Category: সাধারণ বিজ্ঞান

General Science

  • সাধারণ জ্ঞান-গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্নোত্তর

    ✬প্রশ্ন: জাপানের সবচেয়ে বড় দ্বীপ কোনটি?
    উত্তর: হনসু।

    ✬প্রশ্ন: জাতীয় শিশু দিবস কত তারিখে?
    উত্তর: ১৭ মার্চ।

    ✬প্রশ্ন: বিশ্বের প্রশস্ততম নদী কোনটি?
    উত্তর: আমাজান।

    ✬প্রশ্ন: বিশ্বের প্রথম ধুমপান মুক্ত দেশ কোনটি?
    উত্তর: ভূটান।

    ✬প্রশ্ন: ব্রাসেলস কোন দেশের রাজধানী?
    উত্তর: বেলজিয়াম।

    ✬প্রশ্ন: কাপ্তাই কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
    উত্তর: কর্ণফুলী।

    ✬প্রশ্ন: নিশীত সূর্যের দেশ’ বলা হয়-কোন দেশকে?
    উত্তর: নরওয়ে-কে।

    ✬প্রশ্ন: পূর্ব জার্মানি ও পশ্চিম জার্মানি ভাগ হয় কত সালে?
    উত্তর: ১৯৬১ সালে।

    ✬প্রশ্ন: পূর্ব জার্মানি ও পশ্চিম জার্মানি একত্রিত হয় কত সালে?
    উত্তর: ৩ অক্টোবর ১৯৯০সালে।

    ✬প্রশ্ন: মাওরি কোন দেশের অধিবাসী?
    উত্তর: নিউজিল্যান্ড।

    ✬প্রশ্ন: ইতালির রাজধানী কোন শহরে অবস্থিত?
    উত্তর: রম।

    ✬প্রশ্ন: চাকমা ভাষায় লিখিত প্রথম উপন্যাসের নাম কী?
    উত্তর: ফেবো।

    ✬প্রশ্ন: ঢাকা বিশ্বের কততম মেগা সিটি?
    উত্তর: ১১তম।

    ✬প্রশ্ন: রাশিয়ার বিমান সংস্থার নাম কী ?
    উত্তর: এরোফ্লোঁ।

    ✬প্রশ্ন: হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোতে প্রাপ্ত সভ্যতা ইতিহাসে কোন সভ্যতা হিসেবে পরিচিত ?
    উত্তর: সিন্ধু সভ্যতা।

    ✬কোন দেশে ট্রেনে চাকরি করে পুলিশের পরিবর্তে রোবট ?
    উত্তর: জাপান

    ✬প্রশ্ন: কনফুসিয়াস কে ?
    উত্তর: দার্শনিক।

    ✬প্রশ্ন: নিউইয়র্ক কোন নদীর তীরে অবস্থিত ?
    উত্তর: হাডসন।

    ✬প্রশ্ন: কোন পাখী আকাশে ডিম পাড়ে, সে ডিম মাটিতে পড়ার আগেই বাচ্চা হয়ে উড়ে যায় ?
    উত্তর: হোমা পাখী।

    ✬প্রশ্ন: তাহরির স্কয়ার কোথায় অবস্থিত ?
    উত্তর: মিশর।

    ✬প্রশ্ন: দক্ষিণ এশিয়ার কোন দেশে মাথাপিছু আয় সবচেয়ে বেশী ?
    উত্তর: মালদ্বীপ।

    ✬প্রশ্ন: শেখ সাদী কোন ভাষার কবি ছিলেন ?
    উত্তর: ফারসি।

    ✬প্রশ্ন: পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক লোক কোন ভাষায় কথা বলে ?
    উত্তর: ম্যান্ডারিন।

    ✬প্রশ্ন: ফরাসী বিপ্লব সংঘটিত হয় ?
    উত্তর: ১৭৮৯ সালে।

    ✬প্রশ্ন: গ্রীনিচ মানমন্দির কোন দেশে অবস্থিত ?
    উত্তর: যুক্তরাজ্য।

    ✬প্রশ্ন: বৈদ্যুতিক পাখা আবিষ্কার করেন কে ?
    উত্তর: এস এস হুইলার।

    ✬প্রশ্ন: হাজার হ্রদের দেশ কোনটি ?
    উত্তর: ফিনল্যান্ড।

    ✬প্রশ্ন: বৃষ্টির পানিতে কোন ভিটামিন থাকে ?
    উত্তর: ভিটামিন বি।

    ✬প্রশ্ন: রিকেটস হয় কোন ভিটামিনের অভাবে ?
    উত্তর: ভিটামিন ডি।

    ✬প্রশ্ন: ‘আইফেল টাওয়ার’ কোথায় অবস্থিত ?
    উত্তর: প্যারিস।

    ✬প্রশ্ন: আফ্রিকাকে স্পেন থেকে আলাদা করেছে ?
    উত্তর: জিব্রালটার প্রণালী।

    ✬প্রশ্ন: এশিয়ার হিন্দু রাষ্ট্র কোনটি ?
    উত্তর: নেপাল।

    ✬প্রশ্ন: বিশ্বের গভীরতম খাল কোনটি ?
    উত্তর: পানামা খাল।

    ✬প্রশ্ন: আল শাবাব কোন দেশের সংগঠন ?
    উত্তর: সোমালিয়া।

    ✬প্রশ্ন: ইন্টারপোলের সদরদপ্তর কোথায় ?
    উত্তর: লিও।

    ✬প্রশ্ন: ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কবে শপথ নিয়েছেন ?
    উত্তর: ২০ জানুয়ারি ২০১৭ইং

    ✬প্রশ্ন: সংকর ধাতু পিতলের উপাদান কী কী ?
    ✬উত্তর: তামা ও দস্তা।

    ✬প্রশ্ন: AU কোন মহাদেশের সংগঠন ?
    উত্তর: আফ্রিকা।

    ✬প্রশ্ন: NATO এর সদর দপ্তর কোথায় ?
    উত্তর: বেলজিয়াম।

    ✬প্রশ্ন: প্লাস্টিডবিহীন উদ্ভিদ কোনটি ?
    উত্তর: Agaricus

    ✬প্রশ্ন: সুমাত্রা দ্বীপ কোন দেশের অংশ ?
    উত্তর: ইন্দোনেশিয়া।

    ✬প্রশ্ন: পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মন্দিরের নাম কী ?
    উত্তর: অ্যাক্টভরা।

    ✬প্রশ্ন: সুবর্ণভুমি কোন দেশের বিমানবন্দর ?
    উত্তর: থাইল্যান্ড।

    ✬প্রশ্নঃ: বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস কবে ?
    উত্তর: ২০ অক্টোবর।

    ✬প্রশ্ন: গুয়ানতানামো বে’ কোথায় অবস্থিত ?
    উত্তর: কিউবা।

    ✬প্রশ্ন: দক্ষিণ ও উত্তর আমেরিকা কোন প্রবাহের দ্বারা যুক্ত ?
    উত্তর: পানামা খাল।

    ✬প্রশ্ন: নবায়ণযোগ্য জ্বালানী কোনটি ?
    উত্তর: পরমাণু শক্তি।

    ✬প্রশ্ন: আয়তন ও জনসংখ্যায় বিশ্বের ক্ষুদ্রতম দেশ কোনটি ?
    উত্তর: ভ্যাটিকান সিটি।

    ✬প্রশ্ন: জিকা ভাইরাস কিসের মাধ্যমে ছড়ায় ?
    উত্তর: মশা।

    ✬প্রশ্ন: বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সুপার কম্পিউটারের নাম কি ?
    উত্তর: তিহানে-১।

    ✬প্রশ্ন: বিশ্বের বৃহত্তম লাইব্রেরির নাম কি ?
    উত্তর: লাইব্রেরি অফ কংগ্রেস।

    ✬প্রশ্ন: বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রাণীর নাম কি ?
    উত্তর: নীল তিমি।

    ✬প্রশ্ন: পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে বড়দিন কবে ?
    উত্তর: ২১ শে জুন।

    ✬প্রশ্ন: পৃথিবীর দক্ষিন গোলার্ধে সবচেয়ে বড়দিন কবে ?
    উত্তর: ২২ শে ডিসেম্বর।

    ✬প্রশ্ন: সর্বত্র দিন রাত্রি সমান কবে ?
    উত্তরঃ: ২১ শে মার্চ ও ২৩ শে সেপ্টেম্বর।

    ✬প্রশ্ন: হিমোগ্লোবিন কি জাতীয় পদার্থ ?
    উত্তর: আমিষ।

    ✬প্রশ্ন: সৌরজগতের কোন গ্রহের উপগ্রহ নেই ?
    উত্তর: বুধ।

    ✬প্রশ্ন: ‘সুপার নোভা’ আসলে কী ?
    উত্তর: মৃত তারকা।

    ✬প্রশ্ন: GMT পূর্নরূপ কি ?
    উত্তর: Greenwich Mean Time

    ✬প্রশ্ন: নাসা কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান ?
    উত্তর: মহাকাশ গবেষণা।

    ✬প্রশ্ন: কোন দেশকে সূর্যদয়ের দেশ বলা হয় ?
    উত্তর: জাপান কে।

    ✬প্রশ্ন: কোন দেশকে বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ দেশ বলা হয় ?
    উত্তর: ইন্দোনেশিয়া।

    ✬প্রশ্ন: “ক্যাম্পনামা” কোন দেশের কারাগার ?
    উত্তর: ইরাক।

    ✬প্রশ্ন: পানামার বিমান সংস্থার নাম কি ?
    উত্তর: কোপা।

    ✬প্রশ্ন: পৃথিবীর ছাদ বলা হয় কাকে ?
    উত্তর: পামির মালভূমিকে।

  • বিসিএস প্রস্তুতিতে আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী থেকে প্রশ্ন ও সমাধান

    উত্তর- ১ লা সেপ্টেম্বর ১৯০৪ 

    ২। সিরিয়া ও পাকিস্থানের সংবাদ সংস্থা কন্তি?

