বাংলা ভাষার উৎপত্তির সাধারণ ক্রম হলো: মাগধী প্রাকৃত > মাগধী অপভ্রংশ > মাগধী অবহট্ঠ > বাংলা
তবে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এ-বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেন, তার মতানুসারে মূলত গৌড়ীয় প্রাকৃত থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে। অর্থাৎ, গৌড়ীয় প্রাকৃত > গৌড়ীয় অপভ্রংশ > গৌড়ীয় অবহট্ঠ > বাংলা
তদ্ভবগুলিকে তৎসম থেকে আলাদা করা হয়, মধ্য ইন্দো-আর্য ভাষার বিকাশের পরে ধ্রুপদী সংস্কৃত থেকে ধার করা শব্দগুলির ক্ষেত্রে একটি শব্দ প্রয়োগ করা হয়; তৎসম এইভাবে তাদের সংস্কৃত রূপ ধরে রাখে (অন্তত অর্থোগ্রাফিক আকারে)।
ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠী থেকে তদ্ভবের উৎপত্তি
বিশ্বের যাবতীয় ভাষার উৎপত্তি হয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি আদি ভাষা থেকে। তাদের মধ্যে একটি হলো ‘ইন্দো-ইউরোপীয়’ বা ‘আদি আর্য ভাষাগোষ্ঠী’। এই ভাষাগোষ্ঠী থেকে উৎপন্ন ভাষাগুলো আবার দুইটি শাখায় বিভক্ত। এর একটি হলো সতম। খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে মধ্য এশিয়ায় একদল লোক বাস করত। তারা প্রথম যে ভাষা ব্যবহার করেছিল তার নাম ‘ইন্দো-ইউরোপীয়’ মূলভাষা। তারা ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে তারা ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন শাখাগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে পড়ায় বিভিন্ন শাখার ভাষার মধ্যে পরিবর্তন দেখা যায়। পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর একদল মানুষ ভারতে ‘আর্য’ নাম ধারণ করে। কালক্রমে ভারতে বসবাসকারী আর্যদের ভাষা জলবায়ুগত প্রভাবে, অনার্য ভাষাগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশ্রণের ফলে এক ভিন্ন রূপ পরিগ্রহ করল। মোটামুটি খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ অব্দ থেকেই চেষ্টা শুরু হলো ভাষাশাসনের। সর্বজনগ্রাহ্য একটা রূপ তৈরি হতে থাকল। এরপর পাণিনি নামে একজন ব্যাকরণবিদ খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০ অব্দের দিকে তার ‘অষ্টাধ্যায়ী’ নামক বিখ্যাত গ্রন্থে এলোমেলো ভাষাগুচ্ছকে সংস্কার করে সর্বভারতীয় একটা সুস্থির রূপ দান করলেন। সেই থেকে এ ভাষার নাম হলো সংস্কৃত (যাকে সংস্কার/শুদ্ধ করা হয়েছে)।
সংস্কৃত ভাষা অভিজাত শ্রেণির মধ্যেই আবদ্ধ থাকলেও সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা বিস্তৃত হতে থাকে। এটি ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে অগ্রসর হতে থাকে। একে আদিম প্রাকৃত ভাষা বা মধ্যভারতীয় আর্য ভাষা বলা হয়।
প্রাকৃত ভাষা কথাটির তাৎপর্য হলো প্রকৃতির অর্থাৎ জনগণের কথ্য ও বোধ্য ভাষা।
পূর্বভারতীয় বাংলা ভাষায়ও এ ধরনের অনেক শব্দ প্রবেশ লাভ করে। বাংলা ভাষার উদ্ভব গৌড়ি প্রাকৃত থেকে।
সংস্কৃত শব্দগুলি পূর্বভারতে প্রথমে গৌড়ি প্রাকৃতের রূপ লাভ করে এবং পরে তা বাংলায় রূপান্তরিত হয়। যেমন: চাঁদ<চান্দ চন্দ<চন্দ্র, দই<দহি<দধি, বৌ<বউ<বহু<বধূ, মাছি<মাচ্ছি মচ্ছি<মচ্ছিঅ<মচ্ছিআ<মক্ষিকা ইত্যাদি। এ তদ্ভব শব্দগুলি বাংলা ভাষার মূল উপাদান।
বাংলা ভাষা বিবর্তনের রূপরেখা
ইন্দো-ইউরোপীয় >> সতম >> আর্য >> ভারতীয় >> প্রাচীন ভারতীয় আর্য >> প্রাচীন ভারতীয় কথ্য আর্য >> সংস্কৃত >> গৌড়ি প্রাকৃত >> তদ্ভব(বাংলা)
ব্যবহার
বাঙালির দৈনন্দিন জীবনে যে শব্দগুলি ব্যবহৃত হয় তার অধিকাংশই তদ্ভব শব্দ। সাহিত্যের ক্ষেত্রেও খ্যাতনামা লেখকদের রচনার শতকরা ৬০ ভাগ শব্দই তদ্ভব।
অর্থাৎ, যেসব শব্দের মূল পাওয়া গিয়েছে সংস্কৃততে এবং সংস্কৃত থেকে প্রাকৃততে এবং প্রাকৃত থেকে বাংলায় এসেছে সেগুলোকে তদ্ভব শব্দ বলে। তদ্ভব শব্দের অপর নাম খাঁটি বাংলা শব্দ।
উদাহরণ
সংস্কৃত
প্রাকৃত
তদ্ভব
মৎস
মচ্ছ
মাছ
হস্ত
হত্থ
