Category: সাধারণ বিজ্ঞান

General Science

  • বিভিন্ন পরীক্ষায় আসা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিয়ে প্রশ্ন ও উত্তর

    ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন। জাতির পিতার জন্মদিন উপলক্ষে তার রাজনৈতিক কর্মযজ্ঞ ও অন্যান্য বিষয়ে চাকরির পরীক্ষায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় আসা প্রশ্নাবলি নিয়ে আমাদের মার্চ মাসের আয়ােজন।

    বিভিন্ন পরীক্ষায় আসা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিয়ে প্রশ্ন ও উত্তর

    প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম তারিখ কত?
    জাককানইবি : ২০১৮-১৯:
    উত্তর : ১৭ মার্চ ১৯২০।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    প্রশ্ন : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিবসে উদ্যাপিত হয়-
    (DNC’র : হিসাবরক্ষক ২০১৯)
    উত্তর : জাতীয় শিশু দিবস।

    প্রশ্ন : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
    গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) ও জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ড্রাফটসম্যান ২০১৭
    উত্তর : ১০ জানুয়ারি।

    প্রশ্ন : জাতীয় শােক দিবস
    তথ্য মন্ত্রণালয়ের সহকারী পরিচালক : ২০০১
    উত্তর : ১৫ আগস্ট।

    প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব বাংলার নতুন নামকরণ বাংলাদেশ’করেন-
    বেরােবি : ২০১০-২০১১]
    উত্তর : ৫ ডিসেম্বর ১৯৬৯।

    প্রশ্ন : ‘Poet of Politics’ বলা হয় কাকে?
    যবিপ্রবি : ২০১৮-১৯
    উত্তর : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

    প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্তি পান—
    উত্তর : ৮ জানুয়ারি ১৯৭২।

    প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘রাজনীতির কবি’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন কে?
    রাবি : ২০২০-২১)
    উত্তর : লােবেন জেঙ্কিল।

    প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু ‘জুলিও কুরি পুরস্কার লাভ করেন ১৯৭২ সালের কত তারিখে?
    খুবি : ২০১৯-২০)
    উত্তর : ১০ অক্টোবর।

    প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বিভাগের ছাত্র ছিলেন?
    (যবিপ্রবি : ২০১৮-১৯ )
    উত্তর : আইন।

    প্রশ্ন : আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন—
    (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য সহকারী ২০১০]
    উত্তর : যুগ্ম সম্পাদক।

    প্রশ্ন : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে তারিখে ছয় দফা কর্মসূচি ঘােষণা করেন—
    [১৩তম প্রভাষক নিবন্ধন পরীক্ষা : ২০১৬)
    উত্তর : ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬।

    প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু-ঘােষিত ছয় দফা দাবির যে দফায় পৃথক মুদ্রাব্যবস্থার প্রসঙ্গ রয়েছে
    চাবি : ২০২০-২১]
    উত্তর : ৩।

    প্রশ্ন : ১৯৬৬ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত ছয় দফা দাবি সংক্রান্ত পুস্তিকাটির নাম কী ছিল?
    যবিপ্রবি : ২০১৯-২০
    উত্তর : আমাদের বাচার দাবি : ছয় দফা কর্মসূচি।

    প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধুসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় মােট আসামি সংখ্যা ছিল কত জন?
    {৪০তম বিসিএস)
    উত্তর : ৩৫ জন।

    প্রশ্ন : জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ খেতাবে ভূষিত করা হয়
    [সিনিয়র স্টাফ নার্স ২০২০)
    উত্তর : ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯।

    প্রশ্ন : ‘রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যান্য এ মামলা থেকে ১৯৬৯ সালের যে তারিখে পাকিস্তানি সরকার বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেয়(মেডিকেল ভর্তি ২০০৯-১০]
    উত্তর : ২২ ফেব্রুয়ারি।

    প্রশ্ন : আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর পক্ষে প্রসিকিউটর হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন কে?
    (চবি : ২০১৯-২০]
    উত্তর : টমাস উইলিয়ামস।

    প্রশ্ন : আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রধান আসামি কে ছিলেন?
    শাবিপ্রবি : ২০১৬-১৭
    উত্তর : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

    প্রশ্ন : ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার’ যে বিষয়ে ঘােষিত হয়েছে
    (ঢাবি : ২০২০-২১)
    উত্তর : সৃষ্টিশীল অর্থনীতি।

    প্রশ্ন :সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার যে ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পদক প্রদানের ঘােষণা দিয়েছে
    চাবি : ২০২০-২১
    উত্তর : কৃষি।

    প্রশ্ন : রাশিয়া ভ্রমণকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে কোন কবির দেখা হয়েছিল?
    (চবি : ২০২০-২১)
    উত্তর : নাজিম হিকমত।

    প্রশ্ন : কোন প্রতিষ্ঠানের জরিপে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি নির্বাচিত হন?
    (চবি : ২০২০-২১)
    উত্তর : বিবিসি।

    প্রশ্ন : স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি কে?
    ববি : ২০১৪-১৫]
    উত্তর : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

    প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিশেষ ফিল্ম তৈরি করছেন—
    (জাবি : ২০২০-২১
    উত্তর : শ্যাম বেনেগাল।

    প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু প্রথম কবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন?
    (জাবি : ২০২০-২১)
    উত্তর : ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি।

    প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী কত সাল পর্যন্ত অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হয়েছে?
    (চবি : ২০২০-২১)
    উত্তর : ১৯৫৫ সাল।

    প্রশ্ন : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ প্রকাশিত হয় কোন সালে?
    ৪২তম বিসিএস)।
    উত্তর : ২০১২।

    প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী জাপানি ভাষায় অনুবাদকের নাম কি?
    (চবি : ২০১৯-২০)
    উত্তর : কাজুহিরাে ওয়াতানাবে।

    প্রশ্ন : সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দি নেশান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রন্থ কত সালে প্রকাশিত হয়?
    [জাবি : ২০১৯-২০l
    উত্তর : ২০১৮।

    প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘কারাগারের রােজনামচা’ গ্রন্থের ইংরেজি ভাষার অনুবাদক
    কুবি : ২০১৯-২০)
    উত্তর : অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম।

    প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত কয়টায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘােষণা করেন?
    চবি : ২০২০-২১।
    উত্তর : ১২টা ২০ মিনিটে।

    প্রশ্ন : বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কোন তারিখে স্বাক্ষর করেন?
    (চবি : ২০২০-২১)
    উত্তর : ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭২।

    প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম টেকনােক্র্যাট অর্থমন্ত্রী কে ছিলেন?
    (জাবি : ২০২০-২১
    উত্তর : আজিজুর রহমান মল্লিক।

    প্রশ্ন : নাওয়ামি অঙ্কিত চিত্রে কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে?
    জাবি : ২০২০-২১
    উত্তর : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

    প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মশত বার্ষিকী ও মুজিব বর্ষ নিচের কোন সময়কাল?
    (কুবি : ২০১৯-২০)
    উত্তর : বর্তমানে মুজিববর্ষের মেয়াদকাল ১৭ মার্চ ২০২০-৩১ মার্চ ২০১২।

    প্রশ্ন : গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস এ স্থান পাওয়া ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু নির্মাণে কোন শস্যের চারা ব্যবহার করা হয়েছে?
    (চবি : ২০২০-২১)
    উত্তর : ধান।

    প্রশ্ন : ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থের লেখক
    বিবি : ২০১৪-১৫
    উত্তর : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

    প্রশ্ন : ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনীর বর্ণনানুসারে বঙ্গবন্ধু ঢাকা জেলে কি কাজ করতেন?
    জাককানইবি : ২০১৮-১৯
    উত্তর : মালির কাজ।

    প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জেল জীবনের ওপর রচিত বইয়ের নাম কী?
    (বশেমুরবিপ্রবি : ২০১৯-২০)
    উত্তর : ৩০৫৩ দিন।

    প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ইংরেজি অনুবাদ করেন–
    (বশেমুরবিপ্রবি : ২০১৮-১৯
    উত্তর : ফকরুল আলম।

    প্রশ্ন : ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’-এর কোন খণ্ড সম্প্রতি বের হয়েছে?
    (বশেমুরবিপ্রবি : ২০১৮-১৯)।
    উত্তর: ১ম।

  • স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও অর্থনৈতিক মুক্তি

    নয় মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সােহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের জন্ম হয়। আর সেই বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। স্বাধীনতা লাভের পেছনে স্বপ্ন ও প্রত্যাশা ছিল অর্থনৈতিক ও সামাজিক শােষণ থেকে মুক্তি, গণতান্ত্রিক অধিকার এবং আত্মনির্ভরশীলতার অঙ্গীকার।

    ইতিহাস

    বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস সুদীর্ঘ। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকেই এদেশের মানুষের ভাগ্যে জুটেছে কেবল শােষণ আর বঞ্চনা। সেসময় পাকিস্তানের পশ্চিম ও পূর্ব অংশের মধ্যে দুই বিপরীতমুখী অর্থনৈতিক কর্মসূচি অনুসরণ করা হতাে। রপ্তানিতে এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও দেশের পূর্ব অংশে বিনিয়ােগ হতাে কম। বড় ও ভারি শিল্পকারখানা প্রায় সবই গড়ে ওঠে পশ্চিম অংশে।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    পূর্ব অংশের ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে অর্থনীতির সার্বিক নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে পশ্চিমের কয়েকটি ধনাঢ্য পরিবার। সরকারি চাকরি ও সামরিক বাহিনীতে দেখা দেয় কোটার ব্যাপক বৈষম্য। পশ্চিম পাকিস্তানের শােষণ থেকে মুক্তি পেতে বাংলাদেশকে স্বাধিকার সংগ্রামের অনেকগুলাে পর্যায় পাড়ি দিতে হয়, যার শেষ অধ্যায় ছিল মুক্তিযুদ্ধ।

    দীর্ঘকালের শােষণ-বৈষম্য এবং রাজনৈতিক আধিপত্যবাদের বিষয়টি বাংলার মানুষ অবহিত হলে পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভের পরও ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি ও ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরে এ দেশের মানুষ স্বাধীনতা অর্জনের প্রস্তুতি নিতে থাকে। স্বাধীনতার দাবির সঙ্গে মিলেমিশে যায় বৈষম্য বিলােপের আকাঙ্ক্ষা।

    ২৫ মার্চ ১৯৭১ মধ্যরাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বাঙালিদের ওপর অতর্কিত হামলা চালালে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘােষণা দেন। বঙ্গবন্ধুর এই ঘােষণার পর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযােগ ও সর্বব্যাপী পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি তাদের সর্বশক্তি নিয়ে সশস্ত্র লড়াইয়ে ঝাপিয়ে পড়ে। সারাদেশে শুরু হয় প্রতিরােধ যুদ্ধ। দেশের অকুতােভয় সূর্যসন্তানরা তুমুল যুদ্ধ করে লাখাে প্রাণের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতা।

    সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন

    বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী হলাে স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছরপূর্তি পালনের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ঘােষিত কর্মসূচি। সরকার প্রথমে ২৬ মার্চ ২০২১-১৬ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের ঘােষণা দেয়। পরবর্তীতে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এ সময়সীমা ৩১ মার্চ ২০২২ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী একই বছর হওয়ায় সরকার দুটি উৎসবকে একই রঙে রাঙিয়ে এক বর্ণাঢ্য উৎসবের আয়ােজন করে।

    ১৭-২৬ মার্চ ২০২১ দশ দিনব্যাপী ‘মুজিব চিরন্তন’ শিরােনামে অনুষ্ঠানমালার আয়ােজন করা হয়। ১৭ মার্চ সম্মানিত অতিথি হিসেবে মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মােহাম্মদ সােলিহ, ১৯ মার্চ শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে, ২২ মার্চ নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারী, ২৪ মার্চ ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লােটে শেরিং এবং সর্বশেষ ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ধারণকৃত মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে পাঠানাে শুভেচ্ছা বাণী প্রদর্শন করা হয়।