    উত্তর- SANA 

    ৩। ব্লাক ফরেস্ট অবস্থিত কোথায় অবস্থিত?

    উত্তর- জার্মানীতে। 

    ৪। টংগাস ফরেস্ট কোথায় অবস্থিত?

    উত্তর- যুক্তরাষ্ট্র’র আলাস্কা রাজ্যে। 

    ৫। নিউ ফ্রিডম গ্রন্থের রচয়িতা কে?

    উত্তর- উড্রোউইলসন। 

    ৬। Four freedom speech কার লেখা?

    উত্তর -ফ্রাংকলিন ডি রুজভেল্ট। 

    ৭। আধুনিক গনতন্ত্রের সুতিকাগার  কন্তি?

    উত্তর-ব্রিটেন। 

    ৮। OIC প্রথম মহাসচিব টেংকু আব্দুল রহমান ও মহাত্মা গান্ধী উপাধি প্রদান করেন কে?

    উত্তর- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। 

    ৯। WHO এর সদর দপ্তর কবে গঠিত হয়?

    উত্তর- ৪ এপ্রিল ১৯৪৮ সালে। 

    ১০। সুয়েজখাল ভুমধ্যসাগরকে কোন সাগরের সাথে যুক্ত করা হয়?

    উত্তর- লােহিতসাগরের সাথে । 

    ১১। আফ্রিকা থেকে এশিয়াকে পৃথক করেছে কোন সাগর?

    উত্তর- লােহিত সাগর। 

    ১২। জাতিসংঘের সদর দপ্তরের স্থপতি কে?

    উত্তর- ডব্লিউ হ্যারিসন 

    ১৩। সীন নদীর তীরে কোন নগর অবস্থিত?

    উত্তর- প্যারিস । 

    ১৪। কানাডার অটোয়া কোথায় অবস্থিত?

    উত্তর- লরেন্স নদীর তীরে

    ১৫। বসনিয়া ও সার্বিয়াকে বিভক্তকারী নদীর নাম কি?

    উত্তর-দ্রিনা 

    ১৬। জাতিসংঘ ঘােষিত বিশ্ব শান্তি দিবস কবে?

    উত্তর-২৭ এ সেপ্টেম্বর 

    ১৭। ফ্রান্সের পূর্ব নাম কি?

    উত্তর- দিপন 

    ১৮।জাপানের পূর্ব নাম কি?

    উত্তর- নিপ্পন। 

    ১৯। ডেনমাকের অধিবাসীদের কি বলা হয়?

    উত্তর- দিনেমার। 

    ২০। ব্লাক ফরেষ্ট  কোথায় অবস্থিত?

    উত্তর-জার্মানিতে 

    ২১। কুনাইন তৈরি হয় কোন বৃক্ষ হতে?

    উত্তর- সিনকোন গাছ হতে।। 

    ২২। পারস্য উপসাগরে আঞ্চলীয় জোটের নাম কি?

    উত্তর–জিসিসি। 

    ২৩। কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের নাম কি?

    উত্তর -জায়ারে 

    ২৪। ট্রাফালগার স্কয়ার কোথায় অবস্থিত?

    উত্তর- লন্ডনে ।

    ২৫। ক্রিমিয়ার যুদ্ধ সংঘটিত হয় কতসালে?

    উত্তর–১৮৫৩ সালে। ।

    ২৬।রয়টার্স যুক্তরাষ্টের কি?

    উত্তর-একটি সংবাদ সংস্থা

    ২৭। এটি কত সালে গঠিত হয়?

    উত্তর -১৮৫১ 

    .২৮।পারস্য উপসাগরীয় দেশ কয়তি?

    উত্তর-১০ টি

  • বিসিএস প্রস্তুতিতে বাংলা সাহিত্য অংশ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

    বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য বাংলা সাহিত্য অংশ থেকে কিছু প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।যারা বিসিএস বা যেকোনো চাকুরী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন আশা করছি আপনাদের কাজে আসবে। তো চলুন দেখে নেওয়া যাক।

    জাতীয় প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয় কত সালে?
    উত্তর – ১৯৫৪ সালে ।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    সেন বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন কে?
    উত্তর – বিজয় সেন ।

    বাংলার শ্রেষ্ঠ হিন্দু রাজা কে ছিলেন
    উত্তর–লক্ষণ সেন ।

    সর্বপ্রথম ডিজিটাল জেলা কোনটি?
    উত্তর– যশোর ২০ ডিসেম্বর ২০১২ ।

    ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্ট কোন কোন বাংলাদেশির বক্তব্য নেন?
    উত্তর -বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার।

    বাংলাদেশে সরকারি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কয়টি?
    উত্তর -৫ টি ।

    সুরসম্রাট আলাউদ্দিন খান কোথায় জন্ম গ্রহণ করেন?
    উত্তর – ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্ম গ্রহন করেন ।

    সবচেয়ে বেশি চালকল আছে কোথায়?
    উত্তর- নওগাঁ জেলায় ।

    জয়ন্তিকা পাহাড় কোথায় অবস্থিত?
    উত্তর – সিলেটে

    গারো পাহাড় কোথায় অবস্থিত?
    উত্তর – ময়মনসিংহে অবস্থিত ।

    কালো পাহাড় বা পাহাড়ের রাণী বলা হয় কোন পাহাড়কে?
    উত্তর – চিম্বুক পাহাড়কে , যা বান্দরবানে অবস্থিত ।

    পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে?
    উত্তর – গোপাল

    পাল বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা কে?
    উত্তর – ধর্মপাল ।

    আলিগড় আন্দোলনের প্রবর্তক করেন কে?
    উত্তর – স্যার সৈয়দ আহমদ খান ।

    ফরাসী ভাষায় লিখিত বাংলার মুসলিম শাসনের [ পূর্ণাঙ্গ ঐতিহাসিক গ্রন্থ কোনটি?
    উত্তর – রিয়াজ উপসালতিন ।

    বাংলাদেশের দ্রুততম মানব ও মানবী কারা?
    উত্তর- মেজবাহ আহমদ ও শিরিন আক্তার , নৌবাহিনীর সদস্য ।

    বাঙ্গালী ‘ ও ‘ যমুনা ‘ নদীর সংযোগস্থল কোন জেলায়?
    উত্তর : বগুড়া ।

    ধলেশ্বরী নদীর শাখা নদীর নাম কি?
    উত্তর : বুড়িগঙ্গা ।

    আদিনাথ মন্দির কোথায় অবস্থিত?
    উত্তর – মহেশখালী দ্বীপে ।

    বাংলাদেশ ক্রিড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ( বিকেএসপি ) কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?
    উত্তর : ১৪ এপ্রিল ,১৯৮৬

    বাংলাদেশের প্রথম মহিলা রাষ্ট্রদূত কে?
    উত্তর : তাহমিনা খান ডলি

    মহামুনি বিহার কোথায় অবস্থিত?
    উত্তর : চট্টগ্রামের রাউজানে

    কত সালে দেশে ইংরেজি ভাষা সরকারি ভাষা হিসাবে ব্যবহার করা হয়?
    উত্তর: ১৮২৪ সাল ।

    জিজিয়া কর রহিত করেন কে?
    উত্তর: আকবর ৷

    মেঘনা নদী কোথায় গিয়ে ব্রহ্মপুত্রের সাথে মিলিত হয়েছে?
    উত্তর – ভৈরব বাজারে ।

    বাংলাদেশ সরকার জাতীয় পরিবেশ নীতি ঘোষণা করে কত সালে?
    উত্তর – ১৯৯২ সালে ।

    সোনামসজিদ স্থলবন্দর কোথায় অবস্থিত?
    উত্তর- চাঁপাইনবাবগঞ্জ ।

  • আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী থেকে চাকুরী পরীক্ষায় আসার মত কিছু প্রশ্ন ও সমাধান

    বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী থেকে কিছু প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো। যারা বিসিএস বা যেকোনো চাকুরী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন আশা করছি আপনাদের কাজে আসবে। তো চলুন দেখে নেওয়া যাক।

    নরওয়ে ও ডেনমার্কের মুদ্রার নাম- ক্রোন।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    সুইডেন ও নরওয়ের মুদ্রার নাম- ক্রোনা।

    WHO সদর দপ্তর অবস্থিত হয় – জেনেভা,৭ এপ্রিল।

    বন্দর আব্বাস ও আবাদান সমুদ্র বন্দর অবস্থিত- ইরানে।

    আকিয়াব সমুদ্র বন্দর- মিয়ানমারে।

    বাতাসের শহর বলা হয়-শিকাগোকে।

    আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস ( ANC ) গঠিত হয় -১৯১২ সালে।

