Tag: BTEB January-March 2016

  • ডিম

    ডিম

    বেশিরভাগ পাখিসরীসৃপে ডিম হল নিষিক্ত ডিম্বাণুর মাধ্যমে সৃষ্ট জাইগোট। ডিম্বস্ফোটোনের জন্যে ডিমের ভেতর যথাযথ তাপমাত্রা বজায় রাখার ব্যবস্থা থাকে এবং ভ্রূণের প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও নিরাপত্তাও ডিম সরবরাহ করে। ভ্রূণ পরিণতি লাভ করার পর ডিম ফুটে বেরিয়ে আসে। কিছু ভ্রুণের ডিমের খোলস ভাঙ্গার জন্যে অস্থায়ী ডিম দাঁতও থাকতে দেখা যায়।

    ডিম

    ওভিপ্যারাস প্রাণিরা ডিম পেড়ে থাকে, মায়ের শরীরের অভ্যন্তরের ভ্রুণের খুবই সামান্য বা কোন বিকাশই ঘটে না। ডিম পর্যবেক্ষণ ও সংগ্রহ করার বিদ্যাকে উওলজি বলা হয়।

    সরীসৃপ, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণী যারা জলে ডিম পাড়ে না, তাদের ডিম একটি রক্ষাকারী আবরণে আবৃত থাকে, যাকে ডিমের খোসা বলা হয়। এই আবরণ নমনীয় বা অনমনীয় – দুইই হতে পারে। যে বিশেষ ঝিল্লি দ্বারা ডিম প্রতিপালিত হয় তা সকল এমনিটোনেরই বৈশিষ্ট্য, যার মধ্যে স্তন্যপায়ীরাও অন্তর্ভুক্ত।

    ১.৫ কেজি ওজনের অস্ট্রিচের ডিম এখন পর্যন্ত জানা অস্তিত্বশীল সবচেয়ে বড় কোষ, যদিও এপিওমিস এবং কিছু কিছু ডাইনোসরের ডিম এর চাইতেও বড় হত। বি হামিংবার্ডের ডিম পাখিদের মধ্যে ক্ষুদ্রতম, ওজন মাত্র আধ গ্রাম। কিছু সরীসৃপ ও বেশিরভাগ মাছের ডিম এর চাইতেও ছোট হয়, এবং কীটপতঙ্গ ও অমেরুদণ্ডীদের ডিম তার চাইতেও ক্ষুদ্র।

    পাখির ডিম

    গ্যালারি

    • খোসাবিহীন অবস্থায় জমাটবদ্ধ মুরগীর ডিম।
    • ডিম ফুটে কচ্ছপের বাচ্চা বের হচ্ছে।
    • কীট-পতঙ্গ প্রায়ই গাছের পাতার নিচের দিকে ডিম পাড়ে।
    • ছবিতে দেখানো হেরিং মাছের ডিমের মত সব মাছের ডিম স্বচ্ছ এবং ডিম পাড়ার পরই উর্বর হয়।
    • স্কেট এবং কিছু হাঙ্গরের অনন্য আকৃতির ডিম্বথলি থাকে যাকে মারমেইডস পার্স (mermaid’s purse) বলে।

    ডিমের পুষ্টি গুণ

    ডিম একটি সহজলভ্য ও উন্নতমানের আমিষজাতীয় খাদ্য; যাতে রয়েছে প্রাকৃতিক ভিটামিন, যা দেহগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সব ধরনের ডিমে রয়েছে অতি মূল্যবান ওমেগা-৩, যা হৃৎপিণ্ডকে কার্যকর রাখতে সাহায্য করে। একটি মাঝারি আকারের রান্না করা ডিমে (50 গ্রাম) 78 ক্যালোরি, 6.29 গ্রাম প্রোটিন, 0.56 গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং 5.3 গ্রাম মোট ফ্যাট রয়েছে, যার মধ্যে 1.6 গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট, 2.0 গ্রাম মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, 0.7 গ্রাম ফ্যাট, 0.7 গ্রাম। এবং 186 মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল।[১]

    মুরগির ডিমের পুষ্টি গুণ

    মুরগির ডিম পোচ

    একটি সাধারণ মুরগির ডিমে প্রোটিন আছে প্রায় ছয় গ্রাম, যাতে রয়েছে মানবদেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় নয়টি অ্যামিনো অ্যাসিড। মুরগির ডিমে রয়েছে অতি মূল্যবান ওমেগা-৩, যা হৃৎপিণ্ডকে কার্যকর রাখতে সাহায্য করে। কোলিন ডিমের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা গর্ভবতী মায়ের মস্তিষ্কজনিত জটিলতা দূরীকরণে সহায়তা করে, গর্ভাবস্থায় শিশুর মেধা ও স্মৃতি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ডিমে আছে ফলিক অ্যাসিড অথবা ফোলেট, যা ত্রুটিপূর্ণ সন্তান জন্মদানের ঝুঁকি কমায়।এ ছাড়া রয়েছে সেলেনিয়াম, যা মানুষের মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে এবং ক্যানসার, বিশেষত প্রোস্টেট ক্যানসার রোধে সহায়তা করে। ডিমে রয়েছে ৫ গ্রাম কোলেস্টেরল, যার প্রায় ৩.৫ গ্রাম উপকারী ও ভালো কোলেস্টেরল, যা মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রমে প্রয়োজন, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। ডিমে রয়েছে লিউটিন ও জিয়াজ্যান্থিন, যা চোখের ছানি পড়া রোধে সহায়তা করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন সুস্থ মানুষ দিনে একটি ডিম খেতে পারে। জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী বছরে প্রত্যেক মানুষের গড় ডিম গ্রহণ ন্যূনতম ১০৪ টি হওয়া উচিত। ডিমের সাদা অংশে ৬ গ্রাম প্রটিন ও হলুদ অংশে ৬ গ্রাম প্রটিন রয়েছে। ডিমে ক্যালসিয়াম রয়েছে।

    বিশ্ব ডিম দিবস

    ডিমের পুষ্টি গুণ গুরুত্ব অনুধাবন করে ভোক্তা ও উৎপাদক উভয়কেই সচেতন করার জন্য প্রতিবছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার উদযাপিত হয় বিশ্ব

  • ডিএনএ অনুলিপন

    ডিএনএ অনুলিপন

    ডিএনএ অনুলিপন বা ডিএনএ প্রতিলিপন হলো একটি জৈবিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি ডিএনএ অণু থেকে একই রকম দুটি ডিএনএ-এর প্রতিলিপি উৎপন্ন হয়।[১] ডিএনএ প্রতিলিপি জৈবিক উত্তরাধিকারের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় অংশ হিসেবে কাজ করে। কোষ বিভাজনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুর বৃদ্ধি এবং মেরামতকালে এটি জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, যখন এটি নিশ্চিত করে যে নতুন কোষের প্রতিটি নিজস্ব ডিএনএ অনুলিপি গ্রহণ করে।[২] কোষ বিভাজনের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য যা ডিএনএ অনুলিপন অপরিহার্য করে তোলে।

    ডিএনএ অনুলিপন

    ডিএনএ দুটি পরিপূরক স্ট্র্যান্ড বা সূত্রকের একটি দ্বি-সূত্রক দিয়ে তৈরি। দ্বি-সূত্রক বলতে একটি দ্বি-সূত্রী ডিএনএর উপস্থিতির বর্ণনা দেয় যা দুটি সরলরৈখিক সূত্রকের সমন্বয়ে গঠিত ও একে অপরের বিপরীতে চলে এবং একসাথে প্যাঁচানো থাকে।[৩] প্রতিলিপনের সময় এই সূত্রকগুলো পৃথক হয়ে যায়। মূল ডিএনএ অণুর প্রতিটি সূত্রক তার পরিপূরক সূত্রক উৎপাদনের জন্য টেমপ্লেট হিসাবে কাজ করে, এই প্রক্রিয়াটিকে অর্ধ-সংরক্ষণমূলক প্রতিলিপন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অর্ধ-রক্ষণশীল প্রতিলিপনের ফলস্বরূপ, নতুন সূত্র একটি মূল ডিএনএ সূত্রকের পাশাপাশি একটি নতুন সংশ্লেষিত সূত্রকের সমন্বয়ে গঠিত হয়।[৪] কোষীয় প্রুফ রিডিং এবং ত্রুটি-চেক করার পদ্ধতিগুলো ডিএনএ প্রতিলিপনের বিশ্বস্ততা নিশ্চিত করে।[৫][৬]

    একটি কোষে, ডিএনএ অনুলিপন নির্দিষ্ট অবস্থান জিনোমে[৭] শুরু হয় যাতে একটি প্রাণীর জিনগত উপাদান রয়েছে।[৮] নতুন সূত্রকের উৎপত্তির সময় হেলিকেজ নামক এনজাইম ডিএনএ-এর প্যাঁচ খুলতে সাহায্য করে যাতে দুটি রেপ্লিকেশন ফর্ক তৈরি হয়। ডিএনএ সংশ্লেষণের সূচনা এবং ধারাবাহিকতায় সহায়তার জন্য অনেকগুলো প্রোটিন প্রতিলিপি রেপ্লিকেশন ফর্কের সাথে যুক্ত থাকে। প্রধানত ডিএনএ পলিমারেজ এনজাইম নিউক্লিওটাইড যুক্ত করে নতুন সূত্রক সংশ্লেষ করে যা প্রতিটি (টেমপ্লেট) সূত্রকের পরিপূরক। ইন্টারফেজের এস- পর্যায়ে ডিএনএ প্রতিলিপন ঘটে থাকে।

    ডিএনএ প্রতিলিপন (ডিএনএ বিবর্ধন) গবেষণাগারেও (কৃত্রিমভাবে, একটি কোষের বাইরে) করা যেতে পারে। কোষ থেকে বিচ্ছিন্ন ডিএনএ পলিমারেজ এবং কৃত্রিম ডিএনএ প্রাইমারগুলো একটি টেমপ্লেট ডিএনএ অণুতে ডিএনএ সংশ্লেষণ শুরু করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। পলিমারেজ চেইন বিক্রিয়া (পিসিআর), লাইগেজ চেইন বিক্রিয়া (এলসিআর), এবং ট্রান্সক্রিপশন প্রভাবিত পরিবর্ধন (টিএমএ) এর উদাহরণ।

    সংঘটন স্থান

    ইউক্যারিওটিক কোষের ইন্টারফেজ দশার নিউক্লিয়াসে এবং প্রোক্যারিওটিক কোষের সাইটোপ্লাজমে ডিএনএ প্রতিলিপিকরণ হয়ে থাকে।

    ডিএনএর গঠন

    ডিএনএ একটি ডাবল হেলিক্স স্ট্রাকচার নিয়ে গঠিত, উভয় স্ট্র্যান্ড বা সূত্রক একত্রে কুন্ডলিত হয়ে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত ডাবল হেলিক্স গঠন করে। ডিএনএর প্রতিটি সূত্রক হল চার ধরনের নিউক্লিওটাইডের একটি শৃঙ্খল। ডিএনএর নিউক্লিওটাইডগুলোতে একটি ডিঅক্সিরাইবোজ চিনি, একটি ফসফেট এবং নিউক্লিওবেস থাকে। চার ধরনের নিউক্লিওটাইড চার ধরনের নিউক্লিওবেস এর সাথে সম্পৃক্ত যেমন – এডেনিন, সাইটোসিন, গুয়ানিন, এবং থাইমিন যাদের সংক্ষিপ্ত রূপ হল A, C, G এবং T। এডেনিন এবং গুয়ানিন হল পিউরিন বেস, যেখানে সাইটোসিন এবং থাইমিন হল পাইরিমিডিন বেস। এই নিউক্লিওটাইড সমূহ ফসফো-ডাইএস্টার বন্ধন গঠন করে, যার মাধ্যমে ডিএনএ ডাবল হেলিক্সের ফসফেট-ডিঅক্সিরাইবোজ ব্যাকবোন তৈরি করে যার নিউক্লিওবেসগুলো অভ্যন্তরের দিকে নির্দেশ করে (যেমন, বিরোধী সূত্রকের দিকে)। নিউক্লিওবেসগুলো সুত্রকের মধ্যে হাইড্রোজেন বন্ড দ্বারা যুক্ত হয়। এডেনিন থাইমিনের সাথে (দুটি হাইড্রোজেন বন্ধন) এবং গুয়ানিন সাইটোসিনের সাথে (তিনটি হাইড্রোজেন বন্ধন) দ্বারা যুক্ত হয়।

    ডিএনএ সূত্রকের একটি দিকনির্দেশ আছে এবং একক সূত্রকের দুটি ভিন্ন প্রান্তকে 3 ′ (তিন-পূরক) প্রান্ত এবং 5 ′ (পাঁচ-পূরক) প্রান্ত বলা হয়। প্রচলিত নিয়ম অনুসারে, যদি ডিএনএর একক স্ট্র্যান্ডের বেস সিকোয়েন্সটি দেওয়া থাকে তবে সিকোয়েন্সের বাম প্রান্তটি 5 ′ প্রান্ত হয় এবং ক্রমের ডান প্রান্তটি 3 ′ প্রান্ত হয়। ডাবল হেলিক্সের সূত্রক দুটি বিপরীত ও সমান্তরাল যেমন একটি 5 ′ থেকে 3 ′ এবং বিপরীত সূত্রক 3 ′ থেকে 5 ′। এই পদগুলো দ্বারা ডিঅক্সিরাইবোজ এর যে কার্বন পরমাণুতে শৃঙ্খলের পরবর্তী ফসফেট সংযুক্ত থাকে তা নির্দেশ করে। ডিএনএ সংশ্লেষণে দিকনির্দেশ প্রভাব আছে, কারণ ডিএনএ পলিমারেজ একটি ডিএনএ সূত্রকের 3 ′ প্রান্তে নিউক্লিওটাইড যুক্ত করে কেবল এক দিকে ডিএনএ সংশ্লেষ করতে পারে।

    ডিএনএতে পরিপূরক বেসগুলোর সংযোজন (হাইড্রোজেন বন্ধনের মাধ্যমে) এর অর্থ প্রতিটি স্ট্র্যান্ডের মধ্যে থাকা তথ্যগুলো অপ্রয়োজনীয়। ফসফো-ডাইএস্টার (অন্তঃ-স্ট্র্যান্ড) বন্ডগুলো হাইড্রোজেন (আন্তঃ-স্ট্র্যান্ড) বন্ডের চেয়ে শক্তিশালী। ফসফো-ডাইএস্টার বন্ডগুলোর আসল কাজ হল ডিএনএ পলিমারগুলোতে একটি নিউক্লিওটাইডের 5 ‘ কার্বনকে অন্য নিউক্লিওটাইডের 3’ কার্বনের সাথে সংযুক্ত করা, অন্যদিকে হাইড্রোজেন বন্ডগুলো হেলিক্স ১-অক্ষের বাইরে ডিএনএ ডাবল হেলিক্স কে স্থির করে তবে অক্ষের দিকে নয়।[৯] এটি স্ট্র্যান্ডগুলোকে একে অপরের থেকে পৃথক হতে দেয়। একক স্ট্র্যান্ডের নিউক্লিওটাইডগুলো তাই নতুন সংশ্লেষিত অংশীদার স্ট্র্যান্ডের নিউক্লিওটাইডগুলোকে পুনর্গঠন করতে ব্যবহার করে।[১০]

    ডিএনএ পলিমারেজ

    ডিএনএ পলিমারেজগুলো এনজাইমের একটি পরিবার যা সমস্ত ধরনের ডিএনএ প্রতিলিপন ঘটিয়ে থাকে।[১১] সাধারণভাবে ডিএনএ পলিমেরেসগুলো নতুন স্ট্র্যান্ডগুলোর সংশ্লেষণ শুরু করতে পারে না, তবে কেবলমাত্র একটি বিদ্যমান ডিএনএ বা আরএনএ স্ট্র্যান্ডকে ছাঁচ স্ট্র্যান্ডের সাথে যুক্ত করে প্রসারিত করতে পারে। সংশ্লেষণ শুরু করতে আরএনএ-এর একটি সংক্ষিপ্ত টুকরো যাকে একটি প্রাইমার বলা হয়, এটি তৈরি করতে হয় এবং টেমপ্লেট ডিএনএ স্ট্র্যান্ডের সাথে যুক্ত করতে হয়।

    ডিএনএ পলিমারেজ ফসফো-ডাইএস্টার বন্ধন একটি বিদ্যমান নিউক্লিওটাইড চেইনের প্রান্তকে প্রসারিত করে ডিএনএর একটি নতুন স্ট্র্যান্ড তৈরি করে এবং একই সময়ে টেমপ্লেট স্ট্র্যান্ডের সাথে মিলিত করে নতুন নিউক্লিওটাইড যুক্ত করে। ডিএনএ পলিমারকরণের এই প্রক্রিয়াটির জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি প্রতিটি মুক্ত ক্ষারের সাথে সংযুক্ত তিনটি ফসফেটের মধ্যে উচ্চ-শক্তি সম্পন্ন ফসফেট (ফসফোনহাইড্রাইড) বন্ধনের আর্দ্র বিশ্লেষণ থেকে আসে। মুক্ত ক্ষারগুলোকে তাদের সংযুক্ত ফসফেট গ্রুপগুলোর সাথে নিউক্লিওটাইড বলে, বিশেষত তিনটি ফসফেট সংযুক্ত বেসগুলোকে নিউক্লিওসাইড ট্রাইফসফেট বলা হয়। যখন একটি নিউক্লিওটাইড ক্রমবর্ধমান ডিএনএতে যোগ হয়, তখন ক্রমবর্ধমান চেইন নিউক্লিওটাইড নিকটবর্তী ফসফেট মধ্যে একটি ফসফো-ডাইএস্টার বন্ধন গঠন করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি একটি উচ্চ শক্তি সম্পন্ন ফসফেট বন্ধন আর্দ্র বিশ্লেষণের দ্বারা পাইরোফসফেট হিসেবে প্রকাশিত হয়। পাইরোফসফেটের এনজাইমেটিক হাইড্রোলাইসিসের ফলস্বরূপ অজৈব ফসফেট দ্বিতীয় উচ্চ-শক্তি সম্পন্ন ফসফেট বন্ধন গ্রহণ করে এবং বিক্রিয়াটিকে কার্যকরভাবে একমুখী করে তোলে।

    সাধারণভাবে ডিএনএ পলিমারেজগুলো অত্যন্ত নির্ভুল, প্রতি ১০৭ নিউক্লিওটাইড যুক্ত করার জন্য একটির চেয়ে কম অভ্যন্তরীণ ত্রুটির হার যুক্ত হয়।[১২] এছাড়াও কিছু ডিএনএ পলিমারেজেরর প্রুফ রিডিং ক্ষমতাও রয়েছে; ভুল ক্ষারগুলোকে সংশোধন করার জন্য তারা ক্রমবর্ধমান স্ট্র্যান্ডের প্রান্ত থেকে নিউক্লিওটাইডগুলো সরিয়ে ফেলতে পারে। অবশেষে অনুলিপন-পরবর্তী মেরামত প্রক্রিয়া ত্রুটি নির্ণয়ের জন্য ডিএনএ পর্যবেক্ষণ করে, মূল স্ট্র্যান্ড ক্রম থেকে নতুন সংশ্লেষিত ডিএনএ স্ট্র্যান্ডের সাথে অমিলগুলো পৃথক করতে সক্ষম হয়। একইসাথে এই তিনটি বৈষম্য নির্ণয় পদক্ষেপ প্রতি ১০৯ নিউক্লিওটাইড যুক্ত করার জন্য একটিরও কম ভুলের প্রতিলিপন করতে সক্ষম করে।[১২]

    একটি জীবন্ত কোষে ডিএনএ প্রতিলিপনের হার সর্বপ্রথম ফাজ সংক্রমিত E. coli-তে T4 ফাজ (ভাইরাস) ডিএনএ প্রসারিত হওয়ার হার হিসেবে পরিমাপ করা হয়েছিল।[১৩] ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ডিএনএ বৃদ্ধি পাওয়ার সময়কালে এই হার প্রতি সেকেন্ডে ৭৪৯ নিউক্লিওটাইড ছিল। T4 ফাজ ডিএনএ সংশ্লেষণের সময় প্রতি জোড়া ক্ষার পরিবর্তনের হার প্রতি ১০৮ নিউক্লিওটাইডে ছিল ১.৭।[১৪]

    প্রতিলিপন প্রক্রিয়া

    ডিএনএ অনুলিপন প্রক্রিয়ার চিত্র

    রেপ্লিকেশন ফর্ক এবং রেপ্লিকেশন বাবল

    সমস্ত জৈবিক পলিমারকরণ প্রক্রিয়াগুলোর মতো ডিএনএ প্রতিলিপন তিনটি অনুঘটিত এবং সমন্বিত পদক্ষেপে সম্পন্ন হয়: আরম্ভ, দীর্ঘায়ন এবং সমাপ্তি।

    আরম্ভ

    কোষ বিভাজনের করার জন্য প্রথমে এটির ডিএনএর প্রতিলিপি অবশ্যই তৈরি করতে হয়।[১৫] ডিএনএর প্রতিলিপন একবার শুরু হয়ে গেলে এটি সমাপ্তির দিকে এগিয়ে যায়। প্রতিলিপি সম্পূর্ণ হয়ে গেলে একই কোষ চক্রে এটি আবার সংঘটিত হয় না। প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সের আরম্ভের বিভাজনের দ্বারা এটি সম্ভব হয়।

    প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্স

    মাইটোসিসের শেষের দিকে এবং G1 পর্বের প্রথম দিকে, প্রারম্ভিক প্রোটিনগুলোর একটি বৃহৎ অংশ ডিএনএর নির্দিষ্ট পয়েন্ট এ প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্স একত্রিত হয়, যা “উৎস”  হিসেবে পরিচিত।[৭] E. coli তে প্রাথমিক প্রোটিন হল DnaA; ইস্ট এর জন্য জন্য একটি উৎস শনাক্তকারী কমপ্লেক্স[১৬] প্রবর্তক প্রোটিন দ্বারা ব্যবহৃত সিকোয়েন্সগুলো এডেনিন ও থাইমিন ক্ষারগুলোতে সমৃদ্ধ হয়ে থাকে, কারণ ক্ষার জোড়গুলোতে দুটি হাইড্রোজেন বন্ধন থাকে (সাইটোসিন-গুয়ানিন জোড়ায় বন্ধন থাকে) এবং তাই একে সহজেই প্রসারিত করে আলাদা করা যায়।[১৭] প্রকৃত কোষের জীবে উৎস শনাক্তকারী কমপ্লেক্স প্রারম্ভিক প্রোটিনকে প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সে রূপান্তরে প্রভাবিত করে। তারপরে Cdc6  এবং Cdt1 ডিএনএর আবদ্ধ উৎস শনাক্তকারী কমপ্লেক্স সাথে যুক্ত হয়ে Mcm কমপ্লেক্সটি লোড করার জন্য প্রয়োজনীয় কমপ্লেক্স গঠন করে। Mcm কমপ্লেক্স হলো হেলিকেজ যা প্রকৃতকোষীতে প্রতিলিপন উৎস এবং প্রতিলিপন ফর্ক গঠন করে। Mcm কমপ্লেক্সটি G1 পর্বের শেষ ভাগে গঠিত হয় এবং ORC-Cdc6-Cdt1 কমপ্লেক্সটি ATP-নির্ভর প্রোটিন পুনরায় তৈরির মাধ্যমে ডিএনএতে লোড হয়। মূল ডিএনএতে Mcm কমপ্লেক্সের লোডিং প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্স গঠনের সমাপ্তি চিহ্নিত করে।[১৮]

    G1 দশার শেষের দিকে পরিবেশগত অবস্থা ঠিক থাকলে, যেমন G1 এবং G1/S cyclin – Cdk কমপ্লেক্স সক্রিয় হয়, যা জিনের অভিব্যক্তিকে উদ্দীপিত করে যা ডিএনএ সিন্থেটিক বড় যন্ত্র গঠন করে। এছাড়াও G1/S-Cdk অ্যাক্টিভেশন S-Cdk কমপ্লেক্সগুলোর প্রকাশ এবং সক্রিয় হতে উদ্দীপিত করে, যা প্রজাতি এবং কোষ ভেদে প্রতিলিপনের উৎস সক্রিয় করতে ভূমিকা রাখে। এই Cdk এর নিয়ন্ত্রণ কোষের ধরন এবং বিকাশের পর্যায়ের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। এই নিয়ন্ত্রণটি মুকুলোদগমকারী ইস্টে ভালোভাবে বোঝা যায়, যেখানে S সাইক্লিনস Clb5 এবং Clb6 মূলত ডিএনএ প্রতিলিপনের জন্য দায়ী।[১৯] Clb5,6-Cdk1 কমপ্লেক্সগুলো প্রতিলিপন উৎসের সক্রিয়করণকে সরাসরি ট্রিগার করে এবং তাই প্রতিটি উৎসকে সরাসরি সক্রিয় করতে এস পর্যায়ে জুড়ে এটি প্রয়োজন।[১৮]

    অনুরূপণ পদ্ধতিতে প্রতিলিপন উৎস সক্রিয় করতে এস দশার মধ্যে Cdc7ও প্রয়োজনীয়। Cdc7 পুরো চক্র জুড়ে সক্রিয় থাকে না এবং ডিএনএ  প্রতিলিপনের অপ্রাপ্ত আরম্ভ এড়ানোর জন্য এটির সক্রিয়করণ কঠোরভাবে প্রয়োজন হয়। G1 এর শেষের দিকে নিয়ন্ত্রক উপ-একক Dbf4 এর সাথে সংঘর্ষের ফলে Cdc7-এর ক্রিয়াকলাপ হঠাৎ বেড়ে যায় যা Cdc7-কে সরাসরি বেঁধে রাখে এবং এর প্রোটিন কাইনেজ ক্রিয়াকলাপ প্রচার করে। Cdc7টি মূল ক্রিয়াকলাপের হার-সীমাবদ্ধ নিয়ামক হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে। একইসাথে G1/S-Cdks অথবা S-Cdks এবং Cdc7 সরাসরি প্রতিলিপন মূলককে সক্রিয় করতে সহযোগিতা করে, যার ফলে ডিএনএ সংশ্লেষণের সূচনা হয়।[১৮]

    প্রাক-প্রারম্ভিক কমপ্লেক্স

    প্রারম্ভিক এস পর্যায়ে S-Cdk এবং Cdk7 অ্যাক্টিভেশন প্রাক-প্রারম্ভিক কমপ্লেক্সের সমাবেশের দিকে পরিচালিত করে, একটি বৃহৎ প্রোটিন যৌগ গঠিত হয়। প্রাক-প্রারম্ভিক কমপ্লেক্সের গঠনটি Cdc6 এবং Cdt1-কে মূল রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্স থেকে বিচ্ছিন্ন করে, প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সকে নিষ্ক্রিয় করে এবং ছত্রভঙ্গ করে। প্রাক-প্রারম্ভিক কমপ্লেক্সটি উৎসের উপর লোড হলে Mcm হেলিকেজকে সক্রিয় করে, যার ফলে ডিএনএ সূত্রকে মুক্ত হয়। প্রাক-প্রারম্ভিক কমপ্লেক্সটি ডিএনএ-তে আলফা-প্রাইমেজ এবং অন্যান্য ডিএনএ পলিমারেজগুলো লোড করে।[১৮]

    আলফা-প্রাইমেজ নামে প্রথম প্রাইমার সংশ্লেষিত করবার পর প্রাইমার-ছাঁচ জংশনগুলো ক্ল্যাম্প লোডারের সাথে ক্রিয়া করে, যা ডিএনএ সংশ্লেষণ শুরু করতে স্লাইডিং ক্ল্যাম্পটি ডিএনএ-এর উপর চাপিয়ে দেয়। প্রাক-প্রারম্ভিক কমপ্লেক্সের উপাদানগুলো মূল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে প্রতিলিপন ফর্কের সাথে যুক্ত হয়।[১৮]

    দীর্ঘায়ন

    ডিএনএ পলিমারেজে 5′–3′ কার্যকলাপ রয়েছে। সমস্ত প্রচলিত ডিএনএ প্রতিলিপি সিস্টেমে সংশ্লেষণ শুরুর আগে একটি মুক্ত 3′ হাইড্রোক্সিল গ্রুপ প্রয়োজন (দ্রষ্টব্য: ডিএনএ টেমপ্লেটটি 3′ থেকে 5′ দিকে পড়া হয় যেখানে একটি নতুন স্ট্র্যান্ড 5′ থেকে 3′ দিকের দিকে সংশ্লেষিত হয়; এটি প্রায়শই বিভ্রান্তকর হয়)। ডিএনএ সংশ্লেষণের জন্য চারটি স্বতন্ত্র প্রক্রিয়া স্বীকৃত আছে-

    1. সমস্ত কোষীয় জীব এবং অনেকগুলো ডিএনএ ভাইরাস, ফাজ এবং প্লাজমিড প্রাইমেজ ব্যবহার করে একটি মুক্ত 3′ হাইড্রোক্সিল গ্রুপের সাথে একটি সংক্ষিপ্ত আরএনএ প্রাইমার সংশ্লেষিত করে যা পরবর্তীকালে ডিএনএ পলিমারেজ দ্বারা প্রসারিত হয়।
    2. রেট্রো উপাদানগুলো (রেট্রোভাইরাসসহ) একটি ট্রান্সফার আরএনএ নিয়োগ করে রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ দ্বারা প্রসারিত করার জন্য ডিএনএর প্রতিলিপনকে একটি মুক্ত 3′ হাইড্রোক্সিল গ্রুপ সরবরাহ করে।
    3. এডিনোভাইরাস এবং ফাই 29 পরিবারের ব্যাকটেরিওফাজের এর মধ্যে 3′ হাইড্রোক্সিল গ্রুপ জিনোম সংযুক্ত প্রোটিন এর অ্যামিনো অ্যাসিড পার্শ্ব-শৃঙ্খল (টার্মিনাল প্রোটিন) থেকে সরবরাহ করা হয় যা নিউক্লিওটাইডের ডিএনএ পলিমারেজ দ্বারা যুক্ত হয়ে একটি নতুন সূত্রক গঠন করে।
    4. একসূত্র বিশিষ্ট ডিএনএ ভাইরাস (একটি গ্রুপ রয়েছে যেখানে আছে circoviruses, geminiviruses, parvoviruses এবং অন্যান্য) এবং অনেক ফাজ ও প্লাসমিড যে ঘূর্ণায়মান বৃত্ত রেপ্লিকেশন (RCR) প্রক্রিয়া ব্যবহার করেন, RCR এন্ডোনিউক্লিয়েজ একটি জিনোম স্ট্র্যান্ড সৃষ্টি করে (একক স্ট্র্যান্ড ভাইরাস) বা ডিএনএ স্ট্র্যান্ড সৃষ্টি করে (প্লাজমিড)। নিকড স্ট্র্যান্ডের 5′ প্রান্তটি নিউক্লিয়েজের একটি টাইরোসিন অবশিষ্টাংশে স্থানান্তরিত হয় এবং মুক্ত 3′ হাইড্রোক্সিল গ্রুপটি ডিএনএ পলিমারেজ দ্বারা নতুন স্ট্র্যান্ড সংশ্লেষ করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

    প্রথমটি এই ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে সর্বাধিক পরিচিত এবং কোষীয় জীব দ্বারা ব্যবহৃত হয়। এই ব্যবস্থায় একবার দুটি স্ট্র্যান্ড পৃথক হয়ে গেলে প্রাইমেজ টেমপ্লেট স্ট্র্যান্ডগুলোতে আরএনএ প্রাইমার যুক্ত করে। লিডিং স্ট্র্যান্ড একটি আরএনএ প্রাইমার গ্রহণ করে যখন ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড বেশ কয়েকটি গ্রহণ করে। লিডিং স্ট্র্যান্ড ক্রমাগত অবিচ্ছিন্নভাবে একটি ডিএনএ পলিমেরেজ দ্বারা প্রাইমার থেকে প্রসারিত হয়েছে, যখন ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড প্রতিটি প্রাইমার থেকে বিরচন করে বিচ্ছিন্নভাবে ওকাজাকি টুকরায় পরিণত হয়। আরএনএনেজ আরএনএ প্রাইমার খণ্ডগুলোকে সরিয়ে দেয় এবং শূন্যস্থান পূরণের জন্য প্রতিরক্ষামূলক পলিমারেজ থেকে স্বল্প প্রক্রিয়াকরণ ডিএনএ পলিমারেজ প্রবেশ করে। এটি সম্পূর্ণ হয়ে গেলে লিডিং স্ট্র্যান্ডের একটি একক নিক এবং ল্যাগিং স্ট্র্যান্ডের বেশ কয়েকটি নিক পাওয়া যায়। লাইগেজ এই নিকগুলো পূরণ করার জন্য কাজ করে, এইভাবে নতুন করা ডিএনএ অণু প্রতিলিপি সম্পূর্ণ হয়।

    এই প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত প্রাইমেজে ব্যাকটেরিয়া এবং আর্চিয়া/ইউক্যারিওটের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে পার্থক্য রয়েছে। ব্যাকটেরিয়া DnaG প্রোটিনের সাথে সম্পর্কিত একটি প্রাইমেজ ব্যবহার করে যা সুপার-ফ্যামিলি TOPRIM ভাঁজ টাইপের একটি অনুঘটক ডোমেইন ধারণ করে।[২০] TOPRIM ভাঁজটিতে রসম্যান-জাতীয় টপোলজিতে চারটি সংরক্ষিত স্ট্র্যান্ডসহ একটি আলফা/বিটা কোর রয়েছে। এই কাঠামোটি টপোইসোমারেজ I, টপোইসোমারেজ II, ওল্ড-ফ্যামিলি নিউক্লিয়েজ এবং RecR প্রোটিন সম্পর্কিত ডিএনএ মেরামতকারী প্রোটিনগুলোর অনুঘটক ডোমেনগুলোও পাওয়া যায়।

    বিপরীতে আর্চিয়া এবং ইউক্যারিওট দ্বারা ব্যবহৃত প্রাইমেজে আরএনএ রিকগনিশন মোটিফ (RPM) এর একটি সংস্করণ রয়েছে। এই প্রাইমেজ কাঠামোগতভাবে অনেক ভাইরাস সম্পর্কিত আরএনএ নির্ভর আরএনএ পলিমারেজ, রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ, চক্রীয় নিউক্লিওটাইড উৎপাদনকারী চক্র এবং ডিএনএ প্রতিলিপি এবং মেরামতের সাথে জড়িত এ/ বি/ওয়াই পরিবারের ডিএনএ পলিমারেযের মতো। ইউক্যারিওটিক প্রতিলিপনে প্রাইমেজ পোল-আলফার সাথে একটি কমপ্লেক্স গঠন করে।[২১]

    একাধিক ডিএনএ পলিমারেজ ডিএনএ প্রতিলিপন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ভূমিকা গ্রহণ করে। E. coli, DNA Pol III হলো পলিমারেজ এনজাইম যা ডিএনএ রেপ্লিকেশন এর জন্য প্রাথমিকভাবে দায়ী। এটি সম্পূর্ণ প্রতিরূপ চক্রের জন্য অক্ষত থেকে, অত্যন্ত উচ্চ উৎপাদন প্রদর্শন করে এমন প্রতিলিপন ফর্কের সাথে একটি রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সে একত্রিত হয়। বিপরীতে DNA Pol I হলো আরএনএ প্রাইমারগুলো ডিএনএর সাথে প্রতিস্থাপনের জন্য দায়ী এনজাইম। DNA Pol I-এর পলিমারেজ ক্রিয়াকলাপ ছাড়াও একটি 5′ থেকে 3′ এক্সোনিউক্লিয়েজ কার্যকলাপ রয়েছে এবং এটি আরএনএ প্রাইমারকে এর পিছনে ডিএনএ স্ট্র্যান্ডকে প্রসারিত করার জন্য এর এক্সোনিউক্লিয়েজ ক্রিয়াকলাপটি ব্যবহার করে নিক অনুবাদ বলে। পোল-১ পোল-৩ এর তুলনায় অনেক কম প্রক্রিয়াজাতক কারণ ডিএনএ প্রতিলিপনে এটির প্রাথমিক কাজ হলো কয়েকটি খুব দীর্ঘ অঞ্চলের পরিবর্তে অনেকগুলো সংক্ষিপ্ত ডিএনএ অঞ্চল তৈরি করা।

