কাশাফ নদী বা কাশাফরুদ (পার্শি کشف, কা-শা-ফ, বাংলা সমতুল্য শব্দ ‘কচ্ছপ’; পার্শি ভাষায় ‘রুদ’ শব্দের অর্থ ‘নদী’) হল উত্তরপূর্ব ইরানের একটি নদী। রাজাভি খোরসন প্রদেশের বিনালুদ পর্বতশ্রেণীতে উৎপন্ন এই নদীটি প্রথমে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে ইরান-তুর্কমেনিস্তান সীমানায় এসে উপস্থিত হয়েছে ও শেষে ইরান-তুর্কমেনিস্তান যৌথ বাঁধের ৫ কিলোমিটারের মধ্যেই আফগানিস্তান থেকে আসা উত্তরমুখী হরি নদীতে মিলিত হয়েছে। সবমিলিয়ে এই নদীর প্রবাহপথ ২৯০ কিলোমিটার লম্বা।
ইরানে এই নদীর তীরে দুটি বিখ্যাত ও প্রাচীন শহর গড়ে উঠেছে। এদের একটি চেনারান ও অন্যটি রাজাভি খোরসন প্রদেশের রাজধানী ও ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর[১]মাশহাদ। এছাড়া এই নদীর উপত্যকা ইরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক অঞ্চল হিসেবেও গণ্য করা হয়ে থাকে। নব্যপ্রস্তর যুগের অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান এই অঞ্চলে পাওয়া গেছে। এই অঞ্চলে প্রাপ্ত ৮০ হাজার বছরেরও বেশি পুরনো এইসব প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি ইরানে পাওয়া এ’ পর্যন্ত সবচেয়ে প্রাচীন মনুষ্যবসতির সাক্ষ্য বহন করে।[২]
কার্মান রেখা পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ১০০ কিমি (৬০ মাইল) উপরে একটি কল্পিত রেখা, যা সাধারণত পৃথিবীর বায়ূমন্ডল হতে মহাকাশকে আলাদা করতে ব্যবহৃত হয়।[২] এই সংজ্ঞাটি বিমানচালনাবিদ্যা (aeronautics ) এবং নভশ্চরণবিদ্যা (astronautics) বিষয়ে আন্তর্জাতিক মান নির্ধারক ও তথ্য সংরক্ষক সংস্থা Fédération Aéronautique Internationale (FAI) দ্বারা গ্রহণ করা হয় ।
হাঙ্গেরীও-আমেরিকান প্রকৌশলী এবং পদার্থবিজ্ঞানীথিওডোর ভন্ কার্মান (১৮৮১-১৯৬৩) এর নাম অনুসারে এই নামকরণ করা হয়। তিনি প্রথম গনণা করে দেখান যে, এই সীমায় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল এতই পাতলার যে, বিমান চালানোর সম্ভব নয়। কেননা, সেক্ষেত্রে একটি বিমানকে বাতাসের উপর ভরদিয়ে চলাচলের জন্য এর বেগ পৃথিবীর আবর্তন গতির সমান হতে হবে।
বিমানচালনাবিদ্যা — FAI ক্ষেত্রে, পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ১০০ কিমি মধ্যে বিমান চলাচল, সকল ধরনের বিমান মহড়া।
নভশ্চরণবিদ্যা — FAI ক্ষেত্রে, পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ১০০ কিমি বাহিরের সকল ধরনের কর্মকাণ্ড।
কর্কটক্রান্তি বা কর্কটক্রান্তি রেখা (কর্কট মানে কাঁকড়া) বা উত্তর বিষুব পৃথিবীর মানচিত্রে অঙ্কিত প্রধান পাঁচটি অক্ষাংশের একটি। এটি বিষুবরেখা হতে উত্তরে অবস্থিত এবং ২৩ ডিগ্রী ২৬ মিনিট ২২ সেকেন্ড অক্ষাংশ বরাবর কল্পিত একটি রেখা।
হেলে থাকা বিষুব রেখা
পৃথিবী কক্ষতলের উপর লম্বভাবে থাকার বদলে একটু হেলে থাকে। (সারা বছর একই দিকে হেলে থাকে, সবসময় সূর্যের দিকে নয়- এ জন্য ঋতু পরিবর্তন হয় – বছরের অর্ধেক সময় উত্তর মেরু সূর্যের দিকে ফিরে থাকে)। কক্ষতলের উপর লম্বের থেকে আহ্নিক অক্ষের এই হেলে থাকা অর্থাৎ অবনতি কোণের পরিমাণ মোটামুটি ২৩ ডিগ্রী ২৬ মিনিট ২২ সেকেন্ড (~২৩.৪৪ ডিগ্রী)। তাই কর্কট সংক্রান্তির (June Solstice) দিন অর্থাৎ সূর্যেরউত্তরায়ণের সর্বোচ্চ দিন (যেদিন উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে সবচেয়ে বেশি হেলে থাকে[১] এবং এ গোলার্ধে দিবালোক সবচেয়ে বেশীক্ষণ থাকে) সূর্য যে অক্ষাংশ রেখায় লম্বভাবে আলোকপাত করে সেই ২৩ ডিগ্রী ২৬ মিনিট ২২ সেকেন্ড অক্ষাংশ রেখাই হল কর্কটক্রান্তি রেখা।
