে।[২]

    নামের ইতিহাস

    এই নামকরণ হয় কারণ তখন কর্কট সংক্রান্তির দিন সূর্য কর্কট রাশিতে অবস্থান করছিল। কিন্তু প্রিসেশনের কারণে বর্তমানে কর্কট সংক্রান্তির দিন সূর্য আসলে মিথুন রাশিতে অবস্থান করে।

    যেসব দেশের অবস্থান কর্কটক্রান্তির উপর

    সকল স্থানাঙ্কের মানচিত্র: ওপেনস্ট্রীটম্যাপ 
    এই হিসেবে স্থানাঙ্ক ডাউনলোড করুন: KML · GPX

    মূল মধ্যরেখা থেকে শুরু করে পূর্বদিকে গেলে কর্কটক্রান্তি রেখা যে সমস্ত দেশ ও সমুদ্রের উপর দিয়ে যায় সেগুলো হল:

    অক্ষের হেলে থাকার কৌণিক পরিমাণ বদল

    প্রিসেশনের উপর সন্নিবেশিত ন্যুটেশন

    স্থানাঙ্কদেশ, অঞ্চল বা সমুদ্রমন্তব্য
    ২৩°২৬′ উত্তর ০°০′ পূর্ব আলজেরিয়া
    ২৩°২৬′ উত্তর ১১°৫১′ পূর্ব নাইজার
    ২৩°২৬′ উত্তর ১২°১৭′ পূর্ব লিবিয়াকর্কটক্রান্তি রেখা ২৩°২৬′ উত্তর ১৫°৫৯′ পূর্ব-এ চাদের উত্তর সীমা স্পর্শ করে।
    ২৩°২৬′ উত্তর ২৫°০′ পূর্ব মিশর
    ২৩°২৬′ উত্তর ৩৫°৩০′ পূর্বলোহিত সাগর
    ২৩°২৬′ উত্তর ৩৮°৩৮′ পূর্ব সৌদি আরব
    ২৩°২৬′ উত্তর ৫২°৮′ পূর্ব সংযুক্ত আরব আমিরাতকেবলমাত্র আবু ধাবি আমিরাত
    ২৩°২৬′ উত্তর ৫৫°২৪′ পূর্ব ওমান
    ২৩°২৬′ উত্তর ৫৮°৪৬′ পূর্বভারত মহাসাগরআরব সাগর
    ২৩°২৬′ উত্তর ৬৮°২৩′ পূর্ব ভারতগুজরাত, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ডপশ্চিমবঙ্গ রাজ্য
    ২৩°২৬′ উত্তর ৮৮°৪৭′ পূর্ব বাংলাদেশখুলনা, ঢাকা, ও চট্টগ্রাম বিভাগ
    ২৩°২৬′ উত্তর ৯১°১৪′ পূর্ব ভারতত্রিপুরা রাজ্য
    ২৩°২৬′ উত্তর ৯১°৫৬′ পূর্ব বাংলাদেশচট্টগ্রাম বিভাগ
    ২৩°২৬′ উত্তর ৯২°১৯′ পূর্ব ভারতমিজোরাম রাজ্য
    ২৩°২৬′ উত্তর ৯৩°২৩′ পূর্ব মিয়ানমার (বর্মা)চিন রাজ্য, সাগাইং বিভাগ, মান্দালয় বিভাগ, শান রাজ্য
    ২৩°২৬′ উত্তর ৯৮°৫৪′ পূর্ব গণচীনProvinces of Yunnan (passing about 7 km north of the border with  ভিয়েতনাম), Guangxi, and Guangdong
    ২৩°২৬′ উত্তর ১১৭°৮′ পূর্বতাইওয়ান প্রণালী
    ২৩°২৬′ উত্তর ১২০°৮′ পূর্ব প্রজাতন্ত্রী চীন (তাইওয়ান)চিয়ায়ি কাউন্টি, হুয়ালেইন কাউন্টি
    ২৩°২৬′ উত্তর ১২১°২৯′ পূর্বপ্রশান্ত মহাসাগরPassing just south of Necker Island, Hawaii,  যুক্তরাষ্ট্র
    ২৩°২৬′ উত্তর ১১০°১৫′ পশ্চিম মেক্সিকোবাহা ক্যালিফোর্নিয়া সুর রাজ্য
    ২৩°২৬′ উত্তর ১০৯°২৪′ পশ্চিমক্যালিফোর্নিয়া উপসাগর
    ২৩°২৬′ উত্তর ১০৬°৩৫′ পশ্চিম মেক্সিকোসিনালোয়া, দুরাঙ্গো, যাকাটেকাস, সান লুই পোওসি, নুয়েভো লিয়োঁ এবং টামাউলিপাস রাজ্য
    ২৩°২৬′ উত্তর ৯৭°৪৫′ পশ্চিমমেক্সিকো উপসাগর
    ২৩°২৬′ উত্তর ৮৩°০′ পশ্চিমঅতলান্তিক মহাসাগরPassing through the Straits of Florida and the Nicholas Channel
    Passing just south of the Anguilla Cays ( বাহামা দ্বীপপুঞ্জ)
    Passing through the Santaren Channel and into the open ocean
    ২৩°২৬′ উত্তর ৭৬°০′ পশ্চিম বাহামা দ্বীপপুঞ্জExuma Islands and Long Island
    ২৩°২৬′ উত্তর ৭৫°১০′ পশ্চিমঅতলান্তিক মহাসাগর
    ২৩°২৬′ উত্তর ১৫°৫৭′ পশ্চিমপশ্চিম সাহারা মরক্কো কর্তৃক দাবীকৃত
    ২৩°২৬′ উত্তর ১২°০′ পশ্চিম মৌরিতানিয়া
    ২৩°২৬′ উত্তর ৬°২৩′ পশ্চিম মালি
    ২৩°২৬′ উত্তর ২°২৩′ পশ্চিম আলজেরিয়া

    অন্যান্য তথ্য

    রেখাটির দৈর্ঘ্য ৩৬,৭৮৭.৫৫৯ কিমি বলে ধরা হয় যদিও উপরোল্লিখিত কারণে এত সঠিক মাপ বলা সম্ভব নয়। আন্তর্জাতিক বায়ুভ্রমণ ফেডারেশনের (Fédération Aéronautique Internationale) নিয়ম অনুসারে পৃথিবী প্রদক্ষিণকারী বায়ু ভ্রমণ দাবী করতে হলে কমপক্ষে এই দৈর্ঘ্য অতিক্রম করতে হবে, সবকটি দ্রাঘিমারেখাকে পার হতে হবে এবং যে বিমান বন্দরে যাত্রা শুরু সেই একই বিমানবন্দরে অবতরণ করতে হবে।

    চীনদেশের শীতল পার্বত্যাঞ্চল বাদ দিলে, এবং পূর্বাংশে অবস্থিত উপকূলীয় এলাকা যেখানে অরোগ্রাফিক বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে সেগুলি ব্যতীত, কর্কটক্রান্তি রেখায় অবস্থিত অঞ্চলগুলি সাধারণত উষ্ণ ও শুষ্ক হয়ে থাকে। [৩]

    এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন।
  • ওজোন স্তর

    ওজোন স্তর

    ওজোন স্তর (Ozone layer) হচ্ছে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের একটি স্তর যেখানে তুলনামূলকভাবে বেশি মাত্রায় ওজোন গ্যাস থাকে। এই স্তর থাকে প্রধানতঃ স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের নিচের অংশে, যা ভূপৃষ্ঠ থেকে কমবেশি ২০-৩০ কিমি উপরে অবস্থিত। এই স্তরের পুরুত্ব স্থানভেদে এবং মৌসুমভেদে কমবেশি হয়। [১] O2 + ℎνuv → 2O O + O2 ↔ O3

    বায়ুমণ্ডলে ওজোনের প্রায় ৯০ শতাংশ স্ট্রাটোস্ফিয়ারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওজোন কেন্দ্রীকরণ প্রায় ২০ এবং ৪০ কিলোমিটার (৬৬,০০০ এবং ১৩১,০০০ ফুট), তারা যেখানে মিলিয়ন প্রতি প্রায় ২ থেকে ৮ অংশ থেকে পরিসীমার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হয়। যদি এই ওজোনের সবটুকু অংশ সমুদ্রতল এর বায়ু চাপ দ্বারা সংকুচিত করা হয় তাহলে এটি শুধুমাত্র ৩ মিলিমিটার (১/৮ ইঞ্চি) পুরু হবে!ওজন গ্যাসের ঘনত্ব মাপা হয় DU(ডবসন ইউনিট )-এ |বিজ্ঞানী ডবসন আবিষ্কৃত স্পেক্ট্রোফটোমেটের এর সাহায্যে এই ঘনত্ব পরিমাপ করা হয় | নিরক্ষীয় গ্যাসের উপর ওজন গ্যাসের ঘনত্ব 150DU, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের ওপর 350DU, মেরু ও উপমেয় অঞ্চলের ওপর 450DU| ওজোন স্তরের বিনাশের কারণ:-

    বিজ্ঞানীদের হিসাব অনুযায়ী 1970 সালের পর থেকে স্ট্রাটোস্ফিয়ার এর মোট ওজনের প্রায় 4% ধ্বংস হয়েছে| উভয় মেরুর দিকে ধ্বংসের মাত্রা বেশি ওজন স্তর বিনাশের কারণ গুলিকে দুটি স্তরে ভাগ করা হয়| যথা:-1) প্রাকৃতিক ঘটনা:- অগ্নুৎপাত, বজ্রপাত প্রভৃতি প্রাকৃতিক ঘটনায়়় ওজোন স্তরে প্রাকৃতিক ঘটনায় ওজোন স্তরের কিছুটা নষ্ট হয়|2) অতিবেগুনি রশ্মির সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া :- অতিবেগুনি রশ্মি অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ওজন অণুর ভেঙ্গে অক্সিজেন অণু ও পরমাণু উৎপন্ন করে|3) সূর্য রশ্মির পরিমাণ বৃদ্ধি:- প্রতি 10 থেকে 15 বছর অন্তর সূর্য রশ্মির পরিমাণ বাড়ে |সূর্য থেকে আগত ক্ষুদ্র তরঙ্গ বায়ুমণ্ডলের নাইট্রোজেন নাইট্রাস অক্সাইড এ পরিণত হয় |নাইট্রাস অক্সাইড রাসায়নিক বিক্রিয়ার সাহায্যে ওজন স্তর রক্ষা করে|4)

    বায়ু মন্ডলের ঊর্ধ্ব স্তরে বায়ুর সঞ্চালন

    ইতিহাস

    ফরাসী পদার্থবিদ চার্লস ফ্যব্রি এবং হেনরি বুইসন ১৯১৩ সালে ওজোন স্তর আবিষ্কার করেন। পরবর্তীতে ব্রিটিশ আবহাওয়াবিদ জি এম বি ডবসন ওজোনস্তর নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেন। ১৯২৮ সাল থেকে ১৯৫৮ সালের মধ্যে তিনি ওজোন পর্যবেক্ষণ স্টেশনসমূহের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেন।

    গুরুত্ব

    ওজোনস্তরে ওজোনের ঘনত্ব খুবই কম হলেও জীবনের জন্যে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি এটি শোষণ করে নেয়। ওজোন স্তর সূর্যের ক্ষতিকর মধ্যম মাত্রার(তরঙ্গদৈর্ঘ্যের) শতকরা ৯৭-৯৯ অংশই শোষণ করে নেয়, যা কিনা ভূ-পৃষ্ঠে অবস্থানরত উদ্ভাসিত জীবনসমূহের সমূহ ক্ষতিসাধন করতে সক্ষম। মধ্যম তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সূর্যের এই অতিবেগুণী রশ্মি মানব দেহের ত্বক এমনকি হাড়ের ক্যান্সার সহ অন্যান্য মারাত্মক ব্যাধি সৃষ্টিতে সমর্থ। এই ক্ষতিকর রশ্মি পৃথিবীর জীবজগতের সকল প্রাণের প্রতি তীব্র হুমকি স্বরূপ। বায়ুমন্ডলের ওজোন স্তর প্রতিনিয়তই এই মারাত্নক ক্ষতিকর অতিবেগুণী রশ্নিগুলোকে প্রতিহত করে পৃথিবীর প্রাণিকুলকে রক্ষা করছে।

    ওজোন স্তরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ভূমিকার জন্য জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ওজোন লেয়ার সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে সেপ্টেম্বরের ১৬ তারিখটি মনোনীত করেছে।

    Brewer-Dobson circulation in the ozone layer.

    Layers of Atmosphere – not to scale (NOAA)[১]

    UV-B energy levels at several altitudes. Blue line shows DNA sensitivity. Red line shows surface energy level with 10% decrease in ozone

    Levels of ozone at various altitudes and blocking of different bands of ultraviolet radiation. Essentially all UVC (100–280 nm) is blocked by dioxygen (from 100–200 nm) or else by ozone (200–280 nm) in the atmosphere. The shorter portion of the UV-C band and the more energetic UV above this band causes the formation of the ozone layer, when single oxygen atoms produced by UV photolysis of dioxygen (below 240 nm) react with more dioxygen. The ozone layer also blocks most, but not quite all, of the sunburn-producing UV-B (280–315 nm) band, which lies in the wavelengths longer than UV-C. The band of UV closest to visible light, UV-A (315–400 nm), is hardly affected by ozone, and most of it reaches the ground. UVA does not cause skin reddening, but there is evidence that it causes long-term skin damage.

