Category: সাধারণ বিজ্ঞান

General Science

  • বাংলায় সুবাদারী শাসন

    বাংলায় আফগান শাসনাবসানের পর শুরু হয় মুঘল শাসন। সুবাদারী ও নবাবী এ দুই পর্বে বাংলায় প্রায় দুইশ বছরের মুঘল শাসন অতিবাহিত হয়। ১৫৭৬-১৭১৭ সাল পর্যন্ত মুঘল আমল সুবাদারী শাসন নামে অভিহিত। বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে মুঘল সুবাদারী শাসন এক উল্লেখযোগ্য অধ্যায়।

    সুবাদারী শাসন

    মুঘল প্রদেশগুলো সুবাহ্ নামে পরিচিত ছিল। বাংলা ছিল মুঘলদের অন্যতম প্রদেশ বা সুবাহ্। আকবর তার সাম্রাজ্যকে ১২টি সুবাহয়ে বিভক্ত করেন। সুবাসমূহ এলাহাবাদ, আগ্রা, অযোধ্যা, আজমীর, আহমেদাবাদ, বিহার (রাজধানী পাটনা), বাংলা (রাজধানী রাজমহল), দিল্লি, কাবুল, লাহোর, মুলতান এবং মালওয়া। সুবাহুসমূহের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসকদের বলা হতো সুবাদার। সুবাদার অর্থ সুবাহ্’র রক্ষক বা শাসক । প্রকৃতপক্ষে সুবাদারেরা সম্রাটের প্রতিনিধিরূপে সুবাহ্ শাসন করতেন।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    বাংলায় সুবাদারী শাসন

    ১৫৩৮ সালে সম্রাট হুমায়ুন বাংলার রাজধানী গৌড় অধিকার করে মুঘল শাসনের সূচনা করেন । কিন্তু শের শাহ শূরির কারণে বাংলায় মুঘল রাজত্ব বাধাগ্রস্ত হয়। পরবর্তীতে আকবরের শাসনামলে ১৫৭৬ সালে দাউদ খান কররানীর পরাজয়ের পর বাংলায় প্রকৃত মুঘল শাসনের সূত্রপাত হয় ।

    এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন

    তখন থেকে বাংলায় মুঘল সুবাদারী শাসন শুরু হলেও সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে বাংলায় সুবাদারদের কর্তৃত্ব ছিল একেবারেই সীমিত। সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে মুজাদ্দিদে আলফিসানীর অন্যতম অনুসারী সুবাদার ইসলাম খান ১৬১০ সালে বারো ভূঁইয়াদের পরাজিত করে সমগ্র বাংলায় সুবাদারী শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। সুবাদার ইসলাম খান ঢাকাকে সুবাহ্ বাংলার রাজধানী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে এর নাম রাখেন জাহাঙ্গীরনগর। কেন্দ্রীয় সরকারের নিকট সুবাহ্ বাংলা পৃথক গুরুত্ব পেত। বাংলার সুবাদারের পদ খালি হলে বিহারের সুবাদারকেই বাংলার সুবাদারের পদ প্রদানের প্রথা আকবরের সময় থেকে প্রচলিত হয়।

    মুঘল আমলে বাংলার রাজধানী

    রাজধানীস্থানান্তর/প্রতিষ্ঠাস্থানান্তরকারী
    তাণ্ডা১২ জুলাই ১৫৭৬
    রাজমহল৭ নভেম্বর ১৫৯৫মানসিংহ
    ঢাকা১৬ জুলাই ১৬১০ইসলাম খান চিশতি
    রাজমহল১৬৫০ সালেশাহ্ সুজা
    ঢাকা১৬৬০ সালেমীর জুমলা
    মুর্শিদাবাদ১৭১৭ সালেমুর্শিদকুলী খান

    উল্লেখ্য, স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানী হওয়ার পূর্বে ঢাকা ১৬১০, ১৬৬০, ১৯০৫ ও ১৯৪৭ সালে মোট ৪ বার বাংলার রাজধানী হয়।

    গুরুত্বপূর্ণ সুবাদারগণ

    শাহ্ সুজা

    শাহ্ সুজা ছিলেন সম্রাট শাহজাহান ও সম্রাজ্ঞী মমতাজ মহলের দ্বিতীয় পুত্র। ১৬৩৯ সালে সম্রাট শাহজাহান শাহ্ সুজাকে বাংলার সুবাদার নিযুক্ত করেন। শাহ্ সুজা জ্ঞানী, সংস্কৃতিবান ও কেতাদুরস্ত আদর্শ শাসক ছিলেন। তিনি বড় কাটরা, ধানমন্ডির শাহী ঈদগাহ, লালবাগ মসজিদ ও চুড়িহাট্টা মসজিদ নির্মাণ করেন । ১৬৫৭ সালে সম্রাট শাহজাহান অসুস্থ হয়ে পড়লে তার চার পুত্রের প্রত্যেকেই সম্রাট হওয়ার জন্য বিদ্রোহ করে । এ সময় আওরঙ্গজেবের সাথে শাহ্ সুজার দ্বন্দ্ব শুরু হয়। দুই ভাইয়ের যুদ্ধে ১৬৫৯ সালে শাহ্ সুজা পরাজিত হন এবং আরাকানে পলায়ন করেন। পরে সেখানেই সপরিবারে নিহত হন ।

    মীর জুমলা

    ইস্পাহানের আর্দিস্তানে ১৫৯১ সালে মীর জুমলার জন্ম হয় । প্রথম জীবনে তিনি হীরার ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে তিনি ভারতে আগমন করেন। মুঘল সুবাদার শাহজাদা আওরঙ্গজেবের সাথে তার সখ্য তৈরি হয় । আওরঙ্গজেব সম্রাট হওয়ার পর ১৬৬০ সালে বাংলার সুবাদার হিসেবে নিযুক্ত হন মীর জুমলা। তার বড় সাফল্যগুলোর মধ্যে অন্যতম কামরূপ ও আসাম রাজ্য দখল করা। আসামের যুদ্ধে তার ব্যবহারকৃত কামান বর্তমানে ওসমানী উদ্যানে সংরক্ষিত আছে ।

    শায়েস্তা খান

    ১৬৬৩ সালে সম্রাট আওরঙ্গজেব শায়েস্তা খানকে বাংলার সুবাদার নিযুক্ত করেন। শায়েস্তা খান ছিলেন সম্রাট আওরঙ্গজেবের মামা ও সম্রাট শাহজাহানের স্ত্রী মমতাজের ভাই। প্রথমে ১৬৬৪-১৬৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলার সুবাদার ছিলেন। ১৬৭৮ সালে সম্রাট আওরঙ্গজেবের পুত্র মুহাম্মদ আজম বাংলার সুবাদার নিযুক্ত হওয়ার পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাদের হীনস্বার্থ বাস্তবায়নের জন্য মুহাম্মদ আজমকে ২১,০০০ টাকা ঘুষ প্রদান করে।

    সম্রাট আওরঙ্গজেব তা জানতে পেরে তাকে পদচ্যুত করে পুনরায় শায়েস্তা খানকে বাংলায় প্রেরণ করেন। তিনি এক বছরেরও কম সময়ের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার নিযুক্ত হয়ে ১৬৮৮ সাল পর্যন্ত বাংলার সুবাদারী করেন। ফরাসি পর্যটক বার্নিয়ার শায়েস্তা খানের আমলে বাংলার প্রাচুর্য ও ঐশ্বর্যের বিশদ বিবরণ দেন । তার সময়ে খাদ্যশস্যের মূল্য এত সস্তা হয় যে, টাকায় ৮ মণ চাল পাওয়া যেত। শায়েস্তা খান ছোট কাটরা, চকবাজার মসজিদ, লালবাগ দুর্গের পরীবিবির মাজার, রায়ের বাজারের সন্নিকটে সাত গম্বুজ মসজিদ ইত্যাদি ইমারত নির্মাণ করেন।

    সুবাদারী আমলে বাংলায় আগত বিদেশি পর্যটক

    নামদেশআগমন
    রালফ ফিচইংল্যান্ড১৫৮৬
    সেবাস্টিন মানরিকপর্তুগাল১৬২৮
    নিকোলা মানুচিইতালি১৬৬৩
    টাভার্নিয়ারফ্রান্স১৬৬৬
    ফ্রান্সিস বার্নিয়ারফ্রান্স১৬৬৬

    মগ, ফিরিঙ্গি, হার্মাদ দমন

    বাংলায় মুঘল শাসনের সূচনার দিকে, যখন বারো ভূঁইয়ারা দুর্বল ছিল এবং মুঘলরাও নিজেদের ক্ষমতা শক্ত করতে পারেনি, সে সময় বর্তমান মিয়ানমারের মগ দস্যু ফিরিঙ্গি ও পর্তুগিজ জলদস্যুরা মিলিত হয়ে প্রায়ই বাংলার দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলে হানা দিত এবং প্রচুর ধন-সম্পদ লুণ্ঠন করে নিয়ে যেত। মগ ও পর্তুগিজ ফিরিঙ্গিদের একসাথে হার্মাদও বলা হতো। পর্তুগিজ পাদরিরাও জড়িত ছিল এসব দস্যুতার সাথে। একসময় তাদের দৌরাত্ম্য ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছে যায়। ১৬২৫ সালে মগরাজ শ্রীসুধর্ম ঢাকায় আক্রমণ করে তিনদিন ধরে শহরে নির্মম লুণ্ঠন ও হত্যাযজ্ঞ চালায়। শায়েস্তা খান মগদের দমনের চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেন । ১৬৬৬ সালে তিনি ‘চট্টগ্রাম জয় করার পর মগদের ঝোঁটিয়ে বিদায় করেন। তাদের এ পলায়নই ইতিহাসে মগ ধাওনী নামে পরিচিত। এইভাবে গোটা বাংলায় মগের মুল্লুক-এর অবসান ঘটে।

    ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও স্বাধীনতার মৃত্যুপরওয়ানা

    ১৬০০ সালে ভারত ও পূর্ব এশিয়ায় বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডের একদল বণিক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গঠন করেন তারা ১৬১২ সালে মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনকালে ভারতের সুরাটে প্রথম বাণিজ্য কুঠি স্থাপনের অনুমতি পায় ৷ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৬৩৩ সালে মহানন্দা বদ্বীপের হরিহরপুরে একটি ফ্যাক্টরি স্থাপনের মাধ্যমে বাংলায় ব্যবসা বাণিজ্য শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা বর্ণহিন্দু ব্যবসায়িক মিত্রদের সহযোগিতা নিয়ে এদেশের রাজনীতির দিকে হাত বাড়াতে শুরু করে। এরপর বাণিজ্যিক শর্ত লঙ্ঘন, সৈন্য ও অস্ত্র সমাবেশ, দুর্গ নির্মাণ, কর প্রদানে কারচুপি, দেশীয় ব্যবসায়ীদের সাথে সংঘর্ষ নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। প্রাথমিক পর্যায়ে ইংরেজরা সম্রাট শাহজাহান ও বাংলার সুবাদার শাহ সুজার উদারতায় বাংলায় অবাধে বাণিজ্যের সুযোগ পায়। কিন্তু তাদের সেই উদারতাকে অকৃতজ্ঞ ইংরেজ বণিকগণ পরবর্তীকালে মুঘল সাম্রাজ্যের ও বাংলা-বিহারের স্বাধীনতার মৃত্যু পরোয়ানা হিসেবে ব্যবহার করে।

