বানু আউস (আরবী: بنو أوس অর্থ আউস বংশধর)৷এ গোত্রের বিখ্যাত একজন ব্যক্তির নাম ছিল আউস৷ তার নামে এ গোত্রটি বনু আউস নামে প্রসিদ্ধি পায়৷ বনু আউস মদিনার আরব গোত্রসমূহের মধ্যে প্রধান একটি গোত্র। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সহচরগণ হিজরত[১][২][৩] করে মদীনা যাওয়ার পর বানু আউস এবং বানু খাযরাজ (মদীনার আরেকটি গোত্রের নাম) তাদেরকে সর্বপ্রকার সাহায্য সহযোগীতা করেন৷ ফলে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুশি হয়ে এ উভয় গোত্রকে আন্সার উপাধিতে ভূষিত করেন৷ আনসার অর্থ সাহায্যকারীবৃন্দ। আউস ও খাযরাজ দুভাই ছিলেন৷ তাদের বাবার নাম হারিসা বিন ছা’লাবা(তিনি জাফনা উপগোত্রের একটি শাখাগোত্র বানু সালাবা এর প্রধান গোত্রপতি ও বানু ক্বায়লাহ শাখাগোত্রের সর্দার ছিলেন)৷ আর মায়ের নাম ক্বায়লাহ বিনতে কাহিল৷ মায়ের নামে এ দুগোত্র কে একত্রে বানু ক্বায়লাহ ( بنو قيلة) নামেও ডাকা হতো।[১]
নামকরণ
এ গোত্রের নামকরণ গোত্রের প্রথম ব্যক্তি আউস বিন হারেছা এর নামে। আউসের আঠারোতম ঊর্ধ্বতন পুরুষের নাম ক্বাহতান৷ মূল গোত্র থেকে যখন এ শাখা গোত্রটি পৃথক হচ্ছিলো তখন এর প্রবীন ব্যক্তি ছিলেন আউস৷ এজন্য তার নামেই গোত্রটি পরিচিতি পায়৷ [১]
ইতিহাস
প্রাক ইতিহাস
৩০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে[৪] মা’রিব বাঁধের বড় বন্যার কারণে ইয়েমেন থেকে কাহলানে অভিবাসিত হওয়ার সময়ে তালাবা বিন আমর, সকল আইসের পূর্ব পুরুষ, নিজের গোত্র থেকে আলাদা হয়ে যান এবং ইয়াসরিবে (মদিনা) বসবাস শুরু করে।[৫] এই এলাকা তখন ইহুদিতে শাসনাধীন ছিলো। বনু কয়লা গোত্র কিছুদিন ইহুদিদের প্রজা হিসেবে ছিলো। খাজরাজ গোত্রের মালিক বিন আজলান ইহুদিদের কাছ থেকে স্বাধীনতা আদায় করে নেন। ফলে আউজ এবং খাজরাজ গোত্র খেঁজুর বাগানের মালিকানা(শেয়ার) লাভ করে।[১] ৫ম শতকে বানু ক্বায়লাহ্ গোত্র ইয়াসরিবকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয় এবং ইহুদি গোত্রগুলো এক শতাব্দীর জন্য ইতিহাসের আড়ালে চাপা পড়ে।[৩]
ইসলামের আগমন
হিজরত (৬২২ খ্রিস্টাব্দ)
মুহাম্মদমক্কা কাফেরদের (মক্কার মূর্তিপুজারীগণকে ইসলামে কাফের নামে অভিহিত করা হয়) অত্যাচারে হিজরত করে মদিনা চলে আসেন। মদিনার বানু আউস এবং বানু খাজরাজ গোত্রের মধ্যকার বিরোধ নিরসনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। মদিনা সনদ এর ৩০-৩১ ধারায় বনু আউস গোত্রকে মুসলমানদের মিত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়।[৬] এর পর থেকে বনু আউস সহ মদিনার অন্যান্য গোত্রগুলো আনসার নামে পরিচিত পায়। ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দে কাব ইবনে আল আশরাফ বনু আউসের লোকের হাতে নিহত হয়।
বানু কুরাইজাহ – ৬২৭
বানু কুরাইজা ছিলো মদিনায় বসবাসরত একটি ইহুদি গোত্র। এই গোত্রের কিছু লোক ধর্মান্তরিত হয়। বানু কুরাইজা গোত্র মদিনার অন্যান্য গোত্রের সাথে মদীনা সনদে স্বাক্ষর করে। কিন্তু তারা গোপনে মক্কার কুরাইশদের সঙ্গে আঁতাত করে। মক্কার কুরাইশগন মদিনার মুসলমানদের আক্রমণ করে। যা খন্দকের যুদ্ধ নামে পরিচিত। ৬২৭ সালের এই যুদ্ধে কুরাইশগণ পরাজিত হয়ে মক্কায় পালিয়ে যায়। অন্যদিকে মদিনার অধিবাসী এবং মক্কা থেকে আগত মুসলিম অভিবাসীদের হাতে বনু কুরাইজা গোত্রের ইহুদিদের বড় অংশ নিহত হয়।
বানু কুরাইজা গোত্র আগের একটি যুদ্ধে বনু আউসের মিত্র বাহিনী ছিলো। মদিনাবাসীগণ যখন বানু কুরাইজাকে বিশ্বাসঘাতকতার জন্য বন্দি করলো তখন তারা বিচারের জন্য আউস গোত্রের প্রধান সাদ ইবনে মুয়াজ কে বিচারক নির্বাচন করলো।[৭] সাদ অভিযুক্ত গোত্রের পুরুষকে হত্যা এবং নারী ও শিশুকে দাস হিসেবে বন্দী করার রায় দেন।[৩] সাদ খন্দকের যুদ্ধে মারাত্বক আহত হয়েছিলেন। এর অল্প কিছুদিন পরে তিনি মারা যান।
অভিযান বলতে বোঝায় কোন তথ্য বা সংস্থান আবিষ্কারের উদ্দেশ্যে অনুসন্ধান করাকে। মানুষ সহ সকল প্রকার প্রাণীরা অভিযান করে থাকে। মানব ইতিহাসে, এর নাটকীয় উত্থান আবিষ্কারের যুগে ঘটেছিল যখন ইউরোপীয় অভিযাত্রীরা বিভিন্ন কারণে বিশ্বের বাকি অংশ যাত্রা করেছিলেন। সেই থেকে আবিষ্কারের যুগ পরবর্তী বড় অনুসন্ধানগুলি মূলত তথ্য অনুসন্ধানের উদ্দেশ্যেই ঘটেছিল।
ফিনিশিয়ানরা (খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ – খ্রিস্টপূর্ব ৩০০) ভূমধ্যসাগর এবং আনাতুলিয়া জুড়ে ব্যবসা করত যদিও তাদের বেশিরভাগ ভ্রমণপথ আজও অজানা। কিছু ফিনিশিয়ান নিদর্শনগুলিতে টিনের উপস্থিতি বোঝায় যে তারা সম্ভবত ব্রিটেন ভ্রমণ করেছিলেন। ভার্জিলের আনিড এবং অন্যান্য প্রাচীন উৎস অনুসারে, কিংবদন্তি কুইন দিদো ছিলেন সোরের ফিনিশিয়ান যিনি উত্তর আফ্রিকায় যাত্রা করেছিলেন এবং কার্থেজ শহরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
