Category: সাধারণ বিজ্ঞান

General Science

  • যুদ্ধের মধ্যেও রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানি বেড়েছে

    ইউক্রেনে রুশ অভিযানের প্রথম ১০০ দিনে জীবাশ্ম জ্বালানি রপ্তানি করে ৯ হাজার ৮০০ কোটি ডলার আয় করেছে মস্কো। গত ১৩ জুন ২০২২ ফিনল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার (সিআরইএ) প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

    সিআরইএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুদ্ধের প্রথম ১০০ দিনে রাশিয়ার কাছ থেকে ইউরােপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যে পরিমাণ জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানি করেছে, তা মস্কোর মােট রপ্তানির ৬১ শতাংশ। এর মূল্য প্রায় ৬,০০০ কোটি মার্কিন ডলার।

    • রাশিয়ার জ্বালানির শীর্ষ আমদানিকারক দেশ চীন। দেশটি ১৩ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানি করেছে।
    • দ্বিতীয় অবস্থানে আছে জার্মানি। দেশটি রাশিয়ার কাছ থেকে ১২ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের জ্বালানি কিনেছে।
    • ইতালি কিনেছে ৮ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের জীবাশ্ম জ্বালানি।
    • তুরস্ক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের জ্বালানি আমদানি করেছে।
    • পােল্যান্ড আমদানি করেছে ৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের জীবাশ্ম জ্বালানি।
    • ফ্রান্স আমদানি করেছে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের জ্বালানি।
    • প্রসঙ্গত, জীবাশ্ম জ্বালানি রপ্তানি করে রাশিয়া যে আয় করেছে, তার বেশির ভাগই এসেছে অপরিশােধিত তেল রপ্তানি করে। এর মধ্য দিয়ে ৪ হাজার ৮২ কোটি মার্কিন ডলার আয় করেছে দেশটি।
    বিসিএস প্রিপারেশন

  • ইউরােপে ন্যাটোর সামরিক মহড়া

    রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ইউরােপের বিভিন্ন দেশে সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। আরও কিছু মহড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ন্যাটোর সদস্য ও সহযােগী রাষ্ট্রগুলাের সেনারা এতে অংশ নেন।

    ‘ডিফেন্ডার ইউরােপ’ ও ‘সুইফট রেসপন্স’ নামের দুটি সামরিক মহড়ায় ২০টি দেশের প্রায় ১৮ হাজার সেনা অংশ নিয়েছেন। অনুষ্ঠিত সামরিক মহড়াগুলাের স্থান, মহড়াগুলাের নাম ও সৈন্যসংখ্যা নিম্নরূপ

  • নিকারাগুয়ায় রাশিয়ার সেনা মােতায়েনের অনুমােদন

    মধ্য আমেরিকার দেশ নিকারাগুয়া। দেশটি ১৮২১ সালে স্পেন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট ডেনিয়েল ওর্তেগা। ১৯৬২ সালে ডেনিয়েল ওর্তেগার নেতৃত্বে সমাজতন্ত্র মতবাদে আস্থাশীল Sadinist Front of National Liberation (FSLN) গড়ে ওঠে।

    ১৯৭৫ সালে মার্কিন মদদপুষ্ট সরকার অ্যানাস্তাসিও সােমােজা দেশে জরুরি অবস্থা ঘােষণা করলে বিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরশাসক সােমােজাকে ক্ষমতাচ্যুত করে ১৯৭৯ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ করেন ওর্তেগা। ফলে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আরও জোরদার হয়। ডেনিয়েল ওর্তেগা ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত নিকারাগুয়ার নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    পরে ২০০৬ সালে ডেনিয়েল ওর্তেগা পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসেন এবং পরপর দুবার ক্ষমতায় থাকার পর সংবিধান সংশােধনের মাধ্যেমে ২০১৬ সালেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে এখনাে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।

    সম্প্রতি ওর্তেগার সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, দুর্যোগ মােকাবিলা এবং প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্দেশ্যে দেশটিতে রাশিয়ার সেনা মােতায়েনের অনুমােদন দেয়।