হাত
চন্দ্র
চন্দ
চাঁদ
কর্মকার
কম্মআর
কামার
দুগ্ধ
দুদ্ধ
দুধ
চর্মকার
চম্মআর
চামার
ওড়িয়া ভাষায় তদ্ভব
ওড়িয়া শব্দগুলি কতকগুলি দেশীয় শব্দে বিভক্ত (দেশজা)। যেগুলো সংস্কৃত (তৎসম) ও সংস্কৃত থেকে সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে তদ্ভবরূপে আগত। উপেন্দ্র ভাঞ্জা রচিত সপ্তাদশ শতাব্দীর গীতাবিধান, গোপীনাথ নন্দ রচিত শব্দ তত্ত্ব অভিধান (১৯১৬), জিসি প্রহরাজের ১৮৫০০০০ শব্দসংবলিত পূর্ণচন্দ্র ওড়িয়া ভাষাকোষ (১৯৩১)-সহ প্রমোদ অভিধানে (১৯৪২) পিসি দেব এবং দামোদর মিশর ১৫০০০০ শব্দের সমন্বয়ে ওড়িয়া শব্দকে শ্রেণিবদ্ধ করেছেন দেশি, তৎসম ও তদ্ভব হিসাবে।
ওড়িয়া শব্দগুলি ওড়িয়া ধ্বনিমূল থেকে উদ্ভূত হয়েছে এবং ওড়িয়া ধ্বনিমূলগুলি সংস্কৃত ধ্বনিমূল থেকে উদ্ভূত হয়েছে; এই ওড়িয়া শব্দকে তদ্ভব কৃদন্ত শব্দ বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ, “কান্না” ওডিয়া “ধাতু কাঁদ” থেকে উদ্ভূত যা সংস্কৃত “ক্রন্দ্ ধাতু” থেকে উদ্ভূত।
অন্যান্য দক্ষিণ-এশীয় ভাষায় তদ্ভব
দ্রাবিড়, অস্ট্রো-এশীয় এবং দক্ষিণ এশিয়ার তিব্বত বর্মী ভাষার প্রসঙ্গে “তদ্ভব” শব্দটি সংস্কৃত থেকে গৃহীত হয়েছে এমন শব্দগুলিকে বর্ণনা করতে ব্যবহার করা হয় যা সংশোধন করা হয়েছে। সমস্ত দ্রাবিড় ভাষায় তদ্ভব ও তৎসম শব্দের একটি অনুপাত রয়েছে। সম্ভবত তামিল কম সংস্কৃত রূপ ধারণ করে। কন্নড়, তেলুগু এবং মালায়ালামের শব্দভাণ্ডারে তদ্ভব অর্ধেকরও বেশি। তাদের ইন্দো-আর্য ভাষাগোষ্ঠী থেকে উদ্ভবের কারণে স্থানীয়, দ্রাবিড়, অস্ট্রো-এশীয় এবং দক্ষিণ এশিয়ার তিব্বত বর্মী ভাষার উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত শব্দভাণ্ডারগুলিকে “দেশি” হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।
ণ-ত্ব বিধান ও ষ-ত্ব বিধান হলো বাংলা ব্যাকরণের একটি বিশেষ নিয়ম। বাংলা ভাষার তৎসম শব্দে দন্ত্য-ন এর ব্যবহার না হয়ে মূর্ধন্য-ণ তে পরিবর্তনের নিয়মসমূহকে ণ-ত্ব বিধান এবং দন্ত্য-স এর মূর্ধন্য-ষ তে পরিবর্তনের নিয়মসমূহকে ষ-ত্ব বিধান বলা হয়।[১]
ণ-ত্ব বিধান
বাংলা ভাষায় সাধারণত মূর্ধণ্য-ণ ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। সেজন্য বাংলা (দেশি), তদ্ভব, বিদেশি, বানানে মূর্ধণ্য বর্ণ (ণ) লেখার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু বাংলায় বহু তৎসম বা সংস্কৃত শব্দে মূর্ধণ্য-ণ এবং দন্ত্য-ন এর ব্যবহার আছে। তা বাংলায় অবিকৃতভাবে রক্ষিত হয়। তৎসম শব্দের বানানে ণ এর সঠিক ব্যবহারের নিয়মই ণ-ত্ব বিধান।
ণ ব্যবহারের নিয়ম
ঋ, র (্র),রেফ (র্), ষ (ক্ষ) বর্ণের পরে দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয়। যেমন: ঋণ,তৃণ, বর্ণ, বিষ্ণু, বরণ, ঘৃণা।
যদি ঋ, র(্র), ষ(ক্ষ) বর্ণের পরে স্বরবর্ণ, ক-বর্গ, প-বর্গ, য, ব, হ, য় অথবা অনুস্বার (ং) থাকে, তার পরবর্তী দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয়ে যায়। যেমন: কৃপণ, নির্বাণ, গ্রহণ।
ট-বর্গের পূর্বের দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয়। যেমন: বণ্টন, লুণ্ঠন, খণ্ড।
প্র, পরা, পরি, নির্- উপসর্গের এবং ‘অন্তর’ শব্দের পরে নদ্, নম্, নশ্, নহ্, নী, নুদ্, অন্, হন্- কয়েকটি ধাতুর দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ নয়। যেমন: প্রণাম, পরিণাম, প্রণাশ, পরিণতি, নির্ণয় ইত্যাদি।
প্র, পরা প্রভৃতির পর ‘নি’ উপসর্গের দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয়। যেমন: প্রণিপাত, প্রণিধান ইত্যাদি।
ত-বর্গযুক্ত দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয় না। যেমন: বৃন্ত, বৃন্দ, গ্রন্থ।
বাংলা ক্রিয়াপদের অন্তঃস্থিত দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয় না। যেমন: ধরেন , মারেন, করেন, যাবেন, খাবেন, হবেন, নিবেন, দিবেন।
