বেলুন (ইংরেজি: Balloon) হচ্ছে গ্যাস যেমন হিলিয়াম, হাইড্রোজেন, নাইট্রাস অক্সাইড অথবা বাতাস ভর্তি একটি ব্যাগ বা থলে। আধুনিক বেলুন যদিও রাবার, ল্যাটেক্স, পলিক্লোরোফেরেন, নাইলন দিয়ে তৈরি হয়, তবে পূর্বে বেলুন তৈরি হতো পশু যেমন শুকরের মূত্রথলী থেকে। বহুকাল ধরে বেলুনকে মানুষ তার আকাশযান হিসেবে ব্যবহার করছে। আধুনিক যুগে বেলুনে আকাশ ভ্রমণ একপ্রকার প্রমোদভ্রমণ হিসেবে উপভোগ্য। তবে বিভিন্ন গবেষণা, জরিপ কিংবা সহজসাধ্য আকাশ ভ্রমণে বেলুনযান গুরুত্বের সাথেই ব্যবহৃত হয়।
খেলনা বেলুন
শিশুরা খেলনা হিসেবে যে বেলুন ব্যবহার করে থাকে, তা সাধারণত ল্যাটেক্সের তৈরি হয়। সাধারণত মুখ দিয়ে জোরে ফু দিয়ে ফুলিয়ে এজাতীয় বেলুন ব্যবহৃত হয়। তবে ভিতরে কার্বন ডাইঅক্সাইড ব্যবহৃত হয় বলে বেলুন, বাতাসের তুলনায় ভারি হয়ে যায় এবং বাতাসে ভাসতে পারে না। রঙ-বেরঙের বেলুন দিয়ে জন্মদিনের উৎসবে ঘর সাজানোর রেওয়াজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেখা যায়।
গ্যাস বেলুন
সাধারণ বেলুনে হাইড্রোজেন গ্যাস ভরা হলে তা বাতাসে ভাসে। তখন বেলুনের মুখ সুতায় বেঁধে সে সুতা হাতে ধরে রাখতে হয়। হাইড্রোজেন গ্যাস বাতাসের চেয়ে হালকা বিধায় এরকম বেলুন বাতাসে ভাসে। শান্তির প্রতীক কবুতর উড়িয়ে যেমন অনেক অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয় তেমনি একগুচ্ছ গ্যাস বেলুন অবমুক্ত করে অনুষ্ঠান উদ্বোধনের রেওয়াজ চালু হয়েছে। গ্যাস বেলুন ছেড়ে দিলে ভাসতে ভাসতে তা ক্রমশ: আকশে উঠে যায়। তবে সুতায় মুখ বাঁধা হলেও গ্যাস ‘লিক’ হয়ে যেতে থাকে এবং একসময় বেলুন নিচে নামতে শুরু করে।
বেলুনযান
বেলুন যখন যান হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তখন তার আকৃতি হয় যথেষ্ট বড় এবং তা ভর্তি করা হয় সাধারণ বাতাসের থেকে হালকা কোনো গ্যাস দিয়ে —সাধারণত হিলিয়াম দিয়ে। বেলুনের নিচের দিকে একটা বাঁশ কিংবা বেতের ঝুড়ি রশি দিয়ে লাগানো থাকে। বেলুনকে গ্যাস পুরে ফুলিয়ে নিলে তা উর্ধ্বমুখী হয়, তখন তার নিচে ঝুড়িটা ঝুলে থাকে এবং মানুষ বা বেলুন যাত্রী এই ঝুড়িতে অবস্থান করেন। অতীতে[কখন?] বেলুনের উচ্চতা নিয়ন্ত্রণের জন্য ঝুড়িতে রাখা হতো বালির বস্তা। পরবর্তিতে বেলুনের উপরিভাগে আলগা পরিচলনক্ষম পর্দা লাগানোর মাধ্যমে বেলুনের ভিতরকার বাতাস প্রয়োজনমতো বের করে দেয়া ও ধরে রাখার ব্যবস্থা করার মাধ্যমে বেলুনের নিয়ন্ত্রণকে সহজ করা হয়।
পরিবহন বা অপসারণ হচ্ছে মানুষ, প্রাণী ও পণ্যের এক স্থান থেকে অন্যস্থানে অবস্থান পরিবর্তন। পরিবহন মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বিমান, রেল, স্থল পরিবহন, পানি, তার, পাইপলাইন এবং মহাকাশ। এর ক্ষেত্র ভাগ করা যায় অবকাঠামো, যানবাহন ও অপারেশন।পরিবহন গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটা ব্যক্তির মধ্যে বাণিজ্য সক্ষম করে, যা সভ্যতার বিকাশের জন্য অপরিহার্য।
পরিবহনের একটি মাধ্যম হল একটি উপায় যা একটি নির্দিষ্ট ধরনের যানবাহন, অবকাঠামো এবং অপারেশন ব্যবহার করে। একজন ব্যক্তি বা পণ্যসম্ভারের পরিবহনে একটি মাধ্যম বা একাধিক মাধ্যম জড়িত থাকতে পারে, পরবর্তী ক্ষেত্রেকে আন্তঃ-মাধ্যম বা বহু-মাধ্যম পরিবহন বলা হয়। প্রতিটি মাধ্যমের নিজস্ব সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে এবং খরচ, ক্ষমতা এবং গমনপথের ভিত্তিতে বেছে নেওয়া হবে।
স্থল পরিবহন সমস্ত ভূমি-ভিত্তিক পরিবহন ব্যবস্থাকে নিয়ে গঠিত যা মানুষ, পণ্য এবং পরিষেবার চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হয়। স্থল পরিবহন সম্প্রদায়কে একে অপরের সাথে সংযুক্ত করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্থল পরিবহন হল নগর পরিকল্পনার একটি প্রধান বিষয়। রেল পরিবহন ও সড়ক পরিবহন – এই দুইয়ের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে স্থল পরিবহন।
সড়ক হল দুটি বা ততোধিক স্থানের মধ্যে একটি শনাক্তযোগ্য পথ।[১] সড়ক সাধারণত মসৃণ, পাকা বা সহজ ভ্রমণের জন্য প্রস্তুত করা হয়;[২] যদিও এগুলোর প্রয়োজন নেই, এবং ঐতিহাসিকভাবে অনেক সড়ক ছিল যা কোনো আনুষ্ঠানিক নির্মাণ বা রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াই স্বীকৃত পথ।[৩]পৌর এলাকায়, সড়ক একটি শহর বা গ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে পারে এবং সড়ক হিসাবে নামকরণ করা যেতে পারে, যা শহুরে স্থান সহজীকরণ এবং রুট হিসাবে দ্বৈত কাজ করে।[৪]
ইলেকট্রনিক্স বৃহত্তর ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং একাডেমিক বিষয়ের মধ্যে একটি সহক্ষেত্র হিসেবে বিবেচ্য।কিছু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপর একটি একাডেমিক ডিগ্রি অর্জন করা যায়,এছাড়া অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্যুত্ প্রকৌশলকে একটি বিষয় হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। তড়িৎ প্রকৌশলী শব্দটি এখনও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একাডেমিক ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয্যে থাকে।[৫] যাইহোক, কেউ কেউ মনে করেন যে বিদ্যুৎ এবং উচ্চ ভোল্টেজ প্রকৌশল বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য ‘বৈদ্ক প্রকৌশলী’ শব্দটি সংরক্ষিত করা উচিত, অন্যেরা মনে করে যে বিদ্যুৎ কেবলমাত্র ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একটি সহক্ষেত্র, যেমনটা ‘বৈদ্যুতিক বিতরণ প্রকৌশল’। ‘তড়িত প্রকৌশল’ শব্দটি সেই শিল্পের একটি বর্ণনাকারী হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।আবার, সাম্প্রতিক সময়ে আলাদা এন্ট্রি ডিগ্রি কোর্স যেমন ‘ইনফরমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং’, ‘সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং’ এবং ‘যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রকৌশল’ এর প্রচলন হয়েছে, যা প্রায়ই অনুরূপ নামের একাডেমিক বিভাগ দ্বারা অনুসরণ করা হয় কিন্তু এসব ডিগ্রী সাধারণত ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর সহক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয় না।[৬][৭]
ইতিহাস
বিংশ শতাব্দীর শতাব্দীর প্রথম দিকে রেডিও এবং শেষের দিকে টেলিগ্রাফ শিল্পের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এর জন্য টেলিফোন শিল্পগুলির বিকাশে একটি পেশা হিসেবে ‘ইলেকট্রনিক প্রকৌশল’ এর উদ্ভূত হয়। রেডিও জনগণের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিল কারণ প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে এর মাধ্যমে বার্তা আদান প্রদান করা যেত। ১৯২০ সালের দিকে,প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে শুরু হওয়া অনেক সমপ্রচার ‘অপেশাদার’ ছিল।[৮]