    ৯ জুন ২০২২ এ সম্পর্কে রাশিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে জানানাে হয়। প্রসঙ্গত, গত দশক থেকে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা এবং নিকারাগুয়ায় সামরিক, সাংস্কৃতিক, স্বাস্থ্যসহ নানা খাতে সহযােগিতা বৃদ্ধি করেই চলেছে রাশিয়া।

    এরই মধ্যে মধ্য আমেরিকার বৃহত্তম দেশ নিকারাগুয়ায় রাশিয়ার সেনা মােতায়েনের অনুমােদন রাশিয়া নিকারাগুয়া সম্পর্কে এবং বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যােগ করল।

  • কিয়েভ সফরে ইউরােপের চার রাষ্ট্রপ্রধান

    ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে দেশটির বাহিনীর সঙ্গে রুশ বাহিনীর তীব্র লড়াই চলছে। এরই মধ্যে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ সফর করেছেন ইউরােপের চার দেশের সরকারপ্রধান ট্রেনে করে গত ১৬ জুন ২০২২ তাঁরা কিয়েভে পৌছান।

    ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখো, জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলঞ্জ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি ও রােমানিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্লাউস ইয়ােহানিস সফরে গিয়ে বলেন, ইউক্রেনের প্রতি সংহতি জানাতেই তাঁরা কিয়েভে এসেছেন।

  • ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক রকেট-ব্যবস্থা হিমার্স

    গত ১ জুন ২০২২ যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রকেট-ব্যবস্থা হাই মােবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম (হিমার্স) সরব্রাহকরেছে। এ রকেট-ব্যবস্থা ব্যবহার করে দীর্ঘ ৮০ কিলােমিটার দূরত্ব পর্যন্ত (৫০ মাইল) লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা যায়।

    ৭০ কোটি ডলার মূল্যের নতুন অস্ত্রসহায়তা প্যাকেজের আওতায় ইউক্রেনকে এ রকেট-ব্যবস্থা সরাহ করে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ইউক্রেনকে প্রদত্ত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে স্বচালিত হুইটজার, গােলাবারুদ, পাল্টা আক্রমণে ব্যবহৃত রাডার, ট্যাংকবিধ্বংসী জ্যাভেলিন ক্ষেপণাস্ত্র ও সাঁজোয়া যানবিধ্বংসী অস্ত্র।

  • যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হারে রেকর্ড বৃদ্ধি

    রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে অভাবনীয় মুদ্রাস্ফীতির মুখে পড়ে সুদের হার বাড়াল যুক্তরাষ্ট্র। মুদ্রাস্ফীতির মােকাবিলা করতে গিয়ে তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুদের হার বড়িয়েছে দেশটি।

    ১৫ জুন ২০২২ দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম সুদের হার শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ বাড়িয়েছে। মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের নীতিনির্ধারক ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটি (এফওএমসি) সুদের হার বাড়ানাের পর মুদ্রাস্ফীতি ২ শতাংশে বেঁধে রাখতে বদ্ধপরিকর।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    মার্কিন সেন্ট্রাল ব্যাংক জানিয়েছে, প্রয়ােজনে সুদের হার আরও বাড়ানাে হতে পারে। প্রসঙ্গত, মুদ্রাস্ফীতি হলাে এমন এক পরিস্থিতি, যখন পণ্যসামগ্রী ও সেবার মূল্যস্তর ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে।

    তবে একটি বা কয়েকটি পণ্যের মূল্য হঠাৎ কোনাে কারণে বৃদ্ধি পেলেই তাকে মুদ্রাস্ফীতি বলা যায় না। বরং সার্বিকভাবে পণ্যসামগ্রী ও সেবার গড় দাম বাড়লেই তাকে মুদ্রাস্ফীতি বলা যাবে।

  • আগ্নেয়াস্ত্র আইন কঠোর করার দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ

    আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইনের দাবিতে গত ১১ জুন ২০২২ যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ করেছেন হাজারাে মানুষ। দুটি নির্বিচার গুলির ঘটনার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