    চাইল্ডের যুদ্ধ

    ১৬৮৭ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কোর্ট অব ডাইরেক্টর্স মাদ্রাজের গভর্নরকে এমন একটি বেসামরিক ও সামরিক শক্তির সংগঠন গড়ে তুলতে এবং এর নিরাপত্তার জন্য বিরাট অঙ্কের রাজস্ব সংগ্রহ করতে নির্দেশ দেন যাতে এ সংগঠন সর্বকালের জন্য ভারতে একটি বিশাল, সুদৃঢ় ও নিরাপদ ইংরেজ রাজ্যের অংশ হয়ে উঠতে পারে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সবচেয়ে প্রভাবশালী পরিচালক জসিয়া চাইল্ড এ নতুন নীতি নির্ধারণে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন । এ জঙ্গি নীতির কারণে ১৬৮৬ সালে মুঘল প্রশাসনের সঙ্গে কোম্পানির যুদ্ধ বাঁধে। শেষ পর্যন্ত কোম্পানি মুঘল সাম্রাজ্যের সশস্ত্র বাহিনীর কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয় এবং কোম্পানিকে ১,৫০,০০০ টাকা জরিমানা করা হয় ।

    সুবাদারী শাসন ব্যবস্থা

    মুঘল সুবাদারী শাসনামলে বাংলা কেন্দ্রের অধীনে থাকলেও এর আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবন নতুন গতি লাভ করে ছিল। এ সময় নানা অর্থনৈতিক পণ্য উৎপাদন যেমন হয়েছিল তেমনি স্থানীয় পণ্যের উৎকর্ষতার সুযোগে এর অভ্যন্তরীণ ও বহির্বাণিজ্যও প্রসারিত হয়েছিল। ইউরোপবাসীরা বাংলাকে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী বাণিজ্য দেশ হিসেবে গণ্য করতো। সেসময় তারা মুঘল বেঙ্গলকে প্যারাডাইস অব নেশনস এবং বাংলার স্বর্ণযুগ হিসেবে বর্ণনা করে। এছাড়া জনজীবনে শান্তি ও সমৃদ্ধি থাকায় শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছিল। এ সময় সকল ধর্মালম্বী ব্যক্তিবর্গ স্বাধীনভাবে স্ব স্ব ধর্ম পালন করতে পারতেন।

    বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় আসা প্রশ্নোত্তর

    প্রশ্ন : ‘সুবা বাংলা’ শব্দটি প্রথম ব্যবহার করা হয়
    উত্তর : সম্রাট আকবরের সময়ে। (জাবি ১৩-১৪)

    প্রশ্ন : কার সময়ে বাংলার রাজধানী ঢাকায় স্থাপন করা হয়?
    উত্তর : সম্রাট জাহাঙ্গীর। (প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ৯৩)

    প্রশ্ন : ঢাকা কখন সর্বপ্রথম বাংলার রাজধানী হয়েছিল?
    উত্তর : ১৬১০ খ্রিস্টাব্দে। (২৮তম, ২১তম বিসিএস)

    প্রশ্ন : সম্রাট শাহজাহানের কোন পুত্র বাংলার শাসনকর্তা ছিলেন?
    উত্তর : শাহ সুজা। (CGDF জুনিয়র অডিটর ১৪)

    প্রশ্ন : ‘ঢাকা গেট’ কে নির্মাণ করেন?
    উত্তর : মীর জুমলা। (জিবি ০৮-০৯)

    প্রশ্ন : শায়েস্তা খানের আমলে এক টাকায় চাউল পাওয়া যায়
    উত্তর : ৮ মণ। (রাবি (A-1) ১২-১৩)

    প্রশ্ন : ঢাকার ‘ধোলাই খাল কে খনন করেন?
    উত্তর : ইসলাম খান । (৩৬তম বিসিএস, ঢাবি ‘চ’ ইউনিট ১৭-১৮)

    প্রশ্ন : ঢাকায় বাংলার রাজধানী স্থাপনের সময় মুঘল সুবাদার কে ছিলেন?
    উত্তর : ইসলাম খান । (২৬তম বিসিএস)

    প্রশ্ন : কোন মুঘল সুবাদার চট্টগ্রাম দখল করে এর নাম রাখেন ইসলামাবাদ?
    উত্তর : শায়েস্তা খান। (প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ১২)

    প্রশ্ন : পরীবিবি কে ছিলেন?
    উত্তর : শায়েস্তা খানের কন্যা। [প্রাক- প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ১৩ (বুড়িগঙ্গা)

    প্রশ্ন : লালবাগ দুর্গের অভ্যন্তরের সমাধিতে সমাহিত শায়েস্তা খানের এক কন্যার আসল নাম
    উত্তর : ইরান দুখত। (১৭তম বিসিএস)

    প্রশ্ন : লালবাগের কেল্লা স্থাপন করেন কে?
    উত্তর : শায়েস্তা খান। (১৬তম বিসিএস, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ০২)

    প্রশ্ন : মীর জুমলার কামানটি কোন যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়?
    উত্তর : আসাম যুদ্ধে। (পরিসংখ্যান ব্যুরোর জুনিয়ার পরিসংখ্যান সহকারী ১৬)

  • বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (BRT) কী, কেন, কিভাবে?

    ৬ নভেম্বর ২০২২ বহুল আলোচিত বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (BRT) প্রকল্পের ফ্লাইওভারের ঢাকামুখী দুটি লেন খুলে দেওয়া হয়। লেন দুটি- গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গী ফ্লাইওভারের হাউস বিল্ডিং ও টঙ্গী ফায়ার সার্ভিস অংশ। এর দৈর্ঘ্য ২.২ কিলোমিটার। এতে ঢাকামুখী যানবাহন অনেকটা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে। ২০২৩ সালে BRT প্রকল্পটি চলাচলের উপযোগী হবে

    BRT কী

    BRT’র পূর্ণরূপ Bus Rapid Transit। BRT একটি উন্নত মানের আধুনিক বাসভিত্তিক ট্রানজিট ব্যবস্থা যা দ্রুত, সাশ্রয়ী, নিরাপদ এবং আরামদায়ক চলাচলের ব্যবস্থা করে। এতে চলাচল নির্বিঘ্ন করার জন্য ডেডিকেটেড লেন ব্যবহার করা হয়। এর সুবিধাগুলির মধ্যে রয়েছে— যানজট এড়িয়ে দ্রুত বিপুল সংখ্যক যাত্রী পরিবহন করা। BRT সিস্টেমে যাত্রীদের ভাড়া প্রদানের জন্য ই-টিকেটিং, অটোমেটিক গেটের ব্যবস্থা এবং আধুনিক ও সহায়ক অবকাঠামোর ব্যবস্থা থাকে ।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    ইতিহাস

    বিশ্বের প্রথম Bus Rapid Transit (BRT) সিস্টেমটি ছিল কানাডার অটোয়ার ওসি ট্রান্সপো সিস্টেম। ১৯৭৩ সালে প্রবর্তিত এ BRT সিস্টেমটির প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল শহরের কেন্দ্রস্থলে ডেডিকেটেড বাস লেন স্থাপন করা । ১৯৮৩ সালে প্রথম Exclusive Busway (‘ট্রানজিটওয়ে’ নামে পরিচিত) তৈরি করা হয়।

    এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন

    বাংলাদেশে BRT’র পটভূমি

    নগর পরিবহন ব্যবস্থা দক্ষ করে গড়ে তুলতে ২০০৫ সালে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রণীত ঢাকা আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পের আওতায় ঢাকা মহানগরীর জন্য কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা (STP) প্রস্তুত করা হয়। ২০১৫ সালে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (IICA) কর্তৃক তা সংশোধন করা হলে সরকার কর্তৃক সেটি সংশোধিত STP হিসেবে অনুমোদিত হয়।

    এটিই নগর পরিবহন পরিকল্পনার বর্তমান ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে। BRT ব্যবস্থা প্রবর্তনের উদ্দেশ্যে ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তের ৬টি প্রধান করিডোর বিশ্লেষণ করা হয়। ২০১২ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় BRT লাইন-৩ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয় ।

    ১ জুলাই ২০১৩ BRT ব্যবস্থা বাস্তবায়ন, পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার জন্য ১০০% সরকারি মালিকানাধীন ঢাকা বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানী লিমিটেড (Dhaka BRI) গঠন করা হয়। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কয়েক দফা বৃদ্ধির পরও কাজ শেষ হয়নি । রাজধানী ঢাকায় এটিই প্রথম বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্প।

    FACT FILE : BRT

    • প্রকল্পের নাম : Greater Dhaka Sustainable Urban Transport Project (বিআরটি বিমানবন্দর- গাজীপুর)।
    • বাস্তবায়নকারী সংস্থা : সড়ক ও জনপথ বিভাগ (RHD), বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (BBA), স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (LGED) এবং ঢাকা বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানী লিমিটেড (Dhaka BRT)।
    • প্রকল্প অর্থায়নকারী : বাংলাদেশ সরকার, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (ADB), ফরাসি উন্নয়ন সংস্থা (AFD) ও গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (GEF)।
    • প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় : ৪,২৬৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের ১,৪২৫ কোটি টাকা এবং বাকি টাকা প্রকল্প সাহায্য।
    • প্রকল্পের ঠিকাদার : উড়াল সড়ক ও নিচের সড়ক নির্মাণ চায়না গ্যাঝুবা গ্রুপ করপোরেশন (CGGS), জিয়াংশু প্রভিনশিয়াল ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ এবং ওয়েহেই ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেটিভ। আর গাজীপুরে BRT’র ডিপো নির্মাণে দেশীয় কোম্পানি সেল-ইউডিসি ।
    • দৈর্ঘ্য : ২০. ৫০ কিমি, ভূমিতে : ১৬ কিমি ও এলিভেটেড : ৪.৫০ কিমি
    • স্টেশন : ২৫টি
    • বাস ডিপো : ১টি (গাজীপুর)
    • টার্মিনাল : ২টি (বিমানবন্দর ও গাজীপুর)
    • ফ্লাইওভার : ৬টি (বিমানবন্দর, জসিমুদ্দীন, কুনিয়া, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, ভোগরা এবং জয়দেবপুর চৌরাস্তা)
    • সেতু : ১টি (টঙ্গী সেতুকে ১০ লেনে উন্নীতকরণ) ।
    • কিচেন মার্কেট : ৮টি
    • এক্সেস রোড : ১১৩টি (৫৬ কিমি)
    • উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন নর্দমা : উভয় পাশে ২৪ কিমি
    • ফুটপাত : উভয় পাশে ২০.২ কিমি
    • ভ্রমণ সময় : ৫০ মিনিট (গাজীপুর-এয়ারপোর্ট)
    • বাস ফ্রিকোয়েন্সি: ২ থেকে ৫ মিনিট ।
  • বাংলাদেশ সংবিধানের সুবর্ণজয়ন্তী

    ৪ নভেম্বর ২০২২ প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয় ‘জাতীয় সংবিধান দিবস’। এদিন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হওয়ার ৫০ বছর পূর্তি। অন্যদিকে ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান কার্যকরের সুবর্ণজয়ন্তী।