    অর্থনৈতিক মুক্তি

    বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সঙ্গে অর্থনৈতিক মুক্তির সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড় ও ঘনিষ্ঠ। কেননা স্বাধীনতা অর্জনের কর্মধারা এবং স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন হলাে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া। অন্যদিকে দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বিষয়টি অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া। এ দুটির সমন্বয়ই স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তােলে। বস্তুত অর্থনৈতিক মুক্তি ছাড়া কোনাে দেশ স্বাধীনতার সুফল ভােগ করতে পারে না। কারণ অর্থনীতিই সমাজের মূল ভিত্তি।

    অর্থনৈতিক পরিবর্তন কেবল মানুষের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে নয়, সামগ্রিক চিন্তা-চেতনা ও কর্মপ্রবাহের ওপরও প্রভাব ফেলে। যে কারণে স্বাধীনতার পরপরই শুরু হয়ে যায় অর্থনৈতিক মুক্তির যুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য ছিল পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে শােষণমুক্ত একটি গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। যে সমাজে মানুষ পাবে তার মৌলিক অধিকার, অর্জিত হবে অর্থনৈতিক মুক্তি।

    গত পাঁচ দশকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে আমাদের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। দারিদ্র্য কমেছে উল্লেখযােগ্য মাত্রায় বেড়েছে অর্থনৈতিক সক্ষমতা। ব্রিটেনের অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা Center for Economic and Business Research (CEBR)’র তথ্য মতে, বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। আর ২০৩৬ সাল নাগাদ বিশ্বের ২৪তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে।

    স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশ

    ৫০ বছরে বাংলাদেশের বড় অর্জন স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা লাভ। দারিদ্র্য ও ভঙ্গুর অর্থনীতির কারণে যে বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে তাচ্ছিল্য করা হয়েছিল, সেই দেশটিই এখন বিশ্বসভায় উন্নয়নের এক রােল মডেল। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ জাতিসংঘের সকল শর্ত পূরণ করে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করে বাংলাদেশ।

    ১৯৭৫ সালের এপ্রিল থেকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে থাকা বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সব শর্ত পূরণ পরে ২০১৮ সালে। ১৬ মার্চ ২০১৮ আনুষ্ঠানিকভাবে মানদণ্ড পূরণের স্বীকৃতি পায়। ২৪ নভেম্বর ২০২১ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ (UNGA) বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ অনুমােদন করে। ২০২৪ সালে উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণ করার কথা থাকলেও করোনার প্রভাব মােকাবিলা করে বাংলাদেশ ২৪ নভেম্বর ২০২৬ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে।

    ২০২১ সালের ত্রিবার্ষিক পর্যালােচনা অনুযায়ী মানদণ্ড

    সূচক অন্তর্ভুক্তি উত্তরণ বাংলাদেশের অর্জন
    GNI১,০১৮$ বা এর কম১,২২২$ বা এর বেশি ১৮২৭$ 
    HAI৬০ বা এর কম৬৬ বা এর বেশি৭৫.৩
    EVI৩৬ বা এর বেশি৩২ বা এর কম ২৭.২

    মধ্যম আয়ের দেশ

    ১ জুলাই ২০১৫ বাংলাদেশকে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় উন্নীত করে বিশ্বব্যাংক। স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘ ৪৪ বছর ধরে বাংলাদেশ ছিল নিম্ন আয়ের দেশের তালিকায়। বিশ্বব্যাংক প্রতি বছর আন্তর্জাতিক মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিয়ে দেশগুলােকে চারটি ভাগে ভাগ করে-

    • নিম্ন আয়ের দেশ
    • নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ
    • উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং
    • উচ্চ আয়ের দেশ।

    মাথাপিছু আয় ও জিডিপি

    ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রথমবারের মতাে মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে প্রতিবেশী ভারতকে ছাড়িয়ে যায় বাংলাদেশ। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরাের (BBS) চূড়ান্ত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু জাতীয় আয় ২,৫৯১ মার্কিন ডলার আর মাথাপিছু GDP ২,৪৬২ মার্কিন ।

    যেখানে ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৯৪ মার্কিন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা GDP’র প্রবৃদ্ধি ৬.৯৪%। ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে বাজেটের পরিমাণ ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা।

    দীর্ঘ ৫০ বছরের পথচলায় দেশ যেমন উন্নত হয়েছে বাজেটের আকারও উত্তরােত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাজেটের পরিমাণ ৬,০৩,৬৮১ কোটি টাকা, যা প্রথম বাজেটের চেয়ে ৭৬৭.০৪ গুণ বেশি। সময় পেরিয়েছে, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও এগিয়েছে। আমাদের বৃদ্ধি এবং প্রবৃদ্ধি সময় ও প্রত্যাশার সঙ্গে সংগতি রেখেই এ উর্ধ্বগতি পেয়েছে।

    রপ্তানি আয়

    ১৯৭১ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য বলতে ছিল শুধু পাট ও চামড়া। স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ছিল মাত্র ৩৪ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। মােট রপ্তানিতে পাট ও পাটজাত পণ্যের অবদান ছিল ৮৯.৬৬%। আর চামড়া খাতের অবদান ছিল ৮.৬২%। ৮০’র দশকে রপ্তানি পণ্য হিসেবে যুক্ত হয় তৈরি পােশাক। ৯০’র দশকে রপ্তানির শীর্ষে উঠে আসে তৈরি পােশাক।

    সময়ের সাথে সাথে হিমায়িত খাদ্যসামগ্রী, হস্তশিল্পজাত পণ্যদ্রব্য, কৃষিপণ্য, সার ও রাসায়নিক দ্রব্য, ভবন নির্মাণসামগ্রী, সিরামিক পণ্য, গ্লাস, ঔষধ প্রভৃতি রপ্তানি পণ্যের কাতারে যুক্ত হয়। বিগত পাঁচ দশকে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১১১ গুণ। সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৮,৭৫৮.৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে পােশাকশিল্প খাত থেকে আয় হয়েছে ৩১,৪৫৬.৭৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমান বিশ্বে তৈরি পােশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়।

    প্রবাসী আয় বৃদ্ধি

    আমাদের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক খাত হলাে প্রবাসীদের অর্জিত আয়। দেশের অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করতে প্রবাসীদের অর্জিত আয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রতিদিন, প্রতিমাসে, প্রতিবছরে প্রবাসীরা বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশে পাঠাচ্ছেন। এতে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে সব মিলিয়ে প্রবাসী আয় এসেছে প্রায় ২,৪৭৮ কোটি ডলার। প্রবাসীদের আয়ের হিসাবে বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম।

    রাজস্ব আয় বৃদ্ধি

    গত ৫০ বছরে আমাদের রাজস্ব আয় উল্লেখযােগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে সর্বমােট রাজস্ব আয় হয় ১৬৬ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে মােট রাজস্ব অর্জিত হয় ২ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে ১,৫৬৬ গুণ।

    দারিদ্র্য বিমােচন

    ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৯০% আর অতিদরিদ্র জনগােষ্ঠী ছিল মােট জনসংখ্যার ৪৪%। সেই বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২১ অনুযায়ী, দারিদ্র্য কমে দাঁড়িয়েছে ২০.৫ শতাংশে। আর চরম দারিদ্র্যের হার নেমেছে ১০.৫ শতাংশে। সরকারের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে পুরােপুরি দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়া। বিশ্বব্যাংক বলছে, দারিদ্র্য বিমােচনে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ।

    বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম লক্ষ্য ছিল অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করে শােষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা, যাতে দুঃখী মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। এ লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশ আজ অনেকটাই সফল। সফলতার এ ধারাকে অব্যাহত রাখতে প্রয়ােজন সকলের সম্মিলিত প্রয়াস। আর এর মধ্য দিয়েই গড়ে উঠবে ক্ষুধা-দারিদ্র-নিরক্ষরতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ।

  • গুপ্ত সাম্রাজ্যের উত্থান-পতনের ইতিহাস

    মৌর্যযুগের পর নানা কারণে গুপ্তযুগ প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। খ্রিষ্টীয় চতুর্থ শতাব্দীতে ভারতবর্ষ বহুখণ্ডে বিভক্ত ও বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে। এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির অবসান ঘটিয়ে গুপ্ত বংশ ভারতবর্ষে আবারও রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে। ভৌগােলিক আয়তনের দিক থেকে মৌর্য সাম্রাজ্যের তুলনায় গুপ্ত সাম্রাজ্য ছােট হলেও অনুপাতে দীর্ঘস্থায়ী ছিল। গুপ্ত যুগে শিল্পসাহিত্য ও বিজ্ঞানের এক অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটে।

    সীমানা

    • উত্তরে : হিমালয়
    • দক্ষিণে : নর্মদা
    • পূর্বে : ব্ৰহ্মপুত্র নদ
    • পশ্চিমে : যমুনা ও চম্বল নদী/পাঞ্জাব
    • এর বাইরে ছিল স্বায়ত্তশাসিত ও মিত্র রাজ্য।

    গুপ্ত সাম্রাজ্যে প্রতিষ্ঠার ইতিহাস

    মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের পর ভারতের রাজনীতিতে শুরু হয় বিচ্ছিন্নতা, আঞ্চলিকতার প্রকাশ ও বৈদেশিক শক্তির অনুপ্রবেশ। গুপ্ত সাম্রাজ্যের উত্থান ছিল তার বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিবাদ। কুষাণােত্তর যুগে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যের উদ্ভব দেখা যায়। গাঙ্গেয় উপত্যকায় শক্তি শূন্যতা এবং গঙ্গা-যমুনা উপত্যকার উর্বরভূমির ওপর ভিত্তি করেই গুপ্ত সাম্রাজ্যের উদ্ভব ঘটে।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    শিলালিপির সাক্ষ্য অনুসারে গুপ্ত বংশের প্রতিষ্ঠাতার নাম শ্রীগুপ্ত। শ্রীগুপ্ত বরেন্দ্র অথবা তার পার্শ্ববর্তী প্রদেশে রাজত্ব করতেন। মগধে তার রাজধানী ছিল। তিনি শুধু ‘মহারাজ’ উপাধি ব্যবহার করতেন। রাজা শ্রীগুপ্তের মৃত্যুর পর, তার পুত্র ঘটোৎকচ এ ক্ষুদ্র রাজ্যের রাজা হন। পিতা পুত্রের কেউ-ই বড় মাপের রাজা ছিলেন না; কিন্তু ঘটোকচের পুত্র প্রথম চন্দ্রগুপ্ত (৩২০-৩৪০ খ্রি.) সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রতাপশালী রাজা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

    প্রথম চন্দ্রগুপ্তের রাজত্বকালেই গুপ্ত সাম্রাজ্যের প্রসার ঘটে এবং সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হিসেবে গুপ্তদের বিকাশ লক্ষ করা যায়। প্রথম চন্দ্রগুপ্ত ‘লিচ্ছবি’ রাজকন্যাকে বিয়ে করেন। এই বৈবাহিক সম্পর্ক গুপ্তদের মর্যাদাকে বহুগুণ বৃদ্ধি করে। মৃত্যুর পূর্বে প্রথম চন্দ্রগুপ্ত তার পুত্র সমুদ্রগুপ্তকে উত্তরাধিকারী মনােনীত করে যান।

    রাজাদের ক্রম

    মহারাজ শ্রীগুপ্ত
    মহারাজ ঘটোৎকচ গুপ্ত
    মহারাজাধিরাজ প্রথম চন্দ্রগুপ্ত
    সমুদ্রগুপ্ত
    রামগুপ্ত
    চন্দ্রগুপ্ত (দ্বিতীয়)
    কুমারগুপ্ত
    স্কন্দগুপ্ত
    পুরুগুপ্ত
    বুধগুপ্ত
    নরসিংহ গুপ্ত
    তৃতীয় কুমার গুপ্ত
    বিষ্ণুগুপ্ত