    ওজোন স্তরে সৃষ্ট ফুটো

    দক্ষিণ গোলার্ধের উপরকার ওজোন স্তর

  • ঐতিহাসিক পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল

    ঐতিহাসিক পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল

    ঐতিহাসিক পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ভূমধ্যসাগরের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার একটি বৃহৎ প্রাচীন ঐতিহাসিক অঞ্চল। এটি উত্তরে বৃষ পর্বতমালা, পশ্চিমে ভূমধ্যসাগর, দক্ষিণে আরব মরুভূমি ও পূর্বে মেসোপটেমিয়া দ্বারা সীমায়িত। এটি উত্তরে তুরস্কের বৃষ পর্বতমালা থেকে দক্ষিণে মিশরের সিনাই মরুভূমি পর্যন্ত প্রায় ৬৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং পশ্চিমে ভূমধ্যসাগর থেকে পূর্বে আরব মরুভূমি পর্যন্ত ১১০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার প্রশস্ত।[২][৩] আধুনিক ভূগোলের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি সাইপ্রাস, জর্দান, লেবানন, সিরিয়া, ফিলিস্তিন, ইসরায়েল এবং দক্ষিণ তুরস্কের (পুরাতন নাম আলেপ্পো ভিলায়েত) অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত ছিল। পশ্চিম এশিয়া, পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলউত্তর-পূর্ব আফ্রিকা[৪] এবং আরব উপদ্বীপ অঞ্চলের উত্তর-পশ্চিমাংশের সাথে সংযুক্ত অঞ্চল হিসেবে এটি সুপরিচিত ছিল।[৫]

    ঐতিহাসিক এই অঞ্চলটি ইংরেজি ভাষায় “লিভ্যান্ট” বা “লেভ্যান্ট” (Levant) ও আরবি ভাষায় “আশ-শাম” (ٱلشَّام‎‎) নামে পরিচিত। ইংরেজি “লিভ্যান্ট” কথাটি ফরাসি ভাষার শব্দ “ল্যভঁ” (Levant) থেকে এসেছে, যার অর্থ “উদীয়মান”। ইউরোপের দৃষ্টিকোণ থেকে পূর্বদিকে অবস্থিত এই অঞ্চল থেকে সূর্যোদয় হত বলে ইউরোপীয়রা এই অঞ্চলটির এরূপ নামকরণ করেছিল। অন্যদিকে আরব উপদ্বীপের লোকেরা সূর্যোদয়ের দিকে অর্থাৎ পূর্বদিকে মুখ করলে হাতের বামদিকে অর্থাৎ উত্তর দিকে পড়া অঞ্চলগুলিকে “শাম” শব্দটি দিয়ে নির্দেশ করত। বর্তমানে “শাম” বলতে মূলত বৃহত্তর সিরিয়া অঞ্চলকে বোঝানো হয়।

    আরবিতে “আল-মাশরিক” (যেখানে সূর্য উদিত হয়) বলে আরেকটি কাছাকাছি পদবন্ধ আছে, যা দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের অপেক্ষাকৃত বৃহত্তর একটি ভৌগোলিক অঞ্চলকে নির্দেশ করা হয় এবং যেটিতে ঐতিহাসিক পূর্ব -ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ছাড়াও আরব বিশ্বের পূর্বভাগের আরও অন্যান্য দেশ (যেমন ইরাক) অন্তর্ভুক্ত। বৃহত্তর অর্থে মাশরিক অঞ্চলে সৌদি আরব, মিশর, সুদান এবং আরব উপদ্বীপের অন্যান্য ক্ষুদ্র দেশগুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

    ঐতিহাসিক পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দক্ষিণের অংশবিশেষকে প্রাচীন মিশরীয় ও হিব্রু গ্রন্থ (বিশেষ করে হিব্রু বাইবেল বা খ্রিস্টানদের ধর্মপুস্তক বাইবেলের পুরাতন নিয়ম অংশে) “কনান” (ইংরেজি উচ্চারণে কেনান) নামে উল্লেখ করা হয়েছে, যেটি বর্তমান ইসরায়েল, আধুনিক ফিলিস্তিনি পশ্চিম তীরগাজা ভূখণ্ডদ্বয়, এবং লেবাননসিরিয়ার দক্ষিণের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত। কনানকে ঐসব ধর্মগ্রন্থে ইহুদিদের বা ইসরায়েলি গোত্রের লোকদের ঈশ্বর কর্তৃক প্রতিজ্ঞাত দেশ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে এবং ঐসব পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী ইসরায়েলিরা খ্রিস্টপূর্ব ২য় সহস্রাব্দের শেষদিকে (আজ থেকে ৩ হাজার বছরেরও আগে) কনান বিজয় করে সেখানে প্রাচীন ইসরায়েল দেশ প্রতিষ্ঠা করেছিল। এই ব্যাপারটি আধুনিক রাজনৈতিক সিয়োনবাদ বা জায়নবাদের কেন্দ্রীয় একটি মতবিশ্বাস, যার শেষ পরিণামে আধুনিক ইসরায়েল রাষ্ট্রটির উৎপত্তি ঘটেছে।

  • উপসাগর

    উপসাগর

    উপসাগর (ইংরেজি: Bay, বে) তিন দিক স্থল দ্বারা বেষ্টিত একটি জলভাগ। উপসাগরের জল সাধারণত শান্ত হয়। বড় বড় উপসাগরকে ইংরেজিতে গালফ (gulf) বলা হয়। আবার ক্ষুদ্রাকৃতির খাড়া পাড় বিশিষ্ট উপসাগর বা সমুদ্রের খাঁড়িগুলি ইংরেজিতে ফ্যোর্ড (fjord, ইংরেজি: /ˈfjɔːrd/ (শুনুন) or /fiˈɔːrd/ (শুনুন)) নামেও পরিচিত। সাধারণত ছোটো ছোটো উপসাগরগুলি সৃষ্টি হয় নরম শিলা বা মাটি ঢেউয়ের দ্বারা অপসারিত হয়ে। শক্ত শিলাগুলি ক্ষয়প্রাপ্ত হয় অনেক দেরীতে। ফলে অন্তরীপ সৃষ্টি হয়। উপসাগরগুলিতে মাছ ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী দেখা যায়। আবার উপসাগরগুলি অন্য কোনো উপসাগরের সঙ্গে সংযুক্তও হতে পারে (উদাহরণ স্বরূপ, জেমস উপসাগর হাডসন উপসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত। বঙ্গোপসাগর ও হাডসন উপসাগরের মতো বৃহদাকার উপসাগরগুলিতে সামুদ্রিক ভূবিদ্যাগত বৈচিত্র্য চোখে পড়ে।

    উপসাগরসমূহ

    কয়েকটি ছোটো আকারের সুপরিচিত উপসাগর হল:

    গালফ নামে পরিচিত কয়েকটি মাঝারি আকারের উপসাগর:

    কয়েকটি বড় উপসাগর:

    কয়েকটি জলভাগ যা গালফ নামে পরিচিত হলেও আসলে প্রণালী:

    আরও দেখুন

    স্পেনেরসান সেবাস্টিয়ানের উপসাগর

    বঙ্গোপসাগর, দক্ষিণ এশিয়া

    বারাকোয়া উপসাগর, কিউবা

    ইজামির উপসাগর, তুরস্ক

  • উপনদী

    উপনদী

    উপনদী হলো জল-বিভাজিকার একটি প্রকরণ। বৃহদায়তন নদীর একটি ক্ষুদ্রতর ধারা এসকল উপনদী; কয়েকটি উপনদী মিলিত হয় এক একটি বৃহদাকার নদীর সাথে।