    সংবিধান

    সাধারণ অর্থে সংবিধান (Constitution) হলো কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন পরিচালনার মৌল নীতিমালা। রাজনৈতিক পরিভাষায় সংবিধান হলো রাষ্ট্রের মৌল ও সর্বোচ্চ আইন। সংবিধানে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংগঠন পরিচালনার মৌলিক নীতিমালা লিপিবদ্ধ থাকে। সরকারের ক্ষমতা ও দায়িত্ব, জনগণের মৌলিক অধিকার, সরকার পদ্ধতি, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কীভাবে পরিচালিত হবে তা সংবিধানে লিপিবদ্ধ থাকে।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    লিখিত না অলিখিত এদিক বিবেচনায় সংবিধানকে দু’শ্রেণিভুক্ত করা হয়। অধিকাংশ দেশের সংবিধানই লিখিত, গ্রন্থভুক্ত। আবার সংবিধান অলিখিতও হয়। কিছু মৌলিক আইন, প্রথা, পূর্ব- অভিজ্ঞতা সংবিধানের মতো গণ্য হয়। যেমন— যুক্তরাজ্যের সংবিধান। পরিবর্তনের পদ্ধতি বিবেচনায় সংবিধান দু’রকম। সুপরিবর্তনীয় এবং দুষ্পরিবর্তনীয়। বাংলাদেশের সংবিধান একটি লিখিত এবং দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান।

    গণপরিষদ বা সাংবিধানিক পরিষদ

    Constituent Assemblyকে বাংলায় গণপরিষদ বা সাংবিধানিক পরিষদ বলা যায়। একটি বিশেষ আইন সংক্রান্ত পরিষদ যার দায়িত্ব সংবিধান প্রণয়ন, সংবিধানের মূলনীতি নির্ধারণ বা সংবিধানের পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা। ১৭৮৯ সালে Constituent Assembly নামটি প্রথম ব্যবহার করে ফরাসি ন্যাশনাল এসেম্বলি।

    বাংলাদেশে গণপরিষদ গঠন

    পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে সংবিধান প্রণয়নের জন্য গণপরিষদ গঠন করা হয় । বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নেও এমন একটি গণপরিষদ গঠন করা হয়। ৭ এবং ১৭ ডিসেম্বর ১৯৭০ পূর্ব পাকিস্তান থেকে নির্বাচিত জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের ৪৬৯ জন সদস্যের মধ্যে (জাতীয় পরিষদের ১৬৯ + প্রাদেশিক পরিষদের ৩১০ = ৪৭৯ জন) ৪০৩ জন সদস্য নিয়ে গণপরিষদ গঠিত হয়।

    এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন

    কেননা ৪৭৯ জন সদস্যের মধ্যে জাতীয় পরিষদের মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ১০ আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নিহত হয়েছিলেন ১২ জন, দালালির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিলেন ৫ জন, দুর্নীতির দায়ে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন ৪৬ জন, পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করেছিলেন ২ জন (নুরুল আমীন ও স্বতন্ত্র সদস্য রাজা ত্রিদিব রায়), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরি গ্রহণ করেছিলেন ১ জন । গণপরিষদের ৪০৩ জন সদস্যের মধ্যে ৪০০ জন ছিলেন আওয়ামী লীগ, ১ জন ছিলেন ন্যাপ (মোজাফফর) এর এবং বাকি ২ জন ছিলেন নির্দলীয়।

    সংবিধান রচনার দিনপঞ্জি ১৯৭২

    ✽ ১১ জানুয়ারি ➦ অস্থায়ী সংবিধান আদেশ জারি।

    ✽ ২৩ মার্চ ➦ গণপরিষদের আদেশ জারি। যা ২৬ মার্চ ১৯৭১ থেকে কার্যকর ।

    ✽ ১০ এপ্রিল ➦ গণপরিষদের সদস্য মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশের সভাপতিত্বে গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। তিনি প্রথমে নিজেই নিজের শপথবাক্য পাঠ করেন এবং পরবর্তী সময়ে পরিষদের অন্য সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করান। একই অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাব এবং সৈয়দ নজরুল ইসলামের সমর্থনে শাহ আব্দুল হামিদ (রংপুর ৫, জাতীয় পরিষদ) স্পিকার ও তাজউদ্দীন আহমদের প্রস্তাবে এবং ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলীর সমর্থনে মোহাম্মদ উল্লাহ (নোয়াখালী ২৭৫, প্রাদেশিক পরিষদ) ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন।

    ✽ ১১ এপ্রিল ➦ সংবিধানের খসড়া প্রণয়ন করার উদ্দেশ্যে তৎকালীন আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে ৩৪ জন সদস্যের সমন্বয়ে ‘খসড়া সংবিধান প্ৰণয়ন কমিটি’ উত্থাপন করলে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়।

    ✽ ১৭ এপ্রিল➦ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির প্রথম বৈঠক।

    ✽ ১১ অক্টোবর ➦ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির শেষ বৈঠকে খসড়া সংবিধানের চূড়ান্ত রূপ গৃহীত।

    ✽ ১২ অক্টোবর ➦ গণপরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশনে ড. কামাল হোসেন কর্তৃক খসড়া সংবিধান বিল আকারে উত্থাপন।

    ✽ ১৯-৩০ অক্টোবর ➦ খসড়া সংবিধানের ওপর প্রথম পাঠ অনুষ্ঠিত।

    ✽ ৩১ অক্টোবর-৩ নভেম্বর ➦ খসড়া সংবিধানের ওপর দ্বিতীয় পাঠ অনুষ্ঠিত।

    ✽ ৪ নভেম্বর ➦ (১৮ কার্তিক ১৩৭৯, শনিবার) খসড়া সংবিধানের ওপর তৃতীয় বা সর্বশেষ পাঠ অনুষ্ঠিত এবং গণপরিষদ কর্তৃক খসড়া সংবিধান গৃহীত। বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাব অনুযায়ী, ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিষদের অধিবেশন মুলতবি করা হয়।

    ✽ ১৪ ডিসেম্বর➦ অধিবেশন শুরু হলে গণপরিষদের সদস্যরা হস্তলিখিত মূল সংবিধানে বাংলা লিপি ও ইংরেজি লিপিতে স্বাক্ষর করেন। স্পিকারের আমন্ত্রণে সংবিধানে প্রথম স্বাক্ষর দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৩৯৯ জন সদস্য হাতে লিখিত মূল সংবিধানে স্বাক্ষর করেন।

    ✽ ১৫ নভেম্বর ➦ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের শেষ সময় পর্যন্ত কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য থাকায় ৪ জন সদস্য– মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, মোহাম্মদ আজিজার রহমান এবং মোহাম্মদ ইব্রাহীম সংবিধানে স্বাক্ষর করেননি ।

    ✽ ১৫ ডিসেম্বর ➦ গণপরিষদের সিদ্ধান্ত ও অভিপ্রায় অনুযায়ী, রাত ১২টায় গণপরিষদের বিলুপ্তি ঘটে।

    ✽ ১৬ ডিসেম্বর ➦ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান কার্যকর হয়।

  • ঢাকা জেলার নামকরণ, ইতিহাস, দর্শনীয় স্থান, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি

    বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে গড়ে ওঠা এ শহর ৪০০ বছর আগে মোগল আমলে প্রথম রাজধানীর মর্যাদা পায়। প্রবহমান বুড়িগঙ্গার পাশে অবস্থিত হওয়ায় শুরু থেকেই ব্যবসা-বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র ছিল ঢাকা। মেগাসিটি ঢাকা বর্তমানে পৃথিবীর মানচিত্রে একটি বিশ্বজনীন শহর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। বাংলাদেশের প্রশাসনিক থেকে শুরু করে আইন ও শাসন বিভাগের সব গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পাদিত হয় ঢাকা থেকে। সিটি করপোরেশনের মর্যাদাপ্রাপ্ত ঢাকা দুই ভাগে বিভক্ত। এর একটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, আরেকটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।

    নামকরণ

    ঢাকার নামকরণ নিয়ে নানা ইতিহাস আছে। বলা হয়, একবার রাজা বল্লাল সেন এ অঞ্চল ভ্রমণকালে বুড়িগঙ্গা নদীর পাশের একটি জঙ্গলে দেবী দুর্গার একটি বিগ্রহ খুঁজে পান। দেবীর প্রতি সম্মান জানিয়ে রাজা সেখানে একটি মন্দির স্থাপন করেন। যার নাম দেন ঢাকেশ্বরী মন্দির। সেই মন্দিরের নাম থেকেই কালক্রমে এ অঞ্চলের নাম হয় ঢাকা। তবে ঢাকা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যায় না।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    এ সম্পর্কে প্রচলিত মতগুলোর মধ্যে কয়েকটি হলো : ক. একসময় এ অঞ্চলে প্রচুর ঢাকগাছ ছিল; খ. রাজধানী উদ্বোধনের দিনে ইসলাম খানের নির্দেশে এখানে ঢাক অর্থাৎ ড্রাম বাজানো হয়েছিল; গ. ‘ঢাকা ভাষা’ নামে একটি প্রাকৃত ভাষা এখানে প্রচলিত ছিল; ঘ. ঐতিহাসিক গ্রন্থ ‘রাজতরঙ্গিণী’ তে ঢাক্কা শব্দটি ‘পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র’ হিসেবে উল্লেক করা হয়েছে অথবা এলাহাবাদ শিলালিপিতে উল্লিখিত সমুদ্রগুপ্তের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ডবাকই হলো বর্তমানের ঢাকা।

    ১৬১০ সালে ইসলাম খান সুবাহ বাংলার রাজধানী ঢাকায় স্থানান্তর করেন এবং তৎকালীন সম্রাটের নামানুসারে এর নামকরণ করেন জাহাঙ্গীরনগর। প্রশাসনিকভাবে জাহাঙ্গীরনগর নামকরণ হলেও সাধারণ মানুষের মুখে ঢাকা নামটিই থেকে যায়। মোগল আমল থেকে দেশি-বিদেশি ঐতিহাসিক, পর্যটক তাঁদের বিবরণ ও চিঠিপত্রে ঢাকা নামটি ব্যবহার করেন।

    ইতিহাস

    ঢাকার ইতিহাস অনেক পুরোনো। তবে এই ইতিহাস প্রসিদ্ধি লাভ করে যখন মোগল আমলে ঢাকা বাংলার রাজধানী হিসেবে
    প্রতিষ্ঠিত হয়। মুসলমানদের বাংলা জয়ের আগে বর্তমান ঢাকা জেলা ছিল ‘বঙ্গ’ প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত। এর কিছু অংশ সমতট
    আবার কিছু অংশ হরিকেলের অন্তর্ভুক্ত ছিল।

    মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীরের ফরমান অনুযায়ী, ১৬ জুলাই ১৬১০ সালে ঢাকাকে সুবাহ বাংলার রাজধানী ঘোষণা করা হয়। ইসলাম খান ঢাকাকে রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করলেও পরবর্তী সময়ে সুবেদার শাহ সুজা ১৬৫০ সালে বাংলার রাজধানী রাজমহলে নিয়ে যান।

    এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন

    ১৬৬০ সালে শাহ সুজার পতনের পর মীর জুমলা আবার ঢাকাকে রাজধানী মর্যাদা দেন। এরপর আবার মুর্শিদকুলি খান যখন নবাব হন, তিনি ঢাকা থেকে রাজধানী স্থানান্তর করেন মুর্শিদাবাদে। পরে ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধে বাংলার নবাবের পতনের পর বাংলার প্রশাসনিক ক্ষমতা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে চলে যায় এবং শহর হিসেবে ঢাকার গুরুত্ব ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