    গ্রুপ ৭৭ এর জন্ম -১৯৬৪ সালে , এর কোন সদর দপ্তর নেই।

    ১৯৯৩ সালে চেক স্লোভাকিয়া ভেঙ্গে- দুটি রাষ্ট্র হয়।

    মিশর ও লিবিয়া একত্রিত হয় -১৯৫৮ সালে আরব রিপাবলিক নামে ।

    নানকিং চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় -১৮৪২ সালে।

    জাতিসংঘের জমি দান করেন- জন ডি রকফেলার।

    জাতিসংঘের সদর দপ্তরের স্থপতি- ডব্লিউ হ্যারিসন।

    বেতার যন্ত্র আবিস্কর করেন মার্কিনী -১৮৯৬ সালে।

    আয়তনে আফ্রিকার ক্ষুদ্র দেশ- সিসিলিস।

    সভ্যতার ইতিহাসে ফিনিশীদের বড় অবদান- বর্ণমালা আবিস্কার

    দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান অধিবাসী- বান্টু , একসাথে জুলু বলে ।

    উজবিকিস্থানের মুদ্রার নাম- লোম , রাজধানী – তাসখন্দ (city of fountains )।

    লুপানোর – চীনের আনবিক অস্ত্র পরীক্ষার স্থান।

    পূর্ব তিমুর স্বাধীনতা লাভ করে- ইন্দোনেশিয়ার কাছ থেকে ।

    বিশ্বজনসংখ্যা দিবস- ১১ জুলাই।

    বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস- ৭ এপ্রিল ।

    বিশ্ব ডাইবেটিস দিবস- ১৪ নভেম্বর ।

    সুয়েজখাল মিশর জাতীয়করন করেন-২৬ জুলাই ১৯৫৬ সালে ।

    লোকশিল্প জাদুঘর সোনারগাঁও প্রতিষ্ঠিত-১৯৮১ সালে।

    হোচিমিন নগরের পূর্ব নাম- সায়গন।

    আবু মুসা উপদ্বীপ অবস্থিত- পারস্য উপসাগরে

    UNESCO গঠিত হয় – ১৯৪৫ সালে

    ইসিএ ( ECA ) এর সদর দপ্তর অবস্থিত- ইথাপিয়ার আদ্দিস আবাবা

  • আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী থেকে কিছু প্রশ্ন ও সমাধান

    আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।

    বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয় কত সালে?
    উত্তর -২৩ জানুয়ারি, ২০১১

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    বাংলা একাডেমির প্রথম সভাপতি কে ছিলেন?
    উত্তর -মাওলানা আকরাম খাঁ।

    বাংলা একাডেমির প্রথম মহাপরিচালক কে ছিলেন?
    উত্তর – ড. মাযহারুল ইসলাম।

    সম্রাট আকবর মুঘল আমলে কত সালে বাংলা সন প্রবর্তন করেন?
    উত্তর – ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০/১১ মার্চ

    https://youtube.com/watch?v=YIR22jzOQ50

    ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ কত সালে বাংলায় প্রথম স্বাধীন সুলতানি যুগের সূচনা করেন?
    উত্তর -১৩৩৮ সালে

    কে প্রথম সমগ্র বাংলার অধিপতি হন?
    উত্তর – ইলিয়াস শাহ

    ১০ নং সেক্টরে কত জন বাঙ্গালী কর্মকর্তা দায়িত্বে ছিলেন?
    উত্তর -৮ জন

    আমার বন্ধু রাশেদ সিনামার পরিচালক কে?
    উত্তর- মোরশেদুল ইসলাম

    বুড়িগঙ্গা নদীটি কোন নদীর শাখা নদী?
    উত্তর – ধলেশ্বরী নদী।

    ইপিআই কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিরোধ্য রোগের সংখ্যা কত?
    উত্তর-৭টি।

    সারভারের সাথে সংযুক্ত কম্পিউটারকে কি বলে?
    উত্তর – হোস্ট।

    কান্তজির মন্দিও কোথায় অবস্থিত?
    উত্তর – দিনাজপুরে

    বাংলাদেশে মেশিন রিডাবল পাসপোর্ট চালু হয় কত সালে?
    উত্তর- ২ জুন ২০১০ ।

    বুড়িমাড়ি স্থল বন্দর কোথায় অবস্থিত?
    উত্তর – লালমনিরহাট এ। অপরদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চন্দ্রবান্দা অবস্থিত।

    ঢাকা পৌরসভা ঘোষনা হয় কত তারিখে?
    উত্তর -১লা আগস্ট ১৮৬৪ সালে।

    মালভূমি কোন দেশে পাওয়া যায় না?
    উত্তর – বাংলাদেশ

    সিলেটের উত্তরে কোন রাজ্য অবস্থিত?
    উত্তর – মেঘালয়

    Response of the living and non-living কার লেখা?
    উত্তর- জগদীস চন্দ্ৰ বসু।

    টপ্পা গানের জনক কে?
    উত্তর- রামনিধি গুপ্ত।

    ভবদহ বিল কোথায় অবস্থিত?
    উত্তর-যশোর

    স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রতীক হিসেবে পরিচিত কোন ভাস্কর্য?
    উত্তর-অঙ্গীকার-চাদপুর

    তালিবাবাদ উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র চালু হয় কত সালে?
    উত্তর-১৯৮২ সালে

    সাত গম্বুজ মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা কে?
    উত্তর-শায়েস্তা খার পুত্র উমিদ খাঁ

    ঢাকার বিখ্যাত তারা মসজিদ নির্মাণ করেন কে?
    উত্তর-মির্জা আহমদ খান

    হরিপুরে তেল আবিষ্কার হয় কত সালে?
    উত্তর-১৯৮৬ সালে

    প্রশাসনিক ট্রাইবুন্যাল লিপিবদ্ধ রয়েছে
    উত্তর-সংবিধানের ১১৭নং অনুচ্ছেদ

  • বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান

    বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান কত সে বিষয়ে কিছু তথ্য নিজে আজকের লেখাটি হয়েছে। যেকোন চাকুরী বা ভর্তি পরীক্ষায় আজকের লেখাটি থেকে প্রশ্ন কমন পেতে পারেন।চলুন এক নজরে পড়ে নেওয়া যাক —

    জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান – ৮ ম ।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    বর্তমান বিশ্বে বাংলা ভাষার অবস্থান –৮ ম ।

    জিডিপির আকারের হিসাবে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান – ৪১ তম (এশিয়ায় ১৬ তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয়)।

    বিশ্ব অর্থনীতি ও বাণিজ্যে রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান –৪২ তম।

    বিশ্ব অর্থনীতি ও বাণিজ্যে আমদানিতে বাংলাদেশের অবস্থান–৩০ তম।

    এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৪৯ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ–১৩ তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ।( চীন সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক দেশ )।

    দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির তালিকায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান –দ্বিতীয়।

    দ্রুত রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান – দ্বিতীয়।

    সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় অর্জনকারী ১০ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান – ১০ম।

    জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী প্রেরণে বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান – দ্বিতীয়।

    শান্তিরক্ষী প্রেরণে বর্তমানে বিশ্বে শীর্ষ দেশ –ইথিওপিয়া ।

    বিশ্বে আউটসোর্সিং সেবা প্রদানে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান –২য় ( শীর্ষ দেশ – ভারত )।

    এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আবাদি কৃষিজমির পরিমাণের দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান – প্রথম।

    বিশ্বে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয় (বিশ্বে প্রথম – চীন )।

    ইউরোপে তৈরী পোশাক রপ্তানির দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান –২য়

    পাট উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান হয় ।

    স্বাদু পানির মাছ উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান –২ য় ।

    চাষকৃত মাছ উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান –৬ ষ্ঠ ।

    কাঁঠাল উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান –দ্বিতীয় ।

    আম উৎপাদনে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান –৬ ষ্ঠ ।

    সবজি চাষে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়।

    সবজি চাষে শীর্ষে–ভারত ।

    বজ্রপাতে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় – বাংলাদেশে ।

  • অর্থনৈতিক যুদ্ধ, যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব ও বর্তমান পরিস্থিতি

    এই পৃথিবী কখনােই যুদ্ধবিহীন ছিল না। তবে সম্প্রতি ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরােপে যুদ্ধ ফিরে আসাটাই অনেক বড় ঘটনা। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আর হবে কি না, সে প্রশ্ন মাথায় নিয়েই বলা যায়, এখন যে যুদ্ধ শুরু হলাে—এটা কি প্রথম অর্থনৈতিক বিশ্বযুদ্ধ?

    অর্থনৈতিক যুদ্ধ

    অর্থনৈতিক যুদ্ধ বলতে একটি দেশের অর্থনীতিকে দুর্বল করার জন্য বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরােপ করা এবং দেশটির রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তি হ্রাস করাকে বােঝায়। অর্থাৎ অর্থনৈতিক যুদ্ধের মূল লক্ষ্য প্রতিপক্ষ দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্রে আঘাত হানা। এ যুদ্ধের কিছু অস্ত্র হলাে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা, পণ্য বর্জন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, শুল্ক বৈষম্য, মূলধন সম্পদ হিমায়িত করা, কালাে তালিকাভুক্তি, শক্রর সম্পদ বা সরবরাহ লাইনের দখল বা নিয়ন্ত্রণ, সাহায্য স্থগিত করা, বিনিয়ােগ এবং অন্যান্য মূলধন প্রবাহ নিষিদ্ধ কা ও বাজেয়াপ্ত করা। প্রাচীন গ্রিসে পেলােপােনেশিয়ান যুদ্ধের (৪৩১-৪০৪ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ) আগে থেকেই অর্থনৈতিক যুদ্ধের প্রচলন ছিল।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব

    যুদ্ধের অনেকগুলাে ক্ষতিকর দিক আছে। মৃত্যু ও অনিশ্চয়তা তাে আছেই, আরও আছে । অবকাঠামাের ধ্বংস, কর্মক্ষম মানুষের হার : কমে যাওয়া, মূল্যস্ফীতির চাপ, পণ্যের স্বল্পতা, সরবরাহব্যবস্থা ভেঙে পড়া, রাষ্ট্রীয় ঋণ বৃদ্ধি এবং স্বাভাবিক অর্থনীতির কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়া। ব্রিটিশ সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, লেখক ও শান্তিবাদী রালফ নর্মান অ্যাঞ্জেল তার দ্য গ্রেট ইলিউশন বইয়ে লিখেন, আসলে একটি যুদ্ধের অর্থনৈতিক ক্ষতি এত বেশি যে, যুদ্ধ করে কেউ আসলে শেষ পর্যন্ত লাভবান হয় না।

    যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাবের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। যুদ্ধের সময় পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে নিত্য প্রয়ােজনীয় দ্রব্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। আক্রান্ত দেশে বৈশ্বিক বিনিয়ােগ বন্ধ হয়ে যায়, সরকারি দেনা বৃদ্ধি পায়, ফলে ভবিষ্যতে করারােপের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। যুদ্ধের খরচ বাড়লে সরকারের পক্ষে অন্যান্য খাত যেমন উন্নয়ন, সামাজিক সুরক্ষায় বরাদ্দ কমে যায়। যুদ্ধের ফলে জিডিপি কমে গিয়ে। দীর্ঘস্থায়ী মন্দা দেখা দেয়।

    বর্তমান পরিস্থিতি

    ইউক্রেনে সামরিক হামলা শুরু করার পর পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অর্থনৈতিক যুদ্ধ শুরু করে। তাদের ধারণা, রাশিয়াকে অর্থনৈতিক যুদ্ধে পরাস্ত করতে পারলে তারা সামরিক অভিযান থেকে পিছু হটবে। রাশিয়ার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলাের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরােপ করেছে পশ্চিমা দেশগুলাে। যার মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ১৩টি রুশ ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে বিনিয়ােগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরােপ করা হয়েছে। বাদ যায়নি রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক, জাতীয় সম্পদ তহবিল, অর্থ মন্ত্রণালয়। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রাশিয়াও কিছু কিছু নিষেধাজ্ঞা দিতে শুরু করেছে।

    নিষেধাজ্ঞায় শীর্ষ দেশ

    দেশ নিষেধাজ্ঞার পরিমাণ
    রাশিয়া৫,৫৩২টি
    ইরান৩,৬১৬টি
    সিরিয়া২,৬০৮টি
    উত্তর কোরিয়া২,০৭৭টি

    পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞা আরােপ করেছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং দেশটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। রুশ জ্বালানি কোম্পানি, রেল, পরিবহন ও টেলিকম কোম্পানিতে মার্কিন ঋণ ও বিনিয়ােগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিশেষ করে রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর বিধিনিষেধ আরােপ করা হয়, যাতে রুশ প্রতিরক্ষা, মহাকাশ ও সামুদ্রিক খাতে উন্নত প্রযুক্তি স্থানান্তর না হয়, এবং রুশ বাহিনীগুলাের আধুনিকীকরণ ব্যাহত হয়। রুশ এয়ারলাইন্স ও ব্যক্তিগত জেটের ইইউ, যুক্তরাজ্য ও মার্কিন আকাশসীমা ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। এছাড়া কতিপয় রুশ ব্যাংকের সােসাইটি ফর ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ইন্টার ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন্স (SWIFT) ব্যবহারের সুযােগ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

    উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মালিকানাধীন বেলজিয়ামের এ প্রতিষ্ঠান আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলােকে নিরাপদ বার্তা বিনিময় সুবিধা প্রদান করে। আর্থিক বিধিনিষেধের কারণে মার্কিন ডলার ও রুশ রুবলের বিনিময় হার ১ ডলারে ১৩১ রুবলে ঠেকেছে। পিক ট্রেডিং রিসার্চের ভাষ্য অনুযায়ী, দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে রুশ সামরিক অভিযানের পর গমের দাম ৪০%, অপরিশােধিত জ্বালানি তেলের দাম ২০%, ভুট্টার দাম ১২%, পাম ও সয়াবিন তেলের দাম যথাক্রমে ২০% ও ১২.৪% বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বড় রপ্তানিকারক রাশিয়া। দেশটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জ্বালানি তেল উৎপাদক। ইউরােপের মােট প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদার ৪০% এবং জ্বালানি তেলের এক-তৃতীয়াংশ রাশিয়া একাই সরবরাহ করে।

    এই পৃথিবী কখনােই যুদ্ধবিহীন ছিল না। তবে সম্প্রতি ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরােপে যুদ্ধ ফিরে আসাটাই অনেক বড় ঘটনা। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আর হবে কি না, সে প্রশ্ন মাথায় নিয়েই বলা যায়, এখন যে যুদ্ধ শুরু হলাে—এটা কি প্রথম অর্থনৈতিক বিশ্বযুদ্ধ?

    অর্থনৈতিক যুদ্ধ

    অর্থনৈতিক যুদ্ধ বলতে একটি দেশের অর্থনীতিকে দুর্বল করার জন্য বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরােপ করা এবং দেশটির রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তি হ্রাস করাকে বােঝায়। অর্থাৎ অর্থনৈতিক যুদ্ধের মূল লক্ষ্য প্রতিপক্ষ দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্রে আঘাত হানা। এ যুদ্ধের কিছু অস্ত্র হলাে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা, পণ্য বর্জন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, শুল্ক বৈষম্য, মূলধন সম্পদ হিমায়িত করা, কালাে তালিকাভুক্তি, শক্রর সম্পদ বা সরবরাহ লাইনের দখল বা নিয়ন্ত্রণ, সাহায্য স্থগিত করা, বিনিয়ােগ এবং অন্যান্য মূলধন প্রবাহ নিষিদ্ধ কা ও বাজেয়াপ্ত করা। প্রাচীন গ্রিসে পেলােপােনেশিয়ান যুদ্ধের (৪৩১-৪০৪ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ) আগে থেকেই অর্থনৈতিক যুদ্ধের প্রচলন ছিল।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব

    যুদ্ধের অনেকগুলাে ক্ষতিকর দিক আছে। মৃত্যু ও অনিশ্চয়তা তাে আছেই, আরও আছে । অবকাঠামাের ধ্বংস, কর্মক্ষম মানুষের হার : কমে যাওয়া, মূল্যস্ফীতির চাপ, পণ্যের স্বল্পতা, সরবরাহব্যবস্থা ভেঙে পড়া, রাষ্ট্রীয় ঋণ বৃদ্ধি এবং স্বাভাবিক অর্থনীতির কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়া। ব্রিটিশ সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, লেখক ও শান্তিবাদী রালফ নর্মান অ্যাঞ্জেল তার দ্য গ্রেট ইলিউশন বইয়ে লিখেন, আসলে একটি যুদ্ধের অর্থনৈতিক ক্ষতি এত বেশি যে, যুদ্ধ করে কেউ আসলে শেষ পর্যন্ত লাভবান হয় না।

    যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাবের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। যুদ্ধের সময় পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে নিত্য প্রয়ােজনীয় দ্রব্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। আক্রান্ত দেশে বৈশ্বিক বিনিয়ােগ বন্ধ হয়ে যায়, সরকারি দেনা বৃদ্ধি পায়, ফলে ভবিষ্যতে করারােপের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। যুদ্ধের খরচ বাড়লে সরকারের পক্ষে অন্যান্য খাত যেমন উন্নয়ন, সামাজিক সুরক্ষায় বরাদ্দ কমে যায়। যুদ্ধের ফলে জিডিপি কমে গিয়ে। দীর্ঘস্থায়ী মন্দা দেখা দেয়।

    বর্তমান পরিস্থিতি

    ইউক্রেনে সামরিক হামলা শুরু করার পর পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অর্থনৈতিক যুদ্ধ শুরু করে। তাদের ধারণা, রাশিয়াকে অর্থনৈতিক যুদ্ধে পরাস্ত করতে পারলে তারা সামরিক অভিযান থেকে পিছু হটবে। রাশিয়ার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলাের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরােপ করেছে পশ্চিমা দেশগুলাে। যার মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ১৩টি রুশ ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে বিনিয়ােগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরােপ করা হয়েছে। বাদ যায়নি রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক, জাতীয় সম্পদ তহবিল, অর্থ মন্ত্রণালয়। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রাশিয়াও কিছু কিছু নিষেধাজ্ঞা দিতে শুরু করেছে।

    নিষেধাজ্ঞায় শীর্ষ দেশ

    দেশ নিষেধাজ্ঞার পরিমাণ
    রাশিয়া৫,৫৩২টি
    ইরান৩,৬১৬টি
    সিরিয়া২,৬০৮টি
    উত্তর কোরিয়া২,০৭৭টি

    পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞা আরােপ করেছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং দেশটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। রুশ জ্বালানি কোম্পানি, রেল, পরিবহন ও টেলিকম কোম্পানিতে মার্কিন ঋণ ও বিনিয়ােগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিশেষ করে রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর বিধিনিষেধ আরােপ করা হয়, যাতে রুশ প্রতিরক্ষা, মহাকাশ ও সামুদ্রিক খাতে উন্নত প্রযুক্তি স্থানান্তর না হয়, এবং রুশ বাহিনীগুলাের আধুনিকীকরণ ব্যাহত হয়। রুশ এয়ারলাইন্স ও ব্যক্তিগত জেটের ইইউ, যুক্তরাজ্য ও মার্কিন আকাশসীমা ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। এছাড়া কতিপয় রুশ ব্যাংকের সােসাইটি ফর ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ইন্টার ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন্স (SWIFT) ব্যবহারের সুযােগ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

    উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মালিকানাধীন বেলজিয়ামের এ প্রতিষ্ঠান আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলােকে নিরাপদ বার্তা বিনিময় সুবিধা প্রদান করে। আর্থিক বিধিনিষেধের কারণে মার্কিন ডলার ও রুশ রুবলের বিনিময় হার ১ ডলারে ১৩১ রুবলে ঠেকেছে। পিক ট্রেডিং রিসার্চের ভাষ্য অনুযায়ী, দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে রুশ সামরিক অভিযানের পর গমের দাম ৪০%, অপরিশােধিত জ্বালানি তেলের দাম ২০%, ভুট্টার দাম ১২%, পাম ও সয়াবিন তেলের দাম যথাক্রমে ২০% ও ১২.৪% বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বড় রপ্তানিকারক রাশিয়া। দেশটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জ্বালানি তেল উৎপাদক। ইউরােপের মােট প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদার ৪০% এবং জ্বালানি তেলের এক-তৃতীয়াংশ রাশিয়া একাই সরবরাহ করে।

    তাই রাশিয়া যদি গ্যাস ও জ্বালানি তেল সরবরাহে হস্তক্ষেপ করে, ইউরােপের অর্থনীতি যে চরম জ্বালানি সংকটে পড়বে, সেকথা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, ইউক্রেন ও রাশিয়া বিশ্বের মােট সূর্যমুখী তেলের ৬০% উৎপাদন করে। আবার বিশ্বের মােট গমের ২৮,৯% উৎপাদিত হয়। রাশিয়া ও ইউক্রেনে। ইউরােপের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৩৯%ই জৈব জ্বালানিভিত্তিক, যা আসে মূলত রাশিয়া থেকেই। যুদ্ধ রু হওয়ায় ইউক্রেন পণ্য রপ্তানি করতে পারছে না, আর রাশিয়াকে রপ্তানি করতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়াকে একঘরে করার নীতি সফল হলেও এতে বিপদে পড়বে সমগ্র বিশ্ব।

    তাই রাশিয়া যদি গ্যাস ও জ্বালানি তেল সরবরাহে হস্তক্ষেপ করে, ইউরােপের অর্থনীতি যে চরম জ্বালানি সংকটে পড়বে, সেকথা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, ইউক্রেন ও রাশিয়া বিশ্বের মােট সূর্যমুখী তেলের ৬০% উৎপাদন করে। আবার বিশ্বের মােট গমের ২৮,৯% উৎপাদিত হয়। রাশিয়া ও ইউক্রেনে। ইউরােপের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৩৯%ই জৈব জ্বালানিভিত্তিক, যা আসে মূলত রাশিয়া থেকেই। যুদ্ধ রু হওয়ায় ইউক্রেন পণ্য রপ্তানি করতে পারছে না, আর রাশিয়াকে রপ্তানি করতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়াকে একঘরে করার নীতি সফল হলেও এতে বিপদে পড়বে সমগ্র বিশ্ব।

  • অর্থনৈতিক যুদ্ধ, যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব ও বর্তমান পরিস্থিতি

    এই পৃথিবী কখনােই যুদ্ধবিহীন ছিল না। তবে সম্প্রতি ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরােপে যুদ্ধ ফিরে আসাটাই অনেক বড় ঘটনা। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আর হবে কি না, সে প্রশ্ন মাথায় নিয়েই বলা যায়, এখন যে যুদ্ধ শুরু হলাে—এটা কি প্রথম অর্থনৈতিক বিশ্বযুদ্ধ?

    অর্থনৈতিক যুদ্ধ

    অর্থনৈতিক যুদ্ধ বলতে একটি দেশের অর্থনীতিকে দুর্বল করার জন্য বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরােপ করা এবং দেশটির রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তি হ্রাস করাকে বােঝায়। অর্থাৎ অর্থনৈতিক যুদ্ধের মূল লক্ষ্য প্রতিপক্ষ দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্রে আঘাত হানা। এ যুদ্ধের কিছু অস্ত্র হলাে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা, পণ্য বর্জন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, শুল্ক বৈষম্য, মূলধন সম্পদ হিমায়িত করা, কালাে তালিকাভুক্তি, শক্রর সম্পদ বা সরবরাহ লাইনের দখল বা নিয়ন্ত্রণ, সাহায্য স্থগিত করা, বিনিয়ােগ এবং অন্যান্য মূলধন প্রবাহ নিষিদ্ধ কা ও বাজেয়াপ্ত করা। প্রাচীন গ্রিসে পেলােপােনেশিয়ান যুদ্ধের (৪৩১-৪০৪ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ) আগে থেকেই অর্থনৈতিক যুদ্ধের প্রচলন ছিল।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব

    যুদ্ধের অনেকগুলাে ক্ষতিকর দিক আছে। মৃত্যু ও অনিশ্চয়তা তাে আছেই, আরও আছে । অবকাঠামাের ধ্বংস, কর্মক্ষম মানুষের হার : কমে যাওয়া, মূল্যস্ফীতির চাপ, পণ্যের স্বল্পতা, সরবরাহব্যবস্থা ভেঙে পড়া, রাষ্ট্রীয় ঋণ বৃদ্ধি এবং স্বাভাবিক অর্থনীতির কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়া। ব্রিটিশ সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, লেখক ও শান্তিবাদী রালফ নর্মান অ্যাঞ্জেল তার দ্য গ্রেট ইলিউশন বইয়ে লিখেন, আসলে একটি যুদ্ধের অর্থনৈতিক ক্ষতি এত বেশি যে, যুদ্ধ করে কেউ আসলে শেষ পর্যন্ত লাভবান হয় না।

    যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাবের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। যুদ্ধের সময় পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে নিত্য প্রয়ােজনীয় দ্রব্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। আক্রান্ত দেশে বৈশ্বিক বিনিয়ােগ বন্ধ হয়ে যায়, সরকারি দেনা বৃদ্ধি পায়, ফলে ভবিষ্যতে করারােপের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। যুদ্ধের খরচ বাড়লে সরকারের পক্ষে অন্যান্য খাত যেমন উন্নয়ন, সামাজিক সুরক্ষায় বরাদ্দ কমে যায়। যুদ্ধের ফলে জিডিপি কমে গিয়ে। দীর্ঘস্থায়ী মন্দা দেখা দেয়।

    বর্তমান পরিস্থিতি

    ইউক্রেনে সামরিক হামলা শুরু করার পর পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অর্থনৈতিক যুদ্ধ শুরু করে। তাদের ধারণা, রাশিয়াকে অর্থনৈতিক যুদ্ধে পরাস্ত করতে পারলে তারা সামরিক অভিযান থেকে পিছু হটবে। রাশিয়ার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলাের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরােপ করেছে পশ্চিমা দেশগুলাে। যার মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ১৩টি রুশ ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে বিনিয়ােগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরােপ করা হয়েছে। বাদ যায়নি রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক, জাতীয় সম্পদ তহবিল, অর্থ মন্ত্রণালয়। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রাশিয়াও কিছু কিছু নিষেধাজ্ঞা দিতে শুরু করেছে।

    নিষেধাজ্ঞায় শীর্ষ দেশ

    দেশ নিষেধাজ্ঞার পরিমাণ
    রাশিয়া৫,৫৩২টি
    ইরান৩,৬১৬টি
    সিরিয়া২,৬০৮টি
    উত্তর কোরিয়া২,০৭৭টি

    পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞা আরােপ করেছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং দেশটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। রুশ জ্বালানি কোম্পানি, রেল, পরিবহন ও টেলিকম কোম্পানিতে মার্কিন ঋণ ও বিনিয়ােগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিশেষ করে রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর বিধিনিষেধ আরােপ করা হয়, যাতে রুশ প্রতিরক্ষা, মহাকাশ ও সামুদ্রিক খাতে উন্নত প্রযুক্তি স্থানান্তর না হয়, এবং রুশ বাহিনীগুলাের আধুনিকীকরণ ব্যাহত হয়। রুশ এয়ারলাইন্স ও ব্যক্তিগত জেটের ইইউ, যুক্তরাজ্য ও মার্কিন আকাশসীমা ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। এছাড়া কতিপয় রুশ ব্যাংকের সােসাইটি ফর ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ইন্টার ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন্স (SWIFT) ব্যবহারের সুযােগ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

    উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মালিকানাধীন বেলজিয়ামের এ প্রতিষ্ঠান আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলােকে নিরাপদ বার্তা বিনিময় সুবিধা প্রদান করে। আর্থিক বিধিনিষেধের কারণে মার্কিন ডলার ও রুশ রুবলের বিনিময় হার ১ ডলারে ১৩১ রুবলে ঠেকেছে। পিক ট্রেডিং রিসার্চের ভাষ্য অনুযায়ী, দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে রুশ সামরিক অভিযানের পর গমের দাম ৪০%, অপরিশােধিত জ্বালানি তেলের দাম ২০%, ভুট্টার দাম ১২%, পাম ও সয়াবিন তেলের দাম যথাক্রমে ২০% ও ১২.৪% বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বড় রপ্তানিকারক রাশিয়া। দেশটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জ্বালানি তেল উৎপাদক। ইউরােপের মােট প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদার ৪০% এবং জ্বালানি তেলের এক-তৃতীয়াংশ রাশিয়া একাই সরবরাহ করে।

    তাই রাশিয়া যদি গ্যাস ও জ্বালানি তেল সরবরাহে হস্তক্ষেপ করে, ইউরােপের অর্থনীতি যে চরম জ্বালানি সংকটে পড়বে, সেকথা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, ইউক্রেন ও রাশিয়া বিশ্বের মােট সূর্যমুখী তেলের ৬০% উৎপাদন করে। আবার বিশ্বের মােট গমের ২৮,৯% উৎপাদিত হয়। রাশিয়া ও ইউক্রেনে। ইউরােপের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৩৯%ই জৈব জ্বালানিভিত্তিক, যা আসে মূলত রাশিয়া থেকেই। যুদ্ধ রু হওয়ায় ইউক্রেন পণ্য রপ্তানি করতে পারছে না, আর রাশিয়াকে রপ্তানি করতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়াকে একঘরে করার নীতি সফল হলেও এতে বিপদে পড়বে সমগ্র বিশ্ব।

    এই পৃথিবী কখনােই যুদ্ধবিহীন ছিল না। তবে সম্প্রতি ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরােপে যুদ্ধ ফিরে আসাটাই অনেক বড় ঘটনা। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আর হবে কি না, সে প্রশ্ন মাথায় নিয়েই বলা যায়, এখন যে যুদ্ধ শুরু হলাে—এটা কি প্রথম অর্থনৈতিক বিশ্বযুদ্ধ?