    আমাদের জীবনের জন্য পদযাত্রা (এমএফওএল)’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে এ বিক্ষোভের আয়ােজন করা হয়। টেক্সাসের উভালদে শহরের রব এলিমেন্টারি স্কুলে গত ২৪ মে নির্বিচার বন্দুক হামলার ঘটনায় ১৯ শিশুসহ ২১ জন নিহত হন। এর কয়েক দিন আগেই নিউইয়র্কের বাফেলােয় একটি সুপারমার্কেটে অপর এক বন্দুক হামলায় ১০ জন নিহত হন।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    এদিকে আগ্নেয়াস্ত্র নিরাপত্তাসংক্রান্ত সম্ভাব্য আইনের রূপরেখার বিষয়ে একমত হয়েছে মার্কিন সিনেটরদের একটি অংশ। তাঁদের মধ্যে ডেমােক্র্যাট ও রিপাবলিক—উভয় পার্টির সিনেটররা রয়েছেন।

    প্রসঙ্গত, আগ্নেয়াস্ত্র নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলনরত সংগঠন এমএফওএল প্রতিষ্ঠা করেন ২০১৮ সালে ফ্লোরিডার পার্কল্যান্ড বন্দুক হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া | লােকজন। পার্কল্যান্ডের একটি হাইস্কুলে ওই হামলায় ১৭ জন নিহত হন

  • শ্রীলঙ্কায় সরকারি কর্মচারীদের সাপ্তাহিক ছুটি তিন দিন

    শ্রীলঙ্কা সরকার অর্থনৈতিক সংকট মােকাবিলায় সরকারি কর্মচারীদের জন্য তিন দিনের সাপ্তাহিক ছুটির প্রস্তাব অনুমােদন করেছে। ১৩ জুন ২০২২ দেশটির মন্ত্রিসভায় প্রস্তাবটি অনুমােদন পায়।

    আগামী তিন মাস এই ছুটির ব্যবস্থা কার্যকর থাকবে। তবে স্বাস্থ্য, জ্বালানি, শিক্ষা, প্রতিরক্ষাসহ জরুরি পরিষেবায় নিয়ােজিত কর্মচারীরা এই ছুটি পাবেন না। শ্রীলঙ্কায় সরকারি কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    সরকার চায়, এই বাড়তি ছুটির দিনে সরকারি কর্মচারীরা তাঁদের বাড়ির পেছনে বা অন্যত্র পতিত জমি ব্যবহার করে নানা রকম ফসল ফলাবেন, যা দেশে খাদ্যসংকট মােকাবিলায় সহায়ক হবে।

    প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সংকটে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার নিঃশেষ হয়ে গেছে এবং জ্বালানি আমদানি করতে গিয়ে দেশটি হিমশিম খাচ্ছে। বর্তমান সংকট সামাল দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে জরুরি ঋণ চেয়ে আবেদন করেছে।

  • মুদ্রার জোরে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে বিশ্বে ছড়ি ঘােরায়

    ইউক্রেনে সামরিক হামলার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি দেশ রাশিয়ার ওপর নানা রকম আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরােপ করেছে। কিন্তু এই বিশ্বায়িত অর্থব্যবস্থায় রাশিয়া বিচ্ছিন্ন অঞ্চল নয়—জ্বালানি ও পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে তারা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী। তাই রাশিয়ার বাণিজ্য অংশীদারদের গায়েও এর আঁচ লাগছে, যদিও সেই দেশগুলাে ক্ষতির মাত্রা বিচার করে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করছে।

    বিশ্বব্যাপী এই সংকট Central Bank Digital Currency (CBDC) নিয়ে নতুন আলােচনার জন্ম দিয়েছে। নিদ্ধোজ্ঞার কারণে ব্যাহত হওয়া বাণিজ্যিক লেনদেনের বিকল্প ব্যবস্থা সিবিডিসি হয়ে উঠতে পারে কি না, বিতর্কটা মূলত তা নিয়েই। সমস্যা ও তার সম্ভাব্য সমাধানের প্রকৃত রূপ কী, তা বােঝার জন্য প্রথমে বর্তমান লেনদেনের ব্যবস্থা কী, তার প্রকৃতি বুঝতে হবে। সেই ব্যবস্থায় আর্থিক নিষেধাজ্ঞা কীভাবে কাজ করে, তা দেখতে হবে।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    বর্তমানে আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনের বাজার মূলত ডলারনির্ভর। অধিকাংশ দেশে ডলার হলাে রিজার্ভ কারেন্সি, অর্থাৎ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজেদের সঞ্চয়ের ভান্ডার ডলারে সংরক্ষণ করে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, লেনদেন ও বিনিয়ােগও হয় ডলারের মাধ্যমেই। ডলারের মাধ্যমে হওয়া আর্থিক লেনদেন করতে হয় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থব্যবস্থার মধ্যস্থতায়।