বৃহৎ পরিমাণে ইলেকট্রনিক প্রকৌশলের আধুনিক সংস্করন যেমন টেলিফোন, রেডিও এবং টেলিভিশন সরঞ্জাম ইত্যাদির উন্নয়ন এবং এর পাশাপাশি রাডার,সোনার,উন্নত অস্ত্রোপচার এবং উন্নত অস্ত্র সিস্টেম দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বৃহৎ পরিমাণে এসব জিনিসের ব্যবহার ইলেকট্রনিক সিস্টেমের উন্নয়নের জন্ম দেয়।[৯]
উপক্ষেত্রসমূহ
তড়িত প্রকৌশলের অনেক উপক্ষেত্র আছে। এই বিভাগে তড়িৎ প্রকৌশলের সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু উপক্ষেত্রসমূহের বর্ণনা করা হয়েছে। যদিও একজন প্রকৌশলী শুধুমাত্র একটি উপক্ষেত্র এর মধ্যে মনোযোগ প্রদান করেন তবে এমন অনেকেই রয়েছেন যারা একই সাথে একাধিক উপক্ষেত্র নিয়ে কাজ করে থ্যাকেন।
সংকেত প্রক্রিয়াজাতকরণ এর জন্য এটি সংকেত বিশ্লেষণ করে এবং ম্যানিপুলেশন এর সঙ্গে চুক্তি করে।এর মধ্যে থাকা, সিগন্যালগুলিও এনালগ হতে পারে, যেখানে সংকেতের তথ্যডিজিটাল ব্যবস্থা অনুযায়ী ধারাবাহিকভাবে পরিবর্তিত হয়, সেই ক্ষেত্রে সংকেত তথ্য প্রতিনিধিত্বকারী আলাদা মানের সিরিজ অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।
এনালগসংকেত এর ক্ষেত্রে, সংকেত প্রক্রিয়াকরণ অডিও সরঞ্জাম এর জন্য অডিও সংকেত কে বিবর্ধন করতে হয়, এই ধরনের টেলিযোগাযোগের জন্য সংকেতকে পুনরায় অন্য মাধ্যমে পরিবর্তন করতে হয়।ডিজিটাল সংকেতগুলিতে সিগন্যাল প্রক্রিয়াকরণে কম্প্রেশন, ত্রুটি পরীক্ষণ এবং ডিজিটাল সিগন্যালগুলির ত্রুটির সনাক্তকরণ অন্তর্ভুক্ত থাকে।
টেলিযোগাযোগপ্রকৌশলীরা একটি চ্যানেল জুড়ে তথ্য পাঠানোর কাজ করে থাকে যেমন সেটা হতে পারে অক্ষীয় তারের সাথে কিংবা অপটিক্যাল ফাইবার কিংবা ফাকা স্থানের সাথে।
ফাকা স্থান জুড়ে ডাটা ট্রান্সমিশন এর জন্য তরঙ্গ এনকোড করা প্রয়োজন এর জন্য তথ্য প্রেরণ করার ক্ষেত্রে একটি ক্যারিয়ার ফ্রিকোয়েন্সি উপযুক্ত স্থানান্তর প্রয়োজন, এটি মড্যুলেশন হিসাবে পরিচিত হয়। জনপ্রিয় এনালগ মড্যুলেশন কৌশলটি প্রশস্ততা মড্যুলেশন এবং ফ্রিকোয়েন্সি মড্যুলেশন সিস্টেম এর অন্তর্ভুক্ত। প্রকৌশলীরা সাবধানের সহিত মডুলেশন পছন্দ করেন কারণ একটি সিস্টেমের খরচ এবং কর্মক্ষমতা এর মধ্যে ভারসাম্য করা আবশ্যক।
যখন সিস্টেমের বৈশিষ্ট্য নির্ধারিত হয়, টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী্রা সিস্টেমের জন্য প্রয়োজনীয় ট্রান্সমিটার এবং রিসিভার ডিজাইন করে থাকেন। এই দুটি কখনও কখনও একসাথে ট্রান্সসিভার হিসাবে পরিচিত একটি দ্বিপথ যোগাযোগ ডিভাইস গঠন করে মিলিত হয়। ট্রান্সমিটার ডিজাইনের মূল চাবিকাঠি হল তাদের বিদ্যুতের ব্যবহার যা তাদের সংকেত শক্তিের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।একটি ট্রান্সমিটার সংকেত শক্তি অপর্যাপ্ত থাকে যদি সংকেত এর তথ্য শব্দ দ্বারা দূষিত হয়ে থাকে।
যখন একটি সিস্টেমের বৈশিষ্ট্য নির্ধারিত হয়, টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী তখন সিস্টেমের জন্য প্রয়োজন ট্রান্সমিটার এবং রিসিভার ডিজাইন করে থাকেন। এই দুটি কখনও কখনও একটি ট্রান্সসিভার হিসাবে পরিচিত একটি দ্বিপথ যোগাযোগ ডিভাইস গঠন মিলিত হয়ে থাকে। ট্রান্সমিটার ডিজাইনের মূল চাবিকাঠি হল তাদের বিদ্যুতের ব্যবহার যা তাদের সংকেত শক্তির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। একটি ট্রান্সমিটার সংকেতে যদি শক্তি অপর্যাপ্ত থাকে তখন সংকেত এর তথ্য শব্দ দ্বারা দূষিত হবে।
কন্ট্রোল প্রকৌশল অনেক বাণিজ্যিক গাড়ির মধ্যে ক্রুজ নিয়ন্ত্রণ উপস্থিত বিমান এবং প্রপ্প্লশন সিস্টেম থেকে বিভিন্ন আধুনিক গাড়ির মধ্যে একটি বিস্তৃত অ্যাপ্লিকেশন আছে। এটি শিল্প স্বয়ংক্রিয়তায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কন্ট্রোল প্রকৌশলের একটি বিস্তৃত ক্ষেত্র আছে, যেমন বাণিজ্যিক গাড়ির মধ্যে ক্রুজ নিয়ন্ত্রণ , বাণিজ্যিক বিমানের নিয়ন্ত্রণ সিস্টেম ইত্যাদি।
কন্ট্রোল প্রকৌশলীদের প্রায়ই কন্ট্রোল সিস্টেম ডিজাইনিং প্রতিক্রিয়া ব্যবহার করতে হয়। উদাহরণস্বরূপ, ক্রুজ নিয়ন্ত্রণের একটি গাড়িতে, গাড়ীর গতি ক্রমাগত নজরদারি করে থাকে এবং সিস্টেমের সাথে ফিরে আসে যা ইঞ্জিনের বিদ্যুৎ উৎপাদনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যেখানে নিয়মিত প্রতিক্রিয়া আছে সেখানে সিস্টেমটি এই ধরনের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে কীভাবে সাড়া দেয় তা নির্ধারণ করার জন্য নিয়ন্ত্রণ তত্ত্ব ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
যন্ত্রচালিত প্রকৌশলীদের ডিভাইসের ডিজাইনের সাথে যেমন চাপ, প্রবাহ এবং তাপমাত্রা পরিমাপ করতে হয়। এই ডিভাইসগুলো যন্ত্রানুষঙ্গের হিসাবে পরিচিত হয়।
এই ধরনের যন্ত্রানুষঙ্গের ডিজাইনকে পদার্থবিজ্ঞানের একটি শাখা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তত্ত্ব এর আওতায় বোঝানো হয়,ভাল বোঝার প্রয়োজনে। উদাহরণস্বরূপ, রাডার বন্দুকগুলি আসন্ন গাড়ির গতি পরিমাপের জন্য ডোপ্লার প্রভাব ব্যবহার করে। একইভাবে, থার্মোওকপথ দুইটি পয়েন্টের মধ্যে তাপমাত্রার পার্থক্য পরিমাপের জন্য পেলটিয়ার-সাইকেব্যাক প্রভাব ব্যবহার করে।
প্রায়ই বাদ্যযন্ত্রটি নিজে ব্যবহার করা হয় না,পরিবর্তে বৃহত্তর বৈদ্যুতিক সিস্টেমের সেন্সর হিসাবে ব্যবহত হয়। উদাহরণস্বরূপ, একটি চুল্লীর তাপমাত্রা স্থিতিশীল অবস্থায় আছে তা নিশ্চিত করতে একটি থারমোকাপল ব্যবহার করা যেতে পারে।এই কারণে, যন্ত্রবিজ্ঞান প্রকৌশলকে প্রায়ই নিয়ন্ত্রণ প্রকৌশল এর একটি অংশ হিসাবে হিসাবে দেখা হয়।
কম্পিউটার প্রকৌশল কম্পিউটার এবং কম্পিউটার সিস্টেমের ডিজাইন নিয়ে কাজ করে থাকে। এই নতুন কম্পিউটার হার্ডওয়্যার নকশা, পিডিএ ডিজাইন বা একটি শিল্প উদ্ভিদ নিয়ন্ত্রণীর কাজে কম্পিউটারকে ব্যবহার করতে পারে। এম্বেডেড সিস্টেমগুলির উন্নয়ন-নির্দিষ্ট কাজের জন্য তৈরি যেমন মোবাইল ফোন, এই ক্ষেত্রটিতেও এটি অন্তর্ভুক্ত। এই ক্ষেত্রটি মাইক্রো কন্ট্রোলার এবং এর অ্যাপ্লিকেশন অন্তর্ভুক্ত। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়াররাও সিস্টেমের সফটওয়্যারে কাজ করতে পারে। যাইহোক, জটিল সফ্টওয়্যার সিস্টেমের নকশা প্রায়ই সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ডোমেন, সাধারণত একটি পৃথক শৃঙ্খলা হিসাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