    অর্থনৈতিক যুদ্ধ

    অর্থনৈতিক যুদ্ধ বলতে একটি দেশের অর্থনীতিকে দুর্বল করার জন্য বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরােপ করা এবং দেশটির রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তি হ্রাস করাকে বােঝায়। অর্থাৎ অর্থনৈতিক যুদ্ধের মূল লক্ষ্য প্রতিপক্ষ দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্রে আঘাত হানা। এ যুদ্ধের কিছু অস্ত্র হলাে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা, পণ্য বর্জন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, শুল্ক বৈষম্য, মূলধন সম্পদ হিমায়িত করা, কালাে তালিকাভুক্তি, শক্রর সম্পদ বা সরবরাহ লাইনের দখল বা নিয়ন্ত্রণ, সাহায্য স্থগিত করা, বিনিয়ােগ এবং অন্যান্য মূলধন প্রবাহ নিষিদ্ধ কা ও বাজেয়াপ্ত করা। প্রাচীন গ্রিসে পেলােপােনেশিয়ান যুদ্ধের (৪৩১-৪০৪ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ) আগে থেকেই অর্থনৈতিক যুদ্ধের প্রচলন ছিল।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব

    যুদ্ধের অনেকগুলাে ক্ষতিকর দিক আছে। মৃত্যু ও অনিশ্চয়তা তাে আছেই, আরও আছে । অবকাঠামাের ধ্বংস, কর্মক্ষম মানুষের হার : কমে যাওয়া, মূল্যস্ফীতির চাপ, পণ্যের স্বল্পতা, সরবরাহব্যবস্থা ভেঙে পড়া, রাষ্ট্রীয় ঋণ বৃদ্ধি এবং স্বাভাবিক অর্থনীতির কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়া। ব্রিটিশ সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, লেখক ও শান্তিবাদী রালফ নর্মান অ্যাঞ্জেল তার দ্য গ্রেট ইলিউশন বইয়ে লিখেন, আসলে একটি যুদ্ধের অর্থনৈতিক ক্ষতি এত বেশি যে, যুদ্ধ করে কেউ আসলে শেষ পর্যন্ত লাভবান হয় না।

    যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাবের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। যুদ্ধের সময় পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে নিত্য প্রয়ােজনীয় দ্রব্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। আক্রান্ত দেশে বৈশ্বিক বিনিয়ােগ বন্ধ হয়ে যায়, সরকারি দেনা বৃদ্ধি পায়, ফলে ভবিষ্যতে করারােপের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। যুদ্ধের খরচ বাড়লে সরকারের পক্ষে অন্যান্য খাত যেমন উন্নয়ন, সামাজিক সুরক্ষায় বরাদ্দ কমে যায়। যুদ্ধের ফলে জিডিপি কমে গিয়ে। দীর্ঘস্থায়ী মন্দা দেখা দেয়।

    বর্তমান পরিস্থিতি

    ইউক্রেনে সামরিক হামলা শুরু করার পর পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অর্থনৈতিক যুদ্ধ শুরু করে। তাদের ধারণা, রাশিয়াকে অর্থনৈতিক যুদ্ধে পরাস্ত করতে পারলে তারা সামরিক অভিযান থেকে পিছু হটবে। রাশিয়ার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলাের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরােপ করেছে পশ্চিমা দেশগুলাে। যার মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ১৩টি রুশ ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে বিনিয়ােগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরােপ করা হয়েছে। বাদ যায়নি রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক, জাতীয় সম্পদ তহবিল, অর্থ মন্ত্রণালয়। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রাশিয়াও কিছু কিছু নিষেধাজ্ঞা দিতে শুরু করেছে।

    নিষেধাজ্ঞায় শীর্ষ দেশ

    দেশ নিষেধাজ্ঞার পরিমাণ
    রাশিয়া৫,৫৩২টি
    ইরান৩,৬১৬টি
    সিরিয়া২,৬০৮টি
    উত্তর কোরিয়া২,০৭৭টি

    পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞা আরােপ করেছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং দেশটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। রুশ জ্বালানি কোম্পানি, রেল, পরিবহন ও টেলিকম কোম্পানিতে মার্কিন ঋণ ও বিনিয়ােগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিশেষ করে রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর বিধিনিষেধ আরােপ করা হয়, যাতে রুশ প্রতিরক্ষা, মহাকাশ ও সামুদ্রিক খাতে উন্নত প্রযুক্তি স্থানান্তর না হয়, এবং রুশ বাহিনীগুলাের আধুনিকীকরণ ব্যাহত হয়। রুশ এয়ারলাইন্স ও ব্যক্তিগত জেটের ইইউ, যুক্তরাজ্য ও মার্কিন আকাশসীমা ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। এছাড়া কতিপয় রুশ ব্যাংকের সােসাইটি ফর ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ইন্টার ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন্স (SWIFT) ব্যবহারের সুযােগ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

    উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মালিকানাধীন বেলজিয়ামের এ প্রতিষ্ঠান আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলােকে নিরাপদ বার্তা বিনিময় সুবিধা প্রদান করে। আর্থিক বিধিনিষেধের কারণে মার্কিন ডলার ও রুশ রুবলের বিনিময় হার ১ ডলারে ১৩১ রুবলে ঠেকেছে। পিক ট্রেডিং রিসার্চের ভাষ্য অনুযায়ী, দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে রুশ সামরিক অভিযানের পর গমের দাম ৪০%, অপরিশােধিত জ্বালানি তেলের দাম ২০%, ভুট্টার দাম ১২%, পাম ও সয়াবিন তেলের দাম যথাক্রমে ২০% ও ১২.৪% বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বড় রপ্তানিকারক রাশিয়া। দেশটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জ্বালানি তেল উৎপাদক। ইউরােপের মােট প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদার ৪০% এবং জ্বালানি তেলের এক-তৃতীয়াংশ রাশিয়া একাই সরবরাহ করে।

    তাই রাশিয়া যদি গ্যাস ও জ্বালানি তেল সরবরাহে হস্তক্ষেপ করে, ইউরােপের অর্থনীতি যে চরম জ্বালানি সংকটে পড়বে, সেকথা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, ইউক্রেন ও রাশিয়া বিশ্বের মােট সূর্যমুখী তেলের ৬০% উৎপাদন করে। আবার বিশ্বের মােট গমের ২৮,৯% উৎপাদিত হয়। রাশিয়া ও ইউক্রেনে। ইউরােপের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৩৯%ই জৈব জ্বালানিভিত্তিক, যা আসে মূলত রাশিয়া থেকেই। যুদ্ধ রু হওয়ায় ইউক্রেন পণ্য রপ্তানি করতে পারছে না, আর রাশিয়াকে রপ্তানি করতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়াকে একঘরে করার নীতি সফল হলেও এতে বিপদে পড়বে সমগ্র বিশ্ব।

  • স্নায়ুযুদ্ধ উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ

    ইংরেজি Cold War -এর বাংলা প্রতিশব্দ স্নায়ুযুদ্ধ বা ঠান্ডা লড়াই। এ লড়াইয়ে একদিক যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্ব আর অন্যদিকে, সােভিয়েত ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক দুনিয়া। দুই পরাশক্তির মেরুকরণে বিশ্ব বিভাজিত এবং সার্বক্ষণিক যুদ্ধের উত্তেজনা ঘিরে রাখে। ইরান-সৌদি দ্বন্দ্বে ২০২০ সালের শুরুতে জেনারেল সুলাইমানিকে হত্যা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন সরাসরি যুদ্ধে যাওয়ার পূর্ব মুহূর্ত অনেকটা স্নায়ুযুদ্ধের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

    ধারণা

    সরাসরি কোনাে যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করে, শক্তি প্রদর্শনে যুদ্ধের মহড়া চালিয়ে যাওয়াকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিভাষায় স্নায়ুযুদ্ধ বলে অভিহিত করা হয়। আভিধানিকভাবে স্নায়ুযুদ্ধ কথাটির উদ্ভব হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর। কূটনৈতিক ব্যক্তিত্ব বার্নাড বারুচ সাউথ ক্যারােলিনায় এক ভাষণে সর্বপ্রথম স্নায়যুদ্ধ প্রত্যয়টি ব্যবহার করেন বলে জানা যায়। তবে তিনি স্নায়ুযুদ্ধ বলতে কোনাে যুদ্ধাবস্থা বােঝাননি। বিভিন্ন জাতি ও রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কে উত্থান-পতন এবং প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষ কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব, সম্পর্কে তিক্ততা কিংবা মতবিরােধ এ যুদ্ধকে প্রণােদিত করে।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    উদ্ভব