    ভারতের নেপােলিয়ন সমুদ্রগুপ্ত

    মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের পর সমুদ্রগুপ্তই সমগ্র ভারতে এক সার্বভৌম রাজশক্তি স্থাপন করেন। তার সামরিক অভিযানের ব্যাপকতা এবং রাষ্ট্রীয় আধিপত্যের বিস্তৃতি লক্ষ করে স্মিথ তাকে ‘ভারতের নেপােলিয়ন’ বলে অভিহিত করেন। প্রথম চন্দ্রগুপ্তের পাটরানি কুমারদেবীর গর্ভে সমুদ্রগুপ্তের জন্ম হয়।

    ৩২০ খ্রিষ্টাব্দের বেশ কিছু পরে তিনি নিজেকে পিতার উত্তরসূরি ঘােষণা করে সিংহাসনে আরােহণ করেন। তিনি ব্রাহ্মণ্য ধর্মাবলম্বী ছিলেন। উত্তরে হিমালয়, দক্ষিণে নর্মদা, পশ্চিমে যমুনা ও চম্বল নদী এবং পূর্বেব্ৰহ্মপুত্র নদ পর্যন্ত তার সাম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল। সমুদ্রগুপ্ত শুধু একজন যােদ্ধা বা রাজ্যবিস্তারকারী সম্রাটই ছিলেন না, তিনি একাধারে বিদ্যোৎসাহী, সুকবি, সুদক্ষ শাসক ও সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন। তিনিই সর্বপ্রথম সম্পূর্ণ ভারতীয় মুদ্রার প্রচলন করেন। তার শিল্পমণ্ডিত স্বর্ণমুদ্রা গুপ্ত যুগের গৌরব। সমুদ্রগুপ্তের পরে সিংহাসনে আরােহণ করেন তার প্রথম পুত্র রামগুপ্ত।

    দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত বা বিক্রমাদিত্য

    রামগুপ্ত ছিলেন একজন অযােগ্য শাসক। তারপরে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত বা বিক্রমাদিত্য ৩৮০ খ্রিষ্টাব্দে সিংহাসনে আরােহন করে ৪১৩ খ্রিষ্টাব্দে পরলােক গমন করেন। বিক্রমাদিত্য ছিলেন বীরযােদ্ধা ও সুদক্ষ শাসক। তিনি পাঞ্জাব, মথুরা অধিকার করে পরবর্তীতে মালব ও গুর্জরদের শকরাজ্যও অধিকার করেন। চৈনিক পরিব্রাজক ফা-হিয়েন তার শাসন ব্যবস্থার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। তার শাসনব্যবস্থা ছিল উদার জনকল্যাণমূলক। মৃত্যুর পর তার পুত্র কুমারগুপ্ত সিংহাসনে আরােহন করেন।

    গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের কারণ

    • সমুদ্রগুপ্ত ও দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সামরিক প্রতিভার বলে মগধকে কেন্দ্র করে যে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছিল, খ্রিষ্টীয় পঞ্চম শতাব্দীর শেষভাগ থেকে তার পতন শুরু হতে থাকে এবং ষষ্ঠ শতাব্দীর মধ্যভাগে এর সম্পূর্ণ বিলুপ্তি ঘটে।
    • স্কন্দগুপ্তকে বলা হয় গুপ্ত সাম্রাজ্যের শেষ প্রধান সম্রাট। ৪৬৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার উত্তরাধিকারীদের শাসনকার্যে দুর্বলতা ও অযােগ্যতাই ছিল গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের অন্যতম প্রধান কারণ।
    • সমুদ্রগুপ্ত পরাজিত রাজাদের নিয়মিত করদান ও আনুগত্যের বিনিময়ে তাদের রাজ্য ফিরিয়ে দিতেন। পরবর্তীকালে গুপ্তরাজাদের দুর্বলতার কারণে এই প্রাদেশিক শাসকগণ স্বাধীন হয়ে বিদ্রোহ করলে তাদের দমন করা সম্ভব হয়নি।
    • গুপ্তদের সমসাময়িক একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি ছিল বাটকরা। তাদের সাথে সম্পর্কে ফাটলের কারণে পুষ্যমিত্র বা হুন আক্রমণকারীদের তারা সাহায্য করে। এই হুনদের হাতেই গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতন হয়।

    কেমন ছিল গুপ্ত শাসন ব্যবস্থা

    • গুপ্ত শাসনতন্ত্র ছিল সুনিয়ন্ত্রিত, সুবিন্যস্ত ও সুসংগঠিত। এ যুগের বিচারব্যবস্থা ছিল উদার ও মানবধর্মী। গুপ্ত শাসনব্যবস্থায় রাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও মৈত্রী সংঘের এক অপূর্ব আভাস পাওয়া যায়। দীর্ঘকাল গুপ্ত সম্রাটরা ভারতকে বৈদেশিক আক্রমণ থেকে রক্ষা করেন। শাসনব্যবস্থা উদারপন্থী হওয়ায় জনগণ স্বাধীন ও স্বচ্ছন্দে জীবন কাটাতেন।এ যুগে বিজ্ঞান, সাহিত্য, শিল্পের অসাধারণ গতি হয়। প্রাচীন ভারতের কবি কালিদাস, ভারবি, শত্রক, বিশাখদত্ত প্রভৃতি সাহিত্যিক ছিলেন গুপ্ত যুগের সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি।
    • অমর সিংহের কাব্যের আকারে সংস্কৃত অভিধান, বাগভট্টের চিকিৎসাবিজ্ঞান সম্পর্কিত গ্রন্থ, বরাহ মিহিরের পঞ্চসিদ্ধান্ত, আর্যভট্টের আহ্নিক ও বার্ষিক গতির তত্ত্ব গুপ্ত মনীষার পরিচয় দেয়।
    • শিল্প অর্থাৎ স্থাপত্য, ভাস্কর্য ও চিত্রকলায় গুপ্তযুগ ছিল অসাধারণ সৃজনশীল । এযুগে মথুরা, বারাণসী ও পাটলিপুত্র শিল্পকলার প্রধান কেন্দ্র ছিল।

    গুপ্ত শাসনামলে বাংলা

    মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের পর দীর্ঘদিন বাংলায় ঐক্যবদ্ধ কোনাে রাষ্ট্রব্যবস্থা ছিল না। গুপ্ত সম্রাট সমুদ্রগুপ্ত পুষ্করণ রাজ্যের অধিপতি চন্দ্রবর্মাকে রাজিত করে পশ্চিম ও দক্ষিণ বাংলা অধিকার করেন। পরবর্তীতে বাংলার বেশিরভাগ অঞ্চল গুপ্তসাম্রাজ্যের অধীনে চলে আসে। খ্রিষ্টীয় ৪ থেকে ৭ শতক পর্যন্ত গুপ্ত সম্রাটরা বাংলার বিভিন্ন অঞ্চল শাসন করেন। বাংলার বিভিন্ন প্রত্নস্থল থেকে প্রচুর গুপ্ত স্বর্ণমুদ্রা আবিষ্কৃত হয়েছে। গুপ্ত সম্রাটগণ বাংলাকে শাসন করার সুবিধার্থে কতগুলাে ভাগে বিভক্ত। করেন। ভূক্তি, বিষয়, মূল, বীথি ও গ্রামে এসব প্রশাসনিক ভাগ ছিল। বাংলার ইতিহাসে প্রশাসনিক এবং ভূমি ব্যবস্থা চালুর ক্ষেত্রে গুপ্তদের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য। গুপ্ত যুগে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা ভালাে ছিল। কিন্তু ৬ষ্ঠ শতকে গুপ্ত সাম্রাজ্য আন্তঃবিদ্রোহ ও ইনজাতির বার বার আক্রমণে দুর্বল হয়ে পড়লে বাংলায় গৌড ও বঙ্গ নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উত্থান ঘটে।

    নালন্দা বিহার

    নালন্দা মহাবিহার প্রাচীন ভারতের মগধ রাজ্যে (বর্তমান বিহারে) অবস্থিত একটি খ্যাতনামা বৌদ্ধ শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। খ্রিষ্টীয় ৪২৭ অব্দে নালন্দা মহাবিহার প্রতিষ্ঠা করা হয়। ধারণা করা হয়, গুপ্ত সম্রাটগণই নালন্দা মহাবিহারের নির্মাতা এবং স্যাট প্রথম কুমারগুপ্তই এক্ষেত্রে প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সাত শতকের দিকে নালন্দা একটি শিক্ষাক্ষেত্র হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। সে সময়ে নালন্দায় ১০,০০০ শিক্ষার্থী এবং ২,০০০ শিক্ষক ছিলেন। তাদের অনেকেই কোরিয়া, জাপান, চীন, তিব্বত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান এবং তুরস্ক থেকে আগত। চৈনিক তীর্থযাত্রী হিউয়েন সাঙ পড়াশােনা করার জন্য এখানে কয়েক বছর অতিবাহিত করেন।

    গুপ্ত যুগের মনীষীগণ

    কালিদাস
    • গুপ্ত যুগের বিশিষ্ট সাহিত্যিক, নাট্যকার, বাল্মীকি, ব্যাসের পরে সর্বাধিক খ্যাতিসম্পন্ন সংস্কৃত কবি।
    • তার রচিত শকুন্তলা, মেঘদূত, কুমার সম্ভব, ঋতু-সংহার,মালবিকাগ্নিমিত্রম প্রভৃতি নাটক বিশ্বসাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।
    • অসাধারণ কবি প্রতিভার জন্য তিনি হােমার, শেক্সপিয়ার, মিল্টন, দান্তে প্রমুখ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কবি ও সাহিত্যিকের সমপর্যায়ভুক্ত।
    • তিনি দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত বা বিক্রমাদিত্যের সভার নবরত্নের অন্যতম ছিলেন।
    ফা-হিয়েন
    • প্রকৃত নাম কুঙ্গ, বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হবার পর তার নামকরণ হয় ফা-হিয়েন, যার অর্থ বিনয়ের প্রতিমূর্তি।
    • ৪০১ খ্রিষ্টাব্দে ভারতে আসেন। তিনি টানা ১০ বছর ভারতের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করেন।
    • তার আগমনের উদ্দেশ্য ছিল বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থসমূহ সংগ্রহ করা।
    • ফা-হিয়েনের ভ্রমণ বৃত্তান্ত ‘ফো-কোয়াে-কি’ নামে পরিচিত। এটি ভারতের ইতিহাসের একটি বিশিষ্ট ও প্রামাণ্য দলিল।
    • ৮৬ বছর বয়সে ফা-হিয়েন দক্ষিণ চীনে মৃত্যুবরণ করেন।
    আর্যভট্ট
    • আর্যভট্ট ছিলেন গুপ্ত যুগের শ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক ও গণিতবিদ।
    • তার রচিত ‘সূর্য-সিদ্ধান্ত নামক গ্রন্থে সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণের কারণের মনােরম বিবরণ পাওয়া যায়।
    • পাটিগণিত, বীজগণিত, ত্রিকোণমিতি এবং জ্যোতির্বিদ্যার ওপর তার অন্য বিখ্যাত গ্রন্থ হলাে ‘আর্যভট্টীয়।
    • তিনি পাই-এর মান নির্ণয় করেছিলেন 3.1416, যেটা তার সময় পর্যন্ত যেকোনাে গণিতবিদের বের করা মানগুলাের মধ্যে সবচেয়ে সঠিক।
    • ভারতের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহের নাম তার নামে ‘আর্যভট্ট রাখা হয়।

    গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলি

    মৌর্যযুগের পর নানা কারণে গুপ্তযুগ প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। খ্রিষ্টীয় চতুর্থ শতাব্দীতে ভারতবর্ষ বহুখণ্ডে বিভক্ত ও বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে। এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির অবসান ঘটিয়ে গুপ্ত বংশ ভারতবর্ষে আবারও রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে। ভৌগােলিক আয়তনের দিক থেকে মৌর্য সাম্রাজ্যের তুলনায় গুপ্ত সাম্রাজ্য ছােট হলেও অনুপাতে দীর্ঘস্থায়ী ছিল। গুপ্ত যুগে শিল্পসাহিত্য ও বিজ্ঞানের এক অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটে।

    সীমানা

    • উত্তরে : হিমালয়
    • দক্ষিণে : নর্মদা
    • পূর্বে : ব্ৰহ্মপুত্র নদ
    • পশ্চিমে : যমুনা ও চম্বল নদী/পাঞ্জাব
    • এর বাইরে ছিল স্বায়ত্তশাসিত ও মিত্র রাজ্য।

    গুপ্ত সাম্রাজ্যে প্রতিষ্ঠার ইতিহাস

    মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের পর ভারতের রাজনীতিতে শুরু হয় বিচ্ছিন্নতা, আঞ্চলিকতার প্রকাশ ও বৈদেশিক শক্তির অনুপ্রবেশ। গুপ্ত সাম্রাজ্যের উত্থান ছিল তার বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিবাদ। কুষাণােত্তর যুগে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যের উদ্ভব দেখা যায়। গাঙ্গেয় উপত্যকায় শক্তি শূন্যতা এবং গঙ্গা-যমুনা উপত্যকার উর্বরভূমির ওপর ভিত্তি করেই গুপ্ত সাম্রাজ্যের উদ্ভব ঘটে।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    শিলালিপির সাক্ষ্য অনুসারে গুপ্ত বংশের প্রতিষ্ঠাতার নাম শ্রীগুপ্ত। শ্রীগুপ্ত বরেন্দ্র অথবা তার পার্শ্ববর্তী প্রদেশে রাজত্ব করতেন। মগধে তার রাজধানী ছিল। তিনি শুধু ‘মহারাজ’ উপাধি ব্যবহার করতেন। রাজা শ্রীগুপ্তের মৃত্যুর পর, তার পুত্র ঘটোৎকচ এ ক্ষুদ্র রাজ্যের রাজা হন। পিতা পুত্রের কেউ-ই বড় মাপের রাজা ছিলেন না; কিন্তু ঘটোকচের পুত্র প্রথম চন্দ্রগুপ্ত (৩২০-৩৪০ খ্রি.) সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রতাপশালী রাজা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

    প্রথম চন্দ্রগুপ্তের রাজত্বকালেই গুপ্ত সাম্রাজ্যের প্রসার ঘটে এবং সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হিসেবে গুপ্তদের বিকাশ লক্ষ করা যায়। প্রথম চন্দ্রগুপ্ত ‘লিচ্ছবি’ রাজকন্যাকে বিয়ে করেন। এই বৈবাহিক সম্পর্ক গুপ্তদের মর্যাদাকে বহুগুণ বৃদ্ধি করে। মৃত্যুর পূর্বে প্রথম চন্দ্রগুপ্ত তার পুত্র সমুদ্রগুপ্তকে উত্তরাধিকারী মনােনীত করে যান।

    রাজাদের ক্রম

    মহারাজ শ্রীগুপ্ত
    মহারাজ ঘটোৎকচ গুপ্ত
    মহারাজাধিরাজ প্রথম চন্দ্রগুপ্ত
    সমুদ্রগুপ্ত
    রামগুপ্ত
    চন্দ্রগুপ্ত (দ্বিতীয়)
    কুমারগুপ্ত
    স্কন্দগুপ্ত
    পুরুগুপ্ত
    বুধগুপ্ত
    নরসিংহ গুপ্ত
    তৃতীয় কুমার গুপ্ত
    বিষ্ণুগুপ্ত

    ভারতের নেপােলিয়ন সমুদ্রগুপ্ত

    মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের পর সমুদ্রগুপ্তই সমগ্র ভারতে এক সার্বভৌম রাজশক্তি স্থাপন করেন। তার সামরিক অভিযানের ব্যাপকতা এবং রাষ্ট্রীয় আধিপত্যের বিস্তৃতি লক্ষ করে স্মিথ তাকে ‘ভারতের নেপােলিয়ন’ বলে অভিহিত করেন। প্রথম চন্দ্রগুপ্তের পাটরানি কুমারদেবীর গর্ভে সমুদ্রগুপ্তের জন্ম হয়।

    ৩২০ খ্রিষ্টাব্দের বেশ কিছু পরে তিনি নিজেকে পিতার উত্তরসূরি ঘােষণা করে সিংহাসনে আরােহণ করেন। তিনি ব্রাহ্মণ্য ধর্মাবলম্বী ছিলেন। উত্তরে হিমালয়, দক্ষিণে নর্মদা, পশ্চিমে যমুনা ও চম্বল নদী এবং পূর্বেব্ৰহ্মপুত্র নদ পর্যন্ত তার সাম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল। সমুদ্রগুপ্ত শুধু একজন যােদ্ধা বা রাজ্যবিস্তারকারী সম্রাটই ছিলেন না, তিনি একাধারে বিদ্যোৎসাহী, সুকবি, সুদক্ষ শাসক ও সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন। তিনিই সর্বপ্রথম সম্পূর্ণ ভারতীয় মুদ্রার প্রচলন করেন। তার শিল্পমণ্ডিত স্বর্ণমুদ্রা গুপ্ত যুগের গৌরব। সমুদ্রগুপ্তের পরে সিংহাসনে আরােহণ করেন তার প্রথম পুত্র রামগুপ্ত।

    দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত বা বিক্রমাদিত্য

    রামগুপ্ত ছিলেন একজন অযােগ্য শাসক। তারপরে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত বা বিক্রমাদিত্য ৩৮০ খ্রিষ্টাব্দে সিংহাসনে আরােহন করে ৪১৩ খ্রিষ্টাব্দে পরলােক গমন করেন। বিক্রমাদিত্য ছিলেন বীরযােদ্ধা ও সুদক্ষ শাসক। তিনি পাঞ্জাব, মথুরা অধিকার করে পরবর্তীতে মালব ও গুর্জরদের শকরাজ্যও অধিকার করেন। চৈনিক পরিব্রাজক ফা-হিয়েন তার শাসন ব্যবস্থার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। তার শাসনব্যবস্থা ছিল উদার জনকল্যাণমূলক। মৃত্যুর পর তার পুত্র কুমারগুপ্ত সিংহাসনে আরােহন করেন।

    গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের কারণ

    • সমুদ্রগুপ্ত ও দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সামরিক প্রতিভার বলে মগধকে কেন্দ্র করে যে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছিল, খ্রিষ্টীয় পঞ্চম শতাব্দীর শেষভাগ থেকে তার পতন শুরু হতে থাকে এবং ষষ্ঠ শতাব্দীর মধ্যভাগে এর সম্পূর্ণ বিলুপ্তি ঘটে।
    • স্কন্দগুপ্তকে বলা হয় গুপ্ত সাম্রাজ্যের শেষ প্রধান সম্রাট। ৪৬৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার উত্তরাধিকারীদের শাসনকার্যে দুর্বলতা ও অযােগ্যতাই ছিল গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের অন্যতম প্রধান কারণ।
    • সমুদ্রগুপ্ত পরাজিত রাজাদের নিয়মিত করদান ও আনুগত্যের বিনিময়ে তাদের রাজ্য ফিরিয়ে দিতেন। পরবর্তীকালে গুপ্তরাজাদের দুর্বলতার কারণে এই প্রাদেশিক শাসকগণ স্বাধীন হয়ে বিদ্রোহ করলে তাদের দমন করা সম্ভব হয়নি।
    • গুপ্তদের সমসাময়িক একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি ছিল বাটকরা। তাদের সাথে সম্পর্কে ফাটলের কারণে পুষ্যমিত্র বা হুন আক্রমণকারীদের তারা সাহায্য করে। এই হুনদের হাতেই গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতন হয়।

    কেমন ছিল গুপ্ত শাসন ব্যবস্থা

    • গুপ্ত শাসনতন্ত্র ছিল সুনিয়ন্ত্রিত, সুবিন্যস্ত ও সুসংগঠিত। এ যুগের বিচারব্যবস্থা ছিল উদার ও মানবধর্মী। গুপ্ত শাসনব্যবস্থায় রাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও মৈত্রী সংঘের এক অপূর্ব আভাস পাওয়া যায়। দীর্ঘকাল গুপ্ত সম্রাটরা ভারতকে বৈদেশিক আক্রমণ থেকে রক্ষা করেন। শাসনব্যবস্থা উদারপন্থী হওয়ায় জনগণ স্বাধীন ও স্বচ্ছন্দে জীবন কাটাতেন।এ যুগে বিজ্ঞান, সাহিত্য, শিল্পের অসাধারণ গতি হয়। প্রাচীন ভারতের কবি কালিদাস, ভারবি, শত্রক, বিশাখদত্ত প্রভৃতি সাহিত্যিক ছিলেন গুপ্ত যুগের সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি।
    • অমর সিংহের কাব্যের আকারে সংস্কৃত অভিধান, বাগভট্টের চিকিৎসাবিজ্ঞান সম্পর্কিত গ্রন্থ, বরাহ মিহিরের পঞ্চসিদ্ধান্ত, আর্যভট্টের আহ্নিক ও বার্ষিক গতির তত্ত্ব গুপ্ত মনীষার পরিচয় দেয়।
    • শিল্প অর্থাৎ স্থাপত্য, ভাস্কর্য ও চিত্রকলায় গুপ্তযুগ ছিল অসাধারণ সৃজনশীল । এযুগে মথুরা, বারাণসী ও পাটলিপুত্র শিল্পকলার প্রধান কেন্দ্র ছিল।

    গুপ্ত শাসনামলে বাংলা

    মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের পর দীর্ঘদিন বাংলায় ঐক্যবদ্ধ কোনাে রাষ্ট্রব্যবস্থা ছিল না। গুপ্ত সম্রাট সমুদ্রগুপ্ত পুষ্করণ রাজ্যের অধিপতি চন্দ্রবর্মাকে রাজিত করে পশ্চিম ও দক্ষিণ বাংলা অধিকার করেন। পরবর্তীতে বাংলার বেশিরভাগ অঞ্চল গুপ্তসাম্রাজ্যের অধীনে চলে আসে। খ্রিষ্টীয় ৪ থেকে ৭ শতক পর্যন্ত গুপ্ত সম্রাটরা বাংলার বিভিন্ন অঞ্চল শাসন করেন। বাংলার বিভিন্ন প্রত্নস্থল থেকে প্রচুর গুপ্ত স্বর্ণমুদ্রা আবিষ্কৃত হয়েছে। গুপ্ত সম্রাটগণ বাংলাকে শাসন করার সুবিধার্থে কতগুলাে ভাগে বিভক্ত। করেন। ভূক্তি, বিষয়, মূল, বীথি ও গ্রামে এসব প্রশাসনিক ভাগ ছিল। বাংলার ইতিহাসে প্রশাসনিক এবং ভূমি ব্যবস্থা চালুর ক্ষেত্রে গুপ্তদের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য। গুপ্ত যুগে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা ভালাে ছিল। কিন্তু ৬ষ্ঠ শতকে গুপ্ত সাম্রাজ্য আন্তঃবিদ্রোহ ও ইনজাতির বার বার আক্রমণে দুর্বল হয়ে পড়লে বাংলায় গৌড ও বঙ্গ নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উত্থান ঘটে।