বিদেশী শব্দের দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয় না। যেমন: কোরআন, জার্মান, জবান, নিশান, ফরমান, রিপন।
পূর্বপদে ঋ, র, ষ থাকলে পরপদে দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হয় না। যেমন: মৃগনাভি, দুর্নাম, ত্রিনেত্র, মৃন্ময়।
ষ-ত্ব বিধান
যেসব তৎসম শব্দে ‘ষ’ রয়েছে তা বাংলায় অবিকৃত আছে। তৎসম শব্দের বানানে ষ এর সঠিক ব্যবহারের নিয়মই ষ-ত্ব বিধান।
ষ ব্যবহারের নিয়ম
ঋ-কারে পরে মূর্ধন্য-ষ হয়। যেমন: ঋষি, বৃষ, বৃষ্টি।
অ, আ, বাদে অন্য স্বরবর্ণ, ক এবং র বর্ণের পরের প্রত্যয়াদির দন্ত্য-স এর মূর্ধন্য-ষ হয়। যেমন: ভবিষ্যৎ, পরিষ্কার, মুমূর্ষ।
‘অতি’, ‘অভি’ এমন শব্দের শেষে ই-কার উপসর্গ এবং ‘অনু’ আর ‘সু’ উপসর্গের পরে কতগুলো ধাতুর দন্ত্য-স এর মূর্ধন্য-ষ হয়। যেমন: অতিষ্ঠ, অনুষ্ঠান, নিষেধ, অভিষেক, বিষণ্ন(‘ণ্ন’ মূর্ধ-ণ পরে দন্ত্য-ন), সুষম।
অঃ বা আঃ থাকলে তার পরে ক্, খ্, প্, ফ্ ছাড়াও ত থাকলেও স হতে পারে[তথ্যসূত্র প্রয়োজন], যেমন:
মনঃ+ তাপ = মনস্তাপ, শিরঃ + ত্রাণ= শিরস্ত্রাণ
ণ-ত্ব বিধান ও ষ-ত্ব বিধান-এর প্রয়োজনীয়তা
বাংলা ভাষার যে সব শব্দ সংস্কৃত ভাষা থেকে নেওয়া হয়েছে সে সব শব্দে সংস্কৃত ভাষার বানানরীতি অবিকৃত রাখা হয়েছে। সংস্কৃত ভাষার বানান ও উচ্চারণ রীতি ওতপ্রোতভাবে সম্পর্কিত। সংস্কৃত ভাষার পণ্ডিতেরা কোনো শব্দের উচ্চারণকে অনায়াস করার জন্য একটি শব্দে পরপর দুইটি ধ্বনিকে কাছাকাছি উচ্চারণস্থলের রাখার চেষ্টা করেছেন। মূর্ধন্য-ণ এবং দন্ত্য-ন-এর উচ্চারণ আপাতশ্রবণে কাছাকাছি মনে হলেও মূর্ধন্য-ণ উচ্চারণ করতে হয় মূর্ধা থেকে আর দন্ত্য-ন উচ্চারণ করতে হয় দন্ত থেকে। তাই, যে সব ধ্বনি উচ্চারণ করতে জিহবার অগ্রভাগ দাঁতকে স্পর্শ করে অর্থাৎ ‘ত’-বর্গীয় ধ্বনিগুলো (যেমন ত, থ, দ, ধ) উচ্চারণ করার সময় কাছাকাছি আরেকটি ধ্বনি মূর্ধা থেকে উচ্চারণ না করে দন্ত থেকে উচ্চারণ করা সহজসাধ্য। সেকারণে সাধারণভাবে ‘ত’-বর্গীয় ধ্বনির সাথে যুক্ত ধ্বনি দন্ত্য-ন হয়। একই নিয়ম অনুসারে, যেসব ধ্বনি উচ্চারণ করতে জিহবার অগ্রভাগ মূর্ধাকে স্পর্শ করে অর্থাৎ ‘ট’-বর্গীয় ধ্বনিগুলো (যেমন ট, ঠ, ড, ঢ)-র সাথে যুক্ত ধ্বনি মূর্ধন্য-ণ হয়। ঋ, র, ষ উচ্চারণ করতে হয় মূর্ধা থেকে আর তাই এই ধ্বনিগুলোর সাথে যুক্ত ধ্বনি হয় মূর্ধন্য-ণ। এখানে উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ্য যে, “বণ্টন, লুণ্ঠন”-এই শব্দগুলোর প্রথম মূর্ধন্য-ণ টি ‘ট’-বর্গীয় ধ্বনির সাথে যুক্ত হয়ে উচ্চারিত হচ্ছে, তাই এখানে ণত্ব বিধান ব্যবহৃত হবে, কিন্তু পরের দন্ত্য-ন এর আগে বিরতি থাকায় মূর্ধন্য-ণ হচ্ছে না। ষত্ব বিধান-এর জন্যও একই রকম নিয়ম প্রযোজ্য।
শাস্ত্রে, বাচ্য বলতে সাধারণত বাক্যের প্রকাশভঙ্গি[১] বা বাচনভঙ্গির রূপভেদ অর্থাৎ রূপের পরিবর্তন বোঝায়।[২] বাচ্য ভাষার একটি বিশিষ্ট প্রকাশভঙ্গি বা রীতি। এক্ষেত্রে কর্তা বা কর্মক্রিয়াপদ সম্পর্কে কীভাবে কথিত বা কথিত হবে, তাই হচ্ছে বাচ্য।[৩][৪]
নিচের উদাহরণদ্বয় বাংলা ভাষার বাচ্যের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করে,[২]
পুলিশ চোরটিকে ধরেছে।
পুলিশের দ্বারা চোরটি ধরা হয়েছে।
দুইটি বাক্যে বক্তব্য এক কিন্তু প্রকাশভঙ্গি আলাদা। প্রথম বাক্যে ধরেছে কর্তাবাচ্য প্রকাশ করে, যেখানে দ্বিতীয় বাক্যে দ্বারা…ধরা হয়েছে কর্মবাচ্য প্রকাশ করে। উভয় ক্ষেত্রে পুলিশ হচ্ছে কর্তা এবং চোর হচ্ছে কর্ম।
ব্যুৎপত্তি ও সংজ্ঞা
‘বাচ্য’ শব্দের অর্থ- “বক্তব্য বলার যোগ্য কোনো কথা”।[৩] ব্যক্তিভেদে বাচনভঙ্গি অনুযায়ী কর্তা, কর্ম বা ক্রিয়াপদের প্রাধান্য নির্দেশ করে ক্রিয়াপদের রূপের যে পরিবর্তন ঘটে, তাকে বাচ্য বলে।[২]বাংলা ভাষার ব্যাকরণ গ্রন্থের প্রণেতা জ্যোতিভূষণ চাকী বাচ্যের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন,
