পর্বত বলতে আমরা ভূ-পৃষ্ঠের এমন একটি অবস্থানকে বুঝি যার উচ্চতা অধিক এবং যা খাড়া ঢাল বিশিষ্ট। পর্বত সাধারণতঃ কমপক্ষে ৬০০ মিটার বা ২০০০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
নিকারাগুয়া হ্রদ (স্পেনীয়: Lago de Nicaragua, Lago Cocibolca, Mar Dulce, Gran Lago, Gran Lago Dulce, অথবা Lago de Granada উচ্চারণ: লাগো দ্য নিকারাগুয়া, এছাড়াও লাগো কোকিবোলকা, মার দুলথে, গ্রান লাগো বা লাগো দ্য গ্রানাদা নামেও পরিচিত) হল মধ্য আমেরিকার একটি মিষ্ট জলের হ্রদ। আয়তনের বিচারে এটি মধ্য আমেরিকার বৃহত্তম হ্রদ। নিকারাগুয়ায় অবস্থিত এই হ্রদটি আয়তনে বিশ্বে ১৯তম। এর আয়তন ৮০০১ বর্গ কিলোমিটার।[১] উত্তরে তিপিতাপা নদীর মাধ্যমে এটি লেক মানাগুয়ার সাথে যুক্ত। অন্য দিকে রিও সান হুয়ান নদী এই হ্রদ থেকে বেরিয়ে দক্ষিণে কোস্তা রিকা-নিকারাগুয়া সীমান্ত বরাবর পুবমুখে প্রবাহিত হয়ে ক্যারিবীয় সাগর‘এ পড়েছে। সমুদ্রতল থেকে এই হ্রদের উচ্চতা প্রায় ৩২ মিটার। নিকারাগুয়া হ্রদ থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের দূরত্ব কম, কিন্তু এ মহাসাগরের সাথে তার কোনও সংযোগ নেই। কিন্তু অতলান্তিক মহাসাগরের সাথে এর দূরত্ব বেশি হলেও রিও সান হুয়ান নদীপথে এই মহাসাগরের সাথে তার সংযোগ রয়েছে। মধ্য আমেরিকার এই হ্রদটি ভ্রমণার্থীদের খুব প্রিয় একটি স্থান। প্রতি বছরই বহু পর্যটক এই হ্রদের তীরে এবং মধ্যবর্তী বিভিন্ন হাল্কা জনবসতিযুক্ত দ্বীপে ছুটি কাটাতে আসেন।
ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য
৮০০১ বর্গ কিলোমিটার উপরিতলের ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট লেক নিকারাগুয়া মধ্য আমেরিকার বৃহত্তম ও টিটিকাকা হ্রদের পরে লাতিন আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম হ্রদ। এর জল মিষ্ট বা স্বাদু। এই হ্রদের জলে প্রায় ৪০০ ছোটবড় দ্বীপের দেখা পাওয়া যায়। এর মধ্যে হ্রদের উত্তরভাগে জাপাতেরা (স্পেনীয় উচ্চারণ ‘থাপাতেরা’) ও মধ্যভাগে অবস্থিত ওমেতেপে দ্বীপদু’টি বৃহত্তম। এই দ্বীপগুলি মূলত আগ্নেয়গিরিজাত। শুধুমাত্র ওমেতেপে দ্বীপটিতেই দুটি আগ্নেয়গিরি দেখতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে কনসেপসিওন পর্বতটির উচ্চতা ১৬১০ মিটার, অন্যদিকে মাদেরাস পর্বতটির উচ্চতা ১৩৪০ মিটার। ভূতাত্ত্বিকদের মতে আদতে এই দ্বীপটি ছিল দু’টি পৃথক আগ্নেয়গিরিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা দু’টি পৃথক দ্বীপ। কিন্তু পরবর্তী কালে দুই আগ্নেয়গিরি সঞ্জাত লাভাপ্রবাহের দ্বারা দু’টি দ্বীপ পরস্পর যুক্ত হয়ে আজকের ওমেতেপে দ্বীপটি গঠিত হয়। হ্রদের মধ্যে অবস্থিত অসংখ্য দ্বীপের মধ্যে দক্ষিণপ্রান্তে কোস্তা রিকা সীমানার কাছাকাছি সোলেনটিনামে দ্বীপপুঞ্জ বোধহয় সবচেয়ে পরিচিত। সান কার্লোস শহরের ১০-৩০ কিলোমিটার পশ্চিমে চারটি বড় দ্বীপ, (পশ্চিম থেকে পূর্বে) মানসারানসিতো, মানসারন, সান ফের্নান্দো ও লা ভেনাদা এবং আরও ৩২টি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে গঠিত এই দ্বীপপুঞ্জটি শিল্পী ও যাজক এর্নেস্তো কার্দেনাল‘এর বাসস্থান হিসেবে ৬০’এর দশকের মাঝামাঝি থেকে বিখ্যাত হয়ে ওঠে। হ্রদের মধ্যে অবস্থিত অন্যান্য দ্বীপের মতো এই দ্বীপগুলোও আগ্নেয়গিরিজাত।[৩]
জলবায়ু
নিরক্ষরেখার বেশ কাছে অবস্থিত এই হ্রদ ও সন্নিহিত অঞ্চলের আবহাওয়া মূলত উষ্ণ। কিন্তু তাপমাত্রা ঋতুভেদে যথেষ্টই ওঠানামা করে। নিকারাগুয়া হ্রদের জলে, বাতাসের গতিবেগ যখন থাকে পূর্ব থেকে যখন পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে, তখন খুব বড় বড় ঢেউ’এর সৃষ্টি হয়। এই হ্রদ অঞ্চল মাঝে মাঝে প্রবল ঝড়ের জন্যও যথেষ্ট পরিচিত। সে সব সময় এই হ্রদে নৌ-চালনা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।
হ্রদ বাস্তুতন্ত্র
নিকারাগুয়া হ্রদের একটি দৃশ্য
যদিও লেক নিকারাগুয়া মিষ্ট জলের হ্রদ, বেশ কিছু বৃহৎ নোনা জলের মাছ এই হ্রদে দেখতে পাওয়া যায়। এদের মধ্যে করাতমাছ (common sawfish), তারপন মাছ ও নিকারাগুয়া হাঙর উল্লেখযোগ্য। এদের মধ্যে করাতমাছের সংখ্যা ১৯৭০’এর দশকের পর থেকে ভীষণভাবে কমে গেছে। অন্যদিকে ১৯৬১ সালে নমুনা পরীক্ষা করে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, নিকারাগুয়া হাঙর বলে আলাদা কোনও প্রজাতির হাঙর নেই। লেক নিকারাগুয়ায় দেখতে পাওয়া হাঙ্গরগুলি বাস্তবে ষাঁড় হাঙ্গর (Bull Shark, বিজ্ঞানসম্মত নাম Carcharhinus leucas) প্রজাতির।[৪] ১৯৬৮-৬৯ সালে নেব্রাস্কা বিশ্ববিদ্যালয়‘এর গবেষকরা লেক নিকারাগুয়ার জলে প্রায় ২২০০ হাঙরের দেখা পান।[৪] এখন খুব স্বাভাবিকভবেই প্রশ্ন ওঠে, নোনা জলের স্বাভাবিক বাসিন্দা এই হাঙর এই অন্তর্দেশীয় হ্রদে প্রবেশ করলো কীভাবে? গবেষকদের মতে এর সম্ভাব্য উত্তর হলো, এই হ্রদ থেকে উৎপন্ন রিও সান হুয়ান নদী সম্পূর্ণ নাব্য। ক্যারিবীয় সাগর থেকে এই নদী পথেই এই হাঙরেরা এই হ্রদে প্রবেশ করে। বর্তমানে তাদের এই যাত্রাপথের প্রমাণও পাওয়া গেছে। বেশ কিছু হাঙর, যেগুলি আগে হ্রদের জলে ধরা পড়েছিল, ছেড়ে দেবার ৭-১১ দিন পর তারা আবার খোলা সমুদ্রে ধরা পড়ে। আবার খোলা সমুদ্রে প্রথমে ধরা পড়া হাঙর পড়ে আবার রিও সান হুয়ান নদীতে বা নিকারাগুয়া হ্রদে ধরা পড়েছে, এমন ঘটনাও ঘটেছে।[৪] ষাঁড় হাঙরদের এইভাবে সমুদ্র থেকে মিষ্ট জলের নদীতে প্রবেশ করে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ার নজির আগেও পাওয়া যায়।[৫] তবে প্রায় ৩ মিটার লম্বা এই ধরনের হাঙরের দেখাও এখন লেকের জলে লক্ষণীয়ভাবেই কমে এসেছে। এর কারণ হিসেবে প্রথমে ভাবা হয়েছিল, মিষ্ট জল এই ধরনের হাঙরের বসবাসের পক্ষে অনুপযুক্ত হওয়ার কারণেই তাদের সংখ্যা কমে আসছে। কিন্তু এখন ব্যাপকহারে চোরাশিকার ও দূষণকেই এর আসল কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। এই কারণেই বর্তমানে নিকারাগুয়ায় হ্রদ বা নদীর জলে নিকারাগুয়া হাঙর ও করাতমাছ শিকার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।