২৩ ডিগ্রী ২৬ মিনিট ২২ সেকেন্ড অক্ষাংশ রেখাটিকে কর্কটক্রান্তি রেখা বলা হলেও লম্ব আলোকপাতে আসল অবস্থান নির্ভর করে পৃথিবীর হেলে থাকার কৌণিক পরিমাণের উপর। আর সেই কোণটি প্রতি ৪১,০০০ বছরের একটি চক্রাকার পর্যায়ক্রমে ২১.৫ থেকে ২৪.৫ ডিগ্রীর মধ্যে বদলাতে থাকে। সেই হিসাবে বর্তমান পর্যায়ে কর্কটক্রান্তি রেখার অবস্থান প্রতি বছর আধ সেকেন্ড করে কমে আসছে। এছাড়া ধীর পরিবর্তন ছাড়াও আহ্নিক অক্ষটি ঘুর্ণণরত লাট্টুর মতই স্থায়ী না থেকে প্রিসেশন নামে একটি বলয়াকার গতি এবং ন্যুটেশন নামে একটি দোদুল্যমান গতি পরিদর্শন করে। ন্যুটেশনের পর্যায়কাল পৃথিবীর ক্ষেত্রে ১৮.৬ বছর এবং কৌণিক পরিমাণ প্রায় সাড়ে নয় সেকেন্ড। রেখাটি নির্দিষ্ট নয় এবং এটি প্রত্যেক বছর ১৫ মিটার(০.৪৮৬″) করে দক্ষিণদিকে সরে যাচ্ছে। রেখাটি ১৯১৭ সালে ছিল ২৩° ২৭′ এবং ২০৪৫ সালে ২৩° ২৬’অক্ষাংশে পৌঁছাবে।[২]
নামের ইতিহাস
এই নামকরণ হয় কারণ তখন কর্কট সংক্রান্তির দিন সূর্য কর্কট রাশিতে অবস্থান করছিল। কিন্তু প্রিসেশনের কারণে বর্তমানে কর্কট সংক্রান্তির দিন সূর্য আসলে মিথুন রাশিতে অবস্থান করে।
রেখাটির দৈর্ঘ্য ৩৬,৭৮৭.৫৫৯ কিমি বলে ধরা হয় যদিও উপরোল্লিখিত কারণে এত সঠিক মাপ বলা সম্ভব নয়। আন্তর্জাতিক বায়ুভ্রমণ ফেডারেশনের (Fédération Aéronautique Internationale) নিয়ম অনুসারে পৃথিবী প্রদক্ষিণকারী বায়ু ভ্রমণ দাবী করতে হলে কমপক্ষে এই দৈর্ঘ্য অতিক্রম করতে হবে, সবকটি দ্রাঘিমারেখাকে পার হতে হবে এবং যে বিমান বন্দরে যাত্রা শুরু সেই একই বিমানবন্দরে অবতরণ করতে হবে।
চীনদেশের শীতল পার্বত্যাঞ্চল বাদ দিলে, এবং পূর্বাংশে অবস্থিত উপকূলীয় এলাকা যেখানে অরোগ্রাফিক বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে সেগুলি ব্যতীত, কর্কটক্রান্তি রেখায় অবস্থিত অঞ্চলগুলি সাধারণত উষ্ণ ও শুষ্ক হয়ে থাকে। [৩]
ওজোন স্তর (Ozone layer) হচ্ছে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের একটি স্তর যেখানে তুলনামূলকভাবে বেশি মাত্রায় ওজোনগ্যাস থাকে। এই স্তর থাকে প্রধানতঃ স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের নিচের অংশে, যা ভূপৃষ্ঠ থেকে কমবেশি ২০-৩০ কিমি উপরে অবস্থিত। এই স্তরের পুরুত্ব স্থানভেদে এবং মৌসুমভেদে কমবেশি হয়। [১] O2 + ℎνuv → 2O O + O2 ↔ O3
বায়ুমণ্ডলে ওজোনের প্রায় ৯০ শতাংশ স্ট্রাটোস্ফিয়ারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওজোন কেন্দ্রীকরণ প্রায় ২০ এবং ৪০ কিলোমিটার (৬৬,০০০ এবং ১৩১,০০০ ফুট), তারা যেখানে মিলিয়ন প্রতি প্রায় ২ থেকে ৮ অংশ থেকে পরিসীমার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হয়। যদি এই ওজোনের সবটুকু অংশ সমুদ্রতল এর বায়ু চাপ দ্বারা সংকুচিত করা হয় তাহলে এটি শুধুমাত্র ৩ মিলিমিটার (১/৮ ইঞ্চি) পুরু হবে!ওজন গ্যাসের ঘনত্ব মাপা হয় DU(ডবসন ইউনিট )-এ |বিজ্ঞানী ডবসন আবিষ্কৃত স্পেক্ট্রোফটোমেটের এর সাহায্যে এই ঘনত্ব পরিমাপ করা হয় | নিরক্ষীয় গ্যাসের উপর ওজন গ্যাসের ঘনত্ব 150DU, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের ওপর 350DU, মেরু ও উপমেয় অঞ্চলের ওপর 450DU| ওজোন স্তরের বিনাশের কারণ:-
বিজ্ঞানীদের হিসাব অনুযায়ী 1970 সালের পর থেকে স্ট্রাটোস্ফিয়ার এর মোট ওজনের প্রায় 4% ধ্বংস হয়েছে| উভয় মেরুর দিকে ধ্বংসের মাত্রা বেশি ওজন স্তর বিনাশের কারণ গুলিকে দুটি স্তরে ভাগ করা হয়| যথা:-1) প্রাকৃতিক ঘটনা:- অগ্নুৎপাত, বজ্রপাত প্রভৃতি প্রাকৃতিক ঘটনায়়় ওজোন স্তরে প্রাকৃতিক ঘটনায় ওজোন স্তরের কিছুটা নষ্ট হয়|2) অতিবেগুনি রশ্মির সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া :- অতিবেগুনি রশ্মি অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ওজন অণুর ভেঙ্গে অক্সিজেন অণু ও পরমাণু উৎপন্ন করে|3) সূর্য রশ্মির পরিমাণ বৃদ্ধি:- প্রতি 10 থেকে 15 বছর অন্তর সূর্য রশ্মির পরিমাণ বাড়ে |সূর্য থেকে আগত ক্ষুদ্র তরঙ্গ বায়ুমণ্ডলের নাইট্রোজেন নাইট্রাস অক্সাইড এ পরিণত হয় |নাইট্রাস অক্সাইড রাসায়নিক বিক্রিয়ার সাহায্যে ওজন স্তর রক্ষা করে|4)
বায়ু মন্ডলের ঊর্ধ্ব স্তরে বায়ুর সঞ্চালন
–
ইতিহাস
ফরাসী পদার্থবিদ চার্লস ফ্যব্রি এবং হেনরি বুইসন ১৯১৩ সালে ওজোন স্তর আবিষ্কার করেন। পরবর্তীতে ব্রিটিশআবহাওয়াবিদ জি এম বি ডবসন ওজোনস্তর নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেন। ১৯২৮ সাল থেকে ১৯৫৮ সালের মধ্যে তিনি ওজোন পর্যবেক্ষণ স্টেশনসমূহের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেন।
গুরুত্ব
ওজোনস্তরে ওজোনের ঘনত্ব খুবই কম হলেও জীবনের জন্যে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি এটি শোষণ করে নেয়। ওজোন স্তর সূর্যের ক্ষতিকর মধ্যম মাত্রার(তরঙ্গদৈর্ঘ্যের) শতকরা ৯৭-৯৯ অংশই শোষণ করে নেয়, যা কিনা ভূ-পৃষ্ঠে অবস্থানরত উদ্ভাসিত জীবনসমূহের সমূহ ক্ষতিসাধন করতে সক্ষম। মধ্যম তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সূর্যের এই অতিবেগুণী রশ্মি মানব দেহের ত্বক এমনকি হাড়ের ক্যান্সার সহ অন্যান্য মারাত্মক ব্যাধি সৃষ্টিতে সমর্থ। এই ক্ষতিকর রশ্মি পৃথিবীর জীবজগতের সকল প্রাণের প্রতি তীব্র হুমকি স্বরূপ। বায়ুমন্ডলের ওজোন স্তর প্রতিনিয়তই এই মারাত্নক ক্ষতিকর অতিবেগুণী রশ্নিগুলোকে প্রতিহত করে পৃথিবীর প্রাণিকুলকে রক্ষা করছে।
ওজোন স্তরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ভূমিকার জন্য জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ওজোন লেয়ার সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে সেপ্টেম্বরের ১৬ তারিখটি মনোনীত করেছে।
UV-B energy levels at several altitudes. Blue line shows DNA sensitivity. Red line shows surface energy level with 10% decrease in ozone
Levels of ozone at various altitudes and blocking of different bands of ultraviolet radiation. Essentially all UVC (100–280 nm) is blocked by dioxygen (from 100–200 nm) or else by ozone (200–280 nm) in the atmosphere. The shorter portion of the UV-C band and the more energetic UV above this band causes the formation of the ozone layer, when single oxygen atoms produced by UV photolysis of dioxygen (below 240 nm) react with more dioxygen. The ozone layer also blocks most, but not quite all, of the sunburn-producing UV-B (280–315 nm) band, which lies in the wavelengths longer than UV-C. The band of UV closest to visible light, UV-A (315–400 nm), is hardly affected by ozone, and most of it reaches the ground. UVA does not cause skin reddening, but there is evidence that it causes long-term skin damage.
ঐতিহাসিক এই অঞ্চলটি ইংরেজি ভাষায় “লিভ্যান্ট” বা “লেভ্যান্ট” (Levant) ও আরবি ভাষায় “আশ-শাম” (ٱلشَّام) নামে পরিচিত। ইংরেজি “লিভ্যান্ট” কথাটি ফরাসি ভাষার শব্দ “ল্যভঁ” (Levant) থেকে এসেছে, যার অর্থ “উদীয়মান”। ইউরোপের দৃষ্টিকোণ থেকে পূর্বদিকে অবস্থিত এই অঞ্চল থেকে সূর্যোদয় হত বলে ইউরোপীয়রা এই অঞ্চলটির এরূপ নামকরণ করেছিল। অন্যদিকে আরব উপদ্বীপের লোকেরা সূর্যোদয়ের দিকে অর্থাৎ পূর্বদিকে মুখ করলে হাতের বামদিকে অর্থাৎ উত্তর দিকে পড়া অঞ্চলগুলিকে “শাম” শব্দটি দিয়ে নির্দেশ করত। বর্তমানে “শাম” বলতে মূলত বৃহত্তর সিরিয়া অঞ্চলকে বোঝানো হয়।
আরবিতে “আল-মাশরিক” (যেখানে সূর্য উদিত হয়) বলে আরেকটি কাছাকাছি পদবন্ধ আছে, যা দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের অপেক্ষাকৃত বৃহত্তর একটি ভৌগোলিক অঞ্চলকে নির্দেশ করা হয় এবং যেটিতে ঐতিহাসিক পূর্ব -ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ছাড়াও আরব বিশ্বের পূর্বভাগের আরও অন্যান্য দেশ (যেমন ইরাক) অন্তর্ভুক্ত। বৃহত্তর অর্থে মাশরিক অঞ্চলে সৌদি আরব, মিশর, সুদান এবং আরব উপদ্বীপের অন্যান্য ক্ষুদ্র দেশগুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ঐতিহাসিক পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দক্ষিণের অংশবিশেষকে প্রাচীন মিশরীয় ও হিব্রু গ্রন্থ (বিশেষ করে হিব্রু বাইবেল বা খ্রিস্টানদের ধর্মপুস্তক বাইবেলের পুরাতন নিয়ম অংশে) “কনান” (ইংরেজি উচ্চারণে কেনান) নামে উল্লেখ করা হয়েছে, যেটি বর্তমান ইসরায়েল, আধুনিক ফিলিস্তিনি পশ্চিম তীর ও গাজা ভূখণ্ডদ্বয়, এবং লেবানন ও সিরিয়ার দক্ষিণের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত। কনানকে ঐসব ধর্মগ্রন্থে ইহুদিদের বা ইসরায়েলি গোত্রের লোকদের ঈশ্বর কর্তৃক প্রতিজ্ঞাত দেশ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে এবং ঐসব পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী ইসরায়েলিরা খ্রিস্টপূর্ব ২য় সহস্রাব্দের শেষদিকে (আজ থেকে ৩ হাজার বছরেরও আগে) কনান বিজয় করে সেখানে প্রাচীন ইসরায়েল দেশ প্রতিষ্ঠা করেছিল। এই ব্যাপারটি আধুনিক রাজনৈতিক সিয়োনবাদ বা জায়নবাদের কেন্দ্রীয় একটি মতবিশ্বাস, যার শেষ পরিণামে আধুনিক ইসরায়েল রাষ্ট্রটির উৎপত্তি ঘটেছে।
উপসাগর (ইংরেজি: Bay, বে) তিন দিক স্থল দ্বারা বেষ্টিত একটি জলভাগ। উপসাগরের জল সাধারণত শান্ত হয়। বড় বড় উপসাগরকে ইংরেজিতে গালফ (gulf) বলা হয়। আবার ক্ষুদ্রাকৃতির খাড়া পাড় বিশিষ্ট উপসাগর বা সমুদ্রের খাঁড়িগুলি ইংরেজিতে ফ্যোর্ড (fjord, ইংরেজি: /ˈfjɔːrd/ (শুনুন) or /fiˈɔːrd/ (শুনুন)) নামেও পরিচিত। সাধারণত ছোটো ছোটো উপসাগরগুলি সৃষ্টি হয় নরম শিলা বা মাটি ঢেউয়ের দ্বারা অপসারিত হয়ে। শক্ত শিলাগুলি ক্ষয়প্রাপ্ত হয় অনেক দেরীতে। ফলে অন্তরীপ সৃষ্টি হয়। উপসাগরগুলিতে মাছ ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী দেখা যায়। আবার উপসাগরগুলি অন্য কোনো উপসাগরের সঙ্গে সংযুক্তও হতে পারে (উদাহরণ স্বরূপ, জেমস উপসাগরহাডসন উপসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত। বঙ্গোপসাগর ও হাডসন উপসাগরের মতো বৃহদাকার উপসাগরগুলিতে সামুদ্রিক ভূবিদ্যাগত বৈচিত্র্য চোখে পড়ে।
উপনদী হলো জল-বিভাজিকার একটি প্রকরণ। বৃহদায়তন নদীর একটি ক্ষুদ্রতর ধারা এসকল উপনদী; কয়েকটি উপনদী মিলিত হয় এক একটি বৃহদাকার নদীর সাথে।
ব্যুৎপত্তি
যে সকল নদী কোন একটি উৎস হতে উৎপত্তি হয়ে কিছু দূরত্ব অতিক্রম করে অপর একটি নদীতে পতিত হয় তাকে সেই নদীর (যে নদীতে পতিত হয়েছে) উপনদী বলে।
কিছু উপনদীর উদাহরণ
বাংলাদেশে প্রচুর উপনদী রয়েছে; যেমন: তিস্তা, ধরলা, করতোয়া, আত্রাই,সুবর্ণশ্রী ইত্যাদি নদীগুলো উৎসস্থল থেকে প্রবাহিত হয়ে যমুনা নদীতে গিয়ে মিশেছে; তাই এরা যমুনা নদীর উপনদী।[১]
ভৌগোলিকভাবে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ রস সাগর ও ওয়েডেল সাগরের মাঝে ট্রান্স-অ্যান্টার্কটিক পর্বতমালা দ্বারা দুটি অসমান অংশে বিভক্ত হয়েছে। পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা ও পূর্ব অ্যান্টার্কটিকা, মূলমধ্যরেখার সাপেক্ষে যথাক্রমে পূর্ব ও পশ্চিম গোলার্ধের সাথে অনেকটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই নামকরণকে অনেকে ইউরোকেন্দ্রিক পক্ষপাতদুষ্ট বলে গণ্য করেন, যার ফলে বিকল্প নাম হিসেবে ‘ক্ষুদ্রতর অ্যান্টার্কটিকা’ ও ‘বৃহত্তর অ্যান্টার্কটিকা’ কে অনেক সময় প্রাধান্য দেয়া হয়। অ্যান্টার্কটিকার মূল ভূখণ্ডের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা ও বাকি দুই-তৃতীয়াংশ পূর্ব অ্যান্টার্কটিকার অন্তর্ভুক্ত। ক্ষুদ্রতর পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা পশ্চিম অ্যান্টার্কটিক হিম আচ্ছাদন দ্বারা আবৃত। এই হিম আচ্ছাদন কিছু উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে কারণ এটি ধসে পড়ার ক্ষুদ্র সম্ভাবনা রয়েছে। যদি তা ঘটে তবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা খুব অল্প সময়ের মাঝেই কয়েক মিটার বৃদ্ধি পাবে।
আগ্নেয়গিরি
পর্যবেক্ষিত আগ্নেয় গ্যাসের উপস্থিতি ও অপেক্ষাকৃত সাম্প্রতিককালে জমা হওয়া অগ্ন্যুৎপাতজাত প্রস্তরখণ্ড বিশ্লেষণের ভিত্তিতে অ্যান্টার্কটিকার মূল ভূখণ্ডে চারটি আগ্নেয়গিরিকে সক্রিয় বলে মনে করা হয়। এগুলো হল: মেলবোর্ন পর্বত (২,৭৩০ মি) (৭৪°২১’দ., ১৬৪°৪২’পূ.), একটি যৌগিক আগ্নেয়গিরি; বার্লিন পর্বত (৩,৫০০ মি) (৭৬°০৩’দ., ১৩৫°৫২’প.), যৌগিক আগ্নেয়গিরি; কফম্যান পর্বত (২,৩৬৫ মি) (৭৫°৩৭’দ., ১৩২°২৫’প.), যৌগিক আগ্নেয়গিরি; এবং হ্যাম্পটন পর্বত (৩,৩২৫ মি) (৭৬°২৯’দ., ১২৫°৪৮’প.), একটি আগ্নেয়গিরিকুন্ড। সমুদ্রতীরাতিক্রান্ত দ্বীপসমূহে কয়েকটি আগ্নেয়গিরিতে পূর্ব সক্রিয়তা নথিভুক্ত করা হয়েছে। যেমন: এরেবাস পর্বত (৩,৭৯৫ মি), ১০ টি জ্ঞাত অগ্ন্যুৎপাত ও ১ টি ধারণাকৃত অগ্ন্যুৎপাত রস দ্বীপে অবস্থিত একটি যৌগিক আগ্নেয়গিরি। মহাদেশের অপর প্রান্তে, ডিসেপশন দ্বীপ (৬২°৫৭’দ., ৬০°৩৮’প.), ১০ টি জ্ঞাত অগ্ন্যুৎপাত ও ৪ টি ধারণাকৃত অগ্ন্যুৎপাত বিশিষ্ট এই আগ্নেয়গিরিকুন্ডটি সবচেয়ে সক্রিয় রয়েছে। ব্যালেনি দ্বীপপুঞ্জেরবাকল দ্বীপ (৬৬°৫০’দ., ১৬৩°১২’পূ.), দক্ষিণ শেটল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জেরপেঙ্গুইন দ্বীপ (৬২°০৬’দ., ৫৭°৫৪’প.), পলেট দ্বীপ (৬৩°৩৫’দ., ৫৫°৪৭’প.), এবং লিন্ডেনবার্গ দ্বীপ (৬৪°৫৫’দ., ৫৯°৪০’প.) – এগুলোকেও সক্রিয় বলে ধারণা করা হয়।
অ্যান্টার্কটিকায় বসতি স্থাপন বলতে অ্যান্টার্কটিকামহাদেশে সপরিবারে স্থায়ী মানব বসতি গড়ার কথা বোঝানো হয়না। বর্তমানে শুধু কিছুসংখ্যক বিজ্ঞানী ও গবেষক অস্থায়ীভাবে সেখানে বসবাস করেন। অ্যান্টার্কটিকা পৃথিবীর একমাত্র মহাদেশ যেখানে কোন আদিবাসী বাসিন্দা নেই। বর্তমানে সেখানে প্রায় ৭০ টি ঘাঁটিতে (৪০ টি সারা বছর জুড়ে ও ৩০ টি শুধু গ্রীষ্মকালে) ৩০ টি দেশের বিজ্ঞানী ও কর্মচারী বসবাস করেন। অ্যান্টার্কটিকার আনুমানিক জনসংখ্যা গ্রীষ্মকালে ৪০০০ ও শীতকালে ১০০০ জন। এ পর্যন্ত অ্যান্টার্কটিকায় অন্তত ১১ বার টিবশিশু জন্মগ্রহণের দৃষ্টান্ত রয়েছে, ৮ টি (প্রথমটি সহ) আর্জেন্টিনার এসপেরাঞ্জ়া ঘাঁটিতে এবং ৩ টি চিলির প্রেসিদেন্তে এদুয়ার্দো ফ্রেই মন্তাল্ভা ঘাঁটিতে।
প্রতিবন্ধকতাসমূহ
আর্কটিকের জীবনধারার সাথে অ্যান্টার্কটিকার তুলনা
অতীতে বসতি স্থাপনের জল্পনা
১৯৫০ এর দশকে একটি সাধারণ ধারণা ছিল কাচের গম্বুজের মাঝে আবদ্ধ নগরের মাধ্যমে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশে বসতি গড়ে তোলা সম্ভব। বাহ্যিক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নগরে শক্তির উৎস এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের উপায় হবে। অ্যান্টার্কটিকার ৬ মাস ব্যাপী রাতের বেলায় গম্বুজের কেন্দ্রীয় মিনারে একটি শক্তিশালী আলোর উৎস একটি কৃত্রিম সূর্য হিসেবে কাজ করবে বলে প্রস্তাবিত হয়েছিল। এই দৃশ্যকল্পে অ্যান্টার্কটিকার সাথে বহির্বিশ্বে নিয়মিত বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং অ্যান্টার্কটিকার হিম আচ্ছাদন খনন করে খনিজ সম্পদ আহরণের শহর স্থাপন করার কথাও ভাবা হয়; তবে, শক্তি এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকার সংশ্লিষ্ট সমস্যা আছে। ম্যাকমার্ডো কেন্দ্রের পারমাণবিক চুল্লীটি পরিবেশ দূষণের উৎস হয়ে ওঠায় অনেক আগেই তা বন্ধ করে দেয়া হয়।[১]অ্যান্টার্কটিক চুক্তি ব্যবস্থা, যা ধারাবাহিক কিছু আন্তর্জাতিক চুক্তির সমষ্টি, তা অনুসারে বর্তমানে এন্টার্কটিকায় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখা হয়। এটি পরিবর্তন বা পরিত্যক্ত হলে তবেই বৈধভাবে অ্যান্টার্কটিকায় বড় মাপের বসতি স্থাপন করা যাবে। অপরপক্ষে, অ্যান্টার্কটিকায় স্থায়ী বসতি স্থাপনের অসাধ্যতাই এই ভূখণ্ডের সকল দাবীর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভে ব্যর্থতার কারণ।[২]
গম্বুজ নগর
ভূমিতিক গম্বুজের বিকাশ সাধনকারী স্থপতি বাকমিন্স্টার ফুলার, অ্যান্টার্কটিকায় গম্বুজ নগর তৈরির সম্ভাবনা উত্থাপন করেন যার মাঝে নিয়ন্ত্রিত জলবায়ুতে স্থাপনা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।[৩] ১৯৬৫ সালে গম্বুজ নগর নির্মাণের উপর তার প্রথম প্রকাশিত নির্দিষ্ট প্রস্তাবনায় তিনি অ্যান্টার্কটিকাকে এমন একটি প্রকল্পের সম্ভাব্য প্রথম স্থান হিসেবে আলোচনা করেন।[৪]আমুন্ডসেন-স্কট কুমেরু কেন্দ্রের দ্বিতীয় ঘাঁটিটি (১৯৭৫-২০০৩ পর্যন্ত পরিচালিত) তার এই ধারণাটির একটি ক্ষুদ্রতর সংস্করণ; এটি শুধুমাত্র কয়েকটি বৈজ্ঞানিক ভবন আবৃত করার মত বড়। ১৯৭১ সালে জর্মন স্থপতি ফ্রেই ওটোর নেতৃত্বে একটি দল ২ কিমি চওড়া ও ৪০,০০০ বাসিন্দা ধারণক্ষমতা বিশিষ্ট, বায়ু-অবলম্বিত নগর গম্বুজ তৈরির সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করে।[৫] কিছু গবেষক সম্প্রতি ধারণাটি হালনাগাদ করার চেষ্টা করেছেন।[৬]
গৃহাভ্যন্তরে জলচাষ ও মাছের চাষ
বিদ্যুৎ উৎপাদন
অস্ট্রেলীয় মসন স্টেশন এর পেছনে ডেভিড পর্বতমালা। স্টেশনের কয়েকটি বায়ুকল ছবিতে দৃশ্যমান।
অ্যান্টার্কটিকায় গ্রীষ্মকালীন ৬ মাস মেরুদিবস হওয়ার কারণে এ সময়ে সৌরশক্তি ব্যবহার করে নীরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। অ্যান্টার্কটিকায় সৌর প্যানেল ব্যবহার করে জাপানের শৌওয়া স্টেশন, ব্রিটিশ রথেরা গবেষণা কেন্দ্র[৭] ও রুমানীয় লাও-রাকোভিৎস স্টেশনে[৮] গ্রীষ্মকালীন বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। শীতকালীন ৬ মাস মেরুরাত্রির সময়ে সৌর বিকিরণের অনুপস্থিতিতে প্রধানত বায়ুশক্তি ব্যবহার করে, এবং ভূ-তাপীয় শক্তি ব্যবহার করে বছর জুড়ে অ্যান্টার্কটিকায় নির্ভরযোগ্যতার সাথে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। সকল মহাদেশের মধ্যে অ্যান্টার্কটিকায় বায়ুপ্রবাহের গড় গতি সর্বাধিক[৯] এবং শীতল নিম্নপ্রবাহী বায়ু এ মহাদেশে খুব সাধারণ ঘটনা হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বায়ুশক্তির ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত শীতকালে নিম্নপ্রবাহী বায়ুর গতিবেগ সর্বোচ্চ হয়ে থাকে, যার ফলে সৌর বিকিরণের অনুপস্থিতি জনিত বিদ্যুৎ উৎপাদনের ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব[৭]। দমকা বা ঝটিকা বায়ুপ্রবাহের জন্য অণুভূমিক অক্ষ বায়ুকলের চাইতে উল্লম্ব অক্ষ বায়ুকল বেশি কর্মদক্ষ হওয়ায়[১০] এ ধরনের বায়ুকল অ্যান্টার্কটিকার জন্য বেশ উপযোগী। এছাড়াও উল্লম্ব অক্ষ বায়ুকল অপেক্ষাকৃত দৃঢ় গঠনসম্পন্ন এবং অধিকাংশ যন্ত্রাদি ভূমির কাছে হওয়ায় মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ অপেক্ষাকৃত সহজ, যা অ্যান্টার্কটিকার মত বৈরী পরিবেশে সুবিধাজনক। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার মসন স্টেশন, দক্ষিণ আফ্রিকার সানায়ে ৪ গবেষণা কেন্দ্রে বায়ুকলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। মসন স্টেশনের বিদ্যুৎ চাহিদার ৭০% এরও বেশি বায়ুশক্তির মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। এছাড়াও রস দ্বীপে অবস্থিত বায়ু খামার থেকে স্কট ঘাঁটি ও ম্যাকমার্ডো স্টেশনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে[৭]। অ্যান্টার্কটিক মূল ভূখণ্ড এবং পারিপার্শ্বিক দ্বীপগুলোতে অনেক সংখ্যক সক্রিয় ও সুপ্ত আগ্নেয়গিরি থাকায় ভূ-তাপীয় শক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। স্কট ঘাঁটি হতে ৪০ কিমি দূরে অবস্থিত সক্রিয় আগ্নেয়গিরি এরেবাস পর্বতের নিকটে ভূ-তাপীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়েছে। ভূ-তাপীয় বিদ্যুৎ উৎপাদক যন্ত্রগুলো সমুদ্রের পানি ব্যবহার করে শীতল করার পর বিপরীত আস্রবণের মাধ্যমে স্কট ঘাঁটিতে ব্যবহারের জন্য পানিও পাওয়া সম্ভব হবে[৭]। ভূ-তাপীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে এ পর্যন্ত কোন প্রকল্প না নেয়া হলেও, ভবিষ্যতে এ ধরনের উৎপাদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পর বিদ্যুৎ ও পানির সুলভ উৎসের কারণে এরেবাস পর্বতের নিকটবর্তী অঞ্চল মানব বসতি স্থাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
ভবিষ্যত অবস্থা
যদিও অ্যান্টার্কটিকার বর্তমান পরিবেশে স্থায়ী মানব বসতি সার্থকভাবে সম্ভব করে তোলা খুব কষ্টকর, অবস্থার ভবিষ্যতে উন্নয়ন ঘটতে পারে। প্রস্তাবিত হয়েছে যে, বিশ্ব উষ্ণায়নের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের ফলে, ২২শ শতাব্দীর শুরুতে পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকার জলবায়ুর অবস্থা অনেকটা আলাস্কা, আইসল্যান্ড ও উত্তর স্ক্যান্ডিনেভিয়ার বর্তমান জলবায়ুর মত হবে।[১১] এমনকি অ্যান্টার্কটিকার সবচেয়ে উত্তুরে এলাকায়, যেমন অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপের পশ্চিমাংসে তখন চাষাবাদ ও ফসল ফলানোও সম্ভব হতে পারে।
অ্যান্টার্কটিকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথম মানবশিশু
এমিলিও মার্কোস পালমা (জন্ম জানুয়ারি ৭, ১৯৭৮) অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশে জন্মগ্রহণকারী প্রথম মানুষ। তিনি একজন আর্জেন্টাইন নাগরিক, যিনি অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপের এসপেরাঞ্জ়া ঘাঁটির ফরতীন সার্জেন্তো কাবরাল এ জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের সময় তার ওজন ছিল ৩.৪ কেজি (৭ পা ৮ আউন্স)। তার পিতা, ক্যাপ্টেন জর্জ এমিলিও পালমা উক্ত ঘাঁটিতে কর্মরত আর্জেন্টাইন সামরিক সদস্যদের নেতা ছিলেন।[১২]