“বাক্যে ব্যবহৃত ক্রিয়াপদ কর্তা বা কর্ম কাকে অবলম্বন করে প্রযুক্ত হয়েছে এবং বাক্যে উভয়ের মধ্যে কার প্রাধান্য বেশি সূচিত হচ্ছে, অথবা, ক্রিয়া নিজেই প্রধান হয়ে উঠেছে কি-না, তা ক্রিয়ার যে শক্তি বা রূপভেদ থেকে বোঝা যায়, তাকেই ‘বাচ্য’ (Voice) বলে।”[৩]
অর্থাৎ এই সংজ্ঞামতে বাচ্য হলো ক্রিয়াপদ যে রূপভেদে বাক্যের মধ্যে কখনো কর্তা, কখনো কর্ম, আবার কখনো ক্রিয়াই প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয়।
ইতিহাস
প্রাচীন গ্রিক ব্যাকরণে, বাচ্যকে দিয়াথেসিস (গ্রিক: διάθεσις, অর্থ “ব্যবস্থা” বা “অবস্থা”) নামে ডাকা হতো। প্রাচীন গ্রিক ব্যাকরণে বাচ্যের তিনটি উপশ্রেণি ছিলো:
প্রকাশভঙ্গির ভিন্নতা অনুযায়ী বাচ্য ৩ প্রকার:[১][৬] ১. কর্তাবাচ্য[খ] বা কর্তৃবাচ্য ২. কর্মবাচ্য ৩. ভাববাচ্য
কিছু কিছু ব্যাকরণবিদের মতে[কার মতে?] কর্ম-কর্তাবাচ্য (নিচে দেখুন) নামে আরেক প্রকার বাচ্য রয়েছে,[৬] তবে তা আধুনিক বাংলা ব্যাকরণে গৃহীত নয়।
কর্তাবাচ্য
কর্তাবাচ্য সর্বাধিক ব্যবহৃত বাচ্য। কথা বলার সময় অধিকাংশ ক্ষেত্রে কর্তাবাচ্য ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের বাচ্যে ক্রিয়াপদ কর্তাকে অনুসরণ করে, তাই এর নাম কর্তাবাচ্য।[১] উদাহরণ: আমি ভাত খাই।
এই বাক্যে খাই ক্রিয়াপদ আমি-কে (কর্তা) অনুসরণ করে।
কর্মবাচ্য
কর্মবাচ্যে ক্রিয়াপদ কর্মকে অনুসরণ করে, তাকে কর্মবাচ্য বলে।[১] অর্থাৎ, ক্রিয়াপদ একটি কাজের (কর্ম) মধ্য দিয়ে যায় বা তার অবস্থা পরিবর্তিত হয়। তাই কর্মপদই এই বাচ্যে প্রধান। উদাহরণ: আমার দ্বারা ভাত খাওয়া হয়।
এই বাক্যে ক্রিয়াপদ খাওয়া হয় কর্মপদ ভাতকে অনুসরণ করে।
কর্মপদে দ্বারা, দিয়ে, কর্তৃক, মাধ্যমে ইত্যাদি অনুসর্গের মাধ্যমে কর্তা ও কর্ম সংযুক্ত এবং ক্রিয়াপদের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকে।[গ]
ভাববাচ্য
ভাববাচ্য বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত একটি “মধ্যম বাচ্য”, অর্থাৎ বাচ্য গঠনের সাধারণ নিয়মের (কর্তা-ক্রিয়া নীতি) সঙ্গে সম্পর্কিত নয় এবং কর্মবাচ্য ও কর্তাবাচ্য থেকে কিছুটা ভিন্ন। ভাববাচ্যে ক্রিয়া-বিশেষ্য বাক্যের ক্রিয়াপদকে নিয়ন্ত্রণ করে।[১] ভাববাচ্যে কর্ম অনুপস্থিত। উদাহরণ: আমার খাওয়া হয়েছে।
এই বাক্যে ত্রিয়াপদ খাওয়া বাক্যের কর্তাকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
কর্ম-কর্তাবাচ্য
কর্ম-কর্তাবাচ্যে (অন্যান্য নাম: অর্ধ-কর্মবাচ্য, মধ্যম-কর্মবাচ্য) কর্মপদ কর্তাপদের মতোই প্রতীয়মান হয়, বাক্যে কর্মপদ কর্তারূপে ব্যবহৃত হয়।[৩] এটিও এক প্রকার মধ্যম বাচ্য। কর্ম-কর্তাবাচ্য বাংলা ব্যাকরণে একটি অপ্রচলিত বাচ্য, কারণ এই বাচ্যে ক্রিয়াপদ কর্মকে অনুসরণ করে এবং একই নিয়ম কর্মবাচ্যের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাই আধুনিক বাংলা ব্যাকরণে কর্তা-কর্মবাচ্যকে কর্মবাচ্যের অংশ হিসেবে ধরা হয়। কর্ম-কর্তাবাচ্যের উদাহরণ: ভাত খাওয়া হয়েছে।
এখানে খাওয়া হয়েছে ক্রিয়াপদ ভাত কর্মপদকে অনুসরণ করে বাক্য গঠন করেছে।
বাচ্যান্তর
বাক্যের অর্থ ঠিক রেখে বাকভঙ্গির পরিবর্তন সাধন করার মাধ্যমে এক বাচ্যের বাক্যকে অন্য বাচ্যের বাক্যে পরিবর্তন করার নামই হচ্ছে- বাচ্য-পরিবর্তন বা বাচ্যান্তর।[৩]
উদ্ধৃতি
টীকা
আলবেনীয়, বাংলা, ফুলা, তামিল, সংস্কৃত, আইসল্যান্ডীয়, সুইডীয়, প্রাচীন গ্রীকের মতো কিছু ভাষায় একটি মধ্যম বাচ্য রয়েছে, যেটি বেশকিছু তৈরিকৃত বা সাধারণ নিয়মের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় এমন বাচ্যের সমষ্টি এবং কর্মবাচ্য ও কর্তাবাচ্য থেকে কিছুটা ভিন্ন। যেমন- বাংলা ভাষায় ভাববাচ্য। আধুনিক ব্যাকরণিক নাম।[১]দ্বারা, দিয়ে, কর্তৃক তৃতীয়া বিভক্তি।