    ব্যুৎপত্তি

    যে সকল নদী কোন একটি উৎস হতে উৎপত্তি হয়ে কিছু দূরত্ব অতিক্রম করে অপর একটি নদীতে পতিত হয় তাকে সেই নদীর (যে নদীতে পতিত হয়েছে) উপনদী বলে।

    কিছু উপনদীর উদাহরণ

    বাংলাদেশে প্রচুর উপনদী রয়েছে; যেমন: তিস্তা, ধরলা, করতোয়া, আত্রাই,সুবর্ণশ্রী ইত্যাদি নদীগুলো উৎসস্থল থেকে প্রবাহিত হয়ে যমুনা নদীতে গিয়ে মিশেছে; তাই এরা যমুনা নদীর উপনদী।[১]

    আরো দেখুন

    উপনদী

  • আন্তর্জাতিক দূরালাপনি সংযোগ নম্বর

    আন্তর্জাতিক দূরালাপনি সংযোগ নম্বর

    আইটিইউ-টি (ITU-T) এর ই ১৬৪ (E.164) অনুযায়ী বিশ্বের দেশসমূহের আন্তর্জাতিক দূরালাপনি সংযোগ নম্বর বা কোড এর তালিকা।

    এক নজরে

    +০: অব্যবহৃত
    +১: (NANP) US, CA, AI, AG, AS, BB, BS, VG, VI, KY, BM, GD, TC, MS, MP, GU, LC, DM, VC, PR, DO, TT, KN, JM
    +২০: EG+২১০:
    +২১১:
    +২১২: MA, EH
    +২১৩: DZ
    +২১৪:
    +২১৫:
    +২১৬: TN
    +২১৭:
    +২১৮: LY
    +২১৯:
    +২২০: GM
    +২২১: SN
    +২২২: MR
    +২২৩: ML
    +২২৪: GN
    +২২৫: CI
    +২২৬: BF
    +২২৭: NE
    +২২৮: TG
    +২২৯: BJ
    +২৩০: MU
    +২৩১: LR
    +২৩২: SL
    +২৩৩: GH
    +২৩৪: NG
    +২৩৫: TD
    +২৩৬: CF
    +২৩৭: CM
    +২৩৮: CV
    +২৩৯: ST
    +২৪০: GQ
    +২৪১: GA
    +২৪২: CG
    +২৪৩: CD
    +২৪৪: AO
    +২৪৫: GW
    +২৪৬: IO
    +২৪৭: AC
    +২৪৮: SC
    +২৪৯: SD
    +২৫০: RW
    +২৫১: ET
    +২৫২: SO
    +২৫৩: DJ
    +২৫৪: KE
    +২৫৫: TZ
    +২৫৬: UG
    +২৫৭: BI
    +২৫৮: MZ
    +২৫৯:
    +২৬০: ZM
    +২৬১: MG
    +২৬২: RE
    +২৬৩: ZW
    +২৬৪: NA
    +২৬৫: MW
    +২৬৬: LS
    +২৬৭: BW
    +২৬৮: SZ
    +২৬৯: KM
    +27: ZA+28: অব্যবহৃত+২৯০: SH
    +২৯১: ER
    +২৯২: SX প্রস্তাবিত–
    +২৯৩:
    +২৯৪:
    +২৯৫:
    +২৯৬:
    +২৯৭: AW
    +২৯৮: FO
    +২৯৯: GL
    +30: GR+31: NL+32: BE+33: FR+34: ES+350: GI
    +351: PT
    +352: LU
    +353: IE
    +354: IS
    +355: AL
    +356: MT
    +357: CY
    +358: FI
    +359: BG
    +36: HU+370: LT
    +371: LV
    +372: EE
    +373: MD
    +374: AM
    +375: BY
    +376: AD
    +377: MC
    +378: SM
    +379: VA
    +380: UA
    +381: SP, ME
    +382: ME
    +383:
    +384:
    +385: HR
    +386: SI
    +387: BA
    +388: EU
    +389: MK
    +39: IT
    +40: RO+41: CH+420: CZ
    +421: SK
    +422:
    +423: LI
    +424:
    +425:
    +426:
    +427:
    +428:
    +429:
    +43: AT+44: UK+45: DK+46: SE+47: NO+48: PL+49: DE
    +500: FK
    +501: BZ
    +502: GT
    +503: SV
    +504: HN
    +505: NI
    +506: CR
    +507: PA
    +508: PM
    +509: HT
    +51: PE+52: MX+53: CU+54: AR+55: BR+56: CL+57: CO+58: VE+৫৯০: GP
    +৫৯১: BO
    +৫৯২: GY
    +৫৯৩: EC
    +৫৯৪: GF
    +৫৯৫: PY
    +৫৯৬: MQ
    +৫৯৭: SR
    +৫৯৮: UY
    +৫৯৯: AN
    +60: MY+61: AU+62: ID+63: PH+64: NZ+65: SG+৬৬: TH+৬৭০: TL
    +৬৭১:
    +৬৭২: AQ
    +৬৭৩: BN
    +৬৭৪: NR
    +৬৭৫: PG
    +৬৭৬: TO
    +৬৭৭: SB
    +৬৭৮: VU
    +৬৭৯: FJ
    +৬৮০: PW
    +৬৮১: WF
    +৬৮২: CK
    +৬৮৩: NU
    +৬৮৪:
    +৬৮৫: WS
    +৬৮৬: KI
    +৬৮৭: NC
    +৬৮৮: TV
    +৬৮৯: PF
    +৬৯০: TK
    +৬৯১: FM
    +৬৯২: MH
    +৬৯৩:
    +৬৯৪:
    +৬৯৫:
    +৬৯৬:
    +৬৯৭:
    +৬৯৮:
    +৬৯৯:
    +৭: RU, KZ
    +৮০০: XT
    +৮০১:
    +৮০২:
    +৮০৩:
    +৮০৪:
    +৮০৫:
    +৮০৬:
    +৮০৭:
    +৮০৮: XS
    +৮০৯:
    +৮১: JP+৮২: KR+৮৩: অব্যবহৃত+৮৪: VN+৮৫০: KP
    +৮৫১:
    +৮৫২: HK
    +৮৫৩: MO
    +৮৫৪:
    +৮৫৫: KH
    +৮৫৬: LA
    +৮৫৭:
    +৮৫৮:
    +৮৫৯:
    +৮৬: CN+৮৭০: XN
    +৮৭১: XE
    +৮৭২: XF
    +৮৭৩: XI
    +৮৭৪: XW
    +৮৭৫:
    +৮৭৬:
    +৮৭৭:
    +৮৭৮: XP
    +৮৭৯:
    +৮৮০: BD
    +৮৮১: XG
    +৮৮২: XV
    +৮৮৩:
    +৮৮৪:
    +৮৮৫:
    +৮৮৬: TW
    +৮৮৭:
    +৮৮৮:
    +৮৮৯:
    +89: অব্যবহৃত
    +৯০: TR+৯১: IN+৯২: PK+৯৩: AF+৯৪: LK+৯৫: MM+৯৬০: MV
    +৯৬১: LB
    +৯৬২: JO
    +৯৬৩: SY
    +৯৬৪: IQ
    +৯৬৫: KW
    +৯৬৬: SA
    +৯৬৭: YE
    +৯৬৮: OM
    +৯৬৯:
    +৯৭০: PS
    +৯৭১: AE
    +৯৭২: IL
    +৯৭৩: BH
    +৯৭৪: QA
    +৯৭৫: BT
    +৯৭৬: MN
    +৯৭৭: NP
    +৯৭৮:
    +৯৭৯: XR
    +৯৮: IR+৯৯০:
    +৯৯১: XC
    +৯৯২: TJ
    +৯৯৩: TM
    +৯৯৪: AZ
    +৯৯৫: GE
    +৯৯৬: KG
    +৯৯৭:
    +৯৯৮: UZ
    +৯৯৯: XD
    বিশব্যাপী আন্তর্জাতিক দূরালাপনি সংযোগ নম্বর
  • অ্যান্টার্কটিকার ভূগোল