[৬] এছাড়াও আরও বহু প্রজাতির মাছ এই হ্রদের জলে দেখতে পাওয়া যায়। এই হ্রদের তীর ও মধ্যবর্তী বিভিন্ন দ্বীপগুলিতে ক্রান্তীয় অঞ্চলের স্বাভাবিক উদ্ভিদের চিরসবুজ বনানী দেখতে পাওয়া যায়। এই অঞ্চলের বনে নানারকম পাখি (যেমন ঈগল, ম্যাকাও, টার্কি), নানা প্রজাতির বাঁদর, হরিণ, ইগুয়ানা ও তাপিরেরও দেখা মেলে।[৭] তবে শেষ তিন-চার দশকে প্রবল দূষণের কারণে হ্রদের বাস্তুতন্ত্রের অবস্থা নিয়ে নানা মহল থেকে বারে বারে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ১৯৮১ সালে আই আর ই এন এ(নিকারাগুয়ান ইনস্টিটিউট অফ ন্যাচারাল রিসোর্সেস অ্যান্ড দ্য এনভাইরনমেন্ট)’র পক্ষ থেকে হ্রদের জল ও তার বাস্তুতন্ত্র নিয়ে যে ব্যাপক নমুনা সমীক্ষা চালানো হয়, তাতে খুবই উদ্বেগজনক তথ্য উঠে আসে। দেখা যায়, হ্রদের জলে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন বসতি ও কারখানা থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩২ টন বর্জ্য পদার্থ নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। এর মধ্যে হ্রদের তীরবর্তী পেনভাল্ট কেমিকাল করপোরেশন‘এর বর্জ্যই ছিল সবচেয়ে বেশি দূষণ সৃষ্টিকারী।[৮] কিন্তু নিকারাগুয়ার দুর্বল অর্থনীতির কারণে এই দূষণ প্রতিরোধে উপযুক্ত ব্যবস্থা ঠিকমতো নিয়ে ওঠা যায়নি।
ইতিহাস
লেক নিকারাগুয়ার তীরে জনবসতির ইতিহাস সেখানে ইউরোপীয়দের আগমনের থেকেও অনেক পুরোনো। এই অঞ্চলে আগে থেকেই বেশ কিছু স্থানীয় আমেরিন্ডিয়ান উপজাতির বসতি ছিল, যাদের কথা স্পেনীয় কঙ্কুইস্তাদোরদের কথাতেও বারে বারে উঠে এসেছে।
প্রচলিত কাহিনী
এই হ্রদ ও তার মধ্যবর্তী দ্বীপগুলির উদ্ভব নিয়ে কিছু সুন্দর গল্পকথা প্রচলিত আছে। তার মধ্যে একটি এ’রকম – নাগরান্দো নামে এক যুবক ছিল। সে ওমেতেপতল বলে এক যুবতীকে খুব ভালোবাসতো। কিন্তু এই যুবতী ছিল নাগরান্দোদের গ্রামের শত্রু গ্রামের প্রধানের মেয়ে। দুই গ্রামের মধ্যে শত্রুতা ছিল এমন পর্যায়ে যে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে কোনোরকম বিয়েশাদী ছিল নিষিদ্ধ। কিন্তু প্রেম আর কবে বারণ শুনেছে। ফলে নাগরান্দো আর ওমেতেপতল কিছুদিনের মধ্যেই গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে একটি সুন্দর উপত্যকায় আশ্রয় নিল। কিন্তু সেখানেও তাদের সুখের ঘরের কথা গোপন রইলো না। খবর পেয়ে তাদের ধরতে দুই গ্রাম থেকেই মাতব্বররা লোকলস্কর নিয়ে রওনা দিল। তাদের আসার খবর পেয়ে নাগরান্দো আর ওমেতেপতল দেখল, পালানোর আর কোনও জায়গা নেই। পরস্পর থেকে বিচ্ছেদের আশঙ্কায় ও হতাশায় তখন তারা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিল। হাতের শিরা কেটে তারা আত্মহত্যা করে। ওমেতেপতল সেখানেই চিত হয়ে পড়ে যায়। নাগরান্দো টলমল করতে করতে কিছুটা পিছনে সরে এসে পড়ে যায় আরও নিচে। তাদের হাতের কাটা শিরা দিয়ে রক্ত বেরিয়ে এসে এরপর তাদের দেহগুলি ঢেকে ফেলে। সেই রক্তই আজকের নিকারাগুয়া হ্রদ। আর ওমেতেপে দ্বীপটি তার দুই পর্বতশিখরসহ হল ওমেতেপতলের বুক। আর নাগরান্দোর শরীরের যেটুকু এখনও দেখা যায়, সেটাই হল আজকের জাপাতেরা দ্বীপ।[৯]
ঔপনিবেশিক ও পরবর্তী ইতিহাস
যদিও লেক নিকারাগুয়া ভৌগোলিক দিক থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের কাছে (এতটাই কাছে, যে ওমেতেপে দ্বীপের পাহাড়চূড়াদু’টি থেকে সহজেই প্রশান্ত মহাসাগর দেখতে পাওয়া যায়।), কিন্তু হ্রদ থেকে উৎপন্ন সম্পূর্ণ নাব্য নদী রিও সান হুয়ান ক্যারিবীয় সাগরে পড়েছে। এর ফলে প্রথম থেকেই স্পেনীয় অভিযাত্রী ও অভিবাসীদের জাহাজ সহজেই এই নদী পথে সমুদ্র থেকে অনেকটা ভিতরে চলে এসে হ্রদের নিরাপদ, শান্ত তীরে আশ্রয় নিতে পারত। তাই হ্রদের তীরে গ্রানাদা শহর প্রথমে একটি অন্তর্দেশীয় বন্দর হিসেবেই গড়ে ওঠে। ক্যারিবীয় জলদস্যুরাও অন্তত তিনবার ঐ একই নদীপথে হানা দিয়ে গ্রানাদা শহর লুঠ করে।[১০]পানামা খাল খননের আগে রিভাসের সংকীর্ণ যোজক পথ ধরে একটি স্টেজকোচ লাইন চালু ছিল। কর্নেলিয়াস ভান্ডেরবিল্ট’স অ্যাকসেসরি ট্র্যানজিট কোম্পানি ছিল এর মালিক। আতলান্তিক থেকে প্রশান্ত মহাসাগরে যাওয়ার এটাই ছিল তখন সহজতম পথ। হ্রদ থেকে রিও সান হুয়ান নদী যেখানে বেরিয়েছে, সেখানে এক জায়গায় নদী থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের দূরত্ব মাত্র ২৪ কিলোমিটার। তখন পরিকল্পনা করা হয় এই অংশটুকু একটি খাল খনন করে যুক্ত করে দিলেই তা দুই মহাসাগরের মধ্যে যাতায়াত সহজ করে তুলবে। যাইহোক, শেষপর্যন্ত পানামা খাল খনন করা হলে এই পরিকল্পনা তখনকার মতো পরিত্যক্ত হয়। পরবর্তীকালে ১৯১৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও নিকারাগুয়ার মধ্যে সাক্ষরিত ব্রায়ান-চামোরো চুক্তি অনুযায়ী এই আন্তর্মহাসাগরীয় খালের পরিকল্পনা আবার সামনে আসে। যাইহোক, বারে বারে এই খালের পরিকল্পনা হলেও নানা কারণে (যেমন, উদাহরণস্বরূপ পানামা খালের মোট দৈর্ঘ্য ৭৭ কিলোমিটার, সেখানে প্রস্তাবিত নিকারাগুয়া খালের মোট দৈর্ঘ্য দাঁড়াবে ১৩০ কিলোমিটার। অর্থাৎ এই খাল দিয়ে আন্তর্মহাসাগরীয় যাতায়াত ও পরিবহনের খরচ অনেকটাই বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা।) এখনও পর্যন্ত তা কখনোই রূপায়িত হয়নি।
নদী (সমার্থক শব্দ – তটিনী, তরঙ্গিনী, সরিৎ ইত্যাদি) সাধারণত মিষ্টি জলের একটি প্রাকৃতিক জলধারা যা ঝরনাধারা, বরফগলিত স্রোত অথবা প্রাকৃতিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সৃষ্ট হয়ে প্রবাহ শেষে সাগর, মহাসাগর, হ্রদ বা অন্য কোন নদী বা জলাশয়ে পতিত হয় । মাঝে মাঝে অন্য কোন জলের উৎসের কাছে পৌঁছানোর আগেই নদী সম্পূর্ণ শুকিয়ে যেতে পারে। নদীকে তার গঠন অনুযায়ী শাখানদী, উপনদী, প্রধান নদী, নদ ইত্যাদি নামে অভিহিত করা যায়। আবার ভৌগোলিক অঞ্চলভেদে ছোট নদীকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়।সাধারণত নদীর নামকরণ করা হয়েছে মেয়েদের নামে। M.Moriswa এর মতে নদী হল খাতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত জলধারা।-River is a canal flow.