    ফলে আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনের ব্যবস্থার কেন্দ্র হলাে যুক্তরাষ্ট্র। সেই লেনদেন যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুসারেই চলে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, নিউইয়র্কে অবস্থিত The Clearing House Interba nk Payments System-এর (CHIPS) মাধ্যমে প্রতিদিন অন্তর্দেশীয় ও আন্তর্জাতিক লেনদেনের পরিমাণ প্রায় ১ দশমিক ৮ লাখ কোটি ডলার।

    চিপসের সদস্যসংখ্যা মাত্র ৪৩। কোনাে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এই ব্যবস্থার সদস্য হতে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক নিয়ন্ত্রণের অধীনে আসা আবশ্যক। চিপসের সদস্য নয়, এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এই ব্যবস্থার মাধ্যমে লেনদেন করতে হলে এই সদস্য-ব্যাংক বা সংস্থাগুলাের মাধ্যমে করতে হয়। চিপসের সংশ্লিষ্ট অংশগ্রহণকারী সংস্থা বা সংস্থাগুলাে তখন কাজ করে ওই প্রক্রিয়ার প্রতিনিধি বা এজেন্ট হিসেবে। এই কার্যক্রমকে বলা হয় ‘করেসপনডেন্ট ব্যাংকিং সিস্টেম।

    আন্তর্জাতিক লেনদেন প্রক্রিয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলাে The Society for Worldwide Interbank Financial Telecommunication (SWIFT)। এটি একধরনের নিরাপদ বার্তা প্রেরণ পরিষেবা, যার সঙ্গে যুক্ত ২০০টি দেশের ১১ হাজারের বেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থার সদর দপ্তর বেলজিয়ামে।

    গত বছর দৈনিক গড়ে ৪ কোটি ২০ লাখ বার্তা আদান-প্রদান হয়েছে সুইফটের মাধ্যমে। সরাসরি যুদ্ধ ঘােষণা না করেও আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরােপের মাধ্যমে কোনাে বেয়াড়া দেশকে শায়েস্তা করা বা তার অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ বন্ধ করতে চাপ দেওয়ার পদ্ধতি বহু পুরােনাে।

    উত্তর কোরিয়া বা ইরানের ওপর যেমন অনেক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরােপিত হয়েছে, তেমনই ২০১৪ সালে ক্রিমিয়ায় সামরিক হামলা করার জন্য রাশিয়ার ওপরও আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে পােখরান পারমাণবিক বােমা বিস্ফোরণের পর ভারতের ওপরও নিগ্ধোজ্ঞা আরােপ করা হয়।

    আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনে ডলারের প্রবল আধিপত্যের কারণে এ ধরনের আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা বিপুল। রাশিয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলাে করেসপনডেন্ট ব্যাংকিং সিস্টেম।

    বর্তমানে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলােকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাশিয়ার নিষিদ্ধ ব্যাংকগুলাের করেসপনডেন্ট অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিতে, তাদের লেনদেন স্থগিত রাখতে। ফলে সংশ্লিষ্ট রুশ ব্যাংকগুলাের কোটি কোটি ডলারের লেনদেন আটকে গেছে। সুইফট ব্যবহারেও রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় নিষিদ্ধ রুশ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলাে বিশ্বের অন্যান্য আর্থিক সংস্থার সঙ্গে লেনদেন করতে পারছে না। এতে যেমন রপ্তানি বাবদ টাকা পাওয়ার পথ বন্ধ হয়েছে, তেমনি সাধারণ মানুষের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

    প্রসঙ্গত, সুইফট ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের অধীন না হলেও যুক্তরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠানটির অবস্থানকে প্রভাবিত করতে পারে ব্যাপকভাবে এমনকি ইউরােপীয় ইউনিয়নের অমতেও—কারণ, সুইফটের গভর্নিং বডিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব আছে। আবার সুইফটের একটি সার্ভারও যুক্তরাষ্ট্রে, যা তাকে আরও ক্ষমতা দিয়েছে।