এল.এস.আই ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ারিং ভিএলএসআই এর খুব বড় স্কেল ইন্টিগ্রেশন জন্য কার্যকর হয়েছে। এটি আই.সি. এবং বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স উপাদানগুলি তৈরি করে থাকে।
ই-ইঙ্ক বা ইলেক্ট্রোফোরেটিক ইঙ্ক এক ধরনের ইলেক্ট্রনিক কাগজ বা পর্দা যা ই ইঙ্ক কর্পোরেশন নামক একটি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক শিল্পজাতকৃত। এমআইটি মিডিয়া ল্যাব সর্বপ্রথম ই-ইঙ্ক প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা শুরু করে। পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে এমআইটির ই-ইঙ্ক গবেষণা প্রকল্পের উপর ভিক্তি করে ই ইঙ্ক কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৬ সালের এক পেটেন্ট অনুযায়ী জোসেফ জ্যাকবসন এবং ব্যারেট কমিস্কিকে ই-ইঙ্ক প্রযুক্তির উদ্ভাবক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।[১]
বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে ই-ইঙ্ক পর্দা সাদাকালো (গ্রেস্কেল) ও রঙ্গিন দুরকম ভাবেই উৎপাদিত হচ্ছে।[২] এই ধরনের পর্দা মূলত বিভিন্ন ধরনের বহনযোগ্য যন্ত্রে ব্যাবহা করা হয়। বিশেষ করে ইবুক পাঠযন্ত্রগুলোতে ই-ইঙ্ক পর্দা বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হচ্ছে। ইবুক পাঠযন্ত্র ছাড়াও কিছু কিছু মুঠোফোন, টাচপ্যাড, ইনডিকেটর, ঘড়ি, বেতার যন্ত্র, বিজ্ঞাপন বোর্ড, স্মার্ট কার্ড ইত্যাদিতে এই বিশেষ ধরনের ইলেক্ট্রনিক পর্দা ব্যবহার করা হচ্ছে।[৩]
কর্পোরেট ইতিহাস
২০০৯ সালের ১লা জুন তাইওয়ান ভিক্তিক প্রাইম ভিউ ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি লিমিটেড (元太科技工業) ২১৪ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে ই ইঙ্ক কর্পোরেশনকে কিনে নেয়।[৪] এর আগে প্রাইম ভিউ কেম্পানি ই ইঙ্ক কর্পোরেশনের প্রাথমিক বাণিজ্যিক অংশীদার ছিল। ধারণা করা হয় প্রাইম ভিউর এই উদ্যোগের ফলে আগের চাইতে আরও অনেক বেশি সংখ্যক ই-ইঙ্ক ডিসপ্লে উৎপাদিত ও বিপণন হবে। প্রাইম ভিউ বিওই হাইডিস টেকনোলজি কোম্পানি লিমিটেড (京东方海帝士科技) নামের আরও একটি কোম্পানির সত্ত্বাধিকারী। এছাড়া চি মি অপ্টোইলেক্ট্রনিকস কর্পোরেশন যা বর্তমানে চি মি ইন্নলাক্স কর্পোরেশন (奇美電子) নামে পরিচিত প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রাইম ভিউর কৌশলগত ব্যাবসায়িক অংশীদারত্ব রয়েছে। এদিকে ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে ই ইঙ্ক সিপিক্স নামক প্রতিদ্বন্দ্ব্বী ইলেক্ট্রনিক ডিসপ্লে প্রস্তুতকারী কোম্পানিকে কিনে ফেলে।[৫][৬]
ই-ইঙ্ক প্রযুক্তি
iLiad e-book reader equipped with an e-paper display visible in the sunlight
ই-ইঙ্ক প্রযুক্তিতে একটি পাতলা ও স্বচ্ছ ইলেকট্রোডের পর্দার নিচে স্বচ্ছ মাইক্রো ক্যাপসুল থাকে। এই ক্যাপসুলগুলোর ভিতর একধরনের তেলের মধ্যে কিছু বিশেষ ধরনের পিগমেনট ভাসমান অবাস্থায় থাকে। এই পিগমেন্টগুলোর কিছু ধনাত্মক ও কিছু ঋণাত্মক চার্জ বিশিষ্ট হয়। ধনাত্মক চার্জবাহী পিগমেন্টগুলো সাদা ও ঋণাত্মক চার্জবাহী পিগমেন্টগুলো কালো রঙয়ের হয়। মাইক্রো ক্যাপসুলগুলোর নিচে থাকা ইলেকট্রোডের মধ্য দিয়ে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক চার্জ প্রবাহের মাধ্যমে ক্যাপসুলের অন্তঃস্থিত পিগমেন্টগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। মাইক্রো ক্যাপসুলগুলো এক্ষেত্রে কম্পিউটার বা এধরনের যন্ত্রে ব্যবহারিত ছোট ছোট পিক্সেলের মত কাজ করে। কোন ডিসপ্লেতে গ্রেস্কেলে ছবি বা লেখা বা এজাতিয় কিছু ফুটিয়ে তুলতে হলে ই-ইঙ্ক ডিসপ্লের মধ্যে থাকা মাইক্রো ক্যাপসুলের অভ্যন্তরস্থ পিগমেন্টগুলোকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে তা করা হয়।[৭]
মোটোরোলা এফথ্রি হল প্রথম মোবাইল ফোন যা ই-ইঙ্ক প্রযুক্তির ডিসপ্লে ব্যবহার করেছে। স্যামসাং এলিয়াস দুই ই-ইঙ্ক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মডেলটির জন্য স্পর্শকাতর বোতাম বানিয়েছে। যেহেতু ই-ইঙ্ক প্রযুক্তি অত্যন্ত কম বিদ্যুৎ খরচ করে সেহেতু এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগানর জন্য মোবাইল কোম্পানি গুলোর মধ্যে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। এ্যাসকয়ার ম্যাগাজিনের অক্টোবর, ২০০৮ উত্তর আমেরিকা সংস্করণে ই-ইঙ্ক প্রযুক্তির কভার ব্যবহার করা হয়েছে। এ্যাসকয়ার ম্যাগাজিনের এই কভারটি চীনের সাংহাই এ তৈরি করা হয়েছে। [৮]
ই-ইঙ্ক ভিজপ্লেক্স
প্রতিনিয়ত গবেষণা ও পরীক্ষা নিরিক্ষার মাধ্যমে ই-ইঙ্ক প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটে চলেছে। ই-ইঙ্ক প্রযুক্তির সর্বশেষ সংস্করকে ই-ইঙ্ক ভিজপ্লেক্স বলা হয়।[৯] ভিজপ্লেক্স প্রযুক্তির প্রত্যেক সংস্করণ/মডেলকে ভিন্ন ভিন্ন ব্র্যান্ড নাম দিয়ে বাজারজাত করা হয়, নিচে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তবে কখনও কখনও ভিজপ্লেক্স কথাটি প্রথম প্রজন্মের ই-ইঙ্ক ডিসপ্লের কথা বোঝানোর জন্যও ব্যবহারিত হয়।
ই-ইঙ্ক পার্ল
Macro photograph of Kindle 3 screen, focused just below the surface; microcapsules are clearly visible at full size
ই-ইঙ্ক পার্ল সংস্করণের ঘোষণা আসে ৩১ জুলাই, ২০১০ সালে। পার্ল প্রযুক্তিতে তৈরি ই-ইঙ্ক ডিসপ্লেগুলোকে দ্বিতীয় প্রজন্মের ভিজপ্লেক্স ডিসপ্লে ধরা হয়। পার্ল প্রযুক্তির ডিসপ্লেগুলোতে আগের ই-ইঙ্ক ডিসপ্লেগুলোর চাইতে অধিকতর উন্নত কন্ট্রাস্ট পাওয়া যায়। অর্থাৎ এই প্রযুক্তির ডিসপ্লেগুলো প্রথম প্রজন্মের ই-ইঙ্ক ডিসপ্লেগুলোর চাইতে সাদা ও কালো রঙয়ের মধ্যে অনেক বেশি পার্থক্য তৈরি করতে সক্ষম। ফলাফল স্বরূপ ই-ইঙ্ক পার্ল ডিসপ্লের মাধ্যমে আগের চাইতে আরও পরিষ্কার করে ছবি ও টেক্সট প্রদর্শন করা যায়। ই-ইঙ্ক পার্ল ডিসপ্লে সর্বপ্রথম আমাজন কিন্ডল ডিএক্স সংস্করণে ব্যবহার হতে দেখা যায়। পরবর্তীতে কিন্ডল ৩, কিন্ডল ৪ ও কিন্ডল টাচ সংস্করণগুলোতেও পার্ল ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়।[১০][১১] আমাজন ছাড়াও সনি রিডার টাচ সংস্করণে সনি ই-ইঙ্ক পার্ল প্রযুক্তির ডিসপ্লে ব্যবহার করেছে।[১২] এছাড়া বার্নস এন্ড নোবেলের প্রস্তুতকৃত নুক সিম্পল টাচ[১৩] ও কোবো প্রস্তুতকৃত কোবো ইরিডার টাচ[১৪], কোবো গ্লো[১৫], অনিক্স বুক্সের এম৯২[১৬] ইবুক রিডার গুলোতেও ই-ইঙ্ক পার্ল ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে।
ই-ইঙ্ক মোবিয়াস