সাধারণত উঁচু ভূমি বা পাহাড় গিরিখাত থেকে সৃষ্ট ঝরণাধারা, বরফগলিত স্রোত কিংবা প্রাকৃতিক পরিবর্তন থেকে নদীর জন্ম। হাজার হাজার ফুট উঁচু পাহাড় থেকে তীব্র বেগে ধেয়ে আসা জলরাশিতে এক ধরনের প্রচন্ড গতি সঞ্চারিত হয়। ছুটে আসা এই দ্রুত গতিসম্পন্ন জলস্রোত স্থলভাগ অতিক্রম করার সময় নদী নামে পরিচিত হয়। নদী যখন পাহাড়ি এলাকায় প্রবাহিত হয় তখন তার যৌবনাবস্থা। এ সময় নদী ব্যাপক খননকাজ চালায় এবং উৎপত্তিস্থল থেকে নুড়ি, বালি, পলি প্রভৃতি আহরণ করে অতি সহজে সমুদ্রে নিক্ষেপ করে। নদী এভাবেই আবহমানকাল ধরে পৃথিবীপৃষ্ঠকে ক্ষয় করে চলেছে। তার এ কাজ শেষ হয় তখন, যখন সমস্ত নদী-অববাহিকা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সমভূমি বা প্রায় সমভূমি অঞ্চলে পরিণত হয়। উৎস থেকে মোহানা অবধি নদীর এই কাজকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়।
নদীর যৌবন অবস্থা
এ অবস্থায় নদীর প্রধান কাজ হল ক্ষয় এবং বহন। সাধারণত পার্বত্য অবস্থাটিই নদীর যৌবনকাল। এ সময় নদী বড় বড় পাথর বহন করে নিয়ে আসে। এসব পাথরের ঘর্ষনে নদীর তলদেশ ক্ষয় পেয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। পার্বত্য অঞ্চলে নদীর ক্ষয়ক্রিয়ার ফলে গিরিখাত, ক্যানিয়ন এবং জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়।
নদীর পরিপক্ব অবস্থা
এ অবস্থায় নদী একটু স্তিমিত হয়। ফলে নদীর বেগ ও বোঝা বয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও কমে যায়। সাধারণত নদী মধ্যস্থানে বা উপত্যকায় প্রবেশ করলে এই পরিপক্ব বা প্রৌঢ় অবস্থা বোঝায়। এই অবস্থায় গিরিখাত, খরস্রোত, জলপ্রপাত প্রভৃতি আর দেখা যায় না। পাহাড়গুলো এবং তার মধ্যবর্তী জলবিভাজিকার উচ্চতাও আগের চেয়ে কম দেখা যায়।
নদীর বৃদ্ধাবস্থা
এই অবস্থায় নদীর ক্ষয় করার ক্ষমতা একেবারেই কমে যায়। তবে ভাঙার কাজ অল্পস্বল্প চলে। সাধারণত সমতল ভূমিতে নদীর এই অবস্থা হয়। এতে কোথাও কোথাও উঁচু ভূমি থাকতে পারে। এ সময় নদীর গতিমাত্রা এত কমে যায় যে, সামান্য বাধা পেলেই নদী তার গতিপথ পরিবর্তন করে। নদী এই অংশে খুব এঁকেবেঁকে চলে। পথে পথে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ সৃষ্টি করে। এ অবস্থায় নদী বর্ষাকালে প্রায়ই দু’কূলে বন্যার সৃষ্টি করে। নদীর পানি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে বালি ও পলি দুই তীরে ছড়িয়ে পড়ে। নদীর বুকেও চর জাগে। তবে নদী সবসময় ঠিক এভাবে চলে না। মাঝে মাঝে ভূকম্পনের ফলে নদী আবার যৌবন পেতে পারে। এ ছাড়া অন্যান্য কারণেও নদীর তীব্রতা ও গতি বাড়তে পারে।
ভূ-আন্দোলন যদি ব্যাপক আকার ধারণ করে, তখন তা গিরিজনিতে পর্যবাসিত হয়। এর ফলে নতুন নতুন পাহাড় পর্বতের সৃষ্টি হয়। পৃথিবীতে এমন কিছুসংখ্যক বিরল নদী আছে, যারা উত্থিত পর্বতের শক্তিকে পর্যুদস্ত করে তাদের ক্ষয়কার্য অব্যাহত রেখেছে এবং পর্বতরাজির উত্থান সংঘটিত হবার পরও তাদের অস্তিত্ত বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। ঐ সমস্ত নদীকে বলা হয় প্রাকভূমিরূপ নদী। উদাহরণস্বরূপ কলরেডো, সিন্ধু ও ব্রহ্মপুত্রের নাম বলা যেতে পারে। কলরেডো রকি পর্বতের এবং সিন্ধু ও ব্রহ্মপুত্র নদ হিমালয় পর্বতের উজানের অনেক আগে থেকেই সেখানে প্রবহমান ছিল।[১]
নদীর প্রকারভেদ
প্রধান নদী সাধারণত পাহাড় হতে সৃষ্ট ঝরণা, হিমবাহ থেকে সৃষ্টি হয়, যেমন পদ্মা গঙ্গোত্রী হিমবাহ হতে উৎপন্ন হয়েছে। শাখানদী অন্য কোন নদী হতে উৎপন্ন হয়। যেমন বুড়িগঙ্গা ধলেশ্বরীর শাখা নদী। উপনদী সাধারণত অন্য নদীতে গিয়ে মেশে এবং প্রবাহ দান করে, যেমন আত্রাই নদী। কোন প্রধান নদী অন্য নদীর উপনদীও হতে পারে। আবার পুরুষ ও স্ত্রীবাচক শব্দের ভিত্তিতে এই জলস্রোতকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যে সকল জলস্রোতের নাম স্ত্রীবাচক তাদের নদী বলা হয়। এদের নাম দীর্ঘস্বর কারান্ত হয়। যেমনঃ মেঘনা, যমুনা, কর্ণফুলী, কুশিয়ারা ইত্যাদি। যে সকল জলস্রোতের নাম পুরুষবাচক তাদের বলা হয় নদ। এদের নাম হ্রস্বস্বর কারান্ত হয়। যেমনঃ কপোতাক্ষ, ব্রহ্মপুত্র, নীল নদ ইত্যাদি নদ। তবে এই নিয়ম সেসকল নদীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য,যাদের নাম পৌরাণিক।
ভূপৃষ্ঠের নদী: ভূগর্ভস্থ এবং উপগ্লাসিয়াল অধিকাংশ কিন্তু সব নদীই ভূপৃষ্ঠে প্রবাহিত হয় না। ভূগর্ভস্থ নদী গুহা বা গুহায় ভূগর্ভে প্রবাহিত হয়। চুনাপাথর ভূতাত্ত্বিক গঠন সহ অঞ্চলগুলিতে এই জাতীয় নদীগুলি প্রায়শই পাওয়া যায়। সাবগ্লাসিয়াল স্রোতগুলি হল বিনুনিযুক্ত নদী যা হিমবাহ এবং বরফের শীটগুলির বিছানায় প্রবাহিত হয়, যা হিমবাহের সামনের দিকে গলে যাওয়া জলকে নিঃসরণ করার অনুমতি দেয়। হিমবাহের অত্যধিক ওজনের কারণে চাপের গ্রেডিয়েন্টের কারণে, এই জাতীয় স্রোতগুলি এমনকি চড়াই পর্যন্ত প্রবাহিত হতে পারে।
নদীগুলির স্ট্রিম অর্ডার শ্রেণীবিভাগ: ফ্লুভ এবং রিভিয়ের স্ট্রাহলার স্ট্রীম অর্ডার অবদানকারী উপনদীগুলির সংযোগ এবং শ্রেণিবিন্যাসের উপর ভিত্তি করে নদীগুলিকে স্থান দেয়। হেডওয়াটারগুলি প্রথম ক্রম এবং আমাজন নদী দ্বাদশ ক্রম। বিশ্বের প্রায় 80% নদী এবং স্রোত প্রথম এবং দ্বিতীয় ক্রমে।
কিছু কিছু ভাষায়, নদীগুলির মধ্যে পার্থক্য করা হয় তাদের স্রোতের ক্রম অনুসারে। ফরাসী ভাষায়, উদাহরণস্বরূপ, সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত নদীগুলিকে বলা হয় ফ্লিউভ, অন্য নদীগুলিকে রিভিয়ার বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ, কানাডায়, ম্যানিটোবার চার্চিল নদীকে লা রিভিয়ার চার্চিল বলা হয় কারণ এটি হাডসন উপসাগর পর্যন্ত চলে, কিন্তু ল্যাব্রাডরের চার্চিল নদীটিকে লে ফ্লিউভ চার্চিল বলা হয় কারণ এটি আটলান্টিক মহাসাগরে চলে যায়। যেহেতু ফ্রান্সের বেশিরভাগ নদী তাদের নামে পরিচিত হয় শুধুমাত্র rivière বা fleuve শব্দ দ্বারা। ফ্রাঙ্কোফোনির অন্যতম প্রধান নদী যা সাধারণত (সেন্ট লরেন্স নদী) নামে পরিচিত।
যেহেতু অনেক ফ্লেউভ বড় এবং বিশিষ্ট, অনেক উপনদী গ্রহণ করে, শব্দটি কখনও কখনও নির্দিষ্ট বড় নদীগুলিকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয় যেগুলি অন্যান্য জলপ্রবাহে প্রবাহিত হয়; যাইহোক, এমনকি সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত ছোট স্রোতগুলিকে বলা হয় ফ্লুভ (যেমন ফ্লেউভ কোটিয়ার, “উপকূলীয় ফ্লেউভ”)।
টপোগ্রাফিক শ্রেণীবিভাগ: বেডরক এবং পাললিক নদী
নদীগুলিকে সাধারণত পলি, বেডরক বা দুটির কিছু মিশ্রণ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে। পলিমাটি নদীগুলিতে চ্যানেল এবং প্লাবনভূমি রয়েছে যা অসংহত বা দুর্বলভাবে একত্রিত পলিতে স্ব-গঠিত। তারা তাদের তীর ক্ষয় করে এবং বার এবং তাদের প্লাবনভূমিতে উপাদান জমা করে।
বেডরক নদী বেডরক নদী তৈরি হয় যখন নদীটি আধুনিক পলির মধ্য দিয়ে এবং অন্তর্নিহিত বেডরকে নেমে আসে। এটি এমন অঞ্চলে ঘটে যেগুলি কিছু ধরণের উত্থান অনুভব করেছে (যার ফলে নদীর গ্রেডিয়েন্টগুলি খাড়া হয়ে যায়) বা যেখানে একটি বিশেষভাবে শক্ত লিথোলজির কারণে একটি নদী একটি খাড়া নাগালের কারণ হয় যা আধুনিক পলিমাটিতে আচ্ছাদিত হয়নি। বেডরক নদীগুলি প্রায়শই তাদের বিছানায় পলল থাকে; এই উপাদান চ্যানেল ক্ষয় এবং ভাস্কর্য গুরুত্বপূর্ণ. যে নদীগুলি বেডরক এবং গভীর পলিমাটির প্যাচগুলির মধ্য দিয়ে যায় সেগুলিকে মিশ্র বেডরক-পলল হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়।
পলি নদী উপ-প্রকার: যৌবন, পরিপক্ক, বৃদ্ধ এবং পুনরুজ্জীবিত
পাললিক নদীগুলিকে তাদের চ্যানেলের প্যাটার্ন দ্বারা আরও শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে যেমন মেন্ডারিং, ব্রেইডেড, ওয়ান্ডারিং, অ্যানাস্টোমোস বা সোজা। পলল নদীর নাগালের রূপবিদ্যা পলল সরবরাহ, উপস্তর গঠন, স্রাব, গাছপালা এবং বিছানা বৃদ্ধির সংমিশ্রণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
২০ শতকের শুরুতে উইলিয়াম মরিস ডেভিস তাদের “বয়স” এর উপর ভিত্তি করে নদীগুলিকে শ্রেণিবদ্ধ করার জন্য “ক্ষয়ের চক্র” পদ্ধতি তৈরি করেছিলেন। যদিও ডেভিসের সিস্টেমটি আজও অনেক বইয়ে পাওয়া যায়, ১৯৫০ এবং ১৯৬০-এর দশকের পরে এটি ক্রমবর্ধমানভাবে সমালোচিত এবং ভূতত্ত্ববিদদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে ওঠে। তার স্কিম পরীক্ষাযোগ্য অনুমান তৈরি করেনি এবং তাই অ-বৈজ্ঞানিক বলে মনে করা হয়েছিল। ডেভিসের নদী “বয়স” এর উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে:
যৌবন নদী: একটি খাড়া গ্রেডিয়েন্ট সহ একটি নদী যার খুব কম উপনদী রয়েছে এবং দ্রুত প্রবাহিত হয়। এর চ্যানেলগুলি প্রশস্ত হওয়ার পরিবর্তে আরও গভীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। উদাহরণ হল ব্রাজোস, ট্রিনিটি এবং ইব্রো নদী। প্রাপ্তবয়স্ক নদী: একটি গ্রেডিয়েন্ট সহ একটি নদী যা তরুণ নদীর তুলনায় কম খাড়া এবং আরও ধীরে প্রবাহিত হয়। একটি পূর্ণবয়স্ক নদী অনেক উপনদী দ্বারা খাওয়ানো হয় এবং একটি যৌবনের নদীর চেয়ে বেশি স্রাব হয়। এর চ্যানেলগুলি গভীরতর না হয়ে প্রশস্ত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। উদাহরণ হল মিসিসিপি, সেন্ট লরেন্স, দানিউব, ওহিও, টেমস এবং পারানা নদী। পুরাতন নদী: নিম্ন গ্রেডিয়েন্ট এবং কম ক্ষয়কারী শক্তি সহ একটি নদী। পুরাতন নদীগুলি বন্যা সমভূমি দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। উদাহরণ হল হলুদ, নিম্ন গঙ্গা, টাইগ্রিস, ইউফ্রেটিস, সিন্ধু এবং নিম্ন নীল নদ। পুনরুজ্জীবিত নদী: একটি গ্রেডিয়েন্ট সহ একটি নদী যা টেকটোনিক উত্থান দ্বারা উত্থিত হয়। উদাহরণ হল রিও গ্র্যান্ডে এবং কলোরাডো নদী। ব্র্যাডশ মডেল দ্বারা সংক্ষিপ্তভাবে একটি নদীর বৈশিষ্ট্যগুলি তার উপরের এবং নীচের গতিপথের মধ্যে পরিবর্তিত হয়। চ্যানেলের ঢাল, গভীরতা এবং প্রস্থের মধ্যে শক্তি-আইন সম্পর্ক “নদী শাসন” দ্বারা নিষ্কাশনের একটি ফাংশন হিসাবে দেওয়া হয়।
নদীর জৈব শ্রেণীবিভাগ: ক্রেনন, রিথ্রন, পোটামন
জৈবিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে শ্রেণীবিভাগের বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে যা সাধারণত সবচেয়ে অলিগোট্রফিক বা অদূষিত থেকে সবচেয়ে ইউট্রোফিক বা দূষিত পর্যন্ত শ্রেণী নির্ধারণ করে। অন্যান্য সিস্টেমগুলি একটি সম্পূর্ণ ইকো-সিস্টেম পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে যেমন পরিবেশের জন্য নিউজিল্যান্ড মন্ত্রক দ্বারা উন্নত। ইউরোপে, ওয়াটার ফ্রেমওয়ার্ক ডাইরেক্টিভের প্রয়োজনীয়তা মৎস্য অবস্থার উপর ভিত্তি করে শ্রেণীবিভাগ সহ বিস্তৃত শ্রেণিবিন্যাসের পদ্ধতির বিকাশের দিকে পরিচালিত করেছে
ফ্রাঙ্কোফোন সম্প্রদায়ে ব্যবহৃত নদী জোনেশনের একটি সিস্টেম নদীগুলিকে তিনটি প্রাথমিক অঞ্চলে বিভক্ত করে:
ক্রেনন হল নদীর উৎসের সবচেয়ে উপরের অঞ্চল। এটি আবার ইউক্রেনন (বসন্ত বা ফোড়া জোন) এবং হাইপোক্রেনন (ব্রুক বা হেডস্ট্রিম জোন) এ বিভক্ত। এই এলাকায় কম তাপমাত্রা, অক্সিজেনের পরিমাণ কম এবং ধীর গতিতে চলমান জল রয়েছে। রাইথ্রন হল নদীর উজানের অংশ যা ক্রেননকে অনুসরণ করে। এটির তুলনামূলকভাবে শীতল তাপমাত্রা, উচ্চ অক্সিজেনের মাত্রা এবং দ্রুত, অশান্ত, দ্রুত প্রবাহ রয়েছে। পটামন হল নদীর অবশিষ্ট ভাটা প্রসারিত। এর উষ্ণ তাপমাত্রা, কম অক্সিজেনের মাত্রা, ধীর প্রবাহ এবং স্যান্ডিয়ার বটম রয়েছে।
নেভিগেশন অসুবিধা শ্রেণীবিভাগ
নদীর অসুবিধার আন্তর্জাতিক স্কেল ন্যাভিগেশন-বিশেষ করে র্যাপিডের চ্যালেঞ্জগুলিকে রেট দিতে ব্যবহৃত হয়। ক্লাস I সবচেয়ে সহজ এবং ক্লাস VI সবচেয়ে কঠিন
নদীর ভৌগোলিক জ্ঞান ও গাণিতিক সূত্র
নদীর উৎসমূল সাধারণত একটি সু-উচ্চ পার্বত্য অঞ্চল, যেখানে বরফগলা পানি ও বৃষ্টির পানি একটি ঢাল বেয়ে মাধ্যাকর্ষণজনিত প্রবল স্রোতস্বিনী সৃষ্টি করে। একাধিক ক্ষুদ্র জলধারার পর্যায়ক্রমিক সমন্বিত প্রক্রিয়াই পর্বতের গা ক্ষয় করে নদীনালার সৃষ্টি করে। পর্যায়গুলো হচ্ছে (হোমস, ১৯৫১) পাতপ্রবাহ-মিহিনালি-শিরানালি-গুহানালি-নদী উপত্যকা। কার্যত নদী উৎসমূলে ক্ষয়কার্য কয়েকটি নিয়ামক দ্বারা প্রবাহিত, যেমন-
E = F (S+,Q+,V+,R-); যখন- E = ক্ষয়ক্রিয়ার মাত্রা F = কার্যচিহ্ন S = ভূমির ঢাল Q = প্রবহমান V = প্রবাহগতি R = বন্ধুরতা ও শিলাকাঠিন্য
সহজেই অনুমেয় যে একটি নদীর ধারা সৃষ্টির পেছনে ঐসব অনুকূল ও প্রতিকূল নিয়ামকের প্রতিক্রিয়া ও প্রভাব অপরিহার্য। আবার নদীর প্রবাহগতি ও ক্ষয়ক্রিয়া পরস্পর আনুপাতিক কিন্তু প্রবাহগতিমাত্রা, অববাহিকার ঢাল ভূমিরূপের উপর নির্ভরশীল, যা ভূবিজ্ঞানী চেজি’র সমীকরণ অনুযায়ী নিম্নরূপ- V = CVRS; যখন- V = প্রবাহগতি S = ভূমির ঢাল R = ভূমি বন্ধুরতা ও শিলাকাঠিন্য C = ধ্রুব সংখ্যা
যে কোন নদীর গঠনরূপ, পর্যায়, প্রকৃতি ও ক্রিয়াকান্ড নিয়তই বিবর্তনশীল। এ রূপান্তর পর্যায়গুলো ‘অর্গানিসমিক কনসেপ্ট’ অনুসারে একটি জীবন্ত প্রাণীর সাথে তুলনীয়। আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত নদীর তিনটি প্রধান পর্যায়-
তরুণ → পরিণত → বৃদ্ধ ক্ষয়ভবন → পরিবহন → সঞ্চায়ন
বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত প্রধান নদীগুলোর উৎস হিমালয় পর্বত। বরফগলা পানি ও বৃষ্টির পানি প্রবলবেগে উত্তর থেকে দক্ষিণে সর্পিল গতিতে বইতে থাকে। এদের গন্তব্যস্থল বঙ্গোপসাগর।[১]
নদীর স্রোত
নদীর প্রবাহ অধ্যয়ন, জলবিদ্যার একটি দিক।
প্রবাহ বৈশিষ্ট্য
প্রবাহ দিক মাধ্যাকর্ষণ থেকে প্রাপ্ত শক্তি নিয়ে নদীগুলি উতরাই প্রবাহিত হয়। দিকটি কম্পাসের সমস্ত দিককে জড়িত করতে পারে এবং এটি একটি জটিল পথ হতে পারে।
উতরাই প্রবাহিত নদী, নদীর উৎস থেকে নদীর মুখ পর্যন্ত, অগত্যা সংক্ষিপ্ততম পথ গ্রহণ করে না। পাললিক স্রোতের জন্য, সোজা এবং বিনুনিযুক্ত নদীগুলির সাইনোসিটি খুব কম থাকে এবং এটি সরাসরি পাহাড়ের নিচে প্রবাহিত হয়, যখন প্রবাহিত নদীগুলি উপত্যকা জুড়ে এদিক-ওদিক প্রবাহিত হয়। বেডরক নদীগুলি সাধারণত একটি ফ্র্যাক্টাল প্যাটার্নে প্রবাহিত হয় বা একটি প্যাটার্ন যা বেডরকের দুর্বলতা দ্বারা নির্ধারিত হয়, যেমন ফল্ট, ফ্র্যাকচার বা আরও ক্ষয়যোগ্য স্তর।
প্রবাহ হার আয়তনের প্রবাহের হার, যা স্রাব, আয়তনের প্রবাহ হার এবং জল প্রবাহের হার নামেও পরিচিত, হল জলের আয়তন যা প্রতি একক সময়ে নদীর চ্যানেলের একটি প্রদত্ত ক্রস-সেকশনের মধ্য দিয়ে যায়। এটি সাধারণত কিউবিক মিটার প্রতি সেকেন্ডে (কিউমেক) বা কিউবিক ফুট প্রতি সেকেন্ডে (সিএফএস) পরিমাপ করা হয়, যেখানে 1 m3/s = 35.51 ft3/s; এটি কখনও কখনও প্রতি সেকেন্ডে লিটার বা গ্যালনে পরিমাপ করা হয়।