    এই নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছে অনেক দেশ—ডলারে লেনদেন হবে , এমন চুক্তির বদৌলতে। তার মধ্যে আছে ২০১২ সালে ভারতের চালু করা ‘রুপি-রিয়াল’ প্রক্রিয়া; রাশিয়া-চীনের ২০১৪ সালের কারেন্সি সােয়াপ চুক্তি; ক্রেডিট কার্ডে অন্তর্দেশীয় লেনদেনের জন্য ‘ন্যাশনাল পেমেন্ট কার্ড সিষ্টেম’; সুইফটের বিকল্প হিসেবে তৈরি করা রাশিয়ার মেসেজিং ব্যবস্থা System for Transfer of Financial Messages (STFM) কিংবা চীনের Cross- Border Interbank Payment System (CIPS)।

    কিন্তু এসব ব্যবস্থা সবই হয় সাময়িক, নয়তাে সীমিত ক্ষমতার। রুবল ও ইউয়ানেকিছু বাণিজ্য হলেও এখনাে তারা ডলারের ধারকাছে নেই। এই বাস্তবতায় ডলার, যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক পরিকাঠামাে ও সুইফট—কোনাে দেশের ওপর এই তিন শক্তির নিষেধাজ্ঞা জারি হলে তার কার্যকারিতা অনেক বেশি। এ ধরনের নিদ্ধোজ্ঞা, যেগুলাে সংশ্লিষ্ট দেশের আর্থিক অবকাঠামােকে পঙ্গু করে দেয়, তাকে বলে প্রাইমারি স্যাংশন বা মুখ্য নিৰ্ধোজ্ঞা।

    নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়া দেশের সঙ্গে কোনাে দেশ যদি আর্থিক সম্পর্ক বজায় রাখে, তাহলে সেই দেশগুলাের ওপরও এক গােষ্ঠীর নিষেধাজ্ঞা জারি করার সম্ভাবনা থাকে। একে সেকেন্ডারি স্যাংশন বা গৌণ নিষেধাজ্ঞা বলে। বর্তমান আন্তর্জাতিক লেনদেন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সিবিডিসি প্রক্রিয়ার মৌলিক পার্থক্য হলাে, দ্বিতীয়টির ক্ষেত্রে মধ্যবর্তী কোনাে প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা থাকে না—বিশেষত করেসপনডেন্ট ব্যাংকের।

    যখন একাধিক দেশ পরস্পরের মধ্যে সিবিডিসি প্রক্রিয়ায় লেনদেন করে, তখন এই ভূমিকা নেয় সেসব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বৈশ্বিক সিবিডিসির ক্ষেত্রে যে বহুপক্ষীয় প্রতিষ্ঠান অভিন্ন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তৈরি করবে, মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করবে সেই মুদ্রাই। সিবিডিসি-নির্ভর আন্তর্জাতিক লেনদেন চালু হলে সুইফটের মতাে ব্যবস্থার গুরুত্বও হ্রাস পাবে।

  • সমতলে চা-চাষের পরিধি বাড়ছে

    দেশের তৃতীয় বৃহত্তম চা অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে দেশের উত্তরাঞ্চল পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালের জাতীয় উৎপাদনের ১৫ শতাংশ চা যুক্ত হয়েছে উত্তরাঞ্চলের সমতল ভূমি থেকে উত্তরাঞ্চলের ৫টি জেলা পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাটে চা উৎপাদিত হয়েছে ১ কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার কেজি।

    উত্তরাঞ্চলের ৫টি জেলায় বর্তমানে নিবন্ধিত ৯টি ও অনিবন্ধিত ২১টি বড় (২৫ একর) চা-বাগান রয়েছে। চা প্রক্রিয়াজাতকরণে উত্তরাঞ্চলে ৪১টি কারখানার লাইসেন্স রয়েছে।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    প্রসঙ্গত, ২০০০ সালে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বাগান পর্যায়ে চা চাষ শুরু হয়। ২০০৭ সালে ঠাকুরগাঁও ও লালমনিরহাট এবং ২০১৪ সালে দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলায় শুরু হয় চা-চাষ।