    ইউক্যারিওটে কম উৎপাদনশীল এনজাইম Pol-α প্রতিলিপন কাজ সূচনা করতে সাহায্য করে কারণ এটি প্রাইমেজের সঙ্গে একটি কমপ্লেক্স গঠন করে।[২২] ইউক্যারিওটে লিডিং স্ট্র্যান্ড সংশ্লেষণ Pol-ε দ্বারা পরিচালিত হয় বলে মনে করা হয়; যাইহোক, এই দৃশ্যটি সম্প্রতি চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে, Pol-δ-এর জন্য একটি ভূমিকা প্রস্তাব করা হয়েছে।[২৩] প্রাইমারের অপসারণ সম্পূর্ণ Pol-δ করে যেখানে Pol-ε প্রতিলিপনের সময় ডিএনএ মেরামত সম্পন্ন করে।[২৪]

    ডিএনএ সংশ্লেষণ চলার সাথেসাথে মূল ডিএনএ স্ট্র্যান্ডগুলো বুদ্বুদের প্রতিটি পাশের দিকে উন্মুক্ত হয়ে দুটি কাঁটাবিশিষ্ট একটি রেপ্লিকেশন ফর্ক গঠন করে। বৃত্তাকার ক্রোমোজোমে প্রতিলিপির একটি মাত্র উৎস থাকা ব্যাকটেরিয়াতে এই প্রক্রিয়ায় একটি থিটা কাঠামো” তৈরি হয় (গ্রীক অক্ষর থিটা: θ-এর অনুরূপ)। বিপরীতে ইউক্যারিওটের দীর্ঘতর সরলরৈখিক ক্রোমোজোম থাকে এবং এর মধ্যে একাধিক উৎসে প্রতিলিপি শুরু হয়।[২৫]

    রেপ্লিকেশন ফর্ক

    রেপ্লিকেশন ফর্ক একটি কাঠামো যা ডিএনএ প্রতিলিপি চলাকালীন দীর্ঘ সূত্রকীয় ডিএনএর মধ্যে উৎপন্ন হয়। এটি হেলিকেজ দ্বারা তৈরি করা হয়, যা সূত্রকে দুটি ডিএনএ স্ট্র্যান্ডকে ধরে রেখে হাইড্রোজেন বন্ধনগুলো ভেঙে দেয়। ফলস্বরূপ কাঠামোতে দুটি শাখা “কাঁটা” রয়েছে, যার প্রত্যেকটিই ডিএনএর একক স্ট্র্যান্ড দ্বারা গঠিত। এই দুটি স্ট্র্যান্ড লিডিং এবং ল্যাগিং স্ট্র্যান্ডগুলোর ছাঁচ হিসাবে কাজ করে, যা ডিএনএ পলিমারেজ টেমপ্লেটগুলোর পরিপূরক নিউক্লিওটাইডগুলোর সাথে মিলে তৈরি হয়; টেমপ্লেটগুলো সঠিকভাবে লিডিং স্ট্র্যান্ড ছাঁচ এবং ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড ছাঁচ হিসাবে উল্লেখ করা যেতে পারে।

    ডিএনএ 3′ থেকে 5′ দিকে ডিএনএ পলিমারেজ দ্বারা পড়া হয়, যার অর্থ নতুন স্ট্র্যান্ড 5 ‘থেকে 3’ দিকে সংশ্লেষিত হয়। যেহেতু লিডিং এবং ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড ছাঁচগুলো রেপ্লিকেশন ফর্কে বিপরীতমুখী, তাই একটি বড় সমস্যা হলো নতুন ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড ডিএনএ-এর সংশ্লেষণ কীভাবে অর্জন করা যায়, যার সংশ্লেষণের দিকটি ক্রমবর্ধমান রেপ্লিকেশন ফর্ক এর দিকের বিপরীত হবে।

    লিডিং স্ট্র্যান্ড

    লিডিং স্ট্র্যান্ড হলো নতুন ডিএনএর যে স্ট্র্যান্ড ক্রমবর্ধমান রেপ্লিকেশন ফর্কের একই দিকে সংশ্লেষিত। এই ধরনের ডিএনএ প্রতিলিপন অবিচ্ছিন্ন হয়।

    ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড

    ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড হলো নতুন ডিএনএ-এর সেই স্ট্র্যান্ড যার সংশ্লেষণের দিকটি ক্রমবর্ধমান রেপ্লিকেশন ফর্কের দিকের বিপরীত। এর ওরিয়েন্টেশনের কারণে লিডিং স্ট্র্যান্ডের তুলনায় ল্যাগিং স্ট্র্যান্ডের প্রতিলিপন আরও জটিল। ফলস্বরূপ, এই স্ট্র্যান্ডের ডিএনএ পলিমারেজকে অন্য স্ট্র্যান্ডের “পিছনে” থাকতে দেখা যায়।

    ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড সংক্ষিপ্ত ও পৃথক অংশে সংশ্লেষিত হয়। ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড টেমপ্লেটে একজন প্রাইমেজ টেমপ্লেট ডিএনএ-কে “পড়ে” এবং একটি সংক্ষিপ্ত পরিপূরক আরএনএ প্রাইমারের সংশ্লেষণ শুরু করে। একটি ডিএনএ পলিমারেজ ওকাজাকি টুকরো তৈরি করে প্রাইমড অংশগুলোকে প্রসারিত করে। এরপর আরএনএ প্রাইমারগুলো ডিএনএ দ্বারা অপসারণ ও প্রতিস্থাপন করা হয় এবং ডিএনএর টুকরোগুলো ডিএনএ লাইগেজের মাধ্যমে একত্রিত হয়।

    রেপ্লিকেশন ফর্কের গতিশীলতা

    সমস্ত ক্ষেত্রে হেলিকেজটি ছয়টি পলিপেপটাইডের সমন্বয়ে গঠিত যা ডিএনএর প্রতিলিপনের সময় একটি স্ট্র্যান্ডের চারপাশে মোড়ানো থাকে। দুটি পলিমারেজ হেলিকেজ হেক্সিমারের সাথে আবদ্ধ থাকে। ইউক্যারিওটসে হেলিকেজটি লিডিং স্ট্র্যান্ডের চারপাশে মোড়ানো থাকে এবং প্রোক্যারিওটসে এটি ল্যাগিং স্ট্র্যান্ডের চারপাশে মোড়ানো থাকে।[২৬]

    হেলিকেজ যখন রেপ্লিকেশন ফর্কে ডিএনএ-কে খুলে দেয়, ঠিক তখন ডিএনএ ঘুরতে বাধ্য হয়। এই প্রক্রিয়াটির ফলস্বরূপ ডিএনএ-তে সামনের দিকে মোড় নেয়।[২৭] এই প্রক্রিয়াটি একটি ঘূর্ণনশীল প্রতিরোধের রূপ দেয় যা শেষ পর্যন্ত রেপ্লিকেশন ফর্ক এর অগ্রগতি থামিয়ে দেয়। টপোইসোমারেজ হলো এক ধরনের এনজাইম যা অস্থায়ীভাবে ডিএনএর স্ট্র্যান্ডগুলো ভেঙে দেয়, ডিএনএ সূত্রকে দুটি স্ট্র্যান্ডকে বিচ্ছিন্ন করার ফলে সৃষ্ট উত্তেজনা থেকে মুক্তি দেয়; টপোইসোমারেজগুলো (ডিএনএ গাইরেজসহ) ডিএনএ হেলিক্সে নেতিবাচক সুপারকয়েল যুক্ত করে এটি সম্পন্ন করে।[২৮]

    শূন্য একক-আটকে থাকা ডিএনএ গৌণ কাঠামো গঠনে নিজেই ফিরে যায়; এই কাঠামোগুলো ডিএনএ পলিমারেজের চলাচলে হস্তক্ষেপ করতে পারে। এটি রোধ করতে একক-স্ট্র্যান্ড বাইন্ডিং প্রোটিনগুলো ডিএনএতে আবদ্ধ থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত না দ্বিতীয় স্ট্র্যান্ড সংশ্লেষিত না হয়, যা গৌণ কাঠামো গঠনে বাধা দেয়।[২৯]

    ডাবল-স্ট্র্যান্ডেড ডিএনএ হিস্টোনগুলোর চারপাশে যুক্ত থাকে যা জিনের এক্সপ্রেশন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাই প্রতিলিপি যুক্ত ডিএনএ অবশ্যই হিস্টোনের আশেপাশে মূল ডিএনএ হিসেবে একই স্থানে যুক্ত থাকে। এটি নিশ্চিত করার জন্য হিস্টোন চ্যাপেরোনস এটি প্রতিলিপনের আগেই ক্রোমাটিন থেকে পৃথক হয় এবং হিস্টোনকে সঠিক জায়গায় প্রতিস্থাপন করে। এই পুনঃনির্মাণের কিছু পদক্ষেপ কিছুটা অনুমানমূলক।[৩০]

    ক্ল্যাম্প প্রোটিনগুলো ডিএনএর চারপাশে একটি স্লাইডিং ক্ল্যাম্প গঠন করে, ডিএনএ পলিমারেজকে তার টেমপ্লেটের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখতে সহায়তা করে, যার ফলে উৎপাদনে সহায়তা হয়। ক্ল্যাম্পের অভ্যন্তরীণ মুখ ডিএনএ-এর মাধ্যমে খাঁজ কাটতে সক্ষম করে। একবার পলিমারেজ টেমপ্লেটের শেষ প্রান্তে পৌঁছে যায় বা ডাবল-স্ট্র্যান্ডেড ডিএনএ শনাক্ত করে, যা স্লাইডিং ক্ল্যাম্প একটি ধারণামূলক পরিবর্তন করে যার ফলে ডিএনএ পলিমারেজ  প্রকাশিত হয়। ক্ল্যাম্প-লোডিং প্রোটিনগুলো ক্ল্যাম্প লোড করার জন্য প্রাথমিকভাবে টেমপ্লেট এবং আরএনএ প্রাইমার এর মধ্যে জংশনকে চিহ্নিত করে।[৬]

    ডিএনএ প্রতিলিপন প্রোটিন

    রেপ্লিকেশন ফর্কে অনেকগুলো প্রতিলিপন এনজাইম ডিএনএ-তে একত্রিত করে একটি জটিল আণবিক যন্ত্র গঠন করে যা রিপ্লিজোম নামে পরিচিত। নিচে রিপ্লিজোমে অংশ নেওয়া প্রধান ডিএনএ প্রতিলিপন এনজাইমগুলোর একটি তালিকা দেওয়া হলো:[৩১]

    এনজাইমডিএনএ প্রতিলিপনে কাজ
    ডিএনএ হেলিকেজহেলিক্স অস্থিতিশীলকারী এনজাইম হিসেবেও পরিচিত। টপোইসোমারেজের পিছনে রেপ্লিকেশন ফর্কের ডিএনএর দুটি স্ট্র্যান্ডকে হেলিকেজ পৃথক করে।
    ডিএনএ পলিমারেজডিএনএ প্রতিলিপনের সময় নিউক্লিওটাইড স্তরগুলো ডিএনএতে 5′ থেকে 3′-এর দিকে সংযোজন করার জন্য দায়ী এনজাইম। প্রুফ রিডিং এবং ত্রুটি সংশোধনও করে। বিভিন্ন ধরনের ডিএনএ পলিমারেজ রয়েছে যার মধ্যে প্রতিটি বিভিন্ন ধরনের কোষে বিভিন্ন কার্য সম্পাদন করে।
    ডিএনএ ক্ল্যাম্পএকটি প্রোটিন যা ডিএনএ মূল স্ট্র্যান্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ডিএনএ পলিমারেজকে দীর্ঘায়িত করে।
    একক স্ট্র্যান্ড ডিএনএ-বাইন্ডিং প্রোটিনssDNA-তে আবদ্ধ হয় এবং ডিএনএ হেলিকেজের এটি খুলে ফেলার পরে ডিএনএ ডাবল হেলিক্সকে পুনরায় অ্যানিলিং করা থেকে বিরত রাখে, এভাবে স্ট্র্যান্ডের বিচ্ছিন্নতা বজায় রাখা এবং নতুন স্ট্র্যান্ডের সংশ্লেষণের সুবিধার্থে কাজ করে।
    টোপোইসোমারেজডিএনএ-কে সুপার-কয়েলড প্রকৃতি থেকে শিথিল করে।
    ডিএনএ গাইরেজডিএনএ হেলিকেজের সাহায্যে স্ট্র্যান্ডের চাপকে মুক্তি দেয়; এটি একটি নির্দিষ্ট ধরনের টোপোইসোমারেজ।
    ডিএনএ লাইগেজঅর্ধ-রক্ষণশীল স্ট্র্যান্ডগুলো পুনরায় যুক্ত করে এবং ল্যাগিং স্ট্র্যান্ডের ওকাজাকি অংশগুলো যোগ করে।
    প্রাইমেজনতুন ডিএনএ স্ট্র্যান্ডের সংশ্লেষণ শুরু করতে ডিএনএ পলিমারেজ এর জন্য আরএনএ (অথবা ডিএনএ) একটি সূচনা পয়েন্ট সরবরাহ করে।
    টেলোমিয়ারেজইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের প্রান্তে পুনরাবৃত্ত নিউক্লিওটাইড অনুক্রম যুক্ত করে টেলোমেরিক ডিএনএ কে লম্বা করে। এটি জীবাণু কোষ এবং স্টেম-সেলগুলোকে কোষ বিভাজনে হায়ফ্লিক সীমা এড়াতে সহায়তা করে।[৩২]

    প্রতিলিপন যন্ত্রপাতি

    অরিজিনে হেলিকেজ লোডিং। A-প্রোক্যারিওটিকে, B-ইউক্যারিওটিকে

    ইউক্যারিওটদের ক্ষেত্রে রেপ্লিকেশন ইনিশিয়েশন

    প্রতিলিপন যন্ত্রপাতি বা মেশিনারিগুলো ডিএনএর প্রতিলিপনে জড়িত নিয়ামকগুলো নিয়ে গঠিত এবং টেমপ্লেট ssDNA-তে উপস্থিত থাকে। প্রতিলিপন মেশিনারিগুলোর মধ্যে প্রিমোসোটারগুলো হলো প্রতিলিপন এনজাইম; ডিএনএ পলিমারেজ, ডিএনএ হেলিকেজ, ডিএনএ ক্ল্যাম্প এবং ডিএনএ টোপোইসোমারেজ এবং প্রতিলিপি প্রোটিন; যেমন একক স্ট্র্যান্ড ডিএনএ বাইন্ডিং প্রোটিন (SSB)। প্রতিলিপন মেশিনারিগুলোতে এই উপাদানগুলো সমন্বয় করে। বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ প্রতিলিপনে জড়িত সমস্ত ফ্যাক্টরগুলো রেপ্লিকেশন ফর্কে অবস্থিত এবং কমপ্লেক্সগুলো ডিএনএ প্রতিলিপনে সময় রেপ্লিকেশন ফর্কে অবস্থান করে। এই প্রতিলিপন মেশিনারিগুলোকে রিপ্লিজোম বা ডিএনএ রেপ্লিকেশন সিস্টেম বলা হয় । এই পদগুলো রেপ্লিকেশন ফর্কে উপর অবস্থিত প্রোটিন জন্য জেনেরিক পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইউক্যারিওটিক এবং কিছু ব্যাকটেরিয়া কোষে রিপ্লিজোমগুলো গঠিত হয় না।

    যেহেতু রেপ্লিকেশন মেশিনারিগুলো কারখানার মতো টেমপ্লেট ডিএনএ-তে তুলনামূলকভাবে স্থানান্তরিত হয় না, তাই তাদের প্রতিলিপন কারখানা বলা হয়।[৩৩] বিকল্প চিত্রটিতে, ডিএনএ কারখানাগুলো প্রজেক্টরগুলোর মতো এবং ডিএনএগুলো সিনেম্যাটিক ফিল্ম এর মতো যেমন প্রজেক্টারে নিয়মিত প্রবাহিত হয়। প্রতিলিপন কারখানার মডেলটিতে ডিএনএ হেলিকেজের পরে লিডিং স্ট্র্যান্ড এবং ল্যাগিং স্ট্র্যান্ড উভয় টেমপ্লেট ডিএনএতে লোড হয়, হেলিকেজগুলো ডিএনএ বরাবর একে অপরের সাথে চালিত হয়। হেলিকেজগুলো প্রতিলিপন প্রক্রিয়ার অবশিষ্ট অংশগুলোর সাথে যুক্ত থাকে। পিটার মেইস্টার এবং তার সহযোগীরা সবুজ ফ্লোরোসেন্ট প্রোটিন (GFP) ট্যাগযুক্ত ডিএনএ পলিমারেজ আলফা পর্যবেক্ষণ করে মুকুলোদগম করে এমন ইস্টে সরাসরি প্রতিলিপন সাইটগুলো পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাঁরা শনাক্ত করেছেন যে ট্যাগযুক্ত লোকির জোড়াগুলো প্রতিলিপন উৎস থেকে প্রতিসাম্যভাবে পৃথক করা হয়েছে এবং আবিষ্কার করেছেন যে জোড়গুলোর মধ্যে দূরত্ব সময়ের সাথে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়।[৩৪] এই সন্ধানটি পরামর্শ দেয়, যে ডিএনএ প্রতিলিপন প্রক্রিয়াটি ডিএনএ কারখানার সাথে চলে। অর্থাৎ প্রতিলিপন কারখানার জোড়াগুলো প্রতিলিপন উৎস এবং একে অপরের সাথে যুক্ত কারখানাগুলোতে লোড হয়। এছাড়াও টেমপ্লেট ডিএনএগুলো কারখানায় চলে যায়, যা টেমপ্লেট ssDNAs এবং নতুন DNAs তে বহিষ্করণ নিয়ে আসে। মেইস্টারের সন্ধান প্রতিলিপন কারখানা মডেলের প্রথম প্রত্যক্ষ প্রমাণ। পরবর্তী গবেষণায় দেখা গেছে যে ডিএনএ হেলিকেজগুলো অনেক ইউক্যারিওটিক কোষে ডাইমার গঠন করে এবং ব্যাকটেরিয়াল প্রতিলিপন মেশিনারিগুলো ডিএনএ সংশ্লেষণের সময় একক অন্তর্মুখী স্থানে থাকে।[৩৩]

    প্রতিলিপন কারখানাগুলো সিস্টার-ক্রোমাটিডের বিচ্ছিন্নতা সম্পাদন করে। ডিএনএ প্রতিলিপন এর পরে ক্রোমাটিড অপত্য কোষে বিতরণ করার জন্য বিচ্ছিন্নতা প্রয়োজনীয়। যেহেতু সিস্টার-ক্রোমাটিড ডিএনএ প্রতিলিপনের পরে আসঞ্জন বলয় দ্বারা একে-অপরকে ধরে রাখে, ডিএনএ প্রতিলিপনে বিচ্ছিন্ন হওয়ার একমাত্র সুযোগ আছে। প্রতিলিপন কারখানা হিসেবে প্রতিলিপন মেশিনারিকে ঠিক করা হলে ডিএনএ প্রতিলিপনের সাফল্যের হার বেড়ে যায়। যদি রেপ্লিকেশন ফর্কগুলো ক্রোমোজোমে অবাধে চলাচল করে তবে নিউক্লিয়াসের ক্যাটিনেশন ক্রমবর্ধমান হয় এবং মাইটোটিক বিভাজনকে বাধাগ্রস্ত করে।[৩৪]

    সমাপ্তি

    রেপ্লিকেশন বাবল সম্প্রসারিত হওয়ার সরলীকৃত চিত্র

    ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের একাধিক পয়েন্টে ডিএনএ প্রতিলিপন শুরু হয়, তাই রেপ্লিকেশন ফর্ক বহু পয়েন্টে মিলিত হয় এবং সমাপ্ত হয়। ইউক্যারিওটগুলোতে সরলরৈখিক ক্রোমোজোম রয়েছে বলে ডিএনএ প্রতিলিপন ক্রোমোজোমের একেবারে প্রান্তে পৌঁছাতে পারে না। এই সমস্যার কারণে ক্রোমোজোমের শেষ থেকে প্রতিটি প্রতিলিপি চক্রের মধ্যে ডিএনএ হারিয়ে যায়। টেলোমিয়ারস হলো পুনরাবৃত্ত ডিএনএর প্রান্ত নিকটবর্তী অঞ্চল এবং এটি সংক্ষিপ্তকরণের কারণে জিনের ক্ষয় রোধে সহায়তা করে। টেলোমিয়ারসের সংক্ষিপ্তকরণ দেহ কোষের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এটি অপত্য ডিএনএ ক্রোমোজোমের টেলোমিয়ারকে সংক্ষিপ্ত করে। ফলস্বরূপ ডিএনএ-এর ক্ষতি আরও বিভাজন রোধ করার আগে কোষগুলো কেবলমাত্র একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক বার ভাগ হতে পারে (এটি হায়ফ্লিক সীমা হিসেবে পরিচিত)। এর মধ্যে বীজ কোষ লাইন যা পরবর্তী প্রজন্মের ডিএনএ স্থানান্তর করে, টেলোমিয়ারেজ ক্ষয় রোধ করতে টেলোমিয়ারের অঞ্চলের পুনরাবৃত্তিক ক্রমগুলো প্রসারিত করে। টেলোমিয়ারেজ ভুলভাবে দেহকোষগুলোতে সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে, যা কখনও কখনও ক্যান্সার গঠনের দিকে পরিচালিত করে। বর্ধিত টেলোমিয়ারেজ ক্রিয়াকলাপ ক্যান্সারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

    সমাপ্তির জন্য ডিএনএ রেপ্লিকেশন ফর্কের অগ্রগতি অবশ্যই বন্ধ বা অবরুদ্ধ করা উচিত। একটি নির্দিষ্ট লোকাসে যখন সমাপ্তি ঘটে তখন দুটি উপাদানগুলোর মধ্যে মিথস্ক্রিয়া ঘটে: (১) ডিএনএতে একটি সমাপ্তি স্থান ক্রম এবং (২) একটি প্রোটিন যা ডিএনএর প্রতিলিপনকে শারীরিকভাবে থামানোর জন্য এই ক্রমের সাথে আবদ্ধ থাকে। বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া প্রজাতিগুলোতে এটির নাম দেওয়া হয় ডিএনএ রেপ্লিকেশন টার্মিনাস সাইট-বাইন্ডিং প্রোটিন, বা টার প্রোটিন

    কারণ ব্যাকটেরিয়ায় বৃত্তাকার ক্রোমোজোম থাকে, প্রতিলিপনের সমাপ্তি ঘটে যখন দুটি রেপ্লিকেশন ফর্ক মাতৃক্রোমোজোমে বিপরীত প্রান্তে একে অপরের সাথে মিলিত হয়। E. coli এই প্রক্রিয়াটি সমাপ্তি অনুক্রমগুলো ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রণ করে যা টাস প্রোটিন দ্বারা আবদ্ধ হলে রেপ্লিকেশন ফর্ক কেবল একটি দিক দিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ফলস্বরূপ, রেপ্লিকেশন ফর্কগুলো সর্বদা ক্রোমোজোমের সমাপ্তি অঞ্চলে পৌঁছাতে বাধা দেয়।[৩৫]

    ইউক্যারিওট দের রেপ্লিজোম

    ই কোলাই এর রেপ্লিজোম এর চিত্র

    নিয়ন্ত্রণ

    ইউক্যারিওটস

    ইউক্যারিওটসের মধ্যে, ডিএনএ প্রতিলিপন কোষ চক্রের প্রসঙ্গ হিসেবে নিয়ন্ত্রিত হয়। কোষ এর বৃদ্ধি ও বিভাজন এর সাথে সাথে এটি কোষ চক্রের ধাপগুলোর মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়; ডিএনএ প্রতিলিপি এস পর্যায়ের (সংশ্লেষণ পর্ব) সময় সঞ্চালিত হয়। চক্রের মাধ্যমে ইউক্যারিওটিক কোষের অগ্রগতি কোষ চক্রের চেকপয়েন্টগুলো দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় । সাইক্লিন এবং সাইক্লিন নির্ভর কাইনেজ সহ বিভিন্ন প্রোটিনের মধ্যে জটিল মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে ছেকপয়েন্টগুলোর মাধ্যমে অগ্রগতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।[৩৬] ব্যাকটেরিয়া থেকে ভিন্ন, ইউক্যারিওটিক ডিএনএ নিউক্লিয়াসের সীমানায় প্রতিলিপি তৈরি করে।[৩৭]

    G1/S চেকপয়েন্ট (বা সীমাবদ্ধতা চেকপয়েন্ট) ইউক্যারিওটিক কোষগুলো ডিএনএ প্রতিলিপন এবং পরবর্তী বিভাগের প্রক্রিয়াতে প্রবেশ করে কিনা তা নিয়ন্ত্রণ করে। এই চেকপয়েন্টের মধ্য দিয়ে অগ্রসর না হওয়া কোষগুলো G-0 পর্যায়ে থেকে যায় এবং তাদের ডিএনএ প্রতিলিপন হয় না।

    G1/S চেকপয়েন্টে অতিক্রম করার সময়, ডিএনএ কে অবশ্যই প্রতিটি কোষ চক্রে একবার করে প্রতিলিপন তৈরি করতে হয়। যখন Mcm কমপ্লেক্সটি উৎস থেকে সরে যায়, প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সটি ভেঙে ফেলা হয়। যেহেতু প্রাক-রেপ্লিকেশন সাব-ইউনিটগুলো পুনরায় সক্রিয় করা না হওয়া অবধি কোন নতুন Mcm কমপ্লেক্স কোন উৎসে লোড করা যায় না, তাই প্রতিলিপনে একটি উৎস একই কোষ চক্রে দুবার ব্যবহার করা যায় না।[১৮]

    প্রারম্ভিক এস পর্যায়ে S-Cdks সক্রিয়করণ তাৎক্ষণিকভাবে পুনরুদ্ধার প্রতিরোধ করে প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্স এর উপাদানগুলোর ধ্বংস বা বাধা দান করে। S এবং M-Cdks এস-ফেজ শেষ হওয়ার পরেও প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্স একত্রিত হওয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখে, এটি নিশ্চিত করে যে মাইটোসিস এ সমস্ত Cdk ক্রিয়াকলাপ হ্রাস না করা পর্যন্ত সমাবেশ আবার ঘটতে পারে না।[১৮]

    মুকুলোদগম করে এমন ইস্টে, প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্স উপাদানগুলোর সিডিকে-নির্ভর ফসফোরাইলেশনের কারণে সমাবেশের বাধা ঘটে। এস পর্বের শুরুতে, Cdk1 দ্বারা Cdc6 এর ফসফোরাইলেশনের ফলে SCF ইউবুইকিটিন প্রোটিন লাইগেজের সাথে Cdc6 আবদ্ধ হয়, যা Cdc6 এর প্রোটিওলাইটিক ভাঙ্গন ঘটায়। এস পর্বে Mcm প্রোটিনগুলোর Cdk নির্ভর ফসফোরাইলেশন Cdk1 এর সাথে নিউক্লিয়াসের বাইরে তাদের বের করে, একক কোষ চক্রের সময় উৎসে নতুন Mcm কমপ্লেক্সগুলো লোড করা রোধ করে। উৎসের রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সের Cdk ফসফোরাইলেশন প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সের সমাবেশকে বাধা দেয়। এই তিনটি পদ্ধতির যেকোনটির পৃথক উপস্থিতি প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সের সমাবেশকে বাধা দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। যাইহোক, একই কোষে তিনটি প্রোটিনের মিউটেশন একটি কোষ চক্রের মধ্যে প্রতিলিপন এর অনেক উৎস পুনরুদ্ধারকে ট্রিগার করে।[১৮][৩৮]

    প্রাণী কোষগুলোতে, প্রোটিন জেমিনিন প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সের সমাবেশের মূল প্রতিবন্ধক। জেমিনিন Cdt1 কে বেঁধে রাখে, এটিকে উৎস স্বীকৃতি কমপ্লেক্সের সাথে আবদ্ধ হওয়া থেকে রোধ করে। জি-১ এ, APC দ্বারা জেমিনের মাত্রা কম রাখা হয়, যা জেমিনিনকে অবক্ষয়ের জন্য লক্ষ্যবস্তু করে তোলে। জেমিনিন ধ্বংস হয়ে গেলে, Cdt1 প্রকাশ পায়, এটি প্রাক-রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্সের সমাবেশ গঠনে কাজ করে। জি-১ এর শেষে, APC নিষ্ক্রিয় হয়, জেমিনিনকে জমা করে এবং Cdt1 এর সাথে যুক্ত করে।[১৮]

    ক্লোরোপ্লাস্ট এবং মাইটোকন্ড্রিয়াল জিনোমের প্রতিলিপন ডি-লুপ প্রতিলিপন প্রক্রিয়াটির মাধ্যমে কোষ চক্রের স্বাধীনভাবে ঘটে।

    রেপ্লিকেশন ফোকাস

    কশেরুকা কোষে, প্রতিলিপন সাইটগুলো রেপ্লিকেশন ফোকি[৩৪] নামক পজিশনে মনোনিবেশ করে। প্রতিলিপি সাইটগুলো অপত্য স্ট্র্যান্ড এবং প্রতিলিপন এনজাইমগুলো প্রতিরোধক এবং GFP-ট্যাগযুক্ত রেপ্লিকেশন ফ্যাক্টরগুলো পর্যবেক্ষণ করে শনাক্ত করা যেতে পারে। এই পদ্ধতিগুলোর মাধ্যমে এটি পাওয়া যায় যে কোষ বিভাজনের এস পর্যায়ে বিভিন্ন আকারের এবং অবস্থানের রেপ্লিকেশন ফোকি প্রদর্শিত হয় এবং নিউক্লিয়াস প্রতি তাদের সংখ্যা জিনোমিক রেপ্লিকেশন ফর্ক সংখ্যার তুলনায় অনেক কম।

    পি হিউন ও তার সহযোগীরা[৩৪] (২০০১) মুকুলোদগম কারী ইস্ট কোষগুলোতে GFP-ট্যাগযুক্ত রেপ্লিকেশন ফোকি শনাক্ত করেছেন এবং প্রকাশ করেছেন যে প্রতিলিপি উৎসটি জি-১ এবং এস পর্যায়ে অবিচ্ছিন্ন ভাবে সরানো হয় এবং এস পর্যায়ে গতিশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়।[৩৪] প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, রেপ্লিকেশন সাইটগুলো ক্রোমোজোমের স্থানিক কাঠামোর ক্ষেত্রে পারমাণবিক ম্যাট্রিক্স বা ল্যামিন দ্বারা স্থির করা হয়। হিউনের ফলাফল প্রচলিত ধারণাগুলোকে অস্বীকার করেছে, মুকুলোদগম কারী ইয়েস্টগুলোতে ল্যামিন নেই কিন্তু প্রতিলিপন উৎসের আত্ম-জমায়েত হয় এবং রেপ্লিকেশন ফোকি তৈরি হয়।

    স্থানিক ও সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রিত প্রতিলিপন উৎসগুলো চালিয়ে, রেপ্লিকেশন ফোকি গঠন নিয়ন্ত্রিত হয়। ডিএ জ্যাকসন ও তার সহযোগীরা (১৯৯৮) প্রকাশ করেছেন যে প্রতিবেশী উৎস স্তন্যপায়ী কোষগুলোতে একই সাথে বহিষ্কার হয়।[৩৪] প্রতিলিপন সাইটগুলোর স্থানিক পাশাপাশি অবস্থান রেপ্লিকেশন ফর্কগুলোর ক্লাস্টারিং নিয়ে আসে। ক্লাস্টারিং স্থগিত রেপ্লিকেশন ফর্কগুলো উদ্ধার করে এবং রেপ্লিকেশন ফর্কগুলোর স্বাভাবিক অগ্রগতি ফিরিয়ে আনে। রেপ্লিকেশন ফর্কগুলোর অগ্রগতি অনেকগুলো কারণ দ্বারা প্রতিহত হয়; প্রোটিনের সাথে বা ডিএনএর সাথে দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ কমপ্লেক্সগুলোর সাথে সংঘর্ষ, dNTPs-র অভাব, টেমপ্লেট ডিএনএ-র নিকগুলো ইত্যাদি। যদি স্টল রেপ্লিকেশন ফর্ক এবং স্ট্রিট প্রতিলিপি থেকে অবশিষ্ট ক্রমগুলো প্রতিলিপিত না করা হয় তবে অপত্য স্ট্র্যান্ডগুলো অপ্রতিলিপিত সাইটগুলো পায়। এক মাতৃ স্ট্র্যান্ডের অপ্রতিলিপিত সাইটগুলো অন্য স্ট্র্যান্ডকে একত্রে ধারণ করে তবে অপত্য স্ট্র্যান্ডকে নয়। সুতরাং, ফলস্বরূপ সিস্টার-ক্রোমাটিডগুলো একে অপরের থেকে পৃথক হতে পারে না এবং দুটি অপত্য কোষে বিভক্ত হতে পারে না। প্রতিবেশী উৎসে বহিষ্কার এবং একটি উৎস থেকে স্থবির ফর্ক প্রতিলিপিত হয়ে গেলে, অন্য উৎস থেকে ফর্ক বিপরীত দিকে পৌঁছায় এবং অপ্রতিলিপিত সাইটগুলো প্রতিলিপন করে। উদ্ধারের অন্যান্য প্রক্রিয়া হিসেবে প্রয়োগ এর মধ্যে রয়েছে সুপ্ত প্রতিলিপন উৎস যা সাধারণ ডিএনএ প্রতিলিপন অতিরিক্ত উৎসগুলো বহিষ্কার করে দেয় না।

    ব্যাকটেরিয়া

    বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়া একটি ভাল সংজ্ঞায়িত কোষ চক্রের মধ্যে দিয়ে যায় না বরং পরিবর্তে তাদের ডিএনএ অনবরত অনুলিপিত করে; দ্রুত বর্ধনের সময়, এটি একই সময়ে প্রতিলিপন এর একাধিক রাউন্ডের ঘটাতে সাহায্য করে।[৩৯] E. coli তে, শ্রেষ্ঠ বৈশিষ্ট্যযুক্ত ব্যাকটেরিয়া, ডিএনএ রেপ্লিকেশন বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়, যেমন: হেমি-মিথাইলেশন এবং উৎপত্তি ক্রম স্বতন্ত্র রাখা, অনুপাত এডিনোসিন ট্রাইফসফেট (ATP) থেকে এডিনোসিন ডাইফসফেট (ADP), এবং প্রোটিন DnaA স্তর দ্বারা। এগুলো সমস্ত সূত্রকের সূচনাতে প্রবর্তক প্রোটিনের বাঁধাই নিয়ন্ত্রণ করে।

    কারণ E. coli GATC ডিএনএ সিকোয়েন্সকে মিথাইলেশন করে, হেমি-মিথাইলেটেড সিকোয়েন্স মধ্যে ডিএনএ সংশ্লেষণ এর ফলাফল নেই। এই হেমি-মিথাইলেটেড ডিএনএ প্রোটিন SeqA দ্বারা শনাক্ত করা হয়, যা মূল ক্রমকে আবদ্ধ করে এবং পৃথক করে; তদ্ব্যতীত, DnaA (প্রতিলিপন সূচনা করার জন্য প্রয়োজনীয়) হেমিমেথিলিটেড ডিএনএকে কম ভালভাবে আবদ্ধ করে। ফলস্বরূপ, নতুন প্রতিলিপিযুক্ত উৎসগুলো তাৎক্ষণিক ডিএনএর অনুলিপন এর অন্য রাউন্ড শুরু করতে বাধা দেয়।[৪০]

