ডাবল-টিউনড বিবর্ধক বা ডাবল-টিউনড অ্যামপ্লিফায়ার হল একপ্রকার টিউনড অ্যামপ্লিফায়ার যার অ্যামপ্লিফায়ার গুলির প্রতিটি ধাপ একটি করে ট্রান্সফরমার দ্বারা পরবর্তী অংশের সাথে সংযুক্ত করা থাকে যাদের মুখ্য এবং গৌণ কুন্ডিলীর প্রত্যেকের আবেশ (Inductance) পৃথক ভাবে এর সমান্তরালে ধারক (Capatitor) দ্বারা টিউন করা হয়ে থাকে। এই পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে অন্যান্য একক টিউন বর্তনীর চাইতে অধিকতর প্রশস্থ ব্যান্ডউইথ এবং ঢালু ট্রাঞ্জিশন ব্যান্ড পাওয়া যায়।
ট্রান্সফরমারের কাপলিং গুণাঙ্ক ক্রান্তি মানে তরঙ্গ প্রতিক্রিয়া (frequency response) পাসব্যন্ড সর্বাধিক সমতল এবং গেইন অনুনাদিত কম্পাংকতে সর্বোচ্চ। পাসব্যান্ডের কেন্দ্রে ক্ষুদ্র গেইন অপচয় করে অধিকতর প্রশস্ত ব্যান্ডউইথ অর্জনের জন্য প্রায় পরিকল্পনাতেই (design) এর চাইতে বড় কাপলিং (ওভার কাপলিং) ব্যবহার করা হয়।
একাধিক ধাপের ক্যাসকেডিং ডাবল-টিউনড অ্যামপ্লিফায়ার ব্যবহারের ফলে সামগ্রিক অ্যামপ্লিফায়ারের ব্যান্ডউইথ কমে আসে। দুই ধাপ বিশিষ্ট ডাবল-টিউনড অ্যামপ্লিফায়ারে একক ধাপ বিশিষ্টের ৮০% ব্যান্ডউইথ থাকে। ব্যান্ডউইথ অপচয় পরিহার করতে ডাবল-টিউনিং এর বিকল্প হল স্ট্যাগার টিউনিং। যেকোন একক ধাপের অ্যামপ্লিফায়ারের চাইতে বড় ব্যন্ডউইথে স্ট্যাগার টিউন অ্যামপ্লিফায়ারকে নির্ধারিত ব্যন্ডউইথে পরিকল্পনা করা সম্ভব। যদিও, স্ট্যাগার টিউনিং-এর গেইন ডাবল-টিউনিং-এর চাইতে কম এবং এতে আরো বেশি ধাপের প্রয়োজন হয়।
সাধারণ বর্তনী

একটি সাধারণ ২-ধাপ বিশিষ্ট ডাবল-টিউনড বিবর্ধক
বর্তনীতে দুই ধাপে নির্মিত অ্যামপ্লিফায়ার অভিন্ন এমিটার টপোলজিতে দেখানো হয়েছে। বায়াস রোধকগুলির সকলেই তাদের নিজ নিজ স্বাভাবিক ফাংশন মেনে চলে। বায়াসের উপর প্রভাব প্রতিহত করার জন্য প্রথম ধাপের অন্তঃগমনকে (input) শ্রেণী ধারকের মাধ্যমে প্রথাগত ভাবে কাপলিং করা হয়। যদিও, সংগ্রাহক লোড ট্রান্সফরমার দ্বারা গঠিত যা ধারকের বদলে আন্ত-ধাপ কাপলিং-এর কাজ করে। ট্রান্সফরমারের কুণ্ডলীর ধারকত্ত্ব আছে। অনুনাদিত বর্তনী (resonant circuit) থেকে ট্রান্সফরমারের কুণ্ডলী বরাবর ধারকের অবস্থান অ্যামপ্লিফায়ারের টিউনিং প্রদান করে।
এ ধরনের অ্যামপ্লিফায়ারে আরেকটি বৈশিষ্ট্য দেখা যায়, যা হল ট্রান্সফরমারের কুণ্ডলীতে ট্যাপ-এর উপস্থিতি। এগুলি সর্বোচ্চ কুণ্ডলীর বদলে ট্রান্সফরমারের বহিঃগামি এবং অন্তঃগামি সংযোগের জন্য ব্যবহার করা হয়। এটা সংরোধ (impedence) সমতার জন্য ব্যবহৃত হয়; বাইপোলার জাংশন ট্রানজিস্টর(bipolar junction transistor) অ্যামপ্লিফায়ারগুলির (বর্তনীতে যেরূপ দেখানো হয়েছে) বহিঃগামি সংরোধ বেশ বড় এবং অন্তঃগামি সংরোধ বেশ ক্ষুদ্র। মসফেট ব্যবহার করে এ সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে যাদের অন্তঃগামি সংরোধ অনেক বেশি।[১]
ট্রান্সফরমারের গৌণ কুণ্ডলী নিম্নভাগ এবং ভূ-সংযোগ-এর (ground) মধ্যে ধারক সংযোজিত থাকে যা টিউনিং-এ অংশগ্রহণ করে না। বরং, তাদের উদ্দেশ্য পরিবর্তী তড়িৎ প্রবাহ বর্তনী থেকে ট্রন্জিস্টরের বায়াস রোধকে ডিকাপল করা।
বৈশিষ্ট্য
একক টিউনিং-এর সাথে তুলনা করলে পাওয়া যায়, অ্যামপ্লিফায়ারের অধিকতর প্রশস্ত ব্যান্ডউইথ এবং ঢালু ট্রান্জিশন ব্যান্ড প্রতিক্রিয়ার উপর ডাবল টিউনিং-এর প্রভাব আছে।[২] ট্রান্সফরমারের উভয় পার্শ্বে টিউনিং করা হলে এক জোড়া সম্মিলিত অনুনাদক (coupled resonator) উৎপন্ন করে যা বর্ধিত ব্যান্ডউইথের উৎস। অ্যামপ্লিফায়ারের গেইন কাপলিং গুণাঙ্ক ( coupling coefficient), k এর একটি ফাংশন, যা পারষ্পরিক আবেশাঙ্ক (mutual inductance), M এর সাথে সম্পর্কিত এবং মুখ্য ও গৌণ কুন্ডলির আবেশাঙ্ক যথাক্রমে Lp ও Ls, M = k L p L s
কাপলিং-এর ক্রান্তি মানে অনুনাদে অ্যামপ্লিফায়ারের গেইন সর্বোচ্চ। ক্রান্তি মানের নিচে বিভব অনুনাদে পৌছানো পর্যন্ত কম্পাঙ্ক প্রতিক্রিয়াতে (frequency response) একটি একক পিক আছে এবং k এর মান হ্রাসের সাথে সাথে পিক হ্রাস পায়। এই ধরনের প্রতিক্রিয়াকে আন্ডারকাপল (undercoupled) বলা হয়, ক্রান্তি কাপলিং-এর চাইতে বেশি মানের k এর জন্য প্রতিক্রিয়াটি দুইটি পিকে বিভক্ত হতে শুরু করে। k এর মান বৃদ্ধির সাথে সাথে পিক গুলি সংকীর্ণ হতে এবং দুরে চলে যেতে শুরু করে এবং তাদের মধ্যবর্তী দুরত্ত্ব (অনুনাদ কম্পাঙ্ককে কেন্দ্র করে) ক্রমশ গভীর হয়ে যায়। এই ধরনের প্রতিক্রিয়াকে ওভারকাপল (overcoupled) বলা হয়।[৩][৪]
ক্রান্তি কাপলিংকৃত অ্যামপ্লিফায়ারের প্রতিক্রিয়া সর্বাধিক সমতল (maximally flat)। এই প্রতিক্রিয়া ট্রান্সফরমার না ব্যবহার করেও দুই ধাপ বিশিষ্ট স্ট্যাগার টিউন অ্যামপ্লিফায়ার দিয়ে অর্জন করা সম্ভব। ডাবল টিউনিং সাধারণত দুটি অনুনাদককেই অভিন্ন অনুনাদিত কম্পাংকে (resonant frequency) টিউন করে, যা স্ট্যাগার টিউনিং-এ ঘটে না।[৫] যদিও একজন পরিকল্পনাকারি (designer) প্রশস্থ ব্যান্ডউইথ অর্জনের জন্য কম্পাংক প্রতিক্রিয়ার কেন্দ্রে সামান্য ডিপের বিনিময়ে (সাধারনত ৩ডেসিবেল) পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেন।[৬]