    স্নায়ুযুদ্ধের সূচনাপর্বে কোন শক্তি স্নায়ুযুদ্ধকে প্রণােদিত করে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলা কঠিন। বিশ্লেষকগণ এ যুদ্ধের সূচনা পর্বে সােভিয়েত ইউনিয়ন কিংবা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সােভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাব বিস্তারের যে প্রবণতা, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা যুক্তরাজ্য বাধা হয়ে না দাঁড়ালে তাদের অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখিন হতে পারে। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ৫ মার্চ ১৯৪৬ যুক্তরাজ্যের তঙ্কালীন প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল ফুলটন বক্তৃতায় উল্লেখ করেন, রাশিয়া একমাত্র শক্তি প্রয়ােগ ব্যতীত আর কোনাে ভাষা বােঝে না। তাই বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য রাশিয়ার ওপর শক্তি প্রয়ােগের বিকল্প নেই। আর এ নীতি শেষ পর্যন্ত রূপ নেয় স্নায়ুযুদ্ধে।

    স্নায়ুযুদ্ধকালীন বিশ্ব

    স্নায়ুযুদ্ধের প্রথম পর্যায়ে ইউরােপে সােভিয়েত ইউনিয়নের মতাদর্শিক সমাজতান্ত্রিক শিবিরের উদ্ভব, ট্রম্যান নীতি, মার্শাল পরিকল্পনা, বার্লিন সংকট, ওয়ারশ চুক্তি, ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি, কিউবা সংকট প্রভৃতি বিষয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সােভিয়েত ইউনিয়নের সম্প্রসারণবাদে ভয় পেয়ে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রম্যানের ১৯৪৭ সালে দেওয়া তত্ত্বের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য ছিল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও জাতীয় ঐক্য রক্ষার নামে অন্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অজুহাত প্রতিহত করা।

    পাশাপাশি ট্রম্যান তত্ত্বের আলােকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজনীতিতে সােভিয়েত ইউনিয়ন যেভাবে হস্তক্ষেপ করছিল তা প্রতিরােধেও একটি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা চালানাে হয়। এর প্রেক্ষিতে ইউরােপের ১৬টি কমিউনিস্ট বিরােধী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোট গঠন করে। এ দেশগুলাের মধ্যে অনেক দেশ আমেরিকার কাছ থেকে সহযােগিতা নিয়ে তাদের আর্থিক পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটায় বলে তাদের দেখে আরও অনেক দেশ অনুপ্রাণিত হয়।

    ৪ এপ্রিল ১৯৪৯ ন্যাটো’ নামক একটি আন্তর্জাতিক সামরিক সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটায় আমেরিকা। অন্যদিকে, ন্যাটোর। বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রাশিয়াও এ সময় ওয়ারশ চুক্তি করে। এ চুক্তির মধ্য দিয়ে রাশিয়ার উদ্দেশ্য ছিল আমেরিকার হস্তক্ষেপ থেকে তার অধীনে থাকা কমিউনিস্ট রাষ্ট্রগুলােকে রক্ষা করা। ১৯৪৯ সালে চীনে কমিউনিস্ট রাষ্ট্রের উদ্ভবের মধ্য দিয়ে স্নায়ুযুদ্ধ অন্যদিকে মােড় নেয়। ইউরােপকে কেন্দ্র করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হলেও তা ক্রমেই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।

    ১৯৪৫-১৯৪৯ সাল পর্যন্ত ইউরােপে কেন্দ্রীভূত স্নায়ুযুদ্ধ কোরিয়া যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ১৯৫০ সালে এশিয়া মহাদেশে প্রবেশ করে। ২৫ জুন ১৯৫০ সােভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাবাধীন উত্তর কোরিয়া মার্কিন প্রভাবাধীন দক্ষিণ কোরিয়া আক্রমণ করে। ১৯৫৩ সালে কোরিয়ায় যুদ্ধবিরতি ঘােষিত হলেও এবং শীর্ষ নেতাদের মধ্যে একাধিক বৈঠক হলেও দুই জোটের মধ্যে উত্তেজনা, সন্দেহ ও যুদ্ধাবস্থা অব্যাহত থাকে। ১৯৫৬ সালে সুয়েজ খাল সংকটকে কেন্দ্র করে মার্কিন ও সােভিয়েত দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। খালের মালিকানা নিয়ে মিসর ও যুক্তরাজ্য মুখােমুখি হয়। সােভিয়েত ইউনিয়ন মিসরকে আর যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্যকে সমর্থন দেয়। ১৯৬২ সালে কিউবায় মিসাইল নিয়ে স্নায়ুযুদ্ধ তীব্র হয়।

    তারপর ভিয়েতনাম যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধ ইত্যাদিতে সােভিয়েত ও মার্কিনরা পেছন থেকে পরস্পর বিরােধী অবস্থানে লড়তে থাকে। ৭০ দশকে আফগানিস্তানে সােভিয়েত আগ্রাসন হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মুজাহিদদের অস্ত্র ও অন্যান্য সাহায্য দেয়। সে সময় মাটিতে যুদ্ধের পাশাপাশি তারকা যুদ্ধও শুরু হয়। বস্তুতপক্ষে, সব সময় সরাসরি যুদ্ধ না হলেও বিভিন্ন পক্ষের পেছনে থেকে মার্কিন ও সােভিয়েতরা যুদ্ধ কিংবা যুদ্ধাবস্থার মধ্যে পুরাে পৃথিবীতে ফেলে দেয়। স্নায়ুযুদ্ধের সুদীর্ঘ সময়কালে।

    স্নায়ুযুদ্ধের অবসান

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর শুরু হয় ১৯৯০-এর দশকে বার্লিন দেয়াল ভেঙে দুই জার্মানির একত্রীকরণ এবং পরিশেষে খােদ সােভিয়েত ইউনিয়ন রাষ্ট্রের অবসানের ফলে ৪৫ বছরব্যাপী স্নায়ুযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। একই সঙ্গে দ্বিমেরু বিশ্বে একমেরু কেন্দ্রিক ক্ষমতা-কেন্দ্রের মাধ্যমে বিশ্ব নেতৃত্ব চলে আসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একচ্ছত্র কজায়। তবে পূর্ববর্তী সােভিয়েত্রে উত্তরাধিকারী ও পারমাণবিক শক্তি পেয়ে রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদে আসে। দুই জার্মান এক হয়ে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করে। চীন আর্থিক, সামরিক ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম স্থানে চলে আসার অবস্থাও তৈরি হয়।

  • ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান

    নব্বইয়ের দশকে সাবেক সােভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া রাষ্ট্রগুলাের মধ্যে অন্যতম ইউক্রেন। ইউক্রেনের অধিবাসীদের একটা বিরাট অংশ রুশ বংশােদ্ভূত। দু’দেশের জনগণ কখনােই ভাবেনি যে তাদের মধ্যে এমন বৈরিতা তৈরি হবে। শক্তিধর রাশিয়া ইউক্রেনের বিপক্ষে অবস্থান নেবে। ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে স্থল, আকাশ ও জলপথে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রুশ সেনাবাহিনী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই ইউরােপের কোনাে দেশে সবচেয়ে বড় হামলা।

    ইউক্রেনের জন্ম

    রুশ বিপ্লবের বহু আগে ইউক্রেনে জারের শাসন চলাকালীন ইউক্রেনীয়দের জাতীয়তাবাদ এবং স্বতন্ত্র পরিচয়ের রাজনীতি রাশিয়ায় নানা সমস্যা তৈরি করে। ১৯০৩ সালে রাশিয়ার সােশ্যাল ডেমােক্র্যাটরা মেনশেভিক ও বলশেভিক-এ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ১৯০৫ সালে রাশিয়ায় প্রথম যে বিপ্লব ঘটে, তার ফলে রুশ জার দ্বিতীয় নিকোলাইয়ের পতন ঘটে। এরপর বলশেভিক এবং অক্টোবর বিপ্লবের সমন্বয়ে ১৯১৭ সালে আরেকটি বিপ্লব ঘটে, যার নামও রুশ বিপ্লব (Russian Revolution)।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    এই বিপ্লবের মধ্যেই ১০ জুন ১৯১৭ ক্রিমিয়াসহ ইউক্রেনের এক বড় অংশ রাশিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীন ইউক্রেন প্রজাতন্ত্রের ঘােষণা দেয়। ২৫ অক্টোবর ১৯১৭ (পুরােনাে বর্ষপঞ্জির হিসেবে) আর নতুন গ্রেগােরিয়ান নিয়মে ৭ নভেম্বর ম্লাদিমির ইলিচ। লেনিনের নেতৃত্বে বলশেভিক পার্টি বিপ্লবের মাধ্যমে রাশিয়ায় জার শাসনের অবসান হয়। তার নেতৃত্বাধীন সােভিয়েত সরকার স্বাধীন। ইউক্রেন গঠনের চেষ্টাকে দমন করে। ইউক্রেনের বেশির ভাগ ভূখণ্ডই সােভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়।

    অন্যদিকে পশ্চিম ইউক্রেনের কিছু অংশ পােল্যান্ড, চেকোশ্লোভাকিয়া আর রােমানিয়ার মধ্যে ভাগাভাগি করা হয়। ৩০ ডিসেম্বর ১৯২২ ইউক্রেন সােভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। অবশেষে সাত দশকেরও বেশি সময় পর সােভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাবার মধ্যে দিয়ে ১৯৯১ সালে জন্ম হয়। স্বাধীন ইউক্রেন রাষ্ট্রের। ২৪ আগস্ট ইউক্রেন আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘােষণা করে। ১ ডিসেম্বর ১৯৯১ অনুষ্ঠিত এক গণভােটে জনগণ স্বাধীনতার পক্ষে রায় দেয়।