    ATP তৈরি হয় যখন কোষটি একটি সমৃদ্ধ মাধ্যমে থাকে, যা একটি নির্দিষ্ট আকারে পৌঁছে যাওয়ার পরে ডিএনএ প্রতিলিপনে ট্রিগার করে। ATP DnaA সাথে যুক্ত হতে ADP এর সাথে প্রতিযোগিতা করে এবং DnaA-ATP কমপ্লেক্স প্রতিলিপন শুরু করতে সক্ষম হয়। ডিএনএর প্রতিলিপনের জন্য একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক DnaA প্রোটিনও প্রয়োজন – প্রতিবার উৎসটি অনুলিপি করা হলে, DnaA এর জন্য বাইন্ডিং সাইটগুলোর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যায়, যাতে আরও ডিএনএর সংশ্লেষণের প্রয়োজন হয় যাতে আরেকটি প্রতিলিপন সূচনা করতে।

    E. coli এর মতো দ্রুত বর্ধমান ব্যাকটেরিয়াতে ক্রোমোজোম প্রতিলিপন কোষ বিভাজনের চেয়ে বেশি সময় নেয়। ব্যাকটেরিয়াগুলো এর পরবর্তী রাউন্ড শেষ হওয়ার আগে প্রতিলিপন এর নতুন রাউন্ড শুরু করে এটি সমাধান করে।[৪১] প্রতিলিপনের নতুন রাউন্ডটি কোষের ক্রোমোজোম গঠন করবে যা থেকে পরবর্তীতে কোষ বিভাজনের মাধ্যমে দুই প্রজন্ম জন্মগ্রহণ করে। এই প্রক্রিয়াটি ওভারল্যাপিং প্রতিলিপন চক্র তৈরি করে।

    ডিএনএ প্রতিলিপনের সমস্যা

    রেপ্লিকেশন স্ট্রেস এর অনেকগুলো কারণ বা ঘটনা রয়েছে, এর মধ্যে আছে[৪২]

    পলিমারেজ চেইন বিক্রিয়া

    গবেষকরা সাধারণত গবেষণাগারের মধ্যে পলিমারেজ চেইন বিক্রিয়া (PCR) ব্যবহার করে ডিএনএ প্রতিলিপিকরণ সম্পন্ন করেন। পিসিআর একজোড়া প্রাইমার ব্যবহার করে টেমপ্লেট ডিএনএর লক্ষ্য অঞ্চল বিস্তার লাভ করে এবং তারপরে থার্মোস্টেবল ডিএনএ পলিমারেজ ব্যবহার করে এই প্রাইমারের কাছ থেকে প্রতিটি দিকে অংশীদার স্ট্র্যান্ডকে পলিমারাইজ করে। একাধিক চক্রের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়াটির পুনরাবৃত্তি লক্ষ্যযুক্ত ডিএনএ অঞ্চলকে প্রশস্ত করে। প্রতিটি চক্রের শুরুতে, টেমপ্লেট এবং প্রাইমারের মিশ্রণটি উত্তপ্ত হয়, নতুন সংশ্লেষিত অণু এবং টেমপ্লেটকে পৃথক করে। তারপরে, মিশ্রণটি শীতল হওয়ার সাথে সাথে উভয়ই নতুন প্রাইমারের অ্যানেলিং এর জন্য টেমপ্লেট হয়ে যায় এবং পলিমারেজগুলো এগুলো থেকে প্রসারিত হয়। ফলস্বরূপ, লক্ষ্য অঞ্চলের অনুলিপিগুলোর সংখ্যা প্রতিটি রাউন্ড শেষে দ্বিগুণ হয়, তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পায়।[

  • মডেল জীব

    মডেল জীব

    মডেল বা প্রতিমান জীব (ইংরেজি: model organism) হল মানুষ নয় এমন কোনো প্রজাতি, যা নির্দিষ্ট জৈবিক ঘটনাকে বোঝার জন্য ব্যাপকভাবে অধ্যয়ণ করা হয় এই আশায় যে, মডেল জীব থেকে পাওয়া আবিষ্কারগুলো অন্যান্য জীবের কার্যক্রমের বিষয়েও আলোকপাত করবে।[১] বিবর্তনের ধারায় সকল জীবিত জীবের সাধারণ বংশধর এবং বিপাকীয় ও বিকাশমূলক পথ আর জিনগত উপাদানের সংরক্ষণের কারণে মডেল জীবের মাধ্যমে অন্যান্য জীব সম্পর্কেও জ্ঞান আহরণ সম্ভব হয়। [২] প্রতিমান জীব অধ্যয়ণ করার ফলে নানা ধরনের জ্ঞান আহরণ সম্ভব, কিন্তু অন্য জীবের ক্ষেত্রে এই জ্ঞান কাজে লাগানোর আগে সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরী।

    মডেল জীব

    মানুষের রোগ নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে, সরাসরি কোনো মানুষের ক্ষতি না করেই প্রতিমান জীবের মাধ্যমে রোগের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। যে জীবকে মডেল হিসেবে বেছে নেয়া হবে সেই জীবকে শ্রেণীবিন্যাসের দিক দিয়ে এমনভাবে মানুষের সমতুল্য হতে হবে যেন তা রোগ এবং তার প্রতিকারের ক্ষেত্রে সেইরুপ ক্রিয়া করবে যা মানুষের প্রয়োজনীয় শারীরবিদ্যার সমকক্ষ। যদিও মডেল জীবের জৈবিক ক্রিয়াকর্ম মানুষে প্রভাব ফেলার বিষয়টি নিশ্চিত করে না, তথাপি অনেক রোগের ঔষধ, চিকিৎসা ও নিরাময়ের জন্য প্রতিমান জীবের সাহায্য নেয়া হয়েছে।[৩][৪] মূলত, মানুষের রোগের ক্ষেত্রে তিন ধরনের জীবের মডেল ব্যবহৃত হয়ঃ সমসংস্থ বা হোমোলোগাস, সমরূপরৈখিক বা আইসোমরফিক, এবং পূর্বাভাসমূলক বা প্রেডিক্টিভ। সমসংস্থ প্রতিমান জীবে মানুষের রোগের মতোই একই কারণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসা দেখা যায়। সমরূপরৈখিক জীবগুলোতে রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা মানুষের রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসার অনুরূপ। পূর্বাভাষমূলক জীব মানুষের নির্দিষ্ট রোগের মাত্র কয়েকটি দিক দিয়ে সমরূপ, তথাপি এরা অনেক রোগের বৈশিষ্ট্যের পদ্ধতি আলাদাকরণ ও পূর্বাভাষের ক্ষেত্রে বেশ উপযোগী।[৫]

    গুরুত্বপূর্ণ মডেল জীব

    জীবনের তিনটি অধিজগৎ বা ডোমেইনের প্রত্যেকটি থেকেই মডেল জীব নেয়া হয়েছে। ভাইরাসের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রাক-কেন্দ্রিক যে মডেল জীবটি বিগত ৬০ বছর ধরে ব্যাপকভাবে অধ্যয়ণ করা হয়েছে সেটি হল এশেরিকিয়া কোলাই (ই. কোলাই)। এটি মানুষের অন্ত্রের একটি সাধারণ গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া যাকে গবেষণাগারে অতি সহজে এবং কম খরচে জন্মানো ও লালন করা যায়। আণবিক জিনতত্ত্বে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত একটি মডেল জীব। এছাড়াও এটির বেশ গুরুত্ব দেখা যায় জৈবপ্রযুক্তিঅণুজীববিজ্ঞানে, যেখানে রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ’র অধিকাংশ কাজের ক্ষেত্রে একে পোষক জীবরূপে ব্যবহার করা হয়।[৬]

    সরল সুকেন্দ্রিক মডেল জীবের মধ্যে রয়েছে ক্ল্যামিডোমোনাস রেইনহার্ডটি নামের একটি এককোষী সবুজ শৈবাল যেটির জিনতত্ত্ব প্রচুর পরিমাণে অধিত। অন্য অনেক বিষয় ছাড়াও সালোকসংশ্লেষণ ও সক্রিয়তা বা মোটাইলিটির অধ্যয়ণে একে ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি, এই জীবের অনেকগুলো পরিচিত এবং নকশাকৃত মিউট্যান্ট ও প্রকাশিত বিন্যাস ট্যাগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, জিনগত রূপান্তর ও জিন নির্বাচনের জন্য বর্তমানে অনেক উন্নত পদ্ধতিও প্রচলিত রয়েছে।[৭]

    ডিক্টিওস্টেলিয়াম ডিসকয়ডিয়াম নামের অ্যামিবাকে জৈবানুবিজ্ঞান ও জিনতত্ত্বের গবেষণায় ব্যবহার করা হয়। এটি মূলত কোষ যোগাযোগ, ডিফারেন্সিয়েশন, ও প্রোগ্রামকৃত কোষ মৃত্যুর উদাহরণ হিসেবে অধিত হয়।

    বিকাশমূলক জীববিজ্ঞান অধ্যয়ণের জন্য সেনোরাবডিটিস এলেগ্যান্স একটি মডেল জীব

    চিকিৎসাবিজ্ঞানের গবেষণায় ল্যাবরেটরী মাইস সুপরিচিত

    অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের মধ্যে ড্রসোফিলা মেলানোগ্যাস্টার নামক ফলের মাছি, থমাস হান্ট মর্গান ও অন্যান্য গবেষকদের জিনতত্ত্বের গবেষণার কারণে, অত্যন্ত জনপ্রিয়। এদেরকে অতি সহজে গবেষণাগারে পুনরূৎপাদন করা যায় এবং এদের দ্রুত প্রজন্ম, উচ্চমাত্রার উর্বরতা, গুটিকয়েক ক্রোমোজোম, ও সহজে ঘটানো পর্যবেক্ষণযোগ্য পরিব্যক্তি রয়েছে।[৮] সেনোরাবডিটিস এলেগ্যান্স নামের নেমাটোডকে বিকাশ ও শারীরবিদ্যার জিনগত নিয়ন্ত্রণের রহস্যগুলো উন্মোচনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। সর্বপ্রথম ১৯৬৩ সালে সিডনি ব্রেনার এই জীবটিকে নিউরনের বিকাশের মডেলরূপে প্রতিষ্ঠা করেন, এবং তারপর থেকে এটি নানান ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।[৯][১০] বহুকোষী প্রাণীদের মধ্যে সর্বপ্রথম এই জীবটিরই জিনোম বিন্যাস সম্পন্ন হয় এবং সর্বশেষ তথ্যমতে এর কানেকটোম সম্পন্ন হয়েছে।[১১][১২]

    আরাবিডোপসিস থ্যালিয়ানা হল একালের সবচাইতে জনপ্রিয় প্রতিমান উদ্ভিদ। এর ছোট গঠন এবং ক্ষুদ্র জীবনচক্র, দ্রুত জিনগত অধ্যয়ণে সহায়তা করে।[১৩] এর অনেক ফেনোটাইপগত ও জৈবরাসায়নিক মিউট্যান্ট ইতোমধ্যে নকশা করা হয়ে গেছে।[১৩] উদ্ভিদের মধ্যে সর্বপ্রথম আরাবিডপসিসের জিনোম বিন্যাস সম্পন্ন হয়েছে।[১৩]

    মেরুদণ্ডী প্রাণীদের মধ্যে গিনিপিগ একটি পুরাতন মডেল যেটি রবার্ট কক ও অন্যান্য ব্যাক্টেরিয়া বিশেষজ্ঞগন ব্যাক্টেরিয়ার দ্বারা সংক্রমণের পোষক হিসেবে ব্যবহার করতেন। একসময় “গবেষণাগারের প্রাণী” হিসেবে জনশ্রুতি থাকলেও বর্তমানে এর ব্যবহার কমে এসেছে। বর্তমানে প্রথম শ্রেণীর একটি মেরুদণ্ডী মডেল জীব হল ইঁদুর (Mus musculus)। এর অনেক অন্তর্জাত বংশ বিদ্যমান রয়েছে। এছাড়াও, নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের জন্য এই জীবের নির্দিষ্ট প্রকরণ রয়েছে যাদেরকে প্রায়ই দেহের আকার, মুটিয়ে যাওয়া, পেশিবহুলতা, ও স্বতঃপ্রবৃত্ত চাকতি দৌড়ের আচরণের মত চিকিৎসাবিজ্ঞানের নানান গবেষণার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।[১৪]

    ধেড়ে ইঁদুর (Rattus norvegicus), বিষবিদ্যা ছাড়াও স্নায়ুতাত্ত্বিক গবেষণায় মডেল জীবরুপে ব্যবহৃত হয়। পশ্চিমা নখওয়ালা ব্যাঙ (Xenopus tropicalis) ও আফ্রিকার নখওয়ালা ব্যাঙের (Xenopus laevis) ডিমভ্রুণকে বিকাশমূলক জীববিজ্ঞান, কোষ জীববিজ্ঞান, বিষবিদ্যা, ও স্নায়ুবিজ্ঞানের অধ্যয়ণে ব্যবহার করা হয়।[১৫][১৬] প্রায় স্বচ্ছ দেহ সমৃদ্ধ জেব্রাফিশকে বিকাশ, বিষবিদ্যা ও টক্সিকোপ্যাথলোজি,[১৭] নির্দিষ্ট জিনের কাজ এবং সিগনালিং পথের গবেষণায় ব্যবহৃত হতে দেখা যায়।

    অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মডেল জীব ও এদের প্রধান কাজ হলঃ টি৪ ফাজ (ভাইরাস সংক্রমণ), টেট্রাহাইমেনা থার্মোফিলিয়া (অন্তঃকোষীয় প্রক্রিয়া), স্যাকারোমাইসিস সেরেভিসিয়া, স্কিৎজোস্যাকারোমাইসিস পম্বে (কোষ চক্র, কোষ পোলারিটি, আরএনএআই, সেন্ট্রোমেয়ার, ট্রান্সক্রিপশন), ভুট্টা (ট্রান্সপোজোন্স), হাইড্রা (পুনরুৎপাদন ও মরফোজেনেসিস),[১৮] বিড়াল (নিউরোফিজিওলজি), মুরগি (বিকাশ), কুকুর (শ্বসনতন্ত্র ও কার্ডিওভাস্কুলার তন্ত্র), নথোব্রাঙ্কিয়ুস ফুরজেরি (বার্ধক্য),[১৯] মানুষ নয় এমন প্রাইমেট, যেমন, রেসাস মাকাক এবং শিম্পাঞ্জি (হেপাটাইটিস, এইচআইভি, পারকিনসন্স রোগ, কগনিশন, ও টিকা)

  • বিবর্তন বিরোধিতা

    বিবর্তন বিরোধিতা

    বিবর্তন বিরোধিতা একটি বিশ্বাসগত অথবা বৈজ্ঞানিক অবস্থান যা মানুষের উদ্ভবের ও বিকাশের বিবর্তন তত্ত্ব কে অস্বীকার করে। বিবর্তনবাদের ধারণা ঊনিশ শতকে দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর বিজ্ঞানী, ধর্মতত্ববিদ এবং সাধারণ মানুষ স্ব স্ব দৃষ্টিকোণ থেকে এ তত্ত্বের বিরোধিতা শুরু করে। অধিকাংশ মানুষ পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাবকে ঈশ্বরের সিদ্ধান্ত ও অবদান বলে বিশ্বাস করে। এ বিশ্বাস সকল ধর্মগ্রন্থ সমর্থিত। বিবর্তনের মাধ্যমে মানুষের উদ্ভবের তত্ত্ব বৈজ্ঞানিকদের বিরোধিতারও সম্মুখিন হয় কারণ বিবর্তনবাদের বয়ান যৌক্তিক প্রতীয়মান হলেও এ মতবাদ প্রমাণ করা সম্ভব ছিল না।

    বিবর্তন বিরোধিতা

    চার্লস ডারউইন ১৮৫৯ সালে তার বই অন দ্য অরিজিন অব স্পিসিস প্রকাশ করেন। প্রথমে এটা বিজ্ঞানীদের সমালোচনার মুখে পড়ে কারণ তৎকালীন সময়ে জীবের পরিবর্তনের/জীবের উৎপত্তির/ এক প্রজাতি থেকে আরেক প্রজাতির উদ্ভবের নানান ধারণা(‘এসব পরীক্ষণীয় ছিল না’) প্রচলিত ছিল। কিন্তু অবশেষে বৈজ্ঞানিক মহল সম্পূর্ণভাবে একে স্বীকার করে নেয়। ১৯৪০ এর পরে মুলধারার জীববিজ্ঞানীরা সকল বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে বিবর্তনকে স্বীকৃতি দেন কারণ তারা বিবর্তনকে(নব্য ডারউইন সংশ্লেষণ ও বিবর্তনের পক্ষে প্রমাণ উপস্থাপন করে) পর্যবেক্ষণ করেন। সেসময় থেকেই বিজ্ঞানীদের সংস্থার তুলনায় ধর্মীয় জায়গা থেকে অধিক সমালোচনা এসেছিল। সৃষ্টিবাদের নামে।(এমন এক প্রকার বিশ্বাস যেখানে ধারণা করা হয় অসীম ক্ষমতাধর ঈশ্বর/সত্তা এই মহাজগৎ এবং জীবন সৃষ্টি করেছেন অলৌকিক ক্ষমতার দ্বারা)। নব্য সৃজনবাদীরা এক নতুন পথচলার সূচনা করে, যার নাম রাখা হয় সৃষ্টিবাদ বিজ্ঞান, নব্যসৃজনবাদ বিজ্ঞান, বুদ্ধিমান ডিজাইন ইত্যাদি। এইসব কিছু এমন এক বিশ্বাসের কথা বলে যেখানে জীবনকে অলৌকিক ক্ষমতাধরের নকশা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, বলা হয় এ মহাজগতের সব কিছুই সৃষ্টি হয়েছে কোনো বুদ্ধিমান ঈশ্বরের দ্বারা। তারা দাবী করেন এটা বিজ্ঞানসম্মত এবং সর্বসাধারণের এটা পড়া এবং শিক্ষা নেওয়া উচিত। এই সৃজনবাদ বনাম বিবর্তনবাদ বিতর্ক বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয় এবং নতুন নতুন অভিযোগ বিবর্তনের বিরুদ্ধে (যেমনঃ স্বাভাবিক বিজ্ঞান মানছে না, নৈতিকতাহীন, সম্ভাবনা সূত্রের লঙ্ঘন এবং প্রমাণ ও ভিত্তিহীন ইত্যাদি) উত্থাপিত হতে থাকে। যাই হোক বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় তাদের এই সব অভিযোগকে নিন্দুকের অপব্যাখ্যা, ভিত্তিহীন বলে আখ্যায়িত করে।

    ইতিহাস

    চার্লস ডারউইনের প্রজাতির উৎপত্তি বিষয়ক বিবর্তনতত্ত্ব ব্যাপকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছিল। কিন্তু বিবর্তনের গঠনপ্রণালি প্রাকৃতিক নির্বাচন নিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গীর নিরন্তর সমালোচনা হয়েছিল।

    ১৯ শতকের শুরুতে বিবর্তনবাদের মত নানান মতবাদ ছিল। যার কোনোটাই সমালোচনার ঊর্ধ্বে ছিল না। যেমন ল্যামার্কের মতবাদ।(এমন এক প্রকার মতবাদ যেখানেও এক প্রজাতি থেকে অপর প্রজাতির পরিবর্তন দেখানো হয়েছে) এই মতবাদটি বৈজ্ঞানিকভাবে তীব্র বিরোধিতার সম্মুখীন হয়। উল্লেখযোগ্যভাবে জর্জস কার্ভিয়ার এর দ্বারা। তার সাথে সাথে হয় রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিরোধিতারও।[১] যখন চার্লস ডারউইন ১৮৫৯ সালে তার বই অন দ্য অরিজিন অব স্পিসিস প্রকাশ করেন, তিনি বৈজ্ঞানিক সংস্থাগুলোকে বুঝাতে সক্ষম হন সকল প্রজাতির উদ্ভব তার গোত্রের সাধারণ পুর্বপুরূষের থেকে হয়েছে। তৎকালীন অধিকাংশ প্রাকৃতিক নির্বাচনকে যুক্তিসংগত এবং অভিজ্ঞতানির্ভর পরীক্ষণীয় থিওরী বলে নেন। ডারউইনের ধারণা এটাই বিবর্তনকে জনসাধারণ এর গ্রহণ না করার এটাই প্রাথমিক কারণ।[২] ডারউইনের বিবর্তন নিয়ে প্রাথমিক আপত্তি ছিল বিজ্ঞান এবং ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ উভয়দিক থেকে। ডারউইনের সমসাময়িকরা জীবাশ্ম প্রমাণের উপর নির্ভর করে প্রজাতির পরিবর্তনকে স্বীকার করে নেন । দ্য এক্স ক্লাব গঠিত হয় বিবর্তনকে চার্চ এবং অপেশাদার কর্মী থেকে রক্ষা করতে।[৩] যদিও বিবর্তনের প্রক্রিয়া -প্রাকৃতিক নির্বাচন- প্রশ্নবিদ্ধ হয় বিকল্প মতবাদ ল্যামার্কিজম দ্বারা। এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মের হঠাৎ রূপান্তর (saltationism) এবং প্রাকৃতিক প্রলয়ংকারী দূর্যোগ মতবাদ(catastrophism)দ্বারা ডারউইনের ধীরে ধীরে নতুন প্রজাতিতে রূপান্তর মতবাদ (gradualistic) বিরোধিতার শিকার হয় । লর্ড ক্যালভিন বৈজ্ঞানিকভাবেই তার থার্মোডায়ানোমিক্স সুত্র দ্বারা। বিরোধিতা করেন। তৎকালীন ভূতাত্ত্বিকদের মতে পৃথিবীর বয়স ২৪ থেকে ৪০০ মিলিয়ন বছর। এ হিসাবকে তুলে ধরে ক্যালভিন বলেন,”এত অল্প সময়ে পৃথিবীতে এত জটিল প্রাণ সৃষ্টি সম্ভব নয়।” কিন্তু এই হিসাবটা সংশোধিত হয় ১৯০৭ সালে, যখন তেজস্ক্রিয় পদার্থ দেখায় পৃথিবীর বয়স বিলিয়ন বছরের চেয়েও বেশি। ফলে ভূবিজ্ঞানীদের দ্বারা ক্যালভিনের এই যুক্তি খণ্ডিত হয়।[৪][৫] ক্যালভিন নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে ঐশ্বরিক মতবাদ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন।[৬] ডারউইন সুনির্দিষ্ট ভাবে যে গঠনগত বংশগতিবিদ্যার ব্যাখ্যা দেন তার কোনো সমর্থিত প্রমাণ তিনি দিতে পারেননি। বিবর্তন হচ্ছে বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে নিশ্চিত থাকলেও, কিভাবে হচ্ছে এই বিষয়ে বিজ্ঞানীরা অন্তত ১৮৮০ থেকে ১৯৩০ পর্যন্ত এক প্রকার অন্ধকারে ছিলেন [৭][৮] যতদিন না মেণ্ডেলের বংশগতিবিদ্যা আবিষ্কৃত হয় এবং নব্য বিবর্তনবাদের সূচনা হয়। নব্য সংশ্লেষণ নতুন নতুন প্রমাণ যেমন জিনতত্ত্ব দ্বারা সার্বজনীনভাবে স্বীকৃতি পায় জীববিজ্ঞানীদের মধ্যে। যা সুনিশ্চিত করে ডারউইনের ভবিষ্যতবাণীকে এবং এ বিষয়ে বাকি মতবাদকে বাতিল করে দেয়।[৯]

    আমেরিকায় বিশেষ করে প্রটেস্টান্টরা, ১৮৬০ থেকে ১৮৭০ এর মধ্যে বিবর্তন নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু করে। ১৮৭৩ সালে লুই এগাসিজের (Louis Agassiz) মৃত্যুর পরে এ বিতর্ক আরো বেড়ে যায় এবং ১৮০০ সালে “খৃস্টীয় বিবর্তন” নামে দল গঠিত হয়।[১০] ১৮৭১ সালে ব্রিটেনে দ্য ডিসেন্ট ম্যান (The Descent of Man) প্রকাশের পর এই বিতর্ক পুনরজ্জীবিত হয়, যা এক দশক ধরে চলে আসছিল। স্যার হেনরি চ্যাডউইকই প্রথম যিনি শিক্ষিত খ্রিষ্টানদের মধ্যে বিবর্তন স্বীকার করে বিবৃতি দেন। এর ফলে ১৮৭৬ সালে বিবর্তনবাদ গ্রহণযোগ্য এবং সম্মানিত মতবাদে পরিণত হয়।.[১০] ফ্রেডরিক টেম্পল “ধর্ম এবং বিজ্ঞানের মধ্যে সম্পর্ক'(১৮৮৪) শীর্ষক লেকচার দেন যেখানে আলোচনা করা হয়, কিভাবে বিবর্তন ধর্মের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন।[১১] ক্যান্টারবারির আর্কবিশপদের সাথে ১৮৯৬ সালের মিটিং এটাই প্রমাণ করে যে খোদ প্রটেস্টান্টদের যাজক সম্প্রদায় বিবর্তনবাদ কে স্বীকার করে নিয়েছে।[১০]

    এক দশক ধরে রোমান ক্যাথলিক চার্চ বিবর্তন নিয়ে কথাবলা এড়িয়ে যান। এরপর ক্যাথলিকরা বলেন বিবর্তন বাইবেলেরএর নিয়মমতই হচ্ছে। ভ্যাটিকান কাউন্সিল প্রথম বিবর্তনের সাথে ধর্মের যে সংঘর্ষ সেটা মিটমাটে প্রস্তাবনা দেন (১৮৬৯-৭০) সালে। অবশেষে তারা খুঁজে পান সবকিছুই সৃষ্টি হয়েছে শুন্য থেকে; তবে ঈশ্বরের দ্বারা। তারা তাদের এই বক্তব্য কে এক্সোকমিউনিকেশন (এটা এমন এক ধারা ছিল যা ধর্মের সাথে, ক্যাথলিক চার্চের সাথে সংঘর্ষপুর্ণ যে কোনো প্রকার প্রস্তাবনা, বই, মতবাদকে প্রকাশে বাধা দিত এবং এসবকিছুর বক্তাকে শাস্তির কাঠগড়ায় দাঁড় করাতো) এর কাছে পাঠানোর প্রস্তাবনাকে প্রত্যাখান করেন। ১৯৫০ সালে এনসাইক্লিকাল, পোপ পিয়াস XII এর “হিউম্যানি জেনেরিস”এ প্রথমবারের মত বিবর্তনবাদকে অফিসিয়ালী স্বীকার করেন।[১২] তারা বলেন মানুষ আদৌ অন্য কোনো প্রাণ থেকে বিবর্তিত কিনা, সে বিষয়ে তারা নিজেদের মত করে গবেষণা করবেন। কিন্তু আদম হাওয়া আর আত্মার বিষয়ে তারা গবেষণা করবেন কি না এই প্রশ্নকে তারা এড়িয়ে যান। পোপ জন পল II বলেন যে বিবর্তনবাদ শুধু মুখের কথার চেয়েও বেশি কিছু। বিবর্তনবাদই পারে কিভাবে এই বিশাল শরীর গড়ে উঠেছে তার ব্যাখ্যা করতে। কিন্তু পুনরায় আবার বলেন মানুষের আত্মা নিয়ে কোনো বস্তুবাদী ব্যাখ্যা দেওয়া মানুষের উচিত নয়।[১৩]

    ধার্মিক মুসলমান, যারা কোরানে বর্ণিত সৃষ্টিতে বিশ্বাসী, তাদের থেকে শুরু করে শিক্ষিত মুসলমান সবার মধ্যেই বিবর্তনবাদ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল। শিক্ষিত মুসলমানদের একাংশ অবশ্য এটাও ভাবতো বিবর্তন আল্লাহর নির্দেশেই হচ্ছে। নবম শতকে আল-জাহিয নামক একজন মুসলিম স্কলার এমন এক ধারণা দেন যার সাথে প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদের ধারণা কিছুটা মিলে যায়।[১৪] যাইহোক, মুসলিম বিশ্বে বিবর্তনকে স্বীকার করার ব্যাপ্তি কম। যেহেতু বিবর্তনবাদ অনেকটাই বস্তবাদী ধারণাকে জোরালো করে বলে, মানবদেহের উৎপত্তির সাথে আদম হাওয়ার চিন্তাভাবনা ত্রুটিপূর্ণ। আল্লাহর অস্তিত্বও বিবর্তনবাদ অস্বীকার করে, তাই মুসলিম বিশ্ব এ বিবর্তনবাদকে অগ্রহণযোগ্য ও বাতিল করে।[১৪] একইসাথে পশ্চিমাবিশ্বে যেসব মুসলিম লেখক প্রকাশক ছিলেন তারাও বিবর্তনবাদের বিপক্ষে অবস্থান নেন। যা তাদের লেখালেখিতে প্রতিফলন ঘটে।[১৫]

    প্রধান প্রধান ধর্মের ধর্মযাজকগণ বিবর্তনবাদ বিরোধিতাকেই গ্রহণ করেন। তাদের কাছে প্রতীয়মান হয় এই ধারণা (যেখানে বলা হয়েছে প্রজাতি প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তন হয় এবং ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির একই পূর্বপুরুষ ছিল) “জেনেসিস একাউন্ট অব ক্রিয়েশন” এর সাথে সাংঘর্ষিক। বিশ্বাসীগণ ডারউইনিজমকে প্রচলিত মতবিরোধী বলে আক্রমণ করেন। উইলিয়াম প্যালের ওয়াচমেকার থিওরি একপ্রকার পরম মতবাদে পরিণত হয়, হয়ে উঠে সৃজনবাদীদের আন্দোলনের হাতিয়ার । যখন ডারউইনের থিওরী প্রকাশিত হয়, তখন থেকেই প্রাকৃতিক ধর্মতত্ববিদদের নানাবিধ বিরোধিতার শুরু হয়। তারা আরো একটা ধারণার সুচনা করেন যেখানে বলা হয় বিবর্তন নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে তাই এটাকে ধ্রুব সত্য হিসাবে ধরার কোনো কারণ নাই। আল্লাহতে বিশ্বাস রাখাই এখন বেশি দরকার। এটাই প্রাথমিক এবং প্রধান দরকার। আর যদি বিবর্তন হয়েও থাকে তাহলে আল্লাহই একে পরিচালনা করছেন এবং মানুষকে সৃষ্টি করেছেন [১৬] এই অবস্থানটা খ্রিষ্টান সম্প্রদায় এবং বিবর্তন নিয়ে ইহুদিদের দর্শনবাদী ও একইসাথে নব্য ধর্মবিদরা গ্রহণ করে যার দর্শণ ছিল বাইবেল এবংতোরাহ রুপকভাবে হলেও বিবর্তনের ব্যাপারে বলছে, এইভাবেই তারা বিবর্তন এবং ধর্মের মধ্যে বিরোধিতাকে দূর করে। যাই হোক ১৯২০ সালে গোঁড়া খ্রিষ্টানেরা আমেরিকায় বাইবেলের রেফারেন্স টেনে তাদের তর্কের উন্নয়ন ঘটিয়ে শুরু করে বিবর্তনবাদ শিক্ষা দেওয়ার বিরোধিতা। তারা জানান বিবর্তনবাদ জার্মানির যুদ্ধাবস্থার হিংস্রতার শিক্ষা দেয় এবং ইহা ধর্ম ও নৈতিকতার জন্য হুমকিস্বরুপ। এই বিরোধিতাই ক্রমান্বয়ে সৃজনবাদ বনাম বিবর্তনবাদ প্রক্রিয়ায় রুপ নেয়। এবং সৃজনবাদীরা আপত্তি জানায় বিদ্যালয়ে বিবর্তনবাদ শিক্ষা দেওয়ার বিষয়ে। ১৯৬৮ সালে এপারসন ভি. আরকানসাস বলেন, “ধর্মীয় চিন্তাধারার উপর ভিত্তি করে বিবর্তনবাদ শিখানো নিষেধ করা মুলতঃ প্রতিষ্ঠিত মতবাদকে লঙ্ঘন করা বুঝায়।”[১৭]

    এরপর থেকে সৃষ্টিবাদীরা বিবর্তনের বিরুদ্ধে নতুন নতুন অদ্ভুত আপত্তি জানায়, অভিযোগ করে বিবর্তনবাদ অবৈজ্ঞানিক, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং ধর্মের বিরোদ্ধাচরণ করে।[১৮] সৃষ্টিবাদীরা গণতান্ত্রিকভাবে বিবর্তনের বিরুদ্ধে আপীল করেন। তারা এ বিষয়ে স্বচ্ছতা দাবী করে বলেন, বিবর্তনবাদ বিতর্কিত এবং বিজ্ঞানশিক্ষা শ্রেণিগুলোতে শিক্ষার্থীদের বিতর্কিত বিষয় শিখাচ্ছে।[১৯] যখন ১৯৯০ সালে সৃজনবাদ মুভমেন্ট হয় তাদের এইসমস্ত আপত্তি চরমমাত্রায় পৌছায় এবং কিটযমিলার বিদ্যালয় ২০০০ সালের পূর্ব পর্যন্ত বিবর্তনবাদের বিকল্প আখ্যা দিয়ে পড়ানো শুরু করে [২০][২১]

    বিবর্তন শব্দের সীমা

    মানব বিবর্তনের কালরেখা

    এই বাক্সটি:

    -১ —

    -০.৯ —

    -০.৮ —

    -০.৭ —

    -০.৬ —

    -০.৫ —

    -০.৪ —

    -০.৩ —

    -০.২ —

    -০.১ —

    ০ —

    মানবসদৃশ
    উল্লুক

    নাকালিপিথেকাস

    আওয়ারানোপিথেকাস

    সাহেলানথ্রোপাস

    ওরোরিন

    আর্ডিপিথেকাস

    অস্ট্রালোপিথেকাস

    হোমো হ্যাবিলিস

    হোমো ইরেক্টাস

    নিয়ান্ডার্থাল

    হোমো ইডাল্তু

    প্রথমদিককার উল্লুক

    সর্বপ্রথম দ্বিপদী

    প্রথমদিককার দ্বিপদী

    সর্বপ্রথম পাথরনির্মিত হাতিয়ার

    সর্বপ্রথম আফ্রিকা
    থেকে প্রস্থান

    সর্বপ্রথম অগ্নি

    সর্বপ্রথম রান্না

    সর্বপ্রথম পরিধান

    আধুনিক মানুষ
    প্লে




    স্টো


    সি



    প্লা





    সি



    মা





    সি


    হো

    মি

    নি

    নি

    অক্ষের স্কেল: কোটি বছর
    আরও দেখুন: জীবন সময়রেখাপ্রকৃতি সময়রেখা

    আরও তথ্যের জন্য দেখুন: Evolution (term)

    বিবর্তন শব্দটা এমনই যে, তাকে নিয়েই অস্পষ্টতা তৈরী হয়। জীববিজ্ঞানের ভাষায়: জীবের বংশবৃদ্ধির ক্ষেত্রে এক প্রজন্ম থেকে অপর প্রজন্মে জীনগত পরিবর্তনই বিবর্তন। কিন্তু এই শব্দটার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন অর্থ আছে, বিবর্তনের শাব্দিক অর্থ পরিবর্তন ধরে নিয়ে একে বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার করা হয়, যেমন: সামাজিক বিবর্তন to stellar এবং মহাজাগতিক বিবর্তন। এর সবকিছুই জীববিজ্ঞানের বিবর্তনের সাথে সম্পৃক্ত নয়।যদি জীববিজ্ঞানের বিবর্তনের মুল শর্তগুলোর সাথে অন্য বৈবর্তনিক প্রকৃয়ার সংঘ্র্ষ হয়, তখন ভুল হবার সম্ভাবনা থাকে।যেমন অনেকেই মনে করে থাকেন বিবর্তনের সাথে abiogenesis অথবা Big Bang এর সম্পর্ক আছে। তাই তারা বিবর্তনের সাথে উক্ত বিষয়গুলোকে মিলানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বিবর্তন এই বিষয়গুলো নিয়ে কোনো বক্তব্য দেয় না।[২২]

    সাদা পিপার্ড মথ

    পিপার্ড মথের বিবর্তন এর ফলে কালো মথে রুপান্তর। প্রাকৃতিক নির্বাচনের ফলে পপুলেশনে সংক্ষিপ্ত পরিবর্তন বিবর্তনকে এগিয়ে নিয়ে যায়

    সাধারণ ভাষায় বিবর্তন জীবের ধীর বা দ্রুততর উন্নয়ন বা সরল জীব থেকে জটিল জীবের যে উদ্ভব তাকে ব্যাখ্যা করে। বিবর্তনকে পিছনের দিকে চালিত করার পর সাদা চোখে দেখে মনে হয়, বিবর্তনের কোনো লক্ষ্য আছে, অথবা কারো নির্দেশে এটি পরিচালিত হচ্ছে, তবে এটা একটা ভুল ধারণা। বাস্তবতা হল বিবর্তনের কোনো লক্ষ্য থাকে না। বিবর্তন ঘটে জীবের এক প্রজন্ম থেকে অপর প্রজন্মে খুবই ধীরে ধীরে, যাতে করে নতুন প্রজন্ম পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে, এবং প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে পারে। এভাবে করে সে সে যোগ্য হয়ে উঠে পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে। তবে যেসব প্রজাতি পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে না, সময়ের সাথে তারা বিলুপ্ত হয়ে যায়। জীববিজ্ঞানীরা কখনো মানুষের মত একটা প্রজাতিকেই বিবেচনা করে না, যে অনেক বেশি উন্নত এবং বিবর্তনের শেষ ধাপে অবস্থান করে। জীববিজ্ঞানিরা কখনো মানুষের মত একটাই প্রজাতি নিয়ে কাজ করে না,যে অন্য প্রজাতি থেকে উন্নত আর অনেক বেশি বিবর্তিত। নির্দিষ্ট কয়েকটি উৎস থেকে বস্তুনিষ্ঠতার পরিবর্তে মানবকেন্দ্রিকতা অনুসারে অমানব জীবসত্তারসমূহ মূল্যায়নের প্রবণতার কারণে অন্য বিষয়ের দিকে ইঙ্গিতের জন্য সমালোচনা করা হয়েছে।[২৩]

    বিবর্তনে এটা অপরিহার্য নয় জীব ক্রমশ জটিল হবে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে জীব জটিল হবে এমনটা প্রয়োজনীয় নয়,বরং প্রাকৃতিক নির্বাচনের ফলে সুনির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে জীব জটিল হয় প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য। এবং পরিস্থিতির সাথে সংগতি রেখে জীবের এই জটিলতা বাড়তে পারে, কমতেও পারে এবং অপরিবর্তিও থাকতে পারে এবং এই তিনও প্রবণতা বিবর্তন প্রকৃয়ায় পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।[২৩] সৃজনবাদীরা বিজ্ঞান দিয়ে বিবর্তনের বিরোধিতা করার বদলে প্রচলিত যুক্তি দিয়েই বিবর্তন তত্তের বিরোধিতা করে। এবং এসব যুক্তি দিয়েই অনেকে বিবর্তনকে খণ্ড বিখণ্ড করে ফেলে। যদিও জীববিজ্ঞানীরা এ নিয়ে কী বলছে তারা খুজে দেখে না (দেখুন straw man argument)।

    বিজ্ঞানে স্বীকৃতি

    সৃজনবাদ এবং বিবর্তনের মধ্যে মূল সংঘর্ষ আদতে বিবর্তনের সংজ্ঞা নিয়ে। জীববিজ্ঞান অনুসারে বিবর্তন হল কোন প্রাণীকূলের জনসংখ্যার জিনেটিক পরিবর্তন; যা প্রজন্মান্তরে থেকে যায়। যাই হোক, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিবর্তন শব্দটির ভিন্ন ভিন্ন অর্থ রয়েছে। সামজিক বিবর্তন থেকে শুরু করে আণবিক (molecular) বিবর্তন- এই সব ক্ষেত্রেই বিবর্তন শব্দটির ভিন্ন ভিন্ন ব্যবহার হয়। যখন জীববিজ্ঞানের বিবর্তনকে অন্য বিবর্তন প্রক্রিয়ার সাথে মিশিয়ে ফেলা হয় তখন সাধারনত বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। যেমন প্রচলিত একটি ভুল ধারণা, বিবর্তনবাদ বিগ ব্যাং কিংবা জীবনের উৎসের ব্যাপারে আলোচনা করে।[২১]

    বিভিন্ন সময়ে; বিবর্তনকে বৈজ্ঞানিক বৈধতার কষ্টিপাথরে বারবার যাচাই করা হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এটি বৈজ্ঞানিকভাবে বৈধ কিনা, সেই প্রশ্ন এবং অভিযোগ অনেকে করছেন।[২৪][২৫] অথবা চেষ্টা করা হচ্ছে বিবর্তনের বিকল্প হিসেবে অন্য কোনো মতবাদ যেমনঃ সৃজনবাদীতার বিকাশ ঘটানো।[২৬][২৭]

    বিবর্তনবাদ শুধুই থিওরী

    আরও তথ্যের জন্য দেখুন: বিবর্তন: ফ্যাক্ট ও থিয়োরী

    বিবর্তনের সমালোচনাকারীরা বিবর্তন শুধুমাত্র একটি থিওরী বা তত্ত্ব বলেন দাবী করেন এবং তারা জোর দেন যে বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব কখনোই বাস্তব নয়। এই তত্ত্ব বিভ্রান্তিকরভাবে নিজেকে প্রকাশ করে এবং এর কোনো প্রমাণস্বাপেক্ষ না। তাই বিবর্তনবাদ ফ্যাক্ট নয়, শুধুই তত্ত্ব।।[২৮] প্রচলিত ভাষায় তত্ত্ব আর বিজ্ঞানের ভাষায় তত্ত্বের মধ্যে বেশ পার্থক্য আছে। প্রচলিত ভাষায় তত্ত্বের অর্থ অনুমান হলেও বিজ্ঞানের ভাষায় থিওরী বা তত্ত্ব হচ্ছে এমন এক ব্যাখ্যা যার মাধ্যমে ভবিষ্যতবাণী করে প্রমাণের মাধ্যমে যাচাই করা যায় এবং অবশ্যই পরীক্ষা করে তার সত্যতা নিশ্চিত করতে হয়। বিবর্তনবাদ প্রজাতির বৈচিত্র্যতা এবং তাদের পুর্বপুরুষকে ব্যাখ্যা করে। এটা উচ্চতর বৈজ্ঞানিক প্রমাণ। বিবর্তনবাদের উদাহরণ হচ্ছে আধুনিক বিবর্তনীয় সমন্বয়, যা ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদ এবং মেণ্ডেলের বংশগতিবিদ্যার যুগপৎ উদাহরণ। অন্য যে কোনো মতবাদের মতই এই আধুনিক সমন্বয় ঘনঘন তর্ক-বিতর্ক, পরীক্ষা এবং বারবার বিজ্ঞানীদের দ্বারা সংশোধন হতে থাকে। সর্বশেষ গোটা বিজ্ঞান সমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে এই সিদ্ধান্তে আসে যে এই মডার্ণ সিন্থেসিস বা আধুনিক সমন্বয় ঘটছে বিবর্তনের কারণে।[২৮][২৯]

    সমালোচকরা এটাও বলেন যে বিবর্তন ফ্যাক্ট নয়।[৩০] প্রচলিত অর্থে ফ্যাক্ট হচ্ছে, যা পর্যবেক্ষণ করা যায় এবং পর্যবেক্ষণ করেই সেখান থেকে তথ্য ও জ্ঞান অর্জন করা যায়। কিন্তু বিজ্ঞানে প্রমাণ স্বাপেক্ষে ফ্যাক্ট যে কোনো কিছু হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ জানামতে থিওরী যেমন “পৃথিবী সুর্যের চারদিকে ঘুরে” এবং “বস্তু উপর থেকে নিচে পরে অভিকর্ষের কারণে” হতে পারে “ফ্যাক্টস” যদিও এরা সম্পূর্ণভাবে তত্ত্বীয়। বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে, বিবর্তনকেও “ফ্যাক্ট” বলা যায় একই কারণে, যেভাবে অভিকর্ষকে তত্ত্ব বলা হয়। বিবর্তনবাদ পর্যবেক্ষণলব্ধ প্রক্রিয়া, কারণ জীবের পপুলেশন সময়ের দ্বারা জীনগতভাবে পরিবর্তিত হয়। এইভাবেই বিবর্তনবাদকে ফ্যাক্ট বলা যেতে পারে। এই তত্ত্ব সমাজে প্রতিষ্ঠিত সত্য। এভাবেই বিজ্ঞানীদের কাছে বিবর্তনবাদ তত্ত্ব এবং ফ্যাক্ট উভয়ভাবেই স্বীকৃত হয় [৩১][৩২][৩৩]

    শুধুমাত্র পর্যবেক্ষণলব্ধ প্রমাণ ছাড়া কোন বৈজ্ঞানিক তত্ত্বই প্রমাণিত নয় বলে বিবর্তনবাদ এখনো অপ্রমাণিত এবং বিভ্রান্তিকর।[৩৪] এই পার্থক্যটি বৈজ্ঞানিক দর্শনের আলোকে গুরুত্বপূর্ণ, যেহেতু এতে নিশ্চয়তার অভাব আছে। বিজ্ঞানের কিছু কিছু শাখা যেমন গণিত কিংবা যুক্তিবিজ্ঞানে পর্যবেক্ষণলব্ধ দাবীকে মেনে নেয়া গেলেও প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তা মেনে নেয়া যায় না। কেননা, এক্ষেত্রে সত্যতা যাচাই এবং সত্যতা প্রতিপাদিত সম্পূর্ণ ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়। তাই বিবর্তনবাদ প্রমাণিত নয় কথাটি উল্লেখযোগ্যতাবিহীন হলেও খানিক সত্য। তাই বলে শুধু মাত্র তত্ত্ব বলে সম্পূর্ণ বিবর্তনবাদকে অস্বীকার করা অযৌক্তিক। বিভ্রান্তি বাড়ায় প্রমাণ শব্দটির চলিত অর্থ “বাধ্যতামূলক প্রমান” যাইহোক বিজ্ঞানীরা ববর্তনকে প্রমাণিত বলেই মেনে নেন।[৩৫]

    বিবর্তনকে স্বীকার করার স্তর

    আরও তথ্যের জন্য দেখুন: বিবর্তনকে সমর্থন করার ব্যাপ্তি

    জীবন সময়রেখা

    এই বাক্সটি:

    -৪৫০ —

    -৪০০ —

    -৩৫০ —

    -৩০০ —

    -২৫০ —

    -২০০ —

    -১৫০ —

    -১০০ —

    -৫০ —

    ০ —

        জল

    এককোষী
    জীব

    সালোকসংশ্লেষ

    সুকেন্দ্রিক

    বহুকোষী
    জীব

       স্থলজ জীবন

    ডাইনোসর

    স্তন্যপায়ী

    উদ্ভিদ

    ফুল

    পাখি

    প্রাইমেট

    আদিম পৃথিবী (-৪৫৪)

    প্রথম জল

    প্রথম প্রাণ
    (-৪১০)

    প্রবল উল্কাবর্ষণ

    প্রথম অক্সিজেন

    বায়ুমণ্ডলীয় অক্সিজেন

    অক্সিজেন সংকট

    প্রথম যৌন জনন

    ক্যাম্ব্রিয়ান বিস্ফোরণ

    আদিম মানুষ

    ফ্যা
    না
    রো
    জো
    য়ি

    প্রো
    টে
    রো
    জো
    য়ি


    র্কি
    য়া

    হে
    ডি
    য়া

    পোঙ্গোলা

    হিউরোনিয়ান

    ক্রায়োজিনিয়ান

    আন্দিয়ান

    কারু

    কোয়াটার্নারি

    অক্ষের স্কেল: কোটি বছরছবিতে শব্দসমূহ ক্লিকযোগ্য
    বামপ্রান্তে কমলা রঙে জানা তুষার যুগ চিহ্নিত।
    আরও দেখুন: মানব সময়রেখাপ্রকৃতি সময়রেখা

    বিবর্তন নিয়ে সৃজনবাদীদের একটা বক্তব্য হল এটা বিতর্কিত এবং কলহপ্রবণতাকে উষ্কে দেয়।[৩৬][৩৭] অতীতের সৃজনবাদীদের মত তারা বিবর্তনবাদের নাম-নিশানা মুছে ফেলতে চায় নাই, এবার তারা এক ভিন্ন কৌশলে হাঁটল। তারা বলতে শুরু করল, বিবর্তনবাদ যদিও বিতর্কিত তারপরেও তোমরা এটা শিখাও, তবে এই ব্যবস্থা করো যাতে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ইচ্ছেমত বিবর্তনবাদ আর সৃজনবাদের মধ্যে বিষয় নির্বাচন করতে পারে।[৩৭][৩৮]

    এই আপত্তিটা করেছিল ডিস্কভারি ইন্সটিটিউট নাম্নী এক প্রতিষ্ঠান। ওয়াশিংটনে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠান “বিতর্কিত বিষয় শেখাও” নামে একটা ক্যাম্পেইন করে। এর মাধ্যমে এরা মুলত বিদ্যালয়গুলোতে সৃজনবাদী ভাবনার বিকাশ ঘটাতে চাল এটা ছিল তাদের একপ্রকার কৌশল, যাদের একমাত্র ধ্যান জ্ঞান ছিল বিবর্তনবাদের শিক্ষা দেওয়া রোধ করা এবং বিশ্ব জুড়ে বস্তুবাদের প্রতি সাধারণ মানুষের যে পজিটিভ দৃষ্টিকোণ গড়ে উঠছে সেটাকে খ্রিষ্টান এবং বিশ্বাসীদের ধারণার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ ভাবনা দিয়ে পাল্টে দেওয়া।[১৯] তাদের এ কার্যক্রম কিছুটা সফল হয়েছিল এবং যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু বিদ্যালয়ে সৃজনবাদী শিক্ষা পড়ানো হয়েছিল বিবর্তনবাদের বিকল্প হিসাবে। অবশ্য ২০০১ সালে তাদের প্রচেষ্টা ব্যার্থ হয়ে যায়।[৩৯]

    বিজ্ঞানীগণ এবং যুক্তরাষ্ট্রের আদালত সৃজনবাদীদের আপত্তিকে বাতিল করে দেন। তারা বলেন বিজ্ঞান কখনো জনপ্রিয়তার উপর নির্ভর করে না, নির্ভর করে গ্রহণযোগ্যতার উপরে। জীববিজ্ঞানীদের দেওয়া তথ্য, সেই তথ্যের স্বচ্ছতাই সিদ্ধান্ত নিবে বিজ্ঞানে কোন বিষয়টা গ্রহণযোগ্য কোনটা নয়। এখানে জনমত যাচাইয়ের প্রশ্নই উঠে না। এবং যদিও বিবর্তনবাদ জনগণের কাছে বিতর্কিত, প্রকৃত বিজ্ঞানীদের কাছে এবং বিজ্ঞানের জগতে এটা সকল বিতর্কের ঊর্ধ্বে।[৪০][৪১]

    এইবার সৃষ্টিবাদীরা এই যুক্তিকে খণ্ডন করতে গিয়ে ২০০৮ এর আগস্টে একটা বিবৃতি দেয়। সেখানে ৭৬১ জন বিজ্ঞানী স্বাক্ষর করেন। বিবৃতি ছিল ডারউইনিজম নিয়ে বৈজ্ঞানিক মতবিরোধ। এর উদ্দেশ্য ছিল বিবর্তন নিয়ে বৈজ্ঞানিকদের সমালোচনা আছে এটা দেখানো। এই বিবৃতিতে বিজ্ঞানীরা সরাসরি বিবর্তনকে কিন্তু অস্বীকার করেন নাই। সংশয় প্রকাশ করেছেন ক্রমাগত মিউটেশন এবং প্রাকৃতিক নির্বাচনের ফলে এই জটিল প্রাণ তৈরী সম্ভব কি না। প্রায় একই পিটিশন এবার বিবর্তনবাদীরা করেন, যার নাম ডারউইনিজমের প্রতি বিজ্ঞানীদের সমর্থন যেখানে চারদিনের মধ্যে ৭০০০ এর অধিক বিজ্ঞানী এর সমর্থনে সই করেন।[৪২] এবং প্রজেক্ট স্টীভ, “‘a tongue-in-chee”‘ পিটিশনে ২৪শে মে ২০১৬ পর্যন্ত অন্তত ১,৩৯৩ জন বিজ্ঞানী বিবর্তনকে সমর্থন করেন[৪৩]

    সৃজনবাদীরা এক শতক ধরে একটাই কথা বলে আসছেন বিবর্তন শুধুই থিওরী। এরপর অবশ্য তারা ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে বলতে থাকেন বিবর্তনের পক্ষে গ্রহণযোগ্য প্রমাণের অভাব আছে অথবা এটা প্রকৃতির নিয়মলে লঙ্ঘন করে।এই সব অভিযোগ বিজ্ঞানীদের দ্বারা বাতিল হয়ে যায়। বিজ্ঞানীরা সৃজনবাদীদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনার যে আইডির কথা বলেন অথবা কেও সৃষ্টি করেছেন এই ধরনের ব্যাখ্যা দেন, সেগুলো মেনে নিব। কিন্তু এর আগে বিজ্ঞানের স্বাভাবিক নিয়ম অর্থাৎ আপনাদের দাবীর পক্ষে উপযুক্ত প্রমাণ দিতে হবে। তবেই বিবর্তনের বিকল্প হিসেবে সৃজনবাদীতাকে মেনে নেওয়া হবে। এটাও বলা হয়েছে যদি বিবর্তনের বিপক্ষে একটাও প্রমাণ থাকে তাহলে বিবর্তনবাদ বাতিল হবে। কিন্তু তা তো নেই। একইভাবে আইডি প্রতিষ্ঠা করতে হলেও আপনাদের প্রমাণ দেখাতে হবে।[৪৪]

    কখনো কখনো অভিযোগ করা হয় অনেক বিজ্ঞান মহল বিবর্তন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে।[৪৫] এর সাথে সাথে বলা হয় ডারউইন বিবর্তনবাদকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে যখন তিনি ছিলেন মৃত্যুশয্যায়; কিন্তু এটা লেডি হোপ’স স্টোরি থেকে তৈরী একটা গালগপ্পো মাত্র।[৪৬] এইসব অভিযোগুলো স্বাভাবিকভাবে আপীলস টু অথরিটি দ্বারা বাতিল হয়ে গিয়েছিল।

    বৈজ্ঞানিক মতবাদ

    নব্য সৃজনবাদীদের বিবর্তন নিয়ে একটা প্রচলিত অভিযোগ হচ্ছে: বিবর্তন বিজ্ঞানের ধারা অনুসরণ করে না,তাই এটা খাটি বিজ্ঞান নয়। একে বিজ্ঞানের শ্রেণিতে পাঠদান করা উচিত নয়। অথবা এর পাশাপাশি বিকল্প মতবাদ(যেমন সৃজনবাদ) পড়ানো উচিত।

    ধর্মীয় স্বভাব

    সৃজনবাদীরা বিভিন্ন সময় বলে থাকেন,”বিবর্তন এক প্রকার ধর্ম, এটা বিজ্ঞান নয়।[১৮]

    বিবর্তনকে ধর্ম বানাবার জন্য সৃজনবাদীরা প্রায়সই যে উদাহরণ ব্যবহার করে থাকে,তার মধ্যে একটি হল: বিবর্তনও এক প্রকার বিশ্বাস, এবং তাই বিবর্তনও এক প্রকার ধর্ম। বিবর্তনের সমর্থকরা ডারউইনকে নবী মানে, আর তারা অন্য যেকোনো বিকল্প মতবাদকে বাতিল করে দেয়।[৩৪][৪৭] এই ধরণের দাবীগুলো নব্য সৃজনবাদী আন্দোলনের সময় বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল।[৪০]

    প্রতিউত্তরে বিবর্তন তত্তের সমর্থকরা বলেন কোনো বৈজ্ঞানিক দাবী এমনকি ডারউইনের তত্ত্বও অলঙ্ঘনীয় হিসেবে বিবেচিত হয় না। ডারউইনের যে মতবাদ সেটাও পরিবর্তিত হয়েছে। নব্য ডারউইনবাদ, নব্য বিবর্তন সংশ্লেষণ এর মত নতুন তত্ত্বের মাধ্যমে ডারউইনের মতবাদের বেশ কিছু জায়গা সংশোধিত হয়েছে।[৪৮][৪৯] সৃজনবাদীদের দাবী অনুসারে বিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা যায় না,তাই এটা এক প্রকার বিশ্বাস। কিন্তু বাস্তবে বিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা যায়। এবং এর সুনির্দিষ্ট প্রমাণ আছে, তাই বিবর্তন তত্ত্বকে বিশ্বাসের কোনো প্রয়োজন নেই।

    জনসাধারণের কাছে বিবর্তন একটা ধর্ম এই দাবী ধোপে টিকে নি, কারণ ধর্মের বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে আধ্যাত্মিক বিশ্বাস, যাকে নিয়ে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। কিন্তু বিবর্তন তত্ত্ব নিয়ে জনগণও ক্রমাগত প্রশ্ন উত্থাপন করছিলেন। বিবর্তনের সমর্থকরা বলেন, না এটা কোনো প্রমাণবিহীন তত্ত্ব,না এটা কোনো বিশ্বাসের ওপর প্রতিষ্ঠিত। যুক্তরাষ্ট্রের আদালতও সৃজনবাদীদের অভিযোগ নাকচ করে দেন:

    বিবর্তন যদি ধর্ম অথবা ধর্মীয় বিশ্বাস হয়ে থাকে তবে বিবর্তন তত্ত্বকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে, তাই বলে অন্য কোনো ধর্মকে বিবর্তনবাদের বিরোধিতা করার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ানো যাবে না। কিন্তু এই ক্ষেত্রে সুষ্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে এবং কমন সেন্সের মাধ্যমে এটা পরিস্কার যে বিবর্তনতত্ত্ব কোনো ধর্ম নয় বরং এটা একটা প্রতিষ্ঠিত সত্য।এবং তাই স্কুল কলেজে বিবর্তন নিয়ে পাঠদান আইনের কোনো ধারাকে লঙ্ঘন করে না।[৫০]

    এর সাথে সম্পৃক্ত আরেকটা দাবী সৃজনবাদীরা করেন বিবর্তন তত্ত্ব নাস্তিকতা। (দেখুন নাস্তিকতাবাদ); সৃজনবাদীরা কখনো কখনো এই দুইটাকে একত্রিত করে একে “নাস্তিকের ধর্ম” বলেন (cf. humanism).[৫১]

    সত্যতানির্ধারণযোগ্যতাহীনতা

    ১৯৭৬ সালে দার্শনিক কার্ল পোপার বলেছিলেন “ডারউইনিজম কোনো পরীক্ষণীয় বৈজ্ঞানিক মতবাদ নয়, বরং আধ্যাত্মিক গবেষণার বিষয়।”[৫২] পরবর্তীতে তিনি তার চিন্তাধারা পরিবর্তন করে বলেন ডারউইনের “প্রাকৃতিক নির্বাচনের এই মতবাদ পরীক্ষা করা কঠিন” যেভাবে উচ্চতর বিজ্ঞানের অনেক বিষয় পরীক্ষা করা যায় না।[৫৩][৫৪]

    চার্লস ডারউইন তার “on the origin of species” এর ৬ নং পরিচ্ছেদে বলেন “যদি এমনটা কখনো দেখা যায় যে প্রকৃতিতে কোনো জীবে জটিল অঙ্গ আছে কিন্তু সেটা অনেকগুলো ধারাবাহিক এবং অল্প অল্প পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে না গিয়ে হটাৎ করেই প্রকৃতিতে বিদ্যমান;তাহলে আমার এই তত্ব অবশ্যই ভেঙ্গে পরবে।”[৫৫]

    বিবর্তনকে সমালোচনা করার জন্য অসংখ্য পদ্ধতি সৃজনবাদীরা প্রয়োগ করা শুরু করে।[৩৫] J. B. S. Haldane, when asked what hypothetical evidence could disprove evolution, replied “fossil rabbits in the Precambrian era.”[৫৬][৫৭].উদাহরণস্বরুপ, মানুষের কাছে এক জোড়া ক্রোমোজোম কম আছে হোমিনিড গোত্রের বাকি সদস্যের তুলনায়। তখন একটা থিওরী বিবর্তনবাদের পক্ষের মানুষরা প্রয়োগ করলেন। তারা বললেন, হয় ফিউশনের ফলে দুইটা ক্রোমোজোম জোড়া লেগে গেছে বা একটি ক্রোমোজোম নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু তা প্রমাণসাপেক্ষ ছিল না। কিন্তু ২০০৫ সালে ফিউশন তত্ত্ব প্রমাণিত হল ২ নং ক্রোমোজোম (মানবদেহ) এর র্বিন্যাস পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে। যেখানে দেখা গেল দুটি ক্রোমোজোমের ফিউশনের ফলেই একটি ক্রোমোজোম তৈরী হয়েছে। যা অন্যান্য প্রাইমেটে আলাদা। মানুষের ২ নং ক্রোমোজোমে ফিউশনের ফলাফল হিসেবে অতিরিক্ত নিষ্ক্রিয় টেলোমিয়ার এবংসেন্ট্রোমিয়ার আছে।[৫৮] সৃজনবাদীরা একটা দাবী করেছিল এইরকম যে যদি সত্যি সত্যি হোমো সেপিয়েন্সের পুর্বপুরুষ থাকে তাহলে ডিএনএ সিকুয়েন্স মডেল আবিষ্কারের পর দেখা যাবে মানুষের সাথে শিম্পাঞ্জী, এবং অন্যান্য প্রজাতির বনমানুষে বেশি মিল থাকবে। যদি মিল না থাকে তাহলে বুঝা যাবে সকল হোমিনিডের পুর্বপুরুষ একই নয়। পরবর্তীতে ডিএনএ এর বিন্যাস আমাদের দেখায় যে,মানুষের সাথে শিম্পাঞ্জীর ডিএনএ এর অনেক মিল রয়েছে(প্রায় ৯৫ থেকে ৯৮%)।[৫৯] হোমিনিড গোত্রের প্রচুর সংখ্যক মধ্যবর্তী ফসিল পাওয়া গিয়েছে[৬০] এইভাবেই মানুষের বিবর্তন হয়েছে কি না এই প্রশ্নে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেওয়া হয়।

    প্রমাণ

    পর্যবেক্ষণের ঘাটতি

    ১৫০ বছরের সৃষ্টিবাদ বনাম বিবর্তন বিতর্কেআর্কিওপ্টেরিক্স এর ন্যায় মধ্যবর্তী প্রজাতি একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন

    সৃষ্টিবাদীদের একটা সাধারণ দাবী হল বিবর্তন কখনোই পর্যবেক্ষণ যোগ্য নয়।[৬১] এই বিষয়ে তাদের মতামত হলো কিভাবে বুঝব এটা বিবর্তনের ফলে হচ্ছে? (see the Defining evolution section above)। বিবর্তন যে ঘটছে এটা পর্যবেক্ষণ করা খুবই সহজ ব্যাপার। জনসংখ্যার ক্ষেত্রে জীনের গঠন উত্তরাধিকার থেকে উত্তরাধিকারে পরিবর্তন হয়। ফলের মাছি, ইদুর, এবং ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে পরীক্ষাগারে [৬২]টিলাপিয়ার ক্ষেত্রে তার নিজস্ব বিচরণক্ষত্রে সরাসরী বিবর্তন পর্যবেক্ষিত হয়। পর্যবেক্ষণলব্ধ বিবর্তন এর পাঠ সুনির্দিষ্টভাবে ক্ষুদ্রতর জীব বিশেষত এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধের এর মাধ্যমে নতুন নতুন উদাহরণ হাজির করে দেখাচ্ছে কিভাবে বিবর্তন হচ্ছে।[৬২][৬৩]

    এইসব ব্যাপক উদাহরণ দেখে সৃজনবাদীরা বলতে শুরু করেন, তাদের সকল আপত্তি শুধুমাত্র ম্যাক্রো ইভ্যুলেশনের ক্ষেত্রে, মাইক্রোইভ্যুলেশনের ক্ষেত্রে নয়।(অর্থাৎ এর মাধ্যমে মাইক্রো ইভুলেশন যে হচ্ছে সেটা তারা মেনে নেন)[৬৪][৬৫] বিভিন্ন সৃষ্টিবাদীদের সংগঠনগুলো বিবর্তনের ছোট ছোট উদাহরণের সাথে সম্পর্ক যেমন কুকুরের প্রজনন এর মত উদাহরণ গুলোর বিরুদ্ধে নীরব থাকে। এগুলো কেন হচ্ছে সেগুলো নিয়ে তাদের কোনো যুক্তিও নেই, তাদের সকল সমস্যা এবং আপত্তি ম্যাক্রো অর্থাৎ বড় বড় পরিবর্তন অর্থাৎ যেগুলো হতে বেশি সময় লাগে সেগুলো নিয়ে। কারণ সেগুলো সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা যায় না। এগুলো শুধুমাত্র মাইক্রো বিবর্তনের প্রক্রিয়া থেকে অনুমান করা যায়, এবং ম্যাক্রো বিবর্তনের ফলে যেসব চিহ্ন রেখে যায় সেখান থেকে বুঝতে পারা যায়।

    যাইহোক জীববিজ্ঞানীরা বলেন ম্যাক্রো এবং মাইক্রো উভয় বিবর্তনই পর্যবেক্ষণ লব্ধ।[৬৬][৬৭] উদাহরণস্বরূপ প্রজাত্যায়নকে, সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা যায়।[৬৮] একইসাথে নব্য বিবর্তনীয় সংশ্লেষণবাদ ম্যাক্রো এবং মাইক্রো উভয় বিবর্তন পর্যবেক্ষণ করতে সহায়তা করে।[৩৫][৬৯] এর উদাহরণ হল চক্র প্রজাতি.

    অতীতে ম্যাক্রো বিবর্তন অনুমান করা হত যেসব ঐতিহাসিক চিহ্ন জীবদেহে বিদ্যমান থাকত,তা দেখে। মধ্যবর্তী জীবাশ্ম যেগুলোকেও ঐতিহাসিক চিহ্ন বলে ধরা হত, যা দুই প্রজাতির জীবের মধ্যে সংযোগ ঘটাত, এরকম ফসিল হল আর্কিওপ্টেরিক্স যা সংযোগ ঘটিয়েছে পাখি এবং ডাইনোসর এর মধ্যে।[৭০] অথবা সাম্প্রতিক আবিষ্কৃত Tiktaalik যা সংযোজন ঘটয়েছে পাখি এবং উভচর প্রাণীর মধ্যে।[৭১] সৃজনবাদীরা এইসব উদাহরণকে বাতিল করে দেন,তারা বলেন এগুলো মধ্যবর্তী ফসিল নয়,চেষ্টাচরিত্র করে যে কোনো একটা গ্রুপে এগুলোকে ফেলা যাবে। তারা বলেন মধ্যবর্তী ফসিল অনেকগুলো পাওয়া যাওয়ার কথা,কিন্তু তা পাওয়া যায় নি।[৭২] ডারউইন বুঝেছিলেন মধ্যবর্তী ফসিলের অভাবই তার তত্বের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা।

    Why then is not every geological formation and every stratum full of such intermediate links? Geology assuredly does not reveal any such finely graduated organic chain; and this, perhaps, is the most obvious and gravest objection which can be urged against my theory. The explanation lies, as I believe, in the extreme imperfection of the geological record.

    ডারউইম আপীল করেন Darwin appealed to the limited collections then available, the extreme lengths of time involved, and different rates of change with some living species differing very little from fossils of the Silurian period. এর পরবর্তী সংস্করণে তিনি বলেন “that the periods during which species have been undergoing modification, though very long as measured by years, have probably been short in comparison with the periods during which these same species remained without undergoing any change.”[৭৩] ডারউইনের সেই দিনের অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। পাওয়া গিয়েছে মধ্যবর্তী অসংখ্য ফসিল। এবং এই জাতীয় সমস্যার সমাধান করা হয়েছে punctuated equilibrium নামক নতুন থিওরী দ্বারা। which predicts a primarily stable fossil record broken up by occasional major speciations.[৭৪][৭৫]

    যেহেতু অনেক মধ্যবর্তী ফসিলের সরাসরি উদাহরণ পাওয়া গিয়েছে, সৃজনবাদীরা তাদের চিন্তাভাবনার সংস্করণ করে, তৈরী করে “created kinds,” রবং নতুন নাটকের প্রদর্শন করে। তারা বলতে থাকে এইসব ঘটনা যে আদৌ ঘটেছে সেটা কে দেখেছে? [৭৬] একটা ইশতেহার অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেyoung Earth creationist Ken Hamএর দ্বারা:”তুমি কী সেখানে ছিলে?” তারা বলতে থাকেন যেহেতু ঈশ্বর ছাড়া আর কেওই এইসব ঘটনা কে স্পষ্টভাবে দেখেনি,তাই বৈজ্ঞানিক দাবীগুলো ফটকাবাজি অথবা নিছক গল্প।[৭৭][৭৮] জীবের genomes এর ডিএনএর সিকুয়েন্স থেকে একটি স্বাধীন পরীক্ষা করা হয়, অন্যান্য জীবের মধ্যে আন্তঃসম্পর্কের যে ভবিষ্যতবাণী করা হয়েছিল তা সঠিক কিনা সেটা জানার জন্য। সেই পরীক্ষার ফলাফল দেখায় প্রত্যকের মধ্যে আন্তঃসংযোগ আছে। অর্থাৎ আছে স্বাধীন পুর্বপুরুষ।[৭৯][৮০]

    কিছু কিছু ক্ষেত্র যেমন নভোবিজ্ঞান অথবা আবহাওয়া বিজ্ঞান এর ক্ষেত্রে সরাসরি পর্যবেক্ষণ অথবা ল্যাবে পরীক্ষণ কঠিন, এমনকি কখনো কখনো অসম্ভবও।বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়াগুলো তারপরেও নির্ভর করে পর্যবেক্ষণ ও যৌক্তিক অনুমানের উপরে।এইসব ক্ষেত্রে সততার সাথে করা পর্যবেক্ষণ থেকে নতুন থিওরীর জন্ম হয়, এবং এ থিওরী ব্যবহৃত হয় নতুন অবসারভেশনের ফলে যে ফলাফল আসবে তার ভবিষ্যত বাণীতে। যদি নতুন পর্যবেক্ষণ থিওরীর ভবিষ্যত বানীর সাথে কোনোরুপ সংঘর্ষ করে, তাহলে সেই থিওরীকে পুনর্বার বিশ্লেষণ করা হয়,অথবা বাদ দিয়ে সেখানে নতুন থিওরীর আবির্ভাব ঘটে যদি এর চাইতে ভাল বিকল্প থিওরী থাকে যা নতুন পর্যবেক্ষণ কে ব্যাখ্যা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ নিউটনের মহাকর্ষ সুত্র প্রতিস্থাপিত হয়েছিল আলবার্ট আইনস্টাইন এর সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ দ্বারা.[৮১]

    অনির্ভরযোগ্য প্রমাণ

    George Romanes‘ 1892 copy of Ernst Haeckel’s embryo drawings, often attributed incorrectly to Haeckel.[৮২]

    একটা প্রাসঙ্গিক আপত্তি বিবর্তনের বিরুদ্ধে হচ্ছে বিবর্তন অনির্ভরযোগ্য প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত।বিতর্কের সারমর্ম হল বিবর্তন প্রমাণিত নয়। এমনকি এর বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য প্রমাণও পাওয়া যায় না।তার সাথে সাথে বলা হয় বিবর্তনের আগাগোড়া পুরোটাই ধাপ্পাবাজি আর মিথ্যাচারে ভরপুর।

    এবার বিতর্ক সক্রিয় হয় বিবর্তনের নির্ভরযোগ্যতার বিরুদ্ধে, সৃষ্টিবাদীরা বলতে থাকেন অতীতেও গুরুত্বপূর্ণ scientific revolutions(বৈজ্ঞানিক বৈপ্লবিক তত্ব) গুলো মিথ্যা হয়ে গেছে। যদিও প্রাথমিকভাবে সেগুলোকে প্রায় নিশ্চিত বলে ধরা হত।তারা এইরুপে দাবী করতে থাকে সাম্প্রতিক সময়ের বিবর্তনবাদ বিপ্লব ঘটিয়ে দিবে ভবিষ্যতে একটাই বিষয়ের উপর নির্ভর করে। আর সে বিষয়টা হল “বিপদের সময়ের তত্ব”(সৃষ্টিবাদের বিকল্প বুঝাতে এই বাক্য ব্যবহার করা হয়েছে) [৮৩]

    সমালোচকরা বিতর্কের জন্য হাজির করেন বিজ্ঞানের ইতিহাসে ধাপ্পাবাজি Piltdown Man(পিল্টডাউন মানবকে) এক প্রকার জালিয়াতি। তারা বলতে থাকেন যেহেতু অতীতে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গী থাকার কারণে বিবর্তনের উপর প্রমাণ নিয়ে বিজ্ঞানীরা ভুল করেছেন এবং কতিপয় গণ জালিয়াতি করেছেন, একইভাবে সাম্প্রতিককালের বিবর্তনও মিথ্যাচার ও ধাপ্পাবাজির উপর প্রতিষ্ঠিত। বিবর্তনের অনেকপ্রমাণই অভিযুক্ত হয়েছে বিভিন্ন সময়ে ও এগুলো প্রতারণাপুর্ণ। তারা এই ব্যাপারে অন্তর্ভুক্ত করেন Archaeopteryx, peppered moth melanism, and Darwin’s finchesকে। এইসব দাবীগুলো পরবর্তীতে যুক্তি দিয়ে খণ্ডন করা হয়।[৮৪][৮৫][৮৬][৮৭]

    এটাও দাবী করা হয় যে বিবর্তনের যে সব টুকরো প্রমাণ পাওয়া গেছে তা হল ভ্রান্ত এবং অকেজো, Ernst Haeckel‘ এর মত। যিনি ১৯ শতকে ভ্রূণদ্বয়ের মধ্যে তুলনামুলক চিত্র একেছিলেন যা recapitulation theory নামে পরিচিতি পায়। (ontogeny recapitulates phylogeny), যেটা শুধুমাত্র ভুলই ছিল না বরং ধোকাবাজিও ছিল।[৮৮] Molecular biologist Jonathan Wells সমালোচনা করেন জীববিজ্ঞান পাঠ্যবইয়ের,অভিযোগ করেন যে তারা এমন কিছু প্রমাণের ভিত্তিতে বিবর্তন বাদ চাপিয়ে দিতে চাইছে শিক্ষার্থী দের উপর যেসব প্রমাণ ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত।(হেকেলের ধারণাকেই তিনি জনসম্মুখে হাজির করেন) [৮৬] এর প্রতিবাদে National Center for Science Education বলেন কোনো বইই যে ওয়ালস রিভিউ করে নাই এটা হল তার প্রমাণ। রিভিউ করলেই সে বুঝত তার এই দাবীটা মিথ্যা। হ্যাকেলের ড্রইং একটা ঐতিহাসিক পাঠ, এই বিষয়টা নিয়ে পাঠ্যপুস্তকে আলোচনা করা হয়েছে কেন তার চিত্রাংকন ভুল ছিল সেই বিষয়ে, সঠিক এবং সাম্প্রতিক হালনাগাদ হওয়া চিত্রই পাঠ্যপুস্তকে তুলে ধরা হয়েছে। অথচ এটা ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে ওয়ালের দ্বারা [৮৯]

    অবিশ্বস্ত কালপঞ্জী

    Illustrations of dog and human embryos, looking almost identical at 4 weeks then differing at 6 weeks, shown above a 6-week turtle embryo and 8 day hen embryo, presented by Haeckel in 1868 as convincing proof of evolution. The pictures of the earliest embryonic stages are now considered inaccurate.[৯০]

    সৃজনবাদীরা দাবী করেন যে বিবর্তনবাদ অনিশ্চয়তা নীতির ওপর নির্ভর করে। এবং অতীত সম্বন্ধে কোনো তথ্য দিতে পারে না। উদাহরণস্বরুপ পদার্থের বয়স নির্ধারণের জন্য যে radioactive decay র উপর নির্ভর করা হয় তা সম্পূর্ণভাবে অবিশ্বস্ত। Radiocarbon dating নির্ভর করে carbon-14 র আইসোটোপের উপর। আইসোটোপ থেকে নির্ধারিত এই ফলাফল সম্পূর্ণভাবে সমালোচিত হয়।প্রথমদিকে এটা এত বেশি সমালোচিত হতে যে সমালোচকরা বলতে শুরু করে যে এটা সম্পূর্ণভাবে অন্যায্য অনুমানের নীতি uniformitarianismর উপর অবস্থিত। পাথরের ক্ষয়ের হার থেকে বয়স নির্ধারণ করা পাথরটা closed system হিসেবে কাজ করে। এইরুপ তর্কবিতর্কের নিষ্পত্তি ঘটে বিজ্ঞানীদের দ্বারা যখন স্বাধীনভাবে করা অন্যান্য গবেষণায় এবং ভিন্ন পদ্ধতিতে পাথরের বয়স নির্ধারণ করতে গেলে সবগুলার ফলাফল একই আসে।[৯১] একইরকম অভিযোগ আছে জীবাশ্মকে ঘিরে। অভিযোগ করা হয় জীবাশ্মের প্রমাণ নির্ভর‍যোগ্য নয়। অভিযোগ করা হয় ফসিল রেকর্ডে বিশাল গ্যাপ আছে।[৯২][৯৩] that fossil-dating is circular (see the Unfalsifiability section above), or that certain fossils, such as polystrate fossils, are seemingly “out of place.” Examination by geologists have found polystrate fossils to be consistent with in situ formation.[৯৪] অনেকসময় এটাও অভিযোগ করা হয় বিবর্তনবাদের কিছু বৈশিষ্ট্য catastrophism দের (cf. নুহের প্লাবন)কে সমর্থন করে। কিন্তু বিবর্তনবাদের gradualistic punctuated equilibrium কে সমর্থন করে না।[৯৫] যদিও এটাই ব্যাখ্যা করে কেন ফসিলের মধ্যে এত গ্যাপ আছে।[৯৬]

    আপাত গ্রহণীয়তা

    কিছু প্রাচীন এবং জনপ্রিয় অভিযোগ বিবর্তনের বিরুদ্ধে আছে, যেমনঃ-বিবর্তন প্রকৃতিতে বিদ্যমান এই জটিলতা ব্যাখ্যা করতে পারে কি না, বলা হয় বিবর্তন কখনো এই প্রাণের বৈচিত্র্যতা ব্যাখ্যা করতে পারে না,অর্থাৎ কোনো এক বুদ্ধিমান সত্তা এই সব কিছুকে নিয়ন্ত্রণ করছে, Abrahamic religions(আব্রাহামিক ধর্মানুসারে) হয়ত বা কোনো ঈশ্বর।

    অসম্ভবতা

    একটা প্রচলিত আপত্তি বিবর্তন বিরোধীদের দেখা যায়,বলা হয়: জীবন এর এই নীলনকশা যা বৈচিত্র্যতায় ভরপুর তা কী ভাগ্যের ফেরে তৈরী হয়ে গেছে? তারা বলেন, জীবনের এই বৈচিত্র্যতা কোনো বুদ্ধিমান সত্তার ইচ্ছানুসারে পরিচালনা হওয়া ছাড়া আর কোনোভাবে হতে পারে না, এবং এর সম্ভাবনাও অনেক কম। আর সবকিছুর পেছনে যেহেতু কারণ থাকে, অতএব এই মহাবিশ্ব তৈরি হওয়ার পেছনেও কারণ আছে। আর ঈশ্বরই হলেন সেই আদি কারণ। তার ইচ্ছানুসারেই এই জীববৈচিত্র্য তৈরী হয়েছে।[৯৭] তারা আরো এক কাঠি সরেস হয়ে বলেন বিবর্তন কখনো জটিল কাঠামো গঠন করতে পারে না। (দেখুন Creation of complex structures). এইধারণা অনুসারে বিবর্তনের মাধ্যমে জীবন গঠিত হওয়া ততটাই অসম্ভব যতটা অসম্ভব “সামুদ্রিক ঝড়ের মাধ্যমে এলোমেলো ধাক্কায় Boeing 747 টাইপ কোনো বিমান গঠিত হওয়া।”এ দাবীটা প্রথম করেছিলেন জ্যোতিঃবিজ্ঞানী Fred Hoyle। এই দাবীটা জনপরিচিতি পায় হয়েলের fallacy নামে।[৯৮] হয়েল একজন ডারউইনিস্ট ছিলেন, ছিলেন নাস্তিক এবং বিশ্বাস বিরোধী, কিন্তু তিনি এক হাইপোথিসের জন্ম দেন যার নাম panspermia, যেখানে বলা হয় প্রাণের প্রথম সূচনা হয়েছে outer space এ, এবং প্রাকৃতিক নানা ঘটনা যেমন ধূমকেতু, উল্কা, গ্রহাণুর মাধ্যমে প্রাথমিক জীবন তৈরী হওয়ার প্রয়োজনীয় বস্তু পৃথিবীতে এসে পৌঁছেছে। হয়েলের এই যুক্তির সাথে সৃজনবাদীদের ধারণার সাথে পুরোপুরি না মিললেও কিছুটা মিলে যায়, সৃজনবাদীদের যুক্তির মুল ধারণা হল একজন ঈশ্বর হচ্ছেন পরম কারণ,যার সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য আছে এই মহাবিশ্ব তৈরীর পিছনে। এই দাবীর পিছনে তারা ১৮ শতকের বহুল প্রচলিত যুক্তি দার্শনিক উইলিয়াম প্যালের ঘড়ি নির্মাতার উপমা ব্যবহার করে, তারা বলে একটা ঘড়ির যে জটিল কলকব্জা আছে তা এমনি এমনি তৈরী হতে পারে না,এর পিছনে ঘড়ি নির্মাতার সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য থাকে,এর ফলেই এত জটিল একটা যন্ত্র তৈরী হয়। একইভাবে এই মহাবিশ্বের এই সীমাহীন জটিলতা দেখে বুঝা যায় কোনোভাবেই এই মহাবিশ্ব কোনো কারণ বা উদ্দেশ্য বিহীনভাবে তৈরি হয় নাই। এর পিছনেও ইন্টেলিজেন্ট এজেন্টের হাত আছে।ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইনের এই দাবী নব্য সৃজনবাদের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠে। এর মাধ্যমে সৃজনবাদীরা তাদের এই মতবাদকে নিছক দর্শন আর বিশ্বাস থেকে উপরের স্তরে নিয়ে গিয়ে বৈজ্ঞানিক মতবাদ বলে আখ্যায়িত করে। এবং একে বিবর্তনের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ানোর দাবী জানায় [১৭][৪০]

    Because the theory of evolution is often thought of as the idea that life arose “by chance,” design arguments such as William Paley‘s watchmaker analogy of 1802 have long been popular objections to the theory:[৯৯] Paley’s book included a response to the proto-evolutionary ideas of Erasmus Darwin.

    জ্ঞানের অভাব থাকায় এই ধরনের বিতর্ক করা যায়, বিবর্তনবাদের সমর্থকরা সাধারণত বলে থাকেন বিবর্তন কেবল চান্সের খেলা নয়, বরং এটা একপ্রকার রাসায়নিক বিক্রিয়া, প্রাকৃতিক ঘটনা। এটাই যুক্তিযুক্ত অলৌকিক ঈশ্বর থাকার তুলনায়। মুলত প্রাকৃতিক নির্বাচনের এই বাছাই পর্ব চলেছে জীনগত ভাবে, প্রকৃতির সাথে তাল মিলানোর জন্য জীনের পরিবর্তনই বিবর্তনের গতি নির্ধারণ করেছে। বাস্তবতা হল সৃজনবাদীরা ইন্টেলিজেন্ট এজেন্টের কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেন না। দেখাতে পারেন না এই জটিল মহাবিশ্ব তৈরীর পিছনে যে জটিল সত্তা আছে তার বাস্তব প্রমাণ।[১০০] It is also argued that there is insufficient evidence to make statements about the plausibility or implausibility of abiogenesis, that certain structures demonstrate poor design, and that the implausibility of life evolving exactly as it did is no more evidence for an intelligence than the implausibility of a deck of cards being shuffled and dealt in a certain random order.[৪০][৯৯]

    এটা উল্লেখযোগ্য প্রথম জীবনের উদ্ভব হওয়া যাকে abiogenesis বলা হয়, তা বিবর্তনের অংশ নয়, তাই চান্সের ফলে প্রথম প্রাণের সূচনা নিয়ে যে বিতর্ক আছে তা উদ্ভব বিজ্ঞান এর অন্তর্ভুক্ত, বিবর্তনের নয়। প্রকৃতপক্ষে বিবর্তন নিয়ে মানুষ যে ভুল ধারণার স্বীকা র হয় তা হল তারা উদ্ভব বিজ্ঞানের সাথে বিবর্তনকে গুলিয়ে ফেলে এবং ভাবে বিবর্তন এবায়োজেনেসিসের উপাদান অথবা এবায়োজেনেসিস বিবর্তনের পূর্বসূরি। কখনো কখনো এরা বিবর্তনের সাথে বিগ ব্যাং কেও মিলিয়ে ফেলে।[২২]

    ব্যাখ্যা করতে পারে না স্বাভাবিক জীবন

    1880 photo of the Berlin Archaeopteryx specimen, showing leg feathers that were removed subsequently, during preparation.

    জৈবরসায়নবিদ মাইকেল বেহে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের বিবর্তনবাদ সৃষ্টির জটিল গঠন ব্যাখ্যা করতে পারে না, বিশেষ করে মাইক্রোবায়োলজিতো পারেই না। এর উপর ভিত্তি করে তিনি বলেন ” এই জটিল গঠনগুলো বুদ্ধিমান সত্তা দ্বারা তৈরী।.”[১০১]

    পরবর্তীতে সমালোচক রা বিভিন্ন দাবী করত থাকেন বিবর্তন consciousness, hominid intelligence, instincts, emoions, metamorphosis, photosynthesis, homosexuality, music, language, religion, morality, and altruism(see altruism in animals) এইসব বিষয় গুলো ব্যাখ্যা করতে পাের না।[১০২] যদিও বিবর্তনের সাহায্যে এর অনেকগুলোই বিশেষ করে hominid intelligence, instinct, emotion, photosynthesis, language, and altruism, বেশ ভালোভাবেই ব্যাখ্যা করা যায় । বিবর্তনের সমর্থকরা দাবী করেন অন্য কোনো বিকল্প মতবাদ দিয়ে জীববিজ্ঞানের এতগুলো ঘটনাকে ব্যাখ্যা করা যায় না।[১০৩]

    সৃজনবাদীরা বিবর্তনের বিরুদ্ধে আরেকটা ভিত্তির উপর দাড়িয়ে দ্বিমত পোষণ করেন, তা হল বিবর্তন নিশ্চিত ভাবে অবিবর্তনীয় প্রক্রিয়া যেমন abiogenesis, Big Bang, অথবা meaning of life কে ব্যাখ্যা করতে পারে না। এই সব উদাহরণ কে সামনে রেখে বলা হলবিবর্তনকে’ পুন:সংজ্ঞায়িত করে নির্দেশ করতে হবে পুরো মহাবিশ্বেরগঠন সম্বন্ধে। যদি বিজ্ঞানের অন্য কোনো থিওরী মহাবিশ্বের বিবর্তনেরসাথে না মিলে তাহলে বিজ্ঞানের সকল তত্ত্ব ভেঙে পরবে। এই কারণেই বিবর্তনের জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্র ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত, এবংদার্শনিকের বিতর্কের একটা বিষয় হওয়া উচিত।[১০৪]

    জ্যোতির্বিজ্ঞানী Fred Hoyle (ফ্রেড হয়েল) এবং Chandra Wickramasinghe cosmic ancestry এর মাধ্যমে এসকল যুক্তিকে খণ্ডন করেন[১০৫][১০৬][১০৭][১০৮][১০৯][১১০].[১১১][১১২]

    অসম্ভবতা

    পুর্বের তুলনায় বিবর্তন বিরোধিতা আরো বেশি বেড়ে যায়, দাবী করা হয় বিবর্তন শুধু অবৈজ্ঞানিকই নয় অকল্পনীয় এবং এটা অসম্ভব, কারণ এটা প্রাকৃতিক নিয়মের সাথে সাংঘর্ষিক এবং এটা পৃথিবীতে বিদ্যমান জীববৈচিত্র্য তৈরী করতে পারবে না।

    সৃষ্টির জটিল গঠন

    আরও তথ্যের জন্য দেখুন: Irreducible complexity

    ব্যাকটেরিয়ার ফ্লাজেলার উদাহরণসৃজনবাদী বিজ্ঞানবুদ্ধিদীপ্ত নকশা সংক্রান্ত অপবৈজ্ঞানিক বিষয়ে ব্যবহার করা হয়েছিল। এ ব্যবহারের নিমিত্ত ছিল অহ্রাসযোগ্য জটিলতা নামক ছদ্মবৈজ্ঞানিক ধারণাকে জনপ্রিয়করণ করা। সতর্কতার সহিত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় ফ্লাজেলার ক্রমানু্যায়ী বিবর্তনে কোনো বৃহৎ বাধা নেই।

    ত্রুটি: কোন উদ্ধৃতি লেখা হয়নি (বা একটি নামহীন প্যারামিটারে প্রকৃত লেখায় সমান চিহ্ন ব্যবহৃত হয়েছে)

    নব্য বিবর্তনীয় তত্ত্ব অনুসারে, প্রাকৃতিক নির্বাচন এবং জিন প্রবাহের যুগপৎ ক্রিয়ার মাধ্যমে সমগ্র জৈবিক ব্যবস্থা ধীরে ধীরে বিবর্তিত হয়। উইলিয়াম প্যালের কাছে চোখের মত অঙ্গ ঈশ্বরের নকশা বলে মনে হয়েছে। আর তার মত সৃষ্টিবাদীরা অনুমান করেছেন চোখের বিবর্তন এবং অন্যান্য জটিল অঙ্গের বিবর্তন সম্পূর্ণভাবে অসম্ভব। ডারউইন বলেছেন:

    যদি আমরা জটিল এবং আপাত নিঁখুত চোখ থেকে অনেক পূর্বের সরল এবং অনিঁখুত একটি চোখের ধাপগুলোকে ধাপে ধাপে সাজাই, তাহলে আমরা দেখব প্রতিটা পর্যায় তার মালিকের কাছে সমানভাবে প্রয়োজনীয়। এই ধাপে ধাপে চোখের বিবর্তনের সময়ে যদি একটুও এদিক সেদিক হত এবং এই পরিবর্তিত প্রকরণ যদি জীবকে সুবিধা দিত ও উত্তরাধিকার সুত্রে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রকরণ বাহিত হওয়ার দরুণ প্রাকৃতিক নির্বাচনের কারণে জটিল এবং নিখুত চোখ তবুও সৃষ্টি হত। যদিও এটি বিশ্বাস করা কঠিন কিন্তু এমনটাই বাস্তবতা।[১১৩]

    একইভাবে ethologist and বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানী রিচার্ড ডকিন্স পালকএর বিবর্তনের বিষয়ে The Atheism Tapes নামক এক সাক্ষাৎকারে বলতে গিয়ে বলেন

    সরীসৃপের আঁইশ থেকে পাখির পালকের বিবর্তনের বহুধা বিস্তৃত ক্রমপর্যায় আছে [অর্থাৎ, সরীসৃপের আঁইশ থেকে হঠাৎ করে পাখির পালক তৈরী হয় নি, অনেকগুলো ধাপ পার হয়ে এসেছে] এবং প্রতিটা ক্রম প্রজাত্যায়নের সময় প্রজাতিকে সুবিধা দিয়েছে। যদি কেও একজন এই ক্রমপর্যায়গুলো ভাবতে না পারে, তবে সেটা তার সমস্যা, প্রাকৃতিক নির্বাচনের নয়। সরীসৃপের আঁইশ; যা তার জন্য অন্তরক হিসেবে কাজ করত সেই আঁইশ বিবর্তিত হয়ে ফুয়োফুয়ো পাখির পালকে রূপান্তরিত হয়। পালকের প্রথমদিককার অবস্থা আইশ সরীসৃপকে উষ্ণ রাখত। অর্থাৎ এখন পালকের যে কাজ, পূর্বে তার কাজ সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল।

    বিবর্তনের প্রাথমিক ধারণামতে সরল অঙ্গ থেকে জটিল অঙ্গ রুপান্তরিত হয়েছে, তাই বিবর্তন বিরোধীরা ভেবেছেন জটিল বা বহুকোষী অঙ্গ যেমন চোখ বা পাখির ডানার মত অঙ্গগুলো সম্পূর্ণভাবে এপর্যায়ে আসার পূর্বে তা অসম্পূর্ণ বা অর্ধেক ছিল, এবং এ অসম্পূর্ণ অঙ্গের অধিকারীরা প্রকৃতিতে টিকে ছিল। এবিষয়টিকে মাথায় রেখে বিবর্তন বিরোধীদের প্রশ্ন অনেকটা এইরকম “কী দরকার একটা অর্ধেক চোখ দিয়ে?” অথবা “কী দরকার অর্ধেক ডানার?”[১১৪] প্রাকৃতিক ভাবেই চোখের বিবর্তন এবং অন্যান্য জটিল অঙ্গের বিবর্তন সম্ভব তা গবেষকরা সুনিশ্চিত করেছেন।[১১৫][১১৬] সৃজনবাদীরা কোনো নকশাকারী ছাড়া এইধরনের জটিল গঠনের বিবর্তন হওয়া অসম্ভব এধরনের যুক্তিতে অনড় থাকেন। এরকম অবস্থায় সাম্প্রতিক সময়ে তাদের দাবী নতুন মোড়ে বাক নেয়; যখন মাইকেল বেহে অহ্রাসযোগ্য জটিলতা নামক ধারণাকে ব্যবহার করে সৃজনবাদী আন্দোলনে ভিন্ন মাত্রা যুক্ত করেন।[১৭] জৈবরসায়নবিদ মাইকেল বেহের মতে সাম্প্রতিক সময়ের বিবর্তন তত্ত্ব বিশেষত অনুজীব পর্যায়ে জটিল গঠনকে ব্যাখ্যা করতে পারে না। এই যুক্তি অনুযায়ী কোনো “বুদ্ধিমান সত্তা দ্বারা উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে” এই ধরনের জটিল গঠন নির্মিত হয়েছে।[১০১]

    অহ্রাসযোগ্য জটিলতা এমন একটা ধারণা, যেখানে বলা হয় প্রাকৃতিকভাবে সরল প্রাণ থেকে জটিল প্রাণ বিবর্তিত হয়ে আসতে পারে না। কিভাবে বৃহত্তম প্রত্যঙ্গগুলো বিবর্তিত হলো এনিয়ে বিবর্তনবিরোধী বিতর্ক প্রথমদিকে চলমান ছিল। কিন্তু বেহের অহ্রাসযোগ্য জটিলতা ধারণার মাধ্যমে তিনি কোষীয় এবং জৈবরাসায়নিক পর্যায়েও বিবর্তনের অসারতা প্রমাণের উদ্দেশ্যে নানাবিধ যুক্তি উত্থাপন করতে শুরু করেন। যেমন তিনি রক্ততঞ্চন, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, এবং ব্যাকটেরিয়ার ফ্লাজেলাম নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন, এগুলো এতটাই জটিল এবং একে অপরের উপর এমনভাবে নির্ভরশীল যে তারা কখনোই সহজ সরল ব্যবস্থা থেকে নিজে নিজে বিবর্তিত হয়ে আসতে পারে না।[১১৭]

    ত্রুটি: কোন উদ্ধৃতি লেখা হয়নি (বা একটি নামহীন প্যারামিটারে প্রকৃত লেখায় সমান চিহ্ন ব্যবহৃত হয়েছে)

    বেহে যে বছর অহ্রাসযোগ্য জটিলতা বিষয়ক ধারণা প্রস্তাব করেন, সেই বছরই জীববিজ্ঞানে নব নব উন্নয়ন ঘটার দরুণ ফ্লাজেলার বিবর্তন কিভাবে হয়েছে বিজ্ঞানীরা তা আরো নিবিড়ভাবে বুঝতে শুরু করেন।[১১৮] যার ফলে বেহের যুক্তি স্বাভাবিকভাবেই খণ্ডিত হয়ে যায়।[১১৯][১২০] অহ্রাসযোগ্য জটিলতার মুল ধারণা হচ্ছে সরল অবস্থা থেকে জটিল অবস্থা বিবর্তনীয় পথপরিক্রমায় আসতে পারে না, কিন্তু যুক্তি এগজাপশনের (পূর্বোক্ত প্রজাতির পুরাতন অঙ্গ বিবর্তনের মাধ্যমে উত্তর প্রজাতিতে এমনভাবে অভিযোজিত হয়, যা সম্পূর্ণ নতুন ধরনের কাজ করে) মত বিবর্তনীয় কলাকৌশল ও “ভারার” ব্যবহারের মাধ্যমে পরাস্ত হয়। এখানে ভারা বলতে বুঝানো হয়েছে, কোনো প্রত্যঙ্গের এমন কোনো বৈশিষ্ট্য যা হয়তো পূর্বে সেই জীবের জন্য প্রয়োজনীয় ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে বিবর্তনের কালচক্রে সেই বৈশিষ্ট্যের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যাওয়ায় প্রত্যঙ্গটি উক্ত কাজ করা থেকে নিবৃত্ত হয়।[১২১] বেহে অহ্রাসযোগ্য জটিলতা নিয়ে যত প্রকার উদাহরণ ব্যবহার করেছেন, তার প্রতিটা বিষয় নিয়ে সম্ভাবনাময় বিবর্তনবাদ আলোচনা করেছে এবং সে অবস্থায় কিভাবে বিবর্তন হতে পারে, তা ব্যাখা করার চেষ্টা করেছে।[১১৯][১২২][১২৩]

    ক্যাম্ব্রিয়ান বিষ্ফোরণের ফলে জটিল গঠন সংক্রান্ত বিতর্ক

    আরও তথ্যের জন্য দেখুন: Cambrian explosion

    অনেক পর্বের প্রাণীদের জীবাশ্ম রেকর্ড থেকে জানা যায়, ক্যাম্ব্রিয়ান বিষ্ফোরণ হয়েছিল, আজ থেকে ৫৪ কোটি ২০ লক্ষ বছর আগে[১২৪] যার প্রভাবে অনেক পর্বের প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।[note ১][১২৫] এর ফলে অন্যান্য জীবে বৈচিত্র্য সৃষ্টি হয়।[note ২] ক্যাম্ব্রিয়ান বিষ্ফোরনের পূর্বে বেশিরভাগ জীব সরল ছিল; কলোনি গঠন করে থাকত। অর্ডার অব ম্যাগনিটিউড দ্বারা ৭ থেকে ৮ কোটি বছর ধরে এই বৈচিত্র্য চলতে থাকে।[note ৩] আজকের জীবজগতে যে বৈচিত্র্য দেখা যায়, তার সুচনা ক্যাম্ব্রিয়ান বিষ্ফোরণের পরেই শুরু হয়েছিল।[১২৮][১২৯]

    মুল সমস্যাটা হলো প্রাকৃতিক নির্বাচন ধীরগতিতে হয়; যেখানে একটি পর্ব তৈরী হতে একটি শ্রেণী তৈরীর চেয়ে বেশি সময় লাগে, একটি শ্রেণি তৈরী হতে একটি বর্গ তৈরীর চেয়ে বেশি সময় লাগে, একটি বর্গ তৈরী হতে একটি গোত্র তৈরীর চেয়ে বেশি সময় লাগে, একটি গোত্র তৈরী হতে একটি গণ তৈরীর চেয়ে বেশি সময় লাগে, একটি গণ তৈরী হতে একটি প্রজাতি তৈরীর চেয়ে বেশি সময় লাগে। [১৩০] কিন্তু দেখা যাচ্ছে খুব বেশি সময় ছাড়াই উচ্চতর পর্যায়ের ট্যাক্সা তৈরী হয়ে গিয়েছে। যা থেকে বুঝা যায়, এক্ষেত্রে বিবর্তনীয় কলাকৌশল কিছুটা ভিন্নভাবে কাজ করেছে।[১৩১]

    সাধারণ মতে অনেক কারণই ক্যামব্রিয়ান বিষ্ফোরণ শুরু করতে সাহায্য করেছিল, কিন্তু এই কারণগুলো কিভাবে একত্রে কাজ করেছিল সে বিষয়ে কোন সর্বজন স্বীকৃত মত নেই।[১৩২] কিন্তু এখনও ক্যাম্ব্রিয়ান বিষ্ফোরণ একটি বিতর্কের বিষয় হয়েই রয়েছে। এর আপাত ফসিল রেকর্ড সঠিক, তবে কিছু প্রশ্ন, যেমন কেন এটা এত দ্রুত ঘটল, কেন এই পর্ব পর্যায়ে ঘটেছে, কেন তখন এতগুলো পর্ব এতে জড়িত ছিল কিন্তু এরপর একটাও ছিল না-এগুলোর উত্তর খোঁজার জন্য গবেষণা চলছে।[১৩৩]

    জীববিজ্ঞানী পিযে মায়ার পরিবেশে অক্সিজেন বৃদ্ধির ঘটনাকে সারসংক্ষেপণ করে বলেন:[১৩৪] “পরিবেশগত পরিবর্তনের ফলে, বিশেষ করে বিভিন্ন পতঙ্গের বিবর্তনের ফলে ভূত্বকের বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটছিল এবং সেসব পতঙ্গ পুষ্টিকে মাটিতে প্রোথিত করছিল। পরিবেশে বৃদ্ধি পাচ্ছিল অক্সিজেন; যা সেই পুষ্টিকে জ্বালানি হিসাবে কাজ করছিল;[১৩৫][১৩৬][১৩৭] এর ফলে দূরবর্তী যেসব প্রাণী নতুন করে সৃষ্টি বা বিবর্তিত হচ্ছিল; তাদের বেঁচে থাকার জন্য নতুন পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছিল। সুযোগ হচ্ছিল বাস্তুসংস্থানগত নব নব প্রতিযোগিতার এবং বিবর্তনীয় প্রক্রিয়া বহুকোষী জীবের শেণিবিন্যাসে বিস্তৃতপরিসরে রদবদল ঘটাতে মুখ্য ভূমিকা পালন করছিল।” আণবিক অক্সিজেনের (O2) বৃদ্ধি সুরক্ষিত ওজন স্তর তৈরীতে ভূমিকা রেখেছিল। এই ওজন স্তর (O3) সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে রক্ষা পেতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।[১৩৮]

    তথ্যের সৃষ্টি

    আরও তথ্যের জন্য দেখুন: Physical information, Biosemioticsসৃজনবাদ ও নাইলন খাদক ব্যাকটেরিয়া

    “‘প্রসঙ্গতঃ আমাদের শরীরের কোন অংশ কেমন হবে থেকে শুরু করে গায়ের রং কেমন হবে নির্ধারণ করে আমাদের শরীরের DNA এ তে অবস্থিত জীন। তাই এখানে নতুন তথ্য বলতে বুঝানো হয়েছে, জীনে অবস্থিত তথ্যের সংযোজনকেই’” আরেকটা আপত্তি সৃষ্টিবাদীরা করে তা হল বিবর্তনের পরিচালনাকারী mutation কখনোই নতুন information(তথ্যের) জন্ম দিতে পারে না।সৃজনবাদী যেমন William A. Dembski, Werner Gitt, এবং Lee Spetner রা এই ইস্যুতে information theory ব্যবহার করলেন বিবর্তনবাদকে নস্যাৎ করতে। Dembski বলেন জীবন প্রদর্শন করে specified complexity(সুনির্দিষ্ট জটিলতার) এবং বিবর্তন একজন intelligent agent ছাড়া কোনোভাবেই উত্তরাধিকারের জীনে সেইসব নতুন তথ্যের জন্ম দিতে পারে না যেসব তথ্য সুনির্দিষ্ট জটিল অঙ্গ গঠন করে।[১৩৯]

    এইদাবী পুরোপুরিই বৈজ্ঞানিকদের সম্প্রদায় দ্বারা বাতিল করা হয়। বিবর্তনের দ্বারা নতুন নতুন তথ্য প্রতিনিয়তই তৈরী হচ্ছে, যখন জীনের ডুপ্লিকেশন বা আদর্শ মিউটেশন ঘটছে। নাটকীয় নতুন উদাহরণ আছেঃ একেবারেই স্বতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যের উদ্ভব ঘটেছে মিউটেশনের দ্বারা, যা সাম্প্রতিক বছরে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। বিবর্তনের ফলে nylon-eating bacteria তৈরী করেছে নতুন enzymes যার ফলে পদার্থকে আরো দক্ষতার সাহায্যে সে পরিপাক করতে পারে, এই এনজাইম আগে ছিল না।[১৪০][১৪১] প্রকৃতপক্ষে একটা জীব পরিবেশের সাথে সংগতি রেখে পরিবর্তিত হবে, এখানে আলাদা কোনো সত্তার প্রয়োজন নেই।মুলত একটা সুনির্দিষ্ট পরিবেশে একটা জীব নিজেকে টিকিয়ে রাখতে কিভাবে সার্ভাইভ করে সেই তথ্যই জীনোমে গঠিত হয়, এখানে তথ্যের সৃষ্টি হয়না, বরং তথ্য সংগৃহীত হয় পরিবেশ থেকে নিজস্ব উপায়ে। মিউটেশনের ফলে অভিযোজিত জীব যদি পরিবেশের সাথে টিকে থাকতে পারে, তাহলে স্বাভাবিক ভাবে বংশবিস্তার করে,অথবা বিলুপ্ত হয়ে যায়।[১৪২]

    প্রায় একইরকম বিতর্ক আছে বিবর্তনের বিরুদ্ধে যে প্রায় সকল মিউটেশনই ক্ষতিকর।[১৪৩] কিন্তু বেশিরভাগ মিউটেশন হল নিরপেক্ষ মিউটেশন neutral, আর বাকি মিউটেশনগুলো উপকারীও হতে পারে আবার ক্ষতিকারকও হতে পারে, তবে এটা নির্ভর করে পরিবেশের উপর, যে মিউটেশনটা একটা পরিবেশে ক্ষতিকর, সেই একই মিউটেশন অন্য পরিবেশে গিয়ে উপকারীও হতে পারে।[১৪৪]

    তাপগতিবিদ্যার ২য় সূত্রের লঙ্ঘন

    আরও তথ্যের জন্য দেখুন: Entropy and life

    সূর্য থেকে পৃথিবী তাপ গ্রহণ করছে, এটি উন্মুক্ত ব্যবস্থা। তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সুত্র শুধুমাত্র বদ্ধ ব্যবস্থার জন্য কার্যকরী

    সৃজনবাদীদের আরেকটা আপত্তি হল বিবর্তনবাদ তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সুত্র লঙ্ঘন করে। [১৪৫][১৪৬] এই সুত্র মতে, ” সাম্যবস্থা না থাকলে বদ্ধ ব্যবস্থায় এনট্রপি সময়ের সাথে সাথে বাড়তে থাকবে, যতক্ষণ না তাপীয় বিশৃঙ্খলা সর্বোচ্চ অবস্থায় পৌছায়”. অন্যকথায় একটি বদ্ধ ব্যবস্থায় এনট্রপি (ভৌত ব্যবস্থায় শক্তি ছড়িয়ে পরার একটি পরিমাপক, এনট্রপি যত বাড়বে যান্ত্রিক কাজ করা তত কঠিন হয়ে পরবে) হয় বাড়বে না হয় স্থিতিশীল থাকবে কিন্তু কমবে না। সৃজনবাদীদের অভিযোগ, বিবর্তনবাদ পদার্থবিজ্ঞানের নিয়ম লঙ্ঘন করছে, কারণ বিবর্তন সংঘটিত হতে হলে সময়ের সাথে সাথে এনট্রপি কমবে, যা অসম্ভব। [১৪৭][১৪৮]

    সৃজনবাদীদের এই দাবী সমালোচিত হয়; কারণ তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সুত্র বদ্ধ ব্যবস্থার (যার চারপাশে কখনো পদার্থ অথবা শক্তির রুপান্তর ঘটে না) জন্য প্রযোজ্য। পক্ষান্তরে জীবকূল হচ্ছে উন্মুক্ত ব্যবস্থা, কারণ জীবের ক্ষেত্রে পারিপার্শ্বিকতার সাপেক্ষে শক্তি এবং পদার্থের ক্রমাগত পরিবর্তন ঘটে। উদাহরণস্বরুপ প্রাণী খাদ্য গ্রহণ করে বর্জ্য পদার্থ নিঃসরণ করে। তাপ নিঃসরণ করে এবং শোষণ করে। সূর্য আমাদের এ পৃথিবীতে প্রতি নিয়ত শক্তির যোগান দিয়ে চলেছে। সেই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে জীবদেহে কোষের বৃদ্ধি ঘটে, এবং কালের পরিক্রমায় বিবর্তনও ঘটে। শুধুমাত্র জীবদেহের দিকে তাকিয়ে থাকলে মনে হবে যে এনট্রপি কমেছে। কিন্তু ঠিকমত হিসেব-নিকেশ করলে বোঝা যায় , এই ‘আপাতঃ এনট্রপি’ কমাতে গিয়ে শক্তির যোগানটা পড়ছে অনেক বেশি। কাজেই এনট্রপির আসলে নীট বৃদ্ধিই ঘটছে [১৪৯][১৫০][১৫১]

    যদিও তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র গণিতের একটা অংশ, এই বিতর্ককে পরিমাণজ্ঞাপক হিসাব দ্বারা বিশ্লেষণ করা যায়।[১৫২][১৫৩] পদার্থবিজ্ঞানী ড্যানিয়েল এফ. স্টাইয়ের এই বিশ্লেষণ করেন, তিনি বলেন “জৈব বিবর্তনে পরিমাণদ্বারা হিসাব থেকে এটাই প্রতীয়মান হয়, তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সুত্রের সাথে বিবর্তনবাদের কোনো বিরোধ নেই। .”[১৫২]

    গণিতজ্ঞ জ্যাসন রোসেনহাউজ একটি প্রকাশিত চিঠিতে বলেন:

    এটা বাস্তব যে প্রাকৃতিক বলগুলোই নিয়মিতভাবেই স্থানীয় এনট্রপির পরিমাণ কমায়। পানি বরফে পরিণত হয়, নিষিক্ত ডিমের কুসুম থেকে বাচ্চা তৈরী হয়, গাছ সুর্যের আলো ব্যবহার করে, কার্বন ডাই অক্সাইড আর পানির সাহায্যে চিনি/শর্করা এবং অক্সিজেন তৈরী করে।কিন্তু আমরা কখনো এগুলোকে ব্যাখ্যা করতে ঐশ্বরিক হস্তক্ষেপের আহবান করি না […] তাপগতিবিদ্যা কখনোই ডারউইনিজমের প্রতি আমাদের আস্থা হ্রাস করে না।[১৫৪]

    নৈতিক প্রভাব

    অন্য সাধারণ অভিযোগ বিবর্তনের বিরুদ্ধে করা হয়, যেমন বিবর্তন খারাপ বিশ্বাস, চরিত্র এবং ঘটনার দিকে নিয়ে যায়। বলা হয়, বিবর্তন শিক্ষাদান মুল্যবান নৈতিকতার বিলোপ সাধন করে, প্রতিপালন করায় ধর্মহীনতা অথবা নাস্তিকতাবাদের। একে বিবেচনা করা হয়, আপীল টু কন্সিকুয়েন্স ( লজিক্যাল ফ্যালাসির একটি অংশ) হিসেবে।

    মানুষ প্রাণী হিসেবে

    জীববিজ্ঞানের শ্রেণিবিভাগ অনুযায়ী মানুষকে প্রাণী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।[১৫৫][১৫৬] সৃজনবাদী জে. রেণ্ডল-শর্ট (J. Rendle-Short) ক্রিয়েশন ম্যাগাজিনে বলেন যদি মানুষ বিবর্তন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে তবে আশা করা যায় তারা জন্তুর মতই ব্যবহার করবে। কিন্তু মানুষের আচরণ ভিন্ন রকম।[১৫৭] তাই বিবর্তন অর্থহীন। কিন্তু জন্তু আর মানুষের মধ্যে পার্থক্য আছে, বিবর্তনের ধাপে মানুষ সক্ষম হয় জ্ঞান অর্জন করতে এবং তাদের আচরণ নানান ধরনের সামাজিক আচরণের সাথে মিল রেখে পরিবর্তিত হয়। তৈরী হয় নতুন সামাজিক আচরণ। তাই মানুষ অন্য মানুষের সাথে কথা বলার সময় সামাজিক আদব কায়দা বজায় রাখতে পারে।[১৫৮]

    সামাজিক প্রভাব

    ১৮৭১ সালে চার্লস ডারউইনের নরবানর হিসেবে অঙ্কিত ব্যাঙ্গচিত্র[১৫৯]

    থমাস হাক্সলিরMan’s Place in Nature (মানুষ কিভাবে প্রকৃতিতে স্থাপিত হল)(১৮৬৩) মানব বিবর্তনকে উৎসর্গীকৃত প্রথম বই এবং তুলনামুলক জীববিজ্ঞানের প্রথমদিকের উদাহরণ

    ১৯১৭ সালে ভার্নন কেলগ প্রকাশ করেন Headquarters Nights: A Record of Conversations and Experiences at the Headquarters of the German Army in France and Belgium যা ফ্রান্স এবং বেলজিয়ামের হেডকোয়ার্টারে জার্মান আর্মির সাথে অভিজ্ঞতা এবং বিভিন্ন কথোপকথনের রেকর্ড। এই রেকর্ড এটাই দেখায় “whole-hearted acceptance of the worst of Neo-Darwinism, the Allmacht of natural selection applied rigorously to human life and society and Kultur. (নাজি জার্মানির গ্রাম্য সংস্কৃতি)” এর কারণে জার্মান বুদ্ধিজীবিরা সম্পূর্ণভাবে মনে করেন- শক্তিমান যা সিদ্ধান্ত নিবে তাই ঠিক(মাৎসন্যায়)।[১৬০] এ বিষয়টা রাজনীতিবিদ উইলিয়াম জেনিংস ব্রায়ানকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। তিনি ডারউইনিজমকে আমেরিকার বিরুদ্ধে নৈতিক আঘাত হিসেবে দেখেন।তিনি ব্যাপক প্রচারণা চালান বিবর্তনবাদের বিরুদ্ধে। তার ক্যাম্পেইন স্কোপস ট্রায়ালে (একটি বিচার) সর্বোচ্চ প্রভাব বিস্তার করে, যার ফলে কার্যত ১৯৬০ সাল পর্যন্ত বেশিরভাগ পাবলিক স্কুলগুলোতে বিবর্তন নিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান নিষিদ্ধ ছিল।

    আর. আলবার্ট মোলার, জেয়ার যিনি লুইসভিলের (Louisville) সাউদার্ন ব্যাপ্টিস্ট থিওলজিকাল সেমিনারের সভাপতি ছিলেন। ২০০৫ সালের ৮ই আগস্ট এই বিষয়ের উপর এনপিআরে Taking Issue নামক রচনামুলক সিরিজে ধারাবাহিকভাবে লিখেন, ” শিক্ষা, গর্ভপাত, পরিবেশবাদ, সমকামিতা এই বিষয়গুলো নিয়ে বিবর্তনবাদ বিতর্ক করে….. বিবর্তন দাঁড়িয়ে রয়েছে মোরাল রিলেটিভিজমের উপর এবং এটি ঐতিহ্যবাহী প্রথাসমুহের বিরোধী”।[১৬১][১৬২]

    হেনরি এম. মরিস একজন প্রকৌশলী অধ্যাপক, তিনি ক্রিয়েশন রিসার্চ সোসাইটি এবং ইনস্টিউট অফ ক্রিয়েশন রিসার্চের এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি দাবী করেন বিবর্তন তত্ত্ব হচ্ছে পৌত্তলিকতাবাদ ধর্মের একটা অংশ যা Tower of Babel এর থেকে উৎপন্ন;- প্লেটোএরিস্টটল এর দর্শনের সাথে সংগতিপূর্ণ একটি বিষয়। এটি সমাজকে যুদ্ধাবস্থা থেকে যৌনতার দিকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভাবে দায়ী। তার মতে এর প্রভাবে একক পরিবারগুলোতে ভাঙন ধরবে।[১৬৩] তিনি আরো দাবী করেন, বিবর্তন তত্ত্বে বিশ্বাস করার জন্য সামাজিক অসুস্থতা যেমন: অপরাধ, কৈশোরে গর্ভধারণ, সমকামিতা, গর্ভপাত, নৈতিকতাহীনতা, যুদ্ধ, এবং গণহত্যা ঘটতে পারে।[১৬৪]

    সেন্টার ফর রিক্লেইমিং আমেরিকা ফর ক্রিস্ট (The Center for Reclaiming America for Christ) এর Rev. জেমস কেনেডি এবং কোরাল রিডজ মন্ত্রী দাবী করেন ডারউইন এবং শুধুমাত্র ডারউইনবাদই আডলফ হিটলার এর নৃসংশতার কারণ। কেনেডির দলিলপত্রে একটা পুস্তিকার শিরোনাম ছিল Darwin’s Deadly Legacy, কেনেডি বলেন “To put it simply, no Darwin, no Hitler(যদি এটাকে সহজভাবে দেখি, তাহলে ডারউইন নেই তো হিটলারও নেই)” তিনি বলেন “harmful effects that evolution is still having on our nation, our children, and our world (বিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব এখনো আমাদের জাতি,আমাদের সন্তান আমাদের দুনিয়া বয়ে বেড়াচ্ছে)।” কেনেডি আরো বলেন, “We have had 150 years of the theory of Darwinian evolution, and what has it brought us? Whether Darwin intended it or not, millions of deaths, the destruction of those deemed inferior, the devaluing of human life, increasing hopelessness.(আমাদের ১৫০ বছর ধরে বিবর্তনবাদ আছে, এবং এটা আমাদের কী দিয়েছে? লক্ষাধিক মৃত্যু? তাদের উপর নির্ভরশীল বাকিদের জীবনে বিভীষিকা নেমে আসা? মানুষের জীবনের মূল্য হ্রাস? হতাশার পরিমাণ বৃদ্ধি? ডারউইনের কী এই অভিপ্রায় ছিল,নাকি অন্যকিছু?”[১৬৫][১৬৬][১৬৭] ডিসকভারী ইনস্টিটিউশনের Center for Science and Culture সহকর্মী Richard Weikart অন্যান্য সৃজনবাদীদের মত একই দাবী করেন:[১৬৮][১৬৯][১৭০] এই দাবীটা একটা দলিলপত্রের উপর ভিত্তি করে তৈরী: Expelled: No Intelligence Allowed (2008) যা সৃজনবাদী ধারণাকেই ব্যক্ত করে। Anti-Defamation League(যারা হিটলারের গণহত্যার স্বীকার হওয়া ইহুদীদের নিয়ে কাজ করে) বলেন the Holocaust নিয়ে কুযুক্তিগুলো ব্যাপকহারে ব্যবহার হচ্ছে এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে”… ইহুদীদের গণহত্যার পিছনে অনেক জটিল কারণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। এই নৃসংশতম গণহত্যা বাস্তবায়নের জন্য হিটলারের ডারউইন বা বিবর্তনতত্ত্ব প্রয়োজন ছিল না।ডারউইন বা বিবর্তনতত্ত্ব হিটলারের এই চরমপন্থার পাগলামীকে ব্যাখ্যা করতে পারে না। উপরন্তু ইহুদীদের বিরোধিতা বহুবছর থেকে চলে আসছে,এমনকি যখন ডারউইন একটা শব্দও লিখে নাই।”[১৬৭][১৭১]

    তরুণ সৃজনবাদী কেন্ট হভিণ্ড সাম্যবাদ, সমাজতন্ত্র, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ , বর্ণবাদ, হলোকস্ট, স্ট্যালিনের যুদ্ধাপরাধ, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, এবং পল পটের হত্যার মাঠ এইসবকিছুর জন্য বিবর্তনকে দায়ী করেন। তিনি আরো বলেন, সমাজে অপরাধপ্রবণতা যেমন বিবাহপূর্ব মা হয়ে যাওয়া ও অন্যান্য সামাজিক অসুস্থতা বিবর্তনে বিশ্বাস রাখার কারণেই বাড়ছে।[৬১] হভিণ্ডের সন্তান এরিক হভিন্ড দাবী করেন ট্যাটু আকা,শরীরে ধাতব পদার্থ দয়ে চিহ্ন তৈরী করা,বিবাহপূর্বক সঙ্গম, অবৈধ বাচ্চার জন্ম দেওয়া,যৌন রোগসমূহ (STD), ডিভোর্সের জন্য বিবর্তনবাদ দায়ী।[১৭২]

    বিবর্তনবাদের সমর্থকরা এইসব যুক্তিকে খণ্ডন করেন। Gregory S. Paul নামক একজন লেখকের গবেষণা প্রকাশিত হয়, সেখানে তিনি দেখান, ধর্মীয় বিশ্বাস (যেখানে অন্তর্ভুক্ত ছিল সৃজনবাদে বিশ্বাস এবং বিবর্তনবাদে অবিশ্বাস) সুনির্দিষ্টভাবে সম্পৃক্ত সামাজিক অবক্ষয় এমনকি ক্রাইমের সাথেও।[১৭৩] The Barna Group যুক্তরাজ্যের খ্রিষ্টাণ সম্প্রদায় এবং খ্রিষ্টান নন এই দুই সম্প্রদায়ের মধে একটা জরিপ করেন যেখানে দেখা যায় উভয়ের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদের হার একইরকম। একইসাথে দেখা যায় BaptistsPentecostals যারা বিবর্তনবাদ কে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সৃজনবাদকে গ্রহণ করেছে এই দুই গোষ্ঠির মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদের হার সর্বোচ্চ।[১৭৪]

    Michael Shermer argued in Scientific American in October 2006 that evolution supports concepts like family values, avoiding lies, fidelity, moral codes and the rule of law.[১৭৫] He goes on to suggest that evolution gives more support to the notion of an omnipotent creator, rather than a tinkerer with limitations based on a human model, the more common image subscribed to by creationists. Careful analysis of the creationist charges that evolution has led to moral relativism and the Holocaust yields the conclusion that these charges appear to be highly suspect.[১৭৬] Such analyses conclude that the origins of the Holocaust are more likely to be found in historical Christian anti-Semitism than in evolution.[১৭৭][১৭৮]

    Evolution has been used to justify Social Darwinism, the exploitation of “lesser breeds without the law” by “superior races,” particularly in the nineteenth century.[১৭৯] Strong, typically European, nations successfully expanded their empires, and as such, these strong nations could be said to have “survived” in the struggle for dominance.[১৭৯] With this attitude, Europeans, with the exception of Christian missionaries, seldom adopted the customs and languages of local people under their empires.[১৭৯]

    নাস্তিকতাবাদ

    আরও তথ্যের জন্য দেখুন: নাস্তিক্যবাদ

    ফ্রান্সিস কলিনস, হিউমান জিনোম প্রজেক্টের প্রধান, তিনি একজন গভীরভাবে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী। তাকে ধার্মিক জীববিজ্ঞানীদের অন্যতম উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

    সৃজনবাদীদের আরেকটা অভিযোগ হল বিবর্তনে বিশ্বাস করা মানেই নাস্তিকতা।[১৮০] এটাও সাধারণত দাবী করা হয় যারা এই বিবর্তন থিওরীর যারা বক্তা তারা সবাই “বস্তবাদী নাস্তিক”[১৮১] ডেভিস এ. ইয়াং বলেন; সৃজনবাদী বিজ্ঞান তার নিজের জন্যই ক্ষতিকর। তিনি বলেন ” যদি আমরা বিজ্ঞানের ব্যানারে আস্তিকদের নিয়ে আসা একটা অপ্রমাণিত বিষয় শিখাতে জোর করি, তাহলে আমরা কী সত্যি বিশ্বাস করি যারা খ্রিষ্টান নয় তাদের খ্রিষ্টানদের প্রতি সম্মান বাড়বে?”[১৮২] যাইহোক, বিবর্তনবাদ এক পাগলা ঘোড়া। এটা কোনো নিয়ম মানে না। ঐশ্বরিক কোনো কিছুর হস্তক্ষেপেরও এর প্রয়োজন নেই।দার্শনিক রবার্ট টি. পিনক বলেন বিবর্তনবাদ প্লাম্বিং এর তুলনায় বেশি নাস্তিকতাবাদী নয়।[১৮৩]রচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় এর জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক এইচ এলেন অর লিখেন:

    ত্রুটি: কোন উদ্ধৃতি লেখা হয়নি (বা একটি নামহীন প্যারামিটারে প্রকৃত লেখায় সমান চিহ্ন ব্যবহৃত হয়েছে)

    ধীরে ধীরে অনেক ধর্মই বিবর্তনের সাথে সমঝোতা করে নেয়। তাদের সমঝোতামুলক বক্তব্য ছিল, “বিবর্তন হচ্ছে মানি কিন্তু তা হচ্ছে ঈশ্বরের হস্তক্ষেপে।”[১৮৪] মোলেন মাটসুমুরা অব দ্য ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্স এডুকেশন এর গবেষণায় দেখা গিয়েছে “আমেরিকানদের মধ্যে ১২টা বৃহত্তম খ্রিষ্টান শ্রেণিগুলোর মধ্যে ৮৯.৬% ই বিবর্তনবাদী শিক্ষাকে সমর্থন করে” এই চার্চগুলোর মধ্যে ছিল”ইউনাইটেড মেথোডিস্ট চার্চ, জাতীয়তাবাদী ব্যাপ্টিস্ট সংগঠন, যুক্তরাষ্ট্র, ইভানজেলিকাল লুথেরান চার্চ ইন আমেরিকা, প্রেসবাইটেরিয়ান চার্চ (যুক্তরাষ্ট্র), যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয়তাবাদী ব্যাপ্টিস্ট কনভেনশন, আফ্রিকান মেথোডিস্ট এপিস্কোপাল চার্চ, রোমান ক্যাথলিক চার্চ, এপিসকোপাল চার্চ ইত্যাদি.”[১৮৫] ২০০০ সালে পিপল ফর দ্য আমেরিকান ওয়ের করা একটা পোলে দেখা যায় আমেরিকার জনগণের ৭০% মনে করে বিবর্তনবাদ ঈশ্বর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।[১৮৬]

    আরেকটা রিপোর্ট নেচার জার্নালে প্রকাশিত হয়, যেখানে দেখা যায় আমেরিকান বিজ্ঞানীদের মধ্যে(across various disciplines) প্রায় ৪০ শতাংশ বিবর্তন এবং সচল দেবতা (theistic evolution)(যিনি বিবর্তন নিয়ন্ত্রণ করছে) উভয়েই বিশ্বাস করে।[১৮৭] একইরম ফলাফল আসে যখন আমেরিকার আমজনতার উপর একটি জরিপ করা হয়। সেখানেও বিজ্ঞানীদের ৪০ শতাংশ বিশ্বাস করেন ঈশ্বর প্রার্থনার জবাব দেন এবং বিশ্বাস করেন অনৈতিকতায়[১৮৮] জরিপে দেখা যায় বিজ্ঞানীদের ৫৫ শতাংশ নাস্তিক সংশয়বাদী, অথবা কোনো ধর্মের নয়-কিন্তু বিশ্বাসী। যেসব বিজ্ঞানীরা বিবর্তনে সমর্থন করেন তাদের মধ্যে নাস্তিকতা কোনো প্রভাব ই ফেলে নি প্রায় একইরকম ফলাফল প্রকাশ পায় 1997 সালে আমেরিকার জনগণ এবং বিজ্ঞানীদের উপর করা গ্যালোপ জরিপ এর মাধ্যমে [১৮৯]

    Group[১৮৯]বিশ্বাস করেন young Earth creationismবিশ্বাস করেন God-guided evolutionবিশ্বাস করেন evolution without God guiding the process
    আমেরিকার জনগণ’৪৪%৩৯%১০%
    আমেরিকার বিজ্ঞানী*৫%৪0%৫৫%
    *যারা বিবর্তনের সাথে সম্পর্কহীন কিন্তু কম্পিউটার সায়েন্স, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, পদার্থ বিজ্ঞান, শারীরবিজ্ঞান, ব্যবসায়িক প্রশাসনে উচ্চতর ডিগ্রি আছে তাদের ও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।[১৮৯]

    সংরক্ষণশীলরা তারপরেও আপত্তি করতেই থাকেন, তারা বলতেই থাকেন বিবর্তনবাদ এমন একটি ধারণার বারবার পুনর্জাগরণ ঘটাচ্ছে যার মাধ্যমে ঈশ্বরের হস্তক্ষেপ কে বাতিল করা হচ্ছে। জীবে বৈচিত্র্য এমনকি মানুষের উদ্ভব কে বিবর্তন ব্যাখ্যা করে যা বিশ্বাসের মূলে কুঠারাঘাত করে একই সাথে জীবের উদ্ভবের ব্যাখা তাদের সৃষ্টিবাদী মিথের সাথে না মিলায় তাদের আপত্তির কোনোভাবেই সমাধান হচ্ছিল না। যাই হোক তারপরও কয়েকটা ধর্ম যেমন ক্যাথলিক চার্চ বিবর্তনের সাথে মিল রেখে তাদের বিশ্বাসের (জীবের উদ্ভবের ব্যাখ্যার) সংস্কার করেছে।[১৩][১৯০]

    আরো দেখুন

    মন্তব্য

    Counts vary, but typical is that 35 of the 40 extant phyla originated then, and up to 100 additional phyla that are now extinct. This included at least animals, phytoplankton and calcimicrobes.[১২৬] As defined in terms of the extinction and origination rate of species.[১২৭]

  • জীবভূগোল

    জীবভূগোল

    জীবভূগোল (ইংরেজি: Biogeography) বা জৈব-ভূগোল উদ্ভিদ ও প্রাণীদের ভৌগোলিক বণ্টন বিষয়ক বিজ্ঞানের নাম। এটি পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে এবং ভৌগোলিক ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রজাতি ও বাস্তুতন্ত্রের বণ্টন নিয়ে আলোচনা করে। জীবভূগোলকে সাধারণত জীববিজ্ঞানের একটি শাখা হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তবে এর উন্নয়নে ভৌত ভূগোলবিদদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে, বিশেষ করে উদ্ভিদের বণ্টন বিষয়ে। এছাড়া জীবভূগোলের সাথে বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানবাস্তুবিজ্ঞানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে।[১]

    জীবভূগোল

    জীবভূগোল পৃথিবীকে উদ্ভিদ ও প্রাণীদের প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে কয়েকটি অঞ্চলে ভাগ করে, যে অঞ্চলগুলোর একেকটিতে জীবজগৎ একেক রকম। তবে এই বিভাজন সময়ের সাথে সাথে ধীরে ধীরে হলেও পরিবর্তিত হয়। বর্তমান এবং অতীতের অনেক কিছু জীবকূলের বণ্টনকে প্রভাবিত করে। যেমন, বর্তমান জলবায়ু ও ভৌগোলিক অবস্থা, পৃথিবীর বিভিন্ন ভূভাগের ভূতাত্ত্বিক ইতিহাস ও জলবায়ু, জীবকূলের বিবর্তন ইত্যাদি। বর্তমানে মানুষের অভূতপূর্ব প্রযুক্তিগত উন্নতির কারণে পৃথিবী খুব দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে।[২] আধুনিক জীবভূগোল এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে পৃথিবীর জীববৈচিত্র্য ও তাদের বণ্টনের উপর মানুষের কর্মকাণ্ডের প্রভাব বিশ্লেষণ করে, এবং জীবকূলের ভবিষ্যৎ অনুমান করার চেষ্টা করে।[১]

    জীবভূগোলের ইতিহাস

    ব্রিটিশ প্রকৃতিবিদ আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেসকে অনেক সময় জীবভূগোলের জনক বলা হয়।[৩] ওয়ালেস মালয় দ্বীপপুঞ্জে ভ্রমণের সময় জীবকূলের, বিশেষ করে প্রাণীদের ভৌগোলিক বণ্টন সম্পর্কে কিছু অনুকল্প তৈরি করেন। মালয় থেকে ফিরে আসার পর ১৮৭২ সালে বেশ কয়েকজন বন্ধুর (যাদের মধ্যে ছিলেন ডারউইন, ফিলিপ স্ক্লেটারআলফ্রেড নিউটন) আবেদনে সাড়া দিয়ে ওয়ালেস পৃথিবীতে প্রাণীদের ভৌগোলিক বণ্টনের উপর একটি সাধারণ রিভিউ প্রণয়নের জন্য গবেষণা শুরু করেন। শুরুতে খুব একটা অগ্রসর হতে পারেননি কারণ তখন প্রাণীদের বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ ছিল। ১৮৭৪ সালে শ্রেণীবিন্যাসের উপর বেশ কিছু নতুন গবেষণা প্রকাশিত হওয়ার পর আবার শুরু করেন।

    স্ক্লেটার পাখি প্রজাতিসমূহের ভৌগোলিক বণ্টন ব্যাখ্যার জন্য পৃথিবীকে ছয়টি অঞ্চলে ভাগ করেছিলেন। ওয়ালেস এই বিভাজন প্রক্রিয়াকে আরও বর্ধিত করেন যাতে করে স্তন্যপায়ী, সরীসৃপ ও পোকামাকড়দের বণ্টনও ব্যাখ্যা করা যায়। প্রাণীদের যে ভৌগোলিক বণ্টন ব্যবস্থা আজ বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত ওয়ালেসই তার ভিত্তি তৈরি করেছিলেন। প্রতিটি অঞ্চলে বর্তমান এবং অতীতের সকল প্রাণীর বণ্টন ব্যাখ্যার জন্য যে বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ তার সবগুলো নিয়েই তিনি আলোচনা করেন। এর মধ্যে রয়েছে, স্থলসেতুর (land bridge, যেমন বর্তমান উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার সংযোগকারী স্থলপথ) উদয় ও বিলুপ্তি এবং প্রবল হিমবাহের প্রভাব। তার তৈরি করা মানচিত্রগুলো প্রাণীদের বণ্টনের উপর বিভিন্ন বিষয় যেমন, পর্বতমালার উচ্চতা, সমুদ্রের গভীরতা, আঞ্চলিক উদ্ভিদজগৎ ইত্যাদির প্রভাব তুলে ধরে। এছাড়া তিনি সে সময় জানা সকল উচ্চতর প্রাণীদের পরিবার ও গোত্রের নাম এবং ভৌগোলিক ব্যাপ্তি লিপিবদ্ধ করেন। লেখাগুলো এমনভাবে সাজিয়েছিলেন যাতে একজন পরিব্রাজক পড়েই বুঝতে পারে কোন এলাকায় কেমন প্রাণী পাওয়া যায়। এ বিষয়ক সকল গবেষণা ১৮৭৬ সালে দ্য জিওগ্রাফিক্যাল ডিস্ট্রিবিউশন অফ অ্যানিমেল্‌স (The Geographical Distribution of Animals) নামে দুই খণ্ডে প্রকাশিত হয়। পরবর্তী ৮০ বছর ধরে এটিই ছিল প্রাণীভূগোলের উপর সর্বাধিক পঠিত ও গুরুত্বপূর্ণ বই।[৪]

  • জীববিজ্ঞানী

    জীববিজ্ঞানী

    একজন জীববিজ্ঞানী হলেন একজন বিজ্ঞানী যিনি জীববিজ্ঞানে গবেষণা করেন। [১] [২] জীববিজ্ঞানীরা পৃথিবীতে জীবন নিয়ে গবেষণা করতে আগ্রহী, তা সে একটি পৃথক কোষ, একটি বহুকোষী জীব, বা ইন্টারঅ্যাক্টিং জনসংখ্যার একটি সম্প্রদায় ই হোক না কেন।[১] তারা সাধারণত জীববিজ্ঞানের একটি নির্দিষ্ট শাখায় (যেমন, আআণবিক জীববিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা এবং বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞান)[৩] বিশেষজ্ঞ এবং একটি নির্দিষ্ট গবেষণা ফোকাস (যেমন, ম্যালেরিয়া বা ক্যান্সার অধ্যয়ন) রয়েছে।[৪]

     ম্যালেরিয়া বা ক্যান্সার অধ্যয়ন

    জীববিজ্ঞানীরা যারা মৌলিক গবেষণার সাথে জড়িত তাদের লক্ষ্য প্রাকৃতিক বিশ্ব সম্পর্কে জ্ঞানের অগ্রগতি। [১] তারা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করে তাদের গবেষণা পরিচালনা করে, যা অনুমান পরীক্ষা করার জন্য একটি অভিজ্ঞতামূলক পদ্ধতি। [১] [৫] তাদের আবিষ্কারের কিছু নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে প্রয়োগ থাকতে পারে যেমন বায়োটেকনোলজি, যার লক্ষ্য মানুষের জন্য চিকিৎসাগতভাবে উপযোগী পণ্য তৈরি করা। [১] [৬]

    আধুনিক সময়ে, বেশিরভাগ জীববিজ্ঞানীদের এক বা একাধিক একাডেমিক ডিগ্রি থাকে, যেমন স্নাতক ডিগ্রি এবং মাস্টার্স ডিগ্রি বা ডক্টরেটের মতো একটি উন্নত ডিগ্রী। [৩] [৭] [৮] অন্যান্য বিজ্ঞানীদের মতো, জীববিজ্ঞানীদের অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন একাডেমিয়া, অলাভজনক, বেসরকারি শিল্প বা সরকারী ক্ষেত্রে কাজ করতে দেখা যায়। [৯]

    ইতিহাস

    ফ্রান্সেস্কো রেডি, জীববিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা।

    জীববিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা ফ্রান্সেস্কো রেডি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ জীববিজ্ঞানীদের একজন হিসেবে স্বীকৃত।[১০] রবার্ট হুক, একজন ইংরেজ প্রাকৃতিক দার্শনিক, যিনি কোষ শব্দটি তৈরি করেছিলেন, যা মৌচাক কোষের সাথে উদ্ভিদের গঠনের সাদৃশ্যের ক্থা বলেছিলেন।[১১]

    চার্লস ডারউইন এবং আলফ্রেড ওয়ালেস স্বাধীনভাবে প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিবর্তনের তত্ত্ব প্রণয়ন করেন, যা ডারউইনের বই অন দ্য অরিজিন অফ স্পিসিসে বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে, যা ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। এতে, ডারউইন প্রস্তাব করেছিলেন যে মানুষ সহ সমস্ত জীবের বৈশিষ্ট্যগুলি বংশের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াগুলির দ্বারা আকৃতির হয়েছিল, সঞ্চিত পরিবর্তনের সাথে যার ফলে দীর্ঘ সময় ধরে বিচ্যুতি ঘটে। বিবর্তনের তত্ত্ব তার বর্তমান আকারে জীববিজ্ঞানের প্রায় সব ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করে।[১২] পৃথকভাবে, গ্রেগর মেন্ডেল ১৮৬৬ সালে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রণয়ন করেছিলেন, যা আধুনিক জেনেটিক্সের ভিত্তি হয়ে ওঠে।

    ১৯৫৩ সালে, জেমস ডি. ওয়াটসন এবং ফ্রান্সিস ক্রিক ডিএনএর মৌলিক কাঠামো বর্ণনা করেছিলেন, তার সমস্ত রূপে জীবন প্রকাশ করার জন্য জেনেটিক উপাদান,[১৩] মরিস উইলকিন্স এবং রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিনের কাজের উপর ভিত্তি করে, পরামর্শ দিয়েছিলেন যে ডিএনএর গঠনটি একটি ডাবল হেলিক্স গঠন।

    ইয়ান উইলমট একটি গবেষণা দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যা ১৯৯৬ সালে প্রথম একটি প্রাপ্তবয়স্ক সোম্যাটিক কোষ থেকে একটি স্তন্যপায়ী প্রাণীর ক্লোন করেছিল, ডলি নামে একটি ফিনিশ ডরসেট মেষশাবক।[১৪] [১৫] [১৬] [১৭]

    শিক্ষা

    জীববিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রী সাধারণত আণবিক এবং কোষবিদ্যা, উন্নয়ন, বাস্তুবিজ্ঞান, জেনেটিক্স, মাইক্রোবায়োলজি, অ্যানাটমি, শরীরতত্ত্ব, উদ্ভিদবিদ্যা এবং প্রাণিবিদ্যায় কোর্সের প্রয়োজন হয়। [৮] [১৮] অতিরিক্ত প্রয়োজনীয়তার মধ্যে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন (সাধারণ, জৈব, এবং জৈব রসায়ন ), ক্যালকুলাস এবং পরিসংখ্যান অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।


    যে সমস্ত শিক্ষার্থীরা একটি গবেষণা-ভিত্তিক কর্মজীবনের আকাঙ্ক্ষা করে তারা সাধারণত মাস্টার্স বা ডক্টরেট (যেমন, পিএইচডি) এর মতো স্নাতক ডিগ্রী অনুসরণ করে, যার ফলে তারা একটি শিক্ষানবিশ মডেলের উপর ভিত্তি করে একটি গবেষণা প্রধানের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবে যা ১৮০০ এর দশক থেকে বিদ্যমান রয়েছে।[৭] এই স্নাতক প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীরা প্রায়ই জীববিজ্ঞানের একটি নির্দিষ্ট সাবডিসিপ্লিনে বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।[৩]

    গবেষণা

    মার্টিনাস উইলেম বেইজেরিঙ্ক, একজন উদ্ভিদবিদ এবং মাইক্রোবায়োলজিস্ট

    জীববিজ্ঞানীরা যারা মৌলিক গবেষণায় কাজ করেন তারা তত্ত্ব তৈরি করেন এবং বিবর্তন, জৈব রসায়ন, আণবিক জীববিজ্ঞান, স্নায়ুবিজ্ঞান এবং কোষ জীববিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলি সহ জীবনের উপর মানুষের জ্ঞানকে অগ্রসর করার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন।

    জীববিজ্ঞানীরা সাধারণত প্রাণী, উদ্ভিদ, অণুজীব বা জৈব অণু জড়িত পরীক্ষাগার পরীক্ষা পরিচালনা করে। যাইহোক, জৈবিক গবেষণার একটি ছোট অংশ পরীক্ষাগারের বাইরেও ঘটে এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরিবর্তে প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ জড়িত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একজন উদ্ভিদবিজ্ঞানী একটি নির্দিষ্ট পরিবেশে উপস্থিত উদ্ভিদ প্রজাতির তদন্ত করতে পারেন, যখন একজন বাস্তুবিজ্ঞানী অগ্নিকাণ্ডের পরে কীভাবে বনাঞ্চল পুনরুদ্ধার হয় তা অধ্যয়ন করতে পারেন।

    জীববিজ্ঞানীরা যারা ফলিত গবেষণায় কাজ করেন তারা নির্দিষ্ট ক্ষেত্র বা অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে আরও জ্ঞান অর্জনের জন্য মৌলিক গবেষণা দ্বারা অর্জিত অর্জনগুলি ব্যবহার করেন। উদাহরণস্বরূপ, এই ফলিত গবেষণাটি নতুন ফার্মাসিউটিক্যাল ওষুধ, চিকিত্সা এবং মেডিকেল ডায়গনিস্টিক পরীক্ষাগুলি বিকাশের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। বেসরকারী শিল্পে ফলিত গবেষণা এবং পণ্য উন্নয়ন পরিচালনাকারী জৈবিক বিজ্ঞানীদের তাদের গবেষণা পরিকল্পনা বা ফলাফলগুলি অ-বিজ্ঞানীদের কাছে বর্ণনা করার প্রয়োজন হতে পারে যারা ভেটো বা তাদের ধারণাগুলি অনুমোদন করার অবস্থানে রয়েছে। এই বিজ্ঞানীদের অবশ্যই তাদের কাজের ব্যবসায়িক প্রভাবগুলি বিবেচনা করতে হবে।

    জেনেটিক্স এবং জৈব অণুগুলির জ্ঞানের দ্রুত অগ্রগতি জৈবপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে বৃদ্ধিকে উত্সাহিত করে, জৈবিক বিজ্ঞানীরা যে শিল্পগুলিতে কাজ করে সেগুলিকে রূপান্তরিত করে। জৈবিক বিজ্ঞানীরা এখন প্রাণী এবং উদ্ভিদের জেনেটিক উপাদানগুলি ম্যানিপুলেট করতে পারেন, জীবকে (মানুষ সহ) আরও উত্পাদনশীল বা রোগ প্রতিরোধী করার চেষ্টা করছেন। জৈবপ্রযুক্তিগত প্রক্রিয়াগুলির উপর মৌলিক এবং প্রয়োগ করা গবেষণা, যেমন ডিএনএ পুনরায় সমন্বয় করা, মানুষের ইনসুলিন এবং বৃদ্ধি সংক্রান্ত হরমোনের সহ গুরুত্বপূর্ণ পদার্থের উত্পাদনের দিকে পরিচালিত করেছে। অন্যান্য অনেক পদার্থ যা আগে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় না তা এখন জৈবপ্রযুক্তিগত উপায়ে উত্পাদিত হয়। এর মধ্যে কিছু পদার্থ রোগের চিকিৎসায় উপকারী।

    যারা বিভিন্ন জিনোম (তাদের সংশ্লিষ্ট জিনগুলির সাথে ক্রোমোজোম) প্রকল্পগুলি নিয়ে কাজ করে তারা জিনগুলিকে বিচ্ছিন্ন করে এবং তাদের কার্যকারিতা নির্ধারণ করে। এই কাজটি নির্দিষ্ট রোগ এবং উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত স্বাস্থ্য ঝুঁকি, যেমন সিকেল সেল অ্যানিমিয়ার সাথে সম্পর্কিত জিনগুলির আবিষ্কারের দিকে পরিচালিত করে চলেছে। জৈবপ্রযুক্তির অগ্রগতি জীববিজ্ঞানের প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রে গবেষণার সুযোগ তৈরি করেছে, যেমন ঔষধ, কৃষি এবং পরিবেশগত সংস্কারের মতো ক্ষেত্রগুলিতে বাণিজ্যিক প্রয়গ রয়েছে।

    বিশেষীকরণ

    বেশিরভাগ জৈবিক বিজ্ঞানীরা একটি নির্দিষ্ট ধরণের জীবের গবেষণায় বা একটি নির্দিষ্ট ক্রিয়াকলাপে বিশেষজ্ঞ, যদিও সাম্প্রতিক অগ্রগতিগুলি কিছু ঐতিহ্যগত শ্রেণিবিন্যাসকে ঝাপসা করে দিয়েছে।

    কর্মসংস্থান

    জীববিজ্ঞানীরা সাধারণত নিয়মিত ঘন্টা কাজ করেন তবে দীর্ঘ সময় অস্বাভাবিক নয়। গবেষকদের তাদের গবেষণার প্রকৃতির উপর নির্ভর করে ল্যাবরেটরিজ বা অন্যান্য স্থানে (বিশেষ করে ক্ষেত্রের সময়) বিজোড় ঘন্টা কাজ করার প্রয়োজন হতে পারে।

    অনেক জীববিজ্ঞানী তাদের গবেষণার জন্য অনুদানের অর্থের উপর নির্ভর করে। নতুন বা বর্ধিত তহবিল চাওয়ার প্রস্তাবগুলি প্রস্তুত করার সময় তারা সময়সীমা পূরণ করতে এবং কঠোর অনুদান-লেখার নির্দিষ্টকরণের সাথে সামঞ্জস্য করার জন্য চাপের মধ্যে থাকতে পারে।

    সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানীরা বিভিন্ন কাজের অবস্থার সম্মুখীন হন। কিছু ল্যাবরেটরিতে কাজ করে; অন্যরা গবেষণা জাহাজে কাজ করে এবং যারা পানির নিচে কাজ করে তাদের অবশ্যই তীক্ষ্ণ প্রবাল প্রাচীর এবং বিপজ্জনক সামুদ্রিক জীবনের চারপাশে কাজ করার সময় নিরাপদ ডাইভিং অনুশীলন করতে হবে। যদিও কিছু সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী সমুদ্র থেকে তাদের নমুনাগুলি পান, তবুও অনেকে পরীক্ষাগারে এবং অফিসে, পরীক্ষা পরিচালনা, পরীক্ষা চালানো, ফলাফল রেকর্ড করা এবং ডেটা সংকলনে তাদের একটি ভাল সময় ব্যয় করে।

    জীববিজ্ঞানীরা সাধারণত অনিরাপদ বা অস্বাস্থ্যকর অবস্থার সংস্পর্শে আসেন না। যারা পরীক্ষাগারে বিপজ্জনক জীব বা বিষাক্ত পদার্থ নিয়ে কাজ করেন তাদের অবশ্যই দূষণ এড়াতে কঠোর নিরাপত্তা পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। অনেক জীববিজ্ঞানী, যেমন উদ্ভিদবিদ, বাস্তুবিজ্ঞানী এবং প্রাণিবিজ্ঞানী, ক্ষেত্র অধ্যয়ন পরিচালনা করেন যা কঠোর শারীরিক কার্যকলাপ এবং আদিম জীবনযাত্রার সাথে জড়িত। ক্ষেত্রের জীববিজ্ঞানীরা উষ্ণ বা ঠান্ডা জলবায়ু, সব ধরনের আবহাওয়ায় কাজ করতে পারে।

    সম্মান এবং পদবী

    জীববিজ্ঞানীদের দেওয়া সর্বোচ্চ সম্মান হল ফিজিওলজি বা মেডিসিনে নোবেল পুরস্কার, যা রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্সেস দ্বারা ১৯০১ সাল থেকে দেওয়া হয়। আরেকটি উল্লেখযোগ্য পুরস্কার হল জীববিজ্ঞানে ক্রাফুর্ড পুরস্কার ; ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত। [১৯]

    আরো দেখুন

  • উইকিপিডিয়া:জীববিজ্ঞান পরিভাষা

    উইকিপিডিয়া:জীববিজ্ঞান পরিভাষা

    A

    উইকিপিডিয়া:জীববিজ্ঞান পরিভাষা
    • Acid–base physiology‎ – অম্ল-ক্ষারক শারীরবিজ্ঞান
    • Actinobiology – বিকিরণ জীববিজ্ঞান
    • Aerobiology – বায়ুবাহিত জীববিজ্ঞান
    • Aeromicrobiology – বায়ুবাহিত অণুজীববিজ্ঞান
    • Agricultural microbiology – কৃষি অণুজীববিজ্ঞান
    • Agrobiology – কৃষি-জীববিজ্ঞান
    • Agroecology – কৃষি-বাস্তুবিজ্ঞান
    • Agroforestry – কৃষি-অরণ্যবিজ্ঞান
    • Agronomy – শস্যবিজ্ঞান
    • Agrostology – তৃণবিজ্ঞান
    • Algal taxonomy‎ – শৈবাল শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Algology – সমুদ্রশৈবালবিজ্ঞান
    • Anatomical pathology – শারীরস্থানীয় রোগবিজ্ঞান
    • Anatomy – শারীরস্থানবিজ্ঞান
    • Angiology – রক্তবাহবিজ্ঞান
    • Animal anatomy‎ – প্রাণী শারীরস্থান
    • Animal communication – প্রাণী যোগাযোগ
    • Animal developmental biology‎ – প্রাণী বিকাশমূলক জীববিজ্ঞান
    • Animal ecology‎ – প্রাণী বাস্তুবিজ্ঞান
    • Animal Genetics – প্রাণী বংশাণুবিজ্ঞান
    • Animal Genomics – প্রাণী বংশাণুসমগ্র বিজ্ঞান
    • Animal pathology – প্রাণী রোগবিজ্ঞান
    • Animal pharmacology – প্রাণী ঔষধবিজ্ঞান
    • Animal physiology – প্রাণী শারীরবিজ্ঞান
    • Animal taxonomy‎ – প্রাণী শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Anthology – পুষ্পবিজ্ঞান
    • Anthropometry‎ – নৃ-মিতি
    • Anthrozoology – নৃ-প্রাণীবিজ্ঞান
    • Apiculture – মৌমাছি চাষ বিজ্ঞান
    • Apiology – মৌমাছিবিজ্ঞান
    • applied biology – ফলিত জীববিজ্ঞান
    • applied botany – ফলিত উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • Applied genetics‎ – ফলিত বংশাণুবিজ্ঞান
    • applied microbiology – ফলিত অণুজীববিজ্ঞান
    • applied zoology – ফলিত প্রাণীবিজ্ঞান
    • Aquatic Biology – জলজ জীববিজ্ঞান
    • Aquatic ecology‎ – জলজ বাস্তুবিজ্ঞান
    • Arachnology – মাকড়সা-বর্গীয় কীটবিজ্ঞান
    • Araneology – মাকড়সাবিজ্ঞান
    • Arboriculture – বৃক্ষচাষবিজ্ঞান
    • Arthrology – অস্থিসন্ধিবিজ্ঞান
    • Arthropodology – সন্ধিপদী বিজ্ঞান
    • Aschelitinthology – গোলকৃমিবিজ্ঞান
    • Astro microbiology – নভো অণুজীববিজ্ঞান
    • Astrobiology – নভোজীববিজ্ঞান
    • Astrobotany – নভোউদ্ভিদবিজ্ঞান

    B

    • Bacterial genetics‎ – ব্যাকটেরিয়ার বংশাণুবিজ্ঞান
    • Bacteriology – ব্যাকটেরিয়া বিজ্ঞান
    • Batology – কাঁটাগুল্মবিজ্ঞান
    • Batrachology – উভচরবিজ্ঞান
    • Behavioral ecology – আচরণীয় বাস্তুবিজ্ঞান
    • Behavioral neuroscience – আচরণীয় স্নায়ুবিজ্ঞান
    • behavioural biology – আচরণীয় জীববিজ্ঞান
    • Behavioural genetics – আচরণীয় বংশাণুবিজ্ঞান
    • Biochemistry – প্রাণরসায়ন
    • biodiversity conservation – জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ
    • Bioelectrochemistry‎ – জৈব-বৈদ্যুতিক রসায়ন
    • Bioelectromagnetics‎ – জৈব-বৈদ্যুতিক চৌম্বকবিজ্ঞান
    • Bioengineering – জৈব প্রকৌশল
    • Biogeography – জীব-ভূগোল
    • Biogerontology‎ – জৈব-বার্ধক্যবিজ্ঞান
    • Bioinformatics – জৈব তথ্যবিজ্ঞান
    • Bioinorganic chemistry‎ – জৈব অজৈব রসায়ন
    • Biological anthropology – জীববৈজ্ঞানিক নৃবিজ্ঞান
    • Biological Oceanography – জীববৈজ্ঞানিক সমুদ্রবিজ্ঞান
    • Biological Systematics – জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবদ্ধবিজ্ঞান
    • Biology – জীববিজ্ঞান
    • Biomathematics – জৈব গণিত
    • Biomechanics – জৈব বলবিজ্ঞান
    • Biomechatronics – জীবসদৃশ ইলেকট্রনীয় যন্ত্রকৌশল
    • Biomedical science – জৈব চিকিৎসা বিজ্ঞান
    • Biomedicine‎ – জৈব চিকিৎসাবিজ্ঞান
    • Biometrics – জীবমিতি
    • Biometry – জীবমিতি
    • biomolecular science – জৈব অণু বিজ্ঞান
    • Biomusicology – জীবসঙ্গীতবিজ্ঞান
    • Bionics‎ – জীব-সদৃশ যন্ত্রকৌশল
    • Biophysics – জৈব পদার্থবিজ্ঞান
    • Biopsychology – জৈব মনোবিজ্ঞান
    • Biostatistics – জৈব পরিসংখ্যান
    • Biotechnology – জৈব প্রযুক্তি
    • Botany – উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • Brain anatomy‎ – মস্তিষ্ক শারীরস্থান
    • Bryology – মসবর্গীয় উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • Bryozoology‎ – মসবর্গীয় প্রাণীবিজ্ঞান

    C

    • Cancer biology – কর্কটরোগ জীববিজ্ঞান
    • Cancer pathology‎ – কর্কটরোগবিজ্ঞান
    • Carcinology – কবচীবিজ্ঞান
    • Cardiology – হৃদবিজ্ঞান
    • Cardiovascular physiology‎ – হৃৎ-রক্তসংবহন শারীরবিজ্ঞান
    • Cardiovascular Science – হৃৎ-রক্তসংবহন বিজ্ঞান
    • Cell anatomy – কোষ শারীরস্থান বিজ্ঞান
    • Cell biology – কোষবিজ্ঞান
    • Cell Physiology – কোষ শারীরবিজ্ঞান
    • cell zoology – কোষীয় প্রাণীবিজ্ঞান
    • Cellular biology – কোষবিজ্ঞান
    • Cellular microbiology – কোষীয় অণুজীববিজ্ঞান
    • Cellular neuroscience – কোষীয় স্নায়ুবিজ্ঞান
    • Cetology – তিমিবর্গীয় প্রাণীবিজ্ঞান
    • Cheloniology – কচ্ছপবিজ্ঞান
    • Chemical biology – রাসায়নিক জীববিজ্ঞান
    • Chemical ecology‎ – রাসায়নিক বাস্তুবিজ্ঞান
    • Chemical pathology‎ – রাসায়নিক রোগবিজ্ঞান
    • Chemotaxonomy / biochemical systematics – জৈবরাসায়নিক শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Chondriology – তরুণাস্থিবিজ্ঞান
    • Chromatology – বর্ণবিজ্ঞান
    • Chronobiology – কাল-জীববিজ্ঞান
    • Cladistics – পূর্বজাতীয় সম্পর্কমূলক শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Clinical genetics – রোগীসংশ্লিষ্ট বংশাণুবিজ্ঞান
    • Clinical pathology – রোগীসংশ্লিষ্ট রোগবিজ্ঞান
    • Cnidarian biology‎ – নিডারিয়া জীববিজ্ঞান
    • Cnidology – নিডারিয়াবিজ্ঞান
    • Cognitive biology – জ্ঞানীয় জীববিজ্ঞান
    • Cognitive neuroscience – জ্ঞানীয় স্নায়ুবিজ্ঞান
    • Coleopterology – গুবরেপোকা বিজ্ঞান
    • community ecology – সম্প্রদায় বাস্তুবিজ্ঞান
    • Comparative anatomy – তুলনামূলক শারীরস্থান বিজ্ঞান
    • comparative pathology – তুলনামূলক রোগবিজ্ঞান
    • Computational anatomy‎ – গণনামূলক শারীরস্থান
    • Computational biology – গণনামূলক জীববিজ্ঞান
    • Computational neuroscience – গণনামূলক স্নায়ুবিজ্ঞান
    • Computational phylogenetics‎ – গণনামূলক জাতিজনিবিজ্ঞান
    • Conchology – শঙ্খাবিজ্ঞান
    • Conservation biology – সংরক্ষণমূলক জীববিজ্ঞান
    • Craniology – খুলিবিজ্ঞান
    • Crustaceology – কবচীবিজ্ঞান
    • Cryobiology – হিম-জীববিজ্ঞান
    • Cryptozoology‎ – গুপ্তপ্রাণীবিজ্ঞান
    • Crystallography‎ – কেলাসবিজ্ঞান
    • Ctetology – অর্জিত জীববৈশিষ্ট্য বিজ্ঞান
    • Cytogenetics – কোষীয় বংশাণুবিজ্ঞান
    • Cytology – কোষবিজ্ঞান
    • Cytopathology‎ – কোষীয় রোগবিজ্ঞান
    • Cytotaxonomy – কোষীয় শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান

    D

    • Dendrochronology – বৃক্ষকালানুক্রম বিজ্ঞান
    • Dendrology – বৃক্ষ ও গুল্মবিজ্ঞান
    • Dermatology – চর্মবিজ্ঞান
    • Dermatopathology – চর্মরোগবিজ্ঞান
    • Deuterostome zoology‎ – দ্বিতীয়মুখ প্রাণীবিজ্ঞান
    • Developmental biology – বিকাশমূলক জীববিজ্ঞান
    • Developmental neuroscience – বিকাশমূলক স্নায়ুবিজ্ঞান
    • Dietetics – পথ্যবিজ্ঞান

    E

    • Ecobiology – বাস্তু জীববিজ্ঞান
    • Ecological economics‎ – বাস্তুবৈজ্ঞানিক অর্থশাস্ত্র
    • Ecological genetics‎ – বাস্তুবৈজ্ঞানিক বংশাণুবিজ্ঞান
    • Ecology – বাস্তুবিজ্ঞান
    • Economic botany – অর্থনৈতিক উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • ecotoxicology – বাস্তুবিষক্রিয়াবিজ্ঞান
    • Electrophysiology‎ – বৈদ্যুতিক শারীরবিজ্ঞান
    • Embryology – ভ্রূণবিজ্ঞান
    • Endocrinology – অন্তঃক্ষরা বিজ্ঞান
    • Entomology – কীটপতঙ্গ বিজ্ঞান
    • Environmental Biology – পরিবেশ জীববিজ্ঞান
    • Environmental microbiology – পরিবেশ অণুজীববিজ্ঞান
    • Environmental Toxicology – পরিবেশ বিষক্রিয়াবিজ্ঞান
    • Enzymology – উৎসেচকবিজ্ঞান
    • Epidemiology – রোগবিস্তার বিজ্ঞান
    • Epigenetics – অনুজনন বিজ্ঞান
    • Ethnobiology – জাতি-জীববিজ্ঞান
    • Ethnobotany – জাতি-উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • Ethnoecology – জাতি-বাস্তুবিজ্ঞান
    • Ethnology – জাতিবিজ্ঞান
    • Ethnozoology – জাতি-প্রাণীবিজ্ঞান
    • Ethology – প্রাণী আচরণ বিজ্ঞান
    • Etiology – নিদানবিজ্ঞান
    • Eugenics – সুপ্রজননবিজ্ঞান
    • Eukaryote genetics‎ – সুকেন্দ্রিক জীবের বংশাণুবিজ্ঞান
    • Eukaryote morphology‎ – সুকেন্দ্রিক জীবের অঙ্গসংস্থান
    • Eukaryote taxonomy‎ – সুকেন্দ্রিক জীবের শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Eukaryotic microbiology‎ – সুকেন্দ্রিক জীবের অণুজীববিজ্ঞান
    • Euphenics – সুবহির্বিজ্ঞান
    • Euthenics – সুজীবনবিজ্ঞান
    • Evolution – বিবর্তন
    • Evolutionary biology – বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞান
    • Evolutionary developmental biology – বিবর্তনীয় বিকাশমূলক জীববিজ্ঞান
    • Evolutionary dynamics‎ – বিবর্তনীয় গতিবিজ্ঞান
    • Evolutionary ecology‎ – বিবর্তনীয় বাস্তুবিজ্ঞান
    • Evolutionary game theory‎ – বির্বতনীয় ক্রীড়া তত্ত্ব
    • Evolutionary microbiology – বিবর্তনীয় অণুজীববিজ্ঞান
    • Evolutionary neuroscience‎ – বিবর্তনীয় স্নায়ুবিজ্ঞান
    • Evolutionary psychology – বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান
    • Evolutionary taxonomy – বিবর্তনীয় শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Exercise physiology – শরীরচর্চা শারীরবিজ্ঞান
    • Exobiology – মহাকাশ জীববিজ্ঞান
    • Experimental pathology – পরীক্ষামূলক রোগবিজ্ঞান
    • Eye anatomy‎ – চক্ষু শারীরস্থান

    F

    • Fisheries science‎ – মৎস্যপালন বিজ্ঞান
    • Floriculture – পুষ্প উদ্ভিদ চাষ
    • Floristics – উদ্ভিদ বিতরণ বিজ্ঞান
    • Food chemistry‎ – খাদ্য রসায়ন
    • Food microbiology – খাদ্য অণুজীববিজ্ঞান
    • Food science – খাদ্য বিজ্ঞান
    • Foodservice Systems Administration/Management – খাদ্যসেবা ব্যবস্থা প্রশাসন
    • Forensic anthropology‎ – আদালতি নৃবিজ্ঞান
    • Forensic entomology – আদালতি কীটপতঙ্গবিজ্ঞান
    • Forensic genetics‎ – আদালতি বংশাণুবিজ্ঞান
    • Forensic pathology – আদালতি রোগবিজ্ঞান
    • Forest ecology‎ – অরণ্য বাস্তুবিজ্ঞান
    • Forestry – অরণ্যবিজ্ঞান
    • freshwater biology – মিঠাপানির জীববিজ্ঞান
    • Freshwater ecology‎ – মিঠাপানির বাস্তুবিজ্ঞান
    • Fungal morphology and anatomy‎ – ছত্রাক অঙ্গসংস্থান ও শারীরস্থান

    G

    • genetic engineering – বংশাণু প্রকৌশল
    • Genetic epidemiology‎ – বংশাণুভিত্তিক রোগবিস্তারবিজ্ঞান
    • Genetic genealogy‎ – বংশাণুভিত্তিক কুলজিবিজ্ঞান
    • Genetics – বংশাণুবিজ্ঞান
    • Genomics – বংশাণুসমগ্রবিজ্ঞান
    • Geobiology‎ – ভূ-জীববিজ্ঞান
    • Geobotany – ভূ-উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • Geomicrobiology – ভূ-অণুজীববিজ্ঞান
    • Geriatrics – জরাবিজ্ঞান
    • Gerontology – বার্ধক্যবিজ্ঞান
    • Glycobiology‎ – শর্করা জীববিজ্ঞান
    • Gynaecology – স্ত্রীরোগবিজ্ঞান

    H

    • Helminthology – কৃমিবিজ্ঞান
    • Hematology – রক্তবিজ্ঞান
    • Hematopathology – রক্তরোগবিজ্ঞান
    • Hepatology – যকৃৎবিজ্ঞান
    • Herpetology – সরীসৃপবিজ্ঞান
    • Histochemistry – কলারসায়নশাস্ত্র
    • Histology – কলাবিজ্ঞান
    • Histopathology – কলারোগবিজ্ঞান
    • Horticulture – উদ্যানপালন বিজ্ঞান
    • Human anatomy – মানব শারীরস্থান বিজ্ঞান
    • Human behavioral ecology – মানব আচরণীয় বাস্তুবিজ্ঞান
    • Human biology – মানব জীববিজ্ঞান
    • Human ecology – মানব বাস্তুবিজ্ঞান
    • human genetics – মানব বংশাণুবিজ্ঞান
    • Human Genomics – মানব বংশাণুসমগ্র বিজ্ঞান
    • Human mitochondrial genetics‎ – মানব মাইটোকন্ড্রিয়াজাত বংশাণুবিজ্ঞান
    • Human pathology – মানব রোগবিজ্ঞান
    • Human pharmacology – মানব ঔষধবিজ্ঞান
    • Human physiology – মানব শারীরবিজ্ঞান
    • Human population genetics‎ – মানব জনসমষ্টিমূলক বংশাণুবিজ্ঞান
    • Hypnology – নিদ্রাবিজ্ঞান

    I

    • Ichnology – জীবাশ্ম পদচিহ্নবিজ্ঞান
    • Ichthyology – মৎস্যবিজ্ঞান
    • Immunology – অনাক্রম্যবিজ্ঞান
    • Industrial microbiology – শিল্প অণুজীববিজ্ঞান
    • Insular ecology‎ – দ্বৈপ বাস্তুবিজ্ঞান
    • Invertebrate zoology – অমেরুদণ্ডী প্রাণীবিজ্ঞান

    K

    • Kalology – মানব সৌন্দর্য বিজ্ঞান
    • Karyology – কোষকেন্দ্রবিজ্ঞান
    • Kinesiology – পেশীচালনা বিজ্ঞান

    L

    • Landscape ecology – ভূদৃশ্য বাস্তুবিজ্ঞান
    • Lepidopterology – শল্কপক্ষ পতঙ্গবিজ্ঞান
    • Lichenology – লাইকেনবিজ্ঞান
    • Limnology – মিঠাপানির জীববিজ্ঞান
    • Linnaean taxonomy – লিনীয় শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Lipidology – স্নেহপদার্থবিজ্ঞান
    • Lymphatic pathology‎ – লসিকা রোগবিজ্ঞান

    M

    • Malacology – কম্বোজবিজ্ঞান
    • Mammalogy – স্তন্যপায়ী বিজ্ঞান
    • Marine biology – সামুদ্রিক জীববিজ্ঞান
    • Marine botany – সামুদ্রিক উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • marine zoology – সামুদ্রিক প্রাণীবিজ্ঞান
    • Mastology – স্তনবিজ্ঞান
    • Mathematical biology – গাণিতিক জীববিজ্ঞান
    • medical biochemistry – চিকিৎসা প্রাণরসায়ন
    • Medical Genetics – চিকিৎসা বংশাণুবিজ্ঞান
    • Medical microbiology – চিকিৎসা অণুজীববিজ্ঞান
    • Medicinal chemistry‎ – ঔষধীয় রসায়ন
    • Medicinal radiochemistry‎ – ঔষধীয় তেজস্ক্রিয় রসায়ন
    • Medicine‎ – চিকিৎসাবিজ্ঞান
    • Melanology – রঞ্জকবিজ্ঞান
    • Melittology – মৌমাছিবিজ্ঞান
    • Membrane biology‎ – ঝিল্লি জীববিজ্ঞান
    • metabolic biochemistry – বিপাকীয় প্রাণরসায়ন
    • Metabolomics – বিপাকীয় পদার্থসমগ্র বিজ্ঞান
    • Microbial and Eukaryotic Genetics – জীবাণু ও সুকেন্দ্রিক বংশাণুবিজ্ঞান
    • Microbial biotechnology – জীবাণুভিত্তিক জৈবপ্রযুক্তি
    • Microbial cytology – জীবাণু কোষবিজ্ঞান
    • Microbial ecology – জীবাণু বাস্তুবিজ্ঞান
    • Microbial genetics – জীবাণু বংশাণুবিজ্ঞান
    • Microbial physiology – জীবাণু শারীরবিজ্ঞান
    • Microbial population biology‎ – জীবাণু জনসমষ্টি জীববিজ্ঞান
    • Microbial systematics – জীবাণু শ্রেণীবন্ধনবিজ্ঞান
    • Microbial taxonomy – জীবাণু শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Microbiology – অণুজীববিজ্ঞান
    • Mitochondrial genetics‎ – মাইটোকন্ড্রিয়া বংশাণুবিজ্ঞান
    • Molecular Biochemistry – আণবিক প্রাণরসায়ন
    • Molecular biology – অণুপ্রাণবিজ্ঞান
    • Molecular Biophysics – আণবিক জৈব পদার্থবিজ্ঞান
    • Molecular genetics – আণবিক বংশাণুবিজ্ঞান
    • Molecular microbiology – আণবিক অণুজীববিজ্ঞান
    • Molecular neuroscience  – আণবিক স্নায়ুবিজ্ঞান
    • Molecular pathology – আণবিক রোগবিজ্ঞান
    • Molecular Pharmacology – আণবিক ঔষধবিজ্ঞান
    • Molecular Physiology – আণবিক শারীরবিজ্ঞান
    • Molecular Toxicology – আণবিক বিষক্রিয়াবিজ্ঞান
    • Molecular virology – আণবিক ভাইরাসবিজ্ঞান
    • Montane ecology‎ – পার্বত্য বাস্তুবিজ্ঞান
    • Morphology – অঙ্গসংস্থানবিজ্ঞান
    • Mycology – ছত্রাকবিজ্ঞান
    • Myriapodology – বহুপদীবিজ্ঞান
    • Myrmecology – পিপীলিকাবিজ্ঞান

    N

    • Nano microbiology – ন্যানো অণুজীববিজ্ঞান
    • Nanobiotechnology – ন্যানো জৈবপ্রযুক্তি
    • Nematology – গোলকৃমিবিজ্ঞান
    • Neonatology – নবজাতকবিজ্ঞান
    • Nephrology – বৃক্কবিজ্ঞান
    • Neural engineering‎ – স্নায়বিক প্রকৌশল
    • Neuroanatomy – স্নায়বিক শারীরস্থান
    • Neurobiology – স্নায়বিক জীববিজ্ঞান
    • Neurochemistry‎ – স্নায়ু রসায়ন
    • Neuroeconomics‎ – স্নায়ু অর্থশাস্ত্র
    • Neuroendocrinology – স্নায়বিক অন্তঃক্ষরাবিজ্ঞান
    • Neuroethology – স্নায়বিক প্রাণী আচরণ বিজ্ঞান
    • Neurohistology‎ – স্নায়বিক কলাবিজ্ঞান
    • Neuroimmunology – স্নায়বিক অনাক্রম্যবিজ্ঞান
    • Neuroinformatics‎ – স্নায়বিক তথ্যবিজ্ঞান
    • Neurolinguistics‎ – স্নায়ু-ভাষাবিজ্ঞান
    • Neurology – স্নায়ুরোগবিজ্ঞান
    • Neuropathology‎ – স্নায়ুরোগবিজ্ঞান
    • Neuropharmacology – স্নায়বিক ঔষধবিজ্ঞান
    • Neurophysics – স্নায়বিক পদার্থবিজ্ঞান
    • Neurophysiology – স্নায়বিক শারীরবিজ্ঞান
    • Neuropsychology – স্নায়বিক মনোবিজ্ঞান
    • Neuroscience – স্নায়ুবিজ্ঞান
    • Nidology – নীড়বিজ্ঞান
    • Nosology – রোগ শ্রেণীবিন্যাস বিজ্ঞান
    • Nutrition – পুষ্টিবিজ্ঞান

    O

    • Odontology – দন্ত ও মাড়িবিজ্ঞান
    • Olericulture – ভোজ্য উদ্ভিদপালন বিজ্ঞান
    • Oncology – কর্কটরোগবিজ্ঞান
    • Oneirology – স্বপ্নবিজ্ঞান
    • Ontogeny – ভ্রূণজনিবিজ্ঞান
    • Oology – পক্ষীডিম্ববিজ্ঞান
    • Ophiology – সর্পবিজ্ঞান
    • Ophthalmology – চক্ষুবিজ্ঞান
    • oral pathology – মৌখিক রোগবিজ্ঞান
    • Orchidology – রাস্নাগোত্রীয় উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • Organic chemistry – জৈব রসায়ন
    • Organocology – ভ্রূণীয় অঙ্গবিকাশ বিজ্ঞান
    • Organology – অঙ্গবিজ্ঞান
    • Ornithology – পক্ষীবিজ্ঞান
    • Orthopterology – ঘাসফড়িংবিজ্ঞান
    • Osteology – অস্থিবিজ্ঞান
    • Osteomyoarthrology – অস্থি-পেশী-সন্ধিবিজ্ঞান
    • Otorhinolaryngology – নাসিকা-কর্ণ-স্বরযন্ত্র বিজ্ঞান

    P

    • Paedology – শূককীটবিজ্ঞান
    • Palaeobotany – উদ্ভিদ জীবাশ্মবিজ্ঞান
    • Palaeozoology – প্রাণী জীবাশ্মবিজ্ঞান
    • Paleoanthropology – পুরা-নৃবিজ্ঞান
    • Paleobiology – পুরাজীববিজ্ঞান
    • Paleontology – জীবাশ্মবিজ্ঞান
    • Paleopathology – জীবাশ্ম রোগবিজ্ঞান
    • Palynology – পরাগ ও রেণুবিজ্ঞান
    • Parasitology – পরজীবীবিজ্ঞান
    • Parazoology – স্পঞ্জবিজ্ঞান
    • Pathology – রোগবিজ্ঞান
    • Pathophysiology‎ – রোগ-শারীরবিজ্ঞান
    • Pedology – মৃত্তিকাবিজ্ঞান
    • Pharmaceutical microbiology – ঔষধনির্মাণ অণুজীববিজ্ঞান
    • Pharmacogenetics – ঔষধ বংশাণুবিজ্ঞান
    • Pharmacognosy – ভেষজ ঔষধবিজ্ঞান
    • Pharmacology – ঔষধবিজ্ঞান
    • Pharming – জৈব ঔষধ প্রকৌশল
    • Phenology – আবির্ভাবকাল বিজ্ঞান
    • Phenomics‎ – বাহ্যসত্তা বিজ্ঞান
    • Photobiology – আলোক জীববিজ্ঞান
    • Phycology – সমুদ্রশৈবালবিজ্ঞান
    • Phylogenetics – জাতিজনিবিজ্ঞান
    • Phylogeography – জাতিভূগোল বিজ্ঞান
    • Physiological ecology – শারীরবৈজ্ঞানিক বাস্তুবিজ্ঞান
    • Physiological Optics – শারীরবৈজ্ঞানিক আলোকবিজ্ঞান
    • Physiology – শারীরবিজ্ঞান
    • Phytochemistry – উদ্ভিদ রসায়ন
    • Phytogeography – উদ্ভিদ ভূগোলবিজ্ঞান
    • phytopathology – উদ্ভিদ রোগবিজ্ঞান
    • Phytosociology – উদ্ভিদ সম্প্রদায় বিজ্ঞান
    • Pisciculture – মৎস্যপালন বিজ্ঞান
    • Plains ecology‎ – সমভূমি বাস্তুবিজ্ঞান
    • Planktology – জলবাহিত জীবকণাবিজ্ঞান
    • Plant anatomy – উদ্ভিদ শারীরস্থান বিজ্ঞান
    • Plant biochemistry – উদ্ভিদ প্রাণরসায়ন
    • Plant biology – উদ্ভিদ বিজ্ঞান
    • Plant breeding – উদ্ভিদ সুপ্রজননবিজ্ঞান
    • plant cell science – উদ্ভিদকোষবিজ্ঞান
    • Plant ecology – উদ্ভিদ বাস্তুবিজ্ঞান
    • Plant evolution – উদ্ভিদ বিবর্তন
    • Plant evolutionary developmental biology – বিবর্তনীয় বিকাশমূলক উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • Plant genetics – উদ্ভিদ বংশাণুবিজ্ঞান
    • Plant Molecular Biology – আণবিক উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • Plant morphology – উদ্ভিদ অঙ্গসংস্থানবিজ্ঞান
    • Plant pathology – উদ্ভিদ রোগবিজ্ঞান
    • Plant physiology – উদ্ভিদ শারীরবিজ্ঞান
    • Plant systematics – উদ্ভিদ শ্রেণীবন্ধনবিজ্ঞান
    • Plant taxonomy  – উদ্ভিদ শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Platyhelminthology – চ্যাপ্টা কৃমি বিজ্ঞান
    • Pomology – ফলবিজ্ঞান
    • Population biology – সম্প্রদায় জীববিজ্ঞান
    • population ecology – সম্প্রদায় বাস্তুবিজ্ঞান
    • Population genetics – সম্প্রদায় বংশাণুবিজ্ঞান
    • Poultry – হাঁস-মুরগী পালন বিজ্ঞান
    • Predictive microbiology – পূর্বাভাসমূলক অণুজীববিজ্ঞান
    • Primatology – প্রাইমেট বিজ্ঞান
    • Proctology – পায়ুমলাশয়বিজ্ঞান
    • Prokaryotes taxonomy‎ – প্রাককেন্দ্রিক জীবের শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Proteomics – প্রোটিনসমগ্র বিজ্ঞান
    • Protistology – প্রোটিস্টবিজ্ঞান
    • Protostome biology‎ – প্রথম-মুখ জীববিজ্ঞান
    • Protozoology – আদ্যপ্রাণীবিজ্ঞান
    • Psychobiology – মনোজীববিজ্ঞান
    • Pteridology – ফার্নবর্গীয় উদ্ভিদবিজ্ঞান

    Q

    • Quantum biology – কোয়ান্টাম জীববিজ্ঞান

    R

    • Radiation Biology – বিকিরণ জীববিজ্ঞান
    • Radiobiology – বিকিরণ জীববিজ্ঞান
    • Rainology – নাসাবিজ্ঞান
    • Reconciliation ecology – সামঞ্জস্য বিধায়ক বাস্তুবিজ্ঞান
    • Regenerative biomedicine‎ – পুনরুৎপাদনী জৈবচিকিৎসাবিজ্ঞান
    • Renal physiology‎ – বৃক্কীয় শারীরবিজ্ঞান
    • Reproductive biology – জনন জীববিজ্ঞান
    • Reproductive ecology‎ – জনন বাস্তুবিজ্ঞান
    • Respiratory physiology‎ – শ্বাসযন্ত্রীয় শারীরস্থান
    • Rhodology – গোলাপবিজ্ঞান

    S

    • Sarcology – পেশীবিজ্ঞান
    • Saurology – টিকটিকি বিজ্ঞান
    • Sepentology – সর্পবিজ্ঞান
    • Sericulture – রেশমচাষ
    • Serology – রক্তরসবিজ্ঞান
    • Sexual anatomy‎ – যৌন শারীরস্থান
    • Silviculture – অরণ্যচাষবিজ্ঞান
    • Sitology – পথ্যবিজ্ঞান
    • Skin physiology‎ – চর্ম শারীরবিজ্ঞান
    • Sleep physiology‎ – নিদ্রা শারীরবিজ্ঞান
    • Sociobiology – সমাজ-জীববিজ্ঞান
    • Soil biology‎ – মৃত্তিকা জীববিজ্ঞান
    • Soil microbiology – মৃত্তিকা অণুজীববিজ্ঞান
    • Soil zoology – মৃত্তিকা প্রাণীবিজ্ঞান
    • Speciology – প্রজাতিবিজ্ঞান
    • speech pathology – বাক রোগবিজ্ঞান
    • Spermology – বীজবিজ্ঞান
    • Splanchnology – আন্তরযন্ত্র বিজ্ঞান
    • Sponge biology‎ – স্পঞ্জ জীববিজ্ঞান
    • Statistical genetics‎ – পরিসংখ্যানিক বংশাণুবিজ্ঞান
    • Stomatology – মুখবিজ্ঞান
    • Structural bioinformatics‎ – সাংগঠনিক জীবতথ্যবিজ্ঞান
    • Structural Biology – সাংগঠনিক জীববিজ্ঞান
    • surgical pathology – শল্য রোগবিজ্ঞান
    • Synantherology – তারকাগোত্রীয় উদ্ভিদবিজ্ঞান
    • Syndesmology – বন্ধনীবিজ্ঞান
    • Synecology – জীবসম্প্রদায় বাস্তুবিজ্ঞান
    • Synthetic biology – কৃত্রিম জীববিজ্ঞান
    • Systematic Biology – সাংস্থানিক জীববিজ্ঞান
    • Systematics – শ্রেণীবদ্ধবিজ্ঞান
    • Systems biology – সংস্থান জীববিজ্ঞান
    • Systems ecology‎ – সংস্থান বাস্তুবিজ্ঞান
    • Systems microbiology – সংস্থান অণুজীববিজ্ঞান
    • Systems neuroscience – সংস্থান স্নায়ুবিজ্ঞান

    T

    • Taxi dermatology – চর্মসংরক্ষণ বিজ্ঞান
    • Taximetrics / numerical taxonomy – শ্রেণীবিন্যাসমিতি
    • Taxonomy – শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Tectology – সাংগঠনিক অঙ্গসংস্থানবিজ্ঞান
    • Teratology – ভ্রূণ গঠন-বিকৃতি বিজ্ঞান
    • Teuthology – মস্তকপদী বিজ্ঞান
    • Theoretical Biology – তাত্ত্বিক জীববিজ্ঞান
    • Theoretical ecology‎ – তাত্ত্বিক বাস্তুবিজ্ঞান
    • Tissue engineering – কলা প্রকৌশল
    • Torpedology – চ্যাপ্টাদেহী মৎস্যবিজ্ঞান
    • Toxicology – বিষক্রিয়া বিজ্ঞান
    • transcriptomics – প্রতিলিপিসমগ্র বিজ্ঞান
    • Transgenics – বংশাণু স্থানান্তর বিজ্ঞান
    • Traumatology – আঘাতবিজ্ঞান
    • Trichology – কেশবিজ্ঞান
    • Trophic ecology‎ – ভক্ষণভিত্তিক বাস্তুবিজ্ঞান
    • Trophology – পুষ্টিবিজ্ঞান

    U

    • Urology – মূত্রবিজ্ঞান

    V

    • Vertebrate zoology – মেরুদণ্ডী প্রাণীবিজ্ঞান
    • Veterinary microbiology – পশুচিকিৎসা অণুজীববিজ্ঞান
    • Virology – ভাইরাস বিজ্ঞান
    • Virophysics – ভাইরাস পদার্থবিজ্ঞান
    • Virus taxonomy‎ – ভাইরাস শ্রেণীবিন্যাসবিজ্ঞান
    • Vision Science – দৃষ্টি বিজ্ঞান

    W

    • Water microbiology – জলীয় অণুজীববিজ্ঞান
    • Wildlife Biology – বণ্যপ্রাণী জীববিজ্ঞান

    X

    • Xenobiology – বিষম জীববিজ্ঞান

    Z

    • Zooarchaeology – প্রাণীপ্রত্নবিজ্ঞান
    • Zoogeography – প্রাণীভূগোল
    • Zoology – প্রাণীবিজ্ঞান
    • Zoophytology – উদ্ভিদ-সদৃশ প্রাণীবিজ্ঞান
    • Zoosemiotics – প্রাণী যোগাযোগ বিজ্ঞান
    • Zootomy – প্রাণী ব্যবচ্ছেদ বিজ্ঞান
    • Zymology – গাঁজনবিজ্ঞান
  • জীববিজ্ঞান

    জীববিজ্ঞান

    জীববিজ্ঞান (ইংরেজি: Biology) বিজ্ঞানের একটি শাখা যেখানে জীবজীবন সংক্রান্ত গবেষণা করা হয়। তাদের গঠন, বৃদ্ধি, বিবর্তন, শ্রেণীবিন্যাসবিদ্যার আলোচনাও এর অন্তর্ভুক্ত। আধুনিক জীববিজ্ঞান খুব বিস্তৃত একটি ক্ষেত্র, যেটির অনেক শাখা-উপশাখা আছে। আধুনিক জীববিজ্ঞান বলে, কোষ হচ্ছে জীবনের মূল একক, আর জিন হলো বংশগতিবিদ্যার মূল একক। আর বিবর্তন হলো একমাত্র প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে নতুন প্রজাতির জীব সৃষ্টি হয়।

    জীববিজ্ঞান

    কীসের উপর গবেষণা করা হচ্ছে, সে অনুযায়ী জীববিজ্ঞানের শাখাগুলোকে ভাগ করা হয়েছে; যেমন: জীবনের রসায়ন নিয়ে যে বিজ্ঞানে আলোচনা করা হয়, তাই হলো প্রাণরসায়ন বা জীবরসায়নউদ্ভিদবিজ্ঞান বা উদ্ভিদ-জীববিদ্যা হচ্ছে জীববিজ্ঞানের একটি শাখা যা জীবন্ত উদ্ভিদের বিষয়ে বৈজ্ঞানিক নিরীক্ষণ সংক্রান্ত কাজ করে থাকে[১]। আণবিক জীববিজ্ঞান শাখায় সমস্ত জীবিত বস্তুর প্রধানতম অণুসমূহ যথা নিউক্লিক অ্যাসিডপ্রোটিনের গঠন ও কাজ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। যে বিজ্ঞানে কোষ, কোষের আকার, প্রকৃতি, বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ গঠন, কোষবিভাজন ও শারীরবৃত্তীয় কাজ ইত্যাদি আলোচনা করা হ,য় তাকে কোষবিদ্যা বলে।[২]শারীরবিদ্যা শাখায় প্রাণিদেহের পুষ্টি, শ্বসন, ক্ষরণ, রেচন, জনন প্রভৃতি শারীরবৃত্তীয় কার্যাবলি আলোচনা করা হয়। বিবর্তনমূলক জীববিজ্ঞান একটি উপশাখা যেখানে প্রজাতির উৎপত্তি ও ক্রমবিবর্তন নিয়ে গবেষণা করা হয়। আর যেখানে জীবিত অর্গানিজমের বিস্তৃতি, বিন্যাস ও প্রাচুর্য এবং এসব অর্গানিজমের মধ্যে আন্তঃক্রিয়া ও পরিবেশের অন্যান্য উপাদানের সাথে এদের অন্তঃক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে পরিবেশ বিজ্ঞান বলে।

    জীববিজ্ঞানের উপ-শাখাগুলি নিযুক্ত গবেষণা পদ্ধতি এবং যে ধরনের পদ্ধতিতে অধ্যয়ন করা হয় তার উপর নির্ভর করে সংজ্ঞায়িত করা হয়। তাত্ত্বিক জীববিজ্ঞান গাণিতিক পদ্ধতি ব্যবহার করে পরিমাণগত মডেলগুলি গঠনের জন্য। অন্যদিকে পরীক্ষামূলক জীববিজ্ঞান প্রস্তাবিত তত্ত্বগুলির বৈধতা পরীক্ষা করার জন্য, জীবনের অন্তর্নিহিত প্রক্রিয়াগুলি বুঝার জন্য এবং কীভাবে অন্তর্নিহিত প্রক্রিয়াগুলি কাজ করে তা বোঝার জন্য অনুশীলনামূলক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। সেই সাথে কিভাবে জীবন তৈরি হল এবং ৪ বিলিয়ন বছর আগে থেকে শুরু হওয়া বিবর্তনের মাধ্যমে কিভাবে অজৈবনিক বস্তু থেকে জটিল ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমান জীবকুলের আবির্ভাব ঘটল তা পরীক্ষামূলক জীববিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়। [৩] [৪] [৫]

    ইতিহাস

    জীববিজ্ঞান এর পাশ্চাত্য প্রতিশব্দ Biology, যেটি দুটি গ্রিক শব্দ βίος(bios) যার অর্থ জীবন , এবং λογία(logia) যার অর্থ জ্ঞান থেকে এসেছে, প্রথম ১৮০০ সালে জার্মানিতে ব্যবহৃত হয় এবং পরবর্তীতে ফরাসি প্রকৃতিবিদ জঁ-বাতিস্ত দ্য লামার্ক জীবিত বস্তু সংক্রান্ত অনেকগুলি শাস্ত্রের ধারক নাম হিসেবে এটির প্রচলন করেন। পরবর্তীতে ইংরেজ প্রাণীবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ টমাস হেনরি হাক্সলি জীববিজ্ঞানকে একটি একত্রীকারক শাস্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। হাক্সলি জোর দিয়ে বলেন যে, উদ্ভিদপ্রাণী বিষয়ক শাস্ত্রের প্রথাগত বিভাজন অর্থহীন এবং সমস্ত জীবিত বস্তু একত্রে আলোচনা করা উচিত। হাক্সলির এই ধারণা আজ আরও বেশি করে প্রযোজ্য, কেননা বিজ্ঞানীরা বুঝতে পেরেছেন যে, অনেক নিম্ন স্তরের জীব প্রাণী বা উদ্ভিদ কোনোটাই নয়। বর্তমানে জীববিজ্ঞান আণবিক, কোষীয়, জীবদেহ ও জীবসংগ্রহ – এই চারটি মূল স্তরক্রমে বিভক্ত। জীববিজ্ঞান প্রাকৃতিক বিজ্ঞান এবং চিকিৎসা থেকে তার নিজস্ব একটি শৃঙ্খলার মাধ্যমে ১৯ শতকের মধ্যভাগে বিকশিত হয়েছিল। রসায়ন এবং পদার্থবিজ্ঞানের পাশাপাশি এটি এখন বিদ্যালয়ে সাধারণত বিজ্ঞানের উপর পাঠদান করা হয় তার মধ্যে একটি।[৬]

    অ্যান্টন ভ্যান লিয়ুভেনহয়েকের মাইক্রোস্কোপ আবিষ্কারের পর নাটকীয় উন্নতিতে জীববিজ্ঞানটি দ্রুত বিকাশ শুরু করে। এরপরেই পণ্ডিতগণ শুক্রাণু, ব্যাকটেরিয়া, ইনফুসোরিয়া এবং অণুবীক্ষণিক জীবনের বৈচিত্র্য আবিষ্কার করেছিলেন। জেন শাওয়ামারডাম কীটতত্ত্বে ব্যবচ্ছেদস্টেইনিং (অণুবীক্ষনিক জীব বোঝার জন্য স্যাম্পলকে ডাই এবং স্টেইনিং করার কৌশল) প্রথার মাধ্যমে নতুন আণুবীক্ষণিক মৌলিক কৌশল বিকশিত করতে সাহায্য করেছিলেন। [৭]

    মাইক্রোস্কোপির অগ্রগতিতে জীববিজ্ঞানে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে, বেশ কয়েকজন জীববিজ্ঞানী কোষের কেন্দ্রীয় গুরুত্বের দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন। এর পরে, ১৮৩৮ সালে, স্কীলডেন এবং সোয়ান এখন সার্বজনীন স্বীকৃত এমন ধারনার দুটি সেই সময় প্রচার করেছিলেন (১) প্রাণীর মৌলিক একক কোষ এবং (২) পৃথক কোষেই জীবন সব বৈশিষ্ট্য থাকে। কিন্তু একটি ধারণা তারা বিরোধিতা করেছিলেন (৩) সব কোষগুলি অন্যান্য কোষগুলির বিভাজন থেকে আসে। রবার্ট রেমাক এবং রুডল্ফ ভার্চোর কাজের জন্য ধন্যবাদ, তাদের কাজের জন্যই তৃতীয় ধারণাটি সফল হয়। ১৮৬০ এর দশকের মধ্যে বেশিরভাগ জীববিজ্ঞানীরাই তিনটি তত্ত্বকেই গ্রহণ করেছিলেন পরে যা কোষ তত্ত্ব হিসাবে পরিচিত লাভ করে। [৮] [৯]

    আধুনিক জীববিজ্ঞানের ভিত্তি

    আণবিক জীববিজ্ঞান

    আণবিক জীববিজ্ঞান, যাতে জীবপদার্থবিজ্ঞান ও জীবরসায়ন অন্তর্গত শাখা থেকে আধুনিক জীববিজ্ঞানের সবচেয়ে মৌলিক অবদানগুলি এসেছে। সমস্ত জীবিত বস্তুর প্রধানতম অণুসমূহ যথা নিউক্লিক অ্যাসিডপ্রোটিন-এর গঠন ও কাজ সম্পর্কে এখন আমরা অনেক কিছু জানি। বংশগতির কৌশল নির্ধারণ ছিল আধুনিক বিজ্ঞানের অন্যতম প্রধান আবিষ্কার। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হল কীভাবে জীবদেহের অণুগুলি বিপাক ক্রিয়া সম্পাদন করে জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি প্রক্রিয়া করে।

    কোষ জীববিজ্ঞান

    কোষ জীববিজ্ঞান বা কোষবিদ্যা আণবিক জীববিজ্ঞানের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। জীবিত বস্তুর কাঠামোগত একক কোষের কার্যপদ্ধতি বোঝার জন্য কোষ জীববিজ্ঞানীরা আণবিক পর্যায়ে কোষের বিভিন্ন অংশের গবেষণা করেন। জীবদেহ-সংক্রান্ত জীববিজ্ঞান, একইভাবে, কোষ জীববিজ্ঞানের সাথে জড়িত, কারণ একটি বহুকোষীয় জীব কীভাবে আচরণ করবে তা নির্ভর করে তার কোষগুলির কার্যাবলী ও এদের মধ্যকার মিথষ্ক্রিয়ার উপর। বহুকোষীয় জীবদেহের গবেষণার মধ্যে রয়েছে এগুলির বৃদ্ধি ও বিকাশ (বিকাশ জীববিজ্ঞান), এবং এগুলি কীভাবে কাজ করে (শারীরবিদ্যা)। এছাড়াও মস্তিষ্কস্নায়ুতন্ত্র সংক্রান্ত গবেষণা (স্নায়ুশারীরবিদ্যা) এবং প্রাণী আচরণ (ethology) গুরুত্বপূর্ণ।

    বিবর্তন

    diagram showing Natural selection favoring predominance of surviving mutation

    গাঢ় বর্ণের একটি জনসংখ্যার প্রাকৃতিক নির্বাচন

    জীববিজ্ঞানের একটি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক ধারণা হল বিবর্তনের মাধ্যমে জীবন পরিবর্তন হয় এবং বিকাশ লাভ করে এবং পরিচিত সমস্ত জীবন-রূপের একটি সাধারণ উত্স রয়েছে। বিবর্তন তত্ত্ব নির্দেশ করে যে, পৃথিবীতে সমস্ত জীব, জীবিত এবং বিলুপ্তপ্রায় উভয়ই একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ বা পৈত্রিক জিন পুল থেকে বিবর্তিত হয়েছে। সমস্ত জীবের এই সর্বজনীন সাধারণ পূর্বপুরুষ প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন বছর আগে আবির্ভূত হয়েছিল বলে বিশ্বাস করা হয়। [১০] জীববিজ্ঞানীরা জিনগত কোডকে সর্বব্যাপী সমস্ত ব্যাকটিরিয়া, আর্কিয়া এবং ইউক্যারিওটসের (দেখুন: জীবনের উৎস ) সর্বজনীন সাধারণ বংশোদ্ভূত তত্ত্বের পক্ষে যথাযথ প্রমাণ হিসাবে গণ্য করেন। [১১]

    “বিবর্তন” শব্দটি ১৯০৯ সালে জিন-ব্যাপটিস্ট ডি ল্যামার্ক দ্বারা বৈজ্ঞানিক অভিধানে প্রবর্তিত হয়েছিল, [১২] এবং পঞ্চাশ বছর পরে চার্লস ডারউইন বিবর্তনের চালিকা শক্তি হিসাবে প্রাকৃতিক নির্বাচনের বৈজ্ঞানিক মডেল পেশ করেছিলেন। [১৩] [১৪] [১৫] (আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেস বিবর্তনের ধারণাটি নিয়ে গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সহায়তা করার কারণে এই ধারণার সহ-আবিষ্কারক হিসাবে স্বীকৃত হন।) [১৬] বিবর্তনটি এখন পৃথিবীতে প্রাপ্ত জীবনের বিস্তর পরিবর্তনগুলি ব্যাখ্যা করতে ব্যবহৃত হয়।

    ডারউইন তার তত্ত্বে বলেছেন যে, প্রাকৃতিক নির্বাচন বা নির্বাচনী প্রজনন প্রক্রিয়াগুলোর মাধ্যমে কোনো একটি প্রজাতি বৃদ্ধি পায় বা মারা যায়। [১৭] তত্ত্বের আধুনিক সংশ্লেষণে জেনেটিক ড্রিফটকে বিবর্তনীয় বিকাশের অতিরিক্ত প্রক্রিয়া হিসাবে গ্রহণ করা হয়েছে। [১৮]

    শক্তি

    জীবিত জীবের বেঁচে থাকা নির্ভর করে শক্তির অবিচ্ছিন্ন সরবরাহের উপর। জীবের শরীরস্থ রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া যা এর গঠন এবং কার্যকারিতার জন্য দায়ী সেই রাসায়নিকগুলো তার খাদ্য হিসাবে যে পদার্থগুলি গ্রহণ করা হয় তা থেকে শক্তি আহরণ করে। ঐ শক্তিকে রূপান্তর করে নতুন কোষ গঠনে সহায়তা করে এবং তাদের স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। এই প্রক্রিয়াতে, রাসায়নিক পদার্থের অণুগুলি যা খাদ্য গঠন করে তা দুটি ভূমিকা পালন করে; প্রথমত, এগুলিতে এমন একটি শক্তি রয়েছে যা জীবের জৈবিক কাজে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় রূপান্তর করা যায় ও পুনর্ব্যবহার করতে পারে; দ্বিতীয়ত, খাদ্যটি নতুন অণু কাঠামোতে (বায়োমোলিকুলস) রূপান্তরিত হতে পারে যা সেই জীবের জন্য ব্যবহারযোগ্য ও উপকারী।

    একটি বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে শক্তি প্রদানকারী জীবগুলি নির্মাতা বা অটোট্রোফ হিসাবে পরিচিত। এ জাতীয় প্রায় সমস্ত জীবই মূলত সূর্য থেকে তাদের শক্তি আহরণ করে। [১৯] গাছপালা এবং অন্যান্য ফোটোট্রফগুলি সৌর শক্তি ব্যবহার করে সালোকসংশ্লেষণ নামে পরিচিত একটি প্রক্রিয়ায় সংগৃহিত কাঁচামালকে জৈব রেণুগুলিতে রূপান্তরিত করে যেমন এটিপি, যার বন্ডগুলি শক্তি যোগানোর জন্য সহজেই ভাঙ্গা যেতে পারে। [২০] কেমোট্রফ নামক অন্য কিছু জীব রয়েছে যারা ইকোসিস্টেমগুলিতে বেচে থাকার জন্য পুরোপুরি মিথেন, সালফাইডস বা অন্যান্য অ- লুমিনাল শক্তি উৎস থেকে আহরিত শক্তির উপর নির্ভর করে। [২১]

    জীবসমষ্টি জীববিজ্ঞান

    জীবসমষ্টি জীববিজ্ঞান ১৯৭০-এর দশকে এসে জীববিজ্ঞানের একটি অন্যতম প্রধান শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই শাখার কেন্দ্রীয় শাস্ত্র হল বিবর্তনমূলক জীববিজ্ঞান, যাতে বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের অবদান বহুদিন পরে যথাযথ মর্যাদা পায়।

    জীবসমষ্টি বংশগতিবিদ্যা (Population genetics), যেখানে জীবসমষ্টিগুলির ভেতরে জীনের পরিবর্তন গবেষণা করা হয়, এবং বাস্তুবিজ্ঞান, যেখানে প্রাকৃতিক আবাসস্থলে জীবসমষ্টির আচরণ গবেষণা করা হয়, ১৯৩০-এর দশক থেকে শাস্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। এই দুইটি শাস্ত্র ১৯৬০-এর দশকে জীবসমষ্টি জীববিজ্ঞান নামের এক দ্রুত বর্ধনশীল নতুন শাস্ত্র গঠন করে। এদের সাথে সম্পর্কিত একটি নতুন প্রাণী-আচরণ বিষয়ক শাস্ত্র হচ্ছে সমাজজীববিজ্ঞান, যেখানে প্রাণীদের মধ্যকার সামাজিক মেলামেশা এদের জীনের উপর কতটা প্রভাব ফেলে তার উপর গবেষণা করা হয়।

    জীবপ্রযুক্তি জীববিজ্ঞানের একটি আধুনিক ও প্রয়োগমুখী শাখা।
    জীববিজ্ঞানে মানুষের উপরও আণবিক, কোষীয় ও দৈহিক পর্যায়ে গবেষণা করা হয়। এই জ্ঞান মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নতি ও সুরক্ষার কাজে চিকিৎসাশাস্ত্রে কাজে লাগানো হয়। রীতি অনুযায়ী মানুষদেরকে সাধারণত জীববিজ্ঞানের আওতায় ধরা হয় না। নৃবিজ্ঞান ও অন্যান্য সামাজিক বিজ্ঞানে মানুষের বিভিন্ন দিক আলোচনা করা হয়।

    জীববিজ্ঞানের প্রাথমিক অমীমাংসিত সমস্যা

    জীবনের মৌলিক প্রক্রিয়াগুলি সম্পর্কে আমাদের বোঝার ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক দশকগুলিতে গভীর অগ্রগতি সত্ত্বেও, কিছু প্রাথমিক সমস্যা অমীমাংসিত রয়ে গেছে। কিছু উদাহরণঃ

    জীবনের উৎসঅ্যামিনো অ্যাসিড, নিউক্লিওটাইডস এবং লিপিডের মতো জৈবিক যৌগগুলির অভিজাত উৎস সম্পর্কে খুব ভালো প্রমাণ পাওয়া গেলেও এই অণুগুলি প্রথম কোষগুলি কীভাবে তৈরি করেছিল তা মূলত অস্পষ্ট। এরই সাথে সম্পর্কিত আরেকটি প্রশ্ন হল মহাশূন্যে প্রাণের অস্তিত্ব। যদি আমরা বুঝতে পারি যে, পৃথিবীতে জীবন কীভাবে উদ্ভূত হয়েছিল, তবে আমরা আরও নির্ভরযোগ্যভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারি যে, অন্যান্য গ্রহে জীবন উৎপন্ন করার জন্য কোন কোন শর্তগুলি পূরণ হওয়া প্রয়োজন।

    বয়স বৃদ্ধি – বর্তমানে বয়স বাড়ার অন্তর্নিহিত কারণ সম্পর্কে সঠিক তথ্য নেই। বয়স বৃদ্ধি নিয়ে থিওরিতে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক তত্ত্ব দেখা যায়।

    নির্দিষ্ট ধরন গঠনআমাদের প্রাথমিক পর্যায়ে পোকামাকড় ভ্রূণের মতো কিছু সিস্টেমে ধরন গঠনের একটি ভাল ধারণা রয়েছে তবে প্রকৃতির অনেকগুলি প্রজন্মের জীববৈচিত্র্যের কারণ সহজেই ব্যাখ্যা করা যায় না, যেমন: জেব্রার শরীরে ডোরাকাটাগুলো বা অনেক সাপ যেমন- প্রবাল সাপ । যদিও আমরা জানি যে নিদর্শনগুলি নির্বাচনী অ্যাক্টিভেশন বা জিনের দমন দ্বারা উৎপাদিত হয়েছে, এর মধ্যে অনেকগুলি জিন এবং তাদের নিয়ন্ত্রক প্রক্রিয়া অজানা রয়ে গেছে।

    জীববিজ্ঞান ও দর্শন

    দার্শনিক তত্ত্ব যেমন- বহুকাল দর্শনের পরিধির মধ্যে রেখে জীববিজ্ঞানকে প্রভাবিত করেছে, অপরদিকে জীববিজ্ঞানের আধুনিক বিকাশ দর্শনকেও প্রভূত পরিমাণে প্রভাবান্বিত করেছে। বর্তমান জীবন সম্পর্কে দার্শনিক আলোচনা জীববিজ্ঞানের সিদ্ধান্তের স্বীকৃতির ভিত্তিতেই করা হয়। এছাড়া জীববিজ্ঞানের বিকাশ দর্শনের জন্য আলোচনার নতুনতর সমস্যাও সৃষ্টি করেছে। এ সমস্ত সমস্যার মধ্যে জীবদেহের সামগ্রিকতার সংগে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ব্যবহারগত সম্পর্কের সমস্যাটি অন্যতম। জীববিজ্ঞানের সিদ্ধান্ত হচ্ছে যে, একটি জীবনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে যে একটি পূর্ণ সত্তা তৈরি করে, সেই সত্তার বাইরে এই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের অনুরূপ ব্যবহার সৃষ্টি করা সম্ভব নয়। ইংরেজিতে এই সমস্যাকে Wholism-এর সমস্যা বলে আখ্যায়িত করা হয়।[২২]

    চিত্রশালা

    • এনিমেলিয়া
    • প্লান্টি
    • ফানজাই
    • Stramenopila/Chromista – Fucus serratus
    • ব্যাকটেরিয়া – Gemmatimonas aurantiaca (- = 1 Micrometer)
    • Archaea – Halobacteria
    • ভাইরাস – Gamma phage
  • বাস্তুবিজ্ঞান

    বাস্তুবিজ্ঞান

    বাস্তুবিদ্যা (ইংরেজি: Ecology) : জীববিজ্ঞানের যে বিশিষ্ট শাখায় পরিবেশে বিন্যস্ত বিভিন্ন জীব ও তার পারিপার্শ্বিক জড় উপাদান এবং তাদের পারস্পরিক আন্তঃক্রিয়া, নির্ভরশীলতা ও মিথস্ক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা করা হয় তাকে বাস্তুবিদ্যা বা ইকোলজি বলে।[১]

    বাস্তুবিজ্ঞান

    পরিবেশবিজ্ঞানের ইংরেজি পরিভাষা Ecology ইকোলজিগ্রিক οίκος, ওইকোস অর্থাৎ “বাসস্থান” এবং λόγος লোগোস অর্থাৎ “বিদ্যা” ইংরেজি Ecology পরিভাষাটি এসেছে। ইকোলজি শব্দটি জার্মান বিজ্ঞানী “আর্নস্ট হেকেল” ১৮৬৬ সালে সর্বপ্রথম প্রণয়ন করেন।

    The scientific discipline of ecology addresses the full scale of life, from tiny bacteria to processes that span the entire planet. Ecologists study many diverse and complex relations among species, such as predation and pollination. The diversity of life is organized into different habitats, from terrestrial (middle) to aquatic ecosystems.
  • বায়োজেনেসিস

    বায়োজেনেসিস

    একটি জীব থেকেই কেবল আরেকটি জীবের সৃষ্টি সম্ভব। এই তত্ত্বকেই বায়োজেনেসিস বলা হয়। এ ব্যাপারে ল্যাটিন ভাষায় একটি প্রবাদ আছে “জীবন থেকেই জীবনের উদ্ভব” লুইস পাস্তুরের পরীক্ষণ ও পর্যবেক্ষণ থেকে বায়োজেনেসিস মতবাদটি প্রতিষ্ঠিত হয়। অপরদিকে অ্যাবায়োজেনেসিস বায়োজেনেসিসের সম্পূর্ণ বিপরীত। অর্থাৎ অ্যাবায়োজেনেসিস অনুসারে জড় থেকে জীবের সৃষ্টি সম্ভব।

    বায়োজেনেসিস

    বায়োজেনেসিস শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন হেনরি চার্লটন বাস্তিয়ান। কিন্তু তিনি বায়োজেনেসিস বলতে জড় থেকে জীব সৃষ্টির পদ্ধতিকে বুঝিয়েছিলেন। পরে থমাস হাক্সলি জড় থেকে জীব সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে অ্যাবায়োজেনেসিস বলে অবিহিত করেন। তিনি বায়োজেনেসিসের সংজ্ঞা পুনর্গঠন করেন। তিনি একটি জীব থেকে নতুন জীব সৃষ্টির পদ্ধতিকে বায়োজেনেসিস বলেন।[১] মহাবিশ্বের ইতিহাসে,[২] এক বার অ্যাবায়োজেনেসিস হয়েছে এবং সেটি ছিল প্রথম প্রাণ সৃষ্টির সময়।[৩][৪][৫]

    প্রাচীন গ্রীকরা বিশ্বাস করত জড় বস্তু থেকে জীবের সৃষ্টি সম্ভব। তারা বিশ্বাস করত গায়া দেবী পাথর থেকে জীবন সৃষ্টি করতে পারেন, এই পদ্ধতিটি ‘জেনেরিও স্পন্টানায়ি’ নামে পরিচিত ছিল। এরিস্টটল এটি না মানলেও তিনি বিশ্বাস করতেন অন্য ধরনের জীব কিংবা মাটি থেকে নতুন জীবের সৃষ্টি সম্ভব। এই স্বতঃস্ফূর্ত সৃষ্টি বা অ্যাবায়োজেনেসিস তত্ত্ব সপ্তদশ শতাব্দীর শেষ ভাগ পর্যন্ত টিকে ছিল। কিন্তু ১৭দশ শতাব্দীর শেষ দিকে এ মতবাদের বিরুদ্ধে নানা পর্যবেক্ষণ ও বিতর্কের শুরু হয়। বৈজ্ঞানিক উন্নতির সাথে সাথে নানা মত, ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও সংস্কারের কারণে ব্যাপারটি আরও ঘোলাটে হয়ে উঠে।

    ১৬৬৮ সালে ফ্রান্সেস্কো রেডি নামের একজন ইতালীয় চিকিৎসক প্রমাণ করেন উঁচু স্তরের জীব জড় বস্তু থেকে সৃষ্টি হয় নি। কিন্তু অ্যাবায়োজেনেসিস মতবাদের অনুসারীরা দাবি করে এই মতবাদটি অণুজীবের ক্ষেত্রে খাটে না। তাই তারা বলে অণুজীব জড় বস্তু থেকে সৃষ্টি হতে পারে। ১৭৬৫ সালে জন নিধাম ফ্লাস্কে মুরগির মাংসের জুস নেন এবং তা সিদ্ধ করেন। তারপর তিনি তা ঠাণ্ডা করে অপেক্ষা করেন। এতে অণুজীব জন্ম নেয় এবং তিনি দাবী করেন এই পরীক্ষা স্বতঃস্ফূর্ত সৃষ্টি তথা অ্যাবায়োজেনেসিসের স্বপক্ষে। অর্থাৎ মাংসের জুস থেকে অণুজীব সৃষ্টি হয়েছে। ১৭৬৮ সালে লাজ্জারো স্পালানজানি পুনরায় নিধামের পরীক্ষাটি করেন কিন্তু ফ্লাস্ক থেকে বাতাস সরিয়ে নেন। ফলস্বরূপ কোন অণুজীব জন্ম নেয় নি। যা অ্যাবায়োজেনেসিসের বিপক্ষে। কিন্তু নিধাম দাবী করেন স্বতঃস্ফূর্ত সৃষ্টির জন্য বায়ু আবশ্যক ফলে স্পালানজানির ফ্লাস্ক থেকে বায়ু অপসারণ করায় অণুজীব জন্ম নেয় নি। নিধামের প্রথম পরীক্ষার প্রায় ১০০ বছর পর দুজন বিজ্ঞানী বায়ু নিয়ে বিতর্কের সমাধানের চেষ্টা করেন। ১৮৩৬ সালে ফ্রেঞ্জ স্কালজ বায়ু নিরুদ্ধ ফ্লাস্কে সেদ্ধ মাংসের জুস নেন এবং তাতে অ্যাসিড দ্রবনের মধ্য দিয়ে বায়ু প্রবেশ করান। একি ভাবে থিওডোর স্চোয়ান উত্তপ্ত নলের মধ্য দিয়ে বায়ু প্রবেশ করান। দেখা যায় দুই ক্ষেত্রেই কোন অণুজীব জন্ম নেয় নি। এই পরীক্ষাদ্বয় অ্যাবায়োজেনেসিসের বিপক্ষে। কিন্তু অ্যাবায়োজেনেসিস মতবাদের অনুসারীরা দাবী করে অ্যাসিড ও তাপ বায়ুর গুণ পরিবর্তন করে যার ফলে অণুজীব জন্ম নেয় না। এই বিতর্কের অবসান হয় যখন বিজ্ঞানীরা বায়ুকে তুলা পূর্ণ নলের প্রবেশ করান। তুলায় বাতাসের মধ্যকার অণুজীব আটকা পড়ে ফলে মাংসে অণুজীব জন্ম নেয় না।অবশেষে লুইস পাস্তুর একটি লম্বা ও বাঁকা হাসের ঘাড়ের মত ফ্লাস্ক ব্যবহার করেন। বাতাস তাতে সহজেই প্রবেশ করতে পারে কিন্তু তাতে কোন অণুজীব জন্ম নেয় না কারণ অণুজীবরা ‘U’ আকারের বাঁকা নলে আটকা পড়ে এবং মাংস পর্যন্ত পৌছাতে পারে না। তিনি প্রমাণ করেন যে পূর্বে কোন জীব দ্বারা সংক্রমিত হওয়া ছাড়া নতুন জীবের সৃষ্টি সম্ভব নয়। পাস্তুর তার পরীক্ষার ফলাফল পাওয়ার পর বলেন “ স্বতঃস্ফূর্ত সৃষ্টি একটি স্বপ্ন মাত্র”