    তবে ১৮২৯ সালে ঢাকা একটি বৃহৎ বিভাগের সদর দপ্তরে পরিণত হয়। এর মধ্য দিয়ে ঢাকার প্রশাসনিক গুরুত্ব আবারও বাড়তে থাকে। ঢাকার প্রশাসনিক গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি বাড়ে ১৯০৫ সালে। বঙ্গভঙ্গের ফলে ওই সময় ঢাকা পূর্ব বাংলা ও আসামের রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের পতনের পর এ অঞ্চল পূর্ব পাকিস্তান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়, এ নতুন প্রদেশের রাজধানী হয় ঢাকা।

    ফলে এখানে অধিকতর স্থায়ী প্রশাসনিক অবকাঠামো সংযোজিত হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় হয়। এরপর স্বাধীন দেশের রাজধানী হিসেবে ঢাকা রাজনৈতিক ক্ষমতা, প্রশাসনিক কার্যকলাপ এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মূল কেন্দ্ররূপে মর্যাদা লাভ করে।

    সংস্কৃতি

    ঢাকা মূলত একটি মিশ্র জনগোষ্ঠীর অঞ্চল। বাংলাদেশের সব জেলা থেকে মানুষ এই জেলায় আসে। তাই এখানে নানা ধরনের ভাষা ও সংস্কৃতি পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু মূল ঢাকার সংস্কৃতি ও ভাষার প্রচলন এখনো পুরান ঢাকার মানুষের মুখে মুখে ফেরে। দেশের বড় বড় উৎসব ঢাকায় পালিত হয় মহাসমারোহে। পয়লা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা ও রমনায় ছায়ানটের অনুষ্ঠান, একুশে বইমেলা, ঈদ, দুর্গাপূজা, বুদ্ধপূর্ণিমা, বড়দিন, সরস্বতীপূজা, সাকরাইন উৎসব প্রভৃতি সব ধর্মের ও সব সংস্কৃতির উৎসবের কেন্দ্রভূমি ঢাকা।

    দর্শনীয় স্থান

    • ছোট কাটরা
    • বড় কাটরা
    • নর্থব্রুক হল
    • লালবাগ কেল্লা
    • আহসান মঞ্জিল
    • রূপলাল হাউস
    • হোসেনি দালান
    • তারা মসজিদ
    • সাতগম্বুজ মসজিদ
    • মুসা খান মসজিদ
    • রোজ গার্ডেন প্যালেস
    • গুরুদুয়ারা নানকশাহী
    • ঢাকেশ্বরী মন্দির
    • জাতীয় জাদুঘর
    • মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
    • স্বাধীনতা জাদুঘর
    • বাহাদুরশাহ পার্ক
    • বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার
    • বাংলাদেশ বিমানবাহিনী জাদুঘর
    • মিরপুর চিড়িয়াখানা
    • তিন নেতার মাজার
    • জাতীয় সংসদ ভবন
    • রমনা পার্ক
    • বলধা গার্ডেন
    • শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ
    • বায়তুল মোকাররম মসজিদ
    • বাংলা একাডেমি
    • কার্জন হল

    নদ-নদী

    • বুড়িগঙ্গা
    • ধলেশ্বরী
    • বংশী
    • শীতলক্ষ্যা
    • তুরাগ
    • বালু

    বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব

    • নবাব আবদুল গনি
    • নবাব খাজা আহসান উল্লাহ
    • নবাব সলিমুল্লাহ
    • নবাব খাজা হাবিবুল্লাহ বাহাদুর
    • শামসুর রাহমান
    • আজম খান

    প্রশ্নোত্তরে ঢাকা জেলা

    প্রশ্ন : বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা কোন সেক্টরের অধীনে ছিল?
    উত্তর : ২ নম্বর সেক্টর।

    প্রশ্ন : শুধু একটি নম্বর ‘৩২’ উল্লেখ করলে ঢাকার একটি বিখ্যাত বাড়িকে বোঝায়। বাড়িটি কী?
    উত্তর : ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের বঙ্গবন্ধুর বাসভবন।

    প্রশ্ন : ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বিখ্যাত গেরিলা দল ‘ক্র্যাক প্লাটুন’ কোন সেক্টরের অধীনে ছিল?
    উত্তর : সেক্টর-২।

    প্রশ্ন : বর্তমান বৃহত্তর ঢাকা জেলা প্রাচীনকালে কোন জনপদের অন্তর্ভুক্ত ছিল?
    উত্তর : বঙ্গ।

    প্রশ্ন: ঢাকা শহরের গোড়াপত্তন হয় কখন?
    উত্তর : মোগল আমলে।

    প্রশ্ন : ঢাকা কখন প্রথম বাংলার রাজধানী হয়?
    উত্তর : ১৬১০ খ্রিষ্টাব্দে।

    প্রশ্ন : ঢাকায় বাংলার রাজধানী স্থাপনের সময় মোগল সুবাদার কে ছিলেন?
    উত্তর : ইসলাম খান।

    প্রশ্ন : কার সময় বাংলার রাজধানী ঢাকায় স্থাপন করা হয়?
    উত্তর : সম্রাট জাহাঙ্গীর।

    প্রশ্ন : ঢাকার নাম জাহাঙ্গীরনগর রাখেন কে?
    উত্তর : সুবাদার ইসলাম খান।

    প্রশ্ন: স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানী হওয়ার আগে ঢাকা বাংলার রাজধানী ছিল কতবার?
    উত্তর : চারবার।

    প্রশ্ন: ঢাকার ধোলাইখাল খনন করেন কে?
    উত্তর : ইসলাম খান।

    প্রশ্ন: ঢাকা গেট কে নির্মাণ করেন?
    উত্তর : মীর জুমলা।

    প্রশ্ন: ঢাকার বড় কাটরা ও ছোট কাটরা কোথায় অবস্থিত?
    উত্তর : চকবাজারে।

    প্রশ্ন : Dacca থেকে Dhaka করা হয় কোন সালে?
    উত্তর : ১৯৮২ সালে।

    প্রশ্ন : ঢাকার বিখ্যাত ছোট কাটরা নির্মাণ করেন কে?
    উত্তর : শায়েস্তা খাঁ ।

    প্রশ্ন: লালবাগ দুর্গ কোথায় অবস্থতি?
    উত্তর : ঢাকায়।

    প্রশ্ন: সাতগম্বুজ মসজিদ কোথায় অবস্থিত?
    উত্তর : মোহাম্মদপুর, ঢাকা।

    প্রশ্ন: ঢাকার বিখ্যাত তারা মসজিদ কে তৈরি করেছেন?
    উত্তর : মির্জা আহমেদ জান।

    প্রশ্ন: ব্রিটিশ শাসনামলে কোন সালে ঢাকাকে প্রাদেশিক রাজধানী করা হয়?
    উত্তর : ১৯০৫ সালে।

    প্রশ্ন : ঢাকায় ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহের স্মৃতিজড়িত স্থানের নাম কী?
    উত্তর : বাহাদুর শাহ পার্ক।

    প্রশ্ন : বাকল্যান্ড বাঁধ কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
    উত্তর : বুড়িগঙ্গা।

  • জাতীয় পুরস্কার সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর

    জাতীয় পুরস্কার সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো। আপনারা যারা বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন তাদের জন্য লেখাটি খুবই সহায়ক হবে। ইনশাল্লাহ!

    জাতীয় পুরস্কার সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর

    প্রশ্ন : বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কারের নাম কি?
    উত্তর : স্বাধীনতা পুরস্কার।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    প্রশ্ন : স্বাধীনতা পুরস্কার কবে প্রবর্তন করা হয়?
    উত্তর : ১৯৭৭ সালে।

    প্রশ্ন : ২০১৮ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন কতজন?
    উত্তর : ১৮ ব্যক্তি ।

    প্রশ্ন : রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রদান করা হয় কিসের জন্য?
    উত্তর : কৃষি উন্নয়ন।

    প্রশ্ন : রাষ্ট্রপতি পুরস্কারের নাম কি?
    উত্তর : জাতীয় কৃষি পুরস্কার (বর্তমান নাম বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার)।

    প্রশ্ন : প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পুরস্কার প্রদান করা হয় কিসের জন্য?
    উত্তর : বৃক্ষরোপণে জনগণকে উৎসাহিত করার জন্য।

    প্রশ্ন : প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পুরস্কারটি প্রবর্তন করা হয় কবে?
    উত্তর : ১৯৯২ সালে ।

    প্রশ্ন : ১৯৭৩ সালে শান্তির জন্য জুলিও কুরি পদক পেয়েছিল কে?
    উত্তর : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

    প্রশ্ন : সবেচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও সম্মাননা বিজয়ী বাংলাদেশি স্থপতি কে?
    উত্তর : ফজলুর রহমান খান ৷

    প্রশ্ন : ফজলুর রহমান খানের সেরা স্থাপনা যুক্তরাষ্ট্রের (শিকাগো) সিয়ার্স টাওয়ারের বর্তমান নাম কি?
    উত্তর : উইলিস টাওয়ার ।

    প্রশ্ন : পরিবেশের উপর বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ম্যাগসেসে পুরস্কার-২০১২ লাভকারী বাংলাদেশি ব্যক্তিত্ব কে?
    উত্তর : সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

    প্রশ্ন : নোবেল বিজয়ী একমাত্র বাংলাদেশি
    উত্তর : ড. মুহাম্মদ ইউনূস

    প্রশ্ন : ড. মুহাম্মদ ইউনূস কোন বিভাগে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন?
    উত্তর : শান্তিতে (২০০৬)।

    প্রশ্ন : ২০১৩ সালে ভারতের পদ্মশ্রী পদক লাভ করে কোন বাংলাদেশি?
    উত্তর : ঝর্ণাধারা চৌধুরী।

    প্রশ্ন : ২০১৪ সালে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক পদ্মভূষণ প্রদান করা হয় কাকে?
    উত্তর : অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে ।

    প্রশ্ন : একুশে পদক- ২০১৮ লাভ করেন কারা?
    উত্তর : ২১ জন ব্যক্তি।

    এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন

    প্রশ্ন : একুশে পদকটি প্রবর্তিত হয় কবে?
    উত্তর : ১৯৭৬ সালে ।

    প্রশ্ন : জাতিসংঘের চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ পুরস্কার-২০১৫ (পলিসি লিডারশীপ) লাভ করেন কে?
    উত্তর : বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।

    প্রশ্ন : ২০১৬ সালে নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোন অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন?
    উত্তর : জাতিসংঘের প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন ও এজেন্ট অব দি চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড এবং ২০১৮ লাভ করেন- গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড।

    প্রশ্ন : প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা ও তাঁর পুত্র সজীব ওয়াজেদ কোন অ্যাওয়ার্ড জয়লাভ করেন?
    উত্তর : আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড (২০১৬)।

    প্রশ্ন : বাংলাদেশে সাহিত্যের সর্বোচ্চ পুরস্কার কোনটি?
    উত্তর : বাংলা একাডেমি পুরস্কার।

    প্রশ্ন : বাংলা একাডেমি পুরস্কারটি প্রবর্তিত হয় কবে?
    উত্তর : ১৯৬০ সালে।

    প্রশ্ন : ২০১৭ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রদান করা হয় কাকে?
    উত্তর : ৫ জনকে ।

    প্রশ্ন : বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার-২০১৬ লাভ করেন কে?
    উত্তর : স্যার ফজলে হাসান আবেদ ।

    প্রশ্ন : বেগম রোকেয়া পদক-২০১৭ লাভ করেন কে?
    উত্তর : মুক্তিযোদ্ধ মাজেদা শওকত আলী, শিক্ষক শোভা রাণী ত্রিপুরা, গ্রাম বিকাশ সহায়তা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মাসুদা ফারুক রত্না, চিকিৎসক ব্রি.জে (অব) সুরাইয়া রহমান এবং সাংবাদিক মাহফুজা খাতুন বেবী মওদুদ (মরোণত্তর)।

    প্রশ্ন : মাদার তেরেসা পুরস্কার ২০১৬ লাভ করেন কে?
    উত্তর : ফারাজ আইয়াজ হোসেন ।

  • ঢাকা মেট্রোরেল সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ জ্ঞান

    ঢাকা মেট্রোরেল সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ জ্ঞান

    ঢাকা মেট্রোরেল সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ জ্ঞান নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ চলছে। এর মধ্যে সরকার মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার মেট্রোরেল সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্পের বর্তমান দৈর্ঘ্য ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ঘোষণা অনুযায়ী, ডিসেম্বরেই (উত্তরা তৃতীয় পর্যায় প্রকল্প থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত) মেট্রোরেল বাণিজ্যিকভাবে চলাচল শুরু হবে। মেট্রোরেলের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

    প্রশ্নোত্তরে ঢাকা মেট্রোরেল

    প্রশ্ন : ঢাকা মেট্রোরেলের ব্যবস্থাকে কী বলা হয়?
    উত্তর : ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    প্রশ্ন : মেট্রোরেলের পরিচালনা ব্যবস্থার নাম কী ?
    উত্তর : কমিউনিকেশন বেজড ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম।

    প্রশ্ন : ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করা হয় কবে?
    উত্তর : ২৬ জুন ২০১৬।

    প্রশ্ন : প্রথম দফায় ঢাকা মেট্রোরেল বা এমআরটি-৬ লাইনের দৈর্ঘ্য কত ছিল?
    উত্তর : ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার।

    প্রশ্ন : ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্পের বর্তমান দৈর্ঘ্য কত?
    উত্তর : ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার।

    প্রশ্ন : ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের নাম কী?
    উত্তর : ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড।

    প্রশ্ন : ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের নাম কী?
    উত্তর : দিল্লি মেট্রোরেল করপোরেশন।

    প্রশ্ন : মেট্রোরেলের স্টেশনসংখ্যা প্রথমে কত ছিল?
    উত্তর : ১৬।

    প্রশ্ন : সংশোধিত প্রকল্পে বর্তমানে স্টেশনসংখ্যা হবে কত?
    উত্তর : ১৭।

    প্রশ্ন : মেট্রোরেল প্রকল্পের সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদিত হয় কবে?
    উত্তর : ১৯ জুলাই ২০২২।

    প্রশ্ন : সংশোধিত প্রকল্পে বর্তমান মেট্রোরেল হবে—
    উত্তর : উত্তরা থেকে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত।

    প্রশ্ন : মেট্রোরেল প্রকল্প প্রথমে ছিল—
    উত্তর : উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত।

    প্রশ্ন : মেট্রোরেল প্রকল্পের নতুন করে দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেয়েছে কত কিলোমিটার?
    উত্তর : ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার।

    প্রশ্ন : মেট্রোরেল প্রকল্পে অর্থায়ন করছে কোন প্রতিষ্ঠান?
    উত্তর : জাইকা (৭৫%) ও বাংলাদেশ সরকার।

    প্রশ্ন : মেট্রোরেল প্রকল্পের প্রথম ব্যয় ধরা হয়েছিল কত টাকা?
    উত্তর : ২১ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা।

    প্রশ্ন : সংশোধনের পর মেট্রোরেল প্রকল্পের নতুন ব্যয় কত টাকা?
    উত্তর : ৩৩ হাজার ৪৭১ দশমিক ৯৯ কোটি টাকা।

    প্রশ্ন : মেট্রোরেল প্রকল্পে জাইকা কত টাকা দেবে?
    উত্তর : ১৯ হাজার ৭১৮ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা।

    এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন

    প্রশ্ন : এমআরটি লাইন-৬ মেট্রোরেল প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয় কবে?
    উত্তর : ১৮ ডিসেম্বর ২০১২।

    প্রশ্ন : প্রথম ধাপে মেট্রোরেলের কত কিলোমিটার ও কোন এলাকা চালু হবে?
    উত্তর : উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।

    প্রশ্ন : মিরপুর ১০ স্টেশন পর্যন্ত মেট্রোরেলের প্রথম পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হয় কবে?
    উত্তর : ২৯ নভেম্বর ২০২১।

    প্রশ্ন : আগারগাঁও স্টেশন পর্যন্ত মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হয় কবে?
    উত্তর : ১২ ডিসেম্বর ২০২১।

    প্রশ্ন : মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ পরিচালনা করছে কোন কোন প্রতিষ্ঠান?
    উত্তর : থাইল্যান্ডের ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড ও চায়নার সিনোহাইড্রো করপোরেশন।

    প্রশ্ন : মেট্রোরেলের ট্রেনগুলো আসবে কোন দেশ থেকে?
    উত্তর : জাপান।

    প্রশ্ন : মেট্রোরেলের প্রতিটি ট্রেনে বগির থাকবে কতটি করে?
    উত্তর : ৬টি।

    প্রশ্ন : মেট্রোরেলের প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে কত টাকা?
    উত্তর : ৫ টাকা।

    প্রশ্ন : মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ ভাড়া কত টাকা?
    উত্তর : সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা ও সর্বোচ্চ ভাড়া ১০০ টাকা।

    প্রশ্ন : প্রতিটি মেট্রোরেলের প্রতিটি ট্রেনে সর্বোচ্চ যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা কত?
    উত্তর : ২ হাজার ৩০৮ জন।

    প্রশ্ন : মেট্রোরেলের সর্বোচ্চ পরিকল্পিত গতি কত?
    উত্তর : ১০০ কিমি/ঘণ্টা।

    প্রশ্ন : মেট্রোরেলের স্টেশনগুলো কত তলাবিশিষ্ট হবে?
    উত্তর : তিনতলা।

    প্রশ্ন : মেট্রোরেলের প্রতিটি প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য কত হবে?
    উত্তর : ১৮০ মিটার।

  • মহান বিজয় দিবস সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

    মহান বিজয় দিবস, ১৬ ডিসেম্বর। সুদীর্ঘ শোষণ ও বঞ্চনা থেকে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি ঘটে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। বাঙালি জাতির সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক স্বপ্ন পূরণ হয়। বিশ্বের মানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।

    বিজয় দিবস

    ল্যাটিন শব্দ Victoria থেকে Victory শব্দের উৎপত্তি। Victory শব্দের বাংলা অর্থ বিজয়। ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবস। বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক যতগুলো জাতীয় দিবস পালন করা হয় তার মধ্যে অন্যতম বিজয় দিবস। ২২ জানুয়ারি ১৯৭২ প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এ দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় এবং সরকারিভাবে এ দিনটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়। দিনটি যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও জাতীয়তাবাদী উদ্দীপনাসহ উদ্যাপিত হয়ে থাকে। ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে প্রত্যুষে দিবসটির সূচনা ঘোষণা করা হয় ৷

    তোপধ্বনি

    তোপধ্বনি হচ্ছে প্রচলিত সামরিক সম্মান। বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বা বিশেষ দিবসকে তোপধ্বনির (কামান দাগা) মাধ্যমে সম্মান জানানো একটি প্রচলিত রীতি। সামরিক অভিবাদনের এ প্রথাটি আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত। এক্ষেত্রে সংখ্যার বিষয়টিও এসেছে ঐতিহাসিকভাবে। ব্যক্তি বা ক্ষেত্রবিশেষে তোপধ্বনির সংখ্যা কম-বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে স্বাধীনতা এবং বিজয় দিবসে তোপধ্বনির মাধ্যমে দেশের সূর্য সন্তানদের সম্মান জানানো হয়। দু’টি দিনেই ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে সম্মান জানানো হয়।

    আবার বাংলাদেশে অন্য কোনো দেশের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান বা আন্তর্জাতিক বিশিষ্ট ব্যক্তিকে শ্রদ্ধা জানাতে ২১ বার তোপধ্বনি দেওয়া হয়। তোপধ্বনির মাধ্যমে সম্মান বা অভিবাদনের রীতি শুরু হয় চতুর্দশ শতকে। নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ঘাঁটি ছেড়ে যাওয়ার সময় এ তোপধ্বনির রেওয়াজ শুরু হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশে ২১ বার তোপধ্বনি প্রচলন থাকলেও তৎকালীন ব্রিটিশ উপনিবেশিক দেশগুলো এ নিয়মে কিছুটা পরিবর্তন এনে ৩১ বার নির্ধারণ করে।

    সামরিক কুচকাওয়াজ

    কুচকাওয়াজ বলতে এক ধরনের ছন্দবদ্ধ হাঁটাকে বোঝানো হয়। এটি সাধারণত সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত। কুচকাওয়াজ প্রায়ই বাদ্যের তালে তালে ও সামরিক প্যারেডে হয়ে থাকে। কুচকাওয়াজ অধিকাংশ দেশে সামরিক মৌলিক প্রশিক্ষণের অংশ। বাংলাদেশের বিজয় দিবসের দিন ঢাকার শেরেবাংলা নগরের তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরস্থ জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে অনুষ্ঠিত সম্মিলিত সামরিক কুচকাওয়াজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর সদস্যরা যোগ দেন। রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজের অংশ নিয়ে সালাম গ্রহণ করেন।

    জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা

    জাতীয় স্মৃতিসৌধ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নিবেদিত একটি স্মারক স্থাপনা। এটি ঢাকার সাভারের নবীনগরে অবস্থিত। জাতীয় স্মৃতিসৌধকে বলা হয় ‘সম্মিলিত প্রয়াস’। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ বিজয় অর্জনের পরপরই ১৯৭২ সালে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে জাতীয় পর্যায়ে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়।

    ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ বিজয় দিবসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্মৃতিসৌধটি নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং সেই প্রেক্ষিতে নকশা আহবান করা হয়। ১৯৭৮ সালের জুনের মধ্যে প্রাপ্ত ৫৭টি নকশার মধ্যে সৈয়দ মাইনুল হোসেন-এর প্রণীত নকশাটি গৃহীত হয়। ১৯৭৯ সালে মূল স্মৃতিসৌধের নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর ১৯৮২ নির্মাণ শেষে উদ্বোধন করা হয়।

    কাঠামোটির সর্বোচ্চ বিন্দুর উচ্চতা ৪৫.৭২ মিটার বা ১৫০ ফুট। স্মৃতিসৌধটি সাত জোড়া ত্রিভুজাকৃতির দেয়াল নিয়ে গঠিত। দেয়ালগুলো ছোট থেকে বড় ক্রমানুসারে সাজানো। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসেবে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে থাকেন। জাতীয় স্মৃতিসৌধের সাত জোড়া দেয়াল স্বাধীনতা আন্দোলনের সাতটি ভিন্ন পর্যায় নির্দেশ করে। পর্যায়গুলো হলো-

    • ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন
    • ১৯৫৬ সালের শাসনতন্ত্র আন্দোলন ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন
    • ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান
    • ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ।

    বিজয়ের পথে বাংলাদেশ

    ৩ ডিসেম্বর : যৌথ কমান্ড গঠন

    ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ কমান্ড গঠিত হয়। যৌথ বাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হন ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা। ভারতের সশস্ত্র বাহিনী পরিচিত হয় মিত্রবাহিনী নামে। একই দিনে পাকিস্তানের বিমানবাহিনী ভারতের বিমানবাহিনীর স্থাপনা ও রাডার স্টেশনগুলোতে বিমান হামলা চালায়। এতে করে ভারতজুড়ে জারি হয় জরুরি আইন। এ হামলার জবাবে রাত সাড়ে ১১টায় ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের ওপর পাল্টা হামলা চালায় । এর ফলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নতুন করে গতি সঞ্চারিত হয়। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত অধ্যায়।

    ৬ ডিসেম্বর : প্রথম স্বীকৃতি

    দক্ষিণ এশিয়ার দুটি প্রতিবেশী দেশ ভুটান ও ভারত ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ বাংলাদেশকে স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করে। দুটো দেশ একই দিন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ায় একটি বিষয় প্রায়শ বিতর্কে এসে যায়, কোন দেশটি বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছে— ভুটান না ভারত? বিভিন্ন তথ্য ও দাপ্তরিক দলিল অনুসারে, ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ আনুমানিক সকাল দশ ঘটিকায় বাংলাদেশকে ভুটানের স্বীকৃতি প্রদানের খবর তারবার্তার মাধ্যমে মুজিবনগর সরকারের কাছে পৌঁছে। এরপর আনুমানিক সকাল ১১.০০-১১.৩০ ঘটিকায় আরেকটি তারবার্তার মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। অতএব, ভারতের কয়েক ঘণ্টা পূর্বে ভুটান স্বীকৃতি দিয়ে তারবার্তা পাঠায়।

    ১৪ ডিসেম্বর : বুদ্ধিজীবী হত্যা

    “যে সকল সাহিত্যিক, দার্শনিক, বিজ্ঞানী, চিত্রশিল্পী, শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, ভাস্কর, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী, রাজনৈতিক, সমাজসেবী, সংস্কৃতিসেবী, চলচ্চিত্র, নাটক, সংগীত ও শিল্পকলার অন্যান্য শাখার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং পাকিস্তানী দখলদার বাহিনী, কিংবা তাদের সহযোগীদের হাতে শহীদ কিংবা চিরতরে নিখোঁজ হয়েছেন, তারাই শহীদ বুদ্ধিজীবী।’

    ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে এসব বুদ্ধিজীবী মেধা, মনন ও লেখনীর মাধ্যমে স্বাধীনতার সংগঠকদের প্রেরণা জুগিয়েছেন। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে ১৪ ডিসেম্বর শোকাবহ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়। ১৯ নভেম্বর ২০২০ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়নের লক্ষ্যে একটি যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করা হয়। ২৭ মে ২০২১ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ১৯১ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর প্রথম তালিকা প্রকাশ করে। ২০ জুন ২০২২ আরও ১৪৩ জনের দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশ করে। এখন পর্যন্ত তালিকায় স্থান পেয়েছেন ৩৩৪ জন ।

    ১৬ ডিসেম্বর : বিজয় লাভ

    ১৯৭১ সালের এ দিনে নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ শেষে পাক হানাদার বাহিনীর ৯৩,০০০ সদস্য ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) আত্মসমর্পণ করেছিল। ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই ছিল সবচেয়ে বড় আত্মসমর্পণের ঘটনা। এর ফলে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামে একটি নতুন স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। সেদিন বিকাল ৪.৩১ মিনিটে পাকিস্তানের পক্ষে আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজি (এ. এ. কে. নিয়াজি) ও যৌথবাহিনীর পক্ষে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা। ঐতিহাসিক আত্মসমর্পণের দলিলের নাম ছিল— Instrument of Surrender.

    অন্যান্য দিবস
    ১ ডিসেম্বরমুক্তিযোদ্ধা দিবস
    ৬ ডিসেম্বরমৈত্রী দিবস
    ১৪ ডিসেম্বরশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস
    ১৬ ডিসেম্বরবিজয় দিবস

    ৬ ডিসেম্বর : প্রথম শত্রুমুক্ত জেলা

    স্বাধীনতাকালীন বাংলাদেশের জেলা ছিল ১৯টি – বরিশাল, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী, রাঙ্গামাটি, ঢাকা, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, যশোর, খুলনা, কুষ্টিয়া, বগুড়া, পাবনা, রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর ও সিলেট। এ জেলাগুলোর মধ্যে প্রথম শত্রুমুক্ত হয় যশোর জেলা। ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ যশোরেই প্রথম উঠেছিল বিজয়ী বাংলাদেশের পতাকা।

    শত্রুমুক্ত বর্তমান জেলাসমূহ (ঢাকা জেলা ব্যতীত)
    ২৯ নভেম্বরপঞ্চগড়
    ০৩ ডিসেম্বরবরগুনা ও ঠাকুরগাঁও
    ০৪ ডিসেম্বরলক্ষ্মীপুর
    ০৬ ডিসেম্বরযশোর, ঝিনাইদহ, ফেনী, মেহেরপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ
    ০৭ ডিসেম্বরনোয়াখালী, গোপালগঞ্জ, শেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, সাতক্ষীরা ও গাইবান্ধা
    ০৮ ডিসেম্বরবরিশাল, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া
    ০৯ ডিসেম্বরনেত্রকোনা
    ১০ ডিসেম্বরভোলা, জামালপুর, মাদারীপুর, ময়মনসিংহ ও নড়াইল
    ১১ ডিসেম্বরটাঙ্গাইল, কুষ্টিয়া ও মুন্সীগঞ্জ
    ১২ ডিসেম্বরনরসিংদী ও কক্সবাজার
    ১৩ ডিসেম্বরমানিকগঞ্জ, বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নীলফামারী
    ১৪ ডিসেম্বরবান্দরবান, জয়পুরহাট ও সিরাজগঞ্জ
    ১৫ ডিসেম্বরখাগড়াছড়ি, দিনাজপুর, সিলেট ও গাজীপুর
    ১৬ ডিসেম্বরনারায়ণগঞ্জ
    ১৭ ডিসেম্বরফরিদপুর, কিশোরগঞ্জ, খুলনা, বাগেরহাট, রাঙ্গামাটি, রংপুর ও চট্টগ্রাম
    ১৮ ডিসেম্বররাজবাড়ী, শরিয়তপুর, পাবনা, নওগাঁ ও রাজশাহী
    ২১ ডিসেম্বরনাটোর
  • বাংলায় নবাবী আমল সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

    বাংলায় নবাবী আমল সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো। সম্রাট আওরঙ্গজেবের পর দিল্লির দুর্বল উত্তরাধিকারীদের সময়ে মুঘল শাসন শক্তিহীন হয়ে পড়ে। এ সুযোগে বাংলার সুবাদারগণ প্রায় স্বাধীনভাবে বাংলা শাসন করতে থাকেন। মুঘল আমলের এ যুগ নবাবী আমল নামে পরিচিত।

    বাংলার নবাব

    মুর্শিদকুলী খান১৭০০-৩০ জুন ১৭২৭
    সুজাউদ্দীন মুহাম্মদ খান৩০ জুন ১৭২৭-১৩ মার্চ ১৭৩৯
    সরফরাজ খান ১৩ মার্চ ১৭৩৯-১০ এপ্রিল ১৭৪০
    আলীবর্দী খান১০ এপ্রিল ১৭৪০-১০ এপ্রিল ১৭৫৬
    সিরাজউদ্দৌলা১০ এপ্রিল ১৭৫৬-২৩ জুন ১৭৫৭

    ব্রিটিশ বাংলার নবাব

    মীরজাফর আলী খান২৯ জুন ১৭৫৭-২০ অক্টোবর ১৭৬০
    মীর কাসিম২০ অক্টোবর ১৭৬০-১০ এপ্রিল ১৭৬৩
    মীরজাফর আলী খান (দ্বিতীয় বার)১০ এপ্রিল ১৭৬৩-৫ ফেব্রুয়ারি ১৭৬৫
    নাজিমুদ্দীন আলী খান১৭৬৫

    মুর্শিদকুলী খান : নবাবী শাসন প্রতিষ্ঠা

    মুর্শিদকুলী খান দক্ষিণ ভারতের একটি দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । দাক্ষিণাত্যের শায়েস্তা খানের দেওয়ান হাজী শফী ইস্পাহানী অল্প বয়সি মুর্শিদকুলীকে ক্রয় করে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করেন। প্রথমে তার নাম রাখা হয় মুহাম্মদ হাদী। একপর্যায়ে তিনি বেরার প্রদেশে দেওয়ান হাজী আব্দুল্লাহ খোরাসানীর অধীনে চাকরি নেন।

    এই বিভাগের আরো পোস্ট :

    রাজস্ব আদায়ের কাজে তার অভিজ্ঞতা সম্রাট আওরঙ্গজেবের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ১৭০০ সালে সম্রাট আওরঙ্গজেব মুহাম্মদ হাদীকে সম্মানসূচক ‘করতলব খান’ উপাধি দিয়ে দেওয়ান (অর্থমন্ত্রী) হিসেবে বাংলায় পাঠান। কর্মদক্ষতার গুণে তিনি বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানিও লাভ করেন। এরপর সম্রাট তাকে ‘মুর্শিদকুলী খান’ উপাধিতে ভূষিত করেন।

      পরে তার নামানুসারে মুকসুদাবাদের নাম পরিবর্তন করে ‘মুর্শিদাবাদ’ রাখা হয় । সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যু হলে পুরো মুঘল সাম্রাজ্যে গোলযোগ দেখা দেয়। এ সময় থেকে তিনিই বাংলার নায়েব এ নাজিম হিসেবে শাসন করতে থাকেন। এরপর বাহাদুর শাহের সময় মুর্শিদকুলী খানকে দাক্ষিণাত্যে বদলি করা হয়। তবে বাংলায় নতুন করে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে তাকে মাত্র দুই বছরের মধ্যে এখানে ফিরিয়ে আনা হয়। তার কর্মনিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধের মধ্য দিয়েই সূচিত হয় বাংলার নবাবী শাসন।

      পলাশীর যুদ্ধ

      তারিখ২৩ জুন ১৭৫৭; ৫ শাওয়াল ১১৭০ হিজরি
      বারবৃহস্পতিবার
      যুদ্ধ শুরুসকাল ৮ টায়
      যুদ্ধের স্থায়িত্বকাল৮ ঘণ্টার মতো

      নবাবের পক্ষে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে মীরমদান, মোহন লাল, খাজা আব্দুল হামিদ খান, নবসিং হাজারি প্রমুখের অধীনে নবাব সেনারা। ফরাসি বীর সিনফ্রেও ছিলেন নবাবের পক্ষের অন্যদিকে, মীরজাফর, ইয়ার লতিফ এবং রায় দূর্লভ রামের অধীনে নবাবের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সেনা নিষ্ক্রিয়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে এবং পরিস্থিতি অবলোকন করে।

      সিরাজউদ্দৌলা

      জন্ম১৭৩৩
      মৃত্যু৩ জুলাই ১৭৫৭ [সূত্র : বাংলাপিডিয়া]
      পূর্ণনামমির্জা মুহম্মদ সিরাজউদ্দৌলা
      পিতাজয়েন উদ্দীন
      মাতাআমিনা বেগম
      খালা২ জন— ঘসেটি বেগম ও মায়মুনা বেগম
      নানাআলীবর্দী খান
      স্ত্রীলুৎফুদো বেগম
      শ্বশুরইরিচ খাঁ
      কন্যাউম্মে জোহরা
      সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হিসেবে ঘোষণামে ১৭৫২
      সিংহাসনে আরোহণ৩ এপ্রিল ১৭৫৬; ২৩ বছর বয়সে
      সিরাজউদ্দৌলার ক্ষমতার মেয়াদকাল১৪ মাস ১৪ দিন

      নবাব সিরাজউদ্দৌলা পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হন এবং যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যান। পাটনা যাওয়ার পথে মীরজাফরের জামাতা ও মীরনের ভগ্নিপতি মীর কাসিমের মাধ্যমে ধরা পড়েন। এরপর মীরজাফরের পুত্র মীরনের নির্দেশে ৩ জুলাই ১৭৫৭ মোহাম্মদী বেগের ছুরিকাঘাতে নিহত হন । মীর্জা জয়নুল আবেদীন নামের এক ব্যক্তি নবাব সিরাজউদ্দৌলার লাশ দাফন করেন । নবাব আলীবর্দী খানের ‘আনন্দ উদ্যান’ খোশবাগের গোলাপ বাগানে নানার কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয় ।

      পলাশীর খলনায়কেরা

      কতিপয় বিশ্বাসঘাতকের ষড়যন্ত্রের কারণেই পলাশীর প্রান্তরে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে পরাজিত হন বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলা। পলাশীর ষড়যন্ত্রকারী ও বিশ্বাসঘাতকদের অন্যতম—

      মীরজাফরজগৎশেঠমহারাজা স্বরূপচাঁদ
      রায় দূর্লভউমিচাঁদমহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র
      রাজা রাজবল্লভমীর কাসিমইয়ার লতিফ খান
      মহারাজা নন্দকুমারমীরনঘসেটি বেগম
      মোহাম্মদী বেগদানিশ শাহ বা দানা শাহরবার্ট ক্লাইভ
      ওয়াটসস্ক্রাফটনওয়াটসন

      নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি ছিলেন মীরজাফর আলী খান। তার বিশ্বাসঘাতকতাতেই পলাশীর প্রান্তরে ২০০ বছরের জন্য বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয়। তাই ‘মীরজাফর’ নামটি আজও বিশ্বাসঘাতকের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

      অন্ধকূপ হত্যা

      ২০ জুন ১৭৫৬ নবাব সিরাজউদ্দৌলা কর্তৃক কলকাতা দখলের সময় ইংরেজ সেনাপতি জে জেড হলওয়েলের রচিত কল্পকাহিনীই অন্ধকূপ হত্যা । বলা হয়, ১৮ ফুট দৈর্ঘ্য, ১৪.১০ ফুট প্রস্থের ছোট একটি ঘরে ১৪৬ জন ইংরেজকে বন্দি করে রাখা হয় । এতে প্রচণ্ড গরমে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ১২৩ জনের মৃত্যু হয়। কল্পকাহিনীতে প্রভাবান্বিত হয়ে ক্লাইভ ও ওয়াটসন কলকাতা দখল করে । ফলে সিরাজউদ্দৌলা ইংরেজদের সাথে আলীনগর সন্ধি করতে বাধ্য হন।

      বর্গীদের আক্রমণ

      বাংলায় বর্গী আক্রমণ বলতে মারাঠা সাম্রাজ্য কর্তৃক ১৭৪২- ১৭৫১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ নয় বছরব্যাপী বারবার বাংলা আক্রমণ এবং এর ফলে বাংলার নবাবের সঙ্গে মারাঠাদের সংঘর্ষকে বোঝানো হয়। ‘বর্গী’ শব্দটি মারাঠি বারগির শব্দের অপভ্রংশ। বারগির বলতে মারাঠা সাম্রাজ্যের সেই সব অশ্বারোহীদের বোঝাতো যারা অভিযানে যাওয়ার সময় কেবল একটি সাত হাত লম্বা কম্বল ও বর্শা নিয়ে বের হতো। মারাঠা নেতা ছত্রপতি শিভাজী কর্তৃক এদের ঘোড়া ও অস্ত্র সরবরাহ করা হতো। শেষ পর্যন্ত ১৭৫১ সালে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে বাংলায় মারাঠা আক্রমণের অবসান ঘটে। এ চুক্তির অংশ হিসেবে আলীবর্দী খান বর্গীদের হাতে উড়িষ্যা ছেড়ে দেন ।

      শিয়াদের উত্থান

      বাংলায় শিয়া মতবাদ প্রচারিত হয় সতেরো শতকের প্রথমভাগে। পারস্যের বণিক ও ভ্রমণকারীরা এ মতবাদ প্রচার করেন। মীর জুমলা ও শায়েস্তা খান এর মতো বিখ্যাত মুঘল সুবাদাররা ছিলেন শিয়া। বাংলার মুঘল শাসক শাহ্ সুজা সুন্নি হলেও তার মা মমতাজ বেগম (সম্রাট শাহজাহানের স্ত্রী) ছিলেন শিয়া মতাবলম্বী। শাহ্ সুজার আমলেই ঢাকার বিখ্যাত হোসেনী দালান নির্মাণ করা হয়। শুধু তাই নয়, আঠারো শতকের প্রথমভাগের অধিকাংশ নবাবই ছিলেন শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত। বাংলায় শিয়া আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ পায় মুর্শিদকুলী খানের আমলে। মুর্শিদাবাদকে কেন্দ্ৰ করে তিনি বাংলায় কার্যত একটি শিয়া রাজবংশ গড়ে তুলেন। যদিও এখানকার মুসলমানদের অধিকাংশই সুন্নি সম্প্রদায়ভুক্ত।

      সুজাউদ্দীন খান

      • নবাব সুজাউদ্দীন ছিলেন— মুর্শিদকুলীর জামাতা ।
      • শায়েস্তা খানের পর একমাত্র তার আমলেই বাংলায় ১ টাকায় ৮ মন চাল পাওয়া যেত ।

      আলীবর্দী খান

      • আলীবর্দী খানের প্রকৃত নাম— মির্জা মুহাম্মদ আলী
      • ১৭৪০ সালে গিরিয়ার যুদ্ধে সরফরাজ খানকে পরাজিত করে বাংলার মসনদ অধিকার করেন— আলীবর্দী খান
      • বর্গীরা বাংলায় ব্যাপক অত্যাচার করেছিল— আলীবর্দী খানের সময়ে ।
      • বাংলায় মারাঠী বা বর্গী দমনে সবচেয়ে বেশি অবদান – আলীবর্দী খানের ।
      • আলীবর্দীর সময়ে বাংলার রাজধানী ছিল— মুর্শিদাবাদ ।

      মীর কাসিম ও বক্সারের যুদ্ধ

      • পলাশীর যুদ্ধে পরাজয়ের পর বাংলার নবাব হন – মীরজাফর।
      • বক্সারের যুদ্ধ হয়— ২২ অক্টোবর ১৭৬৪।
      • বক্সারের যুদ্ধে ইংরেজ বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন— হেক্টর মনরো ।
      • বক্সারের যুদ্ধে পরাজিত হন— মীর কাসিম।

      স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত

      পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত হওয়ার পর ইংরেজদের গতিরোধ করার মতো শক্তি ও সাহস এদেশ থেকে সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। আর তখন থেকেই এদেশের ভাগ্যবিধাতা হয়ে যায় ইংরেজরা; নবাব থাকে নামমাত্র। বক্সারের যুদ্ধে মীর কাসিমের পরাজয়ের পর বাংলা তথা উপমহাদেশে ইংরেজরা দেওয়ানি লাভ করে । মীর কাসিমের নবাবী লাভের আগেই রবার্ট ক্লাইভ ইংল্যান্ডে ফিরে যান। কিন্তু ইংল্যান্ড কর্তৃপক্ষ এদেশে কোম্পানির বাণিজ্যিক স্বার্থ রক্ষায় তাকে লর্ড উপাধিতে ভূষিত করে দ্বিতীয়বার এদেশে প্রেরণ করে। তিনি মুঘল সম্রাট শাহ আলমের নিকট থেকে বছরে ২৬ লক্ষ টাকা কর প্রদানের বিনিময়ে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব লাভ করেন। এতে বাংলা তথা ভারতবর্ষে ইংরেজ উপনিবেশের পথ উন্মুক্ত হয়ে যায়। শুরু হয় প্রায় ২০০ বছরের লুটপাট আর গোলামির ইতিহাস।

      বিগত পরীক্ষায় আসা প্রশ্নোত্তর

      প্রশ্ন : বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীন নবাব কে?
      উত্তর : মুর্শিদকুলী খান ।

      প্রশ্ন : কোন মুঘল সুবাদার বাংলার রাজধানী ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদে স্থানান্তর করেন?
      উত্তর : মুর্শিদকুলী খান।

      প্রশ্ন : পলাশীর যুদ্ধ কবে সংঘটিত হয়েছিল?
      উত্তর : জুন ২৩, ১৭৫৭।

      প্রশ্ন : বাংলার শেষ নবাব সিরাজ-উ-দ্দৌলা কোন যুদ্ধে পরাজিত হন?
      উত্তর : পলাশী যুদ্ধে।

      প্রশ্ন : নবাব সিরাজউদ্দৌলার পিতার নাম কী?
      উত্তর : জয়েন উদ্দীন

      প্রশ্ন : ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হয় কোন নদীর তীরে?
      উত্তর : ভাগীরথী ।

      প্রশ্ন : নবাব মুর্শিদকুলী খানের বাংলায় শাসনকাল
      উত্তর : ১৭১৭- ১৭২৭ ।

      প্রশ্ন : বাংলার রাজস্ব ব্যবস্থা পুনর্গঠন করেন
      উত্তর : মুর্শিদকুলী খান।

      প্রশ্ন : ‘লুণ্ঠন প্রিয় বর্গী’ বলা হতো কাদের?
      উত্তর : মারাঠি সৈন্যদলকে।

      প্রশ্ন : ‘বর্গী’ শব্দটি কোন ভাষা থেকে এসেছে?
      উত্তর : মহারাষ্ট্রীয়।

      প্রশ্ন : ‘অন্ধকূপ হত্যা’ কাহিনী কার তৈরি?
      উত্তর : হলওয়েল।

      প্রশ্ন : মুসলমান শাসনামলে এদেশে এসে অত্যাচার ও লুট করেছে কারা?
      উত্তর : বর্গীরা।

      প্রশ্ন : বক্সারের যুদ্ধ কত সালে সংঘটিত হয়?
      উত্তর : ১৭৬৪ সালে।

    • ৪৪ তম বিসিএস বিজ্ঞান লিখিত প্রস্তুতি

      ৪৪ তম বিসিএস বিজ্ঞান লিখিত প্রস্তুতি

      ১. অ্যাসিড বৃষ্টি কী? এটি কিভাবে ঘটে।

      ২. অ্যাসিড বৃষ্টির প্রভাব ও প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করুন?

      ভূমিকা

      অ্যাসিড বৃষ্টি বর্তমান সময়ে প্রকৃতির ভারসাম্যহনীতার এক দৃষ্টান্ত। শিল্পোন্নত দেশগুলোতে আজকাল অ্যাসিড বৃষ্টি বেশি হচ্ছে। আর এই অ্যাসিড বৃষ্টি পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে। বিভিন্ন গাড়ির বিষাক্ত ধোঁয়া, কলকারখানার বর্জ্য—এসবের কারণে বায়ুমণ্ডলের ভারসাম্য হারাচ্ছে। আর এই ভারসাম্যহীনতাই সৃষ্টি করছে অ্যাসিড বৃষ্টি।

      অ্যাসিড বৃষ্টি কী

      অ্যাসিড বৃষ্টি হলো বৃষ্টি বা অন্য কোনো ধরনের শিশির, যা বিশেষত অম্লধর্মী, অর্থাত্ এটি উঁচুমাত্রায় হাইড্রোজেন আয়ন ধারণ করে। স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ নাইট্রিক ও সালফিউরিক অ্যাসিড-সংবলিত ভেজা ও শুকনো পদার্থের মিশ্রণ বাতাস থেকে ঝরে পড়ে। যেমন বিদ্যুত্ উত্পাদনকেন্দ্র এবং বিভিন্ন কারখানা থেকে সৃষ্ট অম্লীয় অক্সাইড বায়ুমণ্ডলের জলীয় বাষ্প ও অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে অম্ল­ উত্পন্ন করে। এই অম্ল­ ঐ অঞ্চলে বা দূরবর্তী কোনো স্থানে বৃষ্টির পানির সঙ্গে ঝরে পড়ে। এছাড়া কয়লা, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস পোড়ানোর ফলে বায়ুতে কার্বন ডাই-অক্সাইড বৃদ্ধি পায়। কয়লা পোড়ানোর ফলে এতে মিশে থাকা সালফার পুড়ে বায়ুতে সালফার অক্সাইড উত্পন্ন হয়। সালফার অক্সাইড বৃষ্টির পানিতে মিশে বৃষ্টির পানিকে অ্যাসিডযুক্ত করে, এই অ্যাসিডযুক্ত বৃষ্টিকেই অ্যাসিড বৃষ্টি বলা হয়।

      অ্যাসিড বৃষ্টির কারণ

      এই বৃষ্টির অন্যতম কারণ মানুষের সৃষ্ট দূষণক্রিয়া! শিল্পকারখানাগুলো থেকে বায়ুতে মিশ্রিত হয় সালফার ডাই-অক্সাইড ও ফ্লোরাইড। অ্যাসিড বৃষ্টিতে বেশি অবদান রাখে সালফিউরিক অ্যাসিড! এই বৃষ্টি কার্বন ডাই-অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেন অক্সাইড নির্গমনের দ্বারা সংঘটিত হয়। এই পদার্থগুলো দূষণের জন্য যে সবচেয়ে বেশি দায়ী, সেই কারণ প্রথমে মধ্য ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে ধরা পড়ে। পরে এর প্রকোপ বেড়ে যায় জার্মান ও ইউরোপে।

      অ্যাসিড বৃষ্টির পরিমাপ

      অ্যাসিড হলো অ্যাসিড বৃষ্টির প্রধান সংগঠক। ধন্যাত্মক বৈদ্যুতিক আধানযুক্ত হাইড্রোজেন আয়ন হলো অ্যাসিড। আয়নের ঘনত্বের ওপর অ্যাসিডের তীব্রতার মাপকাঠি নির্ভর করে। মাপকাঠি হিসেবে ব্যবহার করা হয় পিএইচ স্কেল। এই স্কেলের পরিধি সর্বনিম্ন ১ থেকে সর্বোচ্চ ১৪ দ্বারা সীমায়িত। স্কেলের কেন্দ্র বা মধ্যবর্তী সংখ্যা ৭ অ্যাসিড বা ক্ষারের ক্ষমতা নির্দেশ করে। পিএইচ স্কেলের নিম্নগতির ওপর নির্ভর করে কোনো মাধ্যমের অ্যাসিডের তীব্রতা নিরূপণ করা হয়। এই অ্যাসিডযুক্ত জলীয় বর্ষণই অ্যাসিড বৃষ্টি নামে পরিচিত।

      অ্যাসিড বৃষ্টি যেভাবে তৈরি হয়

      অ্যাসিড বৃষ্টির জটিল ধরনের পরিবহন ও অপসারণ পদ্ধতির গবেষণা নিয়ে বিজ্ঞানীরা বেশ হিমশিম খাচ্ছেন। আপাতত তাদের চিন্তা ও মতবাদ সঠিক সিদ্বান্তে পৌঁছাতে সক্ষম হচ্ছে না। বিভিন্ন শক্তি উত্পাদক ও শিল্প কলকারখানায় ব্যবহূত জীবাশ্মঘটিত জ্বালানিই বায়ুমণ্ডলের সালফার ও নাইট্রোজেন অক্সাইডের প্রধান উত্স। তাপ উত্পাদক কারখানাগুলোতে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহূত হয় কয়লা ও তেল। এই জ্বালানি থেকে নির্গত ৬০ শতাংশ সালফার ডাই-অক্সাইড ও ৩০ শতাংশ নাইট্রোজেন অক্সাইড বায়ুমণ্ডলে মিশ্রিত হয়। বিভিন্ন ধরনের যানবাহন থেকেও এ ধরনের পদার্থ নির্গত হয়। ওজোনকে বর্তমানে বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান উত্স বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ অ্যাসিড বৃষ্টি তৈরিতে ওজোনেরও একটি ভূমিকা রয়েছে। বায়ুমণ্ডলে সালফার ও নাইট্রোজেন অক্সাইডগুলো একটি জটিলতর প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে সালফিউরিক অ্যাসিড ও নাইট্রিক অ্যাসিডে পরিণত হয়। বায়ুমণ্ডলের ভৌত অবস্থায় কতখানি ওপরে বা নিচে অক্সাইডগুলো নির্গত হয়ে থাকে, তার ওপর ভিত্তি করে অ্যাসিড উত্পাদনের হার নির্ণীত হয়। এই অ্যাসিডের মাত্রা নির্ণয়ের জন্য অবলম্বন হিসেবে নেওয়া হয় দুাি জটিল রাসায়নিক কৌশল। এ দুটি হলো গ্যাস পর্যায় প্রক্রিয়া ও তরল পর্যায় প্রক্রিয়া। দুটিতেই সালফার ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেনের অক্সাইডগুলো যথাক্রমে সালফেট ও নাইট্রেটে পরিণত হয়। ম্যাঙ্গানিজঘটিত অনুঘটকই মেঘে অ্যাসিড বৃষ্টিকারী বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে সরাসরি। বিজ্ঞানীরা বলেন, ওজোন কিংবা হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের মতো জারনকারী পদার্থের উপস্থিতিতে এই অ্যাসিড বৃষ্টির কার্যক্রম দ্রুতগতিতে সংঘটিত হয়।

      অ্যাসিড বৃষ্টির প্রভাব

      এই অ্যাসিড বৃষ্টি পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। অ্যাসিড বৃষ্টি শুষ্ক বা আর্দ্র দুইভাবেই পৃথিবীর বুকে পতিত হতে পারে।

      অ্যাসিড বৃষ্টি রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে স্থলজ, ইকোসিস্টেম জৈবিক পরিবেশ, মাটি, গাছপালা, মাছ, মানবস্বাস্থ্য প্রভৃতির ওপর মারাত্মক বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করে। অ্যাসিড বৃষ্টির ক্ষয়কারী ধর্ম পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। অ্যাসিড বৃষ্টির ক্ষয়কারী রাসায়নিক পদার্থের কারণে শহরের দালানকোঠার রং উঠে যেতে পারে। সেতুর মতো ইস্পাতের কাঠামো জারিত বা ক্ষয় হয়ে যেতে পারে এবং পাথরের মূর্তি বা ভাস্কর্য পুরোনো ও জরাজীর্ণ দেখা যেতে পারে। অন্যান্য রাসায়নিক উপাদানের সঙ্গে মিলে অ্যাসিড বৃষ্টির বাষ্প শহরে ধোঁয়াশার সৃষ্টি করে। ধোঁয়াশার কারণে শহরের মানুষের ফুঁসফুঁস ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং আয়ু কমে যায়। অ্যাসিডযুক্ত বৃষ্টি সব জীবের জন্য ক্ষতিকর। অ্যাসিড বৃষ্টির কারণে মাটিতে গাছের পুষ্টি উত্পাদনের পরিমাণ কমে যায়। গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। হ্রদ ও জলাশয় মাছ ও অন্যান্য প্রাণীর বসবাসের অযোগ্য হয়ে ওঠে। পূর্বাঞ্চলীয় উত্তর আমেরিকা, জাপান, চীন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ইউরোপে অ্যাসিড বৃষ্টি বহু ক্ষতি করেছে। এক জরিপে দেখা যায়, কানাডায় প্রায় ৪০টি হ্রদ অ্যাসিড বৃষ্টির কারণে মাছশূন্য হয়ে গেছে। আরো ৪৮ হাজার হ্রদের নানান প্রজাতির মাছ আজ বিলুপ্তির পথে এই অ্যাসিড বৃষ্টির কারণেই।

      অ্যাসিড বৃষ্টি প্রতিরোধ

      অ্যাসিড বৃষ্টি কমানোর নানা রকম উপায় রয়েছে। ব্যক্তির নিজস্ব উদ্যোগ বা সামাজিক উদ্যোগে এই ব্যবস্থাগুলো নেওয়া সম্ভব। শুধু বাংলাদেশে নয়, গোটা বিশ্বে যেখানেই জনবসতি রয়েছে, সেখানে অ্যাসিডজাতীয় পদার্থের জড়ো হওয়া আটকানো বেশ সমস্যার কাজ। কিন্তু যদি তা করা যায়, তাহলে এক দিকে যেমন বিভিন্ন জীবজন্তু ও প্রাকৃতিক আবাসস্থল রক্ষা পাবে, তেমনি মানুষের তৈরি নান্দনিক কাঠামো স্থাপনাগুলো রক্ষা পাবে।

    • আসুন জেনে নেই কোনটি কী?

      প্রসঙ্গ: ১৯৭১

      #শান্তি কমিটি:

      গঠন: ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে

      আহ্বায়ক: খাজা খয়রুদ্দীন

      উদ্যোক্তা: ৩ জন: গোলাম আযম, সায়েম মাসুম ও এ কিউ এম শফিকুল ইসলাম।

      মূল কাজ: পাক সেনাবাহিনীর হয়ে সশস্র অংশগ্রহণ

      #রাজাকার:

      গঠন: ১৯৭১ সালের মে মাসে খুলনায়

      আহ্বায়ক: কে এম ইউসুফ

      পরিচালক: এ এস এম জহুরুল

      মূল কাজ: শান্তি কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করা

      প্রশিক্ষণ: ৭ দিনের (সশস্র )

      সদস্য: ৫০ হাজার

      #আল বদর:

      গঠন: ২২ এপ্রিল, ১৯৭১

      গঠনকারী: ময়মনসিংহের ইসলামী ছাত্র সংঘের (বর্তমানে ইসলামী ছাত্র শিবির) সভাপতি মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন

      সমন্বয়ক: মতিউর রহমান নিজামী

      সদস্য: প্রতি ইউনিটে ৩১৩ জন [বদরের যুদ্ধে ৩১৩ জন যোদ্ধা অংশ নিয়েছিলেন তাই]

      প্রধান: আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ

      মূল কাজ: ছাত্রদের মধ্যে অখন্ড পাকিস্তানের জনমত সৃষ্টি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করে পাক সেনাদের হাতে দেয়া। ১৪ ডিসেম্বর এরাই পাক সেনাদের সহায়তা করে।

      #আল– শামস:

      গঠন: আল বদরের সময়েই

      সদস্য: ইসলামী ছাত্র সংঘের পাশাপাশি অন্যন্য সমমনা ইসলামী দলগুলোর (মুসলিম লীগসহ অন্যান্য) ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা

      ধরণ: সশস্র

      সমন্বয়ক: তৎকালীন ইসলামী ছাত্র সংঘের প্রধান মতিউর রহমান নিজামী

      মূল কাজ: মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সশস্র অংশগ্রহণ