বাংলাদেশ বিষয়াবলী থেকে বাছাই করা গুরুত্বপূর্ণ ৩০+ সাধারণ জ্ঞান [পিডিএফ] টি নিচে দেওয়া হলো। আসা করি আপনারা যারা বিসিএস, শিক্ষক নিবন্ধন, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহন করবেন তাদের জন্য বাংলাদেশ বিষয়াবলীর প্রশ্ন ও উত্তর গুলো খুবই উপকারী হবে।
প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতির একটা বড় অংশ সাধারন জ্ঞান বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী। কিভাবে পড়লে প্রাইমারিতে চাকুরী পাওয়া যায় এই প্রশ্ন সবার মধ্যেই কমবেশি কাজ করে। www.bcspreparation.net এর মতে প্রথমে আপনাকে প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ প্রশ্ন ব্যাংক পড়ে নিতে হবে। পাশাপাশি প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তুতি জন্য কিছু বই নিয়ে সেগুলো পড়ে নিতে হবে। আসা করা যায় আপনার জন্য প্রাইমারিতে চাকুরী পাওয়া সহজ হয়ে যাবে। ।আপনার প্রস্তুতির জন্য নিচের পিডিএফটি পড়তে পারেরন।
এই বিভাগের আরো পোস্ট :
প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য ভিডিওটি দেখতে পারেন।
প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি সাধারন জ্ঞান বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। প্রশ্ন ও উত্তরগুলো একবার হলেও আপনার পড়া উচিত।
বাংলাদেশ বিষয়াবলি
প্রশ্ন : আসাদগেট যে স্মৃতি রক্ষার্থে নির্মিত হয় উত্তর : ১৯৬৯’র গণঅভ্যুত্থান।
প্রশ্ন : পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় উত্তর : ৪ জুলাই ২০০১।
প্রশ্ন : বাংলাদেশের প্রথম সংসদীয় আসন বিন্যাস করা হয় উত্তর : ১৯৭৩ সালে।
প্রশ্ন : আমার দেখা নয়াচীন গ্রন্থটির প্রচ্ছদে ব্যবহৃত সম্মেলনের লােগাে শান্তির কপােত-এর চিত্রশিল্পী উত্তর : পাবলাে পিকাসাে।
প্রশ্ন : আর্য সংস্কৃতি বিকাশ লাভ করে উত্তর : পাল আমলে।
প্রশ্ন : নৃতাত্ত্বিকভাবে বাংলাদেশের মানুষ প্রধানত অন্তর্ভুক্ত উত্তর : আদি-অস্ট্রেলীয় জনগােষ্ঠীর।
প্রশ্ন : বাংলার রাজধানী হিসেবে ‘সােনারগাঁও-এর পত্তন করেছিলেন উত্তর : ঈসা খান।
প্রশ্ন : ‘মাৎস্যন্যায়’ যে সময়কে নির্দেশ করে উত্তর : পাল পূর্ব যুগ।
প্রশ্ন : যে গ্রন্থে বাংলার প্রাচীন বয়নশিল্পের উল্লেখ পাওয়া যায় উত্তর : কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র ।
প্রশ্ন : ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের সময় বাংলার গভর্নর ছিল উত্তর : কার্টিয়ার।
প্রশ্ন : ইন্ডিয়ান অ্যাসােসিয়েশন প্রতিষ্ঠিত হয় উত্তর : ১৮৭৬ সালে।
প্রশ্ন : ভাষা আন্দোলনের মুখপত্র হিসেবে কাজ করতাে উত্তর : সাপ্তাহিক সৈনিক।
প্রশ্ন : ৩ মে ২০২১ পর্যন্ত বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ উত্তর : ৪৫.১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
প্রশ্ন : বাংলাদেশে প্রথমবারের মতাে টাকা দিবস পালিত হয় উত্তর : ৪ মার্চ ২০১১।
প্রশ্ন : বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সময় পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক গভর্নর ছিলেন উত্তর : ফিরােজ খান নূন।
আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি
প্রশ্ন : ‘দরবার স্কয়ার’ অবস্থিত উত্তর : নেপাল
প্রশ্ন : বিশ্বে বায়ােটেক (GM) শস্য চালু হয় উত্তর : ১৯৯৬ সালে।
প্রশ্ন : ‘কুয়ােমিনটাং’ যে দেশের বিপ্লবী দল উত্তর : চীন।
প্রশ্ন : ‘আগা খান’ পুরস্কার দেওয়া হয় যে ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য উত্তর : স্থাপত্য শিল্প।
প্রশ্ন : বার্লিন প্রাচীর নির্মাণ শুরু হয় যে স্থান থেকে উত্তর : বারনউয়া।
প্রশ্ন : পােল্যান্ডের মুদ্রার নাম উত্তর : জলােটি।
প্রশ্ন : গুয়াম দ্বীপ যে ভৌগােলিক অঞ্চলে অবস্থিত উত্তর : মাইক্রোনেশিয়া।
প্রশ্ন : ‘ইস্টার দ্বীপপুঞ্জ’ যে দেশের অধীন উত্তর : চিলি ।
প্রশ্ন : ২০১২ সালে কার্বন কর চালু হয় উত্তর : অস্ট্রেলিয়া।
প্রশ্ন : ‘SEATO’র পূর্ণরূপ উত্তর : South East Asian Treaty Organisation!