পশ্চিম আফ্রিকার কার্টেজিনান অভিযান
হ্যানো নেভিগেটর (খ্রিস্টপূর্ব ৫০০), একজন কার্থাজেইন অভিযাত্রী যিনি আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে অভিযান করেছিলেন।
উত্তর ইউরোপ এবং থুলিতে গ্রীক ও রোমানদের অভিযান
মার্সেই, পাইথিয়াসের গ্রীক অভিযাত্রী (৩৮০ – খ্রিস্টপূর্ব ৩১০ খ্রিস্টাব্দ) সর্বপ্রথম গ্রেট ব্রিটেন, জার্মানিতে অভিযান চালিয়েছিলেন এবং থুলিতে পৌঁছেছিলেন (সাধারণভাবে যাকে শিটল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ বা আইসল্যান্ড বলে মনে করা হতো)।
রোমান অভিযান
আফ্রিকা অভিযান
রোমানরা সাহারা মরুভূমি পার হওয়ার জন্য পাঁচটি বিভিন্ন পথ দিয়ে অভিযানের পরিকল্পনা করেছিল:
পশ্চিম সাহারার মধ্য দিয়ে নাইজার নদী এবং আসল টিমবুক্তু অভিমুখে।
এই সমস্ত অভিযানগুলি লিজিওনারিদের দ্বারা সমর্থিত এবং মূলত একটি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে সংঘটিত হয়েছিল। ৬২ খ্রিস্টাব্দে দুটি সেনাদল নীল নদের উৎস অনুসন্ধান করেছিলেন; সম্রাট নেরো কর্তৃক চালানো একমাত্র এই অভিযানটিকেই ইথিওপিয়া বা নুবিয়া বিজয়ের প্রস্তুতি বলে মনে হয়েছিল।
অনুসন্ধানের মূল কারণগুলির মধ্যে একটি ছিল স্বর্ণ লাভ করে উটের মাধ্যমে তা পরিবহন করা।
আফ্রিকার পশ্চিম এবং পূর্ব উপকূলের কাছাকাছি অভিযান রোমান জাহাজ দ্বারা সমর্থিত ছিল এবং নৌ বাণিজ্যগুলির সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত ছিল (মূলত ভারত মহাসাগরের দিকে)। রোমানরা উত্তর ইউরোপেও বিভিন্ন অভিযান চালিয়েছিল এবং এশিয়াতেচীন পর্যন্ত অভিযান করেছিল। খ্রিষ্টপূর্ব ৩০ অব্দ-৬৪০ খ্রিস্টাব্দ
টলেমেক মিশর অধিগ্রহণের সময় রোমানরা ভারতের সাথে বাণিজ্য শুরু করে। সাম্রাজ্যটির এখন মশলা বাণিজ্যের সাথে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে যা মিশর খ্রিস্টপূর্ব ১১৮ অব্দের প্রথম দিকে শুরু করেছিল। ১০০ খ্রিস্টাব্দ-১৬৬ খ্রিস্টাব্দ
এ সময়ে রোমান-চীনা সম্পর্ক শুরু হয়। টলেমি গোল্ডেন চেরোনাসি (অর্থাৎ মালয় উপদ্বীপ) এবং কাটিগারা বাণিজ্য বন্দরের কথা লিখেছেন, যা এখন উত্তর ভিয়েতনামের এসি ইও নামে পরিচিত। এটি চীনা হান সাম্রাজ্য এর একটি প্রদেশ জিয়াওঝোর অংশ।
পলিনেশিয়ানরা উপকূলবর্তী মানুষ ছিলেন, তারা নিউজিল্যান্ড আবিষ্কার করার সময় প্রায় ৫০০ বছর ধরে অভিযান চালানোর পর মধ্য ও দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরকে আবিষ্কার করেছিলেন। তাদের অভিযানের মূল আবিষ্কারটি ছিল আউটরিগার ক্যানো, যা মানুষ ও পণ্য পরিবহনের জন্য একটি দ্রুত এবং স্থিতিশীল মঞ্চে পরিণত হয়। ধারণা করা হয় যে, নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশ্যে করা ভ্রমণটি সুচিন্তিত ছিল।
আচরণগত বৈশিষ্ট্য
২০১৫ সালের একটি গবেষণা , যা মোবাইল ফোনের ডেটা এবং ইতালির ব্যক্তিগত যানবাহনের জিপিএস ট্র্যাকার এর উপর ভিত্তি করে তৈরি করাহয়েছিল, তা প্রমাণিত করে যে, ব্যক্তিরা স্বাভাবিকভাবে তাদের গতিশীলতার অভ্যাস অনুসারে দুটি সু-সংজ্ঞায়িত বিভাগে বিভক্ত হয়ে যায়, যার মধ্যে একটি হলো “অভিযাত্রী” এবং অপরটি হলো “প্রত্যাবর্তনকারী”।
ইতিহাস হল সমাজ, সভ্যতা ও মানুষের রেখে যাওয়া নিদর্শনের উপর গবেষণা ও সেখান থেকে অতীত সম্পর্কের সিদ্ধান্ত ও শিক্ষা নেবার শাস্ত্র। ইতিহাস সন্ধিবিচ্ছেদ করলে হয় ইতি হ আস, এই রকম ছিল। বাংলা ইতিহাস শব্দটির ইংরেজি পরিভাষা হচ্ছে হিস্টোরি। গ্রীক শব্দ হিস্টোরিয়া থেকেই এই হিস্টোরি শব্দটির উৎপত্তি। যার অর্থ কোন কিছু কারন সন্ধান। ইংরেজি শব্দ স্টোরি থেকে এই শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত কারন সন্ধান পাওয়া যায়। ১৯১১ সালের এনস্লাইকোপেডিয়া ব্রিটানিকাতে প্রকাশিত সংজ্ঞা মতে, ইতিহাস হল ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী, যাতে মানবজীবনে ঘটে যাওয়া সব বিষয়ই শুধু নয় প্রকৃতির ঘটনাবলীও অন্তর্ভুক্ত। সব কিছুই পরিবর্তিত হয় এং আধুনিক বিজ্ঞান দেখায় যে, কিছুই পরম নয়। ফলে, সমগ্র মহাবিশ্ব ও এর সকল অংশেরই ইতিহাস বিদ্যমান। বিস্তারিত…
মহামতি আলেকজান্ডার (Alexander the great) (জন্ম – জুলাইখ্রিস্টপূর্ব ৩৫৬, মৃত্যু জুন ১১, খ্রিস্টপূর্ব ৩২৩)পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম সফল সামরিক প্রধান। তিনি তৃতীয় আলেকজান্ডার বা মেসিডনের রাজা হিসেবেও পরিচিত। তিনি ছিলেন মেসিডোনিয়ার শাসনকর্তা। মেসিডোনিয়া বর্তমান গ্রীসের অন্তর্গত একটি অঞ্চল। তার পিতা ফিলিপ ছিলেন মেসিডোনিয়ার রাজা। তার মৃত্যুর পূর্বে তিনি পরিচিত পৃথিবীর বেশির ভাগ জয় (টলেমির মানচিত্র অনুযায়ী) করেছিলেন। আলেকজান্ডার তার সামরিক কৌশল ও পদ্ধতির জন্য বিশ্ব বিখ্যাত। তিনি পারস্যে অভিশপ্ত আলেকজান্ডার নামেও পরিচিত, কারন তিনি পারস্য সাম্রাজ্য জয় করেন এবং এর রাজধানী পারসেপলিস ধ্বংস করেন। তিনি ফার্সি ভাষায় “ইস্কান্দর, মধ্য পশ্চিমা স্থানে যুল-কারনাইন, আরবে আল-ইস্কান্দার আল কাবের”, উর্দুতে সিকান্দার-এ-আজম, পস্তুতে স্কান্দর, হিব্রুতে “আলেকজান্ডার মোকদন, আরমেনিয়ানয়ে ট্রে-কারনাইয়া”। তার এজাতীয় কিছু নামের অর্থ “দুই শিং বিশিষ্ট” (যুল-কারনাইন, ট্রে-কারনাইয়া), আবার উর্দু ও হিন্দিতে সিকান্দার যার অর্থ পারদর্শি” বা অত্যন্ত পারদর্শি।
আলেকজান্ডারের পিতা দ্বিতীয় ফিলিপ তার শাসনামলে গ্রিসের নগর রাষ্ট্রগুলোকে নিজের শাসনাধীনে আনেন। আলজান্ডার নিজেও এই নগররাষ্ট্র গুলিকে একত্রিত করতে অভিযান চালান কারন ফিলিপের মৃত্যুর পর এগুলো বিদ্রোহ করেছিল। এরপর আলেকজান্ডার একে একে পারস্য, আনাতোলিয়া, সিরিয়া, ফোনিসিয়া, জুডিয়া, গাজা, মিশর, ব্যাক্ট্রিয়া এবং মেসোপটেমিয়া জয় করেন। তার সাম্রাজ্য মেসিডোনিয়া থেকে পাঞ্জাব পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। পিতার মৃত্যুর পর আলেকজান্ডার পশ্চিমে অভিযান চালান ইউরোপ জয় করার জন্য। এরপর তিনি পূর্বে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করেন, কারন শৈশবে তার শিক্ষক বিশ্ববিখ্যাত দার্শনিক, বিজ্ঞানী এরিস্টোটল তাকে বলেছিলেন কোথায় ভূমি শেষ হয় এবং মহাসাগর শুরু হয়। আলেকজান্ডার তার সেনাবাহিনী ও প্রশাসনে বিদেশী (বিশেষ করে যারা গ্রিক বা মেসিডোনিয়ান নয়) ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করেন। এর মধ্যে কিছু জ্ঞানী ব্যক্তি তাকে “একত্রিকরণ”-এর ব্যাপারে ধারণা দেয়। তিনি তার সেনাবাহিনীতে বিদেশীদের সাথে বিবাহ উৎসাহিত করেন এবং নিজেও বিদেশী মেয়েদের বিয়ে করেন। প্রায় ১২ বছরের সামরিক অভিযানের পর আলেকজান্ডার মৃত্যু বরণ করেন। ধারণা করা হয় হয়ত তিনি ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড অথবা ভাইরাল এনকেফালাইটিস্ এর আক্রান্ত হয়ে মারা যান। হেলেনেস্টিক যুগে তার অভিযানের কাহিনী লোকের মুখে মুখে প্রচলিত ছিল। আলেকজান্ডারের অভিযানের ফলে বিভিন্ন সভ্যতার মিলন ঘটে (মিশর, গ্রিক, পারস্য, ভারতীয়) এক নতুন সভ্যতার শুরু হয়। এই সভ্যতাই হেলেনেস্টিক সভ্যতা। গ্রিক ও গ্রিসের বাইরের বিভিন্ন সভ্যতায় আলেকজান্ডার ইতিহাসে, সাহিত্যে, পুরাণে জীবিত হয়ে আছেন। … … … আরও জানুন
মুঘল সম্রাট আকবর এই সাম্রাজ্যের তৃতীয় এবং সর্বশ্রেষ্ট্র সম্রাট। পিতা সম্রাট হুমায়ুনের মৃত্যুর পর ১৫৫৬ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে আকবর ভারতের শাসনভার গ্রহণ করেণ। … … … আরো জানুন
… … … দার্শনিক সক্রেটিসের ছাত্র ছিলেন দার্শনিক প্লেটো। আবার প্লেটোর ছাত্র ছিলেন দার্শনিক এরিস্টোটল। আবার এরিস্টোটলের ছাত্র ছিলেন মহাবীর আলেকজান্ডার… … …
ইতিহাস[ক] হলো অতীত বৃত্তান্ত বা কালানুক্রমিক অতীত কাহিনি ও কার্যাবলির লিখন, বিশ্লেষণ ও অধ্যয়ন।[২][৩][৪][৫] তবে কোনো কোনো দার্শনিক (যেমন- বেনেদেত্তো ক্রোচে) মনে করেন, যে ইতিহাস হলো বর্তমান, কারণ অতীত ঘটনাগুলোই বর্তমানে “ইতিহাস” হিসাবে অধ্যয়ন করা হয়।[৬] বৃহৎ একটি বিষয় হওয়া সত্ত্বেও এটি কখনো মানবিক বিজ্ঞান এবং কখনো বা সামাজিক বিজ্ঞানের একটি শাখা হিসেবে আলোচিত হয়েছে। অনেকেই ইতিহাসকে মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞানের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন হিসেবে দেখেন। কারণ ইতিহাসে এই উভয়বিধ শাস্ত্র থেকেই পদ্ধতিগত সাহায্য ও বিভিন্ন উপাদান নেওয়া হয়। ইতিহাসের উদ্দেশ্য হলো বর্তমানের সাথে অতীতকে প্রাসঙ্গিক করে তোলা।[৬]
একটি শাস্ত্র হিসেবে ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করতে গেলে অনেকগুলো উপবিভাগের নাম চলে আসে, তার মধ্যে রয়েছে দিনপঞ্জি, ইতিহাস লিখন, কুলজি শাস্ত্র, প্যালিওগ্রাফি, ক্লায়োমেট্রিক্স ইত্যাদি। স্বাভাবিক প্রথা অনুসারে, ইতিহাসবেত্তাগণ ইতিহাসের লিখিত উপাদানের মাধ্যমে বিভিন্ন ঐতিহাসিক প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেন, যদিও কেবল লিখিত উপাদান হতে ইতিহাসে সকল তত্ত্ব উদ্ধার করা সম্ভব নয়। ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে যে উৎসগুলো বিবেচনা করা হয়, সেগুলোকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়– লিখিত, মৌখিক ও শারীরিক বা প্রত্যক্ষকরণ। ইতিহাসবেত্তারা সাধারণত তিনটি উৎসই বিশ্লেষণ করে দেখেন। তবে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে লিখিত উপাদান সর্বজনস্বীকৃত। এই উৎসটির সাথে লিখন পদ্ধতির ইতিহাস অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত। হেরোডোটাসকে ইতিহাসের জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
শব্দের উৎপত্তি
ইংরেজি “হিস্টরি” (History) শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ হিসেবে “ইতিহাস” শব্দটি এসেছে। ইংরেজি History শব্দটি এসেছে গ্রিক ও লাতিন শব্দ ἱστορία – Historia থেকে, যার অর্থ সত্যানুসন্ধান বা গবেষণা। ইতিহাসের জনক হিসেবে খ্যাত গ্রিসের হেরোডোটাস তাঁর গ্রিক ও পারসিকদের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষের ঘটনাসম্বলিত গ্রন্থের নামকরণ করেন Historia (যার ইংরেজি অনুবাদ করা হয়েছে “Histories”)। মূলত ঘটনার অনুসন্ধান অর্থে হেরোডোটাস Historia শব্দটি ব্যবহার করেন।
বাংলা ভাষায় “ইতিহাস” শব্দটি এসেছে ‘ইতিহ’ শব্দমূল থেকে, যার অর্থ ঐতিহ্য। এটি হলো একটি তৎসম শব্দ, অর্থাৎ সংস্কৃত ভাষা থেকে আগত। ইতিহাস শব্দটির রূপতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায়- ইতহ + √অস্ + অ – যার অর্থ হলো “এমনটিই ছিল বা এমনটিই ঘটেছিল।”
ইতিহাস লিখনধারার সম্পর্কিত বেশ কিছু অর্থ রয়েছে। প্রথমত, এটি দিয়ে বুঝানো হয় কীভাবে ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে, যেমন- পদ্ধতি ও অনুশীলনের বিকাশের গল্প। দ্বিতীয়ত, এটি বুঝায় কী সৃষ্টি করেছে, যেমন- ইতিহাস লিখনরীতির নির্দিষ্ট বিষয়। তৃতীয়ত, এটি দিয়ে বুঝানো হয় কীভাবে ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে, যেমন- ইতিহাসের দর্শন। অতীতের বর্ণনার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তৃতীয় ধারণাটি প্রথম দুটি ধারণার সাথে সম্পর্কযুক্ত করা যায়, যা মূলত বর্ণনা, ব্যাখ্যা, বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ, সাক্ষ্য বা প্রমাণের ব্যবহার, বা অন্যান্য ইতিহাসবেত্তাদের উপস্থাপন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করে। ইতিহাস কি একক বর্ণনা নাকি ধারাবাহিক বর্ণনা হিসেবে শিখানো হবে তা নিয়ে পেশাদারী ইতিহাসবেত্তাদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে।[৭][৮]
ইতিহাসের দর্শন হলো দর্শনের একটি শাখা যেখানে ঘটনাবলির গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়, বিশেষ করে মানবীয় ইতিহাস।[৯] এছাড়া এই শাখায় এর বিকাশের সম্ভাব্য পরমকারণমূলক সমাপ্তির কথা বিবেচনা করা হয়, যেমন- মানবীয় ইতিহাসের পদ্ধতিতে কোনো নকশা, কারণ, নীতি, বা সমাপ্তি রয়েছে কিনা। ইতিহাসের দর্শনকে ইতিহাস লিখনধারার সাথে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়। ইতিহাস লিখনধারায় ইতিহাসের পদ্ধতি ও অনুশীলন এবং ইতিহাসকে একটি নির্দিষ্ট প্রাতিষ্ঠানিক বিষয় হিসেবে এর বিকাশের উপর জোড় দেওয়া হয়।[১০] আবার ইতিহাসের দর্শনকে দর্শনের ইতিহাসের সাথে গুলিয়ে ফেলা যাবে না, কারণ দর্শনের ইতিহাস হলো একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে দর্শনের ধারণাসমূহের বিকাশ নিয়ে অধ্যয়ন।
অধ্যয়নের ক্ষেত্র
যুগ নির্ধারণ
ইতিহাস এক নির্দিষ্ট সময়ে ঘটা ঘটনাবলি ও উন্নয়নকে কেন্দ্র করে লিখিত হয়। ইতিহাসবেত্তাগণ সেই সময় বা যুগকে একটি নির্দিষ্ট নাম দিয়ে চিহ্নিত করেন।[১১] ভৌগোলিক অবস্থানের উপর নির্ভর করে এই নামসমূহ ভিন্ন হতে পারে, যেমন- সেই যুগের শুরুর সময় ও সমাপ্তির সময়। শতাব্দী ও দশক হলো বহুল ব্যবহৃত যুগ নির্দেশক এবং কালপঞ্জি অনুসারে এই যুগ নির্ধারিত হয়। বেশিরভাগ যুগ পূর্ববর্তী ঘটনার উপর নির্ভর করে নির্ধারিত হয় এবং এর ফলে এতে পূর্ববর্তী সময়ে ব্যবহৃত মৌলিক ধারণা ও বিচারবুদ্ধির প্রতিফলন দেখা যায়। যে পদ্ধতিতে যুগসমূহের নাম দেওয়া হয় তা এই যুগসমূহকে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হচ্ছে এবং কীভাবে অধ্যয়ন করা হচ্ছে তাকে প্রভাবিত করে।[১২]
নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অবস্থান, যেমন- মহাদেশ, দেশ ও শহরও ইতিহাস অধ্যয়নের ক্ষেত্র। ঐতিহাসিক ঘটনাবলি কেন ঘটেছিল তা জানা গুরুত্বপূর্ণ। এই কারণ জানার জন্য ইতিহাসবেত্তাগণ ভূগোল অধ্যয়ন করে থাকেন।
আফ্রিকার ইতিহাস শুরু হয় এই মহাদেশে আধুনিক মানব সভ্যতার প্রথম বিকাশের মধ্য দিয়ে এবং বিভিন্ন রাষ্ট্র গঠনের মধ্য দিয়ে আধুনিক বর্তমান কাল পর্যন্ত চলতে থাকে।
মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস হলো খ্রিস্টপূর্ব ৩,০০০ অব্দে বিকাশ লাভ করা সর্বপ্রাচীন সভ্যতার মেসোপটেমিয়া (ইরাক) থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত চলমান মধ্য প্রাচ্যের ইতিহাস।
অ্যান্টার্কটিকার ইতিহাস ধারণার বিকাশ ঘটে প্রারম্ভিক পশ্চিমা তত্ত্ব তেরা আউস্ত্রালিস নামক বৃহৎ মহাদেশের ধারণা থেকে, এবং ধারণা করা হতো তা পৃথিবীর দক্ষিণে অবস্থিত।
নিউজিল্যান্ডের ইতিহাস শুরু হয় যখন ৭০০ বছর পূর্বে পলিনেশীয় কর্তৃক আবিষ্কৃত এবং তাঁরা সেখানে বসতি স্থাপন করে।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপসমূহের ইতিহাস হলো প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপসমূহের ইতিহাস।
যদিও অর্থনৈতিক ইতিহাস উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিক থেকে প্রতিষ্ঠা লাভ করে, বর্তমান সময়ে অর্থনীতি বিভাগে এই বিষয়ক প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রদান করা হয় এবং তা প্রথাগত ইতিহাস বিভাগ থেকে ভিন্ন।[১৩] ব্যবসায় তত্ত্বে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়িক কৌশল, সরকারি নিয়মকানুন, শ্রম বিভাগের সম্পর্কের ইতিহাস ও সমাজে এর প্রভাব বর্ণিত হয়। এছাড়া এতে নির্দিষ্ট কোম্পানি, নির্বাহী, ও উদ্যোক্তাদের জীবনী নিয়ে আলোচনা করা হয়। ব্যবসায় তত্ত্ব অর্থনৈতিক ইতিহাসের সাথে সম্পর্কিত এবং তা ব্যবসায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠ দান করা হয়।[১৪]
ধর্মের ইতিহাস শতাব্দীকাল ধরে ধর্মবহির্ভূত ও ধার্মিক দুই শ্রেণির ইতিহাসবেত্তাদের কাছে প্রধান বিষয় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, এবং ধর্মীয় শিক্ষালয় ও সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে তা শিখানো হচ্ছে। এই ধরনের ইতিহাস বিষয়ক প্রধান সাময়িকীসমূহ হলো চার্চ হিস্টরি, দ্য ক্যাথলিক হিস্টরিক্যাল রিভিউ, এবং হিস্টরি অফ রিলিজিয়ন্স।[১৫] সাধারণত এর বিষয়বস্তু হয়ে থাকে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও শৈল্পিক দিক, এমনকি ধর্মতত্ত্ব ও প্রার্থনার বিধিও। এই বিষয়ের অধীনে পৃথিবীর যে সকল অঞ্চল ও এলাকায় মানুষ বসবাস করেছে, সে সকল অঞ্চল ও এলাকার ধর্ম নিয়ে অধ্যয়ন করা হয়।[১৬]
পরিবেশগত ইতিহাস হলো ইতিহাসের একটি নবীন ক্ষেত্র, যা ১৯৮০-এর দশকে বিকাশ লাভ করে। এতে পরিবেশের ইতিহাস এবং পরিবেশের উপর মানুষের কর্মকাণ্ডের প্রভাব নিয়ে আলোকপাত করা হয়।[১৭]
বিশ্বের ইতিহাস হলো গত ৩০০০ বছর ধরে প্রধান প্রধান সভ্যতার বিকাশের অধ্যয়ন। বিশ্বের ইতিহাস মূলত শিক্ষার একটি ক্ষেত্র। বিষয়টি ১৯৮০-এর দশকের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র,[১৮] জাপান[১৯] ও অন্যান্য দেশে বিশ্বায়নের ফলশ্রুতিতে জনপ্রিয়তা লাভ করে।
সংস্কৃতির ইতিহাস হলো সমাজে শিল্পকলা ও মানুষের চিত্র ও দৃশ্য ধারণার অধ্যয়ন। ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকে এটি সামাজিক ইতিহাসের স্থলাভিষিক্ত হয়। এটি মূলত নৃবিজ্ঞান ও ইতিহাসের সমন্বিত রূপ যেখানে ভাষা, জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক প্রথা ও ঐতিহাসিক ঘটনাবলির সাংস্কৃতিক ব্যাখ্যা প্রদান করে থাকে। এতে অতীতে মানুষের জ্ঞানচর্চা, প্রথা ও শিল্পের নথি ও বর্ণনা পরীক্ষা করা হয়। অতীতে মানুষ কীভাবে তাদের স্মৃতি ধরে রেখেছিল তা সাংস্কৃতিক ইতিহাসের আলোচনার প্রধান বিষয়।[২০]
সেনাবাহিনীর ইতিহাস হলো যুদ্ধবিগ্রহ, যুদ্ধ কৌশল, যুদ্ধ, অস্ত্র ও যুদ্ধের মনস্তত্ত্ব বিষয়ক ধারণা। ১৯৭০-এর দশকের পর থেকে আবির্ভূত হওয়া নব্য সেনাবাহিনীর ইতিহাস সেনাপ্রধানদের চেয়ে সৈন্যদের প্রতি বেশি আলোকপাত করে, বিশেষ করে রণকৌশলের চেয়ে তাঁদের মনস্তত্ত্ব এবং সমাজ ও সংস্কৃতিতে যুদ্ধ বিগ্রহের বিরূপ প্রভাব নিয়ে আলোচনা করে।[২১]
ইতিহাসবেত্তা
বেনেদেত্তো ক্রোচে
পান চাও, সৌজন্যমূলক নাম হুইপান, এখন পর্যন্ত জানতে পারা প্রথম চীনা ইতিহাসবেত্তা ছিলেন।
পেশাদার ও অপেশাদার ইতিহাসবেত্তগণ পূর্ববর্তী ঘটনাবলি আবিষ্কার, সংগ্রহ, সংগঠিত ও উপস্থাপন করেন। তাঁরা প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ, পূর্বের লিখিত মৌলিক উৎস ও অন্যান্য উপায়ে, যেমন- স্থানের নামের তথ্য আবিষ্কার করেন। ইতিহাসবেত্তাদের তালিকায় ঐতিহাসিক যুগের কালক্রম অনুযায়ী তাদের বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়, বিশেষ করে তাদের ইতিহাস লেখার সময় অনুসারে কারণ তিনি যে সময়ে বর্তমান ছিলেন সেই সময়ের ইতিহাস না লিখে অন্য কোনো সময়ের ইতিহাস রচনায় বিশেষজ্ঞ হতে পারেন। কালনিরূপক ও আখ্যানকারগণ যদিও ইতিহাসবেত্তা নন, তবে কিছু ক্ষেত্রে তাঁদেরকেও ইতিহাসবেত্তাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে থাকে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
ছদ্মইতিহাস হলো এমন লিখিত রূপ যার সারমর্ম ঐতিহাসিক প্রকৃতির, কিন্তু ইতিহাস লিখনধারার চিরাচরিত রূপ থেকে ভিন্ন এবং এতে পরিণতি ভিন্ন হয়ে থাকে। এটি ঐতিহাসিক নেতিবাচকতার সাথে সম্পৃক্ত এবং জাতীয়, রাজনৈতিক, সেনাবাহিনী ও ধর্ম বিষয়ে নতুন, কল্পনাপ্রসূত ও বিরোধপূর্ণ ঐতিহাসিক প্রমাণের মাধ্যমে উপসংহার টেনে থাকে।[২২]
মানব সভ্যতার ইতিহাস প্রকৃতপক্ষে মানুষের বিকাশের ইতিহাস, কিন্তু প্রশ্নটি সবসময় বিতর্কিত ছিল যে আদিমানুষ ও তাঁদের সভ্যতা কখন ও কোথায় বিকশিত হয়েছিল। ইতিহাসের এই অধ্যয়নকে বলা হয় প্রাগৈতিহাস। অর্থাৎ ইতিহাসের আগের ইতিহাস। প্রাগৈতিহাসিক সময়ের মানবসভ্যতা চারটি ভাগে বিভক্ত-[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
বাংলাদেশে বর্তমানে ১২টি সিটি কর্পোরেশন রয়েছে।[১] এর মধ্যে দুইটি রাজধানী ঢাকায় রয়েছে। সিটি কর্পোরেশনগুলো বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ও নাগরিক কার্য সম্পাদন করে থাকে।[২]
আটটি প্রধান প্রশাসনিক অঞ্চলে বিভক্ত যাদের বাংলায় বিভাগ হিসেবে অভিহিত করা হয়। প্রত্যেকটি বিভাগের নাম ওই অঞ্চলের প্রধান শহরের নামে নামকরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের বিভাগগুলো হলো:
ব্রিটিশ শাসনামলে তৎকালীন বাংলা প্রদেশে সর্বপ্রথম বিভাগ গঠন করা হয়। সেসময় বর্তমান বাংলাদেশের ভূখণ্ডে রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম এই তিনটি বিভাগ গঠন করা হয়। পরবর্তীতে রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের একাংশ নিয়ে ১৯৬০ সালে খুলনা বিভাগ গঠিত হয়। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে এই চারটি বিভাগ ছিল।
১৯৮২ সালে ঢাকা বিভাগ এবং ঢাকা শহরের ইংরেজি বানান Dacca (ঢাক্কা) কে পরিবর্তন করে Dhaka (ঢাকা) করা হয় যাতে বাংলা উচ্চারণের সাথে ইংরেজি বানান আরও সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।[১]
খুলনা বিভাগের একাংশ নিয়ে ১৯৯৩ সালে বরিশাল বিভাগ গঠিত হয়, এবং ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম বিভাগকে ভেঙে সিলেট বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১০ সালে ২৫ শে জানুয়ারি বৃহত্তর রংপুর আর দিনাজপুর অঞ্চল নিয়ে রংপুর বিভাগ গঠন করা হয়, যা আগে রাজশাহী বিভাগের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তে অষ্টম বিভাগ হিসেবে ময়মনসিংহ বিভাগের নাম ঘোষণা করা হয়।[২] পূর্বে এটি ঢাকা বিভাগের অংশ ছিল।
বিভাগের অবস্থান
নিম্নলিখিত টেবিলে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক পরিচালিত ২০১১ সালের জনসংখ্যা ও আবাসন জনগণনা থেকে পাওয়া হিসেবে বাংলাদেশের তৎকালীন সাতটি বিভাগ সম্পর্কে কিছু পরিসংখ্যান রূপরেখা তুলে ধরা হল।
সংসদ সদস্যগণবাংলাদেশের বিভাগসমূহে আইন এবং নির্বাহী বিভাগের প্রধান। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ব্যবস্থা সংসদীয় পদ্ধতির। এই ব্যবস্থায় সরকার প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন প্রধানমন্ত্রী। বহুদলীয় গণতন্ত্র পদ্ধতিতে এখানে জনগণের সরাসরি ভোটে সংসদ সদস্যরা নির্বাচিত হন। নির্বাহী ক্ষমতা সরকারের হাতে ন্যস্ত থাকে। সংসদ সদস্যগণ বিভাগের মধ্যে আইন বিভাগের প্রধান হিসেবে ক্ষমতা প্রয়োগ করেন। যেহেতু এমপিরাই মন্ত্রীপরিষদের সদস্য সেহেতু তারাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বা তার প্রতিনিধি হিসেবে বিভাগ পর্যায়ে নির্বাহী বিভাগ বা শাসন বিভাগ পরিচালনা করেন। বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম অনুযায়ী সংসদ সদস্যদের পদক্রম ১২ নং ক্রমিকে অবস্থিত।
চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিভাগসমূহের জেলার প্রধান ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি একাধারে জেলার ম্যাজিস্ট্রেটদের অধিকর্তা, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রধান বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, জেলা ম্যাজিস্ট্রেসির কর্ণধার এবং জাস্টিস অব পিস বা শান্তি রক্ষাকারী বিচারপতি হিসেবে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার নিমিত্তে ত্বরিত সিদ্ধান্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দায়িত্ব ও ক্ষমতাপ্রাপ্ত।[৮] তিনিই জেলার প্রধান ম্যাজিস্ট্রেট। জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, সর্বত্র শান্তি রক্ষা করা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তার দায়িত্ব। ফৌজদারি কার্যবিধির বিধান মোতাবেক প্রাপ্ত ক্ষমতাবলে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটজেলারপুলিশ, প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও বিভাগগুলো ক্ষমতার অপব্যবহার করছে কিনা বা তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে কিনা তা দেখভাল করেন। জেলা ও দায়রা জজ এবং চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জেলাতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতির সাথে যোগাযোগের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটবাংলাদেশেরজেলার দ্বিতীয় প্রধান কোর অফিসার বা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা এবং জেলার সর্বোচ্চ কর্মকর্তা বা প্রধান কোর অফিসার জেলা ও দায়রা জজের পরেই তার অবস্থান। বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম অনুযায়ী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পদক্রম ১৭ নং ক্রমিকে অবস্থিত।[৯][১০]
বিভাগীয় কমিশনার বাংলাদেশের আমলাতান্ত্রিক কাঠামোতে বিভাগের মুখ্য আমলা ও রাজস্ব কর্মকর্তা। তিনি তার অধিক্ষেত্রের সকল জেলা প্রশাসকের রাজস্ব, উন্নয়ন ও প্রশাসন সংক্রান্ত কাজের তদারকি করেন। কেন্দ্রীয় সরকারের কার্যাবলী বিভাগীয় পর্যায়ে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিভাগীয় কমিশনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। যুগ্মসচিব বা অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের সাধারণত বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে সরকার কর্তৃক নিয়োগ প্রদান করা হয়। বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম অনুযায়ী বিভাগীয় কমিশনারের পদক্রম ২১ নম্বরে অবস্থিত।
উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) রেঞ্জ পুলিশের প্রধান। রেঞ্জ পুলিশ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য তিনি তার অধীনস্থ জেলারপুলিশ সুপারদের কাজকে নিয়মিত তদারকি করেন।[১১][১২] স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উপ মহাপুলিশ পরিদর্শকদের নিয়োগ, পদায়ন ও বদলি করে থাকে। বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম অনুযায়ী উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শকের পদক্রমের অবস্থান ২২ নম্বরে।
জেলা প্রশাসক বিভাগসমূহের জেলার মুখ্য আমলা ও ভূমিরাজস্ব কর্মকর্তা। তিনি একই সাথে জেলা কালেক্টর, ডেপুটি কমিশনার ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। ফলে তিনি ভূমি ব্যবস্থা পরিচালনা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমন্বয় সাধন এবং সাধারণ ও স্থানীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে কাজ করেন। জেলা প্রশাসক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন প্রতিনিধি। তিনি তার কাজের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের নিকট জবাবদিহি করেন। তিনি জেলার মুখ্য প্রটোকল অফিসার হিসেবে জেলাতে সফরকারী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্রটোকল দেবার দায়িত্ব পালন করেন। ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অনুযায়ী জেলা প্রশাসকের পদক্রম ২৪।
পুলিশ সুপার বিভাগের জেলার পুলিশ বাহিনীকে নেতৃত্ব দেন। তিনি থানায় দায়েরকৃত মামলার যথাযথ তদন্ত নিশ্চিত করে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক নির্ধারিত আমলী আদালতের অধিক্ষেত্রের প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের এর নিকট পুলিশ রিপোর্ট দাখিলের ব্যবস্থা করেন। পুলিশ সুপার অপরাধ প্রতিরোধ, উদঘাটন এবং অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে সচেষ্ট থাকেন। তিনি আদালতের নির্দেশ মোতাবেক ওয়ারেন্ট, সমন, তদন্তের আদেশ ইত্যাদি তামিল ও বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। আদালত কর্তৃক সুষ্ঠু বিচারকার্য সম্পাদনার স্বার্থে তিনি প্রসিকিউশন বিভাগের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদালতের সাথে সমন্বয় ও সম্পর্ক রক্ষা করেন। ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সেপুলিশ সুপারের পদক্রম ২৫।
বাংলাদেশের ৮টি বিভাগ ৬৪টি জেলাতে বিভক্ত। সর্বশেষ ময়মনসিংহ বিভাগ। জেলাগুলি আবার ৪৯৫টি উপজেলায় বিভক্ত।
বাংলাদেশের প্রথম জেলা চট্টগ্রাম জেলা ১৬৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। রংপুর বাংলাদেশ দ্বিতীয় জেলা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৬ ডিসেম্বর ১৭৬৯ সালে। সর্বশেষ জেলা ফেনী জেলা ৭ নভেম্বর ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়।
আয়তন অনুযায়ী বাংলাদেশের বৃহত্তম জেলা হল রাঙ্গামাটি এবং বাংলাদেশের ক্ষুদ্রতম জেলা হল নারায়ণগঞ্জ।
বর্তমানে বাংলাদেশের ৮টি বিভাগের অন্তর্গত ৬৪টি জেলায় মোট ৪৯৫টি উপজেলা রয়েছে। সর্বশেষ গঠিত উপজেলাগুলি হল মাদারীপুরের ডাসার উপজেলা, কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলা ও সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলা।[১]বাংলাদেশের উপজেলাসমূহের তালিকা নিম্নরূপ:
উপজেলা হচ্ছে বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ একক। কয়েকটি গ্রাম বা ইউনিয়ন মিলে একটি উপজেলা গঠিত হয় এবং কয়েকটি উপজেলা নিয়ে একটি জেলা গঠিত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের ৮টি বিভাগের অন্তর্গত ৬৪টি জেলায় মোট ৪৯৫ টি উপজেলা রয়েছে।[১] সর্বশেষ গঠিত উপজেলাগুলি হল মাদারীপুরের ডাসার উপজেলা, কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলা ও সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলা।
উপজেলা শব্দটি সংস্কৃত ও আরবি ভাষার সংমিশ্রণে সৃষ্টি হয়েছে। উপ হলো সংস্কৃত উপসর্গ আর জেলা শব্দটি আরবি শব্দ “দিলা” থেকে উৎপন্ন।
গঠন ইতিহাস
১৯৮২ সালের ৭ই নভেম্বর স্থানীয় সরকার (উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা পুনর্গঠন) অধ্যাদেশ ১৯৮২ বলে প্রথমে উন্নীত থানা পরিষদ গঠন করা হয় এবং থানা পর্যায়ে বিকেন্দ্রীভূত প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। পরবর্তীকালে উন্নীত থানা পরিষদকে উপজেলা পরিষদে রূপান্তরিত করা হয়। এ সময়ে বাংলাদেশের প্রায় সমস্ত উপজেলাকে পূর্ণাঙ্গ প্রশাসনিক কেন্দ্রে রূপ দেয়া হয়। এই অধ্যাদেশটি ১৯৯১ সালে বাতিল করা হয়। পরবর্তীকালে ১৯৯৮ সালে জাতীয় সংসদে উপজেলা অধ্যাদেশ ১৯৯৮ পাস করে পুনরায় উপজেলা ব্যবস্থা প্রণয়ন করা হয়। কার্যালয় আদেশের মাধ্যমে ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৮ থেকে এই অধ্যাদেশ কার্যকরী হয়। সর্বশেষ ২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদ আইন সংশোধন হয়। [২]
উপজেলার প্রধান
আইন বিভাগ
সংসদ সদস্যগণবাংলাদেশের উপজেলাতে আইন এবং নির্বাহী বিভাগের প্রধান। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ব্যবস্থা সংসদীয় পদ্ধতির। এই ব্যবস্থায় সরকার প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন প্রধানমন্ত্রী। বহুদলীয় গণতন্ত্র পদ্ধতিতে এখানে জনগণের সরাসরি ভোটে সংসদ সদস্যরা নির্বাচিত হন। নির্বাহী ক্ষমতা সরকারের হাতে ন্যস্ত থাকে। সংসদ সদস্যগণ উপজেলাতে আইন বিভাগের প্রধান হিসেবে ক্ষমতা প্রয়োগ করেন। যেহেতু এমপিরাই মন্ত্রীপরিষদের সদস্য সেহেতু তারাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বা তার প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা পর্যায়ে নির্বাহী বিভাগ বা শাসন বিভাগ পরিচালনা করে। উল্লেখ্য, এক বা একাধিক উপজেলা নিয়ে একটি জাতীয় সংসদ আসন গঠিত হয়। বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম অনুযায়ী সংসদ সদস্যদের পদক্রম ১২ নং ক্রমিকে অবস্থিত।
উপজেলা চেয়ারম্যান হলেন বাংলাদেশেরউপজেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী। সংশোধিত উপজেলা পরিষদ (কার্যক্রম বাস্তবায়ন) বিধিমালার ১৪(১) উপবিধি অনুযায়ী উপজেলার দপ্তরগুলোর কর্মকর্তা উপজেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তরিত বিষয়ে সব কাগজপত্র ও নথি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে অনুমোদনের জন্য পেশ করবেন।
অফিসার ইন চার্জ (ওসি) পুলিশ থানার মুখ্য কর্মকর্তা। তিনি প্রথম শ্রেণীর নন-ক্যাডার অফিসার। পুলিশ ইন্সপেক্টর পদের কর্মকর্তারা অফিসার ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করেন।
একটি উপজেলার প্রশাসনিক দায়িত্বে নিয়োজিত স্থানীয় জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত পরিষদ উপজেলা পরিষদ নামে পরিচিত। উপজেলা পরিষদের মেয়াদকাল মিটিংয়ের দিন থেকে ৫ বছর। সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন সরকারি কর্মকর্তা বা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এই পরিষদের সচিব হিসেবে সমস্ত নির্বাহী দায়িত্ব পালন করেন।[১০]
উপজেলা পর্যায়ের সমস্ত কার্যাবলীকে মূলত সংরক্ষিত ও হস্তান্তরিত এই দুইভাগে ভাগ করা হয়। সংরক্ষিত দায়িত্বের মধ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা, দেওয়ানী ও ফৌজদারী বিচার, রাজস্ব প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ, প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহ, বৃহৎ শিল্প, খনন কার্য এবং খনিজ সম্পদের উন্নয়ন ইত্যাদি দায়িত্ব অন্যতম।
অন্যদিকে হস্তান্তরিত দায়িত্বের মধ্যে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, আন্তঃ উপজেলা সড়ক নির্মাণ ও সংরক্ষণ, কৃষি সম্প্রসারণ ও কৃষি উপকরণ সরবরাহ ও সেচ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণ ও পয়ঃ নিষ্কাশন ব্যবস্থা প্রণয়ন ইত্যাদি কার্যক্রম অন্তর্ভূক্ত।