ভলিউমেট্রিক প্রবাহ হারকে প্রদত্ত ক্রস-সেকশনের মধ্য দিয়ে প্রবাহের গড় বেগ হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে, ক্রস-বিভাগীয় এলাকার গুণ। প্রাচীর আইন ব্যবহারের মাধ্যমে গড় বেগ আনুমানিক করা যেতে পারে। সাধারণভাবে, নদী চ্যানেলের গভীরতা (বা হাইড্রোলিক ব্যাসার্ধ) এবং ঢালের সাথে বেগ বৃদ্ধি পায়, যখন ক্রস-বিভাগীয় এলাকা গভীরতা এবং প্রস্থের সাথে স্কেল করে: গভীরতার দ্বিগুণ গণনা স্রাব নির্ধারণে এই পরিবর্তনশীলটির গুরুত্ব দেখায়। চ্যানেলের মাধ্যমে।
প্রবাহের প্রভাব
ফ্লুভিয়াল ক্ষয় যৌবনকালে নদীটি জলপ্রবাহে ক্ষয় সৃষ্টি করে, উপত্যকাকে গভীর করে। হাইড্রোলিক ক্রিয়া শিলাকে আলগা করে এবং অপসারণ করে যা তীর এবং নদীর তলকে আরও ক্ষয় করে। সময়ের সাথে সাথে, এটি নদীর তলকে গভীর করে এবং খাড়া পাশ তৈরি করে যা পরে আবহাওয়ায় পরিণত হয়।
তীরগুলির খাড়া প্রকৃতির কারণে উপত্যকার দিকগুলি নীচের দিকে সরে যায় যার ফলে উপত্যকাটি V- আকৃতির হয়ে যায়।
যৌবনের নদী উপত্যকায়ও জলপ্রপাত তৈরি হয় যেখানে শক্ত পাথরের একটি ব্যান্ড নরম পাথরের একটি স্তরকে আবৃত করে। ডিফারেনশিয়াল ক্ষয় ঘটে কারণ নদী শক্ত শিলার চেয়ে নরম শিলাকে আরও সহজে ক্ষয় করে, এটি শক্ত শিলাকে আরও উঁচুতে ফেলে এবং নীচের নদী থেকে আলাদা হয়ে যায়। একটি নিমজ্জন পুল নীচের অংশে গঠন করে এবং জলবাহী ক্রিয়া এবং ঘর্ষণ এর ফলে গভীর হয়।
বন্যা বন্যা একটি নদীর চক্রের একটি প্রাকৃতিক অংশ। নদী নালাগুলির সিংহভাগ ক্ষয় এবং সংশ্লিষ্ট প্লাবনভূমিতে ক্ষয় ও অবক্ষয় বন্যার পর্যায়ে ঘটে। অনেক উন্নত অঞ্চলে, মানুষের কার্যকলাপ নদী নালার রূপ পরিবর্তন করেছে, পরিবর্তিত হয়েছে মাত্রা এবং বন্যার ফ্রিকোয়েন্সি। এর কিছু উদাহরণ হল লেভ নির্মাণ, চ্যানেল সোজা করা এবং প্রাকৃতিক জলাভূমির নিষ্কাশন। অনেক ক্ষেত্রে নদী ও প্লাবনভূমিতে মানুষের কর্মকাণ্ড নাটকীয়ভাবে বন্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে। নদীগুলিকে সোজা করার ফলে জল নীচের দিকে আরও দ্রুত প্রবাহিত হতে দেয়, যা আরও নীচের দিকে বন্যার ঝুঁকি বাড়ায়। বন্যা সমভূমিতে নির্মাণ বন্যা সঞ্চয়স্থান অপসারণ করে, যা আবার নিম্নধারার বন্যাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। লেভের বিল্ডিং শুধুমাত্র লেভের পিছনের এলাকাকে রক্ষা করে এবং আরও নিচের দিকে নয়। সরু চ্যানেলের তীর দ্বারা নদীর প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে ব্যাক-ওয়াটার চাপের কারণে লেভ এবং বন্যা-তীরগুলিও উজান থেকে বন্যা বাড়াতে পারে। আটক অববাহিকাগুলি অবশেষে বন্যার জলের কিছু অংশ গ্রহণ করতে সক্ষম হয়ে বন্যার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে।
আউটলেট এর পলি ফলন পলল ফলন হল একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে একটি নিষ্কাশন বেসিনের আউটলেটে পৌঁছানো কণা পদার্থের মোট পরিমাণ (সাসপেন্ড বা বেডলোড)। ফলন সাধারণত প্রতি বর্গ কিলোমিটার প্রতি বছর কিলোগ্রাম হিসাবে প্রকাশ করা হয়। পলল বিতরণ প্রক্রিয়াগুলি নিষ্কাশন এলাকার আকার, বেসিনের ঢাল, জলবায়ু, পলির ধরন (লিথোলজি), গাছপালা আবরণ এবং মানুষের ভূমি ব্যবহার/ব্যবস্থাপনা অনুশীলনের মতো অসংখ্য কারণ দ্বারা প্রভাবিত হয়। ‘পলল বিতরণ অনুপাত’ (ফলন এবং ক্ষয়প্রাপ্ত মোট পলির পরিমাণের মধ্যে অনুপাত) এর তাত্ত্বিক ধারণাটি নির্দেশ করে যে সমস্ত পলল একটি নির্দিষ্ট ক্যাচমেন্টের মধ্যে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না যা আউটলেট পর্যন্ত পৌঁছায় (উদাহরণস্বরূপ, প্লাবনভূমিতে জমা হওয়ার কারণে) ) এই ধরনের স্টোরেজ সুযোগগুলি সাধারণত বড় আকারের ক্যাচমেন্টে বৃদ্ধি পায়, এইভাবে ফলন এবং পলল বিতরণ অনুপাত কম হয়।
লোনা পানি বেশিরভাগ নদী যেখানে সমুদ্রের সাথে মিলিত হয় সেখানে লোনা জল দেখা দেয়। লোনা পানির ব্যাপ্তি উজানে উল্লেখযোগ্য দূরত্ব প্রসারিত করতে পারে, বিশেষ করে উচ্চ জোয়ারের রেঞ্জ সহ এলাকায়।
নদীর বাস্তুতন্ত্র
নদীর বায়োটা রিপারিয়ান অঞ্চলের জীবগুলি নদীর চ্যানেলের অবস্থান এবং প্রবাহের ধরণগুলির পরিবর্তনে সাড়া দেয়। নদীর বাস্তুতন্ত্র সাধারণত নদী ধারাবাহিক ধারণা দ্বারা বর্ণনা করা হয়, এতে বাঁধ এবং জলপ্রপাত এবং অস্থায়ী ব্যাপক বন্যার অনুমতি দেওয়ার জন্য কিছু সংযোজন এবং পরিমার্জন রয়েছে। ধারণাটি নদীকে একটি সিস্টেম হিসাবে বর্ণনা করে যেখানে ভৌত পরামিতি, খাদ্য কণার প্রাপ্যতা এবং বাস্তুতন্ত্রের গঠন তার দৈর্ঘ্য বরাবর ক্রমাগত পরিবর্তিত হয়। উজানের অংশ থেকে যে খাদ্য (শক্তি) অবশিষ্ট থাকে তা ডাউনস্ট্রিম ব্যবহার করা হয়।
সাধারণ প্যাটার্ন হল যে প্রথম ক্রম প্রবাহে কণা পদার্থ (পার্শ্ববর্তী বন থেকে ক্ষয়প্রাপ্ত পাতা) থাকে যা সেখানে Plecoptera লার্ভার মত শ্রেডার দ্বারা প্রক্রিয়া করা হয়। এই শ্রেডারগুলির পণ্যগুলি সংগ্রাহকদের দ্বারা ব্যবহৃত হয়, যেমন হাইড্রোসাইকিডি এবং আরও নীচের দিকের শেত্তলাগুলি যা প্রাথমিক উত্পাদন তৈরি করে যা জীবের প্রধান খাদ্য উত্স হয়ে ওঠে। সমস্ত পরিবর্তনগুলি ধীরে ধীরে হয় এবং প্রতিটি প্রজাতির বন্টনকে একটি স্বাভাবিক বক্ররেখা হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে, যেখানে শর্তগুলি সর্বোত্তম সর্বোচ্চ ঘনত্বের সাথে। নদীতে উত্তরাধিকার কার্যত অনুপস্থিত এবং বাস্তুতন্ত্রের গঠন স্থির থাকে।
নদীর রসায়ন নদীর রসায়ন জটিল এবং বায়ুমণ্ডল থেকে আসা ইনপুট, ভূতত্ত্ব যার মাধ্যমে এটি ভ্রমণ করে এবং মানুষের কার্যকলাপের ইনপুটগুলির উপর নির্ভর করে। জলের রাসায়নিক সংমিশ্রণ গাছপালা এবং প্রাণী উভয়ের জন্য সেই জলের বাস্তুশাস্ত্রের উপর একটি বড় প্রভাব ফেলে এবং এটি নদীর জলের তৈরি হতে পারে এমন ব্যবহারগুলিকেও প্রভাবিত করে। নদীর জলের রসায়ন বোঝার এবং বৈশিষ্ট্যযুক্ত করার জন্য একটি ভাল ডিজাইন করা এবং পরিচালিত নমুনা এবং বিশ্লেষণ প্রয়োজন।
নদীর ব্যবহার
নির্মান সামগ্রী মোটা পলি, নুড়ি এবং বালি, নদী দ্বারা উৎপন্ন এবং সরানো নির্মাণে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। বিশ্বের কিছু অংশে এটি ব্যাপক নতুন হ্রদের আবাসস্থল তৈরি করতে পারে কারণ নুড়ির গর্তগুলি আবার জলে ভরে যায়। অন্যান্য পরিস্থিতিতে এটি নদীর তলদেশ এবং নদীর গতিপথকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে এবং ডিম পাড়ার জন্য স্থিতিশীল নুড়ি গঠনের উপর নির্ভরশীল মাছের জনসংখ্যার জন্য মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। উচ্চভূমির নদীগুলিতে, সাদা জলের সাথে র্যাপিড বা এমনকি জলপ্রপাত ঘটে। র্যাপিড প্রায়ই বিনোদনের জন্য ব্যবহার করা হয়, যেমন হোয়াইটওয়াটার কায়াকিং।
শক্তি উৎপাদন
বেলজিয়ামের ওয়াটারমিল। দ্রুত প্রবাহিত নদী এবং জলপ্রপাতগুলি জলকল এবং জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাধ্যমে শক্তির উত্স হিসাবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। ওয়াটারমিলের প্রমাণ দেখায় যে সেগুলি বহু শত বছর ধরে ব্যবহার করা হচ্ছে, উদাহরণস্বরূপ ডনবি ক্লিক মিলের অর্কনিতে। বাষ্প শক্তি উদ্ভাবনের আগে, সিরিয়াল পিষানোর জন্য এবং উল এবং অন্যান্য বস্ত্র প্রক্রিয়াকরণের জন্য ওয়াটারমিলগুলি ইউরোপ জুড়ে সাধারণ ছিল। ১৮৯০-এর দশকে নর্থম্বারল্যান্ডের ক্র্যাগসাইডের মতো জায়গায় নদীর জল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রথম মেশিনগুলি স্থাপিত হয়েছিল এবং সাম্প্রতিক দশকগুলিতে বিশেষ করে নরওয়ের মতো আর্দ্র পার্বত্য অঞ্চলে জল থেকে বৃহৎ আকারে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। .
খাদ্যের উৎস প্রাক-ইতিহাস থেকেই নদীগুলো খাদ্যের উৎস। এগুলি প্রায়শই মাছ এবং অন্যান্য ভোজ্য জলজ জীবনের একটি সমৃদ্ধ উত্স এবং এটি মিষ্টি জলের একটি প্রধান উত্স, যা পানীয় এবং সেচের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। নদীগুলি শহর এবং আশেপাশের শহরগুলির শহুরে রূপ নির্ধারণ করতে সহায়তা করে এবং তাদের করিডোরগুলি প্রায়শই নদীর হাঁটার মতো অগ্রভাগের রাস্তাগুলির বিকাশের মাধ্যমে শহুরে পুনর্নবীকরণের সুযোগ দেয়। নদীগুলি বর্জ্য জল এবং, স্বল্প উন্নত বিশ্বের অন্যান্য বর্জ্য নিষ্পত্তির একটি সহজ উপায়ও সরবরাহ করে।
নেভিগেশন এবং পরিবহন নদীগুলো হাজার হাজার বছর ধরে নৌচলাচলের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নৌচলাচলের প্রাচীনতম প্রমাণ পাওয়া যায় সিন্ধু সভ্যতায়, যা উত্তর-পশ্চিম ভারতে ৩৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে বিদ্যমান ছিল। নদীপথে নৌচলাচল পরিবহনের একটি সস্তা মাধ্যম সরবরাহ করে এবং এখনও বিশ্বের বেশিরভাগ প্রধান নদী যেমন আমাজন, গঙ্গা, নীল, মিসিসিপি এবং সিন্ধুতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। যেহেতু নদীর নৌকাগুলি প্রায়শই নিয়ন্ত্রিত হয় না, তারা পরিবহন দ্বারা নির্গত কণা নিঃশ্বাসের কারণে বিশ্বব্যাপী গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমনে এবং স্থানীয় ক্যান্সারে একটি বড় পরিমাণ অবদান রাখে।
স্ক্যান্ডিনেভিয়া এবং কানাডার মতো কিছু ভারী বনাঞ্চলে, কাঠবাদামরা আরও প্রক্রিয়াকরণের জন্য ভাসমান গাছগুলিকে ভাসিয়ে কাঠের শিবিরে ভাসানোর জন্য নদী ব্যবহার করে, প্রাকৃতিক উপায়ে বিশাল ভারী কাঠগুলি পরিবহন করে অনেক প্রচেষ্টা এবং খরচ বাঁচায়।
রাজনৈতিক সীমানা রাজনৈতিক সীমানা নির্ধারণ এবং দেশ রক্ষায় নদীগুলি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। উদাহরণস্বরূপ, দানিউব ছিল রোমান সাম্রাজ্যের একটি দীর্ঘস্থায়ী সীমানা, এবং আজ এটি বুলগেরিয়া এবং রোমানিয়ার মধ্যে বেশিরভাগ সীমানা তৈরি করে। উত্তর আমেরিকার মিসিসিপি এবং ইউরোপের রাইন এই মহাদেশগুলির প্রধান পূর্ব-পশ্চিম সীমানা। দক্ষিণ আফ্রিকার অরেঞ্জ এবং লিম্পোপো নদীগুলি তাদের রুট বরাবর প্রদেশ এবং দেশগুলির মধ্যে সীমানা তৈরি করে।
পবিত্র নদী পবিত্র নদী এবং তাদের শ্রদ্ধা বিভিন্ন ধর্মে পাওয়া একটি ঘটনা, বিশেষ করে যে ধর্মগুলি তাদের ধর্মের মূল হিসাবে পরিবেশ বান্ধব বিশ্বাস রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ভারতীয় বংশোদ্ভূত ধর্ম (বৌদ্ধধর্ম, হিন্দুধর্ম, জৈনধর্ম, এবং সিকধর্ম) উপাসনা, গাছ, পর্বত এবং নদীকে পবিত্র হিসাবে শ্রদ্ধা করে এবং সংরক্ষণ করে। হিন্দুধর্মের সবচেয়ে পবিত্র নদীগুলির মধ্যে রয়েছে গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতী নদী যার উপর ঋগ্বেদিক নদীগুলি বিকাশ লাভ করেছিল। বেদ এবং গীতা, হিন্দু গ্রন্থগুলির মধ্যে সবচেয়ে পবিত্র গ্রন্থগুলি সরস্বতী নদীর তীরে রচিত হয়েছিল যেগুলি বর্তমান হরিয়ানায় কুরু রাজ্যের সময় কোড করা হয়েছিল। হিন্দুধর্মের অন্যান্য গৌণ পবিত্র নদীগুলির মধ্যে নর্মদা এবং আরও অনেকগুলি
= নদী ব্যবস্থাপনা
নদীগুলিকে প্রায়শই পরিচালিত বা নিয়ন্ত্রিত করা হয় যাতে সেগুলিকে আরও বেশি উপযোগী বা মানুষের ক্রিয়াকলাপে কম ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে, জল সঞ্চয় করতে বা শক্তি আহরণের জন্য বাঁধ বা ওয়্যার তৈরি করা যেতে পারে। ইউরোপে ডাইক নামে পরিচিত লেভগুলি নদীর জলকে প্লাবনভূমি বা প্লাবনপথে প্রবাহিত হতে বাধা দেওয়ার জন্য নির্মিত হতে পারে। জল স্থানান্তর বা নৌচলাচলের জন্য খালগুলি নদীগুলিকে একে অপরের সাথে সংযুক্ত করে।ন্যাভিগেশন উন্নত করতে নদীর গতিপথ পরিবর্তন করা যেতে পারে, বা প্রবাহের হার বাড়াতে সোজা করা যেতে পারে। নদী ব্যবস্থাপনা একটি ক্রমাগত ক্রিয়াকলাপ কারণ নদীগুলি মানুষের দ্বারা করা পরিবর্তনগুলিকে ‘পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনার’ প্রবণতা রাখে। ড্রেজ করা চ্যানেলগুলি পলি হয়ে যায়, স্লুইস মেকানিজমগুলি বয়সের সাথে খারাপ হয়ে যায়, লেভিস এবং ড্যামগুলি সিপাজ বা বিপর্যয়কর ব্যর্থতার শিকার হতে পারে। নদী ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যে সুবিধাগুলি চাওয়া হয় তা প্রায়শই এই ধরনের ব্যবস্থাপনার খারাপ প্রভাবগুলি প্রশমিত করার সামাজিক এবং অর্থনৈতিক খরচ দ্বারা অফসেট করা যেতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ, উন্নত বিশ্বের কিছু অংশে, নদীগুলিকে উন্নয়নের জন্য সমতল বন্যা-সমভূমি মুক্ত করার জন্য চ্যানেলের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। বন্যা উচ্চ আর্থিক খরচে এবং প্রায়শই প্রাণহানির সাথে এই ধরনের উন্নয়নকে প্লাবিত করতে পারে।
নদীগুলি আবাসস্থল সংরক্ষণের জন্য ক্রমবর্ধমানভাবে পরিচালিত হচ্ছে, কারণ এগুলি অনেক জলজ ও নদীতীরীয় উদ্ভিদ, বাসিন্দা এবং পরিযায়ী মাছ, জলপাখি, শিকারী পাখি, পরিযায়ী পাখি এবং অনেক স্তন্যপায়ী প্রাণীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
উদ্বেগ
মানবসৃষ্ট কারণগুলি, যেমন অতিরিক্ত শোষণ এবং দূষণ, সবচেয়ে বড় হুমকি এবং উদ্বেগ যা নদীগুলিকে পরিবেশগতভাবে মৃত এবং নদীগুলিকে শুকিয়ে দিচ্ছে।
প্লাস্টিক দূষণ প্রাকৃতিক পরিবেশে প্লাস্টিকের স্থায়িত্বের কারণে জলজ জীবন এবং নদীর বাস্তুতন্ত্রের উপর হুমকির সৃষ্টি করে। প্লাস্টিক ধ্বংসাবশেষের ফলে কচ্ছপ, পাখি এবং মাছের মতো জলজ প্রাণীর দ্বারা জড়ান এবং গ্রহণ করা হতে পারে, যা গুরুতর আঘাত ও মৃত্যুর কারণ হতে পারে। নদ-নদীর আশেপাশে মানুষের জীবিকাও প্লাস্টিক দূষণ দ্বারা প্রভাবিত হয় শিপিং এবং পরিবহন জাহাজের সরাসরি ক্ষতি, পর্যটন বা রিয়েল এস্টেট মূল্যের উপর প্রভাব, এবং ড্রেন এবং অন্যান্য জলবাহী অবকাঠামো আটকে যাওয়ার ফলে বন্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
বাংলাদেশের নদ-নদী
বলা হয়ে থাকে হাজার নদীর দেশ বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশে ঠিক কত নদী আছে তার সঠিক পরিসংখ্যান বাংলাদেশ নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাছে নেই। কোন নদী কোথা থেকে উৎপত্তি হয়ে কোথায় শেষ হয়েছে কিংবা একটি নদী আরেকটি নদীকে কোথায় অতিক্রম করেছে এসব যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ এখনো মানুষের অজানা। অনেক গবেষকদের মতে বাংলাদেশে উপনদী ও শাখানদীর মোট সংখ্যা ২২৫। তবে নদী, উপনদী ও শাখানদীর সর্বমোট সংখ্যা নিয়ে গবেষকদের মধ্যে যথেষ্ট মতদ্বৈততা আছে। একটি নদী থেকে অসংখ্য নদী সৃষ্টি হয়েছে। আবার কোন কোন নদী থেকে খাল বা ছড়া উৎপন্ন হয়েছে। এগুলোও প্রাকৃতিক নদীর অন্তর্ভুক্ত। যেমন- কর্ণফুলী নদী। মোহনা থেকে কাপ্তাই বাঁধ পর্যন্ত এই নদীতে অন্তত ২৪-২৫টি ছোটবড় উপনদী এসে মিশেছে। এই হিসাব থেকে অনুমান করলে বাংলাদেশকে হাজার নদীর দেশ বলা যেতে পারে। যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালীতে রয়েছে অজস্র নদী। এসব নদীর নামকরণও ঠিকমত হয়নি। আবার কোন কোন নদীর বিভিন্ন অংশের বিভিন্ন নাম। বাংলাদেশের প্রধান নদী পাঁচটি- পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, পশুর ও কর্ণফুলী। এরপর আসে তিস্তা, গড়াই, মধুমতী, রুপসা, আড়িয়াল খাঁ, কুমার, আত্রাই, কীর্তনখোলা, বিষখালী ইত্যাদি নদ-নদীর নাম। এসব নদীর মধ্যে কোনটা বড় কোনটা ছোট বলা কঠিন। তবে অনুমান ও হিসাব কষে বাংলাদেশে কমপক্ষে ৭০০ নদী আছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
জীবন ও জীবিকায় নদীর ভূমিকা
প্রাচীন যুগ থেকেই মানুষ নদ নদীর তীরবর্তী সমতলভূমিতে বসবাস শুরু করে। নদীকে ঘিরেই বিশ্বের প্রতিটি শহর, বন্দর, গঞ্জ, বাজার প্রভৃতি গড়ে উঠেছে। এভাবে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ঢাকা, কর্ণফুলীর তীরে চট্টগ্রাম, শীতলক্ষ্যার তীরে নারায়ণগঞ্জ, সুরমার তীরে সিলেট, গোমতীর তীরে কুমিল্লা ইত্যাদি লক্ষ করা যায়। নদ-নদীই মানুষের খাদ্য ও রোজগার এর প্রধান উৎস হিসেবে ভূমিকা পালন করে। মালামাল পরিবহন ও যোগাযোগের সহজ উপায় হলো নৌকা। মালামাল পরিবহনে খুবই স্বল্প খরচে নৌকার জুড়ি মেলা ভার। যিনি নৌকা চালান তিনি মাঝি হিসেবে চিহ্নিত। একসময় নৌকায় পাল তোলা থাকত। সময়ের বিবর্তনে এর স্থান দখল করেছে ইঞ্জিন চালিত নৌকা। মাঝ নদীতে জেলেরা উত্তাল তরঙ্গের সাথে যুদ্ধ করে মাছ আহরণ করে। নদী পাড়াপাড়ে ইজারাদার কর্তৃক কর হিসেবে অর্থ আদায় করতে দেখা যায়।
যানবাহন
নৌকা ও নদী – একে-অপরের পরিপূরক। নদীতে মূলত নৌকা চললেও লঞ্চ, স্টিমার, স্পীডবোট, ট্রলার ইত্যাদির দেখা পাওয়া যায়।
সাহিত্য, চলচ্চিত্র, সঙ্গীতে নদী
বাংলা সাহিত্যে নদী গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। তন্মধ্যে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়-এর পদ্মা নদীর মাঝি অন্যতম। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে সুজন-সখী’র গান হিসেবে ‘সব সখীরে পার করিতে নেব আনা আনা, তোমার বেলা নেব সখী’ – প্রেমের গানটি তৎকালীন সময়ে সকলের মুখে মুখে ছিল। সঙ্গীত জগতে ‘নদী’ গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে ঠাঁই পেয়েছে। মান্নাদে’র এ নদী এমন নদী; জগজিৎ সিং এর ‘নদীতে তুফান এলে কুল ভেঙ্গে যায়, সহজেই তাকে দেখা যায়। মনেতে তুফান এলে বুক ভেঙ্গে যায় দেখানোর নেইজে উপায়!’পথিক নবীর আমার একটা নদী ছিল। কিংবা আরতী মুখোপাধ্যায়ের ‘নদীর যেমন ঝরনা আছে, ঝরনারও নদী আছে’ ইত্যাদি অমর সঙ্গীত হিসেবে টিকে থাকবে আজীবন। এছাড়াও, মোহনায় এসে নদী পিছনের পথটাকি ভুলতে পারে – গানটি বেশ জনপ্রিয়। এই যে নদী যায় সাগরে, কত কথা সুধাই তারে , ও নদী রে একটি কথা শুধাই শুধু তোমারে, বল কোথায় তোমার দেশ,তমার নেইকো চলার শেষ , নদী যদি বলে সাগরের কাছে আসব না
দ্রাঘিমারেখা বা দ্রাঘিমা বা মধ্যরেখা হল পৃথিবীর উপর দিয়ে কল্পিত কতকগুলি নির্দিষ্টভাবে বিন্যস্ত মহাবৃত্তের অর্ধেক। এদের বিস্তার উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত অর্থাৎ এরা উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত। একটি দ্রাঘিমার উপরিস্থিত সমস্ত বিন্দুর দ্রাঘিমাংশ সমান হয়। প্রতিটি দ্রাঘিমারেখা সমস্ত সমাক্ষরেখার সাথে লম্বভাবে অবস্থান করে। দ্রাঘিমারেখাগুলির দৈর্ঘ্য পরস্পর সমান, কারণ এদের প্রতিটিই পৃথিবীর উপরিস্থিত এক একটি মহাবৃত্তের অর্ধেক। এদের দৈর্ঘ্য ২০,০০৩.৯৩ কিমি (১২,৪২৯.৯ মাইল)।
দ্রাঘিমাংশ (ইংরেজি: Longitude বা λ) স্থানাঙ্ক ব্যবস্থার কেন্দ্রে পূর্বে বা পশ্চিমে, ভূপৃষ্ঠের কোন বিন্দু বিষুব রেখার সাথে উল্লম্ব কোন পরিধির (যা উত্তর ও দক্ষিণ মেরুকে ছেদ করেছে) সাথে যে কোণ উৎপন্ন করে তার পরিমাপ। একই দ্রাঘিমাংশের সমস্ত বিন্দুকে নিয়ে যে রেখা পাওয়া যায় তাদের বলে মেরিডিয়ান বা ভূ-মধ্য রেখা। প্রতিটি ভূ-মধ্য রেখা একটি অর্ধবৃত্ত কিন্তু কেউ কারো সমান্তরাল নয়। সংজ্ঞানুসারে প্রতিটি রেখা উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে মিলিত হয়। ঐতিহাসিকভাবে যে ভূ-মধ্য রেখাটি রয়াল অবজারভেটরি, গ্রীনউইচ (যুক্তরাজ্যের লন্ডনের কাছে) এর মধ্যে দিয়ে গেছে সেটিকে শূন্য-দ্রাঘিমাংশ বা প্রামাণ্য ভূ-মধ্য রেখা ধরা হয়। উদাহরণস্বরূপ ঢাকার দ্রাঘিমাংশ ৯০°২২′৩০″ পূর্ব।
চিত্রশালা
পৃথিবী পৃষ্ঠে অঙ্কিত দ্রাঘিমাংশ ( অক্ষাংশ দেখানো হয় নাই)
চারিদিকে পানি বা জল দ্বারা পরিবেষ্টিত ভূখণ্ডকে দ্বীপ বলা হয়। নিকটবর্তী একাধিক দ্বীপের গুচ্ছকে দ্বীপপুঞ্জ বলা হয়।
দ্বীপ প্রধানত দুই রকমের হয়—মহাদেশীয় দ্বীপ এবং মহাসাগরীয় দ্বীপ।এছাড়া কৃত্রিম দ্বীপও রয়েছে। মহাদেশীয় দ্বীপ হল মহাদেশের কোনো অংশ সমুদ্রের পানিতে ডুবে গিয়ে কিছু অংশ যদি স্থল দেখা যায় সেটা।আর মহাসাগরেরর মাঝে, স্থলের সংযোগ নাই এমন দ্বীপ হল মহাসাগরীয় দ্বীপ।
দ্বীপ শব্দটির উৎপত্তি হলো “দুই দিকে অপ (পানি) যার”, অর্থাৎ চতুর্দিকে পানি বা জল বেষ্টিত ভূখণ্ড হতে।
নানাভাবে দ্বীপ সৃষ্টি হতে পারে, যেমন পলি সঞ্চিত হয়ে, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত থেকে, অথবা প্রবাল সঞ্চিত হয়ে। অস্ট্রেলিয়া মহাদেশকে অনেক সময় বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ বলা হয়। এর পরেই রয়েছে গ্রিনল্যান্ড। বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ একটি প্রবাল দ্বীপ। বাংলাদেশের বৃহত্তম দ্বীপ হলো ভোলা দ্বীপ।
দেশ হল একটি ভৌগোলিক অঞ্চল। এই দেশ শব্দটি প্রায়সই রাজনৈতিক বিভাগ বা সার্বভৌমিক রাষ্ট্র অঞ্চল বা সাবেক রাজনৈতিক বিভাগের ভৌগোলিক অঞ্চলকে সূচিত করে। সাধারণ ভাবে দেশ বলতে সার্বভৌমিক রাষ্ট্র-এর ধারণার সাথে মিলে যায় এবং যা রাষ্ট্র ,জাতি বা সরকারের সঙ্গে সংযুক্ত।
দেশের তালিকা
বাংলা, ইংরেজি, সরকারী, জাতীয় ও রাষ্ট্রের অন্যান্য গুরুত্বপূ্র্ণ ভাষায় দেশের নাম [Note ১]
আলজেরিয়া – Algeria গণতান্ত্রিক গণপ্রজাতন্ত্রী আলজেরিয়া (People’s Democratic Republic of Algeria) আরবি ভাষা: الجمهورية الجزائرية الديمقراطية الشعبية – الجزائر → Al-Jazāir – Al Jumhūriyat al-Jazāiriyat ad-Dīmuqrāţiyat ash-Sha‘bīyah
আর্মেনিয়া – Armenia আর্মেনিয়া প্রজাতন্ত্র (Republic of Armenia) আর্মেনীয় ভাষা: Հայաստան – Հայաստանի Հանրապետություն → Hayastan – Hayastani Hanrapetut’yun
বেলারুশ – Belarus বেলারুশ প্রজাতন্ত্র (Republic of Belarus) বেলারুশীয় ভাষা: Белару́сь – Рэспубліка Белару́сь→ Bielaruś – Respublika Bielaruśরুশ ভাষা: Беларусь – Республика Беларусь→ Belarus’ – Respublika Belarus’
বলিভিয়া – Bolivia বলিভিয়া বহুজাতিক রাষ্ট্র (Plurinational State of Bolivia) স্পেনীয় ভাষা: Bolivia – Estado Plurinacional de Bolivia কেচুয়া ভাষা: Bulivya – Bulivya Mamallaqta আইমারা ভাষা: Wuliwya – Wuliwya Suyu
বার্মা – Burma রিপাবলিক অব দ্য ইউনিয়ন অব মায়ানমার (Republic of the Union of Myanmar) [Note ১৩][৯]বর্মী ভাষা: မြန်မာပြည် – ပြည်ထောင်စု သမ္မတ မြန်မာနိုင်ငံတော်→ আ-ধ্ব-ব: Myamà (ম্যামা) – Pyìdàùngzu’ Thàmmada’ Myamà Nàyngngàɴdɔ̀ (প্যীদাঊংযু’ থাম্মদা’ ম্যামা নায়েঙ্ঙাংদ)
জাতিসংঘের সদস্য দেশ
নেই
বুরুন্ডি – Burundi বুরুন্ডি প্রজাতন্ত্র (Republic of Burundi) রুন্ডি ভাষা: Burundi – Republika y’Uburundi ফরাসি ভাষা: Burundi – République du Burundi
জাতিসংঘের সদস্য দেশ
নেই
কম্বোডিয়া – Cambodia কম্বোডিয়া রাজ্য (Kingdom of Cambodia) খমের ভাষা: កម្ពុជា – ព្រះរាជាណាចក្រកម្ពុជា→ Kâmpŭchéa – Preăh Réachéanachâk Kâmpŭchéaফরাসি ভাষা: Cambodge – Royaume du Cambodge
জাতিসংঘের সদস্য দেশ
নেই
ক্যামেরুন – Cameroon ক্যামেরুন প্রজাতন্ত্র (Republic of Cameroon) ফরাসি ভাষা: Cameroun – République du Cameroun
চীন – China গণচীন/গণপ্রজাতন্ত্রী চীন (People’s Republic of China)The People’s Republic of China (PRC) is commonly referred to as “China”, while the Republic of China (ROC) is commonly referred to as “Taiwan”. The ROC is also occasionally known diplomatically as Chinese Taipei, along with other names.</ref> চৈনিক ভাষা: 中国 – 中华人民共和国→ মান্দারিন: “Zhōngguó” – Zhōnghuá Rénmín Gònghéguó তিব্বতী ভাষা: ཀྲུང་ཧྭ་ – ཀྲུང་ཧྭ་མི་དམངས་སྤྱི མཐུན་རྒྱལ་ཁབ → ওয়ালী: “Krung Hwa” – “Krung Hwa Mi Dmangs Spyi Mthun Rgyal Khab” উইগুর ভাষা: جۇڭخۇا خەلق جۇمھۇرىيىتى – جۇڭخۇا→ Jungkhua – Jungkhua Khelq Jumhuriyitiচুয়াং ভাষা: Cunghvaz – Cunghvaz Yinzminz Gunghozgoz
কোমোরোস – Comoros কোমোরোস দ্বীপপুঞ্জ (Union of the Comoros) কমোরীয় ভাষা: Komoriya – Udzima wa Komori আরবি ভাষা: الاتحاد القمري – جزر القمر→ Ǧuzur al-Qumur/al-Qamar – Al-Ittiḥād al-Qumurī/al-Qamarīফরাসি ভাষা: Comores – Union des Comores
জাতিসংঘের সদস্য দেশ
নেই
কমোরোস ৩টি দ্বীপের একটি সংঘ যা ফ্রান্সের অংশ মায়োতকে এর চতুর্থ দ্বীপ হিসেবে নিজস্ব বলে দাবি করে|[Note ১৮][১০]বাংক দ্যু গেইসেরের ওপর ফরাসি সার্বভৌমত্বের সঙ্গে কমোরোসের দ্বন্দ্ব আছে|[৪]
কিউবা – Cuba কিউবা প্রজাতন্ত্র (Republic of Cuba) স্পেনীয় ভাষা: Cuba – República de Cuba
জাতিসংঘের সদস্য দেশ
নেই
সাইপ্রাস – Cyprus সাইপ্রাস প্রজাতন্ত্র (Republic of Cyprus) গ্রিক ভাষা: Κύπρος – Κυπριακή Δημοκρατία→ Kýpros; – Kypriakī́ Dīmokratíaতুর্কি ভাষা: Kıbrıs – Kıbrıs Cumhuriyeti
তাপদহ একটি আবহাওয়া সংক্রান্ত শব্দগুচ্ছ যা দ্বারা বায়ুর অতিরিক্ত উষ্ণ অবস্থা নির্দেশ করা হয়। যদি কোনো স্থানে বাতাসের তাপমাত্রা দীর্ঘ সময় (৩ হতে ৫ দিন) অতি বৃদ্ধি পায় এবং সেউ সাথে আর্দ্রতা বেড়ে যায় তবে তাকে তাপদহ বলা হয়।
তরাই অঞ্চলের উত্তরে অবস্থিত হিমালয়ের পাথর, নুড়ি আর ক্ষয়প্রাপ্ত মাটিতে তৈরি বনময় ভাবর অঞ্চল। তরাই অঞ্চলের মাটিতে কাদা ও বালির পর্যায়ক্রমিক স্তর দেখা যায়। এখানকার ভৌমজলপৃষ্ঠ (ওয়াটার টেবিল) উচ্চ হওয়ায় অনেক ঝোরা ও জলভূমি দেখা যায়। তরাই অঞ্চলের নদীগুলিতে বর্ষাকালে দুকূল ছাপিয়ে বন্যা হয়। তরাই-ডুয়ার্স সাভানা ও তৃণভূমি একটি বাস্তু-অঞ্চল (ইকোরিজিয়ন)। এই অঞ্চলটি গোটা তরাই অঞ্চলের মধ্যভাগ জুড়ে অবস্থিত। এইখানে লম্বা লম্বা ঘাসের তৃণভূমি, সাভানা এবং চিরহরিৎ ও পর্ণমোচী বনভূমি দেখা যায়। এখানকার ভূমির ঢাল উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে, এবং এই ঢালও বেশি নয়। ভূমিভাগের সাধারণ উচ্চতা ৮০-১০০ মিটার। তিস্তা, তোর্সা, রায়ডাক, জলঢাকা, সঙ্কোশ প্রভৃতি বড় এবং একাধিক ছোট নদীর বয়ে আনা বালি, নুড়ি ও পাথরে গড়ে উঠেছে তরাই।
মানচিত্রে বেগুনী রঙে অঙ্কিত অংশটি তরাই অঞ্চল
হাতির সাথে দণ্ডায়মান অ্যাডওয়ার্ড, প্রিন্স অব ওয়েলস; ১৮৭৫/৭৬-এ তোলা ছবি
একটি রেখার (যেকোনো) দুটি স্বতন্ত্র বিন্দুর মধ্যে “উল্লম্ব পরিবর্তন” থেকে “অনুভূমিক পরিবর্তন” এর অনুপাত খুঁজে বের করে ঢাল গণনা করা হয়। কখনও কখনও অনুপাতটি ভাগফল হিসাবে প্রকাশ করা হয়, একই রেখায় প্রতি দুটি স্বতন্ত্র বিন্দুর জন্য একই সংখ্যা দেয়। একটি রেখা যা কমছে তার একটি ঋণাত্মক “বৃদ্ধি” আছে।
বিশ্লেষণ
স্থানাঙ্ক জ্যামিতি ও ত্রিকোণমিতির সাহায্যে
ধরি, ছক কাগজে দুটি বিন্দু ( x 1 , y 1 ) ও ( x 2 , y 2 ) । তাহলে বিন্দু দুটির সংযোজক সরলরেখার নতি হবে:- m = Δ y Δ x = y 2 − y 1 x 2 − x 1
আবার সরলরেখাটি x -অক্ষের সঙ্গে θ কোণে আনত থাকলে, সেক্ষেত্রে নতি হবে m = t a n θ
উপরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে, একটি সমকোণী ত্রিভুজ তৈরী হয়েছে। সেখান থেকে,
m = t a n θ = y 2 − y 1 x 2 − x 1 = Δ y Δ x
অবকলনের সাহায্যে
নতিকে এভাবেও প্রকাশ করা যায়:
m = d y d x
কোন বক্ররেখার কোন বিন্দুতে নতি নির্ণয় করতে হলে, ওই বিন্দুতে স্পর্শক অঙ্কন করা হয়। তারপর নতি নির্ণয় করা হয়।
সরলরেখায় প্রয়োগ
y = m x + c সমীকরণটি সরলরেখার অন্যতম প্রধান সমীকরণ। এতে ব্যবহৃত m পদটি নতি নির্দেশ করে।
৪৫° রেখা
কোনো সরলরেখা মূলবিন্দুগামী হলে, যদি তার নতি ১ এর সমান হয়, তাকে ৪৫° রেখা বলে।
এটি y = m x + c সমীকরণটি মেনে চলে। এক্ষেত্রে c = 0 (যেহেতু y -অক্ষকে ( 0 , 0 ) বিন্দুতে ছেদ করে।)
মূলবিন্দুগামী যে কোনও সরলেখার সমীকরণ তাই y = m x ।
৪৫° রেখায় m = 1 হবার জন্য, এটির সমীকরণ হয়:- y = x
এখানে আবার নতিকোণ ( θ )=৪৫° বা π 4 হবার জন্যই, m = t a n π 4 = 1
সাধারণ সমীকরণে
সরলরেখার সাধারণ সমীকরণ:- a x + b y + c = 0 এখান থেকে নতি পাওয়া যায়, m = − a b