ই-ইঙ্ক মোবিয়াস (ই-ইঙ্ক ফ্লেক্স) হল ই-ইঙ্ক পার্লের পরবর্তী সংস্করণ। মোবিয়াস সংস্করণের পূর্ববর্তী ই-ইঙ্ক ডিসপ্লেগুলো অত্যন্ত ভঙ্গুর প্রকৃতির ছিল। কারণ হল ই-ইঙ্ক ভিজপ্লেক্স বা ই-ইঙ্ক পার্লের ডিসপ্লে তৈরি হত পাতলা কাচ ব্যবহার করে। এই সমস্যা দূর করার জন্য ই-ইঙ্ক মোবিয়াস সংস্করণে কাচের পরিবর্তে পাতলা প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়েছে। ফলাফল স্বরূপ ই-ইঙ্ক মোবিয়াস ডিসপ্লেগুলো সামান্য তাপ ও বাঁকানোর ফলেই ভেঙ্গে যায় না।[১৭]
ই-ইঙ্ক ট্রাইটন
২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে ই-ইঙ্ক ভিজপ্লেক্সের তৃতীয় প্রজন্মের ডিসপ্লে ই-ইঙ্ক ট্রাইটনের কথা ঘোষণা করা হয়। ই-ইঙ্ক ট্রাইটন ৪০৯৬ টি প্রথক রং ও ১৬টি ধূসর রঙয়ের শেড প্রদর্শন করতে পারে। সুতরাং ই-ইঙ্ক ট্রাইটন ই-ইঙ্ক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সীমিত পরিসরে রঙ্গিন লেখা বা ছবি প্রদর্শন করতে পারে। বাজারে প্রচলিত অন্যান্য রঙ্গিন ডিসপ্লেগুলোর সাথে ই-ইঙ্ক ট্রাইটনের মৌলিক পার্থক্য হল এই প্রযুক্তির ডিসপ্লেগুলোতে প্রদর্শিত লেখা বা ছবি সূর্যের আলোতেও পরিষ্কার পড়া যায়।[১৮] বেশ কয়েকটি কোম্পানি ই-ইঙ্ক ট্রাইটন বাণিজ্যিকভাবে তাদের পণ্যে ব্যবহার করেছেন। বাণিজ্যিক ভিক্তিতে ট্রাইটন ব্যবহারকারী কোম্পানিগুলো হল হ্যানভন, ইকট্যাকো ও পকেটবুক। হ্যানভন তাদের হ্যানভন কালার ইরিডারে ট্রাইটন ব্যবহার করেছে[১৯], ইকট্যাকো কোম্পানিটির জেটবুক কালার ইবুক রিডারে ট্রাইটন ব্যবহার করেছে ও পকেটবুক তাদের পকেটবুক কালার লাক্স ইরিডারে ট্রাইটন ব্যবহার করেছে।
ই-ইঙ্ক ট্রাইটনের পরবর্তী সংস্করণ ই-ইঙ্ক ট্রাইটন ২ কে ২য় প্রজন্মের রঙ্গিন ই-ইঙ্ক ডিসপ্লে ধরা হয়। ২০১৩ সালে ২য় প্রজন্মের রঙ্গিন ই-ইঙ্ক ডিসপ্লে ব্যবহার করে কিছু ইবুক রিডার তৈরি করা হয়েছে। ইকট্যাকোর জেটবুক কালার ২[২০] ও পকেটবুকের পকেটবুক কালার লাক্স[২১] এই ডিসপ্লে গুলোর মধ্যে অন্যতম।
ই-ইঙ্ক কার্টা
২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক কনজুমার ইলেক্ট্রনিকস শোতে ই-ইঙ্কের চতুর্থ প্রজন্মের ডিসপ্লে উদ্ভাবনের কথা ঘোষণা করা হয়। নতুন উদ্ভাবিত এই ডিসপ্লের নাম রাখা হয় ই-ইঙ্ক কার্টা। একটি ৬ ইঞ্চি ই-ইঙ্ক কার্টা ডিসপ্লে ২১২ পিপিআই (পিক্সেল ড্যানসিটি) ও ৭৬৮ বাই ১০২৪ রেজুলেশনে লেখা ছবি ইত্যাদি প্রদর্শন করতে পারবে।[২২] আমাজন কিন্ডল পেপারহোয়াইট ই বুক রিডারে ই-ইঙ্ক কার্টা ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে। আমাজন কিন্ডল ছাড়াও ডয়েচে টেলিকমের টলিনো ভিশন (২০১৪) ও কোবো ইরিডার ঔরা এইচটুও (২০১৪) তে কার্টা ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রকৌশলপেশাদারি ও সমাজমুখীব্যবহারিক বিজ্ঞানের একটি বৃহৎ ক্ষেত্র, যেখানে গণিত ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের তাত্ত্বিক শাখাগুলিতে আলোচিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক বল ও পদার্থেরধর্মাবলিকে শাসনকারী বৈজ্ঞানিক বিধি ও মূলনীতিগুলি অধীত হয়; এবং যুগের আর্থ-সামাজিক চাহিদা মেটাতে, বাস্তব বিশ্বের অভিজ্ঞতা, যুক্তি, কল্পনা ও সূক্ষ্ম অন্তর্দৃষ্টির সহায়তা নিয়ে এবং ত্রুটিহীনতা, দীর্ঘস্থায়িত্ব, দ্রুততা, সরলতা, দক্ষতা, অর্থসাশ্রয়, অপচয় হ্রাস, জানমালের নিরাপত্তা, ইত্যাদি বিষয়ে সর্বোচ্চ সন্তুষ্টিবিধান করে এই বিধি ও মূলনীতিগুলিকে সচেতনভাবে প্রয়োগ করে প্রকৃতিতে প্রাপ্ত বিভিন্ন সম্পদ ও শক্তিকে (যান্ত্রিক, রাসায়নিক, বৈদ্যুতিক, ইত্যাদি) কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে নতুন, উদ্ভাবনী ও সাধারণত জটিলতর কোনও প্রযুক্তি (যেমন পদার্থ, বস্তু, কাঠামো, স্থাপনা, যন্ত্র, যন্ত্রাংশ, সরঞ্জাম, পদ্ধতি, প্রক্রিয়া, সংস্থান বা সিস্টেম) অথবা একাধিক প্রযুক্তির সমবায়ের নকশা প্রণয়ন, নির্মাণ, এগুলির নির্মাণকাজে অন্য অনেক শ্রমিক মানুষকে সংগঠিতকরণ, যথাযথ নির্দেশনা প্রদান, পরিচালনা ও তদারকিকরণ কিংবা শিল্পক্ষেত্রে অর্থনৈতিক পণ্যদ্রব্য হিসেবে এগুলির উৎপাদন, নির্মাণ-পরিবর্তী বা উৎপাদন-পরিবর্তী কালে নকশা সম্পর্কে পূর্ণ অবহিতি নিয়ে এগুলি চালনা ও ব্যবহার, রক্ষণাবেক্ষণ, বিশ্লেষণ, প্রদত্ত চালনার শর্তে এগুলির ভবিষ্যৎ আচরণ, কর্মদক্ষতা ও খরচ সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী প্রদান, ইত্যাদি বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পাদন করা হয়, যার চূড়ান্ত লক্ষ্য হল প্রকৃতির সম্পদকে মানুষের ব্যবহারযোগ্য কোনও রূপে রূপান্তরিত করে কোনও ব্যবহারিক সমস্যার প্রযুক্তিগত সমাধান করে মানবজাতির উপকার ও কষ্টলাঘব করা।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
যারা প্রকৌশল ক্ষেত্রের উপর্যুক্ত কর্মকাণ্ডগুলির সাথে জড়িত, তাদেরকে প্রকৌশলী বলে। প্রকৌশলীরা যা কিছু নকশা, সৃষ্টি ও নির্মাণ করেন, তাকে প্রযুক্তি বলে। যেমন পুরকৌশল ক্ষেত্রে সেতু, সড়ক, ভবন; তড়িৎ প্রকৌশল ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, বৈদ্যুতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা; কম্পিউটার প্রকৌশল ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবস্থা, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা জালক; যন্ত্রকৌশল ক্ষেত্রে ইঞ্জিন, মোটরগাড়ি ও অন্যান্য যানবাহন, যন্ত্রসামগ্রী; রাসায়নিক প্রকৌশল ক্ষেত্রে রাসায়নিক পদার্থ, এগুলি প্রস্তুতির যন্ত্রপাতি; জৈব প্রকৌশল ক্ষেত্রে জৈব পদার্থ বা জীব, ইত্যাদি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা হয়। প্রকৌশলের উল্লিখিত প্রতিটি ক্ষেত্রেরই বহুসংখ্যক উপক্ষেত্র আছে, যেগুলির সম্মিলিত পরিধি অত্যন্ত ব্যাপক এবং আধুনিক সমাজ ও সভ্যতার প্রতিটি ক্ষেত্রে এগুলির অবদান পরিলক্ষিত ও অনুভূত হয়।
প্রকৌশল হল সেই সুসংগঠিত শক্তি যা প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাজ ও সভ্যতার ইতিহাস বদলে দেয়। মানব সভ্যতার ইতিহাস ও প্রকৌশলের ইতিহাস তাই অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। বস্তুবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্বসভ্যতার যতটুকু প্রগতি সম্পন্ন হয়েছে, তার সবটুকুতেই প্রকৌশলবিদ্যার গভীর অবদান আছে।