    নালন্দা বিহার

    নালন্দা মহাবিহার প্রাচীন ভারতের মগধ রাজ্যে (বর্তমান বিহারে) অবস্থিত একটি খ্যাতনামা বৌদ্ধ শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। খ্রিষ্টীয় ৪২৭ অব্দে নালন্দা মহাবিহার প্রতিষ্ঠা করা হয়। ধারণা করা হয়, গুপ্ত সম্রাটগণই নালন্দা মহাবিহারের নির্মাতা এবং স্যাট প্রথম কুমারগুপ্তই এক্ষেত্রে প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সাত শতকের দিকে নালন্দা একটি শিক্ষাক্ষেত্র হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। সে সময়ে নালন্দায় ১০,০০০ শিক্ষার্থী এবং ২,০০০ শিক্ষক ছিলেন। তাদের অনেকেই কোরিয়া, জাপান, চীন, তিব্বত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান এবং তুরস্ক থেকে আগত। চৈনিক তীর্থযাত্রী হিউয়েন সাঙ পড়াশােনা করার জন্য এখানে কয়েক বছর অতিবাহিত করেন।

    গুপ্ত যুগের মনীষীগণ

    কালিদাস
    • গুপ্ত যুগের বিশিষ্ট সাহিত্যিক, নাট্যকার, বাল্মীকি, ব্যাসের পরে সর্বাধিক খ্যাতিসম্পন্ন সংস্কৃত কবি।
    • তার রচিত শকুন্তলা, মেঘদূত, কুমার সম্ভব, ঋতু-সংহার,মালবিকাগ্নিমিত্রম প্রভৃতি নাটক বিশ্বসাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।
    • অসাধারণ কবি প্রতিভার জন্য তিনি হােমার, শেক্সপিয়ার, মিল্টন, দান্তে প্রমুখ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কবি ও সাহিত্যিকের সমপর্যায়ভুক্ত।
    • তিনি দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত বা বিক্রমাদিত্যের সভার নবরত্নের অন্যতম ছিলেন।
    ফা-হিয়েন
    • প্রকৃত নাম কুঙ্গ, বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হবার পর তার নামকরণ হয় ফা-হিয়েন, যার অর্থ বিনয়ের প্রতিমূর্তি।
    • ৪০১ খ্রিষ্টাব্দে ভারতে আসেন। তিনি টানা ১০ বছর ভারতের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করেন।
    • তার আগমনের উদ্দেশ্য ছিল বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থসমূহ সংগ্রহ করা।
    • ফা-হিয়েনের ভ্রমণ বৃত্তান্ত ‘ফো-কোয়াে-কি’ নামে পরিচিত। এটি ভারতের ইতিহাসের একটি বিশিষ্ট ও প্রামাণ্য দলিল।
    • ৮৬ বছর বয়সে ফা-হিয়েন দক্ষিণ চীনে মৃত্যুবরণ করেন।
    আর্যভট্ট
    • আর্যভট্ট ছিলেন গুপ্ত যুগের শ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক ও গণিতবিদ।
    • তার রচিত ‘সূর্য-সিদ্ধান্ত নামক গ্রন্থে সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণের কারণের মনােরম বিবরণ পাওয়া যায়।
    • পাটিগণিত, বীজগণিত, ত্রিকোণমিতি এবং জ্যোতির্বিদ্যার ওপর তার অন্য বিখ্যাত গ্রন্থ হলাে ‘আর্যভট্টীয়।
    • তিনি পাই-এর মান নির্ণয় করেছিলেন 3.1416, যেটা তার সময় পর্যন্ত যেকোনাে গণিতবিদের বের করা মানগুলাের মধ্যে সবচেয়ে সঠিক।
    • ভারতের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহের নাম তার নামে ‘আর্যভট্ট রাখা হয়।

    গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলি

    মৌর্যযুগের পর নানা কারণে গুপ্তযুগ প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। খ্রিষ্টীয় চতুর্থ শতাব্দীতে ভারতবর্ষ বহুখণ্ডে বিভক্ত ও বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে। এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির অবসান ঘটিয়ে গুপ্ত বংশ ভারতবর্ষে আবারও রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে। ভৌগােলিক আয়তনের দিক থেকে মৌর্য সাম্রাজ্যের তুলনায় গুপ্ত সাম্রাজ্য ছােট হলেও অনুপাতে দীর্ঘস্থায়ী ছিল। গুপ্ত যুগে শিল্পসাহিত্য ও বিজ্ঞানের এক অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটে।

    সীমানা

    • উত্তরে : হিমালয়
    • দক্ষিণে : নর্মদা
    • পূর্বে : ব্ৰহ্মপুত্র নদ
    • পশ্চিমে : যমুনা ও চম্বল নদী/পাঞ্জাব
    • এর বাইরে ছিল স্বায়ত্তশাসিত ও মিত্র রাজ্য।

    গুপ্ত সাম্রাজ্যে প্রতিষ্ঠার ইতিহাস

    মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের পর ভারতের রাজনীতিতে শুরু হয় বিচ্ছিন্নতা, আঞ্চলিকতার প্রকাশ ও বৈদেশিক শক্তির অনুপ্রবেশ। গুপ্ত সাম্রাজ্যের উত্থান ছিল তার বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিবাদ। কুষাণােত্তর যুগে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যের উদ্ভব দেখা যায়। গাঙ্গেয় উপত্যকায় শক্তি শূন্যতা এবং গঙ্গা-যমুনা উপত্যকার উর্বরভূমির ওপর ভিত্তি করেই গুপ্ত সাম্রাজ্যের উদ্ভব ঘটে।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    শিলালিপির সাক্ষ্য অনুসারে গুপ্ত বংশের প্রতিষ্ঠাতার নাম শ্রীগুপ্ত। শ্রীগুপ্ত বরেন্দ্র অথবা তার পার্শ্ববর্তী প্রদেশে রাজত্ব করতেন। মগধে তার রাজধানী ছিল। তিনি শুধু ‘মহারাজ’ উপাধি ব্যবহার করতেন। রাজা শ্রীগুপ্তের মৃত্যুর পর, তার পুত্র ঘটোৎকচ এ ক্ষুদ্র রাজ্যের রাজা হন। পিতা পুত্রের কেউ-ই বড় মাপের রাজা ছিলেন না; কিন্তু ঘটোকচের পুত্র প্রথম চন্দ্রগুপ্ত (৩২০-৩৪০ খ্রি.) সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রতাপশালী রাজা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

    প্রথম চন্দ্রগুপ্তের রাজত্বকালেই গুপ্ত সাম্রাজ্যের প্রসার ঘটে এবং সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হিসেবে গুপ্তদের বিকাশ লক্ষ করা যায়। প্রথম চন্দ্রগুপ্ত ‘লিচ্ছবি’ রাজকন্যাকে বিয়ে করেন। এই বৈবাহিক সম্পর্ক গুপ্তদের মর্যাদাকে বহুগুণ বৃদ্ধি করে। মৃত্যুর পূর্বে প্রথম চন্দ্রগুপ্ত তার পুত্র সমুদ্রগুপ্তকে উত্তরাধিকারী মনােনীত করে যান।

    রাজাদের ক্রম

    মহারাজ শ্রীগুপ্ত
    মহারাজ ঘটোৎকচ গুপ্ত
    মহারাজাধিরাজ প্রথম চন্দ্রগুপ্ত
    সমুদ্রগুপ্ত
    রামগুপ্ত
    চন্দ্রগুপ্ত (দ্বিতীয়)
    কুমারগুপ্ত
    স্কন্দগুপ্ত
    পুরুগুপ্ত
    বুধগুপ্ত
    নরসিংহ গুপ্ত
    তৃতীয় কুমার গুপ্ত
    বিষ্ণুগুপ্ত

    ভারতের নেপােলিয়ন সমুদ্রগুপ্ত

    মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের পর সমুদ্রগুপ্তই সমগ্র ভারতে এক সার্বভৌম রাজশক্তি স্থাপন করেন। তার সামরিক অভিযানের ব্যাপকতা এবং রাষ্ট্রীয় আধিপত্যের বিস্তৃতি লক্ষ করে স্মিথ তাকে ‘ভারতের নেপােলিয়ন’ বলে অভিহিত করেন। প্রথম চন্দ্রগুপ্তের পাটরানি কুমারদেবীর গর্ভে সমুদ্রগুপ্তের জন্ম হয়।

    ৩২০ খ্রিষ্টাব্দের বেশ কিছু পরে তিনি নিজেকে পিতার উত্তরসূরি ঘােষণা করে সিংহাসনে আরােহণ করেন। তিনি ব্রাহ্মণ্য ধর্মাবলম্বী ছিলেন। উত্তরে হিমালয়, দক্ষিণে নর্মদা, পশ্চিমে যমুনা ও চম্বল নদী এবং পূর্বেব্ৰহ্মপুত্র নদ পর্যন্ত তার সাম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল। সমুদ্রগুপ্ত শুধু একজন যােদ্ধা বা রাজ্যবিস্তারকারী সম্রাটই ছিলেন না, তিনি একাধারে বিদ্যোৎসাহী, সুকবি, সুদক্ষ শাসক ও সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন। তিনিই সর্বপ্রথম সম্পূর্ণ ভারতীয় মুদ্রার প্রচলন করেন। তার শিল্পমণ্ডিত স্বর্ণমুদ্রা গুপ্ত যুগের গৌরব। সমুদ্রগুপ্তের পরে সিংহাসনে আরােহণ করেন তার প্রথম পুত্র রামগুপ্ত।

    দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত বা বিক্রমাদিত্য

    রামগুপ্ত ছিলেন একজন অযােগ্য শাসক। তারপরে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত বা বিক্রমাদিত্য ৩৮০ খ্রিষ্টাব্দে সিংহাসনে আরােহন করে ৪১৩ খ্রিষ্টাব্দে পরলােক গমন করেন। বিক্রমাদিত্য ছিলেন বীরযােদ্ধা ও সুদক্ষ শাসক। তিনি পাঞ্জাব, মথুরা অধিকার করে পরবর্তীতে মালব ও গুর্জরদের শকরাজ্যও অধিকার করেন। চৈনিক পরিব্রাজক ফা-হিয়েন তার শাসন ব্যবস্থার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। তার শাসনব্যবস্থা ছিল উদার জনকল্যাণমূলক। মৃত্যুর পর তার পুত্র কুমারগুপ্ত সিংহাসনে আরােহন করেন।

    গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের কারণ

    • সমুদ্রগুপ্ত ও দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সামরিক প্রতিভার বলে মগধকে কেন্দ্র করে যে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছিল, খ্রিষ্টীয় পঞ্চম শতাব্দীর শেষভাগ থেকে তার পতন শুরু হতে থাকে এবং ষষ্ঠ শতাব্দীর মধ্যভাগে এর সম্পূর্ণ বিলুপ্তি ঘটে।
    • স্কন্দগুপ্তকে বলা হয় গুপ্ত সাম্রাজ্যের শেষ প্রধান সম্রাট। ৪৬৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার উত্তরাধিকারীদের শাসনকার্যে দুর্বলতা ও অযােগ্যতাই ছিল গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের অন্যতম প্রধান কারণ।
    • সমুদ্রগুপ্ত পরাজিত রাজাদের নিয়মিত করদান ও আনুগত্যের বিনিময়ে তাদের রাজ্য ফিরিয়ে দিতেন। পরবর্তীকালে গুপ্তরাজাদের দুর্বলতার কারণে এই প্রাদেশিক শাসকগণ স্বাধীন হয়ে বিদ্রোহ করলে তাদের দমন করা সম্ভব হয়নি।
    • গুপ্তদের সমসাময়িক একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি ছিল বাটকরা। তাদের সাথে সম্পর্কে ফাটলের কারণে পুষ্যমিত্র বা হুন আক্রমণকারীদের তারা সাহায্য করে। এই হুনদের হাতেই গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতন হয়।

    কেমন ছিল গুপ্ত শাসন ব্যবস্থা

    • গুপ্ত শাসনতন্ত্র ছিল সুনিয়ন্ত্রিত, সুবিন্যস্ত ও সুসংগঠিত। এ যুগের বিচারব্যবস্থা ছিল উদার ও মানবধর্মী। গুপ্ত শাসনব্যবস্থায় রাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও মৈত্রী সংঘের এক অপূর্ব আভাস পাওয়া যায়। দীর্ঘকাল গুপ্ত সম্রাটরা ভারতকে বৈদেশিক আক্রমণ থেকে রক্ষা করেন। শাসনব্যবস্থা উদারপন্থী হওয়ায় জনগণ স্বাধীন ও স্বচ্ছন্দে জীবন কাটাতেন।এ যুগে বিজ্ঞান, সাহিত্য, শিল্পের অসাধারণ গতি হয়। প্রাচীন ভারতের কবি কালিদাস, ভারবি, শত্রক, বিশাখদত্ত প্রভৃতি সাহিত্যিক ছিলেন গুপ্ত যুগের সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি।
    • অমর সিংহের কাব্যের আকারে সংস্কৃত অভিধান, বাগভট্টের চিকিৎসাবিজ্ঞান সম্পর্কিত গ্রন্থ, বরাহ মিহিরের পঞ্চসিদ্ধান্ত, আর্যভট্টের আহ্নিক ও বার্ষিক গতির তত্ত্ব গুপ্ত মনীষার পরিচয় দেয়।
    • শিল্প অর্থাৎ স্থাপত্য, ভাস্কর্য ও চিত্রকলায় গুপ্তযুগ ছিল অসাধারণ সৃজনশীল । এযুগে মথুরা, বারাণসী ও পাটলিপুত্র শিল্পকলার প্রধান কেন্দ্র ছিল।

    গুপ্ত শাসনামলে বাংলা

    মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের পর দীর্ঘদিন বাংলায় ঐক্যবদ্ধ কোনাে রাষ্ট্রব্যবস্থা ছিল না। গুপ্ত সম্রাট সমুদ্রগুপ্ত পুষ্করণ রাজ্যের অধিপতি চন্দ্রবর্মাকে রাজিত করে পশ্চিম ও দক্ষিণ বাংলা অধিকার করেন। পরবর্তীতে বাংলার বেশিরভাগ অঞ্চল গুপ্তসাম্রাজ্যের অধীনে চলে আসে। খ্রিষ্টীয় ৪ থেকে ৭ শতক পর্যন্ত গুপ্ত সম্রাটরা বাংলার বিভিন্ন অঞ্চল শাসন করেন। বাংলার বিভিন্ন প্রত্নস্থল থেকে প্রচুর গুপ্ত স্বর্ণমুদ্রা আবিষ্কৃত হয়েছে। গুপ্ত সম্রাটগণ বাংলাকে শাসন করার সুবিধার্থে কতগুলাে ভাগে বিভক্ত। করেন। ভূক্তি, বিষয়, মূল, বীথি ও গ্রামে এসব প্রশাসনিক ভাগ ছিল। বাংলার ইতিহাসে প্রশাসনিক এবং ভূমি ব্যবস্থা চালুর ক্ষেত্রে গুপ্তদের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য। গুপ্ত যুগে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা ভালাে ছিল। কিন্তু ৬ষ্ঠ শতকে গুপ্ত সাম্রাজ্য আন্তঃবিদ্রোহ ও ইনজাতির বার বার আক্রমণে দুর্বল হয়ে পড়লে বাংলায় গৌড ও বঙ্গ নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উত্থান ঘটে।

    নালন্দা বিহার

    নালন্দা মহাবিহার প্রাচীন ভারতের মগধ রাজ্যে (বর্তমান বিহারে) অবস্থিত একটি খ্যাতনামা বৌদ্ধ শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। খ্রিষ্টীয় ৪২৭ অব্দে নালন্দা মহাবিহার প্রতিষ্ঠা করা হয়। ধারণা করা হয়, গুপ্ত সম্রাটগণই নালন্দা মহাবিহারের নির্মাতা এবং স্যাট প্রথম কুমারগুপ্তই এক্ষেত্রে প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সাত শতকের দিকে নালন্দা একটি শিক্ষাক্ষেত্র হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। সে সময়ে নালন্দায় ১০,০০০ শিক্ষার্থী এবং ২,০০০ শিক্ষক ছিলেন। তাদের অনেকেই কোরিয়া, জাপান, চীন, তিব্বত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান এবং তুরস্ক থেকে আগত। চৈনিক তীর্থযাত্রী হিউয়েন সাঙ পড়াশােনা করার জন্য এখানে কয়েক বছর অতিবাহিত করেন।

    গুপ্ত যুগের মনীষীগণ

    কালিদাস
    • গুপ্ত যুগের বিশিষ্ট সাহিত্যিক, নাট্যকার, বাল্মীকি, ব্যাসের পরে সর্বাধিক খ্যাতিসম্পন্ন সংস্কৃত কবি।
    • তার রচিত শকুন্তলা, মেঘদূত, কুমার সম্ভব, ঋতু-সংহার,মালবিকাগ্নিমিত্রম প্রভৃতি নাটক বিশ্বসাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।
    • অসাধারণ কবি প্রতিভার জন্য তিনি হােমার, শেক্সপিয়ার, মিল্টন, দান্তে প্রমুখ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কবি ও সাহিত্যিকের সমপর্যায়ভুক্ত।
    • তিনি দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত বা বিক্রমাদিত্যের সভার নবরত্নের অন্যতম ছিলেন।
    ফা-হিয়েন
    • প্রকৃত নাম কুঙ্গ, বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হবার পর তার নামকরণ হয় ফা-হিয়েন, যার অর্থ বিনয়ের প্রতিমূর্তি।
    • ৪০১ খ্রিষ্টাব্দে ভারতে আসেন। তিনি টানা ১০ বছর ভারতের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করেন।
    • তার আগমনের উদ্দেশ্য ছিল বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থসমূহ সংগ্রহ করা।
    • ফা-হিয়েনের ভ্রমণ বৃত্তান্ত ‘ফো-কোয়াে-কি’ নামে পরিচিত। এটি ভারতের ইতিহাসের একটি বিশিষ্ট ও প্রামাণ্য দলিল।
    • ৮৬ বছর বয়সে ফা-হিয়েন দক্ষিণ চীনে মৃত্যুবরণ করেন।
    আর্যভট্ট
    • আর্যভট্ট ছিলেন গুপ্ত যুগের শ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক ও গণিতবিদ।
    • তার রচিত ‘সূর্য-সিদ্ধান্ত নামক গ্রন্থে সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণের কারণের মনােরম বিবরণ পাওয়া যায়।
    • পাটিগণিত, বীজগণিত, ত্রিকোণমিতি এবং জ্যোতির্বিদ্যার ওপর তার অন্য বিখ্যাত গ্রন্থ হলাে ‘আর্যভট্টীয়।
    • তিনি পাই-এর মান নির্ণয় করেছিলেন 3.1416, যেটা তার সময় পর্যন্ত যেকোনাে গণিতবিদের বের করা মানগুলাের মধ্যে সবচেয়ে সঠিক।
    • ভারতের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহের নাম তার নামে ‘আর্যভট্ট রাখা হয়।

    গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলি

    • মহাকবি কালিদাস যে যুগের কবি ছিলেন গুপ্ত যুগ (দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের সভাকবি ছিলেন)।
    • দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের অপর নাম ছিল— বিক্রমাদিত্য। রাবি (এ-৩): ১১-১২ ।
    • ভারতের নেপােলিয়ন বলা হয়—সমুদ্রগুপ্তকে। রাবি (এ-৩) ১০-১১)।
    • চীনা পরিবাজক ফা-হিয়েন ভারতবর্ষে অবস্থান করেন ৪০১-৪১০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। থানা সহকারী শিক্ষা অফিসার ও ৯৯)
    • মেঘদূত কাব্য লিখেছেন— মহাকবি কালিদাস। সিরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক : ০৬)।
    • চীনা পরিব্রাজক ফা-হিয়েন বাংলায় আগমন করেন- দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের আমলে। ঢাবি ‘খ’ ইউনিট ২০১৫-১৬ ।
    • দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের উপাধি ছিল—বিক্রমাদিত্য, নরেন্দ্র চন্দ্র, সিংহচন্দ্র, দেবরাজ, দেবশ্রী, শকারি ইত্যাদি।
    • ‘তাম্রশাসন’ হলাে—তামারপাতে লিখিত লিপি/রাজা বা অন্য কোনাে ব্যক্তি কর্তৃক মূলত ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ভূমি দানের রেজিস্ট্রিকৃত পাকা দলিল।
    • ‘অমরকোষ’ যে জাতীয় গ্রন্থ- অভিধান। জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সহকারী পরিচালক : ০৬/ ঢাবি ‘খ’ : ০৪-০৫).

    বিসিএস প্রিপারেশন

  • আকাশ-মহাকাশ সম্পর্কিত সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য

    চাঁদে গাড়ি পাঠাবে টয়ােটা

    জাপানি গাড়ি নির্মাতা সংস্থা টয়ােটা ২০৪০ সালের মধ্যে মানুষকে চাঁদে বসবাস এবং এরপর মঙ্গলগ্রহে বসবাসে সহায়তা করবে। জাপানের মহাকাশ সংস্থা জাপান অ্যারােস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সির (JAEA) সঙ্গে একটি গাড়ি তৈরিতে কাজ করছে টয়ােটা। গাড়িটির নাম লুনার ক্রজার। টয়ােটা ল্যান্ড ক্ৰজার স্পাের্ট ইউটিলিটি ভেহিকলের (SUV) নাম অনুসারে গাড়িটির নামকরণ হয়। ২৮ জানুয়ারি ২০২২ টয়ােটার লুনার প্রকল্পের প্রধান তাকাও সাতাে বলেন, মানুষ এ গাড়িতে বসে খেতে, কাজ করতে, ঘুমাতে এবং অন্যদের সঙ্গে নিরাপদে যােগাযােগ করতে পারবে।

    শনির চাঁদ মহাসাগর

    সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহ শনির উপগ্রহগুলাের অন্যতম একটি মিমাস। এ উপগ্রহের পরিবেশ অনেকটা পৃথিবীর মতাে উষ্ণ। এতে রয়েছে মহাসাগর। অন্তত ২৪-৩১ কিলােমিটার পুরু বরফে আচ্ছাদিত মিমাস। মহাসাগরের তরল পানির স্পর্শ পেতে বরফের পুরু আস্তরণ ভেদ করতে হবে বলে দাবি করেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকরা। তারা উপগ্রহটি থেকে সংগ্রহ করা ক্যাসিনি মিশনের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সেখানে। মহাসাগর থাকার বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছেন।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    মহাকাশে গুপ্তচর স্যাটেলাইট

    ২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ যুক্তরাষ্ট্র নজরদারির জন্য মহাকাশে নতুন আরেকটি গুপ্তচর স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে। SpaceX এর ফ্যালকন-৯ রকেটের মাধ্যমে NROL-87 স্যাটেলাইটটি সফলভাবে কক্ষপথে পাঠানাে হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীভুক্ত সংস্থা ন্যাশনাল রিকনসেন্স অফিস (NRO) স্যাটেলাইটটি তৈরি করেছে। দেশটির স্পেস ফোর্স এটি তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছে। এটি মূলত স্যাটেলাইট দেখাশােনার কাজ করে থাকে। উত্তর ভার্জিনিয়ায় ওয়াশিংটনের কাছে NRO’র সদর দপ্তর ।

    বায়ুমণ্ডলে ৪০ স্যাটেলাইট ধ্বংস

    ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ মার্কিন ধনকুবের এলন মাস্কের অ্যারােস্পেস কোম্পানি SpaceX’র উচ্চগতির ইন্টারনেট স্যাটেলাইট প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ৪৯টি উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে। সেগুলাে পৃথিবী থেকে প্রায় ২১০ কিলােমিটার ওপরে স্থাপন করা হয়। কিন্তু ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ভূ-চুম্বকীয় ঝড়ের কবলে পড়ে কক্ষপথ থেকে ছিটকে পড়ে ৪০টি স্যাটেলাইট ধ্বংস হয়। সাধারণত ভূ-চুম্বকীয় ঝড়ের কারণে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়।

    বাসযােগ্য গ্রহের খোঁজ

    কোনাে একটি মৃত নক্ষত্রের কাছে প্রাণধারণের উপযােগী একটি গ্রহের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা। বিষয়টি নিশ্চিত হলে প্রথমবারের মতাে শ্বেতবামন নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করা জীবন টিকিয়ে রাখার উপযােগী গ্রহের খোঁজ মিলবে। সম্ভাব্য গ্রহটি পৃথিবী থেকে ১১৭ আলােকবর্ষ দূরে। মৃত তারাকেই বলা হয় শ্বেতবামন বা হােয়াইট ডােয়ার্ফ।

    ISS’র বিদায় ২০৩১ সালে

    আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS) ২০৩০ সাল পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার পর পৃথিবীতে ধসে পড়বে। ৩১ জানুয়ারি ২০২২ নাসা জানায় ২০৩১ সালের শুরুর দিকে এটি বিধ্বস্ত হয়ে পয়েন্ট নেমাে নামে পরিচিত প্রশান্ত মহাসাগরের একটি অংশে পড়বে। পয়েন্ট নেমাে পৃথিবীর স্থলভূমি থেকে সবচেয়ে দূরে অবস্থিত। এটি মহাকাশযানের কবরস্থান’ নামেও পরিচিত। উল্লেখ্য, ২০ নভেম্বর ১৯৯৮ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন নির্মাণ করার জন্য পৃথিবীর কক্ষপথে প্রথম যে অংশটি পাঠানাে হয়, তার নাম Zarya। এরপর ধীরে ধীরে বিভিন্ন অংশকে মহাকাশ স্টেশনের সাথে যুক্ত করে তৈরি হয় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন। ২০১১ সালে ISS’র নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়।

    মহাকাশে যৌথ মিশন

    মহাকাশে যৌথ মিশন ঞ্জ করে মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের দুই দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন। ইতােমধ্যে সম্মিলিত উদ্যোগে প্রথমবারের মতাে মহাকাশে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ (স্যাটেলাইট) পাঠায় দেশ দু’টি। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের Tsukuba Space Centre (TKSC) থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় Light-1 নামের এই স্যাটেলাইটটি। এটির মূল কাজ হবে ঝড়াে আবহাওয়া ও মেঘে মেঘে ঘর্ষণের ফলে যে গামা রশ্মি নির্গত হয় তার তথ্য সংগ্রহ-সংরক্ষণ করা ও সেসব তথ্য পাঠানাে। ২১ ডিসেম্বর ২০২১ Light-1 নামের স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হয় ।

    বাংলাদেশের প্রথম রকেট

    বাংলাদেশে এই প্রথম রকেট তৈরি করে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের একঝাক তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থী। তারা নিজেদের মেধা-মনন আর পরিশ্রমে ধূমকেতুএক্স-প্রজেক্ট এর ব্যানারে এবং ধুমকেতু এক্স টিমের সহায়তায় ধূমকেতু ০.১ এবং ধূমকেতু ০.২ নামের দুইটি রকেট তৈরি করে। এছাড়া ধূমকেতু-১ ও ধূমকেতু-২ নামে দুটি মডেলের আরও চারটি রকেট তৈরি করা হয়। ধূমকেতু-১ লম্বায় ৮ ফুট করে, দুটি মিলে ১৬ ফুট লম্বা। আর ধূমকেতু-২ প্রতিটি ৬ ফিট করে, দুটি মিলে ১২ ফিট লম্বা। আর আয়তনের দিক থেকে বড় রকেটটি ৬ ইঞ্চি এবং ছােটটি ৪ ইঞ্চি।

  • বিসিএস প্রস্তুতিতে বাংলাদেশ বিষয়াবলী থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু এক কথার প্রশ্নোত্তর

    বিসিএস প্রস্তুতিতে বাংলাদেশ বিষয়াবলী থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু এক কথার প্রশ্নোত্তর

    বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতিতে বাংলাদেশ বিষয়াবলী থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু এক কথার প্রশ্ন ও উত্তর  দেওয়া হলো। আশা করছি লেখাটি আপনাদের সহায়ক হবে।চলুন দেখে নেওয়া যাক –

    bcs question online preparation

    নিভিল ভারত মুসলিম লীগ / সর্বভারতীয় মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয় –৩০ ডিসেম্বর ১৯০৬ সালে।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    মর্লি-মিন্টো সংস্কার আইন পাশ হয় – ১৯০৯ সালের ২৫ মে ।

    মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কার আইন পাস হয় -১৯১৯ সালে।

    হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির লক্ষে – ১৯২৩ সালে ‘ বেঙ্গল প্যাক্ট ‘ চুক্তি হয়।

    ১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইন ’ ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাশ হয় – ১৮ জুলাই ১৯৪৭ সালে।

    চা বোর্ড – চট্টগ্রাম।

    চা গবেষণা কেন্দ্র – মৌলভীবাজার।

    সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত সিলেটের লালাখালে।

    কম বৃষ্টিপাত নাটোরের লালপুরে।

    সর্বোচ্চ তাপমাত্রা -নাটোরের লালপুর।

    সর্বনিন্ম তাপমাত্রা -সিলেটের শ্রীমঙ্গল।

    বাংলাদেশ ডাক জাদুঘর -ঢাকায় অবস্হিত।

    পোস্টাল একাডেমী রয়েছে রাজশাহীতে।

    উত্তরা গণভবন -দীর্ঘাপাতিয়ার রাজপ্রসাদ ছিল।

    প্রাচীন গৌড় নগরীর অংশ বিশেষ- চাঁপাইনবাবগঞ্জ।

    শিখা অনির্বান -ঢাকা সেনানিবাসে।

    শিখা চিরন্তন – সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।

    বাংলাদেশে নদের সংখ্যা ৪ টি।

    ‘রায়বেশ নৃত্য ‘ – কামরুল হাসানের শিল্পকর্ম।

    শায়েস্তা খার পুত্র উমিদ খাঁ সাত মসজিদ নির্মান করেন- ১৬৮০ সালে।

    বাংলাদেশে তৈরি ১ম যাত্রীবাহী জাহাজের নাম -এম ভি বাঙ্গাল।

    জাহাজটি তৈরি করছেন – ওয়েষ্টার্ন মেরিন শিপাইয়ার্ড লি :।

    ওয়ানগালা – গারোদের উৎসব।

    সাংগ্রাই – মারমাদের উৎসব।

    বিজু – চাকমাদের উৎসব।

    সাংগ্রাং – রাখাইনদের বর্ষবরনের নাম।

    চট্টগ্রাম জেলার মিসরাই এবং ফেনী জেলার সোনাগাজী মহুরী সেচ প্রকল্প এলাকায় প্রথম বায়ু বিদুৎ কেন্দ্র অবস্থিত।

    বাংলাদেশে ১ম বেসরকারি বিমান সংস্থা- অ্যারোবেঙ্গল এয়ার।

    শামশুদ্দীন ইলতুত মিসকে সুলতান- ই – আজম বলা হতো।

    জাতিসংঘে নিরাপত্তা পরিষধের ১ম বাংলাদেশি সভাপতি- আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী(২০০১ এর জুন মাসে)।

    ঢাকার তারা মসজিদ নির্মান করেন মির্জা গোলাম পীর।

    ১৯৫৬ সালের ৪ মার্চ – এ.কে ফজলুল হক বাংলার গভর্নর হন।

  • বিমানবন্দর , ড্রিমলাইনার , উড়োজাহাজ এবং সমুদ্রগামী নৌযান সম্পর্কিত ১০টি গুরুত্ত্বপূর্ণ প্রশ্ন

    বিমানবন্দর , ড্রিমলাইনার , উড়োজাহাজ এবং সমুদ্রগামী সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ ১০টি তথ্য দেওয়া হলো।আশা করছি লেখাটি আপনাদের সহায়ক হবে।

    ১।বাংলাদেশ বিমানে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট শুরু হয়– ১৯৭২ সালে।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    ২।বাংলাদেশে বর্তমানে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রয়েছে–৩টি।

    ৩।বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে বর্তমানে ড্রিমলাইনার সংখ্যা – ০৬ টি।

    ৪।সর্বশেষ ড্রিমলাইনার – ‘ অচিন পাখি ‘ (৬ ষ্ঠ) এবং ‘ সোনার তরী’ (৫ ম)।

    ৫।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা নতুন বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার ‘ অচিন পাখি ‘ বাংলাদেশে পৌছায় – বিগত ২৪ / ১২ / ২০১৯ ইং তারিখে।

    ৬।বর্তমানে বাংলাদেশ বিমানের মোট উড়োজাহাজের সংখ্যা – ১৮টি।

    ৭।বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আন্তর্জাতিক গন্তব্য – ১৭টি রুটে।

    ৮।সম্প্রতি বাংলাদেশ যে দেশকে ‘ সেয়দপুর বিমানবন্দর ’ ব্যবহার করতে দিতে সম্মত হয়েছে – নেপাল ।

    ৯।বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে বর্তমানে নারী পাইলট হিসেবে কর্মরত আছেন – ২০ জন।

    ১০।বাংলাদেশে বর্তমানে নিবন্ধিত সমুদ্রগামী জাহাজ রয়েছে ৬৪ টি ।

  • বাংলাদেশ বিষয়াবলী থেকে বিসিএস পরীক্ষায় আসার মত কিছু এক কথার প্রশ্নোত্তর

    বাংলাদেশ বিষয়াবলী থেকে বিসিএস পরীক্ষায় আসার মত কিছু এক কথার প্রশ্নোত্তর দেওয়া হল। আসা করছি লেখাটি আপনাদের সহায়ক হবে।চলুন দেখে নেওয়া যাক-

    কুষ্টিয়া নদী–গড়াই নদীর তীরে অবস্থিত।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি – ময়মনসিংহে অবস্হিত(১৯৭৭)।

    মুক্তিযুদ্ধেও স্বারক ভাস্কর্য বিজয় ৭১ রয়েছে- কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বদরুল ইসলাম।

    কুশিয়ারা ও সুরমা নদীদ্বয়ের মিলিত স্রোত–মেঘনা।

    বাংলাদেশের মধ্যভাগ দিয়ে অতিক্রম করেছে – কর্কটক্রান্তি রেখা।

    বাংলাদেশ ২০ ° ৩৪ ′ উত্তর অক্ষরেখা থেকে ২৬ ° ৩৬ ′ উত্তর অক্ষরেখার মধ্যে অবস্থিত।

    বাংলাদেশ ৮৮ ° ০১ ′ পূর্ব দ্রাঘিমা থেকে ৯২ ° ৪১ ′ পূর্ব দ্রাঘিমারেখার মধ্যে অবস্থিত।

    ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই ভারতের সাথে ছিটমহল বিনিময়ের ফলে এদেশের সাথে– ১০,০৪১ একর জমি যোগ হয়।

    বাংলাদেশের টেরিটোরিয়াল বা রাজনৈতিক সমুদ্রসীম– ১২ নটিক্যাল মাইল।

    বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমুদ্রসীমা বা Exclusive Economic Zone -২০০ নটিক্যাল মাইল।

    বাংলাদেশের উপকূলীয় ভূখণ্ড সমুদ্রে ৩৫০ নটিক্যাল মাইল পযর্ন্ত যার ভৌগোলিক নাম– মহীসোপান।

    বাংলাদেশের সর্বমোট সীমারেখা —৪৭১১ কি.মি।

    বাংলাদেশ – ভারতের সীমারেখা —৩৭১৫ কি.মি।

    বাংলাদেশ – মিয়ানমারের সীমারেখা —২৮০ কি.মি।

    ভূপ্রকৃতির ভিক্তিতে বাংলাদেশকে – ৩ টি ভাগে ভাগ করা যায়।

    ৬ টারশিয়ারি যুগের পাহাড় সমূহকে –২ ভাগে ভাগ করা যায়।

    বাংলাদেশের দক্ষিণ – পূর্বের পাহাড়গুলোর গড় উচ্চতা– ৬১০ মিটার।

    বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ – তাজিনডং ( বিজয় ) উচ্চতা ১২৩১ মিটার।এটি –বান্দরবনে অবস্থিত।