    অ্যান্টার্কটিকার ভূগোল

    অ্যান্টার্কটিকার ভূগোল প্রধানত কুমেরুর সন্নিকটে এর অবস্থান তথা, বরফের দ্বারা প্রভাবিত। অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত, এটি কুমেরুর চারদিকে অপ্রতিসমভাবে বিস্তৃত এবং এর সিংহভাগই কুমেরু বৃত্তের দক্ষিণে অবস্থিত। এটি বিশ্ব মহাসাগরের দক্ষিণাংশের জলরাশি দ্বারা পরিবেষ্টিত – মতান্তরে এটি দক্ষিণ মহাসাগর দ্বারা অথবা প্রশান্ত মহাসাগর, অতলান্ত মহাসাগরভারত মহাসাগরের দক্ষিণভাগ দ্বারা বেষ্টিত। এর আয়তন ১.৪ কোটি বর্গ কিমি-র বেশি। অ্যান্টার্কটিকার প্রায় ৯৮% পৃথিবীর বৃহত্তম হিম আচ্ছাদন দ্বারা আবৃত, যাকে অ্যান্টার্কটিক হিম আচ্ছাদন বলা হয় এবং যা স্বাদুপানির বৃহত্তম আধার। গড়ে ১.৬ কিমি পুরুত্ব বিশিষ্ট এই বরফ আচ্ছাদনটি এত ভারী যে তা মহাদেশীয় মূলপ্রস্তরের অবনমন ঘটিয়েছে, কোন কোন স্থানে তা সমুদ্রপৃষ্ঠের চেয়ে ২.৫ কিমি গভীর পর্যন্ত; যার ফলে তরল পানিবিশিষ্ট হিমবাহনিম্ন হ্রদেরও সৃষ্টি হয়েছে, যেমন ভস্তক হ্রদ। বরফ আচ্ছাদনের পরিসীমার দিকে অনেক হিম তাকহিম উত্থান রয়েছে।

    অঞ্চলসমূহ

    রাজকুমারী অ্যাস্ট্রিড এবং রাজকুমারী রগনিল্দ উপকূল

    বানজ়ার, সাবরিনা ও বাড ল’ গম্বুজ উপকূল

    ভৌগোলিকভাবে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ রস সাগরওয়েডেল সাগরের মাঝে ট্রান্স-অ্যান্টার্কটিক পর্বতমালা দ্বারা দুটি অসমান অংশে বিভক্ত হয়েছে। পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকাপূর্ব অ্যান্টার্কটিকা, মূলমধ্যরেখার সাপেক্ষে যথাক্রমে পূর্ব ও পশ্চিম গোলার্ধের সাথে অনেকটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই নামকরণকে অনেকে ইউরোকেন্দ্রিক পক্ষপাতদুষ্ট বলে গণ্য করেন, যার ফলে বিকল্প নাম হিসেবে ‘ক্ষুদ্রতর অ্যান্টার্কটিকা’ ও ‘বৃহত্তর অ্যান্টার্কটিকা’ কে অনেক সময় প্রাধান্য দেয়া হয়। অ্যান্টার্কটিকার মূল ভূখণ্ডের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা ও বাকি দুই-তৃতীয়াংশ পূর্ব অ্যান্টার্কটিকার অন্তর্ভুক্ত। ক্ষুদ্রতর পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা পশ্চিম অ্যান্টার্কটিক হিম আচ্ছাদন দ্বারা আবৃত। এই হিম আচ্ছাদন কিছু উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে কারণ এটি ধসে পড়ার ক্ষুদ্র সম্ভাবনা রয়েছে। যদি তা ঘটে তবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা খুব অল্প সময়ের মাঝেই কয়েক মিটার বৃদ্ধি পাবে।

    আগ্নেয়গিরি

    পর্যবেক্ষিত আগ্নেয় গ্যাসের উপস্থিতি ও অপেক্ষাকৃত সাম্প্রতিককালে জমা হওয়া অগ্ন্যুৎপাতজাত প্রস্তরখণ্ড বিশ্লেষণের ভিত্তিতে অ্যান্টার্কটিকার মূল ভূখণ্ডে চারটি আগ্নেয়গিরিকে সক্রিয় বলে মনে করা হয়। এগুলো হল: মেলবোর্ন পর্বত (২,৭৩০ মি) (৭৪°২১’দ., ১৬৪°৪২’পূ.), একটি যৌগিক আগ্নেয়গিরি; বার্লিন পর্বত (৩,৫০০ মি) (৭৬°০৩’দ., ১৩৫°৫২’প.), যৌগিক আগ্নেয়গিরি; কফম্যান পর্বত (২,৩৬৫ মি) (৭৫°৩৭’দ., ১৩২°২৫’প.), যৌগিক আগ্নেয়গিরি; এবং হ্যাম্পটন পর্বত (৩,৩২৫ মি) (৭৬°২৯’দ., ১২৫°৪৮’প.), একটি আগ্নেয়গিরিকুন্ড। সমুদ্রতীরাতিক্রান্ত দ্বীপসমূহে কয়েকটি আগ্নেয়গিরিতে পূর্ব সক্রিয়তা নথিভুক্ত করা হয়েছে। যেমন: এরেবাস পর্বত (৩,৭৯৫ মি), ১০ টি জ্ঞাত অগ্ন্যুৎপাত ও ১ টি ধারণাকৃত অগ্ন্যুৎপাত রস দ্বীপে অবস্থিত একটি যৌগিক আগ্নেয়গিরি। মহাদেশের অপর প্রান্তে, ডিসেপশন দ্বীপ (৬২°৫৭’দ., ৬০°৩৮’প.), ১০ টি জ্ঞাত অগ্ন্যুৎপাত ও ৪ টি ধারণাকৃত অগ্ন্যুৎপাত বিশিষ্ট এই আগ্নেয়গিরিকুন্ডটি সবচেয়ে সক্রিয় রয়েছে। ব্যালেনি দ্বীপপুঞ্জের বাকল দ্বীপ (৬৬°৫০’দ., ১৬৩°১২’পূ.), দক্ষিণ শেটল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের পেঙ্গুইন দ্বীপ (৬২°০৬’দ., ৫৭°৫৪’প.), পলেট দ্বীপ (৬৩°৩৫’দ., ৫৫°৪৭’প.), এবং লিন্ডেনবার্গ দ্বীপ (৬৪°৫৫’দ., ৫৯°৪০’প.) – এগুলোকেও সক্রিয় বলে ধারণা করা হয়।

    পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা

    এলাকা

    সমুদ্র

    বরফস্তুপ

    দ্বীপসমূহ

    পূর্ব অ্যান্টার্কটিকা

    এলাকা

    সমুদ্র

    বরফস্তুপ

    দ্বীপসমূহ

    গবেষণাকেন্দ্রসমূহ

    সার্বভৌম প্রভূত্বের দাবীসমূহ

    উপনিবেশ ও অন্যান্য অঞ্চলসমূহ

    আরও দেখুন

  • অ্যান্টার্কটিকায় বসতি স্থাপন

    অ্যান্টার্কটিকায় বসতি স্থাপন

    অ্যান্টার্কটিকায় বসতি স্থাপন বলতে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশে সপরিবারে স্থায়ী মানব বসতি গড়ার কথা বোঝানো হয়না। বর্তমানে শুধু কিছুসংখ্যক বিজ্ঞানী ও গবেষক অস্থায়ীভাবে সেখানে বসবাস করেন। অ্যান্টার্কটিকা পৃথিবীর একমাত্র মহাদেশ যেখানে কোন আদিবাসী বাসিন্দা নেই। বর্তমানে সেখানে প্রায় ৭০ টি ঘাঁটিতে (৪০ টি সারা বছর জুড়ে ও ৩০ টি শুধু গ্রীষ্মকালে) ৩০ টি দেশের বিজ্ঞানী ও কর্মচারী বসবাস করেন। অ্যান্টার্কটিকার আনুমানিক জনসংখ্যা গ্রীষ্মকালে ৪০০০ ও শীতকালে ১০০০ জন। এ পর্যন্ত অ্যান্টার্কটিকায় অন্তত ১১ বার টিবশিশু জন্মগ্রহণের দৃষ্টান্ত রয়েছে, ৮ টি (প্রথমটি সহ) আর্জেন্টিনার এসপেরাঞ্জ়া ঘাঁটিতে এবং ৩ টি চিলির প্রেসিদেন্তে এদুয়ার্দো ফ্রেই মন্তাল্ভা ঘাঁটিতে

    প্রতিবন্ধকতাসমূহ

    আর্কটিকের জীবনধারার সাথে অ্যান্টার্কটিকার তুলনা

    অতীতে বসতি স্থাপনের জল্পনা

    ১৯৫০ এর দশকে একটি সাধারণ ধারণা ছিল কাচের গম্বুজের মাঝে আবদ্ধ নগরের মাধ্যমে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশে বসতি গড়ে তোলা সম্ভব। বাহ্যিক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নগরে শক্তির উৎস এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের উপায় হবে। অ্যান্টার্কটিকার ৬ মাস ব্যাপী রাতের বেলায় গম্বুজের কেন্দ্রীয় মিনারে একটি শক্তিশালী আলোর উৎস একটি কৃত্রিম সূর্য হিসেবে কাজ করবে বলে প্রস্তাবিত হয়েছিল। এই দৃশ্যকল্পে অ্যান্টার্কটিকার সাথে বহির্বিশ্বে নিয়মিত বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং অ্যান্টার্কটিকার হিম আচ্ছাদন খনন করে খনিজ সম্পদ আহরণের শহর স্থাপন করার কথাও ভাবা হয়; তবে, শক্তি এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকার সংশ্লিষ্ট সমস্যা আছে। ম্যাকমার্ডো কেন্দ্রের পারমাণবিক চুল্লীটি পরিবেশ দূষণের উৎস হয়ে ওঠায় অনেক আগেই তা বন্ধ করে দেয়া হয়।[১] অ্যান্টার্কটিক চুক্তি ব্যবস্থা, যা ধারাবাহিক কিছু আন্তর্জাতিক চুক্তির সমষ্টি, তা অনুসারে বর্তমানে এন্টার্কটিকায় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখা হয়। এটি পরিবর্তন বা পরিত্যক্ত হলে তবেই বৈধভাবে অ্যান্টার্কটিকায় বড় মাপের বসতি স্থাপন করা যাবে। অপরপক্ষে, অ্যান্টার্কটিকায় স্থায়ী বসতি স্থাপনের অসাধ্যতাই এই ভূখণ্ডের সকল দাবীর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভে ব্যর্থতার কারণ।[২]

    গম্বুজ নগর

    ভূমিতিক গম্বুজের বিকাশ সাধনকারী স্থপতি বাকমিন্‌স্টার ফুলার, অ্যান্টার্কটিকায় গম্বুজ নগর তৈরির সম্ভাবনা উত্থাপন করেন যার মাঝে নিয়ন্ত্রিত জলবায়ুতে স্থাপনা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।[৩] ১৯৬৫ সালে গম্বুজ নগর নির্মাণের উপর তার প্রথম প্রকাশিত নির্দিষ্ট প্রস্তাবনায় তিনি অ্যান্টার্কটিকাকে এমন একটি প্রকল্পের সম্ভাব্য প্রথম স্থান হিসেবে আলোচনা করেন।[৪] আমুন্ডসেন-স্কট কুমেরু কেন্দ্রের দ্বিতীয় ঘাঁটিটি (১৯৭৫-২০০৩ পর্যন্ত পরিচালিত) তার এই ধারণাটির একটি ক্ষুদ্রতর সংস্করণ; এটি শুধুমাত্র কয়েকটি বৈজ্ঞানিক ভবন আবৃত করার মত বড়। ১৯৭১ সালে জর্মন স্থপতি ফ্রেই ওটোর নেতৃত্বে একটি দল ২ কিমি চওড়া ও ৪০,০০০ বাসিন্দা ধারণক্ষমতা বিশিষ্ট, বায়ু-অবলম্বিত নগর গম্বুজ তৈরির সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করে।[৫] কিছু গবেষক সম্প্রতি ধারণাটি হালনাগাদ করার চেষ্টা করেছেন।[৬]

    গৃহাভ্যন্তরে জলচাষ ও মাছের চাষ

    বিদ্যুৎ উৎপাদন

    অস্ট্রেলীয় মসন স্টেশন এর পেছনে ডেভিড পর্বতমালা। স্টেশনের কয়েকটি বায়ুকল ছবিতে দৃশ্যমান।

    অ্যান্টার্কটিকায় গ্রীষ্মকালীন ৬ মাস মেরুদিবস হওয়ার কারণে এ সময়ে সৌরশক্তি ব্যবহার করে নীরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। অ্যান্টার্কটিকায় সৌর প্যানেল ব্যবহার করে জাপানের শৌওয়া স্টেশন, ব্রিটিশ রথেরা গবেষণা কেন্দ্র[৭] ও রুমানীয় লাও-রাকোভিৎস স্টেশনে[৮] গ্রীষ্মকালীন বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। শীতকালীন ৬ মাস মেরুরাত্রির সময়ে সৌর বিকিরণের অনুপস্থিতিতে প্রধানত বায়ুশক্তি ব্যবহার করে, এবং ভূ-তাপীয় শক্তি ব্যবহার করে বছর জুড়ে অ্যান্টার্কটিকায় নির্ভরযোগ্যতার সাথে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। সকল মহাদেশের মধ্যে অ্যান্টার্কটিকায় বায়ুপ্রবাহের গড় গতি সর্বাধিক[৯] এবং শীতল নিম্নপ্রবাহী বায়ু এ মহাদেশে খুব সাধারণ ঘটনা হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বায়ুশক্তির ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত শীতকালে নিম্নপ্রবাহী বায়ুর গতিবেগ সর্বোচ্চ হয়ে থাকে, যার ফলে সৌর বিকিরণের অনুপস্থিতি জনিত বিদ্যুৎ উৎপাদনের ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব[৭]। দমকা বা ঝটিকা বায়ুপ্রবাহের জন্য অণুভূমিক অক্ষ বায়ুকলের চাইতে উল্লম্ব অক্ষ বায়ুকল বেশি কর্মদক্ষ হওয়ায়[১০] এ ধরনের বায়ুকল অ্যান্টার্কটিকার জন্য বেশ উপযোগী। এছাড়াও উল্লম্ব অক্ষ বায়ুকল অপেক্ষাকৃত দৃঢ় গঠনসম্পন্ন এবং অধিকাংশ যন্ত্রাদি ভূমির কাছে হওয়ায় মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ অপেক্ষাকৃত সহজ, যা অ্যান্টার্কটিকার মত বৈরী পরিবেশে সুবিধাজনক। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার মসন স্টেশন, দক্ষিণ আফ্রিকার সানায়ে ৪ গবেষণা কেন্দ্রে বায়ুকলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। মসন স্টেশনের বিদ্যুৎ চাহিদার ৭০% এরও বেশি বায়ুশক্তির মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। এছাড়াও রস দ্বীপে অবস্থিত বায়ু খামার থেকে স্কট ঘাঁটিম্যাকমার্ডো স্টেশনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে[৭]। অ্যান্টার্কটিক মূল ভূখণ্ড এবং পারিপার্শ্বিক দ্বীপগুলোতে অনেক সংখ্যক সক্রিয় ও সুপ্ত আগ্নেয়গিরি থাকায় ভূ-তাপীয় শক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। স্কট ঘাঁটি হতে ৪০ কিমি দূরে অবস্থিত সক্রিয় আগ্নেয়গিরি এরেবাস পর্বতের নিকটে ভূ-তাপীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়েছে। ভূ-তাপীয় বিদ্যুৎ উৎপাদক যন্ত্রগুলো সমুদ্রের পানি ব্যবহার করে শীতল করার পর বিপরীত আস্রবণের মাধ্যমে স্কট ঘাঁটিতে ব্যবহারের জন্য পানিও পাওয়া সম্ভব হবে[৭]। ভূ-তাপীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে এ পর্যন্ত কোন প্রকল্প না নেয়া হলেও, ভবিষ্যতে এ ধরনের উৎপাদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পর বিদ্যুৎ ও পানির সুলভ উৎসের কারণে এরেবাস পর্বতের নিকটবর্তী অঞ্চল মানব বসতি স্থাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

    ভবিষ্যত অবস্থা

    যদিও অ্যান্টার্কটিকার বর্তমান পরিবেশে স্থায়ী মানব বসতি সার্থকভাবে সম্ভব করে তোলা খুব কষ্টকর, অবস্থার ভবিষ্যতে উন্নয়ন ঘটতে পারে। প্রস্তাবিত হয়েছে যে, বিশ্ব উষ্ণায়নের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের ফলে, ২২শ শতাব্দীর শুরুতে পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকার জলবায়ুর অবস্থা অনেকটা আলাস্কা, আইসল্যান্ড ও উত্তর স্ক্যান্ডিনেভিয়ার বর্তমান জলবায়ুর মত হবে।[১১] এমনকি অ্যান্টার্কটিকার সবচেয়ে উত্তুরে এলাকায়, যেমন অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপের পশ্চিমাংসে তখন চাষাবাদ ও ফসল ফলানোও সম্ভব হতে পারে।

    অ্যান্টার্কটিকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথম মানবশিশু

    এমিলিও মার্কোস পালমা (জন্ম জানুয়ারি ৭, ১৯৭৮) অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশে জন্মগ্রহণকারী প্রথম মানুষ। তিনি একজন আর্জেন্টাইন নাগরিক, যিনি অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপের এসপেরাঞ্জ়া ঘাঁটির ফরতীন সার্জেন্তো কাবরাল এ জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের সময় তার ওজন ছিল ৩.৪ কেজি (৭ পা ৮ আউন্স)। তার পিতা, ক্যাপ্টেন জর্জ এমিলিও পালমা উক্ত ঘাঁটিতে কর্মরত আর্জেন্টাইন সামরিক সদস্যদের নেতা ছিলেন।[১২]

    আরও দেখুন

  • অশ্ব অক্ষাংশ

    অশ্ব অক্ষাংশ

    অশ্ব অক্ষাংশগুলির (Horse latitudes) আপেক্ষিক অবস্থানসমূহ প্রদর্শিত একটি চিত্র

    কর্কটক্রান্তি রেখামকরক্রান্তি রেখার দু’পাশে ৩০°- ৩৮° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশে সারাবছর ধরে বায়ুর উচ্চচাপ দেখা যায়। ক্রান্তীয় অঞ্চল-এর শীতল ও ভারী বায়ু নিম্নমুখী হওয়ায় বায়ুর কোনো পার্শ্বপ্রবাহ থাকে না, এই অঞ্চলকে “‘অশ্ব অক্ষাংশ”‘(ইংরেজি: Horse Latitude) বা “‘অশ্বাক্ষ”‘ বলা হয়।
    নিরক্ষীয় অঞ্চল-এর উষ্ণ, আর্দ্র ও লঘু বায়ু পৃথিবীর আবর্তনের ফলে উত্তর ও দক্ষিণ দিকে ঘুরে ক্রমশ প্রসারিত, শীতল ও ভারী হয়ে দুই ক্রান্তীয় অঞ্চলে নেমে আসে। আবার, সুমেরু ও কুমেরু অঞ্চল থেকে শীতল ও উচ্চচাপের ভারী বায়ু ভূপৃষ্ঠ বরাবর নিরক্ষরেখার দিকে অগ্রসর হয়। কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি রেখার কাছে এই দুই ভারী বায়ু মিলিত হয়ে উচ্চচাপ বলয়-এর সৃষ্টি করে। এই বায়ু প্রধানত নিম্নমুখী (মকরক্রান্তি রেখার কাছে) বা ঊর্ধমুখী (কর্কটক্রান্তি রেখার কাছে) হওয়ায় এই দুই অঞ্চলের বায়ুর কোনো পার্শ্বপ্রবাহ থাকে না, তাই এখানকার ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে বায়ুপ্রবাহ বিশেষ না থাকায় ভূপৃষ্ঠের ওপর সর্বদা একপ্রকার শান্তভাব বজায় থাকে। তাই একে কর্কটীয়মকরীয় শান্তবলয়ও বলা হয়ে থাকে। [১]