প্রকৌশলবিদ্যায় কেবল তাত্ত্বিক বিশ্লেষণের খাতিরে বিশ্লেষণ করা হয় না কিংবা অস্তিত্বহীন কোনও কাল্পনিক, তাত্ত্বিক সমস্যার অসাধারণ প্রতিভাদীপ্ত সমাধান সন্ধান করা হয় না। প্রকৌশলবিদ্যার উদ্দেশ্য জ্ঞানবিজ্ঞানের নিরন্তর বিশ্বকোষীয় সংগ্রহ নয়, বরং সংগৃহীত তাত্ত্বিক জ্ঞানবিজ্ঞানের সম্ভাব্য উপকারী দিকগুলিকে বাস্তবে রূপ দেওয়া। প্রকৌশল ছাড়া বিজ্ঞানের টেকসই বাস্তব উপকারী প্রয়োগ সম্ভব নয়। আবার প্রকৌশল কেবল তাত্ত্বিক জ্ঞানবিজ্ঞান ও বাস্তব বিশ্বের মেলবন্ধনই ঘটায় না, এটি বিজ্ঞান, ইতিহাস, সমাজ, মানুষের কায়িক পরিশ্রম ও অর্থনীতির মধ্যকার যোগসূত্র হিসেবেও কাজ করে। প্রকৌশল চিন্তাভাবনাহীন কায়িক পরিশ্রম নয়, বরং কায়িক পরিশ্রমের বিজ্ঞানভিত্তিক সর্বোচ্চ কৌশলী ব্যবহার। প্রকৌশলবিদ্যা যুগের চাহিদা ও সমাজের চাহিদার ব্যাপারে সচেতন। প্রকৌশলবিদ্যা ছাড়া সমাজ ও সভ্যতার বস্তুগত অগ্রগতি প্রায় অচল হয়ে যাবে। প্রকৌশলবিদ্যা ছাড়া অর্থনৈতিক ব্যবস্থাগুলির দক্ষতা হ্রাস পাবে ও এগুলির প্রবৃদ্ধি স্থবির হয়ে পড়বে।
গণিত, বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তির সম্পর্ক
গণিত হল যুক্তি ও সৃজনশীলতার সহায়তায় বিমূর্ত ধারণাসমূহের পরিমাপ, বিন্যাস ও সম্পর্কের বিশুদ্ধ অধ্যয়ন। গণিতে ব্যবহৃত সাংকেতিক ভাষা বৈজ্ঞানিক ধ্যানধারণাকে সুস্পষ্টভাবে ও দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রকাশ করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপকরণ। গণিত তাই বিজ্ঞানের ভাষা। গণিত বিজ্ঞানের ধারণাগুলি প্রকাশের ব্যাকরণিক ভিত্তি প্রদান করে।
বিজ্ঞান হল প্রকৃতির বিভিন্ন পদার্থ ও শক্তির ধর্মসমূহ সম্পর্কে সত্যসমূহ এবং এগুলিকে নিয়ন্ত্রণকারী বিধি ও মূলনীতিসমূহের তাত্ত্বিক অধ্যয়ন। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় মানুষের কর্মকাণ্ড ও প্রভাব গণনায় না ধরে প্রকৃতিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে লব্ধ সমস্ত পদার্থ, শক্তি, প্রক্রিয়া ও সংস্থান বা সিস্টেম। গণিতবিদেরা বিজ্ঞানের জগৎ থেকে আগত আগ্রহজনক গাণিতিক সমস্যার উপরে অনুসন্ধান চালাতে পারেন। তবে গণিতবিদেরা কেবল গবেষণার খাতিরেও বিমূর্ত ধারণা অধ্যয়ন করতে পারেন, যার সাথে বাস্তব বিশ্বপ্রকৃতি বা একে অধ্যয়নকারী বিজ্ঞানের কোনও সম্পর্ক নেই।
প্রকৌশল হল গণিত ও তাত্ত্বিক বিজ্ঞানের বিধি ও মূলনীতিগুলির সুশৃঙ্খল প্রণালীবদ্ধ প্রয়োগ করে প্রযুক্তি নির্মাণের মাধ্যমে মানুষের আর্থ-সামাজিক চাহিদার প্রয়োজনে উদ্ভূত বিভিন্ন ব্যবহারিক সমস্যা সমাধান করা। প্রকৌশল তাই প্রকৃতির উপর মানুষের প্রভাব বিস্তারকারী এক বিশেষ ধরনের কর্মকাণ্ড। একজন প্রকৌশলী তাঁর বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের মাধ্যমে কোনও সমস্যার অন্তর্নিহত সীমাবদ্ধতাগুলি বুঝতে পারেন ও সেই অনুযায়ী বিভিন্ন দিক থেকে সমাধানের চেষ্টা করেন। একজন প্রকৌশলী গণিতের সাহায্যে ভৌত বিশ্বের বিভিন্ন ঘটনার গাণিতিক প্রতিমান (মডেল) তৈরি করার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাধান মূল্যায়ন করার জন্য গণিতের আশ্রয় নেন। প্রকৌশল নকশাকরণ প্রক্রিয়ার সাথে গণিতের নিবিড় সম্পর্ক আছে। যেকোনও প্রকৌশলীকে বহুসংখ্যক গাণিতিক দক্ষতার অধিকারী হতে হয়, যেমন পাটিগণিত, কলনবিদ্যা, জ্যামিতি, পরিমাপ, ফলাফলের সারণী ও লেখচিত্র নির্মাণ, গাণিতিক সূত্রায়ন, সময়রেখা, ইত্যাদি।
প্রযুক্তি হল প্রকৌশলের সুবাদে লব্ধ বস্তু, যন্ত্র, সরঞ্জাম, প্রক্রিয়ার সমাহার যা বিভিন্ন ব্যবহারিক সমস্যার সমাধানে ব্যবহৃত হয়। প্রযুক্তি তাই প্রকৃতির বাইরে অবস্থিত সেই সমস্ত পদার্থ, জটিল বস্তু, প্রক্রিয়া ও সংস্থান বা সিস্টেমসমূহের সমগ্র, যা মানুষের উদ্দেশ্যমূলক ও প্রকৌশলমূলক কর্মকাণ্ডের ফসল।
প্রয়োগপদ্ধতি
সমস্যা সমাধান
একজন প্রকৌশলী একজন সাধারণ বিজ্ঞানীর মত যেকোনও আগ্রহজনক সমস্যা নিয়ে কাজ করেন না। তাকে এমন কোনও সমস্যার সমাধান করতে হয়, যে সমস্যা বাস্তব বিশ্বে কোনও ব্যবহারিক কারণে সৃষ্ট হয়েছে। প্রকৌশলীকে এমন সমাধান প্রদান করতে হয় যা অনেকগুলি পরস্পর-বিরোধী শর্তের মধ্যে সর্বোচ্চ সন্তুষ্টিবিধান করে। প্রকৌশলীর সমাধানটি যদি দক্ষ হয়, তাহলে সাধারণত সেটি ব্যয়বহুলও হয়। নিরাপত্তার কথা মাথায় রাখলে সমাধান আরও জটিল রূপ ধারণ করে। কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করলে হয়ত ওজন বেড়ে যায়। একটি প্রকৌশলীয় সমাধান তাই অনেকগুলি বিষয় বিবেচনা করে গৃহীত এক ধরনের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টিবিধানমূলক সমাধান, যা হয়ত নির্দিষ্ট কোনও ভারসীমার মধ্যে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য, কিছু নিরাপত্তামূলক শর্ত সন্তুষ্টকারী সরলতম এবং কোনও প্রদত্ত ব্য়য়সীমার মধ্যে সবচেয়ে কর্মদক্ষ।
মানব সভ্যতার শুরু থেকে প্রকৌশল জীবন ব্যবস্থার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০০ এবং ২০০০ সালে প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা ও মেসোপটেমিয়ার সভ্যতা (প্রাচীন ইরাক) থেকে পুরকৌশলের যাত্রা শুরু বলে ধারণা করা হয়, ঠিক যখন থেকে মানুষ তাদের বসবাসের জন্য আবাস নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। সেই সময়ে চাকা এবং পাল আবিষ্কার হবার ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্ব দারুনভাবে বৃদ্ধি পায়।
বেশ কিছুদিন আগ পর্যন্তও পুরকৌশল এবং স্থাপত্যবিদ্যার মধ্যে কোন সুস্পষ্ট পার্থক্য ছিল না এবং প্রকৌশলী ও স্থপতি শব্দ দ্বারা ভৌগোলিক স্থানভেদে, মূলত একই ব্যক্তিকে বোঝান হত।[৭] মিশরের পিরামিডকে (খ্রিস্ট পূর্ব ২৭০০-২৫০০) বিশ্বের ইতিহাসে বড় কাঠামো নির্মাণের প্রথম দৃষ্টান্ত বিবেচনা করা হয়। অন্যান্য পুরকৌশল নির্মাণকাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কানাত পানি ব্যাবস্থাপনা কৌশল (সবচেয়ে পুরানোটি ৩০০০ বছর পূর্বের ও প্রায় ৭১ কিলোমিটার লম্বা,[৮]),দ্যা অ্যাপেইন ওয়ে, চীনের গ্রেট ওয়াল ইত্যাদি। রোমানরা, তাদের সাম্রাজ্যজুড়ে নালা পোতাশ্রয়, সেতু বাঁধ, রাস্তাসহ অসংখ্য বেসামরিক স্থাপনা গড়ে তোলে।
১৮শ শতাব্দীতে পুরকৌশল শব্দটিকে সামরিক প্রকৌশলবিদ্যার বিপরীত হিসেবে ব্যবহার করা হত। বিশ্বের প্রথম স্বঘোষিত সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন জন স্মিয়াথন যিনি এডিস্টোন লাইটহাউস তৈরি করেছিলেন। ১৭৭১ সালে স্মিয়াথন ও তার কয়েকজন সহকর্মী মিলে স্মিয়াথন সোসাইটি অফ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। যদিও তাদের কারিগরি বিষয় নিয়ে কিছু বৈঠক হয় তথাপিও এটি একটি সামাজিক সংগঠনের চেয়ে বেশি কিছু ছিল না।
১৮১৮ সালে লন্ডনে ইন্সিটিউট অফ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার প্রতিষ্ঠিত হয়, ১৮২০ সালে থমাস টেলফোর্ড এর প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৮২৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি রাজকীয় সনদ গ্রহণ করে যা পুরকৌশলকে একটি পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রে নরউইচ ইউনিভার্সিটিতে প্রথম বেসরকারি কলেজ হিসেবে পুরকৌশল পড়ান শুরু করা হয়, ১৮১৯ সালে।[৯] যুক্তরাষ্ট্রে ১৮৩৫ সালে রেন্সিলেয়ার পলিটেকনিক ইন্সিটিউট থেকে পুরকৌশলে সর্বপ্রথম ডিগ্রি প্রদান করা শুরু হয়।[১০] ১৯০৫ সালে প্রথম নারী হিসেবে পুরকৌশলে সেই ডিগ্রী পান নোরা স্ট্যান্টোন ব্লাচ কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে।[১১]
পুরকৌশলের ইতিহাস
আর্কিমিডিসের স্ক্রু, যা হাত দিয়ে পরিচালনা করা হত এবং এর সাহায্যে অত্যন্ত কার্যকরভাবে পানি তোলা যেত
পোন্ট দু গার্ড, ফ্রান্স, একটি রোমান পানি সরবরাহের কৃত্রিম প্রণালী যা আনুমানিক ১৯ খ্রিস্ট পূর্ব সালে তৈরি করা হয়েছিল
পুরকৌশল হচ্ছে সমাজের বিভিন্ন সমাধানের নিমিত্তে প্রাকৃতিক এবং বৈজ্ঞানিক ধারণা এবং নীতিগুলোর প্রয়োগ। গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রকে অধিকতর বাস্তবভিত্তিক সমস্যা সমাধানে ব্যবহারের মধ্য দিয়ে পুরকৌশল পেশা আজকের অবস্থানে আসতে সক্ষম হয়েছে। যেহুতু পুরকৌশলের বিস্তৃতি অনেক ব্যপক, এর জ্ঞান কাঠামোবিদ্যা, বস্তুবিদ্যা, ভূবিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব, মাটি, জলবিজ্ঞান, পরিবেশবিদ্যা, বলবিদ্যা এবং বিজ্ঞানের আর শাখার সাথে সংযুক্ত।
প্রাচীনকাল ও মধ্যযুগীয় সময়কালে সকল সকল স্থাপত্যের নকশা এবং নির্মাণ রাজমিস্ত্রি এবং কাঠমিস্ত্রি দ্বারা করা হত, যার ফলে একসময় স্থপতির প্রয়োজন অনুভব করায়। সকল জ্ঞান একদল বিশেষ গোষ্ঠীর কাছে মুষ্ঠিবধ্য ছিল এবং তা খুব কম সময়ই অন্যদের জানানো হত। এর ফলে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় একই ধরনের স্থাপনা, রাস্তা ও অবকাঠামো দেখা যেত এবং তা আকারে ক্রমান্বয়ে আর বড় হতে থাকে। [১২]
পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিতের সূত্রগুলিকে পুরকৌশলের জন্য ব্যবহার উপযোগী করে গড়ে তোলার প্রথম প্রচেষ্টাটি করেন আর্কিমিডিস তৃতীয় খ্রিস্টপূর্বাব্দ সালে, যার মধ্যে আর্কিমিডিসের তত্ত্ব অন্তর্গত ছিল, যা প্লবতা সম্পর্কে আমাদের ধারণা মজবুত করতে সাহায্য করে এবং আমাদেরকে বিভিন্ন ব্যবহারউপযোগী সমাধান যেমন আর্কিমিডিসের স্ক্রু বানাতে সাহায্য করে। ব্রহ্মগুপ্ত, একজন ভারতীয় গণিতবিদ, সপ্তম খ্রিস্টাব্দে হিন্দু-আরবিক সংখ্যাতত্ত্বের উপর ভিত্তি করে, পাটিগণিত ব্যবহার করে খননকৃত এলাকার আয়তন বের করবার পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। [১৩]
পুর-প্রকৌশলী সাধারণত পুরকৌশল এর উপর একটি একাডেমিক ডিগ্রী নিয়ে থাকেন। এর শিক্ষাবর্ষ ৩ থেকে ৫ বছর হয়ে থাকে, এবং সম্পন্ন ডিগ্রী প্রকৌশল স্নাতক, বা বিজ্ঞান স্নাতক হিসেবে মনোনীত করা হয়। পুরকৌশল পাঠ্যক্রমে সাধারণত পদার্থবিদ্যা, গণিত, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা, নকশা এবং নির্দিষ্ট বিষয় অন্তর্ভুক্ত আছে। পুরকৌশলের প্রয়োজনীয় শাখায় প্রাথমিক কোর্স গ্রহণ করার পর, তারা উন্নতির সাপেক্ষে এক বা একাধিক শাখার উপর বিশেষত্ব লাভ করে থাকেন। যদিও স্নাতক ডিগ্রীর (বিএসসি) একজন ছাত্র শিল্প-স্বীকৃত(industry-accredited) যোগ্যতা সম্পন্ন হয়ে থাকে, আবার কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্নাতকোত্তর ডিগ্রী (এমএসসি) প্রদান করে, যা শিক্ষার্থীদের তাদের পছন্দের বিষয়ে আরও বিশেষজ্ঞ হওয়ার সুযোগ দিয়ে থাকে।.[১৪] অধিকাংশ দেশে, একটি স্নাতক ডিগ্রীই ইঞ্জিনিয়ারিং পেশাদারী সার্টিফিকেশন হিসেবে কাজ করে। প্রত্যায়িত ডিগ্রী কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর, একজন প্রকৌশলীকে প্রত্যয়িত হওয়ার পূর্বেই তার পরীক্ষার ফলাফল আশাতীত এবং কর্ম দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। একবার প্রত্যায়িত হয়ে গেলে, প্রকৌশলী তখন পেশাদার হিসেবে বিবেচিত হবে। প্রাসঙ্গিক পেশাদারী সংস্থার মধ্যে, প্রকৌশলী জাতীয় সীমানা জুড়ে অনুশীলন বা হাতে কলমে শিক্ষা গ্রহণ করার বেপারে আন্তর্জাতিক চুক্তি আছে। প্রশংসাপত্রের সুবিধা অনেকাংশে তার অবস্থানের উপর নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ক্যানাডাতে, শুধু মাত্র একজন প্রত্যায়িত পেশাদারী প্রকৌশলই পারবেন সরকারি এবং বেসরকারি কাজের জন্য, তার স্বাক্ষরকৃত প্রকৌশলী পরিকল্পনা (plan) এবং অঙ্কন(drawing) অনুমোদনের জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দিতে। “[১৫] যুক্তরাজ্য সহ অন্যান্য দেশেও পুরকৌশলের জন্য একই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে পুর-প্রকৌশলীদের রাষ্ট্রীয় অনুমোদনে বা লাইসেন্সে কিছুটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। প্রায় সকল প্রতায়িত সংস্থাই নীতিশাস্ত্র কোড(code of ethics) মেনে চলে, যা ওখানকার সকল সদস্যকে মেনে চলতে হবে “[১৬] একজন প্রকৌশলীকে অন্য পক্ষের সাথে, চুক্তি আইন সংবলিত চুক্তিমুলক বিষয়গুল অবশ্যই মেনে চলতে হবে। যদি একজন প্রকৌশলী তার কাররয ক্ষেত্রে অপারগ হয়, তবে তিনি আইনত দোষী সাব্বস্থ হতে পারে।”[১৭] একজন পুরকৌশলীকে আরও কিছু নিয়ম কানুন মেনে কাজ করতে হয়, সেটা হতে পারে বিল্ডিং কোড ও পরিবেশ গত আইন।
এমিল আর্টিন (জার্মান: Emil Artin) (৩রা মার্চ, ১৮৯৮ – ২০শে ডিসেম্বর, ১৯৬২) অস্ট্রীয় গণিতবিদ। ভিয়েনায় তার জন্ম হয়। তিনি ভিয়েনা, লাইপ্ৎসিশ ও গ্যোটিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯২৩ থেকে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত তিনি হামবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। ১৯৩৭ সালে তিনি নাৎসি জার্মানি ত্যাগ করে আমেরিকায় পাড়ি জমান এবং সেখানে নটরডেম, ইন্ডিয়ানা ও প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি জার্মানিতে ফিরে যান এবং হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত হামবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।
এডওয়ার্ড উইটেন (ইংরেজি: Edward Witten) (জন্ম ২৬শে আগস্ট, ১৯৫১) গণিতে ফিল্ড্স পদক বিজয়ী একজন মার্কিনগণিতবিদ ও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন শহরের ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডির নামক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রাকৃতিক বিজ্ঞান বিদ্যালয়ের একজন অবসরোত্তর সাম্মানিক (ইমেরিটাস) অধ্যাপক।[১] উইটেন স্ট্রিং তত্ত্ব, কোয়ান্টাম অভিকর্ষ, অতিপ্রতিসম কোয়ান্টাম ক্ষেত্রে তত্ত্বসমূহে ও গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞানের অন্যান্য ক্ষেত্রের একজন গবেষক। উইটেনের গবেষণাকর্ম বিশুদ্ধ গণিতশাস্ত্রের উপরে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে।[২] ১৯৯০ সালে আন্তর্জাতিক গণিত সংঘ তাঁকে প্রথম পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে গণিতে ফিল্ডস পদক প্রদান করে। পদার্থবিজ্ঞানে অন্তর্দৃষ্টির জন্য (যেমন সাধারণ আপেক্ষিকতা ক্ষেত্রে ১৯৮১ সালে ধনাত্মক শক্তি উপপাদ্যটির প্রমাণ) এবং জোনসের অপরিবর্তনীয়গুলিকে ফাইনম্যান সমগ্রক হিসেবে ব্যাখ্যা করার জন্য তাঁকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।[৩] তাঁকে কার্যত এম-তত্ত্বের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে গণ্য করা হয়।[৪]
জীবনী
উইটেন ম্যারিল্যান্ডের বাল্টিমোরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭১ সালে ব্যাচেলর্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে ১৯৭৪ সালে এমএ এবং ১৯৭৬ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তার পিএইচডি উপদেষ্টা ছিলেন নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী ডেভিড জোনাথন গ্রস। তিনি ১৯৮০ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত প্রিন্সটনে পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। [৫]
সাধারণ গণিতের বাইরে গিয়ে যে সমস্ত গণিতবিদেরা গাণিতিক সমস্যার সমাধানের কাজে নিযুক্ত থাকেন, তাঁদেরকে প্রয়োগমূলক গণিতজ্ঞ বলা হয়। প্রয়োগমূলক গণিতবিদেরা হলেন এমন গাণিতিক বিজ্ঞানী, যাঁরা তাদের বিশেষ জ্ঞান এবং পেশাদারী পদ্ধতির সঙ্গে, অনেক ভাবগম্ভীর বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রের সমস্যার মধ্যে উপস্থিত হয়ে অগ্রসর হন। প্রয়োগমূলক গণিতবিদেরা তাদের পেশাদারী ভঙ্গিতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা, তাত্ত্বিক পদ্ধতি এবং স্থানীয় নির্মানের উপর নিয়মিত গবেষণা এবং গাণিতিক নকশা প্রস্তুত করে থাকেন।
প্রয়োগমূলক গণিত বা ফলিত গণিত নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী গাণিতিক পদ্ধতির সঙ্গে যুক্ত থাকে যা সাধারণত বিজ্ঞান, প্রকৌশল, ব্যবসা, এবং শিল্পে ব্যবহারিত হয়; এইভাবে, “প্রয়োগমূলক গণিত” একটি বিশেষ জ্ঞানের সঙ্গে সঙ্গে গাণিতিক বিজ্ঞানও বটে। “প্রয়োগমূলক গণিত” শব্দটি গণিতজ্ঞ যে গাণিতিক সমস্যা সমাধানের কাজে নিযুক্ত থাকেন তার পেশাদারী বিশিষ্টতা প্রকাশ করে, কখনো সেটি মূর্ত বা “বাস্তব” আবার কখনো “নির্বস্তুক” বা বিমূর্ত। পেশাদার সমস্যা সমাধানকারী হিসাবে, প্রয়োগমূলক গণিতবিদেরা বিজ্ঞান, প্রকৌশল, ব্যবসা এবং গাণিতিক অনুশীলনের অন্যান্য বিষয়গুলির ভিতরে প্রস্তুতি, গবেষণা এবং গাণিতিক নকশার ব্যবহার গভীরভাবে বিচার করেন।
শিক্ষা
গণিতবিদেরা সাধারণত গাণিতিক বিষয়গুলির ব্যাপ্তি তাঁদের স্নাতক স্তরের শিক্ষার আগেই আয়ত্ত করেন এবং তারপর স্নাতক পর্যায়ে তাঁদের পছন্দসই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হওয়ার লক্ষ্যে অগ্রসর হন। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতের শিক্ষার্থীদের গণিতের উপর প্রসার এবং গভীরতা বোঝার জন্য একটি যোগ্যতা নির্ধারক পরীক্ষা হয়; যে সমস্ত ছাত্র উত্তীর্ণ হয়, তারা গবেষণা প্রবন্ধে কাজ করার জন্য অনুমোদিত হয়।
যদিও এটা সত্য যে গবেষণার বিভিন্ন ক্ষেত্রে গণিত বেশিরভাগ প্রয়োগ খুঁজে বের করে, একজন গণিতজ্ঞ প্রয়োগের বৈচিত্র্য দ্বারা তার ধারণার একটি মান নির্ধারণ করতে পারেনা। গণিত নিজস্ব স্বত্ব বিচারে খুবই মজার, এবং কিছু সংখ্যালঘু প্রকৃত গণিতবিদেরা গণিত কাঠামোর নিজস্ব নকশা বৈচিত্র্য বিষয়ে খোঁজ করে। যাইহোক, কেতাবি গণিতের মধ্যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত অধিকাংশ গাণিতিক দলিল গণিত বিভাগের বাইরের শিক্ষাবিদ দ্বারা লিখিত।
উপরন্তু, একজন গণিতজ্ঞ এমন নয় যিনি নিছক সূত্র, সংখ্যা বা সমীকরণ নিপূণভাবে ব্যবহার করেন—গণিত বৈচিত্র্য কিভাবে গণিতের বিষয় এক ক্ষেত্রের ধারণা অন্যান্য ক্ষেত্রেও গবেষণার জন্য ব্যবহার করা যায় সেই চেষ্টাও করেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি কেউ কিছু উচ্চ মাত্রিক স্থানের একটি সমীকরণের সমাধান সুত্রাবলী নকশা করে, তিনি নকশাটির জ্যামিতিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। এইভাবে, একজন বিমূর্ত টপোগণিত বা জ্যামিতির একটি খাঁটি বোধ দ্বারা সমীকরণ বুঝতে পারেন–বীজগাণিতিক জ্যামিতি বিষয়ে এই ধারণা গুরুত্বপূর্ণ। একইভাবে, একজন গণিতজ্ঞ তাঁর পূর্ণসংখ্যার সংখ্যাগুলির পর্যবেক্ষণ সীমাবদ্ধ রাখেননা; বরং তিনি চক্রের মতো আরো বিমূর্ত কাঠামো, এবং বীজগাণিতিক সংখ্যাতত্ত্ব প্রসঙ্গে বিশেষ সংখ্যা চক্রের বিবেচনা করেন। এটাই উদাহরণকৃত করে গণিতের বিমূর্ত প্রকৃতি এবং কিভাবে এটা একজন দৈনন্দিন জীবনে যে প্রশ্নগুলি করতে পারে সেটা সীমাবদ্ধ করেনা।
অন্য একদিকে, গণিতবিদেরা স্থান এবং রূপান্তরের সম্পর্কে প্রশ্ন করেন যা জ্যামিতিক আকারে সীমিত নয় যেমন স্কোয়ার এবং বৃত্ত। উদাহরণস্বরূপ, একটি পার্থক্যমুলক টপোগণিত-এর সক্রিয় গবেষণার ক্ষেত্রে উপায়গুলি স্বনিযুক্তভাবে থাকে যার দ্বারা একজন উচ্চ মাত্রিক আকারগুলি “মসৃণ” করতে পারেন। আসলে, একটি উন্মুক্ত সমস্যা, ছিল, এযাবত্কাল পর্যন্ত আছে, কেউ নির্দিষ্ট উচ্চ মাত্রিক গোলকের মসৃণকরণ পারে কিনা—যা মসৃণ পোয়াঁকারে অনুমান হিসাবে পরিচিত। সেট-তত্ত্বীয় টপোগণিত এবং বিন্দু-সেট টপোগণিত, একটি ভিন্ন প্রকৃতির বস্তু থেকে আমাদের মহাবিশ্বের বস্তু, অথবা আমাদের মহাবিশ্বের একটি উচ্চতর মাত্রিক সাদৃশ্য বিষয়ে নিযুক্ত। এই বস্তুগুলি বিন্যাসভঙ্গের সময় অধিকতর অদ্ভুত ভাবে আচরণ করে, এবং যে বৈশিষ্ট্য তারা পরিগ্রহ করে সেটা আমাদের মহাবিশ্বের বস্তুগুলি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। উদাহরণস্বরূপ, এই ধরনের কোনো একটি বস্তুর দুটো বিন্দুর মধ্যে “দূরত্ব”,আপনি যে পয়েন্ট জোড়া বিবেচনা করেছেন তার ক্রমের উপর নির্ভরশীল হতে পারে। এটি সাধারণ জীবন থেকে পুরোপুরি ভিন্ন, যেখানে এটা গৃহীত যে ব্যক্তি ক থেকে সরাসরি খ ব্যক্তির রৈখিক দুরত্ব আর ব্যক্তি খ থেকে সরাসরি ক ব্যক্তির রৈখিক দুরত্ব একই।
গণিতের আরেকটি দিকে, বেশিরভাগ যাকে “মূল গণিত” হিসাবে অভিহিত করা হয়, যুক্তি এবং সেট তত্ত্ব বিষয়গুলি উপস্থিত রয়েছে। একজনের একটি নির্দিষ্ট দাবি প্রমাণ করতে পারার উপায়গুলি বিষয়ে এই বিভিন্ন ধারণা অন্বেষণ। এই তত্ত্ব যা মনে হয় তার থেকে অনেক বেশি জটিল, এই কারণে যে একটি দাবীর সত্যতা নির্ভর করে যা দাবি করা হয় তার প্রেক্ষাপটের উপর, দৈনন্দিন জীবনের মৌলিক ধারনায় যেখানে সত্য হল বিশুদ্ধ সেখানে এই তত্ত্ব বেমানান। যদিও, কিছু দাবি সত্য হতে পারে, বরং প্রাকৃতিক প্রেক্ষাপটে তাদের প্রমাণ করা বা না প্রমাণ করা অসম্ভব।
বিভাগ তত্ত্ব, “মূল গণিত”-এর মধ্যে আরেকটি ক্ষেত্র, যা গাণিতিক কাঠামো বর্গ-এর সংজ্ঞার বিমূর্ত স্বত:সিদ্ধ সত্যতার উপর মূলীকৃত, একটি “বিষয়শ্রেণী” হিসাবে অভিহিত করা হয়। একটি বিষয়শ্রেণী স্বজ্ঞাতভাবে একটি বস্তুর সংগ্রহ দ্বারা গঠিত, এবং তাদের মধ্যে সম্পর্ক সংজ্ঞায়িত করে। যদিও এই বস্তু যেকোনো কিছু হতে পারে (যেমন “টেবিল” অথবা “চেয়ার”), গণিতবিদেরা সাধারণতঃ বিশেষে আগ্রহী হয়, আরো বিমূর্ত, শ্রেণীর মতো বস্তুতে। যে কোন ক্ষেত্রে, এটা এইসব বস্তুর মধ্যে সম্পর্ক, এবং সেইসব প্রকৃত বস্তু নয় যা প্রধানত চর্চিত হয়।
যদি একটি নির্দিষ্ট বিবৃতি কিছু গণিতজ্ঞ দ্বারা বিশ্বাসযোগ্য কিন্তু কখনোই প্রমাণিত বা অপ্রমাণিত হয়নি, একটি অনুমান বলা হয়, যা ঠিক একটি চরম লক্ষ্যের বিরোধি: যেমন একটি উপপাদ্য যা প্রমাণিত হয়েছে।
বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব পরিবর্তন হয় যখন দুনিয়া সম্পর্কে নতুন তথ্য আবিষ্কৃত হয়। ঠিক একই ভাবে গণিত পরিবর্তন হয়: নতুন ধারণা পুরানোটিকে মিথ্যা বলে প্রমাণ করে না, কিন্তু নতুন ধারণা পুরানো ধারণা এবং পুরানো তত্ত্ব পরিশোধন করে, সম্পূর্ণ সত্যের উপলব্ধি অর্জনের জন্যে। পরিশোধনের একটি পদ্ধতি হল সামান্যীকরণ, উদাহরণস্বরূপ বলা যায় একটি ধারণার সুযোগের প্রসার। উদাহরণস্বরূপ, কলনবিদ্যা (একটি চলরাশির মধ্যে) সামান্যীকৃত হয়েছে বহুচলরাশি কলনবিদ্যায়, যা বহুসংখ্যক-এর উপর বিশ্লেষণের জন্য সামান্যীকৃত হয়েছে। যে উপায়ে গণিতের একটি ক্ষেত্র তার দৃষ্টিকোণের মধ্যে আমূল পরিবর্তন করতে পারে তার একটি বিশেষ উদাহরণ হল বীজগাণিতিক জ্যামিতির তার শাস্ত্রীয় থেকে আধুনিক রুপে উন্নয়ন, সঠিকভাবে প্রমাণিত ছিল কিনা ঠিক না করে আগে কোন উপায় ভুল সেটা দেখা; প্রায়ই লুকানো ধারনাগুলো প্রকাশের দ্বারা, ধারণাগতভাবে যে অগ্রগতির মূল্য আছে সেটা প্রকাশ করে, গাণিতিক অগ্রগতি অবশ্যই পূর্ববর্তী প্রমাণগুলির মধ্যে ফাঁক সংশোধন করে।
একটি উপপাদ্য সত্য, এবং আমরা জানবার আগেও সত্য ছিল এবং মানুষ বিলুপ্ত হওয়ার পরেও সত্য থাকবে। অবশ্যই, আমাদের বোঝার যে গণিত হিসাবে উপপাদ্য বৃদ্ধির চতুর্দিকে অসামান্যতার লাভের মধ্যে উপপাদ্য সত্যি কি মানে করতে চায়। একটি গণিতজ্ঞ মনে করেন যে কোন একটি উপপাদ্য ভাল বোঝা যায় যখন এটিতে পূর্ব পরিচিত একটি বিন্যাসের তুলনায় বৃহত্তর সম্প্রসারণ প্রয়োগ করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, অশূন্য পূর্ণসংখ্যার একটি প্রথম সর্বজনীন গঠন-এর ফের্মার সামান্য উপপাদ্য থেকে অনউল্লিখিতমানক সংখ্যার কোনো অশূন্য পূর্ণসংখ্যা গঠন-এর অয়লারের উপপাদ্য, সসীম শ্রেণী-এর লাগ্রেঞ্জের উপপাদ্যতে এসে যা সাধারণের বোধগম্য হয়েছে।
গণিতে পুরুষ
আর্যভট্ট ছিলেন প্রাচীন ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত গণিতজ্ঞদের মধ্যে একজন।
আর্কিমিডিস ছিলেন সর্বকালের সেরা গণিতজ্ঞ। তিনি পাই -এর প্রায় নিখুঁত একটি মান নির্ণয় করেন।
সোফিয়া কোভালেভসকা ছিলেন প্রথম প্রধান রুশ মহিলা গণিতজ্ঞ,এবং, উত্তরাঞ্চলীয় ইউরোপের মধ্যে নিযুক্ত একজন প্রথম পূর্ণ মহিলা অধ্যাপক। তিনি বৈজ্ঞানিক দিনপত্রিকার সম্পাদকের কাজও করেছেন।
সম্ভবত এমি নোইদার হলেন এযাবত্ কালের সর্বাপেক্ষা প্রভাবশালী মহিলা গণিতজ্ঞ।
গণিত নারীদের জন্য সমিতি একটি পেশাদার সমাজ যার উদ্দেশ্য হল “নারী ও মেয়েশিশুদের গাণিতিক বিজ্ঞান অধ্যয়ন করতে এবং পেশা হিসাবে গ্রহণ করতে উৎসাহ দেওয়া, এবং নারী ও মেয়েশিশুদের জন্য গাণিতিক বিজ্ঞানে সমান সুযোগ ও সমান ব্যবহারের লক্ষ্যে উন্নীত করা। আমেরিকান গাণিতিক সমাজ এবং অন্যান্য গাণিতিক সমাজ ভবিষ্যতে নারী ও সংখ্যালঘুদের গণিতে প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন পুরস্কার প্রদান করে থাকে।
উইকিউক্তিতে গণিতবিদ সম্পর্কিত উক্তির সংকলন রয়েছে।
নিম্নলিখিত উদ্ধৃতিগুলি গণিতবিদ সম্পর্কে, অথবা গণিতবিদের দ্বারা উদ্ধৃত। একজন গণিতজ্ঞ হল একটি কফিকে উপপাদ্যে রূপান্তরিত করিবার যন্ত্র। — আলফ্রেড রেনি[২] এবং পল এর্ডশ এই দুজনের উদ্দেশে বিশেষিত গণিতবিদেরা হলেন ফরাসি ভাষার মতন, তারা তাদের সঙ্গে কথা বলতে, তারা তাদের ভাষায় এটি অনুবাদ করতে, এবং অন্য কিছুর থেকে খুব তাড়াতাড়িই পারেন। (গণিতবিদেরা হলেন ফরাসিদের মতন; যদি আপনি তাদের সঙ্গে কথা বলেন, তারা তাদের নিজস্ব ভাষায় এটি অনুবাদ করে নেবে, এবং তারপর অবিলম্বে এটি হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু।) —ইয়োহান ভোলফগাং ফন গোটেপ্রত্যেক প্রজন্মে তার কয়েকজন মহান গণিতবিদ আছে…এবং [অন্যেরা] গবেষণায় কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়না। —আলফ্রেড আডলার (১৯৩০-?), “গণিত এবং সৃজনশীলতা”[৩]সংক্ষেপে, আমি এখনো খাঁটি গণিতজ্ঞটির সম্মুখীন হইনি যিনি সমমূলে বিশ্বাসী হতে পারে, অথবা একজন যিনি গোপনে তার বিশ্বাসের একটি বিন্দুতেও এটি পোষণ করেননা, যে x-এর বর্গ + px একেবারে এবং নিঃশর্তভাবে q-এর সমান ছিল। আপনি দয়াকরে যদি পারেন, পরীক্ষার উপায় দ্বারা, এই ভদ্রলোকেদের একজনকে বলুন, যে আপনি বিশ্বাস করেন এমন ঘটনাও ঘটতে পারে যেখানে x-এর বর্গ + px সম্পূর্ণভাবে q-এর সমান নাও হতে পারে, এবং, তাঁকে বোঝান আপনি কি বোঝাতে চেয়েছেন, আর যত দ্রুতগতিতে সুবিধাজনক হয় তাঁর নাগালের বাইরে চলে যান, এইজন্য যে, নি:সন্দেহে, তিনি আপনাকে পটকান দিতে উদ্যত হবে। —এডগার অ্যালান পো, অপহৃত পত্র(The purloined letter)একজন গণিতজ্ঞ, একটি চিত্রশিল্পী বা কবির মতো, একজন নকশা সৃষ্টিকর্তা। যদি তাঁর নিদর্শনগুলি তাঁদের থেকে বেশি স্থায়ী হয়, কারণ হল তারা ধারণা দ্বারা নির্মিত। —গডফ্রে হ্যারল্ড হার্ডি, একজন গণিতবিদের কৈফিয়ৎ(A Mathematician’s Apology)আপনাদের মধ্যে সামান্যই গণিতজ্ঞদের সাক্ষাতে এসেছেন এবং বিস্মিত হয়েছেন যে তাঁরা কী উপায়ে আছেন। —টম লিহাআত্মমধ্যে একটি কবি ছাড়া একটি গণিতজ্ঞ হওয়া অসম্ভব। —সোফিয়া কোভালেভসকামহান গণিত করার দুটি উপায় আছে। প্রথমটি হল সবার থেকে বেশি বুদ্ধিমান হওয়া। দ্বিতীয় উপায়টি হল সবার থেকে বেশি নির্বোধ হওয়া—কিন্তু ক্রমাগত। —রাঔল বট্