প্রশ্ন : ইস্তানবুলের পূর্বনাম উত্তর : কনস্ট্যান্টিনােপল।
প্রশ্ন : Organization for Security and Co-operation in Europe (OSCE)’র সদর দপ্তর উত্তর : ভিয়েনা, অস্ট্রিয়া ।
প্রশ্ন : ইউনিভার্সেল স্ট্যান্ডার্ড টাইম হিসেবে বিশ্বব্যাপী GMT-এর ব্যবহার শুরু হয় উত্তর : ১৮৬৪ সালে।
প্রশ্ন : ম্যালেরিয়া শব্দটি প্রথম প্রয়ােগ করেন উত্তর : টর্টি।
প্রশ্ন : পূর্ব আফ্রিকার রুটির ঝুড়ি বলা হয় উত্তর : দক্ষিণ সুদানকে।
প্রশ্ন : হন্ডুরাসের রাজধানীর নাম উত্তর : তেগুচিগালপা।
প্রশ্ন : দক্ষিণ আমেরিকার যে দেশটি কমনওয়েলথের একমাত্র সদস্য উত্তর : গায়ানা।
প্রশ্ন : পেরুর মুদ্রার নাম উত্তর : পেরুভিয়ান সােল।
আগামী ৩১ জুলাই থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে পুর্বের এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করােনা পরিস্থিতির কারণে ভর্তি পরীক্ষা আরেকদফা পেছানাের চিন্তা ভাবনা করছে প্রশাসন। যদিও এ বিষয়ে পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনাে সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে ১০ জুলাই থেকে ক, খ, গ, ঘ ও চ ইউনিটের প্রবেশপত্র ডাউনলােডের কার্যক্রমটিও স্থগিত করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ওয়েবসাইটের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভর্তি পরীক্ষার তারিখের বিষয়ে সিদ্ধান্ত শিগগিরই পরীক্ষার্থীদের অবহিত জানানাে হবে’। বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, উদ্বেগজনক পরিস্থিতি ভর্তি পরীক্ষার তারিখ পেছাবে। তবে এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। শিগগির বিষয়টি নিয়ে বৈঠক হবে। এই সূত্রের দাবি, করােনা শুধু শিক্ষার্থী নয়, শিক্ষকদের জন্যও হুমকিস্বরূপ। অনেক বয়স্ক শিক্ষক রয়েছেন; যারা করােনা পরিস্থিতিতে পরীক্ষার হলে ডিউটি করতে চাইবেন না।
এই বিভাগের আরো পোস্ট :
বিশ্ববিদ্যালয় তথা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সিট প্ল্যানসহ পরীক্ষা আয়ােজনে অন্যান্য প্রস্তুতির বিষয়টিও বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। স্বভাবই ৩১ জুলাই পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না। তবে বৈঠকের পরই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-?উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, বর্তমানে করােনার কারণে সারাদেশের মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। এই মুহুর্তে ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার কোন কারণ দেখছি না।
তবে এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জানিয়ে দেয়া হবে। প্রবেশপত্র ডাউনলােড কার্যক্রম স্থগিতের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মাে. মােস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেশে সাম্প্রতিক সময়ে করােনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় আমরা ভর্তিচ্ছুদের প্রবেশপত্র ডাউনলােড কার্যক্রমটি আপতত স্থগিত রেখেছি। তিনি বলেন, সাধারণত প্রবেশপত্রে ভর্তি পরীক্ষার তারিখটি উল্লেখ করা থাকে।
যেহেতু ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে সেক্ষেত্রে আমরা আগামী ১০ তারিখে শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র দিতে পারি না। এটা করলে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে। ঈদের আগেই ভর্তি প্রবেশপত্র ও ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে অবস্থান পরিষ্কার করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ভর্তিচ্ছুদের প্রবেশপত্র এবং ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আমাদের ঈদের আগেই একটি জরুরি সভা হওয়ার কথা রয়েছে।
তবে সভার এখনাে তারিখ নির্ধারণ হয়নি। অধ্যাপক মােস্তাফিজ বলেন, করােনা পরিস্থিতি বিবেচনায় সভায় যদি ভর্তি পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয় তাহলে। আমরা সেটি জানাবাে। আর যদি পূর্বের তারিখে পরীক্ষা বহাল থাকলে তাহলে সেটিও জানানাে। যদি পূর্বের তারিখে পরীক্ষা বহাল থাকে; তাহলে পরীক্ষার আগেই শিক্ষার্থীদের হাতে প্রবেশপত্র পৌঁছে দেব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৩১ জুলাই থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ‘চ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ৩১ জুলাই, ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ৬ আগস্ট, ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ৭ আগস্ট, ১৩ আগস্ট ‘গ’ ইউনিট ও ১৪ আগস্ট ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই তাদের টিকা পেতে দ্রুত জাতীয় পরিচয়পত্র করার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের সাথে আলোচনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সেই লক্ষ্যে https://services.nidw.gov.bd/new_voter ওয়েব লিংকে গিয়ে বর্ণিত ধাপসমূহ সম্পন্ন করে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পূরণকৃত ফরমটি (ফরম-২) পিডিএফ ফরম্যাটে ডাউনলোড করতে হবে। পিডিএফ ফরমটি প্রিন্ট করার পর প্রয়োজনীয় স্বাক্ষর ও সত্যায়িত করে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ডের কপি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহ আবেদনপত্র উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে জমা দিলে তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করা হবে।
এই বিভাগের আরো পোস্ট :
জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তির পর নিয়মিত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল আইডি ব্যবহার করে টিকার জন্য আবেদন করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুততম সময়ে তাদের ভ্যাকসিন প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন
বাঙালির সব অর্জনের সাথে জড়িয়ে আছে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস। বাঙালির ভাষার অধিকার, সাংস্কৃতিক অধিকার, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা অর্জনের পরতে পরতে নিরন্তর অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে এই বিশ্ববিদ্যালয় তথা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষককর্মচারী। তাই এই বিশ্ববিদ্যালয়কে একই সাথে লড়তে হয়েছে একটি হচ্ছে জ্ঞানের চর্চা, অপরটি সামাজিকতার, সামাজিক দায়বদ্ধতা পূরণে। অবশ্য এ ধরনের দ্বিমুখী লড়াইটা সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেই সত্য।
কিন্তু কম বিশ্ববিদ্যালয়কেই এই দ্বৈত কর্তব্য এমন উচ্চমাত্রায়, উচ্চ ঝুঁকি নিয়ে পালন করতে হয়নি যতটা করতে হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে। এটি সত্য যে, বিশ্ববিদ্যালয় মাত্রই জ্ঞান বৃদ্ধি, জ্ঞানার্জনের জন্য নিরন্তর সংগ্রাম করা। এই জ্ঞান অর্জিত কিছুটা কিতাবি বাদবাকি বেশির ভাগই হয় জনমানুষের ভেতর থেকে, কিছুটা সামাজিকভাবে। পরে অর্জিত জ্ঞান চলে যায় সমাজে। মানুষের কাজে লাগে, উপকার হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে লড়াইটা ছিলাে তীব্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশেই ছিলাে পরিবেশের ও পরিস্থিতির বৈরিতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন চ্যান্সেলর, বাংলার এক ইংরেজ গভর্নর, সমাবর্তনের এক অনুষ্ঠানে কৌতুক করে মন্তব্য করেছিলেন ছাত্রদের যাকেই জিজ্ঞেস করেন লক্ষ্য কী, বলে সার্ভিস।
এই বিভাগের আরো পোস্ট :
সার্ভিস অর্থ যদি সেবা হতাে, তাহলে তাে ভালােই ছিলাে, কিন্তু সার্ভিস বলতে সেবা নয়, ছেলে-মেয়েরা বােঝায় চাকরি । কথাটা নিতান্ত মিথ্যা নয়। বঙ্গভঙ্গ রদের প্রেক্ষাপটে সর্বজনীন দাবির মুখে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর গত ১০০ বছরে বলতে গেলে বাঙালির সব অর্জনের সঙ্গে যে নামটি জড়িয়ে আছে সেটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বাঙালির সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক অর্জনগুলাের পেছনে অনন্য ভূমিকা রাখা দেশের এই বিদ্যাপীঠ এক জীবন্ত কিংবদন্তি। বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরােধী আন্দোলনসহ প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।
পৃথিবীর আর কোনাে বিশ্ববিদ্যালয়ের এত অর্জন নেই। বাঙালি জাতির আন্দোলনের বাতিঘর হিসেবে যুগ যুগ ধরে আলাে ছড়াচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। এই বাতিঘর জাতিকে আলাে দেখাতে ১৯২১ সালের ১ জুলাই যাত্রা শুরু করেছিল। গত ১ জুলাই শত বছরে পদার্পণ করলাে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। বিশ্ববিদ্যালয়ের শত বছরে পদার্পণ উপলক্ষে এক বাণীতে উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান বলেছেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষে প্রিয় মাতৃভূমি ও গণমানুষের প্রতি আমাদের অনিঃশেষ কৃতজ্ঞতা। মহান রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, চিরগৌরবময় মুক্তিযুদ্ধসহ গণমানুষের সব লড়াইয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বদা নেতৃত্ব দিয়েছে। জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং দেশ সেবায় রেখেছে অনন্য অবদান।
দেশের প্রতি আমাদের মমত্ববােধ ও চিরকৃতজ্ঞ চিত্তই এগিয়ে চলার পাথেয়। বাঙালির আত্মপরিচয় বিকাশের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে শতবর্ষ আগে আজকের এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু হয়। করােনা সংকটের কারণে বাঙালির আত্মপরিচয় বিকাশের এই প্রাণকেন্দ্রের জন্মদিনটি বিপুল উচ্ছাস নিয়ে উদ্যাপন করতে পারছি না। সে জন্য তাে মনে। দুঃখ থাকারই কথা। একইভাবে আমরা দুঃখিত জাতির পিতার জন্মশতবর্ষটি আনন্দঘন পরিবেশে পালন করতে না পারায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীও আমরা সেভাবে পালন করতে পারিনি। ভাগ্যিস, বঙ্গবন্ধুকন্যা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন আগেভাগে। ডিজিটাল প্রযুক্তির যে অভাবনীয় বিকাশ ঘটেছে বাংলাদেশে, তার কল্যাণে ঘরে বসেই এই তিনটিই ‘মাইলস্টোন’ অন্তত ভার্চুয়ালি পালন করছি।
নিঃসন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাঙালি জাতীয়তাবাদের উৎসভূমি। বঙ্গবন্ধুর ভাষায় ‘আমার বাংলা, আমার কৃষ্টি, আমার সভ্যতা, আমার আকাশ, আমার বাতাস, আমার ইতিহাস। এই নিয়ে আমার বাংলার জাতীয়তাবাদ। আমার বাংলার সংগ্রাম, আমার বাংলার ঐতিহ্য এবং রক্ত নিয়ে আমার বাঙালি জাতীয়তাবাদ।’ (১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর খসড়া সংবিধান বিষয়ে গণপরিষদে ভাষণ; দেখুন ড. এ এইচ খান, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নির্বাচিত ভাষণ, একাত্তর প্রকাশনী, ২০১১, পৃষ্ঠা-৯৭)। আর জাতীয়তাবাদের উত্তম চর্চা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই। তাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার অধিকাংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠিত। আর এ স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়কদের অধিকাংশ এ বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র।’ (রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শুভাগমন উপলক্ষে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট প্রকাশিত বিশেষ ক্রোড়পত্র, পৃষ্ঠা ৮১)।
