বিশ্বকাপ (ইংরেজি: World cup) এক ধরনের বৈশ্বিকক্রীড়াপ্রতিযোগিতাবিশেষ। এতে সচরাচর বিভিন্ন দেশের জাতীয় দল বা ব্যক্তিগতভাবে কোন খেলোয়াড় সংশ্লিষ্ট দেশের প্রতিনিধিত্ব করে ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শিরোপাজয় করে নিজ দেশের পরিচিতি বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে তুলে ধরে। বিশ্বকাপকে সচরাচর নির্দিষ্ট ক্রীড়া বা খেলার প্রধান প্রতিযোগিতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিজয়ী দল বা ব্যক্তি ঐ খেলায় সর্বোচ্চ সম্মাননা ও ক্রীড়ায় সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচিত হন। তবে অলিম্পিকের ন্যায় কিছু কিছু খেলায় শিরোপালাভ করাও বিশ্বকাপের সমতুল্য।
বেশকিছু খেলা বিশ্ববাসীর কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। কিন্তু ফিফা বিশ্বকাপকেই সাধারণতঃ বিশ্বকাপ নামে ডাকা হয়।[১] ১৯৩০ সালে প্রথমবারের মতো এসোসিয়েশন ফুটবল প্রতিযোগিতার বৈশ্বিক অসম্ভব জনপ্রিয়তাই এর মূল কারণ।
বৈশিষ্ট্যাবলী
কিছু ক্রীড়া পরিচালনাকারী সংস্থা বিশ্বকাপের পরিবর্তে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপ বা এর সম্পর্কযুক্ত অন্যকোন ক্রীড়া পরিভাষা ব্যবহার করে। সংস্থাগুলো অনেক সময় বিশ্বকাপ এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপ – উভয় ধরনের প্রতিযোগিতাই ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম-কানুন প্রয়োগপূর্বক আয়োজন করে থাকে। সংক্ষিপ্ত কিংবা দীর্ঘমেয়াদী সময়কালের উপযোগী করে বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে বয়সসীমা, উন্মুক্ত, লিঙ্গভেদ ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকারে আয়োজন করা হয়। দলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত করা হয়। প্রায়শঃই নক-আউট প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিশ্বকাপের সমাপণ ঘটানো হয়। এক্ষেত্রে দলের সংখ্যা যখন দুইটি হয়, তখন পূর্ব নির্ধারিত সময়সূচী অনুযায়ী বিশ্বকাপের চূড়ান্ত খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলার বিজয়ীকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের খেতাব হিসেবে সোনা কিংবা রূপায় মোড়ানো এবং তুলনামূলকভাবে বড় সুন্দর একটি ট্রফি প্রদান করা হয়। পাশাপাশি অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়দেরকেও পদক প্রদান করা হয়। খুব কমক্ষেত্রেই উভয় দলকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। বিজয়ী দল এ খেতাব পরবর্তী চার, দুই কিংবা এক বছরের জন্য প্রাপ্য হন। দলগত ক্রীড়ায় এর বহুল প্রয়োগ ঘটে। বিশ্বকাপ ফুটবলের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল বা আইসিসি’র নিয়ন্ত্রণাধীন বিশ্বকাপ ক্রিকেটের জনপ্রিয়তাও বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত।
২০১৯ সালের বিশ্ব আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিকস চ্যাম্পিয়নশিপজার্মানিরস্টুটগার্টে ৪ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর ২০১৯ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। [১] চ্যাম্পিয়নশিপ হ্যানস-মার্টিন-স্লেয়ার-হ্যালে অনুষ্ঠিত হবে, ১৯৮৯ এবং ২০০৭ এর পরে তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নশিপটি স্টুটগার্ট শহরে আয়োজিত হচ্ছে আর পঞ্চমবারের মতো জার্মানিতে এটির আয়োজন হচ্ছে।
১ অক্টোবর পর্যন্ত ৯২টি ফেডারেশন এই চ্যাম্পিয়নশিপে তাদের জিমন্যাস্টদের নাম রেজিস্ট্রেশন করেছে, মোট ২৮৯ জন পুরুষ এবং ২৫৯ জন মহিলার নাম রয়েছে।[২]
২০১৩ বাংলাদেশ গেমস হচ্ছে বাংলাদেশ গেমসের ৮ম আসর যেটি ২০১৩ সালের ২০ এপ্রিল[১] থেকে ২৮ এপ্রিল[২] পর্যন্ত ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। মোট ৩১টি বিষয়ে ২১টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতার প্রতিপাদ্য ছিলোঃ ‘হদয়ে খেলার স্পন্দন’।[৩
৭ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১১ তে আইল অব ম্যান-এ অনুষ্ঠিত ২০১১ কমনওয়েলথ যুব গেমস-এ (আনুষ্ঠানিকভাবে চতুর্থ কমনওয়েলথ যুব গেমস হিসাবে পরিচিত) অংশ নেন। এটা কমনওয়েলথ যুব গেমস তাদের দ্বিতীয় বার উপস্থিতি হওয়া। জিব্রাল্টারের ব্রিটিশ উপনিবেশ কমনওয়েলথ গেমস এসোসিয়েশন অফ জিব্রাল্টারের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্ব করে, যা কমনওয়েলথ গেমস এবং জিব্রাল্টারে কমনওয়েলথ যুব গেমসের জন্য দায়িত্বপূর্ণ। এসোসিয়েশন পাঁচজন পুরুষ প্রতিযোগীর একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন করে, যারা এগারটি ইভেন্টের তিনটি ভিন্ন খেলাধুলায় নেন। কোন ক্রীড়াবিদ একটি পদকও জেতেননি। জেরাই তোরেস ২০০ মিটার স্প্রিন্টের সেমিফাইনালে পৌঁছান,যেখানে তিনি সবার পরে থেকে দৌড় শেষ করেন। অন্য দুই অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগী,শেন কলাডো এবং কার্ল বালদাছিনো,তাদের নিজ নিজ ইভেন্টের প্রাথমিক পর্যায়ে পার হতে ব্যর্থ হন। সাইকেলিস্ট ফ্রাঙ্ক ওয়ারউইক ট্রায়াল ইভেন্টে ৩৫তম এবং রোড রেস ইভেন্টে ৩৭তম স্থান অর্জন করেন। জেমস স্যান্ডারসন সাঁতার এর পাঁচটি ভিন্ন ইভেন্টে –বাটারফ্লাই এর দুইটি এবং ফ্রিস্টাইলের তিনটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন,তিনি পাঁচটি কোনোটিও ফাইনালে পৌঁছাতে পারেননি।
পটভূমি
জিব্রাল্টার ১৯৫৪ সালে কানাডারব্রিটিশ কলাম্বিয়ারভ্যাঙ্কুভারে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ গেমসে সর্বপ্রথম অংশগ্রহণ করে। তারপর থেকে দেশটি প্রতিযোগিতাটির প্রতিটি আসরেই অংশগ্রহণ করেছে।[২] জিব্রাল্টার কমনওয়েলথ গেমস এসোসিয়েশন জিব্রাল্টার কমনওয়েলথ ও কমনওয়েলথ যুব গেমস এর দায়িত্ব নেয়।[৩] জিব্রাল্টার কমনওয়েলথ যুব গেমসের প্রথম দুই সংস্করণ এডিনবরা (২০০০) এবং বেন্ডিগো(২০০৪) এর জন্য কোন প্রতিনিধি পাঠায়নি।[৪][৫] জিব্রাল্টার থেকে সাত ক্রীড়াবিদের একটি প্রতিনিধিদল পুনেতে২০০৮ কমনওয়েলথ যুব গেমসে অংশ নেয়।[৬] সাত ক্রীড়াবিদের কেউই কোন পদক জেতেননি ।[৭] ৭ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর আইল অব ম্যানের ব্রিটিশ ক্রাউন ডিপেনসিতে অনুষ্ঠিত ২০১১ কমনওয়েলথ যুব গেমসে অংশগ্রহণকারী ৬৩ টি দেশের মধ্যে একটি হল জিব্রাল্টার, এটি ছিল কমনওয়েলথ যুব গেমসে তাদের দ্বিতীয় আসর।[৮] কমনওয়েলথ গেমস এসোসিয়েশন অফ জিব্রাল্টার পাঁচজন প্রতিযোগীর একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন করে। প্রতিনিধিদলে শুধু পুরুষ ক্রীড়াবিদ ছিলেন এবং তারা অ্যাথলেটিক্স, সাইক্লিং এবং সাঁতার এর এগারটি ভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন।[৯]
শরীরচর্চায়,কমনওয়েলথ গেমস এসোসিয়েশন অফ জিব্রাল্টার তিন জন প্রতিযোগীর নিবন্ধন করিয়েছিল: শেন কলাডো, জেরাই তোরেস এবং কার্ল বালদাছিনো। তিন ক্রীড়াবিদের সবাই দুইটি ইভেন্টে অংশ নেন (২০০ মিটার এবং ৪০০মিটার স্প্রিন্ট রেস)। জেরাই তোরেস উভয় ইভেন্টে অংশ নেন এবং ২০০ মিটার দৌড়ের সেমিফাইনালে পৌঁছান। তিনি দৌড় শেষ করতে ২৩.২৫ সেকেন্ড সময় নেন যার ফলে তিনি তালিকার তলানিতে স্থান পান, যা তার চূড়ান্ত দৌড়ে অংশ নেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল না। শেন কলাডো এবং কার্ল বালদাছিনো উভয়েই তাদের নিজ নিজ পর্ব থেকে বিদায় নিতে নেন।[১০][১১]
ফ্রাঙ্ক ওয়ারউইক ছিলেন জিব্রাল্টার প্রতিনিধিদলের একমাত্র সাইক্লিস্ট। তিনি টাইম ট্রায়াল এবং রোড রেস উভয় সাইক্লিং ইভেন্টে অংশ নেন। তিনি দুটি ইভেন্টের কোনটিতেই পদক পাননি।[১২][১৩]
জেমস স্যান্ডারসন সাঁতার এর পাঁচটি বিভিন্ন ইভেন্টে জিব্রাল্টারের প্রতিনিধিত্ব করেন -৫০ মিটার বাটারফ্লাই, ২০০ মিটার ফ্রিস্টাইল, ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল, ১০০ মিটার বাটারফ্লাই এবং ৫০মিটার ফ্রিস্টাইল। তার সেরা ফল ছিল ৫০ মিটার বাটারফ্লাই ইভেন্টে, যেখানে তিনি চূড়ান্ত তালিকায় দ্বাদশ স্থান অর্জন করেন।[১৪]
উত্তর-ভারতীয় কৃষ্ণ চিক্কণ মৃৎপাত্র সংস্কৃতি (সংক্ষেপিত এনবিপিডব্লিউ বা এনবিপি) ভারতীয় উপমহাদেশের একটি শহুরে লৌহ যুগের সংস্কৃতি, স্থায়ী ৭০০-২০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ, চিত্রিত ধূসর মৃৎপাত্র সংস্কৃতি এবং কালো ও লাল মৃৎপাত্র সংস্কৃতির উত্তরসূরি। এটি পরবর্তী-বৈদিক যুগে ৭০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে শুরু হয়েছিল এবং শীর্ষে উঠেছিল ৫০০-৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে, উত্তর ভারতে ১৬ টি মহান রাজ্য বা মহাজনপদের উত্থান এবং মৌর্য সাম্রাজ্যের পরবর্তী উত্থানের সময়কালীন।
ডায়াগনস্টিক আর্টিফ্যাক্ট এবং এই সংস্কৃতির সমনাম হল উত্তর-ভারতীয় কৃষ্ণ চিক্কণ মৃৎপাত্র, যা উচ্চশ্রেণীদের দ্বারা ব্যবহৃত বার্নিশযুক্ত মৃৎশিল্পের একটি বিলাসবহুল শৈলী। সিন্ধু উপত্যকা সভ্যতার পতন থেকে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম বৃহৎ শহরগুলির উত্থানের সাথে এই সময়কাল যুক্ত; এই পুনঃনগরায়ণ ব্যাপক বাঁধ ও দুর্গ, জনসংখ্যার তাৎপর্যযুক্ত বৃদ্ধি, সামাজিক স্তরবিন্যাস বৃদ্ধি, বিস্তৃত-পরিসরের বাণিজ্য নেটওয়ার্ক, বিশেষ শিল্পকলার উদ্যোগসমূহ (উদাহরণস্বরূপ হাতির দাঁত, শঙ্খখোলক ও স্বল্প-মূল্যবান পাথরের নকশা), ওজনের একপ্রকারের যন্ত্র, ছাপাঙ্কিত মুদ্রা, এবং লিখন (ব্রাহ্মী ও খরোষ্ঠী লিপির আকারে, মুদ্রিত সীলমোহরের সীল সহ)।[১]
পণ্ডিতরা এনবিপি এবং আগের হরপ্পা সংস্কৃতির মধ্যে সাদৃশ্য উল্লেখ করেছেন, এদের মধ্যে হাতির দাঁতের পাত ও চিরুণী ও ওজনের একই রকমের যন্ত্র রয়েছে। অন্যান্য সাদৃশ্যগুলির মধ্যে স্থাপত্যে কাদা, পোড়া ইট এবং পাথরের ব্যবহার, প্রকাশ্য স্থাপত্যের বৃহৎ একক নির্মাণ, জলবাহী বৈশিষ্ট্যগুলির নিয়মতান্ত্রিক উন্নয়ন এবং একটি অনুরূপ শিল্পকলার উদ্যোগ অন্তর্ভুক্ত।[২] তবে, এই দুটি সংস্কৃতির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে; উদাহরণস্বরূপ, এনবিপি সংস্কৃতিতে চাল, বাজরা এবং জোয়ার আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল।[২] এনবিপি সংস্কৃতি ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম রাষ্ট্রীয়-স্তরের সংগঠনকে প্রতিফলিত করতে পারে।[২]
টিম হপকিনসের অনুসারী জিওফ্রে স্যামুয়েলের মতে, কেন্দ্রীয় গাঙ্গেয় সমভূমিটি, যা এনবিপি কেন্দ্র ছিল, এর পশ্চিমে কুরু-পাঞ্চালের বৈদিক আর্যদের চিত্রিত ধূসর মৃৎপাত্র সংস্কৃতি থেকে সাংস্কৃতিকভাবে স্বতন্ত্র ছিল এবং সেটি নগরীকরণের ক্ষেত্রে একটি স্বাধীন উন্নয়ন এবং লোহার ব্যবহার চাক্ষুষ করেছিল।[৩]
প্রায় ২০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এনবিপি সংস্কৃতির সমাপ্তিটি মৃৎশিল্পের একটি ভিন্ন শৈলীর সাথে এনবিপি মৃৎপাত্রের প্রতিস্থাপনের দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছিল, যার নাম ছাপাঙ্কিত ও ছদ্মবেশযুক্ত নকশার সাথে সজ্জিত লাল মৃৎপাত্র।[৪] তবুও, একই শহরগুলি বসবাসে অব্যাহত থাকে, এবং ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত তখনও ছিল “উপমহাদেশের সর্বত্র শহুরে সমৃদ্ধি দ্বারা চিহ্নিত”, শুঙ্গ ও সাতবাহন রাজবংশ ও কুষাণ সাম্রাজ্যের সাথে সম্পর্কিত।[৫]
স্থান
মহাজনপদগুলির সাথে যুক্ত কিছু উল্লেখযোগ্য এনবিপিডব্লিউ স্থানগুলি নিম্নরূপ:[৬]
উইলিয়াম ওয়ার্ড (১৭৬৯-১৮২৩) ছিলেন একজন গুরুত্বপূর্ণ খ্রিষ্টানধর্মপ্রচারক, লেখক, মুদ্রক ও অনুবাদক। ১৮০২ খ্রিষ্টাব্দের ১০ই মে তিনি শ্রীরামপুরের সহধর্মপ্রচারক জন ফাউন্টেনের বিধবা স্ত্রীকে বিয়ে করেন এবং তার দুই কন্যাকে দত্তক নেন।
প্রথম জীবন
২০শে অক্টোবর, ১৭৬৯ খ্রিষ্টাব্দে ইংল্যান্ডের স্ট্যাফোর্ডশায়ারে বার্টনের কাছে স্ট্রেটন গ্রামে উইলিয়াম ওয়ার্ড জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা জন ওয়ার্ড ছিলেন ঐ গ্রামের একজন ছুতোর ও মিস্ত্রী এবং ঠাকুরদা টমাস ওয়ার্ড কৃষিকাজে নিযুক্ত ছিলেন। উইলিয়ামের শৈশবেই তার বাবা মারা যান, এবং তার লালন-পালনের দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে তার মায়ের উপর বর্তায়। তিনি প্রথমে ডার্বির কাছে মিঃ কনগ্রিভ এবং পরে মিঃ ব্রিয়ারি নামক দু’জন শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে লেখাপড়া করেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষা শেষ হওয়ার পর উইলিয়াম ডার্বির একটি ছাপাখানায় মুদ্রক ও পুস্তক-বিক্রেতা মিঃ ড্রিউরির কাছে শিক্ষানবিশি করেন, এবং শিক্ষানবিশির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও আরও দু’বছর ঐ ছাপাখানায় ড্রিউরিকে ডার্বি মার্কারি সংবাদপত্র সম্পাদনার কাজে সহযোগিতা করেন। এর পর স্ট্যাফোর্ডে গিয়ে তিনি তার ভূতপূর্ব মনিবের আত্মীয় জোশুয়া ড্রিউরিকে স্ট্যাফোর্ডশায়ার অ্যাডভার্টাইজার সংবাদপত্র সম্পাদনায় সহায়তা করেন। ১৭৯৪ বা ১৭৯৫ খ্রিষ্টাব্দে উইলিয়াম হাল্ শহরে গিয়ে স্বাধীনভাবে মুদ্রকের জীবিকা অবলম্বন করেন এবং কিছুকাল হাল্ অ্যাডভার্টাইজার সম্পাদনা করেন।
ধর্ম
প্রথম জীবনে উইলিয়াম ওয়ার্ড অ্যানাব্যাপ্টিস্ট ধর্ম গ্রহণ করেন এবং ১৭৯৬ খ্রিঃ ২৬শে আগস্ট হাল্ শহরে তার ব্যাপ্টাইজেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোয় ক্রমাগত ধর্মপ্রচারে নিযুক্ত থাকতে থাকতে সম্ভাবনাময় একজন ব্যক্তি হিসেবে তার পরিচিতি হয় এবং ১৭৯৭ খ্রিঃ আগস্ট মাসে ব্যাপ্টিস্ট সম্প্রদায়ের অন্যতম সদস্য মিঃ ফিশউইকের সহায়তায় তিনি ইয়র্কশায়ারের হ্যালিফ্যাক্সের কাছে ইউড হল্-এ যান। সেখানে জন ফসেটের (১৭৪০-১৮১৭) ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিনি দেড় বছর পড়াশোনা করেন।
ধর্মপ্রচারণা কাজকর্ম
১৭৯৮ খ্রিঃ শরৎকালে ব্যাপ্টিস্ট মিশন কমিটি ইউড পরিদর্শনে যায় এবং উইলিয়াম ওয়ার্ড নিজেকে ধর্মপ্রচারক হিসেবে নিয়োগ করেন। সম্ভবত তার এই পদক্ষেপের পিছনে তার সাথে উইলিয়াম কেরির ১৭৯৩ খ্রিঃ সংঘটিত একটি কথোপকথনের প্রভাব ছিল; কেরি ভারতে নিযুক্ত ধর্মপ্রচারণা কর্মক্ষেত্রে একজন মুদ্রকের বিশেষ প্রয়োজনীয়তার কথা তাকে বলেছিলেন।
উইলিয়াম ওয়ার্ড জোশুয়া মার্শম্যানের সাথে একই জাহাজ ‘ক্রাইটেরিয়ন’ এ চড়ে ১৭৯৯ খ্রিঃ ভারতে আসেন। কিন্তু কলকাতায় এসেই কেরির সাথে দেখা করতে পারেননি। একটি সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী তাকে শ্রীরামপুরের দিনেমার উপনিবেশে রওনা দিতে হয়। সেখানেই পরে কেরি তার সঙ্গে দেখা করেন।
ভারতে ওয়ার্ডের প্রধান কাজ ছিল ব্যাপ্টিস্ট মিশন প্রেসের ছাপাখানার তত্ত্বাবধান করা। ঐ প্রেস তখন বাইবেলের বিভিন্ন উপদেশ বাংলা, মারাঠা, তামিল এবং আরও ২৩ টি ভাষায় অনুবাদ করে প্রচার করত। ভাষাতত্ত্বের উপরেও তখন প্রচুর বই ছাপার কাজ চলছিল, কিন্তু এত ব্যস্ততার মধ্যেও ওয়ার্ড নিয়মিত তার বিশাল ডায়রিতে লেখা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ধর্মশিক্ষা দানের জন্য যথেষ্ট সময় দিতেন।
১৮০৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত উইলিয়াম ওয়ার্ড সংলগ্ন মফঃস্বল ও গ্রামগুলোয় প্রায়ই যাতায়াত করতেন, কিন্তু ঐ বছরের পর থেকে নানা কাজে সময়ের অভাব হওয়ায় এবং কলকাতা ও শ্রীরামপুরে ধর্মপ্রচার কর্মকাণ্ডের সময়সীমা বেড়ে যাওয়ায় তার পক্ষে আর মূল কার্যালয় ছেড়ে বেশি দূর যাওয়া সম্ভব হয়নি। ১৮১২ খ্রিঃ তার ছাপাখানা একটি অগ্নিকাণ্ডের কবলে পড়ে। ফলে ছাপাখানা কর্তৃক জমিয়ে রাখা তখনও পর্যন্ত অনূদিত ও প্রকাশিত সমস্ত ধর্মোপদেশের নথি ভস্মীভূত হয়ে যায়। ক্ষতির আর্থিক মূল্য ছিল অন্তত দশ হাজার পাউণ্ড। অবশ্য ধ্বংসাবশেষ থেকে নতুন টাইপ করার ব্লকগুলো উদ্ধার করা গিয়েছিল, আর ব্রিটেনের শুভানুধ্যায়ীদের চেষ্টায় ক্ষতির প্রভাব কাটিয়ে উঠতেও তাদের বেগ পেতে হয়নি।
শ্রীরামপুর কলেজ
ওয়ার্ড ব্যবহৃত চেয়ার, শ্রীরামপুর কলেজ।
১৮১৮ খ্রিঃ দীর্ঘদিন রুগ্ন থাকার ফলে ওয়ার্ড একবার ইংল্যাণ্ডে প্রত্যাবর্তন করেন। সেখানে তার দায়িত্ব ছিল ভারতীয়দের পাশ্চাত্য সাহিত্য ও বিজ্ঞান শিক্ষা দেওয়ার জন্য উইলিয়াম কেরি ও জোশুয়া মার্শম্যান এর সাথে তার যৌথ উদ্যোগে সদ্যপ্রতিষ্ঠিত শ্রীরামপুর কলেজের উন্নতির জন্য অর্থ সরবরাহের ব্যবস্থা করা।
ওয়ার্ড ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের অনেক জায়গায় এই উদ্দেশ্যে ঘোরেন এবং হল্যান্ড ও উত্তর জার্মানিতেও যান। ১৮২০ খ্রিঃ অক্টোবরে নিউ ইয়র্কে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও সফর করে ১৮২১ খ্রিঃ এপ্রিল মাসে ইংল্যান্ডে ফেরেন। ঐ বছরেই ২৮শে মে ‘অ্যালবার্টা’ জাহাজে চড়ে পাড়ি দেন ভারতের উদ্দেশ্যে। এহেন সংহত প্রচেষ্টার জন্য কেরি, মার্শম্যান ও ওয়ার্ড একত্রে শ্রীরামপুর ত্রয়ী নামে খ্যাত হন।
মৃত্যু
উইলিয়াম ওয়ার্ড ৭ই মার্চ,১৮২৩ খ্রিঃ কলেরা রোগে মারা যান। তাকে ধর্মপ্রচারকদের জন্য নির্দিষ্ট সমাধিস্থলে সমাধিস্থ করা হয়।
রচনাসমূহ
ধর্মোপদেশের পাশাপাশি ওয়ার্ড আরও কয়েকটি রচনার স্রষ্টা, যেমন—
‘অ্যাকাউন্ট অফ দ্য রাইটিংস, রিলিজিয়ন, অ্যান্ড ম্যানার্স অফ দ্য হিন্দুস’ (হিন্দুদের সাহিত্য, ধর্ম ও আচারের বিবরণ), শ্রীরামপুর, ১৮১১, চার খণ্ডে; ৫ম সংস্করণ, সংক্ষিপ্ত, মাদ্রাজ, ১৮৬৩, আট খণ্ডে।
‘ফেয়ারওয়েল লেটার্স ইন ব্রিটেন অ্যান্ড আমেরিকা অন রিটার্নিং টু বেঙ্গল ইন ১৮২১’ (১৮২১ খ্রিঃ বাংলায় ফেরার সময় ব্রিটেন ও আমেরিকার বিদায়ী পত্রসমূহ), লন্ডন, ১৮২১; ২য় সংস্করণ, ১৮২১।
‘ব্রিফ মেময়্যার অফ কৃষ্ণ-পাল, দ্য ফার্স্ট হিন্দু, ইন বেঙ্গল, হু ব্রোক দ্য চেন অফ দ্য কাস্ট বাই এম্ব্রেসিং দ্য গস্পেল’ (কৃষ্ণ পালের সংক্ষিপ্ত স্মৃতিকথা, বাংলার প্রথম হিন্দু যে ধর্মোপদেশ আশ্রয়পূর্বক জাতিভেদের শিকল ভেঙেছিল), ২য় সংস্করণ,লন্ডন, ১৮২৩।
এছাড়াও তিনি অনেক চতুর্দশপদী এবং অন্যান্য ছোট কবিতা লিখেছিলেন যেগুলো স্যামুয়েল স্টেনেটের লেখা একটি স্মৃতিকথায় পরিশিষ্ট হিসেবে প্রকাশিত হয়। এই স্মৃতিকথাটির আরম্ভে আর. বেকার খোদিত একটি অনুকৃতি আছে, যেটি শিল্পী ওভার্টন অঙ্কিত উইলিয়াম ওয়ার্ডের একটি প্রতিকৃতির আদলে তৈরি।
উৎস
স্টেনেটের “মেময়্যার্স অফ দ্য লাইফ অফ উইলিয়াম ওয়ার্ড”, ১৮২৫;
“মেময়্যার অফ উইলিয়াম ওয়ার্ড”, ফিলাডেলফিয়া;
১৮৬৩ খ্রিঃ প্রকাশিত “ভিউ অফ হিস্ট্রি, লিটারেচার অ্যান্ড রিলিজিয়ন অফ দ্য হিন্দুস” এর আরম্ভে অবস্থিত সিম্পসনের জীবনী;
ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে (ইংরেজি: Eastern Bengal Railway, সংক্ষেপে EBR) ব্রিটিশ ভারতের প্রথমভাগের একটা রেল কোম্পানী ছিল ও এটি ১৮৫৭র থেকে ১৯৪২ অবধি বঙ্গ ও অসমে রেলসেবা প্রদান করত।
ইতিহাস
প্রশাসনিক, সামরিক ও ব্রিটিশ বাণিজ্যের প্রসারের জন্য ব্রিটিশরা ভারতে রেলসেবা প্রচলন করেছিল। ১৮৫৭ সালে লন্ডনে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানী গঠন করা হয়। প্রায় একই সময়ে অন্য দুটি কোম্পানী- ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানি ও গ্রেট ইণ্ডিয়ান পেনিনসুলার কোম্পানী ইস্ট ইণ্ডিয়ার সাথে ক্রমে হাওড়া থেকে রাণীগঞ্জ অবধি ও মুম্বাই থেকে কল্যাণ অবধি পরীক্ষামূলক রেলপথ বানানোর চুক্তিপত্র করেছিল।[১]
১৮৫৮র ৩০ জুলাইতে ইস্ট বেঙ্গল রেলওয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানির সাথে কলকাতার হুগলী নদীর পূর্বপার থেকে (বর্তমানে শিয়ালদহ স্টেশন) রাণাঘাট, দর্শনা, পোড়াদহ হয়ে পদ্মারউপনদীগড়াই নদীর পারে অবস্থিত কুষ্টিয়া অবধি (বর্তমান বাংলাদেশএ) একটি রেলপথ বানাতে চুক্তিবদ্ধ হয়। প্রস্তাবিত রেলপথটির দৈর্ঘ্য ছিল ১১০ মাইল ও সম্ভাব্য খরচ প্রায় ১ মিলিয়ন পাউণ্ড স্টার্লিং বলে নির্দ্ধারণ করা হয়েছিল।[১] কলকাতা থেকে চম্পাহাটি অবধি প্রথম অংশ রেলপথ ১৮৬২র জানুয়ারীতে সমাপ্ত হয়।[২] ১৮৬২র নভেম্বর মাসে রেলপথটি উন্মুক্ত করা হয়। ১৮৬৪তে আধা কি.মি.র একটি ছোট শাখা রেলপথ কুষ্টিয়ার থেকে গরাই নদীর বন্দর অবধি নির্মাণ করা হয়। ১৮৬৫তে কুষ্টিয়ার থেকে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের সংগমস্থলে অবস্থিত গোয়ালন্দ ঘাট অবধি রেলপথ সম্প্রসারণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৮৭০র ৩১ ডিসেম্বরে ভাইসরয় লর্ড মেয়ো এই রেলপথের উদ্বাধন করেন। ১৯০২এ এটিকে অসমএরধুবড়ী অবধি সম্প্রসারণ করা হয়।[১]
১৮৭৪র থেকে ১৮৭৯র ভিতর “নর্থ বেঙ্গল স্টেট রেলওয়ে” পদ্মা নদীর উত্তরপারে অবস্থিত চারাঘাটের থেকে সান্তাহার, পার্বতীপুর হয়ে চিলাহাটী অবধি একটি ২৫০ কি.মি. দীর্ঘ মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণ করে ও ১৮৮১তে এটিকে শিলিগুড়ি অবধি সম্প্রসারণ করা হয়।[৩] পার্বতীপুর থেকে দুটি শাখাপথ নির্মাণ করা হয় – একটি পূর্বে কাউনিয়া অবধি ও অন্যটি পশ্চিমে দিনাজপুর অবধি। একসময় কলকাতা থেকে কুষ্টিয়া অবধি নির্মাণ করা ব্রজগেজ রেলপথটি পোড়াদহ স্টেশন থেকে পদ্মার দক্ষিণপারের দামুকদিয়া ঘাট অবধি সম্প্রসারণ করা হয় । দামুকদিয়া ঘাট ও সারাঘাটের মাঝে যাত্রীসাধারণের পদ্মা নদী পার হওয়ার জন্য রেলবিভাগ নিজ ফেরীর ব্যবস্থা করেছিল।
শামসউদ্দিন আহমদ শাহ (শাসনকাল ১৪৩৩-১৪৩৬) ছিলেন বাংলার শাসক। তিনি সুলতান জালালউদ্দিন মুহাম্মদ শাহর পুত্র। পিতার মৃত্যুর পর ১৪ বছর বয়সে তিনি ক্ষমতালাভ করেন।[১]
ইতিহাস
আহমদ শাহ মাত্র ৩ বছর শাসন করেন। তার শাসনামলে অরাজক অবস্থা সৃষ্টি হয়। মুহাম্মদ কাসিম হিন্দু শাহর মতে তিনি তার পিতার উদারনীতি বজায় রাখেন এবং ন্যায়বিচার ও দানশীলতার জন্য পরিচিত ছিলেন।[২] তার শাসনামলে ইবরাহিম শাহ শারকি আগ্রাসন চালান। পরবর্তীতে আহমদ শাহ দুজন ক্ষমতাশালী অভিজাত সাদি খান ও নাসির খান কর্তৃক ১৪৩৬ সালে নিহত হন।[১] তার হত্যাকান্ডের পর সাদি খান ও নাসির খান পরস্পর বিবাদে জড়িয়ে পড়েন এবং দুজনেই ক্ষমতা হারান। ইলিয়াস শাহি রাজবংশের একজন বংশধর ১৪৩৭ সালে নাসিরউদ্দিন মাহমুদ শাহ নাম ধারণ করে সিংহাসনে বসেন।[২]
আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে বা আসাম বাংলা রেলপথ ছিল ব্রিটিশ ভারতের অন্যতম প্রধান রেল সংস্থা। অধুনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্তর্গত চট্টগ্রাম শহরে এই রেল সংস্থার প্রধান কার্যালয় অবস্থিত ছিল। ১৮৯২ থেকে ১৯৪২ সাল পর্যন্ত এই সংস্থা কার্যকরী ছিল।[১].১৯৪২ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত চালু বেঙ্গল অ্যান্ড আসাম রেলওয়ে এই রেল সংস্থা থেকেই উদ্ভূত হয়।[২][৩][৪]
ইতিহাস
আসামের ব্রিটিশ মালিকানাধীন চা-বাগানগুলির সুবিধার্থে ১৮৯২ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে চালু হয়।[৫] ১৯৪২ সালে এই সংস্থার মালিকানা ভারত সরকারের হাতে ন্যস্ত করা হয়। তারপর এটিকে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত করে আসাম অ্যান্ড বেঙ্গল রেলওয়ে গঠন করা হয়।[৫]
১৯৪২ সালের ১ জানুয়ারি আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল।[২][৬][৭] ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর বেঙ্গল অ্যান্ড আসাম রেলওয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়। এই সংস্থার প্রায় ২,৬০৩.৯২ কিলোমিটার রেলপথ নবগঠিত পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। এই অংশের নাম হয় ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে এবং এর মালিকানা যায় পাকিস্তান সরকারের হাতে। ১৯৬১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের নাম পালটে পাকিস্তান রেলওয়ে রাখা হয়।[৬]
বেঙ্গল অ্যান্ড আসাম রেলওয়ের যে অংশটি স্বাধীনতার পর পূর্বতন পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল সেটির নামকরণ করা হয় ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে। ১৯৬১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের নাম পালটে রাখা হয় পাকিস্তান রেলওয়ে। ১৯৬২ সালে আবার নাম পালটে তা হয় পাকিস্তান ইস্টার্ন রেলওয়ে।[৯] বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর এটি বাংলাদেশ রেলওয়েতে পরিণত হয়।[১০]
১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট ভারতের স্বাধীনতার পর ভারতে স্থিত আসাম অ্যান্ড বেঙ্গল রেলওয়ের ব্রডগেজ অংশটি ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয় এবং মিটারগেজ অংশটি নিয়ে আসাম রেলওয়ে গঠিত হয়।[১১] এই রেলের প্রধান কার্যালয় হয় পান্ডুতে। ১৯৫২ সালের ১৪ এপ্রিল, ২৮৫৭ কিলোমিটার দীর্ঘ আসাম রেলওয়ে ও অবধ অ্যান্ড তিরহুত রেলওয়ে যুক্ত হয়ে ভারতীয় রেলের ছয়টি নবগঠিত বিভাগের অন্যতম উত্তরপূর্ব রেল বিভাগ গঠিত হয়।[১২][১৩] এই দিনই পূর্বতন বেঙ্গল অ্যান্ড আসাম রেলওয়েও শিয়ালদহ বিভাগটি (যেটি আগে ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল) পূর্ব রেলের সঙ্গে যুক্ত হয়।[১৪]
আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে ১৮৯১ সালে পূর্ববঙ্গে রেলপথ নির্মাণ শুরু করে। ১৮৯৫ সালে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লার মধ্যে রেলপথ চালু হয়। ১৮৯৬-১৮৯৮ নাগাদ কুমিল্লা-আখাউড়া-কালাউড়া-বদরপুর বিভাগটি চালু হয় এবং শেষে ১৯০৩ সালে লামডিং পর্যন্ত লাইন সম্প্রসারিত হয়।[১০][১৫][১৬] ১৯০০ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে পূর্বদিকে গুয়াহাটি পর্যন্ত একটি শাখা রেলপথ চালু করে। ১৯০২ সালে তা তিনশুকিয়া পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয় এবং ১৯০৩ সালে তা ডিবরু-সাদিয়া রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়।[৫]