সমলয় টিউনিং (synchronous tuning) এর মত, ডাবল টিউনড অ্যামপ্লিফায়ার অধিকতর ধাপ যুক্তকরণ ব্যান্ডউইথ কমানোকে প্রভাবিত করে। একক ধাপের ব্যান্ডউইথের ভগ্নাংশ হিসেবে n সংখ্যক অভিন্ন ধাপের জন্য ৩ডেসিবেল ব্যান্ডউইথ পাওয়া যায় আনুমানিক, 2 1 / n − 1 4
এই রীতি কেবলমাত্র ক্ষুদ্র আংশিক ব্যান্ডউইথের জন্য প্রযোজ্য।[৭]
বিশ্লেষণ
অ্যামপ্লিফায়ার গুলোকে সরলকৃত অতি-পরিবাহকত্ত্ব (transconductance) দ্বারা প্রতিস্থাপন করে বর্তনীটিকে আরো সাধারণ ভাবে প্রকাশ করা সম্ভব, যেমনটি দেখানো হয়েছে।

ডাবল-টিউনড বিবর্ধকের একটি ধাপ এবং পরবর্তী ধাপের অংশের সাধারণ উপস্থাপন যেখানে (ধাপ সংখ্যরি প্রত্যয় বাদ দিয়ে), Go হল অ্যামপ্লিফায়ারের বহিঃগামি পরিবাহকত্ত্বGi হল অ্যামপ্লিফায়ারের অন্তঃগামি পরিবাহকত্ত্ব.
সাধারণত, অনুনাদিত কম্পাঙ্ক গুলি এবং অভিন্ন মুখ্য ও গৌণ পার্শ্বের Qs ধরে পরিকল্পনা করা হয়, যেন, ω 0 = ω 0 p = 1 L p C p = ω 0 s = 1 L s C s এবং, Q = Q p = 1 L p G o = Q s = 1 L s G i
যেখানে ω0 হল অনুনাদিত কম্পাঙ্ক যা কৌনিক কম্পাঙ্ক-এর এককে প্রকাশ করা হয় এবং প্রত্যয় p ও s ট্রান্সফরমারের মুখ্য ও গৌণ পার্শ্বের উপাদান।
ধাপের গেইন
উপরের ধারণা থেকে পাই, অ্যামপ্লিফায়ারের এক ধাপের বিভব গেইন, A যাকে প্রকাশ করা হয়ে থাকে A = A 0 2 k Q 4 Q δ − i ( 1 + k 2 Q 2 − 4 Q 2 δ 2 ) যেখানে i
হল একটি কাল্পনিক একক, A 0 = g m 2 G o G i
হল ঐ ধাপে অর্জিত সর্বোচ্চ সম্ভব গেইন, এবং δ = ω − ω 0 ω 0
হল কম্পাঙ্ক যা অনুনাদিত কম্পাঙ্ক থেকে পাওয়া কম্পাঙ্ক বিচ্যুতির অংশ।
শীর্ষ/পিক কম্পাঙ্ক
প্রতিবেদনে ক্রান্তি সংযোজন-এর পূর্বে অনুনাদ-এ একটি পিক উপস্থিত আছে। ক্রান্তি সংযোজনের পরে কম্পাঙ্কে দুটি পিক আছে, যা প্রকাশ করা হয়ে থাকে δ H , δ L = ± 1 2 Q k 2 Q 2 − 1 যেখানে δL এবং δH হল পর্যায়ক্রমে পিকের সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ কম্পাঙ্ক যা আংশিক বিচ্যুতি হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে।
ক্রান্তি সংযোজনে অথবা তার পরে পিক গুলি অ্যামপ্লিফায়ারের সর্বোচ্চ গেইনে পৌছায়।
ক্রান্তি সংযোজন
ক্রান্তি সংযোজন ঘটে যখন পিক দুইটি সমাপতিত হয়। এর অর্থ, যখন k 2 Q 2 − 1 = 0
বা k = 1 Q [৮]