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের পর পূর্ব বাংলায় মূলত মুসলিম মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিকাশের ইতিবাচক পরিবেশ গড়ে ওঠে। কিন্তু হঠাৎ ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ হওয়ার পর এ অঞ্চলের উঠতি মধ্যবিত্তের মনে হতাশার জন্ম নেয়। সেই হতাশা প্রশমনের জন্য সৃষ্টি হলেও এখানকার মানুষের নবজাগরণ সৃষ্টির সূতিকাগার হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনন্য ভূমিকার কথা অস্বীকারের কোনাে উপায় নেই। ঢাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য ছিলাে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাধীনভাবে বিশ্লেষণ অনুশীলন করে চিন্তা করতে শেখানাে। ১৯৪৭ সালের পর রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত প্রদেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে এ দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার স্ফুরণ ঘটতে থাকে একের। পর এক ঘটনার ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং এর পরবর্তী সব গণআন্দোলন ও সংগ্রামে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে গৌরবােজ্জ্বল ভূমিকা। মুক্তিযুদ্ধে এই বিশ্ববিদ্যালয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্দয় আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়।
পরবর্তী সময়ে স্বৈরাচারবিরােধী আন্দোলনের সূত্রপাতও হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ১৯১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন তল্কালীন ব্রিটিশ ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ। এর মাত্র তিনদিন আগে ভাইসরয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আবেদন জানিয়েছিলেন ঢাকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, ধনবাড়ির নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকসহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি। ওই বছরের ২৭ মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে ব্যারিস্টার আর নাথানের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠিত হয়। ১৯১৩ সালে প্রকাশিত হয় নাথান কমিটির ইতিবাচক রিপাের্ট এবং ওই বছরই ডিসেম্বর মাসে সেটি অনুমােদিত হয়।
১৯১৭ সালে গঠিত স্যাডলার কমিশনও ইতিবাচক প্রস্তাব দিলে ১৯২০ সালের ১৩ মার্চ ভারতীয় আইনসভা পাস করে ‘দ্য ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট (অ্যাক্ট নং-১৩) ১৯২০’। শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়। উন্মুক্ত হয় ১৯২১ সালের ১ জুলাই। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ ছাড়া বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, পদার্থবিজ্ঞানী আব্দুল মতিন চৌধুরী, পদার্থবিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়া, নােবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ, কথাসাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, কবি বুদ্ধদেব বসু, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল আন্দোলনের নেত্রী জাহানারা ইমাম, কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ, হুমায়ুন আজাদ, লেখক জাফর ইকবালসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ছিলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী। প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং পরে দীর্ঘদিন এই শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষকতা করেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
তিনি তার এক নিবন্ধে লিখেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক প্রয়ােজনে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। জ্ঞানের চর্চা হয়েছে, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের চর্চা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের সমিতি, ছাত্রসংসদ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা গঠনমূলক কাজে বড় ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু এখন যেনাে এই কাজগুলাে সেভাবে হচ্ছে না। এই শিক্ষাবিদ পরামর্শ দিয়ে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবীদের শিক্ষকতায় আনতে হবে। তারা শিক্ষাদানের পাশাপাশি গবেষণা করবেন, প্রকাশনা করবেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যাবধি জ্ঞানের প্রসার, সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রসারে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ভূমিকা পালন করেছে।
এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ফলেই মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তরা উচ্চশিক্ষার সুযােগ পেয়েছে। ‘ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশ গঠনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ছিলাে অগ্রগামী। মুক্তিযুদ্ধে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশেও স্বৈরাচারবিরােধী আন্দোলনসহ প্রায় সব ধরনের আন্দোলন-সংগ্রামে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা রয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা, অতীতের মতাে ভবিষ্যতেও এই বিশ্ববিদ্যালয় জাতির আশাআহক্ষা পূরণে দেশ ও দেশের মানুষের পাশে থাকবে, অনুপ্রেরণা জোগাবে।
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী | বিসিএস প্রস্তুতি, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি, প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তুতি, শিক্ষক নিবন্ধনসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু সাধারণ জ্ঞান নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী | বিসিএস প্রস্তুতি, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি