Tag: Primary Exam Question Solution

  • অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন ২০০১

    অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন ২০০১

    বাংলাদেশের অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন ২০০১ অনুসারে ৯ সেপ্টেম্বর ১৯৬৫ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ পর্যন্ত যেসব পাকিস্তানি নাগরিক পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে গিয়েছিলেন এবং তাঁদের স্থাবর সম্পত্তি যা পাকিস্তান আমলে ‘শত্রু সম্পত্তি’ ও বাংলাদেশ আমলে ‘অর্পিত সম্পত্তি’ নামে অভিহিত হয়েছিল, তা ফেরৎ পেতে পারেন। এই আইনের ২০০১ খ্রিস্টাব্দে প্রথমবার এবং ২০১২ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয়বারের মতো সংশোধিত হয়। সংশোধিত আইনের ৯ক ধারা অনুযায়ী সরকারী গেজেটে মৌজাভিত্তিক জেলাওয়ারি তালিকা প্রকাশের পর কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিজেকে অর্পিত সম্পত্তির দাবিদার মনে করলে, তার দাবির সমর্থনে প্রয়োজনীয় প্রমাণাদিসহ সরকারি গেজেট প্রকাশের ৩০০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা কমিটির সভাপতি অথবা ট্রাইব্যুনালে উক্ত সম্পত্তি অবমুক্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। [১]

    অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন ২০০১

    অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের তফসিলে এমন বহু সম্পত্তি অন্তর্ভুক্ত ছিল যা কখনোই অর্পিত সম্পত্তি ছিল না। ফলে হাজার হাজার মানুষকে হয়রানির মুখোমুখি হতে হয়। সাধারণ মানুষের দাবির মুখে সরকার আইনের “খ” তফসিলটি বাতিল করে। [২]

    অর্পিত সম্পত্তি কী

    ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের পর ‘ডিফেন্স অব পাকিস্তান রুলস ১৯৬৫’ জারি করা হয়। এই বিধিমালা অনুসারে ওই ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৬ ফেব্রুয়ারি তারিখ পর্যন্ত যেসব নাগরিক পাকিস্তান ত্যাগ করে ভারতে চলে যায়, তাদের পরিত্যাক্ত সম্পত্তি ‘শত্রু সম্পত্তি’ হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়। ১৯৭১-এ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর, ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে ‘শত্রু সম্পত্তির’ নাম পরিবর্তন করে ‘অর্পিত সম্পত্তি’ রাখা হয়। এসব অর্পিত সম্পত্তি মূল মালিক বা তদীয় বৈধ উত্তরাধিকারীর কাছে ফিরিয়ে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে ২০০১ খ্রিস্টাব্দে ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন ২০০১’ প্রণয়ন করা হয়। তবে তা বাস্তবায়নের জণ্য প্রয়োজনীয় বিধিমালা জারি না করায় আইন অনুসারে দীর্ঘকাল কোনোরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয় নি।[৩]

    অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পন (সংশোধন) আইন ২০১১

    ১১ ডিসেম্বর ২০১১ ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ (সংশোধন) আইন ২০১১ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়।

    অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন (সংশোধন) ২০১২

    ২১ মে ২০১২ ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ (সংশোধন) আইন ২০১১ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। এই আইনের ১৩ ধারার ভাষ্য এই যে, “অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ (সংশোধন) আইন ২০১১ কার্যকর হইবার ৩০০ (তিনশত)] দিনের মধ্যে সরকার এই ধারার বিধান অনুযায়ী ‘ক’ ও ‘খ’ তফসিলে বর্ণিত অর্পিত সম্পত্তির মৌজাভিত্তিক উপজেলা বা থানা বা] জেলাওয়ারী তালিকা প্রস্ত্তত করিয়া সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা প্রকাশ করিবে।”[৪]

    অর্পিত সম্পত্তি অবমুক্তি বিধিমালা ২০১২

    ২ মে ২০১২ এস. আর. ও. নম্বর ১০৭-এর মাধ্যমে সরকার কর্তৃক অর্পিত সম্পত্তি অবমুক্তি বিধিমালা জারি করা হয়। এই বিধিমালা অনুযায়ী কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিজেকে অর্পিত সম্পত্তি হিসাবে গেজেটে প্রকাশিত জমির প্রকৃত দাবিদার মনে করলে, তার দাবির সমর্থনে প্রয়োজনীয় প্রমাণাদিসহ সরকারি গেজেট প্রকাশের ৩০০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা কমিটির সভাপতি বরাবরে আবেদন করতে পারেন। [৫]

    অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন (২য় সংশোধন) ২০১৩

    ১০ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে একটি সরকারী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে বিতর্কিত “খ” তফসিলটি বাতিল করা হয়। অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের “খ” তফসিলে এমন অনেক সম্পত্তি অন্তর্ভুক্ত ছিল যা কখনোই অর্পিত সম্পত্তি ছিল না। ফলে হাজার হাজার মানুষকে হয়রানির মুখোমুখি হতে হয় এবং এই তফসিল সংশোধনের দাবি ওঠে। ভুক্তভোগী মানুষের দাবির মুখে সরকার আইনের “খ” তফসিলটি বাতিল করার উদ্দেশ্য নিয়ে সংসদে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন (২য় সংশোধন) ২০১৩ উপস্থাপন ও পাস করা হয়। এই সংশোধনী আইনের মাধ্যমে মূল আইনের ২৮ ধারা যথাযথভাবে সম্প্রসারণ করা হয়।[২][৬]

    গুরুত্বপূর্ণ বিধানসমূহ

    • তফসিল-ক বর্ণিত অর্পিত সম্পত্তি : সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা অর্পিত সম্পত্তি।
    • তফসিল-খ বর্ণিত অর্পিত সম্পত্তি : ব্যক্তি মালিকানাধীন অর্পিত সম্পত্তি।
    • সরকারী গেজেটে অর্পিত সম্পত্তির তালিকা প্রকাশের ৩০০ দিনের মধ্যে তা না লাভের জন্য যদি কেউ আবেদন না করে তবে তা দখলে নিয়ে সরকার দীর্ঘস্থায়ী বন্দোবস্ত দিতে পারবে।

    অর্পিত সম্পত্তি ফেরৎ লাভের শর্তাবলী

    • সরকারী গেজেটে অর্পিত সম্পত্তির তালিকা প্রকাশের ৩০০ দিনের মধ্যে তা ফেরৎ লাভের জন্য আবেদন করতে হবে। না করলে অর্পিত সম্পত্তি সরকারি দখলে নিয়ে তা দীর্ঘস্থায়ী বন্দোবস্ত দেওয়া হবে।
    • অর্পিত সম্পত্তি ফিরে হলে দাবিদারকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে।
    • বিনিময় মামলার আওতায় যারা ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছেন, অর্পিত সম্পত্তি ফেরত পাওয়ার জন্য তাদেরকে ভারতে প্রদত্ত সম্পত্তির বিবরণী জমা দিতে হবে। [৭]
  • অভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৮৭৬

    অভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৮৭৬

    অভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৮৭৬ হলো ব্রিটিশ ভারতে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর শিল্পচর্চার মাধ্যমে পরাধীনতা ও উপনিবেশিক শাসকদের প্রতি প্রতিবাদ প্রতিরোধের জন্য তৎকালীন সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত একটি নিবর্তনমূলক পদক্ষেপ।[১] এই আইনটি অদ্যাবধি ভারতবর্ষের বহু স্থানে বলবত্ রয়েছে।[২]

    অভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৮৭৬

    উদ্দেশ্য

    এই আইন-প্রণয়নের উদ্দেশ্য ছিল নিম্নরূপঃ[৩]

    1. নাটকের মধ্য দিয়ে জনগণের মধ্যে যে দেশাত্মবোধ ও জাতীয়তাবোধের বিস্তার ঘটছিল তা বন্ধ করা;
    2. ব্রিটিশ সরকারের জনপ্রিয়তা ও ভাবমূর্তি রক্ষা করা;
    3. যে-কোনো রাজনীতি বিষয়ক নাটক ও অভিনয় নিয়ন্ত্রিত করা।
  • সার্বভৌমত্ব

    সার্বভৌমত্ব

    সার্বভৌমত্ব (বাংলা উচ্চারণ: [সার্বভৌমত্ব] (শুনুন)) বলতে কোন দেশ বা রাষ্ট্রের নিজের অভ্যন্তরীন এবং অন্যান্যরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক নির্ধারণের চূড়ান্ত ক্ষমতাকে বোঝায়। সার্বভৌমত্ব কোনো পরিচালনা পরিষদের বাইরের কোনো উৎস বা সংগঠনের হস্তক্ষেপ ছাড়া কাজ করার পূর্ণ অধিকার ও ক্ষমতা। রাজনৈতিক তত্ত্ব অনুযায়ী, সার্বভৌমত্ব কোনো একটি রাষ্ট্রব্যবস্থার উপর সর্বোচ্চ ক্ষমতা নির্দেশকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা। এটি রাষ্ট্রগঠনের সার্বভৌমত্বকেন্দ্রিক মতবাদের একটি মূলনীতি।এটি রাষ্ট্র গঠনের মূখ্য উপাদান।আর সার্বভৌমের আদর্শই হলো আইন।এই উপাদান ব্যতীত কোন রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে না।

    সার্বভৌমত্ব

    সার্বভৌমত্বের প্রকারভেদ

    সার্বভৌমত্বের বিভিন্ন ধারণা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রচুর আলোচনা হয়েছে, এবং এই বিতর্ক এখনো চলমান রয়েছে। এর ফলে সার্বভৌমত্বের সংজ্ঞা, ধারণা এবং প্রয়োগে পরিবর্তন এসেছে, বিশেষ করে আলোকায়নের সময়ে। সার্বভৌমত্বের বর্তমান ধারণায় ভূখণ্ড, জনসংখ্যা, কর্তৃপক্ষ এবং স্বীকৃতি– এই চারটি দিক রয়েছে। স্টিফেন ডি. ক্রাসনার এর মতে, এই শব্দটি চারটি ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে অনুধাবন করা যায়ঃ

    • অভ্যন্তরীন সার্বভৌমত্ব – রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে রাষ্ট্রের কোনো কর্তৃপক্ষের চর্চিত সর্বময় ক্ষমতা।
    • আন্তঃনির্ভরশীল সার্বভৌমত্ব – রাষ্ট্রের সীমান্ত আছে ধরে নিয়ে তাতে চলাচলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ।
    • আন্তর্জাতিক আইনি সার্বভৌমত্ব – অন্যান্য সার্বভৌম রাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। আন্তর্জাতিক আইনি সার্বভৌমত্বের উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে যে, শায়েখতান্ত্রিক সার্বভৌমত্ব শায়েখতন্ত্র, রাজকীয় সার্বভৌমত্ব, রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও ইসলামিক সার্বভৌমত্ব ইত্যাদি।
    • ওয়েস্টফ্যালিয়ান সার্বভৌমত্ব – রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে অন্যান্য কর্তৃপক্ষের  উপর রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের কর্তৃত্ব (এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের উদাহরণঃ বাহ্যিক ধর্মীয় কিংবা রাজনৈতিক সংগঠন কিংবা অন্য কোনো বাহ্যিক শক্তি)।

    আমরা প্রায়ই এই চারটি ধারণাকে একত্রে আসতে দেখি, কিন্তু এটি অপরিহার্য নয়। এই চারটি দিক একটি আরেকটির দ্বারা প্রভাবিত নয়, এবং এক দিয়ে সার্বভৌম না হয়েও অন্য দিক দিয়ে সার্বভৌম ছিল, এ ধরনের রাষ্ট্রের উদাহরণ ইতিহাসে পাওয়া যায়। ইমানুয়েল ওয়ালারস্টেইনের মতে, সার্বভৌমত্বের আরেকটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য হল একে অর্থবহ হতে হলে বাকিদের কাছ থেকে এর স্বীকৃতি থাকতে হবে, “সার্বভৌমত্ব একটি আইনি ব্যাপারের বাইরেও কিছু একটা, (…যার) পারস্পারিক স্বীকৃতি দরকার হয়। সার্বভৌমত্ব একটি কাল্পনিক বাণিজ্য, যাতে দুটি সম্ভাব্য বিরোধী পক্ষ বাস্তব সক্ষমতাকে সম্মান করে এই ধরনের স্বীকৃতিকে তাদের সবচেয়ে কম ব্যয়বহুল কৌশল হিসাবে গ্রহণ করে।”

    ইতিহাস

    ধ্রুপদী ধারণা

    রোমান আইনজ্ঞ উলপিয়ান লক্ষ করেন যে

    • জনগণ তাদের নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষমতা সম্রাটের কাছে স্থানান্তর করে। Cum lege regia, quae de imperio eius lata est, populus ei et in eum omne suum imperium et potestatem conferat (Digest I.4.1)
    • সম্রাট কোনো আইনের অধীন নন। Princeps legibus solutus est (Digest I.3.31)
    • সম্রাটের ইচ্ছাই সংবিধান। Quod principi placuit legis habet vigorem. (Digest I.4.1)

    যদিও তিনি সরাসরি বলেননি, তবু সম্রাট এক ধরনের চূড়ান্ত ক্ষমতা চর্চা করতেন, যার উৎপত্তি জনতার থেকেই, এমন একটি ধারণা উলপিয়ান ব্যক্ত করেন।

    মধ্যযুগীয় ধারণা

    উলপিয়ানের ধ্রুপদী বক্তব্য মধ্যযুগীয় ইউরোপে অজানা ছিল না, কিন্তু মধ্যযুগীয় সময়ে সার্বভৌমত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা ছিল। মধ্যযুগের রাজারা সার্বভৌম ছিলেন না, অন্ততঃ অতটা শক্তিশালী না, কারণ তাদের অভিজাত সামন্তদের সাথে ক্ষমতা ভাগ করতে হত এবং সামন্তরা তাদের কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন। উপরন্তু, দুই শ্রেণীকেই প্রথা মেনে চলতে হত।

    মধ্যযুগে সার্বভৌমত্ব রাজন্য ও অভিজাতদের de jure অধিকার হিসাবে এবং ব্যক্তি জীবনে তাদের নিজস্ব পছন্দগুলি তৈরি করার de facto ক্ষমতা হিসাবে উপস্থিত ছিল।

    ১৩৮০ থেক ১৮০০ সালের কাছাকাছি সময়ে জ্যোফ্রে চৌসাটারের মিডল ইংলিশ সংগ্রহে ক্যানটারবেরী টেলস, বিশেষত দ্য ওয়াইফ অফ বাথের গল্পে নারীবাদী সার্বভৌমত্বের বিষয়টি নিয়ে কথা বলা হয়েছিল।

    পরে ইংরেজ আর্থারিয়ান রোম্যান্স, দ্য ওয়েডিং অফ স্যার গোয়াইন ও ডাম র‍্যাগনিয়েল (1450 খ্রিষ্টাব্দ), দ্য ওয়াইফ অফ বাথ গল্পের অনেক উপাদান ব্যবহার করে, তবে রাজা আর্থার এবং নাইটদের আদালতের প্রেক্ষাপটে গল্পটি সাজায়। এর গল্প নাইট স্যার গোয়েনের তার নববঁধু ডাম র‍্যাগনিয়েলকে সার্বভৌমত্ব প্রদানকে ঘিরে আবর্তিত হয়, যাকে নারীদের চূড়ান্ত চাওয়া হিসাবে দেখানো হয়।

    পুণর্জাগরণ

    মধ্যযুগে সার্বভৌমত্ব অভিজাতদের ‘ডেই জুরে’ অধিকার হিসাবে এবং ব্যক্তির নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নেয়ার ‘ডেই ফ্যাক্টো’ সক্ষমতা হিসাবে বর্তমান ছিল।

    একটি ধারণা হিসাবে সার্বভৌমত্বের পূণর্জাগরণ ঘটে ষোড়শ শতাব্দীতে, এমন একটি সময়ে যখন গৃহযুদ্ধ একটি কেন্দ্রীয় শক্তিশালী কর্তৃপক্ষের বাসনা তৈরি করেছিল, যখন সামন্ত রাজারা তাদের আভিজাত্যের বিনিময়ে নিজেদের হাতে ক্ষমতা পুঞ্জিভূত করছিল, এবং আধুনিক জাতিরাষ্ট্র গড়ে উঠছিল। জীন বোদিন, কিছুটা ফ্রান্সের ধর্মযুদ্ধগুলোর প্রতিক্রিয়াস্বরূপ শক্তিশালী কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ হিসাবে পরম রাজতন্ত্রের আকারে সার্বভৌমত্বের তত্ত্ব প্রদান করেন। ১৫৭৬ সালে তিনি তার বই Les Six Livres de la République (প্রজাতন্ত্রের ছয়টি বই) এ যুক্তি দেখান, সহজাতভাবেই সার্বভৌমত্বকে হতে হবেঃ

    • পরমঃ এই অংশে তিনি বলেন যে সার্বভৌম সত্ত্বাকে অবশ্যই দায়িত্ব ও শর্ত থেকে স্বাধীন হতে হবে, অধীনদের অনুমোদন ছাড়াও আইন প্রণয়নের ক্ষমতা থাকতে হবে, পূর্বসূরীদের আইনের অধীন হবে না, এবং নিজের আইনেরও অধীনে থাকবে না, কারণ এটি অযৌক্তিক।
    • স্থায়ীঃ এটি কোনো জরুরী অবস্থায় কোনো নেতা কিংবা কোনো রাষ্ট্রীয় কর্মচারী যেমন ম্যাজিস্ট্রেটের উপর অর্পিত দায়িত্ব নয়। যিনি সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী তাকে স্থায়ী হতে হবে, কারণ সময়সীমা আরোপ করার সক্ষমতা আছে এমন কাউকে অবশ্যই সার্বভৌম শক্তির চেয়েও শক্তিশালী হতে হবে, যা পরম ক্ষমতার অধিকারী কর্তৃপক্ষের ক্ষেত্রে অসম্ভব।

    জনগণের কাছ থেকে শাসকের কাছে (সার্বভৌম হিসাবেও পরিচিত) সার্বভৌমত্ব স্থানান্তরের ধারণা বোদিন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন; প্রাকৃতিক নিয়ম এবং ঐশ্বরিক আইন সার্বভৌম শাসন করার অধিকার প্রদান করে। এবং সার্বভৌম ব্যক্তি ঐশ্বরিক আইন বা প্রাকৃতিক নিয়মের ঊর্ধ্বে নন, বরং তিনি কেবল মানবসৃষ্ট আইনের উর্ধ্বে। তিনি ঐশ্বরিক আইন থেকে উদ্ভূত কিছু মৌলিক নিয়ম, প্রাকৃতিক নিয়ম, যুক্তি, সকল দেশের জন্য প্রযোজ্য সাধারণ আইন এবং সার্বভৌম ও তার উত্তরসুরি নির্ধারণ এবং সার্বভৌমের ক্ষমতার সীমা কী হবে এসব ব্যাপার নির্ধারণকারী রাষ্ট্রের মৌলিক আইনের প্রতি সার্বভৌমের লক্ষ রাখার ব্যাপারে জোর দেন। এইভাবে, বোদিনের সার্বভৌমের ক্ষমতা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক আইন এবং প্রতিটি মানুষের উপর আরোপিত উচ্চতর আইন দ্বারা সীমাবদ্ধ ছিল। সার্বভৌমের ঐশ্বরিক ও প্রাকৃতিক আইন মেনে চলার ব্যাপারটি তার কাজকর্মে কিছু নৈতিক সীমারেখা টেনে দেয়। বোদিন lois royales বা ফরাসী রাজতন্ত্রের কিছু মৌলিক আইন যার দ্বারা উত্তরাধিকারের মত ব্যাপারগুলো নিয়ন্ত্রিত হত, কেও প্রাকৃতিক নিয়ম এবং ফরাসী সার্বভৌমের অবশ্য পালনীয় হিসাবে তুলে ধরেন।

    পরমত্বের ধারণায় বিশ্বাসী হওয়ার পরেও বাস্তবক্ষেত্রে সরকারের কীভাবে কাজ করা উচিত, এ ব্যাপারে বোদিনের কিছু মধ্যপন্থী মতামত ছিল। তিনি বলেন, সার্বভৌম বাধ্য না হলেও বাস্তবে উপদেশ পাওয়ার জন্য তার একটি সিনেট আহ্বান করা উচিত, আইনের মাধ্যমে বিচারকদের হাতে কিছু প্রাশাসনিক ক্ষমতা প্রদান করা উচিত এবং জনগণের সাথে যোগাযোগের উপায় হিসেবে একটি ব্যবস্থাপক সভা রাখা উচিত। বোদিন বিশ্বাস করতেন “সবচেয়ে ঐশ্বরিক, সবচেয়ে চমৎকার এবং সঠিক রাষ্ট্র” আংশিকভাবে গণতান্ত্রিক উপায়ে ও আংশিকভাবে অভিজাতদের দ্বারা শাসিত হয়।

    বোদিন তার মতবাদে রাজাদের ঐশ্বরিক ক্ষমতাকে নির্ধারণ করে দেন।

    আলোকায়নের যুগ

    আলোকায়নের যুগে সার্বভৌমত্বের ধারণা পশ্চিমা রাষ্ট্রের বর্ণনায় আইনি ও নৈতিক শক্তি হয়ে উঠে। নির্দিষ্ট করে সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার উপায় হিসাবে “সামাজিক চুক্তি”র চুক্তির প্রস্তাব করা হয়, এবং ১৮০০ সালের মধ্যে ফ্রান্স ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়, যদিও ব্রিটেনেও কিছুটা কম পরিমাণে হয়।

    লেভিয়াথানে থমাস হোবস বোদিনের মতই সার্বভৌমত্বের একটি ধারণায় পৌঁছান, যেটি অন্য কারণে “পিস অব ওয়েস্টফেলিয়া”য় আইনি কাঠামো লাভ করে। তিনি প্রথমবারের মত সামাজিক চুক্তির একটি আধুনিক সংস্করণ তৈরি করেন, এবং যুক্তি দেখান যে মানুষের মধ্যে পারস্পারিক সহযোগিতা ছাড়া জীবনের কদর্য, পাশবিক ও ইতর গুণগুলোকে কাটিয়ে উঠতে মানূষের অবশ্যই একটি রাষ্ট্রীয় কাঠামোর আসতে হবে এবং একটি সার্বভৌম শক্তির কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে হবে যা তাদের সামগ্রিক কল্যাণের জন্য কাজ করতে বাধ্য করবে। এই যুক্তিটি সার্বভৌমত্বের প্রথম প্রবর্তকদের আকৃষ্ট করেছিল। হোবস বোদিনের ও ওয়েস্টফেলিয়ান ধারণার বাইরেও সার্বভৌমত্বের সংজ্ঞাকে আরো দৃঢ় করেন এবং বলেন একে অবশ্যই হবে হবেঃ

    • পরমঃ কারণ সার্বভৌমের উপর শর্ত আরোপ করা যাবে কেবল যদি তার বাইরেও কোনো সালিশি শক্তি থাকে যে নির্ধারণ করবে কখন সার্বভৌম এসব শর্ত ভঙ্গ করেছে। কিন্তু এক্ষেত্রে সার্বভৌমের চূড়ান্ত কর্তৃত্ব থাকবে না।
    • অদৃশ্যঃ সার্বভৌম কেবল নিজের এলাকার চূড়ান্ত কর্তাই নয়, সে তার কর্তৃত্ব আর কারো সাথে ভাগ করে না। হোবস একে সত্য বলে ধরে নেন কারণ এছাড়া একাধিক কর্তৃপক্ষের মধ্যে মতবিরোধের নিষ্পত্তি করার কোনো উপায় থাকবে না।

    তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জনগণ শাসককে সার্বভৌমত্ব দেয় হোবস এই অনুমান থেকে এই সিদ্ধান্তে আসেন যে শাসক কখনো ব্যর্থ হলে নিজেদের রক্ষা করার ক্ষমতা নতুন একটি সামাজিক চুক্তি করার মাধ্যমে ফিরে পায়।

    হোবসের এই তত্ত্ব সামাজিক চুক্তি তত্ত্ব ব্যবহার করে সার্বভৌমত্বের ধারণাকে দৃঢ়ভাবে আকার প্রদান করে। জাঁ-জ্যাক রুশো (১৭২১-১৭৭৮ খ্রি.) জনপ্রিয় সার্বভৌমত্বের সংজ্ঞা প্রদান করে বলেন (ফ্রান্সিসকো সুরেজের শক্তির উত্থানের তত্ত্বের প্রথম দিকের সূত্র অনুগামী) যে জনগণই একমাত্র বৈধ সার্বভৌম। রুসো সার্বভৌমত্বকে অবিচ্ছিন্ন বলে বিবেচনা করা; তিনি উৎস এবং সার্বভৌমত্ব প্রয়োগকারী সত্ত্বার মধ্যে পার্থক্যের নিন্দা করেছেন, যার উপর ভিত্তি করে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র ও প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত। জন লক এবং মন্টেসকিউও সার্বভৌমত্বের ধারণার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। অবিচ্ছিন্নতার ব্যাপারে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি রুশো এবং হোবসের সাথে চেয়ে ভিন্ন ছিল

  • সামরিক আদালত

    সামরিক আদালত

    সামরিক আদালত হল সেনাবাহিনীতে সৈনিকদের চাকরির শৃংখলাভঙ্গজনিত অপরাধের বিচার করার জন্য সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত একটি আদালত।[১]

    সামরিক আদালত

    গঠন প্রক্রিয়া

    এই আদালত কয়েকজন সেনা কর্মকর্তাকে নিয়ে গঠিত হয়।[১]

    বিচার প্রক্রিয়া

    সামরিক আদালত জজ অ্যাডভোকেট নামক আইনি যোগ্যতাসম্পন্ন একজন কর্মকর্তার দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী বিচারকার্য পরিচালনা করেন।[১]

  • সরকার

    সরকার

    সরকার বা শাসনব্যবস্থা[১] (ইং: Government) হলো কোনো দেশের সর্বোচ্চ সংস্থা ও কর্তৃপক্ষ যার মাধ্যমে দেশটির শাসন কার্য পরিচালিত হয়। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকার জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি যেমন সংসদ সদস্যদের দ্বারা গঠিত হয়। সরকারের মৌলিক দায়িত্ব জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী দেশের নিরাপত্তা বিধান করা, সমাজের শান্তি বজায় রাখা, মানুষের জান-মাল রক্ষা করা এবং বিবাদের ক্ষেত্রে বিচারকার্য পরিচালনা করা। সরকার তার ওপর আরোপিত দায়িত্বসমূহ পালনের স্বার্থে রাজস্ব আহরণ করে এবং শাসনকার্য পরিচালনা ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য তা ব্যয় করে থাকে।[২]

    সরকার

    সাধারণত “সরকার” শব্দটির দ্বারা একটি সাধারণ সরকার বা সার্বভৌম রাষ্ট্রকে বোঝায়। সরকার স্থানীয়, জাতীয় বা আন্তর্জাতিক হতে পারে। যদিও বাণিজ্যিক, শিক্ষাগত, ধর্মীয়, বা অন্যান্য বিধিবদ্ধ সংস্থাগুলিও নিজস্ব পরিচালন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শাসিত হয়। এই জাতীয় কর্তৃপক্ষ বোর্ড অফ ডিরেক্টর, ম্যানেজ‍ার, গভর্নর নামে পরিচিত; এগুলিকে প্রশাসন (যেমন বিদ্যালয় প্রশাসন) বা কাউন্সিল অফ এল্ডার্স (যেমন খ্রিষ্টান চার্চে) নামেও চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। সরকারের আকার অঞ্চল বা উদ্দেশ্য অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হয়।

    সংগঠনের আয়তন বৃদ্ধি হলে সরকারের জটিলতাও বাড়ে। তাই ছোটো শহর বা ছোটো-মাঝারি বেসরকারি সংস্থাগুলিতে আধিকারিকের সংখ্যা বড়ো বড়ো বহুজাতিক কর্পোরেশনের তুলনায় কম রাখা হয়। বড়ো সংস্থায় বহুমুখী দপ্তর ব্যবস্থা ও প্রশাসনের ক্রমপর্যায়ে লক্ষিত হয়। জটিলতা বাড়লে সরকারের কাজ-কর্মের প্রকৃতিও জটিল হয়ে পড়ে। তাই আনুষ্ঠানিক নীতি ও কার্যপদ্ধতি ঘোষণারও প্রয়োজন হয়।

    সরকারের ধরন

    সরকারের বিভিন্ন ধরন। বিস্তারিত দেখতে মানচিত্রে ক্লিক করুন।

    ‘সকল সংসদের জননী’ যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট

    মূল নিবন্ধ: বিভিন্ন প্রকার সরকারের তালিকা

    • নৈরাজ্যবাদ – এটি এমন একটি রাজনৈতিক দর্শন যা রাষ্ট্রকে অপ্রয়োজনীয়, ক্ষতিকর ও অবাঞ্ছনীয় মনে করে এবং রাষ্ট্রহীন সমাজের সপক্ষে মতপ্রকাশ করে।
    • কর্তৃত্ববাদী সরকার – কর্তৃত্ববাদী সরকার কোনো প্রজাতন্ত্র বা যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তৃত্বের সপক্ষে মতপ্রকাশ করে। এটি অনির্বাচিত শাসকদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি ব্যবস্থা, যাঁরা কিছুটা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা দিয়ে থাকেন।
    • সাংবিধানিক রাজতন্ত্র – এই জাতীয় সরকারে একটি রাজতন্ত্র বিদ্যমান; কিন্তু উক্ত রাজতন্ত্রের ক্ষমতা আইন বা ঘোষিত সংবিধানের দ্বারা সীমাবদ্ধ। উদাহরণ: যুক্তরাজ্য[৩][৪]
    • সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র – এই জাতীয় সরকারের ক্ষমতা আইন বা আনুষ্ঠানিক সংবিধান দ্বারা সীমাবদ্ধ এবং এই সরকার সংশ্লিষ্ট দেশের জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ দ্বারা নির্বাচিত। উল্লেখ্য, প্রাচীন স্পার্টা ঘোষিতভাবে ছিল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র; কিন্তু সেদেশের অধিকাংশ মানুষই ভোটদানের অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকতেন। আবার প্রথম যুগের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ছিল গণতান্ত্রিক দেশ; কিন্তু ক্রীতদাসদের সেযুগে ভোটদানের অধিকার ছিল না।
    • গণতন্ত্র – গণতন্ত্র হল এমন একটি সরকার যা দেশের জনসংখ্যার বৃহত্তম অংশ দ্বারা নির্বাচিত। এই সরকার সাংবিধানিক রাজতন্ত্র বা সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র দুইই হতে পারে। গণতন্ত্রের ব্যক্তির ভোটদানের অধিকার তার সামাজিক মর্যাদা বা সম্পদের উপর নির্ভরশীল নয়।
    • একনায়কতন্ত্র – একক ব্যক্তি স্বেচ্ছায় শাসিত দেশের সরকার। স্বৈরাচারী শাসক সাধারণত বলপূর্বক ক্ষমতা দখল করেন।[৫] (আরও দেখুন স্বৈরতন্ত্ররাষ্ট্রতন্ত্র)
    • রাজতন্ত্র – এমন ব্যক্তির শাসন যিনি শাসনক্ষমতা উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত হন।[৫]
    • সংকীর্ণ গোষ্ঠীতন্ত্র – একই স্বার্থবিশিষ্ট ছোটো ছোটো গোষ্ঠী বা পরিবারের শাসন।[৬]
    • ধনিকতন্ত্র – ধনবান শ্রেণির শাসন।
    • দিব্যতন্ত্র – ধর্মীয় নেতাদের শাসনতন্ত্র।[৭]
    • সর্বনিয়ন্ত্রণবাদী সরকার – এই জাতীয় সরকার সরকার ও ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজ কর্তৃত্ব আরোপ করে।
    • আইনানুগমনবাদী সরকার – এই জাতীয় সরকার আইনের শাসনকে চূড়ান্ত মনে করে; আইনমান্যকারীদের পুরস্কৃত করে ও আইনভঙ্গকারীদের কঠিন শাস্তি দেয়।

    পাদটীকা

    “শাসনব্যবস্থা – English Meaning of ‘শাসনব্যবস্থা’ at english-bangla.com | শাসনব্যবস্থা শব্দের ইংরেজি অর্থ”www.english-bangla.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-১৩। “government” — Dictionary.com: cites 3 separate dictionaries Fotopoulos, Takis, The Multidimensional Crisis and Inclusive Democracy. (Athens: Gordios, 2005).(English translation[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] of the book with the same title published in Greek). “Victorian Electronic Democracy : Glossary”। জুলাই ২৮, ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-১৪। American 503 American 1225 American 1793

  • সংসদ সদস্য

    সংসদ সদস্য

    সংসদ সদস্য জনপ্রতিনিধি হিসেবে পার্লামেন্ট বা জাতীয় সংসদে সরকার কিংবা বিরোধীদলীয় সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণ করে থাকেন। এর ইংরেজি প্রতিরূপ হচ্ছে ‘মেম্বার অব পার্লামেন্ট’ বা ‘এমপি’ এবং বাংলায় ‘সংসদ সদস্য’ কিংবা ‘সাংসদ’। এছাড়া, ফরাসী ভাষায় সংসদ সদস্যকে ‘ডেপুটি’ নামে অভিহিত করা হয়।

    সংসদ সদস্য

    পরিচিতি

    সংসদীয় গণতন্ত্রে একজন সংসদ সদস্য আইন-প্রণয়ন বিশেষতঃ রাষ্ট্রীয় আইননাগরিক অধিকার প্রণয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সাধারণ অর্থে নির্দিষ্ট সংসদ কিংবা জাতীয় সংসদের সদস্যই এমপি বা সংসদ সদস্য হিসেবে আখ্যায়িত হন।

    বিশ্বের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে দ্বি-স্তরবিশিষ্ট সংসদীয় গণতন্ত্র রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে – উচ্চ কক্ষ এবং নিম্ন কক্ষ। সেক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধি হিসেবে ‘সংসদ সদস্য’ পদটি নিম্নকক্ষের জন্য প্রযোজ্য। সচরাচর জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংসদ সদস্য পদটি উচ্চ কক্ষে ভিন্ন পদে উপস্থাপন ও চিহ্নিত করা হয়। উচ্চ কক্ষ হিসেবে সিনেটে সংসদ সদস্য তখন তিনি ‘সিনেটর’ পদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।

    অবস্থান

    সংসদ সদস্য হিসেবে ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে দলের সদস্যরূপে তাঁর অবস্থানকে নিশ্চিত করতে হয়। পরবর্তীতে দলীয় সভায় মনোনয়নের মাধ্যমে সরাসরি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও জনমতের যথার্থ সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিফলনে তিনি এমপি হিসেবে নির্বাচিত হন। কখনোবা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অভাবে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে থাকেন। সাধারণতঃ সংসদ সদস্য কোন একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সদস্য হয়ে থাকেন। দলীয়ভাবে মনোনয়নলাভে ব্যর্থ হলে কিংবা দলীয় সম্পৃক্ততা না থাকলেও ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ হিসেবে অনেকে নির্বাচিত কিংবা মনোনীত সংসদ সদস্য হন।

    সংসদ সদস্যকে অনেকে ‘সাংসদ’ নামেও ডেকে থাকেন। তবে, নিত্য-নৈমিত্তিক বা প্রাত্যহিক কর্মকাণ্ডে ‘মেম্বার অব পার্লামেন্ট’ হিসেবে সংসদ সদস্যকে ‘এমপি’ শব্দের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত আকারে ব্যবহার করা হয়। বর্তমানকালে প্রচারমাধ্যমে সাধারণ অর্থেই এমপি শব্দের প্রয়োগ লক্ষ্যণীয়।

    ওয়েস্টমিনিস্টার পদ্ধতি

    গণতান্ত্রিক সংসদীয় ব্যবস্থায় নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামত প্রতিফলন বা ভোটে একজন প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধান হিসেবে মনোনীত হন, যা ওয়েস্টমিনিস্টার পদ্ধতির প্রধান বৈশিষ্ট্য। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ‘প্যালেস অব ওয়েস্টমিনিস্টারে’ বা হাউজেস অব পার্লামেন্ট বা ওয়েস্টমিনিস্টার প্যালেসে রক্ষিত জনপ্রতিনিধির আসনকে কেন্দ্র করে ওয়েস্টমিনিস্টার পদ্ধতি প্রবর্তিত হয়েছে।

    অস্ট্রেলিয়া

    অস্ট্রেলিয়ায় সংসদ সদস্য বলতে কমনওয়েলথ পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ হিসেবে পরিচিত ‘হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভসের’ সদস্যকে বুঝায়। সদস্যরা কখনো কখনো তাদের নামের শেষে এমপি লিখে থাকেন। ‘কমনওয়েলথ পার্লামেন্ট’ হিসেবে সিনেটের সদস্যগণ সিনেটর নামে পরিচিতি।

    অস্ট্রেলিয়ার প্রদেশ হিসেবে নিউ সাউথ ওয়েলস্‌ এবং ভিক্টোরিয়ায় নিম্ন কক্ষ লেজিসলেটিভ এসেম্বলিতে সংসদ সদস্যগণ তাদের নামের শেষে ‘এমপি’ লিখেন। পক্ষান্তরে উচ্চ কক্ষ হিসেবে লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের সদস্যরা নামের শেষে ব্যবহার করেন’এমএলসি’।

    বাংলাদেশ

    মূল নিবন্ধ: জাতীয় সংসদ

    বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সদস্যগণ সংসদে প্রতিনিধিত্ব করে থাকেন। তাঁরা প্রতি পাঁচ বৎসর অন্তর সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন এবং তাদেরকেও ‘এমপি’ বা ‘মেম্বার অব পার্লামেন্ট’ বা ‘সংসদ সদস্য’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। সংসদে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩৫০ জন সংসদ সদস্য প্রতিনিধিত্ব করেন। তন্মধ্যে ৫০ জন সংরক্ষিত আসন থেকে মহিলা সদস্য। সাংসদদের নামের শেষে এমপি লেখা হয়। যেমনঃ বর্তমান বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন চট্টগ্রাম – ১ (মীরসরাই) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, এমপি

    বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সরকার প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই ‘সংসদ সদস্য’ হিসেবে নির্বাচিত হতে হয়।

    কানাডা

    কানাডায় দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট সংসদীয় ব্যবস্থা বিরাজমান। কানাডীয় সংসদে উচ্চ কক্ষকে ‘সিনেট অব কানাডা’ এবং নিম্ন কক্ষকে ‘কানাডিয়ান হাউজ অব কমন্স’ ডাকা হয়। তাসত্ত্বেও, উভয় কক্ষের সদস্যগণই মেম্বার অব পার্লামেন্ট বা সংসদ সদস্য হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকেন। কিন্তু কথা বলার ধরন অনুযায়ী নিম্ন কক্ষের সদস্যগণকে ‘সংসদ সদস্য’ এবং উচ্চ কক্ষের সদস্যগণকে সিনেটরের মর্যাদা দেয়া হয়।[১] ১০৫ আসনের সিনেট এবং ৩০৮ আসনের হাউজ অব কমন্স নিয়ে কানাডায় দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠিত।[২]

    প্রত্যেকটি প্রদেশের সংসদীয় ব্যবস্থাপনায় নিজস্ব পরিচিতি রয়েছে। সাধারণতঃ প্রত্যেক সদস্যই এমএলএ বা মেম্বার অব দ্য লেজিসলেটিভ এসেম্বলী হিসেবে পরিচিতি পেয়ে থাকেন। ব্যতিক্রম হিসেবে রয়েছে দেশটির কয়েকটি প্রদেশ। তন্মধ্যে ওন্টারিও প্রদেশে সংসদ সদস্যরা ‘মেম্বার অব প্রভিনশিয়াল পার্লামেন্ট’ বা এমপিপি; কুইবেক প্রদেশে ‘মেম্বার অব দ্য ন্যাশনাল এসেম্বলী’ বা এমএনএ নামে পরিচিত। ফরাসী ভাষায় একজন এমএনএ-কে ডেপুটি বলা হয়। নিউফাউন্ডল্যান্ড এবং ল্যাব্রাডর প্রদেশে তাদেরকে ‘মেম্বার অব দ্য হাউজ অব এসেম্বলী’ বা এমএইচএ পদবী গ্রহণ করতে দেখা যায়।

    ভারত

    মূল নিবন্ধ: সংসদ (ভারত)

    পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভারতের বেশ সুনাম রয়েছে। দেশটির সংসদীয় ব্যবস্থাপনা দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট। সেগুলো হচ্ছে লোকসভা এবং রাজ্যসভা। সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সকল সদস্যই ‘সংসদ সদস্য’ হিসেবে পরিচিতি।

    সদস্যরা ভারতীয় প্রদেশ এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে লোকসভায় সদস্যরূপে নির্বাচিত হন। কিন্তু রাজ্যসভার সদস্যরা পরোক্ষভাবে প্রদেশের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংসদ সদস্য হন। প্রত্যেক প্রদেশেই নির্দিষ্টসংখ্যক সংসদ সদস্যের পদ বরাদ্দ আছে। উত্তর প্রদেশে সবচেয়ে বেশীসংখ্যক সদস্য পদ রয়েছে।

    কেন্দ্রীয় সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোটভূক্ত দলের সংমিশ্রণে গঠিত হয় যেখানে লোকসভায় সর্ববৃহৎ দল বৃহৎসংখ্যক আসন লাভ করতে সক্ষম হয়।

    আয়ারল্যান্ড

    মেম্বার অব পার্লামেন্ট শব্দটি ১৮০১ সালের পূর্বেকার আয়ারল্যান্ডের সংসদ ‘আইরিশ হাউজ অব কমন্সের’ সদস্যকে বুঝায়। এছাড়াও এটি যুক্তরাজ্য এবং আয়ারল্যান্ডের হাউজ অব কমন্সে ১৮০১ থেকে ১৯২২ সাল পর্যন্ত নির্বাচিত আইরিশ সদস্যদেরকে বুঝানো হয়ে থাকে।

    উত্তর আয়ারল্যান্ডে নির্বাচিত এমপিরা বর্তমানকালেও যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে অংশ নিয়ে থাকেন।

    ১৯২২ সালের পর ‘আইরিশ ফ্রি স্টেটের’ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ‘ডেইল আইরিয়ান’ বা (দ্য ডেইল)-এর সদস্যরা নিম্নকক্ষে ‘অয়েরেচটাসে’ (সংসদ) ‘ডেইল আয়ারিন’ (ডেইল) বা টিচটা ডালা বা টিডি নামে পরিচিত। উচ্চ কক্ষকে ‘সীনাড আইরিয়ান’ বলে। এর সদস্যরা ‘সিনেটর’ নামে পরিচিত।

    কেনিয়া

    জাতীয় সংসদের ২১০টি আসনের সাধারণ নির্বাচনে কেনিয়ার অধিবাসীরা সদস্যরূপে নির্বাচিত হয়ে যোগ দেন। পরবর্তীতে আরো ১২ জন সদস্যকে মনোনীত করা হয়। সদস্যরা প্রত্যেকেই ‘সংসদ সদস্য’ নামে অভিহিত হন।[৩]

    মালয়েশিয়া

    যুক্তরাজ্যের সংসদের অনুরূপ ধাঁচে মালয়েশিয়ার সংসদ গড়ে উঠেছে। এটি দু’টি কক্ষবিশিষ্ট। হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভ হিসেবে রয়েছে ‘দিওয়ান রাকিয়াত’ এবং সিনেট হিসেবে ‘দিওয়ান নাগারা’।

    দিওয়ান রাকিয়াতের জন্য একজন ব্যক্তিকে সংসদ সদস্য হিসেবে পরিচিত হতে গেলে তাকে সাধারণ নির্বাচন কিংবা উপ-নির্বাচনে অংশ নিতে হয়। এছাড়াও, যারা দেশের সেবায় অসামান্য অবদান রাখেন তাদেরকে দিওয়ান নাগারা’র সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য রাজা কর্তৃক মনোনীত হন। তারা প্রদেশ প্রধান কর্তৃক মনোনীত হয়ে রাজার অনুমোদনের উপর নির্ভর করেন। তন্মধ্যে, প্রত্যেকটি প্রদেশের আয়তনের উপর সিনেটরের সংখ্যা নির্ভরশীল।

    সংসদ সদস্যরা তাদের নামের পূর্বে ‘ইয়াং বারহোরমাত’ বা ‘সম্মানীয়’ পদবী ব্যবহার করেন যা সংক্ষেপে ওয়াই.বি নামে পরিচিত।

    নাউরু

    ১৮টি আসন নিয়ে নাউরু সংসদ গঠিত। এখানকার সংসদ সদস্যদের নামের সামনে ‘সম্মানীয়’ শব্দ প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়।

    পাকিস্তান

    পাকিস্তানে সংসদ সদস্য বলতে ‘ন্যাশনাল এসেম্বলী অব পাকিস্তান’ বা ‘কউমি এসেম্বলী’র সদস্যকে বুঝানো হয়ে থাকে। এই ন্যাশনাল এসেম্বলী বা জাতীয় সংসদ ইসলামাবাদ থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়।

    শ্রীলঙ্কা

    সার্কভূক্ত দেশের অন্যতম দেশ শ্রীলঙ্কায় সংসদ সদস্যগণ ১৯৭৮ সাল থেকে ‘পার্লামেন্ট অব শ্রীলঙ্কা’র সদস্য হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। এছাড়াও, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত ‘ন্যাশনাল স্টেট এসেম্বলী’, ১৯৪৭ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত ‘পার্লামেন্ট অব সিলোন’ নিম্নকক্ষের ‘হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভস্‌ অব সিলোনে’র সদস্যকে বুঝানো হয়ে থাকে।

    জিম্বাবুয়ে

    ‘হাউজ অব এসেম্বলী অব জিম্বাবুয়ে’ আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়ের প্রধান আইন সভা। আইন সভার সদস্যগণ সংসদ সদস্য নামে পরিচিত। সংসদের উচ্চ কক্ষের সদস্যবৃন্দ সিনেটর নামে পরিচিত।

    অন্যান্য পদ্ধতি

    সংসদ সদস্য শব্দটি বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে বিভিন্ন সংসদীয় গণতন্ত্রে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে যা ওয়েস্টমিনিস্টার পদ্ধতি অবলম্বন করে না।

    প্রতিনিধিত্বকারী দেশসমূহ

    নিম্নবর্ণিত দেশসমূহে সংসদীয় ব্যবস্থা বিরাজমান রয়েছে। ওয়েস্টমিনিস্টার পদ্ধতিতে একজন সংসদ সদস্য নির্দিষ্ট কিংবা নিজ এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে দেশের সংসদ কার্যালয়ে স্বীয় মতামত ব্যক্ত ও প্রতিফলন ঘটানোর সুযোগ লাভের অধিকারী।

    এন্টিগুয়া ও বারবুডা অস্ট্রেলিয়া আয়ারল্যান্ড ইরাক ইসরায়েল কানাডা গ্রেনাডা জ্যামাইকা টুভালু ডোমেনিকা ত্রিনিদাদ এন্ড টোব্যাগোথাইল্যান্ড নাউরু নিউজিল্যান্ড পাকিস্তান পাপুয়া নিউগিনি মালয়েশিয়া মাল্টা মৌরীতাস বাহামা বার্মুডা বাংলাদেশবার্বাডোজ বেলিজ ভারত ভানুয়াতু যুক্তরাজ্য সিঙ্গাপুর সেন্ট কিটস্‌ এন্ড নেভিস সেন্ট লুসিয়া সেন্ট ভিনসেন্ট এণ্ড দ্য গ্রেনাডাইনস্‌ সলোমন দ্বীপপুঞ্জ
  • শাসন

    শাসন

    শাসন ব্যবস্থা (এছাড়াও “শাসন“) হল সরকারের রূপ বা নিয়ম, সাংস্কৃতিক বা সামাজিক নিয়ম ইত্যাদির সেট যা একটি সরকার বা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম এবং সমাজের সাথে এর মিথস্ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। ইয়েলের অধ্যাপক জুয়ান জোসে লিঞ্জের মতে বর্তমানে তিনটি প্রধান ধরনের রাজনৈতিক শাসন রয়েছে: গণতন্ত্র, একচ্ছত্রবাদ এবং এই দুটির মধ্যে বসে কর্তৃত্ববাদ (হাইব্রিড শাসনের সাথে)।[১][২]

    শাসন

    ব্যবহার

    যদিও regime শব্দটি যেকোন ধরনের সরকারের প্রতিশব্দ হিসাবে উদ্ভূত হয়েছে, আধুনিক ব্যবহার এটিকে একটি নেতিবাচক অর্থ দিয়েছে, যা একটি কর্তৃত্ববাদী সরকার বা একনায়কত্বকে বোঝায়। ওয়েবস্টারের সংজ্ঞা বলে যে régime শব্দটি কেবল সরকারের একটি রূপকে বোঝায়,[৩] যেখানে অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধানে শাসনকে “একটি সরকার, বিশেষ করে কর্তৃত্ববাদী” হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।[৪]

    “শাসন” শব্দটির সমসাময়িক একাডেমিক ব্যবহার জনপ্রিয় এবং সাংবাদিকতার ব্যবহারের চেয়ে বিস্তৃত, যার অর্থ “সরকারের মধ্যে একটি মধ্যবর্তী স্তর (যা প্রতিদিনের সিদ্ধান্ত নেয় এবং পরিবর্তন করা সহজ) এবং রাষ্ট্রের (যা একটি জটিল আমলাতন্ত্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত) জবরদস্তিমূলক ফাংশনগুলির একটি পরিসর সহ)।”[৫] বৈশ্বিক অধ্যয়ন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে, শাসনের ধারণাটি আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির নাম দেওয়ার জন্যও ব্যবহৃত হয় (আন্তর্জাতিক শাসন দেখুন), যা জাতীয় সরকারগুলির নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে। কিছু লেখক এইভাবে প্রতিষ্ঠান এবং শাসনের মধ্যে বিশ্লেষণাত্মকভাবে পার্থক্য করেন এবং স্বীকার করেন যে তারা একে অপরের সাথে আবদ্ধ:

    আমরা যে প্রতিষ্ঠানগুলিকে বর্ণনা করি সেগুলি সর্বজনীনভাবে প্রণীত, অনুশীলন, পদ্ধতি এবং নিয়মগুলির তুলনামূলকভাবে স্থায়ী সংস্থা, ডব্লিউটিও-এর মতো আনুষ্ঠানিক আইনি সত্তা থেকে শুরু করে আরও অনানুষ্ঠানিক কিন্তু আইনগতভাবে চাপযুক্ত এবং উদার পুঁজিবাদী বাজারের মতো অনুশীলন এবং শাসনের স্থায়ী সেট। এখানে মূল বাক্যাংশগুলি হল ‘পাবলিকলি অ্যাক্টেড’ এবং ‘আপেক্ষিকভাবে স্থায়ী’। এই অর্থে ‘পাবলিকলি অ্যাক্টেড’ শব্দগুচ্ছটি সক্রিয় অভিক্ষেপ, আইনি অনুমোদন, এবং প্রায়শই নয়, একধরনের বিরোধিতাকে বোঝায়।[৬]

    এইভাবে শাসনগুলিকে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে প্রোটোকল এবং নিয়মগুলির সেট হিসাবে যেগুলি হয় প্রতিষ্ঠান বা প্রাতিষ্ঠানিক অনুশীলনগুলিতে এমবেড করা – আনুষ্ঠানিক যেমন রাষ্ট্র বা অনানুষ্ঠানিক যেমন “উদার বাণিজ্য শাসন” – যা প্রকাশ্যে প্রণীত এবং তুলনামূলকভাবে স্থায়ী।[৬]

  • রাষ্ট্রবিজ্ঞান

    রাষ্ট্রবিজ্ঞান

    রাষ্ট্রবিজ্ঞান (ইংরেজি: Political Science) সমাজবিজ্ঞানের একটি শাখাবিশেষ; যেখানে পরিচালন প্রক্রিয়া, রাষ্ট্র, সরকার এবং রাজনীতি সম্পর্কীয় বিষয়াবলী নিয়ে আলোকপাত করা হয়। এরিস্টটল রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে রাষ্ট্র সম্পর্কীয় বিজ্ঞান নামে উল্লেখ করেছেন।[১]

    রাষ্ট্রবিজ্ঞান

    উপ-শাখাসমূহ

    অধিকাংশ রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের নিম্নোক্ত এক বা একাধিক ক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছেন –

    ভারতীয় উপমহাদেশ

    প্রাচীন ভারতে ঋগ্বেদ, সংহিতা, ব্রাহ্মণ, মহাভারত এবং বৌদ্ধদের পালি শাস্ত্রে রাজনীতিবিদদের কথকতা উল্লেখ আছে। তক্ষশীলায় অবস্থানকারী চাণক্য ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক চিন্তাবিদ। তিনি অর্থশাস্ত্র রচনা করেন যাতে রাজনৈতিক চিন্তাধারা, অর্থনীতি এবং সামাজিক ভারসাম্যের কথা তুলে ধরেছেন। এতে মুদ্রা ব্যবস্থা ও আর্থিক নীতি, কল্যাণ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, যুদ্ধের আত্মরক্ষামূলক কলাকৌশল-সহ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদির কথা লিপিবদ্ধ রয়েছে। চাণক্য যুগের অবসানের দুই শতক পরবর্তীকালে রচিত মনুস্মৃতি গ্রন্থেও ভারতীয় রাজনীতির অন্যতম প্রামাণ্য বিষয় হিসেবে স্বীকৃত। যদিও বহু পাশ্চাত্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মনে করেন যে, প্রাচীন ভারতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান চর্চা ধর্মনিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে গড়ে ওঠেনি। এবিষয়ে বিখ্যাত অধ্যাপক ডানিং বলেছেন, “প্রাচ্যের আর্যরা তাঁদের রাষ্ট্রভাবনাকে ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতা থেকে মুক্ত করতে পারেননি।” তবে এ মতের বিরোধীতা করে বলা যায়, প্রাচীন ভারতে ধর্ম কেবলমাত্র পূজাপার্বণ ছিলনা, বরং ধর্ম বলতে বোঝাত, একপ্রকার জীবনচর্যা, যা মানুষ এবং সমাজের উন্নতি সাধন করে। প্রাচীন ভারতীয় রাষ্ট্রচিন্তার একটি উল্লেখযোগ্য উপাদান হল সপ্তাঙ্গ। কৌটিল্য তার অর্থশাস্ত্রে এবিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তার মতে, কোন রাষ্ট্রের মোট উপাদান হল সাতটি। যথাঃ- স্বামী, অমাত্য, জনপদ, কোষ, দুর্গ, দূরগ, মিত্র। কৌটিল্যর এই সপ্তাঙ্গ তত্ত্ব বর্তমান কালের বহু চিন্তাবিদকেও বিস্মিত করে।

    প্রাচীন ভারতের মতোই মধ্যযুগেও ভারতে রাষ্ট্রচিন্তার এক উল্লেখযোগ্য ধারা পরিলক্ষিত হয়। সুলতানী সাম্রাজ্যের মতোই মোঘল সাম্রাজ্যেও রাজনীতি এক বিশেষ প্রায়োগিক রূপলাভ করে। এ সময়ে আকবর, শাহজাহান, (একইসাথে শেরশাহ) প্রভৃতি বাদশাহদের পররাষ্ট্রনীতি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এসময়ে এক কেন্দ্রীভূত রাষ্ট্রব্যবস্থা যেমন গড়ে ওঠে, তার পাশাপাশি জায়গীরদারি ব্যাবস্থার মাধ্যমে অর্থনীতির বিকেন্দ্রীভবনও বহুলাংশে সম্ভবপর হয়। আবুল ফজল সহ আরও বহু লেখকের লেখা সেসময়কার রাষ্ট্রব্যাবস্থার প্রামান্য দলিল হয়ে রয়েছে।

    সাধারণভাবে ভারতে ইউরোপীয় বণিকশক্তি, পাশাপাশি রাজশক্তির আগমণের মাধ্যমেই আধুনিক যুগের সূচনা হয়েছে বলে মনে করা হয়। আধুনিক যুগের সূচনায় ভারতীয় রাজনীতি এক সম্পূর্ণ নতুন রূপ পরিগ্রহ করে। রাষ্ট্রব্যাবস্থার বিস্তার ঘটার পাশাপাশি তা আরও জটিল রূপলাভ করে। ভারতে বিদেশী সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসনের প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে ভারতীয় রাজনৈতিক চিন্তার যে কটি ধারা বিশেষ প্রবল রূপলাভ করে সেগুলি হলঃ-

    ১) সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা হিসেবে জাতীয়তাবাদের বিকাশ। এ প্রসঙ্গে বলা যেতে পারে, ইউরোপে জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটেছিল এক স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়। সে সময়কার আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিতে সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বুর্জোয়া অর্থনীতির বিকাশের এক হাতিয়ার হিসেবে। কিন্তু ভারতে জাতীয়তাবাদের বিকাশের পটভূমি সম্পূর্ণ পৃথক, যা পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতে জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রচিন্তার ক্ষেত্রে কয়েকজন পুরোধা ব্যক্তি হলেনঃ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, স্বামী বিবেকানন্দ প্রমূখ। এঁরা বিদেশী রাষ্ট্রের সম্পূর্ণ বিরোধীতা করে এক যথার্থ ভারতবর্ষের কল্পনা করেছিলেন।

    ২) উপনিবেশিক শক্তির সাহায্যে ভারতীয় সমাজের উন্নয়ন ঘটানোর প্রয়াস একদল চিন্তাবিদের কাজকর্মের মধ্যে প্রতিফলিত হয়। যেমন, রাজা রামমোহন রায়।

    ৩) জাতীয়তাবাদের সংকীর্ন গন্ডীকে পেরিয়ে এসময় কতিপয় ভারতীয় দার্শনিক আন্তর্জাতিকতাবাদের প্রশস্ত পথেই মানবমুক্তির কথা বলেন। এদের অন্যতম হলেন রবীন্দ্রনাথ।

    ৪) বিংশ শতকের বিশের দশকের গোড়া থেকেই সোভিয়েত বিপ্লবের সাফল্যে অনুপ্রানিত হয়ে মানবেন্দ্রনাথ রায়, অবনী মুখার্জী প্রমুখেরা মার্ক্সবাদী রাজনীতির একটি বিকল্প ধারা গড়ে তোলেন।

    ৫) এর পাশাপাশি বিশেষভাবে উল্লেখ করা দরকার উপনিবেশিক ভারতে ধর্মের ভিত্তিতেও রাজনীতির তথা রাষ্ট্রচিন্তার এক ধারা লক্ষ্য করা যায়, যা পরবর্তীকালে প্রবল হয়ে ওঠে। এক্ষেত্রে সৈয়দ আহমেদ খান, সাভারকার, গোলয়ালকার প্রমুখের নাম এবং ধর্মীয় সংগঠন হিসেবে মুসলিম লিগ, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ প্রভৃতির কথা উল্লেখ করা যায়।

    আরও পড়ুন

  • রাজনৈতিক অর্থনীতি

    রাজনৈতিক অর্থনীতি

    রাজনৈতিক অর্থনীতি বা রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি হল এবং আইন, প্রচলিত পদ্ধতি ও সরকারের সঙ্গে উৎপাদন ও ক্রয় বিক্রয়ের সম্পর্ক বিষয়ক অধ্যয়নের জন্য ব্যবহৃত প্রধান পরিভাষা।

    এই শাস্ত্রটি বিভিন্ন রাষ্ট্রের অর্থনীতির পাঠশাস্ত্র হিসেবে ১৭শ শতকে বিকাশ লাভ করে যা সরকার বিষয়ে তত্ত্বের মাঝে সম্পদের মালিকানার তত্ত্বকে অন্তর্ভুক্ত করে। [১]

    রাজনৈতিক অর্থনীতি

    কিছু রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ শ্রমভিত্তিক মূল্যের তত্ত্বের প্রস্তাব করেন (জন লক কর্তৃক প্রবর্তিত, এডাম স্মিথকার্ল মার্ক্স কর্তৃক বিকশিত), যাতে বলা হয়, শ্রম হল মূল্যের প্রকৃত উৎস। অনেক রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ আবার প্রযুক্তির রাতারাতি উন্নয়নের দিকে আলোকপাত করেছেন, যার ভূমিকা অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অতীতের তুলনায় অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

    ১৯ শতকে, “রাজনৈতিক অর্থনীতি” পরিভাষাটি অর্থনীতি নামক পরিভাষা দ্বারা স্থানান্তরিত হয়, এবং পরিভাষাটি পরিবর্তন করেছিলেন এমন কিছু লোক, যারা উৎপাদন ও ভোগের মধ্যকার সম্পর্কের ভিত্তির পরিবর্তে গাণিতিক ভিত্তিতে অর্থ বিষয়ক অধ্যয়নকে স্থাপন করতে চেয়েছিলেন।

    বর্তমানে, রাজনৈতিক অর্থনীতি অর্থ হল ভিন্ন কিন্তু পারস্পারিকভাবে-সম্পর্কিত অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক আচরণের অধ্যয়নের আঙ্গিকসমূহ, যার সীমা হল অন্যান্য ক্ষেত্রের সঙ্গে সমন্বিত অর্থনীতি থেকে শুরু করে প্রথাগত অর্থনীতিকে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করা বিভিন্ন মৌলিক স্বতঃসিদ্ধ চিন্তার ব্যবহার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে থাকে।

  • তত্ত্বাবধায়ক সরকার

    তত্ত্বাবধায়ক সরকার

    তত্ত্বাবধায়ক সরকার হল এমন একটি অস্থায়ী অ্যাডহক (বিশেষ ও পূর্বপরিকল্পনাবিহীন) সরকার যা একটি নিয়মিত সরকার নির্বাচিত বা গঠিত না হওয়া পর্যন্ত একটি দেশের কিছু সরকারি দায়িত্ব ও কার্য সম্পাদন করে। নির্দিষ্ট অনুশীলনের উপর নির্ভর করে, এটি সাধারণত এলোমেলোভাবে নির্বাচিত বা সংসদের অনুমোদিত সদস্য বা বিদায়ী সদস্যদের নিয়ে থাকে, যতক্ষণ না তাদের বরখাস্ত করা হয়।

    তত্ত্বাবধায়ক সরকার

    প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকারসমূহ সাধারণত তাদের কার্যে সীমিত থাকে, সত্যিকারের শাসন ও নতুন আইনের প্রস্তাব না করে শুধুমাত্র চলমান স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য কাজ করে। স্থায়ী সরকারের পরিবর্তে নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অস্থায়ীভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়, কারণ উপরোক্ত কার্যাবলী অনুশীলন করার জন্য এই সরকারের কোন বৈধ ম্যান্ডেট (নির্বাচনী অনুমোদন) থাকে না।