    সংকটের উৎস

    ইউক্রেনে দুটি রাজনৈতিক ধারা প্রবল। একটি পশ্চিম ইউরােপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে চায়। তারা ইউরােপীয় ইউনিয়নে (EU) যােগ দেওয়ার পাশাপাশি পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হতে আগ্রহী। অন্যদিকে, অপর ধারাটি রুশপন্থী। তারা রাশিয়ার বলয়ে থাকতে চায়। ইউক্রেনের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ রুশভাষী। ইউক্রেনের সাথে রাশিয়ার দ্বন্দ্বের প্রধান কারণ North Atlantic Treaty Organization (NATO), যা গঠন করা হয় ৪ এপ্রিল ১৯৪৯। সাবেক সােভিয়েত ইউনিয়নসহ সমাজতান্ত্রিক দুনিয়ার বিরুদ্ধের একটি সামরিক জোট ই ন্যাটো।

    অন্যদিকে স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন ইউরােপের আটটি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র নিয়ে ১৪ মে ১৯৫৫ গঠিত হয় আরেকটি সামরিক জোট ওয়ারশ প্যাক্ট (Warsaw Pact)। ১৯৯০-এর দশকের শুরুতে সােভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর সােভিয়েত বলয়ভুক্ত সামরিক জোট ওয়ারশ ১ জুলাই ১৯৯১ ভেঙে যায়। পােল্যান্ডের ওয়ারশ-এ বসে সামরিক জোট ওয়ারশ প্যাক্ট করা হয়। সেই পােল্যান্ডই এখন ন্যাটোর সদস্য। রাশিয়া ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত হতে চাইলে অন্য সদস্যরা ভেটো দেয়। অথচ ওয়ারশতে ছিল এমন অনেক দেশকে ন্যাটোর সদস্য করা হয়। ১২ মার্চ ১৯৯৯ চেক প্রজাতন্ত্র, হাঙ্গেরি ও পােল্যান্ড ন্যাটোতে যােগ দেয়।

    ২৯ মার্চ ২০০৪ তাদের পথ অনুসরণ করে বুলগেরিয়া, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, রােমানিয়া ও স্লোভাকিয়া। ১ এপ্রিল ২০০৯ যােগ দেয় আলবেনিয়া। এ দেশগুলাে একসময় সােভিয়েত। ইউনিয়নের অংশ ছিল এবং ওয়ারশ সামরিক জোটের সদস্যও। জর্জিয়া, মলদোভা এবং ইউক্রেনও ন্যাটো বা ইউরােপীয় ইউনিয়নে। (EU) যােগ দিতে চায়। কিন্তু রাশিয়া এ ব্যাপারে কঠোর থাকায় দেশগুলাের যােগ দেওয়া হয়নি। এ দেশগুলাের যেকোনাে একটি দেশ বিশেষ করে ইউক্রেন যদি কোনােভাবেই ন্যাটো বা ইউরােপীয় ইউনিয়নে যােগ দেয় তাহলে রাশিয়ার সাথে যুদ্ধের স্ফুলিঙ্গ হিসেবে। কাজ করতে পারে। রাশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মনে করেন, পশ্চিমা শক্তি আসলে ন্যাটো জোটকে ব্যবহার করে চারদিক থেকে রাশিয়াকে ঘিরে ফেলছে।

    সাম্প্রতিক সংকট

    ২০১৩ সালে রাশিয়ার কারণে ইউক্রেন ইউরােপীয় ইউনিয়নে (EU) যােগ দেওয়ার চেষ্টা থেকে সরে আসে। ইউক্রেনের জনগণ। এটা মেনে নেয়নি। ২০১৪ সালে তীব্র আন্দোলনের মুখে রুশপন্থী। প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ পদত্যাগ করে রাশিয়ায় আশ্রয় গ্রহণ করেন। সাম্প্রতিক ইতিহাস বিবেচনায় নিলে তখন থেকেই চলমান সংকটের সূত্রপাত।

    ইয়ানুকোভিচের পর যারা ইউক্রেনের ক্ষমতায় আসেন, তারা EU বা পশ্চিমা পন্থী বলে । পরিচিত। তাদের নানা পদক্ষেপে পুতিন ক্ষুব্ধ হন। তিনি বিশ্বে তার সামরিক ও রাজনৈতিক শক্তি অটুট রাখতেই ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল করে নেন। এরপর রাশিয়া ইউক্রেনের দোনেৎস্ক । ও লুহানস্ককের রুশ সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহযােগিতা দিয়ে । আসছিল। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ পুতিন অঞ্চল দুটির স্বাধীনতার স্বীকৃতি সংক্রান্ত ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেন। এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি। ২০২২ ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেন।

    সামরিক হামলা বন্ধে বৈঠক ও শর্ত

    ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ও ৩ মার্চ বেলারুশ সীমান্তের গােমেল অঞ্চলে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে দুই দফার শান্তি । আলােচনা হয়। ১০ মার্চ ২০২২ যুদ্ধবিরতি নিয়ে তুরস্কের আলিয়া শহরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠকে মিলিত হলে তাও কার্যত ব্যর্থ হয়। এরপর ১৪ মার্চ ২০২২ দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে ভার্চুয়ালি আলােচনা হলেও কোনাে সমাধান আসেনি।

    আগ্রাসন বন্ধে রাশিয়ার শর্ত তিনটি-ইউক্রেনকে অবশ্যই মেনে নিতে হবে যে দখলকৃত ক্রিমিয়া রাশিয়ার অংশ। দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র। হিসেবে মেনে নিতে হবে। ইউক্রেনের সংবিধান সংশােধন করতে হবে এবং ন্যাটো জোট বা এমন কোনাে জোটে অন্তর্ভুক্তির অভিলাষ পরিত্যাগ করতে হবে।

    রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল

    কৃষ্ণসাগরের উত্তর উপকূলে অবস্থিত ছােট উপদ্বীপ ক্রিমিয়া। শতকের পর শতক ধরে সাম্রাজ্যবাদীদের ঔপনিবেশিক আগ্রাসনের শিকারে পরিণত হয় ভূখণ্ডটি। ১৯১৭ সালে রাশিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হলে ক্রিমিয়ায়ও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। ১৩ ডিসেম্বর ১৯১৭ farface Crimean People’s Republic c on করা হয় । ১৮ অক্টোবর ১৯২১ ক্রিমিয়া সােভিয়েত প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। ৩০ জুন ১৯৪৫ রুশ সােভিয়েত ফেডারেটিভ সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের (RSESR) আওতায় ক্রিমিয়াকে প্রদেশ হিসেবে ঘােষণা করা হয়।

    ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৪ সােভিয়েত কম্যুনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক নিকিতা ক্রুশ্চেভ (যিনি ছিলেন একজন ইউক্রেনীয়) একটি ডিক্রি জারি করে ক্রিমিয়াকে ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তর করেন। কৌশলগত কারণে রাশিয়ার কাছে ক্রিমিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সুযােগ পেয়ে ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দখল করে নেয় রাশিয়া। ২১ মার্চ ২০১৪ ক্রিমিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়।

    সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু ডনবাস

    দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক—এ দুটিই পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলে অবস্থিত। এক সময় এলাকা দু’টি ছিল খনিজ সম্পদ এবং ইস্পাত উৎপাদন ভারী শিল্পের কেন্দ্র। দুটি অঞ্চলের মােট জনসংখ্যা ৩৮ লাখের মতাে এবং এদের একটি বড় অংশই রুশ অথবা রুশ-ভাষী। উনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে দোনেৎস্ক ছিল কয়লাখনির মূল কেন্দ্র। ১৮৬৯ সালে জন হিউস নামে ওয়েলসের একজন ব্যবসায়ীর নামে ঐ এলাকার নামকরণ করা হয় Hughesovka বা Yuzovka। তিনি ঐ এলাকায় ইস্পাতের কারখানা এবং বেশ কয়েকটি কয়লা খনি গড়ে তােলেন। ১৯১৭ সালে এটি নগরীর মর্যাদা লাভ করে।

    ১৯২৪ সালে শহরটির নতুন নাম হয় স্তালিন। এরপর ১৯২৯ সালে নাম বদলে স্তালিনাে এবং সর্বশেষ ১৯৬১ সালে হয় দোনেৎস্ক। সােভিয়েত ইউনিয়নের পতন ঘটার পর, এই দুটি এলাকা ইউক্রেনের অংশ হয়। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখলের পর পুতিন নজর দেন ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের রুশভাষী দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের ওপর। এ সুযােগে রুশ-সমর্থক বিদ্রোহীরা ১২ মে ২০১৪ এলাকা দুটি আলাদা ‘পিপলস রিপাবলিক হিসেবে ঘােষণা করে। এরপর থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের ক্রমাগত লড়াই চলছে।

    ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যস্থতায় ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ বেলারুশে ‘মিনস্ক চুক্তি হয়। তাতে রাশিয়া ও ইউক্রেন একমত হয় যে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল দু’টিকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া ই হবে আর এর বিনিময়ে ইউক্রেন তার সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাবে। কিন্তু এ চুক্তির বাস্তবায়ন বার বার ঠেকে গেছে। সর্বশেষ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল দু’টিকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন।