Tag: bcsquestion

  • মেন্ডেলীয় বংশগতি

    মেন্ডেলীয় বংশগতি

    মেন্ডেলীয় বংশাণুগতি ১৮৬৫–১৮৬৬ সালে গ্রেগর জোহান মেন্ডেল কর্তৃক প্রস্তাবিত উত্তরাধিকার সূত্রে মেনে চলে এমন বংশগতীয় নীতি। মেন্ডেলের এই গবেষণার ফল ১৮৬৬ সালে ব্রান ন্যাচারাল হিসস্ট্রি সোসাইটির পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও তাঁর আবিষ্কার বিশ্বে তখন কোনো সাড়া জাগাতে পারিনি। প্রায় ৩৪ বছর পর ১৯০০ সালে এই প্রস্তাবিত নীতিটি হল্যান্ডের ডি ভ্রিস, জার্মানির কোরেন্স ও অস্ট্রিয়ার চ্যারম্যাকের পৃথক পৃথক গবেষণার মাধ্যমে মেন্ডেলের বর্ণিত ফলাফলগুলি পুনরায় উৎঘাটন করেন, যা মেন্ডেলর পুনরাবিষ্কার নামে অভিহিত করা হয়, এবং উইলিয়াম বেটসন দ্বারা এটি আরও জনপ্রিয়তা পায়।[১] মেন্ডেলের প্রস্তাবিত বংশগতীয় সূত্রের নীতিগুলো প্রাথমিকভাবে বিতর্কিত ছিলো। ১৯১৫ সালে টেন্ডস হান্ট মরগান বোভেরি – সাটন ক্রোমোজোম তত্ত্বের সাথে মেন্ডেলের তত্ত্বগুলি একীভূত করেন। এভাবে মেন্ডেলিয় বংশগতির নীতিসমূহ শাস্ত্রীয় জিনতত্ত্বের মূল হয়ে ওঠে। রোনাল্ড ফিশার ১৯৩০ সালে তাঁর জেনেটিক্যাল থিওরি অফ ন্যাচারাল সিলেকশন গ্রন্থে প্রাকৃতিক নির্বাচনের তত্ত্বের সাথে এই বংশগতীয় নীতির সম্মেলন ঘটান। তিনিই বিবর্তনকে গাণিতিক ভিত্তিতে পরিণত করেন এবং আধুনিক বিবর্তনীয় সংশ্লেষণের মধ্যে জনসংখ্যা বংশাণুবিজ্ঞানের ভিত্তি তৈরি করেন। [২]

    মেন্ডেলীয় বংশগতি

    ইতিহাস

    মেন্ডেলিয় বংশগতির নীতিগুলোর নামকরণ করা হয়েছে গ্রেগর ইয়োহান মেন্ডেলের নামে। [৩] উনিশ শতকে এই মোরোভিয়ান ধর্ম যাজক নিজ মঠের বাগানে রোপণকৃত মটর গাছের(পিসাম স্যাটিভিম ) উপর কিছু সাধারণ সঙ্করায়ন পরীক্ষা চালান। [৪] ১৮৫৬ থেকে ১৮৬৩ সালের মধ্যে তিনি প্রায় পাঁচ হাজার মটর গাছের উপর পরীক্ষা চালান। এই পরীক্ষাগুলো থেলে তিনি দুইটি সাধারণ নীতির প্রবর্তন করেন। এই নীতগুলৈ পরবর্তীকালে মেন্ডেলের বংশগতীয় নীতি নামে প্রচলিত হয়। তিনি তার গবেষণা “ভেরসুখে উবার ফ্লানৎযেন-হুব্রিডেন ( প্ল্যান্ট হাইব্রিডাইজেশন সম্পর্কিত পরীক্ষা ) দুই ভাগে গবেষণাপত্র আকারে প্রকাশ করেন। চেক প্রজাতন্ত্রের বারনো শহরের ন্যাচারাল হিস্টরি সোসাইটিতে ১৮৬৫ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি ও ৮ই মার্চে তিনি দুই দফায় তার গবেষণা পত্র উপস্থাপন করেন। যা ১৮৬৬ সালে প্রকাশিত হয়।

    মেন্ডেলের গবেষণার ফলাফল সেই সময়ের সংখ্যাগরিষ্ঠদের দ্বারা উপেক্ষিত হয়েছিল। যদিও সে সময়কার জীববিজ্ঞানীদের কাছে এগুলি পুরোপুরি অজানা ছিল না, তবুও তার প্রস্তাবিত সাধারণভাবে প্রযোজ্য হিসাবে মেনে নেয়া হয়নি। এমনকি মেন্ডেল নিজেও মনে করেছিলেন যে, কেবলমাত্র কয়েকটি প্রজাতি বা বৈশিষ্ট্য়ের জন্য তার প্রস্তাবিত নীতিগুলো প্রযোজ্য। মেন্ডেলের বংশগতীয় নীতির তাৎপর্য অনুধাবনের পথে প্রধান বাধা ছিলো “কমপ্লেক্স ট্রেইটস”। কমপ্লেক্স ট্রেইটস হল উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জিনগত বৈশিষ্ট্য যা শুধুমাত্র একটি জিন দ্বারা বর্ণনা করা যায় না। অবশ্য বর্তমানে এই ধরনের বৈশিষ্ট্যগুলো একাধিক জিনের মধ্যকার মিথস্ক্রিয়া দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায়।[৪]

    মেন্ডেল তার সময়ে নিজের প্রস্তাবিত বংশগতীয় নীতিগুলোর গ্রহণযোগ্যতা না পেলেও ১৯০০ সালে তিন ইউরোপীয় বিজ্ঞানী হুগী দে ভ্রি, কার্ল করেন্স এবং এরিখ ফন শেমার্ক একই নীতি পুনঃআবিষ্কার করেন। ” পুনঃআবিষ্কার” এর সঠিক প্রকৃতি নিয়ে অবশ্য বিতর্ক হয়েছে: দে ভ্রি বিষয়টিতে প্রথমে প্রকাশ করেছিলেন, একটি পাদটীকায় মেন্ডেলের কথা উল্লেখ করে।

    বিজ্ঞানে করেন্স দে ভ্রির গবেষণাপত্রটি পড়ে মেন্ডেলের আবিষ্কারকে অগ্রাধিকার দেয়ার ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। দে ভ্রির বুঝতে পারেন এই বংশগতীয় নীতি আবিষ্কারের তার তুলনায় মেন্ডেল অনেক এগিয়ে। দে ভ্রি হয়তো বা তার গবেষণা প্রকাশিত তথ্যে গড়মিল করেছিলেন। দে ভ্রি নিজের গবেষণা পত্রে কতটুকু নিজের জ্ঞান আর কতটুকু মেন্ডেলের গবেষণা থেকে আহরিত জ্ঞান লিপিবদ্ধ করেছিলেন সেই ব্যাপারে সন্দেহ থেকে গেছে। পরবর্তীতে অন্যান্য গবেষকেরা অভিযোগ করেন, ফন শেমার্ক বংশগতীয় নীতির ফলাফল নিজেই ঠিকভাবে বুঝতে পারেনি। [৫][৬][৭]

    মেন্ডেলের জিনগত আবিষ্কার

    মেন্ডেলের আবিষ্কারের পাঁচটি অংশ তৎকালীন সাধারণ তত্ত্ব থেকে ভিন্ন ছিলো। তার বংশগতীয় নীতি প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত ছিলো এই পাঁচটি অংশ।

    1. চরিত্র বা বৈশিষ্ট্যগুলো একক এবং, একে অপরের চেয়ে ভিন্ন। (বেগুনি বনাম সাদা, লম্বা বনাম বামন)।
    2. জিনেটিক বৈশিষ্ট্যগুলির বিকল্প রূপ বিদ্যমান। প্রতিটি জিনেটিক বৈশিষ্ট্য পিতা বা মাতার মধ্যে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত। বর্তমানে একে এলিল বলা হয়।
    3. একটি অ্যালিল অন্যটির চেয়ে প্রভাবশালী। প্রভাবশালী এলিল ফেনোটাইপ দ্বারা প্রতিফলিত হয়।
    4. গেমেটগুলি এলোমেলোভাবে পৃথককরণের মাধ্যমে তৈরি করা হয়। হেটারোজাইগোটিক ক্ষেত্রে দুটি অ্যালিলের সমান ফ্রিকোয়েন্সি সম্পন্ন গ্যামেট উৎপাদিত হয়।
    5. বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের স্বতন্ত্র ভাণ্ডার রয়েছে। আধুনিক ভাষায়, জিন একে অপরের সাথে যুক্ত নয়।
  • রক্ত

    রক্ত

    রক্ত হল মানুষের এবং উচ্চশ্রেণীর মেরুদন্ডী প্রাণিদেহের এক প্রকার তরল সংবহনতন্ত্র যা কোষে প্রয়োজনীয় পদার্থ যেমন পুষ্টি এবং অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং বিপাকীয় বর্জ্যপদার্থ গুলোকে একই কোষ থেকে দূরীভূত করে। রক্ত জৈব ও অজৈব পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত সামান্য লবণাক্ত, আঠালো, ক্ষারধর্মী ও লালবর্ণের ঘন তরল পদার্থ যা হৃৎপিণ্ড, ধমনী, শিরাকৈশিক জালিকার মধ্য দিয়ে নিয়মিত প্রবাহিত হয়। রক্ত একধরনের তরল যোজক কলা। রক্ত প্রধানত দেহে অক্সিজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ পরিবাহিত করে। রক্ত হল আমাদেরে দেহের জ্বালানি স্বরূপ।[১] রক্ত রক্তরসে অবস্থিত রক্ত কণিকা দিয়ে গঠিত।রক্তের তরলের ৫৫% রক্তরস এবং বেশির ভাগই পানি(৯২%) এবং এতে আরও আছে আয়ন , হরমোন , কার্বন ডাই অক্সাইড (মলত্যাগকারী পণ্য পরিবহনের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে রক্তরস) এবং রক্ত কণিকা। মানবদেহে মোট ওজনের শতকরা ৭ ভাগ রক্ত থাকে (গড়ে মানবদেহে ৫-৬ লিটার রক্ত থাকে)। [২] অ্যালবুমিন হলো রক্তরসের প্রধান প্রোটিন এবং এটি রক্তের কোলয়েডাল অসমোটিক চাপ কে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।রক্ত কণিকা প্রধানত লোহিত রক্তকণিকা (একে RBC বা এরিথ্রোসাইট বলা হয), শ্বেত রক্তকণিকা (একে WBC বা লিউকোসাইটও বলা হয়) এবং অনুচক্রিকা (একে প্লেটলেট বা থ্রম্বোসাইটও বলা হয়)। মেরুদন্ডী প্রাণীদের রক্তের লোহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ সবচাইতে বেশি থাকে। এর মধ্যে রয়েছে হিমোগ্লোবিন, এটি একটি আয়রন যুক্ত প্রোটিন, যা শ্বাসযন্ত্রের গ্যাসের সাথে বিপরীতভাবে আবদ্ধ হয়ে অক্সিজেনকে পরিবহন করে এবং রক্তে দ্রবণীয়তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করে। বিপরীত, বেশিরভাগ কার্বন ডাই অক্সাইড বহিরাগত ভাবে পরিবাহিত হয়ে বাই কার্বনেট আয়ন হিসেবে রক্তরসে পরিবাহিত হয়। মেরুদন্ডী প্রাণীদের রক্ত যখন উজ্জ্বল লাল হয় তখন এর হিমোগ্লোবিন অক্সিজেন যুক্ত হয় এবং যখন এটি অক্সিজেন মুক্ত হয় তখন গাড় লাল হয়ে যায়। কিছু প্রাণ, যেমন ক্রাস্টেসিয়ান এবং মলাস্ক, হিমোগ্লোবিন এর পরিবর্তে অক্সিজেন পরিবহনের জন্য হিমোসায়ানিন জাতীয় পদার্থ ব্যবহার কর। পোকামাকড় এবং কিছু মলাস্কা রক্তের পরিবর্তে হিমোলিম্ফ নামক একটি তরল ব্যবহার করে, পার্থক্য হল হিমোলিম্ফে কোন বদ্ধ সংবহন তন্ত্র থাকেনা। বেশিরভাগ পোকামাকড়ের মধ্যে, এই ধরনের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মধ্যে অক্সিজেন পরিবহনকারী অনু থাকেনা কারণ তাদের দেহে অক্সিজেন সরবরাহের জন্য শ্বাসনালী সিস্টেম যথেষ্ট ছোট। চোয়াল যুক্ত মেরুদন্ডী প্রাণীদের একটি অভিযোজিত প্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে, যা মূলত শ্বেতরক্তকণিকার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। শ্বেত রক্তকণিকা সমূহ সংক্রমণ এবং পরজীবী প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। অনুচক্রিকা গুলো জমাট বাঁধার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর্থোপোডায় অন্তর্ভুক্ত প্রাণীরা হিমোলিম্ফ ব্যবহার করে এবং তাদের ইমিউন সিস্টেম এর অংশ হিসেবে হিমোসাইট থাকে। হৃদপিন্ডের পাম্পিং ক্রিয়ার দ্বারা রক্তনালীর মাধ্যমে মাধ্যমে শরীরের চারপাশে রক্ত সঞ্চালিত হয়।ফুসফুসের মাধ্যমে ধমনীর রক্ত শ্বাস নেওয়া বাতাস থেকে শরীরের টিস্যুতে অক্সিজেন বহন করে এবং শিরার রক্ত কার্বণ-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে, কোষ দ্বারা উৎপাদিত একটি বিপাকীয় বর্জ্য পদার্থ যা ফুসফুসের শ্বাস ছাড়ার সময় দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। রক্তের পিএইচ সামান্য ক্ষারীয় অর্থাৎ ৭.৩৫-৭.৪৫ (গড়ে ৭.৪০)। মানুষের রক্তের তাপমাত্রা ৩৬ – ৩৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (গড়ে ৩৭ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড)।[৩][৪] রক্তের আপেক্ষিক ঘনত্ব পানির চেয়ে বেশি, প্রায় ১.০৬৫ । অজৈব লবণের উপস্থিতির জন্য রক্তের স্বাদ নোনতা। সুনির্দিষ্ট বাহিকার মাধ্যমে রক্ত দেহের সবখানে সঞ্চালিত হয়।

    রক্ত

    রক্তের অংশ

    রক্তের মূল অংশ দুইটি। যথা:

    রক্তরস

    রক্তের তরল, হালকা হলুদাভ অংশকে রক্তরস (plasma) বলে। রক্তকণিকা ব্যতীত রক্তের বাকি অংশই রক্ত রস। মেরুদণ্ডী প্রাণীদের রক্তের প্রায় ৫৫% রক্তরস।

    রক্তের প্রধান উপাদান দুইটি। যথা: (ক) অজৈব পদার্থ (খ) জৈব পদার্থ

    (ক) অজৈব পদার্থ: রক্তরসে ৪ ধরনের অজৈব পদার্থ দেখা যায়।এগুলো হল: জল ৯১%-৯২%, কঠিন পদার্থ ৭%-৮% যার মধ্যে আছে ক্যাটায়ন ( Na+, K+, Ca++, Mg++, P+++, Fe++, Cu+, Mn++, Zn++, Pb++ ইত্যাদি ) ও অ্যনায়ন (Cl, HCO, PO43-, SO42-, ইত্যাদি) এবং ০.৯% গ্যাসীয় পদার্থের মধ্যে আছে কার্বন ডাই অক্সাইড, অক্সিজেন, জলীয় বাষ্প ইত্যাদি।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

    (খ) জৈব পদার্থ: রক্ত রসে মাত্র ৭.১%-৮.১% জৈব পদার্থ থাকে। এর মধ্যে অধিক পরিমাণে থাকে প্লাজমা প্রোটিন- গড়ে ৬-৮ গ্রাম/ডেসি লি.। প্লাজমা প্রোটিনগুলো হচ্ছে – অ্যালবুমিন, গ্লোবিউলিন, ফিব্রিনোজেন। এছাড়াও অন্যান্য জৈব পদার্থগুলো হল: স্নেহ দ্রব্য (নিউট্রাল ফ্যাট, কোলেস্টেরল, ফসফোলিপিড, লেসিথিন ইত্যাদি), কার্বোহাইড্রেট (গ্লুকোজ), অপ্রোটিন নাইট্রোজেন দ্রব্য (অ্যামাইনো এসিড, ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, ক্রিয়েটিন, ক্রিয়েটিনিন, জ্যানথিন ইত্যাদি), রঞ্জক দ্রব্য (বিলিরুবিন, বিলিভার্ডিন), বিভিন্ন ধরনের এসিড (যেমন:- সাইট্রিক এসিড, ল্যাকটিক এসিড), হরমোন, ভিটামিন, এনজাইম, মিউসিন ও অ্যান্টিবডি।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

    কাজ

    1. মানবদেহে রক্তরসের মাধ্যমে পাচিত খাদ্যবস্তু, হরমোন, উৎসেচক ইত্যাদি দেহের বিভিন্ন অংশে পরিবাহিত হয়।
    2. রক্তরসের প্রোটিনের পরিমাণ রক্তের সান্দ্রতা (ঘনত্ব), তারল্য (fluidity), প্রবাহধর্ম (rheology) বজায় রাখে এবং পানির অভিস্রবণিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
    3. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
    4. অ্যান্টিবডি, কম্প্লিমেন্টস ইত্যাদি প্রাথমিক রোগ প্রতিরোধ উপকরণ রক্ত ধারণ করে।
    5. রক্তের তরল ভাবের প্রধান কারণ রক্ত রস।
    6. বাফার হিসেবে কাজ করে এতে বিদ্যমান প্রোটিন।
    7. দেহের ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা করে।
    8. দেহে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইড পরিবহন করে।

    মানব রক্তরসের কিছু প্রোটিন এবং অন্যান্য উপাদানসমূহ

    1. রক্তের অ্যালবুমিন
    2. গ্লোবিউলিন (অ্যান্টিবডি গামা/ইম্যুনো গ্লোব্যুলিন)
    3. প্রতঞ্চকপ্রতিতঞ্চক উপাদান সমূহ
    4. ফাইব্রিনোজেনভিট্রোনেক্টিন
    5. কম্প্লিমেন্টস (২০টির বেশি)
    6. সি আর পি
    7. ট্রান্সফেরিন
    8. ট্রান্সথাইরেটিন
    9. সেরুলোপ্লাজমিন
    10. হ্যাপ্টোগ্লোবিন
    11. হিমোপেক্সিন
    12. সাইটোকাইনস
    13. লাইপোপ্রোটিনকাইলোমাইক্রন
    14. এল বি পি
    15. গ্লুকোজ
    16. ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চর্বিকণা
    17. খনিজ লবণ
    18. ভিটামিন
    19. হরমোন
    20. এন্টিবডি
    21. বর্জ্যপদার্থ যেমন :- কার্বন ডাই অক্সাইড , ইউরিয়া , ইউরিক এসিড
    22. সোডিয়াম ক্লোরাইড খুবই অল্প ৷

    রক্তকণিকা

    বিভিন্ন রক্তকণিকা (রক্তকোষ)

    রক্তের প্লাজমার মধ্যে নির্দিষ্ট আকার ও গঠন বিশিষ্ট উপাদান বা রক্ত কোষসমূহকে রক্ত কণিকা বলে। রক্তে প্রায় তিন ধরনের কণিকা পাওয়া যায়। যথা:

    ১।লোহিত রক্তকণিকা (Erythorcytes), মানুষের শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এটি শাসনকার্যে আগত অক্সিজেন পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লোহিত রক্তকণিকা লাল অস্থিমজ্জা, প্লীহা ইত্যাদি থেকে উৎপন্ন হয়। এর গড় আয়ু ১২০ দিন। মানুষের লোহিত রক্ত কণিকায় নিউক্লিয়াস থাকে না এবং দেখতে অনেকটা দ্বিঅবতল বৃত্তের মত। লোহিত রক্ত কণিকার হিমোগ্লোবিন অক্সিহিমোগ্লোবিন হিসেবে অক্সিজেন দেহকোষে পরিবহন করে এবং দেহকোষ থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড পরিবহন করে ফুসফুসে নিয়ে আসে। চিত্র:লোহিত রক্তকণিকা

    ২।শ্বেত রক্তকণিকা (Leucocytes) মানব দেহে শ্বেত রক্ত কণিকার সংখ্যা লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা তুলনায় অনেক কম। হিমোগ্লোবিন না থাকার কারণে একে শ্বেত রক্তকণিকা বলা হয। এর গড় আয়ু ১-১৫ দিন। শ্বেত রক্তকণিকার নির্দিষ্ট কোন আকার নেই এগুলো হিমোগ্লোবিনবিহীন এবং নিউক্লিয়াসযুক্ত বড় আকারের কোষ।এরা অ্যামিবার মতো দেহের আকার পরিবর্তন করতে পারে এবং ফ্যাগোসাইটোসিস প্রক্রিয়ায় এটি জীবাণুকে ধ্বংস করে। দেহ জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হলে দ্রুত শ্বেত রক্ত কণিকার সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে। প্রকারভেদঃ সাইটোপ্লাজমের দানার উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি উপর ভিত্তি করে শ্বেত রক্তকণিকা কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়।

    এদের সাইটোপ্লাজম দানাহীন ও স্বচ্ছ।এরা সাধারনত দুই ধরনের হয়ে থাকে যথা- লিম্ফোসাইট ও মনোসাইট। লিম্ফোসাইট গুলো বড় নিউক্লিয়াসযুক্ত ছোট কণিকা এবং এরা অ্যান্টিবডি গঠন করে এবং অ্যান্টিবডির মাধ্যমে দেহে প্রকৃত রোগজীবাণু ধ্বংস করে দেহকে সুরক্ষা দেয়।মনোসাইট ছোট ও বৃক্কাকার নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট বড় কণিকা, এরা ফ্যাগোসাইটোসিস প্রক্রিয়ায় রোগজীবাণু ধ্বংস করে।

    1. (খ)গ্রনুলোসাইট বা দানাদার

    এদের সাইটোপ্লাজম সখ্য দানাযুক্ত। নিউক্লিয়াস এর আকার এর উপর ভিত্তি করে এরা প্রধানত তিন প্রকার যথা –

    • নিউট্রোফিল ফ্যাগোসাইটোসিস প্রক্রিয়ায় জীবাণু ভক্ষণ করে।
    • ইওসিনোফিল হিস্টামিন নামক রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত করে দেহে অ্যালার্জি প্রতিরোধ কর।
    • বেসোফিল হেপারিন নিঃসৃত করে রক্ত বাহিকা ভেতর রক্তকে জমাট বাঁধতে বাধা দেয়।
    1. (খ)অণুচক্রিকা (Thrombocytes)

    এগুলো দেখতে গোলাকার, ডিম্বাকার অথবা রড আকারের হতে পারে। এদের সাইটোপ্লাজম দানাদার এবং সাইটোপ্লাজমে বিভিন্ন অঙ্গানু যেমন মাইট্রোকন্ডিয়া গলগি বস্তু থাকে কিন্তু কোন নিউক্লিয়াস থাকে না।অনুচক্রিকা গুলোর গড় আয়ু ৫-১০ দিন। অনুচক্রিকার প্রধান কাজ হল রক্ত তঞ্চন বা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করা। যখন দেহের কোন রক্ত বাহিকা বা কোন টিস্যু আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কেটে যায় তখন সেখানকার অনুচক্রিকা গুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।

    রক্ত কনিকার বিভিন্ন রোগ

    1. পলিসাইথিমিয়া :— লোহিত রক্তকণিকা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে গেলে ৷ লোহিত রক্তকণিকার পরিমান প্রতি ঘন মিলিলিটারে ৬৫ লাখের বেশি হয়ে যায় এই রোগে।
    2. এনিমিয়া :— লোহিত রক্তকণিকা কমে গেলে ৷ সাধারনত স্বাভাবিকের তুলনায় ২৫% লোহিত রক্তকণিকা কমে গেলে এই রোগ হয় ।
    3. লিউকোমিয়া :— শ্বেত রক্তকণিকা অত্যধিক বেড়ে গেলে যদি ৫০০০০ -১০০০০০০ হয় ৷
    4. লিউকোসাইটোসিস :— শ্বেত রক্তকণিকা বেড়ে যদি ২০০০০-৩০০০০ হয় ৷
    5. থ্রম্বোসাইটোসিস :— অণুচক্রিকার সংখা বেড়ে গেলে ৷
      1. করোনারী থম্বোসিস :— হৃৎপিণ্ডে রক্ত জমাট বাধায় ৷
      2. সেরিব্রাল থম্বোসিস :— মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাধায় ৷
    6. পারপুরা / থ্রোম্বোসাইটোপিনিয়া :— অণুচক্রিকা কমে গেলে ৷
    7. থ্যালাসেমিয়া :— বংশগত রোগ। হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায়। বিভিন্ন ধরনের অণুচক্রিকার সংখ্যা বেড়ে গেলে ৷

    রক্তের ধরন

    রক্তের ধরন (রক্তের গ্রুপ হিসাবেও পরিচিত) যা অ্যান্টিবডিগুলির উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতির ভিত্তিতে এবং রক্তের লোহিত রক্তকণিকার (Red Blood Corpuscles) পৃষ্ঠে প্রাপ্ত অ্যান্টিজেনিক পদার্থগুলির উপর ভিত্তি করে। এই অ্যান্টিজেনগুলি রক্তের গ্রুপ সিস্টেমের উপর নির্ভর করে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, গ্লাইকোপ্রোটিন বা গ্লাইকোলিপিড হতে পারে। এর মধ্যে কিছু অ্যান্টিজেন অন্যান্য টিস্যুগুলির অন্যান্য ধরনের কোষের পৃষ্ঠেও উপস্থিত রয়েছে। এই লাল রক্ত ​​কোষের পৃষ্ঠের বেশিরভাগ অ্যান্টিজেনগুলি একটি অ্যালিল (জিনের বিকল্প সংস্করণ) থেকে উদ্ভূত হতে পারে এবং সম্মিলিতভাবে রক্তের গ্রুপ সিস্টেম গঠন করতে পারে।রক্তের ধরন (বা রক্তের গ্রুপ) নির্ধারিত হয় লাল রক্ত ​​কোষে উপস্থিত ABO রক্ত ​​গ্রুপ অ্যান্টিজেন দ্বারা। রক্তের ধরনগুলি উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত এবং পিতামাতার উভয়ের অবদানের প্রতিনিধিত্ব করে। ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অফ ব্লাড ট্রান্সফিউশন (আইএসবিটি) দ্বারা মোট ৩৬ টি মানব রক্তের গ্রুপ সিস্টেম এবং ৩৪৬ অ্যান্টিজেনকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রক্তের গ্রুপ সিস্টেমগুলি হল ABO এবং Rh।লােহিত রত্ত কণিকায় A এবং B নামক দুই ধরনের অ্যান্টিজেন (antigens) থাকে এবং রস্তুরসে a ও b দুই ধরনের অ্যান্টিবডি (antibody) থাকে। কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার ১৯০১ সালে মানুষের রক্তের শ্রেণিবিন্যাস করেন এবং A, B, AB এবং O এ চারটি গ্রুপের নামকরণ করেন। আর রেসাস (Rh) ফ্যাক্টর আন্টিজেন রক্তে উপস্থিত থাকলে রক্ত পজিটিভ না থাকলে রক্ত নেগেটিভ। তাই ABO গ্রুপের পাশাপাশি রেসাস ফ্যাক্টরও পরীক্ষা করে মিলিয়ে দেখাতে হবে। অর্থাৎ রেসাস ফ্যাক্টর বিবেচনায় নেওয়া হলে রক্ত গ্রুপ গুলা হবে A+, A-, B+ B-, AB+, AB-,O+ এবং O-। সাধারণত একজন মানুষের রক্তের গ্রুপ আজীবন একই রকম থাকে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

    রক্তচাপ

    হৃৎপিণ্ডের সংকোচন-প্রসারণের কারণে মানুষের ধমনীশিরায় রক্তের চাপ সৃষ্টি হয়। হৃৎপিণ্ডের সংকোচন এর ফলে যে চাপ অনুভূত হয় তাকে সিস্টোলিক চাপ বলে।হৃৎপিণ্ডের প্রসারণের ফলে যে চাপ অনুভূত হয় তাকে ডায়াস্টোলিক চাপ বলে। মানুষের শরীরে ৮০/১২০ হলো আদর্শ রক্তচাপ, ৮০/১৩০ হলো সবচেয়ে অনুকূল রক্তচাপ এবং ৮৫/১৪০ হলো সর্বোচ্চ রক্তচাপ।আর রক্তচাপ নির্ণয়ের যন্ত্রের নাম হলো-স্ফিগমোম্যানোমিটার (Sphygmomanometer)

    রক্তচাপের গুরুত্ব

    রক্তচাপ রক্তসংবহনে এবং জালকতন্ত্রে পরিস্রাবণ প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। এই পরিস্রাবণ প্রক্রিয়া রক্ত থেকে কোষে পুষ্টি সরবরাহ করা, মূত্র উৎপাদন করা প্রভৃতি শারীরবৃত্তীয় কাজের সঙ্গে জড়িত।

    রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণকারী কারণসমূহ

    1. হৃৎপিণ্ডের সংকোচন করার ক্ষমতা।
    2. রক্তবাহের স্থিতিস্থাপকতা।
    3. হরমোন।
    4. খাদ্য গ্রহণ।
    5. ঘুমানো।
    6. দৈহিক পরিশ্রম।

    রক্তের বিভিন্ন উপাদানের মান

    1. লোহিত রক্তকণিকা:
    • পুরুষ :প্রতি  ঘনমিলিমিটারে ৫০ লক্ষ
    • মহিলা : প্রতি ঘনমিলিমিটারে ৪৫ লক্ষ

    ২. শ্বেতরক্তকণিকা: ৪-১১ /৫-৮ হাজার / ঘন মিলিলিটার

    ৩. অনুচক্রিকা – ২.৫ – ৫ লক্ষ / ঘন মিলিলিটার

    অতিরিক্ত ঠান্ডা আবহাওয়ার জন্য রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে, এবং এক পর্যায়ে সম্পূর্ণ রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে যে কোনো ব্যক্তি মারা যেতে পারে ।

  • টেস্টোস্টেরন

    টেস্টোস্টেরন

    টেস্টোস্টেরন পুরুষত্বের জন্য দায়ী প্রধান স্টেরয়েড হরমোন যা এন্ড্রোজেন গ্রুপের। মানুষ সহ সকল স্তন্যপায়ী,পাখি [১] সরীসৃপ প্রাণীর শুক্রাশয়ে এটি উৎপন্ন হয়।[২] স্তন্যপায়ী প্রাণীর ক্ষেত্রে পুরুষের শুক্রাশয় এবং নারীর ডিম্বাশয় থেকে উৎপন্ন হয়,যদিও স্বল্প পরিমাণ অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি থেকে ক্ষরিত হয়। এটি প্রধান পুরুষ হরমোন যা শুক্রাশয়ের লিডিগ কোষ (Leydig Cell) থেকে উৎপন্ন হয়।

    পুরুষের জন্য টেস্টোস্টেরন প্রজনন অঙ্গ যেমন শুক্রাশয় (Testis) বর্ধনের পাশাপাশি গৌণ বৈশিষ্ট্য যেমন মাংসপেশি,শরীরের লোম বৃদ্ধি করে। [৩]

    পুরুষদের মাঝে টেস্টোস্টেরন বিপাক হার নারীদের তুলনায় ২০ গুণ বেশি। [৪][৫]

    টেস্টোস্টেরন

    শব্দতত্ত্ব

    টেস্টোস্টেরন নামটি মূলত টেস্টিস বা শুক্রাশয় ও স্টেরন বা স্টেরয়েড কিটোন নামক দুটি শব্দের সন্ধির মাধ্যমে নামকরণ করা হয়েছে। সুতরাং টেস্টোস্টেরন শব্দের অর্থ হলো শুক্রাশয় নিসৃত কিটোনবিশিষ্ট স্টেরয়েড হরমোন।

    স্বাস্থ্যগত প্রভাব

    সাধারণত এন্ড্রোজেন প্রোটিন সংশ্লেষণ করে এবং এন্ড্রোজেন রিসেপ্টর সংবলিত টিস্যুর বৃদ্ধি সাধন করে।টেস্টোস্টেরনের প্রভাবকে লিঙ্গিক(virilizing) এবং অ্যানাবলিক (Anabolic) এই দু ভাগে ভাগ করা যায়।

    • মাংসপেশি বৃদ্ধি,হাড়ের ঘনত্ব(density)বৃদ্ধি,হাড়ের পূর্ণতা প্রাপ্তিতে উদ্দীপনা করা – এসব অ্যানাবলিক কাজ।
    • যৌন অঙ্গের পূর্ণতা প্রদান করা,বিশেষ করে ফিটাসের শিশ্ন এবং শুক্রথলি তৈরি এবং জন্মের পরে (বয়ঃসন্ধিকালে) কণ্ঠস্বর গাঢ় হওয়া,দাড়ি এবং বগলের চুল বৃদ্ধি – এসব এন্ড্রোজেনিক কাজ।এসবের অনেক কিছুই পুরুষের সেকেন্ডারি যৌন বৈশিষ্ট্য।

    জন্মের পূর্বে

    প্রারম্ভিক শৈশব

    বয়ঃসন্ধির পূর্বে

    শৈশবের পরে এন্ড্রোজেন লেভেল বৃদ্ধির লক্ষণীয় প্রভাব দেখা যায় ছেলে এবং মেয়ে উভয়েরই।যেমন-

    • বয়স্ক-টাইপ শরীরের গন্ধ।
    • বগল ও শ্রোণীদেশে চুল গজায়।
    • উচ্চতায় বৃদ্ধি।
    • গোঁফ ও দাড়ি গজানো।
    • পুরুষালী কণ্ঠস্বর হয়।

    বয়ঃসন্ধিকাল

    প্রাপ্তবয়স্ক নারীর এন্ড্রোজেনের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি হলে বয়ঃসন্ধিকালিন প্রভাব দেখা যায়। ছেলেদের এই প্রভাব সচরাচর একটু দেরিতে হয় কিন্তু মেয়েদের রক্তে মুক্ত টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ অনেক দিন থেকে বেশি মাত্রায় থাকলে এমনটি দেখা যায়।

    • সিবেসিয়াস গ্রন্থি বেড়ে যাওয়া। এটি ব্রণের কারণ হতে পারে।
    • ভগাংকুর (Clitoris) বর্ধিত হওয়া।
    • শ্রোণীদেশের চুল নিচে উরু এবং উপরে নাভী পর্যন্ত বিস্তৃত।
    • মুখমণ্ডলে চুল (জুল্পি, গোঁফ, দাঁড়ি)। *মাথার চুল কমে যাওয়া।
    • বুকে,বৃন্তের চারপাশে,নিতম্বের চারপাশে লোম।
    • পায়ে পশম।
    • বগলে চুল।
    • মুখের উপরস্থ ফ্যাট কমে যাওয়া।
    • পেশি বৃদ্ধি।
    • গাঢ় কণ্ঠস্বর।
    • পুরুষের উর্বরতা বৃদ্ধি।
    • কাঁধ প্রসারিত, বুকের পাঁজর ফুলে যাওয়া।
    • হাড়ের পূর্ণতা প্রাপ্তি এবং বৃদ্ধি রোহিত হওয়া।

    প্রাপ্ত বয়স্ক

    টেস্টোস্টেরনের প্রভাব বয়স্ক নারীর তুলনায় বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে আরো পরিষ্কারভাবে প্রমাণযোগ্য , কিন্তু উভয়ের জন্যই দরকারি। টেস্টোস্টেরনের মাত্রা প্রাপ্তবয়স্ক জীবনের পরে হ্রাস পাওয়ায় এইসবের কিছু প্রভাব প্রত্যাখ্যান করা হতে পারে।

    রক্ত পরীক্ষা, কেন্দ্রের বাম দিকে হালকা নীল বর্ণ পুরুষ টেস্টোস্টেরনের মাত্রা দেখাচ্ছে।

    জীববিজ্ঞানসংক্রান্ত ব্যবহার

    ক্যান্সার প্রতিরোধ এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি

    টেস্টোস্টেরন এবং যৌন উদ্দীপনা

    পুরুষের যৌন উদ্দীপনায় টেস্টোস্টেরন

    টেস্টোস্টেরনের অধিক মাত্রা একই ব্যক্তির যৌন ক্রিয়ার সময়সীমার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, কিন্তু বিভিন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কম যৌন সক্রিয় ব্যক্তিদের জন্য বেশি ।[৯] একাধিক ব্যক্তিদের সাথে যৌন ক্রিয়ায় লিপ্ত ব্যক্তি পরের দিন সকালে টেস্টোস্টেরনের অধিক মাত্রা অনুভব করে থাকেন।[১০]

    যে সকল পুরুষ যৌনতাপূর্ণ সিনেমা (যেমনঃ পর্নোগ্রাফি) দেখেন, তাদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা গড়ে ৩৫% বেড়ে যায়, ফিল্ম শেষ হওয়ার পর ৬০-৯০ মিনিট এ চূড়ান্তে ওঠে, কিন্তু কোন বৃদ্ধি যৌন নিরপেক্ষ ছবি দেখার পর হয় না।[১১] এছাড়াও যে সকল পুরুষ যৌনতাপূর্ণ সিনেমা দেখেন, তাদের মানসিক অবসাদ কমে বলে জানা গেছে।[১২] আগের গবেষণা যৌন উদ্দীপনা এবং টেস্টোস্টেরনের মাত্রার মাঝে সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছে। [১৩]

    ২০০২ সালে একটি গবেষণায় দেখা যায়,একজন মহিলার সাথে সংক্ষিপ্ত কথোপকথনের পরে পুরুষের মাঝে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়ে।পুরুষেরা নারীদের মুগ্ধ (Impress) করার চেষ্টা করেছিল- এই বর্ধন এইরূপে সম্পর্কিত ছিল।[১৪]

    নারীদের দেহের হরমোন চক্রের উপর পুরুষের টেস্টোস্টেরন মাত্রা এবং যৌন উদ্দীপনা বহুলাংশে জ্ঞাত। [১৫]

    নারীদের যৌন উদ্দীপনায় টেস্টোস্টেরন

    আচরণ এবং ব্যক্তিত্ব

    টেস্টোস্টেরন অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ঝুঁকি নিবার পিছনে বড় ভূমিকা পালন করে।[১৬][১৭]

    টেস্টোস্টেরন আগ্রাসী মনোভাব বাড়ার পিছনেও অনেকাংশে দায়ী।”[১৮]

  • টেংরা

    টেংরা

    টেংরা ছোট একটি মাছ। যার বৈজ্ঞানিক নাম Batasio tengana

    বর্ণনা

    টেংরা মাছ আকারে ছোট হয় এবং মাথায় দুই জোড়া গোঁফ থাকে।দেহ প্রায় গোলাকার,দেহে কোনো আঁশ নেই এবং দেহ বেশ পিচ্ছিল।আত্মরক্ষার জন্য ফুলকার দুই পাশে দুইটি এবং পিঠে একটি সরু কাঁটা থাকে।পিঠের উপরের অংশ কালচে এবং পেটের দিকটা সাদা হয়ে থাকে।

    শ্রেনীবিন্যাস

    টেংরা এর বৈজ্ঞানিক নাম Batasio tengana। মাছটির ইংরেজি নাম Batasio। এটি Bagridae পরিবার (family) এর অন্তর্গত। এটি বাংলাদেশ এর স্থানীয় (Native) মাছ।[১]

    চাষপদ্ধতি

    টেংরা

    কলকাতার বাজারে টেংরা

    টেংরা একটি মিষ্টি পানির দেশীয় মাছ।সাধারণত নদী,খাল ও বিলে এ মাছ পাওয়া যায়। তবে এ মাছ পুকুরে চাষ করা সম্ভব।

    প্রজনন

    টেংরা মাছ ৩ মাস বয়সে প্রাপ্ত বয়স্ক হয়। মে মাসের শেষের দিকে এ মাছ পেটে ডিম ধারণ করে এবং প্রায় এক মাস পর জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে ডিম ছেড়ে দেয় যেখান থেকে জন্ম হয় হাজার হাজার বাচ্চা।

    পুষ্টি গুণাগুণ

    ১০০ গ্রাম টেংরা মাছে ১৪৪ ক্যালরি শক্তি, ১৯.২ গ্রাম প্রোটিন, ৬.৫ গ্রাম চর্বি, ২৭০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ও ২ মিলিগ্রাম আয়রন।তাই রক্তশূন্যতার রোগীদের টেংরা মাছ খাওয়া উচিত।

    বাসস্থান

    এটি মিঠা পানির মাছ। সাধারণত নদী, খাল এবং বিল এ পাওয়া যায়। তবে পুকুরে এ মাছ চাষ করা সম্ভব।

    চাষ পদ্ধতি

    টেংরা মাছ এর বাণিজ্যিক চাষ করা হয় না। ইউরোপের বাজারে অত্যন্ত আকর্ষণীয় একুয়ারিয়াম ফিশ হিসাবে টেংরা মাছের চাহিদা রয়েছে।[২]

    আরো দেখুন

    ১.বাংলাদেশের মাছ

  • উপাঙ্গ (শারীরবিদ্যা)

    উপাঙ্গ (শারীরবিদ্যা)

    উপাঙ্গ (ইংরেজি ভাষায়: Limb) বলতে প্রাণীদেহের সাথে যুক্ত বা প্রাণীদেহ থেকে অভিক্ষিপ্ত কোন অংশকে বোঝায়। উপাঙ্গ মূলত প্রাণীর চলাচলের কাজে ব্যবহৃত হয়, যেমন- হাঁটা, দৌড়ানো কিংবা কিংবা কোন কিছুতে চড়া। তবে কিছু কিছু প্রাণী তাদের সামনের উপাঙ্গগুলোকে (মানুষের ক্ষেত্রে ঊর্ধ্ব উপাঙ্গ) জিনিসপত্র বহন, ব্যবহার বা নাড়াচাড়া করার কাজে ব্যবহার করে। কিছু কিছু প্রাণী তাদের পেছনের উপাঙ্গও এসব কাজে ব্যবহার করতে পারে, যেমন পাখি, এরা এদের পেছনের পা দিয়ে শিকার করতে সক্ষম। অক্টোপাস আর মাকড়শার উপাঙ্গ আটটি। আর্থ্রোপডদের সাধারণত ছয়টি উপাঙ্গ থাকে। বেশিরভাগ মেরুদণ্ডী প্রাণীদের উপাঙ্গ চারটি। মানুষের সামনের উপাঙ্গগুলো হাত আর পেছনের উপাঙ্গগুলো পা নামে পরিচিত। মানুষের হাত দুর্বল হলেও সূক্ষ্ম সব কাজের জন্য পারদর্শী। পাখির সামনের দু’টি উপাঙ্গ ডানা আর পেছনের উপাঙ্গ দু’টি পা নামে পরিচিত। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বেশিরভাগই তাদের চারটি উপাঙ্গ হাঁটা, শিকার বা দৌড়ানোর কাজে ব্যবহার করে। প্রধানত ভ্রুণাবস্থায় প্রাণীদের দেহে উপাঙ্গের আবির্ভাব ঘটে, পরবর্তীতে কয়েকটি নির্দিষ্ট ধাপের পরে উপাঙ্গগুলি সঠিক অবয়বে আসে। জন্ম নেওয়ার পরে প্রাণীদের জীবনের প্রাথমিক পর্যায়েও উপাঙ্গের উন্নয়ন ঘটে, যেমন ব্যাঙ। এদের ব্যাঙাচি অবস্থায় দু’টি উপাঙ্গ থাকে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে আরও দু’টি উপাঙ্গের আবির্ভাব ঘটে।

    উপাঙ্গ (শারীরবিদ্যা)

    টুলেরপেটন , ডেভোনিয়ান যুগেরটেরাপড

    বিষয়শ্রেণীসমূহ:

  • উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব

    উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব

    উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব (এছাড়াও ফাইটোপ্যাথোলজি) হল রোগজীবাণু (সংক্রামক জীব) এবং পরিবেশগত অবস্থা (শারীরবৃত্তীয় কারণ) দ্বারা সৃষ্ট রোগের বৈজ্ঞানিক গবেষণা। [১] সংক্রামক রোগ সৃষ্টিকারী জীবের মধ্যে রয়েছে ছত্রাক, ওমাইসিটিস, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ভিরিওডস্, ভাইরাস- সদৃশ জীব, ফাইটোপ্লাজমা, প্রোটোজোয়া, নেমাটোড এবং পরজীবী উদ্ভিদ । কীটপতঙ্গ, মাইট, মেরুদণ্ড বা অন্যান্য কীটপতঙ্গের মতো ইক্টোপ্যারাসাইটগুলি অন্তর্ভুক্ত নয় যা উদ্ভিদের টিস্যু খেয়ে উদ্ভিদের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। উদ্ভিদ রোগতত্ত্বয় রোগজীবাণু সনাক্তকরণ, রোগের কারণ অনুসন্ধান, রোগের চক্র, অর্থনৈতিক প্রভাব, উদ্ভিদ রোগের মহামারীবিদ্যা, উদ্ভিদ রোগ প্রতিরোধ, কীভাবে উদ্ভিদ রোগ মানুষ ও প্রাণীকে প্রভাবিত করে, প্যাথোসিস্টেম জেনেটিক্স এবং উদ্ভিদ রোগের ব্যবস্থাপনার অধ্যয়ন জড়িত।

    উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব

    সারসংক্ষেপ

      খাদ্যের নির্ভরযোগ্য উৎপাদনের জন্য উদ্ভিদের রোগ নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এটি জমি, পানি, জ্বালানি এবং অন্যান্য উপকরণের কৃষি ব্যবহারে উল্লেখযোগ্য সমস্যা তৈরি করে। প্রাকৃতিক এবং চাষকৃত উভয় জনসংখ্যার গাছপালা সহজাত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহন করে, তবে আয়ারল্যান্ডের মহাদুর্ভিক্ষ এবং চেস্টনাট ব্লাইটের মতো ধ্বংসাত্মক উদ্ভিদ রোগের প্রভাবের অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে, সেইসাথে রাইস ব্লাস্ট, সয়াবিন সিস্ট নেমাটোড এবং সাইট্রাস ক্যানকার এর মতো পুনরাবৃত্ত গুরুতর উদ্ভিদ রোগ।

    ইতিহাস

    উদ্ভিদ রোগবিদ্যা প্রাচীনকাল থেকে থিওফ্রাস্টাস থেকে শুরু করে, কিন্তু বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন প্রাথমিক আধুনিক যুগে মাইক্রোস্কোপ আবিষ্কারের সাথে শুরু হয়েছিল এবং ১৯ শতকে বিকশিত হয়েছিল।[২]

  • ইস্ট্রোজেন

    ইস্ট্রোজেন

    ইস্ট্রোজেন (ইং: Estrogen) হল প্রাথমিক নারী লৈঙ্গিক হরমোন ( primary female sex hormone )। এই নামটি গ্রিক οἶστρος (oistros), যার আভিধানিক অর্থ ডাঁশ কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যৌন আকাঙ্ক্ষা ,[১] এবং প্রত্যয় -gen, মানে ‘যা হতে উৎপত্তি’ হতে এসেছে। [২] [২][৩]

    ইস্ট্রোজেন

    শব্দতত্ত্ব

    ইস্ট্রোজেন নামটি এসেছে ইস্ট্রাস বা রজঃচক্র ও জেন বা উৎপন্ন নামক দুটি শব্দ হতে। অর্থাৎ ইস্ট্রোজেন নামের অর্থ হল রজঃ চক্র হতে উৎপন্ন।

    কাজ

    যদিও ইস্ট্রোজেন পুরুষ এবং নারী উভয়ের মাঝেই থাকে,কিন্তু সচরাচর নারীদের প্রজনন বয়সে এর মাত্রা উচ্চ থাকে।এটি নারীদের সেকেন্ডারি যৌন বৈশিষ্ট্য যেমন স্তন্যগ্ৰন্থি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং একই সাথে মাসিক চক্রের সময় এন্ডোমেট্রিয়ামের পুরুত্ব বেড়ে যায় । শুক্রাণুর পূর্ণতা প্রাপ্তিতে ইস্ট্রোজেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।এর পাশাপাশি ইস্ট্রোজেনের আরো কিছু কাজ আছে।যেমন-

    • গঠনমূলক
      • নারীদের সেকেন্ডারি যৌন বৈশিষ্ট্য উন্নীত করে।
      • বিপাক হার বাড়ায়।
      • ফ্যাট বাড়ায়।
      • এন্ডোমেট্রিয়ামের পুরুত্ব বৃদ্ধি করে।
      • জরায়ুর আকার বৃদ্ধি করে।
      • যোনি পিচ্ছিল করে।
      • জরায়ুর প্রাচীরের পুরুত্ব বৃদ্ধি করে।
    • প্রোটিন সংশ্লেষণ
      • যকৃতে আবদ্ধকারী প্রোটিন উৎপাদন বাড়ায়।
    • রক্ততঞ্চন
    • লিপিড
      • HDL, ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়ায়।
      • LDL, ফ্যাট জমানো কমায়।
    • ফ্লুইড ভারসাম্য
    • পরিপাক তন্ত্র
      • পিত্তে কোলেস্টেরল বাড়ায়।
    • ফুসফুস
      • অ্যাল্ভিওলাইকে সাপোর্ট করে।
    • জরায়ু

    যোনি

    এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন।
  • জন্ম

    জন্ম

    জন্ম হচ্ছে কার্য-সম্পাদনকারী, প্রাকৃতিক ও আচরণগত প্রক্রিয়া যা মাতৃগর্ভ থেকে সন্তান প্রসব করতে সাহায্য করে বা ভূমিষ্ঠ হয়। গবাদি পশু এবং কিছু অন্যান্য প্রাণীদের ক্ষেত্রে বাছুর ও মাংসাশী স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ক্ষেত্রে শাবক প্রসব করাকে বুঝায়।[১] প্রাকৃতিকগতভাবে মা বা স্ত্রীলিঙ্গজাতীয় প্রাণীই সন্তান প্রসবের অধিকারী হয়। মানব শিশু ভূমিষ্ঠ হয় যখন মায়ের গর্ভে রক্ষিত ভ্রুণ জরায়ুর মাধ্যমে বিশ্বে নির্গত হয়। ওভিপারিটি বা ডিম প্রসব, ভিভিপারি বা ডিমের বদলে শাবক প্রসব এবং ওভোভিভিপারি – ইত্যাদি ধরনের জন্ম হয়ে থাকে।

    ভ্লাদিমির কোপেন

    আইনগত দিক

    বিশ্বের অনেক দেশেই শিশুর জন্মের পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে জন্মসনদ বা বার্থ সার্টিফিকেট উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে গ্রহণ করতে হয়। এতে শিশুর বিস্তারিত বিবরণ লিপিবদ্ধ থাকে ও বৈধ দলিল হিসেবে স্বীকৃত হয় যা সংশ্লিষ্ট দেশের নাগরিকত্ব অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। শিশু ভূমিষ্ঠ হবার পর নির্দিষ্ট তারিখ থেকে প্রতিবছর ঐ দিনে পালনীয় অনুষ্ঠান জন্মদিনরূপে উদ্‌যাপন করা হয়। জন্ম তারিখ অথবা জ্যোতিষশাস্ত্রের হিসাব-নিকাশের মাধ্যমে পালনীয় এটি শিশু বা ব্যক্তির বার্ষিকভিত্তিক অনুষ্ঠান। একক পরিবারে বাবা, মা, ভাই অথবা বোন রয়েছে – যারা শিশুর জন্মকালীন সময়ে সংশ্লিষ্ট থাকেন। কিছু দেশে বৈধভাবে বিবাহ-পর্ব সম্পন্ন না হয়ে বাবা-মায়ের মিলনে শিশু ভূমিষ্ঠ হলে ওই শিশু জারজ সন্তান বা অবৈধ শিশু নামে পরিচিতি পায় বা বিবেচনা করা হয়।

    আধ্যাত্মিক প্রভাব

    জ্যোতিষশাস্ত্রে বিশ্বাস করা হয় যে, জন্মকালীন সময়ে প্রতিটি ব্যক্তির জীবনই আকাশের সূর্য, চন্দ্র এবং গ্রহাদির ভূ-কেন্দ্রিক অবস্থান কিংবা দিগন্ত রেখার উপর তার ভাগ্যরেখাআয়ু নির্ভরশীল। জন্মগত তালিকায় হিসাব-নিকাশের সাহায্যে সময়, তারিখ এবং জন্মস্থানের অবস্থান ব্যবহার করা হয়। এরফলে জ্যোতিষী কর্তৃক প্রয়োজনীয় পাথর, মণি-মুক্তা ইত্যাদি ব্যবহার করে ভাগ্যরেখা পরিবর্তন কিংবা আয়ু বৃদ্ধিকল্পে চক্রাকারে আবর্তিত রাহুকে দূর করার জন্য চেষ্টা চালানো হয়। প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রীষ্টান সম্প্রদায় আবারো জন্মগ্রহণের কথা বিশ্বাস করেন। এরফলে ঈশ্বরকে পাবার লক্ষ্যে সকল দুঃখ-দুর্দশা থেকে পরিত্রাণ ও ঐশ্বরিক শক্তি প্রয়োগে বিশ্বাসীকে রক্ষা করার কথা তুলে ধরা হয়েছে। কর্ম মতবাদ অনুযায়ী পুনর্জন্মে বিশ্বাসী ব্যক্তিগণ বিশ্বাস করেন যে মৃ্ত্যু পরবর্তীকালে তার আবারো পুনর্জন্ম ঘটবে। খ্রিস্টীয় মতবাদ অনুযায়ী প্রভু যীশু পবিত্র দেহ নিয়ে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেন। ঈশ্বরের পুত্র হিসেবে তিনি কোন পুরুষের সঙ্গম ছাড়াই কুমারী মাতা মেরীর গর্ভে জন্মেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়।[২]

    জটিল অবস্থা

    জন্মকালীন সময়ে শারীরিক কিংবা মানসিক ভারসাম্যহীনতাজনিত জন্মের ত্রুটি হতে পারে। জন্মগত প্রক্রিয়ায় ব্যথা অনুভূত হলে পরবর্তীকালে শিশুর জীবনে ঐ ব্যথা প্রবাহিত হতে পারে। গর্ভকালীন জটিলতা গর্ভস্রাব কিংবা অনৈচ্ছিক গর্ভপাতের কারণেও সৃষ্টি হয়।[৩]বন্ধ্যাত্বতা ঘোঁচাত আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার, ঔষধ প্রয়োগ, মানসিক উদ্দীপনা অথবা আচরণ পরিবর্তনের মাধ্যমে গর্ভধারণের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করা হয়। অনেক সময় অপরিপক্ক জন্মগ্রহণ গর্ভধারণের পূর্ণকালীন সময়ের পূর্বে ঘটে থাকে। মৃত অবস্থায় ভ্রুণ বা শিশু জন্ম নিলে তা স্টিলবার্থ নামে পরিচিত। সিজারিয়ান শিশুর জন্মের পর ভিব্যাক পদ্ধতির মাধ্যমে যোনীনালী দিয়ে সন্তানের জন্ম হয়ে থাকে।

  • ডিম

    ডিম

    বেশিরভাগ পাখিসরীসৃপে ডিম হল নিষিক্ত ডিম্বাণুর মাধ্যমে সৃষ্ট জাইগোট। ডিম্বস্ফোটোনের জন্যে ডিমের ভেতর যথাযথ তাপমাত্রা বজায় রাখার ব্যবস্থা থাকে এবং ভ্রূণের প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও নিরাপত্তাও ডিম সরবরাহ করে। ভ্রূণ পরিণতি লাভ করার পর ডিম ফুটে বেরিয়ে আসে। কিছু ভ্রুণের ডিমের খোলস ভাঙ্গার জন্যে অস্থায়ী ডিম দাঁতও থাকতে দেখা যায়।

    ডিম

    ওভিপ্যারাস প্রাণিরা ডিম পেড়ে থাকে, মায়ের শরীরের অভ্যন্তরের ভ্রুণের খুবই সামান্য বা কোন বিকাশই ঘটে না। ডিম পর্যবেক্ষণ ও সংগ্রহ করার বিদ্যাকে উওলজি বলা হয়।

    সরীসৃপ, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণী যারা জলে ডিম পাড়ে না, তাদের ডিম একটি রক্ষাকারী আবরণে আবৃত থাকে, যাকে ডিমের খোসা বলা হয়। এই আবরণ নমনীয় বা অনমনীয় – দুইই হতে পারে। যে বিশেষ ঝিল্লি দ্বারা ডিম প্রতিপালিত হয় তা সকল এমনিটোনেরই বৈশিষ্ট্য, যার মধ্যে স্তন্যপায়ীরাও অন্তর্ভুক্ত।

    ১.৫ কেজি ওজনের অস্ট্রিচের ডিম এখন পর্যন্ত জানা অস্তিত্বশীল সবচেয়ে বড় কোষ, যদিও এপিওমিস এবং কিছু কিছু ডাইনোসরের ডিম এর চাইতেও বড় হত। বি হামিংবার্ডের ডিম পাখিদের মধ্যে ক্ষুদ্রতম, ওজন মাত্র আধ গ্রাম। কিছু সরীসৃপ ও বেশিরভাগ মাছের ডিম এর চাইতেও ছোট হয়, এবং কীটপতঙ্গ ও অমেরুদণ্ডীদের ডিম তার চাইতেও ক্ষুদ্র।

    পাখির ডিম

    গ্যালারি

    • খোসাবিহীন অবস্থায় জমাটবদ্ধ মুরগীর ডিম।
    • ডিম ফুটে কচ্ছপের বাচ্চা বের হচ্ছে।
    • কীট-পতঙ্গ প্রায়ই গাছের পাতার নিচের দিকে ডিম পাড়ে।
    • ছবিতে দেখানো হেরিং মাছের ডিমের মত সব মাছের ডিম স্বচ্ছ এবং ডিম পাড়ার পরই উর্বর হয়।
    • স্কেট এবং কিছু হাঙ্গরের অনন্য আকৃতির ডিম্বথলি থাকে যাকে মারমেইডস পার্স (mermaid’s purse) বলে।

    ডিমের পুষ্টি গুণ

    ডিম একটি সহজলভ্য ও উন্নতমানের আমিষজাতীয় খাদ্য; যাতে রয়েছে প্রাকৃতিক ভিটামিন, যা দেহগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সব ধরনের ডিমে রয়েছে অতি মূল্যবান ওমেগা-৩, যা হৃৎপিণ্ডকে কার্যকর রাখতে সাহায্য করে। একটি মাঝারি আকারের রান্না করা ডিমে (50 গ্রাম) 78 ক্যালোরি, 6.29 গ্রাম প্রোটিন, 0.56 গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং 5.3 গ্রাম মোট ফ্যাট রয়েছে, যার মধ্যে 1.6 গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট, 2.0 গ্রাম মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, 0.7 গ্রাম ফ্যাট, 0.7 গ্রাম। এবং 186 মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল।[১]

    মুরগির ডিমের পুষ্টি গুণ

    মুরগির ডিম পোচ

    একটি সাধারণ মুরগির ডিমে প্রোটিন আছে প্রায় ছয় গ্রাম, যাতে রয়েছে মানবদেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় নয়টি অ্যামিনো অ্যাসিড। মুরগির ডিমে রয়েছে অতি মূল্যবান ওমেগা-৩, যা হৃৎপিণ্ডকে কার্যকর রাখতে সাহায্য করে। কোলিন ডিমের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা গর্ভবতী মায়ের মস্তিষ্কজনিত জটিলতা দূরীকরণে সহায়তা করে, গর্ভাবস্থায় শিশুর মেধা ও স্মৃতি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ডিমে আছে ফলিক অ্যাসিড অথবা ফোলেট, যা ত্রুটিপূর্ণ সন্তান জন্মদানের ঝুঁকি কমায়।এ ছাড়া রয়েছে সেলেনিয়াম, যা মানুষের মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে এবং ক্যানসার, বিশেষত প্রোস্টেট ক্যানসার রোধে সহায়তা করে। ডিমে রয়েছে ৫ গ্রাম কোলেস্টেরল, যার প্রায় ৩.৫ গ্রাম উপকারী ও ভালো কোলেস্টেরল, যা মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রমে প্রয়োজন, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। ডিমে রয়েছে লিউটিন ও জিয়াজ্যান্থিন, যা চোখের ছানি পড়া রোধে সহায়তা করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন সুস্থ মানুষ দিনে একটি ডিম খেতে পারে। জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী বছরে প্রত্যেক মানুষের গড় ডিম গ্রহণ ন্যূনতম ১০৪ টি হওয়া উচিত। ডিমের সাদা অংশে ৬ গ্রাম প্রটিন ও হলুদ অংশে ৬ গ্রাম প্রটিন রয়েছে। ডিমে ক্যালসিয়াম রয়েছে।

    বিশ্ব ডিম দিবস

    ডিমের পুষ্টি গুণ গুরুত্ব অনুধাবন করে ভোক্তা ও উৎপাদক উভয়কেই সচেতন করার জন্য প্রতিবছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার উদযাপিত হয় বিশ্ব

  • ডিএনএ অনুলিপন

    ডিএনএ অনুলিপন

    ডিএনএ অনুলিপন বা ডিএনএ প্রতিলিপন হলো একটি জৈবিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি ডিএনএ অণু থেকে একই রকম দুটি ডিএনএ-এর প্রতিলিপি উৎপন্ন হয়।[১] ডিএনএ প্রতিলিপি জৈবিক উত্তরাধিকারের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় অংশ হিসেবে কাজ করে। কোষ বিভাজনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুর বৃদ্ধি এবং মেরামতকালে এটি জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, যখন এটি নিশ্চিত করে যে নতুন কোষের প্রতিটি নিজস্ব ডিএনএ অনুলিপি গ্রহণ করে।[২] কোষ বিভাজনের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য যা ডিএনএ অনুলিপন অপরিহার্য করে তোলে।

    ডিএনএ অনুলিপন

    ডিএনএ দুটি পরিপূরক স্ট্র্যান্ড বা সূত্রকের একটি দ্বি-সূত্রক দিয়ে তৈরি। দ্বি-সূত্রক বলতে একটি দ্বি-সূত্রী ডিএনএর উপস্থিতির বর্ণনা দেয় যা দুটি সরলরৈখিক সূত্রকের সমন্বয়ে গঠিত ও একে অপরের বিপরীতে চলে এবং একসাথে প্যাঁচানো থাকে।[৩] প্রতিলিপনের সময় এই সূত্রকগুলো পৃথক হয়ে যায়। মূল ডিএনএ অণুর প্রতিটি সূত্রক তার পরিপূরক সূত্রক উৎপাদনের জন্য টেমপ্লেট হিসাবে কাজ করে, এই প্রক্রিয়াটিকে অর্ধ-সংরক্ষণমূলক প্রতিলিপন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অর্ধ-রক্ষণশীল প্রতিলিপনের ফলস্বরূপ, নতুন সূত্র একটি মূল ডিএনএ সূত্রকের পাশাপাশি একটি নতুন সংশ্লেষিত সূত্রকের সমন্বয়ে গঠিত হয়।[৪] কোষীয় প্রুফ রিডিং এবং ত্রুটি-চেক করার পদ্ধতিগুলো ডিএনএ প্রতিলিপনের বিশ্বস্ততা নিশ্চিত করে।[৫][৬]

    একটি কোষে, ডিএনএ অনুলিপন নির্দিষ্ট অবস্থান জিনোমে[৭] শুরু হয় যাতে একটি প্রাণীর জিনগত উপাদান রয়েছে।[৮] নতুন সূত্রকের উৎপত্তির সময় হেলিকেজ নামক এনজাইম ডিএনএ-এর প্যাঁচ খুলতে সাহায্য করে যাতে দুটি রেপ্লিকেশন ফর্ক তৈরি হয়। ডিএনএ সংশ্লেষণের সূচনা এবং ধারাবাহিকতায় সহায়তার জন্য অনেকগুলো প্রোটিন প্রতিলিপি রেপ্লিকেশন ফর্কের সাথে যুক্ত থাকে। প্রধানত ডিএনএ পলিমারেজ এনজাইম নিউক্লিওটাইড যুক্ত করে নতুন সূত্রক সংশ্লেষ করে যা প্রতিটি (টেমপ্লেট) সূত্রকের পরিপূরক। ইন্টারফেজের এস- পর্যায়ে ডিএনএ প্রতিলিপন ঘটে থাকে।

    ডিএনএ প্রতিলিপন (ডিএনএ বিবর্ধন) গবেষণাগারেও (কৃত্রিমভাবে, একটি কোষের বাইরে) করা যেতে পারে। কোষ থেকে বিচ্ছিন্ন ডিএনএ পলিমারেজ এবং কৃত্রিম ডিএনএ প্রাইমারগুলো একটি টেমপ্লেট ডিএনএ অণুতে ডিএনএ সংশ্লেষণ শুরু করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। পলিমারেজ চেইন বিক্রিয়া (পিসিআর), লাইগেজ চেইন বিক্রিয়া (এলসিআর), এবং ট্রান্সক্রিপশন প্রভাবিত পরিবর্ধন (টিএমএ) এর উদাহরণ।

    সংঘটন স্থান

    ইউক্যারিওটিক কোষের ইন্টারফেজ দশার নিউক্লিয়াসে এবং প্রোক্যারিওটিক কোষের সাইটোপ্লাজমে ডিএনএ প্রতিলিপিকরণ হয়ে থাকে।

    ডিএনএর গঠন

    ডিএনএ একটি ডাবল হেলিক্স স্ট্রাকচার নিয়ে গঠিত, উভয় স্ট্র্যান্ড বা সূত্রক একত্রে কুন্ডলিত হয়ে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত ডাবল হেলিক্স গঠন করে। ডিএনএর প্রতিটি সূত্রক হল চার ধরনের নিউক্লিওটাইডের একটি শৃঙ্খল। ডিএনএর নিউক্লিওটাইডগুলোতে একটি ডিঅক্সিরাইবোজ চিনি, একটি ফসফেট এবং নিউক্লিওবেস থাকে। চার ধরনের নিউক্লিওটাইড চার ধরনের নিউক্লিওবেস এর সাথে সম্পৃক্ত যেমন – এডেনিন, সাইটোসিন, গুয়ানিন, এবং থাইমিন যাদের সংক্ষিপ্ত রূপ হল A, C, G এবং T। এডেনিন এবং গুয়ানিন হল পিউরিন বেস, যেখানে সাইটোসিন এবং থাইমিন হল পাইরিমিডিন বেস। এই নিউক্লিওটাইড সমূহ ফসফো-ডাইএস্টার বন্ধন গঠন করে, যার মাধ্যমে ডিএনএ ডাবল হেলিক্সের ফসফেট-ডিঅক্সিরাইবোজ ব্যাকবোন তৈরি করে যার নিউক্লিওবেসগুলো অভ্যন্তরের দিকে নির্দেশ করে (যেমন, বিরোধী সূত্রকের দিকে)। নিউক্লিওবেসগুলো সুত্রকের মধ্যে হাইড্রোজেন বন্ড দ্বারা যুক্ত হয়। এডেনিন থাইমিনের সাথে (দুটি হাইড্রোজেন বন্ধন) এবং গুয়ানিন সাইটোসিনের সাথে (তিনটি হাইড্রোজেন বন্ধন) দ্বারা যুক্ত হয়।

    ডিএনএ সূত্রকের একটি দিকনির্দেশ আছে এবং একক সূত্রকের দুটি ভিন্ন প্রান্তকে 3 ′ (তিন-পূরক) প্রান্ত এবং 5 ′ (পাঁচ-পূরক) প্রান্ত বলা হয়। প্রচলিত নিয়ম অনুসারে, যদি ডিএনএর একক স্ট্র্যান্ডের বেস সিকোয়েন্সটি দেওয়া থাকে তবে সিকোয়েন্সের বাম প্রান্তটি 5 ′ প্রান্ত হয় এবং ক্রমের ডান প্রান্তটি 3 ′ প্রান্ত হয়। ডাবল হেলিক্সের সূত্রক দুটি বিপরীত ও সমান্তরাল যেমন একটি 5 ′ থেকে 3 ′ এবং বিপরীত সূত্রক 3 ′ থেকে 5 ′। এই পদগুলো দ্বারা ডিঅক্সিরাইবোজ এর যে কার্বন পরমাণুতে শৃঙ্খলের পরবর্তী ফসফেট সংযুক্ত থাকে তা নির্দেশ করে। ডিএনএ সংশ্লেষণে দিকনির্দেশ প্রভাব আছে, কারণ ডিএনএ পলিমারেজ একটি ডিএনএ সূত্রকের 3 ′ প্রান্তে নিউক্লিওটাইড যুক্ত করে কেবল এক দিকে ডিএনএ সংশ্লেষ করতে পারে।

    ডিএনএতে পরিপূরক বেসগুলোর সংযোজন (হাইড্রোজেন বন্ধনের মাধ্যমে) এর অর্থ প্রতিটি স্ট্র্যান্ডের মধ্যে থাকা তথ্যগুলো অপ্রয়োজনীয়। ফসফো-ডাইএস্টার (অন্তঃ-স্ট্র্যান্ড) বন্ডগুলো হাইড্রোজেন (আন্তঃ-স্ট্র্যান্ড) বন্ডের চেয়ে শক্তিশালী। ফসফো-ডাইএস্টার বন্ডগুলোর আসল কাজ হল ডিএনএ পলিমারগুলোতে একটি নিউক্লিওটাইডের 5 ‘ কার্বনকে অন্য নিউক্লিওটাইডের 3’ কার্বনের সাথে সংযুক্ত করা, অন্যদিকে হাইড্রোজেন বন্ডগুলো হেলিক্স ১-অক্ষের বাইরে ডিএনএ ডাবল হেলিক্স কে স্থির করে তবে অক্ষের দিকে নয়।[৯] এটি স্ট্র্যান্ডগুলোকে একে অপরের থেকে পৃথক হতে দেয়। একক স্ট্র্যান্ডের নিউক্লিওটাইডগুলো তাই নতুন সংশ্লেষিত অংশীদার স্ট্র্যান্ডের নিউক্লিওটাইডগুলোকে পুনর্গঠন করতে ব্যবহার করে।[১০]

    ডিএনএ পলিমারেজ

    ডিএনএ পলিমারেজগুলো এনজাইমের একটি পরিবার যা সমস্ত ধরনের ডিএনএ প্রতিলিপন ঘটিয়ে থাকে।[১১] সাধারণভাবে ডিএনএ পলিমেরেসগুলো নতুন স্ট্র্যান্ডগুলোর সংশ্লেষণ শুরু করতে পারে না, তবে কেবলমাত্র একটি বিদ্যমান ডিএনএ বা আরএনএ স্ট্র্যান্ডকে ছাঁচ স্ট্র্যান্ডের সাথে যুক্ত করে প্রসারিত করতে পারে। সংশ্লেষণ শুরু করতে আরএনএ-এর একটি সংক্ষিপ্ত টুকরো যাকে একটি প্রাইমার বলা হয়, এটি তৈরি করতে হয় এবং টেমপ্লেট ডিএনএ স্ট্র্যান্ডের সাথে যুক্ত করতে হয়।

    ডিএনএ পলিমারেজ ফসফো-ডাইএস্টার বন্ধন একটি বিদ্যমান নিউক্লিওটাইড চেইনের প্রান্তকে প্রসারিত করে ডিএনএর একটি নতুন স্ট্র্যান্ড তৈরি করে এবং একই সময়ে টেমপ্লেট স্ট্র্যান্ডের সাথে মিলিত করে নতুন নিউক্লিওটাইড যুক্ত করে। ডিএনএ পলিমারকরণের এই প্রক্রিয়াটির জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি প্রতিটি মুক্ত ক্ষারের সাথে সংযুক্ত তিনটি ফসফেটের মধ্যে উচ্চ-শক্তি সম্পন্ন ফসফেট (ফসফোনহাইড্রাইড) বন্ধনের আর্দ্র বিশ্লেষণ থেকে আসে। মুক্ত ক্ষারগুলোকে তাদের সংযুক্ত ফসফেট গ্রুপগুলোর সাথে নিউক্লিওটাইড বলে, বিশেষত তিনটি ফসফেট সংযুক্ত বেসগুলোকে নিউক্লিওসাইড ট্রাইফসফেট বলা হয়। যখন একটি নিউক্লিওটাইড ক্রমবর্ধমান ডিএনএতে যোগ হয়, তখন ক্রমবর্ধমান চেইন নিউক্লিওটাইড নিকটবর্তী ফসফেট মধ্যে একটি ফসফো-ডাইএস্টার বন্ধন গঠন করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি একটি উচ্চ শক্তি সম্পন্ন ফসফেট বন্ধন আর্দ্র বিশ্লেষণের দ্বারা পাইরোফসফেট হিসেবে প্রকাশিত হয়। পাইরোফসফেটের এনজাইমেটিক হাইড্রোলাইসিসের ফলস্বরূপ অজৈব ফসফেট দ্বিতীয় উচ্চ-শক্তি সম্পন্ন ফসফেট বন্ধন গ্রহণ করে এবং বিক্রিয়াটিকে কার্যকরভাবে একমুখী করে তোলে।

    সাধারণভাবে ডিএনএ পলিমারেজগুলো অত্যন্ত নির্ভুল, প্রতি ১০৭ নিউক্লিওটাইড যুক্ত করার জন্য একটির চেয়ে কম অভ্যন্তরীণ ত্রুটির হার যুক্ত হয়।[১২] এছাড়াও কিছু ডিএনএ পলিমারেজেরর প্রুফ রিডিং ক্ষমতাও রয়েছে; ভুল ক্ষারগুলোকে সংশোধন করার জন্য তারা ক্রমবর্ধমান স্ট্র্যান্ডের প্রান্ত থেকে নিউক্লিওটাইডগুলো সরিয়ে ফেলতে পারে। অবশেষে অনুলিপন-পরবর্তী মেরামত প্রক্রিয়া ত্রুটি নির্ণয়ের জন্য ডিএনএ পর্যবেক্ষণ করে, মূল স্ট্র্যান্ড ক্রম থেকে নতুন সংশ্লেষিত ডিএনএ স্ট্র্যান্ডের সাথে অমিলগুলো পৃথক করতে সক্ষম হয়। একইসাথে এই তিনটি বৈষম্য নির্ণয় পদক্ষেপ প্রতি ১০৯ নিউক্লিওটাইড যুক্ত করার জন্য একটিরও কম ভুলের প্রতিলিপন করতে সক্ষম করে।[১২]

    একটি জীবন্ত কোষে ডিএনএ প্রতিলিপনের হার সর্বপ্রথম ফাজ সংক্রমিত E. coli-তে T4 ফাজ (ভাইরাস) ডিএনএ প্রসারিত হওয়ার হার হিসেবে পরিমাপ করা হয়েছিল।[১৩] ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ডিএনএ বৃদ্ধি পাওয়ার সময়কালে এই হার প্রতি সেকেন্ডে ৭৪৯ নিউক্লিওটাইড ছিল। T4 ফাজ ডিএনএ সংশ্লেষণের সময় প্রতি জোড়া ক্ষার পরিবর্তনের হার প্রতি ১০৮ নিউক্লিওটাইডে ছিল ১.৭।[১৪]

    প্রতিলিপন প্রক্রিয়া

    ডিএনএ অনুলিপন প্রক্রিয়ার চিত্র

    রেপ্লিকেশন ফর্ক এবং রেপ্লিকেশন বাবল

    সমস্ত জৈবিক পলিমারকরণ প্রক্রিয়াগুলোর মতো ডিএনএ প্রতিলিপন তিনটি অনুঘটিত এবং সমন্বিত পদক্ষেপে সম্পন্ন হয়: আরম্ভ, দীর্ঘায়ন এবং সমাপ্তি।

    আরম্ভ

    কোষ বিভাজনের করার জন্য প্রথমে এটির ডিএনএর প্রতিলিপি অবশ্যই তৈরি করতে হয়।[১৫] ডিএনএর প্রতিলিপন একবার শুরু হয়ে গেলে এটি সমাপ্তির দিকে এগিয়ে যায়। প্রতিলিপি সম্পূর্ণ হয়ে গেলে একই কোষ চক্রে এটি আবার সংঘটিত হয় না। প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সের আরম্ভের বিভাজনের দ্বারা এটি সম্ভব হয়।

    প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্স

    মাইটোসিসের শেষের দিকে এবং G1 পর্বের প্রথম দিকে, প্রারম্ভিক প্রোটিনগুলোর একটি বৃহৎ অংশ ডিএনএর নির্দিষ্ট পয়েন্ট এ প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্স একত্রিত হয়, যা “উৎস”  হিসেবে পরিচিত।[৭] E. coli তে প্রাথমিক প্রোটিন হল DnaA; ইস্ট এর জন্য জন্য একটি উৎস শনাক্তকারী কমপ্লেক্স[১৬] প্রবর্তক প্রোটিন দ্বারা ব্যবহৃত সিকোয়েন্সগুলো এডেনিন ও থাইমিন ক্ষারগুলোতে সমৃদ্ধ হয়ে থাকে, কারণ ক্ষার জোড়গুলোতে দুটি হাইড্রোজেন বন্ধন থাকে (সাইটোসিন-গুয়ানিন জোড়ায় বন্ধন থাকে) এবং তাই একে সহজেই প্রসারিত করে আলাদা করা যায়।[১৭] প্রকৃত কোষের জীবে উৎস শনাক্তকারী কমপ্লেক্স প্রারম্ভিক প্রোটিনকে প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সে রূপান্তরে প্রভাবিত করে। তারপরে Cdc6  এবং Cdt1 ডিএনএর আবদ্ধ উৎস শনাক্তকারী কমপ্লেক্স সাথে যুক্ত হয়ে Mcm কমপ্লেক্সটি লোড করার জন্য প্রয়োজনীয় কমপ্লেক্স গঠন করে। Mcm কমপ্লেক্স হলো হেলিকেজ যা প্রকৃতকোষীতে প্রতিলিপন উৎস এবং প্রতিলিপন ফর্ক গঠন করে। Mcm কমপ্লেক্সটি G1 পর্বের শেষ ভাগে গঠিত হয় এবং ORC-Cdc6-Cdt1 কমপ্লেক্সটি ATP-নির্ভর প্রোটিন পুনরায় তৈরির মাধ্যমে ডিএনএতে লোড হয়। মূল ডিএনএতে Mcm কমপ্লেক্সের লোডিং প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্স গঠনের সমাপ্তি চিহ্নিত করে।[১৮]

    G1 দশার শেষের দিকে পরিবেশগত অবস্থা ঠিক থাকলে, যেমন G1 এবং G1/S cyclin – Cdk কমপ্লেক্স সক্রিয় হয়, যা জিনের অভিব্যক্তিকে উদ্দীপিত করে যা ডিএনএ সিন্থেটিক বড় যন্ত্র গঠন করে। এছাড়াও G1/S-Cdk অ্যাক্টিভেশন S-Cdk কমপ্লেক্সগুলোর প্রকাশ এবং সক্রিয় হতে উদ্দীপিত করে, যা প্রজাতি এবং কোষ ভেদে প্রতিলিপনের উৎস সক্রিয় করতে ভূমিকা রাখে। এই Cdk এর নিয়ন্ত্রণ কোষের ধরন এবং বিকাশের পর্যায়ের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। এই নিয়ন্ত্রণটি মুকুলোদগমকারী ইস্টে ভালোভাবে বোঝা যায়, যেখানে S সাইক্লিনস Clb5 এবং Clb6 মূলত ডিএনএ প্রতিলিপনের জন্য দায়ী।[১৯] Clb5,6-Cdk1 কমপ্লেক্সগুলো প্রতিলিপন উৎসের সক্রিয়করণকে সরাসরি ট্রিগার করে এবং তাই প্রতিটি উৎসকে সরাসরি সক্রিয় করতে এস পর্যায়ে জুড়ে এটি প্রয়োজন।[১৮]

    অনুরূপণ পদ্ধতিতে প্রতিলিপন উৎস সক্রিয় করতে এস দশার মধ্যে Cdc7ও প্রয়োজনীয়। Cdc7 পুরো চক্র জুড়ে সক্রিয় থাকে না এবং ডিএনএ  প্রতিলিপনের অপ্রাপ্ত আরম্ভ এড়ানোর জন্য এটির সক্রিয়করণ কঠোরভাবে প্রয়োজন হয়। G1 এর শেষের দিকে নিয়ন্ত্রক উপ-একক Dbf4 এর সাথে সংঘর্ষের ফলে Cdc7-এর ক্রিয়াকলাপ হঠাৎ বেড়ে যায় যা Cdc7-কে সরাসরি বেঁধে রাখে এবং এর প্রোটিন কাইনেজ ক্রিয়াকলাপ প্রচার করে। Cdc7টি মূল ক্রিয়াকলাপের হার-সীমাবদ্ধ নিয়ামক হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে। একইসাথে G1/S-Cdks অথবা S-Cdks এবং Cdc7 সরাসরি প্রতিলিপন মূলককে সক্রিয় করতে সহযোগিতা করে, যার ফলে ডিএনএ সংশ্লেষণের সূচনা হয়।[১৮]

    প্রাক-প্রারম্ভিক কমপ্লেক্স

    প্রারম্ভিক এস পর্যায়ে S-Cdk এবং Cdk7 অ্যাক্টিভেশন প্রাক-প্রারম্ভিক কমপ্লেক্সের সমাবেশের দিকে পরিচালিত করে, একটি বৃহৎ প্রোটিন যৌগ গঠিত হয়। প্রাক-প্রারম্ভিক কমপ্লেক্সের গঠনটি Cdc6 এবং Cdt1-কে মূল রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্স থেকে বিচ্ছিন্ন করে, প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সকে নিষ্ক্রিয় করে এবং ছত্রভঙ্গ করে। প্রাক-প্রারম্ভিক কমপ্লেক্সটি উৎসের উপর লোড হলে Mcm হেলিকেজকে সক্রিয় করে, যার ফলে ডিএনএ সূত্রকে মুক্ত হয়। প্রাক-প্রারম্ভিক কমপ্লেক্সটি ডিএনএ-তে আলফা-প্রাইমেজ এবং অন্যান্য ডিএনএ পলিমারেজগুলো লোড করে।[১৮]

    আলফা-প্রাইমেজ নামে প্রথম প্রাইমার সংশ্লেষিত করবার পর প্রাইমার-ছাঁচ জংশনগুলো ক্ল্যাম্প লোডারের সাথে ক্রিয়া করে, যা ডিএনএ সংশ্লেষণ শুরু করতে স্লাইডিং ক্ল্যাম্পটি ডিএনএ-এর উপর চাপিয়ে দেয়। প্রাক-প্রারম্ভিক কমপ্লেক্সের উপাদানগুলো মূল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে প্রতিলিপন ফর্কের সাথে যুক্ত হয়।[১৮]

    দীর্ঘায়ন

    ডিএনএ পলিমারেজে 5′–3′ কার্যকলাপ রয়েছে। সমস্ত প্রচলিত ডিএনএ প্রতিলিপি সিস্টেমে সংশ্লেষণ শুরুর আগে একটি মুক্ত 3′ হাইড্রোক্সিল গ্রুপ প্রয়োজন (দ্রষ্টব্য: ডিএনএ টেমপ্লেটটি 3′ থেকে 5′ দিকে পড়া হয় যেখানে একটি নতুন স্ট্র্যান্ড 5′ থেকে 3′ দিকের দিকে সংশ্লেষিত হয়; এটি প্রায়শই বিভ্রান্তকর হয়)। ডিএনএ সংশ্লেষণের জন্য চারটি স্বতন্ত্র প্রক্রিয়া স্বীকৃত আছে-

    1. সমস্ত কোষীয় জীব এবং অনেকগুলো ডিএনএ ভাইরাস, ফাজ এবং প্লাজমিড প্রাইমেজ ব্যবহার করে একটি মুক্ত 3′ হাইড্রোক্সিল গ্রুপের সাথে একটি সংক্ষিপ্ত আরএনএ প্রাইমার সংশ্লেষিত করে যা পরবর্তীকালে ডিএনএ পলিমারেজ দ্বারা প্রসারিত হয়।
    2. রেট্রো উপাদানগুলো (রেট্রোভাইরাসসহ) একটি ট্রান্সফার আরএনএ নিয়োগ করে রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ দ্বারা প্রসারিত করার জন্য ডিএনএর প্রতিলিপনকে একটি মুক্ত 3′ হাইড্রোক্সিল গ্রুপ সরবরাহ করে।
    3. এডিনোভাইরাস এবং ফাই 29 পরিবারের ব্যাকটেরিওফাজের এর মধ্যে 3′ হাইড্রোক্সিল গ্রুপ জিনোম সংযুক্ত প্রোটিন এর অ্যামিনো অ্যাসিড পার্শ্ব-শৃঙ্খল (টার্মিনাল প্রোটিন) থেকে সরবরাহ করা হয় যা নিউক্লিওটাইডের ডিএনএ পলিমারেজ দ্বারা যুক্ত হয়ে একটি নতুন সূত্রক গঠন করে।
    4. একসূত্র বিশিষ্ট ডিএনএ ভাইরাস (একটি গ্রুপ রয়েছে যেখানে আছে circoviruses, geminiviruses, parvoviruses এবং অন্যান্য) এবং অনেক ফাজ ও প্লাসমিড যে ঘূর্ণায়মান বৃত্ত রেপ্লিকেশন (RCR) প্রক্রিয়া ব্যবহার করেন, RCR এন্ডোনিউক্লিয়েজ একটি জিনোম স্ট্র্যান্ড সৃষ্টি করে (একক স্ট্র্যান্ড ভাইরাস) বা ডিএনএ স্ট্র্যান্ড সৃষ্টি করে (প্লাজমিড)। নিকড স্ট্র্যান্ডের 5′ প্রান্তটি নিউক্লিয়েজের একটি টাইরোসিন অবশিষ্টাংশে স্থানান্তরিত হয় এবং মুক্ত 3′ হাইড্রোক্সিল গ্রুপটি ডিএনএ পলিমারেজ দ্বারা নতুন স্ট্র্যান্ড সংশ্লেষ করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

    প্রথমটি এই ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে সর্বাধিক পরিচিত এবং কোষীয় জীব দ্বারা ব্যবহৃত হয়। এই ব্যবস্থায় একবার দুটি স্ট্র্যান্ড পৃথক হয়ে গেলে প্রাইমেজ টেমপ্লেট স্ট্র্যান্ডগুলোতে আরএনএ প্রাইমার যুক্ত করে। লিডিং স্ট্র্যান্ড একটি আরএনএ প্রাইমার গ্রহণ করে যখন ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড বেশ কয়েকটি গ্রহণ করে। লিডিং স্ট্র্যান্ড ক্রমাগত অবিচ্ছিন্নভাবে একটি ডিএনএ পলিমেরেজ দ্বারা প্রাইমার থেকে প্রসারিত হয়েছে, যখন ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড প্রতিটি প্রাইমার থেকে বিরচন করে বিচ্ছিন্নভাবে ওকাজাকি টুকরায় পরিণত হয়। আরএনএনেজ আরএনএ প্রাইমার খণ্ডগুলোকে সরিয়ে দেয় এবং শূন্যস্থান পূরণের জন্য প্রতিরক্ষামূলক পলিমারেজ থেকে স্বল্প প্রক্রিয়াকরণ ডিএনএ পলিমারেজ প্রবেশ করে। এটি সম্পূর্ণ হয়ে গেলে লিডিং স্ট্র্যান্ডের একটি একক নিক এবং ল্যাগিং স্ট্র্যান্ডের বেশ কয়েকটি নিক পাওয়া যায়। লাইগেজ এই নিকগুলো পূরণ করার জন্য কাজ করে, এইভাবে নতুন করা ডিএনএ অণু প্রতিলিপি সম্পূর্ণ হয়।

    এই প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত প্রাইমেজে ব্যাকটেরিয়া এবং আর্চিয়া/ইউক্যারিওটের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে পার্থক্য রয়েছে। ব্যাকটেরিয়া DnaG প্রোটিনের সাথে সম্পর্কিত একটি প্রাইমেজ ব্যবহার করে যা সুপার-ফ্যামিলি TOPRIM ভাঁজ টাইপের একটি অনুঘটক ডোমেইন ধারণ করে।[২০] TOPRIM ভাঁজটিতে রসম্যান-জাতীয় টপোলজিতে চারটি সংরক্ষিত স্ট্র্যান্ডসহ একটি আলফা/বিটা কোর রয়েছে। এই কাঠামোটি টপোইসোমারেজ I, টপোইসোমারেজ II, ওল্ড-ফ্যামিলি নিউক্লিয়েজ এবং RecR প্রোটিন সম্পর্কিত ডিএনএ মেরামতকারী প্রোটিনগুলোর অনুঘটক ডোমেনগুলোও পাওয়া যায়।

    বিপরীতে আর্চিয়া এবং ইউক্যারিওট দ্বারা ব্যবহৃত প্রাইমেজে আরএনএ রিকগনিশন মোটিফ (RPM) এর একটি সংস্করণ রয়েছে। এই প্রাইমেজ কাঠামোগতভাবে অনেক ভাইরাস সম্পর্কিত আরএনএ নির্ভর আরএনএ পলিমারেজ, রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ, চক্রীয় নিউক্লিওটাইড উৎপাদনকারী চক্র এবং ডিএনএ প্রতিলিপি এবং মেরামতের সাথে জড়িত এ/ বি/ওয়াই পরিবারের ডিএনএ পলিমারেযের মতো। ইউক্যারিওটিক প্রতিলিপনে প্রাইমেজ পোল-আলফার সাথে একটি কমপ্লেক্স গঠন করে।[২১]

    একাধিক ডিএনএ পলিমারেজ ডিএনএ প্রতিলিপন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ভূমিকা গ্রহণ করে। E. coli, DNA Pol III হলো পলিমারেজ এনজাইম যা ডিএনএ রেপ্লিকেশন এর জন্য প্রাথমিকভাবে দায়ী। এটি সম্পূর্ণ প্রতিরূপ চক্রের জন্য অক্ষত থেকে, অত্যন্ত উচ্চ উৎপাদন প্রদর্শন করে এমন প্রতিলিপন ফর্কের সাথে একটি রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সে একত্রিত হয়। বিপরীতে DNA Pol I হলো আরএনএ প্রাইমারগুলো ডিএনএর সাথে প্রতিস্থাপনের জন্য দায়ী এনজাইম। DNA Pol I-এর পলিমারেজ ক্রিয়াকলাপ ছাড়াও একটি 5′ থেকে 3′ এক্সোনিউক্লিয়েজ কার্যকলাপ রয়েছে এবং এটি আরএনএ প্রাইমারকে এর পিছনে ডিএনএ স্ট্র্যান্ডকে প্রসারিত করার জন্য এর এক্সোনিউক্লিয়েজ ক্রিয়াকলাপটি ব্যবহার করে নিক অনুবাদ বলে। পোল-১ পোল-৩ এর তুলনায় অনেক কম প্রক্রিয়াজাতক কারণ ডিএনএ প্রতিলিপনে এটির প্রাথমিক কাজ হলো কয়েকটি খুব দীর্ঘ অঞ্চলের পরিবর্তে অনেকগুলো সংক্ষিপ্ত ডিএনএ অঞ্চল তৈরি করা।

    ইউক্যারিওটে কম উৎপাদনশীল এনজাইম Pol-α প্রতিলিপন কাজ সূচনা করতে সাহায্য করে কারণ এটি প্রাইমেজের সঙ্গে একটি কমপ্লেক্স গঠন করে।[২২] ইউক্যারিওটে লিডিং স্ট্র্যান্ড সংশ্লেষণ Pol-ε দ্বারা পরিচালিত হয় বলে মনে করা হয়; যাইহোক, এই দৃশ্যটি সম্প্রতি চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে, Pol-δ-এর জন্য একটি ভূমিকা প্রস্তাব করা হয়েছে।[২৩] প্রাইমারের অপসারণ সম্পূর্ণ Pol-δ করে যেখানে Pol-ε প্রতিলিপনের সময় ডিএনএ মেরামত সম্পন্ন করে।[২৪]

    ডিএনএ সংশ্লেষণ চলার সাথেসাথে মূল ডিএনএ স্ট্র্যান্ডগুলো বুদ্বুদের প্রতিটি পাশের দিকে উন্মুক্ত হয়ে দুটি কাঁটাবিশিষ্ট একটি রেপ্লিকেশন ফর্ক গঠন করে। বৃত্তাকার ক্রোমোজোমে প্রতিলিপির একটি মাত্র উৎস থাকা ব্যাকটেরিয়াতে এই প্রক্রিয়ায় একটি থিটা কাঠামো” তৈরি হয় (গ্রীক অক্ষর থিটা: θ-এর অনুরূপ)। বিপরীতে ইউক্যারিওটের দীর্ঘতর সরলরৈখিক ক্রোমোজোম থাকে এবং এর মধ্যে একাধিক উৎসে প্রতিলিপি শুরু হয়।[২৫]

    রেপ্লিকেশন ফর্ক

    রেপ্লিকেশন ফর্ক একটি কাঠামো যা ডিএনএ প্রতিলিপি চলাকালীন দীর্ঘ সূত্রকীয় ডিএনএর মধ্যে উৎপন্ন হয়। এটি হেলিকেজ দ্বারা তৈরি করা হয়, যা সূত্রকে দুটি ডিএনএ স্ট্র্যান্ডকে ধরে রেখে হাইড্রোজেন বন্ধনগুলো ভেঙে দেয়। ফলস্বরূপ কাঠামোতে দুটি শাখা “কাঁটা” রয়েছে, যার প্রত্যেকটিই ডিএনএর একক স্ট্র্যান্ড দ্বারা গঠিত। এই দুটি স্ট্র্যান্ড লিডিং এবং ল্যাগিং স্ট্র্যান্ডগুলোর ছাঁচ হিসাবে কাজ করে, যা ডিএনএ পলিমারেজ টেমপ্লেটগুলোর পরিপূরক নিউক্লিওটাইডগুলোর সাথে মিলে তৈরি হয়; টেমপ্লেটগুলো সঠিকভাবে লিডিং স্ট্র্যান্ড ছাঁচ এবং ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড ছাঁচ হিসাবে উল্লেখ করা যেতে পারে।

    ডিএনএ 3′ থেকে 5′ দিকে ডিএনএ পলিমারেজ দ্বারা পড়া হয়, যার অর্থ নতুন স্ট্র্যান্ড 5 ‘থেকে 3’ দিকে সংশ্লেষিত হয়। যেহেতু লিডিং এবং ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড ছাঁচগুলো রেপ্লিকেশন ফর্কে বিপরীতমুখী, তাই একটি বড় সমস্যা হলো নতুন ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড ডিএনএ-এর সংশ্লেষণ কীভাবে অর্জন করা যায়, যার সংশ্লেষণের দিকটি ক্রমবর্ধমান রেপ্লিকেশন ফর্ক এর দিকের বিপরীত হবে।

    লিডিং স্ট্র্যান্ড

    লিডিং স্ট্র্যান্ড হলো নতুন ডিএনএর যে স্ট্র্যান্ড ক্রমবর্ধমান রেপ্লিকেশন ফর্কের একই দিকে সংশ্লেষিত। এই ধরনের ডিএনএ প্রতিলিপন অবিচ্ছিন্ন হয়।

    ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড

    ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড হলো নতুন ডিএনএ-এর সেই স্ট্র্যান্ড যার সংশ্লেষণের দিকটি ক্রমবর্ধমান রেপ্লিকেশন ফর্কের দিকের বিপরীত। এর ওরিয়েন্টেশনের কারণে লিডিং স্ট্র্যান্ডের তুলনায় ল্যাগিং স্ট্র্যান্ডের প্রতিলিপন আরও জটিল। ফলস্বরূপ, এই স্ট্র্যান্ডের ডিএনএ পলিমারেজকে অন্য স্ট্র্যান্ডের “পিছনে” থাকতে দেখা যায়।

    ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড সংক্ষিপ্ত ও পৃথক অংশে সংশ্লেষিত হয়। ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড টেমপ্লেটে একজন প্রাইমেজ টেমপ্লেট ডিএনএ-কে “পড়ে” এবং একটি সংক্ষিপ্ত পরিপূরক আরএনএ প্রাইমারের সংশ্লেষণ শুরু করে। একটি ডিএনএ পলিমারেজ ওকাজাকি টুকরো তৈরি করে প্রাইমড অংশগুলোকে প্রসারিত করে। এরপর আরএনএ প্রাইমারগুলো ডিএনএ দ্বারা অপসারণ ও প্রতিস্থাপন করা হয় এবং ডিএনএর টুকরোগুলো ডিএনএ লাইগেজের মাধ্যমে একত্রিত হয়।

    রেপ্লিকেশন ফর্কের গতিশীলতা

    সমস্ত ক্ষেত্রে হেলিকেজটি ছয়টি পলিপেপটাইডের সমন্বয়ে গঠিত যা ডিএনএর প্রতিলিপনের সময় একটি স্ট্র্যান্ডের চারপাশে মোড়ানো থাকে। দুটি পলিমারেজ হেলিকেজ হেক্সিমারের সাথে আবদ্ধ থাকে। ইউক্যারিওটসে হেলিকেজটি লিডিং স্ট্র্যান্ডের চারপাশে মোড়ানো থাকে এবং প্রোক্যারিওটসে এটি ল্যাগিং স্ট্র্যান্ডের চারপাশে মোড়ানো থাকে।[২৬]

    হেলিকেজ যখন রেপ্লিকেশন ফর্কে ডিএনএ-কে খুলে দেয়, ঠিক তখন ডিএনএ ঘুরতে বাধ্য হয়। এই প্রক্রিয়াটির ফলস্বরূপ ডিএনএ-তে সামনের দিকে মোড় নেয়।[২৭] এই প্রক্রিয়াটি একটি ঘূর্ণনশীল প্রতিরোধের রূপ দেয় যা শেষ পর্যন্ত রেপ্লিকেশন ফর্ক এর অগ্রগতি থামিয়ে দেয়। টপোইসোমারেজ হলো এক ধরনের এনজাইম যা অস্থায়ীভাবে ডিএনএর স্ট্র্যান্ডগুলো ভেঙে দেয়, ডিএনএ সূত্রকে দুটি স্ট্র্যান্ডকে বিচ্ছিন্ন করার ফলে সৃষ্ট উত্তেজনা থেকে মুক্তি দেয়; টপোইসোমারেজগুলো (ডিএনএ গাইরেজসহ) ডিএনএ হেলিক্সে নেতিবাচক সুপারকয়েল যুক্ত করে এটি সম্পন্ন করে।[২৮]

    শূন্য একক-আটকে থাকা ডিএনএ গৌণ কাঠামো গঠনে নিজেই ফিরে যায়; এই কাঠামোগুলো ডিএনএ পলিমারেজের চলাচলে হস্তক্ষেপ করতে পারে। এটি রোধ করতে একক-স্ট্র্যান্ড বাইন্ডিং প্রোটিনগুলো ডিএনএতে আবদ্ধ থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত না দ্বিতীয় স্ট্র্যান্ড সংশ্লেষিত না হয়, যা গৌণ কাঠামো গঠনে বাধা দেয়।[২৯]

    ডাবল-স্ট্র্যান্ডেড ডিএনএ হিস্টোনগুলোর চারপাশে যুক্ত থাকে যা জিনের এক্সপ্রেশন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাই প্রতিলিপি যুক্ত ডিএনএ অবশ্যই হিস্টোনের আশেপাশে মূল ডিএনএ হিসেবে একই স্থানে যুক্ত থাকে। এটি নিশ্চিত করার জন্য হিস্টোন চ্যাপেরোনস এটি প্রতিলিপনের আগেই ক্রোমাটিন থেকে পৃথক হয় এবং হিস্টোনকে সঠিক জায়গায় প্রতিস্থাপন করে। এই পুনঃনির্মাণের কিছু পদক্ষেপ কিছুটা অনুমানমূলক।[৩০]

    ক্ল্যাম্প প্রোটিনগুলো ডিএনএর চারপাশে একটি স্লাইডিং ক্ল্যাম্প গঠন করে, ডিএনএ পলিমারেজকে তার টেমপ্লেটের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখতে সহায়তা করে, যার ফলে উৎপাদনে সহায়তা হয়। ক্ল্যাম্পের অভ্যন্তরীণ মুখ ডিএনএ-এর মাধ্যমে খাঁজ কাটতে সক্ষম করে। একবার পলিমারেজ টেমপ্লেটের শেষ প্রান্তে পৌঁছে যায় বা ডাবল-স্ট্র্যান্ডেড ডিএনএ শনাক্ত করে, যা স্লাইডিং ক্ল্যাম্প একটি ধারণামূলক পরিবর্তন করে যার ফলে ডিএনএ পলিমারেজ  প্রকাশিত হয়। ক্ল্যাম্প-লোডিং প্রোটিনগুলো ক্ল্যাম্প লোড করার জন্য প্রাথমিকভাবে টেমপ্লেট এবং আরএনএ প্রাইমার এর মধ্যে জংশনকে চিহ্নিত করে।[৬]

    ডিএনএ প্রতিলিপন প্রোটিন

    রেপ্লিকেশন ফর্কে অনেকগুলো প্রতিলিপন এনজাইম ডিএনএ-তে একত্রিত করে একটি জটিল আণবিক যন্ত্র গঠন করে যা রিপ্লিজোম নামে পরিচিত। নিচে রিপ্লিজোমে অংশ নেওয়া প্রধান ডিএনএ প্রতিলিপন এনজাইমগুলোর একটি তালিকা দেওয়া হলো:[৩১]

    এনজাইমডিএনএ প্রতিলিপনে কাজ
    ডিএনএ হেলিকেজহেলিক্স অস্থিতিশীলকারী এনজাইম হিসেবেও পরিচিত। টপোইসোমারেজের পিছনে রেপ্লিকেশন ফর্কের ডিএনএর দুটি স্ট্র্যান্ডকে হেলিকেজ পৃথক করে।
    ডিএনএ পলিমারেজডিএনএ প্রতিলিপনের সময় নিউক্লিওটাইড স্তরগুলো ডিএনএতে 5′ থেকে 3′-এর দিকে সংযোজন করার জন্য দায়ী এনজাইম। প্রুফ রিডিং এবং ত্রুটি সংশোধনও করে। বিভিন্ন ধরনের ডিএনএ পলিমারেজ রয়েছে যার মধ্যে প্রতিটি বিভিন্ন ধরনের কোষে বিভিন্ন কার্য সম্পাদন করে।
    ডিএনএ ক্ল্যাম্পএকটি প্রোটিন যা ডিএনএ মূল স্ট্র্যান্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ডিএনএ পলিমারেজকে দীর্ঘায়িত করে।
    একক স্ট্র্যান্ড ডিএনএ-বাইন্ডিং প্রোটিনssDNA-তে আবদ্ধ হয় এবং ডিএনএ হেলিকেজের এটি খুলে ফেলার পরে ডিএনএ ডাবল হেলিক্সকে পুনরায় অ্যানিলিং করা থেকে বিরত রাখে, এভাবে স্ট্র্যান্ডের বিচ্ছিন্নতা বজায় রাখা এবং নতুন স্ট্র্যান্ডের সংশ্লেষণের সুবিধার্থে কাজ করে।
    টোপোইসোমারেজডিএনএ-কে সুপার-কয়েলড প্রকৃতি থেকে শিথিল করে।
    ডিএনএ গাইরেজডিএনএ হেলিকেজের সাহায্যে স্ট্র্যান্ডের চাপকে মুক্তি দেয়; এটি একটি নির্দিষ্ট ধরনের টোপোইসোমারেজ।
    ডিএনএ লাইগেজঅর্ধ-রক্ষণশীল স্ট্র্যান্ডগুলো পুনরায় যুক্ত করে এবং ল্যাগিং স্ট্র্যান্ডের ওকাজাকি অংশগুলো যোগ করে।
    প্রাইমেজনতুন ডিএনএ স্ট্র্যান্ডের সংশ্লেষণ শুরু করতে ডিএনএ পলিমারেজ এর জন্য আরএনএ (অথবা ডিএনএ) একটি সূচনা পয়েন্ট সরবরাহ করে।
    টেলোমিয়ারেজইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের প্রান্তে পুনরাবৃত্ত নিউক্লিওটাইড অনুক্রম যুক্ত করে টেলোমেরিক ডিএনএ কে লম্বা করে। এটি জীবাণু কোষ এবং স্টেম-সেলগুলোকে কোষ বিভাজনে হায়ফ্লিক সীমা এড়াতে সহায়তা করে।[৩২]

    প্রতিলিপন যন্ত্রপাতি

    অরিজিনে হেলিকেজ লোডিং। A-প্রোক্যারিওটিকে, B-ইউক্যারিওটিকে

    ইউক্যারিওটদের ক্ষেত্রে রেপ্লিকেশন ইনিশিয়েশন

    প্রতিলিপন যন্ত্রপাতি বা মেশিনারিগুলো ডিএনএর প্রতিলিপনে জড়িত নিয়ামকগুলো নিয়ে গঠিত এবং টেমপ্লেট ssDNA-তে উপস্থিত থাকে। প্রতিলিপন মেশিনারিগুলোর মধ্যে প্রিমোসোটারগুলো হলো প্রতিলিপন এনজাইম; ডিএনএ পলিমারেজ, ডিএনএ হেলিকেজ, ডিএনএ ক্ল্যাম্প এবং ডিএনএ টোপোইসোমারেজ এবং প্রতিলিপি প্রোটিন; যেমন একক স্ট্র্যান্ড ডিএনএ বাইন্ডিং প্রোটিন (SSB)। প্রতিলিপন মেশিনারিগুলোতে এই উপাদানগুলো সমন্বয় করে। বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ প্রতিলিপনে জড়িত সমস্ত ফ্যাক্টরগুলো রেপ্লিকেশন ফর্কে অবস্থিত এবং কমপ্লেক্সগুলো ডিএনএ প্রতিলিপনে সময় রেপ্লিকেশন ফর্কে অবস্থান করে। এই প্রতিলিপন মেশিনারিগুলোকে রিপ্লিজোম বা ডিএনএ রেপ্লিকেশন সিস্টেম বলা হয় । এই পদগুলো রেপ্লিকেশন ফর্কে উপর অবস্থিত প্রোটিন জন্য জেনেরিক পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইউক্যারিওটিক এবং কিছু ব্যাকটেরিয়া কোষে রিপ্লিজোমগুলো গঠিত হয় না।

    যেহেতু রেপ্লিকেশন মেশিনারিগুলো কারখানার মতো টেমপ্লেট ডিএনএ-তে তুলনামূলকভাবে স্থানান্তরিত হয় না, তাই তাদের প্রতিলিপন কারখানা বলা হয়।[৩৩] বিকল্প চিত্রটিতে, ডিএনএ কারখানাগুলো প্রজেক্টরগুলোর মতো এবং ডিএনএগুলো সিনেম্যাটিক ফিল্ম এর মতো যেমন প্রজেক্টারে নিয়মিত প্রবাহিত হয়। প্রতিলিপন কারখানার মডেলটিতে ডিএনএ হেলিকেজের পরে লিডিং স্ট্র্যান্ড এবং ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড উভয় টেমপ্লেট ডিএনএতে লোড হয়, হেলিকেজগুলো ডিএনএ বরাবর একে অপরের সাথে চালিত হয়। হেলিকেজগুলো প্রতিলিপন প্রক্রিয়ার অবশিষ্ট অংশগুলোর সাথে যুক্ত থাকে। পিটার মেইস্টার এবং তার সহযোগীরা সবুজ ফ্লোরোসেন্ট প্রোটিন (GFP) ট্যাগযুক্ত ডিএনএ পলিমারেজ আলফা পর্যবেক্ষণ করে মুকুলোদগম করে এমন ইস্টে সরাসরি প্রতিলিপন সাইটগুলো পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাঁরা শনাক্ত করেছেন যে ট্যাগযুক্ত লোকির জোড়াগুলো প্রতিলিপন উৎস থেকে প্রতিসাম্যভাবে পৃথক করা হয়েছে এবং আবিষ্কার করেছেন যে জোড়গুলোর মধ্যে দূরত্ব সময়ের সাথে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়।[৩৪] এই সন্ধানটি পরামর্শ দেয়, যে ডিএনএ প্রতিলিপন প্রক্রিয়াটি ডিএনএ কারখানার সাথে চলে। অর্থাৎ প্রতিলিপন কারখানার জোড়াগুলো প্রতিলিপন উৎস এবং একে অপরের সাথে যুক্ত কারখানাগুলোতে লোড হয়। এছাড়াও টেমপ্লেট ডিএনএগুলো কারখানায় চলে যায়, যা টেমপ্লেট ssDNAs এবং নতুন DNAs তে বহিষ্করণ নিয়ে আসে। মেইস্টারের সন্ধান প্রতিলিপন কারখানা মডেলের প্রথম প্রত্যক্ষ প্রমাণ। পরবর্তী গবেষণায় দেখা গেছে যে ডিএনএ হেলিকেজগুলো অনেক ইউক্যারিওটিক কোষে ডাইমার গঠন করে এবং ব্যাকটেরিয়াল প্রতিলিপন মেশিনারিগুলো ডিএনএ সংশ্লেষণের সময় একক অন্তর্মুখী স্থানে থাকে।[৩৩]

    প্রতিলিপন কারখানাগুলো সিস্টার-ক্রোমাটিডের বিচ্ছিন্নতা সম্পাদন করে। ডিএনএ প্রতিলিপন এর পরে ক্রোমাটিড অপত্য কোষে বিতরণ করার জন্য বিচ্ছিন্নতা প্রয়োজনীয়। যেহেতু সিস্টার-ক্রোমাটিড ডিএনএ প্রতিলিপনের পরে আসঞ্জন বলয় দ্বারা একে-অপরকে ধরে রাখে, ডিএনএ প্রতিলিপনে বিচ্ছিন্ন হওয়ার একমাত্র সুযোগ আছে। প্রতিলিপন কারখানা হিসেবে প্রতিলিপন মেশিনারিকে ঠিক করা হলে ডিএনএ প্রতিলিপনের সাফল্যের হার বেড়ে যায়। যদি রেপ্লিকেশন ফর্কগুলো ক্রোমোজোমে অবাধে চলাচল করে তবে নিউক্লিয়াসের ক্যাটিনেশন ক্রমবর্ধমান হয় এবং মাইটোটিক বিভাজনকে বাধাগ্রস্ত করে।[৩৪]

    সমাপ্তি

    রেপ্লিকেশন বাবল সম্প্রসারিত হওয়ার সরলীকৃত চিত্র

    ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের একাধিক পয়েন্টে ডিএনএ প্রতিলিপন শুরু হয়, তাই রেপ্লিকেশন ফর্ক বহু পয়েন্টে মিলিত হয় এবং সমাপ্ত হয়। ইউক্যারিওটগুলোতে সরলরৈখিক ক্রোমোজোম রয়েছে বলে ডিএনএ প্রতিলিপন ক্রোমোজোমের একেবারে প্রান্তে পৌঁছাতে পারে না। এই সমস্যার কারণে ক্রোমোজোমের শেষ থেকে প্রতিটি প্রতিলিপি চক্রের মধ্যে ডিএনএ হারিয়ে যায়। টেলোমিয়ারস হলো পুনরাবৃত্ত ডিএনএর প্রান্ত নিকটবর্তী অঞ্চল এবং এটি সংক্ষিপ্তকরণের কারণে জিনের ক্ষয় রোধে সহায়তা করে। টেলোমিয়ারসের সংক্ষিপ্তকরণ দেহ কোষের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এটি অপত্য ডিএনএ ক্রোমোজোমের টেলোমিয়ারকে সংক্ষিপ্ত করে। ফলস্বরূপ ডিএনএ-এর ক্ষতি আরও বিভাজন রোধ করার আগে কোষগুলো কেবলমাত্র একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক বার ভাগ হতে পারে (এটি হায়ফ্লিক সীমা হিসেবে পরিচিত)। এর মধ্যে বীজ কোষ লাইন যা পরবর্তী প্রজন্মের ডিএনএ স্থানান্তর করে, টেলোমিয়ারেজ ক্ষয় রোধ করতে টেলোমিয়ারের অঞ্চলের পুনরাবৃত্তিক ক্রমগুলো প্রসারিত করে। টেলোমিয়ারেজ ভুলভাবে দেহকোষগুলোতে সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে, যা কখনও কখনও ক্যান্সার গঠনের দিকে পরিচালিত করে। বর্ধিত টেলোমিয়ারেজ ক্রিয়াকলাপ ক্যান্সারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

    সমাপ্তির জন্য ডিএনএ রেপ্লিকেশন ফর্কের অগ্রগতি অবশ্যই বন্ধ বা অবরুদ্ধ করা উচিত। একটি নির্দিষ্ট লোকাসে যখন সমাপ্তি ঘটে তখন দুটি উপাদানগুলোর মধ্যে মিথস্ক্রিয়া ঘটে: (১) ডিএনএতে একটি সমাপ্তি স্থান ক্রম এবং (২) একটি প্রোটিন যা ডিএনএর প্রতিলিপনকে শারীরিকভাবে থামানোর জন্য এই ক্রমের সাথে আবদ্ধ থাকে। বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া প্রজাতিগুলোতে এটির নাম দেওয়া হয় ডিএনএ রেপ্লিকেশন টার্মিনাস সাইট-বাইন্ডিং প্রোটিন, বা টার প্রোটিন

    কারণ ব্যাকটেরিয়ায় বৃত্তাকার ক্রোমোজোম থাকে, প্রতিলিপনের সমাপ্তি ঘটে যখন দুটি রেপ্লিকেশন ফর্ক মাতৃক্রোমোজোমে বিপরীত প্রান্তে একে অপরের সাথে মিলিত হয়। E. coli এই প্রক্রিয়াটি সমাপ্তি অনুক্রমগুলো ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রণ করে যা টাস প্রোটিন দ্বারা আবদ্ধ হলে রেপ্লিকেশন ফর্ক কেবল একটি দিক দিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ফলস্বরূপ, রেপ্লিকেশন ফর্কগুলো সর্বদা ক্রোমোজোমের সমাপ্তি অঞ্চলে পৌঁছাতে বাধা দেয়।[৩৫]