    বাংলাদেশের প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহ– ২৫০০০ বছরের পুরোনো।

    বরেন্দ্রভূমি বাংলাদেশের উত্তর – পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত ।

    মাটি– ধূসর ও লাল।

    আয়তন ৯৩২০ বর্গ কি. মি।

    বাংলাদেশের প্লাবন সমভূমির আয়তন –১ , ২৪ , ২৬৬ বর্গ কি . মি.।

    বাংলাদেশের প্লাবন সমভূমিকে –৫ টি ভাগে ভাগ করা যায়।

    সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু জায়গা–দিনাজপুর।

    উচ্চতা -৩৭.৫০ মিটার।

    বাংলাদেশে নদীর সংখ্যা প্রায় ৭০০ টি।

    বাংলাদেশের নদীসমূহের মোট দৈর্ঘ্য হলো প্রায় –২২,১৫৫ কিলোমিটার।

    পদ্মা নদীর উৎপত্তি হয়েছে হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে।

    পদ্মা নদী যমুনা নদীরসাথে মিলিত হয়েছে- দৌলতদিয়ার কছে।

    পদ্মা ও মেঘনা নদী মিলিত হয়েছে – চাঁদপুরে।

  • বাংলাদেশের বিভিন্ন পদক ও পুরস্কার ২০২২

    স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২২

    জাতীয় পর্যায়ে গৌরবােজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ। ৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও ২টি প্রতিষ্ঠান ২০২২ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করে। বিজয়ীরা হলেন— স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ : বীর মুক্তিযােদ্ধা ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী, শহীদ কর্নেল খন্দকার। নাজমুল হুদা (বীর বিক্রম), আব্দুল জলিল, সিরাজ উদদীন আহমেদ, মােহাম্মদ ছহিউদ্দিন বিশ্বাস (মরণােত্তর), সিরাজুল হক (মরণােত্তর) চিকিৎসাবিদ্যা : অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া, অধ্যাপক ডা. মাে. কামরুল ইসলাম। স্থাপত্য : স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হােসেন (মরণােত্তর) গবেষণা ও প্রশিক্ষণ : বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট। এছাড়া বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান এবং মুজিববর্ষে। শতভাগ বিদ্যুতায়ন সফলভাবে সম্পন্ন করায় বিদ্যুৎ বিভাগও স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করে।

    জাতীয় পরিবেশ পদক

    ২০০৯ সালে জাতীয় পরিবেশ পদক প্রবর্তন করা হয়। পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়নে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে ব্যক্তিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে পদক প্রদান করা হয়। ২০২১ সালের বিজয়ী পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ » এম, এ মতিন (মতিন সৈকত) ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ও পরিবেশ বিষয়ক শিক্ষা ও প্রচার > ইনাম আল হক ও Bangladesh Resource Centre For Indigenous Knowledge (BARCIK) ।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার

    ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ আইএফআইসি ব্যাংক নিবেদিত ‘কালি ও কলম তরুণ কবি। ও লেখক পুরস্কার ২০২১’ প্রদান করা হয়। এবারের পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেনকথাসাহিত্যে বিভা ও বিভ্রম’ গ্রন্থের জন্য সাদাত হােসাইন, প্রবন্ধ-গবেষণায় ‘জীবনানন্দের মানচিত্র’ গ্রন্থের জন্য আমীন আল রশীদ এবং কবিতায় সুন্দরবন সিরিজ’ গ্রন্থের জন্য চাণক্য বাড়ৈ। এবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাহিত্য এবং শিশু-কিশাের সাহিত্যে উল্লেখযােগ্য গ্রন্থ জমা না পড়ায় এ বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হয়নি।

    পল্লীবন্ধু পদক

    ২০ মার্চ ২০২২ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ‘পল্লীবন্ধু পদক-২০২১’ প্রদান করা হয়। বিজয়ী আটজন বীর মুক্তিযােদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, কবি ফজল শাহাবুদ্দীন (মরণােত্তর), গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, এন্ড্রু কিশাের (মরণােত্তর), অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ, ইঞ্জিনিয়ার কামরুল ইসলাম সিদ্দিক (মরণােত্তর), গােলাম সরােয়ার টিপু এবং বীর মুক্তিযােদ্ধা আব্দুল ওয়াহেদ বাবুল। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্মরণে প্রথমবার ২০২২ সালে এ পদক প্রবর্তন করা হয়।

    অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার

    ২২ মার্চ ২০২২ বাংলা ভাষার কথাসাহিত্যে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার-১৪২৮’ লাভ করেন বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও প্রাবন্ধিক রঞ্জনা বিশ্বাস। বাংলা ১৪০১ সন (১৯৯৩ সালথেকে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। প্রতিবছর একজন নারী সাহিত্যিককে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।

  • বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যত চলচ্চিত্র

    মুজিব : একটি জাতির রূপকার

    বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযােজনায় শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে নির্মিতব্য জীবনীচিত্র ‘মুজিব’। ছবিটি পরিচালনা করেন ভারতের প্রখ্যাত নির্মাতা শ্যামবেনেগাল। বহুল প্রতীক্ষিত এই জীবনীচিত্রের নাম ছিল ‘বঙ্গবন্ধু’। পরে কয়েকটি নাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠালে তিনি ‘মুজিব’ নামটি পছন্দ করেন। বঙ্গবন্ধুর ১০২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ১৭ মার্চ ২০২২ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয় চলচ্চিত্রটির প্রথম পােস্টার। বাংলা ও ইংরেজিতে প্রকাশ করা পােস্টারে বাংলায় লেখা ‘মুজিব’, যার ট্যাগলাইন একটি জাতির রূপকার’। ইংরেজিতে MUJIB: THE MAKING OF A NATION। চলচ্চিত্রটিতে শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে অভিনয় করেন আরিফিন শুভ।

    বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যত চলচ্চিত্র

    চলচ্চিত্রপরিচালক বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয়
    মুজিব: একটি জাতির রূপকার* শ্যাম বেনেগালআরিফিন শুভ
    চিরঞ্জীব মুজিবনজরুল ইসলামআহমেদ রুবেল
    মুজিব আমার পিতাসােহেল রানা
    ৫৭০আশরাফ শিশির
    টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাইসেলিম খানশান্ত খান
    হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালিএখলাস আবেদিনফেরদৌস
    টুঙ্গিপাড়ার দুঃসাহসী খােকামুশফিকুর রহমান গুলজারসৌম্য জ্যোতি

    * কিশাের বয়সের চরিত্রে অভিনয় করে দিব্য জ্যোতি।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    • ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘চিরঞ্জীব মুজিব’।
    • দেশের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র ‘মুজিব আমার পিতা।
    • বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরবর্তী ঘটনা নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘৫৭০’।
    • বঙ্গবন্ধুর শৈশব থেকে তরুণ বয়স পর্যন্ত বিভিন্ন ঘটনার আলােকে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই’।
    • বঙ্গবন্ধুর আলােচিত ইংরেজি তথ্যচিত্র ‘দ্য অল টাইম হিরাে’-এর বাংলায় নির্মিত শিরােনাম ‘হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি’। এটি পরিচালনা করেন নােমান রবিন।
    • বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছেলেবেলা নিয়ে সরকারি অনুদানে ‘ নির্মিত চলচ্চিত্র ‘টুঙ্গিপাড়ার দুঃসাহসী খােকা।
  • Current Affairs April 2022 Bangladesh and International Affairs

    Current Affairs April 2022 Important questions and answers from Current Affairs April 2022 are discussed below. This article will be very helpful for those of you who are taking part in various competitive exams. Bangladesh and international issues have been discussed here.

    Current Affairs Bangladesh Affairs

    Q: Who is the second Bangladeshi to be appointed Vice President (Operations) of the Multilateral Investment Guarantee Agency (MICA)?
    Answer: Junaid Kamal Ahmed (the first Bangladeshi Faisal Chowdhury).

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    Q: Who won the International Brave Woman Award as the fifth Bangladeshi in 2022?
    Answer: Syeda Rizwana Hasan.

    Q: When was the first virtual museum launched in Bangladesh?
    Answer: 26 February 2022.

    Q: Which mobile company launched the first e-SIM (embedded-SIM) in Bangladesh?
    Answer: Grameenphone.

    Question: Where is the police memorial set up in honor of the police personnel who sacrificed their lives while on duty at home and abroad?
    Answer: At Police Staff College, Mirpur, Dhaka.

    Question: In which force the first aviation wing was launched in 2022?
    Answer: Bangladesh Police.

    Q: How many individuals and organizations won the Independence Award 2022?
    Answer: 9 individuals and 2 organizations.

    Q: What is the name of the film made about the 36 hours after the assassination of Bangabandhu?
    Answer: 560.

    Q: Who is the new US Ambassador to Bangladesh?
    Answer: Peter D. Smile.

    Question: Which organization held the 36th Asia and Pacific Regional Conference (APRC) for the first time in Bangladesh on 8-11 March 2022?
    Answer: Food and Agriculture Organization (FAO).

    Q: Where is the Pigeon Thermal Power Station located?
    Answer: In Dhankhali of Kalapara upazila of Patuakhali.

    Q: Which is the second coal power plant in the country?
    Answer: Payra Thermal Power Station (first Barapukuria Thermal Power Station).

    Q: Which Bangladeshi ship was attacked in the war between Russia and Ukraine?
    Answer: Prosperity of Bengal.

    Q: When was the Bengal Prosperity Ship attacked?
    Answer: March 2, 2022.

    Question: When did Bangladesh ratify the ILO Convention-138?
    Answer: 22 March 2022.

    Question: How many documents have been ratified by Bangladesh including 5 basic conventions of ILO?
    Answer: 29.

    Q: When was the gazette published to make Joy Bangla the national slogan of Bangladesh?
    Answer: March 2, 2022.

    Current Affairs International Affairs

    Question: What is meant by Most Favored Nation (MFN)?
    Answer: MFN is the list of most preferred countries. That is, MFN is the level of prestige by one state to another in international trade.

    Q: What is the name of the largest suspension bridge in the world?
    Answer: 1915 bridge in Chanakkal, Turkey.

    Q: What is the name of the United States shoulder-mounted air defense system?
    Answer: Stinger.

    Question: Which military satellite did Iran launch on March 7, 2022?
    Answer: Noor-2

    Question: Who became the first permanent Muslim judge in the Supreme Court of Israel on February 21, 2022?
    Answer: Khaled Kabub.

    Q: Who is the current president of Ukraine?
    Answer: Vladimir Zelensky.

    Q: What is the full form of SWIFT?
    Answer: Society for Worldwide Interbank Financial Telecommunication.

    Q: Under what agreement does the United States exchange food, fuel, ammunition and equipment?
    Answer: Acquisition and Cross Servicing Agreement (ACSA).

    Q: Under what agreement does the United States exchange military intelligence?
    Answer: General Security of Military Information Agreement (GSOMIA).

    Q: When did Australia form the Defense Space Command?
    Answer: 18 January 2022.

    Q: Who was elected the 70th Miss World?
    Answer: Carolina Bilafska (Paland).

    Question: Which is the top country in the global climate report of 2021?
    Answer: Bangladesh.

    Question: Which is the most polluted capital in the global climate report of 2021?
    Answer: New Delhi (India).

    Playground

    Q: Who became the man of the series in the Bangladesh-South Africa series held in March 2022?
    Answer: Taskin Ahmed.

    Q: How many ODI series has Bangladesh won so far?
    Answer: 30 (out of which 6 won on foreign soil).

    Q: Who became the first Bangladeshi champion in International Matter Race?
    Answer: Avik Anair