    ক্রান্তীয় অঞ্চলে (৩০°- ৩৮° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশে) সবসময়ই বায়ু উপর থেকে নিচে নামে। ফলে এর উষ্ণতা ও জলীয় বাষ্প গ্রহণ করার ক্ষমতা বেড়ে যায়। এইজন্য ক্রান্তীয় অঞ্চলে নিম্নমুখী বায়ুর প্রভাবে তেমন বৃষ্টিপাত হয় না। এইজন্য ক্রান্তীয় অঞ্চলে পৃথিবীর অধিকাংশ উষ্ণ মরুভূমির (সাহারা, কালাহারি প্রভৃতি) সৃষ্টি হয়েছে।

    নামকরণের কারণ

    প্রাচীনকালে পালতোলা জাহাজগুলি কর্কটীয় শান্তবলয়ে (আটলান্টিক মহাসাগর-এ) এলে বায়ুপ্রবাহ না থাকার দরুন গতিহীন হয়ে পড়ত। শোনা যায়, উত্তর আমেরিকা থেকে পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জগামী কোন এক ঘোড়া-বোঝাই জাহাজের নাবিকরা পানীয় জল ও খাদ্যের অপচয়ের আশঙ্কায় তাদের ঘোড়া বা অশ্বগুলোকে এই অঞ্চলের সমুদ্রে ফেলে দিয়েছিল। সেই থেকে উত্তর গোলার্ধের কর্কটীয় শান্তবলয়ের অন্তর্গত ৩০°- ৩৮° উত্তর অক্ষাংশকে অশ্ব অক্ষাংশ বা অশ্বাক্ষ বলা হয়। [২]

    কোনো কোনো বিজ্ঞানীর মতে, দক্ষিণ গোলার্ধের মকরীয় শান্তবলয়টিকেও (৩০°-৩৮° দক্ষিণ অক্ষাংশ) অশ্ব অক্ষাংশ বলা যায়।

  • অর্থনৈতিক ভূগোল

    অর্থনৈতিক ভূগোল

    অর্থনৈতিক ভূগোল হলো ভূগোলের এমন একটি শাখা যেখানে পরিবেশ ও কালের প্রেক্ষিতে মানুষের অর্থনৈতিক কার্যাবলী নিয়ে আলোচনা করা হয়।

    তাত্ত্বিক পটভূমি এবং প্রভাব

    অর্থনৈতিক ভূগোলের বিষয়গত ব্যাপার গবেষক এর পদ্ধতিগত চিন্তাধারা দ্বারা দৃঢ়ভাবে প্রভাবিত হয়। আলফ্রেড ওয়েবারের ঐতিহ্য অনুসরণ করে নিকোলাসিকাল অবস্থান তত্ত্ববিদরা, শিল্প অবস্থানের উপর নজর রাখেন এবং পরিমাণগত পদ্ধতি ব্যবহার করেন। ১৯৭০ দশকের পর থেকে নব্যধর্মীয় পদ্ধতির বিরুদ্ধে দুটি বৃহত্তর প্রতিক্রিয়া উল্লেখযোগ্যভাবে পদ্ধতিগত শৃঙ্খলা পরিবর্তিত হয়েছে: মার্কসবাদী রাজনৈতিক অর্থনীতি, ডেভিড হার্ভের কাজ থেকে বেরিয়ে আসছে; এবং নতুন অর্থনৈতিক ভূগোল যা স্বদেশীয় অর্থনীতিতে সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক কারণগুলি বিবেচনা করে।

    ইতিহাস

    কফির বাণিজ্য বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত শিল্প।

    আধুনা অর্থনৈতিক ভূগোলবিদগণ বিবিধ বিশিষ্ট ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করেছেন; যেমন অবস্থান তত্ত্ব এবং স্থানিক বিশ্লেষণ (ভৌগোলিক তথ্য পদ্ধতি ব্যবহার করে), বাজার গবেষণা, যোগাযোগ ভূগোল, আবাসন শিল্পে মূল্য বৃদ্ধি, আঞ্চলিক ও বৈশ্বয়িক উন্নয়ন, পরিকল্পনা, ইন্টারনেট ভূগোল, আবিষ্কার, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম.[১]

    অধ্যয়নের জন্য অভিগমনগুলি

    অর্থনৈতিক ভূগোল একটি অত্যন্ত বিস্তৃত বিষয় হিসাবে, অর্থনৈতিক ভূগোলবিদরা বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রসারের গবেষণায় বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে অধ্যয়নের জন্য কিছু সুবিন্যস্ত উপায়ে সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়েছে:

    • তত্ত্বীয় অর্থনৈতিক ভূগোল
    • আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ভূগোল
    • ঐতিহাসিক অর্থনৈতিক ভূগোল
    • অভিব্যক্তিমূলক অর্থনৈতিক ভূগোল
    • জটিল অর্থনৈতিক ভূগোল
    • আচরণগত অর্থনৈতিক ভূগোল

    শাখাসমূহ

    গবেষণার এই ক্ষেত্রগুলি অন্যান্য ভৌগোলিক বিজ্ঞানগুলির সাথে জড়িত থাকতে পারে।

    অর্থনীতিবিদ এবং অর্থনৈতিক ভূগোলবিদ

    সাধারণভাবে, অর্থনীতিবিদরা অর্থনীতির স্থানগুলির প্রভাব সম্পর্কে গবেষণা করেন। অন্যদিকে ভূতাত্ত্বিকরা, অভ্যন্তরীণ কাঠামোর ওপর অর্থনৈতিক প্রক্রিয়াগুলির প্রভাবের ব্যাপারে আগ্রহী থাকেন।

    নতুন অর্থনৈতিক ভূগোল

    নতুন অর্থনীতির উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক বৈষম্য ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন অর্থনীতি, সাধারণত বিশ্বায়নের দ্বারা চিহ্নিত। যার ফলে ঘটছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার বৃদ্ধি, জ্ঞান সামগ্রী বৃদ্ধির এবং নারীবাদীতা। অর্থনৈতিক ভূগোলবিদরা ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল বিভেদ সহ নতুন অর্থনীতির কারণে সামাজিক ও স্থানিক বিভাগগুলি অধ্যয়ন করতে সক্ষম।

    নতুন অর্থনৈতিক ভূগোল প্রাথমিকভাবে অর্থনীতির সেবা-ভিত্তিক সেক্টরগুলির অন্তর্গত, যা উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ব্যবহার করে সম্পাদনা করা হয়। যেমন সেসব শিল্প যেখানে লোকেরা কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের উপর নির্ভর করে।