    ইউক্যারিওট দের রেপ্লিজোম

    ই কোলাই এর রেপ্লিজোম এর চিত্র

    নিয়ন্ত্রণ

    ইউক্যারিওটস

    ইউক্যারিওটসের মধ্যে, ডিএনএ প্রতিলিপন কোষ চক্রের প্রসঙ্গ হিসেবে নিয়ন্ত্রিত হয়। কোষ এর বৃদ্ধি ও বিভাজন এর সাথে সাথে এটি কোষ চক্রের ধাপগুলোর মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়; ডিএনএ প্রতিলিপি এস পর্যায়ের (সংশ্লেষণ পর্ব) সময় সঞ্চালিত হয়। চক্রের মাধ্যমে ইউক্যারিওটিক কোষের অগ্রগতি কোষ চক্রের চেকপয়েন্টগুলো দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় । সাইক্লিন এবং সাইক্লিন নির্ভর কাইনেজ সহ বিভিন্ন প্রোটিনের মধ্যে জটিল মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে ছেকপয়েন্টগুলোর মাধ্যমে অগ্রগতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।[৩৬] ব্যাকটেরিয়া থেকে ভিন্ন, ইউক্যারিওটিক ডিএনএ নিউক্লিয়াসের সীমানায় প্রতিলিপি তৈরি করে।[৩৭]

    G1/S চেকপয়েন্ট (বা সীমাবদ্ধতা চেকপয়েন্ট) ইউক্যারিওটিক কোষগুলো ডিএনএ প্রতিলিপন এবং পরবর্তী বিভাগের প্রক্রিয়াতে প্রবেশ করে কিনা তা নিয়ন্ত্রণ করে। এই চেকপয়েন্টের মধ্য দিয়ে অগ্রসর না হওয়া কোষগুলো G-0 পর্যায়ে থেকে যায় এবং তাদের ডিএনএ প্রতিলিপন হয় না।

    G1/S চেকপয়েন্টে অতিক্রম করার সময়, ডিএনএ কে অবশ্যই প্রতিটি কোষ চক্রে একবার করে প্রতিলিপন তৈরি করতে হয়। যখন Mcm কমপ্লেক্সটি উৎস থেকে সরে যায়, প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সটি ভেঙে ফেলা হয়। যেহেতু প্রাক-রেপ্লিকেশন সাব-ইউনিটগুলো পুনরায় সক্রিয় করা না হওয়া অবধি কোন নতুন Mcm কমপ্লেক্স কোন উৎসে লোড করা যায় না, তাই প্রতিলিপনে একটি উৎস একই কোষ চক্রে দুবার ব্যবহার করা যায় না।[১৮]

    প্রারম্ভিক এস পর্যায়ে S-Cdks সক্রিয়করণ তাৎক্ষণিকভাবে পুনরুদ্ধার প্রতিরোধ করে প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্স এর উপাদানগুলোর ধ্বংস বা বাধা দান করে। S এবং M-Cdks এস-ফেজ শেষ হওয়ার পরেও প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্স একত্রিত হওয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখে, এটি নিশ্চিত করে যে মাইটোসিস এ সমস্ত Cdk ক্রিয়াকলাপ হ্রাস না করা পর্যন্ত সমাবেশ আবার ঘটতে পারে না।[১৮]

    মুকুলোদগম করে এমন ইস্টে, প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্স উপাদানগুলোর সিডিকে-নির্ভর ফসফোরাইলেশনের কারণে সমাবেশের বাধা ঘটে। এস পর্বের শুরুতে, Cdk1 দ্বারা Cdc6 এর ফসফোরাইলেশনের ফলে SCF ইউবুইকিটিন প্রোটিন লাইগেজের সাথে Cdc6 আবদ্ধ হয়, যা Cdc6 এর প্রোটিওলাইটিক ভাঙ্গন ঘটায়। এস পর্বে Mcm প্রোটিনগুলোর Cdk নির্ভর ফসফোরাইলেশন Cdk1 এর সাথে নিউক্লিয়াসের বাইরে তাদের বের করে, একক কোষ চক্রের সময় উৎসে নতুন Mcm কমপ্লেক্সগুলো লোড করা রোধ করে। উৎসের রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সের Cdk ফসফোরাইলেশন প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সের সমাবেশকে বাধা দেয়। এই তিনটি পদ্ধতির যেকোনটির পৃথক উপস্থিতি প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সের সমাবেশকে বাধা দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। যাইহোক, একই কোষে তিনটি প্রোটিনের মিউটেশন একটি কোষ চক্রের মধ্যে প্রতিলিপন এর অনেক উৎস পুনরুদ্ধারকে ট্রিগার করে।[১৮][৩৮]

    প্রাণী কোষগুলোতে, প্রোটিন জেমিনিন প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সের সমাবেশের মূল প্রতিবন্ধক। জেমিনিন Cdt1 কে বেঁধে রাখে, এটিকে উৎস স্বীকৃতি কমপ্লেক্সের সাথে আবদ্ধ হওয়া থেকে রোধ করে। জি-১ এ, APC দ্বারা জেমিনের মাত্রা কম রাখা হয়, যা জেমিনিনকে অবক্ষয়ের জন্য লক্ষ্যবস্তু করে তোলে। জেমিনিন ধ্বংস হয়ে গেলে, Cdt1 প্রকাশ পায়, এটি প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সের সমাবেশ গঠনে কাজ করে। জি-১ এর শেষে, APC নিষ্ক্রিয় হয়, জেমিনিনকে জমা করে এবং Cdt1 এর সাথে যুক্ত করে।[১৮]

    ক্লোরোপ্লাস্ট এবং মাইটোকন্ড্রিয়াল জিনোমের প্রতিলিপন ডি-লুপ প্রতিলিপন প্রক্রিয়াটির মাধ্যমে কোষ চক্রের স্বাধীনভাবে ঘটে।

    রেপ্লিকেশন ফোকাস

    কশেরুকা কোষে, প্রতিলিপন সাইটগুলো রেপ্লিকেশন ফোকি[৩৪] নামক পজিশনে মনোনিবেশ করে। প্রতিলিপি সাইটগুলো অপত্য স্ট্র্যান্ড এবং প্রতিলিপন এনজাইমগুলো প্রতিরোধক এবং GFP-ট্যাগযুক্ত রেপ্লিকেশন ফ্যাক্টরগুলো পর্যবেক্ষণ করে শনাক্ত করা যেতে পারে। এই পদ্ধতিগুলোর মাধ্যমে এটি পাওয়া যায় যে কোষ বিভাজনের এস পর্যায়ে বিভিন্ন আকারের এবং অবস্থানের রেপ্লিকেশন ফোকি প্রদর্শিত হয় এবং নিউক্লিয়াস প্রতি তাদের সংখ্যা জিনোমিক রেপ্লিকেশন ফর্ক সংখ্যার তুলনায় অনেক কম।

    পি হিউন ও তার সহযোগীরা[৩৪] (২০০১) মুকুলোদগম কারী ইস্ট কোষগুলোতে GFP-ট্যাগযুক্ত রেপ্লিকেশন ফোকি শনাক্ত করেছেন এবং প্রকাশ করেছেন যে প্রতিলিপি উৎসটি জি-১ এবং এস পর্যায়ে অবিচ্ছিন্ন ভাবে সরানো হয় এবং এস পর্যায়ে গতিশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়।[৩৪] প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, রেপ্লিকেশন সাইটগুলো ক্রোমোজোমের স্থানিক কাঠামোর ক্ষেত্রে পারমাণবিক ম্যাট্রিক্স বা ল্যামিন দ্বারা স্থির করা হয়। হিউনের ফলাফল প্রচলিত ধারণাগুলোকে অস্বীকার করেছে, মুকুলোদগম কারী ইয়েস্টগুলোতে ল্যামিন নেই কিন্তু প্রতিলিপন উৎসের আত্ম-জমায়েত হয় এবং রেপ্লিকেশন ফোকি তৈরি হয়।

    স্থানিক ও সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রিত প্রতিলিপন উৎসগুলো চালিয়ে, রেপ্লিকেশন ফোকি গঠন নিয়ন্ত্রিত হয়। ডিএ জ্যাকসন ও তার সহযোগীরা (১৯৯৮) প্রকাশ করেছেন যে প্রতিবেশী উৎস স্তন্যপায়ী কোষগুলোতে একই সাথে বহিষ্কার হয়।[৩৪] প্রতিলিপন সাইটগুলোর স্থানিক পাশাপাশি অবস্থান রেপ্লিকেশন ফর্কগুলোর ক্লাস্টারিং নিয়ে আসে। ক্লাস্টারিং স্থগিত রেপ্লিকেশন ফর্কগুলো উদ্ধার করে এবং রেপ্লিকেশন ফর্কগুলোর স্বাভাবিক অগ্রগতি ফিরিয়ে আনে। রেপ্লিকেশন ফর্কগুলোর অগ্রগতি অনেকগুলো কারণ দ্বারা প্রতিহত হয়; প্রোটিনের সাথে বা ডিএনএর সাথে দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ কমপ্লেক্সগুলোর সাথে সংঘর্ষ, dNTPs-র অভাব, টেমপ্লেট ডিএনএ-র নিকগুলো ইত্যাদি। যদি স্টল রেপ্লিকেশন ফর্ক এবং স্ট্রিট প্রতিলিপি থেকে অবশিষ্ট ক্রমগুলো প্রতিলিপিত না করা হয় তবে অপত্য স্ট্র্যান্ডগুলো অপ্রতিলিপিত সাইটগুলো পায়। এক মাতৃ স্ট্র্যান্ডের অপ্রতিলিপিত সাইটগুলো অন্য স্ট্র্যান্ডকে একত্রে ধারণ করে তবে অপত্য স্ট্র্যান্ডকে নয়। সুতরাং, ফলস্বরূপ সিস্টার-ক্রোমাটিডগুলো একে অপরের থেকে পৃথক হতে পারে না এবং দুটি অপত্য কোষে বিভক্ত হতে পারে না। প্রতিবেশী উৎসে বহিষ্কার এবং একটি উৎস থেকে স্থবির ফর্ক প্রতিলিপিত হয়ে গেলে, অন্য উৎস থেকে ফর্ক বিপরীত দিকে পৌঁছায় এবং অপ্রতিলিপিত সাইটগুলো প্রতিলিপন করে। উদ্ধারের অন্যান্য প্রক্রিয়া হিসেবে প্রয়োগ এর মধ্যে রয়েছে সুপ্ত প্রতিলিপন উৎস যা সাধারণ ডিএনএ প্রতিলিপন অতিরিক্ত উৎসগুলো বহিষ্কার করে দেয় না।

    ব্যাকটেরিয়া

    বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়া একটি ভাল সংজ্ঞায়িত কোষ চক্রের মধ্যে দিয়ে যায় না বরং পরিবর্তে তাদের ডিএনএ অনবরত অনুলিপিত করে; দ্রুত বর্ধনের সময়, এটি একই সময়ে প্রতিলিপন এর একাধিক রাউন্ডের ঘটাতে সাহায্য করে।[৩৯] E. coli তে, শ্রেষ্ঠ বৈশিষ্ট্যযুক্ত ব্যাকটেরিয়া, ডিএনএ রেপ্লিকেশন বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়, যেমন: হেমি-মিথাইলেশন এবং উৎপত্তি ক্রম স্বতন্ত্র রাখা, অনুপাত এডিনোসিন ট্রাইফসফেট (ATP) থেকে এডিনোসিন ডাইফসফেট (ADP), এবং প্রোটিন DnaA স্তর দ্বারা। এগুলো সমস্ত সূত্রকের সূচনাতে প্রবর্তক প্রোটিনের বাঁধাই নিয়ন্ত্রণ করে।

    কারণ E. coli GATC ডিএনএ সিকোয়েন্সকে মিথাইলেশন করে, হেমি-মিথাইলেটেড সিকোয়েন্স মধ্যে ডিএনএ সংশ্লেষণ এর ফলাফল নেই। এই হেমি-মিথাইলেটেড ডিএনএ প্রোটিন SeqA দ্বারা শনাক্ত করা হয়, যা মূল ক্রমকে আবদ্ধ করে এবং পৃথক করে; তদ্ব্যতীত, DnaA (প্রতিলিপন সূচনা করার জন্য প্রয়োজনীয়) হেমিমেথিলিটেড ডিএনএকে কম ভালভাবে আবদ্ধ করে। ফলস্বরূপ, নতুন প্রতিলিপিযুক্ত উৎসগুলো তাৎক্ষণিক ডিএনএর অনুলিপন এর অন্য রাউন্ড শুরু করতে বাধা দেয়।[৪০]

    ATP তৈরি হয় যখন কোষটি একটি সমৃদ্ধ মাধ্যমে থাকে, যা একটি নির্দিষ্ট আকারে পৌঁছে যাওয়ার পরে ডিএনএ প্রতিলিপনে ট্রিগার করে। ATP DnaA সাথে যুক্ত হতে ADP এর সাথে প্রতিযোগিতা করে এবং DnaA-ATP কমপ্লেক্স প্রতিলিপন শুরু করতে সক্ষম হয়। ডিএনএর প্রতিলিপনের জন্য একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক DnaA প্রোটিনও প্রয়োজন – প্রতিবার উৎসটি অনুলিপি করা হলে, DnaA এর জন্য বাইন্ডিং সাইটগুলোর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যায়, যাতে আরও ডিএনএর সংশ্লেষণের প্রয়োজন হয় যাতে আরেকটি প্রতিলিপন সূচনা করতে।

    E. coli এর মতো দ্রুত বর্ধমান ব্যাকটেরিয়াতে ক্রোমোজোম প্রতিলিপন কোষ বিভাজনের চেয়ে বেশি সময় নেয়। ব্যাকটেরিয়াগুলো এর পরবর্তী রাউন্ড শেষ হওয়ার আগে প্রতিলিপন এর নতুন রাউন্ড শুরু করে এটি সমাধান করে।[৪১] প্রতিলিপনের নতুন রাউন্ডটি কোষের ক্রোমোজোম গঠন করবে যা থেকে পরবর্তীতে কোষ বিভাজনের মাধ্যমে দুই প্রজন্ম জন্মগ্রহণ করে। এই প্রক্রিয়াটি ওভারল্যাপিং প্রতিলিপন চক্র তৈরি করে।

    ডিএনএ প্রতিলিপনের সমস্যা

    রেপ্লিকেশন স্ট্রেস এর অনেকগুলো কারণ বা ঘটনা রয়েছে, এর মধ্যে আছে[৪২]

    পলিমারেজ চেইন বিক্রিয়া

    গবেষকরা সাধারণত গবেষণাগারের মধ্যে পলিমারেজ চেইন বিক্রিয়া (PCR) ব্যবহার করে ডিএনএ প্রতিলিপিকরণ সম্পন্ন করেন। পিসিআর একজোড়া প্রাইমার ব্যবহার করে টেমপ্লেট ডিএনএর লক্ষ্য অঞ্চল বিস্তার লাভ করে এবং তারপরে থার্মোস্টেবল ডিএনএ পলিমারেজ ব্যবহার করে এই প্রাইমারের কাছ থেকে প্রতিটি দিকে অংশীদার স্ট্র্যান্ডকে পলিমারাইজ করে। একাধিক চক্রের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়াটির পুনরাবৃত্তি লক্ষ্যযুক্ত ডিএনএ অঞ্চলকে প্রশস্ত করে। প্রতিটি চক্রের শুরুতে, টেমপ্লেট এবং প্রাইমারের মিশ্রণটি উত্তপ্ত হয়, নতুন সংশ্লেষিত অণু এবং টেমপ্লেটকে পৃথক করে। তারপরে, মিশ্রণটি শীতল হওয়ার সাথে সাথে উভয়ই নতুন প্রাইমারের অ্যানেলিং এর জন্য টেমপ্লেট হয়ে যায় এবং পলিমারেজগুলো এগুলো থেকে প্রসারিত হয়। ফলস্বরূপ, লক্ষ্য অঞ্চলের অনুলিপিগুলোর সংখ্যা প্রতিটি রাউন্ড শেষে দ্বিগুণ হয়, তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পায়।[